Welcome

Website counter
website hit counter
website hit counters

Monday, December 31, 2012

ধর্ষণ আটকাতে হলে ত সবার আগে বন্ধ করতে হয় বাজারের আধিপাত্য.যেখানে নারী শুধু দেহ, ক্রয়বিক্রয় যোগ্য পণ্য ধর্ষণ আটকাতে হলে সবার আগে আস্তাকুংড়ে ছুঁড়ে ফেলতে হবে যাবতীয় ধর্মগ্রন্থ, যা নারীর অবাধ যৌণ ব্যবহারকে বৈধতা দেয়, নারীকে শুদ্র করে রাখে, দাসিত্বে তার পরিচয় নির্দিষ্ট করে এবং যার ফতোয়ায় তৈরি হয়ে যায নারীর অদৃষ্টলিপি।ধর্মে মাতৃউপাসক বাঙ্গালি কিন্তু নারিত্বের কতটা সম্মান করে , চিত্রয়িত হয়ে রয়েছে সাময়িক চালচিত্রে। কিন্তু ছোটলোক, ব্রাত্য, অন্ত্যজ ও মেহনতী মানুষের আবার উজ্জত?পেটের দায়ে যে ইজ্জত তাংরা বিকিয়ে দেয় স্বেচ্ছায়।অথচ পুঁজি, ক্ষমতা ও ধর্মের ত্রিশুলে বিশ্বায়িত থ্রী জি ফোর জি নগ্ন অর্ধনগ্ন অশ্লীল ভোগ প্রদর্শণীতে বারম্বার বিদ্ধ নারীত্বের অবমাননার রোজনামচা শুধু বিশেষ বিশেষ ঘটনার প্রতিবাদে বদলাতে চায় ক্রয়শক্তিতে বলিয়ান নবমধ্যমশ্রেণী, যার আদৌ কোনও দায় নেই সমতা ও সামাজিক ন্যায়ের প্রতি। পলাশ বিশ্বাস

 কিন্তু ছোটলোক, ব্রাত্য, অন্ত্যজ ও মেহনতী মানুষের আবার উজ্জত?পেটের দায়ে যে ইজ্জত তাংরা বিকিয়ে দেয় স্বেচ্ছায়।অথচ পুঁজি, ক্ষমতা ও ধর্মের ত্রিশুলে বিশ্বায়িত থ্রী জি ফোর জি নগ্ন অর্ধনগ্ন অশ্লীল ভোগ প্রদর্শণীতে বারম্বার বিদ্ধ নারীত্বের অবমাননার রোজনামচা শুধু বিশেষ বিশেষ ঘটনার প্রতিবাদে বদলাতে চায় ক্রয়শক্তিতে বলিয়ান নবমধ্যমশ্রেণী, যার আদৌ কোনও দায় নেই সমতা ও সামাজিক ন্যায়ের প্রতি

পলাশ বিশ্বাস

একত্রিশে ডিসেম্বরের রাত। সময় নাচ-গান, হই-হুল্লোড়ের মধ্যে বর্ষবরণের। আলোর রোশনাইয়ে সেজে ওঠে গোটা বিশ্ব।বাঙ্গালি চিরকালই উত্সবমাতোয়ারা
।ফুল ফুটুক না ফুটুক, বসন্তের ফুরফুরে মেজাজ তার চিরকালে অভ্যাস।আড্ডার বাই ত আছেই। পায়ে সরষে নিয়ে সারা দেশ ঘোরে টই টই।বাংলা নববর্ষ উদযাপন বাঙ্গালিত্ব প্রমাণ করার তাকীদে।আদতে সে বিশ্ব নাগরিক।সারা বিশ্বের খবরাখবর রাখে।কিন্তু আশে পাশে যা কিছু ন্যায় অন্যায় হয়, সেদিকে নজর পড়ে না , পাছে অযথা ঝামেলায় জড়িয়ে পড়তে হয়। মতামত সময়, সুযোগ ও স্থান পাত্র বিবেচনা করেই ব্যক্ত করে বাঙ্গালি।এমনিতে সে সবজান্তা।বরাবর নাক উঁচু, সামনের মানুষটিকে বিশেষ দায়ে না পড়লে গুরুত্ব দেওয়া তার ধাতে পোষায় না। কিন্তু ট্রেনে বাসে বাঙ্গালি আজকাল খুবই মুখর। আড়াআড়ি রাজনৈতিক মেরুকরণে বিভক্ত।এপার ওপার দুপার বাংলাতেই। আমরা ওরা প্রেক্ষিতই সব বুলি।তাই আজ সকালে ট্রেন যাত্রাপথে অনেক মণি মুক্তো সংগ্রহ হল। মা মাটি মানুষের সরকারকে বিপদে ফেলতেই নাকি বারাসাত ডায়মন্ড হারবারে ঘরোয়া সাজানো গণধর্ষণ। চার বছরে 2007 ধেকে 2011 পর্যন্ত এ রাজ্যের আদালতে দায়ের হয়েছে ধর্ষণের তেরো হাজারের বেশী মামলা। পুলিশ চার হাজার মামলাতে চার্জশিটই দিতে পারেনি।বছর ঘুরতে চলল, পার্কসার্কাস কেসে দময়ন্তী বিদায়ের পর চার্জ গঠন করার বুকের পাটা হয় নি। অথচ মাননীয় সাংসদ বলছেন, ঔ ঘটনা যৌণ কর্মী ও খদ্দেরের মধ্যে দেনা পাওনা ছাড়া কিছুই না।বাঙ্গালির গর্ব ব্রাহ্মণসন্তান হিন্দুত্বের সর্বোচ্চ ধর্মাধিকারি প্রণব মুখার্জীর সুপুত্র এ যাবত ব্যান্কে চাকরি করতেন।ইদানিং সাংসদ হয়েছেন পিতার শুন্য স্থানে। আন্দোলনকারি মেয়েরা তাঁর নজরে ডেন্টেড ও পেন্টেড। মহিলা মন্ত্রী হোম থেকে নিঁখোজ মেয়েদের দুশ্চরিত্র, পাজী বলছেন। এই বঙ্গে বড়ই রঙ্গ। ক্ষমতাসীন দলের সমর্থক আমজনতার মন্তব্য পাতে রাখা মুশকিল। চোকা চোকা বাণী। সে ত বুঝলাম, যে সুশীল সমাজ দিল্লী গণধর্ষণের প্রতিবাদে কলকাতার রাজপথে মোমবাতি দিয়ে আলোকিত করছে,ডায়মন্ড হারবার ও বারাসাত প্রসঙ্গে আমরা ওরার বেড়া ভেঙ্গে সেই সুশীল সমাজের নীরব স্তব্ধতা ভঙ্গ হচ্ছে না কেন। ভদ্রলোক সমাজে ইজ্জত জরুর থাকার কথা। সেখানে যৌণ নির্যাতনের, ধর্ষণের শাস্তিতে সর্বসহমতি। কিন্তু ছোটলোক, ব্রাত্য, অন্ত্যজ ও মেহনতী মানুষের আবার উজ্জত?পেটের দায়ে যে ইজ্জত তাংরা বিকিয়ে দেয় স্বেচ্ছায়।অথচ পুঁজি, ক্ষমতা ও ধর্মের ত্রিশুলে বিশ্বায়িত থ্রী জি ফোর জি নগ্ন অর্ধনগ্ন অশ্লীল ভোগ প্রদর্শণীতে বারম্বার বিদ্ধ নারীত্বের অবমাননার রোজনামচা শুধু বিশেষ বিশেষ ঘটনার প্রতিবাদে বদলাতে চায় ক্রয়শক্তিতে বলিয়ান নবমধ্যমশ্রেণী, যার আদৌ কোনও দায় নেই সমতা ও সামাজিক ন্যায়ের প্রতি।ধর্ষণ আটকাতে হলে ত সবার আগে বন্ধ করতে হয় বাজারের আধিপাত্য.যেখানে নারী শুধু দেহ, ক্রয়বিক্রয় যোগ্য পণ্য ধর্ষণ আটকাতে হলে সবার আগে আস্তাকুংড়ে ছুঁড়ে ফেলতে হবে যাবতীয় ধর্মগ্রন্থ, যা নারীর অবাধ যৌণ ব্যবহারকে বৈধতা দেয়, নারীকে শুদ্র করে রাখে, দাসিত্বে তার পরিচয় নির্দিষ্ট করে এবং যার ফতোয়ায়  তৈরি হয়ে যায নারীর অদৃষ্টলিপি।ধর্মে মাতৃউপাসক বাঙ্গালি কিন্তু নারিত্বের কতটা সম্মান করে , চিত্রয়িত হয়ে রয়েছে সাময়িক চালচিত্রে

বিশ্বায়নের শক্তি সমুহ, বাজার, মীডিয়া. ক্ষমতা, রাজনীতি, কর্তৃত্ব,আধিপাত্য, পুঁজি ও অবশ্যই ধর্ম রাষ্ট্রবাদ এই বিশিষ্টজনের প্রতিবাদে ইন্ধন জোগাতে সর্বদা আগুয়ান।সেইমত দিল্লি গণধর্ষণের ঘটনা আগেই ঝড় তুলেছিল সোশাল নেটওয়ার্কিং সাইট গুলিতে। এবারে দিল্লির তেইশ বছরের সেই সাহসিনীকে শ্রদ্ধা জানাল সাইবার দুনিয়া। তাঁর স্মৃতিতে শ্রদ্ধার আলো জ্বলল গুগল ইন্ডিয়ার হোম পেজে।সাধারণভাবে বিভিন্ন স্মরনীয় ঘটনাকে মনে রেখে হোমপেজে সংস্থার লোগোর জায়গায় ডুডলস প্রকাশ করে গুগল। দিল্লির ঘটনায় তাদের শ্রদ্ধার্ঘের ধরনটা আলাদা। দিল্লির তরুণীর স্মূতির উদ্দেশ্যে গুগলের সার্চ বক্সের নিচে এবারে জায়গা পেয়েছে একটি জ্বলন্ত মোববাতির ছবি। যার ওপর মাউস নিয়ে গেলেই স্ক্রিনে ভেসে উঠছে দিল্লির তরুণীর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ। এর আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাটের নিউটাউনের স্কুলে গুলি চালানোর ঘটনাতেও এভাবেই শ্রদ্ধা জানিয়েছিল গুগল।

হুগলির উত্তরপাড়া হোম থেকে ১১ জন মহিলার নিখোঁজ হয়ে গিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে৷ স্বাভাবিকভাবেই কী করে একসঙ্গে এতজন নিখোঁজ হলেন, সেই প্রশ্ন উঠছে৷এলাকায় চাঞ্চল্য, উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে৷ উত্তরপাড়া থানায় হোমের তরফে একটি নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়েছে৷ সূত্রের খবর, সোমবার ভোর চারটে নাগাদ রুটিন মাফিক আবাসিকদের সংখ্যা মেলানোর সময় দেখা যায় ১১ জন আবাসিক উধাও৷ এই ১১ জনকে মুম্বইয়ের নিষিদ্ধ পল্লি থেকে ২৩ নভেম্বর আনা হয়েছিল ওই হোমে৷ নিখোঁজদের মধ্যে ৪ জন বাংলাদেশ এবং ৭ জন উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা বলে জানিয়েছে পুলিশ৷ পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, হোমের রান্নাঘরের পিছনের সিঁড়ি দিয়ে পালিয়েছেন ওই ১১ জন৷ এ ব্যাপারে নারীকল্যাণমন্ত্রী সাবিত্রী মিত্রও দাবি করেছেন, হোম থেকে ওই মহিলারা পালিয়েছেন৷ তাঁর আরও দাবি, হোমে নিরাপত্তার কোনও অভাব ছিল না৷ তা হলে তাহলে নিরাপত্তার বেষ্টনী টপকে ওঁরা পালালেন কী করে, সেই 
প্রশ্ন উঠছে৷  
খবর পেয়েই নিখোঁজদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে পুলিশ৷ খবর ছড়িয়ে পড়তেই আবাসিকদের আত্মীয়রা এসে উপস্থিত হন হোমে৷ হোমের আবাসিকদের সঙ্গে তাঁদের দেখা করতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করা হয়েছে৷
অর্ণব মুখোপাধ্যায়, সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়। এবিপি আনন্দ

হিমালয় কাঁপতে পারে ভূকম্পে
হিমালয় পর্বতমালা।
সিঙ্গাপুর: হিমালয়ে ভূমিকম্পের অশনি সঙ্কেত! অচিরেই হিমভূমে হানাদারি চালাতে পারে বিধ্বংসী কম্পন৷ রিখটার স্কেলে যার তীব্রতা ছুঁতে পারে ৮ থেকে ৮.৫৷ এর চরম মূল্য চোকাতে হতে পারে ভারতকে৷ এমনটাই দাবি একদল গবেষকের৷ 

সিঙ্গাপুরের খ্যাতনামা প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নানইয়ং টেকনোলজিক্যাল ইউনিভার্সিটি (এনটিইউ)-তে এ নিয়ে একটি গবেষণা হয়েছে৷ গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে নেচার পত্রিকায়৷ গবেষণার দায়িত্বে ছিলেন সিঙ্গাপুর, নেপাল এবং ফ্রান্সের গবেষকরা৷ গবেষক দলের সদস্য পল ট্যাপোনিয়রের দাবি, অতীতে ৮ থেকে ৮.৫ তীব্রতার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে হিমালয়ে৷ মধ্য হিমালয়ে কম্পনের তীব্রতায় বড়সড় ফাটলও তৈরি হয়েছে৷ এই 'দৃষ্টান্ত' থেকে গবেষকরা মনে করছেন অচিরেই এর পুনরাবৃত্তি হতে পারে৷ শুধু তাই নয়, অতীতের সিংহভাগ ভূমিকম্প যে আঘাত হানতে পারেনি৷ সেই চরম আঘাতটাই হানতে পারে আসন্ন এই ভূমিকম্প৷ ফাটল ধরতে পারে এখনও সুরক্ষিত ভূখণ্ডে আর এমনটা হলে ভারতে এর তীব্র প্রভাব পড়বে৷ তবে গবেষকদের আশ্বাস, এই ভূমিকম্প আসতে বেশ খানিকটা দেরি রয়েছে৷ তাই এখনই আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই৷ 

হিমালয় পৃষ্ঠে ভূকম্পন নতুন কিছু নয়৷ কথিত আছে, এর উত্পত্তির নেপথ্যেও বড় ভূমিকা রয়েছে ভূমিকম্পের৷ নিজেদের দাবির পক্ষে গবেষকরা তুলে এনেছেন ১২৫৫ এবং ১৯৩৪ সালে হিমালয় কাঁপানো দু'টি ভূমিকম্পের প্রসঙ্গ৷ ১৯৩৪-এর ভূমিকম্পে মাউন্ট এভারেস্টের পশ্চিমাংশে অন্তত ১৫০ কিলোমিটারজুড়ে ফাটল তৈরি করেছে৷ নেপালে টেকটোনিক প্লেট বরাবর এই ফাটল তৈরি হয়েছে৷ নেপালের এই চ্যুতিকেই ভারতীয় এবং এশীয় টেকটোনিক প্লেটের মধ্যকার সীমানা হিসেবে ধরা হয়৷ পোশাকির ভাষায় এর নাম মেইন ফ্রন্টাল থ্রার্স্ট ফল্ট৷ ১২৫৫ সালের ভূমিকম্পের প্রভাবে টেকটোনিক প্লেটের নড়াচড়াও চোখে পড়ার মতো ছিল বলেই দাবি ওই গবেষকদের৷ 

অতীতে ১৮৯৭, ১৯০৫, ১৯৩৪ এবং ১৯৫০ সালে হওয়া হিমালয়ের ভূমিকম্পগুলির তীব্রতা ছিল ৭.৮ থেকে ৮.৯৷ এগুলি ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ঘটালেও ধরে নেওয়া হয়েছিল ভূপৃষ্ঠে ফাটল ধরাতে পারেনি৷ পোশাকি পরিভাষায় এগুলিকে 'ব্লাইন্ড কোয়েক' বলেই ধরে নেওয়া হত৷ গবেষকদের এই নতুন দাবি অতীতের ভাবনাকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে৷ 

এ দিকে শনিবার রাতে কম্পন অনুভূত হয়েছে কাশ্মীর উপত্যকায়৷ রিখটার স্কেলে এর তীব্রতা ছিল ৫.৯৷ আফগানিস্তানের হিন্দুকুশ পর্বত এই ভূমিকম্পের উপকেন্দ্র ছিল বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর৷ ভূমিকম্পে প্রাণহানি বা ক্ষয়ক্ষতির খবর মেলেনি৷ তবে প্রবল আতঙ্ক ছড়ায়৷ রবিবার দুপুর ১.৪৭ নাগাদ ত্রিপুরায় ভারত বাংলাদেশ সীমান্তে মৃদু কম্পন অনুভূত হয়েছে৷ রিখটার স্কেলে এর তীব্রতা ছিল ৪.২৷ ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি বা প্রাণহানির কোনও খবর মেলেনি৷ 

 24 ঘন্টার মন্তব্য অত্যন্ত সাময়িকঃ

শ্লীলতাহানির বিরুদ্ধে আইন নিয়ে দ্বিচারিতায় মুখ্যমন্ত্রী

কথায় এক, কাজে আরেক। বাংলার মসনদে দুবছর কাটানোর আগেই, এই গুরুতর অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। বিতর্কের কেন্দ্রে নারী নিরাপত্তায় কঠোর আইন প্রণয়নের ইস্যুটি। শনিবারই, কেন্দ্রের কাছে ধর্ষণ বিরোধী কঠোর আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। অথচ, তাঁর নিজেরই দফতরে প্রায় আটমাস ফাইলবন্দি হয়ে পড়ে এরাজ্যে মহিলাদের শ্লীলতাহানির বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রণয়নের বিষয়টি। 

ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর তথ্যে প্রকাশ, গত দুই দশকে দশগুণেরও বেশি বেড়েছে রাজ্যে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ। এর মোকাবিলায় ভারতীয় দণ্ডবিধিতে যে ৩৫৪ ধারা রয়েছে তা জামিনযোগ্য। দোষপ্রমাণে শাস্তিও মাত্র দুবছরের কারাদণ্ড। এই তথ্য তুলে ধরেই, মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ সংক্রান্ত আইনের ফাঁস আরেকটু শক্ত করার সুপারিশ করেছিল রাজ্য মানবাধিকার কমিশন। রাজ্য সরকারকে গত ২০ এপ্রিল ওই সুপারিশপত্র পাঠানো হয়। ফাইল নম্বর 81/WBHRC/COM/2012-13। প্রস্তাবে কমিশন জানিয়েছিল, সাম্প্রতিককালে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের ঘটনা যেভাবে বেড়ে গেছে তাতে কমিশন মনে করছে ভারতীয় দণ্ডবিধির তিনশো চুয়ান্ন ধারা আর মহিলাদের বিরুদ্ধে সবরকমের অবরাধ মোকাবিলায় যথেষ্ট কার্যকর নয়। 

