জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ শিয়ালদা থেকে শ্যামবাজারগামী বাসে কলেজে যাচ্ছিলেন রাজাবাজার সায়েন্স কলেজের ওই ছাত্রী৷ অভিযোগ উঠেছে যে, বাসে উঠেই ওই ছাত্রীর শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে তিন মত্ত যুবক৷ ছাত্রীটি সাহায্যের জন্য চিত্কার করলেও যাত্রীরা কেউ এগিয়ে আসেননি৷ শ্লীলতাহানির হাত থেকে বাঁচতে তিনি চলন্ত বাস থেকে লাফ দেন৷ আহত অবস্থায় ছুটতে ছুটতে কলেজে পৌঁছে সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন তিনি৷ ঘটনার প্রতিবাদে দুপুর ২টো থেকে প্রায় তিন ঘণ্টা এপিসি বোস রোড অবরোধ করেন ছাত্র-ছাত্রী ও অধ্যাপকরা৷ ডিসি নর্থ গৌরব শর্মা এসে তদন্ত ও দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে৷
অন্যদিকে, এদিন রাজ্যে মহিলাদের নিরাপত্তার দাবিতে সিউড়ি শহরে মিছিল করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী ও শিক্ষক-শিক্ষিকারা৷ প্রধান শিক্ষিকা মৌ দাশগুপ্ত অভিযোগ করেন, মিছিল চলাকালীন তিন যুবক বাইকে করে এসে এক ছাত্রীকে কটূক্তি করে৷ সিউড়ি থানায় শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের করেছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা৷
দিল্লির চলন্ত বাসে ছাত্রীর গণধর্ষণকাণ্ডে সরব হয়েছিল কলকাতাও৷ প্রতিবাদে মোমবাতি মিছিলে সামিল হয়েছিলেন শহরের ছাত্র-ছাত্রীরাও৷ কিন্তু দিল্লির সেই ক্ষত মেরামত হওয়ার আগেই কলকাতায় দিনের বেলাতেই বাসের মধ্যে শ্লীলতাহানির অভিযোগে শহরে মহিলারা কতটা নিরাপদ, সেই প্রশ্নই উঠছে৷ গ্রাম বাংলায়ও যে মহিলা সুরক্ষার ছবিটা একেবারেই আশাব্যঞ্জক নয়, সিউড়ির ঘটনাটি সেদিকেই ইঙ্গিত করছে
ভাঙড়ে গত দু-তিন দিনের ঘটনাকে গুন্ডাগিরি বলেই মনে করেন রাজ্যপাল। গতকাল কলকাতায় এক অনুষ্ঠানে তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব প্রশাসনকেই নিতে হবে। পুলিসেরও নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করা উচিত বলে মন্তব্য করেন রাজ্যপাল।
ভাঙড়ে রেজ্জাক মোল্লার ওপর আক্রমনের ঘটনার পরেই রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছিলেন কোনও আক্রমনের ঘটনা তিনি অনুমোদন করেন না। আর বুধবার আরও কড়া প্রতিক্রিয়া দিলেন রাজ্যপাল। ভাঙড়ের দু-তিনদিনের ঘটনাকে তিনি সরাসরি গুন্ডামি বলেই আখ্যা দিয়েছেন।
পুলিশ প্রশাসনের আচরণেও যে তিনি মোটেই সন্তুষ্ট নন, বুধবার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তা-ও বুঝিয়ে দিয়েছেন রাজ্যপাল। তাঁর সাফ কথা, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিত ঠিক রাখতে প্রশাসনকেই দায়িত্ব নিতে হবে। পুলিশের নিরপেক্ষভাবে কাজ করা উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ভাঙড় কাণ্ডে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে কবি শঙ্খ ঘোষ বলেছেন, দুর্বৃত্তদের উপর নির্ভর করে যদি রাজ্য চালাতে হয়, তাহলে এরকম ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটতেই থাকবে। সরকার এখনও সতর্ক হোন। ভাঙড়ের ঘটনাবলীর পক্ষে সাফাই দিচ্ছেন রাজ্যের মন্ত্রীরা। মঙ্গলবার বামনঘাটায় বাম সমর্থকদের গাড়িতে সশস্ত্র হামলা সম্পর্কে কোনও কথাই খরচ করা হয়নি সরকারের তরফে। সেই অবস্থায় রাজ্যপাল বা শঙ্খ ঘোষের মন্তব্য নিঃসন্দেহে সরকারের অস্বস্তি বাড়াবে।
বাসের মধ্যেই রাজাবাজার সায়েন্স কলেজের এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানির চেষ্টা করল কয়েকজন দুষ্কৃতী। তাদের হাত থেকে বাঁচতে ওই ছাত্রী চলন্ত বাস থেকে ঝাঁপ দেন। এরপর দৌড়ে কলেজ চত্বরে ঢুকে পড়ে সংজ্ঞা হারান তিনি। অন্য ছাত্রীরা তাঁকে সুস্থ করে তোলেন। এ ঘটনার পর নিরাপত্তার দাবিতে রাজাবাজার সায়েন্স কলেজের সামনে পথ অবরোধ করেন ছাত্রছাত্রীরা।
নয়াদিল্লি: উতপাদন ব্যয়ের কম দামে রান্নার গ্যাস ও পেট্রল-ডিজেল বেচতে গিয়ে রেকর্ড পরিমাণ ১ লক্ষ ৬০ হাজার কোটি টাকা লোকসান হচ্ছে, এই যুক্তি দেখিয়ে এবার ডিজেলের দাম এক ধাক্কায় লিটারে ৩ থেকে সাড়া চার টাকা বা প্রতি মাসে ১টাকা করে টানা ১০ মাস ধরে বাড়ানোর সুপারিশ করেছে পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক৷ এর পাশাপাশি ভর্তুকিতে দেওয়া সিলিন্ডারের সংখ্যা বছরে ৬ থেকে বাড়িয়ে ৯টি করার সুপারিশ করলেও সেখানেও দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের খবর, ১৪.২ কেজি ওজনের রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডারের দাম দুটি কিস্তিতে ১০০ টাকা বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক যাবতীয় প্রস্তাব সম্বলিত একটি নোট বিবেচনার জন্য ক্যাবিনেটের কাছে পেশ করেছে। অর্থমন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে যে, ভর্তুকিতে দেওয়া সিলিন্ডারের সংখ্যা বাড়াতে হলে যে অতিরিক্ত আর্থিক বোঝা চাপবে, তা মেটানোর জন্য এপ্রিল থেকেই ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে ৫০ টাকা করে দাম বাড়ানোর পক্ষপাতী পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক। মন্ত্রকের হিসাব, ভর্তুকিতে গ্যাসের সিলিন্ডার সংখ্যা বাড়ানো হলে বছরে সঞ্চয়ের পরিমাণ ২৫০০ কোটি টাকা কমবে।সূত্রের খবর, মন্ত্রক কেরোসিনের দামও ২০১৫-র এপ্রিল পর্যন্ত মাসে লিটারে ৩৫ পয়সা বা ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে লিটারে ১ টাকা বাড়ানোর সুপারিশ করেছে।
http://abpananda.newsbullet.in/national/60-more/32314-2013-01-09-15-59-28
রাজ্যপাল মুখ খোলায় যখন রাজ্যের মন্ত্রীরা কেউ তোপ দাগছেন,কেউ আবার কার্যত হুমকি দিচ্ছেন। তখন রাজ্যপাল পরিস্কার জানিয়ে দিলেন, তিনি রাজ্যপাল সুলভ মন্তব্যই করেছেন। রাজ্যাপাল গতকাল বলেন রাজ্যে গুণ্ডারাজ চলছে। এর জবাবে গতকাল শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়,এবং আজ সুব্রত মুখোপাধ্যায় এই মন্তব্যে রাজ্যপালের এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন করেন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের সামনে রাজ্যপাল এমকে নারায়ণন বলেন, "আমি যা বলেছি রাজ্য়াপালের মতই বলেছি"।
রাজ্যপাল সুলভ মন্তব্য নয়, রাজ্যপালের মন্তব্য রাজনৈতিক। আজ মহাকরণে রাজ্যপাল এমকে নারায়াননকে ঠিক এই ভাষাতেই বিঁধলেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রতর মুখোপাধ্যায়। তিনি আরও বলেন রাজ্যপালের বক্তব্য উসকানিমূলক। গতকাল রাজ্যপালের বক্তব্য নিয়ে শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় প্রশ্ন তোলার পর আজ সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের এই মন্তব্য নিয়ে সমালোচনায় রাজনৈতিক মহল।
