Welcome

Website counter
website hit counter
website hit counters

Thursday, October 2, 2014

দুর্গাপূজা না নরমেধ যজ্ঞ ঃশরদিন্দু উদ্দীপন

দুর্গাপূজা না নরমেধ যজ্ঞ ঃশরদিন্দু উদ্দীপন

দুর্গাপূজা না নরমেধ যজ্ঞ

অসুরদের কাছে বেধড়ক মার খেয়ে স্বর্গ থেকে বিতাড়িত হওয়ার কাহিনী আর্যদের প্রতিটি গ্রন্থেই  ক্ষোভের সাথে উল্লেখ আছে এই স্বর্গে কি এমন মধুক্ষরা ঢালাও ব্যবস্থাপনা ছিল যে সেখান থেকে অপমানিত হয়ে বন বাদাড়ে ঘুরে বেড়ানোর গ্লানি আর্যরা কিছুতেই ভুলতে পারেনা?  এবং যার জন্যে এই ভূদেবতারা রাশিকৃত বাইয়ের পাহাড় তৈরি করে তাদের জিঘাংসাকে ব্যক্ত করেছে। ক্ষোভ উজাড়া করে দিয়েছে এবং অসুরদের নিধন করার জন্য অস্ত্র-শস্ত্র, ধর্ম-অধর্ম; অন্যায়-অপকর্ম এবং দুষ্কর্মের পথ গ্রহণ করতে কার্পণ্য করেনি!  এই আজগুবি গাঁজাখুরি মাইথলজির চরিত্রগুলিকে ঐতিহাসিক চরিত্র বলে জণমানসের মধ্যে সঞ্চালিত করে দেবার মধ্যে কী এমন গূঢ়ার্থ রয়েছে যে এগুলি না থাকলে ভূদেবতারা অপাংক্তেয় হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা বোধ করছে! এই চালিয়াতি, ধাপ্পাবাজি ও চালাকিগুলি কালে মিথ্যে বলে প্রমানিত হওয়ার ঝুঁকি থাকা সত্যেও কেন তারা পাহাড় প্রমান পুঁথি তৈরি করে করে নিজেদের চৌর্য বৃত্তি, লাম্পট্য ও নীতিহীনতা লিপিবদ্ধ করে রাখল তার মূল রহস্য জানা দরকার। এই রহস্য উদ্ঘাটন করতে পারলেই বোধহয় দেবাসুরের মৌলিক লড়াই এবং নিরন্তর দ্বন্দ্বের রহস্যভেদ করা সম্ভব হবে।    

স্বর্গ কোথায়?

ভুদেবতাদের বর্ণনা অনুসারে স্বর্গের অবস্থানটা  বেশ হেঁয়ালি পূর্ণকিন্তু তারা প্রতিনিয়ত দাবী করেছে স্বর্গই দেবতাদের আদি নিবাস তাদের পিতৃভূমি। যেখান থেকে দেবতারা তিন ভূবনের কোথায় কি হচ্ছে দেখতে পায়। যেখানে কোনদিন রাত হয় না। সহস্র সূর্য আলোকিত করে রাখে। কিন্নরীদের নুপুর নিক্কন আর অনন্ত যৌবনা অপ্সরাদের দেহ মধু ভাণ্ড পান করে গন্ধর্ব, কিন্নর ও দেবতারা যেখানে অন্তহীন সুখ ভোগ করতে থাকে। দেবতাদের কাঙ্ক্ষিত এই অমর লোকের হদিস পেতে হলে ঋক বেদের দশম মণ্ডলের পুরুষ সূক্তের ৯০ শ্লোক থেকে খুঁজতে হবে। এতে বলা হয়েছে   

-      পুরুষ নিজেই হল সমস্ত বিশ্ব। তিনি অমর জগতের প্রভু ...

-      এই পুরুষকে উৎসর্গ করে দেবতারা যখন যজ্ঞ করলেন তখন বসন্ত ছিল তার মাখন, গ্রীষ্ম হল তার আগুন এবং শরৎ হল তার নৈবেদ্য।

-      এই পুরুষকে দেবতারা ঘাসের উপর বলি দিলেন। ব্রাহ্মণ হল তার মুখ, রাজন্য হল তার বাহু, বৈশ্য হল তার উরু এবং পায়ের থেকে সৃষ্ট হল শূদ্র।

-      নাভি থেকে উঠে এল বাতাস, মাথা থেকে আকাশ, পা থেকে পৃথিবী, কান থেকে চতুর্দিক।

