Welcome

Website counter
website hit counter
website hit counters

Monday, April 1, 2013

হিন্দুরাষ্ট্রে বাঙ্গালির আপত্তি হতেই পারে না।আমরা ত ব্রাহ্মণ্যতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নিজের পরিচিতি অস্তিত্ব বিসর্জন দিয়ে বসে আছি।রাত দিন সারাদিন রাজনীতি করি সর্বস্ব দিয়ে ব্রাহ্মণ্যতান্ত্রিক ব্যবস্থা কায়েম রাখতেই।ভারত ভাগ ত এই আধিপাত্যের জন্যই।আমরা ুদ্বাস্তু, বেনাগরিক এই জন্যেই।গুজরাত গণহত্যায় অভিযুক্ত নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হলেই বা বাঙ্গালির আপত্তি থাকার কথা নয়।আমরা আইপিএল সার্কাসে বাগ ভাল্লুকের নাচন কোঁদন দেখব।পন্চায়েত নির্বাচন নিয়ে তোলপাড় করব। পরীক্ষা প্রহসনে ছেলে মেয়েদের ভবিষত্ খুঁজব।ভূলেও আমাদের পরিচিতি ফাঁস হতে দেব না।আমরা হিন্দু এইজন্যই ত ভারত ভাগ করলাম।হিন্দু রাষ্ট্র হলে ইহলোক না হোক্, পরলোক ত ক্ষমতায়নের ঐশ্বর্যে ভরে যাবেই যাবে।বাঙ্গালির পোয়া বারো।বাঙ্গালির জীবনে হাজার মজা।অনন্ত বসন্ত।দেশ দুনিয়া চুলোয় যাক্, বাঙ্গালির কিচ্ছু যায় আসে না।বিনোদনের যথেষ্ট বন্দোবস্ত হলেই হল।নেতা অভিনেতা একাধার।নেত্রী অভিনেত্রী একাকার।দিদির পরিবর্তন রাজে কোনও খামতি নেই। হাঁডির হাল হলে কি হবে, নাচ গানা জলসাঘর চলবেই।সারা বাংলাই এখন জলসা ঘর। মঙ্গলবার সন্ধেয় আইপিএলের জমকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। এশিয়ার স


বাঙ্গালির পোয়া বারো।বাঙ্গালির জীবনে হাজার মজা।অনন্ত বসন্ত।দেশ দুনিয়া চুলোয় যাক্, বাঙ্গালির কিচ্ছু যায় আসে না।বিনোদনের যথেষ্ট বন্দোবস্ত হলেই হল।নেতা অভিনেতা একাধার।নেত্রী অভিনেত্রী একাকার।দিদির পরিবর্তন রাজে কোনও খামতি নেই হাঁডির হাল হলে কি হবে, নাচ গানা জলসাঘর চলবেই।সারা বাংলাই এখন জলসা ঘর মঙ্গলবার সন্ধেয় আইপিএলের জমকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। এশিয়ার সবচেয়ে বড় ফুটবল স্টেডিয়াম যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন মাতাতে চলেছেন বলিউড বাদশা শাহরুখ খান। সোমবার মহাকরণে গিয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান থাকার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে আমন্ত্রণ জানিয়ে আসেন কেকেআর সিইও ভেঙ্কি মাইসোর। যুবভারতীতে যাওযার ব্যাপারে সম্মতি জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।মুলনিবাসী বহুজন এই বিনোদনে আত্মপরিচয় ভূলে আত্মধ্বংসী বিনোদনে মেতেছে।হুতোম প্যাঁচার নক্শা বাবু কালচার চরিতার্থ


হিন্দুরাষ্ট্রে বাঙ্গালির আপত্তি হতেই পারে না।আমরা ত ব্রাহ্মণ্যতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নিজের পরিচিতি অস্তিত্ব বিসর্জন দিয়ে বসে আছি।রাত দিন সারাদিন রাজনীতি করি সর্বস্ব দিয়ে ব্রাহ্মণ্যতান্ত্রিক ব্যবস্থা কায়েম রাখতেই।ভারত ভাগ ত এই আধিপাত্যের জন্যই।আমরা ুদ্বাস্তু, বেনাগরিক এই জন্যেই।গুজরাত গণহত্যায় অভিযুক্ত নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হলেই বা বাঙ্গালির আপত্তি থাকার কথা নয়।আমরা আইপিএল সার্কাসে বাগ ভাল্লুকের নাচন কোঁদন দেখব।পন্চায়েত নির্বাচন নিয়ে তোলপাড় করব। পরীক্ষা প্রহসনে ছেলে মেয়েদের ভবিষত্ খুঁজব।ভূলেও আমাদের পরিচিতি ফাঁস হতে দেব না।আমরা হিন্দু এইজন্যই ত ভারত ভাগ করলাম।হিন্দু রাষ্ট্র হলে ইহলোক না হোক্, পরলোক ত ক্ষমতায়নের ঐশ্বর্যে ভরে যাবেই যাবে

পলাশ বিশ্বাস

বাঙ্গালির পোয়া বারো।বাঙ্গালির জীবনে হাজার মজা।অনন্ত বসন্ত।দেশ দুনিয়া চুলোয় যাক্, বাঙ্গালির কিচ্ছু যায় আসে না।বিনোদনের যথেষ্ট বন্দোবস্ত হলেই হল।নেতা অভিনেতা একাধার।নেত্রী অভিনেত্রী একাকার।দিদির পরিবর্তন রাজে কোনও খামতি নেই হাঁডির হাল হলে কি হবে, নাচ গানা জলসাঘর চলবেই।সারা বাংলাই এখন জলসা ঘর মঙ্গলবার সন্ধেয় আইপিএলের জমকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। এশিয়ার সবচেয়ে বড় ফুটবল স্টেডিয়াম যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন মাতাতে চলেছেন বলিউড বাদশা শাহরুখ খান। সোমবার মহাকরণে গিয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান থাকার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে আমন্ত্রণ জানিয়ে আসেন কেকেআর সিইও ভেঙ্কি মাইসোর। যুবভারতীতে যাওযার ব্যাপারে সম্মতি জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।মুলনিবাসী বহুজন এই বিনোদনে আত্মপরিচয় ভূলে আত্মধ্বংসী বিনোদনে মেতেছে।হুতোম প্যাঁচার নক্শা বাবু কালচার চরিতার্থ

ক্যাটরিনা কাইফ, দীপিকা পাড়ুকোনের মত বলিউড সুন্দরীদের উপস্থিতি ছাপিয়ে মঙ্গলবার সন্ধেয় সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হতে চলেছে শাহরুখের পারফরম্যান্সই।

যুবভারতীতে পারফর্ম করবে চাইনিজ ড্রামার-রা। বিশেষ আকর্ষণ হিসাবে থাকবেন আমেরিকান র‍্যাপার পিটবুল। আর সবার শেষে থাকবে আতসবাজির প্রদর্শনী। সব মিলিয়ে জমকালো সন্ধের অপেক্ষায় কলকাতা। 

এ দিকে সোমবার মহাকরণে গিয়ে সরকারের কাছে হাজার টাকা পর্যন্ত টিকিটের উপর বিনোদন কর ছাড়ের আবেদন করেছে নাইট কর্তৃপক্ষ। গতবার পাঁচশো টাকা পর্যন্ত টিকিটে বিনোদন করে ছাড় দিয়েছিল রাজ্য সরকার।

হিন্দুরাষ্ট্রে বাঙ্গালির আপত্তি হতেই পারে না।আমরা ত ব্রাহ্মণ্যতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নিজের পরিচিতি অস্তিত্ব বিসর্জন দিয়ে বসে আছি।রাত দিন সারাদিন রাজনীতি করি সর্বস্ব দিয়ে ব্রাহ্মণ্যতান্ত্রিক ব্যবস্থা কায়েম রাখতেই।ভারত ভাগ ত এই আধিপাত্যের জন্যই।আমরা ুদ্বাস্তু, বেনাগরিক এই জন্যেই।গুজরাত গণহত্যায় অভিযুক্ত নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হলেই বা বাঙ্গালির আপত্তি থাকার কথা নয়।আমরা আইপিএল সার্কাসে বাগ ভাল্লুকের নাচন কোঁদন দেখব।পন্চায়েত নির্বাচন নিয়ে তোলপাড় করব। পরীক্ষা প্রহসনে ছেলে মেয়েদের ভবিষত্ খুঁজব।ভূলেও আমাদের পরিচিতি ফাঁস হতে দেব না।আমরা হিন্দু এইজন্যই ত ভারত ভাগ করলাম।হিন্দু রাষ্ট্র হলে ইহলোক না হোক্, পরলোক ত ক্ষমতায়নের ঐশ্বর্যে ভরে যাবেই যাবে

বিজেপিতে অবশেষে নিজের মজবুত 'সিংহাসন' তৈরি করলেন নরেন্দ্র মোদী। দীর্ঘ ছ`বছর পর মোদীকে সংসদীয় কমিটিতে ঠাঁই দেওয়া হল। সংসদীয় বোর্ড বিজেপির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক কমিটি। প্রধানমন্ত্রী বা মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঠিক করে এই কমিটি। লোকসভা ও বিধানসভা ভোটে টিকিট বণ্টনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে বোর্ডের। এখানে মোদী ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের স্থান পাওয়ায় বিজেপির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারনে মোদির গুরুত্ব বাড়ল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। আসল কথা হল, আজকের পর প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে মোদীর নাম এতটাই সামনে চলে এল, যে টুইটারে বিজেপি সমর্থকরা গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রীকে 'মিস্টার প্রাইম মিনিস্টার' বলে ডাকলেন।

আজই নিজের নতুন দল ঘোষণা করলেন বিজেপি সভাপতি রাজনাথ সিংহ। দলের সহ সভাপতি করা হয়েছে সিপি ঠাকুর, উমা ভারতী ও স্মৃতি ইরানিকে। পাশপাশি, মোদী ঘনিষ্ঠ গুজরাতের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমিত শাহকে দলের সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। রাজনাথের নতুন দলে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে রাজীব প্রতাপ রুডি, অনন্ত কুমার, রামলাল, মুরলীধর রাও ও ধর্মেন্দ্র প্রধানকে। সাধারণ সম্পাদক পদে নিয়ে আসা হয়েছে বরুণ গাঁধীকেও।

আগামী লোকসভা ভোটে কংগ্রেসের কাণ্ডারী রাহুল গাঁধীকে চ্যালেঞ্জ জানাতে, বিজেপি বরুণকে সামনে নিয়ে এল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এখন প্রশ্ন হল ২০১৪ লোকসভা ভোটে নরেন্দ্র মোদীকে সামনে রেখেই কি লড়বে বিজেপি? গুজরাতে হ্যাটট্রিকের পর, নীতীশ কুমারের মতো এনডিএ শরিকদের আপত্তি সত্ত্বেও, বারবার সামনে চলে এসেছে অনিবার্য এই প্রশ্ন। 


সংসদীয় বোর্ডে মোদী, স্পষ্ট বার্তা প্রধানমন্ত্রিত্বের
নয়াদিল্লি: লক্ষ্যপূরণের দিকে আরও এক ধাপ এগোলেন নরেন্দ্র মোদী৷ 

প্রত্যাশা মতোই রবিবার তাঁকে সংসদীয় বোর্ডে নিয়ে এলেন সভাপতি রাজনাথ সিং৷ এবং জানিয়ে দিলেন, গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রীকে আরও বড় দায়িত্ব নিতে হবে৷ প্রসঙ্গত, এই রাজনাথই তাঁকে ৬ বছর আগে সংসদীয় কমিটি থেকে বের করে দিয়েছিলেন, এ দিন তিনিই আবার ফিরিয়ে আনলেন৷

শনিবার সন্ধ্যাবেলাতেই সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছিল যে, সঙ্ঘ পরিবারের নির্দেশ মেনে মোদীকে নিয়ে আসা হবে সংসদীয় কমিটিতে৷ হলও তাই৷ রবিবার আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রকাশ করা হল ২০১৪ লোকসভার কুশীলবদের নাম৷ মোদী আগে থেকেই কেন্দ্রীয় নির্বাচনী কমিটিতে ছিলেন, এ বার আনা হল সংসদীয় বোর্ডে৷ এ ছাড়াও মোদী-ঘনিষ্ঠ অমিত শাহ ও পিলিভিট কেন্দ্রের সাংসদ বরুণ গান্ধীও এলেন কোর গ্রুপে৷ 

তবে এ দিন সকাল থেকেই বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে উত্সাহ ছিল মোদীকে নিয়েই৷ তাঁরা অপেক্ষায় ছিলেন, দল তাঁকে কী দায়িত্ব দেন তা দেখার জন্য৷ তাই তাঁদের প্রত্যাশা পূরণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই উাসের বাঁধ ভাঙে সমর্থকদের মধ্যে৷ 'প্রধানমন্ত্রী মোদী বনেঙ্গে' জয়ধ্বনি তখন বিজেপি কার্যালয়ের সামনে৷ দলীয় সভাপতি রাজনাথ সিং বলেন, 'মোদী খুব জনপ্রিয় নেতা৷' তাঁর এই কথার মধ্যেই ভবিষ্যতের ইঙ্গিত খুঁজে পেয়েছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা৷ তাঁরা বলছেন, মোদীকেই প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী ধরে এগোচ্ছে বিজেপি৷ কিন্ত্ত দল ও শরিকদের মধ্যে মোদীকে নিয়ে বিরোধিতা থাকায় এখনই আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হচ্ছে না৷ মোদীকে সংসদীয় বোর্ডে এনে লোকসভা ভোটে বিজেপির ভালো ফল হওয়ার সম্ভাবনাকে আরও মজবুত করতে চাইছে৷ আর ভোট যদি ২০১৪-তে নির্ধারিত সময় অনুযায়ী হয়, তাহলে হাতে এখনও ১৪ মাসের কাছাকাছি সময় রয়েছে, নভেম্বরে হলেও ৮ মাস, তাই তড়িঘড়ি নাম ঘোষণা করার ঝুঁকি তাঁরা নিচ্ছেন না৷ 

তবে মোদীকে বেছে নেওয়া হয়েছে মূলত দু'টি কারণে৷ প্রথমত, গুজরাটে তাঁর নেতৃত্বে পর পর তিন বার জয়৷ দ্বিতীয় কারণ হল, উন্নয়ন ও সুদক্ষ প্রশাসনকে ভিত্তি করে গুজরাটকে তিনি 'ব্র্যান্ড মোদী' বানিয়েছেন৷ এই দু'টি বিষয়কে মূলধন করতে চাইছে বিজেপি৷ 

প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী অসুস্থতার কারণে রাজনৈতিক জীবন থেকে স্বেচ্ছাবসরের পরে বিজেপি-কে একসুতোয় বেঁধে রাখার মতো সর্বজনবিদিত নেতা আর বিজেপিতে নেই৷ অর্ন্তদ্বন্দ্বে দল ক্লান্ত৷ 'লৌহপুরুষ' লালকৃষ্ণ আদবানিও আর দলের উপর তাঁর প্রভাব রাখতে পারছেন না৷ তাই দলকে সংঘবদ্ধ করে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো কারওকে প্রয়োজন বিজেপির, তিন বারের বিজয়ী মোদীকেই তাই তারা এমন দায়িত্বের জন্যে ভাবছে৷ অন্যদিকে রয়েছে সঙ্ঘ পরিবারের প্রভাব৷ মোদী আরএসএস ঘনিষ্ঠ৷ এবং তাদের হিন্দুত্ববাদের সমর্থক৷ তাই আরএসএস সব সময়ই চেয়েছে এমন কোনও নেতাকে যিনি তাদের কথা মেনে চলবেন৷ মোদীর থেকে ভালো আর কে-ই বা হতে পারেন? 

রাজনাথও মোহন ভগবতদের 'কাছের মানুষ'৷ তিনি দায়িত্ব নিয়েই 'রামমন্দির নির্মাণ' ও 'হিন্দুত্বে ফেরার' ডাক দিয়েছিলেন৷ এ দিন তাঁর দল গঠন দেখে এটা আরও স্পষ্ট হল যে তিনি তাঁর কোর গ্রুপকে সেভাবেই বেছে নিয়েছেন৷ মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানকে টপকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে একমাত্র মোদীই স্থান পেয়েছেন৷ পাশাপাশি এসেছেন অমিত শাহ, স্মৃতি ইরানি, উমা ভারতীরা৷ এঁরা নয় মোদীর পছন্দের লোক, না হয় উগ্র হিন্দুত্ববাদী৷ বাবরি মসজিদ ধ্বংসের সময় উমা ভারতীর ভূমিকা কারও অজানা নয়৷ স্বাভাবিক ভাবেই এই মনোনয়নে তিনি উসিত৷ ধন্যবাদ জানিয়েছেন রাজনাথ-সহ দলের সব শীর্ষ নেতাদের৷ 

বরুণ গান্ধীকে দলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক বানিয়ে বিজেপি তাঁকে রাহুল গান্ধীর সমান্তরাল হিসেবে নিয়ে আসতে চেয়েছেন৷ তাদের লক্ষ্য উত্তরপ্রদেশের তরুণ ভোটাররা৷ সে কারণেই তারা বরুণকে এনে বাজিমাত করার চেষ্টা করছে৷ মানেকা গান্ধী ছেলের এই 'সাফল্যে' খুশি৷ তিনি বলেছেন, 'ওর উপর দল এতটা যখন ভরসা করেছে, ও তার মান রাখবে৷' দলের নবনিযুক্ত সহ সভাপতি মুরলীধর রাও অবশ্য বলেছেন, 'রাহুল নন, সঙ্ঘ পরিবারের চাপেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷' তবে সুর কেটেছে প্রবীণ বিজেপি নেতা বিনয় কাটিয়ারের কথায়৷ তিনি বলেন, 'বরুণ তাঁর পদবির জন্য এই সম্মান পাচ্ছেন৷ গান্ধী পরিবারের প্রভাবকে কাজে লাগাতে চাইছে বিজেপিও৷' 

তবে রাজনৈতিক মহল বলছে, রাজনাথ সংসদীয় কমিটিতে যাঁদের নিয়েছেন, তাঁরা প্রত্যেকেই বিজেপি সভাপতির 'পছন্দের', অন্যদিকে প্রতিটি অঞ্চল, জাত-পাতের প্রতিনিধিত্বও যাতে ঠিক থাকে নজর রেখেছেন সে দিকেও৷ রবিবার সকালে সংসদীয় কমিটি ঘোষণা করার আগে, রাজনাথ আদবানির সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন৷ তাঁর সঙ্গে আলোচনার পরেই ঘোষণা করা হয় লোকসভা নির্বাচনের টিম৷ রাজনাথের রাজনৈতিক উপদেষ্টা সুধাংশু ত্রিদেবী-সহ আরও তিন নতুন মুখ এসেছেন দলীয় মুখপাত্র হিসেবে৷ রবিশঙ্কর প্রসাদকে এই দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়েছে৷ প্রমোদ মহাজনের মেয়ে পুনম ও মধ্যপ্রদেশের সাংসদ সরোজ পান্ডে এসেছেন এই দলে৷ স্মৃতি ইরানিকে সরিয়ে সরোজ মহিলা যুব মোর্চার দায়িত্ব পেলেন৷ 