দেখুন সুব্রত মুখোপাধ্যায় ঠিক কী বললেন
গতকাল কলকাতায় এক অনুষ্ঠানে তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দেন, রাজ্যে গুন্ডারাজ চলছে। পুলিশ প্রশাসনের আচরণেও যে তিনি মোটেই সন্তুষ্ট নন, বুধবার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তা-ও বুঝিয়ে দিয়েছেন রাজ্যপাল। তাঁর সাফ কথা, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিত ঠিক রাখতে প্রশাসনকেই দায়িত্ব নিতে হবে। পুলিশের নিরপেক্ষভাবে কাজ করা উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
দেখুন সুব্রত মুখোপাধ্যায় ঠিক কী বললেন
জ্বালানি খাতে ভর্তুকি দিয়ে ১ লক্ষ ৬০ হাজার কোটি টাকার মতো আর্থিক ঘাটতিতে সরকারি কোষাগার৷ এ বার সেই 'শূন্য ভাঁড়ার পূর্ণ' করতে রীতিমতো মধ্যবিত্তের সংসারে কোপ ফেলার আয়োজন করেছে তেলমন্ত্রক৷
ভর্তুকি দেওয়া সিলিন্ডারের সংখ্যা ছয় থেকে নয় করতে রাজি তেলমন্ত্রক৷ কিন্ত্ত অতিরিক্ত তিনটি সিলিন্ডার ভর্তুকিতে দিয়ে ঘাটতির বোঝা আর বাড়াতে নারাজ অর্থমন্ত্রক৷ তেলমন্ত্রককে এ কথা সাফ জানিয়ে দিয়েছে চিদম্বরমের দপ্তর৷
সেই আর্থিক ঘাটতি কী করে পূরণ করা যায় তার জন্য কিছু দাওয়াই বাতলেছে তেলমন্ত্রক৷ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভাকে পাঠানো একটি নোটে তেলমন্ত্রকের প্রস্তাব, ডিজেলের দাম এখনই লিটার প্রতি তিন থেকে সাড়ে চার টাকা বাড়িয়ে ওই জ্বালানির উপর ভর্তুকি কিছুটা কমানো হোক৷ এর পর এপ্রিল থেকে প্রতি মাসে ডিজেলের লিটার প্রতি দাম এক টাকা করে বাড়ানো হোক৷
এলপিজি সিলিন্ডার সম্পর্কে তেল মন্ত্রকের প্রস্তাব, ভতুর্কি যুক্ত সিলিন্ডারের সংখ্যা ছয় থেকে নয় করা হোক৷ কিন্ত্ত, ভর্তুকি যুক্ত সিলিন্ডারের দাম দু'দফায় ১০০ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়ে৷
তেলমন্ত্রকের কোপ থেকে রেহাই পায়নি 'গরিবের জ্বালানি' কেরোসিনও৷ তেলমন্ত্রকের প্রস্তাব, প্রতি মাসে কেরোসিনের দাম লিটার পিছু ৩৫ পয়সা বাড়ানো হোক৷ কিংবা প্রতি ত্রৈমাসিকে কেরোসিনের লিটার প্রতি দাম বাড়ুক এক টাকা করে৷ তেলমন্ত্রকের দাবি, এর ফলে ভর্তুকি খাতে সরকারের খরচ কমবে৷ এক লক্ষ ৬০ হাজার কোটি টাকার ঘাটতি পূরণের দিকেও বেশ খানিকটা এগোনো যাবে৷ সাধারণ মানুষকে ভর্তুকি যুক্ত ন'টি সিলিন্ডারও দেওয়া যাবে৷
এ বছর ডিজেল ও সিলিন্ডারে ভর্তুকি দিতে অর্থমন্ত্রকের কাছে মোট ১,০৫,৫১৫ কোটি টাকা চেয়েছে তেলমন্ত্রক৷ সরকারি হিসাব অনুযায়ী, সরকার নিয়ন্ত্রিত দামে ডিজেল, রান্নার গ্যাস ও কেরোসিন বিক্রি করে চলতি অর্থবর্ষে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি ১,৬৩,০০০ কোটি টাকা লোকসান করেছে৷ এই লোকসানের ৬০ হাজার কোটি টাকা পূরণ করবে ওএনজিসি, গেইল, অয়েল ইন্ডিয়ার মতো তেল উত্পাদনকারী সংস্থাগুলি৷ বাকি টাকার জন্য সরকারের দ্বারস্থ হবে খুচরো তেল সংস্থাগুলি৷ সরকার সেই টাকা মেটানোর জন্য বাজারে জ্বালানির দাম বাড়িয়ে দেবে৷ ফলে জ্বালানির জন্য মোটা টাকা গচ্চা যাবে মধ্যবিত্তের পকেট থেকেই৷
বর্তমানে কলকাতায় লিটার প্রতি ডিজেলের দাম ৫০.৭৮ টাকা৷ লিটার প্রতি কেরোসিনের জাম ১৪.৮৪ টাকা৷ গত সেপ্টেম্বরে ডিজেলের দাম পাঁচ টাকা বাড়িয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার৷ তবে ২০১১-র জুনের পর কেরোসিনের দাম বাড়েনি৷
কলকাতায় এখন ভতুর্কি যুক্ত সিলিন্ডারের দাম ৪১২ টাকা ৫০ পয়সা৷ ছ'টার কোটা পার হয়ে গেলে গৃহস্থকে ৯২৫ টাকা দরে সিলিন্ডার কিনতে হয়৷ রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলির দাবি, প্রতিটি ভতুর্কি যুক্ত সিলিন্ডিরে তাদের লোকসান হয় ৪৯০.৫০ টাকা৷ তেলমন্ত্রকের প্রস্তাবে মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিলে সাধারণ মানুষকে অন্তত ৫১২ টাকা দিয়ে ভর্তুকি যুক্ত সিলিন্ডার কিনতে হবে৷ তেলমন্ত্রকের হিসাব অনুযায়ী ছ'টি ভর্তুকি যুক্ত সিলিন্ডার দিলে সরকারের সাশ্রয় হয় ১২ হাজার কোটি টাকা৷ যদি ন'টি ভর্তুকি যুক্ত সিলিন্ডার দেওয়া হয় তা হলে সরকারের সাশ্রম কমে দাঁড়াবে আড়াই হাজার কোটি টাকা৷
ইকোনমিক টাইমসে দেওয়া সাক্ষাত্কারে স্টিগলিটজ বলেন, 'কর্পোরেট সেক্টর ও ফিনান্সিয়াল সেক্টরের মধ্যে সবচেয়ে বড় অস্বচ্ছতা হল, তারা আইনের পাশ কাটিয়ে সহজেই অনেক বেআইনি কাজকারবার করতে পারে৷'
এক সময় বিশ্বব্যাঙ্কে মুখ্য অর্থনীতিবিদের দায়িত্ব সামলানো স্টিগলিটজ বলেন, 'শুধু এটুকুই আশা করা যায় যে আপনি এদের দিকে নজর রেখে যাবেন আর ক্রেডিট রেটিং সংস্থাগুলো তাদের কাজ করে যাবে৷'
সম্প্রতি চালু হওয়া কেন্দ্রীয় সরকারের ডায়রেক্ট ক্যাশ ট্রান্সফার স্কিম প্রসঙ্গে জোশেফ স্টিগলিটজ বলেন, যেখানে যা ফাঁকফোকর রয়েছে তা বন্ধ করতে হবে৷ তাঁর মতে শর্তসাপেক্ষে অর্থ ট্রান্সফার সারা বিশ্বেই চলছে৷ তিনি বলেন, যে সব পরিবার শিশুদের টিকাকরণ নিশ্চিত করতে পেরেছে এবং স্কুলে যাওয়া নিশ্চিত করতে পেরেছে শুধু তাদেরই ভর্তুকির টাকা দেওয়া উচিত৷
অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতিতে নজর
ইউরোপের বিভিন্ন দেশ আর্থিক সঙ্কটে পড়েছে৷ তার প্রভাব পড়েছে বিশ্বজুড়ে৷ আমেরিকাতেও বৃদ্ধির গতি শ্লথ হয়েছে৷ রন্তানির উপরে ভারত খুব একটা নির্ভরশীল নয়, এই পরিস্থিতিতে সেটি দেশের পক্ষে মঙ্গলজনক বলে মনে করেন কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও মার্কিন অর্থনীতিবিদ স্টিগলিটজ৷ এখন অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতের নজর দেওয়া উচিত, পরামর্শ স্টিগলিটজের৷ তিনি বলেছেন অসাম্য, পরিকাঠামোর অভাব, শিক্ষা বিষয়ক দিক, কৃষি, পরিবেশ, জলস্তর ক্রমে নেমে যাওয়ার বিষয়গুলিতে নজর দেওয়ার পরামর্শও দিয়েছেন৷
বেসরকারিকরণের আগে
শুধুমাত্র বেসরকারিকরণেই সমস্যা মিটবে না, স্থানীয় মানুষের কিসে ভালো হয়, সে দিকে নজর দিতে হবে৷ যদি ট্রান্সফারের ক্ষেত্রে কোনও দুর্নীতি হয় তবে আরও বেশি করে ভেদাভেদ তৈরি হবে৷ বেসরকারিকরণের আগে এই ধরণের সমস্যা মেটাতে হবে৷ মত বিশ্বব্যাঙ্কের প্রাক্তন মুখ্য অর্থনীতিবিদের৷
এফডিআই প্রসঙ্গে
ভারতে বিদেশি বিনিয়োগ নিয়ে হইচই হলেও এ বিষয়টিতে খুব একটা গুরুত্ব দিতে রাজি নন নয়া-কেইনসীয় মতবাদে বিশ্বাসী মার্কিন অর্থনীতিবিদ৷ ক্লাসিক্যাল ঘরানার অর্থনীতিবিদের মতে, 'বিদেশি বিনিয়োগ হলেই যে সব সমস্যা মিটে যাবে তা কিন্ত্ত নয়৷ ভারতে উদ্যোগপতিদের অভাব নেই৷ দেখতে হবে এ দেশের উদ্যোগপতিরা পারছেন না এমন কোন জিনিস বিদেশি বিনিয়োগের ফলে হওয়া সম্ভব৷' ওয়ালমার্ট ঘুষ নেওয়ার প্রবণতা বাড়াতে পারে, মেক্সিকোতে তাদের সাফল্যের মন্ত্র এটাই ছিল৷
