Welcome

Website counter
website hit counter
website hit counters

Monday, November 19, 2012

কিন্তু ইন্দিরার নীতি বিসর্জন দিয়ে ভারত সরকার মধ্য প্রাচ্যে গণহত্যা নিয়ে টু শব্দটি করছে না

কিন্তু ইন্দিরার নীতি বিসর্জন দিয়ে ভারত সরকার মধ্য প্রাচ্যে গণহত্যা নিয়ে টু শব্দটি করছে না

পলাশ বিশ্বাস


ভারতে বার্মার বিরোধী নেত্রী অং সান সূ চি'র সফরে ভারতীয় নেতৃত্ব যে কথা  উচ্চারণ করার প্রয়োজনীয়তা বোধ করেনি,বারাক ওবামা সেটাই গুরুত্ব দিয়ে বলেছেন এবং মার্কিন সমাজের বহূসাংস্কৃতিক চরিত্র অনুযাযায়ী কূটনীতি আচরণ করেছেন৤ সারা বিশ্বের মুসলিম সমাজ আজ গাজায় ইসরায়েলী আগ্রাসন নিয়ে তোলপাড়৤ আজই ভারত সরকার ইন্দিরা জয়ন্তী পালন করেছে৤ কিন্তু ইন্দিরার নীতি বিসর্জন দিয়ে ভারত সরকার মধ্য প্রাচ্যে গণহত্যা নিয়ে টু শব্দটি করছে না৤ দ্বিতীয় বার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পথে নিজের দেশে মহিলাদের নেতৃত্বে সামাজিক ও উত্পাদক সমূহের যে জোট ওবামা তৈরী করতে পেরেছেন, আর্থিক বিপর্যয়ের মুখে বহুজন সমাজের স্বার্থ তাই ওবামার সর্বোচ্চ প্রাথমিকতা৤ বাজার কে পরাজিথ করে এশিয়া সফরে ওবামা সেই ইংগিতই দিলেন৤সদ্য সমাপ্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পরাজিত রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী মিট রমনি গত বুধবার প্রথম মুখ খুলেছেন। পরাজয়ের কারণ হিসেবে তিনি চিহ্নিত করেছেন প্রেসিডেন্ট ওবামার পক্ষ থেকে নারী, তরুণ-তরুণী, আফ্রিকান বংশোদ্ভূত আমেরিকান ও হিস্পানিক সম্প্রদায়কে দেওয়া 'উপহারসামগ্রীকে'। 


আইরিশ টেলিভিশনের জন্য নির্মীয়মান একটি তথ্যচিত্রের প্রয়োজনে ব্রিটিশ অভিনেতাপিটার উস্তিনভকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার কথা ছিল শ্রীমতী গান্ধীর। নতুন দিল্লির ১ নং সফদরজঙ্গ রোডস্থ প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের উদ্যানপথ ধরে হেঁটে যাচ্ছিলেন তিনি। সৎবন্ত ও বিয়ন্ত সিংহের দ্বারা রক্ষিত একটি ছোটো দরজার ভিতর দিয়ে যাওয়ার সময় তাঁরা সরাসরি ইন্দিরা গান্ধীকে গুলি করে। বিয়ন্ত সিংহ ধার থেকে তিন রাউন্ড এবং সৎবন্ত সিংহ নিজের স্টেনগান থেকে তাঁর প্রস্টেট লক্ষ্য করে ত্রিশ রাউন্ড গুলি ছোঁড়ে। অন্যান্য দেহরক্ষীরা বিয়ন্তকে ঘটনাস্থলেই গুলি করে হত্যা করে এবং সৎবন্তকে গ্রেফতার করে।

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসাবে বারাক ওবামা দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হবার পর এভাবে তার অনুভুতি প্রকাশ করলেন।    
তিনি বলেন "আমাদের সামনে রয়েছে সুদিন।" রিপাবলিকান দলের প্রতিদ্বন্দ্বি মিট রম্নিকে হারিয়ে দিয়ে তিনি পুনরায় নির্বাচিত হলেন। 

মিঃ ওবামা শিকাগোতে তার নির্বাচনী প্রচারের প্রধান কার্যালয় থেকে বিজয় ভাষণে তার সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন।
"আমরা একটি আমেরিকান পরিবার। যারা একসঙ্গে উঠে দাঁড়াই এবং পতনেও একসঙ্গে  থাকে। আমরা গোটা জাতিই যেন একটি মানুষ।"


তিনি তার প্রতিদ্বন্দ্বি মিঃ রম্নি এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে পল রয়ানকে ধন্যবাদ দেন। তিনি বলেন যে তিনি এবং মিট রম্নি অনেক বিষয়ে গভীরভাবে দ্বিমত পোষণ করেন তবে একটি জায়গায় দু'জনের মধ্যে কোন তফাত নেই আর তা হচ্ছে দুই জনই দেশকে গভীরভাবে ভালবাসেন।

প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেছেন, পশ্চিম বার্মায় মুসলমান ও বৌদ্ধদের মধ্যে জাতিগত সহিংসতার পেছনে কোনও অজুহাত দেওয়া যায় না।রাখাইন রাজ্যে জাতিগত এই দাঙ্গার বিপদের ব্যাপারে তিনি দেশটিকে সতর্ক করে দিয়েছেন। নাগরিকত্বের স্বীকৃতি দেয়ার পাশাপাশি বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। আর এ বিষয়ে মিয়ানমার সরকার ইতিবাচক সাড়া দেখিয়েছে বলে সোমবার হোয়াইট হাউজের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে। 


একদিকে মিসরের মধ্যস্থতায় রকেট হামলা বন্ধে ফিলিস্তিনি জঙ্গিদের রাজি করানোর চেষ্টা, অন্যদিকে আত্মরক্ষার বুলি তুলে ইসরায়েলি হামলার প্রতি সমর্থন জানানো—পশ্চিমাদের পরস্পরবিরোধী এই অবস্থান মধ্যপ্রাচ্যে নতুন সংকটের সৃষ্টি করেছে।গাজা ভূখণ্ডে গত বুধবার থেকে ইসরায়েলের অব্যাহত সামরিক হামলায় বহু বেসামরিক লোক হতাহত হয়েছে। পশ্চিমারা এ ঘটনায় নিন্দা জানালেও তারা এর জন্য মূলত হামাসকেই দায়ী করেছে।

ইজরায়েল ও প্যালেস্টাইনের হামাস গোষ্ঠীর লোকরা এখনও শান্তি স্থাপন নিয়ে কোনও চুক্তিতে আসতে পারছে না. ইজিপ্টের কায়রো শহরে ইজিপ্টের মধ্যস্থতার মাধ্যমে বকলমে যে আলোচনা করা হচ্ছে, তা চলছে গাজা সেক্টরে বোমা বর্ষণ ও ইজরায়েলের এলাকায় রকেট ছোঁড়ার মধ্যেই.

ইজরায়েলের অপারেশন শুরু হওয়ার পর থেকে প্যালেস্টাইনে নাগরিকদের মধ্যে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৯০ জন, আর তাঁদের মধ্যে বহু নারী ও শিশু রয়েছেন, ইজরায়েলেরও তিনজন নাগরিকের প্রাণহানি হয়েছে.

ইজিপ্টের মধ্যস্থতায় প্যালেস্টাইনের গোষ্ঠীর সঙ্গে ইজরায়েলের প্রতিনিধিকে আলোচনা করতে ডেকে আনা হয়েছে, তাদের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যোগ দিয়েছে কাতার ও তুরস্ক, কিন্তু নিজেদের সমস্ত কাজই তারা ইজিপ্টে রাষ্ট্রপতি মুহাম্মেদ মুর্সির মাধ্যমে যোগাযোগ করে করছে.

