Welcome

Website counter
website hit counter
website hit counters

Thursday, January 17, 2013

অন্ধ দেশভক্তি ও ধর্মান্ধ জাতীয়তাবাদের আবাহন, সন্ধিপুজা কি ভাবে সংস্কার কর্মসুচি রুপায়ণে সহায়ক, ডিজেল বিনিয়ন্ত্রণ তাহাই প্রমাণিত করিল।বাঙ্গালি ঠিক মজে আছে রাজ্যে ক্ষমতার লড়াইয়ে! বিপ্লব এখন রাস্তায় হয় না, টিভি চ্যানেলেই হয়। অনুসুচিত জনগোষ্ঠীসমুহকে পদোন্নতিতে সংরক্ষণ 2006 সাল পর্যন্ত অবাধ চালু ছিল, সুপ্রিম কোর্টের ফতোয়ায় যা বাধিত হয়, সেই বাধা কাটাতে যে বিল আনা হয় তাংকে সংরক্ষন ভিলের নাম দিযে মীডিয়ার সৌজন্যে আর এক দফা সংরক্ষণবিরোধী আন্দোলন নানা রঙ নিয়ে শুরু হয়। বিল পাস না করার জন্য মেয়াদের দু দু দিন আগেই লোকসভার সত্রাবসান হয়ে যায়। অথচ পি চিদাম্বরম একীকৃত জিএসটির জন্য সংবিধান সংশোধনের ঘোষণাই করে দিলেন বাঝেট ্ধিবেশনের প্রস্তুতি হিসাবে। তিনটি ভর্তুকির গ্যাস সিলিন্ডারের মূল্য কিন্তু বহুগুণ বেশী দিতে হচ্ছে আম জনতাকে, যেহেতু গোটা পরিবহন পরিষেবা ব্যবস্থাই ডিজেলের সঙ্গে।সিলিন্ডার কমিয়ে বাড়িয়ে আমাদের গাধা বানিয়ে সেষ পর্যন্ত ডিডেলের দাম বাজারের হাতে ছেড়ে দিয়ে কিসিতিতে আমাদের জবাই করারই ইন্তজাম করল এই ব্রাহ্মণ্যতন্ত্র। পলাশ বিশ্বাস

 সরকার-তেল সংস্থাগুলির বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত হয় প্রতি মাসে লিটার প্রতি ৫০ পয়সা করে বাড়ানো হবে ডিজেলের দাম বিপ্লব এখন রাস্তায় হয় না, টিভি চ্যানেলেই হয়। অনুসুচিত জনগোষ্ঠীসমুহকে পদোন্নতিতে সংরক্ষণ 2006 সাল পর্যন্ত অবাধ চালু ছিল, সুপ্রিম কোর্টের ফতোয়ায় যা বাধিত হয়, সেই বাধা কাটাতে যে বিল আনা হয় তাংকে সংরক্ষন ভিলের নাম দিযে মীডিয়ার সৌজন্যে আর এক দফা সংরক্ষণবিরোধী আন্দোলন নানা রঙ নিয়ে শুরু হয় বিল পাস না করার জন্য মেয়াদের দু দু দিন আগেই লোকসভার সত্রাবসান হয়ে যায়। অথচ পি চিদাম্বরম একীকৃত জিএসটির জন্য সংবিধান সংশোধনের ঘোষণাই করে দিলেন বাঝেট ্ধিবেশনের প্রস্তুতি হিসাবে। তিনটি ভর্তুকির গ্যাস সিলিন্ডারের মূল্য কিন্তু বহুগুণ বেশী দিতে হচ্ছে আম জনতাকে, যেহেতু গোটা পরিবহন পরিষেবা ব্যবস্থাই ডিজেলের সঙ্গে।সিলিন্ডার কমিয়ে বাড়িয়ে আমাদের গাধা বানিয়ে সেষ পর্যন্ত ডিডেলের দাম বাজারের হাতে ছেড়ে দিয়ে কিস্তিতে আমাদের জবাই করারই ইন্তজাম করল এই ব্রাহ্মণ্যতন্ত্র

