Welcome

Website counter
website hit counter
website hit counters

Saturday, January 5, 2013

মণিপুরে মায়েদের প্রতি রাষ্ট্রের ব্যবহার সর্ববিদিত। দলিত নারীর প্রতি যে অবিচার চলে, দস্যুসুন্দরী ফুলন উপাখ্যানে তাঁর চালচিত্র চিত্রায়িত থাকবে চিরকাল। আদিবাসী রমনী ও মাতা সোনী সোরীর প্রতি অবিরত নির্যাতন চলছে, সে কিনা মাওবাদী।একটি মোমবাতিও বরাদ্দ নেই তাঁর জন্য। বিশ্বায়িত অর্থব্যবস্থায় নারী মহার্ঘ পণ্য, নারী দেহ রাজনীতি, ক্ষমতা ও সাহিত্য সংস্কৃতির অলিন্দে ওঠার সহজতম সিঁড়ি।সমাজে নারীর অবস্থানের মাপকাঠি সবক্ষেত্রেই একই।ভোগ সর্বস্ব।ধর্মে সে শুদ্র,দাসী।কঠোর সতীত্বের অনুশীলনে বন্দী, সবরকম ত্যাগের জন্য দায়বদ্ধ। সমাজ ও ধর্মের অনুশাষনের গন্ডী ডিঙ্গি মেরে পার করতে গেলেই সে নষ্ট মেয়ে নষ্ট ডিমের মতোই।ধর্মেনারী নির্আতন শাস্তরসম্মত।ভারতবর্ষের রাজধানীতে গণধর্ষণের বিরুদ্ধে মোমবাতি প্রতিবাদ, বিক্ষোভ ও বিপ্লব ধার্মিক ফতোয়ার আকার নিছ্ছে মৃত্যুদন্ডের ও ধর্ষকদের রাসায়নিক ভাবে নপুংসক করার দাবি ও সর্বদলীয় সম্মতিতে তত্সম্বন্ধী আইন প্রণয়নে। সত্য হল ভারতবর্ষের কর্তৃত্ব চলছে মনুস্মৃতি ব্যবস্থা ও বিধান অনুযায়ী। সেখানে নারীর অবস্থান বুঝতে হলে সুকুমারী ভট্টাচার্যের লেখা পড়তেই হয়। পড়তে হয় তসলিমার বিতর্কিত কালম অবশ

মণিপুরে মায়েদের প্রতি রাষ্ট্রের ব্যবহার সর্ববিদিত। দলিত নারীর প্রতি যে অবিচার চলে, দস্যুসুন্দরী ফুলন উপাখ্যানে তাঁর চালচিত্র চিত্রায়িত থাকবে চিরকাল। আদিবাসী রমনী ও মাতা সোনী সোরীর প্রতি অবিরত নির্যাতন চলছে, সে কিনা মাওবাদী।একটি মোমবাতিও বরাদ্দ নেই তাঁর জন্য বিশ্বায়িত অর্থব্যবস্থায় নারী মহার্ঘ পণ্য, নারী দেহ রাজনীতি, ক্ষমতা ও সাহিত্য সংস্কৃতির অলিন্দে ওঠার সহজতম সিঁড়ি।সমাজে নারীর অবস্থানের মাপকাঠি সবক্ষেত্রেই একই।ভোগ সর্বস্ব।ধর্মে সে শুদ্র,দাসী।কঠোর সতীত্বের অনুশীলনে বন্দী, সবরকম ত্যাগের জন্য দায়বদ্ধ। সমাজ ও ধর্মের অনুশাষনের গন্ডী ডিঙ্গি মেরে পার করতে গেলেই সে নষ্ট মেয়ে নষ্ট ডিমের মতোই।ধর্মেনারী নির্আতন শাস্তরসম্মত।ভারতবর্ষের রাজধানীতে গণধর্ষণের বিরুদ্ধে মোমবাতি প্রতিবাদ, বিক্ষোভ ও বিপ্লব ধার্মিক ফতোয়ার আকার নিছ্ছে মৃত্যুদন্ডের ও ধর্ষকদের রাসায়নিক ভাবে নপুংসক করার দাবি ও সর্বদলীয় সম্মতিতে তত্সম্বন্ধী আইন প্রণয়নে। সত্য হল ভারতবর্ষের কর্তৃত্ব চলছে মনুস্মৃতি ব্যবস্থা ও বিধান অনুযায়ী। সেখানে নারীর অবস্থান বুঝতে হলে সুকুমারী ভট্টাচার্যের লেখা পড়তেই হয়। পড়তে হয় তসলিমার বিতর্কিত কালম অবশ্যই

পলাশ বিশ্বাস


মণিপুরে মায়েদের প্রতি রাষ্ট্রের ব্যবহার সর্ববিদিত। দলিত নারীর প্রতি যে অবিচার চলে, দস্যুসুন্দরী ফুলন উপাখ্যানে তাঁর চালচিত্র চিত্রায়িত থাকবে চিরকাল। আদিবাসী রমনী ও মাতা সোনী সোরীর প্রতি অবিরত নির্যাতন চলছে, সে কিনা মাওবাদী।একটি মোমবাতিও বরাদ্দ নেই তাঁর জন্য। মহিলা কমান্ডো পরিবৃত নারী কি সত্যই নিরাপদ হবে মুক্ত বাজারে? বিশ্বায়িত অর্থব্যবস্থা, আক্রমণকারি জাযনবাদী রাষ্ট্র, মনুস্মৃতির বাহক ও ধারক রাজনীতি, মানবাধিকার লঙ্ঘনে চরম আগ্রাসী ফতোয়াবাজ ধর্ম ও ভোগসর্বস্ব সমাজে নারীর দেহমুক্তি মোমবাতির আলোয় আদৌ হবে কি বিচ্ছন্ন নয় ঘটনাবলি, বিশ্বায়িত জায়নবাদী সংসক্তির অর্থশাস্ত্র বুঝেই প্রতিবাদ, প্রতিরোধ ও আন্দোলনের প্রস্থানবিন্দু নির্ধারিত করা প্রয়োজন।সবচেয়ে বেশী প্রয়োজন ধাপ্পাবাজ গণসংহার সংস্কৃতিতে অর্থনীতি, ধর্ম ও রাজনীতির মুখোশ খোলা পুঁজি ও ক্ষমতার এই মনুস্মৃতি কর্তৃত্বই নারী নির্যাতনের মূল শক্তি, কোনও ব্যক্তি বিশেষ নয়।ব্যক্তিকে ফাঁসিকাঠে ঝুলিয়ে দিলেই সব অন্ধকার আলো হয়ে যাবে না।

মহিলা নিরাপত্তায় মহিলা কমান্ডো বাহিনী মোতায়েন করতে চলছে মুম্বই পুলিস। শুরু হয়ে গেছে মহিলা কমান্ডো বাহিনীর বিশেষ ট্রেনিংও।  শুধু নিরাপত্তা দেওয়াই নয়, বিশেষ পরিস্থিতিতে মহিলারা কীভাবে আত্মরক্ষা করবে তা শেখাতেও স্কুল কলেজ ছাত্রীদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেবে ওই মহিলা কমান্ডোরা। 

দিল্লি গণধর্ষণ কাণ্ড। ষোলো ডিসেম্বরের রাতের ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা দেশকে। ঘটনার পর থেকে প্রশ্ন উঠছে মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে। প্রশ্ন উঠছে মহিলাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার ক্ষেত্রে কতটা সক্রিয় প্রশাসন। দেশজোড়া উদ্বেগের মাঝেই এই ইস্যুতে উদ্যোগী হল মুম্বই পুলিস। মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ রুখতে এবার বিশেষ মহিলা কমান্ডো বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। শহরের পথে ঘাটে, স্কুলে কলেজে, শপিং মল, সিনেমা হল থেকে শুরু করে যেসব জায়গায় সাধারণত মহিলাদের ভিড় বেশি থাকে, সেখানে এই মহিলা কমান্ডোবাহিনী মোতায়েন করা হবে। 

ইতিমধ্যেই জোরকদমে চলছে প্রশিক্ষণের কাজ। শারীরিক কসরত তো আছেই। প্রশিক্ষণের জন্য আসা মহিলা কমান্ডোদের আত্মরক্ষার বিভিন্ন উপায়ও শেখানো হচ্ছে। 


ইভটিজিং, শ্লীলতাহানি রোখার পাশাপাশি বিভিন্ন স্কুল-কলেজে ছাত্রীদের আত্মরক্ষার জন্য প্রশিক্ষণ দেবেন তাঁরা। মুম্বই পুলিস আশাবাদী তাঁদের এই উদ্যোগ শহরের মহিলাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে অনেকটাই সহযোগী হবে।


একদিকে প্রতিবাদ, অন্যদিকে ব্যবসা। প্রতিবাদের ভারতের মাঝে এটা একটা অন্য মুখ। বলত্‍কারি শব্দটা যেখানে নিন্দা-ঘৃণার নয়, নেশায় ডুবে থাকার দিল্লির গণধর্ষণকাণ্ডের প্রতিবাদে যখন দেশ উত্তাল, তখন দেশেরই এক বড় শহরে ধর্ষণ বা `বলত্‍কার` শব্দটা বিক্রি হচ্ছে অন্যভাবে। মুম্বইয়ের বান্দ্রার এক পাবে `বলত্‍কারি` নামের এক ককটেল বিক্রি হচ্ছিল দেদার। বিশেষ কতকগুলো মদকে বিভিন্ন অনুপাতে মিশিয়ে তৈরি হয় এই `বলত্‍কারি` নামের ককটেল। 

`বলত্‍কারি` বাংলায় যাকে বলে ধর্ষক এই নামটাকে মদের নাম হিসাবে ব্যবহার করে মুম্বইয়ের সেই পাবের মালিক বেশ পয়সা করেছেন। এতদিন সব ঠিকঠাকই চলছিল। কিন্তু দিল্লি গণধর্ষণের প্রতিবাদের আঁচে তপ্ত হয়ে কিছু মহিলা সংগঠন ও এনসিপি সমর্থকরা বান্দ্রার সেই পাবে হামলা চালায়। চাপে পড়ে ক্ষমা শিকার করে নিতে বাধ্য হন পাবের মালিক। বলেন কাউকে আঘাত করতে নয় নিছক ব্যবসায়িক স্বার্থের কথা মাথায় রেখেই এই নাম রাখা হয়েছিল।


প্রিয় পাঠক! আমি প্রথম থেকেই লিখে এসেছি যে আইন বদল হলে নারীর নিরাপত্তা সুনিশ্চিত হবে, এমনটা ভাবা মৃগ মরীচিকা। বিশ্বায়িত অর্থব্যবস্থায় নারী মহার্ঘ পণ্য, নারী দেহ রাজনীতি, ক্ষমতা ও সাহিত্য সংস্কৃতির অলিন্দে ওঠার সহজতম সিঁড়ি।সমাজে নারীর অবস্থানের মাপকাঠি সবক্ষেত্রেই একই।ভোগ সর্বস্ব।ধর্মে সে শুদ্র,দাসী।কঠোর সতীত্বের অনুশীলনে বন্দী, সবরকম ত্যাগের জন্য দায়বদ্ধ। সমাজ ও ধর্মের অনুশাষনের গন্ডী ডিঙ্গি মেরে পার করতে গেলেই সে নষ্ট মেয়ে নষ্ট ডিমের মতোই।ধর্মেনারী নির্আতন শাস্তরসম্মত।ভারতবর্ষের রাজধানীতে গণধর্ষণের বিরুদ্ধে মোমবাতি প্রতিবাদ, বিক্ষোভ ও বিপ্লব ধার্মিক ফতোয়ার আকার নিছ্ছে মৃত্যুদন্ডের ও ধর্ষকদের রাসায়নিক ভাবে নপুংসক করার দাবি ও সর্বদলীয় সম্মতিতে তত্সম্বন্ধী আইন প্রণয়নে। বিতর্কিত নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন বহু আগেই লিখেছেন যতদিন ধর্ম থাকবে, নারীর স্বাধীনতা অসমভব।দেহমুক্তি নৈব নৈব চ। সামাজিক ন্যায় ও সমতা অলীক কল্পনা। মানবাধিকার লঙ্ঘনে ধর্মদ্বজাবাহকরাই সবার আগে। উদার অর্থনীতির গর্ভে জন্ম নিয়ে আজকের প্লাস্টিক মনি সাইবার প্রজন্ম সামাজিক ন্যায় ও সমতার ধার ধারে না। তাঁরা কার্নিওয়াল উত্সবে সমগ্র ভোগ সংসকৃতিরই উপাসক। ধর্মোন্মাদী জাতিয়তাবাদে উদ্বুদ্ধ।সেই ধর্ম জাতীয়তাবাদে আবার পরিচালিত এই উপমহাদেশে কর্তৃত্ব ও ক্ষমতা দেশে দেশে।কোনও ব্যতিক্রম নেই। জাযনবাদী রাষ্ট্রক্ষমতার সলওয়া জুড়ুম চলছে বহিস্কৃত বহুসংখ্যক জনগণের বিরুদ্ধ। জায়নবাদী মুক্ত বাজারের প্রতি দায়বদ্ধ রাষ্ট্র করেছে যুদ্ধ ঘোষণা সাধারণ অন্ত্যজ, অস্পৃশ্য, অপাংতেয় মানুষের বিরুদ্ধে। সত্য হল ভারতবর্ষের কর্তৃত্ব চলছে মনুস্মৃতি ব্যবস্থা ও বিধান অনুযায়ী। সেখানে নারীর অবস্থান বুঝতে হলে সুকুমারী ভট্টাচার্যের লেখা পড়তেই হয়। পড়তে হয় তসলিমার বিতর্কিত কালম অবশ্যই। ভারতে রাজনীতি ও ক্ষমতার কেন্দ্র হল সংঘ পরিবার এবং দিল্লি গণধর্ষণকাণ্ডে তরুণীর মৃত্যুর পর দেশ যখন উত্তাল তখন ধর্ষণ নিয়ে মন্তব্য করে বিতর্কে জড়ালেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত। তাঁর বক্তব্য, ভারতে নয়, ধর্ষণ হয় ইন্ডিয়ায়। এখানেই শেষ নয়। মধ্যপ্রদেশের বিজেপি নেতা কৈলাশ বিজয়ভার্গেয়র মন্তব্য, লক্ষ্মণরেখা পেরোলে তার মূল্য চোকাতে হবে মহিলাদেরই। মহিলাদের বিরুদ্ধে অবমাননাকর মন্তব্যের বিরাম নেই। এ বার এই তালিকায় যোগ হল আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবতের নাম।


 


বছরের শুরুতেই দুঃসংবাদ। শীঘ্রই বাড়তে পারে ডিজেল, কেরোসিন, এলপিজি সিলিন্ডারের দাম। এমনই ইঙ্গিত দিলেন পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী বীরাপ্পা মইলি। অর্থমন্ত্রকের তরফে গঠিত কেলকর কমিটি কেন্দ্রকে এই দামবৃদ্ধির সুপারিশ করেছে বলে জানা গেছে। 

ডিজেলের দাম খোলা বাজারের হাতে ছেড়ে দেওয়ার সুপারিশ করেছে  কমিটি। অবিলম্বে ডিজেলের দাম লিটারপিছু চার টাকা ও কেরোসিনের দাম প্রতি লিটারে দু টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেকটি এলপিজি সিলিন্ডারের দাম পঞ্চাশ টাকা করে বাড়ানোরও সুপারিশ করা হয়েছে। আপাতত বিবেচনা স্তরে রয়েছে এই প্রস্তাব। তবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে শীঘ্রই বিষয়টি তোলা হতে পারে। মন্ত্রিসভার সবুজ সঙ্কেত পেয়ে গেলে বাড়ানো হবে দাম। এরই পাশপাশি ভর্তুকি দেওয়া এলপিজি সিলিন্ডারের সংখ্যা বাড়ানোর ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করছে কেন্দ্র। বছরে ছটির বদলে এই সংখ্যা নটি করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী বীরাপ্পা মইলি।       


দয়া করে পড়ুন এই সময়ে প্রকাশিত এই প্রতিবেদনটি, তাহলেই আরএসএস প্রধাণের হিন্দুত্ব অবস্থান অনুধাবন করা সম্ভবঃ


ন্যায়ের পথে চেয়ে অপেক্ষায় সোনি সোরি



নয়াদিল্লি: ধর্ষণ-বিরোধী প্রতিবাদ প্রতিরোধে দিল্লি-সহ সারা দেশ যখন উত্তাল, তখনই প্রচারের আলোর তলায় চাপা পড়ে রয়েছে আর এক নির্যাতিতা নারীর নীরব কান্না৷ মাওবাদী আন্দোলন দমনের অজুহাতে বারে বারে অবহেলিত হয়েছে তাঁর ন্যায়বিচারের কাতর আবেদন৷ তাঁর নাম সোনি সোরি৷ ছত্তিসগড়ের বাসিন্দা ৩৮ বছর বয়সি এই আদিবাসী মহিলা পেশা হিসেবে শিক্ষকতাকেই বেছে নিয়েছিলেন৷ তিনি মাওবাদীদের চর, এই অভিযোগে ২০১১ সালের অক্টোবর মাসে পুলিশ সোনিকে গ্রেপ্তার করে৷ নিজের নিরাপত্তা নিয়ে আদালতে প্রশ্ন তোলা সত্ত্বেও সোনিকে দান্তেওয়াড়ার পুলিশ ঘাঁটিতে স্থানান্তরিত করা হয়৷

সোনির অভিযোগ, পুলিশ হেফাজতেই তাঁর উপর চালানো হয় অকথ্য অত্যাচার, এবং পুরো ব্যাপারটাই ঘটে দান্তেওয়াড়ার পুলিশ সুপারিনটেন্ডেন্ট অঙ্কিত গর্গ-এর নির্দেশে৷ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজে পরীক্ষার পরও প্রমাণ হয় গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন সোনি৷ পরীক্ষার পর কলকাতার চিকিত্‍সকেরা জানান, সোনির যৌনাঙ্গে পাথরের টুকরো ঢুকিয়ে দিয়েছিল পুলিশ৷ সুপ্রিম কোর্টকে লেখা একটি চিঠিতে সোনির প্রশ্ন ছিল, 'আমাকে উলঙ্গ করে ইলেকট্রিক শক দেওয়া, শরীরে পাথরের টুকরো ঢোকানো, এইগুলি কি নকশাল সমস্যা সমাধানের অঙ্গ?' 

গত বছর সোনিকে 'বিবেকের বন্দী' আখ্যা দেয় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সমগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল৷ অল ইন্ডিয়া প্রোগ্রেসিভ উইমেনস অ্যাসোসিয়েশন-এর সম্পাদিকা কবিতা কৃষ্ণণের বক্তব্য, 'সোনিকে তাঁর ধর্ষকদের হেফাজতেই থাকতে হচ্ছে৷ অবিলম্বে তাঁর মুক্তি চাই৷' বুধবার এই দাবিতে দিল্লিতে এক মৌন মিছিলের আয়োজন করে ছাত্র-সংগঠন 'আইসা'৷ তাতে সামিল হন আম আদমি পার্টির নেতা প্রশান্ত ভূষণ এবং সমাজকর্মী স্বামী অগ্নিবেশ-সহ বেশ কয়েকজন বুদ্ধিজীবী৷ বর্তমানে রায়পুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে রয়েছেন সোনি৷ বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে তাঁর মামলার শুনানি শুরু হওয়ার কথা থাকলেও, কোনও কারণ ছাড়াই তা ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ 
কিন্ত্ত এত কিছুর পরও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি অভিযুক্ত পুলিশ সুপারিনটেন্ডেন্টের বিরুদ্ধে৷ বরং ২০১২ সালের প্রজাতন্ত্র দিবসে 'পেশাগত দক্ষতা'র জন্য রাষ্ট্রপতি পুরস্কার পান তিনি৷ বুধবারের মিছিলে তাঁর কঠোর শাস্তির দাবি তোলে প্রতিবাদকারীরা৷ ছত্তিসগড়ের মানবাধিকার-কর্মী হিমাংশু কুমার বলেন, 'ছত্তিসগড়ের আদিবাসীদের জন্য এক অলিখিত নিয়ম রয়েছে৷ মানবাধিকার লঙ্ঘিত হলে তারা জোটবদ্ধ হতে পারবে না, প্রতিবাদ করতে পারবে না, রাষ্ট্রযন্ত্রের বিরুদ্ধে কোনও কথা বলা যাবে না৷' তাঁর মতে, রাজ্য প্রশাসনের কার্যপদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তোলার ফল ভোগ করতে হচ্ছে সোনিকে, এবং তাঁর মতো আরও অনেককেই৷ -সংবাদসংস্থা

http://eisamay.indiatimes.com/soni-awaits-justice/articleshow/17898703.cms


বিচারপতির কাছে সোনি সোরি'র চিঠি


ছত্তিশগড়ের দান্তেওয়াড়ার একজন স্কুল শিক্ষিকা ৩৫ বছর বয়সি সোনি সোরির বাবা খুন হন মাওবাদীদের হাতে 'পুলিশের চর' সন্দেহে। আর তাঁর স্বামী ছত্তিশগড়ের জেলে বন্দি মাওবাদী সমর্থক সন্দেহে। সোনি সোরিকে নকশাল হিসেবে ভান করতে বলেছিল পুলিশ, তিনি করতে চাননি। তখন তাঁর বিরুদ্ধে মামলা সাজানো হয়। সোনি সেটা আঁচ করে দিল্লিতে পালিয়ে আসেন সুপ্রিম কোর্টে সরাসরি আবেদন করার জন্য, কারণ ছত্তিশগড় তাঁর কাছে নিরাপদ নয়। কিন্তু তিনি কোর্টে পৌঁছনোর আগেই ধরা পড়ে যান এবং তাঁর আবেদন সত্ত্বেও তাঁকে সেই ছত্তিশগড় পুলিশ হেফাজতে ফেরত পাঠানো হয়। পুলিশ হেফাজতে সোনি পুলিশের বয়ানে সম্মতি না জানানোয় তাঁকে নিষ্ঠুরভাবে ধর্ষণ করা হয় ২০১১ সালের ৮-৯ অক্টোবর রাতে দান্তেওয়াড়ার নতুন থানায়। পরে স্বাধীন ডাক্তারি পরীক্ষায় দেখা যায়, তাঁর যৌনাঙ্গে পাথর ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে, শিরদাঁড়া মারাত্মক জখম হয়েছে। ১ ডিসেম্বর ২০১১ সুপ্রিম কোর্ট তাঁকে ছত্তিশগড় পুলিশ হেফাজতেই রাখার নির্দেশ দেয় ২৫ জানুয়ারি ২০১২ পরবর্তী শুনানির দিন অবধি। কিন্তু সেই পরবর্তী শুনানি আজও হয়নি। এবছরের ৮ মার্চ তাঁর সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির উদ্দেশ্যে সোনি সোরির লেখা একটি চিঠি পাঠ করেন নারী আন্দোলনের কর্মীরা এবং তার ভিডিও ইন্টারনেটে ইউটিউব ওয়েবসাইটে রাখা হয়। নিচে এই চিঠির বাংলা অনুবাদ করেছেন জিতেন নন্দী। ছবি তহলকা ম্যাগাজিনের সৌজন্যে

বিচারপতি মহাশয়, 
আপনার আদেশ অনুযায়ী আমাকে কলকাতায় চিকিৎসা করা হয়েছে। তার ফলে আমি জীবন ফিরে পেয়েছি। তবে কেন আমাকে আবার ওই লোকেদের কাছেই পাঠানো হল? আমি এখানে নিরাপদ নই। আমাকে অনেক সমস্যার মোকাবিলা করতে হচ্ছে। যদি আপনাদের আদালত আমার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলি বিশ্বাস করে, তবে আমাকে শাস্তি দেওয়া হোক। কিন্তু আমাকে ওইসব লোকেদের মাঝে ছেড়ে দেবেন না। প্রতিটি রাত আর প্রতিটি দিন ওখানে খুবই অসহ্য। আমার ভিতরে খুব যন্ত্রণা হচ্ছে। আমি আপনার বিচারের অপেক্ষায় রয়েছি। ছত্তিশগড় সরকার আমাকে আদালতে নিয়ে আসতে বিলম্ব করেনি। দিল্লির আদালত খুব তাড়াতাড়ি আমাকে ওদের হাতে ফিরিয়ে দিয়েছে। তাহলে আপনার আদালতে এই বিলম্ব কেন? 
আমার ওপর নির্যাতন কি যথেষ্ট হয়নি? তবে কেন আপনি আমাকে জীবন ফিরিয়ে দিলেন? আপনার তো আমায় মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া উচিত ছিল। আপনার আদেশের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। এটা আমি জীবনে ভুলব না। আমি জানি না কেন দিল্লির আদালত আমার আর্তনাদ শুনতে পায়নি। যদি ওরা আমার অসহায়তা উপলব্ধি করত, আমাকে এই রাজ্যে আসতে হত না। এসব সত্ত্বেও আমাকে ছত্তিশগড় পুলিশের কাছে ফেরত পাঠানো হল। সেই মুহূর্তে আমার হৃদয় বলছিল, 'আমাকে ওদের সঙ্গে পাঠিও না। ওরা নিজেদের বোন বা মেয়েদের সঙ্গে কী করতে পারে, তোমার কোনো ধারণা নেই।' কিন্তু মহামান্য আদালতের নিজেদের মেয়ের চেয়ে পুলিশের ওপর বিশ্বাস বেশি। আর সেজন্যই আমি আজ সব হারিয়েছি। আদালত এখনও বুঝতে পারছে না। যাই হোক, আজ একটা মেয়ে অপমানিত হয়েছে। কাল আর একজন হবে।  
এটা এক অসহায় মেয়ের আবেদন। দয়া করে কিছু অন্তত করুন, নাহলে আগামীদিনে ওরা আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে। ওরা আমাকে বলেছিল, খোদ আদালত তোমায় আমাদের জিম্মায় রাখবার অনুমতি দিয়েছে। এখন আমি কোন আদালতে আবেদন করব? বিচারপতি মহাশয়, এর অর্থ হল, আপনার আদালত আমাকে ওদের হাতে সমর্পণ করেছে। ওরা যা খুশি করতে পারে। আমি এদেশের প্রথম মেয়ে, যাকে আদালতের অনুমতি নিয়ে ওরা এখানে নিয়ে এসেছে আর হৃদয়হীনভাবে আমার ওপর মানসিক ও দৈহিক নির্যাতন করেছে। আমার ওপর এই অবিচার কেন? আমায় ইলেকট্রিক শক দেওয়া, নগ্ন করে ফেলা, শরীরের ভিতর পাথর গুঁজে দেওয়া --- এসব করে কি নকশাল সমস্যার সমাধান হবে?  
বিচারপতি মহাশয়, আমার শরীরময় যন্ত্রণা। আপনার বিচার পাওয়ার আগেই যদি আমার মৃত্যু হয়, তাহলে দায়ী হবে ছত্তিশগড় সরকার আর পুলিশ। আমি গুরুতর অসুস্থ আর আমার ওপর যা কিছু হয়েছে তা করেছে এসপি অঙ্কিত গর্গ এবং অন্য পুলিশ অফিসারেরা। আমার তিনটি সন্তান। আমি চলে গেলে ওদের দেখার কেউ নেই। আমার স্বামী গত দেড় বছর যাবৎ এক মিথ্যা মামলায় বন্দি হয়ে রয়েছেন। নকশালেরা আমার বাবার বাড়ি লুঠ করে নিয়েছে। আমার সন্তানদের সহায়তা প্রয়োজন। ওরা খুব অসুবিধার মধ্যে রয়েছে। ওরা আজ নেহাতই অনাথ। বিচারক মহাশয়, এক মায়ের কাছ থেকে তার সন্তানদের জন্য এই আবেদন। আপনি দেখুন, পুলিশ অপরাধ করে যাচ্ছে আর আমি শাস্তি ভোগ করছি। 
যদি দেড় বছর আগেই ওদের কাছে হুকুমনামা ছিল, তাহলে কেন ওরা আমাকে গ্রেপ্তার করেনি? আমি পুলিশ স্টেশন এবং সিআরপি ক্যাম্পে বারংবার গিয়েছি। আমি বারবার পুলিশ অফিসারদের সঙ্গে দেখা করেছি, নিরাপত্তা রক্ষীরাও বহুবার আমার বাড়িতে এসেছে। যখন দান্তেওয়াড়ার কালেক্টর কিংবা অন্য কোনো অফিসার প্রশাসনিক সভা ডেকেছেন, আমি সবসময় উপস্থিত থেকেছি। কেন সেইসময় আমায় গ্রেপ্তার করা হয়নি? 'এসার'-এর ঘটনায় পুলিশ তাদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল এবং আমাকে নকশাল হিসেবে ভান করতে বলেছিল। আমি যখন ওদের কথায় রাজি হলাম না, ওরা বলল, তোমার নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে। যদি তুমি আমাদের জন্য এটুকু করো, তাহলে তোমায় গ্রেপ্তার করব না। একবার ব্যাপারটা ভেবে দেখুন। বিচারপতি মহাশয়, আমি ওই পথে যাইনি।  
আমার আবেদন আপনার কাছে,
 
সোনি সোরি (সোদি) 

সোনি সোরির কিছু প্রশ্ন

খবরোলা

 

'সারাদিন অত্যাচার সহ্য করে গেলাম। প্রচণ্ড কষ্ট। কাউকে বলিনি, কাকেই বা বলতাম ? আমার নিজের কেউ তো ওখানে ছিল না !' - সোনি সোরি।


সোনি সোরি। নামটা কিছুটা চেনা চেনা লাগে কি? নানা খবরের আনাচে কানাচে নামটা হয়ত উঁকি দিয়ে গেছে এক দু'বার।
সোনি সোরি কে? সে খবর আমরা জানি কি? দান্তেওয়াডার সরকারী আদিবাসী স্কুলের আদিবাসী শিক্ষিকা। বয়স ৩৫, আপাতত বন্দিনী, রায়পুর সেন্ট্রাল জেলে। এবং গুরুতরভাবে অসুস্থ, জেলের অত্যাচারে।

সোনি সোরির 'অপরাধ' কী?  সেটা আমরা জানি কি? বোধহয় কেউই ঠিক জানে না। আদৌ কোন 'অপরাধ' করেছেন কিনা, তাও না। তবে রাষ্ট্র বলে দিয়েছে, সেটা 'মাওবাদী' সংক্রান্ত কিছুই হবে। অভদেশ গৌতম মামলা নিয়ে অন্য বুলবুলভাজায় বিস্তারিত আছে, তবে একথা বোধহয় না জানলেও চলে, যে, সোনির বাবাকে মাওবাদীরা গুলি করে যায়।

সোনি সোরি কী বলছেন? তাঁর কথা আমরা শুনেছি কি? তাঁর 'অপরাধ' কী করে তৈরি হয়েছিল, সেসব কথা সোনিই জানিয়েছেন। জানিয়েছেন, জেলে তাঁর সাথে কী হয়েছিল। জানিয়েছেন, জেল থেকে লেখা তাঁর চিঠিগুলিতে। আন্তর্জাতিক নারীদিবসে সেই চিঠিগুলি থেকে অনেকেই পাঠ করেছেন। 'খবর্নয়' এ রইলো সেই কোলাজ আর বাকি কিছু চিঠির টুকরোটাকরা।

রাষ্ট্র, অধিকার, স্বাধীনতা , কারাগার – কিছু টুকরোটাকরা।

 ------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

'সুপ্রীম কোর্টের মাননীয় উকিল মহাশয়,

সেদিন রাতে শুয়ে ছিলাম। দুজন মহিলা পুলিশ কর্মী এসে আমাকে উঠিয়ে দিল, আমি জানতে চাইলাম, কেন ? বলল, এস পি অঙ্কিত গর্গ  এসেছেন, চলো।

পাশের ঘরে নিয়ে গেল। সেখানে এস পি অঙ্কিত গর্গ ছাড়াও ছিলেন কিরন্দুল থানার এস ডি পি ও ছিলেন।

ওই দুই মহিলা পুলিশকে ঘর থেকে  ওরা চলে যেতে বললো। এও বললো, যে, এই ঘরের কথা যেন ঘরের ভিতরেই থাকে, নইলে তাদের কপালে দুঃখ আছে।

কন্সটেবল মানকর ও বসন্তকে ডাকা হয়েছিল। 'মাগী, তুই জানিস নিশ্চয়, আমরা একসাথে এই পরিকল্পনাটা করেছি, আর মনে হচ্ছে, এটা সফল হতে চলেছে। '

উনি মানকরকে বললেন, 'তুমি খুব সাহসের সাথে কাজ করেছ, বেটা। আমি তোমার জন্য গর্বিত।'

মাগী, তুই জানিস, আমি কে ? আমি বিজাপুরের এস পি। আর খুব তাড়াতাড়িই আমি আরো বড় পদ পেতে চলেছি।' টেবিলে ঘুঁষি মেরে বললেন, 'সব কিছু শুরু হতে চলেছে এখান থেকেই। আমরা যা বলব, তাই হবে। আমরাই এখানে প্রশাসন এবং সরকার। মাগী, তুই কোন সাহসে মানকরের অসম্মান করিস ? ওর তো এখন পদোন্নতি হবে !'