হামাসের লোকরা অন্যান্য গোষ্ঠীর সাথে মিলে গাজা এলাকার ঘেরাও সম্পূর্ণভাবে তুলে নেওয়ার দাবী করছে, গোলা বর্ষণ বন্ধ করতে ও তাদের নেতাদের এক একজনকে আলাদা করে হত্যা করার অভ্যাস বন্ধ করার দাবী করছে. নিজেদের দিক থেকে ইজরায়েল দাবী করছে কম করে হলেও পনেরো বছর বা তার বেশী সময়ের জন্য যুদ্ধ বন্ধ করার গ্যারান্টি দেওয়ার, অবিলম্বে এই এলাকায় অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করার ও ইজরায়েলের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর উপরে আক্রমণ বন্ধ করার.

রাশিয়ার বিশেষজ্ঞদের মধ্যেও কোন ঐক্যবদ্ধ মত নেই যে, শান্তি চুক্তির সম্ভাবনা কতটা বাস্তব সম্মত তা নিয়ে. রাশিয়ার স্ট্র্যাটেজিক মূল্যায়ণ ইনস্টিটিউটের বিশেষজ্ঞ আঝদার কুরতভ এই প্রসঙ্গে বলেছেন:

"কোন সন্দেহই নেই যে, শান্তি চুক্তি হতেই পারে. কারণ তা সবসময়ই একটি প্রাক্ পর্বের শর্ত, যাতে দুই পক্ষই সম্পূর্ণ প্রসারিত ভাবে আলোচনার টেবিলে বসতে পারে. রাজনৈতিক উপায়ে ইজরায়েল ও প্যালেস্টাইনের মধ্যে সমাধান সম্ভব নয়, এমন একটি সমস্যাও নেই. সুতরাং আমি শান্তি স্থাপন হওয়া নিয়ে সম্ভাবনাকে বাদ দিচ্ছি না".

স্ট্র্যাটেজিক বিশ্লেষণ ও মূল্যায়ণ ইনস্টিটিউটের বিশেষজ্ঞ সের্গেই দেমিদেঙ্কো দুই পক্ষ যুদ্ধের বিরোধ বাদ দিতে পারে কি না সেই প্রশ্নের উত্তর দিয়ে বলেছেন:

"না, তারা পারে না. হামাসের নিয়ন্ত্রণে নেই এমন অনেক প্যালেস্তিনীয় গোষ্ঠী রয়েছে. হামাসের উপরেই ঠেলা ধাক্কা দেওয়া যেতে পারে যে, তারাই সব কিছুতে দোষী, কিন্তু এটা একেবারেই সেই রকমের নয়. গাজা সেক্টর দ্বন্দ্বে বহু বিভক্ত, তাই সবার সঙ্গে শান্তি চুক্তি যে কোন ভাবেই করা সম্ভব নয়. এই পরিস্থিতিতে কোন রকমের কার্যকরী শান্তি চুক্তি সম্বন্ধে বলা অবশ্যই যেতে পারে না".

ইজরায়েলের সরকার এর মধ্যেই হামাস গোষ্ঠীকে ৩৬ ঘন্টার চরমপত্র দিয়েছে. যদি এই সময়ের মধ্যে গাজা সেক্টর থেকে ইজরায়েলের দিকে রকেট ছোঁড়া বন্ধ করা না হয়, তবে তারা সামরিক অপারেশন আরও বড় করে করবে. এই বিষয়ে ঘোষণা করেছেন ইজরায়েলের অর্থ মন্ত্রী ইউভাল শ্টাইনিত্স. বিশেষজ্ঞরা এই প্রসঙ্গে মনোযোগ দিয়েছেন মার্কিন রাষ্ট্রপতিবারাক ওবামার ঘোষণার উপরে, যিনি ইজরায়েলের পক্ষ থেকে আক্রমণ কে বলেছেন প্রয়োজনীয় আত্মরক্ষা বলেই, তাঁর কথামতো:

"বিশ্বে এমন একটা দেশও নেই, যারা নিজেদের উপরে রকেট বর্ষণ সহ্য করবে, যা অন্যের এলাকা থেকে তাদের নাগরিকদের উপরে এসে পড়ছে. আমরা এই এলাকায় সক্রিয় ভাবেই কাজ করছি".

মঙ্গলবারে গাজা সেক্টরে সমর্থন সফরে পৌঁছে যাচ্ছেন আরব লীগের সাধারন সম্পাদক নাবিল আল- আরাবি ও এক মন্ত্রী পর্যায়ের প্রতিনিধি দল. কায়রো শহরে আরব লীগের পররাষ্ট্র মন্ত্রী পর্যায়ে এক বৈঠকে গাজা সেক্টরে মিশন পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল. খুবই আসন্ন সময়ে এই এলাকায় রাষ্ট্রসঙ্ঘের মহাসচিব বান কী মুন সফরে আসছেন.



ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান ক্যাথারিন অ্যাস্টন বলেন, 'এ ধরনের হামলা থেকে জনগণকে রক্ষার অধিকার ইসরায়েলের রয়েছে। আমি ইসরায়েলের প্রতি এই হামলার সমুচিত জবাব দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।' তিনি আশা প্রকাশ করেন, মিসরের প্রধানমন্ত্রী হিশাম কান্দিল পরিস্থিতি শান্ত করতে সমর্থ হবেন।


যুক্তরাষ্ট্র সরকারও ইসরায়েলের হামলার প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড জানান, আত্মরক্ষার অধিকার ইসরায়েলের রয়েছে। তবে মিসরের প্রধানমন্ত্রী গাজা পরিস্থিতির জন্য ইসরায়েলি আগ্রাসনকে দায়ী করেছেন। প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিও গাজা পরিস্থিতির জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করে জানান, এ ঘটনা মানবতার বিরুদ্ধে হামলা।


তুর্কি প্রধানমন্ত্রী রিসেপ তায়িপ এরদোয়ান অভিযোগ করেন, আগামী জানুয়ারির নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটারদের খুশি করতে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা গাজায় বিমান হামলার অনুমতি দিয়েছেন। ওই নির্বাচনে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আবারো লড়াই করবেন।


পাকিস্তানও ইসরায়েলি বিমান হামলার নিন্দা জানিয়েছে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাদ গাজা পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ জানিয়ে জানান, মিসর এই উত্তেজনা প্রশমনে ভূমিকা রাখতে পারবে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও একই রকম আশা প্রকাশ করে জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মিসরের ভূমিকার প্রতি সমর্থন রয়েছে মস্কোর।


সৌদি বাদশা আবদুল্লাহ আশা করছেন, পরিস্থিতি শান্ত হয়ে আসবে।


বার্মা সফরে গিয়ে প্রেসিডেন্ট ওবামা রেঙ্গুন বিশ্ববিদ্যালয়ে দেওয়া এক ভাষণে এই আহবান জানান।মুসলিম রোহিঙ্গাদেরকে বার্মায় রাষ্ট্রীয়ভাবে মূল সমাজে অন্তর্ভুক্ত করে নেওয়ার জন্যেও মি. ওবামা জোরালোভাবে অনুরোধ করেন।



উল্লেখ্য যে, রোহিঙ্গাদেরকে বার্মার নাগরিক হিসেবে স্বীকার করা হয় না।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোনও প্রেসিডেন্ট এই প্রথম বার্মা সফরে গেলেন।

তিনি দেশটির অব্যাহত সংস্কার কর্মসূচির জন্যে যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।


তবে বলেছেন, জাতীয় সমঝোতা ছাড়া কোনও সংস্কার কর্মসূচি সফল হতে পারে না।

এর আগে প্রেসিডেন্ট ওবামা প্রেসিডেন্ট থেন সেইন ও বিরোধী নেত্রী অং সান সূ চি'র সাথে সাক্ষাৎ করেছেন।

প্রেসিডেন্ট ওবামার এই সফরের সময় বার্মা সরকার ৫০ জনের মতো রাজনৈতিক বন্দীকে মুক্তি দিয়েছে।

সামরিক বাহিনী সমর্থিত সরকার গত বছর সংস্কার কর্মসূচি গ্রহণের পর থেকে কয়েক দফায় বেশকিছু রাজনৈতিক বন্দীকে মুক্তি দিয়েছে।

আন্দোলনকারীরা বলছেন যে এখনও প্রায় দুশোর মতো রাজনৈতিক বন্দীকে কারাগারে আটক করে রাখা হয়েছে।

