Welcome

Website counter
website hit counter
website hit counters

Friday, January 11, 2013

সংসদের বাজেট অধিবেশনের পূর্বে আবার ভারত পাকিস্তান যুদ্ধের জোর প্রস্তুতি।বাংলায় লাল কার্ড হলুদ কার্ড লোফালুফি এমন পর্যায়ে যে স্থানীয় ভেড়ি দখলের রাজনীতি থেকে অব্যাহতি নিয়ে রাষ্ট্র ও উপমহাদেশের স্বার্থে সোচ্চার হওযার মত কন্ঠস্বর বাংলা চিরতরেই হারিয়ে ফেলেছে। বাংলার যো রাজ্যপাল 1967 সালে প্রথম যুক্ত ফ্রন্ট সরকারকে বর্খাস্ত করেছিলেন, সেই ধর্মবীরের সঙ্গে তাঁর জীবন সায়ান্হে উত্তরপ্রদেশের বিজনৌর জেলার ধর্মনগরি গ্রামের বাড়িতে মুখোমুখি দীর্ঘ আলোচনা করার সৌভাগ্য হয়েছে প্রায বিশ বছর আগে।বাংলার রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে আধিপাত্যবাদ ও নৈরাজ্যের যুগপত রেসিপি নিয়ে তিনি বলেছিলেন ঔ সরকারকে বরখাস্ত করা ছাড়া উপায়ান্তর ছিল না। তিনি বাঙ্গালির আত্মঘাতী যে রাজনীতির কথা বলেছিলেন আলাদা ভাষায় তারই প্রতিধ্বনি শোনা যায় তাঁর দুই উত্তরসুরীর কন্ঠে।বাংলা সম্পর্কে ধর্মবীর ও গোপাল কৃষ্ণ গান্ধী এবং নারায়মের হাড় হিম করা গুন্ডা রাজের অভিজ্ঞতা প্রায় চার দশকের অন্তরালে একই রকম রয়ে গেছে। পলাশ বিশ্বাস

সংসদের বাজেট অধিবেশনের পূর্বে আবার  ভারত পাকিস্তান যুদ্ধের  জোর প্রস্তুতিবাংলায় লাল কার্ড হলুদ কার্ড লোফালুফি এমন পর্যায়ে যে স্থানীয় ভেড়ি দখলের রাজনীতি থেকে অব্যাহতি  নিয়ে রাষ্ট্র ও উপমহাদেশের স্বার্থে সোচ্চার হওযার মত কন্ঠস্বর বাংলা চিরতরেই হারিয়ে ফেলেছে। বাংলার যো রাজ্যপাল 1967 সালে প্রথম যুক্ত ফ্রন্ট সরকারকে বর্খাস্ত করেছিলেন, সেই ধর্মবীরের সঙ্গে তাঁর জীবন সায়ান্হে উত্তরপ্রদেশের বিজনৌর জেলার ধর্মনগরি গ্রামের বাড়িতে মুখোমুখি দীর্ঘ  আলোচনা করার সৌভাগ্য হয়েছে প্রায বিশ বছর আগে।বাংলার রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে আধিপাত্যবাদ ও নৈরাজ্যের যুগপত রেসিপি নিয়ে তিনি বলেছিলেন ঔ সরকারকে বরখাস্ত করা ছাড়া উপায়ান্তর ছিল না। তিনি বাঙ্গালির আত্মঘাতী যে রাজনীতির কথা বলেছিলেন আলাদা ভাষায় তারই প্রতিধ্বনি শোনা যায় তাঁর দুই উত্তরসুরীর কন্ঠে।বাংলা সম্পর্কে ধর্মবীর ও গোপাল কৃষ্ণ গান্ধী এবং নারায়মের হাড় হিম করা গুন্ডা রাজের অভিজ্ঞতা প্রায় চার দশকের অন্তরালে একই রকম রয়ে গেছে

পলাশ বিশ্বাস


সংসদের বাজেট অধিবেশনের পূর্বে 
আবার  ভারত পাকিস্তান যুদ্ধের  জোর প্রস্তুতি।মনুস্মৃতি কর্তৃত্বের  পক্ষ প্রতিপক্ষ দু পক্ষই জায়নবাদী ধর্মোন্মাদী জাতীয়তাবাদের আবাহনে সবরকম কাজ করে চলেছে চুড়ান্ত দক্ষতার সঙ্গে।ইতিপূর্বে রাজনৈতিক শ্রেণীর প্রতি যে চরম অবজ্ঞা, অনাস্থা ও ক্ষোভের সন্চার হয়েছে জনমানসে, দু পক্ষ মিলে মিশে তাঁকে গভীরতম জাতীয় উন্মাদনায় পরিণত করতে ব্যাতিব্যস্ত নিয়ন্ত্রণ রেখার দুই দিকেই এখন উত্তেজনা তুঙ্গে। এর মধ্যেই পুঞ্চ-রাওয়ালকোট বাস পরিষেবা স্থগিত করা হল পাকিস্তানের তরফ থেকে। যদিও এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত পাকিস্তান সরকারের পক্ষ থেকে কোন নির্দিষ্ট কারণ জানানো হয়নি। যথারীতি মীডিয়ার হাইপ গড়ার দক্ষতা প্রশ্নাতীত।পাকিস্তানেও শাসকশ্রেণীর সঙ্কট চরমে।অভ্যন্তরিন সঙ্কট নিরসনে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলার কোনও বিকল্প হয়না।ঘৃণা ও অবিশ্বাসের গর্ভজাত খন্ডিত ইতিহাস ভূগোলের পরিহাসে আবার রক্তাক্ত হতে চলেছে এই উপমহাদেশ। ভারতে শাসকশ্রেণী এই পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে দ্বিতীয় দফার কর্মসুচি কার্য্যকর করবে, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই এদিকে বাংলায় লাল কার্ড হলুদ কার্ড লোফালুফি এমন পর্যায়ে যে স্থানীয় ভেড়ি দখলের রাজনীতি থেকে অব্যাহতি  নিয়ে রাষ্ট্র ও উপমহাদেশের স্বার্থে সোচ্চার হওযার মত কন্ঠস্বর বাংলা চিরতরেই হারিয়ে ফেলেছে। বাংলার যো রাজ্যপাল 1967 সালে প্রথম যুক্ত ফ্রন্ট সরকারকে বর্খাস্ত করেছিলেন, সেই ধর্মবীরের সঙ্গে তাঁর জীবন সায়ান্হে উত্তরপ্রদেশের বিজনৌর জেলার ধর্মনগরি গ্রামের বাড়িতে মুখোমুখি দীর্ঘ  আলোচনা করার সৌভাগ্য হয়েছে প্রায বিশ বছর আগে।বাংলার রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে আধিপাত্যবাদ ও নৈরাজ্যের যুগপত রেসিপি নিয়ে তিনি বলেছিলেন ঔ সরকারকে বরখাস্ত করা ছাড়া উপায়ান্তর ছিল না। তিনি বাঙ্গালির আত্মঘাতী যে রাজনীতির কথা বলেছিলেন আলাদা ভাষায় তারই প্রতিধ্বনি শোনা যায় তাঁর দুই উত্তরসুরীর কন্ঠে।বাংলা সম্পর্কে ধর্মবীর ও গোপাল কৃষ্ণ গান্ধী এবং নারায়মের হাড় হিম করা গুন্ডা রাজের অভিজ্ঞতা প্রায় চার দশকের অন্তরালে একই রকম রয়ে গেছে।সম্পূর্ণ এই উপমহাদেশ ও শান্তির জন্য বিখ্যাত ভারত মহাসাগরে মধ্যপূর্বের যুদ্ধস্থল তেল যুদ্দের অব্যাহতি পরই স্থানান্তরিত হয়েছে এবং এই যুদ্ধ কোনও দেশের বিরুদ্ধে নয়, বরং সব দেশের সধারণ জনগণের বিরুদ্ধেমুক্ত বাজার অর্থনীতির অশ্বমেধ ঘোড়া ছুটছে সর্বত্রই বিনা প্রতিরোধে। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের  নামে মার্কিন যুদ্ধবাজ অর্থব্যবস্থার স্বার্থে রকফেলার ও রথচাইল্ড বিশেষজ্ঞতা সহকারে জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চলছে। মার্কিন অর্থব্যবস্থা এখন চরম বিপর্যয়ের সম্মুখীন। ফিস্কাল ক্লিফ নিয়ে সমঝৌতা হওয়ার পরেও 2008 এর মন্দা ফিরে আসছে।সর্বত্রই তার পদধ্বনি।উপমহাদেশের ডলারযুক্ত ভাগ্যও জড়িত মার্কিন অর্থব্যবস্তার সঙ্গে। আজ দেশে দেশে শাষক শ্রেণী ও কর্তৃত্ব জায়নবাদী  আমেরিকার অর্থব্যবস্থায় লগ্নি করে বসে আছে। ভারত মার্কিন পরমাণু চুক্তি হয়েছে মার্কিন যুদ্ধবাজ অর্থব্যবস্থার মন্দা কাটাতে।কিন্তু ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাজারে সেই অর্থে এখনও ব্রাত্য মার্কিন মারণাস্ত্র শিল্প। এই জন্যই আবার ভারত পাকিস্তান যুদ্ধ চাইই চাই।অজুহাত যা হোক্ হোক না

কাশ্মীরে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে গুরুত্বপূর্ণ এলাকা লাইন অব কন্ট্রোলে উভয়পক্ষের সেনাদের মধ্যে গোলাগুলি হয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর বরাত দিয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে বিবিসি।

 

এমন সময় এ গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটলো যার একদিন আগে কোনো রকম উস্কানি ছাড়াই সীমান্তে ভারতীয় সেনার বিরুদ্ধে এক পাকিস্তানি সৈন্য হত্যার অভিযোগ করেছে পাকিস্তান।

 

এ গুলি বিনিময়ের ঘটনায় পাকিস্তানকে দায়ী করেছে ভারত।

 

এর আগে গত বুধবার দুইজন ভারতীয় সেনা ও রোববার এক পাকিস্তানি সেনা নিহতের ঘটনা ঘটেছে।

 

প্রসঙ্গত, কাশ্মীর নিয়ে বিগত ৬০ বছর ধরে দু'দেশের মধ্যে ঠাণ্ডা লড়াই চলে আসছে।

 

ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র বিবিসিকে জানায়, সীমান্ত এলাকা পুঞ্চ জেলায় উভয় বাহিনীর মধ্যে তিন ঘণ্টাব্যাপী গোলাগুলি হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো ক্ষয়-ক্ষতির তথ্য পাওয়া যায়নি।

 

তিনি বলেন, 'হালকা অস্ত্রের মাধ্যমে উভয় পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি হয়।'

 

পুঞ্চের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পুঞ্চ সীমান্তে নজরদারি আরও বাড়ানো হয়েছে।

 

এদিকে বিবিসি জানিয়েছে, কাশ্মীর সীমান্তে এই অব্যাহত উত্তেজনায় পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।


ঢাকা, জানুয়ারি ১০:পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিনা রব্বানি খার বলেছেন, সীমান্ত হত্যাকা- নিয়ে ভারতের অপ্রত্যাশিত অভিযোগে তার দেশ হতাশ এবং উদ্বিগ্ন। একইসঙ্গে তিনি ভারতের অভিযোগকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছেন।

ভারত অভিযোগ করেছে- "গতকাল (মঙ্গলবার) কাশ্মিরের পুঞ্চ জেলার কাছে পাকিস্তানি সেনাদের হামলায় দুই ভারতীয়  সেনা নিহত হয়েছে। এর মধ্যে এক সেনার মাথা কেটে নিয়ে গেছে পাকিস্তানের সেনারা।"

 এ সম্পর্কে ভারতের একটি টেলিভিশন চ্যানলের সঙ্গে সাক্ষাতকারে হিনা রব্বানি খার বলেন, "পাকিস্তানের সেনারা ভারতের দুই সেনাকে হত্যা করেছে -এমন অভিযোগে পাকিস্তান সরকার সত্যিই হতাশ ও উদ্বিগ্ন।" 

হিনা রব্বানি বলেন, ভারতের অভিযোগের জবাব দিয়েছে পাকিস্তান সরকার এবং এ ধরনের অভিযোগে তারা হতাশ হয়েছেন। এ ঘটনায় তিনি ব্যক্তিগতভাবে দুঃখিত। 

পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, "আমাদের পরিবর্তনের প্রয়োজন রয়েছে এবং আমাদের চিন্তা করে কথা বলতে হবে। নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর এ ধরনের ঘটনা ঘটানোর কোনো নীতি পাকিস্তান অনুসরণ করে না।"

এ বিষয়ে তৃতীয় পক্ষের তদন্তের সুযোগ দিতেও পাকিস্তান প্রস্তুত রয়েছে বলে জানান হিনা রব্বানি খার।


Family members and Indian army soldiers carry a coffin containing the body of their comrade Hemraj Singh before the cremation ceremony in the Mathura district of the northern Indian state of Uttar Pradesh January 9, 2013. India denounced Pakistan on Wednesday over a firefight in the disputed territory of Kashmir in which two Indian soldiers were killed, but the nuclear-armed rivals both appeared determined to prevent the clash escalating into a full diplomatic crisis. REUTERS/Stringer (INDIA - Tags: CIVIL UNREST MILITARY POLITICS TPX IMAGES OF THE DAY)

চলতি ঘটনা

চাপের মুখে ভারত-পাকিস্তান আস্থাবর্ধক পদক্ষেপ

গত পাঁচ দিনে কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ভারত ও পাকিস্তানের সেনা সংঘর্ষে দু'পক্ষের মোট চারজন সেনা নিহত হওয়ায়, দু'দেশের মধ্যে চলতি আস্থাবর্ধক পদক্ষেপ পড়েছে চাপের মুখে৷ 'পতাক বৈঠক' হচ্ছে দু'দেশের সেনা স্তরে৷

কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখার উভয়দিকে থমথমে উত্তেজনা৷ ভারতীয় সেনার গুলিতে গতকাল আরেকজন পাকিস্তানি সেনা প্রাণ হারিয়েছে, এই অভিযোগে ইসলামাবাদের ভারতীয় হাইকমিশনারকে পাকিস্তানি বিদেশ মন্ত্রকে তলব করে প্রতিবাদ পত্র দেয়া হয়৷ ভারত সঙ্গে সঙ্গে তা অস্বীকার করে বলেছে, সীমান্ত এলাকায় পাকিস্তানি সেনাদের মদতে জঙ্গিরা ভারত-নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের একজন গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যকে হত্যা করেছে৷

FILE - In this July 17, 2006 file photo, Border Security Force soldiers patrol the India-Pakistan border at Kanachak, about 15 kilometers (9 miles) west of Jammu, India. Pakistan and India traded accusations Sunday, Jan. 6, 2013, of violating the cease-fire in the disputed northern region of Kashmir, with Islamabad accusing Indian troops of a cross-border raid that killed one of its soldiers and India charging that Pakistani shelling destroyed a home on its side. (Foto:Channi Anand, File/AP/dapd) কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখার উভয়দিকে থমথমে উত্তেজনা

উত্তেজক পরিস্থিতির প্রথম শিকার ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলতি শান্তি প্রক্রিয়া তথা আস্থাবর্ধক পদক্ষেপ৷ কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখার পুঞ্চ-রাওয়ালকোট সীমান্তে পাকিস্তানের দিক থেকে সীমান্ত গেট বন্ধ করে দেয়া হয়৷ আটকা পড়ে তরতরকারি ও ফল বোঝাই ভারতীয় ট্রাক৷ স্থগিত রাখা হয় ঐ এলাকায় বাস পরিষেবা, যা শুরু হয়েছিল ২০০৬ সালে ভারত ও পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত দুই কাশ্মীরের মানুষজনের যাতায়াতের সুবিধার জন্য৷

এটা কী তাহলে দু'দেশের শান্তি প্রক্রিয়ার অশনি সঙ্কেত? রাষ্ট্রবিজ্ঞানী উদয়ন বন্দোপাধ্যায় তা মনে করেন না৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ২৬/১১ মুম্বই হামলার পর শান্তি প্রক্রিয়া বন্ধ হয়নি৷ কারগিলের পর বন্ধ হয়নি৷ এসব ঘটনায় সাময়িক বিরতির মধ্যেই শান্তি প্রক্রিয়া চলবে এবং চলেছে৷ এছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার উন্নয়নেরও একটা জায়গা আছে, যে জায়গা থেকে ভারত, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানকে কাছাকাছি আসতেই হবে৷

The wife of Indian Army soldier Lance Naik Hamraj, left, who was allegedly killed by Pakistani soldiers on the line-of-control in Kashmir, mourns before his funeral in Mathura district, Utter Pradesh state, northern India, Wednesday, Jan. 9, 2013. India summoned Pakistan's top diplomat in New Delhi Wednesday to formally complain about an attack on an Indian army patrol in the disputed Himalayan region of Kashmir that killed two soldiers and left their bodies mutilated. (Foto:AP/dapd)স্বজনহারাদের আহাজারি

ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে গণতন্ত্র যদি ঠিকমতো চলে, সেখানে যদি উন্নয়ন হয় এবং কাশ্মীরীরা যদি ভারতের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ থাকে, তাহলে পাকিস্তান সেটা কখনই সুনজরে দেখবে না৷ কাশ্মীর ইস্যু ভারত-পাকিস্তানের 'লাভ-হেট রিলেশনশিপ'-এর অঙ্গ হয়ে থাকবে, বলেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক বন্দোপাধ্যায়৷

প্রতিরক্ষামন্ত্রী সংবাদ মাধ্যমকে শক্রবার বলেন, পাকিস্তানের দিক থেকে অস্ত্রবিরতি লঙ্ঘন অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়৷ দেশের নিরাপত্তায় সবরকম ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে৷ আর বিমান বাহিনীর প্রধান জানান, কড়া নজর রাখা হচ্ছে উপত্যকার নিরাপত্তা পরিস্থিতির দিকে৷

DW.DE


 পূর্ব ভারতের তিন রাজ্যে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের তারিখ ঘোষনা করল নির্বাচন কমিশন। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি ত্রিপুরা এবং ২৩ ফেব্রুয়ারি মেঘালয় ও নাগাল্যান্ডে বিধানসভা নির্বাচন হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনের দিনই নয়, নির্বাচনের ফলাফলের তারিথও এদিন ঘোষণা করল নির্বাচন কমিশন। তিনটি রাজ্যে নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হবে ২৮ ফেব্রুয়ারি। 

আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনকে ঘিরে কড়া নিরাপত্তার ঘেরাটোপ থাকবে তিনটি রাজ্যের প্রতিটি পোল ও তার আশেপাশের এলাকা। কড়া নিরাপত্তার জন্য অতিরিক্ত বাহিনী পাঠানো হবে বলে জানাল নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকরা। প্রতিটি পোল পর্যবেক্ষণ করবেন নির্বাচন কমিশনের বিশেষ পর্যবেক্ষকদল। 

মেঘালয় বিধানসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে ১০ মার্চ, ত্রিপুরায় মার্চ ১৬ মার্চ এবং নাগাল্যান্ডে ১৮ মার্চ। ত্রিপুরা এবং নাগাল্যান্ড ও মেঘালয়ে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ যথাক্রমে ২৮ জানুযারি এবং ৬ ফেব্রুয়ারী।এদিন নির্বাচন কমিশনার ভিএস সম্পাত বলেন, নির্বাচনের প্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কাজকর্মের অভিযোগ থাকে(যেমন ধর্ষণ), সেই প্রতিনিধির ভোটে প্রতিনিধিত্ব করা উচিত্‍ নয়। 

 কর্মী ছাঁটাইয়ের 'অভিশপ্ত পর্ব' আবার ফিরে আসছে ওয়াল স্ট্রিটে৷ মরগ্যান স্ট্যানলি, সিটি গ্রুপ, ব্যাঙ্ক অফ আমেরিকা - খরচ কমাতে কর্মী ছাঁটাইয়ে ব্যস্ত সকলেই৷ যার জেরে মার্কিন মুলুকে ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রে ২০০৮-এর সেই খারাপ দিনগুলির পদধ্বনি শুনতে পাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা৷

আগামী সপ্তাহে ১,৬০০জন কর্মী ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনা রয়েছে বিশ্বের অন্যতম আর্থিক প্রতিষ্ঠান মরগ্যন স্ট্যানলির৷ সংস্থার মুখ্য আধিকারিক জেমস গোরম্যান গত বছরই জানিয়েছিলেন ব্যয়সঙ্কোচ করতে ২০১২ সালে সারা বিশ্বে সাত শতাংশ কর্মী ছাঁটাই করবে মরগ্যান স্ট্যানলি৷ তবে, সেই সাত শতাংশের পরও আবার নতুন করে কর্মী ছাঁটাইয়ের পরিকলল্পনা নিয়েছে সংস্থা৷

মরগ্যান স্ট্যানলির সিকিউরিটিজ বিভাগ, যার ভিতরে ট্রেডিং ও ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কিং পড়ে, সেখান থেকে ছ' শতাংশ কর্মী ছাঁটাই হবে৷ পাশাপাশি, তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে কাজ করা সংস্থা সাপোর্ট স্টাফদের মধ্যে থেকে ছ'শতাংশ কর্মী ছাঁটাই হবে৷ আশা করা যাচ্ছে, সমগ্র কর্মীদের মধ্যে তিন শতাংশ কর্মী ছাঁটাই হবে এ বছর৷ মরগ্যান স্ট্যানলি কিন্ত্ত সচরাচর তাদের ১০০ শতাংশ কর্মী সংখ্যা কখনওই প্রকাশ করে না৷ বিভিন্ন সূত্রের খবর, ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই সংস্থা সিকিউরিটিজ বিভাগে ৫৭,৭২৬ জন কর্মী কাজ করছিলেন৷ কর্মী ছাঁটাই জারি রাখলেও সংস্থা উচ্চপদে মোটা মাইনের আধিকারিক নিয়োগে কোনও হেরফের আনবে না মরগ্যান স্ট্যানলি৷

মার্কিন মুলুকে ব্যাঙ্কিং ও বিনিয়োগ ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক কিছু নতুন নিয়ম চালু হয়েছে৷ ব্রোকারেজ সংস্থাগুলি নিজেরা শেয়ার বাজারে কেনা-বেচা করতে পারবে না বলে নতুন নিয়ম হয়েছে৷ যে কারণে বেশ কয়েকটি ইনভেস্টমেন্ট সংস্থা ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছে৷ ব্যাঙ্কদের উপরও বেশি করে মূলধন গচ্ছিত রাখার শর্ত আরোপ হয়েছে৷ ফলে, ব্যাঙ্কিং ব্যবসা থেকে বেরিয়ে গিয়েছে বহু সংস্থা৷ গত দু'বছর ধরে আমেরিকায় ট্রেডিং ও ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কিংয়ের জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েছে৷ কয়েকদিন আগেই জেপি মরগ্যানের বিশেষজ্ঞ কিয়ান আবুহুসেন বলেছিলেন, ওয়ালস্ট্রিটের ব্যাঙ্কগুলির আয় চতুর্থ ত্রৈমাসিকে ১০ শতাংশ কমতে পারে৷ ইক্যুইটি ট্রেডিং ও ফিক্সড ডিপোজিটেও আয় কমতে পারে৷

এমতাবস্থায় বিভিন্ন ব্যাঙ্ক ও বিনিয়োগকারী সংস্থার কর্মী ছাঁটাইয়ে সিঁদুরে মেঘ দেখছে মার্কিন অর্থনৈতিক মহল৷ অনেকেরই বক্তব্য, মরগ্যান স্ট্যানলির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী গোল্ডম্যান স্যাক্স প্রতি বছরই নিচুতলা থেকে ৫ শতাংশ কর্মী ছাঁটাই করে৷ সংস্থার দক্ষতা বাড়াতে এটা তাদের অন্দরের নিয়ম৷ কিন্ত্ত, মরগ্যান স্ট্যানলির সেরকম কোনও নিয়ম এতদিন ছিল না৷ মরগ্যান স্ট্যানলির কর্মী ছাঁটাই পরিকল্পনায় মনে করা হচ্ছে, খুব শীঘ্রই এই বার্তা বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বিরূপ প্রভাব ফেলবে৷ কর্মী ছাঁটাইয়ের প্রবণতা বেড়ে যাবে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিতে৷
গত বছরের প্রথম ন'মাসেই গোল্ডম্যান স্যাক্সে মোট ৭০০জন কর্মী চাকরি খুইয়েছিল৷ সংস্থা জানিয়েছিল প্রায় ২০০ কোটি মার্কিন ডলারের খরচ কমাতে এই সিদ্ধান্ত৷ জানুয়ারি-মার্চ ত্রৈমাসিকেও গোল্ডম্যান স্যাক্সের পে-প্যাকেজ যথেষ্ট কম হবে বলেই ধারণা বিশেষজ্ঞ মহলের৷
অন্যদিকে, ১১০ কোটি মার্কিন ডলারের ব্যয়সঙ্কোচ করতে গত মাসেই ১১ হাজার কর্মী ছাঁটাই ঘোষণা করে সিটি গ্রুপ৷ কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা করেছিল ক্রেডিট সুইসও৷ ফিক্সড-ইনকাম ট্রেডিংয়ের ব্যবসাকে বিদায় জানিয়ে ১০ হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা করে সুইস আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইউবিএস৷ ৫০০ কোটি মার্কিন ডলার ব্যয়সঙ্কোচ করতে সারা বিশ্বে ৩০ হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনা নিয়েছে ব্যাঙ্ক অফ আমেরিকা৷
মার্কিন শ্রম দপ্তরের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০০৭ সালে শেষ থেকে দেশের সমস্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠান পাঁচ শতাংশ হারে কর্মী ছাঁটাই করেছে৷ এই ক্ষেত্রে এ যাবত্‍কালে মোট ৫০,৯০০জন কর্মী চাকরি খুইয়েছেন৷