রাজনৈতিক বিশ্লেষণ বলছে, মোদী যে আগামী লোকসভা ভোটে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকছেন, তা নিয়ে কোনও সংশয় নেই৷ তবে মোদীর এই 'প্রত্যাবর্তনের' সঙ্গে সঙ্গে নীতীশ কুমারের দল জানিয়ে দিয়েছে, অসাম্প্রদায়িক কারওকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী করা হোক৷ গুজরাট গণহত্যাকর 'ক্ষত' এখনও মোদীর পিছু ছাড়েনি, তাই দিল্লি দরবারে বসার জন্য 'হিন্দু হূদয়সম্রাট' প্রস্ত্তত থাকলেও, তা কতটা সর্বসম্মত হবে তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে৷ - সংবাদসংস্থা


নয়াদিল্লি: দলের সর্বোচ্চ সিদ্ধান্ত গ্রহণের মঞ্চ জাতীয় কর্মসমিতিতে নরেন্দ্র মোদীর অন্তর্ভুক্তি নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও এই সিদ্ধান্ত সঠিক, যথাযথ বলে দাবি করলেন খোদ বিজেপি সভাপতিই। আজ ঔরঙ্গাবাদে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে রাজনাথ সিংহ যুক্তি দিয়েছেন, মোদী দেশের 'সবচেয়ে জনপ্রিয়' মুখ্যমন্ত্রী। সেজন্যই তাঁকে দলের জাতীয় কর্মসমিতিতে নেওয়া হয়েছে। কেন তিনি আগে বিজেপি সভাপতি থাকাকালে কর্মসমিতিতে গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রীকে নেননি, প্রশ্ন করা হলে রাজনাথ বলেন, আমজনতার কাছ থেকে পাওয়া ফিডব্যাকের ওপর ভিত্তিতেই তখন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। আর তাঁকে কর্মসমিতিতে ঢোকানোর সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে সেই আমজনতার প্রতিক্রিয়া দেখেই। গতকাল কংগ্রেসের তরফে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কপিল সিব্বল মোদীর বিজেপিতে উত্থানের খবরে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বলেছিলেন, মোদীকে কর্মসমিতিতে নেওয়ার ফলে প্রধান বিরোধী দল এবার উল্টে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে, কেননা মোদী একবার বিজেপির ওপর পূর্ণ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত করতে পারলে দলটাই শেষ হয়ে যাবে। কেননা মুখ্যমন্ত্রী যে ব্র্যান্ডের রাজনীতি করেন, তার সঙ্গে আদর্শের কোনও সম্পর্কই নেই। সিব্বলের বক্তব্যের জবাবে আজ বিজেপি মুখপাত্র প্রকাশ জাভরেকর বলেন, কংগ্রেস আসলে রাজনাথ সিংহের টিমে মোদী ও তাঁর ঘনিষ্ঠ অমিত শাহের অন্তর্ভুক্তিকে কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না। এই টিম আগামী সাধারণ নির্বাচনে কেন্দ্রে ইউপিএ সরকারকে উতখাত করতে চলেছে বলেও দাবি করেন তিনি। বলেন, সিব্বল হতাশ হয়ে পড়েছেন। কেননা তিনি জানেন, চাঁদনি চক থেকে তিনি আর জিতছেন না।সুতরাং ওঁর কথায় খুব বেশি গুরুত্ব দেওয়ার দরকার নেই।
আজ অবশ্য কংগ্রেস মুখপাত্র রেনুকা চৌধুরি মোদীর উত্থানকে তেমন গুরুত্ব না দিয়ে বলেন, ওটা বিজেপির ঘরোয়া ব্যাপার।তাঁর প্রতিক্রিয়া, এটা আরোহন, প্রোমোশন, অবনমন, বিচ্যুতি না গুরুত্ব হ্রাস আমরা জানি না। আমাদের এ ব্যাপারে কোনও প্রতিক্রিয়াই নেই, কোনও মতামতও নেই, আমরা ভাবিতও নই। এটা ওদের অভ্যন্তরীণ বিষয়।

http://www.abpananda.newsbullet.in/national/60-more/35216-2013-04-01-17-03-26


আমেদাবাদ:নরেন্দ্র মোদী মুখ্যমন্ত্রী, অথচ তাঁর অনুপস্থিতিতেই গুজরাতকে ২০১৫-র মধ্যে হিন্দু রাজ্য বানানোর ঘোষণা করে দিলেন বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি)-র শীর্ষনেতা প্রবীণ তোগাড়িয়া৷ রবিবার মোদীর নির্বাচনী কেন্দ্রের অন্তর্গত এলাকায় হিন্দু সঙ্গম কর্মসূচি ছিল ভিএইচপি-র৷ সেখানেই তোগাড়িয়া বলেন, আর দুবছরের মধ্যেই ভিএইচপি রাজ্যের ১৮ হাজার জেলার সবগুলিতেই ঢুকে পড়বে৷ রাজ্যের সর্বত্র নিজের অস্তিত্বের প্রমাণ দেবে৷ আমরা গুজরাতকে হিন্দু রাজ্য বলে ঘোষণা করব৷ ভিএইচপি নেতা-কর্মীদের চাঙ্গা করতে হিন্দুত্বের ভবিষ্যত, হিন্দু নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধির জন্য শীর্ষক এক কর্মসূচি নিয়েছেন তোগাড়িয়ারা ৷ গ্রামগঞ্জ, শহর ও উপজাতি এলাকায় সব হিন্দুর কাছে পৌঁছাতেই এই কর্মসূচি৷ হিন্দুরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে উদ্বেগ জানিয়ে তোগাড়িয়া বলেছেন, আত্মরক্ষা ও সমৃদ্ধির জন্য হিন্দুদের নিজেদেরই ততপর হতে হবে৷ এজন্য হিন্দু রীতিনীতি, আচার নিষ্ঠাভরে পালন করতে হবে৷সচেতন ও সক্রিয় করে তুলতে হবে হিন্দুদের৷ অনুষ্ঠানে মোদীর না থাকা নিয়েও গুঞ্জন উঠেছে৷ ভিএইচপি-র হিন্দু রাজ্য ঘোষণার উদ্যোগে কি সায় নেই তাঁর, এই জল্পনার মধ্যেই পর্যবেক্ষকরা মনে করিয়ে দিয়েছেন, গান্ধীনগর ও আমেদাবাদে বেআইনি মন্দির ভাঙা সহ একাধিক ইস্যুতে মোদীর সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছে ভিএইচপি৷ তোগাড়িয়ার বক্তব্য, আমাদের আচার-আচরণ, রীতিনীতি পালনেও খাঁটি হিন্দু হতে হবে৷ তাহলেই অযোধ্যায় রামমন্দির গড়ার স্বপ্ন পূরণ হবে৷ তবে তোগাড়িয়া হিন্দুত্বের সুর চড়ালেও তাঁর দিকে সমালোচনার তীর ধেয়ে আসতে শুরু করেছে৷ প্রাক্তন ভিএইচপি নেতা, গুলবর্গা দাঙ্গা মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত অতুল বৈদ্য বলেছেন, দাঙ্গা মামলায় জড়িয়ে পড়া ভিএইচপি কর্মীরা চরম সামাজিক, আর্থিক সঙ্কটে রয়েছেন৷ এতদিন কোথায় ছিলেন উনি? হিন্দু সঙ্গম করছেন, লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে কিন্তু আমাদের সাহায্য করার টাকা ছিল না!

http://www.abpananda.newsbullet.in/national/60-more/35190-2013-04-01-06-33-21


বাংলায় হচ্ছেটা কি, আমরা সবাই চোখ কান খুলে দেখছি,শুনছি। 


 পঞ্চায়েত ভোটের ভবিষ্যত্‍ নির্ধারিত হতে চলেছে আদালতেই। নির্বাচনের নির্ঘণ্ট নিয়ে রাজ্য সরকারের একতরফা ভাবে জারি করা বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টে সোমবার মামলা করেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। যদিও প্রক্রিয়াগত কারণে এক্ষেত্রে কমিশন কিছুটা ধাক্কা খেয়েছে। মামলা গ্রহণ না-করে আইনি পদ্ধতি অনুসরণ করে মামলা করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। অর্থাত্‍‌ , সার্বিক ভাবে পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রক্রিয়া আরও বিলম্বিত হবে। 

এদিকে কমিশন আদালতে যাওয়ার পরই তত্‍পরতা শুরু হয়ে যায় মহাকরণে। জরুরি বৈঠক করেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর ঘরে এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আইনমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, অ্যাডভোকেট জেনারেল বিমল চট্টোপাধ্যায় এবং সরকারি আইনজীবী অশোক বন্দ্যোপাধ্যায়। এই বৈঠকের আগে অ্যাডভোকেট জেনারেল ও সরকারি আইনজীবীর সঙ্গে একপ্রস্থ বৈঠক সারেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী। 

এদিন সকালে বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দারের এজলাসে মামলা দায়ের করা হয়। কমিশনের হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী লক্ষ্মীনারায়ণ দ্বিবেদী। বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে জরুরি ভিত্তিতে এই মামলার আবেদন গ্রহণের সওয়াল করেন তিনি। তবে সেই আবেদন গৃহীত হয়নি। আইনি পথে মামলা রুজুর নির্দেশ দেওয়া হয় কমিশনকে। ফলে, সামগ্রিক প্রক্রিয়াটি আরও দু'-একদিন পিছিয়ে যেতে পারে। মঙ্গলবার নতুন করে মামলা রুজু করা হতে পারে। রাজ্যকে মামলার নোটিফিকেশন দিতে আরও একদিন। ফলে বুধবারের আগে মামলার আইনি প্রক্রিয়া কতটা শুরু হবে, তা নিয়ে সংশয় থাকছেই। 

কমিশনের আবদনে রাজ্য সরকারের জারি করা বিজ্ঞপ্তি খারিজের কথা বলা হয়েছে। কারণ, রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সহমতে এই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়নি। আইন অনুযায়ী, কমিশনের সহমত ছাড়া এ ভাবে বিজ্ঞপ্তি জারি করা যেতে পারে না বলে কমিশন আবেদনে জানিয়েছে। আদালতের কাছে কমিশনের আবেদন, রাজ্য সরকার যাতে কমিশনের সঙ্গে কথা বলে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে, সেই নির্দেশিকা দেওয়া হোক। সেই সঙ্গে জানানো হয়েছে, কমিশন চায় জুনে পঞ্চায়েতের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই নির্বাচন করতে। 

এদিন আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে বিজেপি-ও। হাইকোর্টে দাখিল করা আবেদনে দলের তরফে বলা হয়েছে, পঞ্চায়েত নির্বাচন পরিচালনার পূর্ণ ক্ষমতা দেওয়া হোক কমিশনকে। একই সঙ্গে রাজ্যের পঞ্চায়েত আইন বাতিলের আবেদনও জানানো হয়েছে। 

এদিকে, এই টানাপোড়েনের দায় রাজ্য সরকারের ঘাড়েই চাপিয়েছে কংগ্রেস। মানস ভুঁইয়া বলেছেন, 'রাজ্য সরকার ইচ্ছে করলেই পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে এই জটিলতা এড়াতে পারত। সে ক্ষেত্রে বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়াতই না।' অরুণাভ ঘোষ বলেছেন, 'টোটালটাই লুকোচুরি খেলা চলছে৷ রাজ্য নির্বাচন কমিশন যে মামলা করছে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সেটা তো আমরা অর্থাত্ কোনও রাজনৈতিক দল জানেই না৷ অন্তত সব রাজনৈতিক দলকে একটা করে কপি তো পাঠানো উচিত ছিল৷ আর মামলা করার পদ্ধতিতেও তো ভুল হয়েছে৷ আরে আগে তো মামলাটাকে লিস্টিং (তালিকাভুক্ত) করাতে হবে৷ নইলে শুনানির জন্য আবেদন করা যাবে কী ভাবে?' দীপা দাশমুন্সির মন্তব্য, 'আমাদের তো মনে হচ্ছে রাজ্য সরকার পঞ্চায়েত নির্বাচনটাই করতে চাইছে না৷' 

পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে অচলাবস্থাকে হাতিয়ার করে তৃণমূলের মধ্যে বিভাজন তৈরির চাল দিলেন বিমান বসু৷ নির্বাচন নির্দিষ্ট সময়ে না করার জন্য রাজ্য সরকারের শীর্ষস্তরে যে 'চক্রান্ত' হয়েছে তা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া মুকুল রায় এবং সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মতো কতিপয় নেতার বাইরে তৃণমূলের আর কেউই জানতে না বলে দাবি করলেন বর্ষীয়ান এই বাম নেতা৷ জেলায় জেলায় প্রার্থী চূড়ান্ত না হওয়া, দলীয় কোন্দল নিয়ন্ত্রণ করতে না পারা এবং সার্বিক আইনশৃঙ্খলা বেহাল থাকার কারণেই রাজ্য সরকারে শীর্ষস্তরে নির্দিষ্ট সময়ে ভোট না করার 'চক্রান্ত' করা হয়েছে বলে সোমবার বামফ্রন্টের বৈঠকের পর দাবি করেছেন ফ্রন্ট চেয়ারম্যান৷ পঞ্চায়েত ভোটকে 'ভন্ডুল' করার দায়িত্ব পরিকল্পনা করেই সুব্রত মুখোপাধ্যায় এবং মকুল রায়ের ওপর দেওয়া হয়েছিল বলে তাঁর বক্তব্য৷ এই পরিস্থিতিতে এ দিন নির্দিষ্ট সময়ে নির্বাচন করার দাবিতে রাজ্যপাল এম কে নারায়ণনের 'হস্তক্ষেপ' প্রার্থনা করেছেন বিমান বসুর নেতৃত্বে বাম প্রতিনিধি দল৷ রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠকের পর বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বলেন, 'পঞ্চায়েত ভোট নির্দিষ্ট সময়ে করার দাবিতে এবং যে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে তার নিষ্পত্তির জন্য রাজ্যপালের 'গুড অফিস'কে ব্যবহারের কথা আমরা বলেছি৷ সমঝোতার জন্য তাঁর উদ্যোগ নেওয়া উচিত বলেছি৷ তিনি বলেছেন, বিষয়টি তিনি দেখছেন৷' রাজ্যপালের 'হস্তক্ষেপ' দাবি করলেও বিজেপি কিংবা কংগ্রেসের মতো আইনি পথে বামেরা যে এখনই যাচ্ছে না তা এ দিন স্পষ্ট করেছেন বর্ষীয়ান এই বাম নেতা৷ রাজ্য নির্বাচন কমিশন ও সরকারের আইনি দ্বন্দ্ব কোন পথে গড়ায় সেই দিকে আপাতত নজর রাখার কৌশলই নিচ্ছেন বাম নেতৃত্ব৷ তবে আইনি পথে না গেলেও নির্দিষ্ট সময়ে নির্বাচনের দাবিতে রাস্তায় নামার কথা এ দিন ঘোষণা করেছে বামফ্রন্ট৷ মঙ্গলবার কলকাতায় তিন ঘণ্টার অবস্থান ছাড়াও জেলায় জেলায় এই ইস্যুতে আন্দোলনের নামার কথা এ দিন ঘোষণা করেছেন বিমান বসু৷ 


পঞ্চায়েত ভোট সময়ে না হওয়ার জন্য রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুললেন সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু। তাঁর অভিযোগ, পঞ্চায়েত ভোট পিছিয়ে দিতে সুপরিকল্পিতভাবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংঘাতে গেছে সরকার।  

সময়ে পঞ্চায়েত ভোট না হওয়ায়, রাজ্যবাসী ক্ষতির মুখে পড়বেন বলে জানালেন সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু। তিনি বলেন, পঞ্চায়েতগুলির মেয়াদ ফুরোলে প্রশাসক নিয়োগ করবে রাজ্য সরকার। কিন্তু, বহু কেন্দ্রীয় প্রকল্প শুধুমাত্র পঞ্চায়েতের মাধ্যমেই বাস্তবায়িত করা হয়। পঞ্চায়েত না থাকলে সেইসব প্রকল্পের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন রাজ্যবাসী। 

পঞ্চায়েত  জট নিয়ে ততপরতা রাজনৈতিক শিবিরেও। আজ সরকারের বিরুদ্ধে রণকৌশল ঠিক করতে জরুরি বৈঠকে বসে বামফ্রন্ট। এতদিন পর্যন্ত সরকার ও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দ্বন্দ্ব নিয়ে সে ভাবে সুর চড়ায়নি বামফ্রন্ট। কারণ বামফ্রন্ট চেয়েছিল দু'পক্ষের সংঘাত মিটে গিয়ে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোট হোক। কিন্তু আদালত পর্যন্ত বিষয়টি গড়ালে সরকারের বিরুদ্ধে প্রচারের রণকৌশল কী হবে তা ঠিক করতেই বামফ্রন্টের এই জরুরি বৈঠক।

বৈঠকের শেষে বিকেল চারটেয় বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুর নেতৃত্বে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করবে বাম প্রতিনিধি দল। সেখানেই রাজ্যপালের কাছে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের দাবি জানানো হবে বাম প্রতিনিধি দলের তরফে। এতদিন পর্যন্ত সরকার ও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দ্বন্দ্ব নিয়ে সেভাবে সুর চড়ায়নি বামফ্রন্ট। কারণ বামফ্রন্ট চেয়েছিল দুপক্ষের সংঘাত মিটে গিয়ে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে  ভোট হোক। 


পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের মোকাবিলায় এবার জোড়া কৌশল তৃণমূলের৷ পঞ্চায়েত ভোট পেছানোর দায় কমিশনের ঘাড়ে চাপিয়ে রাস্তায় নামছে শাসকদল৷ পাশাপাশি, আইনি লড়াইয়েরও প্রস্তুতি  নিচ্ছে রাজ্য সরকার৷ পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে কমিশন আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার পর পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, কমিশন যখন আদালতে গিয়েছে, পাল্টা মামলা করবে রাজ্যও৷ পঞ্চায়েত ভোট ঘিরে জটিলতার মধ্যে মহাকরণে বৈঠক করেন  পঞ্চায়েতমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য৷ বৈঠকে ছিলেন পঞ্চায়েতসচিব-সহ অন্যান্য আধিকারিকরাও৷ মহাকরণ সূত্রে খবর, আদালতে কমিশনের মুখোমুখি হতে গেলে রাজ্যের তরফে কী বক্তব্য খাড়া করা হবে, সেই প্রস্তুতি সারতেই এই বৈঠক হয়৷ রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর পঞ্চায়েতমন্ত্রী এদিন জানিয়েছেন, যা বলার আদালতেই বলব৷


শুধু আইনি লড়াই নয়, রাজনৈতিকভাবেও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের মোকাবিলায় পথে নামছে তৃণমূল৷ নির্ধারিত সময়ে ভোট করার ক্ষেত্রে কমিশন বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে, মূলত এই অভিযোগকে সামনে রেখেই মঙ্গলবার মেট্রো চ্যানেলে সমাবেশের ডাক দিয়েছে তারা৷ এদিন বেলা ২টোয় মেট্রো চ্যানেলে সমাবেশ৷ সেখানে উপস্থিত থাকবেন মুকুল রায়, সুব্রত বক্সী-সহ তৃণমূলের প্রথম সারির নেতারা৷ মূল লক্ষ্য, কমিশনের বিরুদ্ধে জনমত গঠন করা৷ এই ইস্যুতে তৃণমূলের প্রচারের মূল কৌশল, সরকারে আসার পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, গরমে নয়, তাঁরা পঞ্চায়েত ভোট করতে চান অপেক্ষাকৃত ঠান্ডায়৷ সেই মতো, ফেব্রুয়ারিতে ভোট করতে চেয়ে কমিশনকে চিঠি দেয় রাজ্য সরকার৷ তাতে রাজি হয়নি কমিশন৷ এরপর রাজ্য সরকার ঘোষণা করে, ২৬ এবং ৩০ এপ্রিল দু দফাতেই পঞ্চায়েত ভোট হবে৷ কিন্তু, তাতেও সায় দেয়নি কমিশন৷ উল্টে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে তারা৷ নানা অছিলায় নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে কমিশন, মানুষের সামনে এই বার্তাই তুলে ধরতে চাইছে তৃণমূল৷ 

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ব্যাখ্যা, কমিশন এবং সরকারের সংঘাতের জেরে পঞ্চায়েত ভোট পিছিয়ে গেলে, সেক্ষেত্রে মানুষের কাছে ভুল বার্তা যেতে পারে৷ ইতিমধ্যেই বিরোধীরা পঞ্চায়েত ভোট নির্ধারিত সময়ে করার ক্ষেত্রে, রাজ্য সরকারের সদিচ্ছা নিয়েই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে৷ সংঘাতের জেরে পঞ্চায়েত ভোট সত্যি সত্যিই পিছিয়ে গেলে, সেক্ষেত্রে বিরোধীরা তাদের সুর আরও চড়ানোর সুযোগ পেয়ে যাবে৷ এই পরিস্থিতিতে জোড়া কৌশলে পঞ্চায়েত-অস্বস্তি কাটাতে চাইছে তৃণমূল৷ কমিশনের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে, একদিকে যেমন ভোট পেছানোর দায় কমিশনের ঘাড়েই চাপিয়ে দিতে চাইছে তারা, পাশাপাশি, বিরোধীদের অভিযোগকেও অসত্য বলে মানুষের সামনে তুলে ধরতে চাইছে তারা৷ 



মুলনিবাসী বহুজন কারা ?