প্রেসিডেন্ট ওবামার এই সফর খুবই সংক্ষিপ্ত, মাত্র ৬ ঘণ্টার জন্যে।


মিয়ানমারে ঐতিহাসিক সফরের পর ক্যাম্বোডিয়া যাওয়ার পথে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের এয়ারফোর্স ওয়ান থেকে এই বিবৃতি আসে। 

বৌদ্ধপ্রধান দেশ মিয়ানমারে ইসলাম ধর্মাবলম্বী রোহিঙ্গাদের ওপর নতুন করে নির্যাতনের মধ্যে ওবামা তার সফরে এই বিষয়টি তুললেন। 

বাস্তচ্যুত ৫ লাখের বেশি রোহিঙ্গা দীর্ঘ দিন ধরে বাংলাদেশে রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে শরণার্থীদের চাপ বহন করে আসা বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে বারবার মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে। 

সম্প্রতি রাখাইন প্রদেশে নতুন করে দাঙ্গা শুরু হলে দলে দলে রোহিঙ্গারা মিয়ানমার ছাড়তে শুরু করে। এর মধ্যে অনেকে বাংলাদেশে ঢোকারও চেষ্টা চালায়। তবে এবার বাংলাদেশ তাদের খাদ্য ও পানীয় দিলেও আশ্রয় দেয়নি। 

যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে মিয়ানমার সফরে দেশটির প্রেসিডেন্ট থিয়েন সেইন, বিরোধী নেত্রী অং সান সু চির সঙ্গে বৈঠক করেন ওবামা। 

সু চি তার সাম্প্রতিক ভারতে সফরে রোহিঙ্গাদের 'বাংলাদেশ থেকে আসা অভিবাসী' বলে উল্লেখ করেন, যার প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা। 

হোয়াইট হাউজের বিবৃতিতে বলা হয়, "রাখাইন রাজ্যে পরিস্থিতি শান্ত করতে নিজেদের অঙ্গীকারই শুধু তারা (মিয়ানমার) করেনি, বাস্তচ্যুত রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে আনা এবং তাদের নাগরিকত্ব সমস্যার সমাধানের কথাও বলেছে।" 

সু চির বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি রোববার এক বিবৃতিতে বলেন, "ঐতিহাসিকভাবে এটা প্রমাণিত যে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে শত শত বছর ধরে বাস করছে। বিভিন্ন সময় মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতির কারণে অনেক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পাড়ি জমিয়েছে।" 

সফরে ইয়াঙ্গুন ইউনিভার্সিটিতে দেয়া ভাষণেও রোহিঙ্গা এবং রাখাইন রাজ্যে সংঘাতের বিষয়টি তুলে ধরেন ওবামা। 

এই সফরে মিয়ানমারের নাম নিয়ে নিজের দেশের অবস্থান অনুসরণ করে 'বার্মা' বলেই সম্বোধন করেন ওবামা। ইয়াঙ্গুন ইউনিভার্সিটিকেও বলেন রেঙ্গুন। বিবৃতিতেও বার্মা ও রেঙ্গুনই ব্যবহার করা হয়, যে নামগুলো দেশটির জান্তা সরকার পরিবর্তন করেছিল। 

রাখাইন রাজ্যে সংঘাতের অবসান ঘটানোর আহ্বান জানিয়ে ওবামা ইউনিভার্সিটিতে ভাষণে বলেন, এই রাজ্যে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসা রাখাইনরা দারিদ্র্যের কষাঘাত ও নির্যাতন সহ্য করেছে। তবে তা কখনোই নিরীহ মানুষের ওপর হামলার পক্ষে যুক্তি হিসেবে দাঁড় করানো যায় না। 

"আর রোহিঙ্গা, তাদেরও একই মর্যাদা নিয়ে সেখানে বসবাসের অধিকার রয়েছে। মানবতার স্বার্থে, এই দেশের ভবিষ্যতের স্বার্থে তাদের (রোহিঙ্গা) নির্যাতন এবং উস্কানি দেয়া বন্ধ করতে হবে।" 

মিয়ানমারের রোহিঙ্গারা নিজেদের আদিবাসী দাবি করে এলেও তাদের ওই অধিকারের স্বীকৃতি দেয় না। 

প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারে দমন-পীড়নের মুখে দুই যুগ আগে থেকে বাংলাদেশে ঢুকতে থাকে রোহিঙ্গারা। ১৯৯২-৯৩ সালে রোহিঙ্গাদের সবচেয়ে বড় দল বাংলাদেশে ঢুকে আসে। 

শুরুতে ২ লাখ ৫০ হাজার ৮৭৭ জন রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছিল। এর মধ্যে ২ লাখ ৩৬ হাজার ৫৯৯ জনকে ফেরত পাঠানো হয় বলে বাংলাদেশ জানায়। 

সু চির বক্তব্যের প্রতিবাদে দীপু মনি বলেন, মিয়ানমার যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে ইতোমধ্যেই ২ লাখ ৩৬ হাজার ৫৯৯ জন রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নিয়েছে। তাই তারা বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে অবৈধ অভিবাসী হওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। 

প্রথম দফায় আসা বাকি রোহিঙ্গারা তাদের সন্তান-সন্তুতিসহ কক্সবাজারে দুটি শরণার্থী শিবিরে অবস্থান করছেন। 

তবে বিভিন্ন সময়ে ঢুকে পড়া চার থেকে পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা রয়েছে শিবিরের বাইরে। হিসাবের বাইরে থাকা এসব রোহিঙ্গার পরিচয় নিশ্চিত হয়ে তাদের ফিরিয়ে নেয়ার প্রতিশ্রুতি বিভিন্ন সময় মিয়ানমারের পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে। 

রোহিঙ্গাদের এবার ঢুকতে না দেয়ায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের সমালোচনা রয়েছে। তবে বাংলাদেশ বলছে, কয়েক লাখের পর নতুন শরণার্থীর চাপ সামলানো কঠিন। 


১৯শে নভেম্বর সোমবারে ভারতীয় রাষ্ট্রীয় নেত্রী ও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর পঁচানব্বই তম জন্ম দিবস. স্বাধীন ভারতবর্ষের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর কন্যা ইন্দিরা, ১৯৬৬ সাল থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত অপরিবর্তনীয় ভাবেই ভারতের প্রধানমন্ত্রীর পদে আসীন ছিলেন, আর তারপরে আবার ১৯৮০ সালে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে ১৯৮৪ সালের ৩১শে অক্টোবর পর্যন্ত এই পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন, যে দিনে এক ষঢ়যন্ত্রের ফলে তাঁর অকাল প্রয়াণ হয়েছিল দেহরক্ষীর গুলিতে. বিষয় নিয়ে বিশদ করে লিখেছেন আমাদের সমীক্ষক গিওর্গি ভানেত্সভ.

আজকের এই দিনে যে দিবস পালিত হচ্ছে, তা আমাদের সুযোগ করে দেয় স্বাধীন ভারতের বিকাশের পরিপ্রেক্ষিতে নেহরু – গান্ধী পরিবারের ভূমিকা নিয়ে কথা বলার, যা ভারতকে এক প্রাক্তন উপনিবেশ থেকে এক দ্রুত উন্নতিশীল দেশে পরিণত করেছে. জওহরলাল নেহরু, ইন্দিরা গান্ধী, রাজীব গান্ধী বিভিন্ন সময়ে ভারতের মন্ত্রীসভার প্রধান হয়েছেন. সোনিয়া গান্ধী ও শেষমেষ রাহুল গান্ধী আজ দেশের ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসে সর্ব্বোচ্চ পদ গুলিতে রয়েছেন. তাঁদের ভারতের জাতীয় বিকাশের ক্ষেত্রে অবদান অপরিসীম.