-      দেবতারা আকাশকে স্বর্গ ও পৃথিবীর মাঝখানে স্থাপন করলেন।

মনু সংযোজন করলেন, "স্বয়ম্ভু জীব সৃষ্টি করার জন্য প্রথমে জল ও তার মধ্যে বীজ (বীর্য) প্রথিত করলেন। সেটা ডিমের আকার নিল। এই ডিমের থেকে ব্রহ্মা জন্ম নিল। এই ডিম দুই ভাগে ভাগ হল। এক ভাগ হল স্বর্গ এবং অন্য ভাগ হল পৃথিবী। এই দুইয়ের মাঝখানে আকাশকে স্থাপন করা হল। অর্থাৎ  বেদের দশম মণ্ডল ও মনুর সংযোজনের মধ্যে স্বর্গ ও পৃথিবীর অবস্থান নিয়ে একটি সাযুজ্য আমারা দেখতে পাচ্ছি। কিন্তু পরবর্তী কালের রচিত পুরাণ, শ্রুতি শাস্ত্র, রামায়ন, মহাভারত ইত্যাদি  গ্রন্থগুলির বর্ণনা শুনে মনে হতে পারে যে স্বর্গটা হিমালয়ের কোন একটি অঞ্চল হবে  কৈলাস পাহাড়ের আসে পাসে কোন এলাকা, অথবা মানস সরোবরের সন্নিকটে অপূর্ব সুন্দর কোন এক বিস্তীর্ণ অঞ্চল।  মহাভারতের পঞ্চ পান্ডব তো পায়ে হেঁটেই স্বর্গে পৌঁছে যাবার বন্দোবস্ত করেছিল। ধন্ধটা বেস মজাদার যদি  আমারা জায়গাটাকে হিমালয়ের কৈলাসের আশেপাশের কোন এলাকা ধরি তবে বেজায় ফ্যাসাদে পড়ে যেতে হবে কেননা  আর্যদের আসার বহুকাল আগেই  অঞ্চল প্রোটো অস্ট্রাল ও মঙ্গোলয়েড মানুষের দখলে এসে গেছে আবার যদি আকাশের ওপারের কোন জায়গা ধরি যে, সেখানে গিয়ে অসুরেরা  দেবতাদের ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিয়েছিল; এটা বড় বেমানান লাগবে এবং ভীষণ হাস্যরসের উপাদান জোগাবে। এবং এই হাস্যরস শেষ পর্যন্ত নিজেদের অশিক্ষিত ও অসভ্য হিসেবে প্রতিপাদিত করবে   

তবে দেবতারা স্বর্গ প্রাপ্তির জন্য এত লালায়িত কেনকি এমন আলাদা রসনালয় এই স্বর্গ?

 হেঁয়ালির খানিকটা লিখিত উপাদন জোগাতে পারে সিরিয়  সভ্যতার অসুর নগরী সম্রাট অসুর বাণী পালের লাইব্রেরীতে প্রাপ্ত ২৫০০০ ক্লেটেবলেটস  পৃথিবীর সর্ব প্রাচীন এই  লাইব্রেরী থেকে জানা যায় যে, একদিকে অসুর নগরী যেমন  শিল্প সভ্যতা ও স্থাপত্যে সর্বোচ্চতা লাভ করেছিল; অন্যদিকে এর তাক লাগিয়ে দেওয়া বৈভব বহু দস্যু, লুঠেরাদের আক্রমণ করার জন্য প্রলুব্ধ করেছিল। বাইবেলের কাল শুরু হওয়ার বহু আগেই এই অসুর নগরী সুখ্যাত ছিল বাইবেলের old Testament-এর শুরুতে এই নগরী উল্লেখ করেছে

"A river watering the garden flowed from EDEN, and from there it divided, had four head streams …….The name of the third is the Tigris, it runs along the east of ASSUR. And the fourth river is the Euphrates". ...Genesis, Old Testament, Holly Bible.