  • মুলনিবাসী বহুজন কারা ?
    একটা শব্দ মূলনিাসী আর একটা শব্দ বহুজন । এই মুলনিবাসী বহুজন কারা এ সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের Step by Step উপরে উঠতে হবে । অর্থাৎ তফশিলি জাতি, তফশিলি উপজাতি কারা, শুদ্র কারা, বহুজন কারা আর মুলনিবাসী বহুজন কারা ? প্রথমে আমরা বহুজন শব্দের উৎপত্তি কিভাবে হয়েছে সে সম্পর্কে অলোচনা করছি । এর মধ্যেই তফশিলি জাতি, তফশিলি উপজাতি কারা, শুদ্র কারা, এদের সম্পর্কে জানতে পারব । এই যে বহুজন শব্দ বলা হয়েছে এটা এমনিতেই উৎপন্ন হয়নি । সমাজে যে অসমানতার ব্যাবস্থা চলছে সেটা আমাদের বুঝতে হবে । এই অসমানতার ব্যাবস্থা vertical (খাঁড়া)। এটা horizontal নয় । ক্রমিকভাবে সকলের উপরে ব্রাহ্মণ, তার নিচে ক্ষত্রিয়, তার নিচে বৈশ্য আর তার নিচে শুদ্র । আর তফশিলি জাতি, তফশিলি উপজাতি বর্ন ব্যাবস্থার মধ্যে নেই । এঁরা out caste বর্ন বাহ্য । অর্থাৎ বর্নব্যাবস্থার বাইরে । এসব কথা সাধারণ লোক তো দূরের কথা , যারা সমাজ বিজ্ঞান পড়েন তাঁরাও জানেন না । কারণ এটা বিচার ধারার মামলা । তফশিলি জাতি(Scheduled Caste), তফশিলি উপজাতি(Scheduled Tribe), এদের বর্ন ব্যাবস্থার ভিতরে কোন পরিচয় নেই ।
    বাবা সাহেব আম্বেদকর এদের (SC, ST) জন্য ইংরেজি শব্দ OUT CASTE- বর্ন বাহ্য প্রয়োগ করেছেন , এঁরা বর্ন ব্যাবস্থার বাইরের লোক । তো এই ভাবে যে মূলনিবাসী বহুজনরা আছেন এই বহুজন শব্দের সৃষ্টি হল কি করে ? এই যে যে, বহুজন শব্দ, এটা সংখ্যাবাচক শব্দ; এতে সংখ্যা আছে । কিন্তু এটা সংখ্যার উপর নির্ধারিত শব্দ নয় । এই যে যে, (Vertical) ব্যাবস্থা - এতে ব্রাহ্মণ লাভবান হয়েছে । তারা এই ব্যাবস্থার Beneficiary , ক্ষত্রিয় - Beneficiary আর বৈশ্যও - Beneficiary -- অর্থাৎ এই বর্ন ব্যাবস্থার এই তিন বর্নের লোকদেরই সব সুযোগ-সুবিধা করায়ত্ব ।
    কিন্তু বর্ন ব্যাবস্থায় যে শুদ্র, এই শুদ্র কে ?
    যদি তফশিলি জাতি, তফশিলি উপজাতির লোকরা বর্ন ব্যাবস্থার বাইরের লোক হয় তাহলে বর্ন ব্যাবস্থার ভিতরে যে শুদ্র আছে তারা কারা ?
    বর্ন ব্যাবস্থার ভিতরে যে শুদ্র আছে, ব্রাহ্মণ ধর্ম অনুসারে তাঁরা আর কেউ নয় , তাঁরা O.B.C. (Other Backward Class)অর্থাৎ অন্য পশ্চাদপদ শ্রেণীর লোকেরাই বর্নব্যাবস্থায় শুদ্র বর্নের লোক ।
    অনেক তফশিলি জাতির লেখাপড়া শেখা লোক আছেন, এটা তাঁরা জানেনই না । আর অশিক্ষিতদের জানার তো প্রশ্নই আসে না । আমাদের লেখাপড়া শেখা তফশিলি জাতির লোকেরা নিজেদের শুদ্র বলেন । কিন্তু বাবা সাহেব এদের শুদ্র বলেননি । বাবা সাহেব আম্বেদকর এদের Out Caste বলেছেন । বর্ন বাহ্য বলেছেন । বর্নব্যাবস্থার বাইরের লোক বলেছেন । আর বর্ন ব্যাবস্থার মধ্যে যে শুদ্র; এটা O.B.C.দের যে বর্গ আছেন তারাই বর্নব্যাবস্থায় শুদ্র বর্নের লোক । তাই ব্রাহ্মণ ধর্মানুসারে O.B.C.-রাই শুদ্র বর্নের লোক ।
    আপনাদের একটা আসল কথা বলতে চাই- যেটা খুবই গুরুত্বপূর্ন কথা । যে মনুস্মৃতি আছে তাতে Out Caste লোকদের বিরুদ্ধে কিছু লেখা নেই । অর্থাৎ তফশিলি জতি তফশিলি উপজাতিদের বিরুদ্ধে কিছু লেখা নেই । সেখানে শুদ্রদের বিরুদ্ধে লেখা হয়েছে । এ কথাও আমাদের তফশিলি জাতি তফশিলি উপজাতির লেখাপড়া শেখা লোকদের জানার বাইরে । তফশিলি জাতি তফশিলি উপজাতির লেখাপড়া শেখা লোকেরা নিজেদের শুদ্র বলেন । এঁরা নিজেদের শুদ্র বলার ফলে O.B.C.-রা যারা প্রকৃত শুদ্র, তাঁরাও এই তফশিলি জাতি, তফশিলি উপজাতির লোকদের শুদ্র বলা শুরু করেছেন । এই সব সমস্যা তফশিলি জাতির লেখাপড়া লোকেরাই করেছেন । যার ফলে লোকদের জাগানোর কাজের মধ্যে একটা বড় সংকট খাঁড়া হয়েছে । তফশিলি জাতি, তফশিলি উপজাতির লোকেরা শুদ্রবর্নের নয় । ব্রাহ্মণ ধর্ম ব্যাবস্থা অনুসারে O.B.C.-রাই শুদ্র বর্নের লোক ।
    কারণ O.B.C. অর্থাৎ অন্য পেছনের বর্গের লোকদের মধ্যে কোন জাতির লোকদের ব্রাহ্মণ ধর্ম অনুসারে উপনয়ন সংস্কার (পৈতা) হয় না । মুসলমানদের মুসলমান হওয়ার জন্য সংস্কার (ছুন্নৎ) হয় । খ্রিস্টানদের খ্রিস্টান হওয়ার জন্য সংস্কার হয়, বুদ্ধিস্টদের বুদ্ধিস্ট হওয়ার জন্য সংস্কার হয়, শিখদের শিখ হওয়ার জন্য সংস্কার হয় । যদি O.B.C.-রা হিন্দু হন তাহলে হিন্দু হওয়ার জন্য উপনয়ন(পৈতা) সংস্কার হওয়া দরকার । কিন্তু সেটা হয় না । তাই O.B.C.-রাও হিন্দু নন । ব্রাহ্মণ ধর্ম অনুসারে O.B.C.-রা শুদ্র বর্নের লোক । এই বর্ন ব্যাবস্থায় যে বৈষম্য সৃষ্টি করা হয়েছে তাতে সকলের নিচে O.B.C.-রা । আর একটা কথা - শুদ্রদের বিরুদ্ধে মনুস্মৃতিতে লিখিত আইন আছে । এটা সঠিকভাবে বুঝতে হবে । তফশিলি জাতি তফশিলি উপজাতির লোকেরা এটা জানেন না । তার জন্যই সবথেকে বড় সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে ।
    তফশিলি জাতি, তফশিলি উপজাতির লোকরা বর্ন ব্যাবস্থার বাইরের লোক । এঁদের বিরুদ্ধে 'বলা আইন' আছে । যে প্রদেশের যে জায়গায় যে বড় ব্রাহ্মণ আছে , সে যেটা বলবে সেটাই এঁদের (SC, ST) বিরুদ্ধে আইন । সেজন্য আলাদা আলাদা রাজ্যে, আলাদা জায়গায় অচ্ছুৎদের, আদিবাসীদের বিরুদ্ধে আলাদা আলাদা আইন দেখা যায় । যেটা আমাদের লোকদের সঠিক ধারণা নেই । শুদ্ররা (O.B.C.) মনুস্মৃতিতে লেখা আইনের শিকার । আর তফশিলি জাতি, তফশিলি উপজাতির লোকেরা হচ্ছে Out Caste. এঁরা মনুস্মৃতির Sprite of Manusmrity (মনুস্মৃতির ভাবনা)-এর শিকার । যার উপর ভিত্তি করে ব্রাহ্মণরা আলাদা আলাদা জায়গায় আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে আমাদের প্রতারিত করে । আর এর জন্যই অর্থাৎ এই ব্রাহ্মণী ষড়যন্ত্রের জন্য আমাদের লোকেরা ধর্ম পরিবর্তন করে মুসলমান, শিখ, খ্রিস্টান, বুদ্ধিস্ট, জৈন হয়েছেন ।
    এই যে তফশিলি জাতি, তফশিলি উপজাতি, এবং O.B.C-এঁদের থেকে যারা ধর্মপরিবর্তন করেছেন, এই সব লোকদের সংখ্যা; এবং এঁরা ব্রাহ্মণী ব্যাবস্থার ফলে কেউ উপরে, কেউ তার নিচে, কেউ তার নিচে এই ক্রমিক খাঁড়া বর্ন ব্যাবস্থার শিকার লোকদের সংখ্যা হচ্ছে ৮৫ শতাংশ । এই সংখ্যা আমাদের ইচ্ছামত তৈরী করা হয়নি ।
    এই যে বহুজন শব্দ তৈরি হয়েছে । এটা সংখ্যা-বাচক শব্দ আপনারা দেখতে পাচ্ছেন । কিন্তু এই শব্দ(বহুজন) তৈরি হোল কিভাবে ? যে ব্রাহ্মণবাদী ব্যাবস্থা আছে , এই ব্রাহ্মণবাদী ব্যাবস্থার শিকার যে লোকেরা, এঁরা সংখ্যায় ৮৫ শতাংশ ।
    তফশিলি জাতির লোক, তফশিলি উপজাতির লোক, অন্য পিছিয়ে পড়া বর্গের লোক এবং এঁদের থেকে ধর্ম পরিবর্তিত যে লোক; এইসব লোকদের মিলিয়ে ৮৫ শতাংশ সংখ্যা তৈরি হয়েছে । অর্থাৎ সংখ্যা পরে তৈরি হয়েছে । তাহলে প্রথমে কি ? প্রথমে হচ্ছে এই লোকেরা ব্যাবস্থার শিকার লোক । কোন ব্যাবস্থার ? ব্রাহ্মণরা সমাজে যে অসম ব্যাবস্থার নির্মান করেছে , জাতি ব্যাবস্থা বানিয়েছে; এই ব্যাবস্থার শিকার লোকদের সংখ্যা হচ্ছে ৮৫শতাংশ । এখানে দুটো কথা বোঝানো হয়েছে । একটা অসমান ব্যাবস্থার শিকার, দ্বিতীয় এই অসমান ব্যাবস্থার শিকার হওয়া লোকদের সংখ্যা । এই সংখ্যাটা কিন্তু এই ভাবে তৈরি হয়েছে । এটা কোন আলাদা নয় । কারণ এই সংখ্যা তৈরি হওয়ার আগে থেকেই এই লোকেরা ব্রাহ্মণী ব্যাবস্থার শিকার হওয়া । তাই এই সংখ্যা স্বতন্ত্র নয় । প্রথমে ব্যাবস্থার শিকার লোকদের একজোট করার কথা বলা হয়েছে । আর এর জোড় পরে বানালে দেখা গেছে সেটা ৮৫শতাংশ । আমাদের মনে হয়েছে আর বানিয়ে দিয়েছি সেটা কিন্তু নয় । যারা ব্রাহ্মণবাদী ব্যাবস্থার শিকার তাদের সংখ্যা ৮৫% । আর ১০০ এর মধ্যে যারা ৮৫জন তাঁরা সংখ্যার দৃষ্টিকোণে বহুজন হয় । জাতির সংখ্যায়ও বহুজন, টোটাল সংখ্যাও বহুজন । সেজন্য এঁরা(SC, ST, OBC এবং এঁদের থেকে ধর্মপরিবর্তিত লোকেরা) বহুজন ।
    দ্বিতীয় শব্দ হচ্ছে মূলনিবাসী ।
    একটা শব্দ হচ্ছে বহুজন । আর দ্বিতীয় শব্দ হচ্ছে মূলনিবাসী । এই মূলনিবাসী শব্দ কি করে তৈরি হোল - ২০০১ সালের ২১শে মে Times of India পত্রিকায় একটা খবর ছাপানো হয়। আমেরিকার ওয়াশিংটনে ওটাহ বিশ্ববিদ্যালয় আছে । ঐ বিদ্যালয়ের Bio- Technology-এর Head of the Department হলেন মাইকেল বামসাদ(BAMSAD) । তিনি Bio- Technology এর আধারে একটা Project বানিয়েছিলেন ভারতের প্রজাদের DNA বিশ্লেষণ করার জন্য । তিনি ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের বিভিন্ন জাতি, ধর্মের লোকদের DNA Test করেছেন । এই DNA Test এ এটা প্রমানিত হয়েছে যে, এখানকার ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয় ও বৈশ্যদের DNA বিদেশী লোকদের DNA এর সঙ্গে মিলে গেছে । আর তফশিলি জাতি, তফশিলি উপজাতি, অন্য পিছনের বর্গ(O.B.C.), এবং এঁদের থেকে ধর্মপরিবর্তিত লোকদের DNA একই ধরনের । অর্থাৎ এঁরা এখানকার মূলনিবাসী । আর একটি আশ্চর্যজনক কথা তিনি DNA এর আধারে বিশ্লেষণ করে বলেছেন যে, ব্রাহ্মণদের ঘরে যে মহিলারা আছেন তাদের DNA ও ভারতে মূলনিবাসীদের DNA-এর বৈশিষ্টের সঙ্গে মিলে গেছে । অর্থাৎ যে SC, ST, O.B.C. এবং এঁদের থেকে ধর্মপরিবর্তিত লোকদের DNA আর ব্রাহ্মণদের ঘরের মহিলাদের ঘরের DNA একই রকম । এতে প্রমাণিত হয়েছে, এই যে যে, ব্রাহ্মণ আমাদের দেশে দেখা যায় এরা আক্রমণকারী । আর যারা আক্রমণকারী হয় তারা আক্রমণ করার উদ্দেশ্যে আসে । তারা সঙ্গে তাদের মহিলাদের নিয়ে আসে না । আর এজন্য এরা মহিলাদের সঙ্গে নিয়ে আসেনি। আর যারা এখানে স্থায়ী হয়েগেছে ; তারা তাদের প্রজা উৎপন্ন করার জন্য এখানকার মহিলাদের উপয়োগ ও প্রয়োগ করেছে । ফলে ব্রাহ্মণদের ঘরে যে মহিলারা আছেন এঁরা মূলনিবাসী মহিলা । এই আশ্চর্যজনক বিশ্লেষণও তিনি DNA বিশ্লেষণে প্রমাণ করেছেন ।
    আর যে দ্বিতীয় খুব মহত্ত্বপুর্ন কথা তিনি প্রমাণ করেছেন সেটা হচ্ছে , ব্রাহ্মণরা জাতি ব্যাবস্থা নির্মান করার জন্য মহিলাদের প্রয়োগ করেছে । ব্রাহ্মণরা যে বর্ন ব্যাবস্থার নির্মান করেছে এটা তাদের শাস্ত্রে লিখিত প্রমাণ আছে । লিখিত প্রমাণ হচ্ছে-- ব্রাহ্মণরা যে বর্নব্যাবস্থা বানিয়েছে তাতে তাঁরা তাদের মা, বোন, মেয়েকেও শুদ্র ঘোষনা করেছে । আমাদের শুদ্র ঘোষনা করেছে সেটা তো বোঝা যাচ্ছে । কিন্তু ব্রাহ্মণরা তাদের ঘরের সকল মহিলাকেই শুদ্র ঘোষনা করেছে কেন ? আর এর জন্য বর্নব্যাবস্থায় কোন মহিলাকে ব্রাহ্মণদের ব্রাহ্মণ বর্ন নয়, ক্ষত্রিয়দের ক্ষত্রিয় বর্ন নয়, বৈশ্যদের বৈশ্য বর্ন নয়, সব মহিলাকে শুদ্রবর্ন হিসাবে ঘোষনা করেছে । এই আশ্চর্যজনক প্রমান ব্রাহ্মনধর্ম শাস্ত্রে লিখিত আছে । আর DNAতেও প্রমাণ পাওয়া গেছে । DNA এর একটা অংশ হচ্ছে Mitochondria . এটা মায়ের থেকে শুধুমাত্র মেয়ের শরীরেই transfer হয় । তাই সব মহিলা আইনগত হিসাবে মূলনিবাসী । এটা single evidence নয় double evidence. এটা পাক্কা প্রমাণ ।
    এই ভাবে এই মূলনিবাসী শব্দ তৈরি হয়েছে । SC, ST, OBC এবং এঁদের থেকে ধর্মপরিবর্তিত লোক এবং ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্যদের ঘরে যে মহিলারা এঁরা মূলনিবাসী বহুজন । আমি এই যে যেকথা বললাম আমাদের কিছু লেখাপড়া শেখা লোক এর ভুল অর্থ বের করতে পারেন । তাঁরা ভাবতে পারেন- চলো খুব ভালোই হোল ব্রাহ্মণদের মেয়ের সঙ্গে বিবাহ করেলে খুব ভালোই হবে । কারণ সে মহিলারা তো আমাদের মূলনিবাসী ।
    এই ধরনের ভুল ধারণা আমাদের লেখাপড়া শেখা লোকেরা তাদের সুবিধার জন্য বের করতে পারেন । তবে একথা কিন্তু সে জন্য বলা হয়নি শুধু সঠিক বিষয়টা জনানোর জন্য বলা হয়েছে । আমাদের মূলনিবাসী বহজনদের জাগরিত করার জন্য। আমাদের নিজেদের লোক কে ? আর পর কে ? এর মধ্যে পার্থক্য করতে শেখা দরকার । কারণ এর সঙ্গে শত্রু এবং মিত্রে চেনার ব্যাপার আছে । যে শত্রু এবং মিত্রের পার্থক্য তৈরি করতে পারে - পৃথিবীতে একমাত্র সেই জাগরিত হয় । যারা ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, PHD হন, এরা জাগরিত হিসাবে গণ্য হন না । জাগরিত তাকেই মানা হয় যিনি শত্রু এবং মিত্রকে সঠিকভাবে চিনতে পারেন । একথাও সঠিকভাবে বোঝার চেষ্টা করুন আপনারা ।

