Welcome

Website counter
website hit counter
website hit counters

Monday, May 11, 2015

বঙ্গভঙ্গ, রবীন্দ্রনাথ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

বঙ্গভঙ্গ, রবীন্দ্রনাথ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

Kai Káús

"... ভারতে ধর্মরাজ্য স্থাপনের সহস্র বর্ষের সাধনায় আবিস্কৃত আহুতি মন্ত্র 'বন্দেমাতরম' অর্থাৎ উৎকট ন্যাশনালিজমকে "মানবতাবাদী", 'উদারপন্থী', বলে কথিতরাও অন্য সকলের মত করেই হৃদয় দিয়ে গ্রহণ করেছিল। এমনকি রবীন্দ্রনাথ 'বন্দেমাতরম' এর 'ন্যাশনালিজম'কে শুধু সর্বান্তকরণে গ্রহণ করা নয়, 'বন্দেমাতরম' গানে সুরারোপ করেন। ['অখন্ড বাংলার স্বপ্ন', আহসানুল্লাহ, পৃষ্ঠা ৭৭।] অথচ এই রবীন্দ্রনাথ এই নেশনবাদের বিরুদ্ধে কত শত ভাষায়ই না কথা বলেছিলেন, লিখেছিলেন।
... রবীন্দ্রনাথের মত এত তীব্র, এত শক্ত ও এত সুন্দর ভাবে জাতীয়তাবাদকে বাংলাভাষায় আর কেউ আক্রমণ করেছে বলে আমি জানি না। অথচ বিস্ময়ের ব্যাপার, যে জাতীয়তাবাদকে রবীন্দ্রনাথ ভারতীয় ঐতিহ্যের খেলাফ বললেন, যে জাতীয়তাবাদকে রবীন্দ্রনাথ পশ্চিমা সভ্যতার আগ্রাসন বললেন, যে জাতীয়তাবাদকে রবীন্দ্রনাথ আত্মস্বার্থের পুজা, লোভ ও ঘৃণার উৎস বললেন এবং যে জাতীয়তাবাদ রবীন্দ্রনাথের কাছে প্রতিবেশী জাতি সম্পর্কে অন্তহীন তথ্যবিকৃতি ও মিথ্যা কাহিনীর জন্মদাতা হিসেবে চিহ্নিত, সেই জাতীয়তাবাদ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগকে, আয়োজনকে এবং সে জাতীয়তাবাদকে রবীন্দ্রনাথ অন্তর দিয়ে গ্রহণ করেছেন, তার সাথে একাত্ম হয়েছেন, এমনকি সে জাতীয়তাবাদ প্রতিষ্ঠার হিংস্রতার সাথেও তিনি নিজেকে শামিল করেছেন।
কারও অজানা নয়, বঙ্কিম সাহিত্য হিন্দুদের হিংস্র জাতীয়তাবাদ এবং খুনে সন্ত্রাসবাদী আন্দোলনের মূল উৎস। [অধ্যাপক মুহাম্মদ মনসুর উদ্দীন লিখিত 'বাংলা সাহিত্যে মুসলিম সাধনা', গ্রন্থের তৃতীয় খণ্ডের ভূমিকার 'বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যয়' শীর্ষক নিবন্ধ দ্রষ্টব্য।] বঙ্কিম "রক্ষণশীল হিন্দু সমাজ মনের প্রতিভূ হিসাবে এবং হিন্দু জাতীয়তা মন্ত্রের উদগাতা ঋষি হিসাবে বাংলার সাহিত্যাকাশে আবির্ভূত হয়েছিলেন। তীব্র সাম্প্রদায়িকতার যে বিষবহ্নি তিনি ছড়িয়েছিলেন লেখনি মুখে, জগতের ইতিহাসে আর দ্বিতীয় নজীর নেই। তিনি মানবতার যে অকল্যাণ ও অসম্মান করেছেন, পৃথিবীর ইতিহাসে তারও তুলনা নেই। 'রাজ সিংহ' ও 'আনন্দ মঠ' উপন্যাস দুটিতে তিনি মুসলিম বিদ্বেষের যে বিষবহ্নি উদগীরণ করেছেন, সে বিষ জ্বালায় এই বিরাট উপমহাদেশের দু'টি বৃহৎ বৃহৎ সম্প্রদায়ের মধ্যে যেটুকু সম্প্রীতির ফল্গুধারা প্রবাহিত ছিল, তা নিঃশেষ শুষ্ক ও নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল। উপমহাদেশের মুসলমানদের অস্তিত্ব বঙ্কিমচন্দ্র অস্বীকার করে তাদের বিতাড়িত করে সদাশয় বৃটিশ জাতির আবাহনে ও প্রতিষ্ঠায় বার বার মুখর হয়ে উঠেছিলেন"। ['মধ্যবিত্ত সমাজের বিকাশ', সংস্কৃতির রূপান্তর', আবদুল মওদুদ, পৃষ্ঠা ৩৩৯।]
বঙ্কিমের এই সাহিত্য রবীন্দ্রনাথ প্রত্যাখ্যান করেননি। বরং একে 'জাতীয় সাহিত্য' বলে অভিহিত করে মুসলমানদের সমালোচনার জবাবে তিনি বলেছিলেন, "মুসলমান বিদ্বেষ বলিয়া আমরা আমাদের জাতীয় সাহিত্য বিসর্জন দিতে পারি না। মুসলমানদের উচিত নিজেদের জাতীয় সাহিত্য নিজেরাই সৃষ্টি করা"। ['মুসলিম জননেতা নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী একটি বক্তৃতায় মুসলিম বিদ্বেষপূর্ণ সাহিত্য বন্ধের প্রতি রবীন্দ্রনাথের দৃষ্টি আকর্ষন করলে, "ভারতী পত্রিকা'য় রবীন্দ্রনাথ এই মন্তব্য করেন।]
