একই ভাবে মার্কিন দেশেও বাতিল হয় এই ধরণের কার্ড। চীনও এই ধরণের কার্ড
শুরুটা কি ভাবে হয়েছিল, একটু ইতিহাস ঘেঁটে দেখা যাক।
১৯৩৩ সালে, নাগরিকদের চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়েছিল- জার্মানীতে।
তখন আধুনিক কম্পিউটার যুগ শুরু হয় নি ঠিকই, তবে আদি কম্পিউটারের
কিভাবে তারা প্রতিটি ইহুদি পরিবারের তথ্য সংগ্রহ করত, তা এখন বহু আলোচিত।
হিটলারের শাসন কালে, সমস্ত ইহুদিরা হয়ে উঠেছিল এক একটি নম্বর। তার পাশে লেখা থাকত নাম ঠিকানা।
দেখা গেছে, যে অঞ্চলে, এই কাজটা ভালো ভাবে করা হয়েছিল, সেখানেই ইহুদি নিধন বেশী হয়েছিল।
'আধার' নিয়ে বৈঠক সফল
ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন অথরিটি অব ইন্ডিয়া (ইউ.এ.আইডি.এ.আই) -এর অন্তর্গত আধার প্রকল্প নিয়ে বৈঠক সফল হল। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরমের সঙ্গে আধার প্রকল্পের সর্বময় কর্তা নন্দন নিলেকানির বৈঠক হয় প্রধানমন্ত্রী ও যোজনা কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান মন্টেক সিং অহলুওয়ালিয়ার উপস্থিতিতেই। সেখানে আরও ৪০ হাজার আধার কার্ড তৈরির সবুজ সংকেত দেন চিদম্বরম। প্রকল্পটি দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যেতে আলোচনা হয়। চিদম্বরম জানান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের ন্যাশনাল পপুলেশন রেকর্ড দপ্তর দেশের প্রতিটি বায়োমেট্রিক তথ্য রেকর্ডে রাখবে। সেই ডেটাবেস তৈরিতে সাহায্য করবে 'আধার' প্রকল্প। তবে কোনও নাগরিক যদি কাগজ বা রসিদ দেখিয়ে প্রমাণ দেন যে একবার তাঁর কাছে তথ্য সংগ্রহ করে নিয়ে গিয়েছে আধার প্রকল্পের কর্মীরা, তাহলে দ্বিতীয়বার তাঁর কাছে আর কোনও তথ্য নেওয়া হবে না।
ভিডিও: এ এন আই , কলকাতা, ২৮ জানুয়ারি, ২০১২
বক্তারা অভিযোগ করেন যে এল-১ আইডেনটিটি সলিউশন প্রভৃতির মতো কর্পোরেট সংস্থাকে কেন্দ্রীয় সরকার এই প্রকল্পের সাথে যুক্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। তারা এও অভিযোগ করেন, উক্ত সংস্থা সহ এই ধরনের মার্কিন সংস্থাগুলোর সঙ্গে যুক্ত সিআইএ-র এক প্রাক্তন প্রধান। এছাড়াও জানা গেছে, যদিও বলা হচ্ছে আধার কার্ড বাধ্যতামূলক নয়, কিন্তু একে জাতীয় জনগণনা রেজিস্ট্রার (এনপিআর)-এর সাথে যুক্ত করা হচ্ছে, যা বাধ্যতামূলক। উদ্যোক্তারা জানান যে প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে, এই সভাটি আয়োজিত হয়েছে। আগামী দিনে তাঁরা আধার কার্ডের বিরোধিতা করে আরও কর্মসূচি নেবেন।
সরাসরি অর্থ
সংবাদ সংস্থা
বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক সরকারী প্রকল্পের উপভোক্তাদের সরাসরি অর্থ দেওয়ার জন্য জাতীয় স্তরের একটি কমিটি গঠন করেছেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। প্রধানমন্ত্রী মনে করছেন, উপভোক্তাদের ব্যাঙ্কের মাধ্যমে সরাসরি অর্থ দিতে পারলে দুর্নীতি অনেকাংশে কমানো যাবে। উচ্চপর্যায়ের এই কমিটিতে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নিজে। প্রধানমন্ত্রীর সচিবকে আহ্বায়ক করে এই কমিটিতে রয়েছেন বিভিন্ন দপ্তরের ১৩জন মন্ত্রী, যোজনা কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান, আধার কার্ডের চেয়ারম্যান এবং ক্যাবিনেট সচিব। কেন্দ্রীয় সরকারের তত্ত্বাবধানে গ্রাম উন্নয়ন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ, খাদ্য, সংখ্যালঘু উন্নয়ন, আদিবাসী কল্যাণ, মহিলা ও শিশু বিকাশ কর্মসংস্থান প্রভৃতি মন্ত্রকের বিভিন্ন জনকল্যাণ কর্মসূচী রয়েছে। এইসব প্রকল্পের জন্য কেন্দ্রীয় অর্থ আসে সামাজিক আর্থিক দিক থেকে উপযুক্ত ব্যক্তিদের কাছে। এ ব্যাপারে বি পি এল তালিকা অনুসরণ করা হয়। গ্রাম শহরের গরিব মানুষদের জন্যই এই কর্মসূচী রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের পরিকল্পনা হলো, সরকারী অর্থ সরাসরি যাবে ঐ ব্যক্তির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। কিন্তু এদেশে কতজনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। সরকারী হিসাব অনুসারে সারা দেশে সরকারী, বেসরকারী এবং বিদেশী ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট মিলিয়ে ব্যাঙ্কের গ্রাহকের সংখ্যা ৪০ কোটি। অর্থাৎ মোট জনসংখ্যার মাত্র ৩০ শতাংশ। এই ব্যাঙ্ক গ্রহকদের অনেকেই অর্থবান অথবা সরকারী সুবিধা পাওয়ার ঊর্ধ্বে। ফলে প্রকৃত অর্থে যাঁরা সরকারী সুবিধা পেতে পারেন তাঁদের কতজনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে? সরকার আশা করছে আধার কার্ড তৈরি শেষ হলে দেশের অধিকাংশ মানুষ এই ব্যাঙ্কিং সুবিধার মধ্যে আসবেন। কিন্তু দেশের বাস্তব পরিস্থিতি কি সত্যিই মানুষকে এই সুবিধা দিতে পারবে? সরকার এই সরাসরি অর্থ দেওয়ার ব্যবস্থা যদি ২০১৪ সালেও চালু করে তাহলেই বা কতজন এই ব্যাঙ্কিং সুবিধার আওতায় আসতে পারবেন?