তিনি বলেন, 'তোমাটের এটির (ঘুষ) প্রয়োজন নেই, কারণ যথেষ্ট পরিমাণেই এস সব চলছে৷ আমি বিভিন্ন দেশে ওয়ালমার্টের 'সাপ্লাই চেন' খতিয়ে দেখেছি৷ বিদেশি বিনিয়োগ হলে তারা তাদের একচেটিয়া ক্রয়ক্ষমতা প্রয়োগ করবে (ফলে বজড় মাপের ক্রেতা হিসাবে বাজারের বড় অংশ নিয়ন্ত্রণ করবে এবং জিনিসের দাম কমবে), এ দেশের চেয়ে চিনা জিনিসের দাম কম হওয়ায় সেগুলি আনবে এবং ভেদাভেদ বাড়বে৷
প্রসঙ্গ স্পেকট্রাম
মূলত ম্যাক্রোইকোনমিক্স, পাবলিক ইকোনমিক্স ও ইনফরমেশন ইকোনমিকস নিয়েই কাজ করেন স্টিলগিটজ৷ তাঁর মতে, 'অসাম্যের একটি কারণ হল বিশ্বায়ন, কিন্ত্ত কোনও ভাবেই এটিকে বন্ধ করা যাবে না৷ তবে এর চেয়ে অনেক বড় উত্সও রয়েছে যেমন একচেটিয়া কারবার, কর্পোরেট ক্ষমতার অপব্যবহার, লোকজনের হাতে প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহারের অধিকার তুলে দেওয়া ও কমদামে স্পেকট্রাম বণ্টনের মতো বিষয়৷'
ভারতের জাতীয় উত্পাদন হার এই বছরের তুলনায় ২০১৩-১৪ অর্থবর্ষে খুব দ্রুত বৃদ্ধি পাবে৷ চলতি অর্থবর্ষের সাড়ে পাঁচ শতাংশের নিরিখে আগামী অর্থবর্ষে জাতীয় উত্পাদন বৃদ্ধির হার ৬.৭ শতাংশ হবে৷ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার পরিবর্তনের ফলেই উত্পাদন হার বৃদ্ধি পাবে বলে বুধবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে ক্রিসিল৷ কৃষি ক্ষেত্রের উন্নতি, সুদের কম হার এবং বর্ধিত সরকারি খরচ এই তিনটি বিষয়ের উপর ভিত্তি করেই ক্রয় চাহিদা বাড়বে বলে জানিয়েছে ক্রিসিল৷
এই বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ইউরোজোন দেশগুলির আর্থিক সমস্যার পাশাপাশি দেশে সরকারের রুগ্ন নীতি, মু্দ্রাস্ফীতির বর্ধিত হার এবং ঘোষিত প্রকল্পগুলি দ্রুত ছাড়পত্র না পাওয়ায় জাতীয় উত্পাদন বৃদ্ধির হার কম হয়েছিল৷ এর পরেই অক্টোবরে ঋণনীতি ঘোষণার সময় জাতীয় উত্পাদন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে তাদের পূর্বানুমান সাড়ে ছয় শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫.৭ শতাংশ করেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া৷ আন্তর্জাতিক রেটিং সংস্থাগুলিও দেশের আর্থিক ঘাটতি দূর করার জন্য দ্রুত সরকারি পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার কথা জানায়৷ তবে, জাতীয় উত্পাদন হার বাড়ার সঙ্গে দেশের আর্থিক ঘাটতি কমবে বলেও জানিয়েছে ক্রিসিল৷ ২০১৩-১৪ অর্থবর্ষে দেশের আর্থিক ঘাটতি চলতি অর্থবর্ষের ৫.৮ শতাংশ থেকে কমে সাড়ে পাঁচ শতাংশ হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটির অনুমান৷
অন্যদিকে, দেশের বৃদ্ধির হার কম হওয়ার জন্য রিজার্ভ ব্যাঙ্ককেও দায়ি করেছে সংস্থাটি৷ রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বর্ধিত সুদের হার দেশের বৃদ্ধির পথে অন্যতম অন্তরায় বলে জানিয়েছে তারা৷
২০১২-১৩ অর্থবর্ষে মুদ্রাস্ফীতির হার ৭.৭ শতাংশ থাকলেও আগামী অর্থবর্ষে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত, বৈদেশিক মুদ্রায় টাকার দর বৃদ্ধি, অপরিশোধিত তেলের কমদামের উপর ভিত্তি করে তা সাত শতাংশ হবে বলে অনুমান ক্রিসিলের৷ মুদ্রাস্ফীতির হার আগের তুলনায় কমায় জানুয়ারি মাসে ঋণনীতি ঘোষণা করার সময় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সুদের হার এক শতাংশ পর্যন্ত কমাবে বলে জানিয়েছে রেটিং সংস্থাটি৷
মুখ্যমন্ত্রী এদিন জানান, পানাগড় ইন্ডাস্ট্রিয়াল এস্টেটে ১ হাজার ৪৫৭ একর জমি রয়েছে৷ এতে ১২ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হবে৷ ১২ হাজার মানুষের কর্ম সংস্থান হবে৷ এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানান, আনাসনোল-দুর্গাপুরকে আলাদা জেলা করা হবে৷ প্রশাসনিক অনুমোদনও এসে গিয়েছে৷ শীঘ্রই শুরু হবে প্রক্রিয়া৷
বর্তমান সরকার যে সংখ্যালঘু তফশিলি ও পিছিয়ে পড়া মানুষের উন্নয়নে বেশিজোর দিতে চায়, এদিন সেই বার্তাও দেন মমতা৷ তিনি বলেন, সংখ্যালঘু দফতরের যে বাজেট, তাতে বরাদ্দ ৭০ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে৷ এবং গরিব মানুষ যাতে মাথা তুলে কাজ করতে পারে, তার জন্য সরকার কাজ করবে৷ মুখ্যমন্ত্রী এদিন জানিয়েছেন, বিভিন্ন জায়গায় যাঁরা সরকারি জমি দখল করে রয়েছেন, তাঁদের উচ্ছেদ করা হবে না৷ পুনর্বাসন দেওয়া হবে সরকারি জমিতে৷ এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিলান্যাস করে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, তিনি জাতীয় কর্তব্য পালন করতে পেরেছেন৷
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ব্যাখ্যা, পঞ্চায়েত ভোটে সাফল্য-ব্যর্থতার বড় ফ্যাক্টর সংখ্যালঘু গরিব ভোট ব্যাঙ্ক৷ এদিনের একগুচ্ছ কর্মসূচি ঘোষণা তাঁদের মন জয়ের চেষ্টা হিসেবেই দেখছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা৷
দশ বছরে প্রথমবার বাড়ল রেলের ভাড়া। চলতি মাসের ২১ তারিখ মধ্যরাত থেকে নতুন ভাড়া কার্যকর হবে। আজ এক সাংবাদিক বৈঠকে রেলে ২০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করলেন রেলমন্ত্রী পবন কুমার বনশল। চলতি বছরের বাজেটে রেলের ভাড়া আর বাড়বে না বলেও জানান মন্ত্রী। প্রতি কিলোমিটারে ২ পয়সা থেকে ১০ পয়সা পর্যন্ত বাড়বে ভাড়া।
এই ভাড়া বৃদ্ধির জন্য ৬ হাজার ৬০০ কোটি টাকা আয় হবে বলে মনে করছে রেল মন্ত্রক। রেলমন্ত্রী এদিন বলেন ২০১০-১১তে ভারতীয় রেলের প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা লোকসান হয়েছে।
গত বছর, তৎকালীন রেলমন্ত্রী তৃণমূলের দীনেশ ত্রিবেদী রেল বাজেটে রেলের ভাড়া বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করেন। তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জির প্রবল বাধায় শেষ পর্যন্ত নতি স্বীকার করে কেন্দ্র।
এক নজরে দেখে নেব কোথায়, কত ভাড়া বাড়ল
লোকাল ট্রেনে কিমি প্রতি দু পয়সা করে বাড়ছে ভাড়া
দূরপাল্লার ট্রেনে দ্বিতীয় শ্রেণীতে প্রতি কিমিতে ৬ পয়সা করে বাড়ল ভাড়া
এসি চেয়ার কারে প্রতি কিমিতে ১০ পয়সা করে বাড়ল ভাড়া
এসি সেকেন্ড ক্লাসে বাড়ছে ১৫ পয়সা প্রতি কিমি
স্লিপার ক্লাসে ৫০০ কিমির বেশি সফরে ৩০ টাকা ভাড়া বাড়ছে
কলকতা ও তার শহরতলীতে লোকাল ট্রেনের সম্ভাব্য ভাড়া
দূরত্ব(কিমি) বর্তমান ভাড়া সম্ভাব্য ভাড়া
শিয়ালদহ-ক্যানিং ৪৭ ১১টা. ১১টা. ৯৪প.
শিয়ালদহ-কৃষ্ণনগর ১০০ ১৯টা. ২১টা.
শিয়ালদহ-বনগাঁ ৭৯ ১৬টা. ১৭টা. ৫৮প.
শিয়ালদহ-কল্যানী ৫৫ ১১টা. ১২টা. ১০প.
শিয়ালধ-গেদে ১০৭ ২২টা. ২৪টা. ১৪প.
হাওড়া-বর্ধমান ১১০ ১৭টা. ১৯টা. ২০প.
হাওড়া-আসানসোল ২১২ ৩০টা. ৩৪টা. ২৪প.