মুসলমানদের সংহারকামী হিংস্র হিন্দু জাতীয়তাবাদের জনক "শিবাজী সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথের মনোভাব আরও দুঃখজনক। বাংলাদেশের জন-মানুষের কাছে শিবাজী এবং শিবাজী বাহিনী 'বর্গীদস্যু' হিসাবে পরিচিত। যেহেতু 'শিবাজী মুঘলদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন, তাই শিবাজীবাদের প্রবক্তারা লুণ্ঠনকারী এক দস্যূকে জাতীয় বীর হিসাবে চিত্রিত করার উদ্দেশ্যে ইতিহাসকে বিকৃত করেছিলেন।" ['ভুলে যাওয়া ইতিহাস', এস, এ, সিদ্ধিকী বার এট ল, পৃষ্ঠা ৯৩ (উদ্ধৃতি)।] ঐতিহাসিক ডক্টর রমেশচন্দ্র মজুমদারও এই কথাই বলেছেন। তাঁর মতে "সেকালে বাংলায় আমাদের মহৎ বীরদের সম্পর্কে জ্ঞান না থাকায় রাজপুত, মারাঠা ও শিখ বীরদের জীবনী আমদানি করতে হয়েছে। জাতীয়তাবাদী নেতাগণ রাজনৈতিক গরজে সামগ্রিকভাবে ইতিহাসকে বিকৃত করে জনমনকে বিভ্রান্ত করতেন। এমনকি 'শিবাজী উৎসবে' মুসলমানকে টেনে আনার উদ্দেশ্যে ইচ্ছা করে ইতিহাসের ভুল উপস্থাপনা করতেন এবং ব্যাখ্যা দিতেন।" [ভুলে যাওয়া ইতিহাস', এস, এ সিদ্দিকী বার এট ল, পৃষ্ঠা ৯৩ (উদ্ধৃতি)।]
ইতিহাসের ভুল উপস্থাপনা এবং ইতিহাসকে বিকৃত স্বয়ং রবীন্দ্রনাথও করেছেন। শিবাজীর স্তুতিগান করে তিনি লিখেছেন,
"হে রাজা শিবাজী
তব ভাল উদ্ভাসিয়া এ ভাবনা তড়িৎ প্রভাবৎ
এসেছিল নামি—
এক ধর্ম রাজ্য পাশে খণ্ড ছিন্ন বিক্ষিপ্ত ভারতে
বেঁধে দিব আমি। তারপর একদিন মারাঠার প্রান্তর হইতে
তব বজ্র শিখা
আঁকি দিল দিগ-দিগন্তে যুগান্তরে বিদ্যুত বহ্নিতে
মহামন্ত্র লিখা।
মোগল উষ্ণীয় প্রস্ফুরিল প্রলয় প্রদোষে
পুষ্প পত্র যথা
সেদিনও শোনেনি বঙ্গ মারাঠার সে বজ্রনির্ঘোষে
কি ছিল বারতা।"
শিবাজীর শুধু স্তুতি নয়, ইতিহাস বিকৃতির পক্ষ নিয়ে শিবাজীর পক্ষ নিয়ে রবীন্দ্রনাথ প্রকৃত ইতিহাসকারদের বিদ্রুপ করেছেন। তিনি লিখেছেন,
"বিদেশীর ইতিবৃত্ত দস্যু বলে করে পরিহাস
অট্টহাস্য রবে—
তব পূণ্য চেষ্টা যত তস্করের নিস্ফল প্রয়াস
এই জানে সবে।
অয়ি ইতিবৃত্ত কথা, ক্ষান্ত করো মুখর ভাষণ
ওগো মিথ্যাময়ী,
তোমার লিখন-'পরে বিধাতার অব্যর্থ লিখন
হবে আজি জয়ী।
যাহা মরিবার নহে তাহারে কেমনে চাপা দিবে
তব ব্যঙ্গ বাণী
যে তপস্যা সত্য তারে কেহ বাধা দিবে না ত্রিদিবে
নিশ্চয় সে জানি।"
বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে হিন্দুদের উৎকট ন্যাশনালিজম বা জাতীয়তার প্রকাশ ঘটেছিল। স্বদেশ-জাতীয়তাকে আরাধ্য দেবীতে পরিণত করা হয়েছিল এবং এই আরাধ্য দেবীর জন্য প্রাণ, অর্থ, বিদ্যা, মন, সংসার সব পণ করা হয়েছিল।
... এই হিন্দু-জাতীয়তাবাদী উন্মাদনার সাথে রবীন্দ্রনাথও পুরাপুরি একাত্ম হয়েছিলেন। বঙ্গভঙ্গ বিরোধী দুটি সভায় তিনি সভাপতিত্ব করেন এবং বঙ্গ-ভঙ্গ বাস্তবায়নের দিনকে তিনি 'রাখি বন্ধন' দিবস ঘোষণা করেন। 'রাখি বন্ধন' এর দিন সকালে গঙ্গাস্নানের মিছলের নেতৃত্ব দিলেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ। এই গঙ্গাস্নান অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রনাথ একটা প্রার্থনা সংগীত গাইলেন। সে প্রার্থনা সংগীতে তিনি বললেন—
বাংলার মাটি বাংলার জল
বাংলার হাওয়া বাংলার ফল
পূণ্য হউক পূণ্য হউক।
পূণ্য হউক হে ভগবান।
বাংলার ঘর বাংলার হাট
বাংলার বন বাংলার মাঠ
পূণ্য হউক পূণ্য হউক
পূণ্য হউক হে ভগবান।
বাংগালীর পণ বাংগালীর আশা
বাংগালীর কাজ বাংগালীর ভাষা
সত্য হউক সত্য হউক
সত্য হউক হে ভগবান।
বাংগালীর প্রাণ বাংগালীর মন
বাংগালীর ঘর যত ভাইবোন
এক হউক এক হউক
এক হউক হে ভগবান।