বর্তমানে ব্যাঙ্ক গ্রাহকদের সংখ্যার ভিত্তিতে বলা যায় এই প্রক্রিয়া বিরাটভাবে অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। সরকার কি আসলে চাইছে নতুন পদ্ধতির নামে কল্যাণমূলক কর্মসূচীর জন্য অর্থ বরাদ্দ কমিয়ে দিতে? জাতীয় স্তরের এসব কমিটি গঠন আসলে খাজনার চাইতে বাজনা বেশির নমুনা। দেশের আর্থ-সামাজিক পরিকাঠামোর কোনো উন্নয়ন ঘটছে? দৈনিক ৩২ টাকারও কম আয় করেন এমন মানুষ দেশের মোট জনসংখ্যার ৩৭ শতাংশ। তারা কীভাবে ব্যাঙ্ক গ্রাহক হবেন? এখনও দেশে ২৬ শতাংশ মানুষ অশিক্ষার অন্ধকারে। আধার কার্ড তাদের কী সাহায্য করবে? শিক্ষা-স্বাস্থ্য-বাসস্থানের মতো ন্যূনতম পরিকাঠমো সৃষ্টির পর আধার কার্ড অবশ্যই প্রয়োজনীয়। কিন্তু এই পরিকাঠামো সৃষ্টি না করে ব্যাঙ্ক ক্যাশ ট্রান্সফার অথবা আধার কার্ড অবাস্তব ভাবনা ছাড়া কিছু নয়। গত কয়েক মাস হলো দ্বিতীয় ইউ পি এ সরকার বেশ কোণঠাসা। পেট্রোপণ্যের দাম বাড়ানো, রান্নার গ্যাসে ভরতুকি কমানো, খুচরো ব্যবসায় বিদেশীদের দরজা খুলে দেওয়ার ফলে সরকারকে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। আম-আদমির সরকার প্রকৃতপক্ষে জনগণের শত্রুতায় নেমেছে। তাই মানুষের মন ঘোরাতে নতুন পথ নিয়েছে দ্বিতীয় ইউ পি এ সরকার। মাঝে একটি বছর পেরোলেই ২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচন। তাছাড়া আগামী এক বছরের মধ্যে রয়েছে কয়েকটি বিধানসভা নির্বাচন। ভোটের কথা মাথায় রেখেই সস্তা চমকের রাজনীতিতে নেমেছেন প্রধানমন্ত্রী। এসব চমককে সামনে রেখে জনকল্যাণ খাতে সরকারী বরাদ্দ কমাতে চাইছে সরকার। মনমোহনী কমিটি বা ঘোষণার পরিণাম হলো দেশের গরিব মানুষের বঞ্চিত হওয়া। দেশের বাস্তব পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে তবেই এই ধরনের পরিকল্পনা কার্যকর করার দিকে যাওয়া উচিত।
ভারতের প্রায় ১১৬ কোটি লোকের প্রত্যেকের পরিচয়পত্র তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। আঙুলের ছাপ, চোখের স্ক্যান, ছবি এবং অন্যান্য ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করে পরিচয় শনাক্তকারী ১২ ডিজিটের স্বতন্ত্র একটি নম্বর দেওয়া হবে প্রত্যেক নাগরিককে। বিশ্বে বায়োমেট্রিক তথ্য ব্যবহার করে জাতীয় পর্যায়ে নাগরিকদের পরিচয়পত্র দেওয়ার প্রথম পরিকল্পনা বলে বিবেচনা করা হচ্ছে প্রকল্পটিকে। এ প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে 'আধার'। মুম্বাইয়ের প্রায় ৩২০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে তেম্ভলি গ্রামে প্রথম দিন ১০ আদিবাসী ব্যক্তিকে পরিচয়পত্র দেওয়া হয়। মনমোহন সিং ছাড়াও কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী এ সময় উপস্থিত ছিলেন। পরিচয়পত্র দেওয়ার ঘটনাটিকে দেশের প্রান্তিক গোষ্ঠীকে ক্ষমতায়নের 'বিশেষ মুহূর্ত' এবং ভারতের 'নবযাত্রা' বলে অভিহিত করেন মনমোহন। যথাযথ কাগজপত্রের অভাবে ভারতের প্রত্যন্ত অঞ্চলের অনেক মানুষই সরকারের খাদ্য ভর্তুতি কর্মসূচি থেকে বাদ পড়ে। বিষয়টি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'গরিবদের পরিচয় প্রমাণের কোনো সুযোগ ছিল না। স্বতন্ত্র পরিচয়পত্রের মাধ্যমে তারা এখন রেশন কার্ড পাওয়ার পাশাপাশি ব্যাংকে হিসাবও খুলতে পারবে। একজনের পরিচয় ব্যবহার করে আরেকজন সরকারি জনকল্যাণমূলক কর্মসূচিগুলোর সুবিধা ভোগ করতে পারবে না।' স্বতন্ত্র পরিচয়পত্রের মাধ্যমে 'ভুয়া পরিচয়পত্রের সমস্যা' দূর হবে বলে উল্লেখ করেন সোনিয়া। 'আধার' প্রকল্প শেষ করতে ৬০০ থেকে তিন হাজার ২০০ কোটি ডলার লাগতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ভারতের স্বতন্ত্র পরিচয়পত্র কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ২০১০-১১ অর্থবছরে এ প্রকল্পের জন্য ৪০ কোটি ডলার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সূত্র : এএফপি, বিবিসি।
বহু প্রতীক্ষিত 'ক্যাশ ট্রান্সফার' বা নগদ হস্তান্তর প্রকল্পের চূড়ান্ত পর্যায়ের কাজের সূত্রপাত ঘটবে সম্ভবত সে দিনই। টু-জি, কয়লা কেলেঙ্কারি বা সংস্কারমূলক পদক্ষেপে বিরোধিতার চড়া সুরের সামনে ঘুরে দাঁড়াতে এই 'ক্যাশ ট্রান্সফার'কেই হাতিয়ার করতে চাইছে দ্বিতীয় ইউপিএ সরকার। একাধিক সমস্যায় জর্জরিত প্রথম ইউপিএ-র কাছে আশীর্বাদ হয়ে দাঁড়িয়েছিল এমজিএনআরইজিএ। ১০০ দিনের কাজের মতো প্রকল্প ছিল 'মেগাহিট', যা মনমোহন সিংয়ের উপর্যুপরি দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রিত্ব নিশ্চিত করতে অনেকটাই সাহায্য করেছিল। কংগ্রেসের আশা, এবার সেই ভেল্কি দেখাবে 'ক্যাশ ট্রান্সফার', যা দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারের তথাকথিত 'ফ্ল্যাগশিপ' প্রকল্প।