২০০৯ সালে যখন সংযুক্ত প্রগতিশীল জোট – বাম ও মধ্য পন্থী দল গুলির গোষ্ঠী, যাদের নেতৃত্বে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস রয়েছে, তারা দ্বিতীয় বারের জন্য ক্ষমতায় উপনীত হয়েছিল, তখন মনে হয়েছিল যে, ভারত সঠিক পথেই চলছে. অর্থনীতি বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে পেরেছিল শতকরা সাত ভাগ সামগ্রিক বার্ষিক উত্পাদনের উন্নতি দিয়ে, আর তার গতি বাড়তেই থাকছিল. মূল্যবৃদ্ধির সূচক ছিল নীচু আর "বিশ্বের সর্ব বৃহত্ গণতন্ত্রের" অর্থনীতি যদিও বিতর্কের অবকাশ রেখেছিল, তাও ছিল খুবই স্থিতিশীল. কিন্তু মাত্র দুই বছর পরেই অর্থনৈতিক প্রগতি মন্দ হয়ে পড়েছিল, বাজেট ঘাটতি বৃদ্ধি হতে শুরু করেছিল, আর মূল্যবৃদ্ধি ২০১০ সালের শুরু থেকে ২০১২ সালের শুরু পর্যন্ত কম থাকার পরে দ্রুত বাড়তে শুরু করেছিল. দেশের জনগনের মধ্যেও অসন্তোষ বৃদ্ধি হতে শুরু করেছিল. সরকারের সমালোচনা শক্তিশালী হতে শুরু করেছিল, ক্ষমতাসীন দলের নেতৃত্বেরও কাজকর্মের সমালোচনা বাড়তে শুরু করেছিল.

ভারতে পাঁচটি রাজ্যে এই বছরের বসন্তে হয়ে যাওয়া বিধানসভা নির্বাচনে দেখা গিয়েছিল যে, ভারতীয় লোকরা ক্ষমতাসীন "জাতীয় কংগ্রেসের" প্রতি আস্থা হারিয়েছেন. নির্বাচন প্রশাসনের জন্য পরিণত হয়েছিল বেদনা দায়ক ঘটনা: পাঁচটির মধ্যে মাত্র একটি রাজ্যে তাঁরা জয়ী হতে পেরেছিলেন. বিরোধী পক্ষের জন্য সাফল্য বয়ে আনা নির্বাচন, প্রতিক্রিয়া হয়েছিল পরপর বেশ কয়েকটি বড় দুর্নীতি সংক্রান্ত স্ক্যান্ডালের, যা এই "জাতীয় কংগ্রেসের" সঙ্গেই জড়িত, আর তারই সঙ্গে দেশের অর্থনৈতিক সমস্যার সঙ্গেও, - এই কথা উল্লেখ করে রাশিয়ার রাজনীতি বিশেষজ্ঞ আলেক্সেই মাকারকিন বলেছেন:

"ভারতের, সেই দেশের, যেখানে রয়েছে রাজনৈতিক ভাবে গণতন্ত্র, সেখানে পরবর্তী নির্বাচনে নিজেদের মুখ রক্ষা করতে না পারা মন্ত্রীসভাকে বিশ্বাস ও সমর্থন না জানানোর উপায় রয়েছে. যদি মন্ত্রীসভা নিজেদের দুর্নীতির কারণে অনেক বেশী দূর অবধি চলে যায়, তবে বিরোধী পক্ষকে ক্ষমতায় আনার উপায় রয়েছে, আর তা সভ্য উপায়েই, কোন রাস্তায় আন্দোলন না করেই".

ভারতীয় রাজ্য গুলিতে স্থানীয় নির্বাচনে হার হওয়া – খুবই আশঙ্কা জনক সঙ্কেত. "জাতীয় কংগ্রেসের" নেত্রী সোনিয়া গান্ধী ইতিমধ্যেই আশ্বাস দিয়েছেন "এই বিষয় নিয়ে পরিস্থিতি বিচার করে দেখার ও হয়ে যাওয়া ভুল গুলি ঠিক করার জন্য প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা তৈরী করার". ভারতের প্রধানমন্ত্রী ডঃ মনমোহন সিংহ তাঁর মন্ত্রীসভায় রদবদল করেছেন ও তাকে আরও নবীন প্রজন্মের নেতা বহুল করে তুলেছেন. কিন্তু রাহুল গান্ধী, যিনি একই সঙ্গে দেশের তিন প্রাক্তন প্রধানের ছেলে, নাতি ও প্রপৌত্র, তিনি সরকারে প্রবেশ করেন নি. কেউ আবার ইতিমধ্যেই রাহুল গান্ধীর রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে ইতি টেনে দেওয়ার কথা তুলেছেন, আবার অন্য কেউ বলেছেন এই পরম্পরার একেবারেই ইতি হওয়ার কথা.

নিজেদের সময়ে নেহরু – গান্ধী পরিবার পরাজয় খুব একটা কম দেখেন নি, কিন্তু প্রত্যেকবারই তাঁরা আবার উঠে দাঁড়িয়েছেন ও নিজেদের প্রভাব পুনর্স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছেন. এখন দলের নেতাদের, যাঁদের মধ্যে রাহুলও রয়েছেন, তাঁদের অনেক কিছুই করতে হবে, যাতে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস ও নেহরু- গান্ধী পরম্পরার উপরে বিশ্বাস ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়. এর জন্য এক ভাল উদাহরণ রয়েছে – ইন্দিরা গান্ধী সব সময়েই শেষ অবধি লড়াই করে গিয়েছেন.

নাদিরা মজুমদার

জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন ও তেহরান সম্মেলন

সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১২

সম্প্রতি ইরানের তেহরানে জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের (ন্যাম) ষোড়োশোতম সম্মেলন হয়ে গেল। পঞ্চাশের দশকে আন্তর্জাতিক প্রাঙ্গণে ন্যাম যে শোরগোল তুলেছিল, অনেক অনেক বছর বাদে, আগষ্ট মাসের শেষের দিকের কয়েকটি দিনের শোরগোল প্রায় ভুলে যাওয়া সেই দিনগুলোর কথা আবার মনে করিয়ে দেয়। ন্যামের মূলমন্ত্র : আমরা (এশিয়া, আফ্রিকা ও ল্যাটিন আমেরিকার উন্নয়নশীল দেশসমূহ) বামেও নেই, ডানেও নেই; আমরা 'জোট নিরপেক্ষ'। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধোত্তর যুগে, ঠান্ডাযুদ্ধের প্রবৃদ্ধমান তীব্রতার সময় তখন; এশিয়া ও আফ্রিকার সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত দেশগুলো ঔপনিবেশিক প্রভাবমুক্তির পথ খুঁজে বেড়াচ্ছে। সম্পদশালী, শিল্পভিত্তিক উত্তরের সঙ্গে সদ্যমুক্ত কৃষিপ্রধান দরিদ্র দক্ষিণের সম্পর্ক কেমন হবে – বিরাট এক প্রহেলিকা ও চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দেয়। 'জোট নিরপেক্ষ' শব্দটি ভি কে কৃষ্ণ মেনন প্রথম ব্যবহার করেন, ১৯৫৩ সালে, জাতিসংঘে। মেননের বন্ধু জওহরলাল নেহরু 'জোট নিরপেক্ষ' শব্দটি আবারো ব্যবহার করেন ১৯৫৪ সালে। কাগজে কলমে 'জোট নিরপেক্ষের' জন্মসাল ১৯৬১ সাল; এবং পোশাকী নাম 'জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন' ওরফে ন্যাম অর্জন করে আরো পরে, ১৯৭৬ সালে -মিসরের কায়রোতে অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রীয় প্রধানদের পঞ্চম সম্মেলনের সময়ে। ন্যামের ইতিহাসে ১৯৫৫ সালে ইন্দোনেশিয়ার বান্দুং- অনুষ্ঠিত য়ে-বান্দুং কনফারেন্স ছিল প্রথম গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। এই কনফারেন্সেই সোয়েকার্নো(প্রচলিত উচ্চারণ সুকর্ন) বলেন, "অনেক প্রজন্ম ধরেই আমরা পৃথিবীতে ছিলাম বাকহীন। সেই মানুষগুলো, যারা অশেষ দারিদ্র্য ও অবমাননার মধ্যে রয়েছে, তাদের জন্য যারা সিদ্ধান্তগুলো নেয় তাতে তাদেরই স্বার্থ প্রাধান্য পায়"। ন্যাম আসলে নিজস্ব অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক আইডেনটিটি'র অন্বেষার বার্তা শোনায়। তাই ন্যাম অনায়াসে এমন মুক্ত বিশ্বের আহবান নাকচ করে, যে বিশ্বের অংশীদার বর্ণবৈষম্যবাদী দক্ষিণ আফ্রিকাও অন্তর্ভুক্ত। এই বর্ণবাদী দক্ষিণ আফ্রিকার পতন ঘটে ১৯৯১ সালে। পরে সে ন্যামের সদস্য হয়; এবং বর্তমানে ব্রিকসভুক্ত দেশ একটি।