এখনে অনেক টা কাজ বাকি আছে। মেসোপটেমিয়ার ইতিহাসটি দিতে হবে।

ইউফ্রেটিস  টাইগ্রিস নদী দ্বয়ের মাঝে অবস্থিত অঞ্চলে গড়ে উঠেছিল সুমহান অসুর সভ্যতা বা আসিরিয়ান সভ্যতা দক্ষিনের অংশটি সুমের বা সুমের-আক্কাদ  গ্রীক লেখকেরা এই সভ্যতাকে মেসোপটেমিয়া হিসেবে উল্লেখ করেছেন মেসোপটেমিয়া কথার অর্থ হল দুই নদীর মধ্যবর্তী দেশ এই দেশের রাজধানী "অসুরতাদের সুমহান ঈশ্বরের নামে পরিচিত ছিল নিনেভ শহর ছিল উন্নত অসুর সভ্যতার প্রাণকেন্দ্র একটি জাঁকজমক পূর্ণ শহরআর মেহেরগড়হড়প্পা  মহেঞ্জোদড়ো ছিল এই সুউন্নত অসুর সভ্যতার সহ নাগরিক যাদের যৌথ প্রচেষ্টায় গড়ে গড়ে উঠেছিল সম্মিলিত রাষ্ট্রপুঞ্জের ভাবনা

অসুর রাজারা ছিলেন প্রজ্ঞাবান ও ন্যায় পরায়ণ। একদিকে তারা ছিলেন প্রজাবৎসল কিন্তু অন্যায়কারীদের কাছে বিভীষিকা। নিষ্ঠুর ও একরোখা। ক্লটেবলেটস ও পরবর্তী কালের জেন্দাবেস্তায় অসৎ অন্যায়কারী ও দুশ্চরিত্রদের আরিয়াম্যান-বারিয়্যাম্যান ("বার‍্যুয়া" শব্দটি এখনো চন্ডালী ভাষায় দুশ্চরিত্রকে বোঝায়) হিসেবে বর্ণনা করা হয়। এই সকল অকর্মা, অসৎ অন্যায়কারী ও দুশ্চরিত্র আরিয়াম্যান-বারিয়্যাম্যানদের নির্বাসন দেওয়াই ছিল  অসুর নগরীর বিধান। অসুর রাজারা এদের কঠোর হাতে দমন করেছে এবং নির্বাসন দন্ড দিয়ে বিতাড়িত করেছে দূরে। কিন্তু সম্পত্তি লুন্ঠন ও লাম্পট্ট বজায় রাখার জন্যই আরিয়াম্যান-বারিয়্যাম্যানেরা সংগঠিত ভাবে বহুবার অসুর নগরী আক্রমণ করছে, নগর ধ্বংস করেছে, পুরুষদের খুন করেছে এবং মহিলাদের বন্দী করে দুর্গে নিয়ে গেছে। যথেচ্ছ যৌনাচার চালানো হয়েছে তাদের উপর। লুণ্ঠন করা সম্পদ, নারী ও সুরার এই ত্রয়ী সমন্বয়ে দুর্গ হয়ে উঠেছে স্বর্গের ছাউনি। অন্তহীন সুখসাগর। আর এই প্রক্রিয়ার মধ্যেই   আরিয়াম্যান-বারিয়্যাম্যানদের ধর্ম, অর্থ, কাম ও মোক্ষের ভাবনা তাদের জীবন দর্শণের মধ্যে চিরস্থায়ী ভাবে প্রথিত হয়ে গেছে

আরিয়াম্যান-বারিয়্যাম্যানদের এরকম একটি আক্রমণের প্রেক্ষাপ্ট ঐতিহাসিক গুস্তাভ তুলে ধরেছেনঃ   

"About 2500 B.C.  the Accaddian dybasty had reigned for long period in Babylon the Aryans invaded Chaldia and pressing at the same time on the Kannanites of the Persian Gulf and Dravidian in Persia, drove the formers towards North-west and the later to the South-East of India". Dr. BR Ambedkar, W &S-Vol-12 P. 14.           

অর্থাৎ খ্রিষ্ট পূর্ব ২৫০০ বছর আগে থকেই আরিয়াম্যান-বারিয়্যাম্যানদের বেলেল্লাপনার ইতিহাস আমরা জানতে পারছি বিভিন্ন সূত্র থেকে। একই ভাবে খ্রিষ্ট পূর্ব ১৫০০ বছর আগে তারা যে খাইবার-বোলান গিরি পথ ধরে অনুপ্রবেশ করে হড়প্পা, মহেঞ্জোদড়োর, লোথাল, ধলাভিরা, কালিবঙ্গান প্রভৃতি সুমহান অসুর নগরগুলিকে লুণ্ঠন করে ধ্বংস করেছিল, পুরুষদের হত্যা করে নারীদের বন্দী করে দুর্গে নিয়ে এসে ভোগ করেছিল তা লিপিবদ্ধ হয়েছে বেদ, পুরান, উপনিষদ ও পরবর্তী কালে মহাকাব্যগুলিতে বেদের ৭ম মণ্ডলে  দেবাসুরের  এমনই এক যুদ্ধের কথা বর্ণীত হয়েছে যা দশহরা (Battle of Ten Kings)বা দশেরা নামে পরিচিত।