আন্তর্জাতিক এবং অভ্যন্তরীণ সমস্যার ফলে চলতি অর্থবর্ষের অধিকাংশ সময়ই যখন বিভিন্ন উপদেষ্টা ও গবেষণা সংস্থা ভারতের জাতীয় উত্‍পাদন হার নিম্নমুখী হবে বলে জানিয়েছে ঠিক তখনই সম্পূর্ণ উল্টো পথে হাঁটল ক্রেডিট রেটিং সংস্থা ক্রিসিল৷ সংস্থার মতে, মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ায় ২০১৩-১৪ অর্থবর্ষে ভারতের জাতীয় উত্‍পাদন হার ৬.৭ শতাংশ হবে৷ চলতি অর্থবর্ষে জাতীয় উত্‍পাদন হার সাড়ে পাঁচ শতাংশ হবে বলে অনুমান৷ 

ভারতের জাতীয় উত্‍পাদন হার এই বছরের তুলনায় ২০১৩-১৪ অর্থবর্ষে খুব দ্রুত বৃদ্ধি পাবে৷ চলতি অর্থবর্ষের সাড়ে পাঁচ শতাংশের নিরিখে আগামী অর্থবর্ষে জাতীয় উত্‍পাদন বৃদ্ধির হার ৬.৭ শতাংশ হবে৷ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার পরিবর্তনের ফলেই উত্পাদন হার বৃদ্ধি পাবে বলে বুধবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে ক্রিসিল৷ কৃষি ক্ষেত্রের উন্নতি, সুদের কম হার এবং বর্ধিত সরকারি খরচ এই তিনটি বিষয়ের উপর ভিত্তি করেই ক্রয় চাহিদা বাড়বে বলে জানিয়েছে ক্রিসিল৷ 

এই বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ইউরোজোন দেশগুলির আর্থিক সমস্যার পাশাপাশি দেশে সরকারের রুগ্ন নীতি, মু্দ্রাস্ফীতির বর্ধিত হার এবং ঘোষিত প্রকল্পগুলি দ্রুত ছাড়পত্র না পাওয়ায় জাতীয় উত্‍পাদন বৃদ্ধির হার কম হয়েছিল৷ এর পরেই অক্টোবরে ঋণনীতি ঘোষণার সময় জাতীয় উত্‍পাদন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে তাদের পূর্বানুমান সাড়ে ছয় শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫.৭ শতাংশ করেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া৷ আন্তর্জাতিক রেটিং সংস্থাগুলিও দেশের আর্থিক ঘাটতি দূর করার জন্য দ্রুত সরকারি পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার কথা জানায়৷ তবে, জাতীয় উত্‍পাদন হার বাড়ার সঙ্গে দেশের আর্থিক ঘাটতি কমবে বলেও জানিয়েছে ক্রিসিল৷ ২০১৩-১৪ অর্থবর্ষে দেশের আর্থিক ঘাটতি চলতি অর্থবর্ষের ৫.৮ শতাংশ থেকে কমে সাড়ে পাঁচ শতাংশ হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটির অনুমান৷ 

অন্যদিকে, দেশের বৃদ্ধির হার কম হওয়ার জন্য রিজার্ভ ব্যাঙ্ককেও দায়ি করেছে সংস্থাটি৷ রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বর্ধিত সুদের হার দেশের বৃদ্ধির পথে অন্যতম অন্তরায় বলে জানিয়েছে তারা৷ 

২০১২-১৩ অর্থবর্ষে মুদ্রাস্ফীতির হার ৭.৭ শতাংশ থাকলেও আগামী অর্থবর্ষে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত, বৈদেশিক মুদ্রায় টাকার দর বৃদ্ধি, অপরিশোধিত তেলের কমদামের উপর ভিত্তি করে তা সাত শতাংশ হবে বলে অনুমান ক্রিসিলের৷ মুদ্রাস্ফীতির হার আগের তুলনায় কমায় জানুয়ারি মাসে ঋণনীতি ঘোষণা করার সময় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সুদের হার এক শতাংশ পর্যন্ত কমাবে বলে জানিয়েছে রেটিং সংস্থাটি৷ 

গত ৪৮ ঘণ্টায় প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের নেওয়া সংস্কার প্রক্রিয়ার পদক্ষেপগুলির ভূয়সী প্রশংসা করল আমেরিকা। হোয়াইট হাউসের সরকারি বিবৃতি থেকে শুরু করে মার্কিন সংবাদমাধ্যম একতরফাভাবে প্রধানমন্ত্রী ও ইউপিএ-এর প্রশংসা করে খবর ছেপেছে। নিউ ইয়র্ক টাইমস লিখেছে, গত দু দশকের মধ্যে সবচেযে বড় আর্থিক সংস্কার ঘটাল ভারত সরকার। এজন্য সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক ঝুঁকি নিলেন মনমোহন সিংহ। কারণ শরিক দলগুলির সঙ্গে সংঘাতের জেরে যে কোনও সময় সরকার পড়ে যাওয়ার বা সংখ্যালঘু হয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তা সত্ত্বেও বড় ঝুঁকি নিতে হল মনমোহনকে।

 

বিশ সাল বাদ

পত্রিকাটির মতে, প্রচণ্ড চাপের মধ্যেও দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে, দেশে কর্মসংস্থানের ও সার্বিক বৃদ্ধির হারকে বাড়াতে শক্ত পদক্ষেপই নিলেন মনমোহন সিংহ। এর ফলে ওয়ালমার্ট সহ বেশ কয়েকটি মার্কিন ব্র্যান্ড ভারতের বাজারে ব্যবস্থাও করতে পারবে। আমেরিকার মন্দাক্রান্ত অর্থনীতিতেও যথেষ্ট উন্নতি হবে। তবে পত্রিকাটি এও আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যে, শেষ পর্যন্ত এই সংস্কার প্রক্রিয়া চালিয়ে নিয়ে যেতে শরিক দলগুলি হয়তো প্রধানমন্ত্রীকে সুযোগ নাও দিতে পারেন। কারণ তার আগেই সরকারের উপর থেকে সমর্থন তুলে নিতে পারে শরিকরা। আর সেটা হলে ভারতেরই আর্থিক ক্ষতি হবে বলে মত প্রকাশ করেছে আমেরিকার বণিক মহল।

দি ওয়াশিংটন পোস্ট গত মাসে লিখেছি, 'মনমোহন সিংহ একটি চরম দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারের ভীতু এবং নীরব প্রধানমন্ত্রী। আদতে তিনি একজন দুর্বল আমলা।' সেই কাগজটিই শনিবার লিখেছে, ২০০৪ সাল থেকে ক্ষমতায় আসার পর সবচেয়ে সাহসী পদক্ষেপ নিলেন মনমোহন সিংহ। তিনি সবচেয়ে বিতর্কিত, কঠিন সিদ্ধান্তটাই নিলেন। রক্ষণশীলতা ও জড়তা ভেঙে সাহসী হয়ে ঝুঁকি নিলেন মনমোহন। সময়ই উত্তর দেবে, মনমোহন সিংহ ঠিক না ভুল? অন্যদিকে, ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল খবর ছেপেছে, ভারতের অর্থনীতি যেভাবে বেহাল হয়ে পড়েছিল তাকে বাঁচাতে গেলে এছাড়া কোনও উপায় ছিল না। তাই নাটকীয় সিদ্ধান্ত নিয়ে ভারতের অর্থনীতিকে একটা গতি দিলেন তিনি। ভারতের জোট সরকার দেখিয়ে দিল, দরকারে তারা কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এর ফলে ভারতে সব শিল্পেই বিদেশি বিনিয়োগ ও পুঁজি ব্যাপক বাড়বে।

মার্কিন দৈনিকগুলির মতে, প্রেসিডেন্ট ওবামার স্নেহভাজন হলেন মনমোহন। প্রায়ই ওবামা বলে থাকেন, বিশ্বজুড়ে মন্দা কাটাতে যাঁর দুই বিশ্বস্ত বন্ধু তথা স্বাভাবিক মিত্রর উপর তিনি অন্ধভাবে ভরসা করেন। একজন হলেন "ম্যানমোহন"। অন্যজন হলেন, "মর্কেল" (জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মর্কেল)। বলা বাহুল্য, সংস্কার প্রক্রিয়া জোরাল করে বন্ধু ওবামার সেই ভরসার ভিত আরও দৃঢ় করলেন মনমোহন।

প্রসঙ্গত, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা তথা বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসু এখন অবসর নিয়ে বিশ্বব্যাঙ্কের অন্যতম শীর্ষকর্তা। কৌশিকবাবু ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর সংস্কার প্রক্রিয়ার কট্টর সমর্থক এবং প্রধানমন্ত্রীর স্নেহভাজন। কৌশিকবাবুকে বিশ্বব্যাঙ্কের শীর্ষ পদে বসিয়ে আমেরিকা সহ পশ্চিমী দেশগুলি ভারতের প্রতি, মনমোহন সিংহের প্রতি, ইউপিএ সরকারের প্রতি আগে থেকেই ইতিবাচক বার্তা দিয়ে রেখেছিল। প্রধানমন্ত্রীর সংস্কার প্রক্রিয়া সেই বার্তাকেই, কৌশিকবাবুর এতদিনের সওয়ালকেই সমর্থন জানাল।

http://bengali.yahoo.com/%E0%A6%AE-%E0%A6%95-%E0%A6%A8-%E0%A6%AE-%E0%A6%B2-131627486.html


দুঃখ আছে, তবু গৌরবে উজ্জ্বল মথুরা ও সিধি
শোকস্তব্ধ হেমরাজ সিংয়ের স্ত্রী ও দুই সন্তান (বাঁ দিকে), শ্রদ্ধায় ও চোখের জলে শেষকৃত্য ল্যান্স নায়ক সুধাকর সিংয়ের। বৃহস্পতিবার।---- পিটিআই
মথুরা ও সিধি: বাড়ি ফিরতে চাইছিলেন সেই গত অক্টোবর থেকে৷ বাবাও ছেলের পথ চেয়ে বসেছিলেন৷

কিন্ত্ত ছেলে যখন বাড়ি ফিরলেন, জ্ঞান হারালেন সেখানেই৷ ল্যান্স নায়েক সুধাকর সিংয়ের নিথর দেহ সহকর্মীরাই পৌঁছে দিলেন মধ্যপ্রদেশে তাঁর গ্রামের বাড়িতে৷ গত পরশু পাক সেনার আক্রমণে তিনি নিহত হন৷ 

প্রাণের বন্ধু ও সহকর্মী সন্দীপ সিং প্রিয় বন্ধু সম্পর্কে জানান, 'ভারত মাতা কি জয়' ছিল ওঁর শেষ কথা৷ তার পরেই বুলেটে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় তাঁর শরীর৷ কথা বলতে গিয়ে গলা বুঁজে আসে বাবা সচ্চিদানন্দ সিং-এর৷ তার মধ্যেই বললেন, 'ও খালি বলত, সবাইকেই তো এক দিন মরতে হবে৷ আমাকেও৷ চিন্তা করো না৷' 

একই ছবি মথুরাতেও৷ তিনটে কচি বাচ্চা ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে৷ বাবা কেন বাক্সে বন্দি তা বোঝার বয়স ওদের হয়নি৷ শোকে প্রায় উন্মাদ আর এক নিহত সেনা হেমরাজ সিংয়ের স্ত্রী ও মা৷ তাঁদের সান্ত্বনা দিতে পাশে সারা গ্রাম৷ 
শেষকৃত্য শেষ হয়েছে দু'জনেরই৷ তবে দুঃখকে সরিয়ে রেখে দুই বীরের গর্বে উজ্জ্বল দুই গ্রাম৷ - সংবাদসংস্থা

নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর সাম্প্রতিক সংঘর্ষ বিরতি ভঙ্গের বিষয়টি দুশ্চিন্তার। শুক্রবার এ কথা বলেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী একে অ্যান্টনি। তিনি বলেছেন, 'পুরো পরিস্থিতির উপর আমরা নজর রাখছি। আমাদের দেশ এবং সেনাবাহিনীর স্বার্থ রক্ষায় যাবতীয় পদক্ষেপ করা হবে।' 

দুই জওয়ানের নৃশংস হত্যার পরও নিয়ন্ত্রণ রেখা শান্ত হয়নি। বৃহস্পতিবার গভীর রাতেও সীমান্তের ওপার থেকে গুলিবর্ষণ চলে। পাল্টা গুলি চালিয়েছেন ভারতীয় জওয়ানরাও। জানা গিয়েছে, সংঘর্ষে এক পাকিস্তানি সেনা মারা গিয়েছেন। 

এদিকে, পাকিস্তান ফের তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতার পক্ষে সওয়াল করলেও, আমেরিকা তা সরাসরি খারিজ করে দিয়েছে। মার্কিন বিদেশ দপ্তরের মুখপাত্র ভিক্টোরিয়া ন্যুল্যান্ড বলেছেন, 'আমরা মনে করি, একাধিক জটিল বিষয়ে ভারত এবং পাকিস্তান সম্প্রতি দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে অনেকটা এগিয়েছে। সাম্প্রতিক ঘটনাবলির (দুই জওয়ানের হত্যা) প্রেক্ষিতে উচ্চপর্যায়ের আলোচনা শুরু হয়েছে। দু'দেশ যদি নিজেদের মধ্যে যাবতীয় সমস্যা মিটিয়ে নিতে পারে, সেটাই সবচেয়ে ভালো।'

 সাধারণ নির্বাচনের আগে পাকিস্তানে ফের জঙ্গি হামলা৷ বৃহস্পতিবার সন্ধে থেকে রাত পর্যন্ত পরপর ছ'টি বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে বালুচিস্তান ও খাইবার এলাকা৷ মৃত ১১৬ ও আহত অসংখ্য৷ 

বালুচিস্তানের রাজধানী কোয়েটায় প্রথম বিস্ফোরণটি ঘটে৷ সেখানে নিশানায় ছিল পাক নিরাপত্তাবাহিনীর একটি গাড়ি৷ বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটা বেশি ছিল যে, কয়েক কিলোমিটার দূর থেকেও শব্দ শোনা যায়৷ সেখানেই প্রাণ হারান ২০ জন৷ পরে কোয়েটায় অন্য একটি আত্মঘাতী বিস্ফোরণে ৫৬ জন মারা যান৷ মৃত ও আহতদের মধ্যে রয়েছেন কয়েকজন সাংবাদিক ও উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিকও৷ এখনও পর্যন্ত কেউ এই হামলার দায় স্বীকার না করলেও, তালিবান ও বালুচ জঙ্গিগোষ্ঠীর দিকেই সন্দেহের তির রয়েছে৷ 


কনকনে শীতে আরও ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে উত্তরভারতে। যার মধ্যে উত্তরপ্রদেশেই প্রাণ হারিয়েছেন ১৬ জন। উত্তরাখণ্ডে প্রাণ হারিয়েছেন ৭ জন। এর ফলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২৪৯। আবহাওয়া দফতর থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গতকাল লখনউ ছিল উত্তরপ্রদেশের শীতলতম শহর। পারদ নেমে গিয়েছিল শুন্য দশমিক পাঁচ ডিগ্রিতে। স্বাভাবিকের চেয়ে ছয় ডিগ্রি কম। এছাড়া খেরি, সুলতানপুর এবং গোরখপুরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও ছিল দুয়ের নিচে। 

দেরাদুন, মুক্তেশ্বর, তেহরি, পন্তনগর, এবং নৈনিতালে পারদ নিম্নমুখী হলেও, উত্তরাখণ্ডের অন্যান্য শহরে তাপমাত্রা ছিল পাঁচের উপরে। রাজনৈতিক সঙ্কট চললেও, ঝাড়খণ্ডের সামগ্রিক তাপমাত্রা কিন্তু ঠাণ্ডাই। গতকাল রাঁচীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল আট ডিগ্রি। তবে রাজধানী সংলগ্ন কাঙ্কে শহরে পারদ নেমে গিয়েছিল তিনে। পালামৌ এবং জামশেদপুরেও পারদ ছিল পাঁচের আশেপাশে।

উত্তরপ্রদেশের সঙ্গে কনকনে শীতে কাঁপছে ওড়িশাও। গতকাল কন্ধমল জেলায় পারদ নেমে গিয়েছিল শূন্য দশমিক পাঁচে। বারিপাদায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল পাঁচ দশমিক পাঁচ ডিগ্রি। আর কাশ্মীরে সবচেয়ে ঠাণ্ডা ছিল লাদাখ উপত্যকা। পারদ নেমে গিয়েছিল মাইনাস আঠেরো ডিগ্রিতে। লে শহরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ষোলো দশমিক চার।  


শেরনগর। মথুরার কাছে অখ্যাত এক গ্রাম। উত্তরপ্রদেশের হাড় কাঁপানো ঠান্ডাকে অগ্রাহ্য করেই, বুধবার সেখানে হাজির হয়েছিলেন অসংখ্য গ্রামবাসী। কারণ, গ্রামের হেমরাজ নামের ছেলেটা আর বেঁচে নেই! পুঞ্চের মেন্ধর সেক্টরে পাকসেনার মোকাবিলা করতে গিয়ে শহিদ হন হেমরাজ। শোকে ভারাক্রান্ত তাঁর পরিবার। কিন্তু দেশের জন্য ঘরের ছেলে যেভাবে প্রাণ বিসর্জন দিয়েছে, তাতে তাঁরা গর্বিত।

ঘরের ভিতর স্টিল ফ্রেমে বাঁধানো ছবিটা সময়ের সঙ্গে অনেকটাই মলিন হয়ে গিয়েছে। কিন্তু গোটা দেশের নজর আপাতত এই ছবির দিকেই। ল্যান্স নায়েক হেমরাজ। পুঞ্চের মেন্ধর সেক্টরে হেমরাজ এবং তাঁর সঙ্গী সুধাকর সিংকে পাকসেনা যেভাবে হত্যা করেছে, তা নিয়ে ক্ষুব্ধ গোটা দেশ। খবর পাওয়ার পর থেকে প্রায় গোটা গ্রামটাই বাড়ির সামনে ভেঙে পড়েছে। তিন ভাইয়ের সংসারে একমাত্র চাকরিজীবী ছিলেন হেমরাজ। তাঁর মৃত্যু পরিবারকে গভীর অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিয়েছে। তার মধ্যেও পরিবারের এক সদস্য জানালেন, হেমরাজের মৃত্যুতে তাঁরা শোকাহত। কিন্তু একই সঙ্গে গর্বিতও।  

স্ত্রী ধরমবতী কেঁদেই চলেছেন। একই অবস্থা মায়েরও। আর হেমরাজের তিন সন্তান! ছুটি নিয়ে বাবা যে আর বর্ডার থেকে বাড়িতে আসবে না, সেকথা বুঝে গিয়েছে ওরাও। 


নিয়ন্ত্রণ রেখার দুই দিকেই এখন উত্তেজনা তুঙ্গে। এর মধ্যেই পুঞ্চ-রাওয়ালকোট বাস পরিষেবা স্থগিত করা হল পাকিস্তানের তরফ থেকে। যদিও এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত পাকিস্তান সরকারের পক্ষ থেকে কোন নির্দিষ্ট কারণ জানানো হয়নি। 


চলতি সপ্তাহের মঙ্গলবার পাকিস্তান সেনাবাহিনী জম্মু-কাশ্মীরের মেন্ধরে দু`দেশের মধ্যেকার এলওসি টপকে দুই ভারতীয় জওয়ানকে হত্যা করে। এরপর থেকে ভারত-পাকিস্তান দু`দেশের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। 


দু তরফেই সৈন্য জমায়েত চলছে সীমান্তে।দুতরফেই জারী হয়েছে চুড়ান্ত সতর্কতা। দতরফেই জনমানসে ফেরি করা হচ্ছে চুড়ান্ত যুদ্ধোন্মাদ।

২০০৬-এর জুন মাসে পুঞ্চ-রাওয়ালকোটের মধ্যে বাস পরেষেবা শুরু হয়। ভারত-পাকিস্তান উভয় দেশের মধ্যে দ্বিতীয় দফায় এরকম যানবাহন পরিষেবার ব্যবস্থা করা হয়। এর ফলে কাশ্মীর ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের মানুষদের মধ্যে যাতায়াত ব্যবস্থা সুবিধাজনক হয়েছিল। 


মেন্ধার সেক্টরে দুই ভারতীয় সেনা জওয়ানের মৃত্যুর পর নিয়ন্ত্রণরেখার পরিস্থিতি বৃহস্পতিবার ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠল। বৃহস্পতিবার নতুন করে পুঞ্চ সেক্টরে  গুলি চালিয়েছে পাক সেনা। পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ঢোকার মুখে  সমস্ত ভারতীয় ট্রাক আটকে দিয়েছে পাক বাহিনী। গতকালও দুই ভারতীয় সেনার হত্যার দায় স্বীকার করেনি পাকিস্তান। উল্টে ভারতের বিরুদ্ধে অস্ত্রবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগকে জোরালো করতে চাইছে ইসলামাবাদ। পাক প্রশাসন এবং পাক নাগরিক, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক রাখতে উদ্যোগী প্রত্যেকেই। বৃহস্পতিবার দিনের শুরুতে এমনই মন্তব্য ছিল পাক বিদেশমন্ত্রী হিনা রব্বানি খারের। 

কিন্তু বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই বদলে গেল ছবিটা। পাক অধিকৃত কাশ্মীরে প্রবেশের মুখে এভাবেই লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকল ভারতীয় ট্রাক। 

বৃহস্পতিবার টাট্টা পানি সেক্টরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর গুলিতে এক পাক জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে। সাংবাদিকদের এই তথ্য টেক্সট মেসেজ করে পাকিস্তান। তারপরেই বন্ধ করে দেওয়া হয় পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ভারতীয় ট্রাকের প্রবেশ। 

এঘটনায় ধাক্কা খেল ভারত-পাক বাণিজ্য চুক্তি।  এর ফলে অবধারিতভাবে ভারত-পাক শান্তিপ্রক্রিয়াও যে প্রশ্নের মুখে এসে দাঁড়াল তা একরকম স্পষ্ট। 

অথচ মেন্ধর সেক্টরে ভারতীয় জওয়ান হত্যার ঘটনার পরেও পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক রাখতে তত্পর ছিল দিল্লি। ভারত-পাক ভিসা চুক্তি জারি থাকবে বলে বৃহস্পতিবারই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীলকুমার শিন্ডে ঘোষণা করেন। সন্ধেয় যদিও দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে আঘাত আসল পাকিস্তানের তরফে। 

মেন্ধর সেক্টরে পাক জওয়ানদের গুলিতে দুই ভারতীয় জওয়ানের হত্যার অভিযোগ মানতে আগেই অস্বীকার করেছিল ইসলামাবাদ। প্রয়োজনে যেকোনও তৃতীয় পক্ষকে দিয়ে তদন্তের প্রস্তাব দিয়েছিল। সেই প্রস্তাব মানার কোনও কারণ নেই বলেই বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম জানিয়ে দেন।

বৃহস্পতিবার সন্ধেয় পুঞ্চ সেক্টরে পাক সেনা ফের অস্ত্রসংবরণ লঙ্ঘন করে। ভারতীয় পোস্ট লক্ষ্য করে গুলি চালায় পাক জওয়ানেরা। কিন্তু আসল ধাক্কাটা এল ইসলামাবেদর তরফে। ভারতীয় ট্রাক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করায়। যার জেরে মুম্বই হামলার পরে এই প্রথমবার ফের প্রশ্নের মুখে দাঁড়াল ভারত-পাক শান্তি প্রক্রিয়া। 


সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢুকে দুই জওয়ানের মাথা কেটে খুনের অভিযোগের ঘটনায় একদিকে তদন্তের জন্য পাকিস্তানের উপর কূটনৈতিক চাপ বাড়াচ্ছে ভারত, অন্যদিকে পাকিস্তানের ক্রমাগত অস্বীকারের ।ঘটনায় ভারত-পাক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে নতুন করে বাড়ছে  জটিলতা৷ 
প্রথম থেকেই ভারতের যাবতীয় অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে ইসলামাবাদ৷ সেই প্রেক্ষিতে বুধবার কলকাতায় এসে প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ কে অ্যান্টনি জানান, ভারতের কাছে পাকিস্তানের এই অমানবিক ঘটনার স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে৷ পাকিস্তান সরকারের কাছে দিল্লি এবিষয়ে কড়া প্রতিবাদ জানাবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি৷ 