ন্যামের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন সেই সময়কার পাঁচ বিশ্ব রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব : ইন্দোনেশিয়ার প্রথম প্রেসিডেন্ট আখমেদ সোয়েকার্ণো, ভারতের প্রথম প্রধাণমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু, যুগোস্লাভিয়ার প্রেসিডেন্ট ইয়োসিপ ব্রোয টিটো, মিসরের দ্বিতীয় প্রেসিডেন্ট গামাল আব্দুল নাসের ও ঘানার প্রেসিডেন্ট ডঃ কোয়ামে ন্ক্রুমা। পাঁচ দেশের এই পাঁচ নেতার সক্রিয় কর্মোদ্যোগ "পাঁচের উদ্যোগ" নামে পরিচিতি পায়। ন্যাম এশিয়া, আফ্রিকা ও ল্যাটিন আমেরিকার উন্নয়নশীল দেশগুলোর গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা মঞ্চে পরিণত হয়। আকারের দিক দিয়ে বর্তমানে ন্যাম, জাতিসংঘের পরেই, দ্বিতীয় বৃহত্তম আন্তর্জাতিক সংস্থা। ন্যামের কাঠামোগত গঠণ এমন যে নিউইয়র্কে অস্থায়ী ঠিকানা ছাড়া কোন স্থায়ী কার্যালয় এর নেই। অর্থাৎ কাঠামোগতভাবে অত্যন্ত ঢিলেঢালা সংস্থা একটি।

ফলে, আপাতদৃষ্টে ষাট ও সত্তরের দশকে ন্যাম যে রাজনৈতিক আভা ও আকর্ষণের সৃষ্টিতে সক্ষম হয়, তার প্রভাব প্রতিফলিত হয় যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত বিভিন্ন দেশের ন্যাম সদস্যদেশগুলোর সঙ্গে দ্বি-পাক্ষিক ও বহু-পাক্ষিক অর্থনৈতিক চুক্তি সম্পাদনের মধ্য দিয়ে; আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল, বিশ্বব্যাঙ্ক ইত্যাদির মতো আন্তর্জাতিক আর্থ-সংন্থাগুলোও ভূতপূর্ব উপনিবেশগুলোকে বুদ্ধিপরামর্শ ও সহায়সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। শেষোক্ত সংস্থাদুটো উন্নয়নশীল দেশের সেবার জন্যই মূলত প্রতিষ্ঠিত হয়। ঠান্ডাযুদ্ধের যুগে, ন্যামকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নতুন রূপে ও আদলে গড়ে ওঠে, প্রায় অলিখিতভাবে দুই শিবিরের 'প্রভাব বলয়'ও স্বীকৃতি পায়। অবশ্য বর্তমান মিলেনিয়ামে ইউরোপীয় অর্থনৈতিক বিপর্যয়কে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল, বিশ্বব্যাঙ্ক ইত্যাদির ভূমিকা পালনের রদবদল সুস্পষ্ট হতে থাকে। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল 'প্রথম বিশ্বে'র বেইলআউটের ভূমিকা নেয়; 'প্রথম বিশ্ব' ও তৃতীয বিশ্বে'র চিরায়ত ধারণা বাতিল হয়ে সূচিত হয় 'দীনদৈন্যতার বিশ্বায়িত যুগের'।

বিগত শতাব্দির আশির দশকের শেষাশেষি ঠান্ডাযুদ্ধ-যুগের অবসানের সঙ্গে ন্যামের গুরুত্ব কমলেও, একেবারে বিলুপ্ত হয়নি, ঢিমেতালে কোনরকমে টিকে থাকে সে। এবং ন্যাম শেষ পর্যন্ত পশ্চিমের লাইম লাইটে আসে ২০১২ সালে, তেহরান ন্যাম সম্মেলনকে কেন্দ্র করে। এই প্রসঙ্গে পরে আসছি। সোভিয়েত ইউনিয়নের বিখন্ডায়নের দরুণ আপাতদৃষ্টে যুক্তরাষ্ট্র নিঃসঙ্গ সুপার পাওয়ার হিসেবে আবির্ভূত হয়। নতুন এক বিশ্ব-বিন্যাস সৃষ্টির সূচনা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন নিজেকে সংহত করার বিপুল কর্মে হাত দেয়। ইউরোপের অন্যতম বৃহত্তম ফেডারেশন, টিটোর যুগোস্লাভিয়ায় পর্যায়ক্রমে নৃতাত্ত্বিক ও র্ধমীয় সংঘাত তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে ওঠে। শেষপর্যন্ত ফেডারেশনটি খন্ড বিখন্ডিত হয়, একাধিক ছোট ছোট প্রজাতন্ত্রের জন্ম দেয়। সোভিয়েত অংশেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে। ঠান্ডাযুদ্ধোত্তরকালের এই নৃতাত্ত্বিক ও ধর্মীয় সংঘাতের মাধ্যমে প্রচ্ছন্নভাবে ইউরোপে ডারউইনিজম-য়ের ভিত্তি পাকাপোক্ত হয়। ন্যামের অন্যতম শরীক যুগোস্লাভিয়া তালিকাবিযুক্ত হয়, এবং ইইউ'র সম্প্রসারণ প্রকল্প অনুযায়ী প্রাক্তন ফেডারেশনের ছোট ছোট প্রজাতন্ত্রের অনেকেই হয় ইইউ'র পূর্ণ সদস্যপদ অর্জন করে বা সদস্যপদ প্রার্থি হয়। তাছাড়াও, ২০০৪ সালে মাল্টা ও সাইপ্রাস ইইউ'র সদস্য হয় ও ন্যাম বর্জন করে। তবে ন্যামে বাড়তি নতুন কিছু দেশের সংযোজনও হয় – কেউবা সদস্য হয়, কেউবা পর্যবেক্ষকের পদাধিকার পায়। যেমন, সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রের মধ্যে তুর্কমেনিস্তান, উজবেকিস্তান, আজারবাইজান, বেলোরুস; বা পর্যবেক্ষকের ভূমিকায় বসনিয়া ও হের্সিগোভিনা, সার্বিয়া (প্রাক্তন যুগোস্লাভ ফেডারেশনের অন্তর্ভুক্ত ছিল), কিরগিজস্তান, তাজিকিস্তান, ক্রোয়েশিয়া, মন্টেনিগ্রো, ইউক্রেন ইত্যাদি দেশ। নতুন এই দেশগুলোর কোন কোনটির ইইউ'র, কারো বা ন্যাটো'র সদস্য হওয়ার ইচ্ছা রয়েছে, বা ন্যাটো'র সঙ্গে সহযোগিতা করছে, কারো বা নিজস্ব ভূ-খন্ডে যুক্তরাষ্ট্রের/ন্যাটোর সামরিক ঘাঁটিও রয়েছে। আবার ন্যামের সদস্য সৌদি আরব বা আফগানিস্তান ন্যাটোর "বিশেষ মর্যাদার (স্পেশাল স্টেটাস) অন্তর্ভুক্ত। বা সংযুক্ত আরব আমিরাত কি পাকিস্তান বা ওমান, কুয়েত, কাতার, জর্ডান যুক্তরাষ্ট্রের অতি ঘনিষ্ঠ বন্ধু রাষ্ট্র। পরিবর্তিত বিশ্ব-বিন্যাসের পরিপ্রেক্ষিতে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ – ট্রান্সআটলান্টিক জোট হিসেবে পরিগনিত হতে থাকে; এবং মধ্যপ্রাচ্যের পরিবারতান্ত্রিক দেশগুলো, যারা ন্যামেরও সদস্য, যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ'র সঙ্গে তাদের বন্ধুত্ব নিবিড় থেকে নিবিড়তম হয়। আশির দশকে আটবছর স্থায়ী রক্তক্ষয়ী ধ্বংসাত্মক ইরাক-ইরান যুদ্ধ ছিল ঐসব দেশের বন্ধুত্ব প্রকাশের প্রথম ব্যাপক বিস্তৃত দৃষ্টান্ত।