Battle of Ten Kings - দশহরা বা দশেরা

এই যুদ্ধের বর্ণনা হিসেবে বেদের সপ্তম মণ্ডলের ১৮ তম লোকটি দেখুনঃ

purolaa it turvasho yakshur aasheed raaye matsyaaso nishitaa apeeva |
shrushtim cakrur bhrgavo druhyavash ca sakhaa sakhaayam atarad vishuco || 7.018.06

Eager for spoil was Turvaśa Purodas, fain to win wealth, like fishes urged by hunger.
The Bh
gus and the Druhyus quickly listened: friend rescued friend mid the two distant peoples.


aa pakthaaso bhalaanaso bhanantaalinaaso vishaninah shivaasah |

aa yo anayat sadhamaa aaryasya gavyaa trstubhyo ajagan yudhaa nrn || 7.018.07

Together came the Pakthas, the Bhalanas, the Alinas, the Sivaas, the Visanins.
Yet to the Trtsus came the Ārya's Comrade, through love of spoil and heroes' war, to lead them.

 

 

arāsi cit paprathānā sudāsa indro gādhāni akṛṇot supārā |

śardhanta śimyum ucathasya navya śāpa sindhūnām akṛṇod aśastī || 7.018.05

 

What though the floods spread widely, Indra made them shallow and easy for Sudās to traverse.

He, worthy of our praises, caused the Simyu, foe of our hymn, to curse the rivers' fury.

এই যুদ্ধে অসুরদের মধ্যে সুদাস দেবতাদের পক্ষ নেয়। দেবরাজ ইন্দ্র সুদাসের সহযোগিতায় অসুর রাজ দ্রুহু, ভৃগু, তুরবাস, পাক্তা, ভালানাস, আলিনা, ভিসানী ও শিবকে পরাজিত করে। বর্তমান পাঞ্জাবের রাবি নদীর তীরে এই যুদ্ধে দশ অসুর রাজাকে পরাজিত করে দেবতারা তাদের সমস্ত সম্পদ লুট করে নেয়। দাসসুলভ আনুগত্যের জন্য সুদাস কে পুরস্কৃত করা হয়। অসুর রাজাদের পরাজিত করে যে বিজয় উৎসব পালন করা হয় তার নাম দশহরা বা দশেরা।  দশহরা মূলনিবাসিদের নিধন যজ্ঞ। ভূদেবতাদের বিজয় উল্লাস। 

 

কৃষ্ণ ও ইন্দ্রের যুদ্ধ ঃ  

এই যুদ্ধের কথা এখানে উল্লেখ না করলে আলোচনাটি অসম্পূর্ণ থেকে যাবে বলে মনে করি।   সম্ভবত এরকম একটি যুদ্ধের পরেই ভূদেবতাদের কায়েমী দর্শন ভারতবর্ষে প্রসারিত হতে আর তেমন বাঁধা থাকেনি । এটি  "অংশুমতি"র যুদ্ধ নামেও পরিচিত। বেদ অনুশারে কৃষ্ণ ছিলেন অসুর রাজা যিনি তার মাতৃভূমির স্বাধীনতা রক্ষার জন্য অংশুমতি নদীর তীরে দশ হাজার সৈন্য সহ আর্য সেনাপতি ইন্দ্রের বিরুদ্ধে লড়াই করার প্রস্তুতি নেন ইন্দ্র তার মহিলা গুপ্তচরদের কাছ  থেকে কৃষ্ণের অবস্থান জানতে পারে (/৯৬/১৩-১৪ঋকবেদসরাসরি আক্রমণ না করে ঘুর পথে কৃষ্ণের রাজধানী আক্রমণ করে এবং রাজা হৃজিশ্বন সহ কৃষ্ণের গর্ভবতী স্ত্রীদের হত্যা করে (/১০১/১ঋকবেদ) এরপর ইন্দ্র  কৃষ্ণকে আক্রমণ করে তার সৈন্যদের হত্যা করে এবং তাঁকে পুড়িয়ে মেরে ফেলে (/১৩০/ ঋকবেদ)  