জওয়ান হত্যার অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত কোনও রকম আলোচনায় যাওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিল ভারত, অর্থাত যুদ্ধ উন্মাদনা চলছে চলবে, বিশ্বের সব যুদ্ধ ব্যবসায়ীদের জন্য উন্মুক্ত হতে চলেছে ভারতীয় অস্ত্র বাজার।সংঘ পরিবারের ভাবী প্রধানমন্ত্রী ত ভাইব্রান্ট গুজরাত শিল্পসম্মেলনে খোলাখুলিই গুজরাতে প্রতিরক্ষা শিল্পের জন্য অবারিত দা্বার করেই দিয়েছেন। মোদীর কৃতিত্বে এই যুদ্দ যুদ্দ খেলায় কার লাভ বোঝা সহজ হল। ওদিকে পাকিস্তানে সামরিক কর্তৃত্ব ও ধর্মান্ধ জাতীযতাবাদ গণতন্ত্রের টুঁটি টিপে ধরতে উদ্যত।এই উপমহাদেশে যুদ্দের দামামা বাঁচলে রেহাই পাবে না কেউই, এমনকি বাংলাদেশও না।দেশভক্তির উন্মাদনা অন্ধ দেশভক্তি ও ধর্মান্ধ জাতীয়তাবাদের আবাহন, সন্ধিপুজা কি ভাবে সংস্কার কর্মসুচি রুপায়ণে সহায়ক, ডিজেল বিনিয়ন্ত্রণ তাহাই প্রমাণিত করিল

পলাশ বিশ্বাস


জওয়ান হত্যার অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত কোনও রকম আলোচনায় যাওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিল ভারত, অর্থাত যুদ্ধ উন্মাদনা চলছে চলবে, বিশ্বের সব যুদ্ধ ব্যবসায়ীদের জন্য উন্মুক্ত হতে চলেছে ভারতীয় অস্ত্র বাজার।সংঘ পরিবারের ভাবী প্রধানমন্ত্রী ত ভাইব্রান্ট গুজরাত শিল্পসম্মেলনে খোলাখুলিই গুজরাতে প্রতিরক্ষা শিল্পের জন্য অবারিত দা্বার করেই দিয়েছেন। মোদীর কৃতিত্বে এই যুদ্দ যুদ্দ খেলায় কার লাভ বোঝা সহজ হল। ওদিকে পাকিস্তানে সামরিক কর্তৃত্ব ও ধর্মান্ধ জাতীযতাবাদ গণতন্ত্রের টুঁটি টিপে ধরতে উদ্যত।এই উপমহাদেশে যুদ্দের দামামা বাঁচলে রেহাই পাবে না কেউই, এমনকি বাংলাদেশও না।অন্ধ দেশভক্তি ও ধর্মান্ধ জাতীয়তাবাদের আবাহন, সন্ধিপুজা কি ভাবে সংস্কার কর্মসুচি রুপায়ণে সহায়ক, ডিজেল বিনিয়ন্ত্রণ তাহাই প্রমাণিত করিল

বেঙ্গল লিডসের সমাপ্তি অনুষ্ঠান। রাজ্যে শিল্পে বিনিয়োগ টানতে সরকারের তরফে নেওয়া উদ্যোগ। তবে সেই মঞ্চেই রাজ্য সরকারের জমিনীতি এবং রাজ্যে শিল্পের পরিকাঠামো নিয়ে উদ্বেগের সুর রাজ্যপালের গলায়।

জমি অধিগ্রহণ এবং শিল্পের পরিকাঠামো নিয়ে শিল্পপতিদের আশঙ্কার কথাই যেন সরকারের কানে তুলতে চাইলেন রাজ্যপাল। পাশাপাশি শিল্পপতিদের এবং সরকারের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্কে আরও জোর দেওয়ার পরামর্শ দেন রাজ্যপাল।