শনিবার অর্থমন্ত্রী পালানিয়াপ্পন চিদাম্বরম জানিয়েছেন, ২০১৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকেই সরকার এই প্রকল্প চালু করতে চলেছে। 'আধার'ভিত্তিক পদ্ধতির মাধ্যমে দেশের ৫১টি জেলায় এই প্রকল্প শুরু হবে। গোটা দেশে ২০১৩ সালের মধ্যে এই প্রকল্প চালু হয়ে যাবে বলে আশাবাদী কেন্দ্র। প্রকল্পের রূপরেখা চূড়ান্ত করতে সোমবার সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীদের নিয়ে বৈঠকে বসবেন মনমোহন সিং।
উপযুক্ত প্রাপকদের হাতে সরাসরি নগদ টাকা তুলে দেওয়ার লক্ষ্যে এই প্রকল্প গ্রহণ করেছে কেন্দ্র। খাদ্যশস্য, সার বা জ্বালানিতে ভর্তুকির পরিবর্তে প্রাপকদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে চলে যাবে প্রাপ্য টাকা। সামগ্রিক ভাবে ভর্তুকি পদ্ধতিকে দুর্নীতিমুক্ত করা যেমন এই প্রকল্পের অন্যতম বড় উদ্দেশ্য, তেমনই সরকার মনে নগদ টাকা হাতে পাওয়ায় প্রাপকরা আরও বেশি লাভবান হবেন। কেননা, সে ক্ষেত্রে তাঁরা নিজেদের প্রয়োজন অনুযায়ী খরচ করতে পারবেন। গ্রামীণ অর্থনীতির পরিকাঠামো মজবুত করতে এমজিএনআরইজিএ যদি ভিত্তিপ্রস্তরের কাজ করে থাকে, তা হলে 'ক্যাশ ট্রান্সফার' তাতে ইমারত গড়ার কাজ শুরু করবে বলে দাবি কেন্দ্রের।
টাকার অঙ্কের বিচারেও মহাত্মা গান্ধি জাতীয় গ্রামীণ কর্মসংস্থান নিশ্চয়তা আইনের (চলতি কথায় এমজিনারেগা) চেয়ে এগিয়ে 'ক্যাশ ট্রান্সফার' প্রকল্প। এই প্রকল্পের আওতায় বছরে চার লক্ষ কোটি টাকারও বেশি নগদ অর্থ প্রাপকদের হাতে তুলে দিতে চায় সরকার। ফলে, দারিদ্র্যসীমার নীচে বসবাসকারী প্রতিটি পরিবার মাসে গড়ে তিন হাজার টাকারও কিছু বেশি নগদ হিসেবে পাবে।
রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে এই প্রকল্পকেই চাঁদমারি করেছে কেন্দ্র। কংগ্রেসেরও আশা, যে ভাবে এমজিনারেগা প্রথম ইউপিএ-র পায়ের তলার জমি মজবুত করেছিল, ঠিক সে ভাবেই এই প্রকল্পের হাত ধরেই ঘুরে দাঁড়াবে দ্বিতীয় ইউপিএ সরকার। কাগজে-কলমে এহেন প্রত্যাশা হয়তো ভ্রান্তও নয়। তবে, 'ক্যাশ ট্রান্সফার' আদৌ সনিয়া-মনমোহনদের ব্রহ্মাস্ত্র উঠবে কি না, তা নির্ভর করছে প্রকল্প কতটা এবং কী ভাবে বাস্তবায়িত হবে, তার উপরই। এমজিনারেগা রূপায়ণের সাফল্য এতটাই যে রাষ্ট্রসংঘে গিয়ে লালকৃষ্ণ আডবানিও ভারতের অগ্রগতির খতিয়ান তুলে ধরতে গিয়ে এই প্রকল্পের কথাই উল্লেখ করেছিলেন।
প্রকল্প নিয়ে কংগ্রেস বা কেন্দ্র আশাবাদী হলেও, বিশেষজ্ঞরা কিন্তু প্রকল্পের গর্ভেই ব্যর্থতার বীজ দেখছেন। যুক্তি ত্রিমাত্রিক। প্রথম, দেশের ১২০ কোটি জনগণের মধ্যে মাত্র ২১ কোটির আধার কার্ড রয়েছে। দ্বিতীয়, দারিদ্র্যসীমার নীচে বসবাসকারীদের বেশির ভাগেরই ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নেই। স্বভাবতই, তাঁদের টাকা কোথায় এবং কী ভাবে দেওয়া হবে, তা অনিশ্চিত। তৃতীয়ত, দেশের বেশির ভাগ গ্রামেই ব্যাংকের শাখা নেই। সে ক্ষেত্রেও নগদ প্রাপকদের কাছে কী ভাবে পৌঁছবে, সে প্রশ্ন রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পীউ গবেষনা কেন্দ্র পরিচালিত সমিক্ষায় দেখা গিয়েছে ভারতে এখন সমিক্ষাধীন ৩৮ শতাংশ মানুষই দেশ যে পথে চলেছে তাতে সন্তোষ বোধ করেন – এক বছর আগে যে সংখ্যা ছিলো ৫১ শতাংশ । পীউ গবেষনায় বলা হচ্ছে – ভারতীয়রা এখন বহূলাংশেই অর্থনীতি নিয়ে বেশি চিন্তান্বিত - প্রতি দশজনের আটজনই বেকারত্ব এবং দ্রব্যমূল্যের উর্থগতিকে বড়ো সমস্যারূপে চিহ্নিত করছেন ।
ভারতের আর্থনীতিক প্রবৃদ্ধি হার ২ হাজার ১২ সালের প্রথম ত্রৈমাসিক মেয়াদে ৫ দশমিক ৩ শতাংশ দাঁড়িয়েছে বলে হিসেব কষা হয়েছে – ন' বছরের ভেতর এটাই সর্বনিম্ম প্রবৃদ্ধি হার ।
নগদ হস্তান্তরের ফায়দা নিতে আসরে কংগ্রেস | ||
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি | ||