কিন্তু কৃষ্ণভারতবর্ষের এমন কিংবদন্তি রাজা ছিলেন যে,তার প্রজা বর্গ দীর্ঘদিন ধরে বৈদিক শাসন গ্রহণ করেনি  বিশেষকরে নাগচন্ডালকোল,মুন্ডা প্রভৃতি প্রাগার্য মূলনিবাসী জনপুঞ্জ এত শক্তিশালী ছিল যেতারা আর্যদের শাসন  সংস্কৃতি বর্জন করেছিল খ্রিস্টপূর্ব ১৮৭ সালে সম্রাট অশোকের প্রোপৌত্র অসুর-চন্ডাল রাজা বৃহদ্রথকে হত্যা করে পুষ্যমিত্র শুঙ্গ মূলনিবাসীদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ মূলক আক্রমণম্ভ করে

এই আক্রমণ  রাজা পুষ্যমিত্রের অশ্ব মেধ যজ্ঞ নামে পরিচিত।  

 

 

ধ্বংস করে দেয় মূলনিবাসী বহুজনের দর্শন,সংস্কৃতি  সভ্যতার ইমারত পুড়িয়ে ফেলে বিশ্বের সর্বচ্চ জ্ঞানের সম্পদ শাস্ত্ররাশি মূলনিবাসীর রক্তস্নানের পূণ্যে প্রতিষ্ঠিত হয় নরমেধ যজ্ঞের চিরস্থায়ী বন্দবস্ত। চতুর্বর্ণ সমাজ পুষ্যমিত্র শুঙ্গের পৃষ্ঠপোষকতায় রচিত হয় রামায়ণ,মহাভারত, মনুস্মৃতি নামক আর্য সমাজের অমৃতকথা ফিরিয়ে আনা হয় কৃষ্ণকে অসুরের বেশে নয়একেবারে ব্রাহ্মণদের বিধাতা ঈশ্বর হিসেবে তার মুখ দিয়েই অমৃত বর্ষণ করা হয়

"yada yada hi dharmasya glanir bhavati bharata

abhyutthanam adharmasya tadatmanam srjamy aham"

paritranaya sadhunam vinasaya ca duskrtam

dharma-samsthapanarthaya sambhavami yuge yuge"

TEXT 7(চতুর্থ অধ্যাআয়গীতা)

ব্রাহ্মন্যবাদী কৃষ্ণকে দিয়ে শুরু হয় অসুর বধের মহাযজ্ঞ মানুষকে হত্যা করা হয়ে ওঠে ধর্মযুদ্ধধর্মের নামেই চলতে থাকে অবাধ নরমেধ।   

"dharma-ksetre kuru-ksetre samaveta yuyutsavah

mamakah pandavas caiva kim akurvata sanjaya"

একই ভাবাবে পৌরাণিক যুগে মহাজ্ঞানী গোতমের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে ফিরিয়ে আনা হয় অসুর শিবকে। পৌরাণিক কাহিনীতে শিব আর দাস বা অসুর রাজা নন তিনি দেবাদিদেব মহাদেব। 

 

অপসরা মেনকার বিনিময়ে ইন্দ্রপ্রস্তের সন্ধি ঃ

(মহাভারতের বনপর্ব বা মার্কেন্ডেয় পুরান অনুশারে)  

যুদ্ধ, নরহত্যা, সম্পদ লুন্ঠন, নারীদের বন্দী বানিয়ে দুর্গে নিয়ে এসে তাদের উপর যথেচ্ছ যৌন নির্যাতন চলতে থাকে নির্বিচারে। বেদের অমৃত বাণী  (যে যত অসুরদের হত্যা করতে পারবে, তাদের সম্পদ লুণ্ঠন করতে পারবে স্বর্গে তার তত বেশি সুখ ভোগের ব্যবস্থা হবে। ইন্দ্র তাকে নারী, সুরা ও সম্পদ দান করবে) এই সকল নরমেধকে উৎসাহিত করতে থাকে।

" হে ইন্দ্র, আমাদের পাপ সকল লঘু করো। আমাদের ঋকের শক্তি দাও, যেন ঋক হীন মানুষদের আমরা বধ করতে পারি। যারা  ঋক শূন্য যজ্ঞ শূন্য ও ব্রাহ্মণ হীন তাদের শেষ করো"। ঋক ১০/১০৫/৮  