কিছু কাগজে সই করতে বল্লো। আমি করবো না বলে যাচ্ছিলাম। আমাকে সমানে চাপ দেওয়া হচ্ছিল ও খুব কড়া ভাষায় বাজে কথা বলে যাওয়া হচ্ছিল। আমি তাও সই করতে চাইনি। তখন আমার পায়ে ইলেক্ট্রিক শক দেওয়া শুরু হয়।

কাগজে লেখা ছিল, 'হিমাংশু কুমার, প্রশান্ত ভূষণ , কোলিন মেধা পাটেকর, নন্দিনী সুন্দর, অরুন্ধতী রায়, কবিতা শ্রীবাস্তব, স্বামী অগ্নিবেশ, মনীশ কুমার, রমা সোধি, এসারের মালিক সবাই নকশাল সমর্থক। আমি দিল্লি গিয়েছিলাম, কারণ, ওরা আমাকে ডেকে পাঠিয়েছিল, টাকা দেবে বলে। এসার আমার, মনীশ আর রমা সোধির মাধ্যমে নকশালদের সবসময় টাকা পাঠাত। লিঙগা আর আমি দান্তেওয়াডার সব খবর দিল্লিতে নিয়ে যেতাম।এভাবেই আমরা নকশালদের সাহায্য করে গেছি।'

না, আমি এরকম কোন চিঠি লিখিনি। ওদের কোন কাগজে সইও করিনি। আমি বললাম, আমাকে মেরে ফ্যালো। কিন্তু এরকম কোন অপরাধ আমি কবুল করব না, আমি কোন অপরাধ করিনি।

আমি মরতে চেয়েছিলাম। আমি বলেছিলাম এর থেকে আমাকে মেরে ফেল। কিন্তু সই আমি করব না, আমি কিছু লিখব না।

অত্যাচার শুরু হল।

বারেবারে ইলেকট্রিক শক দেবার পর, আমার জামাকাপড় খুলে আমাকে নগ্ন করা হল। এস পি অঙ্কিত গর্গ আমাকে দেখতে লাগলেন। আমার শরীরের দিকে তাকিয়ে জঘন্য ভাষায় গালি দিতে লাগলেন।তারপর তিনটে ছেলে এসে উল্টোপাল্টা কাজ শুরু করতে শুরু করল। আমাকে ধাক্কা মারল। আমি পড়ে গেলাম। তারপর আমার শরীরে পাথর ঢোকানো হল,  আমি প্রায় অজ্ঞান হয়ে গেলাম ...


সোমবার, ১০ ই অক্টোবর, ২০১১

সকালে ওরা এসে আমাকে বলল ফ্রেশ হয়ে নিতে, কোর্টে যেতে হবে। চা খেয়ে বাথরুমে গেছি, মাথা ঘুরতে শুরু করল, একটু বাদেই আমি পড়ে গেলাম, বাথরুমের মধ্যেই।পড়তেই জ্ঞান হারালাম। হুঁশ ফিরল যখন, তখন দান্তেওয়াড়া হাসপাতালে। তখন প্রচণ্ড ব্যথা টের পেতে শুরু করেছি, আমি দাঁড়াতে পারছিলাম না, বিছানা থেকে নামতেই পারছিলাম না।

 কাউকে বলিনি, ভয়ে। আমাকে ভয় দেখিয়ে রাখা হয়েছিল, বললে কী হতে পারে বলে। তাও আমি সুযোগ খুঁজছিলাম, আমার উপরে হওয়া অত্যাচারের কথা কোনভাবে জানানোর জন্য। কিন্তু সুযোগ পেলাম না। সবসময় পুলিশ ঘিরে ছিল আমাকে।

দুটো নাগাদ পুলিশের গাড়িতে করে কোর্টে নিয়ে গেল, বহুক্ষণ ধরে কোর্টের বাইরে অপেক্ষা করিয়ে রাখল। ভিতর থেকে এস ডি পি কাগজ নিয়ে এসে বললেন, সাইন করো।

কী করতাম ? এর থেকে তো জেলে গেলেই ভাল ছিল।

বিচারক মহোদয়া কিছু না দেখে, আমাকে কিছু জিজ্ঞাসা না করে জেলে পাঠিয়ে দিলেন। '


কিছু তথ্য।

১। ২৬ শে জানুয়ারী এস পি অঙ্কিত গর্গ দেশের সরকার বাহাদুরের কাছ থেকে বাহাদুরি ও সাহসিকতার জন্য পদক পেয়েছেন।
২ সোনি সোরিকে কোলকাতায় শারীরিক পরীক্ষার জন্য নিয়ে আসা হয় কোলকাতার এন আর এস মেডিক্যাল কলেজে। সেখানে এই রিপোর্ট দেওয়া হয়। আশ্চর্যের নয়, ছত্তিশগড়ের হাসপাতালের রিপোর্টে এসব কিছুই বলা হবে না।

 

 

 



  

জেলখানা থেকে লেখা সোনি সোরি'র আরেকটি চিঠি। ৩রা ফেব্রুয়ারীর এই চিঠিতে উনি এই প্রশ্নগুলি করেছেন ভারতবর্ষের সমস্ত নাগরিকদেরই, তিনি উত্তর চান।



 "এটি সকলের জন্যই। যারা সমাজসেবী, এন জি ও, মানবতা অধিকার রক্ষার কর্মীরা, মহিলা কমিশন, সমস্ত ভারতীয় নাগরিকেরা -- এদের কাছে এক অত্যাচারিত আদিবাসী মহিলা চাইছেন তার প্রশ্নগুলির জবাব ও বিচার।

১।আমি জানতে চাই, আমাকে জোর করে নগ্ন করে ইলেকট্রিক শক দিয়ে, পায়ুদ্বারে পাথর ঢুকিয়ে কি নকশাল সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে? কেন মহিলাদের প্রতি এতো অনাচার? সকল দেশবাসীর কাছেই আমি এর জবাব চাই।

২।ভেবেছিলাম আমাকে যখন জোর করে নগ্ন করা হচ্ছে তখন কেউ একজন হয়তো আমাকে বাঁচাতে আসবে। মহাভারতে তো দ্রৌপদী পার পেয়ে গেলেন কৃষ্ণকে ডেকে, আর আমি কাকে ডাকবো?  আদালতের নির্দেশে আমাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিলো। আমার আর নতুন করে সম্মান হারানোর কোন ঠাঁই নেই আর আমাকে কে বাঁচাবে বেইজ্জতের  হাত থেকে?

আপনাদের সকলের কাছ থেকেই এর জবাব চাইছি আমি। 

৩।পুলিশ অফিসার,  এস পি অঙ্কিত গর্গ আমাকে বললেন " শালী হারামী,কুত্তি। তুই তো একটা বেবুশ্যা। নকশাল লীডারদের কাছে তোর শরীর বেচিস তুই। ওরা আসেও তোর বাড়ীতে সারা দিনরাত ধরে। জানি,জানি, আমরা সব জানি।' আরো বল্লেন " তুই নিজেকে বলিস তুই একটা ভালো টিচার কিন্তু তুই তো দিল্লি গিয়েও তোর শরীর বেচে আসিস। তুই কি ভাবিস নিজেকে? তোর ধারনা তোর মতন একটা পাতি মেয়েছেলেকে  বাঁচাতে কোনো হোমড়া চোমড়ারা ছুটে আসবে? " কোন অধিকারে কোনো পুলিশ অফিসার ঐ কথা বলতে পারে? আজকের দিনে ইতিহাস ঘাঁটলেই দেখা যাবে সব দেশেই যুদ্ধের সময়ে সেই দেশের মেয়েরা স্বদেশের জন্য কতো আত্মত্যাগ করেছেন। ঝাঁসীর রাণী লক্ষ্মীবাইও তো বৃটিশের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন - তিনি তো নিজেকে বিক্রি করেন নি। ইন্দিরা গান্ধী ভারতের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন - তিনিও কি নিজেকে বিক্রি করেছিলেন? আর আজকের দুনিয়ায় যতো মহিলারা নিজের নিজের জায়গায় কাজ করছেন তারাও কি নিজেদের বেচে দিচ্ছেন? আমাদের সবারই তো একই সাথে থাকার কথা, কিন্তু আমাকে সাহায্য করতে কেন কেউ এগিয়ে আসছে না? আমি এর উত্তর চাই।

৪। কে জন্ম দিয়েছিলো এই দুনিয়াকে? কারা প্রসব করেছিলো বীর স্বাধীনতা সংগ্রামীদের? যদি মহিলারা না থাকত ভারত কি স্বাধীনতা পেতে পারত? বলুন ? তো আমিও তো একজন মহিলা, কেন আমার সাথে এমন ব্যবহার করা হোলো?

৫। আমার পড়াশুনা করাকেও টিটকারী দেওয়া হয়েছে। আমি ডিম্রিপালের গান্ধীবাদী স্কুল, রুক্মিনী কন্যা আশ্রমে লেখাপড়া শিখেছি। আমি খুব দৃঢ় ভাবে শিক্ষার সমর্থক। বিশ্বাস করি শিক্ষার ক্ষমতায়। এর জন্যেই আমি যেকোনো সমস্যার মোকাবিলা করতে পারি - সে নকশাল  বা অন্য যে কোনো সমস্যাই হোক না কেন। শিক্ষা আমার বেঁচে থাকার উপায় আর আমার কলমই আমার হাতিয়ার। অথচ আমাকেই এরা নকশাল সমর্থক হিসেবে জেলে ঢুকিয়ে দিলো। মহাত্মা গান্ধীও একই নীতিতে বিশ্বাস করতেন। যদি মহাত্মা আজও বেঁচে থাকতেন তাহলে কি তাঁকেও নকশাল সমর্থক হিসেবে জেলে বন্দী করা হোতো ? এর উত্তর আমি চাই।

৬।কেন শুধু গাঁয়ের মানুষ আর আদিবাসীদেরই মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে নকশাল নাম দিয়ে জেলে পাঠানো হচ্ছে? আরো তো কতো লোকেই নকশালদের সমর্থক হতে পারেন, কিন্তু শুধু কি নিরক্ষর,অশিক্ষিত সরল মানুষ বলেই আমাদের উপর এই অত্যাচার? আমরা বনে জঙ্গলে কুঁড়েঘরে থাকি,  আমাদের টাকা  পয়সা নেই, সেই জন্যই কি আমাদের বেছে নেওয়া হয়েছে ? না কি এরা ভাবেন যে আমাদের অত্যাচার সহ্য করবার ক্ষমতা আরো বেশী - তাই? এর জবাব দিন আপনারা।

৭।আমরা যারা আদিবাসী, আমাদের উপর চলছে অকথ্য অত্যাচার। মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে বলা হচ্ছে আমরা নাকি নকশালদের সমর্থক। একটা দুটো কেস দিয়েই পাঁচ বছর ছয় বছর জেলে আটকে রাখা হচ্ছে।

৮।আমাদের জন্য না আছে বিচার, না আছে জামিন না আছে মুক্তি। কেন? কেন?  আদিবাসীদের ক্ষমতা নেই সরকারের সাথে লড়াই করবার, তো সরকারও আর আদিবাসীদের মদত দেয় না। না কি আমরা তো আর বড় বড় রাজনৈতিক দলের নেতদের ছেলে মেয়ে স্বজন নই।আর কতোদিন আদিবাসীদের এই অনাচার সহ্য করে যেতে হবে? সমস্ত ভারতীয় নাগরিকদের কাছেই আমার এই প্রশ্ন, এর উত্তর দিন।

৯। জগদলপুর আর দান্তেওয়ালার জেলখানায় বন্দী করে নিয়ে আসা হয়েছিলো ১৫-১৬ বছরের ছেলে মেয়েদের। আজ তারা ২০-২১ বছর বয়সী। কিন্তু এখনো পর্যন্ত তাদের মামলার শুনানীই শুরু হয় নি। যদি এদের মামলাই শুরু না হয় শিগগির তাহলে এদের জন্যে কি রয়েছে ভবিষ্যতে? যত আছেন মানবতা অধিকার রক্ষা কমিটির সদস্য, এন জি ও'র সদস্য, বুদ্ধিজীবিরা - তাদেরকে আবেদন করছি,  এইটা নিয়ে একটু ভাবুন।

১০। আর এই নকশালেরা আমার বাবার বাড়ী লুটে নিয়েছিলো আর পায়ে গুলি মেরে পঙ্গু করে দিয়েছিলো বাবাকে। কেন এটা তারা করেছিলো?  কারণ তারা ভেবেছিলো আমার বাবা একজন পুলিশের চর। সেই বাদে বিদেমা গাঁয়ের অন্তত ২০-২৫ জন মানুষ  নকশাল সমর্থক সন্দেহে এখনো জেলবন্দী। আর তাদের বন্দীর হওয়ার অপরাধেই নকশালেরা  আমার বাবাকে শাস্তি দিয়েছিল। আমি আপনাদের কাছে জানতে চাই কারা এর জন্যে দায়ী? সরকার না পুলিশ না আমার বাবা? আমার বাবার জন্য কোনো সাহায্য নেই, বরং, তাঁরই মেয়েকে পুলিশ আজ ধরে লাঞ্ছনা করছে। আমার বাবা যদি রাজনীতি করতেন তো তাহলে আমরা এতোদিনে অনেক সাহায্য পেতাম, কিন্তু আমরা তো সামান্য গ্রামবাসী, তায় আদিবাসী, সরকার আমাদেরকে সাহায্য করবে কেন?

বলুন আমায়। জবাব দিন। 


নাঃ, এখানেই শেষ নয়। কিছু লোকজন, মানবাধিকার কমিশন এই নিয়ে হইচই করার পরে সুপ্রীম কোর্ট থেকে সোনিকে AIIMSএ রেখে চিকিৎসার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু সে সৌভাগ্য বেশি দিন সয় নি। আবার সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ছত্তিশগড়ে,  জেলে। AIIMSএ একের পর একবার চিকিৎসা ও ভর্তির কথা হয়েও শেষ মুহূর্তে প্রত্যাখান করা হয়েছে। জেলে কেমন আছেন সোনি? সেখান থেকে কী বলছেন?


 

২৮ শে জুলাই লেখা এক চিঠির থেকে কিছু অংশ,

"১। আমাকে 'নগ্ন' করিয়ে মাটিতে বসিয়ে রাখা হয়।
২। আমি খিদের চোটে কাতর
৩। আমাকে নিয়ে টানাটানি চলতে থাকে, শরীরের সমস্ত অংশ ধরে ধরে
৪। আমাকে নকশাল আর দেশদ্রোহী বলে গালাগাল আর অত্যাচার চলতে থাকে।

আমার জামাকাপড়, সাবান সব এরা কেড়ে নিয়েছে। আমার নামে নিত্যনতুন অভিযোগ আনে এরা।

কতদিন, আর কতদিন ছত্তিশগড় সরকার প্রশাসন আমাকে এভাবে নগ্ন করে চলবে ? আর কতদিন ? আমি একজন ভারতীয় আদিবাসী মহিলা। আমারও তো আব্রু আছে, সম্মান আছে। ...আমাকে বরং মৃত্যুদণ্ডাজ্ঞা দেওয়া হোক, সেও ভাল। নইলে তো আমাকে এভাবেই জেলের মধ্যে অত্যাচার করে মারা হবে। সেটাই বোধহয় সরকার চায়। কিন্তু কী অপরাধে? কী অপরাধ করেছি আমি, যার জন্য এই অত্যাচার আমাকে সইতে হবে ?"


কী অপরাধ করেছেন সোনি সোরি ? কার কাছে উত্তর আছে ?

সোনি সোরি প্রশ্ন করেছেন, দেশের সুপ্রীম কোর্টকে। প্রশ্ন করেছেন স্বাধীন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রকে, রাষ্ট্রের নাগরিকদের - আমাদের।

 

আমাদের কাছে উত্তর আছে ? 

 
চিঠিগুলির হিন্দি ও ইংরাজী বয়ান আছে এখানে, http://sonisori.wordpress.com/,http://kafila.org/2012/08/07/it-would-have-been-better-if-you-had-given-me-death-penalty-soni-sori/

আন্তর্জাতিক নারীদিবসের ভিডিওঃ http://www.youtube.com/watch?v=UWnCrB1qwE4

 

অনুবাদ করেছেন দীপ্তেন, ঈপ্সিতা। সংকলনন ঃ ঈপ্সিতা 

http://www.guruchandali.com/default/2012/08/17/1345146900000.html#.UOhJWuS-pA0

 

সোনি সোরির মুত্তিুর দাবিতে উত্তাল কলকাতা

 

চিররঞ্জন পাল | নভেম্বর 28, 2012 14:55 
 

ছত্তিসগঢ়ের দান্তেওয়াড়া অঞ্চলের জুবেলির সুকল শিক্ষিকা আদিবাসী নারী সোনি সোরি৷ দিল্লিতে গত 4অক্টোবর2011 তাঁকে গ্রেফতার করা হয়৷ তিনি আদালতের কাছে আবেদন করেছিলেনতাঁকে যাতে ছত্তিসগড়ে ফেরত না পাঠানো হয়৷ তিনি দিল্লিতেও এসেছেন সকলের সামনে সত্যকে তুলে ধরার জন্য৷ তাঁর অভিযোগ – তাঁকে মেরে ফেলার জন্যই মিথ্যে কেসে ফাঁসিয়েছে ছত্তিসগঢ়ের পুলিশ৷ তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণারাষ্ট্রদ্রোহিতা এবং ইউএপিএ ইত্যাদি অভিযোগ আনা হয়৷ আদালত তাঁর আবেদন খারিজ করে দিয়ে ছত্তিসগঢ়ে তাঁকে ফিরিয়ে নিয়ে যাবার আদেশ দেয়৷ পুলিশি হেফাজতে তাঁর ওপর অকথ্য অত্যাচার হয়৷ দান্তেওয়াড়া হাসপাতালের সিনিয়র মেডিকেল অফিসারের বত্তুব্য অনুযায়ী, "তাঁর মাথার ডান দিকে কয়েকটি কালসিটে পড়ে রয়েছে৷ দেখে মনে হয়েছে কোনো ভারি বস্তু দিয়ে আঘাত করা হয়েছে৷ এছাড়াওতাঁর পিঠে প্রচণ্ড ব্যাথাও রয়েছে৷"

পরবর্তী সময়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজে সোনির শারীরিক পরীক্ষা হয়৷ হাসপাতালের রিপোর্টে পরিষ্কারভাবে লেখা হয়েছে সোনির যৌনাঙ্গের ভেতর থেকে দুটি এবং পায়ুর মধ্যে একটি পাথর পাওয়া গেছে৷ যে পুলিশ সুপারিন্টেডেন্ট অঙ্কিত গর্গ জেল কুঠুরিতে ঢুকে আরও তিনজন পুলিশের সহযোগিতায় তাঁর যৌনাঙ্গে এবং পায়ুদেশে পাথর ঢুকিয়েছে তাকেই ভারত রাষ্ট্র শৌর্যবীর্যের পুরস্কার হিসেবে রাষ্ট্রপতি পদক দেয়৷ এই অঙ্কিত গর্গের নির্দেশেই সোনির ওপর দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক অত্যাচার চলেইলেকট্রিক শক৲ দেওয়া হয়৷

তাঁর শারীরিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে সুপ্রিম কোর্ট দিল্লির এইমস৲-এ ভর্তি করাবার জন্য ছত্তিসগঢ় রাজ্য পুলিশকে নির্দেশ দেয়৷ সেখানে তাঁর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলেও বর্তমানে তিনি রায়পুরের সেন্ট্রাল জেলে আবার অত্যাচারের মধ্যেই রয়েছেন৷ হাসপাতালের নির্দেশ অনুযায়ী তাকে যে ওষুধ দেওয়ার কথাতা দেওয়া হচেছ না৷ শুনানির দিনে তাঁকে কোর্টে হাজির করানো হচেছ না৷

এই সোনি সোরির মু৲ত্তিুর দাবিতেই গতকাল 27 নভেম্বর কলেজস্ট্রীটের র্যাডিকেল হিউম্যানিস্ট-এর ঘরে জমায়েত হয়েছিলেন বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি ও ব্যত্তিু৷ সভার শুরুতে পীযুষ গুহ রায়পুর জেলের ভয়াবহ পরিস্থিতির কথা তুলে ধরেন৷ সেখানে কীভাবে দুর্নীতি ও অত্যাচার চলে তার বিবরণ দিতে গিয়ে তিনি বলেন, "ওখানে তো জলের জন্যখাবারের জন্যও টাকা দিতে হয়৷" তিনি বলেন,  কেবলমাত্র সোনি সোরি ননবহু নির্দষ আদিবাসী বিনা বিচারে সেখানে আটক রয়েছে৷ তিনি উপস্থিত ব্যত্তিুদের কাছে আবেদন করেন সোনি সোরির উদ্দেশে চিঠি লেখার জন্য৷ সোনি সোরি মুত্তিু মোর্চা আয়োজিত এ দিনের সভায় মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চের কিরীটি রায়শ্রমজীবী মহিলা সমিতির অনুরাধা তলওয়ারশ্রমজীবী স্বাস্থ্য উদ্যোগের পক্ষে ড. পুণ্যব্রত গুণডা. আশিস কুন্ডুগণ আন্দোলনের বর্ষীয়ান নেতৃত্ব সুখেন্দু ভট্টাচার্য,রবি রায় প্রমুখ ব্যত্তিুরা বত্তুব্য রাখেন৷ কলকাতা মেডিকেল কলেজ ছাত্র সংগঠনপ্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়,যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধিরাও এদিনের সভায় উপস্থিত হয়ে সোনি সোরির মুত্তিুর দাবিতে আগামী দিনে আরও বৃহত্তর কর্মসূচি গ্রহণের প্রস্তাব দেন৷ উপস্থিত সকলেই সোনি সোরির মুত্তিুর দাবি করেন ও একজন আদিবাসী নারীর ওপর রাষ্ট্রের এই নির্যাতনের তীব্র নিন্দা করেন৷

এদিনের সভায় সভা পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন দুর্বার মহিলা সমন্বয় কমিটির ডা. স্মরজিৎ জানা৷ সোনি সোরির ওপর ঘটে চলা অত্যাচার ও তার প্রতিবাদ বিষয়ে একটি পুস্তিকাও প্রকাশ করা হয়েছে সোনি সোরি মুত্তিু মোর্চার পক্ষ থেকে৷

http://www.thesundayindian.com/bn/story/%E0%A6%B8%E0%A7%8B%E0%A6%A8%E0%A6%BF-%E0%A6%B8%E0%A7%8B%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%B0-%E0%A6%AE%E0%A7%81%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BF%E0%A7%81%E0%A6%B0-%E0%A6%A6%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%A4%E0%A7%87-%E0%A6%89%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%B2-%E0%A6%95%E0%A6%B2%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A6%BE/14/1827/

সোনি সোরির উপর অত্যাচার করেছে যৌথবাহিনী, জানাল মেডিক্যাল রিপোর্ট

Update: November 29, 2011 14:35 IST

কিষেণজির ভুয়ো এনকাউন্টারের অভিযোগে যৌথবাহিনীর বিরুদ্ধে যখন মানবাধিকার সংগঠনগুলি সরব, সেই সময় ছত্তিসগড়ে নারকীয় অত্যাচারের অভিযোগে কাঠগড়ায় সেই যৌথবাহিনীই। 
কলকাতার এনআরএস হাসপাতালের গোপন রিপোর্টেই স্পষ্ট, মাওবাদী সন্দেহে ধৃত আদিবাসী শিক্ষিকা সোনি সোরির যৌনাঙ্গ এবং মলদ্বারে পাথর ঢুকিয়ে অত্যাচার করা হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্টে পেশ হওয়া এই রিপোর্ট আরো একবার উসকে দিল রাষ্ট্রীয় দমনপীড়নের অভিযোগ। 

মাওবাদী সন্দেহে গত ৪ অক্টোবর দিল্লিতে গ্রেফতার হয়েছিলেন সোনি সোরি। এরপর তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নেয় ছত্তিসগড় পুলিস। মানবাধিকার সংগঠনগুলি অভিযোগ করে, দান্তেওয়াড়া এবং জগদলপুরের জেলে নারকীয় অত্যাচার চলছে সোনি সোরির উপর।
গোপন এক চিঠিতে সোনি অভিযোগ করেন, দান্তেওয়াড়ার পুলিস সুপার অঙ্কিত গর্গের নেতৃত্বে ৮ অক্টোবর মধ্যরাতে একটানা অত্যাচার চলে তাঁর উপরে। তাঁকে বিবস্ত্র করে ইলেকট্রিক শক দেওয়া হয়, চলে মারধর এবং যৌনাঙ্গ ও মলদ্বারে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় পাথর। এ নিয়ে মামলা হয় আদালতে। ছত্তিসগড়ের তিন- তিনটি হাসপাতালে পরীক্ষাও করানো হয় তাঁর। কিন্তু হাসপাতালের রিপোর্ট ক্লিনচিট দিয়ে দেয় প্রশাসনকে। 

এর পর সুপ্রিম কোর্ট ছত্তিসগড়ের বাইরে অন্য কোনো রাজ্যে সোনি সোরির শারীরিক পরীক্ষা করানোর নির্দেশ দেয়। সোনিকে ২৫ অক্টোবর ভর্তি করা হয় কলকাতার এনআরএস হাসপাতালে। এর পর সুপ্রিম কোর্টে যে গোপন রিপোর্টে দেয় এনআরএস কর্তৃপক্ষ, তাতে অত্যাচারের তত্ত্বই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। 
রিপোর্টে বলা হয়েছে, সোনির যৌনাঙ্গে দুটি এবং মলদ্বারে একটি পাথর পাওয়া গিয়েছে। মেরুদণ্ডেও রয়েছে গভীর ক্ষত। চিহ্ন রয়েছে ইলেকট্রিক শকেরও। এ রাজ্যে কিষেণজির উপরে অত্যাচারের অভিযোগে যে ভাবে কাঠগড়ায় উঠেছে যৌথবাহিনীর নাম। এবার সেই অস্বস্তিই আরো বাড়িয়ে দিল এনআরএসের মেডিক্যাল রিপোর্ট।

http://zeenews.india.com/bengali/zila/soni-sori-tortured-by-joint-force_1745.html
শিলচরে আরএসএস কর্মিসভায় সরসঙ্ঘচালকের মন্তব্য, ভারতে নয়, ধর্ষণ হয় ইন্ডিয়ায়। ধর্ষণের ঘটনার জন্য শহরাঞ্চলের মহিলাদের পাশ্চাত্য জীবনধারাকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন তিনি। মধ্যপ্রদেশের বিজেপি নেতা তথা রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী কৈলাশ বিজয়ভার্গেয় আবার পুরুষের হাত থেকে বাঁচতে মহিলাদের লক্ষ্মণরেখা না পেরনোর পরামর্শ দিয়েছেন। একদিকে আরএসএস প্রধান। অন্যদিকে, দলেরই এক মন্ত্রী। ধর্ষণ নিয়ে  জোড়া মন্তব্যে অস্বস্তিতে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। দেশজুড়ে সমালোচনার মুখে পড়ে দলের তরফে মধ্যপ্রদেশের শিল্পমন্ত্রীকে বক্তব্য প্রত্যাহারের নির্দেশ দেওয়া হয়। 

এরপর, দলের চাপে ক্ষমা চেয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন কৈলাশ বিজয়ভার্গেয়। দাবি করেন, সংবাদমাধ্যম তাঁর কথার ভুল ব্যাখ্যা করেছে। মধ্যপ্রদেশের শিল্পমন্ত্রীকে দুঃখপ্রকাশে বাধ্য করলেও আরএসএস প্রধানের বক্তব্যকে সমর্থনে বাধ্য হয়েছে বিজেপি। মহিলাদের অনুশাসনে বেঁধে রাখার পরামর্শ আর আরএসএস প্রধানের ভারত-দর্শনের সমালোচনায় সরব হয়েছে সব মহল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে কিরণ বেদি, বৃন্দা কারাতরা মোহন ভাগবতের বিস্ফোরক মন্তব্যের প্রতিবাদে সরব হলেন। ইনদওরে মধ্যপ্রদেশের শিল্পমন্ত্রীর বিতর্কিত মন্তব্যের প্রতিবাদে শুক্রবার ভোপালে বিক্ষোভ দেখান মহিলারা।