লোকসভার ভোট সময়ে হলেও হাতে রয়েছে মাত্র দেড় বছর। সেই ভোটকে পাখির চোখ করে আস্তিন থেকে আরও একটা অস্ত্র ছাড়ল কংগ্রেস! ভর্তুকির টাকা সরাসরি আম-আদমির হাতে তুলে দেওয়ার প্রকল্প। নগদ হস্তান্তরের প্রকল্প বাস্তবায়িত করার ব্যাপারে গত কালই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। আর আজ কংগ্রেস সদর দফতর থেকে সেই প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক মোড়কে ঘোষণা করলেন কেন্দ্রের দুই শীর্ষ স্থানীয় মন্ত্রী পি চিদম্বরম ও জয়রাম রমেশ। এ দিন জয়রাম বললেন, "২০০৯ সালের নির্বাচনী ইস্তাহারে ভর্তুকির অর্থ নগদে মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল কংগ্রেস। তা এ বার রূপায়ণ করছে সরকার। এটা শুধু একটা প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নয়, কংগ্রেসের রাজনৈতিক অভিযান।" এমনকী এই প্রকল্পের স্লোগানেও কার্যত রাজনীতির ভাষা: 'আপকা প্যায়সা আপকে হাত'। ২০১৩ সাল শেষ হওয়ার আগেই কেন্দ্রের ৪২টি প্রকল্পের অনুদান ও ভর্তুকি বাবদ প্রায় তিন লক্ষ কুড়ি হাজার কোটি টাকা সরাসরি 'আমআদমি'-র কাছে পৌঁছে দিয়ে আগামী লোকসভা ভোটের প্রস্তুতি সেরে ফেলতে চাইছে কংগ্রেস। এবং দলীয় নেতাদের মতে, এটাই শেষ তাস নয়। এর পর রান্নার গ্যাসের ভর্তুকি সিলিন্ডারের সংখ্যা বাড়ানো হবে। পরের বাজেট হবে জনমোহিনী। আর তার পর তুরুপের তাস করা হবে খাদ্য সুরক্ষা আইনকে। বস্তুত, নগদ হস্তান্তর প্রকল্পের মধ্যে দিয়ে খাদ্য সুরক্ষা আইনের ভিতই প্রস্তুত করা হচ্ছে। কংগ্রেসের এই চাল তাদের বিপদে ফেলতে পারে বুঝে আসরে নেমে পড়েছে বিরোধীরাও। বিজেপি নেতা মুখতার আব্বাস নকভি বলেন, "এটা জনগণের মন ভোলানোর চেষ্টা ছাড়া এটা আর কিছুই নয়। ভোটের মুখে এসে সরকারের আমআদমির কথা মনে পড়ল!" দলের আর এক নেতা তো এ-ও বললেন যে, "ভোটের আগে মানুষকে ঘুষ দিতে চাইছে সরকার।" আর বাম নেতাদের বক্তব্য, সরকার আসলে নগদ হস্তান্তরের নামে ভর্তুকির বোঝা কমাতে চাইছে। লোককে বেকুব বানাচ্ছে কংগ্রেস। বিরোধীদের এই সমালোচনার জবাব দেওয়ার রণকৌশলও কিন্তু কংগ্রেস ছকে ফেলেছে। ঠিক হয়েছে, এই নগদ হস্তান্তর প্রকল্প নিয়ে দেশ জুড়ে ব্যাপক প্রচার চালানো হবে। সেই প্রচারের সুর কী হবে তার ইঙ্গিত দিয়ে চিদম্বরম আজ বলেন, "সামাজিক সুরক্ষার ছবিটাই পাল্টে দেবে কেন্দ্রের এই পদক্ষেপ।" আর জয়রামের দাবি, এটা শুধু নগদ হস্তান্তর নয়, বস্তুত আম-আদমির হাতে অধিকার হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তিনি জানান, ১ জানুয়ারি থেকে প্রথম দফায় যে ৫১টি জেলায় সরাসরি নগদ হস্তান্তর প্রকল্প চালু হবে, সেখানকার কংগ্রেস সভাপতিদের নিয়ে রাহুল গাঁধী শীঘ্রই একটি কর্মশালা করবেন। সরকারের এই পদক্ষেপ কংগ্রেস কী ভাবে তৃণমূল স্তরে মানুষের কাছে পৌঁছে দেবে সেই দাওয়াই বাতলে দেবেন রাহুল। | ||
| ||
পরে রাহুল-ঘনিষ্ঠ এক নেতা বলেন, তথ্যের অধিকার আইন পাশ, একশো দিন কাজের প্রকল্প, শিক্ষার অধিকারের মতো ঐতিহাসিক সব আইন পাশ হয়েছে ইউপিএ জমানায়। কিন্তু খামতি থেকে গিয়েছে তা নিয়ে প্রচারে। সেই প্রচারটাই এ বার আগ্রাসী হয়ে করতে চাইছেন রাহুল। তবে নগদ হস্তান্তর প্রকল্প রূপায়ণের ক্ষেত্রে যে বড় রকমের ঝুঁকিও রয়েছে, সে কথাও কবুল করছেন কংগ্রেস ও সরকারের শীর্ষ নেতারা। কারণ, যদি দেখা যায় যে কিছু পরিবার সুবিধা পেল না, তা হলে বৈষম্যের বাতাবরণ তৈরি হবে। এবং তাতে হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বস্তুত সে কথা মাথায় রেখে এখনই ৪২টি প্রকল্পের ভর্তুকি ও অনুদান সরাসরি হস্তান্তর করা হচ্ছে না। চিদম্বরম আজ জানান, আপাতত ছাত্রবৃত্তি, বার্ধক্য ভাতা, স্বাস্থ্য ও জনকল্যাণ খাতে অর্থ নগদ হস্তান্তর করা হবে। পরে দেওয়া হবে রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার বাবদ ভর্তুকির টাকা। খাদ্য বা সারে ভর্তুকির টাকা নিয়ে সরকার যে তাড়াহুড়ো করতে চাইছে না, তা জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, খাদ্যে ভর্তুকির বিষয়টি জটিল, সারে ভর্তুকির বিষয়টি আরও জটিল। ওই দু'টি বিষয়ে নগদ হস্তান্তরের প্রক্রিয়া কী হবে, তা নিয়ে আলোচনা চলছে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যের বাইরে অর্থনৈতিক দিক থেকেও কেন্দ্রের এই পদক্ষেপকে ইতিবাচক বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ, এতে সরবরাহ ব্যবস্থার ছিদ্র বন্ধ করে ভর্তুকির বোঝা কমানো সম্ভব হবে। যদিও বিজেপি-র অভিযোগ, এই প্রক্রিয়াতেও দুর্নীতির সম্ভাবনা রয়েছে। সাধারণ মানুষের হাতে কী ভাবে ভর্তুকির টাকা পৌঁছে দেওয়া হবে তা-ও আজ ব্যাখ্যা করেছেন চিদম্বরম। তিনি জানান, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি 'ব্যাঙ্কিং করেসপন্ডেন্ট' নিয়োগ করবে। 'ব্যাঙ্কিং করেসপন্ডেন্ট' কোনও স্কুল শিক্ষক বা স্বনির্ভর গোষ্ঠী বা সমবায় সংস্থা হতে পারে। ওই করেসপন্ডেন্টের হাতে একটি মিনি এটিএম মেশিন থাকবে। যা থেকে মাসের গোড়ায় ভর্তুকির টাকা সরাসরি আম-আদমির হাতে তুলে দেওয়া হবে। http://www.anandabazar.com/28desh1.html নয়াদিল্লি: লোকসভা ভোটের আগে নিজেদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে জনমোহিনী পথে হাঁটছে কংগ্রেস৷ আধার কার্ডের মাধ্যমে গ্রাহকরা ভর্তুকির টাকা সরাসরি পাবেন বলে আজ ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম৷ এই নিয়মের ফলে এলপিজি, কেরোসিনে ভর্তুকি সমেত কেন্দ্রের বেশ কিছু প্রকল্পের আওতায় আসবেন গরিবরা৷ http://abpananda.newsbullet.in/national/60-more/30682-2012-11-27-16-07-04 |