শেরনগর। মথুরার কাছে অখ্যাত এক গ্রাম। উত্তরপ্রদেশের হাড় কাঁপানো ঠান্ডাকে অগ্রাহ্য করেই, বুধবার সেখানে হাজির হয়েছিলেন অসংখ্য গ্রামবাসী। কারণ, গ্রামের হেমরাজ নামের ছেলেটা আর বেঁচে নেই! পুঞ্চের মেন্ধর সেক্টরে পাকসেনার মোকাবিলা করতে গিয়ে শহিদ হন হেমরাজ। শোকে ভারাক্রান্ত তাঁর পরিবার। কিন্তু দেশের জন্য ঘরের ছেলে যেভাবে প্রাণ বিসর্জন দিয়েছে, তাতে তাঁরা গর্বিত।
ঘরের ভিতর স্টিল ফ্রেমে বাঁধানো ছবিটা সময়ের সঙ্গে অনেকটাই মলিন হয়ে গিয়েছে। কিন্তু গোটা দেশের নজর আপাতত এই ছবির দিকেই। ল্যান্স নায়েক হেমরাজ। পুঞ্চের মেন্ধর সেক্টরে হেমরাজ এবং তাঁর সঙ্গী সুধাকর সিংকে পাকসেনা যেভাবে হত্যা করেছে, তা নিয়ে ক্ষুব্ধ গোটা দেশ। খবর পাওয়ার পর থেকে প্রায় গোটা গ্রামটাই বাড়ির সামনে ভেঙে পড়েছে। তিন ভাইয়ের সংসারে একমাত্র চাকরিজীবী ছিলেন হেমরাজ। তাঁর মৃত্যু পরিবারকে গভীর অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিয়েছে। তার মধ্যেও পরিবারের এক সদস্য জানালেন, হেমরাজের মৃত্যুতে তাঁরা শোকাহত। কিন্তু একই সঙ্গে গর্বিতও।
স্ত্রী ধরমবতী কেঁদেই চলেছেন। একই অবস্থা মায়েরও। আর হেমরাজের তিন সন্তান! ছুটি নিয়ে বাবা যে আর বর্ডার থেকে বাড়িতে আসবে না, সেকথা বুঝে গিয়েছে ওরাও।
ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সীমান্ত সংঘাত নিয়ে উত্তেজনা
পাক অধিকৃত কাশ্মীরে দুই ভারতীয় জওয়ানের গলা কেটে হত্যা করে পাক সেনা। তার আগে ওই এলাকায় লস্কর প্রধান হাফিজ সৈয়দ ঘুরে গিয়েছিল বলে জানিয়েছেন সুশীলকুমার শিন্ডে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার থেকে এ কথা জানা গিয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে একটি সাংবাদিক বৈঠকে শিন্ডে বলেছেন, "গোয়েন্দাদের কাছে কবর রয়েছে যে ওই ঘটনার দিন কয়েক আগেই হাফিজ সৈয়দ পাক অধিকৃত কাশ্মীরে এসেছিল। অনেকের সঙ্গে কথাও বলে সে।" ভারতীয় সেনার উপর এই হামলায় সন্ত্রাসবাদী যোগ রয়েছে কিনা, তা জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন যে সে বিষয়ে এখনই নির্দিষ্ট করে কিছু বলা সম্ভব নয়। তবে আরও তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। তবে এই ঘটনার প্রভাব ভারত-পাক ভিসা চুক্তির উপর পড়বে না বলে জানিয়েছেন তিনি।
একটি নয়, এসএসজি-কে সন্দেহ করার পিছনে রয়েছে একাধিক কারণ। সবচেয়ে জোরালো কারণ হল ২০০০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের একটি হামলার সঙ্গে এই হামলার অদ্ভুত মিল। সেই ঘটনাতেও এসএসজি-ই সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিল বলে সন্দেহ। সেনার এক সিনিয়র অফিসারের কথায় বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়েছে, 'যে ভাবে মুণ্ডচ্ছেদ করা হয়েছে, তাতে সন্দেহটা স্বাভাবিক ভাবেই এসএসজি-র উপর গিয়ে পড়ে। এটাই ওদের অপারেশনের ধরন।' ওই অফিসার বলছেন, ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০০০ সালে জঙ্গি নেতা ইলিয়াস কাশ্মীরির নেতৃত্বে একই ভাবে হামলা চালিয়েছিল এসএসজি। কাশ্মীরি সম্প্রতি ড্রোন আক্রমণে মারা গিয়েছে।
বিতর্ক থাকলেও, ভারতীয় সেনার বড় অংশই মনে করে, ওই হামলার সময় ইলিয়াস কাশ্মীরি এসএসজি-রই একজন সদস্য ছিল। দ্বিতীয় মতটি হল, নিজে কম্যান্ডো না-হলেও, এসএসজি-র সঙ্গে হাত মিলিয়েই কাজ করত কাশ্মীরি। তবে সকলেই একটি বিষয়ে একমত। কাশ্মীরিকে কম্যান্ডো প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। প্রথমে কাজে লাগানো হয় আফগানিস্তানে, পরে কাশ্মীরে।
এসএসজি-কে সন্দেহের দ্বিতীয় কারণ হল জওয়ানদের বয়ান। তাঁরা বলেছেন, যে পাক জওয়ানদের সঙ্গে তাঁদের গুলি বিনিময় হয়েছিল, তারা সকলেই কালো পোশাকে ছিল। কালো পোশাক হল এসএসজি-র ইউনিফর্ম। ১৯৫০ সালে গঠিত এসএসজি-র যেমন ভারতের সঙ্গে বিভিন্ন যুদ্ধে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছে, তেমনই ১৯৮০-র দশকে আফগানিস্তানে রাশিয়ার বিরুদ্ধে তথাকথিত মুজাহিদিন যুদ্ধেও রীতিমতো সদর্থক ভূমিকা ছিল। তবে ভারত সীমান্ত বরাবর একাধিক অপারেশনের জন্যই এসএসজি-কে ব্যবহার করা হয়।
২০০০ সালে হামলা হয় অশোক লিসনিং পোস্টে। পোস্টটি যে বিপজ্জনক, তা ১৭ মরাঠা লাইট ইনফ্যান্ট্রি জানিয়েছিল। সীমান্তপার থেকে পাক সেনা এসে সাত ভারতীয় জওয়ানকে হত্যা করে। সিপাই বাসুদেব মারুতি তালেকরের শিরশ্ছেদ করা হয়। মাথাটি কেটে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল পাক অধিকৃত কাশ্মীরে। শোনা যায়, মুণ্ডটি নিয়ে পারভেজ মুশারফের সামনে প্যারেড করেছিল ইলিয়াস কাশ্মীরি। এ বার হামলা হয়েছে প্যাট্রলিং পার্টির উপর। মনে করা হচ্ছে, টহলদারি পার্টি আসবে জেনে আগের রাত থেকেই সেখানে অপেক্ষা করছিল পাক সেনা। মঙ্গলবারের হামলায় এক ফৌজের মাথা কেটে নেওয়ার পর, অন্য জনেরও শিরশ্ছেদের চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু জবাবি আক্রমণে তা সম্ভব হয়নি। যাওয়ার সময় ভারতীয় জওয়ানদের অস্ত্র নিয়ে পালায় হামলাকারীরা। অর্থাত্ , ২০০০ সালের ঘটনার সঙ্গে এই হামলার মিল রয়েছে।
এসএসজি-র বাইরে যে দু'টি তত্ত্ব ঘুরপাক খাচ্ছে, তা হল পাক সেনার সরাসরি ভূমিকা এবং পাক সেনার মদত ও সাহায্যপুষ্ট সন্ত্রাসীদের হাত। তবে, ঘটনার নেপথ্যে যে-ই থাকুক, একটি বিষয় পরিষ্কার। ভারতীয় জওয়ানদের উপর নৃশংস হামলায় পাকিস্তানের সেনার ভূমিকা আছেই। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষে।
পাকিস্তানের আবেদনে সাড়া দিয়ে ভারত-পাক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের জটিল আবর্তে এখনই মাথা গলাতে রাজি নয় রাষ্ট্রপুঞ্জও। পাক আবেদন সরাসরি খারিজ না-করেও রাষ্ট্রপুঞ্জ বুঝিয়ে দিয়েছে, তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতায় নয়, তারা চায় দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যা মেটানো হোক। পাকিস্তানের অস্বস্তি বাড়িয়েছে আমেরিকাও। দুই ভারতীয় ফৌজের হত্যার ঘটনার তদন্তে তৃতীয় পক্ষের ভূমিকার দাবি খারিজ করেছে তারাও।
এর পর বৃহস্পতিবার ভারতও পাকিস্তানের দাবি পত্রপাঠ খারিজ করে দিয়েছে। নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী একে অ্যান্টনি সীমান্ত এলাকার পরিস্থিতি সবিস্তারে পেশ করেন। ওঠে পাকিস্তানের দাবির প্রসঙ্গও। বৈঠকের পর অর্থমন্ত্রী পালানিয়াপ্পন চিদাম্বরম বলেছেন, 'আন্তর্জাতিক মহল বা রাষ্ট্রপুঞ্জের তদন্তের দাবি আমরা খারিজ করছি। অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিষয়টি দেখা হবে। যা করার আমরা করব।'
দুই জওয়ানের নৃশংস হত্যার পর উত্তরোত্তর বেড়ে চলা কূটনৈতিক চাপ সামাল দিতে রাতারাতি আন্তর্জাতিক মহলের দ্বারস্থ হয়েছিল ইসলামাবাদ। কিন্তু সাম্প্রতিক অতীতের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে এবারও তাদের বিমুখ করল রাষ্ট্রপুঞ্জ এবং আমেরিকা। ভারতের দাবিকে 'ভিত্তিহীন' দাবি করে 'নিরপেক্ষ' তদন্তের পক্ষে সওয়াল করেছিল পাকিস্তান। পাক বিদেশমন্ত্রী হিনা রব্বানি খার বলেছিলেন, 'আমরা জোর গলায় বলছি, জওয়ান হত্যার মতো কোনও ঘটনাই ঘটেনি। আমাদের তদন্ত যদি যথেষ্ট না-হয়, তা হলে রাষ্ট্রপুঞ্জ তদন্ত করুক।' এমনকী ভারতও তদন্ত করতে পারে, সে ইঙ্গিতও দিয়েছিলেন খার। কেননা, ঘটনাটি ঘটেছিল ভারতীয় ভূখণ্ডে।
পাক বিদেশমন্ত্রকের তরফে একটি বিবৃতিতে বলা হয়, 'সংঘর্ষবিরতি ভঙ্গের যে অভিযোগ উঠেছে, তা যদি ইউএন মিলিটারি অবজার্ভার গ্রুপ ফর ইন্ডিয়া অ্যান্ড পাকিস্তান (ইউএনএমওজিআইপি) তদন্ত করে, আমরা প্রস্তুত।'
কিন্তু এই অনুরোধ-উপরোধে কাজ হয়নি। রাষ্ট্রপুঞ্জ জানিয়ে দিয়েছে, সীমান্তে উত্তেজনা প্রশমনে একযোগে কাজ করতে দুই দেশকেই। আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের রাস্তা খুঁজে বের করতে হবে। পাকিস্তান ইতিমধ্যেই ইউএনএমওজিআইপি-তে অভিযোগ জানিয়েছে, গত ৬ তারিখ ভারতীয় জওয়ানরা নিয়ন্ত্রণরেখা অতিক্রম করে পাক ভূখণ্ডে প্রবেশ করেছিলেন, হামলা চালিয়েছিলেন পাকিস্তানের একটি বর্ডার পোস্টে। অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে ভারত।