তাই আইনে সংশোধনীর প্রস্তাব দেয় কমিশন। কমিশন দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে নারীর সম্মানরক্ষার গৌরবময় অতীত যেখানে রয়েছে সেই পশ্চিমবঙ্গে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪ ধারায় সংশোধনী এনে আইনকে মানবাধিকার রক্ষায় আরও কার্যকর করা উচিত। 


কিন্তু কেন্দ্রীয় আইনে কি কোনও রাজ্য সরকার সংশোধনী আনতে পারে? রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের মতে, পারে। উদাহরণ স্বরূপ অন্ধ্রপ্রদেশ ও ওড়িশার উদাহরণও তুলে ধরা হয়েছে কমিশনের সুপারিশে। অন্ধ্রে উনিশশো একানব্বই সালে ও ওড়িশায় উনিশশো পঁচানব্বই সালে, তিনশো চুয়ান্ন ধারার ওপর উপধারা যোগ করে তাকে আরও শক্তিশালী করা হয়। কমিশনের সুপারিশ, সে পথে হাঁটুক পশ্চিমবঙ্গও। 

মানবাধিকার আইনের বলে কমিশনের সুপারিশ, কোনও মহিলার সম্ভ্রমহানি করার উদ্দেশ্যে তাঁর ওপর হামলার ঘটনায় কমপক্ষে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের আইন আনা হোক। এমনকি আদালতের বিচারক্রমে কখনও তা সাত বছরও হতে পারে। বাম আমলেই এই সংক্রান্ত আইনে বদল আনার জন্য কেন্দ্রের কাছে প্রস্তাব করা হয়েছিল। 


 পালাবদলের পর ক্ষমতায় এসে সেই সুপারিশ নিয়েও এগোয়নি নতুন সরকার। পাশাপাশি, আটমাস ফাইলবন্দি হয়ে পড়ে রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের সুপারিশও। অথচ দিল্লি গণধর্ষণ নিয়ে শনিবারই মুখ্যমন্ত্রীর গলায় শোনা গেছে অন্যসুর।


কথায় এক, কাজে অন্য। এটা কি দ্বিচারিতা নয়? প্রশ্ন তুলেছে মানবাধিকার সংগঠনগুলি। 


মানবাধিকার কমিশনের সূত্রে খবর, এই সুপারিশ ছাড়াও মানবাধিকার সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে রাজ্যকে অন্তত সাতাশটি সুপারিশ করেছেন কমিশন। তার মধ্যে তিনটি ক্ষেত্রে লিখিতভাবেই মানবাধিকার কমিশনের সুপারিশ অগ্রাহ্য করার কথা জানিয়ে দিয়েছে রাজ্য সরকার। বাকি সুপারিশগুলির গন্তব্যও হয়েছে ঠাণ্ডা ঘরে। দিল্লির এই ঘটনায় কড়া আইনের কথা বলা হলেও, এই রাজ্যে মহিলাদের শ্লীলতাহানি ঠেকাতে মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকা সদর্থক নয় বলে অভিযোগ উঠেছে।


ধর্ষণের মতো ঘটনায় শাস্তি কঠোর করার তোড়জোড় শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই। এবার সবক'টি রাজনৈতিক দলের কাছে মতামত চাইল কেন্দ্র। আইনে কী কী পরিবর্তন আনা উচিত, সে বিষয়ে প্রতিটি দলকে তাদের মত জানাতে বলে চিঠি পাঠিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীলকুমার শিন্ডে। এদিকে, নয়াদিল্লিতে মৃতা তরুণীর পরিবারকে ১৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে দিল্লি সরকার। সেই সঙ্গে পরিবারের একজনকে চাকরিও দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিত। 

ধর্ষণে দোষীদের আরও কঠোর সাজা দিতে ফৌজদারি আইনে কী কী পরিবর্তন আনা যেতে পারে, রাজনৈতিক দলগুলির কাছে সেই সংক্রান্ত মতামত চাইল কেন্দ্র। বিরোধীরা এ বিষয়ে একটি সর্বদল বৈঠকের দাবিতে সরব হয়েছে। সোমবারও বিজেপি নেত্রী সুষমা স্বরাজ সংসদের বিশেষ অধিবেশনের দাবি তুলেছেন। 

আইন পরিবর্তন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলির মত চাইল কেন্দ্র
ছবিতে প্রতিবাদ। সোমবার দিল্লিতে পিটিআই-র তোলা ছবি।

তবে সরকার এখনই হয়তো বিশেষ অধিবেশনের রাস্তায় হাঁটবে না। শোনা যাচ্ছে, আইন সংশোধন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি জেএস ভার্মার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের দলের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরই সরকার কোনও পদক্ষেপ করতে চায়। রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর সরকার সর্বদল বৈঠক ডেকে রিপোর্ট নিয়ে আলোচনা করতে পারে।

ধর্ষণ, নিগ্রহের এ বছর সাজা মাত্র ১ জনের

ধর্ষণ, নিগ্রহের এ বছর সাজা মাত্র ১ জনের
৫ বছরে দিল্লিতে কমেছে ধর্ষণে শাস্তির হার।
নয়াদিল্লি: দেশের 'ধর্ষণ রাজধানী' দিল্লিতে বিচারের অবস্থাও তথৈবচ৷ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক প্রকাশিত তথ্যই বলছে সে কথা৷ ২০১২ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত দিল্লি পুলিশের কাছে জমা পড়েছে ৬৩৫টি ধর্ষণের অভিযোগ৷ গ্রেপ্তার হয়েছে ৭৫৪ জন, গত পাঁচ বছরের নিরিখে যা সর্বাধিক৷ কিন্ত্ত এতজন অভিযুক্তের মধ্যে শাস্তি হয়েছে মাত্র একজনের৷ ৩৪৮ জন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে তদন্তই শুরু হয়নি৷ ৪০৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা চলছে এবং বেকসুর খালাস পেয়েছে দু'জন৷ সামগ্রিক ভাবে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের আইনি প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রেই দিল্লির পরিসংখ্যান বেশ উদ্বেগজনক৷ 

গত পাঁচ বছরে পর্যায়ক্রমে বেড়েছে ধর্ষণের অভিযোগের সংখ্যাও৷ উল্টোদিকে প্রায় একই হারে কমেছে শাস্তির নিদর্শন৷ ২০০৮ সালে দিল্লি পুলিশের কাছে ৪৬৬টি ধর্ষণের অভিযোগ জমা পড়ে৷ ২০০৯, ২০১০ ও ২০১১ সালে সংখ্যাটা যথাক্রমে ৪৬৯, ৫০৭ এবং ৫৭২৷ ২০১১ সালে ৭৪৫ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ৷ তার মধ্যে সাজা পায় মোট ১৮ জন৷ ২০০৮ সালে শাস্তির সংখ্যাটা ছিল ৫২, ২০০৯-এ ৮২ ও ২০১০-এ ৩৭৷ 

যৌন নিগ্রহের ঘটনায় শাস্তি দেওয়ার ক্ষেত্রেও একই ট্র্যাডিশন বজায় রেখেছে দিল্লি৷ এখানেও ধারাবাহিক ভাবে কমেছে শাস্তি দেওয়ার হার৷ ২০০৮ থেকে ২০১১ পর্যন্ত চার বছরে যথাক্রমে ৯১২, ৮২৬, ৮৬৭ ও ৯১০ জন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল৷ তাদের মধ্যে সাজা হয়েছে ২০০৮-এ ১৬ জনের, ২০০৯-এ ১১ জন, ২০১০-এ ১২ জন ও ২০১১-এ তিন জন৷ এ বছর ৬২৪টি নিগ্রহের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছে ৭৬৮ জন৷ অথচ ধর্ষণ-মামলাগুলির মতো এ ক্ষেত্রেও সাজা হয়েছে মাত্র এক জনের৷ ৪০২ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা এখনও ঝুলে রয়েছে, তদন্তই শেষ হয়নি ৩৫৬ জনের বিরুদ্ধে৷ অন্য দিকে ইভ-টিজিং-এর অভিযোগে ২০১২ সালে একজনও সাজা পায়নি৷ ১৯৩টি অভিযোগের ভিত্তিতে ২০০ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ৷ এদের মধ্যে ১০৫ জনের বিরুদ্ধে এখনও তদন্ত চলছে৷ মামলা শুরু হয়েছে মোট ৯৫ জনের বিরুদ্ধে৷ 

প্রতিবাদের আগুন এখনও জ্বলছে। এরইমধ্যে, সিঙ্গাপুর থেকে দিল্লি নিয়ে আসা তরুনীর দেহের অন্ত্যেষ্টি সম্পন্ন হল কড়া পুলিসি নিরাপত্তায়। রাজধানী পৌছানোর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই অন্ত্যেষ্টি কাজ শেষ হয়। রবিবার ভোররাতে দেহ নিয়ে যাওয়া হয় তাঁর বাড়িতে। সেখানেই অন্ত্যেষ্টির আগের রীতি সম্পন্ন হয়। তারপর কুয়াশা ঢাকা দ্বারকায় তাঁর শেষকাজ সমাধা হয়। অন্ত্যেষ্টির স্থল ঘিরে ছিল কড়া নিরাপত্তা। মোতায়েন করা হয় র‍্যাফ। 

ভারতীয় সময় রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ তরুণীর নিথর দেহ নিয়ে দিল্লি বিমানবন্দের মাটি ছোঁয় এয়ারইন্ডিয়ার বিশেষ বিমান। বিমানবন্দরে তখন উপস্থিত প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। শোকবার্তায় পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি। ন্যায়বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। 

সকাল থেকেই শোনা যাচ্ছিল এয়ারইন্ডিয়ার বিশেষ বিমান এআইসি-৩৮০ নির্যাতিতার দেহ নিয়ে দেশে পৌঁছবে। কিন্তু কখন? তাই নিয়েই ছিল জল্পনা। সময় পরিবর্তিত হয়েছে বারবার। দেরি হয়েছে পোস্ট মর্টেমের কারণে। দিল্লি থেকে যে বিশেষ বিমানটি সিঙ্গাপুর গিয়েছিল, তার ক্লিয়ারেন্স পেতেও কিছুটা সময় লেগেছে। সময় লেগেছে ডেথ সার্টিফিকেট পেতেও। 

প্রথমে মনে করা হয়েছিল ভারতীয় সময় দুপুর দেড়টার মধ্যেই মিটিয়ে ফেলা সম্ভব হবে প্রয়োজনীয় কাজ। কিন্তু শেষমেষ তা মিটতে মিটতেই শনিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটা বেজে যায়। নানা কারণে দেরি হলেও নয়াদিল্লির মাটিতে অপেক্ষা করেছেন কয়েকশো মানুষ। তরুণীর দেহ নিয়ে ভারতীয় সময় রাত পৌনে দশটা নাগাদ রওনা হয় এয়ারইন্ডিয়ার বিশেষ বিমান। দিল্লি বিমানবন্দরে যখন বিমান এল, ঘড়ির কাটায় রাত সাড়ে তিনটে। কিন্তু সেই গভীর রাতেও বিমানবন্দরে উপস্থিত হন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর শোকবার্তায় তিনি বলেন,


ধর্ষণের ঘটনায় তিরিশ বছর পর্যন্ত কারাবাস ও ক্ষেত্র বিশেষে দোষী ব্যক্তির যৌন সংসর্গের ক্ষমতা নষ্ট করে দেওয়া। ধর্ষণ রোধে আইন পরিবর্তনের জন্য কংগ্রেসের তৈরি করা খসড়ায় থাকছে এই দুটি বিষয়। দলীয় সূত্রে এ খবর জানা গেছে। খসড়া প্রস্তাব চূড়ান্ত হওয়ার পর তা ভার্মা কমিটির হাতে তুলে দেওয়া হবে।

দিল্লি গণধর্ষণকাণ্ডের পর দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জন্য দেশজুড়ে কড়া আইন চালুর দাবি উঠেছে। চাপে পড়ে ফৌজদারি আইন সংশোধনের লক্ষ্যে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি জেএস ভার্মার নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটি গড়েছে কেন্দ্র। এই কমিটির কাছে নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রক মারফত সুপারিশ পাঠাবে কেন্দ্রীয় সরকার। এ জন্য কংগ্রেসের তরফে একটি খসড়া তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। 

তবে, দলীয় সূত্রে খবর, ধর্ষণে দোষী প্রমাণিত হলে তিরিশ বছর পর্যন্ত কারাবাস ও বিরলতম ক্ষেত্রে ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে দোষী ব্যক্তির যৌন সংসর্গের ক্ষমতা নষ্ট করে দেওয়ার প্রস্তাব থাকছে ওই খসড়ায়।

দিল্লি গণধর্ষণকাণ্ডে অভিযুক্তদের মধ্যে একজনের বয়স আঠারো পেরোতে কয়েক মাস বাকি। ফলে, প্রাপ্তবয়স্কদের সঙ্গে একই আইনে তার বিচার হওয়া সম্ভব নয়। কোনও কোনও মহল থেকে দাবি উঠেছে, এইসব অপরাধের ক্ষেত্রে বয়স আঠারো থেকে কমিয়ে পনেরো করা হোক। 

সূত্রের খবর, কংগ্রেসের তৈরি করা ধর্ষণ-বিরোধী আইনের খসড়ায়, জুভেনাইলস অ্যাক্টের ক্ষেত্রে বয়স কমিয়ে আনার সুপারিশ থাকতে পারে। ফাস্ট ট্র্যাক আদালতে তিন মাসের মধ্যে ধর্ষণের মামলার নিষ্পত্তির কথাও সেখানে বলা হবে।   

ধর্ষণ রোধে কড়া আইন তৈরির জন্য সোনিয়া গান্ধীর নেতৃত্বাধীন জাতীয় উপদেষ্টা পর্ষদকেও সামিল করা হতে পারে।

ধর্ষণ রুখতে কড়া আইন চালুর জন্য ফের সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকার দাবি জানিয়েছে বিজেপি।

১৯৭৯ সালে সুপ্রিম কোর্টের তদানীন্তন প্রধান বিচারপতি প্রথম ধর্ষণের শাস্তি হিসাবে ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে যৌন সংসর্গের ক্ষমতা নষ্ট করার বিষয়টি উল্লেখ করেছিলেন। সম্প্রতি, দিল্লির এক বিচারকও এই ধরণের শাস্তিদানের পক্ষে সওয়াল করেন।


ফের শ্লীলতাহানি দিল্লিতে


দিল্লির গণধর্ষিতা তরুণীর মৃত্যুতে শনিবার তখনও উত্তাল দিল্লি৷ কাটেনি প্রতিবাদের রেশ৷ তার মধ্যেই চলন্ত বাসে ফের এক নাবালিকার শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটল৷ এ বার ঘটনাস্থল মান্ডি হাউস৷ 

শনিবার পরিবারের লোকেদের সঙ্গে মনোমালিন্য হওয়ায় রাত সাড়ে ন'টা নাগাদ পশ্চিম দিল্লির খায়ালার বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান বছর ১৬-র ওই নাবালিকা৷ ওঠেন প্রায় ফাঁকা ডিটিসি-র একটি বাসে৷ খয়ালা থেকে লাজপত নগর যাচ্ছিল বাসটি৷ ১১টা নাগাদ বাসটি মান্ডি হাউস পেঁৗছলে তাঁর শ্লীলতাহানি করে ওই বাসে সওয়ার অন্য একটি বাসের কন্ডাক্টর৷ সেই সময় বাসটির ভিতরের আলো নিভিয়ে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ৷ ওই সময় মান্ডি হাউস চত্বরে ডিউটিতে ছিলেন কয়েকজন পুলিশ কনস্টেবল৷ তাঁদের সন্দেহ হওয়ায় বাসটিকে আটকান৷ মেয়েটির অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত কন্ডাক্টর রঞ্জিত সিংকে গ্রেন্তার করেন তাঁরা৷ ওই বাসের ড্রাইভার ও কন্ডাক্টরও পুলিশকে বয়ান দেন৷ ১২ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে অভিযুক্ত রঞ্জিতকে৷ জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বাসের ড্রাইভার এবং কন্ডাক্টরকে৷ তিন জনকেই সাসপেন্ড করা হয়েছে জানিয়েছেন দিল্লির পরিবহণমন্ত্রী রমাকান্ত গোস্বামী৷ দ্রুততার সঙ্গে ঘটনাটির তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ৷ শ্লীলতাহানিতে এই দু'জনের কোনও ভূমিকা ছিল কিনা, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ৷ 

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে মেয়েটি ওই দিন রাত সাড়ে ন'টা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরপরই খায়ালা থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন তাঁর বাড়ির লোকেরা৷ পরে নিখোঁজ ডায়েরির পরিবর্তে অপহরণের অভিযোগ দায়ের করা হয়৷


ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ,বন্ধুকে নিয়ে ফেরার প্রেমিক


ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ,বন্ধুকে নিয়ে ফেরার প্রেমিক
ডায়মন্ড হারবার ও কাঁথি: ভারতকন্যার বিদায়েও বিবেক জাগেনি ধর্ষকদের৷

বারাসত৷ ডায়মন্ড হারবার৷ কাঁথি৷ দিল্লির ঘটনা যে কিছু মানুষের বিবেকে এতটুকু নাড়া দিতে পারেনি, তা স্পষ্ট ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ রাজ্যে তিন ধর্ষণের ঘটনায়৷ ডায়মন্ড হারবারে ধর্ষণের পর এক তরুণীকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ৷ আর কাঁথিতে অভিযোগ, গণধর্ষণ করা হয়েছে দেড় বছরের শিশুর মা-কে৷ বাধা দেওয়ায় বর্বর আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হতে হয়েছে তাঁকে৷ দ্বিতীয় ঘটনায় দু'জন গ্রেফতার হলেও, প্রথম ঘটনায় অভিযুক্তরা পলাতক৷ 

দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবার থানায় হরিণডাঙা গ্রামের এক বছর বাইশের তরুণী শনিবার সন্ধ্যায় তাঁর প্রেমিক প্রিন্সের সঙ্গে নিউটাউনে মেলা দেখতে যাবেন বলে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন৷ সঙ্গে ছিলেন রাজা নামে প্রিন্সের এক বন্ধুও৷ কিন্ত্ত রাতে আর বাড়ি ফেরেননি তরুণী৷ রবিবার সকালে বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরে আব্দালপুরের মাঠে তাঁর অর্ধনগ্ন দেহ পাওয়া যায়৷ গলায় মাফলার প্যাঁচানো ছিল৷ মেয়েটিকে শ্বাসরোধ করে মারা হয়েছে বলে পুলিশ জানালেও, ধর্ষণের সত্যতা নিশ্চিত করতে অপেক্ষা করবে ময়নাতদন্তের রিপোর্টের জন্য৷ স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব ঘটনাটিকে ধর্ষণ বলে মানতেই রাজি নন৷ তাঁরা একে নিছক হত্যাকাণ্ড বলেই চালাতে চাইছেন৷ সে কারণেই মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর পুলিশের বিরুদ্ধে ধর্ষণের ঘটনা চেপে দেওয়ার চেষ্টা করার অভিযোগ তুলেছে৷ 