নরমেধের এই মহামন্ত্র ধ্বনিত করে ইন্দ্রের বাহিনী অসুর মহামতি গিরিরাজের অঙ্গরাজ্যে অনুপ্রবেশ করে। গিরিরাজ ইন্দ্রকে চতুর্দিক থেকে ঘিরে ফেলে। বাঁচার উপায় না দেখে ইন্দ্র যুদ্ধ বিরামের প্রতীক হিসেবে শ্বেত পতাকা উড়িয়ে দিয়ে সন্ধির প্রস্তাব দেয়। এই সন্ধির বিনিময়ে গিরিরাজ ইন্দ্রকে এক খন্ড ভূমি প্রদান করেন যা ইন্দ্রপ্রস্ত নামে পরিচিত। আর স্বর্গের প্রধান অপসরা মেনকাকে পান গিরিরাজ।  এই যুদ্ধে গিরিরাজ ইন্দ্রকে বন্দী করতে পারতেন, হত্যা করতে পারতেন। কিন্তু তাতে যুদ্ধের নীতি লঙ্ঘিত হতো। প্রজ্ঞাবানেরা তা করতে পারেন না। তাদের শীল, পারমিতা ও মার্গ দর্শনের মধ্যে জিঘাংসা অনুপস্থিত। ভূদেবতাদের দর্শনের সাথে অসুর দর্শনের এটাই মূলগত পার্থক্য।  

 

মেনকা দান আসলে অসুর নিধনের সামাজিক প্রকৌশল ঃ     

এ আর এক নতুন যুদ্ধ। নতুন প্রকৌশল। যে কৌশলের মধ্যদিয়ে ভূদেবতারা অসুর পুরীর একেবারে অন্দরে ঢুকে তাদের কায়েমী স্বার্থ চরিতার্থ করতে সক্ষম হয়েছিল। বিষকন্যা ও সেক্স গার্লদের ব্যবহার করার উল্লেখও পাওয়া যায় বিভিন্ন গ্রন্থে। প্রজনন বিদ্যাকে কাজে লাগিয়ে বর্ণ সংকর তৈরি করে চতুর্বর্ণ প্রথা কায়েম রাখাই ছিল ভূদেবতাদের উদ্দেশ্য। এই ভাবেই ভুদেবতারা   ধ্বংস করে দিতে সক্ষম হয়েছিল  অসুরদের বল, বীর্য ও মেধা।

মেনকা ও গিরিরাজের কন্যা উমা। শিবের সাথে তার বিয়ে হয়। এই শিবের আবার বহু পত্নী। বহুগামী সে। ব্রহ্মবৈবর্ত পুরান মতে আবার শিবের দুই পত্নী গৌরী ও উমা। গৌরি ফর্সা আর উমা কালো। শিব গৌরীকে বেশি পছন্দ করে। এই নিয়ে দুই সতীনের চুলোচুলি। শিব উমাকে অপমান করলে সে জঙ্গলে চলে আসে। সাধনা শুরু করে। তার রুদ্রমূর্তি দেখে ব্রহ্মা তাকে দুর্গে নিয়ে আসে। তাকে "দুর্গা রূপেন সংস্থিতায়" রূপান্তরিত করা হয়। দেবতারা তাকেই মহিশাসুর নিধনের জন্য বিষকন্যা হিসেবে প্রেরণ করে। কেননা মহিসাসুর নাকি দেবতাদের পেদিয়ে স্বর্গ থেকে বিদায় করে দিয়েছে। কিন্তু দুর্গা মহিশাসুরের রূপ,গুন  খ্যাতি দেখে তার প্রতি আকৃষ্ট হয় তার গুন, শীল, পারমিতায় মুগ্ধ হয়ে সধর্মিণী হিসেবে অসুরপুরীতে সন্তানদের নিয়ে দিন কাটায়। কাপালিক ইন্দ্র  ব্রহ্মা এতে ভয়ানক ক্ষেপে যায়। এর পরেই ঘটে বালক শুম্ভ-নিশুম্ভের হত্যা লীলা  মহিশাসুর বধ। দুর্গাকে মহিসাসুরকে ভুলিয়ে তাদের ছাউনির কাছে নিয়ে আসতে বাধ্য করে দেবতারা।  দুর্গা এখানে মহামায়া। কাত্যায়নী, ভৈরবী। তার মোহ জালে আচ্ছন্ন তিন ভূবন। দেবতাদের কথামত কাজ করে দুর্গা। মহিসাসুর সেনা ছাউনির কাছে এলে  দেব সেনাপতি কার্তিক পিছন থেকে তীর মেরে তাকে হত্যা করে। (মহাভারত, বন পর্ব)। 

   

ধম্ম বিজয়ার দিনে কেন এই দশেরা বা দশহরা ?