ইউএনএমওজিআইপি-র বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'আমরা জানি, হটলাইনের মাধ্যমে ভারত এবং পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর মধ্যে যোগাযোগ রয়েছে। আমাদের আবেদন, সংঘর্ষবিরতির সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে দু'দেশই যেন আলোচনার মাধ্যমে উত্তেজনা প্রশমিত করে।' সেই সঙ্গে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ৮ তারিখের ঘটনা নিয়ে এখনও পর্যন্ত মিলিটারি অবজার্ভার গ্রুপের কাছে কোনও পক্ষই অভিযোগ দায়ের করেনি।
ভারতীয় ডিরেক্টর জেনারেল অফ মিলিটারি অপরেশন (ডিজিএমও) বুধবার পাকিস্তানি অধিকারিকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সেখানেই জম্মু-কাশ্মীর সীমান্তে অনুপ্রবেশকারী পাক সেনার হাতে নিহত দুই জওয়ানের মৃত্যুর অভিযোগ করেছেন ভারতের ডিজিএমও লেফটেন্যান্ট জেনারেল বিনোদ ভাটিয়া। আলোচনায় পাক ডিজিএমও জেনারেল আশরফ নাদিন শান্তি চুক্তি ভঙ্গ করার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বলে সেনা সূত্রে জানা গিয়েছে।
ভারত-পাক সীমান্তে পাক সেনার হাতে দুই ভারতীয় জওয়ানের মৃত্যুর ঘটনায় এখন পাক সরকারের বিবৃতির অপেক্ষায় নয়াদিল্লি। বুধবার বিদেশমন্ত্রী সলমন খুরশিদ জানিয়েছেন, গতকালের বর্বরোচিত ঘটনাকে ভারত যে সহজে মেনে নেবে না তা পাক প্রশাসনকে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। খুরশিদ বলেন, "আমরা আমাদের প্রতিবাদ জানিয়েছি।"
যদিও পাক সেনার তরফে গতকালের ঘটনার কথা অস্বীকার করা হয়েছে। কিন্তু এ বিষয়ে এখনও কোনও জবাব দেয়নি ইসলামাবাদ। এই ধরণের ঘটনায় দু`দেশের শান্তি চুক্তির ক্ষেত্রে বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়বে বলেই মনে করেছেন বিদেশমন্ত্রী।
ভারতীয় জওয়ানদের সঙ্গে নৃশংসভাবে হত্যা করার কড়া নিন্দা করেছেন খুরশিদ। তিনি বলেন, "সেনাদের মৃতদেহে যেভাবে অঙ্গহানি করা হয়েছে, তা উদ্বেগের বিষয়। এটা মেনে নেওয়া যায় না।" পাক সেনাবাহিনীর এই ন্যক্কারজনক আচরণের সমালোচনা করেছে ভারতীয় জনতা পার্টিও। বিজেপি মুখপাত্র তরুণ বিজয় এ দিন জানান, "পাকিস্তানের সঙ্গে সমস্ত রকম দ্বিপাক্ষিক যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়া উচিত ভারতের।" এই ঘটনায় পাকিস্তানের কুচক্রি মনোভাব স্পষ্ট হয়ে গেল বলে জানিয়েছেন বিজয়।
কাশ্মীরে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে ঢুকে দুই ভারতীয় জওয়ানকে হত্যা করল পাক সেনা। জখম হয়েছেন আরও দুই ভারতীয় জওয়ান। সূত্রের খবর, নিহত দুই জওয়ানের মধ্যে একজনের শিরোচ্ছেদ করা হয়েছে। অপরজনের দেহও গুলি বা অন্য কোনও অস্ত্রের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত করে দেওয়া হয়েছে। নিহত সেনাদের নাম ল্যান্স নায়েক হেমরাজ ও ল্যান্স নায়েক সুধাকর সিং। গত এক দশকের ভারত-পাক হিংসাত্মক আক্রমণের ইতিহাসের এটা অন্যতম নৃশংস হত্যাকাণ্ড।
ভারতীয় সেনা জওয়ানের তরফে এই ঘটনাকে পাকসেনার প্ররোচনামূলক আচরণ বলে বর্ণনা করা হয়েছে। ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের পক্ষ থেকেও এই হত্যাকাণ্ডকে পাকিস্তানের প্ররোচণামূলক আচরণ বলে উল্লেখ করে জানিয়েছে, তারা পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে এই বিষয়ে বোঝাপড়া করতে চায়। তবে পাকিস্তানের তরফে পুরো ঘটনাই অস্বীকার করা হয়েছে। ইসলামাবাদে পাকসেনার মুখপাত্র ভারতের অভিযোগকে প্ররোচণাবিহীন গুলি বিনিময় বলে জানিয়েছেন। ভারতীয় সেনার বক্তব্য, পাকসেনার একটি দল জম্মুর ২০০ কিলোমিটার উত্তরে মেন্ধার শহরে একটি ভারতীয় সেনা চৌকির ওপর অতর্কিতে আক্রমণ চালায়। সূত্রে খবর, নিহত জওয়ানদের কাছ থেকে অস্ত্র কেড়ে নেওয়া হয়।
পাকসেনার বক্তব্য অনুযায়ী, ঘন কুয়াশার সুযোগ নিয়ে পাকসেনার একটি দল জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে পাকসেনা অগ্রসর হতে থাকে। ভারতীয় সেনার কাছে সতর্কবার্তা পৌঁছতেই তারা পাকসেনার অবস্থান চিহ্নিত করে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এরপরই দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়ে যায়। প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে গুলির লড়াই চলার পর পাকসেনা এলওসি থেকে পিছু হঠে।
গত সপ্তাহের শেষ থেকেই ভারত ও পাক সেনার মধ্যে বাড়ছিল চাপা উত্তেজনা। ভারতীয় সেনার পক্ষে জানানো হয়েছে, গত রবিবার পাকসেনা এলওসির উরি সেক্টরের কাছে ভারতীয় সেনা চৌকিতে গুলি চালায় যাতে পাক সেনা সহজেই ভারতে ঢুকে পড়তে পারে। তখনই ভারতীয় সেনা গুলি চালায়। অন্যদিকে পাকিস্তানের অভিযোগ, কোনও প্ররোচণা ছাড়াই ভারতীয় সেনা গুলি চালিয়েছিল। সোমবার ইসালামাবাদে পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে ভারতের ডেপুটি হাই কমিশানার গোপাল বাগলেকে অভিযোগ নথিভুক্ত করার জন্য ডেকে পাঠানো হয়। তবে দিল্লির তরফে ভারতীয় সেনার এলওসি অতিক্রম বা শান্তি চুক্তি লঙ্ঘন করার অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। ভারতীয় সেনা সূত্রের খবর, গত মাসে পাকিস্তান অন্তত দশ বার শান্তি চুক্তি লঙ্ঘন করেছিল।
ভারত-পাক সীমান্তে শান্তি প্রতিষ্ঠায় পারস্পরিক আলোচনার ওপর জোর দিল রাষ্ট্রসংঘ। উপমহাদেশের এই দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের মধ্যে সাম্প্রতিক অশান্তি প্রশমনে আলোচনাই একমাত্র পথ হতে পারে বলে অভিমত রাষ্ট্রসংঘের। শান্তিপ্রতিষ্ঠায় ২০০৩-এর অস্ত্রসংবরণ চুক্তিকে সম্মান জানানোর জন্য ভারত পাকিস্তান দুই দেশের কাছেই আর্জি জানিয়েছে রাষ্ট্রসংঘ।
চলতি মাসের ৮ তারিখ পুঞ্চের মেন্ধর সেক্টরে দুপক্ষের সংঘর্ষের বিষয়েও কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি বলেও রাষ্ট্রসংঘের তরফে জানানো হয়েছে। ওই সংঘর্ষেই দুই ভারতীয় সেনার মৃত্যু হয়।
জাতীয় নিরাপত্তা উদেষ্টা শিবশঙ্কর মেনন বলেন ভারত-পাক সীমান্তে অস্ত্রসংবরণ লঙ্ঘিত হচ্ছে বারবার। দিন দিন বাড়ছে অনুপ্রবেশ সমস্যা। এই ঘটনা বেশকিছুদিন ধরেই চলছে বলে জানান তিনি। ২০১১-র তুলনায় ২০১২-তে সমস্যা আরও বেড়েছে। জানুয়ারি ৮-এ পুঞ্চের মেন্ধর সেক্টরে যে ঘটনা ঘটেছে দুঃখজনক হলেও তা প্রথমবার নয় বলে মন্তব্য করেন শিবশঙ্কর মেনন।
নিয়ন্ত্রণরেখায় পাকসেনার বর্বরতাকে প্ররোচনা হিসেবেই দেখছে ভারত। এ নিয়ে আলোচনার জন্য পাক হাই কমিশনার সলমন বশিরকে তলব করল বিদেশ মন্ত্রক। প্রতিক্রিয়ায় কড়া বিবৃতিও দেওয়া হয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে। পুঞ্চের ঘটনার তীব্র নিন্দা করে ভারতের পক্ষ থেকে এই আক্রমণকে উস্কানিমূলক, অমানবিক এবং অগ্রহণযোগ্য বলা হয়েছে। পাকিস্তান অবশ্য সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে এগারোটায় জম্মু-কাশ্মীরের পুঞ্চ জেলার মেন্ধর সেক্টর। পাক সেনাবাহিনীর বর্ডার অ্যাকশন টিম ঘন কুয়াশা ও জঙ্গলের সুযোগ নিয়ে, নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে কৃষ্ণাঘাটি এলাকায় ঢুকে পড়ে। ভারতীয় সেনার টহলদারি ইউনিট ওই অনুপ্রবেশ দেখতে পেয়ে তাদের বাধা দেয়। আধঘণ্টার গুলির লড়াই শেষে পাকসেনারা নিয়ন্ত্রণ রেখার ওপারে পিছু হটতে বাধ্য হয়। কিন্তু ততক্ষণে লড়াইয়ে দুই ভারতীয় জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে। তাঁরা হলেন ল্যান্স নায়েক হেমরাজ এবং ল্যান্স নায়েক সুধাকর সিং। বর্বরতার শুরু ওই দুই জওয়ানের মৃতদেহ নিয়েই। হামলাকারী পাকসেনারা পিছু হটার সময় নিহত এক জওয়ানের মুণ্ড কেটে নিয়ে চলে যায়।
যদিও আরেকটি সূত্রের খবর অনুযায়ী, দুই জওয়ানেরই মুণ্ডহীন দেহ উদ্ধার হয়েছে। হামলা প্রতিরোধ করতে গিয়ে আহত হয়েছেন দুই জওয়ান। নিয়ন্ত্রণ রেখার একশো মিটার ভিতরে ঢুকে এই হামলা চালায় পাকসেনা। ঘটনায় কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক।