এদিন সকালেই ভারতে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার সলমন বশিরকে তলব করা হয় সাউথ ব্লকে৷ সূত্রের খবর, বশিরের সামনেই তীব্র প্রতিবাদ জানায় ভারত৷। প্রায় আধঘণ্টার বৈঠকে পাকিস্তানকে পুরো ঘটনার তদন্ত করতে চাপ বাড়িয়েছে দিল্লি৷বৈঠকের পর বিদেশ মন্ত্রকের এক বিবৃতিতে বলা হয়, হামলায় দুই ভারতীয় জওয়ানকে হত্যা করা হয়েছে৷ তাঁদের দেহ  ক্ষত-বিক্ষত করা হয়েছে৷ আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী পাকিস্তান সরকারকে অবিলম্বে বিষয়টি তদন্ত করতে বলা হয়েছে৷ এধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রুখতে। ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে৷
কীভাবে যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী আক্রমণ চালাল? এই প্রশ্নেই ইসলামাবাদের কাছে সরব হয়েছে নয়াদিল্লি৷  বুধবার প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকে সবিস্তারে রিপোর্টও দেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী একে অ্যান্টনি এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিবশঙ্কর মেনন৷ অন্যদিকে, এদিনই বৈঠকে বসেন ভারত এবং পাক সেনা আধিকারিকরা৷ ওই বৈঠকে পাক সেনা আধিকারিকরা যাবতীয় অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছেন বলে সূত্রের খবর৷ 

নৃশংস এই হত্যাকাণ্ড আবার মনে করিয়ে দিয়েছে ক্যাপ্টেন সৌরভ কালিয়া এবং তাঁর দলের ওপর আক্রমণের কথা। ১৯৯৯ সালে কার্গিল যুদ্ধের সময় পাক সেনাবাহিনী কাকসার সেক্টরে এভাবেই আক্রমণ করেছিল ক্যাপ্টেন সৌরভ এবং তাঁর দলের ওপর। সে সময় টহলদার ভারতীয় সেনাদের উপর চড়াও হয়ে তাঁদের বন্দি করে নিয়ে যায় পাক সেনা। বাইশ দিন ধরে চলে অত্যাচার। শেষে গুলি করে হত্যা করা হয় কালিয়া ও তাঁর পাঁচ সঙ্গীকে। 


পুঞ্চঃ দুই ভারতীয় জওয়ানের খুনের ঘটনার পর ফের উত্তপ্ত পুঞ্চ৷  কাশ্মীরের পুঞ্চে দুই ভারতীয় জওয়ানের খুনের ঘটনার পর ফের উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকায়৷ বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে রাতভর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে গুলির বিনিময় চলে৷ ভারতীয় সৈন্যদের গুলিতে পাকিস্তানের এক জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে৷ পাকিস্তানের এই দাবি অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছে ভারত৷ ভারতের পাল্টা দাবি, ফের যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে জম্মু ও কাশ্মীরের পুঞ্চেই ভারতীয় সেনা ছাউনি লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে পাকিস্তান৷ 
এদিকে, পুঞ্চের ঘটনায় জড়িয়েছে হাফিজ সঈদের নাম৷ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল কুমার শিণ্ডেও এই দাবিতে গতকালই সরব হয়েছেন৷ তবে, সীমান্তের ঘটনা ভারত-পাক ভিসা চুক্তিতে প্রভাব ফেলবে না বলেই আশা প্রকাশ করেছেন শিণ্ডে৷ 

http://abpananda.newsbullet.in/national/60-more/32358-2013-01-11-05-42-50


নয়াদিল্লি: যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ফের জম্মু ও কাশ্মীরের পুঞ্জ সেক্টরে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠল পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে৷ যদিও পাকিস্তান পালটা দাবি করেছে, ভারতীয় সেনার গুলিতে মৃত্যু হয়েছে তাদের এক জওয়ানের৷ মঙ্গলবার ভারতে ঢুকে দুই জওয়ানের মাথা কেটে খুনের অভিযোগ উঠেছিল পাক সেনার বিরুদ্ধে৷ ঘটনার জেরে ভারত-পাক কূটনৈতিক স্তরেও তত্পরতা বৃদ্ধি পায়৷ এসবের মাঝেই এদিন ফের যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে জম্মু ও কাশ্মীরের পুঞ্চ সেক্টরের বাত্তাল এলাকায় ভারতীয় সেনাছাউনি লক্ষ্য করে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছে পাক সেনার বিরুদ্ধে৷ পালটা জবাব দেওয়া হয় ভারতের তরফেও৷ সেনা সূত্রে খবর সন্ধ্যা ছটা নাগাদ গোলাগুলি বন্ধ হয়৷ দুই ভারতীয় সেনার মৃত্যুর পর বুধবারই দিল্লিতে পাক হাইকমিশনারকে ডেকে পাঠায় বিদেশমন্ত্রক৷ জানিয়ে দেওয়া হয় বিষয়টিকে কোনওভাবেই হালকা করে দেখছে না দিল্লি৷ এদিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীলকুমার শিন্ডে জানিয়েছেন, ঘটনার কদিন আগেই পাক অধিকৃত কাশ্মীর সীমান্তে এসেছিল মুম্বই হামলার মূল কারিগর হাফিজ সইদ৷ বিষয়টি নিয়ে বিশদ তথ্য সংগ্রহ করছেন গোয়েন্দারা৷ কোনও কোনও মহলের দাবি, সইদ ভারতীয় বাহিনীর ওপর হামলা চালাতে তাতিয়েছিল পাক জওয়ানদের

http://abpananda.newsbullet.in/national/60-more/32332-2013-01-10-07-42-05


জম্মু কাশ্মীরে জঙ্গি পাঠিয়ে ভারতে শরিয়তি শাসন চালুর লক্ষ্যে অভিযানে নামার হুঁশিয়ারি দিল ওয়ালি উর রহমান নামে তেহরিক-ই-তালিবানের এক শীর্ষনেতা।এক ভিডিও বার্তায় সে তার বাহিনীর ওই লক্ষ্যের কথা ঘোষণা করেছে।তাতে সে বলেছে, পাকিস্তানে যেমন আমরা শরিয়তি শাসন ব্যবস্থার জন্য সক্রিয় সংগ্রাম চালাচ্ছি, তেমনই কাশ্মীরেও চালিয়ে যাব। একইভাবে আমরা ভারতেও শরিয়তি ব্যবস্থা কায়েম করব, কারণ এটাই যাবতীয় সমস্যার একমাত্র সমাধান। ২০০৯ এর ডিসেম্বরে আফগানিস্তানে সাত সিআইএ অফিসারের হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকায় মার্কিন প্রশাসন তার মাথার দাম ৫০ লক্ষ মার্কিন ডলার ঘোষণা করে। ওই ভিডিওতে ওয়ালির সঙ্গে তেহরিক-ই-তালিবান প্রধান হাকিমুল্লাহ মাসুদকেও দেখা গিয়েছে। ভিডিওয় এই প্রথম দুই শীর্ষ তালিবান নেতা আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের সীমানা ছাড়িয়ে কাশ্মীর, ভারত ও আমেরিকায় পা রাখার বাসনার কথা জানিয়েছে।৪৫ মিনিটের বেশি সময়ের ভিডিও সাক্ষাতকারটি পুস্তু ভাষায় নেওয়া।সেটির ইংরেজি অনুবাদ করেছে  জিহাদ অ্যান্ড টেররিজম থ্রেট মনিটর সংস্থা। দজ্জালি মিডিয়ার মিথ্যা প্রচার উন্মোচিত শীর্ষক ওই ভিডিওতে তালিবানের সরকারি মুখপাত্র এহসানউল্লাহ এহসানকেও দেখা যাচ্ছে। ভিডিওতে দাবি করা হয়েছে, পাক সরকার কাশ্মীরে যে জেহাদ চালাচ্ছে, তাতে প্রত্যাশিত ফল মেলেনি। তাই তেহরিক-ই-তালিবান কাশ্মীর উপত্যকায় নিজে থেকে জেহাদে নামবে এবং সেখানে বাহিনী পাঠাবে। কাশ্মীরীদের নিজস্ব অধিকার আদায়ে সাহায্য করবে শরিয়তি বিধি মেনেই।

http://abpananda.newsbullet.in/international/61-more/32263-2013-01-08-15-55-40


নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে পাক হানার ঘটনায় ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে কড়া কূটনীতির রাস্তাতেই যেতে হচ্ছে দিল্লিকে। ওই ঘটনায় ঘরে-বাইরে যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে পাকিস্তানের সঙ্গে শান্তি প্রক্রিয়া আগের মতো চালিয়ে যাওয়া আপাতত সম্ভব নয় বলেই মনে করা হচ্ছে। 
পাক বিদেশমন্ত্রী হিনা রব্বানি খার বলছেন, সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহের জেরে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা ব্যাহত হবে না বলে তিনি আশাবাদী। পাকিস্তানের কিন্তু অভিযোগ, সংঘর্ষবিরতি ভেঙেছে ভারতই। গত ৬ জানুয়ারি ভারতীয় সেনার গুলিতে তাদের এক সেনা নিহত হন বলে রাষ্ট্রপুঞ্জের 'সামরিক নজরদার গোষ্ঠী'র কাছে অভিযোগ করেছে পাকিস্তান। এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিবশঙ্কর মেনন। তবে দুই ভারতীয় সেনার খুনের ঘটনা নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের কাছে কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি। উত্তেজনা কমানোর প্রক্রিয়ায় সাহায্য করতে ভারত-পাকিস্তানে তাদের দূতদের নির্দেশ দিয়েছে আমেরিকা। যদিও আজ ফের নিয়ন্ত্রণরেখায় পাক সেনা ভারতীয় ছাউনি লক্ষ করে গুলি চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
মনমোহন সিংহের পাক নীতিই ছিল নির্বাচিত পাক নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা জারি রাখা। কিন্তু দুই জওয়ানের হত্যার পর বিরোধীদের পাশাপাশি ইউপিএ শরিকরাও সেই নীতিকে কাঠগড়ায় তুলেছে। দাবি উঠেছে কড়া পদক্ষেপের। এক দিকে, কংগ্রেস-বিরোধিতার রাশ ফের হাতে পেতে জাতীয়তাবাদ-তাস খেলছে বিজেপি। অন্য দিকে, ইউপিএ শরিক ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতা তথা জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা শান্তি প্রক্রিয়ার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। পাক হামলার নিন্দা করেছেন অণ্ণা হজারেও। 
এ হেন পরিস্থিতিতে দ্বিপাক্ষিক স্তরে পাকিস্তানের উপর সর্বাত্মক চাপ তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে কেন্দ্র। সম্প্রতি থিম্পুর সার্ক সম্মেলনের পার্শ্ব বৈঠকে দু'দেশের মধ্যে সামগ্রিক আলোচনার যে পথ খোলা হয়েছিল, তা আপাতত বন্ধ করার কথা ভাবা হচ্ছে। ইউপিএ-২-এর বকেয়া সময়সীমায় প্রধানমন্ত্রীর পাকিস্তান সফরেরও আর প্রশ্ন উঠছে না। বরং জয়পুরে কংগ্রেসের আসন্ন চিন্তন শিবিরের বিদেশনীতি সংক্রান্ত প্রস্তাবে পাক প্রশ্নে কড়া অবস্থান নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীলকুমার শিন্দে আজ দাবি করেছেন যে, গত পরশুর ঘটনার চার-পাঁচ দিন আগে পাক অধিকৃত কাশ্মীরেই ছিল ২৬/১১-র মূল চক্রী হাফিজ সঈদ। সেনাদের হত্যাকাণ্ডে হাফিজের প্ররোচনা রয়েছে কি না সে ব্যাপারে নিশ্চিত নন গোয়েন্দারা।
তবে এখন ঘরোয়া রাজনৈতিক পরিস্থিতি যে রকম, প্রায় সেই অবস্থাই হয়েছিল মুম্বই হামলার পর। সে সময় তৎকালীন বিদেশমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায় বাগ্যুদ্ধ চালিয়েছিলেন পাক সরকারের সঙ্গে। এ বার দেশের পরিস্থিতি এমনিতেই উত্তপ্ত। দিল্লি গণধর্ষণ কাণ্ডের জেরে ক'দিন আগেই রাস্তায় নেমেছে দেশের আমজনতা। সরকারের যেমন সেই চিন্তা আছে, বিরোধীদেরও তেমন চেষ্টা আছে ঘোলা জলে মাছ ধরার। 
প্রধান বিরোধী দল হয়েও দিল্লির বিক্ষোভের রাশ হাতে পায়নি বিজেপি। এ বার জওয়ানদের হত্যার ঘটনাকে অস্ত্র করে বিজেপি ও সঙ্ঘ পরিবার পুরনো জাতীয়তাবাদের ধ্বজা তুলে মানুষের আক্রোশের প্রতিনিধি হতে চাইছে। ইতিমধ্যেই বিজেপি, বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতারা রাস্তায় নেমেছেন। আগামিকাল ছাত্র শাখাকেও বিক্ষোভে নামাচ্ছে বিজেপি। সুষমা স্বরাজের কথায়, "সরকার যদি কঠোর পদক্ষেপ করে, আমরা সমর্থন করব। কিন্তু সরকারের তরফে জবাব আসেনি। যেখানে দেশের সম্মান, সেনার মনোবলের প্রশ্ন জড়িত, সেখানে কঠোর পদক্ষেপ করতেই হবে।" 
এ দিকে, ওমর আবদুল্লা বলেছেন, "পাকিস্তান যদি কোনও কথাই না রাখে, তা হলে শান্তি প্রক্রিয়ার অর্থ কী? এর পিছনে মনমোহন সিংহ অনেক সময় ব্যয় করেছেন।" খোদ কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রীর এই চড়া স্বর তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
স্বভাবতই সুর চড়িয়েছে কেন্দ্র। শিবশঙ্কর মেনন আজ বলেছেন, "সীমান্তে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন অথবা অনুপ্রবেশের মতো ঘটনা ২০১১-র তুলনায় ২০১২-তে অনেকটাই বেড়েছে।... পাকিস্তান সরকারকে এ বার সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তারা ভবিষ্যতে কোন পথে চলবে।"

http://www.anandabazar.com/11desh2.html


শেষ মুহূর্তে দেশকেই স্মরণ করেন সুধাকর
তেরঙায় মোড়া কফিনটা গাড়ি থেকে কাঁধে করে নিয়ে এলেন সেনাবাহিনীর জওয়ানরা। নামিয়ে রাখলেন বাড়ির উঠোনে। আজ ঘরে ফিরলেন ঘরের ছেলে। শহিদ ল্যান্স নায়েক সুধাকর সিংহ। 
বছর তিরিশের সুধাকরের দেহ নিয়ে সেনাবাহিনী মধ্যপ্রদেশের সিদহি জেলার ধাদিয়া গ্রামে তাঁর বাড়িতে ঢুকতেই ভেঙে পড়েন শহিদের বাবা সচিদানন্দ সিংহ। সেনা জওয়ান সন্দীপ সিংহ তখন শোনাচ্ছিলেন সুধাকরের মৃত্যু মুহূর্তের কথা। জানান, পাক সেনার গুলিতে লুটিয়ে পড়ার আগে তাঁর শেষ কথা ছিল "ভারতমাতা কী জয়।"
ল্যান্স নায়েক সন্দীপ সিংহও শোনাচ্ছিলেন সুধাকরের সাহসিকতার কথা। তিনি জানান, যে কোনও বিপদে সবার আগে ঝাঁপিয়ে পড়তেন সুধাকর। গোটা দলকে উদ্বুদ্ধ করতেন।

গ্রামের বাড়িতে বিদায় সুধাকর সিংহকে। হাজির মধ্যপ্রদেশের
মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান। বৃহস্পতিবাক। ছবি: এপি
মঙ্গলবারও পাক সেনারা যখন আক্রমণ করেছিল, মোকাবিলা করতে এগিয়ে গিয়েছিলেন সুধাকরই। মঙ্গলবার নিয়ন্ত্রণ রেখা অতিক্রম করে ভারতে ঢুকে ল্যান্স নায়েক সুধাকর সিংহ এবং হেমরাজ সিংহকে হত্যা করে পাক সেনা। উত্তরপ্রদেশের মথুরা জেলার শেরনগর গ্রামের ছেলে বছর বত্রিশের হেমরাজের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে গত কাল। 
এই গ্রাম থেকেই ১৫ জন সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছেন। এই তথ্য দিয়ে হেমরাজের কাকা লেখরাজ সিংহ জানান, এই বীর সন্তানদের জন্য গোটা গ্রাম গর্বিত। লেখরাজও সেনাবাহিনীর হাবিলদার ছিলেন। বললেন, "আগরা থেকে দুই জওয়ান এসে খবর দেন, আমার ভাইপো দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছেন। এই খবরে যেমন দুঃখ পেয়েছি, তেমনি গর্ব অনুভব করেছি।"
সুধাকরের মৃত্যুসংবাদ বাড়িতে এসেছিল মঙ্গলবারই। এ দিন সেনার পোশাক পরা, রাইফেল হাতে ছেলের ছবি কোলে নিয়ে চেয়ারে বসে স্মৃতি ঘাঁটছিলেন বাবা। সুধাকর গত অক্টোবরে লিখেছিলেন, "শীঘ্রই বাড়ি ফিরব।" কিন্তু তাঁর এ ভাবে ফেরা কেউই চায়নি।
http://www.anandabazar.com/11desh5.html


গুলি বিনিময়ে পাক জওয়ানের মৃত্যু, প্রতিবাদ ইসলামাবাদের
ইসলামাবাদ: পাল্টা চাপের রাস্তায় গেল পাকিস্তান। বৃহস্পতিবার রাতে জম্মু-কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখায় গুলি বিনিময়ে এক পাক জওয়ান মারা যান। শুক্রবার পাকিস্তানে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার শরত সবরওয়ালকে ডেকে প্রতিবাদ জানিয়েছে পাক সরকার। পাক বিদেশসচিব জলিল আব্বাস জিলানি এদিন কথা বলেছেন সবরওয়ালের সঙ্গে। সেখানেই কড়া ভাষায় প্রতিবাদ জানায় পাকিস্তান। 

বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনা ধরলে, গত পাঁচ দিনে এই নিয়ে তিন বার সংঘর্ষ বিরতি ভঙ্গ হল। দুই ভারতীয় জওয়ানকে নৃশংস ভাবে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। ইসলামাবাদ অবশ্য এই অভিযোগ মানতে নারাজ। তাদের দাবি, ভারতীয় জওয়ানের মৃত্যুর সঙ্গে পাক সেনা কোনও ভাবেই জড়িত নয়। এই অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাতে ফের নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর উত্তেজনা ছড়ায়। সীমান্তের ওপার থেকে গুলি ছোড়া হয়। জবাবি গুলি ছোড়ে ভারতীয় সেনাও। তাতেই এক পাক জওয়ান মারা যান।

ফের রক্তাক্ত পাকিস্তান। বৃহস্পতিবার বালুচিস্তান এবং খাইবার পাখতুনখোয়া এজেন্সিতে ধারাবাহিক বিস্ফোরণে কমপক্ষে ১০৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত তিনশতাধিক। এদের রমধ্যে অধিকাংশই শহরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। বেশ কয়েকজনের অবস্থা সঙ্কটজনক হওয়ার ফলে মৃতের সংখ্যা বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। নাশকতার পিছনে তালিবান জঙ্গিদেরই দায়ী করেছেপাক প্রশাসন। 

গতকাল প্রথম হামলা হয় বালুচ প্রদেশের রাজধানী কোয়েটায়। নিরাপত্তারক্ষীদের টহলদারি গাড়ি লক্ষ্য করে হামলা চালায় জঙ্গিরা। ঘটনাস্থলেই সকলের মৃত্যু হয়। সন্ধ্যায় আলমদর রোড ও এয়ারপোর্ট রোডের সংযোগস্থলে একটি ক্লাবে আত্মঘাতী হামলা চালায় এক জঙ্গি। তখন ক্লাবে বহু মানুষ থাকায় নিহতের সংখ্যা ৫০ ছাড়িয়ে যায়। কমপক্ষে কুড়িটি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পুলিস সূত্রে খবর, নাশকতায় প্রায় কুড়ি কেজি বিস্ফোরক ব্যবহৃত হয়েছে। কোয়েটার বাবা খান চকেও রিমোট কন্ট্রোলের সাহায্যে বিস্ফোরণ ঘটায় জঙ্গিরা। দুই শিশু ও ফ্রন্টিয়ার কর্পসের দুই জওয়ান সহ বহু মানুষ প্রাণ হারান। সোয়াটের মিনোগরাতেও গতকাল হামলা চালায় সন্ত্রাসবাদীরা।


হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেল মালালা ইউসুফজাহি। পাকিস্তানের সোয়াতে মেয়েদের শিক্ষার অধিকারের স্বপক্ষে সওয়াল করায় গত বছরের অক্টোবরে তালিবানরা তাঁর কপালে গুলি করে। কোনও মতে প্রাণে বেঁচে গেলেও চিকিৎসার জন্য তাঁকে ব্রিটেনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানকার হাসপাতাল থেকেই আজ ছাড়া পেলেন মালালা। তবে এ মাসের শেষেই মাথায় ফের অস্ত্রপচারের জন্য তাঁকে আবারও হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে। 

বার্মিংহ্যামের কুইন এলিজাবেথ হাসপালে তাঁকে চিকিৎসাকারী ডাক্তার ডেভ রসার বলেন, "মালালা খুবই সাহসী মেয়ে। সুস্থ হয়ে ওঠার জন্য সর্বদায় সচেষ্ট ছিল। তাঁর সঙ্গে এবং ওঁর মেডিক্যাল টিমের সঙ্গে আলোচনা করেই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে ও এখন ওঁর বাবা মা এবং দুই ভাইএর সঙ্গে ভাল থাকবে।"

বছর চারেক আগে পাকিস্তানের সোয়াতে শুরু হয়েছিল তালিবানি দাপট। গোটা অঞ্চল জুড়ে শুরু হয়েছিল চরম অরাজকতা। পশ্চিমী সংস্কৃতির প্রচার হচ্ছে এই অজুহাতে প্রায় সব স্কুল বন্ধ করে দিয়েছিল তালিবান। তালিবানি ফতোয়ায় নিষিদ্ধ হয়ে ছিল মেয়েদের স্কুলে যাওয়াও। কিন্তু এই ফতোয়া মানতে পারেনি বছর এগারোর মালালা ইউসুফজাই। গুল মাকাই ছদ্মনামে উর্দুতে ব্লগ লেখা শুরু করেছিল সে। আর তখন থেকেই হয়ে উঠেছিল তালিবানের চক্ষুশূল। সাহসিকতার সঙ্গে শিক্ষা ও শান্তির প্রচার করার জন্য পাক সরকারের তরফে পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল তাকে। অন্যদিনের মতো সেদিনও স্কুলবাসে বাড়ি ফিরছিল মালালা। পথে তাদের বাস আটকে দেয় দুজন জঙ্গি। বাসে উঠে মালালাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় তারা। গুরুতর জখম মালালাকে তখনই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসার জন্য ব্রিটেনে নিয়ে যাওয়া হল পাকিস্তানি কিশোরী মালালাকে। 

এই ঘটনায় নিন্দার ঝড় ওঠে বিশ্ব জুড়ে। তাঁর উপর আক্রমণের ঠিক এক মাস পর `মালালা` দিবস পালন করা হয়। রাষ্ট্রসংঘের প্রধান বান কি মুনও মালালাকে নারী শিক্ষার ক্ষেত্রে মালালা কে `অনুপ্রেরণা` বলে অভিহীত করেন।


ইতিমধ্যে 

ফের বাড়তে চলেছে জ্বালানির দর। শুক্রবার এমনই ইঙ্গিত মিলেছে কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়ামমন্ত্রী বিরাপ্পা মইলির তরফে। তিনি জানিয়েছেন, খুব শীঘ্রই ডিজেল ও জ্বালানি গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির কথা ঘোষণা করা হতে পারে। মইলি এও জানিয়েছেন, কেলকার কমিটির সুপারিশ দীর্ঘদিন ধরে বিবেচনাধীন ছিল। কমিটির সুপারিশ মেনেই আরও একদফা মূল্যবৃদ্ধি হবে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তেলের দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি, ভর্তুকি প্রাপ্ত রান্নার গ্যাসের সংখ্যা পরিবার পিছু ৬ থেকে বাড়িয়ে ৯টি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রক। এ দিন পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ও কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর পক্ষ থেকেও `সংস্কার মূলক` এই সিদ্ধান্তকে সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছে।

কেলকার কমিটি সুপারিশ করেছিল, পেট্রোল-ডিজেলের মূল্য সংস্কার করার। সূত্রের খরব পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক প্রতি লিটার ডিজেলে ৪টা. ৫০প. ও এলপিজি সিলিন্ডারে ১০০ টাকা পর্যন্ত মূল্যবৃদ্ধি করতে পারে। 

আগামী দু`বছরে ভারতের জিডিপি ৮ শতাংশ বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে সরকার। গত বৃহস্পতিবার এ কথা জানিয়েছিলেন যোজনা কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান মন্টেক সিং আলুয়ালিয়া। সেই জন্য সংস্কারমূলক কঠিন সিদ্ধান্ত নিতেও যে পিছ পা হবে না মনমোহন সরকার, তাও স্পষ্ট করে দেন আলুয়ালিয়া। এক অথবা দু`সপ্তাহের মধ্যে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছিলেন তিনি। 

তেলের দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি, ভর্তুকি প্রাপ্ত রান্নার গ্যাসের সংখ্যা পরিবার পিছু ৬ থেকে বাড়িয়ে ৯টি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রক। এ দিন পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ও কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর পক্ষ থেকেও `সংস্কার মূলক` এই সিদ্ধান্তকে সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছে।