বেফাঁস মন্তব্যে বিপাকে বিজেপি


বেফাঁস মন্তব্যে বিপাকে বিজেপি
ভোপাল ও শিলচর: মহিলাদের উপর অত্যাচার নিয়ে দেশজোড়া বিক্ষোভের মধ্যেই একের পর এক নেতার বেফাঁস মন্তব্যে বিপাকে বিজেপি৷ ধর্ষণের মতো ঘটনা 'ভারতবর্ষে ঘটে না, তা হয় ইন্ডিয়ায়'- মঙ্গলবার অসমের শিলচরে একটি সভায় এই মন্তব্য করেছিলেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত৷ তাঁর মন্তব্য প্রকাশ্যে আসার পর বিজেপির অস্বস্তি কাটার আগেই আরও বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন মধ্যপ্রদেশের বিজেপি সরকারের শিল্পমন্ত্রী কৈলাস বিজয়ভার্গিয়৷ তাঁর বক্তব্য, 'মেয়েরা মর্যাদার লক্ষ্মণরেখা পার করলে সীতাহরণের মতো ঘটনা তো ঘটবেই৷' 
সরাসরি সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবতের বক্তব্য উড়িয়ে দিতে পারেননি বিজেপি নেতৃত্ব৷ শুক্রবার বিজেপি মুখপাত্র রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, ভাগবতের মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে৷ 'সরসঙ্ঘচালক আসলে ভারতীয় সংস্কার, ঐতিহ্য ও মূল্যবোধ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে ওই মন্তব্য করেছেন৷ তাকে এই মুহূর্তে দেশজোড়া বিতর্কের সঙ্গে এক করে দেখা ঠিক হবে না', বলেছেন প্রসাদ৷ যদিও ভাগবত বলেছিলেন, শহরের মেয়েদের পাশ্চাত্য ধাঁচের জীবনযাপনের জন্যই ধর্ষণ, শ্লীলতাহানির মতো ঘটনা বাড়ছে৷ তবে আরএসএসের প্রসঙ্গে সতর্ক থাকলেও মধ্যপ্রদেশের শিল্পমন্ত্রী কৈলাসকে অবশ্য ছাড় দেয়নি বিজেপি৷ দলের চাপে শুক্রবার বিকেলেই বিবৃতি দিয়ে তিনি জানান কাউকে আঘাত করার উদ্দেশ্যে ওই কথা বলেননি তিনি৷ 
রামায়ণের প্রসঙ্গ টেনে কৈলাস বলেছিলেন 'নারীর মর্যাদাই সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ৷ তা লঙ্ঘন করলে সীতা-হরণ হবেই৷ প্রত্যেকের জন্যই লক্ষ্মণরেখা টানা রয়েছে৷ আর তার বাইরেই বসে আছে রাবণ৷' কৈলাসের এই মন্তব্য প্রকাশিত হওয়ার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই অবশ্য তার সঙ্গে দূরত্ব বাড়ায় বিজেপি৷ রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, 'দলের সঙ্গে কৈলাসের মন্তব্যের কোনও সম্পর্ক নেই৷ তাঁকে মন্তব্য প্রত্যাহার করার নির্দেশ দিয়েছে দল৷' 
তবে সমালোচকদের মুখ এতে বন্ধ করা যায়নি৷ দুই নেতার মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন জাতীয় মহিলা কমিশনের সভাপতি মমতা শর্মা৷ তাঁর মতে, 'আজ যখন দেশের মহিলারা বহু বাধা পেরিয়ে প্রগতির পথে হাঁটতে শুরু করেছেন, সেই সময়ে নেতাদের এ ধরনের মন্তব্য ধাক্কা দেবে নারী ক্ষমতায়নের মূল প্রক্রিয়াতেই৷' সিপিএম নেত্রী বৃন্দা কারাট শুক্রবার বলেন, 'মোহন ভাগবত না ভারতকে চেনেন, না ইন্ডিয়াকে৷ অধিকাংশ ধর্ষণের ঘটনাই ঘটে গ্রামাঞ্চলে, যার শিকার হন দলিত, আদিবাসী ও শ্রমিক শ্রেণির মহিলারা৷ এ ধরনের মন্তব্য আসলে অপরাধীদেরই সাহস জোগায়৷'

দিল্লির গণধর্ষণের পর প্রবল চাপে থাকা কংগ্রেস বিজেপির বিরুদ্ধে আসরে নামতে সময় নষ্ট করেনি৷ কংগ্রেস নেতা ও মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দিগ্বিজয় সিং শুক্রবার বলেন, 'ভাগবতের ওই কথা সঙ্ঘের আদর্শটাই স্পষ্ট করে দেয়৷' এ ধরনের বেফাঁস মন্তব্য করার আগে রাজনীতিকদের মাথায় রাখা উচিত যে তাঁদের বাড়িতেও মহিলারা রয়েছেন, মন্তব্য করেছেন আর এক কংগ্রেস নেতা রশিদ মাসুদও৷ - সংবাদসংস্থা

 দিল্লির পর এবার রাজধানীর উপকণ্ঠ নয়ডা। শনিবার সকালে মিলল কল সেন্টারের কর্মী, এক তরুণীর মৃতদেহ। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের সন্দেহ, ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে তাঁকে। 

শুক্রবার রাত থেকেই নিখোঁজ ছিলেন কল সেন্টারে কর্মরতা ২১ বছরের তরুণী। শনিবার সকালে সেক্টর ৬৩-তে তাঁর বাড়ির কাছেই মেলে দেহ। পুলিশ জানতে পেরেছে, শুক্রবার রাত ৯টা নাগাদ চার মহিলা সহকর্মীর সঙ্গে অফিস থেকে বেরিয়েছিলেন। চোটপুর কলোনির (অর্থাত্‍ যেখানে তাঁর বাড়ি) মুখেই চার জন নিজেদের বাড়ির দিকে চলে যান। কিন্তু তিনি বাড়ি পৌঁছননি। 

এদিন সকালে উদ্ধার হয় দেহ। দেহে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলেই ধর্ষণের বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

ট্রেনে আক্রান্ত যুবতীকে আনতে বিহারে পুলিশ
রাজ্যের কাছে পাহাড়ের মেয়েদের নিরাপত্তার দাবি গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার।
দার্জিলিং: দিল্লিগামী ট্রেনে শ্লীলতাহানির শিকার যুবতীর বাবা ও ভাইকে সঙ্গে নিয়ে বিহার রওনা হল দার্জিলিং জেলা পুলিশের একটি দল৷ দলে রয়েছেন এক মহিলা কনস্টেবল-সহ তিন পুলিশ আধিকারিক৷ বিহারের হাসপাতালে চিকিত্সাধীন দুই সন্তানের মা বছর তিরিশের ওই যুবতীর সঙ্গেও ফোনে কথা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দার্জিলিং জেলা পুলিশ সুপার কুনাল আগরওয়ালের৷ ওই যুবতীকে চিকিত্‍সার জন্য এ রাজ্যে নিয়ে আসার কথা ভাবা হয়েছে৷ 

বিহার পুলিশের তরফেই প্রথম দার্জিলিং জেলা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল৷ ওই নেপালি যুবতী সঙ্কটাপন্ন শারীরিক অবস্থার মধ্যেই কোনও রকমে নিজের নাম-পরিচয় জানিয়েছিলেন বিহার পুলিশের আধিকারিকদের৷ সেই সূত্রেই পরে মেয়েটির সঙ্গে ফোনে কথা বলেন দার্জিলিং জেলা পুলিশের আধিকারিকেরা৷ তার পর খুঁজে বার করা হয় দার্জিলিংয়ের প্রত্যন্ত গ্রামে মেয়েটির বাড়ি৷ জানতে পারা যায়, স্বামী-বিচ্ছিন্না ওই যুবতী দুই সন্তানকে নিয়ে বাপের বাড়িতেই থাকতেন৷ কাজের সন্ধানে দিল্লি যাচ্ছিলেন৷ এর আগেও তিনি একাধিক বার দিল্লি গিয়েছিলেন কাজের খোঁজে৷ 

দিল্লিগামী ব্রহ্মপুত্র মেলের কামরায় জম্মু-কাশ্মীর রাইফেলসের এক জওয়ান সমেত তিন জন তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টা করে৷ চলন্ত ট্রেন থেকে ঝাঁপিয়ে গুরুতর জখম হন ওই যুবতী৷ বিহারের ভিটা এবং আরা স্টেশনের মাঝে বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটে৷ অভিযুক্ত তিন জনকেই বক্সার স্টেশনে পাকড়াও করে জিআরপি৷ ওই যুবতীকেও ট্রেন লাইন থেকে তুলে ভর্তি করানো হয় হাসপাতালে৷ এ দিকে, এই ঘটনার প্রেক্ষিতে ভিন রাজ্যে যাতায়াতের সময়ে পাহাড়ের মেয়েদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন জিটিএ তথা গোর্খ জনমুক্তি মোর্চার নেতারা৷ আহত যুবতীর চিকিত্‍সার সব রকম ব্যবস্থা করার দাবিও জানানো হয়েছে রাজ্য সরকারের কাছে৷ জিটিএ ও মোর্চা প্রধান বিমল গুরুং এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন৷ জিটিএ'র তরফে যোগাযোগ করা হয়েছে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে৷ জিটিএ'র কার্যনির্বাহী সদস্য তথা মোর্চার সহসচিব বিনয় তামাংয়ের বক্তব্য, 'দিল্লির বাসে গণধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদ চলছে দেশ জুড়ে৷ তারই মধ্যে এই ঘটনা৷ আমরা স্বরাষ্ট্র সচিবের কাছে পাহাড়ের মেয়েদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছি৷ আক্রান্ত ওই যুবতীকে রাজ্যে এনে চিকিত্সার ব্যবস্থা করারও দাবি জানানো হয়েছে৷' 

দার্জিলিং জেলা পুলিশের বক্তব্য, দেহ ব্যবসার জন্য পাহাড়ের মেয়েদের ভিন রাজ্যে চালানের ঘটনার প্রেক্ষিতে ছ'মাস আগে এক নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল৷ তাতে বলা হয়েছিল, পাহাড়ের কোনও কিশোরী-যুবতী কোনও প্রয়োজনে অন্য রাজ্য বা বিদেশে গেলে যেন সেটা স্থানীয় থানায় জানিয়ে রাখা হয়৷ জেলা পুলিশের এক আধিকারিকের বক্তব্য, সেটা হলে যে কোনও ধরনের বিপদের মোকাবিলা সহজ হয়৷ 

ধর্ষণের ঘটনায় আমৃত্যু কারাবাস, জুভেনাইলস অ্যাক্টের বয়স ষোলোয় নামিয়ে আনার মতো প্রস্তাব দিল এ রাজ্য। আজ দিল্লিতে কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্যোগে আয়োজিত সম্মেলনে এইসব প্রস্তাব দেওয়া হয়। সব পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ দমনে কড়া আইন চালুর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীলকুমার শিণ্ডে। ধর্ষণের তদন্তে গাফিলতি থাকলে সংশ্লিষ্ট পুলিসকর্মীকে সঙ্গে সঙ্গে সাসপেন্ড করার জন্য রাজ্যগুলিকে পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্র।  


দিল্লি গণধর্ষণকাণ্ডের পর ফৌজদারি আইন সংশোধনের জন্য সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি জে এস ভার্মার নেতৃত্বে কমিটি গঠন করে কেন্দ্র। মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ দমনে কড়া আইন চালুর ব্যাপারে রাজ্যগুলির মতামত জানতে শুক্রবার দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে একটি সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। ছিলেন বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যসচিব ও পুলিস প্রধানরা। মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য সব রাজ্যই ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের পক্ষে সওয়াল করেছে। কড়া আইন চালুর পক্ষে মত দিলেও প্রায় কোনও রাজ্যই ধর্ষণের ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডের দাবি জানায়নি। সম্মেলনে ছিলেন না পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব। রাজ্য পুলিসের ডিজি নপরাজিত মুখোপাধ্যায় বলেন, 

ধর্ষণে দোষী ব্যক্তিকে মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত কারাদণ্ড দিতে হবে। অপরাধী যাতে সহজে জামিন না পায়, দেখতে হবে তাও। জুভেনাইলস অ্যাক্টের ক্ষেত্রে বয়স আঠারো থেকে কমিয়ে ষোলো করার জন্যও কেন্দ্রের কাছে এ রাজ্যের তরফে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।  

সম্মেলনে মহিলাদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীলকুমার শিণ্ডে। এ বিষয়ে পুলিসের গাফিলতির কথা স্বীকার করে নেন তিনি। বলেন, মহিলাদের সুরক্ষায় আরও কড়া আইন প্রয়োজন। তবে, যে আইন রয়েছে তারও সঠিক প্রয়োগ হচ্ছে না।

ধর্ষণের তদন্ত ও অভিযোগ গ্রহণে নির্দিষ্ট নিয়ম চালু করতে হবে। এ ক্ষেত্রে গাফিলতি থাকলে সঙ্গে সঙ্গে সাসপেন্ড করতে হবে সংশ্লিষ্ট পুলিসকর্মীকে। কেন্দ্রের তরফে রাজ্যগুলিকে এই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

সম্মেলনে কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী কৃষ্ণা তিরথ বলেন, ধর্ষণের ক্ষেত্রে বিরলতম ঘটনায় মৃত্যুদণ্ড দেওয়া যেতে পারে। তবে, ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে অপরাধীর যৌন সংসর্গের ক্ষমতা নষ্ট করে দেওয়ার বিপক্ষে মত প্রকাশ করেন তিনি। ধর্ষণের ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া নিয়ে সম্মেলনে কোনও ঐকমত্য হয়নি। তবে, জুভেনাইলস অ্যাক্টের বয়স কমানোর বিষয়ে সবপক্ষই একমত হয়েছেন বলে জানা গেছে। অপরাধীদের সম্পর্কে তথ্য পেতে বিভিন্ন থানার মধ্যে নেটওয়ার্ক তৈরির লক্ষ্যে ক্রাইম অ্যান্ড ক্রিমিনাল ট্র্যাকিং নেটওয়ার্ক সিস্টেমসের সূচনা করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী


কেন্দ্রকে নোটিস সুপ্রিম কোর্টের, যাবজ্জীবনেই মত একাধিক রাজ্যের
এই সময়, নয়াদিল্লি: ধর্ষণের মামলা দ্রুততার সঙ্গে নিষ্পত্তি করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে নোটিস পাঠাল সুপ্রিম কোর্ট৷ একই সঙ্গে জানিয়ে দিল, ফৌজদারি মামলা চলছে এমন বিধায়ক বা সাংসদদের পদ থেকে বহিষ্কার করার বিষয়টি সর্বোচ্চ আদালতের এক্তিয়ারভুক্ত নয়৷ 

দিল্লি গণধর্ষণের পর সুপ্রিম কোর্টে একাধিক জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়৷ মামলাগুলিতে মূলত দুটি বিষয়ই প্রাধান্য পেয়েছিল৷ ধর্ষণের মামলা দ্রুততার সঙ্গে শেষ করতে হবে৷ সাসপেন্ড করতে হবে ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত বিধায়ক, সাংসদদের৷ বিচারপতি কে এস রাধাকৃষ্ণন এবং বিচারপতি দীপক মিশ্রর ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলাগুলির শুনানি ছিল শুক্রবার৷ শুনানিতে ধর্ষণ মামলাগুলি দ্রুততার সঙ্গে নিষ্পত্তির পক্ষেই মত দেয় বেঞ্চ৷ তবে বিচারের বিষয়টি ত্বরান্বিত করলেও ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত বিধায়ক, সাংসদদের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের এক্তিয়ারভুক্ত নয় বলেই মন্তব্য করেছে ডিভিশন বেঞ্চ৷ 

এ দিকে যৌন নিগ্রহের বাড়বাড়ন্ত রুখতে কঠোর আইন প্রণয়নের পথেই হাঁটছে কেন্দ্র৷ এর জন্য ২০তম আইন কমিশনের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে৷ এর জন্য প্রয়োজনে বিচারপতি ভি এস মালিমাথ কমিটির সুপারিশও মানতে পারে কেন্দ্র৷ তবে দিল্লিতে বিক্ষোভ করে ছাত্রছাত্রী বা যুবক-যুবতীরা যতই ধর্ষকের ফাঁসির দাবি করুক, রাজ্যগুলির মত মেনে নিলে আইনে পরিবর্তন এনে সেই পথে হাঁটবে না কেন্দ্রীয় সরকার৷ শুক্রবার বিজ্ঞান ভবনে নারী নিগ্রহ বিষয়ে সব রাজ্যের মুখ্যসচিব ও পুলিশ কর্তাদের নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীলকুমার শিন্ডে৷ সেখানে দেশের অধিকাংশ রাজ্যের রায়, ফাঁসি নয়, ধর্ষণ বা গণধর্ষণের সর্বাধিক সাজা হোক যাবজ্জীবন কারাদণ্ড৷ তবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বলতে প্রকৃত অর্থেই সারা জীবনের জন্য জেল চান তাঁরা৷ ১২ বা ১৪ বছরের জন্য নয়৷ 

বৈঠকে অপ্রাপ্তবয়স্কর সংজ্ঞায় পরিবর্তনের দাবি তুলেছে পশ্চিমবঙ্গ৷ এখন অপ্রান্তবয়স্ক বলতে বোঝায় ১৮ বছরের কম৷ পশ্চিমবঙ্গের দাবি, আইনে পরিবর্তন করে ১৬ বছরের কম বয়সীদের অপ্রাপ্তবয়ষ্ক বলা হোক৷ দিল্লি গণধর্ষণে অভিযুক্তদের একজন অপ্রাপ্তবয়স্ক৷ কিন্ত্ত দেখা গিয়েছে, বিকৃতমনস্কতায় সে অন্যদের থেকে কম যায় না৷ কিন্ত্ত আইন অনুযায়ী, অপ্রাপ্তবয়স্ক বলে তার সাজা খুব কম হবে৷ পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও উত্তরপ্রদেশ ও তামিলনাড়ু একই দাবি তুলেছে বলে জানিয়েছেন শিন্ডে৷ এছাড়া ঠিক হয়েছে, মহিলাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে প্রতিটি থানায় দু-জন মহিলা সাব ইন্সপেক্টর ও দশ জন মহিলা কনস্টেবল থাকবে৷ 

ধর্ষণের ক্ষেত্রে এখন সাজার পরিমাণ সর্বোচ্চ সাত বছর ও বিরলতম ক্ষেত্রে দশ বছর৷ সে জন্যই দাবি উঠেছে, আইন পরিবর্তন করে কঠোরতম শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক৷ অন্যদিকে, মহিলাদের প্রতি নির্যাতনের অভিযোগ ও চার্জশিটের সংখ্যা বাড়লেও শাস্তিপ্রাপ্তর সংখ্যা কমছে কী করে, এটাই ছিল রাজ্য সরকারগুলির উদ্দেশ্যে শিন্ডের প্রশ্ন৷ 

প্রতিটি থানায় দু-জন মহিলা সাব ইন্সপেক্টর ও দশজন মহিলা কনস্টেবল নিয়োগের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে বৈঠকে৷ দিল্লিতে এর জন্য অর্থবরাদ্দ করার কথা অর্থমন্ত্রীকে জানানো হয়েছে৷ সব রাজ্যেও যাতে দ্রুত একই ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তার জন্য চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী৷ 


কড়েয়াকাণ্ডে কলকাতা পুলিসের কাছে রিপোর্ট তলব করল রাজ্য মানবাধিকার কমিশন। আমিনুল ইসলাম ওরফে গুড্ডুর পরিবারের থেকে অভিযোগ পাওয়ার পরই অভিযুক্ত তিন পুলিসকর্মীর বিরুদ্ধে  আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা রুজু হয়েছে। অভিযুক্তদের কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছে প্রদেশ কংগ্রেস।

কড়েয়া থানার সামনে আমিনুল ইসলাম ওরফে গুড্ডুর গায়ে আগুন দেওয়ার ঘটনায় রিপোর্ট তলব করল রাজ্য মানবাধিকার কমিশন। শুক্রবার গুড্ডুর পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য। সিবিআই তদন্তের দাবি জানান তিনি।

এই ঘটনায় অভিযোগ উঠেছে চারজন পুলিসকর্মীর বিরুদ্ধে। এঁদের মধ্যে একজন অবসরপ্রাপ্ত কনস্টেবল হারুন খান। অভিযোগ পাওয়ার পর অভিযুক্ত সাব ইন্সপেক্টর বিনোদ কুমার, রঞ্জিত যাদব, কনস্টেবল নাসিম খানের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার  মামলা দায়ের হয়েছে এবং তদন্তের জন্য নিয়মানুসারে তাঁদেরকে কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার ঘটনার প্রতিবাদে এলাকায় মোমবাতি মিছিল করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ছিলেন শিল্পী সমীর আইচ।


বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ বাড়ল
এই সময়: ভারতের মোট বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ বাড়ল৷ ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত এই পরিমাণ হয়েছে ৩৬ হাজার ৫৩০ কোটি ডলার৷ ওই বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত দেশের বিদেশ থেকে নেওয়া ঋণের পরিমাণ ছিল ৩৪ হাজার ৫৩০ কোটি ডলার৷ অর্থাত্ এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর এই ছয় মাসে ভারতের বিদেশি ঋণ বেড়েছে ২ হাজার ডলার বা, ৫.৮ শতাংশ৷ 

বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ নির্ধারণ করতে যে সাতটি বিষয় দেখা হয় তার মধ্যে দেশের ব্যাঙ্কগুলিতে অনাবাসী ভারতীয়দের জমানো টাকার পরিমাণ বাড়ার সঙ্গে স্বল্পমেয়াদে আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি থেকে নেওয়া ঋণ এবং বাণিজ্যিক কারণে নেওয়া ঋণই ভারতের মোট বিদেশি ঋণের পরিমাণ বাড়ার প্রধান কারণ৷ সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ভারতের দীর্ঘমেয়াদি ঋণের পরিমাণ হয়েছে ২৮ হাজার ৮০ কোটি ডলার, যা ওই বছরের মার্চ মাসের থেকে ৫.১ শতাংশ বেশি৷ অন্যদিকে সেপ্টেম্বরে স্বল্পমেয়াদি ঋণের পরিমাণ মার্চের তুলনায় ৮.১ শতাংশ বেড়ে ৮ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা হয়েছে৷ 

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ভারতের মোট বাহ্যিক ঋণের মধ্যে স্বল্পমেয়াদি ঋণের পরিমাণ ২৩.১ শতাংশ এবং বাকী ৭৬.৯ শতাংশই দীর্ঘমেয়াদি ঋণের আওতায় পড়ে৷ উপাদানের বিচারে সব থেকে ওপরে রয়েছে ভারতের বেসরকারি ও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির বাণিজ্যিক কারণে নেওয়া বিদেশি ঋণের পরিমাণ (২৯.৮%), তারপরেই যথাক্রমে রয়েছে অনাবাসী ভারতীয়দের মোট জমার পরিমাণ (১৮.৩%) এবং ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্ক ও ইন্টারন্যাশনাল মনিটরি ফান্ড (আইএমএফ) থেকে নেওয়া ঋণ (১৩.৯%)৷ 

আবার ওই সময়ের মধ্যে নেওয়া মোট বিদেশি ঋণের ২২.৩ শতাংশ বা ৮ হাজার ১৫০ কোটি ডলার সরকারের নিজস্ব ঋণের পরিমাণ৷ ২০১১-১২ অর্থবর্ষের মার্চ মাস পর্যন্ত এই পরিমাণ ছিল ৮ হাজার ১৯০ কোটি ডলার বা, মোট ঋণের ২৩.৭ শতাংশ৷ 

অন্যদিকে, চলতি অর্থবর্ষের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ভারতের মোট বিদেশি ঋণের পরিমাণ যা হয়েছে তার ৫৫.৭ শতাংশই ডলারের হিসাবে৷ টাকা হিসাবে নেওয়া ঋণের পরিমাণ ২২.৯ শতাংশ, জাপানি ইয়েন-এর হিসাবে নেওয়া ঋণ ৮.৬ শতাংশ, সিঙ্গাপুরের ডলারের হিসাবে ৮.১ শতাংশ এবং ইউরো হিসাবে ঋণ নেওয়া হয়েছে ৩.২ শতাংশ৷ 


কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের সুদ মকুব না করলে দিল্লিতে গিয়ে আন্দোলন করার হুঁশিয়ারি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ মেদিনীপুরে বিবেক ছাত্র উত্‍সবের সমাপ্তি অনুষ্ঠানের মঞ্চে তিনি অভিযোগ করেন, বামফ্রন্ট সরকারের আমলে ইচ্ছে মতো ধার করতে দিয়েছে কেন্দ্র। যার জেরে বেড়ে গেছে দেনার পরিমাণ। তা সত্ত্বেও পঞ্চায়েত নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে আজ কার্যত কল্পতরু হয়ে ওঠেন মুখ্যমন্ত্রী। 

রাজ্য পুলিসের যে সব সাব ইনস্পেক্টর এবং কনস্টেবলের চাকরির মেয়াদ ১৫ বছর পূর্ণ হয়েছে, তাঁদের এখন থেকে জেলাতেই পোস্টিং দেওয়া হবে। এই মর্মে সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। আজ মেদিনীপুরে এই ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। 

অসংখ্য প্রকল্পের কথা ঘোষণা করলেও, রাজ্যের বেহাল আর্থিক অবস্থাটা বিলক্ষণ জানেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই কারণেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়ানো বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কেন্দ্রের মতো আগের সরকারকেও পড়তে হল মুখ্যমন্ত্রীর তোপের মুখে। "অন্য দলকে সঙ্গে নিয়ে এখন থেকেই অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে সিপিআইএম", আজ মেদিনীপুর কলেজ মাঠে এই অভিযোগ তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 

পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে জঙ্গলমহল সফরে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলেজ, হাসপাতাল, স্টেডিয়াম, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক, আইটি হাবসহ একগুচ্ছ প্রকল্পের ঘোষণা করেন। 

রাজ্যের প্রতিটি জেলার প্রতিটি ব্লক ও পুরসভাতেই বিবেক উত্‍‍সবের আয়োজনে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। শুধুমাত্র জঙ্গলমহলের তিনজেলায় এই উত্‍‍সবের জন্য সরকারি তহবিল থেকে বরাদ্দ হয়েছে ৬ কোটি টাকা। উত্‍‍সব ঘিরে বিপুল অর্থ ব্যয় নিয়ে সরব হয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিকদল। আজ পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুরে সর্বভারতীয় কৃষকসভার ৩৬ তম জেলা সম্মেলনে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রর প্রশ্ন তোলেন  বিবেক উৎসব নিয়েই। তাঁর অভিযোগ, "মেদিনীপুরে ৪ কোটি টাকার প্রকল্প করতে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। অথচ তাঁর সফরেই খরচ হয়েছে ১ কোটি টাকা।" বিবেক উৎসবে ১ কোটি খরচ করা হয়েছে বলে মত বিরোধী দলনেতার।


মেদিনীপুরে একগুচ্ছ প্রকল্পের আশ্বাস মমতার



মেদিনীপুরে একগুচ্ছ প্রকল্পের আশ্বাস মমতার
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।---পিটিআই।
পার্থসারথি সেনগুপ্ত 

মেদিনীপুর: 'দিল্লি চলো'র ডাক দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়৷ 

দুদিন আগেই কলকাতায় বিজ্ঞান কংগ্রেসের উদ্বোধনে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের উপস্থিতিতে তিনি রাজ্যকে আরও অর্থ দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন৷ আর, শনিবার মেদিনীপুরের কলেজ মাঠে আরও কয়েক কদম এগিয়ে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করলেন, বাংলার মানুষের স্বার্থে এবার তিনি আন্দোলন শুরু করবেন রাজধানীর রাজপথে৷ শীঘ্রই তাঁর আন্দোলনে অবরুদ্ধ হবে দিল্লি৷ 

এদিন এখানে কলেজ ময়দানে জঙ্গলমহল বিবেক ছাত্র যুব উত্সবের সমান্তি অনুষ্ঠানে এক বিরাট জনসভায় তিনি বলেন, 'সব টাকাই তো দেনা মেটাতে চলে যাচ্ছে৷ হাতে একটা টাকা নেই৷ আর কটা দিন দেখব৷ যদি কেন্দ্র ঋণের উপর সুদ মকুব না করে, সুদের বিষয়টার কাঠামোগত সংশোধন না করে, তবে আন্দোলন দিল্লিতে নিয়ে যাব৷ বাংলাকে বঞ্চনা করা যাবে না৷' 

কেন্দ্রীয় সরকারের পাশাপাশি তিনি কড়া ভাষায় বিঁধতে ছাঁড়েননি পশ্চিমবঙ্গের পূর্বতন বাম সরকারকে৷ এমন ইঙ্গিতও দিয়েছেন যে দুই তরফে তলে তলে বোঝাপড়া আছে৷ তাই তাঁর অভিযোগ, 'আগের সরকার তো দেদার ধার করে বিপুল বোঝা আমাদের উপর চাপিয়ে দিয়ে গিয়েছে৷ আবার, দিল্লির সরকার আমাদের ধার করার অধিকারও কে‌ে.ড় নিয়েছে৷ আগের সরকারকে কিন্ত্ত কেন্দ্র কথায় কথায় ধার নিতে দিত৷ ধার করে যে উন্নয়নের কাজে মানুষকে কিছু বেশি দেব তারও উপায় নেই৷' 

এদিন মুখ্যমন্ত্রীর পেশ করা হিসাব অনুযায়ী রাজ্য যদি ২১ হাজার টাকা আয় করে তো শোধ দিতে গুণাগার দেয় ২৬ হাজার কোটি টাকা৷ সি পি এম জামানার চেয়ে তাঁর আমলে নিতান্ত স্বল্প সময়েই রাজ্যের কোষাগারে আয় অনেকটাই বেশি হচ্ছে৷ যেমন, কর আদায় খাতে আয় বে‌ে.ডছে প্রায় ৩৫ শতাংশ৷ কিন্ত্ত ঋণের দায়ে আয়বৃদ্ধিতেও অবস্থা ফিরছে না৷ ফলে, রুখে দাঁ..ড়ানো ছাড়া কোনও গত্যন্তর নেই বলেই মনে করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ 

যে মহামানবের সার্ধশতবর্ষে ছাত্র-যুব উত্‍সবের আয়োজন করেছে রাজ্য সরকার, সেই বিবেকানন্দের জীবন থেকেই তিনি লড়াইয়ের দৃষ্টান্ত পেশ করেন৷ তাঁর কথায়, 'একবার বেনারসের রাস্তা দিয়ে স্বামীজি যাচ্ছেন৷ তখন কতকগুলি বাঁদর তাঁকে তাড়া করে৷ প্রথমে তিনি ভেবেছিলেন দৌড়ে রক্ষা পাবেন৷ পরে দেখলেন তা হওয়ার নয়৷ তখন তিনি রুখে দাঁড়ালেন৷ বানরগুলিই পালাল৷ স্বামীজির জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে বলতে হয়, বিপদেও রুখে দাঁড়াতে হয়৷ বঞ্চনার বিরুদ্ধেও লড়তে হয়৷' 

বাংলার যে বীর সন্তান ডাক দিয়েছিলেন দিল্লি চলো, সেই নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর বীরগাথাও এদিন মানুষের সামনে তুলে ধরেছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি জানান, নেতাজি অধিকার ছিনিয়ে নেওয়ার কথা বলেছিলেন৷ আজও সেই পথেই হাঁটতে হবে৷ তিনি বলেন, 'বাংলা মুখ বুজে বঞ্চনা সহ্য করবে না৷ যদিও আমাদের ইচ্ছা ছিল না, কিন্ত্ত খাস দিল্লিতেই আন্দোলন গড়ে তুলব৷' 