    কোনওমতে পরীক্ষা দিয়ে বেরিয়েও নিস্তার মেলেনি। পৌঁছতে যতটা দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে, বেরিয়েও ততটাই হয়রানির শিকার হলেন পরীক্ষার্থীরা। বারবার সামনে এল নজিরবিহীন এক অব্যবস্থার ছবি।

    টেট পরীক্ষা দিয়ে বেরিয়ে বাড়ি ফেরার জন্য হাপিত্যেশ পরীক্ষার্থীদের। ইসলামপুর, চোপরা, গোয়ালপোখরের ছবিটা একই রকম। 

    দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পরও বাস না পেয়ে প্রথমে চব্বিশ নম্বর জাতীয় সড়ক  এবং রায়গঞ্জ বালুরঘাট রাজ্য সড়কের সংযোগস্থল শিলিগুড়ি মোড় অবরোধ করেন পরীক্ষার্থীরা। ঘটনাস্থলে পুলিস এসে তাঁদের আশ্বস্ত করে। পরীক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের জানানো হয়েছিল, লরিতে তুলে দেওয়া তাঁদের। সাতটা নাগাদ অবরোধ তুলে নেন পরীক্ষার্থীরা। কিন্তু যাঁদের সঙ্গে পুরুষ সঙ্গী নেই, নিরপাত্তার অভাব বোধ করায় লরিতে উঠতে সাহস করেননি তাঁদের অনেকেই। বাসও পাননি। রাতে যে যেখানে পেরেছেন কোনওমতে ঘর ভাড়া করে থেকেছেন।

    ভিড় বাসের মধ্যে জায়গা মেলেনি। বাসের সংখ্যাও ছিল কম। পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফেরার জন্য অগত্যা বাসের ছাদেই উঠতে বাধ্য হয়েছিলেন আসানসোলের বার্নপুরের বহু পরীক্ষার্থী। তেমনই একটি যাত্রীবাহী বাস ধাক্কা মারে রেলের ওভারব্রিজে। চলন্ত বাসের ছাদ থেকে পড়ে গুরুতর আহত হন চার পরীক্ষার্থী। প্রত্যেকেরই মাথায় চোট লেগেছে।  

    প্রথমে তাঁদের বার্নপুরের ইস্কো হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে আসানসোল মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়। চারজনেরই অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় পরে তাঁদের বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে রেফার করা হয়।

    সবাই যখন পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফেরার যুদ্ধে ব্যস্ত, তখন দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার জয়নগরের মণিরতট রাইমণি ইন্সটিটিউশনে পরীক্ষা শুরুর চেষ্টা চলছে। পরীক্ষার্থী ছিলেন প্রায় ছশো জন। ছশ জনের অ্যাডমিট কার্ডেই ওই পরীক্ষাকেন্দ্রেরই নাম লেখা ছিল। কিন্তু দেখা যায় চারশো জনের পরীক্ষা দেওয়ার বন্দোবস্ত রয়েছে ওই কেন্দ্রে। অর্থাত্ বাকি দুশ জনের জায়গা নেই।  

    পরীক্ষার্থীদের বিক্ষোভে পণ্ড হয়ে যায় পরীক্ষা। পুলিসের  হস্তক্ষেপে শেষপর্যন্ত বেলা সাড়ে চারটে নাগাদ যখন পরীক্ষা নেওয়ার তোড়জোড় হচ্ছে, তখন সেখানে হাজির আড়াইশো পরীক্ষার্থী। 

    বাকিরা হয়রান হয়ে পরীক্ষা না দিয়েই ফিরে চলে যান। 

    প্রাথমিকে টাকার বিনিময়ে চাকরির টোপ, ২৪ ঘণ্টার এক্সক্লুসিভ রিপোর্ট

    প্রাথমিকে পঁয়তাল্লিশ লাখ পরীক্ষার্থী। পঁয়ত্রিশ হাজার আসন। প্রাথমিকে চাকরির শিঁকে ছিঁড়তে ভরসা রাজু স্যার আর পিয়ালি ম্যাডাম। পরীক্ষার আগে অ্যাডমিটের ফটোকপি আর দশ হাজার টাকা দিলেই চাকরির সুযোগ। অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নেমেছিল চব্বিশ ঘণ্টা। 

    আজ দিনিভর শহর,মফস্বল, গ্রামের ছবিটা ছিল এক রকম। রাস্তা ঘাটে পরীক্ষার্থীদের ভিড়। নাকাল হলেন অনেকেই। অ্যাডমিট কার্ড হাতে নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরে যখন ভিড় জমিয়ে ছিলেন চাকরি প্রত্যাশী লাখ লাখ যুবক যুবতী ঠিক তখনই দূর্গানগরে একটি জব প্লেসমেন্ট সেন্টারে দেখা গেল অন্যচিত্র। ঋষি প্লেসমেন্ট নামক এই সংস্থাটিতে জমা পড়েছে বেশ কিছু অ্যাডমিট কার্ড। ভাড়া বাড়িতে ঋষি এন্টারপ্রাইজের কর্ণধার নাকি টাকার বিনিময়ে প্রাথমিকে চাকরীর ব্যবস্থা করেন। এই রাজু ব্যানার্জির সঙ্গী এক মহিলা। নাম পিয়ালী মুখার্জি। রাজুর এজেন্ট হিসাবে কাজ করেন তিনি। তদন্তে নেমে ২৪ ঘণ্টার হাতে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। ফোনে কথপোকথনে রাজু জানালেন অ্যাডমিট কার্ডের সঙ্গে কখনও ২০ কখনও বা ১০ হাজার টাকা জমা দিলেই মিলবে প্রাথমিকে চাকরির সুযোগ। 

    শুধু প্রাথমিকেই নয়, পুলিস সূত্রে খবর এর আগেও একবার প্রতারণার দায়ে ধরা পড়েছিলেন রাজু। 

    http://zeenews.india.com/bengali/zila/false-promise-of-primary-job_12416.html

    চাকরির জন্য যাঁরা রাজুর পাতা ফাঁদে পা দিয়েছিলেন তাঁদের অনেকেই ভয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চাইছেন না। পুলিসের কাছে যেতেও ভয় পাচ্ছেন। আসলে এই চক্রের শিকার বিস্তৃত অনেক গভীরে। 


    কলকাতা :রাজ্যের চলতি রাজনৈতিক সংঘাত, বৈরিতার আঁচ পড়ল টেট পরীক্ষার আঙিনাতেও৷ রবিবার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা ঘিরে পরীক্ষার্থীদের দুর্ভোগ, হয়রানির জন্য পরস্পরের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছে শাসক তৃণমূল ও বিরোধী কংগ্রেস৷ কেন্দ্রের ইউপিএ-২ সরকার ছেড়ে বেরিয়ে আসায় রেলমন্ত্রক এখন হাতে নেই, তাই পরীক্ষার্থীদের হয়রানি, অসুবিধার জন্য রেলের 'ব্যর্থতা'কে দায়ী করেছেন তৃণমূল নেতা তথা পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র৷ তাঁর অভিযোগ, রেল আজ ঠিকমতো চললে পরীক্ষার্থীদের এমন নাকাল হতে হত না৷ হাওড়া-শিয়ালদা, দুই লাইনেই ঠিকমতো রেল পরিষেবার ব্যবস্থা ছিল না বলে তিনি দাবি করেছেন৷ ফলে সময়মতো ট্রেন না পেয়ে দুর্ভোগে পড়েন বহু পরীক্ষার্থী৷ কলকাতায় মেট্রো রেলও ১১টার পর থেকে অনেক দেরিতে চলেছে বলে তিনি অভিযোগ করেন৷ তিনি পাল্টা দাবি করেন, রাজ্য পরিবহণ নিগম এত বাস নামিয়েছে যা গত ১৮-২০ বছরে অর্থাত বিগত বাম জমানায় দেখা যায়নি৷ 
    মদনের অভিযোগ উড়িয়ে রেল প্রতিমন্ত্রী তথা কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরি মন্তব্য করেন, উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা চলছে৷ নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে রেলকে দায়ী করছে ওরা ৷রেল সহযোগিতা করতে চাইলেও পশ্চিমবঙ্গ সরকার চায়নি ৷তাঁর প্রশ্ন, অবরোধ, যানজট তোলার কথা তো রাজ্য সরকারের ট্রাফিক দফতরের৷ তারা কী করছিল!(ফাইল চিত্র)

    http://www.abpananda.newsbullet.in/kolkata/59-more/35185-2013-03-31-18-06-02


    বজ্র আঁটুনি, তবু আইপিএল উদ্বোধন নিয়ে ফস্কা গেরোর আশঙ্কায় 

    পুলিশ



    এই সময়: ইডেনের নিয়ম এক রকম, যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের আর এক রকম৷ 

    কাল, মঙ্গলবার শহরের সব স্টেশন যখন সন্ধ্যায় যুবভারতীতে মিলে যাওয়ার কথা, তখন ২৪ ঘণ্টা আগেও আইপিএল-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে ঘিরে এক ঝাঁক ধোঁয়াশা৷ এতবড় মাপের অনুষ্ঠান সামাল দেওয়ার মতো উপযুক্ত পরিকাঠামো বিধাননগর ও কলকাতা পুলিশের আছে কি না, তার পরীক্ষা মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দিতে চলেছে এই শহর৷ 

    ইডেন গার্ডেন্সের মতো 'ডুজ অ্যান্ড ডোন্টস'-এর নির্দিষ্ট নির্দেশিকা নেই যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের ক্ষেত্রে৷ নেই পার্কিংয়ের জন্য চিহ্নিত বিভিন্ন জায়গা৷ নেই উপচে-পড়া জনতাকে সামাল দেওয়ার জন্য উপযুক্ত সংখ্যক গেটও (ইডেনে ক্লাব হাউস ছাড়াই গেটের সংখ্যা ১৭, যুবভারতীতে যে সংখ্যা সর্বমোট ৬)৷ কাল, মঙ্গলবার সন্তাহের আইপিএল-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তাই পার্কিংই সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ কলকাতা ও বিধাননগর পুলিশের কাছে৷ ট্র্যাফিক-ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণের জন্য ইতিমধ্যেই কলকাতা পুলিশের সাহায্য চেয়েছে বিধাননগর পুলিশ৷ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন বিধাননগর পুলিশের অন্তর্গত হলেও ইএম বাইপাস যেহেতু কলকাতা পুলিশের, তাই পরমা আইল্যান্ড থেকে হাডকো মোড় পর্যন্ত যান-নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব ন্যস্ত থাকছে কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশেরই হাতে৷ রবিবার বিধাননগর সিটি পুলিশের কমিশনার রাজীব কুমার বলেন, 'স্টেডিয়ামের ভিতরে পার্কিংয়ের জায়গা কম থাকায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পার্কিংই আমাদের কাছে সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ৷' কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (সদর) জাভেদ শামিম বলেছেন, 'উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা ও ট্র্যাফিক-নিয়ন্ত্রণের জন্য যথেষ্ট সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন থাকছে মঙ্গলবার৷' এ দিকে, এ দিনই রাত আড়াইটেয় কলকাতায় পৌঁছে যাওয়ার কথা কেকেআর-কর্ণধার তথা আইপিএল 'শোম্যান' শাহরুখ খান৷ 

    বিধাননগর পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের হেলিপ্যাড গ্রাউন্ডে দেড় হাজারের বেশি গাড়ি পার্কিং সম্ভব নয়৷ অথচ বলিউড তারকাখচিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের ব্যান্তি এতটাই যে, অন্যান্যবারের তুলনায় কাল স্টেডিয়াম চত্বরে বিপুল সংখ্যক গাড়ির চাপ থাকবে বলেই আশঙ্কা পুলিশের৷ সল্টলেকের রাস্তা-ক্লাবের মাঠে পার্কিংয়ের জন্য জায়গা থাকলেও তা করা সম্ভব নয় বলেই মত বিধাননগর পুলিশের৷ রাজীব কুমারের কথায়, 'অনুষ্ঠান দেখতে আসা দর্শকদের অনুরোধ করছি যথাসম্ভব দলবেঁধে মাঠে আসুন, যাতে গাড়ির সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম হয়৷' তবে বাস্তবে সেই অনুরোধ আদৌ কতটা রাখা যাবে, সে ব্যাপারে এখনও সন্দিগ্ধ বিধাননগর পুলিশ৷ 

    এ দিকে, যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের বাইরে সে সব গাড়ি পার্কিংয়ের কথা, তার সংখ্যা তিন হাজার ছুঁয়ে ফেলতে পারে বলে অনুমান কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের৷ সে কারণেই আইটিসি (তারকা-সহ টিম যেখানে থাকছেন) সংলগ্ন পরমা আইল্যান্ড থেকে উল্টোডাঙা/হাডকো মোড় পর্যন্ত প্রতিটি সংযোগস্থল ও সমান্তরাল রাস্তায় বিপুল সংখ্যক কর্মী মোতায়েন রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলকাতা পুলিশ৷ ইএম বাইপাসের সমান্তরাল বিভিন্ন সার্ভিস রোড জুড়ে পার্কিংয়ের বন্দোবস্ত করা হবে বলে ঠিক হয়েছে৷ তবে সন্তাহের দ্বিতীয় দিন অফিসফেরত শহরবাসীর সঙ্গে সঙ্গে উদ্বোধনমুখী জনতাকে নিয়ন্ত্রণ করাই এই মুহূর্তে সব থেকে বড় দুশ্চিন্তার কারণ ট্র্যাফিককর্তাদের৷ শুধু তাই-ই নয়, উল্টোডাঙা উড়ালপুল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ভিআইপি-বাইপাসগাীম গাড়ির চাপ সামাল দেওয়াও ভাবাচ্ছে পুলিশকে৷ 

    বিনোদনের সব ক'টি মশলায় মোড়া উদ্বোধনী অনুষ্ঠান উতরে দিতে শেষ মুহূর্তে পুলিশ এখন ব্যস্ত নিজের রান্নাঘরের তদারকিতে৷


    তৃণমূলের শাসনে মিছিল বাতিল সিপিএম-এর
    বারাসত: কর্মসূচি পিছিয়েও শাসনে নিজেদের সংগঠন বিস্তার নিশ্চিত করতে পারল না সিপিএম৷ পায়ে পা দিয়ে তাঁদের প্রতিরোধ করতে সব ধরনের চাল দিচ্ছে তৃণমূল৷ ৩১ মার্চের বদলে ৭ এপ্রিল মজিদ মাস্টারকে সামনে রেখে সিপিএমের শাসনে ঢোকার পরিকল্পনা বানচাল করতে সেই একই দিনে তৃণমূল নেতৃত্বও ওই একই জায়গায় তাঁদের দলীয় মিছিলের ডাক দিল৷ তাঁদের কর্মসূচির কারণেই রবিবার শাসনে সিপিএমকে মিছিল করার অনুমতি দেয়নি পুলিশ৷ একই কারণে যাতে ৭ এপ্রিলও সিপিএম অনুমতি না পায়, সেই ব্যবস্থা করতেই তৃণমূলের যে এই আগাম চাল, তা স্পষ্ট শাসকদলের নেতাদের মন্তব্যেও৷ 

    পুর্ব ঘোষণা মতো এদিন শাসনে মিছিল করার কথা ছিল সিপিএমের৷ দলের পুরোনো ঘাঁটিতে আবার নিজেদের শক্তি বাড়ানোর লক্ষ্যেই যে ওই কর্মসূচি, তা বুঝে সতর্ক হয়ে যায় তৃণমূল৷ তার উপর পুলিশের অনুমতি চাইতে সিপিএম নেতৃত্ব দেরি করে ফেলায় সুযোগ পেয়ে যান তাঁরা৷ একই দিনে তাঁরাও পুলিশের কাছে মিছিল করার অনুমতি চেয়ে পেয়েও যান৷ বাধ্য হয়ে সিপিএম তাঁদের পরিকল্পনা পিছিয়ে দেয়৷ ৭ এপ্রিল তাঁরা মিছিল করবেন বলে ঘোষণা করেন এক দিন আগেই৷ তবে তৃণমূল যথারীতি এদিন শাসনে মিছিল করেছে৷ সেই সঙ্গে শাসকদলের নেতারা বুঝিয়ে দেন, কোনও ভাবেই সিপিএমের মাটিতে আর ঘাঁটি গাড়তে দেবেন না তাঁরা৷ বামপন্থীদের যে. আর কোনও ভাবেই ওই এলাকায় মিছিল বা সভা করতে দেওয়া হবে না, তা জানিয়ে দিলেন তাঁরা৷ ঘরছাড়াদের শাসনে ফেরাতেই মিছিলের পরিকল্পনা রয়েছে সিপিএম নেতৃত্বের৷ তৃণমূলের ভয়ে গৃহহীন ১,৪৪১ জনের তালিকাও প্রশাসনের কাছে দিয়েছিল সিপিএম৷ 

    কিন্ত্ত রবিবারের মিছিল থেকে তৃণমূল নেতারা জানিয়ে দিলেন, ৭ এপ্রিল তাঁদেরও মিছিল হবে শাসনে৷ এতে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সিপিএম নেতারা৷ দলের পক্ষে নেপালদেব ভট্টাচার্য বলেন, 'এ সব মিছিলের জন্য বাম জমানার ৩৪ বছরে কোনও অনুমতি নিতে হয়নি কখনও৷ আর এখন আমাদের কর্মসূচি ঠেকাতে তৃণমূলের নির্দেশে পুলিশ অনুমতির কড়াকড়ি করছে৷ কিন্ত্ত গায়ের জোরে জনগণের আন্দোলনকে রোখা যাবে না৷' 

    সিপিএম নেতারা ভয় পাচ্ছেন, ৭ এপ্রিলও হয়তো পুলিশ তাঁদের মিছিল করার অনুমতি দেবে না৷ নেপালবাবু জানান, 'শনিবার আমরা অনুমতি চেয়ে চিঠি দিলে পুলিশ বলে, লাউডস্পিকার ব্যবহার করা হবে না বলে চিঠিতে উল্লেখ করে দিতে হবে৷ তা লিখে আমরা পাঠিয়েও দিয়েছি৷ কিন্ত্ত পুলিশের অনুমতি এখনও মেলেনি৷ এর মধ্যে তৃণমূল আবার মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করায় পুলিশ হয়তো আমাদের অনুমতি দেবেই না৷' 

    তৃণমূল যুব কংগ্রেসের উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি শীলভদ্র দত্ত বলেন, 'কাউকে আটকানোর জন্য নয়, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে দলের পক্ষ থেকে আমাদের মিছিল হচ্ছে৷ কে কবে অনুমতি চাইছেন, আমরা জানব কি করে?' 