তরুণীর ভাই অবশ্য ধর্ষণ করে তাঁর দিদিকে খুন করা হয়েছে বলেই অভিযোগ দায়ের করেছেন ডায়মন্ড হারবার থানায়৷ তিনি বলেছেন, 'শ্বাসরোধ করে দিদিকে খুন করা হয়েছে৷ তার আগে তাঁকে ধর্ষণ করা হয়েছে৷' খুন মানলেও, প্রথমে পুলিশ ধর্ষণের অভিযোগ নিতে চায়নি বলে অভিযোগ৷ পরে অবশ্য ধর্ষণ ও খুনের মামলা রুজু করেছে পুলিশ৷ দক্ষিণ ২৪ পরগনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, 'মৃতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ৷ প্রেমের সম্পর্কে কোনও গণ্ডগোলের জেরে মেয়েটিকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে৷ তবে ধর্ষণ হয়েছে কি না, তা বোঝা যাবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর৷ অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে৷' তরুণীর ভাই সরাসরি অভিযোগের আঙুল তুলেছেন দিদির প্রেমিক প্রিন্সের বিরুদ্ধে৷ প্রিন্স ডায়মন্ড হারবার থানারই জলট্যাঙ্ক এলাকার বাসিন্দা৷ রবিবার দিনভর সন্ধানই মেলেনি প্রিন্স ও তাঁর বন্ধু রাজার৷ দু'জনই গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছেন৷ স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক দীপক হালদার কিন্ত্ত মেয়েটি ধর্ষিতা হয়েছেন বলে মানতে নারাজ৷ তিনি বলেঠেন, 'শাসকদলের নির্দেশে পুলিশ ধর্ষণের অভিযোগ নিচ্ছে না বলে প্রচার পুরোপুরি ভিত্তিহীন৷ তবে ঘটনা হল ধর্ষণ হয়ইনি৷ মেয়েটিকে খুন করা হয়েছে কোনও কারণে৷' এপিডিআর-এর অন্যতম কর্মকর্তা আলতাফ আহমেদের কিন্ত্ত অভিযোগ, 'শাসকদলের নির্দেশেই পুলিশ ধর্ষণকে ধামাচাপা দিতে চাইছে৷' 

অন্য দিকে, কাঁথির কাছে ভূপতিনগরের অনলবেড়িয়া গ্রামে ধর্ষকদের লালসার হাত থেকে রেহাই মেলেনি এক দেড় মাসের শিশুর মায়েরও৷ ঘরের দরজা ভেঙে একদল লোক তাঁকে একা পেয়ে একের পর এক ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ৷ ধর্ষকদের বাধা দিতে গিয়ে প্রবল মার খেয়েছেন গৃহবধূটি৷ ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর মাথায় ও কানে আঘাত করা হয়েছে৷ আশঙ্কাজনক অবস্থায় তিনি এখন তমলুক হাসপাতালে চিকিত্‍সাধীন৷ ২৫ ডিসেম্বরের ঘটনা হলেও, পুলিশ জানতে পেরেছে শনিবার৷ এর পরই তত্পরতার সঙ্গে পুলিশ দু'জনকে গ্রেফতার করেছে৷ বাকিদের খোঁজে শুরু হয়েছে তল্লাশি৷

অনলবেড়িয়া ও হাটুরিয়া গ্রামের মাঝে উঁচু মাটির রাস্তার পাশে ঝুপড়ি ঘরে দেড় মাসের সন্তানকে নিয়ে একাই থাকতেন মহিলাটি৷ বাইরে থাকেন শ্রমিক স্বামী৷ হাসপাতাল থেকে তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন, ২৫ ডিসেম্বর বড়দিনের উত্‍সবে মদ্যপ অবস্থায় বেশ কয়েক জন দরজা ভেঙে তাঁর ঝুপড়ি ঘরে ঢুকে পড়ে তাঁকে ধর্ষণ করেছে৷ বাধা দিতে গিয়ে মারের চোটে গুরুতর আহত হয়েছেন তিনি৷ তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ রবিবার দু'জনকে গ্রেফতার করেছে৷ অভিযুক্তদের নাম বিকাশ বারিক ও অশোক শিট৷ কাঁথির এসডিপিও ইন্দ্রজিত্‍ বসু জানিয়েছেন, 'বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে পুলিশ তল্লাশি করছে৷ ওঁর অবস্থা এখন আশঙ্কাজনক৷ মহিলাটির মেডিক্যাল টেস্ট হবে৷ রিপোর্টের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে৷' 


ধর্ষণকাণ্ডে ফের বিতর্কিত মন্তব্য এক তৃণমূল নেত্রীর। কাকলি ঘোষদস্তিদারের পর এবার সোনালী গুহ। পার্ক স্ট্রিটের পর এবার বারাসত। বারাসতে ধর্ষণকাণ্ড প্রসঙ্গে রাজ্য বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার সোনালি গুহর মন্তব্য, "শহরাঞ্চলে ধর্ষণের ঘটনা ঘটলেই মানুষ টের পান। কিন্তু গ্রামাঞ্চলে এ ধরনে ঘটনা ঘটেই থাকে।" সোনালী গুহর এই মন্তব্যে রাজ্যে ধর্ষণের ঘটনায় সরকারের ঔদাসীন্যই আরও একবার প্রকট হয়ে পড়ল বলে মনে করা হচ্ছে। ধর্ষণের অভিযোগকে ঘিরে মন্তব্য করে বিতর্ক উস্কেছেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ববি হাকিম। ওই ঘটনাকে পারিবারিক বিবাদের জের বলে মন্তব্য করেন তিনি। 

দিল্লির নির্যাতিতা তরুণীর স্মৃতির উদ্দেশে রবিবার গান্ধীমূর্তির পাদদেশে মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের অনুষ্ঠান। স্বাভাবিকভাবেই সেখানে এসে পড়ে বারাসতের ধর্ষণকাণ্ডের প্রসঙ্গ। আর তাতেই বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার সোনালি গুহর মন্তব্য, "ধর্ষণের ঘটনা নিরবিচ্ছিন্ন।" মাত্র দিন তিনেক আগেই পার্ক স্ট্রিটের ধর্ষণকাণ্ডকে মহিলা এবং তাঁর খদ্দেরের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি বলেই মন্তব্য করেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদার। কয়েক দিন আগেও দিল্লির ধর্ষণকাণ্ডের সঙ্গে পার্কস্ট্রিটের ঘটনার প্রেক্ষিত এক নয় বলে মন্তব্য করেন তৃণমূলপন্থী বুদ্ধিজীবী অর্পিতা ঘোষ। বিতর্ক তৈরি হয়। এরপর অবশ্য পিছু হটেন কাকলি ঘোষদস্তিদার।   
 
আসলে পার্কস্ট্রিটকাণ্ড নিয়ে বিতর্কের জন্মটাই দেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নিজে। গোটা ঘটনাকে `সাজানো` আখ্যা দিয়ে তাঁর মন্তব্য ছিল, "সরকারের ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত করতেই ধর্ষণের অভিযোগ করছেন নির্যাতিতা মহিলা।" 
 
কিন্তু কলকাতা পুলিসের তত্কালীন গোয়েন্দা প্রধান সাংবাদিক সম্মেলন করে জানান, পার্ক স্ট্রিটে ধর্ষণ করা হয় মহিলাকে। এরপরেও কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী শুধরে নেননি নিজের বক্তব্য? কালনা, সাঁতরাগাছি, বারাসত সহ রাজ্যে একের পর এক ধর্ষণকাণ্ড নিয়ে প্রায় একই রকম বক্তব্য রেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর সুরেই সুর মিলিয়েছেন তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা। আর বারবারই সামনে চলে এসেছে প্রশাসনিক উদাসীনতার ছবিটাও।     
 
সরকারের তরফে ধর্ষিতাদের জন্য সরকারি ভাতার ব্যবস্থা হয়েছে। কিন্তু দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির সুপারিশ করা হয়নি। আসলে  ধর্ষিতাদের প্রতি মানবাকিতার হাত বাড়ানোর পরিবর্তে ধর্ষণের ঘটনায় প্রশাসনের ব্যর্থতা ঢাকতেই যে বারবারই জোর দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা-মন্ত্রীরা। বারাসতকাণ্ড নিয়ে ডেপুটি স্পিকার সোনালি গুহ ও মন্ত্রী ববি হাকিমের মন্তব্যও সে কারণেই বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

দিল্লি কাণ্ডের প্রায় এক হাজার পাতার চার্জশিটে ৩০ জন প্রত্যক্ষদর্শীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছেন ২৩ বছরের ওই তরুণীর বন্ধুও যিনি সেদিন দুষ্কৃতিদের হাতে নিগৃহীত হয়েছেন। এছাড়াও সেই রাতে যে ব্যক্তিকে দুষ্কৃতিরা লুঠ করে প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে তাঁর নামও রয়েছে চার্জশিটে। এছাড়াও সেই রাতে অভিযোগ গ্রহণকারী পুলিস অফিসার, সফদরজং ও সিঙ্গাপুরে মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ডাক্তাররাও রয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে রয়েছেন। সূত্রে খবর, আগামী বুধবার এই চার্জশিট পেশ করা হবে। আজই ১৬ তারিখের ঘটনার ফরেন্সিক ও ডিএনএ রিপোর্ট জমা পড়ার কথা। এই রিপোর্টেই ধৃত দুষ্কৃতীদের ঘটনাস্থলে উপস্থিতির প্রমাণ মিলবে বলে মনে করছে পুলিস। 

তেরো দিনের লড়াইএর পর গত শনিবারই মারা গিয়েছেন দিল্লিতে ধর্ষিতা ২৩ বছরের ওই তরুণী। তাঁর মৃত্যুর পর রাম সিং, তার ভাই মুকেশ, পবন, বিনয়, অক্ষয় ঠাকুর ও জনৈক রাজু নামের ধৃত ওই ছয় দুষ্কৃতির বিরুদ্ধে খুনের চার্জ ও গঠন করা হয়েছে। এছাড়াও ধর্ষণ, অপহরণ, নজির বিহীন অপরাধ সহ একাধিক অপরাধে চার্জ দেওয়া হয়েছে।


দিল্লির ঘটনা নিয়ে সরব হলেও বারাসতের ঘটনায় কেন নীরব মুখ্যমন্ত্রী, এই প্রশ্ন তুলেই এবার আসরে নামল তৃণমূলের এক সময়কার জোট-বন্ধু কংগ্রেস। দিল্লির ঘটনার মতো বারাসতের ঘটনাতেও দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির দাবি তুললেন প্রদেশ নেতারা। ধর্ষণকাণ্ড নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে সরব বিজেপিও। রবিবার রাজনৈতিক দলগুলির পাশাপাশি বারাসতকাণ্ড নিয়ে পথে নামেন সাধারণ মানুষ।

দিল্লির গণধর্ষণকাণ্ডে মুখ খুলেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী থেকে তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা। কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কেন্দ্রের কাছে আবেদন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু বারাসত বা রাজ্যে একের পর এক ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে কেন নীরব মুখ্যমন্ত্রী? এবার এই প্রশ্ন তুলেই সরব প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা। বারাসতে নির্যাতিতা মহিলার পরিবারের সঙ্গে রবিবার দেখা করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দীপা দাশমুন্সি। তাঁর দাবি, ফাস্ট ট্র্যাক আদালত তৈরি করে দিল্লির ঘটনার মতো বারাসতকাণ্ডেও দ্রুত মামলার নিষ্পত্তি করে কঠোর শাস্তি দেওয়া হোক দোষীদের।   
 
বারাসতকাণ্ড সহ রাজ্যের একের পর এক ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে সরব রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। বারাসতের ঘটনার প্রতিবাদে রবিবার বিকেল সাড়ে তিনটে থেকে আধ ঘণ্টা যশোর রোডের চাঁপাডালি মোড় অবরোধ করেন বামফ্রন্টের নেতা-কর্মীরা। ঘটনার প্রতিবাদে রবিবার সন্ধ্যায় মোমবাতি মিছিল বের করেন ছাত্রছাত্রীরা। ডাকবাংলো মোড় থেকে শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় যায় ছাত্রছাত্রীদের এই মোমবাতি মিছিল।


বারাসতের সোনাখরকিতে নিহত মহিলাকে ধর্ষণ করা হয়েছিল কি না তা জানতে আজ ফের মেডিক্যাল পরীক্ষা করা হবে। একই সঙ্গে ভিসেরা এবং ফরেনসিক পরীক্ষা হবে। তবে ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে শ্বাসরোধ করে কুপিয়ে খুনের কথাই বলা হয়েছে বলে পুলিস সূত্রে খবর। খুনের ঘটনায় ইছা মোড়ল নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিস। ধৃতকে জেরা করে রবিবার ঘটনাস্থল থেকে খুনে ব্যবহৃত একটি হাতুড়ি উদ্ধার হয়েছে। ইছা মোড়লকে দশদিন পুলিসি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ইটভাটার ১২ জন কর্মীকেও আটক করা হয়েছে। মহিলার স্বামী এখনও আরজি কর হাসপাতালে ভর্তি। তাঁর অবস্থা সঙ্কটজনক রয়েছে বলে ।

বারাসতে খুনের ঘটনায়, নিহত মহিলার পরিবারের সদস্যদের বয়ানে বেশ কিছু অসঙ্গতি মিলেছে। মহিলার ছেলে জানান, বাবা রক্তবমি করতে করতে বাড়ি ঢুকে মায়ের ওপর হামলার কথা বলেছিলেন। কিন্তু পুত্রবধূর বক্তব্য,  তাঁর শ্বশুর জানতে চান, স্ত্রী ইটভাটা থেকে ফিরেছেন কি না। ফেরেনি জেনে স্ত্রীকে খুঁজতে বেরিয়েছিলেন তিনি। ফলে ওই ব্যক্তি ইটভাটা থেকে আহত অবস্থায় বাড়িতে এসেছিলেন, নাকি মাঝে আরও একবার এসেছিলেন, তা পরিষ্কার নয়। ইটভাটার কাজ শেষ হয়েছিল বিকেল সাড়ে পাঁচটায়। ছেলের দাবি, বাবা সন্ধে সাড়ে ৬টায় রক্তবমি করতে করতে বাড়িতে ঢোকেন। বাড়ির খুব কাছেই ইটভাটা। মাঝের এক ঘণ্টা কে কোথায় ছিলেন, তা জানা যায়নি।

গতকাল সোনাখরকি এলাকায় ওই পুকুরের পাড় থেকেই মহিলার দেহ উদ্ধার হয়েছিল। পুকুরে তল্লাসি চালিয়ে কালই সেখান থেকে একটি হাতুড়ি এবং একটি হাঁসুয়া উদ্ধার করে পুলিস।


ডিসেম্বরের শেষ। রবিবার। তার সঙ্গে জমাটি ঠাণ্ডা। এই ত্র্যহস্পর্শে জমে উঠল ছুটির দিনের চিড়িয়াখানা। ছোট থেকে বড়, জেলা থেকে শহর, এমনকি ভিন রাজ্যের বাসিন্দা, সবার ভিড়ে আজকের চিড়িয়াখানা হয়ে উঠেছিল যেন এক কার্নিভ্যাল। পশুপাখিদের ঘিরে ছোটদের বিস্ময় আর আনন্দ, বড়দের দিলদরিয়া মেজাজ আর দেদার খাওয়াদাওয়া, সব মিলিয়ে আজ দিনভর যেন আনন্দের হাট বসেছিল চিড়িয়াখানা চত্বরে।

শীতের কুয়াশা গায়ে মেখে চিড়িয়াখানার সামনে বহুবর্ণরঞ্জিত মানুষের ভিড়। বছরের শেষ রবিবারের সকালে দেখা গেল সেই চেনা ছবি। ছোটদের হাত ধরে এসেছেন বড়রা। তবে শুধুই ছোটদের আনন্দ দিতে নয়, বছরের শেষ রবিবারটা নিজেরাও উপভোগ করতে। বেলা বাড়তেই তিল ধারণের জায়গা ছিল না চিড়িয়াখানা চত্বরে। সব খাঁচার সামনেই উত্সাহী মানুষের ভিড়। চোখের সামনে বইয়ে দেখা পশুপাখিদের নড়াচড়া দেখে বেজায় খুশি ছোটরা।

খুশি বড়রাও। কারণ সপরিবারে চিড়িয়াখানার মধ্যেই জমে উঠেছে পিকনিকের মেজাজ। 

খানিক পরে খেলায় মেতে উঠল ছোটরা।  সঙ্গে দফায় দফায় মনপসন্দ খাবারের প্যাকেট। মাসের শেষ হলেও বছর শেষের ছুটির দিনে বড়দের মেজাজ কিন্তু দিলদরিয়া। পারিবারিক আন্ন্দ উপভোগের সেই চেনা ছবির আবহ দিনভর মাতিয়ে রাখল সকলকেই।


এখনও থামেনি প্রতিবাদ। দিল্লির এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়, সে জন্য এখন সময় আরেক নতুন লড়াইয়ের প্রস্তুতি। গণধর্ষণে দোষীদের মৃত্যুদণ্ডের দাবিতে আজও বিক্ষোবমুখর গোটা দেশ। সকাল থেকে দিল্লির যন্তরমন্তরে বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন বহু মানুষ। সমাজকে নারীর বাসযোগ্য করার দাবিতে যন্তরমন্তরে একদিনের প্রতীকী অনশনে বসেছেন বিক্ষোভকারীদের একাংশ। দেশের অন্যান্য অংশ থেকেও আসছে বিক্ষোভের খবর। গণধর্ষণকাণ্ডের প্রতিবাদে পুরীর সমুদ্র পাড়ে বালির মূর্তি তৈরি করেছেন শিল্পী। চেন্নাই, কলকাতাতেও দিল্লির ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবিতে মিছিলে সামিল হয়েছেন সাধারণ মানুষ।