রাজ্য রাজনীতির প্রেক্ষিতে সিপিএম-কংগ্রেসকে দোসর করতেও তিনি ছাড়েননি৷ সনিয়া গান্ধীর দলের নাম না করেও তিনি বুঝিয়ে দেন পশ্চিমবঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা সহ নানা ইস্যুতে সিপিএমের আন্দোলনে মদত দিচ্ছে কংগ্রেসও৷ তাঁর কথায়, 'রাস্তায় আমার মা বোনেরা শান্তিতে ঘুরছেন৷ তাঁরা শান্তিতে উত্‍সবে অংশ নিচ্ছেন, কেউ লেখাপড়া করছে, কেউ বা কাজকর্ম করছেন৷ তাতে কারও কারও শান্তি হচ্ছে না৷ সিপিএম ভাবছে খুব তাড়াতাড়ি ক্ষমতায় ফিরবে৷ তাই রাজ্যে গন্ডগোল বাধাতে চাইছে, অশান্তি সৃষ্টি করতে চাইছে৷ কোনও কোনও দল আবার তার বন্ধুও বনে গিয়েছে৷'

সিপিএম চৌত্রিশ বছরের শাসনে রাজ্যের উন্নয়নের জন্য কিছুই করেনি এই অভিযোগের পুনরুক্তি করে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের দলকে কড়া চেতাবনিও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি বলেন, 'কাউকে কোনও অশান্তি বাধাতে দেব না৷ অনেক কষ্টে মানুষ শান্তি ফিরে পেয়েছে৷ মানুষের মুখ দেখে আমি বুঝতে পারি তারা শান্তিতে আছে৷ আগে কি ছিল, মাটি খুঁড়লেই খুলি, আর জামা খুললেই বুকে গুলি৷ তখন হার্মাদদের ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল, মাওবাদীরা কথায় কথায় আক্রমণ করত, মা-বোনেরা রাস্তায় বেরোতে পারতেন না, মানুষ আত্মীয় স্বজনের বাড়ি যেতে পারত না৷ সিপিএম কে কিন্ত্ত এত তাড়াতাড়ি আর ক্ষমতায় আসতে হচ্ছে না৷ আসলে খুব মজা, না৷ মনে সাধ, আবার সাত তাড়াতাড়ি ক্ষমতায় ফিরব৷ সেটা আর হচ্ছে না, ৩৪ বছর অনেক কামিয়েছেন, এবার কিছু দিন বসে বসে খান৷' 

সামনে পঞ্চায়েত ভোটের ল.ডাইটা যে মার্কসবাদীদের সামনে হিমালয় সদৃশ চ্যালেঞ্জ, সেই কঠিন বার্তাই মেদিনীপুর শহরের কলেজ মাঠ থেকে কলকাতায় আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে সিপিএমের সদরে পৌঁছে দিলেন মমতা৷ 

সরকারি দাক্ষিণ্যের বিনিময়ে ব্রাত্য চাইলেন শিক্ষকদের সমর্থন



ঝাড়গ্রাম: সরকারের প্রতি শিক্ষকদের সমর্থন চাইলেন ব্রাত্য বসু৷ পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তাঁর আবেদন তাত্‍পর্যপূর্ণ৷ ঝাড়গ্রামে প্রাথমিক শিক্ষকদের বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের কর্মশালায় শুক্রবার তিনি বলেন, 'আপনারা আমাদের দিকে তাকান, আমরা আপনাদের দিকে তাকাবো৷' বাম আমলে পঞ্চায়েত নির্বাচনে শাসক জোটের পক্ষে ভোট সংগ্রহে বড় ভূমিকা পালন করতেন প্রাথমিক শিক্ষকরা৷ শিক্ষামন্ত্রীর আবেদনে পরিস্কার, তাঁরাও একই পথে এগোতে চান৷ যদিও প্রকাশ্যে তা বলছেন না তাঁরা৷ তিনি বলেন, 'পুরোনো দিন ভুলে যান৷ 

সংগঠনের কাজের নাম করে ক্লাস ফাঁকি দেওয়া যাবে না৷' তার পরই অবশ্য তাঁর আশ্বাস, 'কাজ করুন, সরকার আপনাদের দেখবে৷' তাঁর দাবি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের অক্লান্ত চেষ্টায় শিক্ষা ক্ষেত্রে রাজ্যকে দেশের মধ্যে ১৭তম স্থান থেকে ৩ নম্বর স্থানে তোলা সম্ভব হয়েছে৷ 
http://eisamay.indiatimes.com/articleshow/17898303.cms


ভাঙড়ে তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসে জলসায় অশ্লীল নাচ এবং মঞ্চে টাকা ছোড়ার ঘটনায় চক্রান্তের অভিযোগ তুললেন অভিযুক্ত দুই নেতা। এই ঘটনায় অভিযুক্ত মীর তাহের আলি এবং আয়নাল মোল্লার দাবি, ওই দিন আরাবুল ইসলাম- কাইজার আমেদসহ ভাঙড়ের অনেক দলীয় নেতাই হাজির ছিলেন মঞ্চে। ওই দিনের ঘটনায় তাঁদের ফাঁসানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন আয়নাল এবং তাহের। তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসে ভাঙড় জলসাকাণ্ডের পর প্রথমবার মুখ খুললেন অভিযুক্ত দুই তৃণমূল নেতা মীর তাহের আলি এবং আয়নাল মোল্লা। যদিও বিতর্কিত আচরণের জন্য বিন্দুমাত্র দুঃখপ্রকাশ না করেননি তাঁরা। 

 
এঘটনায় উল্টে ভাঙড়ের তৃণমূল নেতৃত্বের দিকে ষড়যন্ত্রের পাল্টা তোপ দাগলেন দুই নেতা। দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা পরিষদের সদস্য মীর তাহের আলির দাবি, অনুষ্ঠানের দিন মঞ্চে হাজির ছিলেন আরাবুল ইসলামসহ তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যান্য স্থানীয় নেতারা। এলাকায় রাজনৈতিক প্রভাব খর্ব করতেই ফাঁসানো হয়েছে তাঁকে,এমনটাই দাবি তাহের আলির। ভাঙড় এক নম্বর ব্লক তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক আয়নাল মোল্লা। ঘটনার দিন মঞ্চে উঠে মহিলাদের দিকে টাকা ছুঁড়তে দেখা যায় এই তৃণমূল নেতাকে। 

 
মঞ্চে সেদিন আয়নালের যে বেপরোয়া আচরন ধরা পড়েছিল ক্যামেরায়, একই রকম বেপরোয়া ভঙ্গি ধরা পড়ল এদিনও। নিজের সাফাইয়ে পাল্টা ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব খাড়া করলেন আয়নালও। তাঁর দাবি, চক্রান্ত করে তাঁকে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার যুব তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কাইজার আহমেদ। জলসাকাণ্ডে অভিযুক্ত দুই নেতার এদিনের মন্তব্য নিয়ে অবশ্য মুখ খুলতে চাননি তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা নেতৃত্ব। 


দিল্লি গণধর্ষণ মামলায় চার্জশিট গ্রহণ করল দিল্লির সাকেত জেলা আদালত। মামলার পরবর্তী শুনানি হবে সাত জানুয়ারি। ওই দিন ৫ অভিযুক্তকে আদালতে হাজির করানোর জন্য পুলিসকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।  অপ্রাপ্তবয়ষ্ক ষষ্ঠ অভিযুক্তের শুনানি হবে জুভেনাইল জাসটিস বোর্ডে। মূল অভিযুক্ত বাসের চালক রবি সিং, তার ভাই মুকেশ, ফল বিক্রেতা পবন গুপ্ত, জিম ইন্সট্রাকটর বিনয় শর্মা এবং বাসের খালাসি অক্ষয় ঠাকুরকে সোমবার তিহার জেল থেকে আদালতে আনা হবে। 

চার্জশিটে তাদের বিরুদ্ধে খুন, ধর্ষণ, প্রমাণ লোপাট, অস্বাভাবিক অপরাধ, অপহরণ, ডাকাতি সহ একাধিক চার্জ আনা হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার দিল্লি পুলিস আদালতে ১০০০ পাতার চার্জশিট পেশ করে। মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেট নম্রিতা আগরওয়াল জানান, ভারতীয় ফৌজদারি দণ্ডবিধির ৩০২, ৩৯৬, ৩০৭, ৩৭৭, ২০১ এবং ৪১২ ধারায় দায়ের করা মামলার নথি তিনি পেয়েছেন। তিরিশ জন সাক্ষীর উল্লেখ করে ডিসেম্বর ১৬ রাতের পর থেকে ঘটনার ধারাবিবরণী রয়েছে ওই চার্জশিটে। ক্যামেরার সামনে এই মামলার শুনানি করার জন্য আদালতের কাছে আবেদন করে দিল্লি পুলিস। আদালত অবশ্য এখনও সে বিষয় কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। 

অন্যদিকে, দিল্লি গণধর্ষণের ঘটনায় দিল্লি পুলিসের বিরুদ্ধে আনা নিহত তরুণীর বন্ধুর অভিযোগ অস্বীকার করল দিল্লি পুলিস। তাদের দাবি, ঘটনার দিন রাতে ওই তরুণীকে হাসাপাতালে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে কোনও দেরি হয়নি। দশটা একুশ মিনিটে পিসিআরে প্রথম ফোন গিয়েছিল। দশটা পঞ্চান্ন মিনিটের মধ্যে তরুণীকে সফদরজং হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়া হয় বলেই দিল্লি পুলিসের দাবি।

ঘটনার দিন রাতে আহত তরুণীকে পুলিসের পিসিআর ভ্যানে কে তুলেছিলেন। পুলিস কর্মী। নাকি তরুণীর বন্ধু। সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের জবাবে যদিও স্পষ্ট কিছুই বলল না দিল্লি পুলিস।


দিল্লি গণধর্ষণকাণ্ড শুধু দেশের সাধারণ মানুষকেই স্তব্ধ করে দেয়নি। ঘটনার নৃশংসতায় শিউরে উঠেছিলেন পুলিসকর্তারাও। কিন্তু শরীর জুড়ে পাশবিক অত্যাচারের যন্ত্রণা তেইশ বছরের ওই তরুণীর মনোবল ভাঙতে পারেনি। তাই হাসপাতালের বেডে শুয়েই বয়ান দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সাব ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট পরে লিখিতভাবে জানান, চাপের মুখে বয়ান দিয়েছেন নির্যাতিতা। এনিয়ে বিতর্কও তৈরি হয়। ঘটনার পর টিভির পর্দায় মুখ খুলে এবিষয়ে একরাশ ক্ষেভ উগরে দিলেন তরুণীর বন্ধু।

দিল্লির রাজপথে চলন্ত বাসে গণধর্ষণের ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা দেশকে। রাজধানী জুড়ে বিক্ষোভ প্রতিবাদ, তরুণীর মৃত্যুর পর শোক, মৌনমিছিল এত কিছু মাঝে অন্তরালেই ছিলেন নির্যাতিতার বন্ধু। যিনি ষোলো ডিসেম্বর রাতে তরুণীর সঙ্গে ছিলেন। বন্ধুকে বাঁচাতে গিয়ে দুষ্কৃতীদের হাতে বেধড়ক মার খেয়েছিলেন। এই প্রথমবার টেলিভিশনের পর্দায় মুখ খুললেন তিনি। ভয়াবহ ওই ঘটনার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী এই সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার অকপটে জানালেন সেদিনের দুঃস্বপ্নের বাসযাত্রার কথা। মৃত বন্ধুর জন্য বিচারও চাইলেন। 

তরুণীর ওই বন্ধু আরও জানিয়েছেন ঘটনার দিন দুষ্কৃতীরা তাঁদের রাস্তায় ফেলে যাওয়ার পর প্রাথমিক অবস্থায় পুলিস বা পথচারী কেউই সাহায্য করতে এগিয়ে আসেননি। বারবার সাহায্যের আবেদন করে ব্যর্থ হয়েছিলেন তিনি। এমনকি পিসিআর ভ্যানেও রক্তাক্ত বন্ধুকে তোলার সময় পুলিস এগিয়ে আসেনি। 

ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ রুখতে পরিবর্তন দরকার সর্বস্তরে। ঘটনার পরে টেলিভিশনের পর্দায় প্রথমবারের জন্য মুখ খুলে এমনটাই বললেন দিল্লি গণধর্ষণকাণ্ডে নিহত তরুণীর বন্ধু। তাঁর দাবি সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির আমূল পরিবর্তন দরকার।  পাশাপাশি প্রয়োজন আইনি এবং পুলিসের আচরণের পরিবর্তনও। একটাই দুঃখ। আপ্রাণ চেষ্টা করেও বাঁচাতে পারেননি বন্ধুকে। তবে বন্ধুর স্মৃতিতে তাঁর মৃত্যুর পরেও দোষীদের শাস্তির জন্য লড়বেন। প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, দিল্লি গণধর্ষণকাণ্ডের শিকার তরুণীর বন্ধু। আমজনতার প্রতি তাঁর অনুরোধ, দিল্লি গণধর্ষণকা্ণ্ডে যে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে তা যেন থেমে না যায়। সেটাই হবে মৃত তরুণীর প্রতি একমাত্র শ্রদ্ধাঞ্জলি। 


রাজধানীতে তীব্র শৈত্যপ্রবাহে কাঁপছে গোটা উত্তর ভারত। তাপমাত্রার নিম্নমুখী গ্রাফ ৪৪ বছরের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। আর এই শীতের দাপটে সবচেয়ে সমস্যায় পড়েছেন রাজধানীর গৃহহীন মানুষ। সরকারের উদ্যোগে অস্থায়ী তাঁবু থাকলেও, তা যথেষ্ট নয়। এই অবস্থায় দিল্লির রাজপথে প্রবল ঠাণ্ডায় বেঁচে থাকার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা।শিব কুমার, রাজু, মোহন, এদের ঠিকানা কেয়ার অফ ফুটপাথ। রাজধানীর ফুটপাথেই লেখা হয় এঁদের রোজনামচা। তবে গত কয়েকদিনে তীব্র শীতের কামড়ে কাবু রাজধানী দিল্লি। শৈত্যপ্রবাহের জেরে গত চুয়াল্লিশ বছরের রেকর্ড ভেঙেছে নিম্নমুখী তাপমাত্রা।  এখন তাই ঠাণ্ডার সঙ্গে পাঞ্জা কষে বেঁচে থাকার লড়াইয়ে সামিল রাজু, মোহনরা।  

ইতিমধ্যেই প্রশাসনকে গৃহহীনদের জন্য রাত্রিকালীন অস্থায়ী আস্তানার সংখ্যা বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে দিল্লি হাইকোর্ট। পাশাপাশি শৈত্যপ্রবাহ বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত শহরের অস্থায়ী বস্তি না ভাঙারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে এখনও যথেষ্ট নয় সরকারের তরফে তৈরি অস্থায়ী তাঁবুর সংখ্যা।  সরকারি আস্তানাগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমানে খাদ্যদ্রব্য এবং কম্বল না মেলায় বেড়েছে সমস্যা। 


গত দেড় বছরে রাজ্যের কৃষি ব্যবস্থা সম্পূর্ণ রূপে ভেঙে পড়েছে। আজ পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুরে সর্বভারতীয় কৃষকসভার ৩৬তম জেলা সম্মেলনে এমনই মন্তব্য করলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। শত বাধা উপেক্ষা করে সমাবেশে আসা বিপুল জনসমাগমের লক্ষ্যে তিনি বলেন, "চাষের খরচ লাগাম ছাড়া বৃদ্ধি পেয়েছে। রাজ্য সরকার ধান কিনছে না।" ফলে কৃষকরা বিপদে পড়ছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। যেখানে কেন্দ্র প্রতি কুইন্টালে ধানের দাম বরাদ্ধ করেছে ১ হাজার ২৫০ টাকা। সেখানে এ রাজ্যর ধান চাষিরা ৮০০ টাকার বেশি দাম পাচ্ছেন না বলে বুদ্ধবাবুর অভিযোগ। 

তৃণমূল নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর সংখ্যালঘুদের চাকরি হয়নি। অথচ ইমামদের ভাতা দেওয়ার মতো ঘটনায় ভারতীয় জনতা দলের মতো ছিদ্রান্বেষী রাজনৈতিক দলগুলি মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। এমনটাই মত রাজ্যের প্রক্তন মুখ্যমন্ত্রীর। মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন বহুবার পুর্ব মেদিনীপুর সফরে যেতেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। কিন্তু আজ তিনি ধরা দিলেন অন্য মেজাজে। পর্যাপ্ত রাস্তা না থাকায় মোটরবাইকে চেপেই সভাস্থলে পৌঁছতে হয় তাঁকে। সভামঞ্চ থেকে তাঁর অভিযোগ, "রাজ্যের পঞ্চায়েত ব্যবস্থা ধুঁকছে। পূর্ব মেদিনীপুরে পঞ্চায়েতের টাকা চুরি চলছে।" রাজ্যের জেলাগুলিতে চলতে থাকা এই যথেচ্ছ তছরুপের বিষয়টি গ্রামের মানুষ বেশ বুঝতে পাড়ছে বলেই দাবি বুদ্ধবাবুর। 

আজ চণ্ডীপুর থানার সামনে বিনয় স্মৃতি ফুটবল মাঠে সমাবেশের মধ্যে দিয়ে সর্বভারতীয় কৃষকসভার ছত্রিশতম জেলা সম্মেলনের সূচনা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। সঙ্গে বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র, বিনয় কোঙার সহ অন্যান্য জেলা নেতৃত্ব। দু`দিন ধরে চলবে সম্মেলন। আজ বক্তব্যের শুরুতেই তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি জানান, "ভয় দেখিয়ে আমাদের বাধা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু মানুষের অধিকারকে আটকানো যাবে না।" রজ্যের বিভিন্ন স্থানে বামপন্থীদের পার্টি অফিসে হামলা চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর। রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় সমাজবিরোধীরা আক্রমণ চালাচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।


ঘটনার পর দ্রুত চিকিত্‍সা পেলে বোন হয়তো আজ বাঁচত



ঘটনার পর দ্রুত  চিকিত্‍সা পেলে বোন হয়তো আজ বাঁচত
বালিয়া( উত্তর প্রদেশ): ঘটনার পর পরই চিকিত্‍সা পেলে হয়তো বোন আজ বেঁচে থাকত। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিত্‍সার বিলম্ব হওয়াতেই বোনের শরীরের অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে।- দিল্লির চলন্ত বাসেগণধর্ষণকান্ডে মৃত ২৩ বছরের তরুণীর ভাইয়ের গলায় আক্ষেপ নয়, প্রকাশ পেল তীব্র অভিযোগ ।

১৬ ডিসেম্বরের পর থেকে গোটা দেশ প্রতিবাদ জানালেও সামনে আসেনি বাসে নারকীয় ঘটনার একমাত্র সাক্ষী বন্ধুটি।সামনে আসেনি তরুনীটির ভাইয়েরাও। সবসময় পাশে থেকে তরুণীর ইচ্ছাশক্তিকে বাড়ানোর চেষ্টা করেছে তাঁর ভাইয়েরা। 'বোন বলেছিল, সেই বিভীষিকাময় রাতে, রাস্তায় পড়ে থাকা অবস্থাতেই আশেপাশে লোকের সাহায্যের পাওয়ার জন্য কাতর আর্তি করেছিল সে। কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেনি তখন। সেইসময় হাইওয়ে টহল দিচ্ছিল পুলিশ। তারা এলেও হাসপাতালে প্রায় ২ ঘন্টার পর ভর্তি নেওয়া হয় গুরুতর আহত তরুণী ও তাঁর বন্ধুকে।' এদিন গ্রামের বাড়িতে এক সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাত্‍কার দিতে গিয়ে দিল্লির সফদরজঙ্গ হাসপাতালে মারাত্মক চোটে আঘাত পাওয়া বোনের কথাই বারবার মনে আসছিল তরুণীর ভাইদের।

তাঁর অভিযোগ, হাসপাতালে নিয়ে যাওযার পর বেশ কয়েকঘন্টা ধরে ফেলে রাখা হয় বোন ও বোনের সঙ্গীকে। ঐ কয়েকঘন্টার মধ্যেই বোনের শরীর থেকে রক্ত বেরিয়ে গিয়েছিল অনেকটাই। যদি রাস্তায় মুখ ঘুড়িয়ে চলে যাওয়া লোকেদের একটু সাহায্য আর হাসপাতালে চিকিত্‍সা শুরু হয়ে যেত তাহলে হয়তো বোনকে বাঁচানো যেত। আর অভিযোগ আর আক্ষেপটাই প্যারামেডিক্যালের ছাত্রীর পরিবারকে কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে প্রতিদিন। দিল্লির বর্বরতম গণধর্ষণে শিকার হয়েও 'নির্ভয়া' গোটা দেশে যে আগুন জ্বালিয়ে গেছে তাতে দেশের মানুষের মধ্যে কতটা হুঁশ ফিরবে সেই নিয়ে আশঙ্কা-জল্পনা এখন সব মহলেই। সেই আশঙ্কা 'নির্ভয়া'র ভাইদের মধ্যেও রয়েছে। 'সবার আগে মানুষের মানসিকতাকে পরিবর্তন করতে হবে। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার প্রবণতাকে প্রাধান্য দিতে হবে' বলে মনে করছেন তাঁর ভাই।

ইতিমধ্যেই সাহসী বোনের মৃত্যু নিয়ে গোটা দেশ তোলপার। দেশের সকলেই তাঁদের বোনকে না চিনেও চিনে ফেলেছেন। কথা বলতে বলতে বোনের ভালোলাগাগুলোই সব চোখের সামনে ভেসে উঠছিল ভাইদের চোখেমুখে। পরিবারের চোখের মনি হয়ে থাকা 'নির্ভয়া' সিনেমা দেখতে ভালোবাসতো। আমির খানের প্রচন্ড ফ্যান ছিল বলে জানালেন দিল্লির বাসে গণধর্ষণে মৃত তরুণীর ভাই। ঘটনার বেশ কিছুদিন আগেই প্রিয় নায়কের অভিনীত 'তালাশ' সিনেমাও দেখে এসেছিল ভাইদের সঙ্গে।

ধর্ষণের প্রতিবাদে গায়ে আগুন আদালত চত্বরে



কোয়েমবাটোর: দিল্লি গণধর্ষণের পর দেশজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে৷ এর মধ্যেই অন্য প্রতিবাদ৷ আদালত চত্বরে ধর্ষণের বাড়বাড়ন্তের প্রতিবাদে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করল এক যুবক৷ তামিলনাড়ুর পাল্লাডামে ঘটেছে এই ঘটনাটি৷ পেশায় চায়ের দোকানের মালিক রাজু নামের ওই যুবক আদালত চত্বরে নিত্যদিন ধর্ষণ বাড়ার প্রতিবাদে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেন৷ ধর্ষণের প্রতিবাদে স্লোগানও দেন তিনি৷ 

শুক্রবার তখন পুরোদমে চলছে আদালতের কাজ৷ হঠাত্‍ করেই এহেন ঘটনায় হতবাক হয়ে যায় আদালতে হাজির জনতা৷ ওই যুবককে বাঁচাতে এগিয়ে আসেন কয়েকজন পুলিশ কর্মী, কয়েকজন সাধারণ মানুষ৷ আগুন নেভান তাঁরা৷ আহত অবস্থায় ওই যুবককে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় একটি সরকারি হাসপাতালে৷ সেখানে প্রাথমিক চিকিত্‍সার পর তাঁকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় কোয়েমবাটোর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে৷ আপাতত তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে৷ 
এদিকে রাজস্থানের আলওয়ারের একটি হাসপাতালে শুক্রবার মারা গিয়েছে ১৯ বছরের এক তরুণী৷ নিগ্রহ সহ্য করতে না পেরে গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেন ওই তরুণী৷ তাঁর শরীরের ৯০ শতাংশই পুড়ে গিয়েছিল৷ তরুণীটির পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজেশ যোগি নামে এক প্রতিবেশী তাঁকে গত চার বছর ধরে বিয়ে করার জন্য চাপ দিচ্ছিল৷ বিয়ে না করলে ওই তরুণীকে খুন করারও হুমকি দিচ্ছিল রাজেশ৷ এই বিষয়টি সহ্য করতে না পেরে গায়ে আগুন দেয় ওই তরুণী৷ পরিবারের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে অভিযুক্তকে৷ 
গত এক দশকে ধর্ষণে দোষী সাব্যস্ত হওয়া ব্যক্তিদের নাম এবং অন্যান্য তথ্য সরকারি ওয়েবসাইটে দেওয়ার কাজ শুরু করেছে হরিয়ানা পুলিশ৷ সাইটে দেওয়া হচ্ছে অন্তত ২,৫০০ জনের তথ্য৷ এদিন হরিয়ানার জিন্দ জেলায় এক কিশোরীর আপত্তিকর এমএমএস তৈরি এবং ছড়ানোর অভিযোগে দুই কিশোরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ৷ দুই অভিযুক্ত সুমিত এবং প্রবীণ একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র৷ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছরের ৭ ডিয়েম্বর জিন্দ জেলার পোপলি গ্রামে বছর সতেরোর এক কিশোরির আপত্তিকর এমএমএস তৈরি করে ওই দুই অভিযুক্ত। এমএমএস-টি দেখিয়ে ওই কিশোরীকে ব্ল্যাকমেলও করা দুই অভিযুক্ত। দীর্ষ দিন চুপ করে থাকার পর বুধবার সুমিত ও প্রবীণের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই কিশোরী। তার ভিত্তিতেই গ্রেপ্তার করা হয় ওই দু'জনকে। পোপলি থানায় স্পেশাল হাউজ অফিসার রাজিন্দর সিং জানিয়েছেন, দুই অভিযুক্তই কৃষক পরিবারের। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন ওই অফিসার।-সংবাদসংস্থা 

ভোটে তৃণমূলের পাশে ছিল মাওবাদীরা- বিস্ফোরক কবীর সুমন



ভোটে তৃণমূলের পাশে ছিল মাওবাদীরা- বিস্ফোরক কবীর সুমন
বিস্ফোরক মন্তব্য কবীর সুমনের।


এই সময়: বিদ্রোহের ডায়েরিতে নতুন পাতা সংযোজন করে এবার নন্দীগ্রামে মাও-তৃণমূল আঁতাতের কাহিনী শোনালেন সাংসদ কবীর সুমন৷ টিভি ক্যামেরার সামনে নাটকীয় উপস্থাপনায় গানওয়ালার নতুন দাবি তথা স্বীকারোক্তি 'মাওবাদীদের সাহায্য ছাড়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জঙ্গলমহলে একটা আসনও পেতেন না৷' সিপিএমকে ক্ষমতাচ্যুত করতে মাল্লেজুলা কোটেশ্বর রাও ওরফে কিষেণজি সংবাদমাধ্যম মারফত রাজ্যবাসীর কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন সবাই যেমন মমতাকেই ভোট দেন৷ এদিন সেই দলে থেকে চুল দাড়ি ছিঁড়ছেন কবীর সুমন৷ একদিন দুদিন নয়, বছরভর নিয়ম করে দলের বিরুদ্ধে গরম গরম বিবৃতি দিয়েই চলেছেন৷ নিজেই বলছেন তৃণমূলের সংশ্রবে থাকতে তাঁর ঘৃণাও হয়৷ শিল্প সাহিত্য সঙ্গীতের জগত্ থেকে তাঁর মতো যাঁরা একসময় তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন এখন সেই বুদ্ধিজীবীদের আক্কেল নিয়েও কটাক্ষ চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি৷ অথচ তৃণমূলের সৌজন্যে পাওয়া সাংসদ পদ আঁকড়ে থাকার বাসনাটিও ষোলআনা৷ তাই প্রশ্ন ওঠে, গানওয়ালার এ কেমন বিদ্রোহ? 