কলিঙ্গ বিজয় সম্রাট অশোকের জীবনে ধম্মানুভুতির একটি মাইলস্টোন। শোকাহত রাজা ঘোষণা করলেন তিনি আর যুদ্ধ বিজয়  করবেন না করবেন ধম্ম-বিজয়। মানবতা ও সখ্যতার মাধ্যমে গুড়িয়ে দেবেন জাত-পাতের প্রাচীর ও দেশ কালের সীমানা। বিশ্বভ্রাতৃত্ব এবং বসুধৈবকুটুম্বকম এর  নিবিড় বন্ধনে সব মানুষের মন জয় করবেন 

১৩ নং রক এডিক্ট - ঘোষণা করেন 'অসুপুত্ত  পৌ ত্ত মে নবম্ বিজয়  বিজিতব্যম' আমার পুত্র এবং প্রপৌত্ররাও কোন নতুন রাজ্য যুদ্ধ বিজয় করবেনা  যদি বিজয় করতে হয় তা হবে ধম্ম-বিজয়।

 দিনেই অশোক ধম্ম বিজয় পালন করেছিলেন। অসুর দর্শনের এই মূল বাণীকে ধ্বংস করার জন্যই ভুদেবতারা এই দিনে দশেরা বা বিজয়া দশমী পালন করার সিদ্ধান্ত নেয়।

আজও এই মূলনিবাসী গণনায়কের প্রতিকী পুতুল পুড়িয়ে ব্রহ্মণ্যবাদী বর্বরেরা বিজয় উল্লাস পালন করে। রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় ৮৫অসুর ভারতবাসীর রক্ত শুষে এই পৈশাচীক উৎসব মূলনিবাসীদের আত্মমর্যাদাআত্মপরিচয়  স্বধম্মের উপর এক সামাজিক বলাৎকার এবং ঘৃণ্য চক্রান্ত। মানুষকে জ্বালানোমানুষকে হত্যা করার এই প্রতীকি উৎসব পালন করতে ওরা কুন্ঠিত হয় না কেননা মূলনিবাসী অসুরদের পরাজয়ের মধ্যেই দেবতাদের বিজয় উল্লাস প্রতিষ্ঠিত হয়।  

আত্মবিস্মৃত অসুর বাঙ্গালীরা আবার  ভৈরবীর মোহে আচ্ছন্ন ঢাকের গগন ভেদী গর্জনে ঢাকা পড়ে গেছে তাঁদের পূর্বপুরুষের আর্তনাদ ধুপের ধোঁয়া আর ফুল বেলপাতার গন্ধে ঝাপসা হয়ে গেছে দৃষ্টি ব্রাহ্মন্যবাদের হাড়িকাঠে অসুর বাঙ্গালীর নির্বীর্য করনের এটাই এখন  সব থেকে শক্তিশালী নিধন যজ্ঞ      

 

      

 

No comments:

मैं नास्तिक क्यों हूं# Necessity of Atheism#!Genetics Bharat Teertha

হে মোর চিত্ত, Prey for Humanity!

मनुस्मृति नस्ली राजकाज राजनीति में OBC Trump Card और जयभीम कामरेड

Gorkhaland again?আত্মঘাতী বাঙালি আবার বিভাজন বিপর্যয়ের মুখোমুখি!

हिंदुत्व की राजनीति का मुकाबला हिंदुत्व की राजनीति से नहीं किया जा सकता।

In conversation with Palash Biswas

Palash Biswas On Unique Identity No1.mpg

Save the Universities!

RSS might replace Gandhi with Ambedkar on currency notes!

जैसे जर्मनी में सिर्फ हिटलर को बोलने की आजादी थी,आज सिर्फ मंकी बातों की आजादी है।

#BEEFGATEঅন্ধকার বৃত্তান্তঃ হত্যার রাজনীতি

अलविदा पत्रकारिता,अब कोई प्रतिक्रिया नहीं! पलाश विश्वास

ভালোবাসার মুখ,প্রতিবাদের মুখ মন্দাক্রান্তার পাশে আছি,যে মেয়েটি আজও লিখতে পারছেঃ আমাক ধর্ষণ করবে?

Palash Biswas on BAMCEF UNIFICATION!