    যানজট-বিক্ষোভ-লাঠিচার্জে দিনভর নাকাল পরীক্ষার্থীরা



    যানজট-বিক্ষোভ-লাঠিচার্জে দিনভর নাকাল পরীক্ষার্থীরা
    পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে না পারায় সামিল অবরোধে
    শীর্ষেন্দু গোস্বামী 

    বহরমপুর: অরাজকতা ও অব্যবস্থা আর কাকে বলে? জেলার এক প্রান্তের বাসিন্দারা যে অন্য প্রান্তে গিয়ে যে পরীক্ষা দেবেন, তা নাকি জানা ছিল না মুর্শিদাবাদের খোদ পুলিশ সুপারের৷ পরীক্ষা নির্বিঘ্নে করানোর জন্য তাঁদের ডিউটি থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল ট্রাফিক পুলিশদের৷ ফল ভোগ করলেন সেই পরীক্ষার্থীরাই৷ যানজটে জেরবার হওয়া থেকে শুরু, দিনভর চড়ান্ত দুর্ভোগের শিকার হলেন তাঁরা৷ পরীক্ষা দিতে যাওয়ার পথে বিক্ষোভে নামতে হল তাঁদের৷ পরিণামে তাঁরা পুলিশের লাঠিও খেলেন৷ 

    চাকরিপ্রার্থীদের এমন নাজেহাল অবস্থাতেও রাজনৈতিক দলগুলি মশগুল চাপান-উতোরে৷ রাজ্যের শাসকদল এই দুর্ভোগের জন্য দায় চাপিয়েছে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন কংগ্রেসের ঘাড়ে৷ পাল্টা তাঁরা মিথ্যাচারের অভিযোগে দুষেছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের৷ দুর্ভোগের শুরু সকাল থেকেই৷ একে যানবাহন কম, তার উপর রবিবার৷ চাকরি পেতে মরিয়া তরুণ-তরুণীরা নিজেরা ছোট ছোট গাড়ি ভাড়া করে পরীক্ষা কেন্দ্রে রওনা হন৷ 

    এত গাড়ি একসঙ্গে বেরিয়ে পড়ায় সকাল ৮টাতেই বহরমপুরের চুঁয়াপুর থেকে মেহেদিপুর পর্যন্ত ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ১২ কিমি যানজটে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছিল৷ সময় যত গড়িয়েছে, পাল্লা দিয়ে আটকে পড়া যানবাহনের সংখ্যা তত বেড়েছে৷ ফলে সময়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছতে না পারার ভয়ে ধৈর্য্যের বাঁধ ভাঙে পরীক্ষার্থীদের৷ গির্জা মোড়ে জাতীয় সড়কে রাখা লোহার তৈরি পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে, উল্টে ফেলে বিক্ষোভ শুরু করেন তাঁরা৷ 

    এতে উত্তেজনা যত বেড়েছে, পাল্লা দিয়ে ততই বাড়ে যানজট৷ এ সময় বহরমপুরের কংগ্রেস বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তী ঘটনাস্থলে গেলে তাঁর সামনে ক্ষোভে ফেটে পড়েন কর্মপ্রার্থী যুবক-যুবতীরা৷ তাঁকে ঘিরে পরীক্ষা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করার দাবি তোলেন তাঁরা৷ মনোজবাবু ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়েই মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারকে ব্যবস্থা করে নেওয়ার জন্য মোবাইলে অনুরোধ করলেও, পাল্টা ক্ষোভ উগরে দেন প্রশাসনের বিরুদ্ধে৷ 

    জাতীয় সড়কে দাঁড়িয়েই প্রাক্তন মন্ত্রী মনোজবাবু বলেন, 'প্রশাসনের আগাম কোনও পরিকল্পনা না থাকায় পরীক্ষার্থীদের এই দুর্বিষহ অবস্থায় পড়তে হল৷ ফরাক্কার বাসিন্দাদের পরীক্ষা দিতে বলা হয়েছে জলঙ্গিতে৷ আবার বেলডাঙার কর্মপ্রার্থীদের সিট পড়েছে সুতিতে৷ কোনও সুষ্ঠ পরিকল্পনা থাকলে এমন হয় না৷' তিনি পরীক্ষার্থীদের আইনের আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দেন৷ যানজট সামলানোর কাজ থেকে পুলিশকে সরিয়ে নেওয়ার সমালোচনাও করেন তিনি৷ 

    পুলিশ সূত্রের খবর, পরীক্ষা কেন্দ্রে ডিউটি করার জন্য প্রায় ১০০ ট্রাফিক কনেষ্টবলকে তুলে নেওয়া হয়েছিল এদিন৷ ফলে যান নিয়ন্ত্রণের কোনও ব্যবস্থা না থাকায় বিপত্তি হয়েছে৷ প্রতিবাদে চাকরিপ্রার্থীরা জাতীয় সড়কের উত্তরপাড়া মোড়ে অবরোধ শুরু করলে কমব্যাট ফোর্স গিয়ে লাঠিচার্জ করে তাঁদের সরিয়ে দেয়৷ এর পর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের অফিসে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান পরীক্ষার্থীরা৷ সেখানে ভাঙচুর হয় দু'টি বাইক৷ পুলিশ গিয়ে অবশ্য সেখানে উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে আনে৷ 

    রঘুনাথগঞ্জের উমরপুর ও নবগ্রামেও ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে এদিন অবরোধ করেছিলেন পরীক্ষার্থীরা৷ মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর এই অব্যবস্থা প্রসঙ্গে বলেন, 'জেলার এক প্রান্তের ছেলেমেয়েরা যে অন্য প্রান্তে পরীক্ষা দিতে যাবেন, তা পুলিশের জানা ছিল না৷ তার উপর পরীক্ষার্থীরা প্রচুর গাড়ি ভাড়া করে বেরিয়ে পড়ায় ট্রাফিক সমস্যা হয়েছে৷' জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি সাগির হোসেনের সাফাই, 'জাতীয় সড়কে দু'টি রেলগেট দীর্ঘক্ষণ বন্ধ থাকায় সমস্যা হয়েছে৷ রেল দপ্তর কংগ্রেসের হাতে৷ তাঁরা ইচ্ছা করে এই কাজ করেছে৷' 


    স্বভাবতই এতে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে কংগ্রেস৷ দলের মুর্শিদাবাদ জেলার মুখপাত্র অশোক দাস বলেন, 'ওরা আসলে চোখে সব কিছুতেই কেন্দ্রের ভূত দেখছে৷ দিদিকে খুশি করতে মিথ্যার আশ্রয় নিচ্ছে ওরা৷' 

    ট্রেনেও দুর্ভোগ, পড়ে জখম দুই
    বারাসত ও বারুইপুর: প্রাথমিক শিক্ষকের নিয়োগ পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে রবিবার উত্তর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা জুড়ে চরম বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়৷ উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতে ক্ষুব্ধ পরীক্ষার্থীরা যেমন ট্রেন অবরোধ করেছেন, তেমনই দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুর স্টেশন পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে জিআরপির সংঘর্ষ রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়৷ দুই জেলাতেই ভিড়ের কারণে চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে গুরুতর জখম হয়েছেন বেশ কয়েক জন পরীক্ষার্থী৷ 

    এদিন ভিড় ট্রেনে ঝুলে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছতে গিয়ে উত্তর ২৪ পরগনার কাজীপাড়া স্টেশনের কাছে ট্রেন থেকে পড়ে যান এক পরীক্ষার্থী৷ অন্যদিকে, দেগঙ্গা পথ দুর্ঘটনায় জখম হন আরেক পরীক্ষার্থী৷ বনঁগা শাখার প্রতিটি স্টেশনে উপচে পড়া ভিড় তখন৷ নির্দ্দিষ্ট সময় স্টেশনে আসছে না কোনও ট্রেনই৷ এর মধ্যেই খবর আসে দুই পরীক্ষার্থীর দুর্ঘটনার খবর৷ উত্তেজনা ছড়ায় বারাসত স্টেশনে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করে থাকা পরীক্ষার্থীদের মধ্যে৷ শুরু হয় রেল অবরোধ৷ বেশ কিছুক্ষণ বারাসত স্টেশন অবরোধ করেন হাজার দুয়েক পরীক্ষার্থীরা৷ তাঁদের অভিযোগ, 'কোনও ট্রেন সময়মতো আসছে না৷ যেগুলি আসছে, তাতে এত ভিড় যে পা-রাখাই যাচ্ছে না৷ আমরা যখন পরীক্ষা দিতে পারব না, তখন কাউকেই পরীক্ষা দিতে দেব না৷'

    কামারহাটির সুবীর মণ্ডলের অভিযোগ, 'হাড়োয়া রোডে আমার সিট পড়েছে৷ বারাসত আসার জন্য আমাকে দু'বার ট্রেন বদল করতে হয়েছে৷ হাড়োয়া স্টেশনে নেমে আমাকে এক ঘণ্টা বসে থাকতে হয়েছে ট্রেনের অপেক্ষায়৷ ভিড়ের চাপে আমি সকাল ১০টার হাসনাবাদ লোকালে উঠতে পারিনি৷ তাই নির্দ্দিষ্ট সময় পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছাতে পারব না বুঝেই ট্রেন অবরোধের সিদ্ধান্ত নিয়েছি৷' সকাল দশটা থেকে সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত বনঁগা শাখায় ট্রেন অবরোধ চলায় পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে রেল চলাচল৷ ফলে ট্রেনের আশা ছেড়ে পরীক্ষার্থীরা নিরুপায় হয়ে ট্রেকার, লরি, বাসের মাথায় চেপে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছনোর মরিয়া চেষ্টা করে৷ এরই মধ্যে ব্যারাকপুর থেকে একদল পরীক্ষার্থী কার্যত জীবনের ঝুঁকি নিয়েই একটি ট্রেকারের মাথায় উঠে পড়ে৷ বেলিয়াঘাটার কাছে ট্রেকারটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়৷ এই ঘটনায় চার পরীক্ষার্থী জখম হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে৷ এই ঘটনার জেরেও ব্যাপক যানজট হয় রাস্তায়৷ সব মিলিয়ে এই জেলায় বিশৃঙ্খলা এতটাই চরমে ওঠে যে অনেক পরীক্ষার্থীই শেষ পর্যন্ত পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে পারেননি৷ 

    এদিকে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুর আর শাসন রোড স্টেশনের মাঝখানে ভিড়ে ঠাসা চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে যান রীতা দাস নামে এক পরীক্ষার্থী৷ এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায় বারুইপুর স্টেশনে৷ পরীক্ষার্থীরা ট্রেন আটকে বারুইপুর স্টেশনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে৷ জিআরপি পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করতে পরিস্থিতি আরও উত্তন্ত হয়ে ওঠে৷ অভিযোগ, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে পুলিশ বেপরোয়া লাঠি চালায় পরীক্ষার্থীদের উপর৷ 

    দফায় দফায় পরীক্ষা একই প্রশ্নপত্রে, বৈধতা নিয়ে সংশয়
    দফায় দফায় পরীক্ষা একই প্রশ্নপত্রে, বৈধতা নিয়ে সংশয়
    অরূপকুমার পাল 

    মেদিনীপুর: প্রশ্নপত্র একটিই৷ তাতেই কোথাও দু' দফায়, কোথাও তিন দফায় পরীক্ষা দিলেন প্রাথমিক শিক্ষকের পদপ্রার্থীরা৷ সময় মতো পৌঁছতে না পারলেও, মেদিনীপুর জেলা তাঁদের সবাইকে পরীক্ষা দিতে দিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ কর্তৃপক্ষ৷ বেলা ১টায় পরীক্ষা শুরু হয়নি কোথাও৷ তা সত্ত্বেও যারা পরীক্ষা দিতে পারেননি, জেলাশাসকের নির্দেশে তাঁদের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল মেদিনীপুর কলেজে৷ সেখানেও নির্ধারিত সময়ের প্রায় দুই ও আড়াই ঘণ্টা পর পরীক্ষা হয়েছে৷ একই প্রশ্নপত্রে বিভিন্ন সময়ের ওই পরীক্ষার আইনি বৈধতা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে৷ 

    বিশেষ করে পিংলা ও কেশপুরে দেখা গিয়েছে, পরীক্ষার্থীরা যখনই পৌঁছন না কেন্দ্র, তখনই তাঁদের পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হয়েছে৷ কেশপুর থানার আঙ্গুয়া হাইস্কুলে পরীক্ষা চলেছে বিকেল পৌনে ৫টা পর্যন্ত৷ প্রথম পরীক্ষাটি নিধারি্‌রত সময় ১টায় শুরু হলেও, পরের দু' দফায় পরীক্ষাগ্রহণ শুরু হয়েছে বেলা ২-১০ ও সাড়ে ৩টায়৷ দফায় দফায় পরীক্ষাগ্রহণের তালিকায় রয়েছে পিংলার যোগেন্দ্রনাথ হাজরা মেমোরিয়াল গালর্স হাই স্কুল, মহেন্দ্রলাল আংশিক বুনিয়াদি বিদ্যালয়, গোপীনাথপুর দেবায়তন বিদ্যাপীঠ, খড়িকামাথানি ভীমার্জুন এমসি হাই স্কুল, কেশিয়াড়ি কন্যা বিদ্যাপীঠ, কেশিয়াড়ি হাই স্কুল, আনন্দপুর সন্তোষকুমারী বালিকা বিদ্যালয় ইত্যাদি৷ 

    মেদিনীপুর কলেজে যে বিশেষ পরীক্ষা কেন্দ্র হয়েছিল জেলাশাসকের নির্দেশে, সেখানেও পরীক্ষা প্রথম হয় বেলা ৩টা৷ আধ ঘণ্টা পর সাড়ে ৩টায় আবার পরীক্ষা হয় একই প্রশ্নপত্রে৷ বসন্তপুর তেলিপুকুর বিদ্যাপীঠের পরীক্ষার্থী শেখ সরফরাজ বলেন, 'প্রশ্নপত্র আমাদের হাতে না থাকলেও, পরীক্ষায় বসার আগেই আমরা জেনে গিয়েছিলাম, কি কি প্রশ্ন আমাদের লিখতে হবে৷ ফলে নিজেদের মানসিক ভাবে প্রস্ত্তত রাখতে পেরেছিলাম৷' 

    কিন্ত্ত এতে নিজেদের ভবিষ্যত্ নিয়ে সংশয়ে পড়েছেন চাকরিপ্রার্থীরা৷ এমনই এক কর্মপ্রার্থী অভিষেক রায় বলেন, 'একই প্রশ্নে যারা পরে পরীক্ষা দিলেন, তাঁরা বাড়তি সুবিধা পেলেন৷ তাতে তাঁদের প্রাপ্ত নম্বর বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকলই৷ আর এই পরীক্ষার বৈধতা কি, তা নিয়েও কিন্ত্ত আমাদের সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে৷' কেউ আইনের দ্বারস্থ হলে এই পরীক্ষা বাতিল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে বলেও, অনেকে মনে করছেন৷ যদিও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের পক্ষে এই নিয়ে কেউ কোনও মন্তব্য করতে চাননি৷ 