রাজনীতিক অরুণাভ ঘোষ তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের উপর বিতশ্রদ্ধ হয়ে বিধায়ক পদে ইস্তফা দিয়েছিলেন ২০০৩ সালে৷ দলও তাঁকে সাসপেন্ড করেছিল৷ আবার তিনিও স্বেচ্ছায় তৃণমূলকে বর্জন করেছিলেন৷ প্রতিবাদের ধরণে এতটাই ফারাক যে তৃণমূলের বিরুদ্ধে অরুণাভবাবুর বিবৃতি আর কবীর সুমনের জেহাদকে কোনওভাবেই এক পংক্তিতে রাখা চলে না৷ কেবল রাজনৈতিক মহল নয়, রাজনীতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল সাধারণ মানুষেরও প্রশ্ন তৃণমূলনেত্রী বা তৃণমূলকে অস্বীকার করতে পারলেও, সেই দলের দেওয়া টিকিটকে কবীর সুমন অবহেলা করতে করতে পারলেন না কেন? যে দলের নীতি জনগণের সামনে রেখে তিনি জনপ্রতিনিধি হয়েছিলেন সেই নীতিগুলো যদি এখন আর তাঁরই পছন্দ না হয় তাহলে তাঁকেই বা জনপ্রতিনিধি হিসেবে মানবেন কি করে যাবদপুরের মানুষ? ভাঙড়ে তৃণমূল নেতাদের অশ্লীল জলসা সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে যাদবপুরের সাংসদ বলেছেন, 'আমার ভাবতে ঘৃণা হয় যে আমিও এই দলের একজন সদস্য ছিলাম৷ একদিন আমিও এই দলের পতাকা হাতে ধরেছিলাম৷ মাথাটা যখন পচতে শুরু করেছে, তখন পা কে দোষ দিয়ে লাভ কি?' এতদিনে তিনি কবুল করছেন,'নন্দীগ্রাম আন্দোলনে মাওবাদীদের সক্রিয় ভূমিকা ছিল৷ আমি তাঁদের কয়েকজনকে দেখেওছি৷ কিষেণজির সাহায্য ছাড়া জঙ্গলমহলে একটি আসনও পেতেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷' ঘটনা হল, এই কবীর সুমনই তৃণমূলের সঙ্গে মধুচন্দ্রিমাপর্বে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ত্যাগ এবং তিতিক্ষায় মুগ্ধ হওয়ার কথা বার বার বলতেন৷ সুমন কী তাহলে এখন আর আনুষ্ঠানিকভাবে তৃণমূলের সদস্য নন? একঘরে করলেও দল তাঁকে এখনও সাসপেন্ড বা বহিষ্কার কোনওটাই করেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ আইনজীবী অরুণাভ ঘোষ কিন্ত্ত মমতার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে প্রত্যাশিত 'স্বচ্ছতার' প্রমাণ দিয়েছিলেন৷ এই সময়কে অরুণাভবাবু বলেছেন, 'যেদিম আমি তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে দিই সেদিনই আমি সংবিধানের দশম তফশিল অনুযায়ী দতল্যাগ আইনের আওতায় পড়ে যাই৷ তখনই আমার বিধায়ক পদ বাতিলযোগ্য হয়ে যায়৷ তাই দল তাড়িয়ে দেওয়ার আগে আমি নিজেই বিধানসভা থেকেও ইস্তফা দিই৷ যাঁদের বিরুদ্ধে দুর্ণীতির অভিযোগ ছিল মমতা তাদেরই টিকিট দেওয়ায় আমি আর করতে পারিনি৷ কবীর সুমনকে কিন্ত্ত দল সাসপেন্ড বা বহিষ্কার কোনওটাই করেনি৷ করলে ওঁরই সুবিধা হয়ে যেত৷ উনি নিজেও দল ছাড়েননি৷ এটা তো ব্যক্তির নিজস্ব সিদ্ধান্তের ব্যাপার৷ নীতির প্রশ্নে কবীর সুমনের ভূমিকা অনৈতিক৷ কিন্ত্ত আইনের চোখে উনি হয়তো দোষি নন৷' 

২০০৫- এ সুব্রত মুখোপাধ্যায় যখন দল ছেড়েও স্বেচ্ছায় বিধায়ক পদ ছাড়েননি৷ তাঁর বিধায়ক পদ কেড়ে নেওয়ার জন্য বিধানসভার তত্কালীন অধ্যক্ষ হাসিম আবদুলের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন তত্কালীন বিরোধী দলনেতা পঙ্কজ বন্দ্যোপাধ্যায়৷ অধ্যক্ষ সুব্রতবাবুকে বিধানসভা থেকে সরানোর প্রক্রিয়া শুরু করতেই সুব্রতবাবু হালিম সাহেবের বিরুদ্ধে আদালতে গিয়েছিলেন৷ কিন্ত্ত কংগ্রেস সমর্থিত মঞ্চ থেকে রাজ্যসভায় দাঁড়াবেন বলে তিনি পরে সেই মামলা প্রত্যাহার করে নেন এবং যথারীতি তাঁর বিধায়ক পদও চলে যায়৷ কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের পক্ষে সওয়াল করে অম্বিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং নির্বেদ রায়ও তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড হয়েছিলেন৷ কিন্ত্ত তাঁরাও কেউ বিধানসভা পদ থেকে ইস্তফা দেননি৷ জোটের পক্ষে প্রকাশ্যে সওয়াল করায় পরশ দত্তকেও সেবার দল থেকে সাসপেন্ড করেছিলেন তৃণমূলনেত্রী৷ কিন্ত্ত তিনিও দল নিজে দল না ছাড়ায় দলত্যাগ আইনের আওতায় পড়েননি এবং আইন অনুযায়ীই বিধায়ক হিসেবে পাঁচ বছরের মেয়াদ পূর্ণ করেছিলেন৷ সম্প্রতি তৃণমূল বিধায়ক শিখা মিত্রকেও দল 'সাসপেন্ড' করেছে শৃঙ্খলাভঙ্গের অপরাধে৷ কিন্ত্ত তিনিও দলত্যাগ আইনের প্যাঁচ ঠেকাতে অর্থাত্ বিধায়ক থেকে যেতে বিতশ্রদ্ধ হওয়া সত্তেও আনুষ্ঠানিকভাবে তৃণমূল ছাড়েননি৷ আর এক বিদ্রোহী সিঙ্গুরের রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য না ছেড়েছেন দল না দিয়েছেন বিধায়ক পদে ইস্তফা৷ অবশ্য টানা চারদিন দলের বিরুদ্ধে উপর্যুপরি বিবৃতি দিয়ে ক্ষান্ত হয়েছিলেন তিনি৷ 
http://eisamay.indiatimes.com/articleshow/17889394.cms

অর্থাত্‍ তৃণমূলে এ পর্যন্ত এক মাত্র অরুণাভ ঘোষই বিদ্রোহ করে দল এবং বিধায়ক পদ দুই-ই ছেড়েছিলেন সম্পূর্ণ স্বেচ্ছায়৷ তাঁব ক্ষেত্রে নীতি এবং আইন কোনওটাই লঙ্ঘিত হয়নি৷ ঠিক এখানেই প্রশ্ন ওঠে তিনি তাহলে কি তাঁর সাংসদ পদের মেয়াদ না-শেষ হওয়া পর্যন্ত তিনি এভাবেই নৈতিকতার পরোয়া না করে অসম অসম যুদ্ধ চালিয়ে যাবেন? 

যদি আমাকে মৃত্যুদণ্ড দেন, সেটা এর চেয়ে ভাল হবে

সুপ্রিম কোর্টকে লিখেছেন সোনি সোরি। আদিবাসী শিক্ষিকা। তিন সন্তানের জননী। রায়পুর সেন্ট্রাল জেলে বন্দি। অভিযোগ, তিনি মাওবাদীদের সহযোগী। কিছু দিন আগে তাঁর বাবাকে গুলি করেছিল মাওবাদীরা, এই সন্দেহে যে, তিনি পুলিশের সহযোগী।

তাপস সিংহ 
কলকাতা, ৯ অগস্ট ২০১২

adivasi

আমাদেরই লোক? 'মৃগয়া' ছবির একটি দৃশ্য। ছবি- ফাইল চিত্র।

 আজ, বৃহস্পতিবার 'বিশ্ব আদিবাসী দিবস'। আজ, আরও এক বার আদিবাসীদের অধিকার রক্ষার অঙ্গীকারের দিন। নানা সভা-সমাবেশ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আরও এক বার মনে করিয়ে দেবে, সমাজের 'মূল স্রোত' এই প্রান্তিক মানুষগুলোকে 'আমাদের লোক' বলেই জানে!
এ রকম এক 'আমাদের লোক' হলেন সোনি সোরি। শিক্ষিকা। বয়েস বছর পঁয়ত্রিশ। তিনি অবশ্য ঠিক মূল স্রোতে নেই। এই মুহূর্তে বন্দি, রায়পুর সেন্ট্রাল জেলে। মাওবাদীদের সঙ্গে সংশ্রব রাখা ও তাঁদের সাহায্য করার অভিযোগে সোনি ও তাঁর ২৫ বছরের ভাইপো, সাংবাদিক লিঙ্গারাম কোড়োপিকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তাঁদের বিরুদ্ধে 'বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইন' (ইউ এ পি এ) এবং 'ছত্তীসগঢ় বিশেষ জনসুরক্ষা আইন ২০০৫'-এর বিভিন্ন ধারা প্রয়োগ করে পুলিশ। দীর্ঘ দিনের মধ্যে জামিনে মুক্তি পাওয়ার আশা কার্যত শেষ হয়ে যায় তাঁদের।

৫, ৮, ১২
ছত্তীসগঢ়ের বস্তারের আদিবাসী মেয়ে সোনিকে পুলিশ গ্রেফতার করে ২০১১'র ৪ অক্টোবর। সে সময় সোনির গ্রামের বাড়িতে মায়ের মুখ চেয়ে বসে তাঁর ৫, ৮ ও ১২ বছরের তিনটি সন্তান। তাঁর বাবা তখন জগদলপুর হাসপাতালে ভর্তি। ইতিহাসের পরিহাস, পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ আছে, এই সন্দেহে মাওবাদীরাই সোনির বাবাকে গুলি করেছিল। তাঁর স্বামীকে মাওবাদী সন্দেহে পুলিশ আগেই গ্রেফতার করে।
দিনকয়েক আগে, ২৮ জুলাই রায়পুর সেন্ট্রাল জেল থেকে 'সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি'র নামে একটি চিঠি লিখেছেন সোনি। বলেছেন, সুপ্রিম কোর্ট যদি তাঁর মৃত্যুদণ্ড দেয়, সেটাও বর্তমান পরিস্থিতির থেকে ভাল হবে। আদিবাসী এই নারী লিখছেন, 'আপনার আদেশের জন্যই আমি আজ বেঁচে। আমার যাতে শারীরিক পরীক্ষা হয় তার জন্য আপনি ঠিক সময়ে আদেশ দিয়েছিলেন।'
এখানে একটা কথা বলা দরকার। পুলিশি হেফাজতে থাকার সময়েই তাঁর উপরে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ এনেছিলেন সোনি সোরি। সুপ্রিম কোর্টের আদেশে দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্স-এ তাঁর শারীরিক পরীক্ষা হয়। কোর্টের আদেশেই এর আগে কলকাতার নীলরতন সরকার হাসপাতালে নিরপেক্ষ ভাবে তাঁর যাবতীয় পরীক্ষানিরীক্ষাও হয়।

সোনি অভিযোগ করেছিলেন, ২০১১'র ৮ ও ৯ অক্টোবর রাতে দান্তেওয়াড়া থানায় জিজ্ঞাসাবাদের নামে তাঁকে সম্পূর্ণ নগ্ন করে অকথ্য অত্যাচার চালায় পুলিশ। ইলেকট্রিক শকও দেওয়া হয়। কলকাতার হাসপাতালে পরীক্ষার সময়েই চিকিৎসকেরা দেখেন, সোনির যোনিপথ ও পায়ুছিদ্র দিয়ে অনেক ভিতরে পাথর ঢোকানো হয়েছে। সেই পাথর অবশ্য বার করতে সক্ষম হন তাঁরা। এন আর এস থেকে তাঁর প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও ওষুধের কথা লিখে দেওয়া হয়।
কিন্তু রায়পুর জেলে ফেরার পরে জেল কর্তৃপক্ষ সে সব কোনও ব্যবস্থাই করেননি বলে অভিযোগ আনেন সোনি। ক্রমে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। এই খবর জানার পরে এ বছরের জুনে সুপ্রিম কোর্ট অবিলম্বে দিল্লির এইমস-এ তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা করার জন্য ছত্তীসগঢ় সরকারকে নির্দেশ দেয়।
কিন্তু পাঁচ সপ্তাহ এইমস-এ কাটিয়ে রায়পুর জেলে ফেরার পরে কী হল?
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিকে সোনি লিখছেন, 'আমি এখন তার মূল্য দিচ্ছি। আমাকে এখানে হেনস্থা ও অত্যাচার করা হচ্ছে। আমাকে দয়া করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। মাননীয় বিচারপতি, আমি মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত। আমাকে 'নগ্ন' করে মাটিতে বসানো হচ্ছে। অনাহারে আমি কষ্ট পাচ্ছি। তল্লাশির নামে আমার প্রতিটি অঙ্গ অস্বস্তিকর ভাবে স্পর্শ করা হয়। আমাকে দেশদ্রোহী ও নকশালবাদী বলে ওরা আমাকে অত্যাচার করে।'
সোনির জামাকাপড়, সাবান, সবই বাজেয়াপ্ত করে নেওয়া হয়েছে। তিন সন্তানের জননী, বস্তারের এই ভূমিকন্যা আরও লিখেছেন, 'মাননীয় বিচারপতি, আরও কত দিন ছত্তীসগঢ় সরকার, পুলিশ প্রশাসন আমাকে নগ্ন করে রাখবে? আমি এক ভারতীয় আদিবাসী নারী! আমি লজ্জা পাই, এখানে আমার শালীনতা রক্ষা করতে পারি না।...আমি কী এমন অপরাধ করেছি যে আমাকে এ ভাবে অত্যাচার করা হবে?' তাঁর প্রশ্ন, 'আরও কত দিন আমি এই শারীরিক ও মানসিক অত্যচার সহ্য করব? যদি আমায় মৃত্যুদণ্ড দেন, সেটা এর থেকে ভাল হবে!'
আজ 'বিশ্ব আদিবাসী দিবস'।

 

আনন্দবাজার পত্রিকা

http://my.anandabazar.com/content/%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%AC%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A7-285


জেলের ভিতরে তুমি মানুষ নও

শামীম মোদী

আমি শামিম মোদী, শেষ ১৮ – ১৯ বছর ধরে মধ্যপ্রদেশের বেতুল, হরদা আর কান্দ্বা জেলার শ্রমিক আদিবাসী সংগঠন ও সমাজবাদী জনপরিষদের সাথে যুক্ত আছি। আমরা মানুষের অধিকার, বিশেষত আদিবাসীদের অধিকার নিয়ে কাজ করি। একসময়ে মধ্যপ্রদেশ সরকার থেকে আমার উপরেও কিছু মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেছিলো। হরদা অঞ্চলে আমি খুবই জনপ্রিয় ছিলাম সেখানে তারা আমাকে তাদের নিজের ইচ্ছা মত অত্যাচার করতে পারছিল না তাই তারা আমাকে হরদা জেল থেকে হোসাঙ্গাবাদ জেলে ট্রান্সফার করে দিয়েছিল। তাই সোনি সোরির  জেলের মধ্যে অত্যাচারের ব্যাপারটা  আমি ভালো করেই  বুঝতে পারছি, কারণ আমাকেও সোনি সোরির  মতো তারা অকথ্য অত্যাচার করেছিলো।

নতুন কেউ জেলের মধ্যে এলে বাকি বন্দীরা আসামীকে উল্টো দিক করে ঝুলিয়ে দিত, বসতে দিত না। একটা পেন নিয়ে কেউ ঢুকেলও তার জামাকাপড় খুলে সার্চ করত। ভাবত পেনটি হয়েতো একটি বোমা। পুলিশের লোকেরা তারা নিজেরা কিছু করত না। তারা বাকি বন্দীদের পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছিল অত্যাচারের জন্য। তারা সহজ ভাষায় বলত Straighten her আর সেই পিটিয়ে ঠিক করে দেওয়াটা আমার কাছে এক দুর্বিষহ অভিজ্ঞতা ছিল। মনে হয় সোনি সোরির প্রতিও ওরা ঐ একই রকমভাবে অত্যাচার করছে।

তারা  নতুন নতুন অত্যাচার আবিষ্কার করাতে পটু ছিল।। মাঝেমধ্যে বন্দীদের জেলের বাইরে নিয়ে যেতে চাইত, তারা গর্ভবতী কিনা সেই অজুহাত দেখিয়ে। আমি জেলারকে বলেছিলাম শুধু মাত্র ইউরিন টেস্ট করলেই তো হয়ে যায়, তার জন্য জেলের বাইরে গিয়ে কঠিন পরীক্ষা নিরীক্ষার কি দরকার? কিন্তু পুলিশেরা রাজী হল না, বলল যা নিয়ম তাই মানতে হবে। পরে বুঝলাম ওদের মতলবটা। আসামী যদি একবার জেলের বাইরে চলে যায় তাহলে পুলিশের উপর কোনও দায় থাকে না, কিন্তু জেলের মধ্যে কিছু হলে পুলিশ কর্মচারীদের উপরই দোষ পরে, তাই তারা দায়মুক্ত হতে আমাকে ছেড়ে দিয়েছিল। আমাকে নিয়ে আরও প্রায় ৮ জন মহিলাকে ওরা ওপিডি তে নিয়ে গেল। ওপিডিতে একটা স্লাইডিং দরজা  আর একটা জানলা ছিল মাত্র কিন্তু কোন পর্দা ছিল না। গাইনকোলজিকাল পরীক্ষা শুরু হতেই আমরা আপত্তি জানালাম। ওরা সেই সময়ে গার্ডদের ডেকে আমাদের জামা খুলে দিয়ে উলঙ্গ করে দেওয়া হল। সেই অঞ্চলের লোকেরা আমার অ্যারেস্টের কথা জানত। তারা সব কিছু জানতে খুবই উৎসাহিত ছিল।

কিন্তু সাধারণ মানুষরা এই ব্যাপারটাতে খুব বেশি সচেতন ছিল না। তারা জানত না আসামীদের নিয়ে আদৌ এই রকম কিছু করা যায় কিনা, তারা ভাবছিল অসুস্থততার কারণেই হয়তো আমাদের মেডিকেল চেক-আপ করানো হচ্ছে। তাই অগত্যা তাদের থেকেও কোন সাহায্য আমরা পেলাম না।

অনেক দিন ধরে মানুষের অধিকার নিয়ে কাজ করার ফলে আমার আত্মবিশ্বাস এখন অনেক বেড়ে গেছে। এখন আমরা সব কিছুর জন্যই প্রস্তুত। এমনকি অত্যাচারের সময়ে নিজেদেরকে নিজেরাই সান্ত্বনা দিতাম। ওরা আত্মীয় পরিজনদের সাথেও আমাকে দেখা করতে দিত না, বলত কথা না শুনলে আমাদের উপর ন্যাশানাল সিকুইরিটি অ্যাক্ট জারি করা হবে। মিডিয়া কেন এই ছোট একটি ঘটনা নিয়ে এত হইচই করেছে তার ব্যাখ্যাও আমাদের কাছ থেকে জানতে চাইত। আমরা বোঝাতে চাইতাম সংবাদপত্র কি লিখেছে আমরা জেলের মধ্যে থেকে কি করে জানব? তারা বলত "এই যে তোমাদের জেলের মধ্যে অত্যাচার করা হয় তার কথা বাইরের লোক কি করে জানতে পারল? কি করে ওদের কাছে এই কথা ফাঁস হল?" এছাড়াও বাইরে আমাদের কোনও সহকর্মী বা কোনও সমাজসেবী এই নিয়ে যদি কোনও প্রতিবাদ করতো, তার জবাবদিহিও আমাদের করতে হত।

জঙ্গলের মধ্যে বেআইনি ভাবে বাড়ি বানানোর জন্য কিছু আদিবাসী এবং হার চুরি করার অভিযোগে সেইখানে আরও কিছু মহিলা আসামীও ছিল। তাদের মুক্তি পাওয়ার দিন ক্রমশই বেড়ে যাচ্ছিল। তারা জেলের মধ্যে কোনও সাহস দেখাতেই পারত না। এমনকি বাইরে বেরোলেই তারা কথা কোনও প্রতিবাদ করত না। তবে জেলের মধ্যে বসে থেকে নিজেদের অধিকার বজায় রাখাটা সত্যিই খুব কঠিন কাজ ছিল। জেলের মধ্যে কি হচ্ছে কেউ কিছুই দেখতে বা জানতেও পারত না যেহেতু বাইরেরে কোনও মানুষের যাতায়াত ছিল না। একটি বন্ধ দরজার পিছনে তারা যা খুশি করতে পারত, শুধু খেয়াল রাখত বাইরের পাবলিকের কাছে যেন এই সব কথা কোনভাবেই না পৌঁছয়।

আমি জেলের মধ্যে মহিলাদের উৎসাহ দিতাম এই নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে । ১৫ দিন বাদে কোর্টে উঠলে সেইখানে এই নির্যাতনের কথা বলতে বলতাম কিন্তু পুলিশরা তাকে অন্য কথা শুনিয়ে ভয় দেখাত, বলত "ও তো কিছুদিনের মধ্যেই ছাড়া পেয়ে যাব কিন্তু তারপর তোমরা তো জেলেই থেকেই যাবে তখন তোমাদের কে রক্ষা করবে?"

সেখানে ৫৫ বছর বয়সী মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত এক মহিলাও ছিলেন। তিনি নিজেকে সর্বদাই দোষী মনে করতেন। হঠাৎই একদিন মাঝরাতে বাকি বন্দীরা তাকে দাঁড় করিয়ে জামা কাপড় টেনে খুলে দিল। আমি সহ্য করতে পারতাম না , আমার খুব রাগ হত। আমি জেলারকে বলেছিলাম যে আমি একজন মনোবিদ, আমি বুঝতে পারছি ওনার মানসিক কিছু রোগ আছে ওনার চিকিৎসার প্রয়োজন, ওনাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান। তার উত্তরে জেলার বলল "দু গালে দুটো চর মারলেই সব ঠিক হয়ে যাবে"। জেলের মধ্যে এইভাবেই মেয়েরা রোজ রোজ নির্যাতিত হত। কিছু বললেই তাদের জামা কাপড় টেনে খুলে দিত, সেই ভয় অনেকেই চুপ করে থাকত। মনুষ্য অধিকারের কোনও অস্তিত্বই ছিল না সেখানে।

কেউ কেউ বলছে সোনি সোরির উপর অত্যাচারের কথাটা হয়েতো একটু বেশি বানিয়ে বলা হচ্ছে। কিন্তু আমি বলছি মোটেই তাই নয়। এমনকি হয়েতো আরও অনেক বেশীই অত্যাচার ওকে সহ্য করতে হচ্ছে। ওর ব্যাপারটা আমি খুব ভাল করেই অনুভব করতে পারছি। এমনকি সোনি সোরি নিজেও তার অত্যাচারের সব কথা নিজে মুখেও ব্যাখ্যা করতে পারবে না।

পরে আমাকে অন্য মহিলারা বলেছিল যে আমি জেলের মধ্যে আসতে না আসতেই নাকি ওদের কাছে   অর্ডার ছিল আমাকে 'পিটিয়ে সোজা করে' দেওয়ার। নতুন কেউ জেলের মধ্যে এলেই বাকিদের বলত তোমাদের সব রাগ এর উপর ঢেলে দাও। তাই জেলের মধ্যে  বেঁচে থাকতে হলে নিজের মনকে দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিতে হত, সমস্ত রকমের সামাজিকতা, মানবিকতা ভুলে যেতে হত। এছাড়া টিকে থাকার আর কোনও উপায়ই ছিল না।

প্রতিবাদী আন্দোলনের জন্য ৫০ – ১০০ লোকের সাথে আমি আগেও জেলে অনেকবার থেকেছি। তখন একটি বিশাল ঘরে তারা আমাদের একটা দল করে দুই কি একদিন জেলে বন্দী করে রাখত কিন্তু এই ঘটনাটা একেবারেই আলাদা রকমের ছিল। তখন জেলের মধ্যে এই নির্যাতনের কথা আমরা একটুও বুঝতে পারিনি। আমি যখন নিজে জেলের মধ্যে গেলাম তখন  দেখলাম ওরা কীভাবে জেলের ভিতরের সব কথা লুকিয়ে রাখে।

জ্বালানীর মত শক্ত শুকনো রুটি দিত আর তোবড়ানো প্লেটে খতে দিত। জেলাররা এই কাজ সব জেনেবুঝেই করত।উলঙ্গ করে দেওয়া ছাড়াও ওরা অন্য আর এক ধরনের শাস্তিও ওরা আবিষ্কার করেছিল। পোকামাকড়ে ভরা অন্ধকার ময়লা এমন একটি ঘরে জামাকাপড় খুলিয়ে দিয়ে মিষ্টি রস গায়ের উপর ঢেলে সারারাত সেই ঘরে বন্দী করে রেখে দিত।

পরিস্থিতি খুবই কঠিন হয়ে উঠছিল। এই অত্যাচারের বিরুদ্ধে কেউ আর মুখ খুলছিল না। আমি মাঝে মাঝে এর প্রতিবাদ করলে ন্যাশানাল সিকুইরিটি অ্যাক্ট দেখিয়ে আমাকে চর মারত, ডিস্ট্রিক্ট কলেক্টরের অনুমতি ছাড়া এই কাজ সম্ভব ছিল না। তাছাড়া, বাইরের পরিস্থিতি সম্বন্ধে আমরা কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলাম না।

শেষ পর্যন্ত পাওয়া খবর থেকে আমি শুনেছিলাম আমার ছেলের জন্ডিস হয়েছে। আমি জেলারকে বলেছিলাম বন্দীদের কারোর সাথে এমনকি নিজের পরিজনদের সাথেও কেন দেখা করতে দেওয়া হয় না?। তার উত্তরে এক জেলার আমাকে বলেছিল "আমার নিজের ফোনটাও ট্যাপড আছে। তুমি যদি তোমার ছেলের সাথে কথা বল তাহলে মন্ত্রীরা জেনে যাবে, সেইটা তো ভাল হবে না"।

আমার নামে কিছু মিথ্যে তথ্যভিত্তিহীন অভিযোগ ছিল, যেমন ডাকাতি, লুঠ, অপহরণ এবং খুনের জন্য অপহরণ, তাই আমার বেল বাতিল হয়ে গেল। আমি ভেবেছিলাম যেহেতু আমার নামে ওইসব বাজে অভিযোগ লাগানো হয়েছে তাই বেল হয়েতো খুব সহজেই পেয়ে যাব, কিন্তু ওরা লোকাল কোর্টে কেস্টাকে অন্য দিকে ঘুরিয়ে দিয়েছিল। পরে বুঝলাম ওরা অযথা আমাকে বিরক্ত করবার জন্যই এইসব করছে।

ইঁদুর আমাদের সারা গাময় ঘুরে বেড়াত, পায়ের পাতার কাছে খুঁটে খুঁটে কামড় দিত। সকালে উঠে রক্ত পড়ে থাকতে দেখলে আমরা সবাই ভীত হয়ে যে যার নিজেদের পায়ের দিকে তাকাতাম। একদিন ১৬ ঘণ্টা ধরে হোসাঙ্গাবাদে লোডশেডিং ছিল, আমরা সেই অন্ধকারেই বসে খাচ্ছিলাম। সেই সুযোগে ইঁদুর এসে আমাদের রুটি নিয়ে চলে গেল।ও আমরা হাঁ করে বসে রইলাম।

হরদা জেল ইঁদুরে ছেয়ে গিয়েছিল। আমাদের চাদর মুড়ি দিয়ে শুতে হতো তাতেও আমাদের চুলের কাছে এসে ইঁদুর গুলো জটলা পাকাত। আমি জেলারকে বলেছিলাম এই ইঁদুরের উপদ্রবের কথা। জেলার তার উত্তরে বলল,

-এইটা জেল ম্যাডাম, ফাইভ স্টার হোটেল নয়।

- তা বলে কি বন্দীরা এইভাবে ইঁদুরের কামড় খাবে, এইরকম কথা কোথাও লেখা আছে নাকি? দেখাতে পারলে আমারা আপনার কথা মেনে নেব। তা অন্ততপক্ষে আমাদের তো একটা মশারী দিতে পারেন? মশা না হোক ইঁদুরের থেকে তো আমরা রেহাই পেতে পারি।

- জেলের মধ্যে মশারী এলাউ নেই। কোনও রাজনীতিবিদ যদি জানতে পারি আমি আপনাদের মশারী দিয়েছি, তাহলে আমার চাকরি নিয়েও টানাটানি পরে যাবে।

অগত্যা আমরা আর কি করি ওইভাবেই সারারাত শুয়ে থাকলাম। ইঁদুরকে আমার আগে খুব ভয় লাগত, কিন্তু এই ২৬ দিন জেলে থেকে এখন আর কিছুই ভয় লাগে না।

এরই মধ্যে একদিন কিছু  পুলিশ ২ টি গাড়ি করে আমাকে মাঝরাতে বার করে নিয়ে গেল। আমি জিজ্ঞাসা করলাম এত রাতে আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছ? তার উত্তরে ওরা বলল চুপ করে "আমাদের সাথে হাঁটতে থাক"। আমি তো খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম, ভাবলাম হয়েতো ওরা আমাকে ফেক এনকাউন্টার করে দেবে এইবার। আমার সাথে সব সময়ে একটা পেন থাকত আর যেতে যেতে একটা কাগজও পেয়ে গেলাম। তাতে  কোনও রকমে হিজিবিজি করে লিখলাম " আমি জানিনা আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে ওরা" আর তার নীচে সই করে দিলাম। যেখান থেকে গাড়িটা ছেড়েছিল সেইখানে ঐ কাগজটাকে ফেলে দিলাম, পরে কারোর চোখে পড়বে সেই আশায়। তারপর বুঝলাম ওরা আমাকে সেই হোসাঙ্গাবাদ জেলে নিয়ে যাচ্ছে। সেইখানে আগে থেকেই বাকি বন্দীদের দিয়ে আমাকে পেটানোর আদেশ ছিল। জেলে নিয়ে যেতেই ওরা আমাকে আর আমার ব্যাগকে সার্চ করতে লাগল, তারপর আমাকে ভিতরে নিয়ে গেল।

আর ভিতরে নিয়ে যেতেই অন্য এক গল্প শুরু হল। ওরা সেখানে ৩২ জন মতো আসামী ছিল তার মধ্যে ২০ জন প্রচন্ড নিষ্ঠুর ছিল। নতুন যে সব বন্দীরা আসত তাদের সার্চ করার নাম করে তাদের উপর সব রাগ ঢেলে দিত। তার মধ্যে একজন আমার ব্যাগ টেনে নিয়ে ভিতর থেকে তোয়ালে, আমার জামা,অন্তর্বাস বের করে রাস্তায় কাদার মধ্যে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিল। সার্চ করার নাম করে তারা যা খুশি করছিল, ২-৩ জন আমার জামা ধরে টানছিল, কেউ চুড়িদারের প্যান্টের দড়ি টেনে খুলে দিচ্ছিল, কেউ অন্তর্বাসের মধ্যে হাত ধুকিয়ে দিচ্ছিল, কেউ বা আবার আমার কুর্তা খুলে দিচ্ছিল। আমি প্রতিবাদ করলাম " এইটা আবার কেমন ধরনের সার্চ করার পদ্ধতি"? তার উত্তরে বলল "অপরাধ শাখার অফিসার আমাদের আদেশ দিয়েছে। এইবার আমরা তোমাকে ভাল করে ব্যাখ্যা করে দেব সার্চ করা কাকে বলে। ওকে ভিতরে নিয়ে গিয়ে উলঙ্গ করে দাও আর আমাকে একটা রুলার দিয়ে যাও, আমি ওকে বোঝাবো জেলের মধ্যে কীভাবে সার্চ করা হয়"। যেহেতু ওদের সাথে কোনও মারপিট করা যাবে না তাই আমি ভাবলাম চুপ করে থাকাই ভাল। আমি ওদের একবার বললাম, যে আমি সারাজীবন মানুষের অধিকার নিয়ে বিশেষত তোমাদের অধিকার রক্ষার স্বার্থেই কাজ করে এসেছি, আমার সাথে এই রকম ব্যবহার করবে না। কিন্তু ওরা তখন এমন নিষ্ঠুর হয়ে গিয়েছিল যে কোনও কথাই কানে ঢুকচ্ছিল না ওদের।

কোনও বন্দী জেল থেকে মুক্তি পাবে শুনলে বাকিরা তার উপর রেগে যেত, তার জিনিসপত্রগুলো নিয়ে নিত। ছেড়ে চলে যাওয়ার সময়ে জিনিসগুলো পাবে সেই আশায় তারা খুবই উৎসাহী হয়ে থাকত। জানতে চাইত কারা কে কি জিনিস নিয়ে আসছে জেলে মধ্যে। আর যদি কোনও শিক্ষিত মহিলা হয় তো তার কাছে কিছু টাকা থাকবে আশা করত। এই সব কথা অথরিটি কে বলেও কোনও কাজ দেয় নি। প্রথম ২-৩ দিন আমি খুবই স্ট্রেসড ছিলাম। আমি একজন প্রতিবাদী তাই  মৃত্যুকেও ভয় পাই না, সব রকম পরিস্থিতির জন্যই আমি প্রস্তুত ছিলাম কিন্তু প্রতিদিন প্রতিমুহূর্তে এই অত্যাচার বা অকথ্য গালাগালি দেখে মুখ বুজে থাকতে পারছিলাম না। বাইরের পরিস্থিতি বলছিল "চুপ করে বসে থাক", কিন্তু আমার মনের ভিতরটা বলছিল " উঠো, প্রতিবাদ করো"।