নতুন বিশ্ব-বিন্যাসের গড়নপ্রক্রিয়া অব্যাহত থাকে; ১৫ সদস্যের ইইউ সম্প্রসারিত হয়ে ২০০৬ সালের মধ্যে ২৭ সদস্যের বিশাল এক রাজনৈতিক "সুপ্রা-ন্যাশনাল" পরিচিতি নিয়ে আত্মপ্রকাশ করে। হয়ত বলা বাহুল্য হবে না যে "লিসবোন চুক্তি" পরবর্তীকালে ইইউ'কে পুঁজিভিত্তিক "সমাজতন্ত্রতুল্য" ব্লকের দিকে ঠেলে দেয়। ওয়ারস' চুক্তির বিলুপ্তির সঙ্গে সঙ্গে ন্যাটো'রও বিলুপ্তির সমঝোতা অগ্রাহ্য করে ইউরোপের পূর্বদিক বরাবর দেশগুলোকে সদস্যভুক্ত করে ন্যাটো আরো বৃহৎ হতে থাকে। অবশেষে রুশ হস্তক্ষেপ ইউক্রেণ ও জর্জিয়া'র ন্যাটোভুক্তিতে বাধ সাধে। ন্যাটো'র সম্প্রসারণের সঙ্গে তাল রেখে সম্প্রসারিত ইইউ'ও নিজস্ব 'স্ট্যান্ডিং সেনাদল' ব্যাটল গ্রুপস গড়ে তোলে। এবং পরবর্তীকালীন ঘটনাবলীতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ'র সমন্বয়ে গঠিত ট্রান্স-আটলান্টিক জোটের প্রবল প্রাধান্য লক্ষ্যণীয় হয়ে ওঠে। ন্যামের জীবনীশক্তির সলতেও টিপ টিপ করে জ্বলা অব্যাহত থাকে। ১৯৯৯ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ন্যামের সভাপতিত্বের পদটি ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা, মালয়েশিয়া, কিউবা ও মিসরের হাতে; ২০১২ সালে ইরান পরবর্তী তিন বছরের জন্য ন্যামের সভাপতিত্ব গ্রহণ করে। অনেক অনেক বছর বাদে ন্যামের ইরানি সভাপতিত্ব পশ্চিমে মহা সোরগোলের সৃষ্টি করে। শোরগোলের কারণ : ন্যাম ও ইরানকে অভিন্ন স্বরূপ হিসেবে দেখা হয়। জাতিসংঘের সাধারণ সম্পাদক বান কি মুনকে ন্যাম সম্মেলনে না যাওয়ার উপদেশও দেয়া হয়। প্রধাণ পরামর্শদাতা ও মুখপাত্রের ভূমিকা পালন করে কানাডা। স্থানীয় অধিবাসীদের ওপরে ডারউইনিজম নীতির সফল প্রয়োগকারী দেশগুলোর অন্যতম হিসেবে কানাডা সুপরিচিত। পরিবর্তিত বিশ্ব-বিন্যাসের পরিপ্রেক্ষিতে কানাডা তার "শাক্তিরক্ষকের ভূমিকা থেকে শাক্তির্নিমাণকারী"র ভূমিকায় অবতীর্ন হতে থাকে। ইরাক যুদ্ধে কানাডা পরোক্ষভাবে অংশ নেয়, কিন্তু লিবিয়ার ধ্বংসকর্মে প্রত্যক্ষ ভূমিকা নেয়। কানাডার পররাষ্ট্র মন্ত্রী "ইরানের কুখ্যাত মানবাধিকার রেকর্ডের" বরাত দিয়ে বান কি মুনকে লেখেন যে "ইরান আসলে তার উদ্দেশ্য হাসিলের ধান্দায় রয়েছে। তাঁর এই তেহরান ভ্রমণ প্রশাসনের বৈধতা ও অপরাধ মোচনের সহায়ক হবে, যা নাকি কানাডার দৃষ্টিকোণে বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তার প্রতি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একক এক কারণ", তাই তাঁর ন্যাম সম্মেলনে যোগদান মোটেই ঠিক হবে না। কিন্তু বান কি মুন তা অগ্রাহ্য করেন ও সম্মেলনে যান। দিনকয় আগে কানাডা ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সর্ম্পক ছিন্ন করেছে।

নতুন বিশ্ব-বিন্যাসকে বিশেষভাবে ত্বরান্বিত করে একাধিক আন্তর্জাতিক ঘটনা : নাইনএলেভেনের ঘটনা; বিশ্বায়িত অর্থনৈতিক বিপর্যয় ও মন্দা; খাদ্য সামগ্রীর বিশ্বায়িত অপর্যাপ্ততা, ও আরবীয় বসন্ত। নাইনএলেভেন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে "হয় আমাদের সঙ্গে আছ, নয়ত আমাদের বিরুদ্ধে তুমি" নীতির মাধ্যমে বিশ্ব রাজনীতিতে নিরপেক্ষতাকে একেবারেই নাকচ করে দেয়া হয়। সারভাইভ্যাল ফর দি ফিটেস্টে'র আরেক যুগের সূচনা করে। বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাস বিরোধী নীতির অধীনে প্রথমে আফগানিন্তানে ও পরে ইরাকে যুদ্ধ পরিচালিত হয়। এর প্রায় অব্যবহিত পরপরই বাকি পরিস্থিতিগুলো ঘটতে শুরু করে। উন্নয়নশীলদেশগুলো বিভিন্ন পরিমাণে ও বিভিন্ন স্তরে নেতিবাচকভাবে আক্রান্ত হতে থাকে। আরবীয় বসন্তের ঝাপ্টায় মাগরেবভুক্তদেশগুলোতে রাজনৈতিক টর্নাডো ঘটে যায়; পরিবারতান্ত্রিকদেশগুলো অলৌকিকভাবে টর্নাডোকে ঠেকিয়ে রাখে, কিন্তু সিরিয়া ঘায়েল হয়। ইত্যবসরে বিশ্বায়িত অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মধ্যে ইউরোজোনভুক্ত গ্রিস আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের কাছে সহায়সাহায্যের আবেদন করে নতুন আর্থ-বিপর্যয় যুগের সূচনা করে; আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল ও ইইউ প্রধাণত ইউরোজোনের সমস্যা সমাধানে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়ে। আপাতদৃষ্টে বৈশ্বিক অর্থনীতির এই নিশ্চলতা উন্নয়নশীল দেশগুলোকে প্রান্তিক অবস্থায় নিয়ে আসে। অপরদিকে উদীয়মান অর্থনীতি ও অধিকতর উন্নয়নশীল দেশগুলোকে বিশ্ববাজারে সুপ্রতিষ্ঠিত হতে হলে, বাকিসব উন্নয়নশীল দেশকে (১৩৭টি দেশ) যে পরিমাণে 'রেডি' অবস্থায় থাকলে ভাল হত, সেই পরিমাণে 'রেডি' অবস্থায় তারা নেই (অর্থাৎ, কনসাম্পশন বা খরচ করা, বিনিয়োগ করা ও রফতানি করা – তিনের মধ্যে সমন্বয়ের অসম্পূর্ণতা)।