বিনিয়োগ টানতে এ বার হলদিয়ায় বেঙ্গল লিডসের আয়োজন করেছে রাজ্য সরকার। তবে, শিল্প সম্মেলনের ঠিক আগে ভাঙড়কাণ্ড উদ্বেগ বাড়িয়েছে শিল্পপতিদের। রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে শিল্পায়ন যে সম্ভব নয়, তা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে বণিকমহল। শিল্পের পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছেন তাঁরা।
এই পরিস্থিতিতে বেঙ্গল লিডসের আগে চরম অস্বস্তিতে প্রশাসন। প্রশ্নের মুখে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সরকারের ভূমিকা। 

এ রাজ্যে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এতদিন শিল্পমহলের কাছে বড় বাধা ছিল সরকারের জমিনীতি, তোলাবাজি। এ বার তার সঙ্গে যোগ হয়েছে রাজনৈতিক অস্থিরতা। 

রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন খোদ রাজ্যপাল। 

বিনিয়োগ টানতে পনেরো থেকে সতেরোই জানুয়ারি হলদিয়ায় হবে শিল্প সম্মেলন। বেঙ্গল লিডসের এই অনুষ্ঠানে শিল্পমহলের মুখোমুখি হবেন মুখ্যমন্ত্রী। বন্দর থেকে এবিজি বিতাড়নের পর শিল্পবান্ধব ভাবমূর্তি বজায় রাখতে এ বার বেঙ্গল লিডসের জন্য হলদিয়াকেই বেছেছেন তিনি। আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে কলকাতা ও ভিন রাজ্যের শিল্পপতিদের। বেঙ্গল লিডসের প্রস্তুতি নিয়ে বণিকমহলের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে, হলদিয়ায় শিল্প সম্মেলনের ঠিক আগে ভাঙড়কাণ্ডে তীব্র অস্বস্তিতে রাজ্য সরকার। খোদ শিল্পমহলই মনে করছে, এই ঘটনা রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা প্রসঙ্গে খারাপ বার্তা দিচ্ছে।

দেড় বছরে শিল্পপতিদের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বিনিয়োগের খোঁজে দিল্লিতেও গেছেন। বিজয়া সম্মিলনীতে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বণিকমহলকে। শিল্পপতিরা মুখ্যমন্ত্রীর ডাকে বৈঠকে এলেও আসেনি বড় বিনিয়োগ। এই অবস্থায় লগ্নি আনতে দ্বিতীয় বেঙ্গল লিডসের দিকে তাকিয়ে রয়েছে রাজ্য সরকার। যদিও, শিল্পমহলের বক্তব্যে  স্পষ্ট সরকারের ভূমিকায় তাঁরা যথেষ্টই হতাশ।

রাজ্য সরকারের জমিনীতির জন্য বিনিয়োগে বাধার কথা আগেই জানিয়েছে বণিকমহল। পরিকাঠামো ও ইনসেনটিভের অভাবও তৈরি করেছে লগ্নির অনীহা। শাসকদলের চাপে এবিজির হলদিয়া বন্দর ছাড়তে বাধ্য হওয়া, সংস্থার আধিকারিকদের অপহরণের অভিযোগ - সবই শিল্পায়নের ক্ষেত্রে খারাপ প্রভাব ফেলেছে বলে ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা। অভিযোগ ছিল আইন-শৃঙ্খলা নিয়েও। সাম্প্রতিক, ভাঙড়কাণ্ড এ সবের সঙ্গেই যোগ করেছে রাজনৈতিক অস্থিরতা। সব মিলিয়ে রাজ্যে শিল্পায়নের পরিবেশ নেই বলে অভিযোগ খোদ শিল্পপতিদের। মুখ্যমন্ত্রী এখনই ব্যবস্থা না নিলে শিল্পের হাল ফিরবে না বলেই মনে করছেন তাঁরা। এই অবস্থায় আরও একটা বেঙ্গল লিডস কি বিনিয়োগের মরা গাঙে জোয়ার আনতে পারবে? এখন সে দিকেই তাকিয়ে রাজ্যবাসী। 


ঠিক কী ঘটনা ঘটেছিল মঙ্গলবার বামনঘাটায়? সিপিআইএমের কর্মী সমর্থকদের গাড়ির ওপর হামলার সময় কী করছিলেন বিতর্কের কেন্দ্রে থাকা তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম? স্থানীয় সূত্রের খবর থেকেই জানা গিয়েছে মঙ্গলবারের ঘটনায় ভাঙড়ের প্রাক্তন বিধায়কের উপস্থিতির বিবরণ।

আরাবুল যা-ই বলুন, ২৪ ঘণ্টার অন্তর্তদন্তে জানা যাচ্ছে, বালিগঞ্জে প্রতীবাদ মিছিলে যাওয়ার পথে বাম সমর্থকদের ওপর হামলার ব্লু-প্রিন্ট তৈরি হয় সোমবারই। সেই মতো মঙ্গলবার সকাল ১০টা নাগাদ বামনঘাটার তৃণমূল কার্যালয়ে আসেন  আরাবুল ইসলাম। মিছিল শেষে সাড়ে ১১টা নাগাদ দলীয় কার্যালয়ের সামনেই বসে ছিলেন আরাবুল। সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগী আব্দুর সামাদ মোল্লা সহ দলের অন্যরা।
 
সাড়ে ১১টা নাগাদ সিপিআইএম সমর্থক বোঝাই গাড়িগুলি বামনঘাটার তৃণমূল কার্যালয়ের সামনে দিয়ে যেতে শুরু করে। প্রথমে অশ্লীল গালিগালাজ, শেষের দিকের গাড়িগুলিতে ইট বৃষ্টি। বামনঘাটা ছাড়িয়ে বাসন্তী হাইওয়েতে সিপিআইএম সমর্থকদের গাড়িগুলি দাঁড়িয়ে পড়ে। কয়েকজন তৃণমূল অফিসের দিকে তেড়ে যান। ক্ষোভ গিয়ে পড়ে অফিসের সামনেই থাকা আরাবুলের গাড়ির ওপর। ঘড়িতে তখন পৌনে ১২টা। সিপিআইএম সমর্থকদের দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িগুলিতে হামলা শুরু হয়।

আসরে নামেন আব্দুর সামাদ মোল্লা। প্রথম গুলি তিনিই চালান। এগিয়ে আসেন আরাবুল। সব মিলিয়ে প্রায় ২০ রাউন্ড গুলি চলে। ছত্রভঙ্গ হয়ে যান সিপিআইএম সমর্থকেরা। হামলায় আরাবুল, সামাদদের সঙ্গে ছিলেন তৃণমূল নেতা প্রদীপ মণ্ডল, সইদুল মোল্লা, সফিকুল মোল্লা, মোমিনুল ইসলাম। তবে সবাইকে পিছনে ফেলে উঠে আসছে আরাবুলের ডান হাত, একসময় দমদম নাগেরবাজার এলাকার রিক্সাচালক, পশ্চিম সাতুলিয়ার বাসিন্দা আবদুর সামাদের নাম। তৃণমূল সূত্রেই জানা গেল, আরাবুলের হয়ে যাবতীয় তোলাবাজি করে এই সামাদই। আরাবুলের ভাই আজিজুল ইসলাম ওরফে খুদের সঙ্গে সামাদের গলায় গলায় সম্পর্ক। মঙ্গলবার মিডিয়ায় খবর ছড়ানোর পরে যখন এলাকায় পুলিস ঢোকে, আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে এলাকায় ঘুরছিল সামাদ। পুলিসই সামাদকে এলাকা ছাড়া করে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে আরাবুলই তাঁর হাতে গুলি লাগার কথা প্রচার করতে নির্দেশ দেন। নিজের হাতে গুলি করতেও বলেছিলেন। কিন্তু ততক্ষণে মিডিয়া পৌঁছে যাওয়ায় অসুস্থ হয়ে চিনার পার্কের নার্সিংহোমে ভর্তি হন ভাঙড়ের প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক। 


রাজ্যের মন্ত্রীর গলায় স্পষ্ট শাসানির সুর। মাইক হাতে জোর গলায় মদন মিত্র বললেন, রজ্জাক মোল্লা পাগল। সেই সঙ্গে আরাবুল ইসলামকে ক্লিনচিট দিয়ে বললেন, "আরাবুল তাজা একজন নেতা। ও মার খেলে কি আমরা রসগোল্লা খাব!"সেই সঙ্গে মদন মিত্রের ঘোষণা, "বামনঘাটায় অশান্তি হলে দায়ী থাকবে সিপিআইএম, প্রশাসন কোনও দায়িত্ব নেবে না"। সঙ্গে শাসানি দিলেন "শেষ হয়ে যাবে সিপিআইএম, শেষের সেদিন ভয়ঙ্কর"। 

কেউ পাঁচ মিনিটে সিপিআইএমকে শেষ করে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন। আবার কেউ রেজ্জাক মোল্লাকে বলছেন ভাঙড়ের সবচেয়ে বড় গুণ্ডা। একটু পরেই আরেক নেতার গলায় শোনা যাচ্ছে, সুস্থ থাকতে হলে সিপিআইএম যেন ক্ষমতায় ফেরার স্বপ্ন না দেখে। আজ বামনঘাটায় তৃণমূলের সভার সুর এমনই ছিল। একদিকে সিপিআইএমের উদ্দেশ্যে চরম শাসানি। অন্যদিকে দলের নেতা আরাবুলের প্রতি পূর্ণ আস্থা ও নিঃশর্ত সমর্থন। 

বামনঘাটায় গোলমালের চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে বুধবার সেখানেই সভা করে তৃণমূল কংগ্রেস। প্রতিবাদ সভা। নেতাদের গলায় ছিল সিপিআইএমের উদ্দেশ্যে শাসানি। পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র বার্তা দিলেন, "শেষের সে দিন ভয়ঙ্কর।"      

দিনকয়েক আগেই হাসপাতালে রেজ্জাক মোল্লাকে দেখতে গিয়েছিলেন রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এদিন অবশ্য প্রবীণ সিপিআইএম নেতার উদ্দেশ্যে তাঁর আক্রমণ বাঁধ ভেঙেছে যাবতীয় শালীনতার।

মঞ্চে ছিলেন মুকুল রায়ও। সিপিআইএমকে সুস্থ থাকার উপায় বাতলেছেন তিনি।      

একসময়ের জোটসঙ্গী কংগ্রেসও বাদ যায়নি আক্রমণের নিশানা থেকে। এদিন মঞ্চ থেকে কখনও চোর, কখনও আবার মূর্খের দলের তকমা জুটেছে কংগ্রেসের কপালে। 

সভা শেষে বামনঘাটা থেকে ভোজেরহাট পর্যন্ত মিছিল করে তৃণমূল কংগ্রেস।  


কলকাতা: রাজাবাজারে চলন্ত বাসে ছাত্রীর শ্লীলতাহানির ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে তদন্ত শুরু করে দুসপ্তাহের মধ্যে পুলিশ কমিশনারের কাছে রিপোর্ট চাইল রাজ্য মানবাধিকার কমিশন দিল্লির গণধর্ষণের প্রতিবাদে কলকাতায় মোমবাতি মিছিল হলেও বৃহস্পতিবার সকালের ঘটনায় মহিলা নিগ্রহে মহানগরীই বা  দেশের রাজধানী শহর থেকে কোথায় পিছিয়ে, এই প্রশ্ন উঠছে। কেন একটি মেয়ে আক্রান্ত হয়ে সাহায্যের আর্তি জানালেও বাসের একজন সহযাত্রীও এগিয়ে এলেন না, সেই প্রশ্নও উঠছে। আর তার মধ্যেই আজ পদস্থ আধিকারিককে দিয়ে তদন্ত করিয়ে পুলিশ রিপোর্ট দিতে বলেছে রাজ্য মানবাধিকার কমিশন৷ তারা বলেছে, রিপোর্টে যেন অবশ্যই পুলিশ কমিশনারের মন্তব্য থাকে৷ 
হালের আমিনুলকাণ্ড-সহ বিভিন্ন ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে তদন্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য মানবাধিকার কমিশন৷ ফলে রাজ্য সরকারের সঙ্গে কার্যত তাদের সংঘাতের পরিবেশ তৈরি হয়েছে৷ এই পরিস্থিতিতে রাজাবাজারকাণ্ডে কমিশন ফের তদন্ত শুরু করায় রাজ্য সরকারের অস্বস্তি আরও বাড়ল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল৷ 
এদিকে, চলন্ত বাসে ছাত্রীর শ্লীলতাহানির ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে যাওয়ার পরও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ৷ রাজাবাজার সায়েন্স কলেজে থমথমে, চাপা আতঙ্কের পরিবেশ রয়েছে৷  কলেজের ছাত্রীদের অভিযোগ, এলাকায় স্থানীয় যুবকরা প্রায়ই তাঁদের উত্যক্ত করে থাকে৷ তাদেরই কেউ বৃহস্পতিবারের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে বলেও মনে করেন পড়ুয়ারা৷ তাঁরা বলছেন, আমরা সর্বদাই আতঙ্কে থাকি৷ এর আগেও এমন পরিস্থিতিতে পড়েছি৷। 
পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে রাজাবাজার সায়েন্স কলেজের পড়ুয়াদের বক্তব্য, পুলিশ চাইলেই দোষীদের ধরতে পারে৷ তাঁদের দাবি, প্রশাসনকে আরও কঠোর হতে হবে৷ এদিন রাত পর্যন্ত অবশ্য কাউকেই গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ৷ 

http://abpananda.newsbullet.in/kolkata/59-more/32377-2013-01-11-12-37-11


দুষ্কৃতীদের হাতে খুন বিরাটির ইমারতি দ্রব্যের ব্যবসায়ী৷ এলাকায় চাঞ্চল্য৷ আতঙ্কিত সাধারণ মানুষ৷ প্রশ্ন তুলেছেন পুলিশের ভূমিকা নিয়েও৷


ইমারতি দ্রব্যের ব্যবসায়ী কৌশিক সরকারের অস্বাভাবিক মৃত্যুর পিছনে সিন্ডিকেটরাজ?উঠছে প্রশ্ন৷
বৃহস্পতিবার রাতে বিরাটির গীতাঞ্জলি পার্কে গুলিবিদ্ধ হন কৌশিক৷ পরিবারের দাবি, রাত দশটা নাগাদ চারটি বাইকে চেপে আসে নজনের একটি দুষ্কৃতি দল৷ এরপর কৌশিককে বাড়ি থেকে ডেকে গুলি করা হয়৷গুরুতর আহত অবস্থায় কৌশিককে বাইপাসের ধারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়৷ সেখানে রাতেই অপারেশনের সময় তাঁর মৃত্যু হয়৷ 
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ইমারতী দ্রব্য নিয়ে এলাকায় দীর্ঘদিন ধরেই চলছে সিন্ডিকেটরাজ৷ মৃতের মায়ের দাবি, সিন্ডিকেট দৌরাত্ম্যের বিরুদ্ধে সরব হওয়াতেই খুন হয়েছেন কৌশিক৷ 
ঘটনায় জড়িত সন্দেহে রাতেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করে পুলিশ৷ শুক্রবার সকালে তাদের ছেড়েও দেওয়া হয়৷ 
এদিন সকালেই এয়ারপোর্ট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন কৌশিক সরকারের বাবা বাপি সরকার৷ দোষীদের খোঁজে তল্লাশী শুরু করেছে পুলিশ৷ খুনের ঘটনায় বেলঘড়িয়া এক্সপ্রেসওয়ে লাগোয়া এলাকায় সিন্ডিকেট রাজ ও দুষ্কৃতীদের বাড়বাড়ন্ত নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে৷ প্রশ্ন উঠেছে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও৷

http://abpananda.newsbullet.in/state/34-more/32379-2013-01-11-14-17-31


"মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পৌঁছনোর জন্য তৃণমূলের মন্ত্রীদের মধ্যে কটূক্তির প্রতিযোগিতা চলছে।" আজ এই মন্তব্য করেন বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। তাঁর প্রশ্ন, "রাজ্যপালের কথা বলার অধিকার না থাকলে কার থাকবে?"

কখনও ফিরহাদ হাকিম, তো কখনও কাকলি ঘোষদস্তিদার। অতিসম্প্রতি রাজ্যপালের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পৌঁছনোর জন্য তৃণমূলের মন্ত্রীদের মধ্যে কটূক্তির প্রতিযোগিতা চলছে। সম্প্রতি বিভিন্ন ইস্যুতে রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্যদের বিতর্কিত মন্তব্য সম্পর্কে ব্যখ্যা দিয়েছেন সূর্যকান্ত মিশ্র। তাঁর অভিযোগ, "কোনও মন্ত্রী তোলাবাজি নিয়ে প্রতিবাদ করলেই তাঁর মুখ বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। অথচ রাজ্যপালের মন্তব্য সম্পর্কে পঞ্চায়েত মন্ত্রী যখন মুখ খুলছেন, তখন নীরব থাকছেন মুখ্যমন্ত্রী।"
 
"রাজ্যপালের কথা বলার অধিকার না থাকলে, কার কথা বলার অধিকার আছে।" শুক্রবার এই প্রশ্ন তুললেন বিরোধী দলনেতা। হিংসা নিয়ে রাজ্যপাল কড়া বার্তা দেওয়ায় তাঁকে পাল্টা আক্রমণ করেছেন পঞ্চায়েত মন্ত্রী।  রাজ্যের বিরোধী দলনেতার মত, "রাজ্যে গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধের চেষ্টা করা হচ্ছে।"


রাজ্যপাল নিয়ে মন্তব্যের জেরে ডানা ছাঁটা পড়ল সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের। সরকারের হয়ে বিবৃতি দিতে নিষেধ করা হল পঞ্চায়েতমন্ত্রী তথা তৃণমূলের শীর্ষ নেতা সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে। এরপর থেকে সরকারের তরফে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হবেন শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এমনই নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজনৈতিক সূত্রে জানা গিয়েছে, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দলীয় ও সরকারি বিবৃতি দিতে পারবেন রাজ্যের অন্য মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমও। 

রাজ্যে একের পর এক রাজনৈতিক সংঘর্ষের নিরিখে রাজ্যপাল বুধবার কড়া প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। রাজ্যপাল সুলভ মন্তব্য নয়, রাজ্যপালের মন্তব্য রাজনৈতিক। শুক্রবার মহাকরণে রাজ্যপাল এমকে নারায়াণনকে ঠিক এই ভাষাতেই বিঁধেছিলেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। তিনি আরও বলেন, "রাজ্যপালের বক্তব্য উসকানিমূলক।" গতপরশু রাজ্যপালের বক্তব্য নিয়ে শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় প্রশ্ন তোলার পর কাল সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের এই মন্তব্য নিয়ে সমালোচনা শুরু হয় রাজনৈতিক মহলে।

সুব্রতর করা মন্তব্যের জেরে যেভাবে সমালোচনা শুরু হয়েছে বিভিন্ন মহলে, তাতে বেশ খানিকটা কোন ঠাঁসা তৃণমূল কংগ্রেস। সেই কারণেই সুব্রত মুখার্জির ওপর দলীয় কোপ পড়ল বলে মনে করছে রাজনৈতিক শিবির। 


চলতি আর্থিক বছরের শেষে চরম আর্থিক সঙ্কটের মুখে রাজ্য সরকার। কোন খাতে কিভাবে ব্যয় হবে, তা নিয়ে চিন্তায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবারও নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে এক অনুষ্ঠানে এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি। একইসঙ্গে কেন্দ্রের বিরুদ্ধেও তোপ দেগেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে, চূড়ান্ত আর্থিক সঙ্কটেও ক্লাবগুলিকে দেদার অনুদান দিতে পিছপা হননি তিনি।  

ক্রমাগত বেড়ে চলা নারী নির্যাতনের ঘটনায় সমালোচনার মুখে রাজ্য সরকার। প্রশ্ন উঠেছে পুলিসের ভূমিকা নিয়েও। এরইমধ্যে পাড়ার ক্লাবগুলিকেই  নিরাপত্তার ভার নিতে বললেন মুখ্যমন্ত্রী। 

রাজ্যের কোষাগারে টাকা নেই। বারবার এই অভিযোগ করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য যে কেন্দ্রের প্রাপ্য অর্থ থেকে বঞ্চিত, সেকথাও একাধিকবার শোনা গেছে মুখ্যমন্ত্রীর গলায়। ক্লাবগুলির অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে একই বক্তব্য শোনা গেল। এদিনও তিনি সংবাদমাধ্যমের ভূমিকার সমালোচনা করেন।   

শুক্রবার, ষোলোশ চোদ্দটি ক্লাবকে দু লক্ষ টাকা করে অনুদান দেয় রাজ্য সরকার। গতবার অনুদান পেয়েছিল ৭৮১টি ক্লাব। তারাও এবার একলক্ষ টাকা করে অনুদান পেয়েছে। ক্লাবগুলি টানা পাঁচবছর অনুদান পাবে। 

প্রশ্ন উঠছে, রাজ্যের এই চূড়ান্ত আর্থিক সঙ্কটে কি কারণে এতগুলি ক্লাবকে অনুদান দিয়ে চল্লিশ কোটি টাকা খরচের সিদ্ধান্ত নিল সরকার। রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, পঞ্চায়েতের আগে যুব সম্প্রদায়ের মন পেতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।



অসুস্থ রেজ্জাক মোল্লাকে দেখতে আজ হাসপাতালে গেলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। বেলা ১টা নাগাদ হাসপাতালে পৌঁছন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গে ছিলেন সুজন চক্রবর্তী। মেরুদণ্ড গুরুতর চোট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি তিনি।

রেজ্জাক মোল্লার এমআরআই রিপোর্টে তাঁর মেরুদণ্ডে চিড় ধরা পড়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, রেজ্জাক মোল্লার মেরুদণ্ডের এল-ওয়ান হাড়ে চিড় ধরেছে। হাড়টি বেঁকে গিয়েছে। মেরুদণ্ডের এল-টু এল-থ্রি, এল-থ্রি এল-ফোর, এল-ফোর এল-ফাইভ এবং এল ফাইভ-এস ওয়ান হাড়ের মধ্যবর্তী গ্রন্থিও নড়ে গিয়েছে। জল জমেছে কোমরের হাড়ের একাংশে। এমআরআই রিপোর্ট অনুযায়ী অ্যাকিউট ট্রমাটিক ফ্র্যাকচার বা তীব্র আঘাতের কারণেই সিপিআইএম বিধায়কের মেরুদণ্ডে চিড় ধরেছে।

চোয়ালেও আঘাত আছে কিনা জানতে সিটি স্ক্যান করার কথাও ভাবছেন চিকিত্‍সকরা। প্রশ্নটা তাই উঠছে। সত্তরোর্ধ সিপিআইএম বিধায়ক প্রথম দিন থেকেই বারবার বলছিলেন, তাঁর কোমরে খুব ব্যথা। তবু শুধু এক্স রে করেই কেন তাঁকে ছেড়ে দিতে চেয়েছিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ? সেই নিয়েই সংশয় বাড়ছে। কারণ রেজ্জাক মোল্লার এমআরআই রিপোর্ট দিতেও টালবাহানা হয়। সোমবারই রেজ্জাক মোল্লাকে ছেড়ে দেওয়ার পিছনে রাজনৈতিক প্রভাবের কথা বলেছিলেন সিপিআইএম নেতারা। তবে কি বাম নেতাদের অভিযোগই সত্যি ? রাজনৈতিক চাপেই কি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সাত তাড়াতাড়ি ছেড়ে দিতে চাইছিল মেরুদণ্ডে গুরুতর আঘাত পাওয়া সত্তরোর্ধ রেজ্জাক মোল্লাকে?