দিনভর কড়াকড়ির পর বিকেলের দিকে একটু শিথিল করা হল দিল্লির নিরাপত্তা বাঁধন। বিকেলের দিকে বন্ধ দশটি মেট্রোস্টেশনের পাঁচটিতে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। প্রগতি ময়দান, মাণ্ডি হাউস, বারাখাম্বা রোড, রাজীব চক ও প্যাটেল চক মেট্রোস্টেশন খোলার অনুমতি দিয়েছে পুলিস। তবে দিল্লির অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলিতে এখনও নিরাপত্তার কড়াকড়ি অপরিবর্তিত। রাজপথ, বিজয়চক এবং ইন্ডিয়া গেট সংযোগকারী সড়কগুলিতে যান চলাচল নিষিদ্ধ। বন্ধ কামাল আতাতুর্ক মার্গ। প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন, রাষ্ট্রপতি ভবন ও দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিতের বাড়ির সামনে বাড়তি নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন রাখা হয়েছে। রাজ্যনৈতিক নেতাদের বাসভবন ও দিল্লির অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলিও কড়া নিরাপত্তার চাদরে। সাধারণ মানুষের বিক্ষোভ প্রদর্শনের কেবল খোলা রয়েছে যন্তরমন্তরের দরজা।   

গণধর্ষণে দোষীদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ দেখানোকে কেন্দ্র করে পুলিসের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ালেন বিজেপির ছাত্র সংগঠন এবিভিপির সদস্যরা। দুপুর একটা নাগাদ, এবিভিপির একটি বিক্ষোভ মিছিল যন্তরমন্তরে পৌঁছয়। মিছিলটি যন্তরমন্তর থেকে কনট প্লেসের দিকে এগোনোর চেষ্টা করলে বাধা দেয় পুলিস। পুলিসের সঙ্গে প্রথমে ধস্তাধস্তি ও পরে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। সঙ্গে সঙ্গেই অতিরিক্ত পুলিস ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বিক্ষোভকারীদের কয়েকজনকে চিহ্নিত করে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নিয়ে যায় পুলিস।


১৬ ডিসেম্বর, ২০১২: দিল্লিতে পাশবিক গণধর্ষণের শিকার তরুণী...মুনিরকা থেকে দ্বারকা যাওয়ার জন্য একটি এসি বাসে ওঠেন মেডিক্যাল ছাত্রী ওই তরুণী ও তাঁর বন্ধু। বাসের মধ্যে ছয় দুষ্কৃতী তরুণীকে ধর্ষণ করে মহিপালপুরের কাছে তাঁকে ও তার বন্ধুকে বাস থেকে ছুঁড়ে ফেলে দেয়। মেডিক্যালের ছাত্রী ওই তরুণীর বন্ধুকেও। রাতে সেই তরুণীকে অচৈতন্য অবস্থায় ভর্তি করা হয় দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে


১৭ ডিসেম্বর, ২০১২-
- চার দুষ্কৃতীকে চিহ্নিত করা হল। তরুণীর শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ। বাদ দেওয়া হল প্রায় পুরো অন্ত্র।

১৮ ডিসেম্বর, ২০১২-দেশজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠল। দোষীদের ফাঁসির শাস্তি দাবি করলেন লোকসভার বিরোধী দলনেত্রী সুষমা স্বরাজ। এই কাণ্ডে চার জনকে গ্রেফতার করল পুলিস।

১৯ ডিসেম্বর, ২০১২-- লেখার মাধ্যমে হাসপাতালে কথা বললেন দিল্লির সেই নির্যাতিতা। মেডিক্যাল বুলেটিনে বলা হল, শারীরিক অবস্থার উন্নতি হছে তাঁর। ২০ ডিসেম্বর, ২০১২-- গণধর্ষণ কাণ্ডে সাক্ষী দিলেন প্রত্যক্ষদর্শীরা, তরুণীর বন্ধুর `সেটমেন্ট`ও নেওয়া হল। দিল্লিতে প্রতিবাদের আগুন ভয়াবহ রূপ নিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীরা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিতের বাড়ির সামনে প্রতিবাদ জানাল। ২১ ডিসেম্বর, ২০১২--- ভেন্টিলেটরে নিয়ে যাওয়া হল তরুণীকে। অণুচক্রিকার পরিমাণ হ্রাস পেল। তরুণীর বন্ধু মুকেশ নামের এক অভিযুক্তকে চিহ্নিত করল। হরিয়াণা, বিহারে তল্লাসি চালিয়ে আরও এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হল। ২২ ডিসেম্বর-- মহকুমা শাসককে বয়ান দিলেন নির্যাতিতা। রাতে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করায় তরুণীকে নিয়ে চিন্তা বাড়ল। দেশজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় আছড়ে পড়ল। দিল্লিতে ইন্ডিয়া গেটের সামনে হাজার হাজার জনতা প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নিলেন। ২৩ ডিসেম্বর-- আন্দোলনে হিংসা ছড়াল। মারমুখি জনতার ইটের আঘাতে আহত হলেন দিল্লি পুলিসের কনস্টেবল সুভাষ তোমার। সারাদিন বমি করে গেলেন তরুণী। ওয়াশ করার জন্য অস্ত্রোপচার করা হল
২৪ ডিসেম্বর-- প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং এই ঘটনার নিন্দা করে বিবৃতি দিলেন। মনমোহনের আশ্বাস দোষীদের দ্রুত কড়া শাস্তি দেওয়া হবে। শান্তি বজায় রাখার আবেদনও জানালেন প্রধানমন্ত্রী। ফের অস্ত্রোপচার করা হল তরুণীর।

২৫ ডিসেম্বর-- সকাল থেকেই তরুণীর অবস্থার উন্নতি হল। পুরো ঘটনার বয়ানও দিলেন। দোষীদের ফাঁসির সাজা চেয়েছেন এমন খবরও প্রকাশ পেল। রাতে হঠাত্‍ শারীরিক অবস্থার অবনতি হল। সেপসিসের প্রাথমিক উত্সর্গ দেখা দিল, চিন্তা বাড়ল।


২৬ ডিসেম্বর---
 আন্দোলন তীব্র আকার নিল যন্তরমন্তরের সামনে। নিহত পুলিস কনস্টেবল সুভাষ তোমারের শেষকৃত্য সম্পন্ন হল। সন্ধ্যা থেকেই হঠাত্‍ই সফদরজং হাসপাতালের নিরাপত্তা বাড়ানো হল। নিয়মমাফিক কোনও মেডিক্যাল বুলেটিন প্রকাশ করা হল না, শুরু হল জল্পনা।

তিনবার হদরোগে আক্রান্ত হলেন তরুণী.. রাত ১২টা নাগাদ তাঁকে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে যাওয়া হল।

২৭ ডিসেম্বর--
 দিল্লিতে নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হল... এ দিকে সিঙ্গাপুরে সেই তরুণীর অবস্থা আরও খারাপ হল।

২৮ ডিসেম্বর--
 তরুণীর ৭টি অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কাজ করা বন্ধ করে দিল.. মাল্টি অরগ্যান ফেলিওরের লক্ষণও দেখা দিল। অণুচক্রিকার পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেল। গোটা দেশ আশঙ্কায় ডুবে। 

২৯ ডিসেম্বর
-- রাত ২.১৫ টা নাগাদ লড়াই শেষ হল... মারা গেলেন সেই তরুণী। বিদেশমন্ত্রক সূত্রে জানানো হল মৃত্যুর খবর। প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং শোক জানালেন।


সমাজ-পরিবারের বাধা ঠেলে লড়াই আর এক সাহসিনীর



সমাজ-পরিবারের বাধা ঠেলে লড়াই আর এক সাহসিনীর
কৌশিক সরকার 

এই সময়: এক মেয়ে হার মেনেছে মৃত্যুর কাছে৷ যদিও তার লড়াই দেশজুড়ে জ্বেলে দিয়েছে প্রতিবাদের আগুন৷ আর এক মেয়ে হারেনি কারও কাছেই৷ সর্বশক্তিমান সমাজের কাছেও না৷ পাশে দাঁড়ায়নি পরিবারও, কিন্ত্ত মাসের পর মাস নিজের লড়াই নিজেই লড়ে যাচ্ছে সেই ষোড়শী৷ একা৷ 

বছর দুয়েক আগে সোনারপুর থেকে অপহরণ, দিল্লিতে পাচার, দালালের হাত ঘুরে বিক্রি হয়ে যাওয়া যৌনপল্লিতে, তারপর উপর্যুপরি ধর্ষণ আর অপমানের দীর্ঘ কাহিনি৷ পুলিশ তাকে উদ্ধার করে এনেছে যৌনপল্লি থেকে, কিন্ত্ত যখন সে শুরু করতে গেছে তার আইনি লড়াই, সামনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে তার পরিবার৷ সমাজও৷ 

দুনিয়ার কাছ থেকে নিজের আসল নাম লুকোতে চায় না এই মেয়ে৷ এও এক লড়াই৷ 

দু-বছর আগে, বয়স যখন তার মাত্র ১৪, যখন গ্রীষ্মের এক দুপুরে ঘুমোচ্ছে সোনারপুরের মফস্সল, একা সেই মেয়ে তখন ব্যস্ত ছিল কাজে, তাদের পারিবারিক দোকানে৷ সে সময়ে দুই যুবক সেখানে আসে, আলাপ জমায় তার সঙ্গে৷ অনুরোধ-উপরোধে তাদের বোতল থেকে ঠান্ডা পানীয়তে চুমুক দেয় সে৷ পর মুহূর্তে সব অন্ধকার৷ ঘুম ভাঙল এক ট্রেনের কামরায়৷ তাকে তখন ঘিরে রয়েছে তিন যুবক৷ আরও কয়েক ঘন্টা কাটে আধো ঘুমে আধো জাগরণে৷ তারপর দিল্লি স্টেশন৷ রাজধানীতে পৌঁছনোর পর প্রায় পাঁজাকোলা করে তাকে নিয়ে তোলা হয় এক ফ্ল্যাটবাড়িতে৷ বন্ধ করে রাখা হয় একটা ঘরে৷ জুতো আর লাঠি দিয়ে পেটানো হয়৷ তারপর চলে ধর্ষণের পালা৷ শেষমেশ তাকে বিক্রি করে দেওয়া হয় দিল্লির এক যৌনপল্লিতে৷ 

এক বছর পর দিল্লি পুলিশ আর এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আরও ১০ জন মেয়ের সঙ্গে উদ্ধার করে তাকে৷ বাড়ি ফিরে লড়াকু মেয়েটি সোজা যেতে চায় থানায়৷ যারা তাকে অন্ধকার জগতে ঠেলে দিয়েছিল, অভিযোগ দায়ের করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে৷ 

প্রথম বাধা আসে বাড়ির তরফে৷ কিন্ত্ত শরীরে, মনে যৌবন আসার আগেই জীবনের সব অন্ধ গলি দেখে ফেলেছে যে মেয়ে, তাকে রোখা যায়নি এত সহজে৷ বাড়ির মতকে অগ্রাহ্য করেই থানায় অভিযোগ লিপিবদ্ধ করায় সে৷ মফস্সলে থেকে সে সিদ্ধান্ত নেওয়া চা‌ট্টিখানি কথা নয়৷ তাই আজ সে বলতেই পারে, 'শহরের অবস্থা তাও ভালো, মেয়ে পাচারের আসল আঁতুড়ঘর তো গ্রামই৷' নারী পাচারের পরিসংখ্যানও বলছে, প্রতি বছর মুর্শিদাবাদ, দক্ষিণ ২৪ পরগণা সহ রাজ্যের বেশ কয়েকটি জেলা থেকে পাচার হয়ে যাচ্ছে বহু মেয়ে৷ যাদের বেশিরভাগেরই স্থান হচ্ছে বড় বড় শহরের যৌনপল্লিগুলিতে৷ দিল্লির ঘটনা শোনার পরে সে বলে, 'একজন ধর্ষিতাই শুধু বুঝতে পারে আর একজন ধর্ষিতার আসল যন্ত্রণা৷' 

লড়াইয়ের এখানেই শেষ নয়৷ বরং বলা যেতে পারে শুরু৷ চাপ আসতে থাকে অভিযোগ প্রত্যাহার করার জন্য৷ রাজি হয় না সেই মেয়ে৷ তারপর একদিন ভাঙচুর করা হয় তাদের ছো বাড়ি৷ জ্বালিয়ে দেওয়া হয় ধানের ক্ষেত৷ তবু হাল ছাড়েনি সে৷ এখনও মামলার দিনগুলিতে ট্রেনে-বাসে চেপে সে হাজির হয় আদালতে৷ মামলা লড়তে৷ তার পাশে আছে 'শক্তি বাহিনী' নামের এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা৷ দিল্লির যৌনপল্লিগুলিতে গত ১২ বছর ধরে অভিযান চালিয়ে আসছে এই সংস্থা৷ এই মেয়েটির লড়াইয়েও আইনি সহায়তা দিচ্ছে তারাই৷ 

আদালতে কেমন অভিজ্ঞতা তার? তিনজন পুরুষ পুলিশ অফিসারের উপস্থিতিতে তাকে বলতে হয়েছে ঠিক কী কী করা হয়েছিল তার সঙ্গে৷ কী কী ভাবে অত্যাচার করা হয়েছে৷ আইনজীবী তাঁর কাছে জানতে চান, কতজনের সঙ্গে শুয়েছেন? তার উত্তর ছিল, একজনের সঙ্গেও নয়৷ ওরা সবাই ধর্ষণ করেছে আমাকে৷ ভরা আদালতে আইনজীবী জানতে চান, কত টাকা পেতেন ওখানে? মেয়েটির জবাব, ধর্ষণ করে মুখের ওপর ছুঁড়ে দিয়ে যেত কিছু পয়সা, যাতে আঘাতটুকু নিষ্ফলা না যায়৷ অভিযোগের পরে অভিযুক্তদের তিনজনকে অল্প সময়ের মধ্যেই গ্রেফতার করা হয়৷ কিন্ত্ত দুবছর বাদে তারা সবাই জামিনে মুক্ত৷ 

তবুও জারি রয়েছে সাহসিনীর লড়াই৷ এখনও সে ভরসা রাখে বিচার ব্যবস্থার ওপর৷ বলে, ন্যায় বিচার পাওয়ার লক্ষ্যেই লড়ছি আমি আজও৷

  1. মনুস্মৃতিতে নারী | সনাতন বিদ্যার্থী সংসদ, বাংলাদেশ

    www.svsbd.org/মনুস্মৃতিতে-নারী/
    অনেকে অভিযোগ করেন, মনুসংহিতা সামগ্রিকরূপে একটি নারীবিরোধী শাস্ত্র। এতে মাতৃশক্তি বা নারীকে অবজ্ঞা করা হয়েছে। একথা বহুজন বিদিত যে, মনুসংহিতা নামক শাস্ত্রটিতে বহু প্রক্ষিপ্ত অংশ রয়েছে। এর মানে এই যে- জাতিগত বা সময়গত কোন বিশেষ উদ্দেশ্যে এই পবিত্র গ্রন্থটিতে অনেকে কাঁটাছেড়াঁ করা হয়েছে। তা যাই হোক, এই জাল শ্লোকগুলো ...
    আপনি পৃষ্ঠাটি 12/18/12তে দেখেছেন৷
  2. বেদ ও নারী - সনাতন বিদ্যার্থী সংসদ, বাংলাদেশ

    www.svsbd.org/বেদ-ও-নারী/
    মাহিন on সতীদাহ প্রথা ও বিধবা বিবাহ (Courtesy : হিন্দু ধর্ম প্রচার সংঘ); Indrojit Shikder onমনুস্মৃতিতে নারী; রুদ্র on বেদে গোহত্যা এবং গোমাংস খাওয়া; Samir on ... বেদে নারী-১. বেদে নারীর মহিমা শীর্ষক লেখা অনেক দিন ধরে লিখতে চাচ্ছিলাম। বিভিন্ন ব্লগে হিন্দু ধর্ম নিয়ে নানা অপপ্রচার চলছে। এর একটি হচ্ছে বেদে নারীর অবস্থান অনেক ...
  3. সনাতন বিদ্যার্থী সংসদ, বাংলাদেশ

    বেদে নারী-১ বেদে নারীর মহিমা শীর্ষক লেখা অনেক দিন ধরে লিখতে চাচ্ছিলাম। বিভিন্ন ... মাহিন on সতীদাহ প্রথা ও বিধবা বিবাহ (Courtesy : হিন্দু ধর্ম প্রচার সংঘ); Indrojit Shikder on মনুস্মৃতিতে নারী; রুদ্র on বেদে গোহত্যা এবং গোমাংস খাওয়া; Samir on শ্রীমদ্ভগবদগীতা শ্রবণ: ৪র্থ পর্ব; Samir on শিবতত্ত্ব বা মহাশিবরাত্রির তাত্পর্য ...
  4. ধর্মান্ধ বনাম ধর্মভীরু - Prothom Alo Blog

    "স্মৃতিশাস্ত্র মনুস্মৃতিতে পাঁচটি অবস্থার কথা বলা আছে যেখানে একজন নারী তার স্বামীকে ত্যাগ করতে পারে। আবার পুনরায় বিবাহের বিধানও দেওয়া আছে। অর্থশাস্ত্রও বিচ্ছেদের বিধান দিয়েছে। পাঁচটি অবস্থা হচ্ছে- স্বামী যদি নপুংসক হয়, স্বামী যদি বিশ্বাসঘাতক হয়, স্বামী যদি অসত ও আসুরী জীবন যাপন করে, স্বামী যদি সংসার কাজে কঠোর সংযমী ...
  5. অথচ সারা দেশে নারী কোথাও নিরাপদ নয়, যেহেতু পুরুষতান্ত্রিক ধর্ম ও ...

    19 ডিস 2012 – মনুস্মৃতিতে নারী. লিখেছেনঃ svsbd ক্যাটেগরিঃ ধর্ম জিজ্ঞাসা. ভারতীয় সংস্কৃতিতে নারী. অনেকে অভিযোগ করেন, মনুসংহিতা সামগ্রিকরূপে একটি নারীবিরোধী শাস্ত্র। এতে মাতৃশক্তি বা নারীকে অবজ্ঞা করা হয়েছে। একথা বহুজন বিদিত যে, মনুসংহিতা নামক শাস্ত্রটিতে বহু প্রক্ষিপ্ত অংশ রয়েছে। এর মানে এই যে- জাতিগত বা ...
  6. সাত পাকে বাঁধা জীবন সবসময় স্বর্গ হয় না | Amarblog.com: Bangla Blog ...

    www.amarblog.com/sssharma/posts/91967 - বাংলাদেশ
    24 নভ 2009 – স্মৃতিশাস্ত্র মনুস্মৃতিতে পাঁচটি অবস্থার কথা বলা আছে যেখানে একজন নারী তার স্বামীকে ত্যাগ করতে পারে। আবার পুনরায় বিবাহের বিধানও দেওয়া আছে। অর্থশাস্ত্রও বিচ্ছেদের বিধান দিয়েছে। পাঁচটি অবস্থা হচ্ছে- স্বামী যদি নপুংসক হয়, স্বামী যদি বিশ্বাসঘাতক হয়, স্বামী যদি অসত ও আসুরী জীবন যাপন করে, স্বামী যদি সংসার ...
  7. বিধবা বিয়ে : | Amarblog.com: Bangla Blog ( আমারব্লগ ) with no ...