    টেট যাত্রা
    পৌঁছনোর হয়রানি সঙ্গী করে পরীক্ষায় ৪৫ লক্ষ
     যেন টেট পরীক্ষার মহাকুম্ভ। 
    সাড়ে ছ'হাজার পরীক্ষাকেন্দ্র। ৪৫ লক্ষ পরীক্ষার্থী। পরিণাম যা হওয়ার, তা-ই হল। বাসে-ট্রেনে বাদুড়ঝোলা ভিড়। পরীক্ষাকেন্দ্রের ঠিকানা নিয়ে বিভ্রান্তি। সময়ে পৌঁছতে না পারায় অবরোধ ও বিক্ষোভ। ট্রেন থেকে পড়ে গিয়ে জখম।
    রবিবারের টেট পরীক্ষা মোটের উপরে নির্বিঘ্নে হয়েছে বলে দাবি করেও তাই দ্বিতীয় দফায় পরীক্ষা দেওয়ার একটা সুযোগ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে রাজ্য। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, "অনিবার্য কারণে যাঁরা পরীক্ষা দিতে পারেননি, তাঁরা যাতে পরে পরীক্ষা দিতে পারেন, সে জন্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে আইনি পরামর্শ নিতে বলেছি।" 
    প্রাথমিক স্কুলে ৩৫ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগের পরীক্ষায় এ দিন প্রায় ৪৫ লক্ষ পরীক্ষার্থী ছিলেন। রাজ্য জুড়ে সাড়ে ছয় হাজার কেন্দ্রে ওই পরীক্ষা হয়। সময়সীমা ছিল বেলা ১টা থেকে ২টো। বহু পরীক্ষার্থীকেই দূরের পথ পাড়ি দিতে হয়েছে। সঙ্গে ছিলেন তাঁদের আত্মীয়েরাও। একই সময়ে এত মানুষ গন্তব্যে পৌঁছনোর দৌড়ে সামিল, দুর্ভোগ তাই অপ্রত্যাশিত ছিল না। অভিযোগ, এই রাজসূয় যজ্ঞ সামলাতে পরিবহণ ব্যবস্থা যে ভাবে সাজানোর প্রয়োজন ছিল, তা দেখা যায়নি। তবে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের দাবি, পরীক্ষার আকার-আয়তনের কথা মাথায় রাখলে দুর্ভোগের পরিমাণ তত বড় নয়। 'সুষ্ঠু' ভাবে পরীক্ষা হওয়ার জন্য পরিবহণ-সহ সরকারের সব দফতরকে ধন্যবাদ জানান শিক্ষামন্ত্রী। দুর্ভোগ যা হয়েছে, তার জন্য মূলত রেলের অব্যবস্থাই দায়ী বলে রাজ্য প্রশাসনের দাবি। 
    পরীক্ষা শেষে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য অভিযোগ করেন, রেলে অব্যবস্থার জন্যই বহু পরীক্ষার্থী ঠিক সময়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে পারেননি। বিশেষত, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ট্রেন বিভ্রাট এবং মুর্শিদাবাদে লেভেল ক্রসিং আটকে থাকায় পরীক্ষার্থীরা নাকাল হন। প্ল্যাটফর্মগুলিতে তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না, অনেককেই একাধিক ট্রেন ছেড়ে দিতে হয়েছে। ভিড়ের ঠেলায় পরীক্ষার্থীরা ট্রেনে উঠতেই পারেননি বারুইপুরে। শাসন, শেওড়াফুলি, মানকুণ্ডুতে ট্রেনে উঠতে গিয়ে পড়ে আহত হন অন্তত ১০ জন পরীক্ষার্থী।
    রবিবার সকালে এ রকমই ছিল বারাসত স্টেশনের অবস্থা। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।
    কিন্তু রেলের গাফিলতির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী বলেন, "রাজ্য সরকার আমাদের কিছু বলেনি। তা সত্ত্বেও আমরা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে কাজের দিনের সময়সূচি মেনে ছুটির দিনে ট্রেন চালিয়েছি।" পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্রের পাল্টা বক্তব্য, "রাজ্য সরকার সবই জানিয়েছিল। তা সত্ত্বেও অবিন্যস্ত রেল পরিষেবার কারণে অনেকের হয়রানি হয়েছে।" রাজ্য সরকার রেলকে দুষলেওবাস পাওয়া নিয়েও কিন্তু যথেষ্ট ঝামেলায় পড়তে হয়েছে পরীক্ষার্থীদের। সম্প্রতি বিধানসভায় পরিবহণমন্ত্রী স্বীকার করে নিয়েছিলেন, এ রাজ্যে ৭০ শতাংশ বাসই বসে গিয়েছে। রবিবার সেটাই হাড়ে-হাড়ে টের পেলেন পরীক্ষার্থীরা। প্রশাসনিক আশ্বাস সত্ত্বেও বেসরকারি বাস সে ভাবে ছিল না। ছিল না যথেষ্ট সরকারি বাসও। বহু পরীক্ষার্থীকে বাসের মাথায় উঠতে দেখা গিয়েছে। ট্রেকার, অটোতে জায়গা ছিল না। তাই পরীক্ষার্থীরা উঠেছেন মালবাহী গাড়িতেও। 
    'জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেটস'-এর নেতা তপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, জেলায় জেলায় প্রায় ৩০ হাজার বেসরকারি বাস চলত। কমতে কমতে সেই সংখ্যা এখন দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৮ হাজারে। ছুটির দিনে সেই সংখ্যা কমে দাঁড়ায় প্রায় ১০ হাজারে। এ দিন পরীক্ষা আছে জেনেও বাসের সংখ্যা বেশি বাড়েনি বলেই দাবি তপনবাবুর। তবে পরিবহণমন্ত্রী দাবি করেছেন, "এ দিন সরকারি বাস অন্য দিনের থেকে দেড় গুণ বেশি চলেছে।" সরকারি নিগমের এক কর্তার কথায়, "অন্য দিন ৪৫০ বাস চলে। এ দিন পরীক্ষার আগে-পরে ৮০০ বাস চালানোর চেষ্টা করেছি। এর বেশি বাস নেই।"
    যানজটের ভোগান্তিও কম ছিল না। বহরমপুরের গির্জার মোড়ে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন পরীক্ষার্থীরা। অভিযোগ, ট্রাফিক পুলিশকে কেন্দ্রের নিরাপত্তার কাজে পাঠানোয় যানজট হয়। জাতীয় সড়কে পুলিশের গার্ড রেল ভাঙচুর করেন বিক্ষোভকারীরা। পুলিশ লাঠি উঁচিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। জেলাশাসক রাজীব কুমার বলেন, "পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল মাত্রাতিরিক্ত। এর ফলে জাতীয় সড়কে যানজট হয়। ট্রাফিক পুলিশ দিয়েও নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি।" যান্ত্রিক গোলযোগে একটি লরি দাঁড়িয়ে যাওয়ায় পশ্চিম মেদিনীপুরের কাঁসাই নদীর মোহনপুর সেতুর যানজটেও আটকেছেন অনেকে। ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে সকাল ন'টায় যে যানজটের শুরু, তা কাটে দুপুর দু'টোয়। পরীক্ষার সময় তখন শেষ হয়ে যাওয়ায় কিছু পরীক্ষার্থী জেলার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ অফিসে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের পরে মেদিনীপুর কলেজে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। যদিও সকলে সেই সুযোগ পাননি। যানজট ছিল পানাগড়েও।
    এত কাণ্ড করে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছেও হয়রানির শেষ নেই। পরীক্ষাকেন্দ্রে গিয়ে বহু পরীক্ষার্থী জানতে পারেন, ঠিকানা ভুল। তাঁদের অন্য কেন্দ্রে যেতে হবে। যেমন, বাদুড়িয়ার চণ্ডীপুরের বাসিন্দা শিউলি হালদার সকাল ন'টায় বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন পরীক্ষা দিতে। ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, তাঁর পরীক্ষাকেন্দ্র ছিল গোপালনগর থানার ঘোলা গার্লস হাইস্কুল। কিন্তু গোপালনগরে গিয়ে তিনি জানতে পারেন, সেখানে ওই নামের কোনও স্কুল নেই। স্কুলটি আসলে ব্যারাকপুর মহকুমার ঘোলায়। তখন ঘড়িতে একটা বেজে গিয়েছে। আর তাঁর পরীক্ষা দেওয়া হল না। একই পরিস্থিতির শিকার বসিরহাট-২ ব্লকের চাঁপাপুকুর এলাকার আবু বক্কর সিদ্দিকি-সহ অনেকেই। আবু বক্করের ক্ষোভ, "পরীক্ষার জন্য দীর্ঘদিন ধরে প্রস্তুতি নিয়েছি। কিন্তু পর্ষদের গাফিলতিতে সব শেষ হয়ে গেল।" 
    পর্ষদ প্রথমে জানিয়েছিল, বেলা ১টা ৫৫ মিনিটের মধ্যেও যাঁরা কেন্দ্রে ঢুকবেন, তাঁদের পরীক্ষা দিতে দেওয়া হবে। দেরিতে যাঁরা ঢুকেছেন, তাঁদের আলাদা ঘরে বসিয়ে পরীক্ষা নেওয়া হবে। কিন্তু পর্ষদের এই ঘোষণা সময়মতো সব কেন্দ্রে পৌঁছয়নি। ট্রেনে দেরির কারণে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সপ্তগ্রাম হাইস্কুলে পৌঁছলেও স্কুল সমিতির কর্তারা তাঁদের পরীক্ষা দিতে দেননি বলে অভিযোগ পরীক্ষার্থীদের। 
    শিক্ষামন্ত্রী অবশ্য বলেছেন, অনিবার্য কারণে পরীক্ষায় বসতে পারেননি যাঁরা, তাঁরা পরে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পাবেন। পর্ষদ সভাপতিও জানিয়েছেন, চেষ্টা সত্ত্বেও যাঁরা সঙ্গত কারণে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছতে পারেননি, তাঁদের জন্য ফের পরীক্ষা নেওয়ার কথা বিবেচনা করা হচ্ছে। কিন্তু কারা সেই সুযোগ পাবেন, সেটা পুরো স্পষ্ট নয়। পশ্চিম মেদিনীপুরে যানজট, বারুইপুর থেকে দক্ষিণ-উত্তর ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে রেল চলাচলে বিভ্রাট এবং বহরমপুরে দীর্ঘক্ষণ রেলের লেভেল ক্রসিং আটকে থাকা পরীক্ষার্থীদের জন্যই ফের পরীক্ষার চিন্তা বলে জানান মানিকবাবু। অন্যান্য কারণে পরীক্ষা দিতে পারেননি যাঁরা, তাঁদের কী হবে? সভাপতি বলেন, "জেলাশাসকদের রিপোর্ট পেলে বিষয়টি দেখা হবে।" প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য এবং এসইউসি-র রাজ্য সম্পাদক সৌমেন বসু দাবি তুলেছেন, যাঁরা পরীক্ষা দিতে পারেননি, তাঁদের সবার জন্যই ফের পরীক্ষা নেওয়া হোক। আজ, সোমবার সব জেলার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের দফতরে বিক্ষোভ দেখাবে ডিওয়াইএফআই।
    http://www.anandabazar.com/1raj2.html

    ট্রেনে উঠতে না-পেরে অবরোধ
    পরীক্ষার্থীদের দুর্দশায় রাজ্য-রেল তরজা
    রীক্ষার্থী ৪৫ লক্ষ। তাঁদের সঙ্গী কমবেশি ৩০ লক্ষ অভিভাবক। রবিবার পথে নামা এই জনপ্লাবনে শেষ পর্যন্ত বহু পরীক্ষার্থীই যে নাকাল হলেন এবং রেললাইন অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন, তার জন্য পরস্পরের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে রাজ্য সরকার ও রেল। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষার শেষে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য অভিযোগ করেন, রেলের অব্যবস্থার জন্যই বহু পরীক্ষার্থী ঠিক সময়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছতে পারেননি। পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র বলেন, "রাজ্য সরকার আগেভাগে রেলকে সবই জানিয়েছিল। তা সত্ত্বেও অবিন্যস্ত রেল পরিষেবার কারণে অনেকের হয়রানি হয়েছে।" অভিযোগ মানতে চাননি রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী। তিনি বলেন, "রাজ্য সরকার আমাদের কিছুই বলেনি। তা সত্ত্বেও স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আমরা ছুটির দিনেও কাজের দিনের সময়সূচি মেনে ট্রেন চালিয়েছি। ট্রেনের যাতে দেরি না-হয়, সেই জন্য মেরামতিও বন্ধ রাখা হয়েছিল।"তা হলে পরীক্ষা দিতে বেরিয়ে প্রার্থীদের হয়রানি কেন?
    রেল প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্য, বিপুল সংখ্যক পরীক্ষার্থী জড়ো হওয়ায় রাস্তায়, লেভেল ক্রসিংয়ে যানজট হয়েছে। রাস্তার যানজট নিয়ন্ত্রণ করা রেলের কাজ নয়। তিনি বলেন, "ট্রেনেও প্রচুর পরীক্ষার্থী ছিলেন। লেভেল ক্রসিংয়ের গেট খোলা রেখে তো ট্রেন চালানো সম্ভব নয়। দুর্ঘটনা ঘটলে রাজ্য কি তার দায় নেবে?"
    বড়সড় দুর্ঘটনা না-ঘটলেও শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার বারুইপুর ও শাসন স্টেশনে তিন তরুণী-সহ সাত পরীক্ষার্থী ভিড়ে ঠাসা ট্রেনে ওঠার সময় পড়ে গিয়ে আহত হন। তাঁদের মধ্যে দু'জনকে বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে স্থানান্তরিত করা হয় এম আর বাঙুর হাসপাতালে। হাওড়া-তারকেশ্বর লাইনের শেওড়াফুলিতে এবং মেন লাইনের মানকুণ্ডুতে আরও দু'জন পরীক্ষার্থী ট্রেনে ওঠার সময় পড়ে গিয়ে অল্পবিস্তর জখম হন।
    দিনের সব চেয়ে বড় গোলমালটা হয়েছে বারুইপুরেই। ট্রেনে উঠতে না-পারা এবং পড়ে গিয়ে পরীক্ষার্থীদের আহত হওয়ার ঘটনার জেরে বেলা ১১টা নাগাদ বারুইপুর স্টেশনে রেল অবরোধ শুরু হয়। জিআরপি অবরোধ তুলতে গেলে পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে তাদের ধস্তাধস্তি বেধে যায়। উত্তেজিত জনতা বারুইপুর জিআরপি থানা ও স্টেশন ম্যানেজারের অফিস ভাঙচুর করে। হাজারখানেক পরীক্ষার্থী বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। ইটপাটকেল ছোড়া হয়। পরিস্থিতি সামলাতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার প্রবীণ ত্রিপাঠী বাহিনী নিয়ে সাড়ে ১২টা নাগাদ ঘটনাস্থলে পৌঁছন। পুলিশ পরীক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করে বলেও অভিযোগ। বেলা দেড়টা নাগাদ অবরোধ ওঠে বলে পুলিশের দাবি।
    শুধু বারুইপুর নয়, ভিড়ে ঠাসা ট্রেনে উঠতে না-পারা পরীক্ষার্থীদের দিশাহারা দশা দেখা গিয়েছে শিয়ালদহ উত্তর, দক্ষিণ ও মেন শাখার প্রায় প্রতিটি স্টেশনেই। লোকাল ট্রেন স্টেশনে ঢুকছে ঠিকই। কিন্তু কোনও কামরাতেই তিলধারণের জায়গা ছিল না। দরজায় বাদুড়ঝোলা ভিড়। ট্রেন প্ল্যাটফর্মে ঢুকতেই ঝাঁপিয়ে পড়ে আরও কয়েক হাজারের স্রোত। দু'-এক জন ঠেলেঠুলে উঠলেও বেশির ভাগই রয়ে যান স্টেশনে। কেউ কেউ চলন্ত ট্রেনেই ওঠার চেষ্টা করেন। সতর্ক করার জন্য গতি কমিয়ে হর্ন দিতে থাকেন গার্ড। এই ছবি দেখা গিয়েছে সকাল থেকেই।
    ট্রেনে অতিরিক্ত ভিড় ও দুর্ঘটনার প্রতিবাদে বেলা ১১টা থেকে রেল অবরোধ শুরু হয় বিভিন্ন শাখায়। শিয়ালদহ দক্ষিণের লক্ষ্মীকান্তপুর-বারুইপুর, বনগাঁ শাখার বারাসত, হাবরা ও বসিরহাট শাখার সন্ডালিয়া স্টেশনে ট্রেন দাঁড়িয়ে পড়ে। ফলে ওই সব শাখায় অনেকেই সময়মতো পরীক্ষার হলে পৌঁছতে পারেননি।
    পরীক্ষার্থীর ভিড় তো ছিলই। ভিড় বাড়ে তাঁদের অনেকের সঙ্গে থাকা অভিভাবকদের জন্যও। রেল ও পুলিশকর্তারা বলছেন, ৪৫ লক্ষ পরীক্ষার্থীর সঙ্গে ৩০ লক্ষ অভিভাবক রাস্তায় নেমেছিলেন। সব মিলিয়ে সংখ্যাটা দাঁড়ায় প্রায় ৭৫ লক্ষ। এক রেলকর্তা বলেন, "এ দিনের ভিড় ছাপিয়ে গিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার জনসংখ্যাকেও!" আর সেই জনপ্লাবনেই বেধেছে গোলমাল। সেই প্লাবনে ভেসে যায় সড়ক ও রেলপথ।
    জট পাকাল কী ভাবে?
    মুর্শিদাবাদ পুলিশ সূত্রের খবর, ওই জেলার বেশির ভাগ পরীক্ষার্থীরই ১০০-১২০ কিলোমিটার দূরে আসন পড়েছিল। পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছনোর জন্য অনেকে সকাল ৮টা থেকেই গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। ফলে অনেক রাস্তায় সাতসকালেই যানজট শুরু হয়। যানজট হয় অন্তত ছ'টি লেভেল ক্রসিংয়েও। আটকে যায় বহু ট্রেন। ছুটির দিন হওয়া সত্ত্বেও শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষার জন্য পূর্ব রেল আগেই জানিয়েছিল, রবিবার সব লোকাল ট্রেন চালানো হবে। কিন্তু সকাল সাড়ে ৯টা থেকেই শহরতলির স্টেশনগুলিতে মানুষের ঢল নামে। এক সময় পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে, মাঝপথের কোনও স্টেশনে প্রায় কেউই আর ট্রেনেই উঠতে পারনেনি। ধৈর্য হারিয়ে বিক্ষোভে নেমে পড়েন পরীক্ষার্থীরা। তাঁদের অভিযোগ, রেল-কর্তৃপক্ষ বেশি ট্রেন চালাবেন বলে আশ্বাস দিয়েও চালাননি।
    রেল অবশ্য জানিয়েছে, অন্যান্য দিনের মতো এ দিনও সব ট্রেন চালানো হয়েছে। কিন্তু একটি নির্দিষ্ট সময়ে স্টেশনে স্টেশনে এত বেশি সংখ্যক পরীক্ষার্থী ভিড় জমিয়েছিলেন যে, একটি ট্রেনে অত লোকের উঠতে পারার কথাই নয়। রেল সূত্রে বলা হয়েছে, একটি ট্রেনে দেড় থেকে দু'হাজার মানুষ যেতে পারেন। কিন্তু এ দিন তিন-চার হাজার পর্যন্ত পরীক্ষার্থী ট্রেনে ওঠার জন্য প্ল্যাটফর্মে হাজির হয়ে যাচ্ছিলেন। এবং কেউই অপেক্ষা করতে রাজি নন। কিন্তু একটি ট্রেনে একসঙ্গে এত মানুষ যাবেন কী ভাবে?
    রেলের দাবি, এ দিন বারুইপুরে অবরোধের জন্য ৩৭টি লোকাল দেরিতে চললেও পরিস্থিতি সামাল দিতে ৩৬টি বিশেষ ট্রেনও চালানো হয়েছে। বারাসত লাইনে চালানো হয়েছে ১০টি বিশেষ ট্রেন। একটিও বাতিল করা হয়নি। ট্রেন চলাচলের জন্য যাঁদের দরকার, সেই সব কর্মী-অফিসারই নির্দিষ্ট স্টেশনে উপস্থিত ছিলেন বলেও জানায় রেল।
    http://www.anandabazar.com/1raj3.html