ডিজেলের দাম বিনিয়ন্ত্রণ করাই ছিল আসল কাজ।রান্নার গ্যাসের ভর্তুকি কমানো বাড়ানো জনগণের চোকে ধুলো দেওয়ার জন্যই। কেন্দ্র সরকার সংস্কারের পথে সাধারণ মানুষের কথা একটুও ভাবছে না।এটা আবার প্রমাণ হল।মজার কথা, আর্থিক বৃদ্ধি ও রাজকোষ ঘাটতি নিয়ে পরস্পরবিরোধী তথ্য দিয়ে সংস্কার কর্মসুচিকে বৌধতা দেওয়ার কাজ চলছে।বিশ্বব্যান্কের রিপোর্ট অনুযায়ী আমরা  আর্থিক বৃদ্ধিতে নাকি চিনের থেকে এগিয়ে। আবার স্বপ্ন আমদানী হচ্ছে 2050 সাল পর্যন্ত নাকি সবচেয়ে বড়দের মাঝে শামিল হবে ভারতীয় অর্থব্যবস্থা এতই যদি উন্নয়নমুখী ভারতবর্ষ গণশত্রু অর্থনীতিবিদদের বিশ্বব্যান্ক আইএমএফ গোলামদের রাজত্বে, তাহলে জনগণ তার সুফল থেকে বন্চিত কেন? ভারতবর্ষ আজও বেঁচে আছে শুধু এই জন্য যে কর্তৃত্ব কৃষিকে শেষ করে দেোয়ার জন্য সবরকম চেষ্টা চালিয়ে গেলেও ভারতীয় অর্থব্যবস্থা কিন্তু এখনও কৃষি নির্ভর, কৃষি নির্ভর জনগোষ্ঠীগুলি এখনও বাজারের কর্তৃত্বের বাইরে।2008 সালের মন্দা ভারতে প্রভাব ফেলতে পারেনি যেহেতু শেয়ার বাজারের সঙ্গে আম জনতার যোগাযোগ একেবারেই ছিল না। ইতিমধ্যে কিন্তু শাসকশ্রেণী ভারতীয় কৃষি নির্ভর স্বনির্ভর গ্রাম্য ভূগোলকে বাজারে পরিণত করতে কোনও চেষ্টা বাকি রাখে নি।ভোগ সংস্কৃতির দৌলতে গ্রাম আর স্বনির্ভর নেই। এখন গ্রামেও টাকা ছাড়া বসবাস চলে না।সবকিছুই কিনতে হয়।স্বাস্থ, শিক্ষা, যোগাযোগ, খাদ্য সহ যাবতীয় পরিষেবা বাজারের আওতায়, তাই গ্রামেও বেঁচে থাকতে হলে টারকার গুরুত্ব অপরিসীম।2008 এর তুলনায় ফিস্কল ক্লিফ কিন্তু ভারতীয় অর্থব্যবস্থার পর অনেক বেশী প্রভাব ফেলবে।ইতিমধ্যে বীমা, ব্যান্ক, পেনশন , পিএফ এমনকি পেনশনও বাজারে লগ্নি হতে শুরু করেছে।সরকারী প্রতিষ্ঠানের বেসরকারিকরণ চুড়ান্ত। খুচরো বাজারে এফডিআই চালু। কন্ট্রাক্ট নীলচাষের মত চাষবাষ ও বাজার কেন্দ্রিত হতে চলেছে। অভূতপূর্ব খাদ্যসঙ্কট গ্লোবাল ওয়ার্মিং ও জলবায়ু বিপর্যয়ের মুখে শুধু সময়ের হেরফের, অনিবার্য।