সকাল থেকে রাজপথ ছিল সরব। পথেই তো ছিলেন বিক্ষোভকারীর অনেকে কৌতূহলী হয়ে প্রত্যক্ষ করে গেলেন এই ঠাণ্ডায় খোলা আকাশের নিচে রাত কেমন করে কাটায় মানুষ। অভিজাত বিলাসী রাজপথ সেটা দেখলো। এদিকে সংসদে এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে সময় চাওয়া হয়। মেলেনি সময়। এনিয়ে সি পি আই (এম) নেতা সীতারাম ইয়েচুরি তাঁর ক্ষোভের কথা জানিয়ে দিলেন ভাষণে। তিনি বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রীর বিদেশীদের সঙ্গে কথা বলার সময় হয়। কিন্তু সাধারণ মানুষের সঙ্গে দেখা করার সময় দিতে পারেন না। যাইহোক তার দপ্তর থেকে দু'দিন বাদে সময় দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। দু'দিন বাদে আমরা আমাদের দাবির কথা প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়ে দেবো। প্রধানমন্ত্রীর দেশের উপর নজর নেই। তিনি শুধু আমেরিকার ভজনাতে ব্যস্ত একথা ক্ষোভে জানান ইয়েচুরি। তিনি বলেন, দেশের প্রসূতি, শিশু শিক্ষা, স্বাস্থ্য পরিষেবার কাজে যুক্ত কর্মীদের কথা শোনেন না প্রধানমন্ত্রী। শোনেন শুধু বিদেশীদের কথাই। তিনি বলেন, আমাদের গ্রামে যেমন রয়েছে গ্রাম দেবতা। তাকে প্রণাম করেই যেমন তীর্থযাত্রা করেন অনেকে। তেমনি আমাদের প্রধানমন্ত্রীর গ্রাম দেবতা হলো আমেরিকা। তাই সরকারের নীতি বদল হলো জরুরী। ন্যূনতম মজুরি, সামাজিক সুরক্ষা নিয়ে সরকারে নীতি বদলে সংগ্রাম আন্দোলন চালাতে হবে।
দেশের দরিদ্র মানুষের বিরুদ্ধে কার্যত যুদ্ধ করেছে এটা বোঝাতে ইয়েচুরি বলেন, এবারে রেশনের ভরতুকি নগদে দেওয়ার নামে রেশন দোকানই বন্ধ করে দিতে চাইছে কেন্দ্র। বলা হচ্ছে নগদে ভরতুকি ব্যাঙ্কে পাঠিয়ে দেবে কেন্দ্র। কিন্তু যেহারে প্রতিদিন খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ছে তাতে নগদ ভরতুকিতে কোন লাভ নেই। আমাদের তাই দাবি ৩৫কেজি খাদ্যশস্য প্রতি পরিবারে ২টাকা দরে সরবরাহ করতে হবে। সম্প্রতি কেন্দ্রের অর্থ মণ্ত্রীর ঘোষণায় এই দাবিতে ভ্রুক্ষেপ নেই। তারা পুরো রেশন দোকান বন্ধ করে দিতে চাইছে। এনিয়ে কেন্দ্রের আর্থিক নীতির কড়া সমালোচনা করেছেন সি পি আই (এম) নেত্রী বৃন্দা কারাত। তিনি বলেন, সবেতে ভরতুকি ছাঁটাই করছে কেন্দ্র। রান্নার গ্যাসেও ভরতুকি কমানো হচ্ছে। এতে সঙ্কটে পড়েছে মিড ডে মিল প্রকল্প। একেই প্রকল্পে বরাদ্দ কম। তার মধ্যে আবার এই সঙ্কট। চরম মূল্যবৃদ্ধির বাজারে এভাবে গ্যাস ডিজেলে ভরতুকি কমানোয় দিশেহারা অবস্থা মানুষের। আজ দেশের খাজানা খুলে কর্পোরেটদের অর্থ বিলোচ্ছে সরকার, আর অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এই অবস্থার অবসান দরকার।
কেন্দ্রের নীতিটা আম আদমিদের প্রতি চরম ধোঁকাবাজি ছাড়া কিছু নয় তা স্পষ্ট করেই সভায় জানালেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ প্রভাত পট্টনায়েক। তিনি বললেন, সরকারের ধোঁকাবাজি কেমন দেখুন, আপনাদের বলছে আপনারা মহান, আপনারা সেবা করছেন। আপনাদের যেন আর টাকার কি দরকার? আর আম্বানিদের কোটি কোটি টাকা দিচ্ছে। যেন টাকা ঐ কোটিপতি কর্পোরেটদের দরকার, সাধারণ মানুষের এতে কোন দরকার নেই। একারণে প্রতি বছর ৫ লক্ষ কোটি টাকা কর ছাড় দেওড়া হচ্ছে কর্পোরেটদের। এই সরকার রয়েছে পুঁজিপতিদের টাকা জোগাতে। এটাই ধোঁকাবাজি। এর বিরুদ্ধে লড়তে হবে। বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ উৎসা পট্টনায়েক প্রকল্প কর্মীদের ন্যূনতম মজুরি ১০ হাজার টাকার দাবি সমর্থন করে তা প্রতি বছর নির্দিষ্ট হারে বৃদ্ধির কথা বলেন। তিনি তাঁর অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে বলেন, আমি বাঙ্গালোরে এক মিলে শ্রমিকদের মজুরি নিয়ে সমীক্ষা চালিয়ে দেখেছি তাদের ৫ হাজার থেকে সাড়ে ৫ হাজার টাকা মেলে। কিন্তু একটি পরিবারে এই মূল্যবৃদ্ধির বাজারে টিকে থাকতে কম করে ১২ হাজার টাকা প্রয়োজন। ঐ মজুরি প্রতি বছর নির্দিষ্ট হারে আবার বাড়াতে হবে।