উপরোক্ত ঘটনাগুলো বিশ্ব-বিন্যাসকে বহুমুখি মেরুকরণের দিকে নিয়ে আসে। ফলে, পরিবর্তিত অবস্থার সঙ্গে ন্যামেরও খাপ খাইয়ে নেয়ার প্রয়োজন অনিবার্য হয়ে পড়েছে। ন্যাম আগের মতোই ইতিবাচকভাবে নন-এক্সক্লুসিভ মৈত্রীবন্ধনকে উৎসাহিত করতে পারে। যেমন, তুরস্ক, সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা, মিসর, ইরান বা অন্য কোন দেশ আঞ্চলিক শক্তি'র মারাত্মক প্রতিদ্বন্দ্বিতার পরিবর্তে নন-এক্সক্লুসিভ মৈত্রীবন্ধনের পথ বেছে নেবে। বা ন্যামের প্রতিষ্ঠাতা দেশ ভারতের কথাই ধরা যাক। ভারত ব্রিকস (ব্রাজিল, রাশিয়া, ইন্ডিয়া, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা)ভুক্ত অন্যতম দেশ একটি। প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং-য়ের যুক্তরাষ্ট্রপ্রীতি সুবিদিত, কিন্তু তিনি তেহরানে যান সবচেয়ে বড়ো প্রতিনিধির দল নিয়ে। ইরানি তেলের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত নিষেধাজ্ঞাকে পাশ কাটিয়ে ভারত ইরানি তেল কিনছে, আবার আফগানিস্তানেও জনহিতৈষী সহায়সাহায্য দিয়ে যাচ্ছে। ২০১৪ সালে ন্যাটো সৈন্য চলে যাওয়ার পরে আফগানিস্তানে ভারতের ভূমিকা আরো বৃদ্ধি পাবে। অপরদিকে ২০০৫ সালে ভারত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঐতিহাসিক পারমানবিক চুক্তি সই করে বটে কিন্তু অস্ত্রশস্ত্রের বিরাট অংশ কেনার সময়ে আনুকূল্য দেয়া হচ্ছে ফ্রান্সকে; বা পারমানবিক প্ল্যান্ট নির্মাণ হচ্ছে রুশদের সহযোগিতায়। ভারতের প্রথম সারির বুদ্ধিজীবিরা ও ভাষ্যকাররা ২০১২ সালের শুরুর দিকে ভারতের বৈদেশিক নীতির ওপরে একটি দলিল তৈরি করেন; ইচ্ছাকৃত প্ররোচনা সঞ্চারের জন্যই হোক বা স্রেফ কোন কারণ ছাড়াই হোক, লেখকের দল দলিলটির নাম দেন : জোটনিরপেক্ষ ২.০. (ননএলাইনমেন্ট ২.০.)। দলিলের এক জায়গায় রয়েছে: "আমাদের অবশ্যই এমন এক অবস্থান অর্জন করতে হবে যেখানে অন্য কোন দেশ এমন অবস্থানে থাকবে না যে আমাদের ওপরে অনায়াসে অসমীচীন অন্যায় প্রভাব প্রয়োগ করবে – বা আমাদের উত্তম বিচারবুদ্ধি ও ইচ্ছার বিরুদ্ধে আমাদেরকে ভিন্ন জিনিস করতে বাধ্য করবে"।

জোটনিরপেক্ষ ২.০.-য়ের উপরোক্ত বাণী হয়তবা প্রেরণার মন্ত্রও হতে পারে। কার্যকর ক্ষেত্রে এই বাণী এক অর্থে অসম্ভাবিত অংশীদারিত্ব ও মৈত্রীত্বের কথা বলছে। যেমন, সিরিয়া প্রশ্নে ন্যামের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা দেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রেরও ঘনিষ্ঠ বন্ধু দেশ মিসরের প্রেসিডেন্ট মোহম্মদ মরসি সৌদি আরব, তুরস্ক ও ইরানকে নিয়ে "কনট্যাক্ট গ্রুপ" গঠণের প্রস্তাব দেন। মরসি'র প্রস্তাবটি হয়তবা জাতিসংঘে পশ্চিমের হস্তক্ষেপমূলক ভূমিকা এবং চীন ও রাশিয়ার প্রতিবন্ধকতামূলক ভূমিকার মধ্যবর্তী একটি রফার ঈঙ্গিতবহ। একই সঙ্গে, বিগত কয়েক দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়সাহায্যের ওপর মিসরের নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনতে যত্নশীল মরসি। তেহরান সম্মেলনে যোগদানের আগে মরসি প্রথমে চীনে যান নতুন বিনিয়োগের সন্ধানে; মরসি'র এই রিব্যালান্সের অন্বেষার অর্থ : মধ্যপ্রাচ্যে ও সুয়েজ ক্যানালে চীনের অভিগম্যতা সম্ভব করা। আর্থিক প্রয়োজনের স্বার্থে মরসি'র মিসর আন্তর্জাতিক আর্থ-ব্যবস্থাকে পুনর্বিন্যাসের পথ বেছে নিয়েছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে মিসর রাশিয়া ও পারস্য উপসাগরীয় অন্যান্য দেশের বিনিয়োগকেও গ্রহণ করবে বলা যায়।

ঠান্ডাযুদ্ধোত্তর কালজয়ী হয়ে ন্যাম টিকে রয়েছে; পরিবর্তিত বিশ্ব-বিন্যাসের ক্রান্তিকালে ন্যামের প্রয়োজন শেষ হয়ে যায়নি। বিবিধ কারণে তেহরান সম্মেলনকে ঘিরে পশ্চিমে যে শোরগোল ওঠে, তা ষাট ও সত্তর দশকের ন্যামের স্বর্ণযুগের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। তেহরান সম্মেলনে যেমন উপস্থিত ছিল যুক্তরাষ্ট্রের কৃপাহীন শত্রু কিউবা, উত্তর কোরিয়া, ভেনিজুয়েলা, আবার ভারত, পাকিস্তান, ফিলিপাইনের বা কেনিয়ার মত সুহৃদ বন্ধুরাষ্ট্ররাও ছিল। পশ্চিমের আশঙ্কা হল : আন্তর্জাতিকভাবে অস্পৃশ্য ইরান কি অন্যায়ভাবে ন্যাম সম্মেলনকে কেন্দ্র করে কূটনৈতিক সম্মান ও গৌরব অর্জনের চেষ্টা করছে না? একইভাবে, ন্যাম কি ট্রান্স-আটলান্টিক জোটের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক ক্যু নয়? বা জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব এডভ্যান্সড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের ডীন ভালি নাসরের ভাষায় :"সমেম্ললন অনুষ্ঠাণের মাধ্যমে ইরান তার ওপরে আরোপিত কূটনৈতিক নিষেধাজ্ঞা ভাঙ্গার প্রয়াস পাচ্ছে"। তেহরান সম্মেলনে মিসর, লিবিয়া, তিউনেসিয়া, সিরিয়াও উপস্থিত ছিল। এরা সবাই যেমন ন্যামের র্দীঘদিনের সদস্য, আবার ঠান্ডাযুদ্ধোত্তরকালীন পশ্চিমের অর্থনৈতিক নীতিমালার দ্বারা গভীরভাবে ক্ষতিগ্রস্তও বটে। তেহরান সম্মেলনের প্রাক্কালে চীন আফ্রিকীয় দেশগুলোকে পরবর্তী তিন বছরে ২০ বিলিয়ন ডলার আর্থিক ঋণদানের অঙ্গীকার করে। অবশ্য চীনের এই পদক্ষেপে ইউরোপীয় নেতারা সমালোচনা মুখর; তাদের মতে চীন আফ্রিকার সম্পদে বাধাহীন অভিগম্যতা অর্জনের জন্য এই নীতি অবলম্বন করেছে। কিন্তু চীন আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের মাধ্যমে ইউরোজোনকে জলের উপরিভাগে ভেসে থাকতে সহায়সাহায্য দিয়ে আসছে।