সরকার পুঁজিপতিদের ট্যাক্সে ছাড় দেওয়ার জন্য গারকে 2016 সাল পর্যন্ত বিলম্বিত করার ঘোষণা করে পিদেশী পুঁজির আস্থা অর্জন করছে৤ প্রতি বছর লাখ লাখ কোটি টাকা ট্যাক্সে ছাড় দেওয়া হয় শাসকশ্রেণীকে, তাঁর ফলে সেই 1947 থেকে নিয়মিত বিদেশী ঋণ নিয়ে ব্যালেন্স অফ পেমেন্ট করা হয়, তবু রাজকোষে নিয়মিত ঘাটতি থেকে যায়। বিদেশী ঋণের সুদ দিতে ব্যয় হয়ে যায় ল7 লক্ষকোটি টাকা প্রতি বছর ঋণ শোধ হয় না। ঋণের বোঝা ক্রমে ক্রমে বাড়তে থাকে।অথছ বাজেট তৈরি হয় সাদারণ মানুষের ঘাড়ে অর্তসঙ্কডের দায় চাপাতেই।করপোরেট লবিইং অনুযায়ী নীতিনির্ধারণে গণবিরোধী সংস্কার চলছেই, চলবে।রাষ্ট্রীয় আয়ের সিংহ ভাগ ব্যয় হয় সরকার চালাবার খরচে, কর্মচারি ও সৈন্যবাহিনীর বেতনে। বাকী যা পড়ে থাকে তা বরাদ্দ হয় যুধ্দ ও গৃহযুদ্ধের খাতে প্রতিরক্ষা ও আন্তরিক সুরক্ষার নামে। লোক কল্যাণকারী রাজ্যের মৃত্যু হয়েছে বহুত দিন। প্রজার অস্তিত্ব দমনকারি আগ্রারাসী করপোরেট ধর্ম জাতীয়তাবাদী জায়নবাদী রাষ্ট্রের নখের আঁচড়ে ক্ষত বিশক্ষত। শুধু বেঁচে বর্তে আছে শহর কেন্দ্রিক রাজধানীকেন্দ্রিক ক্ষমতার কারোবারি দরবারি শহুরে বাজরি নাগরিক সুশীল সমাজ।তারাই এবং অবশ্যিই শাষকশ্রেণীর গর্ভজাত ব্রাহ্মণ্যতন্ত্রের সোনার চামচধারী অর্থনীতিবিদরা জনগণের হিতাহিত বিবেচনা করে রাজকাজে অমোঘ মনুস্মৃতি বিধান জারি করে।ফলে সংখ্যালঘু সরকার সংস্কারে সংসদীয় বৈধতা পায় পদে পদে সর্বদলীয সহমতিতে। শুধু ভোটব্যান্কের গণিত অনুযায়ী চ্যানেলে চ্যানেলে বিতর্কের সুড়সুড়ি।বিপ্লব এখন রাস্তায় হয় না, টিভি চ্যানেলেই হয়। অনুসুচিত জনগোষ্ঠীসমুহকে পদোন্নতিতে সংরক্ষণ 2006 সাল পর্যন্ত অবাধ চালু ছিল, সুপ্রিম কোর্টের ফতোয়ায় যা বাধিত হয়, সেই বাধা কাটাতে যে বিল আনা হয় তাংকে সংরক্ষন ভিলের নাম দিযে মীডিয়ার সৌজন্যে আর এক দফা সংরক্ষণবিরোধী আন্দোলন নানা রঙ নিয়ে শুরু হয় বিল পাস না করার জন্য মেয়াদের দু দু দিন আগেই লোকসভার সত্রাবসান হয়ে যায়। অথচ পি চিদাম্বরম একীকৃত জিএসটির জন্য সংবিধান সংশোধনের ঘোষণাই করে দিলেন বাঝেট ্ধিবেশনের প্রস্তুতি হিসাবে। তিনটি ভর্তুকির গ্যাস সিলিন্ডারের মূল্য কিন্তু বহুগুণ বেশী দিতে হচ্ছে আম জনতাকে, যেহেতু গোটা পরিবহন পরিষেবা ব্যবস্থাই ডিজেলের সঙ্গে।সিলিন্ডার কমিয়ে বাড়িয়ে আমাদের গাধা বানিয়ে সেষ পর্যন্ত ডিডেলের দাম বাজারের হাতে ছেড়ে দিয়ে কিসিতিতে আমাদের জবাই করারই ইন্তজাম করল এই ব্রাহ্মণ্যতন্ত্র