অন্যদিকে এদিনই হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেন আরাবুল ইসলাম। মঙ্গলবার বামনঘাটায় গোলমালের পর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। যদিও তাঁর শরীরের আঘাতের কোনও চিহ্ন মেলেনি বলে জানিয়েছেন চিকিত্সকরা। বুধবার রাতেই তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, তিনি জানান, তাঁর বুকে ব্যথা রয়েছে। এরপর তাঁর ইসিজি করা হয়। পরীক্ষায় কোনও অস্বাভাবিকতা ধরা পড়েনি। তারপরেই তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় হাসপাতালের তরফে।  


রাজ্যপাল প্রসঙ্গে পঞ্চায়েতমন্ত্রীর মন্তব্যের উলটো সুর শোনা গেল তৃণমূলের সাংসদ সৌগত রায়ের কন্ঠে। তিনি আজ পরিষ্কার জানিয়েছেন রাজ্যপাল এবং সুব্রত মুখোপাধ্যায়, দু`জনেরই বক্তব্য তাঁদের নিজস্ব। তবে এই প্রসঙ্গে সংবিধান বিশেষজ্ঞ সুভাষ কাশ্যপ জানিয়েছেন রাজ্যপাল কতখানি বা কী বলতে পারবেন সংবিধানে সে রকম কিছুই নির্দিষ্ট করে বলা নেই। সৌগত রায় জানিয়েছেন তিনি সুভাষ কাশ্যপের সঙ্গে এ বিষয়ে এক মত। 

প্রসঙ্গত বুধবার রাজ্যপাল বুধবার বলেন রাজ্যে গুণ্ডারাজ চলছে। পুলিশ প্রশাসনের আচরণেও যে তিনি মোটেই সন্তুষ্ট নন, বুধবার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তা-ও বুঝিয়ে দিয়েছেন রাজ্যপাল। তাঁর সাফ কথা, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিত ঠিক রাখতে প্রশাসনকেই দায়িত্ব নিতে হবে। পুলিশের নিরপেক্ষভাবে কাজ করা উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি। 

রাজ্যপালের এই মন্তব্যের পর বুধবার শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, এবং বৃহস্পতিবার সুব্রত মুখোপাধ্যায় এই মন্তব্যে রাজ্যপালের এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন করেন। কিন্তু নিজের বক্তব্যে অনড় রাজ্যপাল পরিষ্কার জানিয়ে দেন, তিনি রাজ্যপাল সুলভ মন্তব্যই করেছেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের সামনে রাজ্যপাল এমকে নারায়ণন বলেন, "আমি যা বলেছি রাজ্যপালের মতই বলেছি"। 

রাজ্যপাল সুলভ মন্তব্য নয়, রাজ্যপালের মন্তব্য রাজনৈতিক। শুক্রবার মহাকরণে রাজ্যপাল এমকে নারায়াননকে ঠিক এই ভাষাতেই বিঁধলেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রতর মুখোপাধ্যায়। তিনি আরও বলেন রাজ্যপালের বক্তব্য উসকানিমূলক। গতপরশু রাজ্যপালের বক্তব্য নিয়ে শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় প্রশ্ন তোলার পর কাল সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের এই মন্তব্য নিয়ে সমালোচনায় রাজনৈতিক মহল। 


রাজ্যপালের মন্তব্যে ঘিরে মুখ্যমন্ত্রীর নীরবতাকে কটাক্ষ করলেন সিপিআইএম রাজ্যসম্পাদক বিমান বসু। রাজ্যে বাড়তে থাকা হিংসা নিয়ে রাজ্যপালের মন্তব্যকে উস্কানিমূলক বলে কটাক্ষ করেছিলেন পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। বিমান বসুর মতে, এক্ষেত্রে স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়াই জানিয়েছেন রাজ্যপাল। 

কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী দীপা দাশমুন্সি মনে করেন, রাজ্যজুড়ে চলতে থাকা হিংসার প্রেক্ষিতে রাজ্যপালের কড়া বার্তার পর সরকারের উচিত দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া। রাজ্যপালএমকে নারায়ণনের মন্তব্যকে সমর্থন করেছেন কংগ্রেস নেতা মানস ভুঁইঞা। তাঁর দাবি, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে ডেকে জবাবদিহি তলব করুন রাজ্যপাল। 


রাজধানী দিল্লির রাস্তা মহিলাদের জন্য অসুরক্ষিত হয়ে উঠছে। সাম্প্রতিককালের কয়েকটি অপরাধের ঘটনার নিরিখে শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট এমনই মন্তব্য করেছে। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, "আমরা মহিলাদের মর্যাদা ও সম্মান রক্ষা করতে ব্যর্থ।" জনস্বার্থে করা একটি মমলায় রায় দিতে গিয়ে শীর্ষ আদালত এ কথা জানায়। সুপ্রিম কোর্ট এও জানিয়েছে, অপরাধের শিকার হওয়া মহিলাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ক্ষেত্রে বোর্ড গঠন করা উচিত। 

বিচারপতি দীপক মিশ্র ও কে এম রাধাকৃষ্ণনের বেঞ্চ এ দিন দিল্লি আইন বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী নিপুণ সাকসেনার করা যাচিকায় এই নোটিস জারি করেছে। ক্ষতিপূরণ বোর্ড গঠন নিয়ে ১৬ বছর আগে করা আদালতের করা সুপারিশ লাগু না করার বিষয়টিকে বিচারপতিদের নজরে আনেন নিপুণ। 

দুই বিচারপতির বিশেষ বেঞ্চ এ দিন জানায়, "শহরের নিরাপত্তা অবিলম্বে ফিরিয়ে আনতে হবে।" ১৬ ডিসেম্বর দিল্লির চলন্ত বাসে ২৩ বছরের তরুণীর গনধর্ষণের ঘটনাকে ব্যতিক্রমী বলে মানতে নারাজ সুপ্রিম কোর্ট। শহরে এই ধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তিতেই তা স্পষ্ট বলে জানিয়ছে বেঞ্চ।


মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছানুযায়ী কাজ না করায় শাস্তির মুখে পড়লেন আসানসোলের অতিরিক্ত জেলাশাসক জয়ন্ত আইকত। তাঁকে কম্পালসারি ওয়েটিংয়ে পাঠানো হয়েছে। গতকাল আসানসোলে সভা করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সভায় স্কুল ছাত্রীদের সাইকেল দেওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছা ছিল ছাত্রীরা যেন সাইকেল চালিয়েই মঞ্চে আসে। 

কিন্তু, দুর্ঘটনার আশঙ্কায় আসানসোলের অতিরিক্ত জেলাশাসক তা করতে দেননি। মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছা পূরণ না হওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হল। সম্প্রতি তথ্য দফতরের অধিকর্তাকে কম্পালসারি ওয়েটিং-এ পাঠিয়েছে রাজ্য সরকার। এখনও পর্যন্ত সাতজন ডব্লিউবিসিএস অফিসারকে কম্পালসারি ওয়েটিং-এ পাঠানো হয়েছে। সরকারের একের পর এক  এই ধরণের সিদ্ধান্তে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে ডব্লিউবিসিএস অফিসারদের একাংশে।   


পশ্চিমবঙ্গ কোন পথে?



'অতীত যাঁরা মনে রাখতে পারেন না, তাঁরা অতীতের পুনরাবৃত্তি করার দণ্ডে দণ্ডিত'৷ দার্শনিক জর্জ সান্তায়ানা-র এই উক্তিটি পশ্চিমবঙ্গে হঠাত্ ভারি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে৷ এ রাজ্যে রাজনৈতিক ক্ষমতার হাত বদল চট করে ঘটে না৷ ইতিহাস তাই বলে৷ আবার অতীতে এও দেখা গেছে, রাজনৈতিক ক্ষমতা-পরিবর্তনের পর এক ধরণের হিংসাত্মক অরাজকতা সারা রাজ্যকে গ্রাস করেছে৷ ১৯৭৭ থেকে ২০১১ পর্যন্ত রাজ্যবাসীকে প্রথম ইতিহাসটির পুনরাবৃত্তি করতে দেখেছে সারা দুনিয়া৷ ১৯৪৭ থেকে ১৯৬৭ পর্যন্ত কুড়ি বছরের কংগ্রেস শাসনের পর চৌত্রিশ বছরের বামফ্রন্ট জমানা৷ প্রশ্ন হল, ১৯৬৭ থেকে ১৯৭৭ অবধি যে অস্থিরতা এ রাজ্যকে ক্রমাগত উত্তাল করে প্রায় সমস্ত ক্ষেত্রেই রাজ্যের উন্নয়নকে প্রশ্নচিহ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে ছিল, পশ্চিমবঙ্গে সেই অতীতও ফিরে আসতে চলেছে কি না? বিগত কয়েক দিনের ঘটনা প্রবাহের নিরিখে বলতেই হয়, সে আশঙ্কা অমূলক নয়৷ বর্তমানে এ রাজ্য নজিরবিহীন অর্থনৈতিক সঙ্কটে আকীর্ণ৷ এই সময় রাজনৈতিক হিংসার আগুন বিধ্বংসী দাবানল হয়ে ওঠার আগেই যে তা নিভিয়ে ফেলা দরকার তা নিয়ে সংশয় থাকার কোনও কারণ নেই৷ এর মূল দায়িত্ব যে ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস এবং প্রধান বিরোধী দল সি পি আই এম-এর তা নিয়েও বিতর্কের খুব বেশি অবকাশ নেই৷ কিন্ত্ত এ রাজ্যের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলির নেতৃবর্গের মধ্যে সে শুভবুদ্ধি ঠিক কবে জাগবে কিংবা আদৌ জাগবে কী না, আসল প্রশ্ন সেটাই৷ 

গণতন্ত্রে রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে প্রতিযোগিতা স্বাভাবিক৷ বস্ত্তত তা কাম্যও৷ প্রতিযোগিতাহীন একক ক্ষমতার দীর্ঘ শাসনের কী পরিণতি হতে পারে তা চৌত্রিশ বছরের বাম শাসনে দেখা গিয়েছে৷ দশকের পর দশক শাসক পরিবর্তন না করার ভুলের পুনরাবৃত্তি করে পশ্চিমবঙ্গবাসী কী পেয়েছেন? অনেকেই বলবেন, প্রায় প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের রন্ধ্রে রন্ধ্রে স্বজন-পোষণ, দুর্নীতি ও চরম আর্থিক দেউলিয়াপনা৷ অবশেষে ২০১১-র ১৩ মে রাজ্যের ভোটাররা বামফ্রন্টকে ক্ষমতা থেকে ছুড়ে ফেলার পর অনেকেই আশা করেছিলেন এই 'পরিবর্তন' রাজ্যকে আবার উন্নয়নমুখী করবে৷ যে উদ্যমে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দার্জিলিং থেকে জঙ্গলমহল ছুটে বেড়িয়ে শান্তি ও সুশাসনের আশ্বাস দিয়ে নতুন সরকারের সূচনা ঘটিয়েছিলেন তাতে রাজ্যবাসীর পক্ষে খানিকটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলা স্বাভাবিক ছিল৷ কিন্ত্ত কয়েক মাস যেতে না যেতেই প্রথমে স্কুল ও কলেজের বিভিন্ন নির্বাচন ও পরে সাধারণ ভাবে এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে রাজ্যের বহু এলাকা থেকেই প্রতিনিয়ত ছোটো ছোটো হিংসার ঘটনার খবর প্রকাশিত হতে থাকে৷ ভাঙড়ের সাম্প্রতিক সংঘাত তাই কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়৷ বরং হয়তো আগামী দিনের পরিস্থিতির ইঙ্গিত৷ বিগত বিধানসভা নির্বাচনে পর্যুদস্ত হলেও সি পি আই এম রাজ্য-রাজনীতি থেকে উবে গেছে এমন ধরে নেওয়ার কোনও কারণ নেই৷ সাড়ে তিন দশক ধরে বিস্তৃত তার শিকড় প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের গভীরে৷ রাজ্যের প্রায় অর্ধেক পঞ্চায়েত এবং ১৪ টি জেলা পরিষদ এখনও বামফ্রন্টের দখলে৷ আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে এগুলির দখল নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস এবং সি পি আই এম-এর মধ্যে রেষারেষি চরমে পৌঁছনই স্বাভাবিক৷ সামনেই একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা৷ সার্বিক অর্থনৈতিক সংকট বেড়েই চলেছে৷ রাজ্যে বিনিয়োগের পরিস্থিতি নিয়ে বণিকমহলে এখনও গভীর সন্দেহ৷ এ অবস্থায় যদি পশ্চিমবঙ্গের প্রধান রাজনৈতিক শক্তি দুটি এই রাজনৈতিক প্রতিযোগিতাকে লাগামহীন হিংসায় পর্যবসিত করে তাহলে সে লড়াইয়ে কে জিতবে তা এখুনি বলা মুশকিল হলেও রাজ্যবাসী যে গভীরে পরাজিত হবেন তা নিশ্চিত৷ আগামী দিনের ক্ষমতার লোভে অতীত-বিস্মৃত নেতৃকুল কি রাজ্যের পায়ে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তির বেড়ি পরিয়ে রাখবেনই? উত্তর জানা যাবে শীঘ্রই৷

সরকার 'মিথ্যাচারী', ফুঁসছেন ক্ষুব্ধ লোবার মানুষ



সরকার 'মিথ্যাচারী', ফুঁসছেন ক্ষুব্ধ লোবার মানুষ
দুবরাজপুর: সরকারি সিদ্ধান্তের পরে আন্দোলনের পারদ চড়ছে লোবা গ্রামে৷
বুধবার লোবা গ্রামে পুলিশ গুলি চালায়নি বলে রিপোর্ট প্রকাশের পরেই গুলিতে আহত গ্রামবাসী রাতারাতি সরকারি ঘোষণার প্রতিবাদ সভা ডাকে৷বৃহস্পতিবারের এই প্রতিবাদ সভায় এসপি ঘেরাওয়ের কর্মসূচির কথা জানাল লোবা কৃষিজমি রক্ষা কমিটি৷ 
এ দিন প্রবল ঠান্ডাকে উপেক্ষা করে লোবার দশটি মৌজার কৃষিজমি রক্ষা কমিটির সদস্যেরা জড়ো হন লোবা তেমাথা মোড়ের ধর্না মঞ্চে৷ এ ছাড়াও ছিলেন সাধারণ গ্রামবাসী, কমিটির সমর্থক, এলাকার যুব সংগঠনের নেতারা এবং অবশ্যই আহতদের পরিবারের লোকজন৷ উপস্থিত ছিলেন কমিটির সহযোগী সংগঠন পিডিএসের নেতা সমীর পুততুণ্ড৷ প্রথমে সেখানে সরকারি রিপোর্টের বিষয়ে একপ্রস্ত কথাবার্তা হয়৷ প্রতিবাদের মঞ্চ থেকেই আগামী দিনের আন্দোলনের রূপরেখা তৈরির ডাক দেন কমিটির নেতারা৷ পায়ে গুলি লাগা গৌতম ঘোষ সুস্থ হননি এখনও৷ কিন্ত্ত ক্রাচে ভর করেই কমিটির সভায় দেখা গেল তাঁকে৷ শ্যামল ঘোষ, জীবন বাগদি, পূর্ণিমা ডোম, উপানন্দ মণ্ডল - গুলিতে জখম সকলেই প্রায় হাজির ছিলেন এ দিনের সভায়৷ সরকারি রিপোর্টের বিরুদ্ধে সরব হন তাঁরা সকলেই৷ ক্ষুব্ধ গৌতমবাবুর কথায়, 'মুখ্যমন্ত্রী নিজে লোবার ঘটনার জন্য ক্ষমা চাইলেন৷ বললেন, গুলি চালানো ঠিক হয়নি৷ 

এখন বলছেন গুলি চালানোই হয়নি? এই মিথ্যাচারের প্রতিবাদে আদালতে যাব৷ কোর্টে দাঁড়িয়ে বলব দুবরাজপুর থানার বড়বাবু আমার পায়ে গুলি করেছিলেন৷ সেই ক্ষত আজও শুকোয়নি৷ সোজা হয়ে দাঁড়াতেও পারি না৷ তবু মুখ বুজে থাকব না৷' 
জেলার প্রতিটি ব্লকে ইতিমধ্যেই গণস্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযান এবং প্রতিবাদ সভা চলছে কৃষিজমি রক্ষা কমিটির পক্ষ থেকে৷ তার মধ্যেই সরকারের এই ঘোষণায় রীতিমতো ক্ষোভে ফুঁসছেন লোবার মানুষ৷ কমিটির নেতৃত্বে বৃহত্তর আন্দোলনে যেতে তান তাঁরা৷ আজ, শুক্রবার এসপি ঘেরাও কর্মসূচি রয়েছে তাঁদের৷ বৃহস্পতিবার এলাকার দশটি গ্রামে ঘুরে ঘুরে সেই কর্মসূচিতে দলে দলে গ্রামবাসীকে যোগদান করার আহ্বান জানান কমিটির নেতারা৷ কমিটি সূত্রের খবর, শুক্রবারই রাজ্যপালের দ্বারস্থ হবে তারা৷ গুলিতে আহতরাই থাকবেন আন্দোলনের পুরোভাগে৷ তাঁরাই রাজ্যপালকে জানাবেন নিজেদের ক্ষোভ৷ গ্রামবাসী এ দিনের সভায় স্পষ্ট জানান, সরকারের উপরে আর আস্থা রাখতে পারছেন না তাঁরা৷ পিডিএস নেতা সমীর পুততুণ্ড এ দিন ধর্নামঞ্চে দাঁড়িয়ে বলেন, 'সরকার আসলে চাইছে এই আন্দোলন আরও তীব্র হোক৷ তাই এই মিথ্যাচার৷ তাই এই ঠকানোর চেষ্টা৷ এর বিরুদ্ধে কমিটি আদালতে যাবে৷ সর্বাত্মক আন্দোলন করা হবে৷ এসপি-কে ঘেরাও করা হবে৷'

সিঙ্গুরের ৪৭ আন্দোলনকারী অস্থায়ী চাকরিতে



সিঙ্গুরের ৪৭ আন্দোলনকারী অস্থায়ী চাকরিতে
সিঙ্গুরের অনিচ্ছুক কৃষক শঙ্কর ধাড়া এখনও হতাশের দলে। --- ফাইল চিত্র
কৃষিজমি রক্ষার আন্দোলনই তাঁরা করে এসেছেন ছ'বছর ধরে৷ আর এখন ১২ হাজার ইচ্ছুক-অনিচ্ছুক কৃষকের মতো তাঁদের জমিও সিঙ্গুরের টাটা মোটরস প্রকল্পে আটকে৷ শিল্প হয়নি, কৃষিও নয়, এখন সিঙ্গুর জমি আন্দোলনের সঙ্গে জড়ি ৪৭জন যুবক বাঁচতে চাইছেন রাজ্য সরকারের গ্রুপ 'ডি' পদের কাজ নিয়েই৷ তাঁদের মধ্যে ২৫ জনের নিয়োগপত্রও এসে গিয়েছে এর মধ্যে৷ বাকিরাও দিন গুণছেন চাকরির আশায়৷ 
সিঙ্গুর থেকে টাটা মোটরস ন্যানো কারখানা গুটিয়ে নেওয়ার পর এখন অধিগৃহীত ৯৯৭ একর জমিই আটকে রয়েছে মামলার জালে৷ সরকারে আসার পরে ১৯ মাস কেটে গেলেও এখনও সেই জমি ফেরত পায়নি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসন৷ উপরন্ত্ত, সিঙ্গুর নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে চলা মামলায় তথ্য দিতে খানিকটা সময় চেয়েছে রাজ্য সরকারই৷ জুলাই মাসে ফের শুনানি হবে৷ যার অর্থ, আগামী পঞ্চায়েত ভোটের আগে কোনও নিষ্পত্তিই হবে না সিঙ্গুর মামলার৷ সিঙ্গুর কৃষিজমি রক্ষা কমিটির এক নেতাও জানান, সিঙ্গুরের পরিস্থিতি ভালো নয়৷ চরম হতাশা কাজ করছে তাঁদের মধ্যে৷ তীব্র হয়েছে অর্থনৈতিক সঙ্কটও৷ 
সিঙ্গুর আন্দোলনকে জিইয়ে রাখতেই সিঙ্গুরের অনিচ্ছুক কৃষকদের মধ্যে থেকে ৪৭ জনের একটি তালিকা তৈরি করে তাদের গ্রুপ 'ডি' পদে নিয়োগের ব্যবস্থা করেছে রাজ্য সরকার৷ তালিকাটির জন্য সুপারিশ করেছিলেন সিঙ্গুরের বিধায়ক ও প্রাক্তন কৃষিমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যই৷ এতে জমি আন্দোলনে জড়িতদের মধ্যেই বিভাজন তৈরি হতে পারে বলে মনে করছেন জমি আন্দোলনের অনেক নেতা৷ 

জমি দিতে যাঁরা চাননি, তাঁরাও চেয়েছিলেন জমি রক্ষা করতে৷ কিন্ত্ত তা হয়নি৷ কিন্ত্ত এখন তাঁরাই পেটের টানে বাধ্য হচ্ছেন অস্থায়ী ভিত্তিতে গ্রুপ 'ডি' পদে চাকরি নিতে৷ কিন্ত্ত যে ২৫ জন এর মধ্যেই নিয়োগপত্র পেয়েছেন, তাঁদের মধ্যে হাতে গোনা কয়েক জন বাদে বাকিরাও ওই চাকরির জন্যই ভিন জেলায় যেতে চাইছেন৷ আপাতত উত্তর দিনাজপুর, মালদহ, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়ার মতো জেলাগুলিতে তাঁদের নিয়োগপত্র মিলেছে গ্রুপ 'ডি' পদে, মাসিক ৬ হাজার ৪০০ টাকা ভাতার বিনিময়ে৷ 
এই নিয়ে জল অনেক দূর গড়াতে পারে বলেই আশঙ্কা করছেন জমি আন্দোলনের উদ্যোক্তারা৷ তাই কার কার চাকরি মিলল, সেই তালিকা প্রকাশ করতে চাইছেন না তাঁরা৷ তালিকায় যেমন বেড়াবেড়ি, বাজেমেলিয়া, গোপালনগর, খাসেরভেড়ি, সিংহেরভেড়ির মতো অধিগৃহীত পাঁচটি মৌজার ৩৩ জনের নাম রয়েছে, তেমনই সেই মৌজাগুলির বাইরেরও ১৪জনের নাম রয়েছে৷

দীপাকে মমতাকণ্ঠী বলে কটাক্ষ সুব্রতর



দীপাকে মমতাকণ্ঠী বলে কটাক্ষ সুব্রতর
ভিড় এড়াতে বাইকে সওয়ার দীপা। ছবি-- কৌশিক রায়।
'মমতাকণ্ঠী' দীপা দাসমুন্সি! 'বউদি' জনসভার ভিড় ঠেলে এগোনোর জন্য 'দিদির' মতোই মোটরাবাইকে চড়েছেন, এহেন অনুযোগে প্রিয়-জায়াকে মমতাকণ্ঠী বলে কটাক্ষ করেলেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়৷ তাতে অবশ্য কংগ্রেসনেত্রীর বিশেষ কোনও ফায়দা মিলবে না বলেও জানিয়েছেন তিনি৷ 
আসলে, সুরের দুনিয়ায় 'কণ্ঠী'-রা বিলক্ষণ ছিলেন৷ আছেনও৷ বড় শিল্পীদের গানের আদত ধার করে কেউ কিশোরকণ্ঠী৷ কারোর গানের দুনিয়ায় শুধুই হেমন্তের ছোঁয়া৷ সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে নকল করেও কেউ বা পাড়ার ফাংশানে হাততালিও মন্দ কুড়োন না৷ কিন্ত্ত, ট্রাজেডি একটাই৷ তাঁদের নামের সঙ্গে 'কণ্ঠি' বিশেষণটি আর ঘোচে না৷ এবার রাজ্যরাজনীতির কেঠো মঞ্চেও মমতা বন্দোপাধ্যায়কে অনুকরণ করে 'কণ্ঠি'-দের যুগ শুরু হওয়ার যাবতীয় লক্ষণ স্পষ্ট বলেই মন্তব্য রাজ্যমন্ত্রিসভার বরিষ্ঠ সদস্য সুব্রতবাবুর৷ 
ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার মহাকরণ অভিযান পর্বে রাণী রাসমণি রোড থেকে ফিয়ার্স লেনে যাওয়ার পথে৷ কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ঘোষের অভিযোগ, দীপাদেবীর পথ আটকেছিল পুলিশ৷ তারা ভয় পেয়েছিল, দীপাদেবী গাড়ি করে মহাকরণের দিকে এগোচ্ছেন৷ পরে তিনি একটি মোটরবাইকে চড়েন৷ পুলিশকে বলেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হিসাবে তিনি মোটেই ১৪৪ ধারা ভাঙছেন না৷ উল্লেখ্য, শনিবার পূর্ব মেদিনীপুরে সিপিএমের জনসভাতেও দলীয় কর্মীর মোটরবাইকে চেপে মঞ্চে পৌঁছেছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য৷ 
আর, এসবের জেরে এদিন মহাকরণে সুব্রতবাবুকে প্রশ্ন করা হয়, দীপাদেবীকে নাকি ফিয়ার্স লেনে হেনস্থা করা হয়েছে৷ সুব্রতবাবু তাঁর অনুনকরণীয় ভঙ্গিতে বলেন, 'অত্যন্ত অন্যায় হয়েছে৷ এরকম একজন কেন্দ্রীয় উপমন্ত্রীকে হেনস্থা করা মোটেই ঠিক হয়নি৷' তারপরই সুব্রতবাবুর মন্তব্য, 'গ্রামেগঞ্জে অনেক অনুষ্ঠানে নির্ধারিত শিল্পীর অনুপস্থিতিতে সব কিশোরকণ্ঠী, হেমন্তকণ্ঠী, মান্নাকণ্ঠীদের ডাকা হয়৷ বড় বড় শিল্পীদের তো আর কোথায় পাবে? তাই 'কণ্ঠিদের' দিয়েই কোনও মতে কাজ চালাতে হয়৷ এখন আবার মমতাকণ্ঠীদের প্রার্দুভাব ঘটেছে৷ মমতা ভিড়ের জনসভায় কাঁচা রাস্তার উপর মোটরবাইক চড়ে যেতেন৷ এখন দীপাদেবীও মোটরবাইকে চড়ছেন, বুদ্ধবাবুকেও বেশ ভয়ে ভয়ে কোনমতে বাইকে চাপতে দেখা গেল৷ মমতা তাঁর আন্দোলনে যা যা করেছেন, এঁরাও এখন তাই-ই করছে৷ একেবারে রিমেক৷ আর, গান-চিত্রনাট্য এতই দুর্বল যে কাজের কাজ কিছু হবে না৷' 
সাতের দশকে দক্ষিণপন্থী ছাত্র-যুব রাজনীতির দুই উজ্জ্বল প্রতীক ছিলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও প্রিয়রঞ্জন দাসমুন্সী৷ ঘনিষ্ঠ সম্পর্কটা একটা সময় পারিবারিক স্তরেও পৌঁছেছিল৷ সুব্রতবাবু ও দীপাদেবী এখন অবশ্য দুই চরম বিরোধী শিবিরের নেতানেত্রী৷ ফলে, রাজ্য রাজনীতির এই পাকেচক্রে প্রিয়জায়াকে ব্যঙ্গবিদ্রুপে বিঁধতে দ্বিধা করেননি সুব্রতবাবু৷