পুঞ্চের হানাদারির ঘটনায় কার্গিলের ছায়া দেখছেন সামরিক বিশেষজ্ঞরা। তখনও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে মজবুত করতে লাহোর বাসযাত্রার পরেই ঘটেছিল সামরিক বিশ্বাসঘাতকতা। এবারও তাই। ছাব্বিশ এগারোয় মুম্বইয়ে জঙ্গি হামলার পর, দুদেশের সম্পর্ক থমকে গিয়েছিল। থিম্পুর সার্ক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং দুদেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন। তারপর থেকে ভারত-পাক সম্পর্কের শীতলতা কাটাতে একাধিক কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়। ভারতে এসে ভিসা সরলীকরণ চুক্তি করে যান পাক অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী রেহমান মালিক। দীর্ঘ নয় বছর পর ভারতের মাটিতে খেলতে এসেছিল পাক ক্রিকেট দল। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে সৌজন্যের সেই বাতাবরণে ফের ছেদ ফেলল পাকিস্তান। নিয়ন্ত্রণরেখায় বর্বরতার খবরে বিস্মিত নয়াদিল্লি। প্রতিরক্ষামন্ত্রকের মতে, যুদ্ধের আন্তর্জাতিক আইনকে অগ্রাহ্য করে এই বর্বরতা, প্ররোচনারই সামিল।
পাক বর্বরতায় প্ররোচনার ইঙ্গিত পাচ্ছেন ভারতের সামরিক বিশেষজ্ঞরাও। মুম্বই হামলার ষড়যন্ত্রীদের বিরুদ্ধে এখনও কোনও উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নেয়নি পাকিস্তান। তা সত্ত্বেও দুদেশের মানুষের শান্তির কথা মাথায় রেখে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে স্বাভাবিক করার উদ্যোগ নিয়েছিল নয়াদিল্লি। মঙ্গলবারের ভারত-পাক সীমান্তে ভারতীয় সেনার ওপর নৃশংস হামলায় সেই প্রক্রিয়া জোর ধাক্কা খেল বলে মনে করা হচ্ছে।
নিয়ন্ত্রণ রেখা অতিক্রম করে ভারতে ঢুকে বর্বরোচিত হামলা চালায় পাকসেনা। নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে ভারতে ঢুকে দুই ভারতীয সেনাকে নৃশংসভাবে হত্যা করে পাক সেনা। দুই ভারতীয় জওয়ানের মধ্যে একজনের কাটা মাথা পাক সেনারা সঙ্গে নিয়ে গেছে বলে খবর। পুঞ্চের মেন্ধর সেক্টরের এই ঘটনায় দুদেশের মধ্যে কূটনৈতিক টানাপোড়েন চরমে পৌঁছেছে। ঘটনায় কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারত। পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসফাক কায়ানি পাকসেনাবাহিনীকে সব রকম আক্রমণ মোকাবিলার জন্য তৈরি থাকতে বলেছেন। ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীতে হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।
তীব্র ঠাণ্ডার কবলে গোটা উত্তর ভারত। ঠাণ্ডায় আরও ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। শুধুমাত্র উত্তরপ্রদেশেই ২৪ জন মারা গেছেন। চলতি মরসুমে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯৯। রাজধানী দিল্লির সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চলছে ঠাণ্ডা হাওয়ার দাপট। শীতে কাবু কাশ্মীর উপত্যকা। ডাল লেকের জল জমে বরফ। শ্রীনগরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা মাইনাস ৫.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সমতলেও বহু জায়গায় তাপমাত্রা শূন্যের নিচে নেমে গেছে। কানপুর, আগ্রা, গাজিপুর, লখনউয়ে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা শূন্যের নিচে।
এদিকে তীব্র শীতে কার্যত কুঁকড়ে রয়েছে জম্মু-কাশ্মীর। সোমবার জম্মুর সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পারদ ছিল ৬.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ৩০ বছরের পরিসংখ্যানের নিরিখে যা রেকর্ড। তবে খুশির খবর শুনিয়েছে আবহাওয়া দফতর। জানানো হয়েছে, বুধবার রাতে কাশ্মীর উপত্যকার অপেক্ষাকৃত উঁচু জায়গাগুলিতে তুষারপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। আকাশও মেঘাচ্ছন্ন থাকবে। যার ফলে তীব্র শীতের প্রকোপ থেকে কিছুটা হলেও রেহাই পাবেন মানুষ। কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়া এবং প্রবল শীতের হাত থেকে বাঁচতে জম্মুতে স্কুলের ছুটি ১৩ তারিখ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
রায়গঞ্জে এইমসের হাসপাতালের জন্য জমি অধিগ্রহণ সহ একাধিক দাবিতে আজ মহাকরণ অভিযান করবে কংগ্রেস। প্রদেশ কংগ্রেসের এই কর্মসূচিকে ঘিরে উত্তেজনার পারদ ক্রমশ চড়ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেড় বছরের শাসনকালে এই প্রথম মহাকরণ অভিযান করছে কংগ্রেস।
একটি মিছিল হবে ফিয়ার্স লেন থেকে। দায়িত্বে থাকবেন দীপা দাশমুন্সি। ব্রাবোর্ন রোডের মিছিলের দায়িত্বে থাকবেন মানস ভুঁইঞা। রানি রাসমণি রোডে মিছিলের দায়িত্বে থাকবেন প্রদীপ ভট্টাচার্য। রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং নারী নির্যাতনের প্রতিবাদেও সরব হবে কংগ্রেস। দলের টার্গেট, পঞ্চাশ হাজার কর্মী নিয়ে মহাকরণের পথে হাঁটবেন তাঁরা। যদি বাধা দেওয়ার চেষ্টা হয়, তাহলে পরিস্থিতির জন্য রাজ্য সরকার দায়ী থাকবে বলেই হুমকি দিয়েছে কংগ্রেস।
কংগ্রেসের মহাকরণ অভিযানকে কেন্দ্র করে ক্রমশ চড়ছে উত্তেজনার পারদ। বুধবারই উত্তরবঙ্গ থেকে কয়েকহাজার কংগ্রেস কর্মী এসে পৌঁছেছেন কলকাতায়। কংগ্রেসের দাবি ছাড়িয়ে যাবে অতীতের সমস্ত রেকর্ড। গন্ডগোল হলে মোকাবিলা করতে যে নেতার প্রস্তুত সেই হুমকিও প্রদীপ ভট্টাচার্যের গলায়। সবমিলে কংগ্রেসের ঘরে এখন প্রস্তুতি তুঙ্গে।
রাজ্যের আইন শৃঙ্খলার অবনতি থেকে রায়গঞ্জে এইমস, কংগ্রেসের ডাকে মহাকরণ অভিযানে সামিল কয়েক হাজার মানুষ। পঞ্চায়েত ভোটের আগে এই জমায়েত যে তাঁদের বাড়তি অক্সিজেন জোগাল প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের বডি ল্যাঙ্গোয়েজেই তা স্পষ্ট।
সকাল থেকেই কার্যত মহানগরী কংগ্রেস কর্মীদের দখলে। শিয়ালদা থেকে দীপা দাশমুন্সির নেতৃত্বে বিশাল মিছিল। মিছিল ব্রেবোন রোডে কংগ্রেস কর্মীদের উপচে পড়া ভিড়।
রানি রাসমণি রোডে জমায়েতে হাজির আট জেলার কংগ্রেস কর্মীরা। প্ল্যাকার্ডে স্লোগানে উজ্জীবিত কংগ্রেস। ফিয়ার্স লেনে জমায়েত ছিল রীতিমতো নজরকাড়া। পঞ্চায়েত ভোটের আগে বিশাল জমায়েত দেখে উজ্জীবিত কংগ্রেস নেতারাও। কংগ্রেসের ডাকা মহাকরণ অভিযানে যানজট হয়৷
হঠাত্ই খবর রটে যায় দীপা দাশমুন্সিকে আটকেছে পুলিস। উত্তেজনা চরমে ওঠে। বৃহস্পতিবার কংগ্রেসের মহাকরণ অভিযানে যত কর্মী রাস্তায় নেমে ছিলেন তাঁরা আইন অমান্যের পথে গেলে প্রশাসনকে যে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হত তাতে কোনও সন্দেহ নেই। তবে এদিনের জমায়েত থেকে কিন্তু কড়া বার্তা দিল কংগ্রেস।
প্রতিবাদে পথে এ বার বুদ্ধদেব | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আরাবুল তাজা নেতা, বললেন মদন | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