আমার নামে কী অপরাধ আছে তা না জানিয়েই হঠাৎই একদিন পুলিশ আমার বাড়িতে এসে আমাকে জোর করে ধরে নিয়ে যায়। আমার ছেলে কেমন আছে বা আমার স্বামী কেমন আছে বা ওরা তাকেও জেলে নিয়ে গেছে কিনা আর জেলে নিয়ে গেলেই বা আমার ছেলেকে কে দেখবে এইসব নিয়ে আমি খুব চিন্তিত ছিলাম। খুবই টেনশনে ছিলাম। আর এইসব চিন্তা ভাবনা আমার শরীরের উপরেও প্রভাব ফেলেছিল। কিছুদিনের মধ্যেই আমার বুকে ব্যাথা শুরু হয়। আমি ওদের ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবার কথা বললাম । ওরা আমাকে সরবিট্র্যাট দিয়ে বলল "এটাই যথেষ্ট আর  সন্ধেবেলা যদি ডাক্তার আসে তখন তার কাছে  নিয়ে যাব"। আমার আগে থেকেই হাই ব্লাড প্রেশার ছিল তাই সেই ওষুধ খাওয়া আমার উচিত নয়। সন্ধে বেলা ডাক্তার আসে আমাকে চেক আপ করল, প্রেশার তখনও কিছুটা বেশিই ছিল। ১৫ দিন বাদে আমাকে যখন কোর্টে তোলা হল আমি জাজ সাহেবের কাছে অনুরোধ করলাম আমাকে যেন একটি পেন, কাগজ, কিছু পড়ার জিনিস আর ওষুধ  নিয়ে জেলের মধ্যে থাকতে দেওয়া হয়, আর সেই নিয়ে কোনও পুলিশ যেন কোনও আপত্তি না জানায়।

জেলের মধ্যে কতিদন থাকতে হবে জানি না কিন্তু আমি যেন অসুস্থ না হয়ে পড়ি সেইটাই আমার একমাত্র লক্ষ্য ছিল। প্রায় ১৫ জনের জায়গার মধ্যে ৩৫ জন মহিলাকে রাখা হয়েছিল আরা তাদের অনেকেরই গাইনকোলজিকাল অসুখ ছিল। এমনকি মাসিকের সময়েও তাদের কোনও স্যানিটারি প্যাড দেওয়া হতো না, ছেঁড়া কোনও চাদর বা ন্যাকরা মতো কোনও জিনিস দিয়ে কাজ চালাত। কিছু কিছু আদিবাসী মহিলারা ৯ ইয়ার্ড শাড়ি পরে থাকত, তারা সেই শাড়ির একদিকটা স্যানিটারি তোয়ালে হিসেবে ব্যবহার করত  পরে সেটাকে ধুয়ে নিত তারপর আবার আর এক দিকটা ব্যবহার করত। শাড়িটিই ছিল তাদের স্যানিটারি প্যাড। আর জেলের মধ্যে একটি মাত্র দরজাহীন বাথরুম ছিল, ব্যাক্তিগত লজ্জা বলে তো কিছুই ছিল না। নতুন যারা আসত তারা ঐ বাথরুমের পাশে শুতো আর পুরনো বন্দীরা অন্য এক প্রান্তে শুতো। এইরকম একটা বদ্ধ পরিবেশে অনেকের ডাইরিয়া বা অনেকেরই মধ্যে যোনি থেকে সাদা স্রাব ক্ষরণ অসুখও শুরু হল। আমাদের এই যন্ত্রণার কথা শোনার মতো কেউ ছিল না। নিজেদেরকে মানুষ বলে মনে হচ্ছিল না। অনেক দিন জেলে থাকলে সবারই হয়েতো এইরকম মনে হয়, কিন্তু তবুও আমাদেরকে বাঁচতে হবে এইটুকুই লক্ষ্য ছিল।

কেউ একজন জানত আমি পেঁপে খেতে ভালোবাসি, পাঠিয়েছিল আমার জন্য। কিন্তু অবশেষে আমার কাছে যখন আসে তখন দেখি একটা প্লাস্টিকের প্যাকেটের মধ্যে পেঁপেটা চটকানো অবস্থায়। আমি জিজ্ঞাসা করতে তার উত্তরে বলল " আমরা পেঁপেটাকে সার্চ করেছি যাতে সেটা কোনো অস্ত্রশস্ত্র না হয় তাই"। আমি বললাম একটা ছুরি দিয়ে কাটলেই তো দেখা যেত তার জন্য এইরকম চটকানোর কি দরকার ছিল? ওরা বলল আগেও নাকি এইরকম ঘটনা ঘটেছে। বুঝলাম আমাকে শুধুমাত্র হয়রান করবার জন্য বা আমার সাথে শয়তানী করবার জন্য ওরা নতুন নতুন সব প্ল্যান বাতলায়। আমার নামে আসা সব জিনিসই জেলারের বাড়িতে যেত, আমার কাছে কিছুই এসে পৌঁছত না। শুধুমাত্র আমি না এই হয়রানির শিকার বাকি বন্দীরাও হয়েছিল।

১৫ দিনের মাথায় আমি যখন কোর্টে উঠি আমি জাজ কে বলি ওরা মেয়েদের মাসিকের সময়ে যেন ঠিকমত স্যানিটারি প্যাড দেয় তার আদেশ দিন। তারপরেই দেখলাম ৫০০টাকার প্যাড ওরা কিনে দিল আমাদের। কিন্তু উপযুক্ত অন্তর্বাস না থাকায় কেউই সেটা আর ব্যবহার করত পারল না।

সকল মানুষের উচিৎ জেলের মধ্যে এই নির্মম প্রহসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা।

শামিম মোদীর বক্তব্য (http://www.youtube.com/watch?v=dZbyw8YJztQ&feature=player_embedded) থেকে শ্রুতিলিখন ও অনুবাদ করেছেন প্রিয়াঙ্কা বরপূজারী ও চৈতালি চ্যাটার্জি।

http://www.guruchandali.com/default/2012/08/07/1344286458914.html#.UOhLK-S-pA0


বিএসএফের বিচার করুন: হিউম্যান রাইটস ওয়াচ
Tue, Jan 31st, 2012 4:04 pm BdST
 
ঢাকা, জানুয়ারি ৩১ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- সীমান্তে বেসামরিক বাংলাদেশিদের নির্যাতনের ঘটনায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) দোষী সদস্যদের বিচার করার আহ্বান জানিয়েছে নিউইয়র্কভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। 

সোমবার এক বিবৃতিতে সংস্থাটি বলেছে, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে দীর্ঘদিন ধরে বেসামরিক মানুষকে হয়রানি, নির্যাতন ও বিনা বিচারে হত্যার ঘটনার সঙ্গে জড়িত রয়েছে বিএসএফ সদস্যরা। স¤প্রতি পশ্চিমবঙ্গ সীমান্তে এক বাংলাদেশির ওপর তাদের বর্বর নির্যাতনের ভিডিওচিত্র ইন্টারনেটভিত্তিক ভিডিও সাইট ইউটিউবে প্রকাশ পেয়েছে। 

স¤প্রতি ছত্তিশগড়ে এক স্কুল শিক্ষিকাকে যৌন নির্যাতনের ঘটনা তদন্ত করার প্রতিবাদে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তাকে ভারত সরকার মেডেল দিয়ে পুরস্কৃত করেছে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। 

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলি বলেন, "মানবাধিকার সংস্থাগুলো দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছে যে, বিএসএফ নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে। লাগামহীন অত্যাচার-নিপীড়নের এই চিত্র ভিডিওতে উঠে আসায় সে বিষয়টিই প্রমাণিত হয়েছে।" 

তিনি বলেন, "ভারত সরকার সীমান্তে বিএসএফের এসব অত্যাচার-নিপীড়নের কথা ভালোভাবেই জানে। কিন্তু কখনোই দোষীদের বিচারের মুখোমুখি করেনি তারা। ভারতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আইনের উর্ধ্বে কি না- এবারের ভিডিও প্রকাশের ঘটনায় তার পরীক্ষা হয়ে যাবে।" 

২০১০ সালের ডিসেম্বর মাসে কলকাতাভিত্তিক বেসরকারি সংস্থা বাংলার মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চ (মাসুম) এবং ঢাকাভিত্তিক সংস্থা অধিকারকে সঙ্গে নিয়ে 'ট্রিগার হ্যাপি: এক্সেসিভ ইউজ অব ফোর্স বাই ইন্ডিয়ান ট্রুপস অ্যাট দি বাংলাদেশ বর্ডার' নামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে এইচআরডব্লিউ। 

বাংলার মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চই ইউটিউবে বিএসএফের নির্যাতনের ভিডিওটি প্রকাশ করে। 

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার দুর্লভপুর ইউনিয়নের সতের রশিয়া গ্রামের হাবিবুর রহমান (২২) গত ৯ ডিসেম্বর রাজশাহীর পবা উপজেলার খানপুর সীমান্ত দিয়ে গরু আনার সময় বিএসএফের নির্যাতনের শিকার হন। ঘুষ দিতে রাজি না হওয়ায় ওই বাংলাদেশিকে নির্দয়ভাবে পেটায় বিএসএফের সদস্যরা। তার জননাঙ্গে পেট্রোলও ঢেলে দেওয়া হয়। 

ওই ঘটনায় ধারণ করা ভিডিওটি ১৮ জানুয়ারি ইন্টারনেটে প্রকাশিত হলে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে ভারত সরকার। ওইদিনই আট জওয়ানকে সাময়িক বরখাস্ত করে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী।

ঢাকার মানবাধিকার সংগঠন নাগরিক আন্দোলনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত এক দশকে বিএসএফে হাতে এক হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি নাগরিক নিহত হয়েছে। একই সময়ে বিএসএফের গুলিতে আহত হয় হয় ৯৮৭ জন, অপহৃত হয় অন্তত এক হাজার মানুষ। 

'ট্রিগার হ্যাপি: এক্সেসিভ ইউজ অব ফোর্স বাই ইন্ডিয়ান ট্রুপস অ্যাট দি বাংলাদেশ বর্ডার' প্রতিবেদনে বিএসএফের হাতে বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি হত্যা, নির্যাতন ও বিনা বিচারে আটকে রাখার ঘটনা নথিভূক্ত করার পাশাপাশি ওইসব ঘটনার তদন্ত ও জড়িতদের বিচার করার ব্যাপারে ভারত সরকারের ব্যর্থতার কথাও তুলে ধরা হয়। 

ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পর সীমান্তে 'প্রাণঘাতী নয়'- এমন অস্ত্র ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেয় ভারত সরকার। এতে বিএসএফের গুলিতে নিহতের সংখ্যা কমে এলেও অত্যাচার ও নিপীড়নের ঘটনা কমেনি। 

হাবিবুর রহমানের ওপর নির্যাতনের ঘটনায় আট সদস্যকে বরখাস্ত করা হলেও তাদের বিরুদ্ধে মামলা না হওয়ায় মীনাক্ষী গাঙ্গুলি বলেন, "যখনই এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটে, তখনই সরকার পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দেন। কিন্তু গোপন বিচার ও বরখাস্ত-বদলিতে অত্যাচার শেষ হবে না।" 

"নির্যাতন একটি গুরুতর অপরাধ। এর বিচার আদালতেই হওয়া উচিত", যোগ করেন তিনি। 

নির্যাতনের জন্য দায়ী বিএসএফ সদস্যদের বিচার না হওয়ায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী অন্যান্য ভারতীয় বাহিনীর মধ্যেও নির্যাতনের প্রবণতা ছড়িয়ে পড়ছে বলে মনে করে এইচআরডব্লিউ। 

পুলিশের নির্যাতন 

ভারতের ছত্তিশগড় রাজ্যের স্কুলশিক্ষিকা সোনি সোরি ২০১১ সালের অক্টোবর মাসে অভিযোগ করেন, মাওবাদীদের সমর্থনকারী সন্দেহে গ্রেপ্তারের পরে তার ওপর নির্যাতন ও যৌন নিপীড়ন চালিয়েছে পুলিশ। 

এইচআরডব্লিউর প্রতিবেদনে বলা হয়, গ্রেপ্তারের পর নিজের জীবন ও নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশের পরও এই শিক্ষককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রাজ্য পুলিশের হেফাজতে পাঠায় আদালত। 

আর হেফাজতে পুলিশ সুপার অঙ্কিত গার্গের নির্দেশ নির্যাতন চালানো হয় বলে অভিযোগ করেন সোনি। এ অভিযোগের ভিত্তিতে শারীরিক পরীক্ষার জন্য সোনিকে কলকাতা মেডিকেল কলেজে স্থানান্তর করতে বলে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট। গত নভেম্বরে মেডিকেল পরীক্ষায় সোনির অভিযোগের সত্যতা মেলে। 

এইচআরডব্লিউ বলেছে, ভারতীয় কর্তৃপক্ষ এরপরেও ওই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি, বরং গত ২৬ জানুয়ারি ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসে ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে 'সাহসিকতার জন্য' পদক পরিয়ে দেন প্রেসিডেন্ট প্রতিভা পাতিল। 

সোনির আইনজীবীদের একজন এইচআরডব্লিউকে বলেছেন, বর্তমানে ছত্তিশগড়ের রাইপুর কারাগারে আটক তার মক্কেল পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবাও পাচ্ছেন না। 

মানবাধিকার কর্মী মীনাক্ষী গাঙ্গুলি বলেন, "সোনি সোরির ঘটনাটিই প্রমাণ করে, ভারতে নির্যাতিতরা পরবর্তীতেও কতোটা নির্মমতার মুখোমুখি হন। ভারত সরকার নির্লজ্জভাবে এ ধরনের নির্যাতনে জড়িতদের পদক দিচ্ছে, আর নির্যাতিতদের চিকিৎসা পেতেও হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।" 

'নির্যাতনবিরোধী চুক্তি' অনুমোদনের আহ্বান 

নির্যাতন প্রতিরোধে ভারত সরকারকে 'কনভেনশন অ্যাগেইনস্ট টর্চার অ্যান্ড আদার ক্রুয়েল, ইনহিউম্যান অর ডিগ্রেডিং ট্রিটমেন্ট অর পানিশমেন্ট'- এ স্বাক্ষর করার আহ্বান জানিয়েছেন এইচআরডব্লিউ। 

এছাড়া রাজ্যসভায় অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকা প্রিভেনশন অব টর্চার আইনটিও কার্যকর করার আহ্বান জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থাটি। 

এ আইন কার্যকর হলে মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী সরকারি কর্মকর্তাদের দায়মুক্তির সুযোগ বন্ধ হয়ে যাবে। এছাড়া নির্যাতিতকে অভিযোগ দাখিলের জন্য পর্যাপ্ত সময় এবং যে কোনো অমানবিক ও অপমানজনক নির্যাতনের ঘটনাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার পথ তৈরি হবে। 

"বিএসএফ ও ভারতীয় পুলিশসহ নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা নির্যাতন করেও দায়মুক্তি পেয়ে যাচ্ছে। দিল্লীর কেন্দ্রীয় সরকার কবে জেগে উঠবে? কবে নির্যাতন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ইতি টানার পদক্ষেপ নেবে", বলেন মীনাক্ষী গাঙ্গুলি। 

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/জেআর/কিউএইচ/জেকে/১৫৫২ ঘ. 

গুগল লোগোতে অমর একুশে, বরকতের উত্তরসূরিরা সোচ্চার
প্রস্তাবনা যাচ্ছে সার্চ ইঞ্জিনের সদর দফতরে
মোরসালিন মিজান
বাঙালীর অনন্য অর্জন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে বিশ্বসেরা সার্চ ইঞ্জিন গুগল-এর মাধ্যমে সারা পৃথিবীর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে এখন কাজ করছে বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম। বরকত, সালাম, রফিক, শফিক, জব্বারের উত্তরসূরিরা চলতি মাসের ২১ তারিখ বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত সার্চ ইঞ্জিনটির লোগোতে অমর একুশের উপস্থাপনা দেখতে চান। সে লক্ষ্যে ব্যাপক অনলাইন প্রচারণা শুরু করেছেন তাঁরা। বিশেষ গুগল ডুডলের প্রস্তাবনা পাঠানো হচ্ছে সার্চ ইঞ্জিন জায়ান্টের দফতরে। একুশে ফেব্রæয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হওয়ায় প্রস্তাবনাটি বিশেষ বিবেচনা পাবে বলে আশা করছেন তাঁরা। এ ক্ষেত্রে যত বেশি মানুষ আবেদন জানাবে ততই দাবিটি জোরালো হবে। আর তাই ভার্জুয়াল যোগাযোগের মাধ্যমে সকলকে উজ্জীবিত করার ওপর বিশেষ জোর দেয়া হচ্ছে। 
জানা যায়, ই-মেইলে পাওয়া ডুডল প্রস্তাবনা বেশ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে থাকে গুগল। এ বিবেচনা থেকেই বিশেষ দিবসগুলোতে গুগলের লোগো পরিবর্তন হয়। এটি গুগল ডুডল নামে পরিচিত। এ প্রক্রিয়ায় বিখ্যাতদের জন্ম বা মৃত্যু দিবস, ঐতিহাসিক ঘটনা, আবিষ্কারের দিনক্ষণ, কোন দেশের স্বধীনতা বা বিজয় দিবসসহ গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বা মুহূর্তগুলোকে তারিখ অনুযায়ী তুলে ধরে গুগল। হোম পেজের লোগো এবং টাইটেল লেভেল দিয়ে কাজটি করা হয়ে থাকে। যে কেউ নিজের পছন্দের কোন ডুডল ডিজাইন বা প্রস্তাবনা গুগল বরাবর পাঠাতে পারেন। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী ২১ ফেব্রæয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে একটি বিশেষ ডুডল আশা করা হচ্ছে যেখানে বায়ান্নর ভাষাশহীদদের আত্মত্যাগের বিষয়টি ফুটে উঠবে। এটি হলে একদিনেই সারা বিশ্বের কোটি কোটি গুগল ব্যবহারকারীর কাছে পৌঁছে যাবে ভাষার জন্য এ অঞ্চলের মানুষের আত্মত্যাগের ইতিহাস। 
অনলাইন দুনিয়া ঘুরে জানা যায়, আরিফুল ইসলাম শাওন, মামুন, জ্যোতি প্রকাশ, মাজেদুল ইসলামসহ আরও কয়েকজন তরুণ এ ব্যাপারে প্রথম উদ্যোগী হন। উদ্যোক্তারা জানান, proposals@google.com ঠিকানায় ই-মেল করে গুগলকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ডুডল পরিবর্তনের প্রস্তাবনা পাঠানো যাবে। একই কাজ একক এবং দলীয়ভাবেও করা যেতে পারে। তবে এখন ফেসবুক ছাড়া অনেক প্রচারণাই শতভাগ সফল হয় না। তাই সামাজিক নেটওয়ার্ক জায়ান্ট ফেসবুকে একটি পেজ খোলা হয়েছে। http://www.facebook.com/BDGoogleDoodle/ইউএড়ড়মষবউড়ড়ফষব ঠিকানায় গিয়ে দেখা যায়, দারুণ জমে উঠেছে প্রচারনা। এখানে নিজেদের দাবির পক্ষে আবেগঘন মতামত রাখছে বিভিন্ন বয়সী মানুষ। বিশেষ গুগল ডুডল সম্পর্কে জানানো হয়, ২১ ফেব্রæয়ারি ডুডল পরিবর্তন নিয়ে নানা পরিকল্পনা লিখে প্রকাশ করা হচ্ছে। অহর্নিশ প্রচারের ফলে সদস্য সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। সবাইকে উদ্বুদ্ধ করতে নিয়মিত স্ট্যাটাস দিচ্ছেন তাঁরা। তাঁদেরই একজন জার্মানি প্রবাসী ফারাজানা জামান। নিজের প্রচারণায় তিনি বলেন, ফেসবুকে প্রায় ২০ লাখের কাছাকাছি বাংলাদেশী ইউজার। সবাই এগিয়ে এলে কাজটি সহজেই হতে পারে। এমন একটি চমৎকার উদ্যোগে প্রবাসীরাও যোগ দিচ্ছে বলে জানান তিনি। 
এদিকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ডিজাইন পাঠানোর মাধ্যমেও গুগলের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যায়। সে চেষ্টাটিও হচ্ছে। জানা যায়, সকলকে সচেতন করার জন্য ইতোমধ্যে একটি ডুডল ডিজাইন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। প্রচুর ছবি জমা পড়ে তখন। সেসবের অপেক্ষাকৃত সুন্দর ১৭টি ডিজাইন অনলাইন ভোটাভুটির জন্য উন্মুক্ত করা হয়। এগুলোর মধ্যে তানজিম ইসলামের তৈরি একটি থিমকে সর্বোচ্চ ২০৩ 'লাইক' ভোট দিয়ে গুগল ডুডল হিসেবে প্রস্তাব করার জন্য চূড়ান্ত করা হয়। প্রস্তÍাবনার সঙ্গে নির্বাচিত ছবিটি যুক্ত করে দেয়া হবে বলে জানা গেছে।
গুগল ডুডল নামে একটি দলও এ ব্যাপারে কাজ করছে। তাদের ¯^প্ন, ২১ ফেব্রæয়ারি, ২৬ মার্চ, এবং ১৬ ডিসেম্বরÑ এই তিন দিন গুগল তাদের ডুডল ক্যালেন্ডারে বাংলাদেশের ইতিহাসকে স্থান দেবে। তবে ২৬ মার্চ এবং ১৬ ডিসেম্বর কেবল বাংলাদেশের হওয়ায় এই দুটো দিন বিবেচনায় নাও নিতে পারে গুগল। তারা নিলেও তা দেখা যাবে শুধু যঃঃঢ়://িি.িমড়ড়মষব.পড়স.নফ লিঙ্কে। সারা বিশ্ব বিষয়টা জানতে পারবে না। তিনটার জন্য এক সঙ্গে আবেদন করলে হয়ত একটা লোকাল ইভেন্ট চালু করে দেবে। ২১ ফেব্রæয়ারি যেহেতু আন্তর্জাতিক দিবস তাই এটা নিয়েই আমাদের কাজ করা উচিত। এটা একসেপ্ট হলে পরে বাকিগুলোর জন্যও আমরা চেষ্টা করতে পারি।
মায়ের ভাষা বাংলা নিয়ে তরুণদের এমন উদ্যোগের কথা জেনে দারুণ আশাবাদী ভাষাসৈনিকরা। তাঁদের অন্যতম আহমদ রফিক জনকণ্ঠকে বলেন, আমরা আমাদের দায়িত্ব ১৯৫২ সালে পালন করেছি। এবার এ চেতনাকে এগিয়ে নেয়ার দায়িত্ব এ প্রজন্মের। তারা তা করলে দেশ সামনের দিকে এগিয়ে যেতে বাধ্য।
নারী নীতি বাস্তবায়নে আন্তরিক হোন ॥ রাষ্ট্রপতি
রোকেয়া পদক '১১ পেলেন বেগম মেহেরুন্নেসা ও প্রফেসর হামিদা খানম (মরণোত্তর)
রাষ্ট্রপতি মোঃ জিল্লুর রহমান দেশে নারী সমাজের অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি-২০১১ বাস্তবায়নে আন্তরিক হতে সকলের প্রতি আহন জানিয়েছেন। মঙ্গলবার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বেগম রোকেয়া দিবস ২০১১ উপলক্ষে রোকেয়া পদক প্রদানকালে তিনি এ কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, দেশের জনসংখ্যার অর্ধেক নারীদের সমাজ অংশগ্রহণ ছাড়া টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। খবর বাসসর।
বেগম মেহেরুন্নেসা খাতুন ও প্রফেসর হামিদা খানমকে (মরণোত্তর) নারী উন্নয়নে অবদানের জন্য রোকেয়া পদক ২০১১ দেয়া হয়। এই উপমহাদেশে নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার দর্শন ও আদর্শের আলোকে এক সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে নারী-পুরুষ নিবিশেষ সকলকে একত্রে কাজ করার আহন জানান রাষ্ট্রপতি।
জিল্লুর রহমান বলেন, সরকার পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে নারীদের সমঅধিকার ও সুযোগ নিশ্চিত করতে আন্তরিকতার সঙ্গে নিরলসভাবে কাজ করছে।
শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবারকল্যাণ, নিরাপত্তা, কর্মসংস্থান ও নারীর ক্ষমতায়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অগ্রগতি সাধিত হয়েছে এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে নারীদের সম্পৃক্ত করে তাদের আত্মনির্ভরশীল করতে বিভিন্ন কর্মসূচীর বাস্তবায়ন হচ্ছে।
মুসলিম নারী মুক্তি আন্দোলনে বেগম রোকেয়াকে আলোকবর্তিকা হিসেবে অভিহিত করে রাষ্ট্রপতি বলেন, তিনি সারাজীবন নারীর অর্থনৈতিক স্বয়ম্ভরতা, অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা এবং জেন্ডার বৈষম্য অবসানের লক্ষে কাজ করেছেন।
তিনি বলেন, ১শ' বছর আগে এই মহীয়সী নারী স্বপ্ন দেখেছিলেন যে, একদিন নারীরা দেশ পরিচালনা করবে এবং পুরুষদের সমান অধিকার ও সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবে। 
বেগম রোকেয়ার শত বছর আগের এই স্বপ্নের অধিকাংশ আজ বাস্তবে প্রতিফলিত হয়েছে এ কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, এখন আমাদের প্রধানমন্ত্রী আর একজন মহীয়সী নারী এবং সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা ও সংসদ উপনেতাও নারী।
রাষ্ট্রপতি বলেন, দেশব্যাপী নারীরা এখন জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হচ্ছেন এবং বিচার বিভাগ, প্রশাসন, পুলিশ ও প্রতিরক্ষাসহ সকল ক্ষেত্রে যোগ্যতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে।
তিনি বলেন, নারীর বর্তমান ক্ষমতায়ন হচ্ছে বেগম রোকেয়ার স্বপ্নের ফসল।
অনুষ্ঠানে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ডা. শিরিন শারমিন চৌধুরী ও একই মন্ত্রণালয়ের সচিব তারিক উল ইসলাম বক্তৃতা করেন।
১২ মার্চের আগেই দাবি না মানলে পালানোর পথ পাবে না সরকার
বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশে ফখরুল
স্টাফ রিপোর্টার ॥বিভিন্ন জেলায় গণমিছিল চলাকালে পুলিশের গুলিতে মানুষ হত্যার জন্য প্রধানমন্ত্রী দায়ী বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার গুম হত্যা করেও বিরোধী দলকে দমাতে পারছে না। তাই এখন প্রকাশ্যে গুলি করে মানুষ হত্যা করছে। আর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই পুলিশ গুলি করে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের হত্যা করছে। চাঁদপুর, লক্ষীপুর ও রাজশাহীতে গণমিছিল চলাকালে পুলিশের গুলিতে বিএনপি ও জামায়াতের ৫ নেতাকর্মী নিহত হওয়ার প্রতিবাদে মঙ্গলবার বিকেলে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর বিএনপি আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। 
১২ মার্চের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে তত্তাবধায়ক সরকারের দাবিতে ঢাকায় লাখ লাখ মানুষ জড়ো হবে বলে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এর আগেই সরকারকে দাবি মেনে নিতে হবে। তা না হলে এ সরকার পালানোর পথও পাবে না। তিনি বলেন, বিরোধী দলের আন্দোলন চলাকালে পুলিশ গুলি করেছে। এতে ৫ মায়ের বুক খালি হয়েছে। কিন্তু সরকারকে মনে রাখতে হবে, এ দেশের মানুষ গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছে। কিন্তু তাদের ওপর গুলি চালানো হচ্ছে কেন? গণতন্ত্রের কথা বলা কি অপরাধ? 
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, দেশ পরিচালনায় ব্যর্থ এ সরকার গণবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ব্যর্র্থতা ঢাকতেই এ সরকার প্রকাশ্যে গুলি করে মানুষ হত্যা করছে। কিন্তু গুলি করে মানুষ হত্যা করে অতীতে মুসলিম লীগসহ অনেক দল ধ্বংস হয়ে গেছে। তাই আওয়ামী লীগও ধ্বংস হয়ে যাবে। আর গণমিছিলে গুলি করে মানুষ হত্যার জন্য প্রধানমন্ত্রী দায়ী এবং ভবিষ্যতে তাঁকে এর জবাব দিতে হবে। দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, শোককে শক্তিতে পরিণত করে দুর্বার আন্দোলনের মাধ্যমে এই জুলুমবাজ সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরাতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, এ সরকার জনগণকে দেয়া ওয়াদা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। অর্থনীতি ধ্বংস করে দিয়েছে। শেয়ার মার্কেটকেও এ সরকার ধ্বংস করে দিয়েছে। তাই এ সরকারকে আর ক্ষমতায় থাকতে দেয়া যায় না। কারণ এ সরকার যতদিন ক্ষমতায় থাকবে দেশের সমস্যা তত বাড়বে। তাই এ সরকারকে বিদায় করে তত্ত¡াবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। 
মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি কখনও সরকার হটানোর আল্টিমেটাম বা ট্রাম্পকার্ড দেয় না। কিন্তু আওয়ামী লীগ বিএনপি আমলে সরকার পতনের আল্টিমেটাম ও ট্রাম্পকার্ড দিয়েছে। আর বিএনপি কোন দিনই সেনা অভ্যুত্থানের সঙ্গে জড়িত ছিল না। আওয়ামী লীগই সব সেনা অভ্যুত্থানের সঙ্গে জড়িত। সেনা অভ্যুত্থানে ৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর আওয়ামী লীগ নেতা খন্দকার মোশতাকই রাষ্ট্র ক্ষমতা গ্রহণ করেন। 

তদন্ত নিরপেক্ষ হবে না ॥ ব্যারিস্টার রফিক 
গণমিছিলে গুলি করে মানুষ হত্যার ঘটনায় নিরপেষ তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম মিয়া। বিরোধী দলের গণমিছিলে গুলি করে মানুষ হত্যার প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকালে ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এনডিপি) আয়োজিত এক মানববন্ধন কর্মসূচীতে তিনি বলেন, পুলিশ প্রশাসনের গঠিত কমিটি দিয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত সম্ভব নয়। জজ সাহেব যদি সাক্ষী হন, তাহলে তদন্তের যে অবস্থা হবে, এ ক্ষেত্রেও তাই হবে। কারণ পুলিশের তদন্ত কমিটি পুলিশের পক্ষে থাকবে। ওই তদন্ত কমিটি নিরপেক্ষভাবে কাজ করবে না। ব্যারিস্টার রফিক বলেন, বর্তমান সঙ্কট থেকে দেশকে উদ্ধার করতে হলে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে চলমান আন্দোলনে সবাইকে শরিক হতে হবে।