    শিক্ষার অধিকার আইন
    শেষ হল শর্তপূরণের সময়সীমা, এখনও বেহাল দশা স্কুলের
    শ্চিমবঙ্গের অন্তত তিন শতাংশ শিশু স্কুলে নামই লেখায়নি। পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই প্রায় ৩০ শতাংশ স্কুলে। ১০টির মধ্যে ৬টি মেয়েদের শৌচাগারই ব্যবহারযোগ্য নয়। শিক্ষা পরিকাঠামোর এমন হাল নিয়েই শিক্ষার অধিকার আইনের শর্ত পূরণ করার সময়সীমা পেরোল রাজ্য। ২০০৯ সালে পাশ-হওয়া আইনের ১৯ নম্বর ধারায় বলা হয়েছিল, কোনও স্কুলে যদি আইন-নির্দিষ্ট পরিকাঠামো না থাকে, তা হলে তিন বছরের মধ্যে তা সম্পূর্ণ করতে হবে। সেই সময়সীমা শেষ হল ৩১ মার্চ। কিন্তু কতটা প্রস্তুত ভারতের রাজ্যগুলি? ৩১ মার্চ প্রকাশিত একটি রিপোর্টে 'প্রথম' নামে একটি বেসরকারি সংস্থা দেখাচ্ছে, শিক্ষার অধিকার আইনের আবশ্যিক শর্তগুলি পূরণ করতে পারেনি পশ্চিমবঙ্গ-সহ নানা রাজ্য। তাদের সমীক্ষা, অ্যানুয়াল স্ট্যাটাস এডুকেশন রিপোর্টে (আসার) দেখা যাচ্ছে, সবার চাইতে পিছিয়ে-পড়া রাজ্যের মধ্যে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। গত বছরের শেষ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা যাচ্ছে, আইন-নির্দিষ্ট ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত রয়েছে মাত্র ৩৩ শতাংশ স্কুলে। এ বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের স্থান ১৭টি রাজ্যের নীচে।শিক্ষার অধিকার আইনের কেন্দ্রীয় ফোরামের সদস্য বিনোদ রায়নার বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গেই সর্বাধিক অ-প্রশিক্ষিত শিক্ষক রয়েছেন। তাঁর মতে, আইনের শর্ত বলবৎ হলে পশ্চিমবঙ্গ সব চাইতে বেশি সমস্যায় পড়বে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ নিয়ে। তাঁর কথায়, "৩১ মার্চের পর পরিকাঠামোর ঘাটতিগুলি নিয়ে আদালতে কেউ অভিযোগ করলে সমস্যায় পড়বে রাজ্যর শিক্ষা দফতর।" এ বছর জানুয়ারির শেষে প্রকাশিত হয়েছে সর্বশিক্ষা মিশন দফতরের 'জয়েন্ট রিভিউ মিশন'-এর ১৫তম রিপোর্ট। তার তথ্য অনুযায়ী, এ রাজ্যে উচ্চপ্রাথমিক স্কুল এখনও প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। এ বিষয়ে ভারতে সব চাইতে পিছিয়ে পশ্চিমবঙ্গ। অধের্কেরও বেশি প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকের সংখ্যায় ঘাটতি রয়ে গিয়েছে। প্রতি তিনটি স্কুলের একটিতে নেই প্রয়োজনীয় শ্রেণিকক্ষ। 
    সমস্যার বহর কার্যত স্বীকারই করছে রাজ্যের সর্বশিক্ষা অভিযান দফতর। দফতরের এক আধিকারিক জানান, এখনও ছ'হাজারেরও বেশি উচ্চ প্রাথমিক স্কুল তৈরি করা বাকি রয়েছে। তাই প্রাথমিক স্কুলগুলিতেই উচ্চ প্রাথমিকের ক্লাস শুরু করা হবে। নিয়োগ করা যাচ্ছে না শিক্ষকও, তাই অতিথি শিক্ষকদের দিয়ে পড়ানো হবে সেখানে। দফতরের দাবি, স্কুলের বাড়ি, শৌচাগার, শ্রেণিকক্ষ তৈরির কাজ, আর পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ, এই দুই কাজই ২০১৫-র মধ্যে শেষ হবে। পঞ্চায়েত দফতরের পরিচালিত শিক্ষা কেন্দ্রগুলিরও দশা তথৈবচ। এগুলিতে দরিদ্র পড়ুয়াই বেশি। প্রায় সাড়ে তেরশো শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের নিজস্ব ভবন নেই। ৫৭ মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্রের (গড় ছাত্র সংখ্যা ২০০) নিজস্ব ভবন দরকার, বলছে রিভিউ রিপোর্ট।
    শিক্ষার পরিকাঠামোর ত্রুটির ফলে ছাত্রছাত্রীদের কী দশা, তা ধরা পড়েছে রিভিউ মিশনের 'ফিল্ড ভিজিট'-এও। সদস্যরা গ্রামে গিয়ে দেখেছেন, এক একটি উচ্চ প্রাথমিকের শ্রেণিকক্ষে বসেছে ৯০ জন পড়ুয়া। স্থানীয় প্রাথমিক স্কুলগুলি থেকে কত ছাত্র উচ্চ প্রাথমিকে আসতে পারে, ধারণা নেই শিক্ষকদের। প্রাথমিক স্কুলগুলির ছাত্র সংখ্যা বিষয়ে সার্কেল স্তরে তথ্য সংগ্রহ করা ও প্রতিটি উচ্চ প্রাথমিকে তা পৌঁছে দেওয়ার উপর জোর দিয়েছে রিপোর্ট।

    বিক্ষোভে ফব
    সকলের জন্য খাদ্য, বিনা সুদে কৃষিঋণ, ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পকে ২০০ দিনের কাজের প্রকল্পে রূপান্তরিত করা এবং তাতে দৈনিক ২০০ টাকা মজুরি-সহ ছ'দফা দাবিতে আন্দোলনে নামছে ফরওয়ার্ড ব্লক। শনি এবং রবিবার দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে ওই সিদ্ধান্ত হয়েছে। ফব-র সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত বিশ্বাস বলেন, "মে মাসের প্রথম ১৫ দিনের মধ্যে ব্লক স্তরে ধর্না ও পিকেটিং করে দাবি সরকারের কানে ঢোকানোর চেষ্টা হবে।"
    http://www.anandabazar.com/1raj4.html

    প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের দ্বিতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা বিশ বাঁও জলে

    নিজস্ব প্রতিনিধি : কলকাতা, ১লা এপ্রিল— প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের দ্বিতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা এখনও অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে। কবে এই পরীক্ষা হবে তা এখনও জানা যাচ্ছে না। কতজনকে নিয়ে দ্বিতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা হবে সেই তথ্য সম্পর্কেও অন্ধকারে রয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। এদিকে, দ্বিতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা নিয়ে আইনী জটিলতাও দেখা দিয়েছে। ফলে ঘোর অনিশ্চয়তার গহ্বরে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা।

    প্রাথমিক স্কুলে ৩৫হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগের জন্য রবিবার রাজ্যজুড়ে 'টেট' বা টিচার্স এলিজিবিলিটি টেস্ট পরীক্ষায় লক্ষাধিক পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে পারেননি। রাজ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত যানবাহনের ব্যবস্থা না করার জন্য এই পরীক্ষার্থীরা সঠিক সময় পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছাতে পারেননি। ফলে প্রহসনে পরিণত হয়েছে এই পরীক্ষা। বিষয়টি 'সাংঘাতিক' বলে মন্তব্য করেছেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। এদিন তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, 'যেভাবে অকল্পনীয় কষ্ট করে পরীক্ষার্থীদের বাসে ট্রেনে ঝুলতে ঝুলতে পরীক্ষা কেন্দ্রে যেতে হয়েছে তা সাংঘাতিক। মহিলাদেরও বাসে ট্রেনে ঝুলতে হয়েছে, পরিস্থিতি যা হয়েছিল তাতে অনেক বড় দুর্ঘটনাও ঘটতে পারতো। অব্যবস্থার কারণে বহু পরীক্ষার্থী শেষ পর্যন্ত পরীক্ষা দিতেও পারেননি।' বিমান বসু বলেছেন, 'একই প্রশ্নে বারবার পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। দুপুর দুটো, তিনটে চারটের সময় পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে একই প্রশ্নের ভিত্তিতে। তাহলে আর পরীক্ষার গুরুত্ব কোথায় রইলো! প্রশ্ন তো ফাঁস হয়ে গেছে।' তবে গতকাল সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা শেষ হওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বলে এদিন মহাকরণে জানান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।

    পূর্ব নির্ধারিত সূচী অনুযায়ী রবিবার দুপুর ১টা থেকে ২টো পর্যন্ত পরীক্ষা নেওয়ার কথা ছিল। প্রশাসনের ব্যর্থতার কারণে আরো এক দফা পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যাঁরা ২টো বাজতে ৫মিনিট আগে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছেছে তাঁদের জন্য। সরকারীভাবে দু'দফায় পরীক্ষা নেওয়া হলেও বহু পরীক্ষা কেন্দ্রে আরো এক দফায় পরীক্ষা নেওয়ার খবর পাওয়া গেছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে ৩দফায় পরীক্ষা নেওয়ার কথা জানা গেছে। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা করা যায়নি। এরপরও মূলত চারটি জেলায় বেশ কয়েকজন পরীক্ষা দিতে পারেননি বলে রবিবারই পর্ষদের পক্ষ থেকে তাঁদের পরীক্ষা নেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। আর এতেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে নানা মহলে। সরকারীভাবে 'কয়েকজন' বলা হলেও নির্দিষ্ট করে সেই সংখ্যাটি জানানো হয়নি। এদিনও পর্ষদ বা শিক্ষা দপ্তর সেই তথ্য জানাতে পারেনি। সরকারী মতে 'কয়েকজন' বলা হলেও বাস্তবে লক্ষাধিক পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে পারেননি। 

    পরীক্ষার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে পর্ষদের এক আধিকারিকের বক্তব্য, 'যাঁরা পরীক্ষা না দিতে পারেননি সেই প্রার্থীদের বাছাইয়ের প্রভূত সমস্যা রয়েছে। সরকারীভাবে চারটি জেলার নির্দিষ্ট কয়েকটি এলাকার ছেলেমেয়েরা পরীক্ষা দিতে পারেননি বলে জানা গেছে। ঐ এলাকার ছেলেমেয়েদের চিহ্নিত করা কিছু হলেও সম্ভব ছিল যদি পরীক্ষার আগেই পরীক্ষার্থীদের অ্যাডমিট কার্ডের নমুনা পর্ষদের হাতে থাকতো। যেমন মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক অথবা জয়েন্ট পরীক্ষার্থীদের অ্যাডমিট কার্ডের নমুনা পরীক্ষা আগেই সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির কাছে থাকে। কোনো কারণে নির্দিষ্ট জায়গার পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে না পারলে পরে অ্যাডমিট কার্ডের নমুনা যাচাই করে পরীক্ষার্থীদের বাছাই করতে সুবিধা হয়। কিন্তু এই পরীক্ষায় সেই সুযোগ নেই। কারণ, এই পরীক্ষার ফরম জমা দেওয়ার সময়ই আসল ও তার প্রত্যয়িত নকল— এই দুই ধরনের অ্যাডমিট কার্ড পরীক্ষার্থীদের দিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষার পর প্রার্থীদের আসল অ্যাডমিট কার্ড হাতে পেয়েছে পর্ষদ। পরীক্ষার আগে পরীক্ষার্থীর কোনো সচিত্র পরিচয়পত্র (অ্যাডমিট কার্ড) যদি পর্ষদের হাতে থাকতো, তাহলে ঐ অ্যাডমিট কার্ডের নমুনা দেখে সংশ্লিষ্ট জায়গার পরীক্ষার্থীদের বাছাই করতে সুবিধা হতো। কিন্তু যেহেতু কোনো নমুনা নেই, তাই সকলেই এসে বলতেই পারে যে— আমি পরীক্ষা দিতে পারেনি, আমার পরীক্ষা নেওয়া হোক। আবেদনকারীদের এই দাবিকে চ্যালেঞ্জ জানানোর কোনো তথ্যই হাতে নেই পর্ষদের।'

    এত গেল পরীক্ষার্থী বাছাইয়ের সমস্যা। এর থেকে আরো বড় সমস্যা দেখা যাচ্ছে, পরীক্ষা যাচাইয়ের পদ্ধতি নিয়ে। বিষয়টি নিয়ে আইনী জটিলতা দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন আইনজীবীরা। তাঁদের বক্তব্য, মনে রাখতে হবে এটি চাকরি সংক্রান্ত প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা। সাধারণ পরীক্ষা নয়। সরকারীভাবে ইতোমধ্যে দুই দফায় পরীক্ষা হয়ে গেছে একই প্রশ্নপত্র এবং দুটি ভিন্ন সময়ের মধ্যে। বেসরকারীভাবে আরো এক দফার পরীক্ষা হয়েছে কিছু জায়গায় এবং একই প্রশ্নপত্রে। ফলে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়নি, এটা জোরগলায় বলা যাবে না। ফাঁস হওয়ার বহু সম্ভাবনা রয়েছে। এর উপর যদি আরো একবার পরীক্ষা নেওয়া হয় এবং সেক্ষেত্রে যদি ভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়া হয় তাহলে দু'ধরনের প্রশ্নপত্রে উত্তর দেওয়া প্রার্থীদের নির্বাচন করা হবে কী পদ্ধতিতে? এদিকে চারটি বামপন্থী শিক্ষক সংগঠন এদিন এক প্রেস বিবৃতিতে দাবি করেছে, সকল পরীক্ষার্থী যাতে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পান সেই ব্যবস্থা করতে হবে।

    http://ganashakti.com/bengali/breaking_news_details.php?newsid=1131



    রাজ্যজুড়ে চরম অব্যবস্থার নজির গড়লো প্রশাসন 
    নাজেহাল হাজার হাজার 'টেট' পরীক্ষার্থী

    নিজস্ব প্রতিনিধি

    কলকাতা, ৩১শে মার্চ — আগাম আশঙ্কা ছিলই। রবিবার সকাল থেকে সেই আশঙ্কাই আতঙ্কে পরিণত হলো। দিনের শেষে চরম অব্যবস্থা, প্রশাসনিক অপদার্থতার নজির গড়ে ফেললো পরীক্ষার্থীর সংখ্যার বিচারে এরাজ্যের বুকে সবচেয়ে বড়ো পরীক্ষাটি।

    তবে পরীক্ষার্থীদের অসুবিধা, নাজেহাল পরিস্থিতিকে উপেক্ষা করেই পর্ষদের তরফে জানানো হয়েছে, 'পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবেই মিটেছে'। এমনকি রাজ্য সরকারকে আড়াল করে 'বিচ্ছিন্ন' কিছু ঘটনা, অব্যবস্থার জন্য রেল দপ্তরকেই কাঠগড়ায় তুলেছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। যদিও পর্ষদের দাবি এদিন দিনভরই প্রশ্নের মুখে পড়েছে। শুধুমাত্র পরীক্ষাকেন্দ্রের ঠিকানা খুঁজে বের করতেই চরম নাজেহাল অবস্থার শিকার হতে হয়েছে পরীক্ষার্থীদের। যার দায় সম্পূর্ণভাবেই বর্তাচ্ছে পর্ষদের ওপর। কেননা ওয়েবসাইটে শুধুমাত্র পরীক্ষাকেন্দ্র ও থানার নাম উল্লেখ করেই দায়িত্ব সেরেছিল পর্ষদ। পাশাপাশি প্রায় ৪৫লক্ষ পরীক্ষার্থী এদিন রাস্তায়। ফলে সরকারী পরিবহন বেশি সংখ্যায় নামানোর প্রয়োজন থাকলেও অপ্রতুল সরকারী বাস সমস্যাকে চরম আকার দিয়েছে। বাসের ছাদে, ট্রেকারে ঝুলে, ট্রেনের হাতল ধরে ভয়ানক ঝুঁকি নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে হয়েছে পরীক্ষার্থীদের।

    কোথাও একটা পাঁচ মিনিটে পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকেও পরীক্ষা দিতে পারেননি পরীক্ষার্থীরা, আবার কোথাও বেলা তিনটের পরেও দেওয়া হয়েছে প্রশ্নপত্র। পরীক্ষার সময় বাড়ানো নিয়ে প্রশাসনের একেক সময় একেক রকম এস এম এস-বার্তায় বিভ্রান্তি আরো বাড়ে। চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে গিয়ে মারাত্মক জখম হওয়া, ভিড়ের চাপে অসুস্থ হয়ে পড়া, সঠিক সময়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে না পারায় পরীক্ষায় বসতে না পারা, এমনকি একাধিক পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছয়নি প্রশ্নপত্র, প্রতিবাদ করতে গিয়ে পুলিসের লাঠি খেয়ে বাড়ি ফিরতে হয়েছে পরীক্ষার্থীদের, —দিনভর অসংখ্য এরকম বিভ্রাটের কোলাজই লক্ষ্য করা গেছে গোসাবা থেকে বহরমপুর, মেদিনীপুর থেকে মালদহ। 

    পর্ষদের বক্তব্য, দুই ২৪পরগনা, মুর্শিদাবাদ ও মেদিনীপুরেই একমাত্র বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু দুপুর থেকেই রাজ্যের সমস্ত জেলা থেকেই আসতে শুরু করে একের পর এক অব্যবস্থা ও বিভ্রাটের খবর। রবিবার সকাল থেকেই বহরমপুরসহ জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ৩৪নম্বর জাতীয় সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। এদিন বেলা ন'টার পর থেকে জেলা সদর শহর বহরমপুরের সাথে জেলার অন্য প্রান্তের সড়ক যোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। গাড়িতে এই সময় বহরমপুরে ভাগীরথীর উপর ব্রিজ পেরোতে দু'-আড়াই ঘণ্টা পেরিয়ে যায়। যত সময় বাড়তে থাকে এই যানজট আরো দীর্ঘ হতে থাকে। ফলে বহরমপুর শহর থেকে পরীক্ষার্থীরা জেলার অন্যপ্রান্তে যেতে পারে না। আবার বাইরে থেকে বহরমপুর শহর বা শহরতলিতে পরীক্ষার্থীরা আসতে পারেনি। দেখা মেলেনি পুলিস প্রশাসনেরও। কোন দিকে কোন উপায় না দেখে বেলা ১২টা নাগাদ ক্ষুব্ধ পরীক্ষার্থীরা প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার প্রতিবাদে ৩৪নম্বর জাতীয় সড়কের উপর বহরমপুর গির্জার মোড়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করলেন। এরপর টনক নড়ে পুলিস প্রশাসনের। হঠাৎই অতিরিক্ত পুলিস সুপারের নেতৃত্বে র‌্যাফসহ পুলিসের একটি দল গিয়ে পরীক্ষার্থীদের উপর লাঠিচার্জ করে। এরপর পুলিস যানজট কাটাতে উদ্যোগী হয়। আধ ঘণ্টার মধ্যে পুলিস যানজট কাটাতে কিছুটা হলেও সমর্থ হয়। কিন্তু ততক্ষণে বহু পরীক্ষার্থীর নির্দিষ্ট পরীক্ষাকেন্দ্রে যাবার সময় পেরিয়ে গেছে। এরপর ফরাক্কা, ধুলিয়ান, সালার, খড়গ্রাম ,জলঙ্গী, ডোমকল, নওদা, রেজিনগরসহ বিভিন্ন এলাকার বহু পরীক্ষার্থী সময়মতো পরীক্ষাকেন্দ্রে না পৌঁছতে পেরে বাড়ি ফিরে যেতে বাধ্য হলেন। একাংশের যুবক-যুবতী পরীক্ষা দিতে না পেরে বহরমপুর পঞ্চাননতলায় মুর্শিদাবাদ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের অফিসে গিয়ে ভাঙচুর চালান। তাঁরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। আবার বহরমপুর থানার ভাকুড়ি উচ্চবিদ্যালয়ে চারশোজন পরীক্ষার্থীর সেন্টার পড়লেও একজনও পরীক্ষার্থী আসেননি। ফলে এই কেন্দ্রে প্রশ্নপত্র খোলাই হয়নি। এই নজিরবিহীন ঘটনা সরেজমিনে তদন্ত করতে আসেন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট অমিতাভ ভট্টাচার্য। কেন একজন পরীক্ষার্থীও পরীক্ষা দিতে এলেন না, তার কুলকিনারা করতে পারেননি তিনিও। পরীক্ষার্থীদের ওপর লাঠিপেটার ঘটনা ঘটেছে জঙ্গীপুরের ফতুল্লাপুর মনি হাইস্কুলেও। ধুলিয়ানের কয়েকটি স্কুলে আবার পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে স্কুল কর্তৃপক্ষের বচসার ঘটনাও ঘটেছে।