এক সংগীত শেষে বীডন উদ্যানে ও অন্যান্য জায়গায় রাখবন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। বিকালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পার্শী বাগান মাঠে অখণ্ড বাংলার 'বঙ্গভবন' স্থাপনের উদ্দেশ্যে প্রাথমিক ভাবে 'ফেডারেশন হলের' ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করলেন। এখানেও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একটি অভিভাষণ পাঠ করেন। বজ্রদীপ্ত কণ্ঠে উল্লেখ করেন, "যেহেতু বাঙ্গালী জাতির সার্বজনীন প্রতিবাদ অগ্রাহ্য করিয়া পার্লামেন্ট বঙ্গের অঙ্গচ্ছেদ করিয়াছেন সেহেতু আমরা প্রতিজ্ঞা করিতেছি যে, বঙ্গের অঙ্গচ্ছেদের কুফল নাশ করিতে এবং বাঙ্গালী জাতির একতা সংরক্ষণ করিতে আমরা সমস্ত বাঙ্গালী আমাদের শক্তিতে যাহা কিছু সম্ভব তাহার সকলই প্রয়োগ করিব"। (অখণ্ড বাংলার স্বপ্ন', আহসানুল্লাহ, পৃষ্ঠা ৮২, ৮৩)
রবীন্দ্রনাথের এ কথা মিথ্যা হয়নি। 'বন্দেমাতরম' এর খন্ডিত মা'কে অখন্ড করার জন্যে 'প্রাণ, অর্থ, বিদ্যা, মন, সংসার'কে পণ করে যে সন্ত্রাসবাদী আন্দোলন শুরু হয়, তার সাথেও রবীন্দ্রনাথের সম্পর্ক ছিল। "১৯০২ সালে তিনি (শ্রী অরবিন্দ) মারাঠী বিপ্লবী নেতৃবৃন্দের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক স্থাপনের জন্যে তার ছোট ভাই শ্রী যতীন মুখার্জীকে কলকাতায় পাঠান। এ সময়ে যোগেন্দ্র বিদ্যাভুষণ, জ্যোতিন্দ্রনাথ ঠাকুর, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং শিবনাথ শাস্ত্রী বাংলার বিপ্লবী দলের সাথে সম্পর্কযুক্ত হন"। ['স্বাধীনতা সংগ্রামে চট্টগ্রাম' পুর্নেন্দু দস্তিদার।] রবীন্দ্রনাথ নিজেও একথা বলেছেন, "আমাদের দেশে যখন স্বদেশী আন্দোলন উপস্থিত হয়েছিল, তখন আমি তার মধ্যে ছিলাম। মুসলমানরা তখন তাতে যোগ দেয়নি, বিরুদ্ধে ছিল"। (রবীন্দ্র রচনাবলী, ২৪শ খণ্ড, পৃষ্ঠা-৩৩)
... স্বদেশীদের সাহায্য পুষ্ট হয়ে হিন্দু মহাসভা এবং কংগ্রেস ইংরেজ সরকারের উপর প্রবল চাপ সৃষ্টি করতে পেরেছিল। এই চাপই ইংরেজ সরকারকে বাধ্য করল বঙ্গভঙ্গ রদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে। স্বয়ং বৃটিশ সম্রাট পঞ্চম জর্জের বক্তব্যেই এর নিশ্চিত প্রমাণ মিলে। সম্রাট পঞ্চম জর্জ ভারতের ভাইসরয়, লর্ড হার্ডিঞ্জকে লিখেন, "আমি আশা করি আপনি ভারতের বিজ্ঞ ব্যক্তিদের সাথে পরামর্শ করে সম্রাটের প্রথম ভারত সফরকে কিভাবে অবিস্মরণীয় করে রাখা যায় সে সর্বাত্মক কর্মসূচী প্রণয়ন ও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে যত্নবান হবেন। বাঙালীদের (বাংগালী হিন্দু) সন্তুষ্ট করার জন্যে বোম্বাই এবং মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সীর মত উভয় বাংলাকে একত্র করা যায় কিনা সে বিষয়েও বিচার বিবেচনা করবেন। ... বাংলার বিরাজমান অসন্তোষ, রাষ্ট্রবিরোধী সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ উপশম এবং দেশের ক্রমবর্ধমান ব্যয়ভার লাঘবে এই পদক্ষেপ একটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করবে বলে আমি বিশ্বাস করি"।"[ভাইসরয়ের প্রতি সম্রাট, ডিসেম্বর ১৬, ১৯১০, HP. ১০৪ ('বঙ্গভঙ্গ', মুনতাসির মামুন, পৃষ্ঠা ৭৭, ৭৮)।]
হিন্দুদের চাপই অবশেষে কার্যকরী হয়েছিল। সম্রাট যে ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন তাঁর ভাইসরয়-এর কাছে, তা-ই তিনি কার্যকরী করেছিলেন ১৯১১ সালের ১২ই ডিসেম্বর তাঁর দিল্লী দরবারে বঙ্গভঙ্গ রদের ঘোষণা দানের মাধ্যমে। বঙ্গভঙ্গ রদের ক্ষেত্রে হিন্দুদের চাপ ও অসন্তোষের কথা বিবেচনা করা হলো, কিন্তু মুসলমানদের হৃদয় যে ভেংগে গেল তার প্রতি ভ্রুক্ষেপ করা হলো না। এইভাবে হিন্দুদের হিংসারই জয় হলো। ['বাঙালী হিন্দুদের বাংলা বিভাগের বিরোধিতা করায় প্রধান কারণ ছিল, পূর্ব বঙ্গে বাঙালী মুসলমানরা যাতে যোগ্য স্থান না পেতে পারে, সেই আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন'। (পাকিস্তান অর পার্টিশন অব ইন্ডিয়া', আম্বেদকর, পৃষ্ঠা ১১০)।]