সংস্কারের পথে হাঁটতে গিয়ে নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্রীয় সরকার। ডিজেলের দাম প্রতি মাসে বাড়ানো হবে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। সরকার-তেল সংস্থাগুলির বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত হয় প্রতি মাসে লিটার প্রতি ৫০ পয়সা করে বাড়ানো হবে ডিজেলের দাম। 

আজ, বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে লাগু হবে ডিজেলের বর্ধিত দামের প্রথম দফা। অর্থাত্‍ প্রতি বছরে ডিজেলের দাম বাড়বে ৬ টাকা।
এর আগে আরেক প্রস্থ আর্থিক সংস্কারের দিকে পা বাড়িয়ে ডিজেলের দাম বিনিয়ন্ত্রণ করার সিদ্ধান্ত নিল দ্বিতীয় ইউপিএ সরকার। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। আজ কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী বীরাপ্পা মইলি জানিয়েছেন, এবার বাজারের পরিস্থিতি অনুযায়ী ডিজেলের দাম স্থির করবে তেল বিপণনকারী সংস্থাগুলি। তবে মইলি জানিয়েছেন, তেল সংস্থাগুলি প্রতি ধাপে খুব কমই দাম বাড়াতে পারবে। মুলত ডিজেলে লিটার পিছু যে ৯ টাকা ৬০ পয়সা লোকসান হচ্ছে, সেই ঘাটতি মেটাতেই এই মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত।

এর আগে ২০১০-এ পেট্রোলের দাম বিনিয়ন্ত্রণ করে সরকার। আজই তেল সংস্থাগুলিকে বৈঠকে ডেকেছে পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক। মধ্যরাত থেকেই ডিজেলের দাম বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

তবে এই মুহূর্তে বাড়ছে না রান্নার গ্যাস ও কেরোসিনের দাম। মধ্যবিত্তদের স্বস্তি দিয়ে ভর্তুকিপ্রাপ্ত রান্নার গ্যাস-সিলিন্ডারের ঊর্ধ্বসীমা ৬ থেকে বাড়িয়ে ৯টি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আগামী আর্থিক বছর থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকরী হবে।

কেন্দ্রের ডিজেলের মূল্য আংশিক বিনিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করল সিপিআইএম। সিপিআইএম সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাট জানিয়েছেন কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত সাধারণ মানুষের ওপর আক্রমণ। ডিজেলে মূল্য বিনিয়ন্ত্রণের অর্থ লাগাতার ডিজেলের দাম বাড়া।

ডিজেলের মূল্য বিনিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্তের সমালোচনায় সরব বিজেপিও। ডিজেলের দাম বাড়লে তার প্রভাব প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সমস্ত পণ্যের ওপরেই পড়বে বলে জানান বিজেপি নেতা প্রকাশ জাভরেকর। তিনি বলেন সরকার নিজেদের দায়িত্ব থেকে সরে আসার জন্যই দাম নির্ধারণের দায়িত্ব তেল কোম্পানির হাতে তুলে দিয়েছে।


আরেক প্রস্থ আর্থিক সংস্কারের দিকে পা বাড়িয়ে ডিজেলের দাম বিনিয়ন্ত্রণ করার সিদ্ধান্ত নিল দ্বিতীয় ইউপিএ সরকার। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। আজ কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী বীরাপ্পা মইলি জানিয়েছেন, এবার বাজারের পরিস্থিতি অনুযায়ী ডিজেলের দাম স্থির করবে তেল বিপণনকারী সংস্থাগুলি। তবে মইলি জানিয়েছেন, তেল সংস্থাগুলি প্রতি ধাপে খুব কমই দাম বাড়াতে পারবে। মুলত ডিজেলে লিটার পিছু যে ৯ টাকা ৬০ পয়সা লোকসান হচ্ছে, সেই ঘাটতি মেটাতেই এই মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত।

এর আগে ২০১০-এ পেট্রোলের দাম বিনিয়ন্ত্রণ করে সরকার। আজই তেল সংস্থাগুলিকে বৈঠকে ডেকেছে পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক। মধ্যরাত থেকেই ডিজেলের দাম বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

তবে এই মুহূর্তে বাড়ছে না রান্নার গ্যাস ও কেরোসিনের দাম। মধ্যবিত্তদের স্বস্তি দিয়ে ভর্তুকিপ্রাপ্ত রান্নার গ্যাস-সিলিন্ডারের ঊর্ধ্বসীমা ৬ থেকে বাড়িয়ে ৯টি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আগামী আর্থিক বছর থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকরী হবে। 