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS ON NEPALI SENTIMENT, GORKHALAND, KUMAON AND GARHWAL ETC.and BAMCEF UNIFICATION! Published on Mar 19, 2013 The Himalayan Voice Cambridge, Massachusetts United States of America

BAMCEF UNIFICATION CONFERENCE 7

Published on 10 Mar 2013 ALL INDIA BAMCEF UNIFICATION CONFERENCE HELD AT Dr.B. R. AMBEDKAR BHAVAN,DADAR,MUMBAI ON 2ND AND 3RD MARCH 2013. Mr.PALASH BISWAS (JOURNALIST -KOLKATA) DELIVERING HER SPEECH. http://www.youtube.com/watch?v=oLL-n6MrcoM http://youtu.be/oLL-n6MrcoM

Imminent Massive earthquake in the Himalayas

Palash Biswas on Citizenship Amendment Act

Mr. PALASH BISWAS DELIVERING SPEECH AT BAMCEF PROGRAM AT NAGPUR ON 17 & 18 SEPTEMBER 2003 Sub:- CITIZENSHIP AMENDMENT ACT 2003 http://youtu.be/zGDfsLzxTXo

Tweet Please

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS BLASTS INDIANS THAT CLAIM BUDDHA WAS BORN IN INDIA

THE HIMALAYAN TALK: INDIAN GOVERNMENT FOOD SECURITY PROGRAM RISKIER

http://youtu.be/NrcmNEjaN8c The government of India has announced food security program ahead of elections in 2014. We discussed the issue with Palash Biswas in Kolkata today. http://youtu.be/NrcmNEjaN8c Ahead of Elections, India's Cabinet Approves Food Security Program ______________________________________________________ By JIM YARDLEY http://india.blogs.nytimes.com/2013/07/04/indias-cabinet-passes-food-security-law/

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS TALKS AGAINST CASTEIST HEGEMONY IN SOUTH ASIA

THE HIMALAYAN VOICE: PALASH BISWAS DISCUSSES RAM MANDIR

Published on 10 Apr 2013 Palash Biswas spoke to us from Kolkota and shared his views on Visho Hindu Parashid's programme from tomorrow ( April 11, 2013) to build Ram Mandir in disputed Ayodhya. http://www.youtube.com/watch?v=77cZuBunAGk

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS LASHES OUT KATHMANDU INT'L 'MULVASI' CONFERENCE

अहिले भर्खर कोलकता भारतमा हामीले पलाश विश्वाससंग काठमाडौँमा आज भै रहेको अन्तर्राष्ट्रिय मूलवासी सम्मेलनको बारेमा कुराकानी गर्यौ । उहाले भन्नु भयो सो सम्मेलन 'नेपालको आदिवासी जनजातिहरुको आन्दोलनलाई कम्जोर बनाउने षडयन्त्र हो।' http://youtu.be/j8GXlmSBbbk

THE HIMALAYAN DISASTER: TRANSNATIONAL DISASTER MANAGEMENT MECHANISM A MUST

We talked with Palash Biswas, an editor for Indian Express in Kolkata today also. He urged that there must a transnational disaster management mechanism to avert such scale disaster in the Himalayas. http://youtu.be/7IzWUpRECJM

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS CRITICAL OF BAMCEF LEADERSHIP

[Palash Biswas, one of the BAMCEF leaders and editors for Indian Express spoke to us from Kolkata today and criticized BAMCEF leadership in New Delhi, which according to him, is messing up with Nepalese indigenous peoples also. He also flayed MP Jay Narayan Prasad Nishad, who recently offered a Puja in his New Delhi home for Narendra Modi's victory in 2014.]

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS CRITICIZES GOVT FOR WORLD`S BIGGEST BLACK OUT

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS CRITICIZES GOVT FOR WORLD`S BIGGEST BLACK OUT

THE HIMALAYAN TALK: PALSH BISWAS FLAYS SOUTH ASIAN GOVERNM

Palash Biswas, lashed out those 1% people in the government in New Delhi for failure of delivery and creating hosts of problems everywhere in South Asia. http://youtu.be/lD2_V7CB2Is

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS LASHES OUT KATHMANDU INT'L 'MULVASI' CONFERENCE

अहिले भर्खर कोलकता भारतमा हामीले पलाश विश्वाससंग काठमाडौँमा आज भै रहेको अन्तर्राष्ट्रिय मूलवासी सम्मेलनको बारेमा कुराकानी गर्यौ । उहाले भन्नु भयो सो सम्मेलन 'नेपालको आदिवासी जनजातिहरुको आन्दोलनलाई कम्जोर बनाउने षडयन्त्र हो।' http://youtu.be/j8GXlmSBbbk