কিন্তু এই হিংসা দুই জাতিকে দুই প্রান্তে ঠেলে দিল। '১৯০৫-এর বঙ্গ-ভঙ্গ বিরোধী আন্দোলন শুধু বাংলায় নয়, সারা ভারতবর্ষে সৃষ্টি করলো দুটি জাতীয়তাবাদ -একটি হিন্দু, অপরটি মুসলমান'।['ভারত কি করে ভাগ হলো', বিমলানন্দ শাসমল' হিন্দুস্তান বুক সার্ভিস, কলিকাতা, পৃষ্ঠা ২৪।] শুধু তাই নয় ডঃ আম্বেদকরের মতে বাংলা বিভাগের বিরোধিতা করে এবং সেই সঙ্গে স্বরাজলাভের দাবী করে তারা (হিন্দুরা) একদিন মুসলমানদের পূর্ব ও পশ্চিম উত্তর ভারতের শাসক করে তুলবেন।['পাকিস্তান অর পার্টিশন অব ইন্ডিয়া, 'ডঃ আম্বেদকর, পৃষ্ঠা ১১০। সিলেবাস বিতর্ক এবং অতীত ষড়যন্ত্রের কাহিনী' শীর্ষক নিবন্ধে উদ্ধৃত করেছেন। তার নিবন্ধটি প্রকাশিত হয় দৈনিক সংগ্রামের ২৬শে এপ্রিল, ১৯৯৩ সংখ্যায়।] ডঃ আম্বেদকরের এই উক্তির অর্ধেকটা সত্যে পরিণত হয়েছে ইতিমধ্যেই।
সংখ্যাগুরু হিন্দুদের হিংসা এবং মুসলমানদের সর্বনাশ দেখার জেদ বঙ্গভঙ্গ রদ করেই শেষ হয়ে গেলনা এবং মর্লি-মিণ্টো সংস্কারের পৃথক নির্বাচন ও মুসলমানদের স্বতন্ত্র প্রতিনিধিত্ব-সুযোগের বিরোধিতা অব্যাহত রাখার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকলোনা, মুসলিম বিরোধী তাদের সহিংস মন ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্তও মেনে নিতে পারলো না। উল্লেখ্য, বঙ্গভঙ্গ রদের পর মুসলমানদের স্বান্তনা দেবার জন্যে ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত ভারত সরকার ১৯১২ সালের ২রা ফেব্রুয়ারী ঘোষণা করেন।
এই সিদ্ধান্ত ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমে পড়ল হিন্দুরা। ১৯১২ সালের ২৮শে মার্চ কলকাতায় গড়ের মাঠে ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করে তারা সভা করল। এই সভায় সভাপতিত্ব করলেন স্বয়ং কবি রবীন্দ্রনাথ। বিস্ময়ের ব্যাপার, পূর্ববঙ্গে যে রবীন্দ্রনাথের বিশাল জমিদারি চিল, সে রবীন্দ্রনাথও তার মুসলিম প্রজারা বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে শিক্ষিত হোক তা চাননি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সেদিন একাট্টা হয়ে প্রচারে নেমেছিল হিন্দু সংবাদপত্রগুলো। হিন্দু বুদ্ধিজীবী ও নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ বিভিন্ন শহরে মিটিং করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাশ করে পাঠাতে লাগলেন বৃটিশ সরকারের কাছে। [দ্রষ্টব্যঃ Calcutta University Commission report. Vol. IV পৃষ্ঠা ১১২, ১৫১।] 'এভাবে বাবু গিরীশচন্দ্র ব্যানার্জী, ডঃ স্যার রাসবিহারী ঘোষ এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর স্যার আশুতোষ মুখার্জীর নেতৃত্বে বাংলার এলিটগণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে ১৮ বার স্মারক লিপি সহকারে তদানীন্তন ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জ-এর উপর চাপ সৃষ্টি করলেন। ডঃ স্যার রাসবিহারী ঘোষের নেতৃত্বে হিন্দু প্রতিনিধিগণ বড় লাটের কাছে এই বলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে যুক্তি প্রদর্শন করলেন যে, পূর্ব বাংলার মুসলমানগণ অধিকাংশই কৃষক। অতএব বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করলে তাদের কোন উপকার হবে না।–[দ্রষ্টব্যঃ Calcutta University Commission report. Vol. IV পৃষ্ঠা ১১৩।]