রাজ্যে গুন্ডারাজ চলছে বলে মন্তব্য করছেন খোদ রাজ্যপাল। কবি শঙ্খ ঘোষ বলছেন, দুর্বৃত্তদের উপর নির্ভর করে সরকার চলছে। তৃণমূল কিন্তু রয়েছে তৃণমূলেই। আরাবুল-সমর্থকদের তালিকায় নাম লিখিয়ে পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র বুধবার বলে দিলেন, তৃণমূল চাইলে পাঁচ মিনিটে সরিয়ে দিতে পারে সিপিএম-কে। রাজ্যের প্রধান বিরোধী পক্ষ অবশ্য এ দিনও ভাঙড়ের ঘটনার প্রতিবাদে শহরে বড় মাপের মিছিল করেছে। যাতে সামিল ছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। কার্যত বিনা নোটিসে পরপর দু'দিন এত বড় মিছিল তাৎপর্যপূর্ণ বলেই রাজনীতির কারবারিদের মত। ভাঙড়ে রেজ্জাক মোল্লা এবং সিপিএম সমর্থকদের উপরে পরপর হামলার পরে রাজ্যপাল এম কে নারায়ণনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বামফ্রন্ট নেতৃবৃন্দ। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাঁদের কথা শোনার পরে বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছিলেন রাজ্যপাল। এ দিন তিনি মুখ খুললেন। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে একটি অনুষ্ঠান থেকে বেরনোর সময় সাংবাদিকদের দেখে নারায়ণন নিজে থেকেই বলেন, "গত দু'তিন ধরে রাজ্যের পরিস্থিতি বেশ পীড়াদায়ক ও উদ্বেগজনক। এর জন্য যে-ই দায়ী হোক না কেন, তার বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে। এই ধরনের হিংসাত্মক ঘটনা আমরা সহ্য করতে পারি না এবং করা উচিতও নয়।" তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, এই ঘটনা কি রাজ্যের রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে কলুষিত করছে? রাজ্যপাল বলেন, "এটা রাজনৈতিক সংস্কৃতির বিষয় নয়। যা চলছে, তা এক ধরনের গুন্ডারাজ!" এর পরে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন আসে, ভাঙড়ে পুলিশ ও প্রশাসনের ভূমিকায় তিনি কি সন্তুষ্ট? রাজ্যপালের জবাব, "যে হেতু আমি নিজেই প্রশাসনের অংশ, তাই বলতে পারি, প্রশাসনের তরফে গাফিলতি রয়েছে।" রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের আরও বক্তব্য, "ওই এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ঘাটতি যে রয়েছে, তা তো স্পষ্ট হয়েই গিয়েছে। পুলিশের ভূমিকায় দুর্বলতা আছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করার দায়িত্ব প্রশাসনকে নিতে হবে এবং পুলিশকে নিরপেক্ষ হতে হবে।" | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
রাজ্যপালের মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের তরফে কেউ অবশ্য আনুষ্ঠানিক ভাবে মুখ খুলতে চাননি। তবে তৃণমূলের এক প্রথম সারির নেতার মতে, "কিছু পদক্ষেপ তো করতেই হবে। না হলে রাজ্য গৃহযুদ্ধের দিকে চলে যাবে! নানা মহল থেকেই এমন প্রতিক্রিয়া আসবে।" বস্তুত এ দিনই বিশিষ্ট কবি শঙ্খ ঘোষ বলেছেন, "দুর্বৃত্তদের উপরে নির্ভর করেই যদি রাজ্য শাসন করতে হয়, এ রকম ঘটনা তবে অবিরতই ঘটবে। সরকার এখনও সতর্ক হোন।" সতর্ক হওয়ার কোনও লক্ষণ অবশ্য এখনও পর্যন্ত দেখা যায়নি। এ দিনই বামনঘাটার পাল্টা সমাবেশে মদন মিত্র বলেন, "আরাবুলের মতো ছেলেকে মারলে লোক কি ছেড়ে দেবে? রসগোল্লা দেবে? সিপিএম যদি আবার হামলা করে, তা হলে সেটাই হবে সিপিএমের শেষ দিন! আমরা বোমা-বন্দুক-গুলি চাই না। যদি চাইতাম, তা হলে সিপিএম থাকত না! পাঁচ মিনিট সময় লাগবে সিপিএম-কে সরিয়ে দিতে। মারতে হবে না, হাঁক মারলেই পালাবে!" ভাঙড়ের প্রাক্তন বিধায়ককে শংসাপত্র দিয়ে পরিবহণমন্ত্রীর মন্তব্য, "আরাবুল হচ্ছে আমাদের তাজা নেতা। এ রকম নেতা সচরাচর পাওয়া যায় না!" রেজ্জাককে 'পাগল' বলেও কটাক্ষ করেছেন মদন। পাশাপাশিই তাঁর হুঁশিয়ারি, "আমরা আরাবুলের পাশে আছি। সাধারণ মানুষ সিপিএমের উপরে খেপে গিয়েছে। তারা যদি বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে মারধর শুরু করে, তা হলে আমরা কী করব?" আর মদনের দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় বলেছেন, "ভাঙড়ের মানুষ সাবধানে থাকুন, সজাগ থাকুন। সিপিএমের হামলার বিরুদ্ধে সতর্ক থাকবেন, তার জবাব দেবেন!" ভাঙড়েরই কাঁটাতলায় (রেজ্জাকের উপরে হামলা-স্থল) শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্য, "সিপিএম চিমটি কেটে দেখছে, আমরা আছি, না মরে গিয়েছি?" মদন সিপিএম-কে পাঁচ মিনিটে শেষ করে দেওয়ার হুমকি দিলেও বুধবার এক দিনের নোটিসে ফের কলকাতার বুকে বড় মিছিল করে দেখাতে পেরেছে বামেরা। এমনকী, দলের অন্দরে রেজ্জাকের সঙ্গে তাঁর যা-ই দূরত্ব থাক, এ দিনই পথে নেমেছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। ধর্মতলা থেকে শুরুতে অল্প পথ হেঁটে গাড়িতেই মিছিলের পিছনে মৌলালি পর্যন্ত গিয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। আর মিছিলের সামনে ছিলেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু, বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র, সিপিআইয়ের মঞ্জুকুমার মজুমদার, আরএসপি-র ক্ষিতি গোস্বামী-সহ বামফ্রন্টের নেতারা। মিছিল শেষে বিমানবাবু মন্তব্য করেছেন, "অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না সরকার। মুখ্যমন্ত্রী নীরব। এই নীরবতা ভয়ঙ্কর! উনি তো শুধু তৃণমূলের মুখ্যমন্ত্রী নন! রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী!" দিল্লিতেও বঙ্গভবনের সামনে বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন সীতারাম ইয়েচুরি, হান্নান মোল্লা, নীলোৎপল বসুরা। সঙ্গে শ'খানেক সিপিএম-কর্মী। জমায়েতে ইয়েচুরি বলেন, "পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্রের উপরে দিনেদুপুরে ধর্ষণ চলছে! এ দিকে কেন্দ্রের নজর দিতে হবে।" রেজ্জাক তথা রাজ্য জুড়ে সিপিএম কর্মীদের উপরে আক্রমণের বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল শিন্দের কাছে দরবার করবেন ইয়েচুরিরা। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর ধর্মরক্ষা করতে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার বিষয়ে কেন্দ্রের সরাসরি হস্তক্ষেপ না-চাইলেও শিন্দেকে পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতির দিকে নজর দিতে বলবেন তাঁরা। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য এ দিনই শিন্দেকে চিঠি পাঠিয়ে একই কারণে এ রাজ্যে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল পাঠানোর আর্জি জানিয়েছেন। আর যাঁদের নিয়ে এত কিছু, সেই রেজ্জাক এবং আরাবুল মোটের উপর ভালই আছেন। আরাবুলকে এ দিন সকালেই আইসিইউ থেকে সাধারণ বেডে দেওয়া হয়েছে। চিনার পার্কের ওই নার্সিং হোমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুভাষ ঘোষ বলেন, "ইসিজি রিপোর্ট-সহ আরাবুলের সব রিপোর্টই স্বাভাবিক। শুধু রক্তের শর্করার পরিমাণ বেশি। তাই ফের ব্লাড সুগার পরীক্ষা করা হয়েছে।" সব স্বাভাবিক হওয়ার পরেও আরাবুলকে নার্সিং হোম থেকে ছুটি দেওয়া হচ্ছে না কেন? সুভাষবাবু জানান, যে দুই ডাক্তার দেখছেন তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করার পরেই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। রেজ্জাকের শারীরিক অবস্থাও স্থিতিশীল বলে জানিয়েছেন তিনি যে হাসপাতালে রয়েছেন, তার কর্তৃপক্ষ। ভাঙড়ে জখম বাকি তিন জনের অবস্থাও স্থিতিশীল। তবে সুজিত দাসের অবস্থা আশঙ্কাজনক। অস্ত্রোপচার করে দ্বাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রের পেটে ও পায়ের গুলি বার করা হয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার প্রবীণ ত্রিপাঠী এ দিন জানান, এখনও পর্যন্ত নির্দিষ্ট অভিযোগে ৪১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে ধরা হয়েছে আরও ৫৪ জনকে। বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে ৪টি আগ্নেয়াস্ত্র, ৬ রাউন্ড গুলি ও ১০টি বোমা উদ্ধার করা হয়েছে। http://www.anandabazar.com/10pgn1.html
|
ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ ১৯৬৫
অনুগ্রহ করে এই নিবন্ধঅন্যান্য ভাষাসমূহের আন্তঃউইকিসংযোগ যুক্ত করুন। অতিরিক্ত তথ্যের জন্যআলাপ পাতা দেখতে পারেন। |
ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ ১৯৬৫ | |||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|
মূল যুদ্ধ: the ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ | |||||||
| |||||||
বিবদমান পক্ষ | |||||||
India | Pakistan | ||||||
নেতৃত্ব প্রদানকারী | |||||||
Joyanto Nath Chaudhuri Harbakhsh Singh | Ayub Khan Musa Khan | ||||||
প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি | |||||||
~3000 killed[২] 8,623 wounded[৩] (July to ceasefire) | 3,800 killed [৪][৫][৬][৭] (July to ceasefire) |
ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ ১৯৬৫ , ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ঘটিত প্রথম যুদ্ধ যা মূলত কাশ্মীর সমস্যাকে কেন্দ্র করে ঘটেছিল।
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
- ↑ Indo-Pakistani War of 1965
- ↑ Indo-Pakistan Wars