জন্মলগ্নেই ন্যাম আসঞ্জনশীল বা কোহীসিভ অস্তিত্ব হিসেবে আবির্ভূত হয়নি। ন্যাম তার সেই আদি বৈশিষ্ট্য ধরে রেখেছে। ন্যাটো কি ইইউ বা ট্রান্স-আটলান্টিক জোটের সঙ্গে ন্যামের মূল পার্থক্য এখানেই। এইসব জোটের সদস্যদেশগুলো নিজেদের মধ্যে সলিডারিটি'র মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে সামরিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সহমর্মিতা ও সহধর্মিতার গঠণনির্মাণে প্রয়াসী, ও বাধ্যও বটে। ন্যাম বরং বিভিন্ন জোটভুক্ত দেশগুলোর অপ্রতিরোধ্য প্রভাবকে, সোয়েকার্ণো' বান্দুংয়ে যা বলেছিলেন, ঠেকানোর মাধ্যম হিসেবে আবির্ভূত হয়; ন্যামের দীক্ষামন্ত্র : প্রভুত্বব্যঞ্জক ক্ষমতার হুমকিকে প্রত্যাখ্যান করো। জোটনিরপেক্ষ ২.০. (ননএলাইনমেন্ট ২.০.) দলিলটির প্রেরণার উৎস জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন ওরফে ন্যাম। কোন কোন সদস্য দেশের অর্থনৈতিক পট পরিবর্তন ঘটলেও ন্যাম তার গুরুত্ব বা আস্থা হারিয়েছে, বললে ঠিক হয় না। শক্তি, জলবায়ু, খাদ্য অপর্যাপ্ততার মতো ইস্যুও যে ন্যামকে একদিন সমাধান করতে হবে না, কে জানে?

নাদিরা মজুমদার: বিশ্লেষক, লেখক, সাংবাদিক।

http://opinion.bdnews24.com/bangla/2012/09/13/%E0%A6%9C%E0%A7%8B%E0%A6%9F-%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%B0%E0%A6%AA%E0%A7%87%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B7-%E0%A6%86%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A7%8B%E0%A6%B2%E0%A6%A8-%E0%A6%93-%E0%A6%A4%E0%A7%87/

No comments:

मैं नास्तिक क्यों हूं# Necessity of Atheism#!Genetics Bharat Teertha

হে মোর চিত্ত, Prey for Humanity!

मनुस्मृति नस्ली राजकाज राजनीति में OBC Trump Card और जयभीम कामरेड

Gorkhaland again?আত্মঘাতী বাঙালি আবার বিভাজন বিপর্যয়ের মুখোমুখি!

हिंदुत्व की राजनीति का मुकाबला हिंदुत्व की राजनीति से नहीं किया जा सकता।

In conversation with Palash Biswas

Palash Biswas On Unique Identity No1.mpg

Save the Universities!

RSS might replace Gandhi with Ambedkar on currency notes!

जैसे जर्मनी में सिर्फ हिटलर को बोलने की आजादी थी,आज सिर्फ मंकी बातों की आजादी है।

#BEEFGATEঅন্ধকার বৃত্তান্তঃ হত্যার রাজনীতি

अलविदा पत्रकारिता,अब कोई प्रतिक्रिया नहीं! पलाश विश्वास

ভালোবাসার মুখ,প্রতিবাদের মুখ মন্দাক্রান্তার পাশে আছি,যে মেয়েটি আজও লিখতে পারছেঃ আমাক ধর্ষণ করবে?

Palash Biswas on BAMCEF UNIFICATION!

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS ON NEPALI SENTIMENT, GORKHALAND, KUMAON AND GARHWAL ETC.and BAMCEF UNIFICATION! Published on Mar 19, 2013 The Himalayan Voice Cambridge, Massachusetts United States of America

BAMCEF UNIFICATION CONFERENCE 7

Published on 10 Mar 2013 ALL INDIA BAMCEF UNIFICATION CONFERENCE HELD AT Dr.B. R. AMBEDKAR BHAVAN,DADAR,MUMBAI ON 2ND AND 3RD MARCH 2013. Mr.PALASH BISWAS (JOURNALIST -KOLKATA) DELIVERING HER SPEECH. http://www.youtube.com/watch?v=oLL-n6MrcoM http://youtu.be/oLL-n6MrcoM

Imminent Massive earthquake in the Himalayas

Palash Biswas on Citizenship Amendment Act

Mr. PALASH BISWAS DELIVERING SPEECH AT BAMCEF PROGRAM AT NAGPUR ON 17 & 18 SEPTEMBER 2003 Sub:- CITIZENSHIP AMENDMENT ACT 2003 http://youtu.be/zGDfsLzxTXo

Tweet Please

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS BLASTS INDIANS THAT CLAIM BUDDHA WAS BORN IN INDIA

THE HIMALAYAN TALK: INDIAN GOVERNMENT FOOD SECURITY PROGRAM RISKIER

http://youtu.be/NrcmNEjaN8c The government of India has announced food security program ahead of elections in 2014. We discussed the issue with Palash Biswas in Kolkata today. http://youtu.be/NrcmNEjaN8c Ahead of Elections, India's Cabinet Approves Food Security Program ______________________________________________________ By JIM YARDLEY http://india.blogs.nytimes.com/2013/07/04/indias-cabinet-passes-food-security-law/

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS TALKS AGAINST CASTEIST HEGEMONY IN SOUTH ASIA

THE HIMALAYAN VOICE: PALASH BISWAS DISCUSSES RAM MANDIR

Published on 10 Apr 2013 Palash Biswas spoke to us from Kolkota and shared his views on Visho Hindu Parashid's programme from tomorrow ( April 11, 2013) to build Ram Mandir in disputed Ayodhya. http://www.youtube.com/watch?v=77cZuBunAGk

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS LASHES OUT KATHMANDU INT'L 'MULVASI' CONFERENCE

अहिले भर्खर कोलकता भारतमा हामीले पलाश विश्वाससंग काठमाडौँमा आज भै रहेको अन्तर्राष्ट्रिय मूलवासी सम्मेलनको बारेमा कुराकानी गर्यौ । उहाले भन्नु भयो सो सम्मेलन 'नेपालको आदिवासी जनजातिहरुको आन्दोलनलाई कम्जोर बनाउने षडयन्त्र हो।' http://youtu.be/j8GXlmSBbbk

THE HIMALAYAN DISASTER: TRANSNATIONAL DISASTER MANAGEMENT MECHANISM A MUST

We talked with Palash Biswas, an editor for Indian Express in Kolkata today also. He urged that there must a transnational disaster management mechanism to avert such scale disaster in the Himalayas. http://youtu.be/7IzWUpRECJM

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS CRITICAL OF BAMCEF LEADERSHIP

[Palash Biswas, one of the BAMCEF leaders and editors for Indian Express spoke to us from Kolkata today and criticized BAMCEF leadership in New Delhi, which according to him, is messing up with Nepalese indigenous peoples also. He also flayed MP Jay Narayan Prasad Nishad, who recently offered a Puja in his New Delhi home for Narendra Modi's victory in 2014.]

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS CRITICIZES GOVT FOR WORLD`S BIGGEST BLACK OUT

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS CRITICIZES GOVT FOR WORLD`S BIGGEST BLACK OUT

THE HIMALAYAN TALK: PALSH BISWAS FLAYS SOUTH ASIAN GOVERNM

Palash Biswas, lashed out those 1% people in the government in New Delhi for failure of delivery and creating hosts of problems everywhere in South Asia. http://youtu.be/lD2_V7CB2Is

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS LASHES OUT KATHMANDU INT'L 'MULVASI' CONFERENCE

अहिले भर्खर कोलकता भारतमा हामीले पलाश विश्वाससंग काठमाडौँमा आज भै रहेको अन्तर्राष्ट्रिय मूलवासी सम्मेलनको बारेमा कुराकानी गर्यौ । उहाले भन्नु भयो सो सम्मेलन 'नेपालको आदिवासी जनजातिहरुको आन्दोलनलाई कम्जोर बनाउने षडयन्त्र हो।' http://youtu.be/j8GXlmSBbbk