বঙ্গভঙ্গ রদ আন্দোলনের সময় মুসলিম স্বার্থের বিরুদ্ধে সব হিন্দু যেমন এক হয়েছিল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধিতার ক্ষেত্রেও তাই হলো। পূর্ববঙ্গের, এমনকি ঢাকার হিন্দুরাও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাকে বাধা দেবার জন্যে এগিয়ে এল। 'A History of Freedom Movement' গ্রন্থে বলা হয়েছে, The Controversy that started on the Proposal for founding a university at Dacca, throws interesting on the attitude of the Hindis and Muslims. About two hundred prominent Hindis of East Bengal, headed by Babu Ananda Chandra Ray, the leading pleder of Dacca, submitted a memorial to the Viceroy vehemently against the establishment of a University at Dacca For a long time afterwards. They tauntingly termed this University as 'Mecca University'.['A History of the Freedom Movement', গ্রন্থের চতুর্থ খণ্ডের Dacca University; Its role in Freedom Movement' শীর্ষক অধ্যায়, পৃষ্ঠা ১০ (Published in 1970).] অর্থাৎ 'ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রস্তাব যে বিতর্কের সৃষ্টি করল তাতে হিন্দু ও মুসলমানদের ভূমিকা সম্পর্কে মজার তথ্য প্রকাশ পেল। পূর্ব বাংলার প্রায় দুই'শ গণ্যমান্য হিন্দু ঢাকার প্রখ্যাত উকিল বাবু আনন্দ চন্দ্র রায়ের নেতৃত্বে ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের তীব্র বিরোধিতা করে ভাইসরয়কে একটি স্মারক লিপি দিয়েছিল। পরে দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে 'মক্কা বিশ্ববিদ্যালয়' বলে বিদ্রুপ করা হতো'।
হিন্দুদের এই সর্বাত্মক বিরোধিতা সত্বেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি তাদের বিরোধিতা ও ঘৃণা তারা অব্যাহতই রাখল। এর একটা সুন্দর প্রমাণ পাই আমরা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাস ও সংস্কৃতি অধ্যাপক শ্রী দেবদত্ত রামকৃষ্ণ ভাণ্ডারকর' এর বক্তব্যে। শ্রীভাণ্ডারকর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে দেওয়া তার এক বক্তৃতায় বলেন "কলিযুগে বৃদ্ধগঙ্গা নদীর তীরে হরতগ নামক একজন অসুর জন্ম গ্রহণ করবে। মূল গঙ্গার তীরে একটি পবিত্র আশ্রম আছে। সেখানে অনেক মুনি-ঋষি এবং তাদের শিষ্যগণ বাস করে। এই অসুর সেই আশ্রমটি নষ্ট করার জন্যে নানা রকম প্রলোভন দেখিয়ে একে একে অনেক শিষ্যকে নিজ আশ্রমে নিয়ে যাবে। যারা অর্থ লোভে পূর্বের আশ্রম ত্যাগ করে এই অসুরের আকর্ষণে বৃদ্ধ গঙ্গার তীরে যাবে, তারাও ক্রমে অসুরত্ব প্রাপ্ত হবে এবং তারা অশেষ দুর্দশাগ্রস্ত হবে'। [শ্রী ভাণ্ডারকর এই উক্তিটি ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদার তার স্মৃতিকথা 'জীবনের স্মৃতিদ্বীপে' উল্লেখ করেছেন। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে সভায় শ্রী ভাণ্ডারকরের এ উক্তি করেন, সে সভায় ডক্টর রমেশচন্দ্র মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।]
পরিস্কার যে, শ্রী ভাণ্ডারকর এই বক্তব্যে 'হরতগ' বলতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ভাইস চ্যান্সেলর মিঃ ফিলিপ 'হরতগ' কে বুঝিয়েছেন। মিঃ হরতগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা থেকে শুরু করে দীর্ঘ ২৫ বছর ভাইস চ্যান্সেলর ছিলেন। শ্রী ভাণ্ডারকরের বক্তব্যে হরতগ-এর 'আশ্রম' বলতে বুঝানো হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে। আমাদের 'বুড়িগঙ্গা' হয়েছে শ্রী ভাণ্ডারকরের বক্তব্যে 'বৃদ্ধাগঙ্গা'। আর মূল গঙ্গা-তীরের 'পবিত্র আশ্রম' বলতে শ্রী ভাণ্ডারকর বুঝিয়েছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে। শ্রী ভাণ্ডারকরের কথায় ঢাকা অর্থাৎ পূর্ববাংলা অসুরদের স্থান। পবিত্র স্থান কলকাতা থেকে যেসব ঋষি শিষ্য ঢাকায় চাকুরী করতে আসবেন তারাও অসুর হয়ে যাবে। এ থেকেই বুঝা যায়, মুসলমানদর প্রতি শ্রী ভাণ্ডারকরদের বৈরিতা কত তীব্র, ঘৃণা কত গভীর।