দরিদ্র ভারতের যে ছবি প্রত্যক্ষ করলো রাজপথ তার থেকে কোন ভিন্ন ছবি নেই পশ্চিমবঙ্গে। রাজ্যের পালাবদলের পর যাবতীয় সামাজিক প্রকল্প একেবারে লাটে উঠেছে সেটাই শোনা গেলো রাজ্য থেকে আগত প্রতিনিধিদের কথায়। যেমন শিশু শ্রমিক কল্যাণ প্রকল্পের কর্মীরা জানালেন এই প্রকল্পে শিক্ষক, প্রশিক্ষক ও পিয়ন যথাক্রমে ৪ হাজার, ৩ হাজার এবং ২ হাজার টাকা ভাতা পান। রাজ্যে সাড়ে ৪ হাজার কর্মী এই প্রকল্পে যুক্ত রয়েছেন। তারা আজ বঞ্চনার শিকার। এই প্রকল্প প্রায় মুখ থুবরে পড়ছে বলে জানালেন। স্টাফ অ্যাসোসিয়েশন অব ন্যাশনাল চাইল্ড লেবার ওয়েলফেয়ার স্কুলের (পশ্চিমবঙ্গ) সাধারণ সম্পাদক শেখ ফিরোজ। তিনি বলেন, আজ রাজ্যের জেলায় জেলায় এই সামান্য ভাতায় নিয়মিত পাচ্ছেন না কর্মীরা। যেমন নদীয়ায় ২১ মাস ধরে ভাতা মেলে না, বীরভূমে ২৭ মাস ভাতা নেই, উত্তর ২৪ পরগনায় তা হবে ৯ মাস। অ্যাসোসিয়েশনের তরফে শ্রমমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসুর সঙ্গে দেখা করা হয়েছে। বলা হয়েছে ঝাড়খণ্ডের সরকার বাড়তি ভাতা দিচ্ছে। অথচ আমাদের রাজ্যে নিয়মিত ভাতা মিলছে না। এসব অভিযোগে কোন আমল দেননি শ্রমমন্ত্রী। প্রতিকারের কোন আশা মেলেনি। তবে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা খুব সক্রিয় বলে জানান প্রতিনিধিরা। তাদের মাধ্যমে প্রকল্পে টাকা নয়ছয় হচ্ছে বলে মনে করেন প্রতিনিধিরা।
রাজ্যে বিভিন্ন প্রকল্পে যুক্ত রয়েছেন প্রায় ১লক্ষ ৬০ হাজার কর্মী। প্রতিটি প্রকল্প বেহাল অবস্থায়। বামফ্রন্টের আমলে বিভিন্ন প্রকল্পে ভাতা বাড়ালেও পালাবদলের পর ভাতা বাড়ানো তো দূর অস্ত, ভাতাই মিলছে না নিয়মিত। আবার অনেক ক্ষেত্রে কর্মীরা প্রকল্পের কাজে যুক্ত হতে পারছেন না। এই চরম অব্যবস্থার কথাই সভায় জানিয়েছেন অঙ্গনওয়াড়ি এবং সর্বশিক্ষা আন্দোলনের নেত্রী যথাক্রমে রত্না দত্ত ও মধুমিতা ব্যানার্জি। রাজ্যের শিক্ষা দপ্তরের আওতায় এনে সর্বশিক্ষার প্রকল্পকে আরো প্রসারিত করার পরিকল্পনা ছিল বামফ্রন্টের আমলে। এখন এসব শোনা যায় না। উলটে ঐ প্রকল্প এখন অনেক কাজে যোগ দিতে পারছেন না। শাসক দল এতে বাধা দিচ্ছে। শাসক দলের তরফে এতে প্রকল্প অর্থ লুট হচ্ছে বলে অভিযোগ। এসব সামাজিক প্রকল্পের এই বেহাল অবস্থায় একদিকে পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ অন্যদিকে প্রকল্পের কর্মীদের জীবন জীবিকা চরম বিপন্ন।
বিকালের রোদ ছুঁয়ে যায় রাজপথ। যন্তরমন্তরে সব সমাপ্তি ঘোষণা হলো দু'দিনের লাগাতার বিক্ষোভের। একে একে দল বেঁধে মহিলারা ঘরে ফেরার পথ ধরেছেন। কোলের শিশু নিয়ে সারা রাত রাজপথে ছিলেন মা সন্তোষ। তার শিশুর পুষ্টি না মিললেও গ্রামের মিড ডে মিলের পুষ্টিকর রান্না খাবার তৈরি করাই তার কাজ। মাস গেলে মেলে ৯০০ টাকা। এতে আবার কমিশন দিতে হয় কাজ জুটিয়ে দেওয়ার ঠিকাদারকে। হতদরিদ্র প্রকল্প কর্মীদের সামান্য ভাতা তাতে আবার থাবা বসাচ্ছে অনেকে। রাত জুড়ে এরকমই গপ্পো করে কেটে গেছে সময়। এই সংগ্রামের পাওনা হলো এটাই সকলেই স্বীকার করেছেন এটাকায় দিন চলে না। মজুরি বাড়ানো দরকার। কিন্তু নিরুপায়। বাস্তবে এতেই দিন চালাচ্ছেন বেশিরভাগ মানুষ। যা প্রথম ইউ পি এ সরকারের আমলে অর্জুন সেনগুপ্ত তাঁর রিপোর্টেই জানান। বলে যান, দেশের ৭৭ ভাগ মানুষের দৈনিক আয় ২০ টাকা। যা এই সমাবেশে জীবন যাপনে ছবিতে প্রত্যক্ষ করলো বিলাসী রাজধানী।
মনমোহন সিং সরকার যাবতীয় আইনকানুন, বিধি এড়িয়ে সিদ্ধান্তের বৈধতা দিতে চাইছে বলে। কিন্তু এফ ডি আই নিয়ে সিদ্ধান্ত সংসদে পাস করাতেই হবে বলে দাবি করেন ইয়েচুরি। এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে তাঁর সঙ্গে ছিলেন পার্টির দুই সাংসদ বাসুদেব আচারিয়া এবং টি কে রঙ্গরাজন। এমনকি বৈদেশিক মুদ্রা পরিচালন আইন বা ফেমা নিয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সাম্প্রতিক সংশোধনও প্রশ্নের মুখে পড়তে পারে যদি সময়মতো এফ ডি আই নিয়ে ভোটাভুটি না করা হয়। ঐ সংশোধনে স্পষ্টতই খুচরো ব্যবসায়ে এফ ডি আই ভোটাভুটির জন্য সংসদে পেশ করতেই হবে। এদিন ইয়েচুরি ৩০শে অক্টোবর রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বিজ্ঞপ্তি স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, ''ফেমা-র ৪৮নং ধারায় বলা আছে যে সংশোধন করা হলে তা সংসদের উভয় কক্ষে যত দ্রুত সম্ভব পেশ করতেই হবে। রীতি হলো, সংশোধন করা হলে সংসদ অধিবেশনের ১৫তম দিনের আগেই পেশ করতে হবে সংসদে। আবার সংশোধন পেশ করা হলে তা একমাসের মধ্যে ভোটাভুটির মাধ্যমে পাস করিয়ে নিতে হবে। ফলে এই ইস্যুতে ভোটাভুটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে যাচ্ছে।'' তিনি এদিন সুপ্রিম কোর্টে দাখিল করা জনৈক মনোহরলাল শর্মার একটি জনস্বার্থবাহী মামলা প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের কথা উল্লেখ করেন। ইয়েচুরি জানিয়ে দেন, এফ ডি আই-র বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবে সি পি আই (এম)।