লাটসাহেব হুঁশিয়ার
সুব্রতর আক্রমণ, নারায়ণন অনড়ই
ভাঙড়ের ঘটনা নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খোলায় রাজ্যপাল এম কে নারায়ণনকে কার্যত সতর্ক করলেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। সাংবিধানিক অধিকার নিয়ে প্রশ্ন তুলে বৃহস্পতিবার সুব্রতবাবু বলেছেন, উনি রাজ্যপালোচিত কাজ করছেন না। 
রাজ্যপালের কথায় মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে বলে মন্তব্য করে তাঁকে সুব্রতবাবুর হুঁশিয়ারি, "আমরা নজর রাখছি। নিয়মিত এ রকম হলে ভাবতে হবে কী করব। এখনই রাজ্যপালের বিরুদ্ধে কোনও কড়া ভাষা ব্যবহার করছি না। এখন হলুদ কার্ড দেখালাম। পরে প্রয়োজন হলে লাল কার্ড দেখাব।" 
তবে সুব্রতবাবুর হুঁশিয়ারির পরেও রাজ্যপাল জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি নিজের মন্তব্যে অটল। তাঁর কথায়, "আমি রাজ্যপালের ভাষাতেই কথা বলেছি এবং আমার বক্তব্যে অনড়।" 
তাঁর একাধিক বর্ষীয়ান মন্ত্রী ভাঙড়ের ঘটনা নিয়ে মুখ খুললেও গত পাঁচ দিনে এ প্রসঙ্গে একটিও কথা বলেননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন রাজ্যপালের মন্তব্য নিয়েও কথা বলেননি তিনি। এর আগে আরাবুলের সমর্থনে এগিয়ে এলেও রাজ্যপালের মন্তব্য নিয়ে মুখ খোলেননি শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, "রাজ্যপালের মন্তব্যের উপরে কোনও দিনই কোনও মন্তব্য করিনি। আজও করব না।" 
কেন প্রকাশ্যে মুখ খুললেন রাজ্যপাল? 
মহাকরণ সূত্রের খবর, ভাঙড়ের ঘটনা নিয়ে প্রশাসন নীরব কেন, তা ৮ জানুয়ারি, মঙ্গলবার সিপিএম-তৃণমূল সংঘর্ষের দিনেই স্বরাষ্ট্রসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ডিজি নপরাজিত মুখোপাধ্যায়কে টেলিফোন করে জানতে চেয়েছিলেন রাজ্যপাল। স্বরাষ্ট্রসচিবকে তিনি বলেন, 'আপনারা কী করছেন? সরকারের এখনই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।' সে দিনই রাজ্যপাল ডিজি-কে জানিয়ে দেন, ভাঙড়ের ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা না-হলে তিনি প্রকাশ্যেই পুলিশের বিরুদ্ধে মুখ খুলবেন। ডিজি কিছু না-বললেও স্বরাষ্ট্রসচিব রাজ্যপালকে জানান, সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে এবং আরও কঠোর অবস্থান নেওয়া হবে। কিন্তু তার পরেও বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘটনা সম্পর্কে সরকার তাদের অবস্থান না-জানানোয় ক্ষুব্ধ রাজ্যপাল বুধবার সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খোলেন।
রবীন্দ্র সরোবরে এক অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল। বৃহস্পতিবার। —নিজস্ব চিত্র
সরকারের এক মুখপাত্র জানান, রাজ্যপালের মনোভাব বুঝলেও স্বরাষ্ট্রসচিব কিংবা ডিজি-র পক্ষে একক ভাবে কোনও পদক্ষেপ করা সম্ভব নয়। তাঁদের মতে, রাজ্যপাল কোনও পরামর্শ দিতে চাইলে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকেই দিতে পারতেন। ৮ জানুয়ারি সন্ধ্যায় মহাকরণে বসে চার মন্ত্রী আরাবুল ইসলাম 'আক্রান্ত' বলে ঘোষণা করে দেওয়ার পরে পুলিশের পক্ষ থেকে আর কী-ই বা করার থাকতে পারে, এমন প্রশ্নও তুলছেন প্রশাসনের অনেক কর্তা। 
প্রশাসন সূত্রের খবর, ভাঙড়ের ঘটনা নিয়ে সরকার কী ব্যবস্থা নিয়েছে, বৃহস্পতিবারেও তার কোনও রিপোর্ট রাজভবনে পাঠাতে পারেনি মহাকরণ। কারণ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন যে প্রাথমিক রিপোর্ট পাঠিয়েছে, তার সঙ্গে বাস্তবের মিল নেই। ওই রিপোর্টে গুলি চালানোর কোনও উল্লেখ নেই। এতগুলি গাড়িতে কারা আগুন লাগাল, তা নিয়েও স্পষ্ট কিছু লেখা হয়নি। এমনকী, সিপিএমের মিছিলে তৃণমূল হামলা চালিয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা যে বয়ান দিয়েছেন, তারও উল্লেখ নেই। শুধু বলা হয়েছে, দু'পক্ষের মধ্যে গোলমালের জেরে অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে। আরাবুল যে ঘটনাস্থলে ছিলেন, সে কথাও রিপোর্টে বলা হয়নি। স্বরাষ্ট্র দফতরও এমন রিপোর্ট পেয়ে বিস্মিত! তারা জেলা প্রশাসনকে ফের বিস্তারিত রিপোর্ট দিতে বলেছে। যারা গ্রেফতার হয়েছে, তাদের তালিকাও চেয়ে পাঠিয়েছে। 
রাজ্যপালকে রিপোর্ট পাঠাতে না-পারলেও কেন তিনি প্রকাশ্যে মুখ খুললেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সুব্রতবাবু। তিনি বলেন, "সংবাদপত্রে দেখলাম, রাজ্যপাল ভাঙড় নিয়ে মন্তব্য করেছেন। যদি এ কথা সত্যি হয়ে থাকে, তা হলে আমি মনে করি, এটা রাজ্যপালোচিত কাজ নয়। এই মন্তব্য উস্কানিমূলক কাজ করবে। রাজ্যপালের বিরুদ্ধে নই আমরা। তাঁর বক্তব্যের বিরুদ্ধে।" সুব্রতবাবু আরও বলেন, "রাজ্যপাল এমন আলটপকা মন্তব্য না-করলেই পশ্চিমবঙ্গের মঙ্গল। নয়তো লোক ভাববে উনি দিল্লির কংগ্রেস সরকার দ্বারা মনোনীত হয়েছেন বলেই এ সব বলছেন।" 
কিন্তু আগের রাজ্যপাল গোপালকৃষ্ণ গাঁধীও তো বামফ্রন্ট আমলে নানা বিষয়ে প্রকাশ্য বিবৃতি দিয়েছেন। সুব্রতবাবুর জবাব, "তখন সিঙ্গুর, নন্দীগ্রামের মতো ঘটনা ঘটেছিল। এখন কী তেমন কোনও ঘটনা ঘটেছে?" 
নারায়ণন বুধবার বলেছিলেন, "আমি নিজেই প্রশাসনের অংশ, তাই বলতে পারি, প্রশাসনের তরফে গাফিলতি রয়েছে।" যার জবাবে সুব্রতবাবুর মন্তব্য, "উনি যদি নিজেকে সরকারের লোক বলে মনে করেন, তা হলে মুখ্যসচিব, অফিসারদের ডেকে জানতে চাইতে পারতেন। প্রকাশ্যে বিবৃতি দেওয়ায় ওঁর ভাবমূর্তি কলুষিত হচ্ছে। নিজেকে সরকারের লোক বলে মনে করলে এ ভাবে প্রকাশ্যে বিবৃতি দেওয়া কি সঙ্গত?" 
রাজ্যপাল ভাঙড়ের পরিস্থিতি উদ্বেগজনক বলে মনে করলেও সুব্রতবাবুর বক্তব্য, "রেজ্জাকের সঙ্গে লড়তে গেলে এ রকমই করতে হবে। উনি ক্যানিং, ভাঙড় জুড়ে কোনও দিন অবাধ নির্বাচন করতে দেননি। কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় কী, উনি (রাজ্যপাল) জানেন? রেজ্জাক গত এক বছরে পাঁচটা খুন করেছেন।" যার জবাবে রেজ্জাকের কটাক্ষ, "পুলিশ-প্রশাসনের কাছে কোনও খবর নেই। শুধু উনি জানেন। কারণ, খুনের সময় উনি আমার সঙ্গে ছিলেন।" সুব্রতবাবুর আরও অভিযোগ, "কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা তো জেলায় জেলায় প্রকাশ্যে বিবৃতি দিচ্ছেন একটা খুন হলে পাল্টা পাঁচটা হবে। রাজ্যপাল চাইলে সেই রিপোর্ট পাঠিয়ে দিতে পারি।" 

হিংসায় উদ্বিগ্ন প্রাক্তনও
প্রশ্ন: এটা কি আজকের পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে বললেন?
উত্তর: হ্যাঁ। বললামই তো, হিংসার রাজনীতি সবাইকে গ্রাস করে। শিকার-শিকারি কেউ রেহাই পায় না।

প্রশ্ন: পরিবর্তনের পর সেই রাজনীতি থেকে পশ্চিমবঙ্গ রেহাই পেল না কেন?
উত্তর: (নীরব হাসি)।

প্রশ্ন: বুধবার রাজ্যপাল এখানে গুন্ডারাজের কথা বলেছেন। আপনি নন্দীগ্রামে হাড়-হিম করা সন্ত্রাসের কথা বলেছিলেন। সবই কি তবে মুদ্রার এ পিঠ আর ও পিঠ?
উত্তর: (হাসি) থাক না!

প্রশ্ন: আপনি বলছিলেন, ট্র্যাজেডিই বাংলার মূল সুর। ট্র্যাজেডি পুনরাবৃত্ত হলে সেটা প্রহসন হয়ে যায়। পশ্চিমবঙ্গ তবে ট্র্যাজেডির শিকার, না প্রহসনের?
উত্তর: (হাসতে হাসতে) এটা আরও বিপজ্জনক প্রশ্ন। এখানে এ সব থাক....

সুব্রতবাবু এ দিন রাজ্যপালের অধিকার নিয়ে প্রশ্ন তুললেও রাজভবন সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, রাজ্যপাল এক্তিয়ার বর্হিভূত কাজ করেননি। তিনি রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। সংবিধান আইনশৃঙ্খলা রক্ষার সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। ফলে সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে তিনি কোনও বার্তা দিতেই পারেন। রাজভবনের প্রশ্ন, রাজ্যপাল রাজনৈতিক হিংসার প্রসঙ্গে দলমত নির্বিশেষে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন। শাসক দল তা নিজের ঘাড়ে টেনে নিচ্ছে কেন? তা ছাড়া, সংবিধান বলেছে, রাজ্যপাল সরকারের পরামর্শে কাজ করবেন। কিন্তু সরকারের পরামর্শে কথা বলবেন, এমন কথা লেখা নেই। সর্বোপরি, রাজ্যপাল এক জন নাগরিক। সংবিধান তাঁকেও বাক্ স্বাধীনতা দিয়েছে। 
সংবিধান বিশেষজ্ঞ সুভাষ কাশ্যপও বলেন, "রাজ্যপাল কী বলতে পারেন, কী পারেন না, তার সঙ্গে সংবিধানের কোনও সম্পর্ক নেই। পরিস্থিতির বিচারে তাঁর মন্তব্য যথাযথ কি না, সেটাই প্রশ্ন। তত্ত্বগত ভাবে রাজ্যপালই প্রশাসনের সর্বময় প্রধান। কাজেই এ ক্ষেত্রে তিনি নিজের প্রশাসনের সমালোচনা করছেন।" তবে কাশ্যপ এ-ও বলেন, "আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি, রাজ্যপালের উচিত মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলা। দু'জনের কথাবার্তা গোপনীয় বিষয়। প্রকাশ্যে আসে না। তবে রাজ্যপাল হিসেবে প্রত্যেকে নিজের মতো করে ঠিক করেন, তিনি কী ভাবে চলবেন।" কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী দীপা দাশমুন্সির মতে, "রাজ্যপালের সমালোচনা করা মানে সংবিধানের সমালোচনা করা। রাজ্যপালকে কোনও দল নিয়োগ করে না। যিনি এটা বলেছেন, তিনি অশোভন কথা বলেছেন।" কংগ্রেস নেতা মানস ভুঁইয়া বলেন, "রাজ্যপাল বলেছেন, গুন্ডামি চলছে। মুখ্যমন্ত্রীকে বলব, অবিলম্বে রাজ্যপালের সঙ্গে আলোচনা করুন।" তবে প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা দাবি তুললেও রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে এই মুহূর্তে নাক গলাতে চাইছেন না কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল কুমার শিন্দে। তাঁর বক্তব্য, "আইনশৃঙ্খলা রাজ্যের বিষয়। কেন্দ্রের এর মধ্যে না-ঢোকাই ভাল।"
http://www.anandabazar.com/11pgn01.html

রিপোর্ট ঠিকঠাক, আরাবুল তবু নার্সিংহোমেই
সিজি হয়েছে। ইকো-কার্ডিওগ্রামও হয়েছে। তাতে অস্বাভাবিক কিছু পাওয়া যাচ্ছে না। তবু আরাবুল ইসলামকে নার্সিংহোম থেকে বাড়ি নিয়ে যেতে রাজি নন তাঁর পরিবার। বৃহস্পতিবার দুপুরে নার্সিংহোমে দাঁড়িয়ে আরাবুলের ছেলে হাকিমুল বলেন, "উনি আজও এখানে থাকবেন।"
মঙ্গলবার ভাঙড়ের গোলমালের পরে চিনার পার্কের ওই নার্সিংহোমে ভর্তি হয়েছিলেন তৃণমূল নেতা আরাবুল। সে সময়ে ডাক্তারদের বক্তব্য ছিল, তাঁর শরীরে কোনও আঘাতের চিহ্ন নেই, কিছুক্ষণ বাদেই তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হবে। তা অবশ্য হয়নি, বরং আরাবুলকে আইসিইউয়ে নেওয়া হয়। বুধবার তাঁকে আইসিইউ থেকে সাধারণ শয্যায় আনেন চিকিৎসকেরা। নার্সিংহোম সূত্রের খবর: রক্তে শর্করার মাত্রা কিছু বেশি থাকা ছাড়া আরাবুলের শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার সব রিপোর্টই মোটামুটি স্বাভাবিক। তাই নার্সিংহোম-কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন, সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে বৃহস্পতিবার সকালে আরাবুলকে ছাড়া হতে পারে। কিন্তু এ দিনও তাঁকে ছাড়া হয়নি। বস্তুত কবে হবে, তা-ও নিশ্চিত নয়। নার্সিংহোমের এমডি সুভাষ ঘোষ এ দিন বলেন, "আরাবুলকে কবে ছাড়া হবে, সে সম্পর্কে এখনই কিছু বলতে পারছি না। উনি জানিয়েছেন, এখনও পুরো সুস্থ বোধ করছেন না। ওঁকে জেনারেল বেডে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।"
হাসপাতালে আরাবুল
নার্সিংহোম-সূত্রের খবর: এ দিন সকালে আরাবুল ডাক্তারদের বলেন, ফের তাঁর বুকে ব্যথা শুরু হয়েছে। তড়িঘড়ি ইসিজি, ইকো-কার্ডিওগ্রাম হয়। ঠিক হয়, ইসিজি বা ইকো-কার্ডিওগ্রামের রিপোর্টে অস্বাভাবিকতা থাকলে সিটি-অ্যাঞ্জিওগ্রাম হবে। চিনার পার্কের ওই নার্সিংহোমে তার ব্যবস্থা না-থাকায় চিংড়িহাটার কাছে এক নার্সিংহোমে সিটি-অ্যাঞ্জিওগ্রাম করার সিদ্ধান্তও হয়ে গিয়েছিল। তবে শেষমেশ তার দরকার পড়েনি। কারণ ডাক্তারেরা জানিয়ে দেন, আরাবুলের ইসিজি ও ইকো-কার্ডিওগ্রামের রিপোর্টে কোনও অস্বাভাবিকতা নেই।
তা হলে এখন ওঁর কী চিকিৎসা হচ্ছে? নার্সিংহোম-কর্তৃপক্ষ কিছু বলতে চাননি। আরাবুলকে ওখানে প্রথম দেখেছিলেন যে চিকিৎসক, সেই জয়ন্ত দত্ত এ দিন বলেন, "ভর্তি হওয়ার দিন আমি ওঁকে দেখেছিলাম। তার পরে আর দেখিনি। তাই কিছু বলতে পারব না।" আরাবুল এখন যে দুই ডাক্তারের অধীনে, তাঁরাও এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি। শারীরিক অবস্থায় অস্বাভাবিকতা না-থাকলে আরাবুল কেন নার্সিংহোমে? প্রশাসনের এক সূরে দাবি, রেজ্জাক মোল্লার উপরে হামলার ঘটনার পরে কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানায় আরাবুল ইসলামের বিরুদ্ধে এফআইআর দাখিল হয়েছে। তাতে অস্ত্র-আইনের ধারাও রয়েছে, যা জামিন-অযোগ্য। দল যতই পাশে দাঁড়াক, এ নিয়ে আরাবুল যথেষ্ট চাপে রয়েছেন। বিশেষত রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন পুলিশ-প্রশাসনকে নিরপেক্ষ হওয়ার পরামর্শ দেওয়ায় চাপটা আরও বেড়েছে। তাই রেজ্জাক মোল্লা ও সিপিএম সমর্থকদের বিরুদ্ধে পাল্টা নালিশ দায়ের করার পাশাপাশি নিজেকেও 'হামলায় আহত' প্রতিপন্ন করে তিনি জনমানসে ভাবমূর্তি উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
http://www.anandabazar.com/11pgn1.html

মার্কিন মুলুকে সর্ব নিয়ন্তা ১% কারা?

মেহেদী হাসান

  
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ধনি গরিব বৈষম্যের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ আন্দোলন চলছে অর্থনীতির কেন্দ্রস্থল নিউইয়র্কের ওয়াল স্ট্রিট সড়কে। বিক্ষোভকারীরা এখন ওয়াল স্ট্রিট থেকে ওয়াশিংটনের দিকে যাচ্ছে। বৈষম্য বিরোধী এ আন্দোলন করছে দেশের সাধারণ মানুষ। তাদের দাবি মাত্র শতকরা ১ ভাগ মানুষ দেশের সব সম্পত্তির মালিক হয়ে বসেছে। তারাই নিয়ন্ত্রন করছে রাষ্ট্র, সরকার, প্রশাসন, ব্যবসা বানিজ্য এবং পুরো অর্থনীতি। পুরো হোয়াইট হাউজ চলে তাদের নিয়ন্ত্রনে। রাজনৈতিক দলগুলোকে তারা বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার চাঁদা দেয়। তারা মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার খরচ করে সিনেটর এবং কংগ্রেস সদস্যদের পেছনে লবি বাবদ। দেশে যত আইন কানুন হয় সবই তাদের ব্যক্তি এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সার্থে। কংগ্রেসের ৪৬ ভাগ সদস্য মিলিয়নায়ার। এদের কারো কারো সম্পত্তির পরিমান ৫০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি। সীমিত কয়েকটি মাত্র আর্থিক প্রতিষ্ঠান, শিল্প প্রতিষ্ঠান এবং সীমিত কয়েকজন ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ আজ দেশের সব সম্পত্তির মালিক । রাষ্ট্রপন্ত্রের পাহারায় দেশের মাত্র এই এক ভাগ ধনকুবেরদের শোষন আর লুন্ঠনে বাকী ৯৯ % মানুষের জীবন আজ দুর্বিসহ। গোটা রাষ্ট্রযন্ত্র আজ এই ধনকুবেরদের স্বার্থ রক্ষার বরকন্দাজে পরিণত হয়েছে। গনতন্ত্র আজ ধনকুবেরতন্ত্র তথা কুবের তন্ত্রে পরিণত হয়েছে। 

মার্কিন মুল্লূকে এই শোষনের কেন্দ্রস্থল ওয়ালস্ট্রিট। সেখানেই সব বড় বড় ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান অবস্থিত। তাই আমজনতা আজ সেখানে আওয়াজ তুলেছে ওয়াল স্ট্রিট দখল কর। আমরাই ৯৯ ভাগ। ১ ভগের হাত থেকে ৯৯ ভাগগে মুক্ত করতে হবে। 
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সর্ব নিয়ন্ত্রা এই ১ % কারা তার একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। সেরা আর্থিক, বানিজ্যিক, শিল্প প্রতিষ্ঠান এবং সেরা ধনীদের সমন্বয়ে এই তালিকা তৈরি করা হয়েছে। 

পেট্রোলিয়াম রিফাইনারি: লাভের দিক দিয়ে ২০১০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সেরা দশটি পেট্রোলিয়াম রিফাইনারি প্রতিষ্ঠানের তালিকা করা হয়। এ তালিকার শীর্ষে অবস্থান করে নেয় এক্সন মবিল । ২০১০ সালে এক্সন মবিল আয় করে ৩৫৪. ৬৭ বিলিয়ন ডলার। অন্য নয়টি প্রতিষ্ঠান এবং তাদের আয় হল শেভরন ১৯৬.৩৩ বিলিয়ন ডলার, কনোকো ফিলিপস ১৮৪.৯৬ বিলিয়ন ডলার, ভালেরো এনার্জি ৮৬ বিলিয়ন ডলার, ম্যারাথন অয়েল ৬৮.৪১ বিলিয়ন ডলার, সানোকো ৩৫.৫৪ বিলিয়ন ডলার, হেজ ৩৪.৬১ বিলিয়ন ডলার, মারফি অয়েল ২৩.৩৪ বিলিয়ন ডলার, টেসকো ২০.২৫ বিলিয়ন ডলার, হোলি ৮.৩২ ডলার । 

বানিজ্যিক ব্যাংক : লাভের দিক দিয়ে ২০১০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সেরা দশটি বানিজ্যিক ব্যাংক এর তালিকা করা হয়। এ তালিকার শীর্ষে অবস্থান করে নেয় ব্যাংক অব আমেরিকা করপ। তাদের লাভ হয় ১৩৪.১৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাকী ব্যাংক এবং তাদের লাভ হল জেপি মরগান চেজ এন্ড কোম্পানী ১১৫.৪৭ বিলিয়ন ডলার, সিটি গ্রুপ ১১১ বিলিয়ন ডলার, ওয়েল ফার্গো ৯৩.২৪ বিলিয়ন ডলার, গোল্ডম্যান স্যাকস ৪৫.৯৬ বিলিয়ন ডলার, মরগ্যান স্টানলি ৩৯.৩২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, আমেরিকান এক্সপ্রেস ৩০.২৪ বিলিয়ন ডলার, ব্যানকরপ ২০.৫১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, ক্যাপিটাল ওয়ান ফাইন্যানসিয়াল ১৯ বিলিয়ন ডলার, এলাই ফাইন্যানসিয়াল ১৭.৩৭ বিলিয়ন ডলার। 

এ্যারোস্পেস এন্ড ডিফেন্স 
আয়ের দিক থেকে ২০১০ সালের সেরা প্রতিষ্ঠানগুলো হল বোয়িং, লাভ ৬৪.৩০ বিলিয়ন ডলার, ইউনাইটেড টেকনোলজিস ৫৪.৩২ বিলিয়ন ডলার, লকহিড মার্টিন ৪৬. ৮৯ বিলিয়ন ডলার, নর্থরোপ গ্রুম্যান ৩৪.৭৫ বিলিয়ন ডলার, হানিওয়েল ইন্টারন্যাশনাল ৩৩.৩৭ বিলিয়ন ডলার, জেনারেল ডাইনামিকস ৩২.৪৬ বিলিয়ন ডলার, রেথিয়ন ২৫.১৮ বিলিয়ন ডলার, কমিউনিকেশনন্স ১৫.৬৮ বিলিয়ন ডলার, টেক্সট্রন ১০.৫২ বিলিয়ন ডলার, 

মটর ভিহিক্যালস এন্ড পার্টস 
২০১০ সালে জেনারেল মটরস এর লাভ ১৩৫.৫৯ বিলিয়ন ডলার, ফর্ড মটর ১২৮.৯৫ বিলিয়ন ডলার, ক্রাইসলার গ্রুপ ৪১.৯৪ বিলিয়ন ডলার, জনসন কন্ট্রোলস ৩৪.৩০ বিলিয়ন ডলার, গুডইয়ার টায়ার এন্ড রাবার ১৮.৮৩ বিলিয়ন ডলার, টিআরডব্লিউ অটোমোটিভ হোল্ডিংস ১৪.৩৮ বিলিয়ন ডলার, নাভিস্টার ইন্টারন্যাশনাল ১২.১৪ বিলিয়ন ডলার, লিয়ার ১১.৯৫ বিলিয়ন ডলার, প্যাকার ১০.২৯ বিলিয়ন ডলার, অশকশ ৯.৮৪ বিলিয়ন ডলার, 