    এদিকে দক্ষিণ ২৪পরগনা জেলার বারুইপুরে শাসন রোড রেলস্টেশনের কাছে ভিড়ের চাপে ট্রেন থেকে পড়ে গিয়ে মারাত্মক জখম হয়েছেন রীতা দাস নামে একজন পরীক্ষার্থী। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে প্রথমে বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে, পরে সেখান থেকে কলকাতায় চিত্তরঞ্জন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আরো বেশ কয়েকজন পরীক্ষার্থীর জখম হওয়ার খবর মিলেছে রাতে। ট্রেনে উঠতে না পেরে বহু পরীক্ষার্থী এদিন বারুইপুর স্টেশনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। বিক্ষোভকারী পরীক্ষার্থীরা স্টেশন চত্বরে ভাঙচুরও চালায়। বেলা এগারোটা থেকে দেড়টা পর্যন্ত রেল অবরোধও চলে। চাকরির জন্য পরীক্ষায় বসতে না পারা উদ্বিগ্ন পরীক্ষার্থীদের ওপর তৃণমূলীরা হামলা চালায়, এই অভিযোগও ওঠে। এমনিতেই বাড়ি থেকে পরীক্ষাকেন্দ্র বহু দূরে হওয়ায় সমস্যা বেড়েছে, এই জেলায় তা চরম আকার নিয়েছে। সকাল থেকে গোটা জেলার সড়কপথে উদ্বিগ্ন পরীক্ষার্থীদের ডিড়। নেই পর্যাপ্ত যানবাহন। ট্রেনের কামরায় ছিল না পা রাখার জায়গা। কোনমতে বাসে, ট্রেনে ঝুলে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছলেও সময় পেরিয়ে যাওয়ায় পরীক্ষার্থীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। মথুরাপুরের ঘোড়াদল হাইস্কুলে ভাঙচুর চালায় বিক্ষোভকারীরা। পরীক্ষাকেন্দ্র খুঁজে না পাওয়ায় জয়নগর-১নম্বর বি ডি ও অফিসে বিক্ষোভ দেখায় পরীক্ষার্থীরা। আবার কোথাও পরীক্ষার্থীর তুলনায় প্রশ্নপত্র কম পৌঁছনোর ঘটনাও ঘটেছে। এদিকে উস্তির কেঁশলী এম দাদিয়া স্কুলে দুপুর আড়াইটে নাগাদ পরীক্ষার্থীরা পৌঁছলে তাঁদের আর পরীক্ষা দিতে দেওয়া হয়নি। স্কুলে মোট ৩০০জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পরীক্ষা দিতে পেরেছেন ১৯৫জন।

    দক্ষিণবঙ্গে প্রায় প্রতিটি জেলাতেই অব্যবস্থার চিত্র একই। উত্তর ২৪পরগনায় বারাসত, হাসনাবাদ, বনগাঁ শাখায় ট্রেন অবরোধ হওয়ার ফলে নির্দিষ্ট সময়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে পারেননি অসংখ্য পরীক্ষার্থী। তৃণমূলী শিবির থেকে ভুল তথ্য দেওয়ায় কার্যত পরীক্ষাতেই বসতে পারলেন না নিউ বারাকপুরের প্রায় ৩৫জন পরীক্ষার্থী। ইন্টারনেটে তাঁরা জানতে পেরেছিলেন পরীক্ষাকেন্দ্র হাড়োয়ার কালীনগর হাইস্কুলে। দীর্ঘ পথ ট্রেনে, ট্রেকারে চেপে কোনমতে হাড়োয়ায় পৌঁছলে সেখানে তৃণমূলী শিবির থেকে বলা হয়, ঠিকানা ভুল আছে, স্কুলটি সন্দেশখালি-১নম্বর ব্লকে। আবার ট্রেন পালটে, বাস পালটে সন্দেশখালিতে নকালীনগর কলেজে পৌঁছলে বলা হয় এই রোল নম্বর এখানে নয়, ওটি হাড়োয়ায়! তখন ঘড়িতে পৌনে একটা! কার্যত হতাশায়, কান্নায় ভেঙে পড়লেন ৩৫জন পরীক্ষার্থী। একইরকম দৃশ্য জেলার বিভিন্ন প্রান্তে। এদিকে ভিড়ের চাপে ট্রেন থেকে শেখ সালাউদ্দিন নামে এক যুবক পড়ে যাওয়ার পরে দুপুর থেকে বারাসত স্টেশনে রেল অবরোধের ফলে গোটা জেলাতেই বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়ে। স্বরূপনগর, বাদুড়িয়া ব্লকের বিভিন্ন স্কুলে ৫০শতাংশ পরীক্ষার্থী সময়মতো না আসায় পরীক্ষা দিতেই পারেননি। দেগঙ্গাতে বাইক দুর্ঘটনায় আহত হন এক পরীক্ষার্থী।

    রবিবারে এমনিই বাস কম চলে, কিন্তু প্রশাসন এত বিপুল সংখ্যক পরীক্ষার্থীর জন্য বিকল্প কোন ব্যবস্থাই করেনি। তাই দুর্ঘটনার শিকারও হয়েছেন অনেক পরীক্ষার্থী। বর্ধমান স্টেশনে পদপিষ্ট হয়ে জখম হয়েছেন অনেকে। ট্রেন থেকে নামতে গিয়ে আহত হয়েছেন অনেক পরীক্ষার্থী। কোন বিকল্প ব্যবস্থা ছিল না এদিন। এমন ঘটনা হয়, মা ট্রেন থেকে ভিড়ে নামতে গিয়ে জখম হয়েছেন, মেয়ে আর পরীক্ষা দিতে যাননি। কোন হেল্পলাইনও খোলা হয়নি। ফলে পরীক্ষার্থীরা চরম বিভ্রান্ত হয়েছেন। বর্ধমানে যেখানে চার হাজার বাস চলে সাধারণ দিনে, সেখানে এদিন বাস চলেছে মাত্র পৌনে ৩হাজার বাস। ফলে দুর্ঘটনার শিকার হন পরীক্ষার্থীরা। বার্নপুরে বাসের ছাদে চেপে পরীক্ষাকেন্দ্রে যাবার সময় একটি ব্রিজে ধাক্কা লেগে ৪জন পরীক্ষার্থী গুরুতর জখম হয়েছেন। অন্যদিকে জামালপুরে এক পরীক্ষার্থীসহ বাবা ও তাঁদের সাহায্য করতে গিয়ে ট্রাকের ধাক্কায় আহত হয়ে ভর্তি ৩জন। মঙ্গলকোটেও ৭জন পরীক্ষার্থী আহত হয়েছেন। অন্যদিকে পরীক্ষাকেন্দ্রগুলিতে ছিল চরম বিশৃঙ্খলা। পূর্বস্থলী থেকে দুর্গাপুর বিধানচন্দ্র ইনস্টিটিউশনে টেট পরীক্ষা দিতে এসেও ৪জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় বসতে পারলেন না। অ্যাডমিট কার্ডের পিছনে ব্যাঙ্কের স্ট্যাম্প না থাকায় এদের পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হয়নি। ব‌্যাঙ্ক থেকে স্ট্যাম্প দিয়েই অ্যাডমিট কার্ড ইস্যু করার কথা। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের গাফিলতির শিকার হলেন পরীক্ষার্থীরা।

    হাওড়ার শ্যামপুরে আবার একটি পরীক্ষাকেন্দ্রে আসেননি একজন পরীক্ষার্থীও। হাওড়ার শ্যামপুর থানা এলাকার গোবিন্দপুর নিত্যলাল স্মৃতি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে রবিবার এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিস্মিত সকলেই। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ থেকে পাঠানো নির্দেশিকা অনুসারে এই বিদ্যালয়ে ৫০০জন পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা নেওয়ার কথা। সেই অনুসারে সামগ্রিক প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছিল। প্রশ্নপত্রও এসেছিল। কিন্তু পরীক্ষার সময় উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ার পরেও দেখা মেলেনি কোনও পরীক্ষার্থীর। এখানে যে-সমস্ত ফরম নম্বরের পরীক্ষার্থীদের আসন পড়েছিল, আদৌ সেই ফরমগুলি বিক্রি হয়েছিল কিনা তা এখন খতিয়ে দেখছে প্রশাসন।

    আবার মেদিনীপুর 'স্ট্র্যাটেজিক' লোকেশনে গাড়ি দুর্ঘটনার দিকে আঙুল তুলে দায়িত্ব ঝেড়ে ফেলার চেষ্টা করলেও বাস্তবে মেদিনীপুর শহরে ঢোকার মুখে মোহনপুরে সকালে একটি লরি খারাপ হওয়াতেই মূল বিপত্তি ঘটে। গোটা শহরে ছড়িয়ে পড়ে যানজট। কিন্তু অদ্ভুতভাবে সকাল পেরিয়ে বিকেল হলেও যানজট ছাড়াতে পুলিস প্রশাসনের কোন উদ্যোগ চোখে পড়েনি। ফলে ঝাড়গ্রাম, দাসপুর, চন্দ্রকোনা, শালবনী ,লালগড় বিভিন্ন ব্লকে পরীক্ষার্থীদের পৌঁছনোই আতঙ্ক হয়ে দাঁড়ায়। একই ছবি হুগলী, পুরুলিয়া, বীরভূম, নদীয়ার মতো জেলাতেও। খানাকুলের দেবাশিস হাজরা নামে এক পরীক্ষার্থী শেওড়াফুলি স্টেশনে চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখম হন। নদীয়ার বেথুয়াডিহিতে একটি স্কুলে ৮৭টি প্রশ্নপত্র কম যাওয়ায় পরীক্ষায় বসতেই পারেননি পরীক্ষার্থীরা। আবার, রানাঘাটের বিধানচন্দ্র শিক্ষায়তনে পরীক্ষা শুরুর পাঁচ মিনিট পরে পৌঁছলেও বেশ কয়েকজন পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষা দিতে দেওয়া হয়নি। যদিও পর্ষদের ঘোষণা ছিল, দুটো বাজতে পাঁচ মিনিট আগে এলেও পরীক্ষায় বসা যাবে।

    উত্তরবঙ্গের মালদহ, কোচবিহার, শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়িতেও দেখা গেছে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে এই চরম অব্যবস্থা, নাজেহাল হওয়ার ঘটনা। মূলত ওয়েবসাইটে এক ঠিকানা, অথচ পরীক্ষা কেন্দ্র আলাদা জায়গায়। আবার কোথাও থানা এলাকার মধ্যে পরীক্ষাকেন্দ্র খুঁজতেই হিমশিম খাওয়া পরীক্ষার্থীরা পৌঁছতে পারেননি কেন্দ্রে —এই দৃশ্যই সর্বত্র। মালদহ কলেজে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানের সঙ্গে রীতিমতো বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন ক্ষুব্ধ পরীক্ষার্থীরা। অসংখ্য পরীক্ষার্থী ভুল পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছনোয় পরীক্ষাই দিতে পারেননি। আবার ফাঁসিদেওয়াতে কোন মহিলা মহাবিদ্যালয় না থাকলেও নাম বিভ্রাটের কারণে পরীক্ষা দিতে পারেননি পরীক্ষার্থীরা, —এঘটনাও ঘটেছে। জলপাইগুড়ি শহরেও একাধিক স্কুলে প্রশ্নপত্র দেরিতে পৌঁছনোয় বিক্ষোভে ফেটে পড়েন পরীক্ষার্থীরা।

    ফলে পর্ষদের দাবি থেকে গেছে শুধুমাত্র সাংবাদিক বৈঠকের ভাষ্যেই। দিনভর বাস্তবতা দেখিয়েছে অন্য ছবি।

    http://ganashakti.com/bengali/news_details.php?newsid=38348

No comments:

मैं नास्तिक क्यों हूं# Necessity of Atheism#!Genetics Bharat Teertha

হে মোর চিত্ত, Prey for Humanity!

मनुस्मृति नस्ली राजकाज राजनीति में OBC Trump Card और जयभीम कामरेड

Gorkhaland again?আত্মঘাতী বাঙালি আবার বিভাজন বিপর্যয়ের মুখোমুখি!

हिंदुत्व की राजनीति का मुकाबला हिंदुत्व की राजनीति से नहीं किया जा सकता।

In conversation with Palash Biswas

Palash Biswas On Unique Identity No1.mpg

Save the Universities!

RSS might replace Gandhi with Ambedkar on currency notes!

जैसे जर्मनी में सिर्फ हिटलर को बोलने की आजादी थी,आज सिर्फ मंकी बातों की आजादी है।

#BEEFGATEঅন্ধকার বৃত্তান্তঃ হত্যার রাজনীতি

अलविदा पत्रकारिता,अब कोई प्रतिक्रिया नहीं! पलाश विश्वास

ভালোবাসার মুখ,প্রতিবাদের মুখ মন্দাক্রান্তার পাশে আছি,যে মেয়েটি আজও লিখতে পারছেঃ আমাক ধর্ষণ করবে?

Palash Biswas on BAMCEF UNIFICATION!

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS ON NEPALI SENTIMENT, GORKHALAND, KUMAON AND GARHWAL ETC.and BAMCEF UNIFICATION! Published on Mar 19, 2013 The Himalayan Voice Cambridge, Massachusetts United States of America

BAMCEF UNIFICATION CONFERENCE 7

Published on 10 Mar 2013 ALL INDIA BAMCEF UNIFICATION CONFERENCE HELD AT Dr.B. R. AMBEDKAR BHAVAN,DADAR,MUMBAI ON 2ND AND 3RD MARCH 2013. Mr.PALASH BISWAS (JOURNALIST -KOLKATA) DELIVERING HER SPEECH. http://www.youtube.com/watch?v=oLL-n6MrcoM http://youtu.be/oLL-n6MrcoM

Imminent Massive earthquake in the Himalayas

Palash Biswas on Citizenship Amendment Act

Mr. PALASH BISWAS DELIVERING SPEECH AT BAMCEF PROGRAM AT NAGPUR ON 17 & 18 SEPTEMBER 2003 Sub:- CITIZENSHIP AMENDMENT ACT 2003 http://youtu.be/zGDfsLzxTXo

Tweet Please

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS BLASTS INDIANS THAT CLAIM BUDDHA WAS BORN IN INDIA

THE HIMALAYAN TALK: INDIAN GOVERNMENT FOOD SECURITY PROGRAM RISKIER

http://youtu.be/NrcmNEjaN8c The government of India has announced food security program ahead of elections in 2014. We discussed the issue with Palash Biswas in Kolkata today. http://youtu.be/NrcmNEjaN8c Ahead of Elections, India's Cabinet Approves Food Security Program ______________________________________________________ By JIM YARDLEY http://india.blogs.nytimes.com/2013/07/04/indias-cabinet-passes-food-security-law/

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS TALKS AGAINST CASTEIST HEGEMONY IN SOUTH ASIA

THE HIMALAYAN VOICE: PALASH BISWAS DISCUSSES RAM MANDIR

Published on 10 Apr 2013 Palash Biswas spoke to us from Kolkota and shared his views on Visho Hindu Parashid's programme from tomorrow ( April 11, 2013) to build Ram Mandir in disputed Ayodhya. http://www.youtube.com/watch?v=77cZuBunAGk

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS LASHES OUT KATHMANDU INT'L 'MULVASI' CONFERENCE

अहिले भर्खर कोलकता भारतमा हामीले पलाश विश्वाससंग काठमाडौँमा आज भै रहेको अन्तर्राष्ट्रिय मूलवासी सम्मेलनको बारेमा कुराकानी गर्यौ । उहाले भन्नु भयो सो सम्मेलन 'नेपालको आदिवासी जनजातिहरुको आन्दोलनलाई कम्जोर बनाउने षडयन्त्र हो।' http://youtu.be/j8GXlmSBbbk

THE HIMALAYAN DISASTER: TRANSNATIONAL DISASTER MANAGEMENT MECHANISM A MUST

We talked with Palash Biswas, an editor for Indian Express in Kolkata today also. He urged that there must a transnational disaster management mechanism to avert such scale disaster in the Himalayas. http://youtu.be/7IzWUpRECJM

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS CRITICAL OF BAMCEF LEADERSHIP

[Palash Biswas, one of the BAMCEF leaders and editors for Indian Express spoke to us from Kolkata today and criticized BAMCEF leadership in New Delhi, which according to him, is messing up with Nepalese indigenous peoples also. He also flayed MP Jay Narayan Prasad Nishad, who recently offered a Puja in his New Delhi home for Narendra Modi's victory in 2014.]

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS CRITICIZES GOVT FOR WORLD`S BIGGEST BLACK OUT

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS CRITICIZES GOVT FOR WORLD`S BIGGEST BLACK OUT

THE HIMALAYAN TALK: PALSH BISWAS FLAYS SOUTH ASIAN GOVERNM

Palash Biswas, lashed out those 1% people in the government in New Delhi for failure of delivery and creating hosts of problems everywhere in South Asia. http://youtu.be/lD2_V7CB2Is

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS LASHES OUT KATHMANDU INT'L 'MULVASI' CONFERENCE

अहिले भर्खर कोलकता भारतमा हामीले पलाश विश्वाससंग काठमाडौँमा आज भै रहेको अन्तर्राष्ट्रिय मूलवासी सम्मेलनको बारेमा कुराकानी गर्यौ । उहाले भन्नु भयो सो सम्मेलन 'नेपालको आदिवासी जनजातिहरुको आन्दोलनलाई कम्जोर बनाउने षडयन्त्र हो।' http://youtu.be/j8GXlmSBbbk