এদিকে, সরকারের নগদে ভরতুকি দেওয়ার নীতিরও এদিন কড়া সমালোচনা করেন ইয়েচুরি। তিনি অভিযোগ করেন, এর মাধ্যমে ভরতুকি ছাঁটাই এবং গণবণ্টন ব্যবস্থাকে ভেঙে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে। নগদে ভরতুকি আসলে ভরতুকি ছাঁটাইকে আড়াল করারই উদ্যোগ। মুদ্রাস্ফীতি যত বাড়বে নগদে ভরতুকির পরিমাণও হ্রাস পাবে। এটা আসলে নিশ্চুপে ভরতুকি তুলে দেওয়ার পন্থা।
| |||||||||||||||||||
তথ্য-প্রযুক্তির আকর্ষণে সামান্য হলেও ভাটার টান। তাই আবার সিভিল-মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে ভিড় বাড়ছে। কিন্তু পাশ করে বেরিয়ে ওই সব শাখার নতুন ইঞ্জিনিয়ারদের অধিকাংশকে চাকরির জন্য ছুটতে হচ্ছে ভিন রাজ্যে। পশ্চিমবঙ্গে কাজের বিশেষ সুযোগ ওঁরা পাচ্ছেন না। যার অন্যতম কারণ হিসেবে এ রাজ্যে উৎপাদন-শিল্পে লগ্নির আকালকে দায়ী করছে শিল্প-বণিকমহলের একাংশ। ২০০৮-এর সেই বিশ্বব্যাপী আর্থিক মন্দার পর থেকেই ইঞ্জিনিয়ারিং ক্যাম্পাসে 'আইটি'-র ঔজ্জ্বল্য-কৌলীন্য যেন কিছুটা ম্লান। উল্টে মেকানিক্যাল-ইলেকট্রিক্যাল-সিভিল-কেমিক্যালের মতো 'কোর' শাখায় আসনের চাহিদা ফের ঊর্ধ্বমুখী। সিভিল-মেকানিক্যাল পাশ করে বেরিয়ে আসা ছেলেমেয়েরা চাকরি পাচ্ছেন ঠিকই। তবে সরকারি-বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলোয় 'প্লেসমেন্ট'-এর পরিসংখ্যান বলে দিচ্ছে, কোর ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অধিকাংশ নতুন স্নাতকের চাকরি হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের বাইরে। এবং এর প্রেক্ষিতে শিল্পমহলের একাংশের বক্তব্য: নতুন প্রকল্প (গ্রিনফিল্ড প্রজেক্ট) না-হলে নতুন ইঞ্জিনিয়ারদের চাকরি হওয়া কঠিন। অথচ এ রাজ্যে সিভিল-মেকানিক্যাল-ইলেকট্রিক্যাল ইত্যাদি শাখায় যত ইঞ্জিনিয়ার ফি বছর বেরোচ্ছেন, উৎপাদন-শিল্পে তাঁদের সকলকে নেওয়ার মতো নতুন প্রকল্পের সংখ্যা সে তুলনায় নগণ্য। "পাশাপাশি নতুন কারখানায় যে ধরনের নয়া প্রযুক্তির সুযোগ, পুরনো কারখানায় তা রাখা কঠিন। ফলে ইন্সট্রুমেন্টেশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মতো শাখায় এ রাজ্যে নতুন কাজের সুযোগ নেই বললেই চলে।" মন্তব্য রাজ্যের এক শিল্প-কর্তার। | |||||||||||||||||||
| |||||||||||||||||||
পরিণামে 'ব্রেন ড্রেন' অব্যাহত। কর্পোরেট মহলের নিয়োগের ছবিতেও এই মগজ চালানের প্রবণতা স্পষ্ট। শিল্পম-সূত্রের খবর: ব্রিটিশ অক্সিজেন, গোদরেজ, ম্যাকনেলি ভারত, টেলকন, রিলায়্যান্সের মতো সংস্থা এ বছর পশ্চিমবঙ্গে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি কলেজের ক্যাম্পাস ইন্টারভিউয়ে এসেছিল। ভিন রাজ্যের প্রকল্পের জন্যই অধিকাংশ ইঞ্জিনিয়ারকে নেওয়া হয়েছে। যেমন কলকাতার হেরিটেজ ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি-র মুখপাত্র জানাচ্ছেন, তাঁদের ক্যাম্পাসে ব্রিটিশ অক্সিজেন ও রিলায়্যান্স এসেছিল। কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সব স্নাতকের চাকরি হয়েছে রাজ্যের বাইরে। কলকাতার আর এক বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, গোদরেজের মতো সংস্থার হাত ধরে তাঁদের কোর ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বেশ কিছু স্নাতক মহারাষ্ট্রে চলে যাচ্ছেন। রাজ্যে ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পঠন-পাঠন বা গবেষণায় যে দুই প্রতিষ্ঠানের নাম সর্বাগ্রে আসে, সেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিবপুরের বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড সায়েন্স ইউনিভার্সিটি (বেসু) কী বলছে? বেসু-র উপাচার্য অজয় রায় বলেন, কোন পড়ুয়া কোথায় চাকরি পেলেন, তার বিস্তারিত তথ্য তাঁদের কাছে নেই। অজয়বাবুর মতে, উৎপাদন-শিল্পের কোন শাখায় ওঁরা কাজ করছেন, পোস্টিং তার উপরে নির্ভর করে। যেমন, কেউ গাড়ি শিল্পে থাকলে স্বভাবতই তাঁর কাজের জায়গা হবে পুণে বা চেন্নাই। "আবার কোর ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অনেক স্নাতক বহুজাতিকেও চাকরি পান। সে ক্ষেত্রে ওঁরা বিদেশেও পাড়ি দিতে পারেন।" মন্তব্য অজয়বাবুর। অন্য দিকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর: পাশ করে বেরিয়ে বহু ইঞ্জিনিয়ারকে প্রথমে বাইরে যেতে হচ্ছে। কারণ, অধিকাংশ বড় সংস্থার কারখানা এখানে নেই। অথচ সদ্য ডিগ্রি পাওয়া ইঞ্জিনিয়ারকে প্রশিক্ষণ নিতে হয় কারখানায়। যাদবপুরের প্লেসমেন্ট ও ট্রেনিং বিভাগের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক সিদ্ধার্থ ভট্টাচার্য বলেন, "কারখানায় প্রাথমিক প্রশিক্ষণের পরে ওঁদের বিভিন্ন প্রকল্পে কাজে লাগানো হয়। সে ক্ষেত্রে এ রাজ্যের কোনও প্রকল্প থাকলে এখানেও পোস্টিং হতে পারে।" অর্থাৎ, অন্য রাজ্য দিয়ে চাকরিপর্ব শুরু করা ছাড়া অনেকেরই উপায় থাকছে না। রাজ্য কী ভাবছে? শিল্প-প্রশাসনের দাবি, মেধাসম্পদের ভিন রাজ্যে ও বিদেশে পাড়ি দেওয়াটা নতুন কিছু নয়। বরং পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান সরকার প্রবণতাটা রোখার চেষ্টা করছে। শিল্প-বাণিজ্যমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় একাধিক সভায় বলেছেন, নিজভূমে ফিরতে ইচ্ছুক বঙ্গসন্তানদের সরকার যাবতীয় সহযোগিতা করবে। যদিও তেমন পরিস্থিতি এখনও তৈরি হয়নি বলে শিল্প-বাণিজ্যমহলের অনেকে মনে করছেন। কী বলছেন তাঁরা? বণিকসভা বেঙ্গল চেম্বার অফ কমার্সের প্রেসিডেন্ট কল্লোল দত্তের মতে, দেশ জুড়েই উৎপাদন ও সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে বৃদ্ধির অভাব স্পষ্ট। তার উপরে এ রাজ্যে শিল্পে লগ্নির অভাবে কর্মসংস্থানে টান পড়েছে। তিনি বলেন, "মন্দার পরে মেকানিক্যাল, সিভিল ইত্যাদির কদর ফিরছে। অথচ এখানে যাঁরা পাশ করে বেরোচ্ছেন, তাঁরা রাজ্যের বাইরে পা রাখতে বাধ্য হচ্ছেন।" মানবসম্পদ-বিশেষজ্ঞ তুষার বসুর আক্ষেপ, "গত পনেরো বছর যাবৎ এ রাজ্য থেকে বাইরে চাকরি করতে যাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। সাম্প্রতিক পরিস্থিতি যা, তাতে ভবিষ্যতেও এটা ঠেকানো মুশকিল।" অন্য দিকে বণিকসভা সিআইআইয়ের রিপোর্টে পশ্চিমবঙ্গে শিল্পে কর্মসংস্থানের যে ছবি মিলছে, তা-ও বিশেষ আশাপ্রদ কিছু নয়। দেখা যাচ্ছে, মোটামুটি সব রাজ্যে শিল্পক্ষেত্রে সর্বাধিক হারে কর্মসংস্থান হলেও পশ্চিমবঙ্গে সেই হার নগণ্য। এখানে জীবিকা জোগানোয় সবার আগে পরিষেবা ক্ষেত্র বা সার্ভিস সেক্টর (যার মধ্যে রেস্তোরাঁ-বিপণি, নিরাপত্তারক্ষীর কাজ থেকে শুরু করে কলসেন্টারের চাকরিও রয়েছে)। তথ্য বলছে, এরাজ্যে উৎপাদন-শিল্পে কর্মসংস্থানে বৃদ্ধির হার সাকুল্যে ১.২১%। খনিশিল্পে ২.৩৪%, নির্মাণে ৯.৭৩%। বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে তা প্রায় ১০% নেমে গিয়েছে! তথ্য-প্রযুক্তিতে অবশ্য একটু অন্য রকম। সফ্টওয়্যারসংস্থাগুলির সর্বভারতীয় সংগঠন 'ন্যাসকম'-এর পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান সুপর্ণ মৈত্রের দাবি, পশ্চিমবঙ্গে আইটি'তে নিয়োগের ছবি যথেষ্ট উজ্জ্বল। "গত দু'বছরে এ রাজ্যে তথ্য-প্রযুক্তি শিল্পে দশ হাজারের বেশি চাকরি হয়েছে।" বলছেন সুপর্ণবাবু। সংশ্লিষ্ট শিল্পমহলের দাবি: চার বছর বা তার আগে, ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে আইটি'র তুঙ্গ চাহিদা থাকাকালীন যাঁরা ওই শাখায় ভর্তি হয়েছিলেন, তাঁদের অনেকে পাশ করে বেরিয়ে এ রাজ্যেই পছন্দের চাকরি পেয়ে গিয়েছেন। এ হেন বৈপরীত্য কেন? ওই মহলের একাংশের ব্যাখ্যা: ইনফোসিস'কে বাদ দিলেও তথ্য-প্রযুক্তির বেশ কিছু তাবড় সংস্থা পশ্চিমবঙ্গে এসেছে। গড়েছে বড় প্রকল্প। তালিকায় উইপ্রো, কগনিজ্যান্ট, টিসিএস, আইবিএমের মতো 'নক্ষত্র'রাও রয়েছে। তাই নতুন আইটি ইঞ্জিনিয়ারদের চাকরি হয়েছে তুলনায় বেশি। কিন্তু যথেষ্ট সংখ্যক কোর ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগের মতো বড় শিল্প-কারখানা সাম্প্রতিক কালের মধ্যে গড়ে ওঠেনি। উল্টে টাটার গাড়ি-প্রকল্প রাজ্য থেকে পাট গুটিয়েছে। এমনকী, এ প্রসঙ্গে হলদিয়া থেকে এবিজি-বিদায়ের ঘটনারও উল্লেখ করছেন শিল্প-কর্তাদের অনেকে। তাঁদের মতে, গাড়ি কারখানা তো বটেই, এবিজি-র মতো পণ্য খালাসকারী সংস্থাতেও কোর ইঞ্জিনিয়ারদের চাকরির সুযোগ ছিল অনেক বেশি। সে সুযোগ ফস্কেছে। অতএব, ঘরের ভাত খেয়ে চাকরি করতে হলে উৎপাদন-শিল্পেও 'নক্ষত্র সমাবেশের' অপেক্ষায় থাকা ছাড়া উপায় কী? http://www.anandabazar.com/28raj2.html
|
No comments:
Post a Comment