খালেদা জিয়ার অভিনন্দন 
গণমিছিল সফল হওয়ায় ঢাকা মহানগরীসহ বৃহত্তর ঢাকা জেলার জনসাধারণকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। একই সঙ্গে তিনি বিএনপিসহ চারদলীয় জোটের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। গণমিছিলের সংবাদ সংগ্রহের জন্য সাংবাদিকদেরও ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
খালেদা জিয়া শিবিরের ওপর ভর করে হুমকি দিচ্ছেন
গ্রাম ডাক্তার সমিতির মহাসমাবেশে নাসিম
স্টাফ রিপোর্টার ॥ আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, খালেদা জিয়া ক্ষমতায় যাওয়ার আগেই হুমকি দিয়েছেন আমাদের নাকি রাস্তায়ও দাঁড়াতে দেবেন না। যারা ক্ষমতায় যাওয়ার আগেই এমন হুমকি দেয় তাদের মুখে গণতন্ত্রের কথা শুনতে চায় না জনগণ। এছাড়া বিগত বিএনপি- জামায়াত জোট আমলে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতনের কথা জনগণ এখনও ভুলে যায়নি। খালেদা জিয়ার উদ্দেশে নাসিম বলেন, হুঙ্কার দিয়ে লাভ হবে না। আওয়ামী লীগ হুঙ্কারে ভয় পায় না। আওয়ামী লীগ জনগণের দল। জনগণই আওয়ামী লীগের শক্তি।
মঙ্গলবার রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে বাংলাদেশ গ্রাম ডাক্তার (কল্যাণ) সমিতির মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় নাসিম আরও বলেন, খালেদা জিয়া শিবিরের ওপর ভর করে আওয়ামী লীগকে হুমকি দিচ্ছে। জামায়াত- শিবিরকে সঙ্গে নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। কিন্তু দেশের জনগণ তাদের যেকোন ষড়যন্ত্র রুখে দিতে প্রস্তুত। তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক অধিকারের নামে কেউ নৈরাজ্য, সন্ত্রাস, বোমাবাজি করলে সরকার তা বরদাশত করবে না। অধিকারের নামে কোন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সহ্য করা হবে না। তিনি বলেন, নির্ধারিত মেয়াদ শেষে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা হস্তান্তর করবে। সংবিধান অনুসারে নির্বাচন হবে। জনগণ যাদের ম্যান্ডেট দেবে তারা দেশ পরিচালনা করবে। জনগণ আমাদের চাইলে আমরা সরকারী দলে বসব, না চাইলে বিরোধী দলে বসতে আমাদের আপত্তি নেই। কারণ, জনগণের শক্তিতে বিশ্বাস করে আওয়ামী লীগ।
বাংলাদেশ গ্রাম ডাক্তার (কল্যাণ) সমিতির সভাপতি ডা. আব্দুস সাত্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, প্রচার সম্পাদক আবদুল হক সবুজ, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের সহ-সভাপতি কল্যাণ সেন, গ্রাম ডাক্তার সমিতির সাধারণ সম্পাদক ডা. আবু ইফসুফ খান বাদল প্রমুখ।
মোহাম্মদ নাসিম বলেন, শহরের চিকিৎসকরা গ্রামে গিয়ে থাকতে চায় না। তাই গ্রাম্য চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার উপযোগী করে তোলার বিষয়টি গুরুত্ব দেয়া দরকার। গ্রাম্য ডাক্তারদের অবহেলা করা ঠিক নয়। প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিয়ে কমিউনিটি ক্লিনিকে নিয়োগ দেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে। এতে স্বস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে সরকারের উদ্যোগ আরও সহজ হতে পারে। নাসিম গ্রাম ডাক্তারদের উদ্দেশে বলেন, আপনাদের দাবিগুলো আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানাব। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে আপনাদের যুক্তিসঙ্গত দাবিগুলো অবশ্যই মেনে নেয়ার উদ্যোগ নেয়া হবে। তিনি বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি দেশের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছে। এ ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সবাইকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। তিনি শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে সবাইকে আওয়ামী লীগের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহন জানান।
নির্যাতনকারী বিএসএফ সদস্যদের বিচার করার আহন
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের বিবৃতি
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম ॥ সীমান্তে বেসামরিক বাংলাদেশীদের নির্যাতনের ঘটনায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) দোষী সদস্যদের বিচার করার আহন জানিয়েছে নিউইয়র্কভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। 
সোমবার এক বিবৃতিতে সংস্থাটি বলেছে, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে দীর্ঘদিন ধরে বেসামরিক মানুষকে হয়রানি, নির্যাতন ও বিনাবিচারে হত্যার ঘটনার সঙ্গে জড়িত রয়েছে বিএসএফ সদস্যরা। সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ সীমান্তে এক বাংলাদেশীর ওপর তাদের বর্বর নির্যাতনের ভিডিওচিত্র ইন্টারনেটভিত্তিক ভিডিও সাইট ইউটিউবে প্রকাশ পেয়েছে। 
সম্প্রতি ছত্তিশগড়ে এক স্কুলশিক্ষিকাকে যৌন নির্যাতনের ঘটনা তদন্ত করার প্রতিবাদে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তাকে ভারত সরকার মেডেল দিয়ে পুরস্কৃত করেছে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলী বলেন, 'মানবাধিকার সংস্থাগুলো দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছে যে, বিএসএফ নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে। লাগামহীন অত্যাচার-নিপীড়নের এই চিত্র ভিডিওতে উঠে আসায় সে বিষয়টিই প্রমাণিত হয়েছে।' 
তিনি বলেন, 'ভারত সরকার সীমান্তে বিএসএফের এসব অত্যাচার-নিপীড়নের কথা ভালভাবেই জানে। কিন্তু কখনই দোষীদের বিচারের মুখোমুখি করেনি তারা। ভারতে আইনশৃক্সখলা বাহিনী আইনের উর্ধে কি না এবারের ভিডিও প্রকাশের ঘটনায় তার পরীক্ষা হয়ে যাবে।' 
২০১০ সালের ডিসেম্বরে কলকাতাভিত্তিক বেসরকারী সংস্থা বাংলার মানবাধিকার সুর¶া মঞ্চ (মাসুম) এবং ঢাকাভিত্তিক সংস্থা অধিকারকে সঙ্গে নিয়ে 'ট্রিগার হ্যাপি : এক্সেসিভ ইউজ অব ফোর্স বাই ইন্ডিয়ান ট্রুপস এ্যাট দি বাংলাদেশ বর্ডার' নামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে এইচআরডব্লিউ। 
বাংলার মানবাধিকার সুর¶া মঞ্চই ইউটিউবে বিএসএফের নির্যাতনের ভিডিওটি প্রকাশ করে। 
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার দুর্লভপুর ইউনিয়নের সতের রশিয়া গ্রামের হাবিবুর রহমান (২২) গত ৯ ডিসেম্বর রাজশাহীর পবা উপজেলার খানপুর সীমান্ত দিয়ে গরু আনার সময় বিএসএফের নির্যাতনের শিকার হন। ঘুষ দিতে রাজি না হওয়ায় ওই বাংলাদেশীকে নির্দয়ভাবে পেটায় বিএসএফের সদস্যরা। তার জননাঙ্গে পেট্রোলও ঢেলে দেয়া হয়। 
ওই ঘটনায় ধারণ করা ভিডিওটি ১৮ জানুয়ারি ইন্টারনেটে প্রকাশিত হলে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে ভারত সরকার। ওইদিনই আট জওয়ানকে সাময়িক বরখাস্ত করে ভারতীয় সীমান্তর¶ী বাহিনী। 
ঢাকার মানবাধিকার সংগঠন নাগরিক আন্দোলনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত এক দশকে বিএসএফের হাতে এক হাজারেরও বেশি বাংলাদেশী নাগরিক নিহত হয়েছে। একই সময়ে বিএসএফের গুলিতে আহত হয় হয় ৯৮৭ জন, অপহৃত হয় অন্তত এক হাজার মানুষ। 
'ট্রিগার হ্যাপি : এক্সেসিভ ইউজ অব ফোর্স বাই ইন্ডিয়ান ট্রুপস এ্যাট দি বাংলাদেশ বর্ডার' প্রতিবেদনে বিএসএফের হাতে বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশী হত্যা, নির্যাতন ও বিনাবিচারে আটকে রাখার ঘটনা নথিভুক্ত করার পাশাপাশি ওইসব ঘটনার তদন্ত ও জড়িতদের বিচার করার ব্যাপারে ভারত সরকারের ব্যর্থতার কথাও তুলে ধরা হয়। 
ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পর সীমান্তে 'প্রাণঘাতী নয়'Ñ এমন অস্ত্র ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেয় ভারত সরকার। এতে বিএসএফের গুলিতে নিহতের সংখ্যা কমে এলেও অত্যাচার ও নিপীড়নের ঘটনা কমেনি। 
হাবিবুর রহমানের ওপর নির্যাতনের ঘটনায় আট সদস্যকে বরখাস্ত করা হলেও তাদের বিরুদ্ধে মামলা না হওয়ায় মীনা¶ী গাঙ্গুলী বলেন, 'যখনই এ ধরনের কোন ঘটনা ঘটে, তখনই সরকার পদ¶েপ গ্রহণের আশ্বাস দেয়। কিন্তু গোপন বিচার ও বরখাস্ত-বদলিতে অত্যাচার শেষ হবে না।'
'নির্যাতন একটি গুরুতর অপরাধ। এর বিচার আদালতেই হওয়া উচিত', যোগ করেন তিনি। 
নির্যাতনের জন্য দায়ী বিএসএফ সদস্যদের বিচার না হওয়ায় আইনশৃক্সখলা র¶াকারী অন্যান্য ভারতীয় বাহিনীর মধ্যেও নির্যাতনের প্রবণতা ছড়িয়ে পড়ছে বলে মনে করে এইচআরডব্লিউ। 
পুলিশের নির্যাতন 
ভারতের ছত্তিশগড় রাজ্যের স্কুলশি¶িকা সোনি সোরি ২০১১ সালের অক্টোবর মাসে অভিযোগ করেন, মাওবাদীদের সমর্থনকারী সন্দেহে গ্রেফতারের পরে তার ওপর নির্যাতন ও যৌন নিপীড়ন চালিয়েছে পুলিশ। 
এইচআরডব্লিউর প্রতিবেদনে বলা হয়, গ্রেফতারের পর নিজের জীবন ও নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশের পরও এই শি¶ককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রাজ্য পুলিশের হেফাজতে পাঠায় আদালত। 
আর হেফাজতে পুলিশ সুপার অঙ্কিত গার্গের নির্দেশ নির্যাতন চালানো হয় বলে অভিযোগ করেন সোনি। এ অভিযোগের ভিত্তিতে শারীরিক পরী¶ার জন্য সোনিকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তর করতে বলে ভারতীয় সুপ্রীমকোর্ট। গত নবেম্বরে মেডিক্যাল পরীক্ষায় সোনির অভিযোগের সত্যতা মেলে।
এইচআরডব্লিউ বলেছে, ভারতীয় কর্তৃপক্ষ এরপরেও ওই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি, বরং গত ২৬ জানুয়ারি ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসে ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে 'সাহসিকতার জন্য' পদক পরিয়ে দেন রাষ্ট্রপতি প্রতিভা পাটিল।
সোনির আইনজীবীদের একজন এইচআরডব্লিউকে বলেছেন, বর্তমানে ছত্তিশগড়ের রাইপুর কারাগারে আটক তাঁর মক্কেল পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবাও পাচ্ছেন না। 
মানবাধিকারকর্মী মীনাক্ষ গাঙ্গুলী বলেন, 'সোনি সোরির ঘটনাটিই প্রমাণ করে, ভারতে নির্যাতিতরা পরবর্তীতেও কতটা নির্মমতার মুখোমুখি হন। ভারত সরকার নির্লজ্জভাবে এ ধরনের নির্যাতনে জড়িতদের পদক দিচ্ছে, আর নির্যাতিতদের চিকিৎসা পেতেও হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।'
'নির্যাতনবিরোধী চুক্তি' অনুমোদনের আহŸান 
নির্যাতন প্রতিরোধে ভারত সরকারকে 'কনভেনশন এ্যাগেইনস্ট টর্চার এ্যান্ড আদার ক্রুয়েল, ইনহিউম্যান অর ডিগ্রেডিং ট্রিটমেন্ট অর পানিশমেন্ট'-এ ¯^া¶র করার আহŸান জানিয়েছেন এইচআরডব্লিউ। 
এছাড়া রাজ্যসভায় অনুমোদনের অপে¶ায় থাকা প্রিভেনশন অব টর্চার আইনটিও কার্যকর করার আহŸান জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থাটি। 
এ আইন কার্যকর হলে মানবাধিকার লক্সঘনকারী সরকারী কর্মকর্তাদের দায়মুক্তির সুযোগ বন্ধ হয়ে যাবে। এছাড়া নির্যাতিতকে অভিযোগ দাখিলের জন্য পর্যাপ্ত সময় এবং যে কোন অমানবিক ও অপমানজনক নির্যাতনের ঘটনাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার পথ তৈরি হবে। 
'বিএসএফ ও ভারতীয় পুলিশসহ নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা নির্যাতন করেও দায়মুক্তি পেয়ে যাচ্ছে। দিল্লীর কেন্দ্রীয় সরকার কবে জেগে উঠবে? কবে নির্যাতন ও মানবাধিকার লক্সঘনের ইতি টানার পদ¶েপ নেবে', বলেন মীনা¶ী গাঙ্গুলী।
আশুলিয়ায় শ্রমিক নিহত হওয়ায় বাসে আগুন সড়ক অবরোধ
নিজস্ব সংবাদদাতা, সাভার, ৩১ জানুয়ারি ॥ আশুলিয়া থানাধীন 'ঢাকা রফতানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা'র (ডিইপিজেড) প্রধান ফটকের সামনে মঙ্গলবার সকালে দ্রুতগতির বাস চাপায় এক পোশাক শ্রমিক নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও পাঁচ পথচারী। পোশাক শ্রমিকের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সকালে অন্য শ্রমিকরা ঘাতক বাসটিতে প্রথমে ভাংচুর চালায় ও পরে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় নবীনগর-কালিয়াকৈর সড়কে প্রায় দু' ঘন্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘাতক বাসটির চালক পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। নিহত পোশাক শ্রমিকের নাম নজরুল ইসলাম (৫০)। তার গ্রামের বাড়ি পাবনা জেলার চাটমোহর থানা এলাকায়। তিনি আশুলিয়ার করিম সুপার মার্কেটের 'আনজির এ্যাপারেলস'এর স্টোর কিপার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
জানা গেছে, শ্রীপুর থেকে সাইকেলযোগে মঙ্গলবার সকাল পৌনে আটটার দিকে নজরুল ইসলাম কর্মস্থলে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন। ডিইপিজেডের সামনে নওগাঁ থেকে ছেড়ে আসা 'কিষান' পরিবহনের ঢাকাগামী একটি বাস (ঢাকা-মেট্রো-ব-১৪-২৬৫৭) তাকে চাপা দেয়। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। আহত হয় কালাম, ফারুক, জলিলসহ পাঁচজন। আহতদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে বিভিন্ন চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় সেখানে উপস্থিত অন্য শ্রমিকরা ক্ষিপ্ত হয়ে ঘাতক বাসটিতে প্রথমে ভাংচুর করে ও পরে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় উত্তেজিত শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে রাখে। এতে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে, নবীনগর-কালিয়াকৈর ও আব্দুল্লাপুর-বাইপাইল সড়কে আটকা পড়ে শ' শ' যানবহন। হাজার হাজার যাত্রী শিকার হয় চরম ভোগান্তির। একই সঙ্গে সবার মধ্যে সৃষ্টি হয় চরম আতঙ্কের। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে উত্তেজিত শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে ও ঘাতক বাসটির চালককে গ্রেফতারের প্রতিশ্রæতি দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রায় দু'ঘন্টা পর সড়কে যান চলাচল শুরু হয়। পরে ডিইপিজেডের ফায়ার সার্ভিস বাসটির আগুন নিভাতে সক্ষম হয়। তবে, ততক্ষণে বাসটির অনেকাংশই ভস্মীভূত হয়। 
আশুলিয়া থানার এস.আই. সাইফুল ইসলাম জানান, ঘাতক বাসটি আটক করা হয়েছে। চালককে আটকের চেষ্টা চলছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে।
কামরুল উৎসব কাল শুরু ॥ বেঙ্গলে সবুরের চিত্রকলা প্রদর্শনী
সংস্কৃতি সংবাদ
স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলার শিল্পরূপের অম্বেষণ এবং সেই অম্বেষাজাত উপলব্ধির সৃজনশীল প্রকাশের মাধ্যমে দেশের শিল্পাঙ্গনকে সমৃদ্ধ করেছেন চিত্রশিল্পী পটুয়া কামরুল হাসান। বাংলার ড্রইং মাস্টারখ্যাত এই চিত্রকরের শিল্পকর্ম দেশের সীমানা ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হয়েছে এবং হচ্ছে। গত বছরের ২ ডিসেম্বর ছিল এই জাতীয় শিল্পীর ৯০তম জন্মজয়ন্তী এবং কাল ২ ফেব্রæয়ারি তাঁর ২৫তম প্রয়াণ দিবস। আর আগামী ২০২১ সালে এই মহান শিল্পীর জন্মশতবার্ষিকী। এই জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপনের জন্য ড. আনিসুজ্জামানের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে শতাব্দীর কামরুল উদ্যাপন পরিষদ। পরিষদের উদ্যোগে জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপনের দশকব্যাপী কর্মসূচীর অংশ হিসেবে ২ ফেব্রæয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে 'দেশব্যাপী কামরুল উৎসব ২০১২'। এর মাধ্যমে শিল্পীর জীবন ও তাঁর চিত্রকর্ম, মহান মুক্তিযুদ্ধসহ জাতীয় পর্যায়ে তাঁর ভূমিকা নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা হবে। উৎসবে থাকবে পটুয়া কামরুল হাসানের ভ্রাম্যমাণ চিত্র প্রদর্শনী, শিশুদের ছবি আঁকা প্রতিযোগিতা, সেমিনার, রচনা প্রতিযোগিতাসহ নানা আয়োজন। উৎসবে সহযোগিতা করছে মুঠোফোন কোম্পানি সিটিসেল।
এ উপলক্ষে মঙ্গলবার মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে পরিষদের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে উৎসব ও দশকব্যাপী জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানমালার নানা বিষয় তুলে ধরা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পরিষদের সভাপতি ড. আনিসজ্জামান, শিল্পী হাশেম খান, মোস্তফা মনোয়ার, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সৈয়দ হাসান ইমাম, শিল্পীকন্যা সুমনা হাসান ও সিটিসেলের জনসংযোগ কর্মকর্তা তাসলিম আহমেদ।
২ ফেব্রæয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয় কবিতা উৎসব প্রাঙ্গণে কামরুল হাসানের নির্বাচিত ৫০টি ছবির ডিজিটাল প্রিন্ট নিয়ে ভ্রাম্যমাণ প্রদর্শনীর মাধ্যমে শুরু হবে উৎসব। এই প্রদর্শনী ফেব্রæয়ারি মাসব্যাপী পর্যায়ক্রমে বাংলা একাডেমী বইমেলা, টিএসসি, চারুকলা চত্বর ও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় চলবে। পরবর্তীতে দেশব্যাপী অনুষ্ঠিত হবে এই প্রদর্শনী। আর ৩ ফেব্রæয়ারি সকাল ৯টায় বাংলাদেশ শিশু একাডেমী প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হবে ছোটদের ছবি আঁকার প্রতিযোগিতা। প্রতিযোগিতার বয়সসীমা ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত। প্রতিবন্ধী ও অটিজম আক্রান্ত শিশুরাও অংশগ্রহণ করতে পারবে। এদিকে ১৭ থেকে ২৭ ফেব্রæয়ারি পর্যন্ত জাতীয় জাদুঘরে শিল্পীর দুই শতাধিক বৈচিত্র্যময় শিল্পকর্ম নিয়ে প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। এতে থাকবে শিল্পীর আঁকা তৈলচিত্র, জল রং, উডকাট, প্যাস্টেল, ইচিং, লিথোকাট, পেন ও পেন্সিল মাধ্যমের চিত্রকর্ম। প্রদর্শনীতে আরও থাকবে শিল্পীর খেরোখাতাসহ অন্যান্য উল্লেখযোগ্য কাজের নমুনা। এছাড়াও উৎসবকে ঘিরে শিল্পীর সব শিল্পকর্ম ও তাঁর জীবনের যাবতীয় তথ্যাবলী সংরক্ষণ ও প্রচারের জন্য একটি ওয়েবসাইট বা ডিজিটাল আর্কাইভ তৈরি করা হচ্ছে। শীঘ্রই এই ডিজিটাল আর্কাইভ উদ্বোধন করা হবে। 
দুই দিনব্যাপী রবীন্দ্র উৎসব
বাঙালীর মেধা-মনন ও ভাবনার জগতে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। উৎসব-পার্বণ কিংবা আনন্দ-বেদনা অথবা সুখে-দুঃখে তাঁর সৃষ্টি যেন হয়ে ওঠে পথের সাথী। আর তাই তো কবিগুরুর প্রতি বাঙালীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশেরও যেন শেষ নেই। সেই ধারাবাহিকতায় কবির সার্ধশত জš§বর্ষ উপল¶ে কাল বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে দুই দিনব্যাপী রবীন্দ্র উৎসব। 'বিশ্ব সাথে যোগে যেথায় বিহার' চরণটিকে উৎসব সঙ্গীত করা হয়েছে। উৎসবের আয়োজন করছে জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদের ঢাকা মহানগর শাখা। দুই দিনের আয়োজনে রাজধানীর ৮টি সঙ্গীত প্রতিষ্ঠানের ১৫০ শিল্পী গান পরিবেশন করবেন। এ ছাড়াও থাকবে আবৃত্তি ও দলীয় নৃত্য পরিবেশনা। 
মান্নার বইয়ের মোড়ক উন্মোচন
স্বাধীনতার পর নানা উত্থান-পতনের পরেও দেশে স্বৈরাশাসন কমেনি। তাই বড় দু'টি রাজনৈতিক দলের বাইরে নতুন গণতান্ত্রিক শক্তি গড়ে তুলতে হবে । এ জন্য প্রয়োজন পরিশুদ্ধ ছাত্র রাজনীতি। কারণ ছাত্ররাই দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তন করতে পারে। 
মঙ্গলবার রাজধানীর এলজিইডি ভবনে মাহমুদুর রহমান মান্নার ছাত্র রাজনীতির অতীত-বর্তমান ও ভবিষ্যত শিরোনামের বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। বইয়ের প্রকাশক নজরুল ইসলাম বাহারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন প্রাক্তন ছাত্রলীগ ফাউন্ডেশনের সভাপতি সাবেক ছাত্রনেতা নূরে আলম সিদ্দিকী, বিশিষ্ট সাংবাদিক আবুল মকসুদ আহমদ, অধ্যাপক পিয়াস করিম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক আসিফ নজরুল এবং দৈনিক সমকাল পত্রিকার ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আবু সাঈদ খান।
সবুরের চিত্রকলা প্রদর্শনী 
রাজধানীর বেঙ্গল শিল্পালয়ে শুরু হলো পঞ্চাশের দশকের মেধাবী শিল্পী আবদুস সবুরের চিত্র প্রদর্শনী অম্বেষা। মঙ্গলবার বিকেলে সপ্তাহব্যাপী এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট অভিনেত্রী ও সংসদ সদস্য সারাহ্ কবরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন বরেণ্য চিত্রশিল্পী সৈয়দ জাহাঙ্গীর ও বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ম. হামিদ। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বেঙ্গল গ্যালারি অব ফাইন আর্টসের পরিচালক সুবীর চৌধুরী ও শিল্পীকন্যা মাহমুদা বেগম আপন। প্রদর্শনীতে মোট চিত্রকর্মের সংখ্যা ২৯টি। প্রদর্শনী আগামী ৬ ফেব্রæয়ারি পর্যন্ত চলবে। প্রতিদিন বেলা ১২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে।
মহাবিশ্বে মানুষ পুস্তকমালার প্রকাশনা
প্রকাশিত হলো মহাবিশ্ব, পৃথিবী ও প্রাণের আধুনিক বিজ্ঞান বিষয়ক ড. মুহাম্মদ ইব্রাহীমের পুস্তকমালা 'মহাবিশ্বে মানুষ'। এ পুস্তকমালায় রয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক ৮টি গ্রন্থ। এগুলো হলো 'মহাবিশ্বের বয়স ও আমাদের মহাজাগতিক শিকড়', 'চারশত কোটি বছরের পৃথিবী ও প্রাণ', 'আফ্রিকা থেকে জ্ঞানী আমরা', 'আমরা কীভাবে চিন্তা করি', 'উদ্ঘাটিত ডিএনডি, উৎসারিত সম্ভাবনা', 'জীববৈচিত্র্য ও আমাদের ভবিষ্যৎ', 'বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তন : গবেষণাগুলো কী' ও 'নূতন আবাস, নূতন পড়শীর খোঁজে'। বইগুলো প্রকাশ করেছে সুবর্ণ। 
মঙ্গলবার বিকেলে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে এই পুস্তকমালা প্রকাশনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
লোকসঙ্গীত পরিষদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সঙ্গীতানুষ্ঠান
বাংলাদেশ লোকসঙ্গীত পরিষদের ১৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বুধবার বিকেলে সংগঠনের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিশেষ সঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। শিল্পীদের পরিবেশিত শেকড়ের গানে গানে সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপিত হয়। শ্রোতাদের লোকজ নানা গান গেয়ে শোনান আবদুল আজিজ, সেলিনা আলম, কোহিনুর আক্তার, মফিজুর রহমান বিরহী ও নাসরিন ফেরদৌস চমন। 
এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।
নরসিংদীতে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ও দায়রা জজের অপসারণ দাবি
নিজস্ব সংবাদদাতা, নরসিংদী, ৩১ জানুয়ারি ॥ মেয়র লোকমান হত্যার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু ও জেলা দায়রা জজ ড. মোঃ শাহজাহানের অপসারণ দাবি করেছেন এলাকার শোকাহত জনতা। মঙ্গলবার বেলা ১১টায় শত শত শোকাহত মানুষ নরসিংদী জেলা প্রশাসক কার্যালয় প্রাঙ্গণে সমাবেত হয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু, জেলা দায়রা জজের অপসারণ দাবি করে।
মামলার তদন্তে প্রভাব সৃষ্টিকারী রাজিউদ্দিন রাজু এবং মামলার আসামিদের একের পর এক জামিন দেয়ায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী তাদের অপসারণ দাবি করেন। এ সময় সংক্ষিপ্ত সভায় বক্তব্য রাখেন নরসিংদী জেলা শ্রমিক ফেডারেশনের উপদেষ্টা ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি এসএম কাইয়ুম, নরসিংদী জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও নরসিংদী সরকারী কলেজের ভিপি শামীম নেওয়াজ, ইঞ্জিনিয়ার ভূইয়া সোহেল প্রমুখ।
তাঁরা বলেন, লোকমান ছিলেন মেহনতী মানুষের প্রতীক। তাই একজন শ্রমিক বেঁচে থাকতে মেয়র লোকমান হত্যার পরিকল্পনাকারী ও হত্যাকারীদের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়িত হতে দেবে না। তাঁরা প্রশাসনের ষড়যন্ত্র রুখে দাঁড়ানোর জন্য এলাকাবাসীর প্রতি দাবি জানান। 
আসামি নূরুল ইসলামের ফের ৪ দিনের রিমান্ড ॥ মেয়র লোকমান হত্যা মামলার ৫নং আসামি নরসিংদী সদর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ নূরুল ইসলামকে ফের ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। 
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশ পরিদর্শক মামুনুর রশীদ মন্ডল ১ দিন রিমান্ড শেষে মঙ্গলবার সকালে তাকে নরসিংদীর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিতাই চন্দ্র সাহার আদালতে হাজির করেন। তদন্ত কর্মকর্তা আদালতকে জানান, উল্লিখিত আসামি নূরুল ইসলাম মেয়র লোকমান হত্যায় জড়িত। ১ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে তার নিকট থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যউপাত্ত পাওয়া গেছে। অধিকতর জিজ্ঞসাবাদের জন্য তাকে আরও ১০ দিনের রিমান্ড প্রয়োজন। এ সময় আসামি পক্ষের কৌঁসুলি নরসিংদী জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ্যাডভোকেট আঃ বাছেদ ভূইয়াসহ ১০/১২ আইনজীবী আসামি নূরুল ইসলামের রিমান্ড মঞ্জুর না করে তার জামিনের প্রার্থনা করেন। বিজ্ঞ আদালত দু' পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে আসামি নূরুল ইসলামের জামিন নামঞ্জুর করে ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুুর করেন।
উল্লেখ্য, ১ নবেম্বর রাতে মেয়র লোকমান হোসেন মুখোশধারী সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হয়। এ ঘটনায় লোকমানের ভাই কামরুজ্জামান বাদী হয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজি উদ্দিন আহমেদ রাজুর ভাই সালাউদ্দিন আহমেদ বাচ্চুসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। নূরুল ইসলাম এ মামলার ৫নং আসামি। গত রবিবার দুপুরে হযরত শাহজালালআন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
নির্মাণ সামগ্রীর মূল্য ৬৭ শতাংশ বেড়েছে
বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ নির্মাণ খাতের বিভিন্ন সামগ্রীর মূল্য গত এক বছরে ১৫ থেকে ৬৭ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। এর ফলে ভবনের প্রতিবর্গফুট অংশ নির্মাণে আগের চেয়ে ৫৪৭ টাকা বেশি ব্যয় করতে হচ্ছে। নির্মাণসামগ্রীর এই মূল্যবৃদ্ধি আবাসন খাতে অচলাবস্থার সৃষ্টি করেছে। গত এক বছরে এ্যাপার্টমেন্ট বিক্রির পরিমাণ আগের বছরের চেয়ে ৪২ শতাংশ কমেছে। বিভিন্ন ধরনের নির্মাণসামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে রিহ্যাব নেতারা এসব কথা জানান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান রিহ্যাবের সহ-সভাপতি সাঈদ নজরুল। এ সময় রিহ্যাবের সাংগঠনিক সম্পাদক আক্তার বিশ্বাস, সদস্য মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান, এস এম আসাদুজ্জামান, এম এ ওহাব উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে রিহ্যাবের সহ-সভাপতি সাঈদ নজরুল বলেন, শহরে জমির অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, আয়কর ও রেজিস্ট্রেশন ব্যয়বৃদ্ধি, বিদ্যুত ও গ্যাস সঙ্কট, শেয়ারবাজারে ধস, ব্যাংক ও অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠানে তারল্য সঙ্কট ও বিশ্ব মন্দার কারণে আবাসন খাতে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। 
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রতিবর্গফুট ভবন নির্মাণে আগের বছরের চেয়ে রডের মূল্য ৪৪ শতাংশ, সিমেন্ট ২১ শতাংশ, ইট ৩৩ শতাংশ, বৈদ্যুতিক তার ৬৭ শতাংশ, পাথর ১৮ শতাংশ, টাইলস ২৬ শতাংশ, এ্যালুমনিয়াম ১৬ শতাংশ, শ্রমিকের মজুরি ৩৫ শতাংশ বেড়েছে। কিন্তু নির্মাণসামগ্রীর এই মূল্যবৃদ্ধির কোন যৌক্তিক কারণ নেই। কারণ ডলারের মূল্যবৃদ্ধির আগেই এসব সামগ্রী কেনা হয়েছে।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে আবাসন খাতের উন্নয়নে রিহ্যাব আবাসন খাতের ক্রেতাদের এক অঙ্কের সুদে ঋণ দেয়া, আবাসন ঋণ পুনরায় চালু ও তা আগের ৩০০ কোটির স্থলে এক হাজার কোটি করা, আবাসন খাতের সংশ্লিষ্ট শিল্পগুলোর তারল্য বাড়ানো ও প্রয়োজনে এসব শিল্পে ভর্তুকি দেয়া ও বাজার তদারকির সুপারিশ করে। একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিনাশুল্কে সব ধরনের নির্মাণসামগ্রী ও যন্ত্রপাতি আমদানি করার সুযোগ দিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে অনুরোধ করেছে আবাসন ব্যবসায়ীদের সমিতি রিয়েল এস্টেট ও হাউজিং এ্যাসেসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)।
রিহ্যাবের বিল্ডিং স্ট্যান্ডিং কমিটির সহ-চেয়ারম্যান সরদার মোঃ আমীন বলেন, ডলারের মূল্য বৃদ্ধির অজুহাতে রড ও সিমেন্ট ব্যবাসায়ীরা সিন্ডিকেট করে এসব সামগ্রীর দাম বাড়িয়েছেন। এক বছরে ডলারের দাম বেড়েছে মাত্র ১৩ শতাংশ, কিন্তু নির্মাণসামগ্রীর দাম বেড়েছে ৬৭ শতাংশ পর্যন্ত। এসব সামগ্রীর দামবৃদ্ধির ¶েত্রে সরকারের এ¶েত্রে কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। সরদার আমীন বলেন, 'গৃহস্থালীতে গ্যাসের অপচয় হয় মাত্র এক শতাংশ। আর শিল্পে হয় ৪০ শতাংশ। কিন্তু তারপরও সরকার গৃহস্থালীতে গ্যাস সংযোগ দেয়া বন্ধ রেখেছে। গ্যাস সংযোগ না থাকায় ক্রেতারা নতুন করে ফ্ল্যাট কিনতে আগ্রহী হচ্ছে না।
জাবিতে আন্দোলন স্থগিত
জুবায়ের হত্যা
জাবি সংবাদদাতা ॥ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জুবায়ের আহমেদ হত্যার ঘটনায় সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তের পর সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন স্থগিত করেছে। শিক্ষার্থীদের অব্যাহত আন্দোলনের প্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীকে আজীবন বহিষ্কার ও ৬ জনকে দু'বছরের জন্য বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের এ বিচারে কিছুটা আশ্বস্ত হয়েছে 'সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর' ব্যানারে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে জুবায়ের হত্যার ঘটনায় শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবির তিন দফা বাস্তবায়িত হওয়ায় আংশিক বিজয় ঘোষণা করে আন্দোলন স্থগিত করা হয়। 
জানা যায়, জুবায়ের হত্যার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তদন্ত সাপেক্ষে ৭ শিক্ষার্থীকে আজীবন ও ৬ শিক্ষার্থীকে দুই বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার ও ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণাসহ বেশকিছু সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। 
এই বিচারের পরও গত সোমবার পর্যন্ত 'সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর' ব্যানারে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা সিন্ডিকেটের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আন্দোলন অব্যাহত রাখলেও গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দাবি করেন সিন্ডিকেট সভা বৈধভাবে সম্পন্ন হয়েছে, যার প্রমাণ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের দেখিয়েছে। এছাড়া তাদের আন্দোলনের যে চার দফা দাবি ছিল তার তিন দফা বাস্তবায়ন হওয়ায় আন্দোলনের আংশিক বিজয় দাবি করে জুবায়েরের ঘটনা নিয়ে যে আন্দোলন তা স্থগিত করেছে। তবে ক্যাম্পাসে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যে আন্দোলন তা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তেব্য পাঠ করেন ছাত্র ইউনিয়ন জাবি শাখার সভাপতি সৌমিত চন্দ জয়দীপ। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, সিন্ডিকেটের এ রায়কে আমাদের এক ধরনের বিজয় হিসেবে দেখলেও আমরা উদ্বেগের সঙ্গে জানাচ্ছি শাস্তি প্রাপ্তদের কেউ কেউ এখনো নির্বিঘে ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়াচ্ছে। একই সঙ্গে মদদদাতা ও ইন্ধনদাতাদের নাম আমাদের সামনে স্পষ্ট করা হয়নি। আন্দোলনকারীরা জুবায়ের হত্যার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করে।
অন্যদিকে জুবায়েরের লাশ নিয়ে শিক্ষক সমাজ ব্যানারে আন্দোলনকারী কিছু শিক্ষক রাজনৈতিক ফায়দা নেয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সিন্ডিকেটের বিচারের পর সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন স্থগিত করলেও শিক্ষকরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, আগামী ৭ ফেব্রæয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ম সমাবর্তন অনুষ্ঠানকে ব্যহত করার জন্য একটি মহল তৎপর রয়েছে। শিক্ষক শিক্ষার্থীদের অভিযোগ শিক্ষক সমাজের ব্যানারে আন্দোলনকারী বিএনপিপন্থী ও প্রগতিশীল কিছু শিক্ষক জুবায়ের হত্যার বিচার দাবিতে আন্দোলন করলেও তাদের মূল উদ্দেশ্য ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করা। গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে তারা দাবি করেন, জুবায়ের হত্যাকান্ডের ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে তাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবনের জন্য বহিস্কার ও জুবায়েরের পরিবারকে সম্মানজনক আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে হবে ওই ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি পুনর্গঠন, প্রক্টরিয়াল বডি পূনর্গঠন, ক্যাম্পাসে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অবাধ রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অভিব্যক্তি নিশ্চিত, বিজ্ঞাপনের অতিরিক্তি ও গণনিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের মধ্যে যারা অযোগ্য তাদের নিয়োগ বাতিল এবং শিক্ষক সমিতির সভাপতিকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে সাবেক প্রক্টরের বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষতা ও শৃক্সখলা অধ্যাদেশ অনুসারে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং শরীফুল আলমের উপর সন্ত্রাসী হামলার বিচার করতে হবে।
ফেব্রুয়ারিতে ভারত থেকে ২৫০ মে.ও. বিদ্যুত ক্রয় চুক্তি সই
রশিদ মামুন ॥ ফেব্রæয়ারিতে বাংলাদেশ-ভারত ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুত ক্রয় চুক্তি স্বাক্ষর হতে যাচ্ছে। তবে বাংলাদেশের প্রস্তাব অনুযায়ী নির্দিষ্ট দাম এবং একক কোন কেন্দ্র থেকে বিদ্যুত পাওয়া যাবে না। বিদ্যুত কিনতে হবে ভারতের কেন্দ্রীয় ইলেকট্রিসিটি রেগুলেটরি কমিশন (সিইআরসি) নির্ধারিত দামে। এক্ষেত্রে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার প্রদেশগুলোতে যেভাবে বিদ্যুত সরবরাহ করে একইভাবে বাংলাদেশও বিদ্যুত পাবে। এনটিপিসি-পিডিবি যৌথ মূলধনী কোম্পানি গঠন চুক্তির পর ভারতীয় বিদ্যুত সচিব পি উমা শঙ্করের সঙ্গে বিদ্যুত বিভাগের বৈঠকে দ্রুত ক্রয় চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য সহায়তা চাওয়া হয়। ভারতের বিদ্যুত সচিব ফেব্রæয়ারিতে বিষয়টি চূড়ান্ত করার আশ্বাস দিয়েছেন। 
ক্রয় চুক্তিটি হবে পিডিবি এবং ভারত বিদ্যুত নিগমের মধ্যে। এ ছাড়া দুই দেশের পাওয়ার গ্রিড কোম্পানির মধ্যে পৃথক একটি চুক্তি হবে বিদ্যুত পরিবহনের জন্য। দিন রাত ২৪ ঘণ্টা ভারত বিদ্যুত দেবে। চুক্তি হবে ২৫ বছরের জন্য। 
ভারতের বিদ্যুত সচিব পি উমা শঙ্কর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জানান, দুই দেশের সমঝোতার ভিত্তিতে বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ সম্ভব নয়। এ ক্ষেত্রে সিইআরসি যে দাম নির্ধারণ করবে বাংলাদেশকে ওই দামে বিদ্যুত নিতে হবে। তিনি জানান, ভারত যে পদ্ধতিতে প্রদেশগুলোতে বিদ্যুত দেয় একই পদ্ধতিতে বাংলাদেশকে বিদ্যুত দেয়া হবে। এ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোন একক বিদ্যুত কেন্দ্র থেকে বিদ্যুত দেয়া সম্ভব নয়। 
ভারতের বিদ্যুত সচিবের সঙ্গে বিদ্যুত বিভাগের কর্মকর্তাদের বৈঠক সূত্র জানায়, বিদ্যুত চুক্তির বিষয়টি মাথায় রেখে বাংলাদেশ সাবস্টেশন এবং গ্রিড লাইন নির্মাণে বিনিয়োগ করেছে। বার বার তাগাদা দেয়ার পরও বিদ্যুত চুক্তি না হওয়ায় গ্রিড লাইন নির্মাণের জন্য প্রতিশ্রæত ঋণ ছাড় করছে না দাতা সংস্থা। বিনিয়োগের পরও বিদ্যুত ক্রয় চুক্তি না হলে বিদ্যুত পাওয়া যাবে না। একই সঙ্গে ভারতের বিদ্যুত সচিবকে দ্রুত বিদ্যুত চুক্তি করার তাগিদ দেয়া হয়। 
বিদ্যুত বিভাগের কর্মকর্তা বলেন, বিভিন্ন বিদ্যুত কেন্দ্র থেকে বিভিন্ন হারে বিদ্যুত দেয়া হবে। এ ক্ষেত্রে ভারত কোন কোন বিদ্যুত কেন্দ্র থেকে কী পরিমাণ বিদ্যুত দেবে তার এনটি প্যকেজ নির্ধারণ করবে। 
বিদ্যুত বিভাগ সূত্র জানায়, আগামী ২০ ও ২১ ফেব্রæয়ারি দিল্লীতে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রæপের বৈঠক হবে। ওই বৈঠকের পর চুক্তি স্বাক্ষর করা হবে। বৈঠকে বিদ্যুত ক্রয় চুক্তির পাশাপাশি সদ্য স্বাক্ষরিত যৌথ মূলধনী কোম্পানি গঠনের বিষয়ে আলোচনা হবে। 
পিডিবির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, গত নবেম্বরে পিডিবির চেয়াররম্যানের নেতৃত্বে বিদ্যুত বিভাগের একটি প্রতিনিধি দল ভারত সফরে যান। ওই সময় বাংলাদেশকে বিদ্যুত দেয়ার জন্য একটি নির্দিষ্ট দাম এবং কেন্দ্র নির্ধারণের প্রস্তাব দেয়া হয়। তবে ভারত এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে বাংলাদেশকে কিছু জানায়নি। তবে ভারতীয় বিদ্যুত সচিবকে পশ্চিমবঙ্গের যে সকল সরকারী বিদ্যুত কেন্দ্র উৎপাদন খরচ অপেক্ষাকৃত কম সেখান থেকে বিদ্যুত দেয়ার অনুরোধ করা হয়েছে। 
ভাতরতীয় প্রতিনিধি দল বিদ্যুতের দামের যে ধারণা দিয়েছে তাতে প্রতি ইউনিট দুই দশমিক ৯৩ বিক্রি হচ্ছে। বাংলাদেশী টাকায় যা প্রায় পাঁচ টাকার মতো। এর সঙ্গে এনটিপিসি ভারত বিদ্যুত নিগাম প্রতিইউনিটে ভারতীয় ৪ পয়সা এবং পাওয়ার গ্রিড কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়াকে ২০ পয়সা হুইলিং চার্জ দিতে হবে। দেশের মধ্যে সরকারী প্রতিষ্ঠান পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশকে (পিজিসিবি) দিতে হবে ইউনিটপ্রতি ২৩ পয়সা। অর্থাৎ এখনই প্রতিইউনিট বিদ্যুতর দাম পড়বে প্রায় ছয় টাকা। তবে বাংলাদেশ যখন বিদ্যুত আনতে শুরু করবে তখন এই দামের পরিবর্তন হতে পারে। 
সরকারী কেন্দ্র ছাড়াও বাংলাদেশ আরও ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুত কিনবে ভারতের খোলা বাজার থেকে। এই বিদ্যুতও এনটিপিসি বাংলাদেশকে কিনে দেবে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এনটিপিসিকে একটি ব্রোকারি চার্জ দেবে। তবে এই বিদ্যুতের দাম প্রতিদিন নির্ধারিত হবে। খোলা বাজারে সকালে এবং বিকেলে দু'বার দাম নির্ধারণ করে বিক্রেতা কোম্পানিগুলো। ভারতীয় বাজার দর অনুযায়ী সন্ধ্যার চেয়ে সকালে বিদ্যুতের দাম বেশি থাকে। এ ক্ষেত্রে কোনদিন বাংলাদেশে বিদ্যুতের প্রয়োজন না হলে তাও এনটিপিসি তাদের স্থানীয় বাজারে ওই বিদ্যুত বিক্রি করে দেবে।
ভারত বাংলাদেশের ১২০ কিলোমিটার অংশে গ্রিড লাইন নির্মাণ করা হবে। এ জন্য প্রায় এক হাজার ২০০ কোটি টাকা ব্যয় হবে। বাংলাদেশ অংশে বেশ গ্রিড লাইন নির্মাণের কাজ চলছে। আগামী বছর মার্চের মধ্যে বিদ্যুত গ্রিড লাইন নির্মাণ কাজ শেষ হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ২০১০ সালের প্রথম দিকে ভারত সফরের সময় ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং বাংলাদেশকে ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুত দেয়ার প্রতিশ্রæতি দেন।
আতঙ্ক ছড়াতে শাবি বাসে আবার শিবিরের হামলা
শাবি সংবাদদাতা ॥ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রশিবির ক্যাডারদের ক্যাম্পাসে ফেরার দাবিতে আহূত হরতালে বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থা কাটতে শুরু করেছে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ফিরে ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। মঙ্গলবারও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে ক্লাস ও পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ প্রেক্ষিতে শাবি ক্যাম্পাসের স্বাভাবিক পরিস্থিতি বানচালে শিবির তার প্রতিক্রিয়াশীল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড জোরদার করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন বাস ভাংচুর করে এবং শিক্ষার্থীদের আহত করে আতঙ্ক ছড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছে তারা। এর ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার শিবির ক্যাডাররা শাবি শিক্ষাক-শিক্ষার্থীদের ৩টি বাসে ফের হামলা চালিয়ে ভাংচুর করেছে। হামলায় শাবির কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগের (সিএসই) শিক্ষার্থী (সাংবাদিক) আহত হয়। প্রত্যক্ষাদর্শী শিক্ষার্থীরা জানান, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নগরীর আম্বরখানা এলাকায় শিক্ষার্থীদের দুটি বাস এবং কদমতলী এলাকায় শিক্ষাকদের একটি বাস শিবিরের নেতাকর্মীরা ভাংচুর করে। এর মধ্যে সকাল ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাড়া করা বিআরটিসি বাস নগরের লাউয়াই এলাকায় পৌঁছলে ২টি বাসে হামলা ও ভাংচুর চালায় শিবির ক্যাডাররা। এ সময় বাস দুটির জানালার কাচ ভেঙ্গে ফেলা হয়। তবে কেউ আহত হননি। এছাড়া শাহী ঈদগাহ থেকে ছেড়ে আসে শিক্ষার্থীদের অপর একটি বাস নুরে আলা কমিউনিটি সেন্টারের সামনে এলে শিবির ক্যাডাররা হামলা চালায়। বিপরীত দিক থেকে দুটি মোটরসাইকেল যোগে আসা শিবির ক্যাডারদের অতর্কিত হামলা ও ভাংচুের সাধারণ শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। এ সময় বাসের ভেঙ্গে যাওয়া কাচের গুঁড়ো সিএসই বিভাগের ওই শিক্ষার্থীর চোখে পড়ে। পরে চোখের চিকিৎসার জন্য ওই শিক্ষার্থীকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে সে হাসপাতালের ৭নং ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে। 
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষাকরা কিছুদিন নীরব থাকলেও এবার প্রকাশ্যে শিবিরের পক্ষা দাঁড়ানোতে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পরিস্থিতি যে কোন সময় অশান্ত হয়ে উঠতে পারে। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য বরাবর সংঘর্ষের ঘটনায় প্রশাসন এবং ছাত্রলীগকে দায়ী করে স্মারকলিপি দেয়ার পর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত শিক্ষাক সমিতির কার্যকরী পরিষদের বৈঠকেও বিষয়টি নিয়ে শোরগোল বাধতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ বৈঠকের পর ক্যাম্পাসে শিবিরের ফিরে আসা নিশ্চিত না হলে এবং ক্যাম্পাস পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে বিএনপি-জামায়াতী শি¶করা কর্মবিরতিতে যেতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সার্বিক বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহউদ্দিন বলেন, সবাইকে শান্তির পথে আসতে হবে। অশান্তি বা জিম্মি করে কোন দাবি আদায় হয় না। এতে জানমালের ¶তি হয়। তিনি ধর্মঘট প্রত্যাহার করার জন্য শিবির নেতাকর্মীদের প্রতি আহŸান জানান।
বনভান্তের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে রাঙ্গামাটিতে মানুষের ঢল
নিজস্ব সংবাদদাতা, রাঙ্গামাটি, ৩১ জানুয়ারি ॥ দেশের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় গুরু ও সাধক পুরুষ রাঙ্গামাটি রাজবন বিহারের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ সাধনানন্দ মহাস্থবির বনভান্তের লাশ রাঙ্গামাটি আসার খবরে মঙ্গলবার গভীর রাত পর্যন্ত রাজ বনবিহারসহ রাঙ্গামাটি ও তার আশপাশে মানুষের ঢল নামে। সোমবার রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এই মহাপুরুষের মহাপ্রয়াণ ঘটে। বনভান্তের এই মহাপ্রয়াণের খবরে তিন পার্বত্য জেলাসহ দেশ-বিদেশে তাঁর ভক্তবৃন্দের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে। ৯৩ বছর বয়সে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। 
সাধক পুরুষ বনভান্তের মহাপ্রয়াণের খবরে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা, পৌর মেয়র সাইফুল ইসলাম বুট্টু, জেলা আওয়ামী লীগ, জেলা বিএনপি, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি রাঙ্গামাটি প্রেসক্লাবের প¶ থেকে গভীর শোক প্রকাশ করা হযেছে। 
বনভান্তের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য দলে দলে লোক রাঙ্গামাটি থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত বিপুল সংখ্যক নারী-পুরুষ ভক্তবৃন্দ সড়কের পাশে গভীর রাত পর্যন্ত দাঁড়িয়ে ফুল হাতে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে অবস্থান নেয়।
তাঁর লাশ মঙ্গলবার সকালে ঢাকার কলাবাগান থেকে রাঙ্গামাটি আসার পথে পথে অসংখ্য স্থানে ভক্তরা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। তাঁর লাশের সঙ্গে রাজ বনবিহারের কর্মকর্তারা ছাড়াও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী দীপঙ্কর তালুকদার রয়েছেন।
আজ জাতীয় কবিতা উৎসব শুরু
স্টাফ রিপোর্টার ॥ কবিতার অনবদ্য শব্দমালার শিল্পিত উচ্চারণে আজ বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে দু'দিনব্যাপী জাতীয় কবিতা উৎসব ২০১২। সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাকিম চত্বরে উৎসবের উদ্বোধন করবেন সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক। এবারের উৎসবের স্লোগান 'কবিতা শোণিতে, স্বপ্নের ধ্বনিতে।' অমর একুশের চেতনায় শাণিত এ উৎসবের আয়োজক জাতীয় কবিতা উৎসব পরিষদ। 
সকাল ১০টায় উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। শুরুতেই জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন ও চিত্রশিল্পী পটুয়া কামরুল হাসানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর শহীদ মিনারে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ করা হবে। এই পর্ব শেষে পরিবেশিত হবে জাতীয় সঙ্গীত। এ সময় উত্তোলন করা হবে পরিষদের পতাকা। পর্যায়ক্রমে গীত হবে একুশের গান ও উৎসব সঙ্গীত। অনুষ্ঠানে শোকপ্রস্তাব পাঠ করবেন হারিসুল হক। ঘোষণাপত্র পাঠ করবেন মুহাম্মদ সামাদ। এছাড়াও থাকবে উৎসবের উদ্বোধক সৈয়দ শামসুল হকের ভাষণ। উৎসবে সভাপতির ভাষণ দেবেন হাবীবুল্লাহ সিরাজী। বেলা ১২টা থেকে শুরু হবে কবিতাপাঠের পালা। কবিরা স্বকণ্ঠে পাঠ করবেন তাঁদের কবিতা। প্রথম দিনের উৎসবে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত থাকবে চার পর্বে কবিতা পাঠের আসর। এই চার পর্বে সভাপতিত্ব করবেন কবি বেলাল চৌধুরী, শিহাব সরকার, মুহাম্মদ নূরুল হুদা ও রফিক আজাদ। রাত ৮টায় থাকবে আবৃত্তিপর্ব। এতে সভাপতিত্ব করবেন আসাদুজ্জামান নূর। এছাড়াও উৎসবের দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার কবিতা পাঠের পাশাপাশি রয়েছে 'ভাষা আন্দোলন ও আমাদের কবিতা' এবং 'মুক্তিযুদ্ধ ও আমাদের কবিতা' বিষয়ক দুটি সেমিনার। প্রথম সেমিনারটিতে রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে মূল প্রবন্ধ পাঠ করবেন আহমদ রফিক। আর জিল্লুর রহমান সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে দ্বিতীয় সেমিনারে মূল প্রবন্ধ পড়বেন আবুল হাসনাত। সকালে এই সেমিনার দিয়েই শুরু হবে উৎসব। আর প্রথম দিনের মতো দ্বিতীয় দিনেও বেলা ১২টা থেকে শুরু হবে পাঁচ পর্বে কবিতা পাঠের আসর। এই পাঁচ পর্বে সভাপতিত্ব করবেন ৫ কবি। তাঁরা হলেন মুনীর সিরাজ, কাজী রোজী, মহাদেব সাহা, নির্মলেন্দু গুণ ও আসাদ চৌধুরী। এছাড়া রাত ৮টায় রয়েছে কবিতার গানের পরিবেশনা। এতে সভাপতিত্ব করবেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি নাসিরউদ্দীন ইউসুফ।
শান্তি ও সম্প্রীতির বার্তাবহ এবারের কবিতা উৎসবে নবীন কবিদের সঙ্গে শরিক হবেন দেশবরেণ্য কবিরা। আর তাঁদের সঙ্গে থাকবেন ভারতের সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, আশিষ স্যান্যাল, উত্তম দাশ, রাতুল দেব বর্মণ, দীপক লাহিড়ী, চিত্রা লাহিড়ী, পিনাকী ঠাকুর, মৃণাল বসু চৌধুরী, বীথি চট্টোপাধ্যায় ও খ্যাতিমান একঝাঁক কবি। এছাড়াও উৎসবে অংশ নেবেন স্পেনের কবি জারমেইন ড্রগ্রেনব্রæট।
বাংলাদেশী যুবক নির্যাতন ভারতের দুঃখ প্রকাশ
নয়াদিল্লী, বাসস, ৩১ জানুয়ারি ॥ ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) হাতে বাংলাদেশের এক যুবক নিগৃহীত হওয়ার ঘটনায় ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরম দঃখ প্রকাশ করেছেন। 
মঙ্গলবার এখানে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এই দুঃখ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, সীমান্তে যে ঘটনা ঘটেছে তা সত্যি দুঃখজনক। বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশের সরকারের সঙ্গে আলোচনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি বাংলাদেশকে বলেছি, তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইতোমধ্যে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে কয়েকজনকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ সফরের কথা উল্লেখ করে বলেন, বিভিন্ন বিষয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে তাঁর ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। এরপর থেকে সীমান্তে গোলগুলির ঘটেনি। সীমান্তে এখন শান্তি বিরাজ করছে।
এদিকে বিএসএফের হাতে বাংলাদেশের যুবক নিগৃহীত হওয়ার ঘটনার প্রেক্ষিতে ভারতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন চার সপ্তাহের মধ্যে ঘটনা সম্পর্কে রিপোর্ট দেয়ার জন্য সরকারকে চিঠি দিয়েছে। আগামী মাসের শেষ সপ্তাহে এ সময় শেষ হবে।