    21 নভ 2009 – স্মৃতিশাস্ত্র মনুস্মৃতিতে পাঁচটি অবস্থার কথা বলা আছে যেখানে একজন নারী তার স্বামীকে ত্যাগ করতে পারে। আবার পুনরায় বিবাহের বিধানও দেওয়া আছে। অর্থশাস্ত্রও বিচ্ছেদের বিধান দিয়েছে। পাঁচটি অবস্থা হচ্ছে- স্বামী যদি নপুংসক হয়, স্বামী যদি বিশ্বাসঘাতক হয়, স্বামী যদি অসত ও আসুরী জীবন যাপন করে, স্বামী যদি সংসার ...
  8. হিন্দু পারিবারিক আইন 'সংস্কার' এবং প্রাসঙ্গিক ভাবনা

    4 নভ 2012 – ঋগ্বেদের একটি সূক্তে আছে-' হে ইন্দ্র, যাবজ্জীবন পিতামাতার সঙ্গ বসবাসরত অনূঢ়ানারী যেমন নিজের পিতৃকুল থেকে ভাগ প্রার্থনা করে , সেরূপ আমিও তোমার নিকট থেকে ধন ...বিবাহকালে যৌতুক হিসাবে পিতৃ-সম্পত্তির এক চতুর্থাংশের দাবী কন্যার নৈতিক দাবী বলে মেনে নিয়েছিলেন, মনুস্মৃতিতে আমরা সেই ধারণা পাই, (মনুস্মৃতি, ৯/১১৮)।
    আপনি পৃষ্ঠাটি 12/18/12তে দেখেছেন৷
  9. RESISTGENOCIDE: অথচ সারা দেশে নারী কোথাও নিরাপদ নয়, যেহেতু ...

    19 ডিস 2012 – মনুস্মৃতিতে নারী. লিখেছেনঃ svsbd ক্যাটেগরিঃ ধর্ম জিজ্ঞাসা. ভারতীয় সংস্কৃতিতে নারী. অনেকে অভিযোগ করেন, মনুসংহিতা সামগ্রিকরূপে একটি নারীবিরোধী শাস্ত্র। এতে মাতৃশক্তি বা নারীকে অবজ্ঞা করা হয়েছে। একথা বহুজন বিদিত যে, মনুসংহিতা নামক শাস্ত্রটিতে বহু প্রক্ষিপ্ত অংশ রয়েছে। এর মানে এই যে- জাতিগত বা ...


রাজ্য অনুমতি দেয়নি, নন্দীগ্রাম নিয়ে চার্জশিট দিতে পারছে না সিবিআই



রাজ্য অনুমতি দেয়নি, নন্দীগ্রাম নিয়ে চার্জশিট দিতে পারছে না সিবিআই
সুগত বন্দ্যোপাধ্যায় 

বাম আমলে উচ্চপদস্থ পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা একাধিক ক্ষেত্রে 'সরকারি আনুকূল্যে' এড়িয়ে যেতে পেরেছিলেন শাস্তির খাঁড়া৷ এ বার একই পথে হাঁটছে তৃণমূল সরকার৷ এমনকি নন্দীগ্রাম মামলাতেও৷ 

২০০৭ সালের ১৪ মার্চ নন্দীগ্রামে জমি আন্দোলনের জেরে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছিলেন ১৪ জন৷ সেই মামলায় সিবিআই-এর অভিযোগের তির তিন আইপিএস অফিসারের দিকে৷ আদালতে তাঁদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়ার জন্য নিয়ম মেনে রাজ্য সরকারের অনুমতিও চাওয়া হয়েছে গত ২৩ মে৷ কিন্ত্ত ৬ মাস পেরিয়ে গেলেও কোনও জবাব আসেনি রাজ্যের মুখ্যসচিবের কাছ থেকে৷ গত ২৮ নভেম্বর ফের তারা চিঠি পাঠিয়েছে মুখ্যসচিবকে৷ তার পরেও পার হয়ে গেছে এক মাস৷ কোনও জবাব মেলেনি৷ ফলে তদন্ত শেষ হয়ে গেলেও, সিবিআই এই মামলার চার্জশিট পেশ করতে পারছে না আদালতে৷ এ দিকে মামলার বর্তমান অবস্থা জানতে চেয়ে ফের আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছে কয়েক জন মৃতের পরিবার। শীতের ছুটির পরই কলকাতা হাইকোর্টে তাঁরা এই আবেদন জানাবেন৷ 

মহাকরণ সূত্রে খবর, সিবিআইয়ের চিঠি-সহ গোটা ফাইলটিই এখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে পড়ে রয়েছে৷ সিবিআই তদন্তে তিনি খুশি নন৷ এটা বুঝেই তাঁর সম্মতি না পাওয়া পর্যন্ত স্বরাষ্ট্র দন্তর স্পর্শকাতর এই বিষয় নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ৷ 

সিবিআই এই মামলায় তিন আইপিএস অফিসার সত্যজিত্ বন্দ্যোপাধ্যায়, দেবাশিস বড়াল এবং শেখর রায়ের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করতে চেয়েছে৷ তাঁরা ২০০৭-এর ১৪ মার্চ নন্দীগ্রামে গুলিচালনার দিন প্রত্যক্ষ ভাবে যুক্ত ছিলেন বলে তাদের দাবি৷ গুলি চালানোর ঘটনায় নাম উঠেছিল তত্‍কালীন খেজুরি এক নম্বর ব্লকের বিডিওরও৷ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের কাজটা তিনি করেছিলেন৷ তিনি অবশ্য সিবিআইয়ের জাল থেকে খালাস পেয়ে যান৷ এখন তিনি এক মন্ত্রীর ব্যক্তিগত সচিব৷ 

পূর্ব মেদিনীপুরের তত্কালীন জেলাশাসক অনুপ আগরওয়াল এবং তিন আইপিএস অফিসার অরুণকুমার গুন্তা, এন আর বাবু ও অনিল শ্রীনিবাসনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণেরও সুপারিশ করেছে সিবিআই৷ এ ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য কোনও পদক্ষেপ করেনি সরকার৷ মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কোন অফিসার এই ঘটনায় কতটা যুক্ত ছিলেন তা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বিশেষ আগ্রহ নেই৷ তিনি বিষয়টি রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখছেন৷ কিন্ত্ত জানা গিয়েছে, সিবিআই-এর চার্জশিটে বুদ্ধদেববাবু বা লক্ষ্মণের নাম নেই৷ 

নন্দীগ্রামের ঘটনায় কলকাতা বার অ্যাসোসিয়েশন হাইকোর্টে জনস্বার্থের মামলা দায়ের করে৷ হাইকোর্ট সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয়৷ আদালত গুলিচালানোর ঘটনাকে 'অসাংবিধানিক ও অবৈধ' বলে মন্তব্য করে৷ মৃত ও আহতদের পরিবারকে সরকারি ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথাও বলে৷ আদালতের সিদঅদান্তকে স্বাগত জানান তত্কালীন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ 

এর পর সিবিআই তদন্ত শুরু করলেও বাম সরকার ২০০৮ সালে সুপ্রিম কোর্টে এই রায়ের বিরুদ্ধে স্পেশাল লিভ পিটিশন (এসএলপি) দায়ের করে৷ থমকে যায় নন্দীগ্রাম মামলা৷ চার্জশিট জমা দিতে না পেরে সিবিআই এই ঘটনার তদন্ত রিপোর্ট সুপ্রিম কোর্টে মুখবন্ধ খামে পেশ করে৷ শেষে গত ফ্রেব্রুয়ারি মাসে রাজ্যের নতুন সরকার সুপ্রিম কোর্ট থেকে নন্দীগ্রাম মামলার এসএলপি প্রত্যাহার করে নেয়৷ তখন ভাবা গিয়েছিল, মামলায় দোষীদের শাস্তি দিতে উদ্যোগী হবে রাজ্য প্রশাসন৷ কিন্ত্ত বাস্তবে তা হয়নি৷ মামলা এগোনোর জন্য এখন সিবিআই-এর হাইকোর্টে চার্জশিট পেশ করা জরুরি হয়ে পড়েছে৷ তাই আইপিএস অফিসারদের নাম চার্জশিটে রাখতে সিবিআই রাজ্য সরকারের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়ার জন্য আবেদন জানায় গত ২৩ মে৷ যার জবাব এখনও আসেনি সরকারের কাছ থেকে৷ 

কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী রাজদীপ মজুমদার জানান, নন্দীগ্রাম মামলাই রাজ্যে ক্ষমতায় এনেছে পরিবর্তনের সরকারকে৷ সেখানকার মানুষ এখন জানতে চাইছেন তাদের মামলার কী অবস্থা৷ এই মামলার জেরেই কলকাতা হাইকোর্ট সিবিআইকে নিয়োগ করেছিল তদন্তে৷ তারা চায় সুবিচার হোক৷ তাই নন্দীগ্রামের শহীদ পরিবার শীতের ছুটির পরই কলকাতা হাইকোর্টে ফের আবেদন জানিয়ে জানতে চাইবে মামলার কী অবস্থা৷

মহিলা ক্ষমতায়নকে পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব



মহিলা ক্ষমতায়নকে পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব
কৌশিক সরকার 

মহিলাদের অধিকারের বিষয়টি পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব রেখেছে মহিলাদের ক্ষমতায়ন বিষয়ে রাজ্য স্তরে গঠিত কমিটির৷ মহিলাদের ক্ষমতায়ন বিষয়ে রাজ্যের নীতির যে খসড়া তৈরি করা হয়েছে তাতেই এই প্রস্তাব রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের নারী কল্যাণ মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র৷ খসড়াটি চূড়ান্ত করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, যিনি এই কমিটিরই চেয়ারপার্সন৷ খসড়াটি রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদনের পরই তা চড়ান্ত রূপ পেতে চলেছে বলে মহাকরণ সূত্রে জানা গেছে৷ 

নারীর ক্ষমতায়নের উদ্দেশ্যে বছর দুয়েক আগেই একটি কেন্দ্রীয় নীতি তৈরি হয়৷ সেই নীতির আদলে রাজ্যগুলিকে বলা হয় নীতি প্রণয়নের৷ বলা হয় একাজের জন্য পৃথক কমিটি গড়ার৷ সাবিত্রী মিত্র জানান, বাস্তবতা হল, বছর দুয়েক বাদে পশ্চিমবঙ্গই প্রথম রাজ্য যারা এই কমিটি গঠন করেছে৷ তবে মাস খানেক আগে৷ বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়, নারী নির্যাতনের বড় মাপের কোনও ঘটনা ঘটলে এনিয়ে চর্চা হয় বিস্তর, কিন্ত্ত কার্যক্ষেত্রে সমস্যাটি রয়ে যায় আড়ালেই৷ মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে রাজ্য স্তরে গঠিত এই কমিটির প্রথম বৈঠকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ১৫ দিনের মধ্যে তৈরি হবে নীতির খসড়া৷ রাজ্যের ১৪টি দন্তরের সঙ্গে আলোচনা করে ইতিমধ্যেই তৈরি হয়েছে সেই খসড়া, যা জমা পড়েছে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে৷ 

কমিটি মনে করছে, শুধুমাত্র নারী নির্যাতন রোখাই নয়, তার ক্ষমতায়নের জন্য প্রয়োজন সুরক্ষা এবং অধিকার নিশ্চিত করা৷ প্রয়োজন মহিলাদের জন্য বিশেষ কর্মসূচীগুলির বাস্তবায়ন৷ বর্তমানে রাজ্যে নারী নির্যাতন এবং ধর্ষণের ঘটনা উদ্বেগের কারণ যে কোনও সমাজের পক্ষেই৷ কিন্ত্ত বাল্য বিবাহ, নারী পাচার, কম বয়সে মা হওয়া, পণ প্রথাও কম উদ্বেগের নয়৷ যদিও তা নিয়ে আলোচনা হয় তুলনামূলক কমই৷ রয়েছে সচেতনতার অভাবও৷ এই সচেতনতা বাড়াতেই পাঠ্য সূচীতে মহিলাদের অধিকারের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের নারী কল্যাণ মন্ত্রী৷ নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে, কোন ক্লাসে কোন বইয়ে, কীভাবে এবং কী কী বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হবে তা চূড়ান্ত করবেন বিশেষজ্ঞরা৷ তবে নারীর অধিকারের অংশ হিসাবেই বাল্য বিবাহ, মা এবং শিশুর স্বাস্থ্য, পণপ্রথার মতো বিষয়গুলিতে প্রয়োজনীয় সচেতনতা গড়ে তোলা উচিত বলেই মনে করছেন রাজ্যের নারী কল্যাণ মন্ত্রী৷ 

এছাড়াও ১৪টি দফতরে নারী কল্যাণ বা তাদের জন্য যে বিশেষ কর্মসূচীগুলি রয়েছে তাও এক ছাতার তলায় আনার কথা বলা হয়েছে৷ মন্ত্রীর কথা, এজন্য দন্তরগুলির বাজেটের ১১ শতাংশ অর্থও বরাদ্দ করার কথা ভাবা হয়েছে৷ তবে শেষ পর্যন্ত বাজেটের কত পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করা হবে এখাতে তা নীতি চূড়ান্ত হওয়ার সমসেই স্পষ্ট হবে৷ বিকেন্দ্রীভূতভাবে কমিটি গড়ে প্রকল্পের বাস্তবায়ন এবং তার নজরদারির প্রস্তাবও রয়েছে খসড়া নীতিতে৷ নারী নির্যাতনের ঘটনাগুলি সেই কমিটির কাছেও নথিভুক্ত করার কথা ভাবা হয়েছে৷ 

বর্ষশেষে সুন্দরীদের 'ডান্স' বন্ধে আসরে পুলিশ




0
বর্ষশেষে সুন্দরীদের 'ডান্স' বন্ধে আসরে পুলিশ
অমর্ত্য মুখোপাধ্যায় ও তথাগত সেনগুপ্ত 

এই সময়: 'আইয়ে মেহেরবান, বৈঠিয়ে জানে জান/শখ সে লিজিয়ে জি, ইশক্ কে ইমতিহান...' 

লাল লিপস্টিক-মোড়া ঠোঁট দু'টিতে সাদা-কালো 'হাওড়া ব্রিজ'-এর পরিচিত মায়াবী গানের লাইন৷ ধোঁয়াশাচ্ছন্ন আলো-আঁধারিময় 'ফ্লোর'-এর লাস্যময়ী গায়িকা শরীরী দুলকিতে হঠাত্‍ই হয়ে উঠলেন 'নর্তকী'৷ তার 'জের'-এই যেন আরও একবার পানীয় ঢালার 'অর্ডার' এল প্রথম টেবিলের তিনটি গ্লাসে৷ মাইক্রোফোন হাতে ধীরে ধীরে 'ক্যাটওয়াক'-এর ভঙ্গিতে ওই টেবিলের দিকে এগিয়ে আসছেন গায়িকা, থুড়ি 'নর্তকী'৷ হিপপকেটের ওয়ালেট থেকে বের করা কড়কড়ে ছ'টি পাঁচশো টাকার নোট তত ক্ষণে নাচছে টেবিলের মধ্যমণির ডান হাতের বুড়ো আঙুল ও তর্জনীর মাঝে৷ 

নাহ্, এর পর আর মধ্যমণির গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে অনেকটা 'সেলাম'-এর ঢংয়ে নোটগুলি কপালে ঠেকানো হবে না ওই 'নর্তকী'র৷ কারণ শহরের 'সিঙ্গিং বার' রেস্তোরাঁয় 'ক্রুনার' হিসেবে নিযুক্ত ওই রমণীরা শুধুই গায়িকা৷ বর্ষশেষের রাতে এ ধরনের বার-রেস্তোরাঁয় 'ক্রুনার'রা যাতে কোনও মতেই গায়িকা থেকে নতর্কী না হয়ে ওঠেন, সে ব্যাপারে 'তীক্ষ্ণ' নজর রাখার নির্দেশ বর্তেছে লালবাজারের গোয়েন্দাদের উপর৷ অর্থাত্‍ 'ক্রুনার'রা শুধুই গাইতে পারবেন শেষ রাতে৷ নিয়ম মেনেই নাচের কোনও 'অনুমতি'ই তাঁদের দেওয়া হয়নি বলে জানা গিয়েছে লালবাজার সূত্রে৷ ঘটনাচক্রে গত ১৮ ডিসেম্বর থেকে গোয়েন্দাদের একাধিক দল এই নজরদারির কাজ শুরুও করে দিয়েছে৷ সন্ধে ৬টা থেকে রাত ২টো পর্যন্ত চলছে এই নজরদারি৷ পরশু, ২ জানুয়ারি গভীর রাত পর্যন্ত যা চলার কথা৷ ক্রিসমাস ইভ ও ক্রিসমাস - অন্যান্য বারের তুলনায় এ বার ওই দুই সন্ধে ও রাতেই পার্ক স্ট্রিটে ভিড় যথেষ্ট কম হয়েছিল৷ দিল্লির ঘটনার জেরেই 'ফুটফল' কম হল কি না, উঠেছিল সে প্রশ্ন৷ সে কারণেই আজ, সোমবার 'বাড়তি' সতর্কতা নিচ্ছে পুলিশ৷ 

নববর্ষের আগের রাতে 'ধর্ষণ-আতঙ্ক' পিছু ছাড়ছে না বিধাননগর সিটি পুলিশের৷ রাজারহাটের নির্মীয়মাণ বাড়ি ও অন্ধকার রাস্তাগুলিকে আলোকিত করার জন্য রাজারহাট পুরসভা ও হিডকোকে চিঠি দিয়েছে কমিশনারেট৷ বড়দিনের অভিজ্ঞতা থেকেও শিক্ষা নিতে চাইছে বিধাননগর সিটি পুলিশ৷ বেপরোয়া গাড়ি চালানো, মহিলাদের সঙ্গে অশালীন আচরণ এবং মদ্যপ অবস্থায় গন্ডগোল পাকানোর অভিযোগে ১২২ জনকে গ্রেন্তার করেছিল সিটি পুলিশ৷ বিধাননগর সিটি পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান নীলু শেরপা চক্রবর্তী জানান, 'নিক্কো পার্ক, নলবন, সিটি সেন্টারের মতো জায়গায় যেখানে বর্ষশেষের রাতের অনুষ্ঠান হচ্ছে, সেখানে আমরা বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখছি৷ কমিশনারেট এলাকায় বার এবং হোটেলগুলির কর্তৃপক্ষকে ডেকে আগে থেকেই পুলিশ সতর্ক করে দিয়েছে৷ আজ রাতে সল্টলেকে বাইক বাহিনীর দাপট ঠেকাতে ড্রপগেটগুলিতে সন্ধে থেকেই পুলিশকে নজর রাখতে বলা হয়েছে৷ বাড়তি বাউন্সার দিয়েই বেসামাল মদ্যপদের 'বাউন্সার' দিতে উদ্যোগী সল্টলেকের বার এবং হোটেলগুলি৷ 

এই যখন বিধাননগরের ব্যবস্থা, তখন কলকাতায় নিয়মমাফিক আয়োজনের বাইরে আর কী কী 'অভিনব' ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে? 