তাদের এ বৈরিতার কারণে উপযুক্ত বরাদ্দের অভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ভীষণ অর্থকষ্ট ভোগ করতে হয় এবং অঙ্গহানিও হয়েছিল। ডক্টর রমেশচন্দ্র মজুমদার-এর ভাষায় "(ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায়) মুসলমানরা খুবই খুশী হলেন বটে, কিন্তু হিন্দুদের মনে তীব্র অসন্তোষ দেখা দেয়। তারা এর বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করলেন। সাধারণত যারা রাজনৈতিক আন্দোলন থেকে দূরে থাকতেন, তারাও এবার এই প্রতিবাদ আন্দোলনে যোগ দিলেন। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন রাস বিহারী ঘোষ ও গুরুদাস বন্দোপাধ্যয়। তাদের প্রধান যুক্তি হলো এই যে, প্রশাসন ক্ষেত্রে বঙ্গভঙ্গ রহিত হয়েছে বটে, কিন্তু তার বদলে এখন একটি সাংস্কৃতিক বিভাগ করা হচ্ছে। ফলে, এতে গুরুতর বিপদের সম্ভাবনা রয়েছে। ক্রমে এই আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করলে বড় লাট লর্ড হার্ডিঞ্জ হিন্দুদের এই বলে আশ্বাস দিলেন যে, তাদের এমন আশংকার কোন কারণ নেই। ঢাকায় যে বিশ্ববিদ্যালয় হবে তার ক্ষমতা ও অধিকার ঢাকা শহরের দশ মাইল পরিধির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে"। ['জীবনের স্মৃতিদ্বীপে', ডক্টর রমেশচন্দ্র মজুমদার।]
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলেও এই ভাবে হিন্দুরা একে 'ঠুটো জগন্নাথে' পরিণত করে রাখার ব্যবস্থা করেছিল। সবচেয়ে বিস্ময়ের ব্যাপার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সিন্ডিকেটে হিন্দু যারা নির্বাচিত হয়ে আসতেন তারাও বিশ্ব-বিদ্যালয়ের বৈরিতা ত্যাগ করতেন না, তাদের ভোট বিশ্ববিদ্যালয়কে ক্ষতিগ্রস্ত করারই চেষ্টা করত। ডক্টর রমেশচন্দ্র লিখছেন, "ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কোর্টের (সিনেটর) সদস্যদের মধ্যে অর্ধেক ছিলো মুসলমান এবং অর্ধেক ছিলেন হিন্দু। প্রফেসররা কোর্টের সদস্য ছিলেন। বার লাইব্রেরীর অনেক উকিল রেজিষ্টার্ড গ্রাজুয়েটদের দ্বারা নির্বাচিত হয়ে এর সভ্য হতেন। ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনকে হিন্দুরা ভাল চোখে দেখেনি, একথা পূর্বেই বলেছি। কারণ হিন্দুদের বিশ্বাস ছিল বঙ্গভঙ্গ রহিত রকায় মুসলমানদের যে ক্ষতি হয়েছে, অনেকটা তা পূরণ করার জন্যই এই নতুন বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রীতির চোখে দেখেননি। বাইরে এ বিষয়ে যে আলোচনা হত কোর্টের সভায় হিন্দু সভ্যতের বক্তৃতায় তা প্রতিফলিত হত। অবশ্য ভোটের সময় জয়লাভের ব্যাপারে আমরা অনেকটা নিশ্চিত ছিলাম। মুসলমান সদস্য এবং হিন্দু শিক্ষক সদস্যরা একত্রে হিন্দু সদস্যদের চেয়ে অনেক বেশী ছিলেন"। ['জীবনের স্মৃতিদ্বীপে', ডক্টর রমেশচন্দ্র মজুমদার।]
সংখ্যাগুরু হিন্দুরা মুসলমানদের কোন ভালই সহ্য করতে পারেনি। মুসলিম লীগ গঠন তাদের চক্ষুশূলে পরিণত হয়েছিল, মর্লি-মিণ্টোর শাসন-সংস্কারে মুসলমানদের স্বতন্ত্র প্রতিনিধিত্বের সুযোগ তারা বরদাশত করেনি, বঙ্গভঙ্গের ফলে মুসলমানদের যে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল, তাকে তারা সহ্য করতে পারেনি এবং ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ও তাদের সহ্য হলোনা। ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধিতার মধ্য দিয়ে মুসলমানদের প্রতি হিন্দু মনোভাব সবচেয়ে নগ্নভাবে ফুটে উঠেছে। তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মধ্যে 'গুরুতর বিপদ' অবলোকন করেছে। এই 'গুরুতর বিপদ'টা কি? সেটা মুসলমানদের উন্নতি ও উত্থান। অর্থাৎ হিন্দুরা হয়ে উঠেছিল মুসলমানদের অস্তিত্বের বিরোধী, যা মাথা তুলেছিল শিবাজী, স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী, শ্রী অরবিন্দের আন্দোলনে। সংখ্যাগুরু হিন্দুদের উত্থিত এই সংহার মূর্তিই সেদিন মুসলমানদের রাজনৈতিক আন্দোলনে তাদের আত্মরক্ষার সংগ্রামকেই অপরিহার্য করে তুলেছিল॥"