- ↑ Official Government of India Statement giving numbers of KIA - Parliament of India Website
- ↑ Indo-Pakistan Wars The Tribune June 2, 2005
- ↑ Opinion: The Way it was 4: extracts from Brig (Retd) ZA Khan's bookMay 1998, Defence Journal
- ↑ Ayub misled nation in '65 war: Nur Khan 8 September, 2005 Khaleej Times
- ↑ Library of Congress Country Studies
[সম্পাদনা]বহিঃসংযোগ
|
|
|
ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ ১৯৭১
ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ ১৯৭১ | |||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
মূল যুদ্ধ: ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ | |||||||||
ডিসেম্বর ১৫,১৯৭১ তারিখে জেনারেল আমির আবদুল্লাহ খান নিয়াজী,আত্মসমর্পনের দলিলে জেনারেল জগজিত সিং অরোরার সামনে সই করছেন। | |||||||||
| |||||||||
বিবদমান পক্ষ | |||||||||
ভারত | পাকিস্তান | ||||||||
নেতৃত্ব প্রদানকারী | |||||||||
শ্যাম মানেকশ' জগজিত সিং অরোরা G.G Bewoor K. P. Candeth | গুল হাসান খান জেনারেল আব্দুল হামিদ খান টিক্কা খান আমির আবদুল্লাহ খান নিয়াজী # | ||||||||
সৈন্য সংখ্যা | |||||||||
৫০০,০০০+ সৈন্য ১০০,০০০ মুক্তিবাহিনী | ৪০০,০০০+ সৈন্য | ||||||||
প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি | |||||||||
3,843 killed[১] 9,851 wounded[১] | Unknown killed, Unknown wounded, 90,368 POW captured[২] |
১৯৭১ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ ছিল ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘটিত একটি সামরিক সংঘর্ষের ঘটনা। ভারতীয়, বাংলাদেশী ও আন্তর্জাতিক সূত্র অনুযায়ী, ১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর ১১টি ভারতীয় এয়ারবেসে পাকিস্তান আচমকা হানা দিলেঅপারেশন চেঙ্গিস খাঁ নামে এই যুদ্ধের সূচনা ঘটে। মাত্র তেরো দিনের এই যুদ্ধটি ইতিহাসের সর্বাপেক্ষা স্বল্প সময়ের যুদ্ধগুলির একটি বলে পরিগণিত হয়।[৩][৪]
যুদ্ধ চলাকালীন পূর্ব ও পশ্চিম ফ্রন্টে ভারতীয় ও পাকিস্তানি বাহিনী সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছিল। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর পূর্ব কমান্ড আত্মসমর্পণ করলে যুদ্ধ সমাপ্ত হয়। এটিই সম্ভবত ইতিহাসের প্রথম ও একমাত্র গণ-আত্মসমর্পণের ঘটনা।[৫][৬] এই দিনই পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র রূপে আত্মপ্রকাশ করে। ৭৯,৭০০ পাকিস্তান বাহিনী ও আধা-সামরিক বাহিনীর জওয়ান[৭] ও ১২,০০০ অসামরিক নাগরিক[৭] সহ পূর্ব পাকিস্তানে স্থিত মোট ৯৭,৩৬৮ জন পশ্চিম পাকিস্তানিকে ভারত যুদ্ধবন্দী করে।
পরিচ্ছেদসমূহ[আড়ালে রাখো] |
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
- ↑ ১.০ ১.১ Official Government of India Statement giving numbers of KIA - Parliament of India Website
- ↑ Quantification of Losses Suffered
- ↑ The World: India: Easy Victory, Uneasy Peace, Time (magazine), 1971-12-27
- ↑ World's shortest war lasted for only 45 minutes, Pravda, 2007-03-10
- ↑ [১],
- ↑ [২]
- ↑ ৭.০ ৭.১ Haqqani, Hussain (2005). Pakistan: Between Mosque and Military. প্রকাশক: United Book Press. আইএসবিএন 0-87003-214-3, 0-87003-223-2., Chapter 3, pp 87.
General Niazi (1998). Betrayal of East Pakistan. প্রকাশক: Oxford University Press. ISBN 0-19-577727-1.
The Rediff Interview/Lt Gen A A Khan Niazi. প্রকাশক: Rediff. February 2,2004.
[সম্পাদনা]আরও পড়ুন
- An Army Its Role and Rule (A History of the Pakistan Army from Independence to Kargil 1947-1999). Muhammad Ayub ISBN 0-8059-9594-3
- D K Palit The Lightning Campaign: The Indo-Pakistan War 1971 Compton Press Ltd (1972), ISBN 0-900193-10-7
- J R Saigal Pakistan Splits: The Birth of Bangladesh Manas Publications (2004), ISBN 81-7049-124-X
- J Hanhimaki The Flawed Architect: Henry Kissinger and American Foreign Policy Oxford University Press (2004)
[সম্পাদনা]চলচ্চিত্র
- Films
- Border, a 1997 Bollywood war film directed by J.P.Dutta. This movie is an adaptation from real life events that happened at theBattle of Longewala fought in Rajasthan (Western Theatre) during the 1971 Indo-Pak war. Border — ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজ
- Hindustan Ki Kasam, a 1973 Bollywood war film directed by Chetan Anand. The aircraft in the film are all authentic aircraft used in the 1971 war against Pakistan. These include MiG-21s, Gnats, Hunters and Su-7s. Some of these aircraft were also flown by war veterans such as Samar Bikram Shah (2 kills) and Manbir Singh. Hindustan Ki Kasam — ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজ
- 1971 - Prisoners of War, a 2007 Bollywood war film directed by Sagar Brothers. Set against the backdrop of a prisoners camp in Pakistan, follows six Indian prisoners awaiting release after their capture in the 1971 India-Pakistan war.
[সম্পাদনা]বহিঃসংযোগ
- Video of General Niazi Surrendering
- A complete coverage of the war from the Indian perspective
- Actual conversation from the then US President Nixon and Henry Kissinger during the 1971 War - US Department of State's Official archive.
- Indian Army: Major Operations
- Pakistan: Partition and Military Succession USA Archives
- Pakistan intensifies air raid on India BBC
- A day by day account of the war as seen in a virtual newspaper.
- The Tilt: The U.S. and the South Asian Crisis of 1971.
- December 16, 1971: any lessons learned? By Ayaz Amir - Pakistan's Dawn (newspaper)
- India-Pakistan 1971 War as covered by TIME
- Indian Air Force Combat Kills in the 1971 war (unofficial), Centre for Indian Military History
- Op Cactus Lilly: 19 Infantry Division in 1971, a personal recall by Lt Col Balwant Singh Sahore
- All for a bottle of Scotch, a personal recall of Major (later Major General) C K Karumbaya, SM, the battle for Magura
|
|
|
রাজ্যে পর পর হিংসার ঘটনায় এবার মুখ খুললেন বিভাস চক্রবর্তীও। রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিশিষ্ট এই নাট্যব্যক্তিত্ব আজ বলেন, রাজ্যের ভবিষ্যত্ সুখকর নয়। তাঁর মন্তব্য, রাজ্যপাল নাগরিক হিসাবে যা বলেছেন তা ঠিকই বলেছেন। শঙ্খ ঘোষের মন্তব্যকেও সমর্থন জানিয়েছেন `পরিবর্তনপন্থী` বিভাষ চক্রবর্তী। রাজ্যে যা চলছে তা অবাঞ্ছিত ও অকাঙ্খিত বলেও বর্ণনা করেছেন বিভাস। এটার শেষ দেখা দরকার বলেও বিখ্যাত এই নাট্যকার আমাদের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাত্কারে জানিয়েছেন।
দেখুন বিভাস চক্রবর্তী কী বললেন
প্রসঙ্গত, গতকাল রাজ্যপাল বলেছিলেন, রাজ্যে গুন্ডারাজ চলছে। পুলিশ প্রশাসনের আচরণেও যে তিনি মোটেই সন্তুষ্ট নন, বুধবার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তা-ও বুঝিয়ে দিয়েছেন রাজ্যপাল। তাঁর সাফ কথা, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিত ঠিক রাখতে প্রশাসনকেই দায়িত্ব নিতে হবে। পুলিশের নিরপেক্ষভাবে কাজ করা উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
শঙ্খ ঘোষও তীব্র ভাষায় রাজ্যের সাম্প্রতিক অচলাবস্থাকে গুণ্ডারাজ চলছে বলে অ্যাখা দিয়েছিলেন।
http://zeenews.india.com/bengali/kolkata/bibhas-chakraborty-support-governors-speech_10557.html
No comments:
Post a Comment