No comments:

मैं नास्तिक क्यों हूं# Necessity of Atheism#!Genetics Bharat Teertha

হে মোর চিত্ত, Prey for Humanity!

मनुस्मृति नस्ली राजकाज राजनीति में OBC Trump Card और जयभीम कामरेड

Gorkhaland again?আত্মঘাতী বাঙালি আবার বিভাজন বিপর্যয়ের মুখোমুখি!

हिंदुत्व की राजनीति का मुकाबला हिंदुत्व की राजनीति से नहीं किया जा सकता।

In conversation with Palash Biswas

Palash Biswas On Unique Identity No1.mpg

Save the Universities!

RSS might replace Gandhi with Ambedkar on currency notes!

जैसे जर्मनी में सिर्फ हिटलर को बोलने की आजादी थी,आज सिर्फ मंकी बातों की आजादी है।

#BEEFGATEঅন্ধকার বৃত্তান্তঃ হত্যার রাজনীতি

अलविदा पत्रकारिता,अब कोई प्रतिक्रिया नहीं! पलाश विश्वास

ভালোবাসার মুখ,প্রতিবাদের মুখ মন্দাক্রান্তার পাশে আছি,যে মেয়েটি আজও লিখতে পারছেঃ আমাক ধর্ষণ করবে?

Palash Biswas on BAMCEF UNIFICATION!

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS ON NEPALI SENTIMENT, GORKHALAND, KUMAON AND GARHWAL ETC.and BAMCEF UNIFICATION! Published on Mar 19, 2013 The Himalayan Voice Cambridge, Massachusetts United States of America

BAMCEF UNIFICATION CONFERENCE 7

Published on 10 Mar 2013 ALL INDIA BAMCEF UNIFICATION CONFERENCE HELD AT Dr.B. R. AMBEDKAR BHAVAN,DADAR,MUMBAI ON 2ND AND 3RD MARCH 2013. Mr.PALASH BISWAS (JOURNALIST -KOLKATA) DELIVERING HER SPEECH. http://www.youtube.com/watch?v=oLL-n6MrcoM http://youtu.be/oLL-n6MrcoM

Imminent Massive earthquake in the Himalayas

Palash Biswas on Citizenship Amendment Act

Mr. PALASH BISWAS DELIVERING SPEECH AT BAMCEF PROGRAM AT NAGPUR ON 17 & 18 SEPTEMBER 2003 Sub:- CITIZENSHIP AMENDMENT ACT 2003 http://youtu.be/zGDfsLzxTXo

Tweet Please

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS BLASTS INDIANS THAT CLAIM BUDDHA WAS BORN IN INDIA

THE HIMALAYAN TALK: INDIAN GOVERNMENT FOOD SECURITY PROGRAM RISKIER

http://youtu.be/NrcmNEjaN8c The government of India has announced food security program ahead of elections in 2014. We discussed the issue with Palash Biswas in Kolkata today. http://youtu.be/NrcmNEjaN8c Ahead of Elections, India's Cabinet Approves Food Security Program ______________________________________________________ By JIM YARDLEY http://india.blogs.nytimes.com/2013/07/04/indias-cabinet-passes-food-security-law/

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS TALKS AGAINST CASTEIST HEGEMONY IN SOUTH ASIA

THE HIMALAYAN VOICE: PALASH BISWAS DISCUSSES RAM MANDIR

Published on 10 Apr 2013 Palash Biswas spoke to us from Kolkota and shared his views on Visho Hindu Parashid's programme from tomorrow ( April 11, 2013) to build Ram Mandir in disputed Ayodhya. http://www.youtube.com/watch?v=77cZuBunAGk

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS LASHES OUT KATHMANDU INT'L 'MULVASI' CONFERENCE

अहिले भर्खर कोलकता भारतमा हामीले पलाश विश्वाससंग काठमाडौँमा आज भै रहेको अन्तर्राष्ट्रिय मूलवासी सम्मेलनको बारेमा कुराकानी गर्यौ । उहाले भन्नु भयो सो सम्मेलन 'नेपालको आदिवासी जनजातिहरुको आन्दोलनलाई कम्जोर बनाउने षडयन्त्र हो।' http://youtu.be/j8GXlmSBbbk

THE HIMALAYAN DISASTER: TRANSNATIONAL DISASTER MANAGEMENT MECHANISM A MUST

We talked with Palash Biswas, an editor for Indian Express in Kolkata today also. He urged that there must a transnational disaster management mechanism to avert such scale disaster in the Himalayas. http://youtu.be/7IzWUpRECJM

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS CRITICAL OF BAMCEF LEADERSHIP

[Palash Biswas, one of the BAMCEF leaders and editors for Indian Express spoke to us from Kolkata today and criticized BAMCEF leadership in New Delhi, which according to him, is messing up with Nepalese indigenous peoples also. He also flayed MP Jay Narayan Prasad Nishad, who recently offered a Puja in his New Delhi home for Narendra Modi's victory in 2014.]

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS CRITICIZES GOVT FOR WORLD`S BIGGEST BLACK OUT

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS CRITICIZES GOVT FOR WORLD`S BIGGEST BLACK OUT

THE HIMALAYAN TALK: PALSH BISWAS FLAYS SOUTH ASIAN GOVERNM

Palash Biswas, lashed out those 1% people in the government in New Delhi for failure of delivery and creating hosts of problems everywhere in South Asia. http://youtu.be/lD2_V7CB2Is

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS LASHES OUT KATHMANDU INT'L 'MULVASI' CONFERENCE

अहिले भर्खर कोलकता भारतमा हामीले पलाश विश्वाससंग काठमाडौँमा आज भै रहेको अन्तर्राष्ट्रिय मूलवासी सम्मेलनको बारेमा कुराकानी गर्यौ । उहाले भन्नु भयो सो सम्मेलन 'नेपालको आदिवासी जनजातिहरुको आन्दोलनलाई कम्जोर बनाउने षडयन्त्र हो।' http://youtu.be/j8GXlmSBbbk