- আবুল আসাদ / একশ' বছরের রাজনীতি ॥ [ বাংলাদেশ কো-অপারেটিভ বুক সোসাইটি - মে, ২০১৪ । পৃ: ৬০-৭৪ ]

https://www.facebook.com/permalink.php?story_fbid=991270227552857&id=368401646506388&substory_index=0

__._,_.___

No comments:

मैं नास्तिक क्यों हूं# Necessity of Atheism#!Genetics Bharat Teertha

হে মোর চিত্ত, Prey for Humanity!

मनुस्मृति नस्ली राजकाज राजनीति में OBC Trump Card और जयभीम कामरेड

Gorkhaland again?আত্মঘাতী বাঙালি আবার বিভাজন বিপর্যয়ের মুখোমুখি!

हिंदुत्व की राजनीति का मुकाबला हिंदुत्व की राजनीति से नहीं किया जा सकता।

In conversation with Palash Biswas

Palash Biswas On Unique Identity No1.mpg

Save the Universities!

RSS might replace Gandhi with Ambedkar on currency notes!

जैसे जर्मनी में सिर्फ हिटलर को बोलने की आजादी थी,आज सिर्फ मंकी बातों की आजादी है।

#BEEFGATEঅন্ধকার বৃত্তান্তঃ হত্যার রাজনীতি

अलविदा पत्रकारिता,अब कोई प्रतिक्रिया नहीं! पलाश विश्वास

ভালোবাসার মুখ,প্রতিবাদের মুখ মন্দাক্রান্তার পাশে আছি,যে মেয়েটি আজও লিখতে পারছেঃ আমাক ধর্ষণ করবে?