লালবাজার সূত্রে খবর, অন্যান্যবার যেখানে পুলিশের ডিউটির সময় শুরু হয় সন্ধে ৬টা থেকে, এ বার তা এগিয়ে এসেছে আরও ২ ঘণ্টা৷ ৪টে থেকেই পার্ক স্ট্রিট, নিউ মার্কেট-সহ সংলগ্ন এলাকাগুলিতে পুলিশ মোতায়েন করা হবে৷ শেক্সপিয়ার সরণি, ক্যামাক স্ট্রিট, পার্ক স্ট্রিট, রাসেল স্ট্রিট, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (মির্জা গালিব স্ট্রিট), রিপন স্ট্রিট-সহ 'ইভটিজিংপ্রবণ' এলাকাগুলিতেই ছোট-ছোট দলে ভাগ করে দেওয়া হবে৷ ২ সাব-ইনস্পেক্টর (এসআই), ২ কনস্টেবলের অন্তত ১৫টি দল ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকবে ওই এলাকাগুলিতেই৷ এ ছাড়াও ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাসের 'স্প্রিং ক্লাব' থেকে অজয়নগর মোড়ের দু'-পাশের বার-রেস্তোরাঁয় নজরদারির দায়িত্ব ৪ ইনস্পেক্টরের নেতৃত্বে থাকা গোয়েন্দাদের ৪টি দল৷ 

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার ৫ স্টার হোটেলের বার-রেস্তোরাঁয় ভোর ৪টে, ৩ স্টারে রাত ২টো এবং অন্যান্য জায়গায় রাত ১২টা পর্যন্ত মদ-পরিবেশনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে৷ যে সব বার-রেস্তোরাঁ-হোটেলমালিক বিশেষ অনুমতি নিয়েছেন, নিয়ম মেনে 'অতিরিক্ত' চার্জের বিনিময়ে তাঁদের সেই অনুমতি দেওয়া হয়েছে৷ যুগ্ম কমিশনার (সদর) জাভেদ শামিম বলেছেন, 'বর্ষশেষের রাতের নিরাপত্তার জন্য এ বার মোট ৫ হাজার পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে৷ পিকেট, বাইকে টহল, সাদা পোশাকে মহিলা পুলিশ মোতায়েন থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থাই নেওয়া হয়েছে৷' নজরদারির এই ফাঁক গলে ক'জন গায়িকা 'নর্তকী' হয়ে ওঠেন, 'অদ্য রজনী'তে তাই-ই দেখার৷

গণধর্ষণ-কাণ্ড
ঘরোয়া বিবাদ, মত ফিরহাদের
ত্যা, ধর্ষণ-শ্লীলতাহানির একের পর এক ঘটনায় ফুঁসছিল বারাসত। শনিবার এক মহিলাকে গণধর্ষণ করে খুনের পরে সেই ক্ষোভ নামল রাস্তায়। অনেকটা রাজধানী দিল্লির মতোই। অন্য দিকে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদেও যে প্রশাসনের বিশেষ হেলদোল নেই, তার আভাস মিলল রাজ্য মন্ত্রিসভার অন্যতম এক সদস্যের মন্তব্যে। পুর-নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বারাসত-কাণ্ডকে নিছক পারিবারিক বিবাদের জের হিসেবে অভিহিত করেছেন রবিবার। যার পরিপ্রেক্ষিতে অভিযোগ উঠেছে, পার্ক স্ট্রিট-কাটোয়ার মতো বারাসতের এই ধর্ষণ-হত্যাকেও লঘু করেই দেখছে রাজ্য সরকার। 
পার্ক স্ট্রিট-কাণ্ড নিয়ে খাস বারাসতেরই তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদারের সাম্প্রতিক মন্তব্য ঘিরে উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সদর এমনিতেই সরগরম। শুক্রবার কাকলিদেবী এক টিভি চ্যানেলে বলেন, "পার্ক স্ট্রিটে আদৌ কোনও ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি। যা হয়েছে, তা হল পেশাদার কাজ-কারবার নিয়ে ওই মহিলা ও তাঁর খদ্দেরদের মধ্যে গোলমাল।" পরে অবশ্য সাংসদ দাবি করেন, তিনি এমন কথা বলেননি। সেই বিতর্কের রেশ না-কাটতেই পুরমন্ত্রীর মন্তব্যটি চলতি বিতর্কের আগুনে যেন পেট্রোল ঢেলেছে। 
বীরভূমের নলহাটিতে এ দিন এক অনুষ্ঠানের আগে বারাসত-কাণ্ড প্রসঙ্গে ফিরহাদ বলেন, "এটা পরিবারের মধ্যের ব্যাপার। পুলিশ এক জনকে গ্রেফতার করেছে। নিশ্চিত ভাবে পুলিশ কঠোর ব্যবস্থা নেবে।"
কিন্তু পুলিশ যেখানে সবে গণধর্ষণের তদন্ত শুরু করেছে, নিহত মহিলার স্বামী হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন, তখন এক জন দায়িত্বশীল মন্ত্রী কী ভাবে বিষয়টিকে পারিবারিক বিবাদ অ্যাখ্যা দিতে পারেন, এ দিন সেই প্রশ্ন তুলেছেন বারাসতের মানুষ। শুধু তা-ই নয়, শনিবারের ঘটনার প্রতিবাদে মোমবাতি হাতে হাজার-হাজার মানুষের যে সুশৃঙ্খল ভিড় এ দিন বারাসতের রাজপথে আছড়ে পড়েছিল, মন্ত্রীর মন্তব্যের জেরে ওই নীরব প্রতিবাদ শেষের দিকে কিছুটা সরবও হয়ে ওঠে। প্রশ্ন ওঠে, আমজনতার ভাবাবেগকে কোনও মন্ত্রী এ ভাবে অপমান করতে পারেন কি না। ক'মাস আগে এই বারাসতেই এক স্কুলছাত্রীর শ্লীলতাহানির ঘটনা সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক চিরঞ্জিত। এ দিন বিক্ষোভকারীদের মুখে সেই প্রসঙ্গও উঠে এসেছে।
মোমের আলোয় প্রতিবাদ। রবিবার বারাসতে। —নিজস্ব চিত্র
পাশাপাশি দিল্লির গণধর্ষণে উদ্বেগ প্রকাশ করলেও বারাসত-কাণ্ড নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া না-দেওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই বিস্মিত। পার্ক স্ট্রিট থেকে কাটোয়া একাধিক ধর্ষণের ঘটনা রাজ্য প্রশাসন প্রথমে স্বীকার করতে চায়নি। এমনকী, পার্ক স্ট্রিটের অভিযোগকে 'সাজানো ঘটনা' বলে অভিহিত করেছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী, কাটোয়ায় দেখেছিলেন রাজনৈতিক রং। এ দিন বারাসতে বিক্ষোভকারী এক মহিলার আক্ষেপ, "আগে কোথাও ধর্ষণ হলেই মমতা চলে যেতেন। এখন যাওয়া দূর, রা-ও কাড়েন না!" তাঁর দলের এক সাংসদ ও ঘনিষ্ঠ এক নাট্যকর্মী পার্ক স্ট্রিট-কাণ্ডের অভিযোগকারিণী সম্পর্কে কুরুচিকর ইঙ্গিত করলেও মুখ্যমন্ত্রী তার প্রতিবাদ না-করাতেও বিভিন্ন মহলে বিস্ময় জেগেছে। 
নিহত বধূর ছেলের অভিযোগ অনুযায়ী বারাসত থানার পুলিশ অবশ্য গণধর্ষণ ও খুনের অভিযোগ দায়ের করেছে। তাঁর স্বামীর বয়ানের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয়েছে এক জনকে। ধৃত ইশা মোড়লের বাড়ি সন্দেশখালিতে, সে বারাসতের সোনাখড়কি গ্রাম লাগোয়া ইটভাটার শ্রমিক। ওই ইটভাটাতেই শ্রমিকদের টোকেন দেওয়ার কাজ করতেন সোনাখড়কির বাসিন্দা মহিলাটি। পুলিশ-সূত্রের খবর: অন্য অভিযুক্তদের খোঁজ পেতে ধৃতকে জেরা চলছে। এ ছাড়াও সাত জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ দিন সিআইডি-র দলও ঘটনাস্থলে যায়। যান ফরেন্সিক-বিশেষজ্ঞেরাও। রবিবার বারাসত হাসপাতালে নিহতের ময়না-তদন্ত হয়। পরে বারাসত হাসপাতালের সুপার পুষ্পেন্দু সেনগুপ্ত বলেন, "মহিলাকে ধর্ষণ করা হয়েছে কি না, সে ব্যাপারে আমরা কোনও স্থির সিদ্ধান্ত পৌঁছতে পারিনি। রাসায়নিক পরীক্ষার পরে তা স্পষ্ট হবে।" বারাসত থানার তদন্তকারীদের বক্তব্য: শনিবার সন্ধ্যায় সোনাখড়কি গ্রামে ইটভাটার কাছে সশস্ত্র দুষ্কৃতীরা ওঁত পেতে ছিল। দম্পতির উপরে তারা চড়াও হয়। মহিলাকে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হয় ভাটা-সংলগ্ন জলাশয়ের পাড়ে। এ দিন দুপুরে ওই জলাশয় থেকে একটি রক্তমাখা হাতুড়ি উদ্ধার হয়েছে। খোঁজ চলছে হাঁসুয়া জাতীয় একটি ধারালো অস্ত্রের, ধর্ষণের পরে যা দিয়ে মহিলাকে আঘাত করা হয়েছিল বলে পুলিশের অনুমান।
ডিআইজি (প্রেসিডেন্সি রেঞ্জ) অনিল কুমার, উত্তর ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার সুগত সেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় এ দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। নিহতের বাড়ির লোকের সঙ্গে কথা বলেন। সিআইডি-র দলের নেতৃত্বে ছিলেন হোমিসাইডের ডিজি (সাউথ) গৌরীশঙ্কর কাঞ্জিলাল। ডিআইজি বলেন, "তদন্ত শুরু হয়েছে। পুরো ব্যাপারটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।" এসপি বলেন, "মহিলার পরিবারের অভিযোগ অনুযায়ী গণধর্ষণ ও খুনের মামলা রুজু হয়েছে।" সিআইডি-সূত্রের খবর: প্রাথমিক রিপোর্টের ভিত্তিতে ঠিক হবে, তদন্তভার সিআইডি নেবে কি না। আপাতত তারা জেলা পুলিশকে সাহায্য করবে। 
ময়না-তদন্তের পরে এ দিন বিকেলে মহিলার দেহ সোনাখড়কি গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। ধর্ষণকে 'অন্য চেহারা' দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ তুলে ক্ষোভ জানান গ্রামবাসীদের অনেকেই। "ওদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে গভীর ভালবাসা ছিল। তাই স্ত্রীকে বাঁচাতে গিয়ে স্বামী আক্রান্ত হয়েছেন।" দাবি বৃদ্ধ গ্রামবাসীর। নিহতের পুত্রবধূ বলেন, "রান্না করছিলাম। রক্তাক্ত শ্বশুরমশাই দরজার সামনে এসে পড়ে গেলেন। কাতরাতে কাতরাতে বললেন, মাকে কিছু লোক পুকুরের ধারে টেনে নিয়ে গিয়েছে। ওঁকে মারধর করে মুখে বিষ ঢেলে দিয়েছে।" ওই মহিলা জানান, তিনি তাঁর স্বামীকে খবর পাঠিয়ে আশপাশের মহিলাদের নিয়ে শাশুড়িকে খুঁজতে বার হন। "কুপি, হ্যারিকেন নিয়ে জলার কাছে গিয়ে দেখি, মা পড়ে রয়েছেন। মাথা, শরীর থেকে গলগলিয়ে রক্ত বেরোচ্ছে। শাড়িটা গায়ের উপরে কোনও মতে ফেলা।" জানাচ্ছেন তিনি।
অপ্রীতিকর পরিস্থিতি রুখতে এলাকা জুড়ে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করেছে প্রশাসন। তারই মধ্যে প্রতিবাদী মিছিল আয়োজনের বার্তা ছড়িয়ে পড়ে ফেসবুক-টুইটারে। অনেকের মোবাইলে মেসেজ পৌঁছয়-- 'আসুন, এ বার আমাদের পথে নামার পালা।' পরিচিতের বাড়িতে গিয়েও ডাকাডাকি চলে। কিছু সংগঠনের পাশাপাশি ব্যানার ছাড়াই এ দিন পথে নেমেছিলেন রৌনক, তীর্থঙ্কর, দীপ্তার্ঘ, পূজারা। দিল্লিতে ফ্যাশন টেকনোলজি-র ছাত্র ইন্দ্রনীল সাহা বললেন, "মন-খারাপ নিয়ে বাড়ি ফিরে শুনলাম, এখানেও একই কাণ্ড! নিজেকে সামলাতে পারিনি। ফেসবুকে সবাইকে বলেছি মিছিলে আসতে।" স্কুল-পড়ুয়া অদ্রিজা দাসের কথায়, "আমরা ছোট, কিন্তু প্রতিবাদটা তো করতে পারি! দেখি, কে আমাদের ঠেকায়!"
বস্তুতই এমন বিক্ষোভ আগে দেখেনি বারাসত। 
চাঁপাডালি-কলোনি মোড়-ডাকবাংলো মোড় থেকে থিকথিকে ভিড়ের মিছিল ঘুরল শহরজুড়ে। সন্ধে নামতেই মানুষের ঢলে ৩৪ ও ৩৫ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ হওয়ার জোগাড়। নতুন প্রজন্মের হাতে হাত ধরে প্রবীণেরাও, স্লোগান একটাই উই ওয়ান্ট জাস্টিস। কালো পোশাকের মিছিলকারীদের হাতে-হাতে প্ল্যাকার্ড সবাই জাগছে, তুমিও জাগো, আর ঘুমিও না বারাসত। 
পুলিশ-প্রশাসন-সরকার, কারও বিরুদ্ধে একটি শব্দ উচ্চারণ না-করে, স্রেফ মোমবাতির আলোতেই এ ভাবে প্রতিবাদের নতুন ভাষা খুঁজেছেন শহরবাসী। রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন সুনন্দা মুখোপাধ্যায় এ দিন বলেন, "আমি আতঙ্কগ্রস্ত। এত কিছুর পরে ফের ধর্ষণ! বিকৃতমস্তিষ্ক মানুষ প্রকাশ্যে চলে আসছে। পুলিশ দিয়ে এ সব বন্ধ করা যাবে না। সবাইকে ভাবতে হবে।"
এ দিন জগন্নাথপুরে যান সিপিএম নেতা অমিতাভ নন্দী। তাঁর অভিযোগ, "প্রশাসনিক ব্যবস্থার বেহাল ছবিটা বেআব্রু হয়ে পড়েছে। পথে নামা ছাড়া প্রতিকারের কোনও পথ আপাতত আমাদের কাছে নেই।" রাতে মহিলার বাড়ি যান কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী কংগ্রেসের দীপা দাশমুন্সি। তিনি বলেন, "রাজ্যে একের পর এক ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। কেউ গ্রেফতার হচ্ছে না! আশা করব, মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনকে সংবেদনশীল হতে বলবেন।" দীপাদেবীর দাবি, "কোনও ঘটনাই সাজানো বা বিচ্ছিন্ন নয়। যাঁরা তা বলছেন, তাঁরা তা সাজাচ্ছেন।"
http://www.anandabazar.com/31pgn1.html

পাকস্থলী-খাদ্যনালী পুড়েছে অ্যাসিডে, প্রৌঢ় আশঙ্কাজনক
ক দিকে স্ত্রীকে ধর্ষণ করছে দুষ্কৃতীরা, অন্য দিকে স্বামীকে মাটিতে ফেলে চেপে রেখেছে তিন জন। তাদের এক জনের হাতে অ্যাসিডের বোতল। জোর করে মুখ ফাঁক করিয়ে ওই অ্যাসিড খাইয়ে দেওয়া হয় ৫২ বছরের ওই ব্যক্তিকে। যার ফলে তাঁর খাদ্যনালী, পাকস্থলী এবং কিডনির একাংশ পুড়ে গিয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক হওয়ায় রবিবার সকালে ওই ব্যক্তিকে আইটিইউ-এ স্থানান্তরিত করেছেন আর জি কর হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
শনিবার রাতে বারাসতে ধর্ষণকাণ্ডের পর সাড়ে ১০টা নাগাদ আর জি কর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল ওই ব্যক্তিকে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, তাঁকে প্রথমে আর জি করের ইমার্জেন্সি বিভাগে ভর্তি করানো হয়।
ঘটনাস্থলে পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র
চিকিৎসকরা প্রাথমিক ভাবে পরীক্ষা করার পর বুঝতে পারেন, তাঁকে অ্যাসিড খাওয়ানো হয়েছে। ফলে তাঁর গলা এবং বুকে জ্বালার অনুভূতি ছিল। 
চিকিৎসকরা জানান, অ্যাসিড খাওয়ানোর ফলে ওই ব্যক্তির খাদ্যনালী, পাকস্থলী ও কিডনি মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তৈরি হয়েছে ক্ষত। তাঁকে হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে ভর্তি করানো হয় পরবর্তী চিকিৎসার জন্য। সে সময় তাঁর শারীরিক অবস্থা অনেকটাই স্থিতিশীল ছিল বলে জানা গিয়েছে। 
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, রবিবার সকাল থেকেই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। শুরু হয় রক্তবমি। শারীরিক অবস্থা খারাপের দিকে যাচ্ছে দেখে তাঁকে আইটিইউ-এ স্থানান্তরিত করার সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা। তাঁরা জানান, অ্যাসিডের প্রতিক্রিয়ায় তাঁর গলা এবং বুকে জ্বালার অনুভূতি এতটাই তীব্র ছিল যে, তিনি যন্ত্রণায় চিৎকার করছিলেন। যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিতে শনিবার রাত থেকেই চিকিৎসকরা তাঁকে বারবার ঘুমের ওষুধ দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখছেন। 
এর মধ্যেই রবিবার দুপুর দু'টোর পরে বারাসত থানা ও সিআইডি-র তদন্তকারীরা হাসপাতালে এসে ওই ব্যক্তির বয়ান নিয়ে গিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। ওই ব্যক্তির বয়ানের ভিডিও-ও তোলা হয়েছে। ওই ব্যক্তির খাদ্যনালী ও পাকস্থলী কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা পরীক্ষার জন্য এন্ডোস্কোপি করা প্রয়োজন। কিন্তু রোগীর অবস্থা এতই খারাপ যে এখনই তা করা সম্ভব নয়। কেন না অ্যাসিডের জন্য তাঁর খাদ্যনালী ও পাকস্থলী পুড়ে গিয়ে ক্ষত তৈরি হয়েছে। 
চিকিৎসকরা এই মুহূর্তে ক্ষতগুলি সারাতে "সাপোর্টিভ ট্রিটমেন্ট ফর হিলিং" শুরু করেছেন। আগে ওষুধ দিয়ে ক্ষতগুলি কিছুটা সারিয়ে প্রাথমিক ধাক্কা সামলে পরবর্তী চিকিৎসার কথা ভাবা হবে বলে জানিয়েছেন আর জি কর হাসপাতালের ডেপুটি সুপার সিদ্ধার্থ নিয়োগী।
http://www.anandabazar.com/31pgn2.html