বিবিধ ব্যবসা: আয়ের হিসাব অনুযায়ী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ২০১০ সালে নিচের আটটি প্রতিষ্ঠান সবার উপরে ছিল । এসব প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ধরনের ব্যবসার সাথে জড়িত। এগুলো হল ফেনি মায়ে, লাভ ৪৬.৯৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, জেনারেল ইলেকট্রিক ১৫১.৬২ বিলিয়ম ডলার, ফ্রেডি ম্যাক ৯৮.৩৬ বিলিয়ন ডলার, আইএনটিএলএফসিএসটোন ৪৬.৯৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, মার্শ এন্ড ম্যাকলেনান ১০.৯৩ বিলিয়ম ডলার, এ্যামেরিপ্রাইজ ফাইন্যানসিয়াল ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, এওএন ৮.৫১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, এস এল এম ৬.৭৭ বিলিয়ম মার্কিন ডলার। 

অয়েল এন্ড গ্যাস ইকুইপমেন্ট সাভিসেস 
আয়ের দিক থেকে ২০১০ সালের সেরা প্রতিষ্ঠানগুলো হল হ্যালিবারটন ১৭.৯৬ মিলিয়ন ডলার, বাকের হগস ১৪.৪১ মিলিয়ন ডলার, ন্যাশনাল অয়েল ওয়েল ভারকো ১২.১৫ মিলিয়ন ডলার, ক্যামেরন ইন্টারন্যাশনাল ৬.১৩ মিলিয়ন ডলার। 

নিচের প্রতিষ্ঠানগুলো পূর্ন মাত্রায় সারা বিশ্বে বিনিয়োগ করে থাকে। তারা একই সাথে পরামর্শক এবং আর্থিক লগ্নি করে থাকে। পাশাপাশি বিক্রয়, বাজার তৈরি, গবেষনা এবং ফাইন্যানসিয়াল প্রডাক্টস তথা ইকুইটি, ক্রেডিট, রেটস, কারেন্সি, কমোডিটিসি সেবা দিয়ে থাকে। 
সেরা প্রতিষ্ঠানগুলো হল- ব্যাংক অব আমেরিকা, বার্কলেইস ক্যাপিটাল, সিটি গ্রুপ, ক্রেডিট সুইস,ডিউটস্ক ব্যাংক, গোল্ডম্যান স্যাকস, জেপি মরগ্যান চেজ, মরগান স্টানলি, নমুরা সিকিউরিটিজ, ইউবিএস এবং ওয়েলস ফার্গো সিকিউরিটিস 

আমেরিকান মিলিয়নায়ার 
আমেরিকায় যারা মিলিয়নায়ার (এক মিলিয়ন =১০ লাখ) তারা মোট জনসংখ্যার মাত্র একভাগ। এদের কারো কারো স¤ত্তি ৫০০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি। কংগ্রেসের ৪৩৫ জন সদস্যের ২৪৪ জনই মিলিয়নায়ার বা কমপক্ষে এক মিলিয়ন ডলারের মালিক। শতকরা হিসাবে ৪৬ ভাগ কংগ্রেস সদস্য মিলিয়নায়ার। এর মধ্যে ১৩৮ জন রিপাবলিকানস দলের, ১০৬ জন ডেমোক্র্যাটস। প্রকৃতপক্ষে কংগ্রেসে মিলিয়নায়ারের সংখ্যা আরো অনেক বেশি। কারণ সদস্যরা সাধারণত তাদের বাড়িঘর এবং অন্যান্য অনেক সহায় সম্পত্তি আছে যা হিসাবের আওতায় আনেননা। 

২০১০ সালে কংগ্রেসের বিজয়ী সদস্যরা গড়ে দেড় মিলিয়ন ডলার প্রচারণা কাজে ব্যয় করেছেন। সিনেট সদস্যরা গড়ে খরচ করেছেন ১০ মিলিয়ন ডলার। যারা হাডডাহাড্ডি লড়াই করে জিতেছেন তাদের খরচ আরো অনেক বেশি। এসব খরচের অর্ধেক পরিমান তারা সংগ্রহ করেছেন ধনাঢ্যদের কাছ থেকে ডোনেশন আকারে প্রাপ্ত থেকে। সেন্টার ফর রেসপনসিভ পলিটিক্স এর তথ্য অনুযায়ী কংগ্রেস সদস্যদের সাথে সাধারণ ভোটারদের চাইতে ধন্যাঢ্যরাই অগ্রাধিকার পেয়ে থাকেন। এ সংসস্থার তথ্য মতে ২০০৯ সালে হাউজ অব রিপ্রেজেনটেটিভস এর একজন সদস্যের সম্পত্তির মূল্য হল ৭ লাখ ২৫ হাজার ডলার। সবচেয়ে ধনী সদস্য ড্যারেল ইসরার সম্পত্তির পরিমান ছিল ১৫৬ থেকে ৪৫১ মিলিয়ন ডলারের মধ্যে। 

সেন্টার ফর রেসপনসিভ পলিটিক্স এর তথ্য মতে কংগ্রেস সদস্যরা যে সম্পত্তির হিসাব জমা দিয়েছেন সে অনুযায়ী সেরা ২০ ধনী সদস্য এবং তাদের সম্পত্তির পরিমান হল ড্যারেল ইসা ৩০৩ মিলিয়ন ডলার, সিনেটর জন ক্যারি ২৩৮ মিলিয়ন ডলার, সিনেটর মার্ক ওয়ার্নার ১৭৪ মিলিয়ন ডলার, জরেড পলিস ১৬০ মিলিয়ন ডলার, সিনেটর হার্ব কোহল ১৬০ মিলিয়ন ডলার, ভেরনন বুচানন ১৪৮ মিলিয়ন ডলার, মাইকেল ম্যাককুল ১৩৭ মিলিয়ন ডলার, সিনেটর জেমস রিস ১০৯ মিলিয়ন ডলার, সিনেটর জে রকফেলার ৯৮ মিলিয়ন ডলার, সিনেটর রিচার্ড ব্লু মেনথানল ৯৪ মিলিয়ন ডলার, সিনেটর ঢিানি ফেনস্টেন ৭৭ মিলিয়ন ডলার, সিনেটর ফ্রাংক লটেনবার্গ ৭৬ মিলিয়ন ডলার, ন্যান্সি পেলোসি ৫৮ মিলিয়ন ডলার, গ্যারি মিলার ৫১ মিলিয়ন ডলার, সিনেটর বব করকার ৫০ মিলিয়ন ডলার, ডিয়ানে লিন ব্লাক ৪৯ মিলিয়ন ডলার, রুডনি আর ৪৩ মিলিয়ন ডলার, রিচার্ড বার্গ ৩৯ মিলিয়ন ডলার, নিটা এল ৩৯ মিলিয়ন ডলার এবং কেনি এম ৩৮ মিলিয়ন ডলার। 

টপ ডোনার টু ওবামা ২০০৮:২০০৮ সালের নির্বাচনে ওবামাকে যারা ডোনেশন দিয়েছেন তাদের মধ্যে শীর্ষে অবস্থানকারীরা হলেন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ১.৬ মিলিয়ন ডলার, গোল্ডম্যান স্যাক্স ১ মিলিয়ন ডলার, হাবভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় .৮৫ মিলিয়ন ডলার, মাইক্রোসফট করপ .৮৩ মিলিয়ন ডলার, গুগল ইনক .৮০ মিলিয়ন ডলার, সিটিগ্রুপ ইনক .৭০ মিলিয়ন ডলার, জেপি মরগ্যান চেজ এন্ড কোম্পানী .৬৯ মিলিয়ন ডলার, টাইম ওয়ার্নার .৫৯ মিলিয়ন ডলার সিডলে অস্টিন এল এল পি .৫৮ মিলিয়ন ডলার, স্টানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় .৫৮ মিলিয়ন ডলার, ন্যাশনাল এমিউজমেন্ট .৫৫ মিলিয়ন ডলার, ইউবিএস এজি .৫৪ মিলিয়ন ডলার, উইলমার্শেল .৫৪ মিলিয়ন ডলার, স্কাডেন .৫৩ মিলিয়ন ডলার, আইবএম .৫২ মিলিয়ন ডলার, কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় .৫২ মিলিয়ন ডলার, মরগ্যান স্টানলি .৫১ মিলিয়ন ডলার, জেনারেল ইলেকট্রিক .৪৯ মিলিয়ন ডলার, 

টপ ডোনার টু বুশ ২০০৪:মরগ্যান স্টানলি ৬০৩৪৮০ মিলিয়ন ডলার, মেরিল লিনচ ৫৮৬২৫৪ মিলিয়ন ডলার, প্রাইস ওয়াটারহাইজ ৫১৪২৫০ মিলিয়ন ডলার, ইউবিএস এজি ৪৭৪৩২৫ মিলিয়ন ডলার, গোল্ডম্যান স্যাক্স ৩৯৪৬০০ মিলিয়ন ডলার, লেহম্যান ব্রাদার্স ৩৬১৫২৫ মিলিয়ন ডলার, এমবিএনএ ৩৫০৩৫০ মিলিয়ন ডলার, ক্রেডিট সুইস গ্রুপ ৩৬২০৪০ মিলিয়ন ডলার, সিটি গ্রুপ ৩২০৮২০ মিলিয়ন ডলার, বিয়ার স্টিয়ার্নস ৩১৩১৫০ মিলিয়ন ডলার, আর্নেস্ট এন্ড ইয়ং ৩০৫১৪০ মিলিয়ন ডলার, ইউএস সরকার ২৯৫৭৮৬ মিলিয়ন ডলার, ডেলোইটি এলএলপি ২৯২২৫০ মিলিয়ন ডলার, ওয়াচোভিয়া করপ ২৭৯৩১০ মিলিয়ন ডলার, এ্যামেরিকোয়েস্ট ক্যাপিটাল ২৫৩১৩০ মিলিয়ন ডলার, যুক্তরাষ্ট্র পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ২২৫৩৩০ মিলিয়ন ডলার, ব্ল্যাংক রোম এলএলপি ২২৫১৫০ মিলিয়ন ডলার, ব্যাংক অব আমেরিকা ২১৮২৬১ মিলিয়ন ডলার এবং এটি এন্ড টি ২১৪৯২০ মিলিয়ন ডলার। 

আমেরিকান বিলিয়নায়ার (এক বিলিয়ন =একশ কোটি): 
২০১১ সালে ফোর্বস প্রকাশিত সেরা ২০ মার্কিন ধনকুবের হলেন বিল গেটস (মাইক্রোসফট) ৫৯ বিলিয়ন ডলার, ওয়ার্নার বাফেট (বার্কশায়ার হ্যাথওয়ে) ৩৯ বিলিয়ন ডলার, ল্যারি এলিসন (ওরাকল) ২১.৫ বিলিয়ন ডলার, চালর্স কাচ ( বিবিধ ) ২৫ বিলিয়ন ডলার, ড্যাভিড কোচ (বিবিধ) ২৫ বিলিয়ন ডলার, ক্রিস্টি ওয়ালটন (ওয়াল মার্ট) ২০.৫ বিলিয়ন ডলার, এলিস ওয়ালটন (ওয়াল মার্ট) ২০.৯ বিলিয়ন ডলার, রবসন ওয়ালটন (ওয়ালমার্ট) ২০.৫ বিলিয়ন ডলার, মাইকেল ব্লুমবার্গ (ব্লূমবার্গ এলপি) ১৯.৫ বিলিয়ন ডলার, জেফ বেজনস (আমাজান ডট কম) ১৯.১ বিলিয়ন ডলার, মার্ক জুকারগার্গ (ফেসবুক) ১৭.৫ বিলিয়ন ডলার, সার্গে ব্রিন (গুগল) ১৬.৭ বিলিয়ন ডলার, লেরি পেজ (গুগল) ১৬.৭ বিলিয়ন ডলার, জন পলসন (হেজ ফান্ডস) ১৫.৫ বিলিয়ন ডলার মাইকেল ডেল (ডেল) ১৫ বিলিয়ন ডলার, স্টিভ বলমার (মাইক্রোসফট) ১৩.৯ বিলিয়ন ডলার এবং ফরেস্ট মারস (ক্যান্ডি) ১৩ বিলিয়ন ডলার। 

লেখকঃ সাংবাদিক
http://www.sonarbangladesh.com/writer/MehediHasan
http://www.sonarbangladesh.com/article/7337

ওবামার বিজয়ঃ এটি নীতির বদল না রঙের বদল? PDF Print E-mail
Written by ফিরোজ মাহবুব কামাল   
Saturday, 08 November 2008 00:00
মার্কিন নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন বারাক হোসেন ওবামা। তাঁর বিজয়ে আনন্দ-উৎসব হয়েছে শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই নয়, এশিয়া, ইউরোপ ও আফ্রিকার বহুদেশে। কোন এক ব্যক্তির নির্বাচনী বিজয়ে দেশ, বর্ণ, ভাষা ও ধর্মের গন্ডি ডিঙ্গিয়ে এভাবে আনন্দ প্রকাশের ঘটনা বিরল। নির্বাচন-পুর্বে মিশরে এক জরিপ চালিয়েছিল "দি ইকোনমিষ্ট"। সে জরিপে প্রকাশ পায়, ভোট দেওয়ার অধিকার থাকলে শতকরা ৯১ ভাগ মিশরীয়ই ভোট দিত বারাক ওবামাকে। ব্রাজিলের নির্বাচনে একাধিক প্রার্থী নাম পরিবর্তন করে ভোট চেয়েছে ওবামা নামে। অনেকের ধারণা, ওবামার বিজয়ে মার্কিন রাজনীতিতে শুরু হবে নতুন যুগ। তাদের কথা, ওবামা হলেন একাবিংশ শতাব্দীর নেতা। তাদের যুক্তি, তাঁর পিতা আফ্রিকার মুসলিম পরিবারের। মা একজন শ্বেতাঙ্গ মার্কিন। তাঁর শৈশব কেটেছে ইন্দোনেশিয়ায়। লেখাপড়া করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে।

কর্মজীবনের শুরুতে সমাজকর্মী রূপে কাজ করেছেন দরিদ্র শ্রমিক এলাকায়। এভাবে তার চরিত্রে সংমিশ্রণ ঘটেছে বিচিত্র ঐতিহ্য ও অভিজ্ঞতার। বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর পদে বসবার জন্য এমন বিচিত্র অভিজ্ঞতার সংমিশ্রণ নিশ্চয়ই দুর্লভ ও গুরুত্বপূর্ণ -যা অতীতে কোন মার্কিন প্রেসিডেন্টেরই ছিল না। প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশের ৮ বছরের শাসনামলে বিশ্বজুড়ে সংঘটিত হয়েছে অসংখ্য জঘন্য অপরাধ। দীর্ঘকাল ব্যাপী যুদ্ধে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চলছে ইরাক ও আফগানিস্তানে। দেশদুটিতে নিহত বা আজীবনে জন্য পঙ্গু হয়েছে বহুলক্ষ নিরপরাধ মানুষ। ধ্বংস হয়েছে বহু হাজার ঘরবাড়ি ও দোকান-পাঠ। অসংখ্য মানুষ কারারুদ্ধ ও নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়েছে বাগরাম, আবুগারিব ও গুয়ান্তানামোর ন্যায় কারাগারে। বিশ্বের বহু শহর ও জনপদ থেকে অসংখ্য মানুষকে তুলে নিয়ে গুম করা হয়েছে। বুশের যুদ্ধাংদেহী নীতির কারণেই আযাব নেমে এসেছে বিশ্ব-অর্থনীতিতে। বন্ধ হয়েছে বহু কলকারখানা ও ব্যাংক। চাকুরি হারিয়েছে শুধু দরিদ্র দেশের কর্মজীবী লক্ষ লক্ষ মানুষই শুধু নয়, বহু লক্ষ মার্কিনীও। ঋণ পরিশোধ করতে না পারায় গৃহহীন হচ্ছে লাখ লাখ মানুষ। বিগত সত্তর বছরের ইতিহাসে এরূপ অর্থনৈতিক বিপর্যয় দ্বিতীয়টি আসেনি। ৮ বছর আগে একজন মার্কিনীর পক্ষে গরীব হওয়াই অস্বাভাবিক ছিল, আর এখন স্বচ্ছল থাকাই কঠিন হয়ে পড়েছে। প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ বহু হাজার বিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে নিছক মানুষ হত্যায় ও দেশ-ধ্বংসে। অথচ এ অর্থে বিপুল কল্যাণ হতে পারতো বিশ্বজুড়ে। তিনি যখন ক্ষমতায় আসেন তখন মার্কিন রাজস্ব-ভান্ডারে আড়াই শত বিলিয়ন ডলারের বেশী উদ্ধবৃত্ত ছিল, অথচ এখন দেশটি বিশ্বের সবচেয়ে দায়গ্রস্ত দেশ। যুদ্ধ এখন আর শুধু আফগানিস্তান ও ইরাকে সীমাবদ্ধ নয়, গ্রাস করছে প্রতিবেশী দেশগুলোকেও। বিশ্ব-পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রাখা এখন মার্কিনীদের সামর্থের বাইরে। প্রচন্ড বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে পূঁজিবাদী অর্থব্যবস্থা। ফলে অসম্ভব হয়ে পড়েছে বিশ্ব-শক্তি রূপে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টিকে থাকাটাও। বুশের ভ্রান্ত-নীতিই মূলতঃ সম্ভব করেছে ওবামার বিজয়। তার কারণে সমগ্র বিশ্বটাই মার্কিনীদের জন্য বিপদজনক হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্বের প্রায় প্রতিপ্রান্তে মার্কিন নাগরিকগণ পরিণত হয়েছে ঘৃণার পাত্রে। এমন ঘৃণার কারণে মার্কিন পরিচয় নিয়ে অন্যদেশের রাজপথে চলাফেরা করাটিও এখন বিপদজনক। তাই ওবামা না হলে আরেকজন ওবামাকে সন্ধান করা তাদের জন্য জরুরী হয়ে পড়েছিল। এমন এক পরিস্থিতে ওবামা আবির্ভূত হয়েছেন মুক্তির অবতার রূপে।

 

আগামী ২০ই জানুয়ারীতে ওবামার দখলে যাচ্ছে হোয়াইট হাউস। তখন তিনিই হবেন বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ব্যক্তি। তাঁর উপর দায়ভার বিশাল। মার্কিন নীতি বলতে বিশ্ববাসী বুঝে, বিরামহীন যুদ্ধ। বুঝে, নিরীহ নারী-পুরুষ ও শিশু হত্যা ও পঙ্গুত্বসাধন। বুঝে, আবু গারিব, গোয়ান্তোনামো বে' ও বাগরামের কারাগার। বুঝে, বিয়ের আসর, মসজিদ-মাদ্রাসা ও বসতগৃহের উপর বোমা বর্ষন। বুঝে, স্বৈরাচারি জালেম শাসকদের প্রতি নিঃশর্ত্ব সমর্থণ। বুঝে, ইসরাইলের বর্বর আগ্রাসান, বোমা-বর্ষন, ফিলিস্তিনি-ভূমির জবরদখল। প্রশ্ন হল, ওবামা কি এমন মার্কিন নীতির বিরুদ্ধে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবেন? নির্বাচনী প্রচারণায় শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে নয়, তিনি বিশ্বকে পাল্টে দেওয়ার ওয়াদা করেছেন। সে ওয়াদা তিনি কতটা পূরণ করতে পারবেন? এ নিয়ে বিশ্ববাসী যে হতাশ হবে সে আশংকাই কি কম? কারণ, যে দুর্বৃত্তি ও সন্ত্রাসের রাজত্বকে মার্কিন সরকার যুগ যুগ ধরে বিশ্বজুড়ে প্রতিষ্ঠা ও পরিচর্যা দিয়েছে সেটির নির্মূলে যে নৈতিক বল ও সাহস চাই সেটি কি ওবামার আছে? নির্বাচনী প্রচারে ফেরেশতা সাজা কারো জন্যই কঠিন নয়। কঠিন নয় এমনকি অতিশয় সন্ত্রাসী ও দুর্বৃত্তের জন্যও। কঠিন ছিল না হিটলারের জন্যও। কিন্তু বাস্তবে কিছু করতে হলে তো প্রবল শক্তি চাই নীতি ও নৈতিকতায়। সমস্যা বাধে তো সেখানেই, কারণ সবার সেটি থাকে না। সে নৈতিক বলে ওবামার ঘাটতি কি কম? তারই কিছু উদাহরণ দেওয়া যাক।

 

ওবামা ইরাক যুদ্ধের বিরোধীতা করলেও আফগানিস্তানের উপর হামলার বিরোধীতা করেননি। বরং সে হামলার তিনি ঘোরতর সমর্থক। এর অর্থ দাঁড়ালো, ওবামা আদৌ যুদ্ধাবিরোধী নন। এবং বিরোধী নন বিশ্বব্যাপী মার্কিন আধিপত্য বিস্তারেও। শুধু ইরাক যুদ্ধটিই নয়, আফগানিস্তানের উপর যুদ্ধটিও হয়েছিল অতি অন্যায় ভাবে। তালেবানগণ কোন দেশের বিরুদ্ধে একটি গুলিও ছুড়েনি। কোথাও কোন মারাণাস্ত্র বা রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করেনি। ১১ই সেপ্টেম্বরে টুইন টাওয়ারে যারা হামলা করেছিল তাদের কেউই আফগান ছিল না। আফগানিস্তান যদি কাউকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিয়ে থাকে তবে সে অপরাধে বিচার হতে পারতো আন্তর্জাতিক আদালতে। অন্যদেশের রাজনৈতিক শত্রুদের আশ্রয়দানের কাজ তো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পাশ্চাত্য জগতের বহুদেশই করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আশ্রয় দিয়েছিল ইরানের বিতাড়িত বাদশাহ মহাম্মাদ রেজা শাহকে। রেজাশাহ ইরানের বিপুল সম্পদ নিয়ে সেখানে পালিয়েছিল, ষড়যন্ত্র করছিল আবার ক্ষমতা দখলের। তাই এ অপরাধে একটি দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরুকে কি বৈধ বলা যায়? অথচ মার্কিনীরা আফগানিস্তানে সেটিই করেছে। আসলে এটি ছিল বাহানা মাত্র। মার্কিনীদের কাছে তালেবানদের মূল অপরাধ, তারা ইসলামের মৌল-শিক্ষায় বিশ্বাস করে, এবং সেটির পুনঃপ্রতিষ্ঠায় জানমালের কোরবানীতেও রাজী। তারা দুষমন পাশ্চাত্যের সেকুলার দর্শনের। এদিক দিয়ে সমগ্র মুসলিম বিশ্বে একমাত্র তারাই ব্যতিক্রমধর্মী। পাশ্চাত্য মূল্যবোধের বিরুদ্ধে এমন বিদ্রোহ মার্কিনীদের কাছে অসহ্য। আর এখান থেকেই মূল শত্রুতার শুরু। পুঁজিবাদী বিশ্ব এককালে কম্যুনিজমকে তাদের দর্শন ও মূল্যবোধের শত্রু মনে করত। তারা এখন কম্যুনিজমের স্থানে বসিয়েছে ইসলামকে। এমন অভিন্ন পুঁজিবাদী চেতনা বারাক ওবামারও। তাঁর কথা, তালেবানদের ইসলাম হল রাডিক্যাল ইসলাম – এবং এ ইসলাম থেকেই জন্ম নেয় জ্বিহাদ। সে জ্বিহাদই তার দৃষ্টিতে সন্ত্রাস। তাই ওবামার কাছে আফগানিস্তান হল সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের মূল ফ্রন্ট-লাইন। কথা হল, বুশ ও ম্যাককেইনের চেয়েও ওবামা কি এক্ষেত্রে কম যুদ্ধাংদেহী? বরং পার্থক্য হল, বুশ বা ম্যাককেইন কেউই আফগানিস্তানে আরো অধিক মার্কিন সৈন্য পাঠাতে আগ্রহী নয়। কিন্তু এ ব্যাপারে প্রচন্ড উৎসাহ ওবামার। নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি আফগানিস্তানে আরো মার্কিন সৈন্য পাঠানোর কথা একবার নয়, বহুবার বলেছেন। অথচ মার্কিন বাহিনী সেখানে যে কাজটি করছে সেটি শান্তি প্রতিষ্ঠা নয়। বিগত সাত বছরের মার্কিন-জবরদখলে শান্তির পরিমাণ সেখানে একটুও বাড়েনি, বরং বেড়েছে রক্তপাত, ধ্বংস, জেল-জুলুম ও নানা রূপ অশান্তি। বেড়েছে আফিম চাষ। মার্কিন সৈন্যরা সেখানে নিরপরাধ নাগরিক হত্যায় লিপ্ত। হত্যাকান্ডের পরিধি ও কলেবর বাড়াতে এখন নিয়মিত হামলা করছে প্রতিবেশী পাকিস্তানের অভ্যন্তরেও। হামলা করছে এমনকি বিয়ের মজলিসে। ক'দিন আগে দক্ষিণ আফগানিস্তানের এক গ্রামে বিয়ের মজলিসে হেলিকপ্টার থেকে মিজাইল ছুঁড়ে ৫০ জনেরও বেশী নারী-পুরুষ-শিশুকে হত্যা করেছে। এমন ঘটনা ঘটছে অহরহ। গত ৭ই নভেম্বর পাকিস্তানের দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানের এক গ্রামে এরূপ হামলা চালিয়ে হত্যা করেছে ৮ জন নিরীহ গ্রামবাসীকে। কিছুদিন আগে এমন আরেক হামলায় হত্যা করেছিল ২০জনকে। যে কোন সভ্য দেশে পথে-ঘাটে পাখি-শিকারেরও প্রতিবাদ হয়; বিচারও হয়। কিন্তু এরূপ নৃশংস মানব-হত্যার বিরুদ্ধে কোন বিচার নেই; প্রতিবাদও নেই। এ অবধি কোন মার্কিন সৈন্যের সাজা হয়নি। ওবামাও নীরব। আর এটিই হল মার্কিন মূল্যবোধ। এবং ওবামা সে মূল্যবোধেরই বিশ্বব্যাপী প্রসার চায়।