Palash Biswas on BAMCEF UNIFICATION!

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS ON NEPALI SENTIMENT, GORKHALAND, KUMAON AND GARHWAL ETC.and BAMCEF UNIFICATION! Published on Mar 19, 2013 The Himalayan Voice Cambridge, Massachusetts United States of America

BAMCEF UNIFICATION CONFERENCE 7

Published on 10 Mar 2013 ALL INDIA BAMCEF UNIFICATION CONFERENCE HELD AT Dr.B. R. AMBEDKAR BHAVAN,DADAR,MUMBAI ON 2ND AND 3RD MARCH 2013. Mr.PALASH BISWAS (JOURNALIST -KOLKATA) DELIVERING HER SPEECH. http://www.youtube.com/watch?v=oLL-n6MrcoM http://youtu.be/oLL-n6MrcoM

Imminent Massive earthquake in the Himalayas

Palash Biswas on Citizenship Amendment Act

Mr. PALASH BISWAS DELIVERING SPEECH AT BAMCEF PROGRAM AT NAGPUR ON 17 & 18 SEPTEMBER 2003 Sub:- CITIZENSHIP AMENDMENT ACT 2003 http://youtu.be/zGDfsLzxTXo

Tweet Please

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS BLASTS INDIANS THAT CLAIM BUDDHA WAS BORN IN INDIA

THE HIMALAYAN TALK: INDIAN GOVERNMENT FOOD SECURITY PROGRAM RISKIER

http://youtu.be/NrcmNEjaN8c The government of India has announced food security program ahead of elections in 2014. We discussed the issue with Palash Biswas in Kolkata today. http://youtu.be/NrcmNEjaN8c Ahead of Elections, India's Cabinet Approves Food Security Program ______________________________________________________ By JIM YARDLEY http://india.blogs.nytimes.com/2013/07/04/indias-cabinet-passes-food-security-law/

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS TALKS AGAINST CASTEIST HEGEMONY IN SOUTH ASIA

THE HIMALAYAN VOICE: PALASH BISWAS DISCUSSES RAM MANDIR

Published on 10 Apr 2013 Palash Biswas spoke to us from Kolkota and shared his views on Visho Hindu Parashid's programme from tomorrow ( April 11, 2013) to build Ram Mandir in disputed Ayodhya. http://www.youtube.com/watch?v=77cZuBunAGk

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS LASHES OUT KATHMANDU INT'L 'MULVASI' CONFERENCE

अहिले भर्खर कोलकता भारतमा हामीले पलाश विश्वाससंग काठमाडौँमा आज भै रहेको अन्तर्राष्ट्रिय मूलवासी सम्मेलनको बारेमा कुराकानी गर्यौ । उहाले भन्नु भयो सो सम्मेलन 'नेपालको आदिवासी जनजातिहरुको आन्दोलनलाई कम्जोर बनाउने षडयन्त्र हो।' http://youtu.be/j8GXlmSBbbk

THE HIMALAYAN DISASTER: TRANSNATIONAL DISASTER MANAGEMENT MECHANISM A MUST

We talked with Palash Biswas, an editor for Indian Express in Kolkata today also. He urged that there must a transnational disaster management mechanism to avert such scale disaster in the Himalayas. http://youtu.be/7IzWUpRECJM

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS CRITICAL OF BAMCEF LEADERSHIP

[Palash Biswas, one of the BAMCEF leaders and editors for Indian Express spoke to us from Kolkata today and criticized BAMCEF leadership in New Delhi, which according to him, is messing up with Nepalese indigenous peoples also. He also flayed MP Jay Narayan Prasad Nishad, who recently offered a Puja in his New Delhi home for Narendra Modi's victory in 2014.]

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS CRITICIZES GOVT FOR WORLD`S BIGGEST BLACK OUT

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS CRITICIZES GOVT FOR WORLD`S BIGGEST BLACK OUT

THE HIMALAYAN TALK: PALSH BISWAS FLAYS SOUTH ASIAN GOVERNM

Palash Biswas, lashed out those 1% people in the government in New Delhi for failure of delivery and creating hosts of problems everywhere in South Asia. http://youtu.be/lD2_V7CB2Is

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS LASHES OUT KATHMANDU INT'L 'MULVASI' CONFERENCE

अहिले भर्खर कोलकता भारतमा हामीले पलाश विश्वाससंग काठमाडौँमा आज भै रहेको अन्तर्राष्ट्रिय मूलवासी सम्मेलनको बारेमा कुराकानी गर्यौ । उहाले भन्नु भयो सो सम्मेलन 'नेपालको आदिवासी जनजातिहरुको आन्दोलनलाई कम्जोर बनाउने षडयन्त्र हो।' http://youtu.be/j8GXlmSBbbk