গলায় ফাঁস জড়ানো যুবতীর দেহ উদ্ধার
গাজনের মেলা দেখতে যাওয়ার কথা বলে শনিবার সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ফেরেননি ডায়মন্ড হারবারের হরিণডাঙার পূর্বপাড়া এলাকার বাসিন্দা মানসী পুরকাইত (২৩)। রবিবার সকালে গলায় মাফলারের ফাঁস লাগানো অবস্থায় বাড়ি থেকে প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার দূরে, রামরামপুর এলাকার একটি গ্যাস সিলিন্ডারের গুদামের কাছ থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার করল পুলিশ।
তদন্তকারীদের অনুমান, ত্রিকোণ প্রেমের জেরে ওই যুবতীকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। মানসীর মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। মানিব্যাগে টাকা ও কয়েকটি ছেলের ছবি ছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে। রবিবার দুপুরে ডায়মন্ড হারাবার হাসপাতালে মৃতদেহের ময়না-তদন্ত হয়। গলায় ফাঁসের দাগ ছাড়া শরীরে আর কোনও আঘাত বা ধর্ষণের চিহ্ন ময়না-তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে মেলেনি বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পূর্ব) অলোক রাজোরিয়া। তিনি বলেন, "ওই যুবতীর পরিজনদের অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু হয়েছে। ভিসেরা পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে।"
দিন কয়েক ধরেই ডায়মন্ড হারবার হাসপাতাল সংলগ্ন মাঠে গাজনের মেলা হচ্ছে। বাড়িতে সেখানে যাওয়ার কথা বলে শনিবার সন্ধ্যার পর পায়েল মণ্ডল নামে প্রতিবেশী এক কিশোরী ও তার মাসির সঙ্গে বেরিয়েছিলেন মানসী। রাতে না ফেরায় বাড়ির লোকজন খোঁজও করেন। সকালে মানসীর ভাই মানস এক বন্ধুর ফোনে তাঁর দিদির দেহ ডায়মন্ড হারবার হাসপাতালে আনার কথা জানতে পারেন। তিনিই সেখানে গিয়ে দেহটি শনাক্ত করেন বলে মানস জানিয়েছেন। মানসীর বাবা মন্টু পুরকাইত দিনমজুর। মা উজ্জ্বলাদেবী মূক-বধির। মেয়ের মৃত্যুসংবাদে দিশাহারা হয়ে পড়েন মন্টুবাবু।
শনিবার রাতের কথা বলতে গিয়ে পায়েল এ দিন বলে, "দিদি আমাদের সঙ্গে যাওয়ার সময়ে মোবাইল ফোনে কথা বলছিল। তারপর ডায়মন্ড হারবার রোডে এসে এক জনের মোটরবাইকে উঠে চলে যায়। আমরা মেলায় পৌঁছে দিদিকে কয়েক বার ফোন করি। কিন্তু দিদির মোবাইল বন্ধ ছিল। সাড়ে ন'টা নাগাদ দিদি ফোন করে বলে, আমি বাড়ি চলে যাচ্ছি।" কিন্তু মানসী বাড়ি ফেরেননি।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, পায়েল ও তার মাসিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ওই মোটরবাইক আরোহীর ছবি আঁকানো হচ্ছে। মানসীর মোবাইলের কল-লিস্ট পরীক্ষা করা হচ্ছে। আততায়ী মানসীর পরিচিত বলেই তদন্তকারীদের ধারণা। যে জায়গা থেকে দেহটি উদ্ধার করা হয়, সেখানেই মানসীকে খুন করা হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
http://www.anandabazar.com/31pgn4.html

ধর্ষিতা ও বাবাকে মার, অভিযুক্ত তৃণমূল
র্ষণের মামলা প্রত্যাহারের জন্য চাপ ছিলই। এ বার অভিযোগকারিণী যুবতী ও তাঁর বাবাকে মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে। জখম বাবা-মেয়েকে ভর্তি করা হয়েছে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে। গোটা বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
স্বামী-বিচ্ছিন্না ওই মহিলার বাড়ি ক্যানিংয়ের জীবনতলা থানার পারগাঁতি এলাকায়। পরিবারটি 'তৃণমূল সমর্থক' বলেই এলাকায় পরিচিত। মাস তিনেক আগে ওই বধূকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে তৃণমূল কর্মী জব্বার সর্দারের বিরুদ্ধে। লাগোয়া উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালি থানার সরবেড়িয়ার ওই ঘটনায় জব্বারের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন বছর চব্বিশের ওই মহিলা। সন্দেশখালির পুলিশ গ্রেফতার করে জব্বারকে। পরে জামিনে ছাড়া পান ওই ব্যক্তি।
এরপর থেকেই মহিলার পরিবারের উপরে মামলা প্রত্যাহারের জন্য চাপ আসছিল বলে অভিযোগ। ওই বধূ ও তাঁর বাবা বলেন, "আমরাও তৃণমূল করি। কিন্তু মামলা তুলে নেওয়ার জন্য আমাদের উপরে লাগাতার চাপ দেওয়া হচ্ছে। শুক্রবার দলবল নিয়ে এসে তৃণমূলের লোকজন বাড়িতে চড়াও হয়। মারধর করে।" 'নির্যাতিতা'র পরিবারের দাবি, গত কয়েক দিন ধরে তাঁদের গ্রামে কার্যত 'একঘরে' করে রাখা হয়েছে। শনিবার জীবনতলা থানায় মারধরের অভিযোগ দায়ের করা হয়। 
দলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে ক্যানিং ২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি সওকত মোল্লা মহিলার 'চরিত্র' নিয়েই কটাক্ষ করেছেন। তাঁর বক্তব্য, "মহিলা বাইরে থেকে গ্রামে লোকজন ডেকে আনতেন। জব্বার সে সবের প্রতিবাদ করায় ওঁকে ফাঁসানো হয়েছিল। এলাকার মানুষই ওঁদের বয়কট করেছেন। আমাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।"
http://www.anandabazar.com/31pgn7.html



















পুরুষের কাছে নারী ইসলাম ধর্মে একটি পন্য

পুরুষের কাছে নারী ইসলাম ধর্মে একটি পন্য..নারী দাসী এবং সম্ভোগের বস্তু….সবরকম সম্ভোগের চুড়ান্তরুপ হচ্ছে নারীসম্ভোগ, এবং এই ধর্মে নারীকে নির্দেশ করা হয়েছে কামসামগ্রীরুপে, পুরুষের কামকে পৃথিবী থেকে স্বর্গে পর্যন্ত ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে, সত্তরটা ম…তান্তরে চুয়াত্তরটা হুর সম্ভোগের লালসা দেখিয়ে আর নারীর কামকে করে দেয়া হয়েছে নিষিদ্ধ…

"তোমাদের স্ত্রী তোমাদের শস্যক্ষেত্র, তাই তোমরা তোমাদের শস্যক্ষেত্র যেভাবে ইচ্ছে প্রবেশ করতে পারো.."(সূরা বাকারা :২২৩)

বোখারী হাদীছে আছে,
"পুরুষের পক্ষে নারী অপেক্ষা অধিক ক্ষতিকর বিপদের জিনিস আমার উম্মতের ওপর আর কিছু রেখেই যাচ্ছিনা"

ধর্মের বইগুলো উন্নত মানের 'চটি'-উপ্যাখান…যেখানে পুরুষদের ছহবত(Sex) এর লোভ দেখিয়ে ধর্মের দিকে আকর্ষণ করা হয় এবং নারী হয় ভোগের বস্তু..

"ওদের সঙ্গী দেবো আয়তোলোচনা হুর"(সূরা আখান:৫৪)

"সাবধানীদের জন্য রয়েছে সাফশ্য ; উদ্যান, দ্রাক্ষা,সমবয়স্কা উদ্ভিন্ন যৌবানা তরুনী এবং পূর্ণ পানপাত্র" (সূরা নাবা: ৩১-৩৪)

‎"সে সবের মাঝে রয়েছে বহু আয়তলোচনা, যাদের এর আগে কোন মানুষ বা জিন স্পর্শ করেনি"(সূরা রাহমান:৫৬)

"আমি তাদের মিলন ঘটাবো সুন্দরী হুরের সাথে"(সূরা তুর :২০)

কোরানে এও আছে,
…"বিয়ে করবে নারীদের মধ্যে যাদের তোমার ভালো লাগে..দুই, তিন অথবা চার ; আর যদি আশঃকা করো যে সুবিচার করতে পারবেনা তবে একজনকে, অথবা অধিকারভুক্ত দাসীকে"(সূরা নিসা:৩)

হাদীছে বর্ণিত,
হযরত জাবের (রাঃ) বলেন, "এক ব্যাক্তি রাছুলুল্লাহ(সাঃ) এর নিকট এসে বলল : হুজুর,আমার এক দাসী আছে, সে আমাকে খেদমত করে..আমি তাকে উপভোগ করি অথচ তাহার গর্ভধারন করাকে পছন্দ করিনা..হুজুর বললেন : ইচ্ছা থাকলে 'আজল' করতে পারো…"

স্বয়ং ইছঃলামের নবী নিজেই ৬বছরের আয়েশাকে বিয়ে করে ঘরে আনেন এবং ১২ বছর বয়সে বাচ্চা পয়দা করেন আয়েশার গর্ভ থেকে…যারা নবীজীর কর্মকে 'ছুন্নত' বলে ভাবেন তারা এই গর্হিত কাজটি করে দেখতে পারেন…মন্দ লাগবেনা বোধহয়….

http://djddeep.wordpress.com/religions/%E0%A6%AA%E0%A7%81%E0%A6%B0%E0%A7%81%E0%A6%B7%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%9B%E0%A7%87-%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%80-%E0%A6%87%E0%A6%B8%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%AE-%E0%A6%A7-2/


সময় : July 24, 2012 | ধারা : || ধর্ম 
[ 241 বার পঠিত ]

শ্রীমদ্ভগবত গীতায় নারীঃ

ভগবান শ্রীকৃষ্ণ গীতাতে নারীকে পাপযোনী ও শুদ্রের স্তরের সম স্তর বিবেচনা করত গীতার নবম অধ্যায়ের ৩২ নং শ্লোকে বললেনঃ

মাং হি পার্থ ব্যপাশ্রিত্য যেহপি সু্যঃ পাপযোনয়ঃ ।
স্ত্রিয়ো বৈশ্যাস্তথা শুদ্রাস্তেহপি যান্তি পরাং গতিম্ \\ ৩২ \\ 

অর্থঃ হে পার্থ, স্ত্রীলোক, বৈশ্য ও শুদ্র অথবা যাঁহারা পাপযোনিসম্ভূত অন্ত্যজ জাতি, তাঁহারাও আমার আশ্রয় লইলে নিশ্চয়ই পরমগতি প্রাপ্ত হন।" সূত্রঃ শ্রীমদদ্ভগবদগীতা, লেখক- শ্রীজগদীশচন্দ্র ঘোষ, অধ্যায়-৯, শ্লোক-৩২, পৃষ্ঠা- ২০৭

মহাভরতে নারীঃ

মহাভরতের অশ্বমেধ পর্ব্ব, অনুচ্ছেদ-XXXVIII (৩৮) যুধিষ্টি বললেনঃ"

"নারী হল সকল পাপের মূল।"
আরো বলা আছেঃ "হে নারদ, (জগতে) নারীর মত পাপী (পাপিষ্ঠ) কিছুই নাই। বস্তুত, সকল দোষের (পাপের) মূল নারী।" সূত্রঃ মহাভরতের অশ্বমেধ পর্ব্ব, লেখক- কিশরী মহোন গাঙ্গুলী, অনুচ্ছেদ-XXXVIII (৩৮)
মহাভরতের অশ্বমেধ পর্ব্ব, অনুচ্ছেদ-XXXIX (৩৯) আছেঃ

"তারা (নারী) মিথ্যাকে সত্য এবং সত্যকে মিথ্যায় পতিপন্ন করে।"
সূত্রঃ মহাভরতের অশ্বমেধ পর্ব্ব, লেখক- কিশরী মহোন গাঙ্গুলী, অনুচ্ছেদ-XXXIX (৩৯)
মহাভরতের অশ্বমেধ পর্ব্ব, অনুচ্ছেদ-XXXIX (৩৯) আছেঃ

"নারীরা হলেন অত্যন্ত উগ্র/রাগী।"
সূত্রঃ মহাভরতের অশ্বমেধ পর্ব্ব, লেখক- কিশরী মহোন গাঙ্গুলী, অনুচ্ছেদ-XLIII (৪৩)
মহাভরতের অশ্বমেধ পর্ব্ব, অনুচ্ছেদ-XIX (১৯) ঋৃষি বললেনঃ

"নারীরা স্বভাবতই মিথ্যাবাদী।"
সূত্রঃ মহাভরতের অশ্বমেধ পর্ব্ব, লেখক- কিশরী মহোন গাঙ্গুলী, অনুচ্ছেদ-XIX (১৯)
মহাভরতের আদি পর্ব্ব, অনুচ্ছেদ-LXXIV (৭৪) রাজা দূষমন্ত শকুন্তলাকে বললেনঃ

"সাধারণতঃ নারীরা মিথ্যা বলে।"
সূত্রঃ মহাভরতের আদি পর্ব্ব, লেখক- কিশরী মহোন গাঙ্গুলী, অনুচ্ছেদ-LXXIV (৭৪)
মূল সংস্কৃত মহাভরতের ১২২ অধ্যায়ে বলা আছেঃ

"ঋত্তাবৃতৌ রাজ পুত্রী ভর্তা পতিব্রতে।
নাতি বর্তেব্য ইত্যোবং ধর্ম কর্ম বদো বিদুঃ \\
শেষে বন্যেষু কালেষু স্তাতন্ত্রং স্ত্রী কিলার্হতি।
ধর্ম সেবং জনাঃ খন্তঃ পুরাফ্থ পরিচক্ষতে \\"
অর্থঃ "হে পতিত্রতে রাজ পুত্রি। ধর্মজ্ঞেরা ইহা ধর্ম বলিয়া জানে যে, কেবল ঋতুকালে স্ত্রী আপন স্বামীকে অতিক্রম (পর পরুষের সাথে সঙ্গম) করিবেন না; অন্যান্য সময়ে স্ত্রীগণ স্বচচন্দচারিণী (পর পুরুষের সাথে সঙ্গমে উপগত) হইতে পারিবেন। সাধু জনেরা এই প্রাচীন ধর্মের গুণ কীর্তন করিয়া থাকেন।" সূত্রঃ সংস্কৃত মহাভারত-১২২ অধ্যায়

"অনাবৃতাঃ কিল পুরাস্ত্রীয় আসর বরাননে।
কামাচার বিহারিণাঃ স্বতন্ত্রাশ্চারুহ সিনী \\
তামাং বুচ্চারখানানাং কৌমারোত্‍ সুভসে পতিন।
নবম্মোহ ভৃয়রারোহে সহি ধর্মঃ পুয়াভবত্‍
প্রমাণ দৃষ্ট ধর্মোহং পূজ্যতে মহির্ষিভি।
উত্তবেষ্ণুচ বম্ভোরু কুরুধন্যাপি পূজ্যতে \\
স্ত্রীনামনুগ্রহ করঃ সহিকর্ম সনাতনঃ।"
অর্থঃ "হে সুমুখি! (কুন্তি), পূর্বাকালে হিন্দু স্ত্রীলোকেররা অরুদ্ধ, স্বাধীনা ও স্বচ্ছন্দ বিহারিণী (রতিক্রীড়াকারিনী) ছিল। পতিকে ছাড়িয়া অন্য পুরুষে উপগতা (কামাসক্ত হয়ে রতিক্রীড়া করলে) হইলে, তাহাদের অধর্ম হইত না। পূর্বাকালে হিন্দুদিগের ইহাই ধর্ম ছিল, বরং ইহা প্রামণিক ধর্ম, ঋৃষিরা এই ধর্ম পালন করিয়া থাকেন, উত্তর কুরু দেশে অন্যাপি এই ধর্ম মান্য ও অনুকুলে।"সূত্রঃসংস্কৃত মূল মহাভারত থেকে গৃহীত, বিদ্যসাগর মহাশয়ের অনুবাদ

নারীর অধিকার বিভিন্ন জাতিতে: হিন্দু ধর্মে নারী।

১৯ শে এপ্রিল, ২০১১ বিকাল ৫:২৬ |

 
হিন্দু ধর্মে নারীর কোন সম্মান ও মর্যাদাই নাই, সতীদাহের মত অমানবিক, নির্মম-নিষ্ঠুর প্রথা হিন্দুধর্মের অংশ ছিল। কোন নারী সৌভাগ্যক্রমে স্বামীর জ্বলন্ত চিতা থেকে রেহাই পেলে, তাকে পদে পদে এমন তিরষ্কার করা হত, সে নারী বাঁচার চেয়ে মরন যন্ত্রনাকে উত্তম বিবেচনা করত। হিন্দুদের মধ্যেও বহু বিয়ে প্রথার ইতিহাস আছে। ইতিহাসে প্রমানিত রাজা দশরথের তিনজন, মাহারাজা ধ্রুবের পাঁচজন, পাঁন্ডুর দুইজন, অর্জুনের তিনজন স্ত্রী ছিল। স্বামী হল নারীর দেবতা, সে কখনও তালাক পাবেনা, স্বামী স্ত্রীকে যত অত্যাচারই করুক, তাকে স্বামীর কাছেই থাকতে হয়, নারী স্বাধীন হবার যোগ্য নয়, তার কোন ইচ্ছা আখাঙ্খা থাকতে পারেনা। শয্যাপ্রিয়তা, অলঙ্কারাসক্তি, ব্যভিচারের ইচ্ছা, কাম, ক্রোধ, লোভ, হিংসা, মিথ্যা এবং পুরুষ দেখলেই মিলনের ইচ্ছা নারীর স্বভাবজাত বদ খাসিয়ত। পুরুষ পৃথিবীতে পাপ করলে পরজনমে নারী হয়ে জন্মাবে। নারী জাতি হীন, পাপমুর্তি, বিশ্বাসের অযোগ্য এবং দাস সম্প্রদায়ভুক্ত। কোন মানুষকে এক হাজার মুখ দিয়ে, প্রতি মুখে হাজার বছর নারীর বদনাম করলেও নারীর দোষ বর্ণনা শেষ হবেনা। ধন-সম্পদ, শিক্ষায় নারীর কোন অধিকার নেই। নারী থেকে কোন পরামর্শ নেয়া যাবেনা এমনকি পরামর্শের সময়ে নারীকে কাছেও রাখা যাবেনা।

পূর্বকালে কণ্যা যখন প্রথম ঋতুবর্তী হত, তখন তাকে মন্দিরের প্রাঙ্গনে রেখে আসা হত, ছেলেদের দঙ্গল সেখান থেকে বাছাই করে, কুমারী কণ্যাদের তুলে নিয়ে জঙ্গলে চলে যেত, তাকে ধর্ষন করার পর পিতা-মাতার কাছে ফেরত দিত। সবার বিশ্বাস ছিল এতে কণ্যা পবিত্রতা অর্জন করেছে; পিতা-মাতা খুশিতে বাড়ী ফিরে মানুষকে দাওয়াত দিত, ধুমধাম করত ও পূজার আয়োজন করত। কখনও কখনও সুযোগ সন্ধানী ছেলেরা, কুমারী মেয়েদের বাড়ী থেকে তুলে নিত, দেখা যেত কারো সুন্দরী গৃহবধুকে এভাবে তুলে নেয়া হয়েছে। এই ছিল সামাজিক ভাবে নারীর মর্যাদা! এই আইনের কারনে নারীরা কতটা অসহায় ছিল, চোখ বন্ধ করলেই দৃশ্যপটে ভেসে উঠবে। চলবে.....