 

নির্বাচনী প্রচারণার প্রথম দিকে ওবামা ইরাক থেকে সৈন্য-অপসারণের কথা বলেছেন। কিন্তু এখন সুর পাল্টিয়েছেন। বলছেন, এ ব্যাপারে জেনারেলদের সাথে পরামর্শ করবেন। আর জেনারেলগণ তো চায় ইরাকে মার্কিনী সৈন্যের অব্যাহত উপস্থিতি। অতএব সৈন্য-অপাসারণের ঘোষণা থেকেও পিছু হঠবার বাহানা খুঁজছেন। আরো লক্ষণীয় হল, শুরুতে ইরাক-যুদ্ধের বিরোধী হলেও পরবর্তীতে যুদ্ধ অব্যাহত রাখতে অর্থ জোগাতে তিনি সিনেটে বার বার ভোট দিয়েছেন। জন পিলজারের ন্যায় কলামিস্টগণ ওবামার ইরাক-নীতিকে তুলনা করেছেন ষাটের দশকে ডিমোক্রাট দলীয় প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ও ১৯৬৮ আতোতায়ীর হাতে নিহত রবার্ট কেনেডীর সাথে। বেঁচে থাকলে ওবামার মত রবার্ট কেনেডীও নির্বাচনে জিততেন। তিনি ভিয়েতনাম যুদ্ধের বিরোধীতা করতেন। তবে এজন্য নয় যে, তিনি যুদ্ধের বিরোধী ছিলেন। বরং এজন্য যে, ভিয়েতনামে মার্কিনীদের বিজয় অসম্ভব ছিল। ইরাক নিয়ে তেমন একটি বিশ্বাস ওবামারও। ইরাক যুদ্ধে মার্কিনীদের অর্থনাশ ও প্রাণনাশই শুধু বেড়েছে। এর ফলে অনেক রিপাবলিকান নেতাও এখন ইরাক থেকে সৈন্য অপসারণের পক্ষপাতি। কিন্তু বিজয় হাতের নাগালে এলে তাদের মতটিও পাল্টে যায়। ইরাক কিছুটা শান্ত হয়েছে। এর কারণ, মার্কিনীদের সাথে সহযোগিতা শুরু করেছে সেকুলার সূন্নীরা। মার্কিন অস্ত্র নিয়ে তারা এখন হত্যা করেছে সেসব ইসলামপন্থিদের যারা মার্কিন দখলদারীর বিরুদ্ধে এ যাবত কাল মূল লড়াইটি লড়ছিল। মার্কিনীরা কইয়ের তেলে কই ভাজার নীতি নিয়েছে। এবং সেটি কাজও দিচ্ছে। ফলে কমেছে তাদের নিজেদের ক্ষয়ক্ষতি। আর এতে পরিবর্তন এসেছে মার্কিনীদের নীতি ও অভিলাষে। এখন দাবী করছে ইরাকে দীর্ঘকালীন অবস্থান ও স্থায়ী-ঘাঁটি নির্মাণের। বাগদাদে নির্মাণ করছে ৬০০ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে বিশাল দূতাবাস। তাই পবিবর্তন এসেছে ওবামার নীতিতেও, এখন আর তাই সত্ত্বর সেনা প্রত্যাহারের কথা তিনি মুখে আনছেন না। বরং কিছু কাল আগে 'ইরাক সার্জ' নামে বুশ যে সৈন্যসংখ্যা বৃদ্ধি করেছিল সেটিকেই তিনি সমর্থণ করছেন। সেটিকে সফলও বলছেন।

 

আরেকটি বিষয়, মার্কিনীদের এতবড় দূর্দিনেও ওবামার পক্ষে বিপুল বিজয় সম্ভব হয়নি। তিনি পেয়েছেন মাত্র শতকরা ৫২ ভাগ ভোট। বারাক ওবামার অর্জিত মোট ভোট সংখ্যা ৫ কোটি ৯০ লক্ষ, আর প্রতিদ্বন্ধী জন ম্যাককেইন পেয়েছেন ৫ কোটি ৩০ লক্ষ। ব্যবধান ৬০ লাখ ভোটের। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মত ৩০ কোটিরও বেশী মানুষের দেশে এ ব্যবধানকে কি বড় বলা যায়? অথচ ম্যাককেইন হলেন প্রেসিডেন্ট বুশের অতি কাছের। গত ৮ বছরে তিনি ৯০% সময় বুশের যুদ্ধাংদেহী সিদ্ধান্তগুলোকে সমর্থণ করে ভোট দিয়েছেন। শুরু থেকেই সমর্থন করেছেন ইরাক যুদ্ধকে। প্রয়োজনে তিনি শত বছরও ইরাকে মাকিন সৈন্য রাখার পক্ষে। এমন একজন যুদ্ধবাজ ব্যক্তিও যেখানে সামান্য ব্যবধানে পরাজিত হয়, সে দেশে নতুন প্রেসিডেন্ট ওবামা কতদূর সামনে এগুতে পারবেন? যে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহনে তাঁকে ৫ কোটি ৯০ লক্ষ তথা ৪৭% ভাগ বিপক্ষ ভোটের কথা মনে রাখতেই হবে। তাছাড়া একটি দেশের সরকার পরিবর্তন হলেই নীতিতে বড় পরিবর্তন আসে না। এজন্য ব্যাপক পরিবর্তন প্রয়োজন জনগণের চেতনা রাজ্যে। কিন্তু তেমন পরিবর্তন অন্যদের মাঝে দূরে থাক ওবামার নিজের মধ্যেই কতটা এসেছে? বিংশ শতাব্দীর ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বর্বর ঘটনা ঘটেছে ফিলিস্তিনীদের সাথে। অথচ তারা কোন দেশ বা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেনি। কোন যুদ্ধবাজকেও সহায়তা দেয়নি। অথচ অতিশয় নৃশংস মুছিবত চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে তাদের মাথার উপর। ফিলিস্তিনের ৯০ ভাগ অধিবাসী ছিল তারা। অথচ ঘরবাড়ী থেকে বলপূর্বক বহিস্কার করে তাদের ভিটামাটি দখলে নিয়েছে ইসরাইলীরা। সেখানে এসে বসতি গড়েছে বিশ্বের নানা দেশ থেকে উড়ে আসা ইহুদীরা। সে বসতি গড়তে বিপুল আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে বিশ্বের ধনি ইহুদী কোম্পানীগুলো। বহু বিলিয়ন ডলার সাহায্য দিচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও। আর ফিলিস্তিনীরা দীর্ঘ ৭০ বছর ধরে বাস করছে উদ্বাস্তু বস্তিতে। আগ্রাসন, হত্যা, অবরোধ, জেল-জুলুম তাদের পিছু ছাড়েনি এমনকি উদ্বাস্তু শিবিরেও। যে গাজা ও জর্দান নদীর পশ্চিম তীর নিয়ে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র নির্মানের ওয়াদা করা হয়েছিল তা পরিণত হয়েছে উম্মূক্ত জেলখানায়। সেখানে প্রাচীর গড়া হয়েছে জেলখানার চেয়েও উঁচু করে। জেলখানার কয়েদীদের যেমন এক প্রকোষ্ঠ থেকে অন্য প্রকোষ্ঠে যাওয়ার কোন স্বধীনতা থাকে না তেমনি স্বাধীনতা নেই অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনীদেরও। সন্ত্রাস, বর্বরতা, অবরোধ, হত্যা, জবরদখলসহ সর্ব-প্রকার অমানবিক আচরণ-পূর্ণ নৃশংস বীভৎসতা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে ফিলিস্তিনীদের উপর। এমন নৃশংস ও নির্ভেজাল বর্বরতার নিন্দায় কি উঁচুমানের মানবিক গুণসম্পন্ন হওয়ার প্রয়োজন পড়ে? বরং ব্যক্তির নূন্যতম বিবেক ও মানবিক গুণের বিচার তো হয় এমন অমানবিক আচরণের নিন্দার সামর্থের মধ্য দিয়ে। পশুর সে সামর্থ নাই বলেই তো সে পশু। মানবতার বিচারে এ সামর্থটুকুই তো মূল; বলা যায় মানবতার লিটমাস টেস্ট। কোনটি এসিড আর কোনটি ক্ষার সেটি লিটমাস পেপার বলে দেয়। তেমনি কে মানবতা-সম্পন্ন মানব আর কে অমানব -সেটিও ধরা পড়ে ফিলিস্তিনীদের প্রতি কৃত নৃশংস অপরাধের নিন্দার সামর্থ থেকে। অথচ সে বিচারে ব্যর্থ হয়েছেন তথা শূণ্য মার্ক পেয়েছেন বারাক ওবামা। ওবামার বিবেকে ইসরাইলীদের সে নৃশংস অপরাধগুলী আদৌ নিন্দনীয় বিবেচিত হয়নি। অথচ সেটি জাতিসংঘ কর্তৃক বর্বরতা রূপে সনাক্ত হয়েছিল ১৯৪৮ সালেই। তাই জাতিসংঘ সেদিন ফিলিস্তিনীদের নিজ ভূমিতে ফিরে যাওয়ার অধিকারকে মৌলিক মানবাধিকার রূপে স্বীকৃত দিয়েছিল। ইতিহাস সামনে এগিয়েছে, কিন্তু ওবামার মানবতা সামনে এগুয়নি। বরং নীচে নেমেছে। ফলে তিনি অমানবিক বলতে রাজী নন ফিলিস্তিনীদের সাথে কৃত নৃশংস অপরাধকগুলোকে। এমন মানবিক ব্যর্থতা নিয়ে তিনি আর কি সফলতা দেখাবেন? বিশ্ববাসীই বা কি আশা করতে পারে? অথচ ফিলিস্তিনে ইসরাইলী সরকার যেরূপ জেলখানার প্রাচীর গড়েছে সেটিকে বে-আইনী বলেছে হেগের আন্তর্জাতিক আদালত। কিন্তু সেটিও বে-আইনী বিবেচিত হয়েনি ওবামার কাছে। এক্ষেত্রে জর্জ বুশ থেকে তার পার্থক্য কোথায়? বরং উভয়ের নৈতিকতা যেন এক ও অভিন্ন উপাদানে গড়া। ওবামার এটিই সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা। বিশ্ববাসী এবং সে সাথে মুসলিম বিশ্বের বড় আতংকের কারণ তো এখানেই।

 

বারাক ওবামার বিশ্বাস, মধ্যপ্রাচ্যে অশান্তির মূল কারণ ইসরাইলের আগ্রাসী নীতি নয়, বরং সেটি হল ইসরাইলকে মেনে নেয়ায় আরবদের অসামর্থতা। এর অর্থ দাঁড়ালো, ইসরাইলীদের যা ইচ্ছা তা করার অধিকার আছে। অধিকার আছে ইচ্ছামত আরব দেশ দখলের এবং সেখান থেকে মূল অধিবাসীদের বিতাড়নেরও। অধিকার আছে হত্যারও। ওবামার ভাষায় আরবদের দায়িত্ব হল, ইসরাইলী জবরদখল, ফিলিস্তিনীদের হত্যা, অবরোধ ও বিতাড়নকে স্বীকৃতি দেওয়া। কথা হল, এমন একটি পক্ষপাত-দুষ্ট অতি উগ্র বিশ্বাস নিয়ে কেউ কি বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারে? পারে কি বিশ্ব নেতৃত্ব দিতে? শান্তি প্রতিষ্ঠাকল্পে অতি অপরিহার্য প্রথম শর্ত্ব হল, মধ্যস্থতাকারীর নিরেক্ষপতা এবং অন্যায়কে অন্যায় রূপে সনাক্ত করার সামর্থ। সে সামর্থ এ যাবত কাল কোন মার্কিন প্রেসিডেন্টেরই ছিল না। নেই বারাক ওবামারও। ফলে বার বার ব্যর্থ হচ্ছে শান্তি প্রতিষ্ঠার সকল উদ্যোগ। এ যাবতকাল অনুষ্ঠিত সকল বৈঠক এবং সকল আলোচনাই এ কারণে ব্যর্থ হয়ে গেছে। নির্বাচনী প্রচারকালে যুক্তরাষ্ট্রের বিশাল ইহুদী লবিগ্রুপ 'আইপ্যাক'এর মিটিংয়ে বারাক ওবামা যা বলেছেন সেটি আরো উদ্বেগজনক। সে মিটিংয়ে ওবামা নিজেকে ইসরাইলের অতি ঘনিষ্ট বন্ধুরূপে ঘোষণা দেন। এভাবে নিজেকে পরিচিত করেছেন ইসরাইলের প্রতি অতি অঙ্গিকারবদ্ধ ও নিষ্ঠাবান উকিলরূপে। অপর দিকে ইসরাইলে গিয়ে বলেছেন, জেরুজালেম থাকবে অবিভক্ত এবং সেটি থাকবে ইসরাইলের রাজধানীরূপে। অথচ এমন কথা আন্তজার্তিক আইন-বিরুদ্ধ। জাতিসংঘ প্রস্তাব অনুযায়ী জেরুজালেম শহরেই প্রতিষ্ঠিত হতে হবে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রাজধানী। এমনকি সেটি মেনে নিতে রাজী বহু চরমপন্থি ইসরাইলীও। অথচ বারাক ওবামা চরমপন্থি ইসরাইলীদের চেয়েও অধিক চরমপন্থি রূপে ঘোষণা দিয়েছেন। এত সুস্পষ্ট পক্ষপাতের পরও কি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থ্যতাকারীর ভূমিকা নেওয়ার যোগ্যতা থাকে? থাকে কি সে অধিকার বা গ্রহণযোগ্যতা? কথা হল, এটি কি শান্তির পথ? ইসরাইল প্রতিষ্ঠার ৭০ বছর কেটে গেছে। শান্তির প্রতিষ্ঠার নামে বহু মধ্যস্থ্যতা করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু কথা হল, এরূপ ইসরাইল-তোষণ মানসিকতা নিয়ে মার্কিন মধ্যস্থতা শত শত বছর চললেও কি শান্তি প্রতিষ্ঠা পাবে? প্রতিদিন বৈঠক বসলেও কি তাতে লাভ হবে? ওবামার এরূপ মানসিকতায় অশান্তিই কি আরো তীব্রতর হবে না? অথচ বিশ্ব-শান্তির পথে এটিই তো মূল বাধা। শান্তির নামে মার্কিনী প্রশাসন ও পশ্চিমাবিশ্ব এ যাবতকাল ফিলিস্তিনীদের নাকের ডগার সামনে শুধু মূলা ঝুলিয়ে রেখেছে। আলোচনার পর আলোচনা হয়েছে। কিন্তু এ যাবত সেগুলো হয়েছে নিছক ধোকা দেওয়ার জন্য। কাজের কাজ কিছুই হয়নি। এটি হল, নীতির ক্ষেত্রে মার্কিনীদের বড় অসততা। কথা হল, যে পক্ষপাত-দুষ্ট মানসিকতা নিয়ে বারাক ওবামা হাজির হয়েছেন তা থেকেই কি ভিন্নতর কিছু আশা করা য়ায়? পুরনো ধোকাবাজীই কি আবার নতুন করে শুরু হবে না? যুদ্ধ, সন্ত্রাস ও জুলুমবাজীতে কি আবার নব-উদ্যোমে উৎসাহ দেওয়া শুরু হবে? ইসরাইলকে কি জোগানো হবে আরো মার্কিন যুদ্ধাস্ত্র? আর সেটি ফিলিস্তীনের মজলুম জনগণ কি মেনে নিবে? জ্বিহাদই কি এতে তীব্রতর হবে না? এতে শান্তির চেয়ে অশান্তিই কি বাড়বে না? অথচ তেমন একটি ধারণাই প্রবল হয় বারাক ওবামার আশে-পাশের লোকদের দিকে তাকালে। কোন ব্যক্তি মুখে যাই বলুক, আসল পরিচয় ধরা পড়ে তার বন্ধুদের দেখলে। কারণ, বন্ধু নির্বাচনে মানুষ তার অতিশয় আপন ও সমমনা লোকদেরই প্রাধান্য দেয়। আর সেটি সত্য ওবামার ক্ষেত্রেও। বারাক ওবামা তার প্রশাসনিক দলে প্রথম যে লোকটিকে বেছে নিয়েছেন সে হল অতি পরিচিত জায়োনিষ্ট বা ইহুদীবাদী। এসেছে ইসরাইল থেকে। তার নাম রাহম ইমানুয়েল। এ ব্যক্তিটি ছিল প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনেরও পরামর্শদাতা। তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে হোয়াইট হাউজের চিফ-অব-স্টাফ রূপে। মি. ইমানুয়েলের পিতা ছিল চল্লিশের দশকের চরমপন্থি ইহুদী সন্ত্রাসী। ইসরাইলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মিনাখেম বেগিনও ছিল সে সন্ত্রাসী দলের একজন। তারা সন্ত্রাসী হামলা করত ফিলিস্তিনের নিরীহ মুসলিম নাগরিকদের উপর, এবং তাদেরকে বাধ্য করত নিজ ঘরবাড়ী ও দোকানপাট ত্যাগে। মি. ইমানুয়েল নিজেও কাজ করেছে ইসরাইলী সেনাবাহিনীতে। তাই মনে হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনে দল-বদল, ব্যক্তি-বদল বা রঙের বদল হলেও নীতির বদল হওয়ার সম্ভাবনা সামান্যই। ২০ই জানুয়ারি শপথ নেওয়ার পর তিনি আরো সৈন্য পাঠাবেন আফগানিস্তানে। যুদ্ধ শুরু হয়েছে পাকিস্তানের অভ্যন্তরেও। বিন লাদেনকে ধরতে বারাক ওবামা পাকিস্তানে যাবেন সে ঘোষণাও দিয়েছেন। ভারত ও ইসরাইল চাইবে, বোমা যখন ফেলাই হচ্ছে, এ সুযোগে কিছু বোমা ফেলা হোক পাকিস্তানের আণবিক প্রকল্পের উপরও। এভাবে বিলুপ্ত হোক আণবিক শক্তিধর একমাত্র মুসলিম রাষ্ট্রের। বহু মার্কিন নীতি-নির্ধারকেরাও সেটিই চায়। ওবামা আপোষহীন ইরানের বিরুদ্ধেও। ইতিমধ্যে গোপন যুদ্ধ শুরু হয়েছে সেখানেও। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এ কাজে বেছে নিয়েছে তাদের নিজেদের পক্ষ থেকে ঘোষিত সন্ত্রাসী দল "মোজাহিদীনে খালক"কে। ফলে ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে জর্জ বুশ যে ক্রসেড শুরু করেছিলেন সেটি শেষ হওয়ার সম্ভাবনা নেই। বরং সেটিকে আরো তীব্রতর, বিস্তৃততর ও রক্তাত্ব করার পথে ওবামা আর কতদূর এগুবেন - সেটিই এখন দেখার বিষয়। ০৮/১১/০৮
http://www.drfirozmahboobkamal.com/2010-03-24-10-21-57/202-obamas-victory.html

No comments:

मैं नास्तिक क्यों हूं# Necessity of Atheism#!Genetics Bharat Teertha

হে মোর চিত্ত, Prey for Humanity!

मनुस्मृति नस्ली राजकाज राजनीति में OBC Trump Card और जयभीम कामरेड

Gorkhaland again?আত্মঘাতী বাঙালি আবার বিভাজন বিপর্যয়ের মুখোমুখি!

हिंदुत्व की राजनीति का मुकाबला हिंदुत्व की राजनीति से नहीं किया जा सकता।

In conversation with Palash Biswas

Palash Biswas On Unique Identity No1.mpg

Save the Universities!

RSS might replace Gandhi with Ambedkar on currency notes!

जैसे जर्मनी में सिर्फ हिटलर को बोलने की आजादी थी,आज सिर्फ मंकी बातों की आजादी है।

#BEEFGATEঅন্ধকার বৃত্তান্তঃ হত্যার রাজনীতি

अलविदा पत्रकारिता,अब कोई प्रतिक्रिया नहीं! पलाश विश्वास

ভালোবাসার মুখ,প্রতিবাদের মুখ মন্দাক্রান্তার পাশে আছি,যে মেয়েটি আজও লিখতে পারছেঃ আমাক ধর্ষণ করবে?

Palash Biswas on BAMCEF UNIFICATION!

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS ON NEPALI SENTIMENT, GORKHALAND, KUMAON AND GARHWAL ETC.and BAMCEF UNIFICATION! Published on Mar 19, 2013 The Himalayan Voice Cambridge, Massachusetts United States of America

BAMCEF UNIFICATION CONFERENCE 7

Published on 10 Mar 2013 ALL INDIA BAMCEF UNIFICATION CONFERENCE HELD AT Dr.B. R. AMBEDKAR BHAVAN,DADAR,MUMBAI ON 2ND AND 3RD MARCH 2013. Mr.PALASH BISWAS (JOURNALIST -KOLKATA) DELIVERING HER SPEECH. http://www.youtube.com/watch?v=oLL-n6MrcoM http://youtu.be/oLL-n6MrcoM

Imminent Massive earthquake in the Himalayas

Palash Biswas on Citizenship Amendment Act

Mr. PALASH BISWAS DELIVERING SPEECH AT BAMCEF PROGRAM AT NAGPUR ON 17 & 18 SEPTEMBER 2003 Sub:- CITIZENSHIP AMENDMENT ACT 2003 http://youtu.be/zGDfsLzxTXo

Tweet Please

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS BLASTS INDIANS THAT CLAIM BUDDHA WAS BORN IN INDIA

THE HIMALAYAN TALK: INDIAN GOVERNMENT FOOD SECURITY PROGRAM RISKIER

http://youtu.be/NrcmNEjaN8c The government of India has announced food security program ahead of elections in 2014. We discussed the issue with Palash Biswas in Kolkata today. http://youtu.be/NrcmNEjaN8c Ahead of Elections, India's Cabinet Approves Food Security Program ______________________________________________________ By JIM YARDLEY http://india.blogs.nytimes.com/2013/07/04/indias-cabinet-passes-food-security-law/

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS TALKS AGAINST CASTEIST HEGEMONY IN SOUTH ASIA

THE HIMALAYAN VOICE: PALASH BISWAS DISCUSSES RAM MANDIR

Published on 10 Apr 2013 Palash Biswas spoke to us from Kolkota and shared his views on Visho Hindu Parashid's programme from tomorrow ( April 11, 2013) to build Ram Mandir in disputed Ayodhya. http://www.youtube.com/watch?v=77cZuBunAGk

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS LASHES OUT KATHMANDU INT'L 'MULVASI' CONFERENCE

अहिले भर्खर कोलकता भारतमा हामीले पलाश विश्वाससंग काठमाडौँमा आज भै रहेको अन्तर्राष्ट्रिय मूलवासी सम्मेलनको बारेमा कुराकानी गर्यौ । उहाले भन्नु भयो सो सम्मेलन 'नेपालको आदिवासी जनजातिहरुको आन्दोलनलाई कम्जोर बनाउने षडयन्त्र हो।' http://youtu.be/j8GXlmSBbbk

THE HIMALAYAN DISASTER: TRANSNATIONAL DISASTER MANAGEMENT MECHANISM A MUST

We talked with Palash Biswas, an editor for Indian Express in Kolkata today also. He urged that there must a transnational disaster management mechanism to avert such scale disaster in the Himalayas. http://youtu.be/7IzWUpRECJM

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS CRITICAL OF BAMCEF LEADERSHIP

[Palash Biswas, one of the BAMCEF leaders and editors for Indian Express spoke to us from Kolkata today and criticized BAMCEF leadership in New Delhi, which according to him, is messing up with Nepalese indigenous peoples also. He also flayed MP Jay Narayan Prasad Nishad, who recently offered a Puja in his New Delhi home for Narendra Modi's victory in 2014.]

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS CRITICIZES GOVT FOR WORLD`S BIGGEST BLACK OUT

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS CRITICIZES GOVT FOR WORLD`S BIGGEST BLACK OUT

THE HIMALAYAN TALK: PALSH BISWAS FLAYS SOUTH ASIAN GOVERNM

Palash Biswas, lashed out those 1% people in the government in New Delhi for failure of delivery and creating hosts of problems everywhere in South Asia. http://youtu.be/lD2_V7CB2Is

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS LASHES OUT KATHMANDU INT'L 'MULVASI' CONFERENCE

अहिले भर्खर कोलकता भारतमा हामीले पलाश विश्वाससंग काठमाडौँमा आज भै रहेको अन्तर्राष्ट्रिय मूलवासी सम्मेलनको बारेमा कुराकानी गर्यौ । उहाले भन्नु भयो सो सम्मेलन 'नेपालको आदिवासी जनजातिहरुको आन्दोलनलाई कम्जोर बनाउने षडयन्त्र हो।' http://youtu.be/j8GXlmSBbbk