সুপ্রিয় পাঠক, আগের পর্বে বৌদ্ধ ধর্মে নারীর অধিকার সর্ম্পকে লিখা হয়েছিল। আশা করি নিচের লিঙ্কে গিয়ে পড়ে নেবেন। 
http://www.somewhereinblog.net/blog/chothababa/29365574

নারীকে পণ্য নয়, তার সত্ত্বার সম্মান দিতে হবে

০৭ ই মার্চ, ২০১২ রাত ১১:০২ |


কাজলরেখা
মানবতা আর সাম্যের জয়গানে নারী ও পুরুষ কাঁধে কাধ মিলিয়ে গড়তে চাইছে সফলতার স্বর্ণ সোপান। 
কিন্তু হাজারো প্রচেষ্টা সত্ত্বেও নারী এখনো অবহেলিত। চোখ ধাধানো এক ভোগ্যপণ্য মাত্র! তবুও হতভাগ্য নারীজাতি বারবার সম্মুখীন হচ্ছে নিত্য নতুন বঞ্চনার। আর তাই আজ অযুত কন্ঠে প্রতিধ্বনিত হচ্ছে মা, স্ত্রী, কন্যা ও ভগ্নি হিসেবে আমরা কি পেয়েছি? 
ইতিহাসের পাতায় চোখ রাখলেই দেখা যায়, যুগে যুগে বিভিন্ন সভ্যতা নারীকে করেছে নির্যাতিত, নিপীড়িত, শোষিত ও বঞ্চিত। নির্যাতনের যাতাকলে নিষ্পেষিত নারী মুক্তি চেয়েছে জীবনাকাশে । অন্ধের মত হাতড়িয়ে ফিরেছে স্বীয় মর্যদা আর সম্ভ্রমের সোপান। তাদের এই আকাঙ্খাকে কাজে লাগিয়েছে সুবিধাবাদি আর চাটুকার শ্রেণীর বিশেষ একটি মহল। অধিকার প্রদানের নামে নারীকে মাধ্যম বানিয়ে লুফে নিয়েছে নিজের মুনাফা পু। পুরুষের কাধে কাঁধে মিলিয়ে যে স্বাধীনতা কিনতে চেয়েছিলো অর্ধাঙ্গিনীরা, কায়িক শ্রমের ক্ষেত্র গুলোতেও তারা হারিয়েছে নায্য অধিকার, বঞ্চিত হয়েছে প্রতিটি পদক্ষেপে। 
১৮৫৭ সালের ৮ মার্চ এরকম মর্মন্তদ এক কাহিনীর জ্বলন্ত সাক্ষী এই দিনটি। যুক্তরাষ্ট্রের একটি সুট কারখানার নারী শ্রমিকরা মানবেতর পরিবেশ, অসম মুজুরি, ১২ ঘন্টা কর্ম দিবসের বিরুদ্ধে পথে নামে। ফলশ্রুতিতে বহু নারী নিক্ষিপ্ত হয় কারাগারে, নির্বিচারে পুলিশের গুলিতে সেদিন আহত হয় অনেক নারী শ্রমিক। ১৯১০ সালের ৮ মার্চ কোপেন হেগেনে আন্তজাতিক নারী দিবস হিসেবে পালনের ঘোষনা দেওয়া হয়। জাতিসংঘ ১৯৭৫ সালকে নারীবর্ষ হিসেবে ঘোষণা করে। জাতিসংঘের নির্দেশেই ১৯৭৫-১৯৮৫ সালকে "নারী দশক" ঘোষণা করা হয়। সর্বশেষে ১৯৮৩ সালের ৮ মার্চ "বিশ্ব নারী দিবস" হিসেবে ঘোষিতক হয় এবং বর্তমানে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বহুদেশে মহাসমারোহে প্রতিবছর পালিত হয় বিশ্ব নারী দিবস এবং এ উদ্দেশ্যে গ্রহীত হয় বহু আইন। বসভা-সমাবেশ আর কাগজের পাতা ভরা কক্তৃতা ও সেমিনারের গন্ডি পেরুতে পারেনি । যেন লাল ফিতায় বন্দি নারীর নায্য অধিকার। 
অগ্রসরমান আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে নারী আজ এগিয়েছে বহুদূর। শিক্ষা, সংস্কৃতি, রাজনীতি, প্রশাসন সকল ক্ষেত্রেই নারী রেখেছে যোগ্যতার স্বাক্ষর। আজ নারীর পদচারনা মহাকাশ থেকে সিন্ধুতল। আঞ্চলিক থেকে আন্তর্জাতি উভয়ক্ষেত্রেই সংসদ নারী প্রতিনিধিত্বের হার মাত্র ১৫ শতাংশ। বিশ্বের অনানুষ্ঠিক রাজনৈতিরক নেতৃত্বে নারীর অংশগ্রহনে ১০ ভাগের ও বেশি। এ পর্যন্ত ২১ ভাগেরও বেশি রারী রাষ্ট্র প্রধানের পদ অলংকৃত করেছেন। জাতিসংঘের ৫ জন নারী। মোদ্দাকথা, শিক্ষা, সাংস্কৃতি, রাজনীতি, প্রশাসন সকল ক্ষেত্রেই স্বর্ণ সোপানে আরোহন করেছে। বাস্তব নির্মম । এত প্রচেষ্টা, স্বাধীনতার এত দূর্বার আকাঙ্খা , বিনিময়ে কি পেয়েছে আজকের নারী সমাজ? নারী পুরুষের অযৌক্তিক সমতা আনতে যেয়ে নারী সমাজ বরাবরই প্রহসনের শিকার। দাম্পত্য জীবনের বন্ধন থেকে নিজেকে ছিন্ন করতে যেয়ে নারী সমাজ আজ অবাধ যৌনাচারের সুলভ মাধ্যম। নারী পুরুষের সহবস্থানে অশ্লীলতা যোগ হচ্ছে নতুন মাত্রায় নতুন আবরণে। সৌন্দর্যকে হাতিয়ার হিসেবে গ্রহণ করে উন্নতির ¯্রােতে ভেঁসে যেতে আকাঙ্খিক নারী আজ স্বেচ্ছায় নিজেকে সঁপে দিচ্ছে মুনাফালোভী একটি বিশেষ শ্রেণীর হাতে। সম্মান আর মর্যাদার বদলে নারী সমাজ যে অভিশপ্ত জীবন বেছে নিয়েছে, তার বাস্তব ফলাফল অনেক বেশি করুন। নারী স্বাধীনতাবাদীদের উৎপত্তি যে যুক্তরাষ্ট্রে, সেখানেই নারীর অবস্থা এতটাই সংকীর্ণ যে, কয়েক বছর ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নারী নির্যাতনের শীর্ষে অবস্থান করছে। বিশ্বের স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে কমপক্ষে ১২.৫ লাখ কিশোরী গর্ভধারণ করে। সুসভ্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রতি হাজারে ৩০৭ জন নারী সহকর্মী দের দ্বারা যৌন নির্যতনের শিকার হয়। সেখানে সম্ভ্রম। ভারতে প্রতিদিন ১৪ জন নির্যাতিত হয়। অশ্লিষতার বিষবাষ্পে গুমরে উঠছে আমাদের প্রিয় জন্মভ'মির চতুর্পাশ। ১৯৮৮ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত বিশ বছরে এদেশে পতিতালয় বেড়েছে ২৬ হাজার । বাস্তবিক পক্ষেই নারী স্বাধীনতার শ্লোগানই যে নারী সমাজ কে কাঙ্খিত মর্যাদা দিতে পারেনি; তা কি সময়ের দাবী না? বর্তমানে নারী জাতীর অবস্থানকে সভ্যতার ধারায় কিসের ভিত্তিতে যাচাই করা যাবে? নাজুক এ পরিস্থিতিতে ইন্ধন যোগাচ্ছে পাশ্চাত্যপ্রেমী মিডিয়াগুলোর নানামুখী প্রচারনা। পাশ্চাত্যের উদর থেকে উগরে ফেলা রেওয়াজকে এসব নারীদের জন্য ধ্যান-জ্ঞান কামনার বস্তুতে পরিণত করছে, তাদের একান্ত কল্যাণকামিরা। সম- অধিকার ও নারী স্বাধীনতার নামে তারা নারীত্বকে টুটি চেপে হত্যা করছে। পণ্যের চটকদার বিজ্ঞাপনের মডেল ও সস্তা ভোগের সামগ্রীতে পরিণত করে সুকৌশলে লুন্ঠন করছে নারীর মান-সম্মানকে। স্বভাব সুলভ সরলমনা নারীরাও সমান অধিকারের সাইন বোর্ড ঝুলিয়ে লিপ্ত হচ্ছে অশোভনীয় কর্মকান্ডে। এই সকল চিহ্নিত সমস্যা সনাক্ত করে কয়েকটি বিষয় সামনে এসেছে। প্রথমতঃ মূল্যবোধের অবনতি, নৈতিক চরম অবক্ষয়, নৈতিক শিক্ষা বিবর্জিত শিক্ষা কাঠামো ও দুর্বল মানুষিকতা এবং সত্য সমাজ নির্মাণে উদ্যোগ গ্রহনকারীর অভাব। অথচ আজ খেকে ১৫শ বছর আগে জীবন্ত প্রোথিক কন্যার মর্মান্তিকতা রোধে উদীত হয়েছিলো যে আলো করবী, মূল্যোবোধের চর্চাই ফিরিয়ে দেবে জাতি হিসেবে আসল মর্যাদা। আমরা অর্জন করতে পারবো কাঙ্খিত লক্ষ্য। তারই স্বীকারোক্তি করেছেন ফরাসী লেখিকা মারহাম হ্যারি। 
কোন করুণা নয়, নারী অধিাকর নিশ্চিত করণের মাধ্যমে নারীর সকল মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ করাটা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। দায়িত্ব প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থার । নারীকে প্রকৃত মর্যাদা প্রদান করে দেশ ও জাতিকে এগিয়ে নেয়া সম্ভব। কেননা নারী পুরুষের সমান দায়বদ্ধতায় গড়ে ওঠে এক একটি পরিবার। আর একটি সুস্থ ও সুন্দর পরিবারই পারে একটি সুস্থ শিশু উপহার দিতে। একজন মেধাবি সন্তান উপহার দিতে। আর একটি দেশের সুন্দর পরিবার ব্যাবস্থা একটি নৈতিক মূল্যবোধ সম্পন্ন সমাজ উপহার দিতে সক্ষম। যা একটি উন্নত দেশের পূর্বশর্ত। তাই নারীকে এই বাজার অর্থনীতির বাজারে পণ্য নয়, বরং তার সত্ত্বার মর্যাদায় তাকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। 

 

বিষয়বস্তুর স্বত্বাধিকার ও সম্পূর্ণ দায় কেবলমাত্র প্রকাশকারীর...

http://www.somewhereinblog.net/blog/kajjalrekha01/29554287


No comments:

मैं नास्तिक क्यों हूं# Necessity of Atheism#!Genetics Bharat Teertha

হে মোর চিত্ত, Prey for Humanity!

मनुस्मृति नस्ली राजकाज राजनीति में OBC Trump Card और जयभीम कामरेड

Gorkhaland again?আত্মঘাতী বাঙালি আবার বিভাজন বিপর্যয়ের মুখোমুখি!

हिंदुत्व की राजनीति का मुकाबला हिंदुत्व की राजनीति से नहीं किया जा सकता।

In conversation with Palash Biswas

Palash Biswas On Unique Identity No1.mpg

Save the Universities!

RSS might replace Gandhi with Ambedkar on currency notes!

जैसे जर्मनी में सिर्फ हिटलर को बोलने की आजादी थी,आज सिर्फ मंकी बातों की आजादी है।

#BEEFGATEঅন্ধকার বৃত্তান্তঃ হত্যার রাজনীতি

अलविदा पत्रकारिता,अब कोई प्रतिक्रिया नहीं! पलाश विश्वास

ভালোবাসার মুখ,প্রতিবাদের মুখ মন্দাক্রান্তার পাশে আছি,যে মেয়েটি আজও লিখতে পারছেঃ আমাক ধর্ষণ করবে?

Palash Biswas on BAMCEF UNIFICATION!

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS ON NEPALI SENTIMENT, GORKHALAND, KUMAON AND GARHWAL ETC.and BAMCEF UNIFICATION! Published on Mar 19, 2013 The Himalayan Voice Cambridge, Massachusetts United States of America

BAMCEF UNIFICATION CONFERENCE 7

Published on 10 Mar 2013 ALL INDIA BAMCEF UNIFICATION CONFERENCE HELD AT Dr.B. R. AMBEDKAR BHAVAN,DADAR,MUMBAI ON 2ND AND 3RD MARCH 2013. Mr.PALASH BISWAS (JOURNALIST -KOLKATA) DELIVERING HER SPEECH. http://www.youtube.com/watch?v=oLL-n6MrcoM http://youtu.be/oLL-n6MrcoM

Imminent Massive earthquake in the Himalayas

Palash Biswas on Citizenship Amendment Act

Mr. PALASH BISWAS DELIVERING SPEECH AT BAMCEF PROGRAM AT NAGPUR ON 17 & 18 SEPTEMBER 2003 Sub:- CITIZENSHIP AMENDMENT ACT 2003 http://youtu.be/zGDfsLzxTXo

Tweet Please

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS BLASTS INDIANS THAT CLAIM BUDDHA WAS BORN IN INDIA

THE HIMALAYAN TALK: INDIAN GOVERNMENT FOOD SECURITY PROGRAM RISKIER

http://youtu.be/NrcmNEjaN8c The government of India has announced food security program ahead of elections in 2014. We discussed the issue with Palash Biswas in Kolkata today. http://youtu.be/NrcmNEjaN8c Ahead of Elections, India's Cabinet Approves Food Security Program ______________________________________________________ By JIM YARDLEY http://india.blogs.nytimes.com/2013/07/04/indias-cabinet-passes-food-security-law/

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS TALKS AGAINST CASTEIST HEGEMONY IN SOUTH ASIA

THE HIMALAYAN VOICE: PALASH BISWAS DISCUSSES RAM MANDIR

Published on 10 Apr 2013 Palash Biswas spoke to us from Kolkota and shared his views on Visho Hindu Parashid's programme from tomorrow ( April 11, 2013) to build Ram Mandir in disputed Ayodhya. http://www.youtube.com/watch?v=77cZuBunAGk

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS LASHES OUT KATHMANDU INT'L 'MULVASI' CONFERENCE

अहिले भर्खर कोलकता भारतमा हामीले पलाश विश्वाससंग काठमाडौँमा आज भै रहेको अन्तर्राष्ट्रिय मूलवासी सम्मेलनको बारेमा कुराकानी गर्यौ । उहाले भन्नु भयो सो सम्मेलन 'नेपालको आदिवासी जनजातिहरुको आन्दोलनलाई कम्जोर बनाउने षडयन्त्र हो।' http://youtu.be/j8GXlmSBbbk

THE HIMALAYAN DISASTER: TRANSNATIONAL DISASTER MANAGEMENT MECHANISM A MUST

We talked with Palash Biswas, an editor for Indian Express in Kolkata today also. He urged that there must a transnational disaster management mechanism to avert such scale disaster in the Himalayas. http://youtu.be/7IzWUpRECJM

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS CRITICAL OF BAMCEF LEADERSHIP

[Palash Biswas, one of the BAMCEF leaders and editors for Indian Express spoke to us from Kolkata today and criticized BAMCEF leadership in New Delhi, which according to him, is messing up with Nepalese indigenous peoples also. He also flayed MP Jay Narayan Prasad Nishad, who recently offered a Puja in his New Delhi home for Narendra Modi's victory in 2014.]

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS CRITICIZES GOVT FOR WORLD`S BIGGEST BLACK OUT

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS CRITICIZES GOVT FOR WORLD`S BIGGEST BLACK OUT

THE HIMALAYAN TALK: PALSH BISWAS FLAYS SOUTH ASIAN GOVERNM

Palash Biswas, lashed out those 1% people in the government in New Delhi for failure of delivery and creating hosts of problems everywhere in South Asia. http://youtu.be/lD2_V7CB2Is

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS LASHES OUT KATHMANDU INT'L 'MULVASI' CONFERENCE

अहिले भर्खर कोलकता भारतमा हामीले पलाश विश्वाससंग काठमाडौँमा आज भै रहेको अन्तर्राष्ट्रिय मूलवासी सम्मेलनको बारेमा कुराकानी गर्यौ । उहाले भन्नु भयो सो सम्मेलन 'नेपालको आदिवासी जनजातिहरुको आन्दोलनलाई कम्जोर बनाउने षडयन्त्र हो।' http://youtu.be/j8GXlmSBbbk