কেন্দ্রের ডিজেলের মূল্য আংশিক বিনিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করল সিপিআইএম। সিপিআইএম সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাট জানিয়েছেন কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত সাধারণ মানুষের ওপর আক্রমণ। ডিজেলে মূল্য বিনিয়ন্ত্রণের অর্থ লাগাতার ডিজেলের দাম বাড়া। 

ডিজেলের মূল্য বিনিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্তের সমালোচনায় সরব বিজেপিও। ডিজেলের দাম বাড়লে তার প্রভাব প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সমস্ত পণ্যের ওপরেই পড়বে বলে জানান বিজেপি নেতা প্রকাশ জাভরেকর। তিনি বলেন সরকার নিজেদের দায়িত্ব থেকে সরে আসার জন্যই দাম নির্ধারণের দায়িত্ব তেল কোম্পানির হাতে তুলে দিয়েছে।


নয়াদিল্লি: একদিকে ভর্তুকিতে দেওয়া সিলিন্ডারের সংখ্যা বছরে ৬ থেকে বাড়িয়ে ৯টি করল কেন্দ্র৷ বৃহস্পতিবার থেকেই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হচ্ছে৷ কিন্তু খুশির খবর শোনানোর পাশাপাশি একটি কড়া সিদ্ধান্তও নিল ইউপিএ-২ সরকার৷। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে গৃহীত ডিজেলের দামের ওপর থেকে সরকারি নিয়ন্ত্রণ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তও নেওয়া হল৷ সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, এই এক সিদ্ধান্তের ধাক্কায় প্রতি মাসে ডিজেলের দাম লিটার প্রতি ৪০ থেকে ৫০ পয়সা বাড়তে পারে বলে শোনা যাচ্ছে৷ তবে রান্নার গ্যাসের দাম বাড়ছে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন বীরাপ্পা মইলি৷
আগামী লোকসভা ভোটের আগে এভাবেই জনমোহিনী বার্তা দিতে চাইলেন সংস্কারমুখী মনমোহন সিংহ৷
এতদিন ঠিক ছিল, মার্চ পর্যন্ত একটি পরিবার ভর্তুকিতে ৩ টি রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার পাবে৷ এবার মার্চ পর্যন্ত একটি পরিবার ভর্তুকিতে পাবে ৫টি সিলিন্ডার ১ এপ্রিল থেকে বছরে ভর্তুকিতে ৬টির বদলে মিলবে ৯টি সিলিন্ডার৷ এদিকে লিটার প্রতি ২৫ পয়সা কমছে পেট্রোলের দাম৷ তবে কবে থেকে দাম কমবে সেবিষয়ে এখনও কিছু স্পষ্ট করে জানায়নি রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলি৷
ওয়াকিবহাল মহলের অভিমত, ডিজেলের দামের ওপর থেকে নিয়ন্ত্রণ উঠে যাওয়ার মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে মুদ্রাস্ফীতির ওপর৷ ।কেলকার কমিটি সুপারিশ করেছিল, প্রতি মাসে লিটারে ১ টাকা দাম বাড়ানোর মাধ্যমে
ডিজেলে লিটারপিছু ৯ টাকা ৬০ পয়সা ভরতুকির পুরোটাই তুলে দেওয়া হোক৷ বাস্তবে অনেকটা সেদিকেই যাচ্ছে পরিস্থিতি৷
এদিকে কেন্দ্র ভর্তুকিতে দেওয়া রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডারের সংখ্যা ৬ থেকে বাড়িয়ে ৯ করলেও সন্তুষ্ট নয় তৃণমূল কংগ্রেস৷ তৃণমূলের দাবি, পরিবারপিছু বছরে সিলিন্ডারের সংখ্যা বাড়িয়ে ২৪ করতে হবে৷ ট্যুইট করে তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়েন জানান, ভর্তুকিতে সিলিন্ডারের সংখ্যা ৬ থেকে ৯ করাটা যথেষ্ট নয়৷ বছরে পরিবারপিছু সিলিন্ডারের সংখ্যা ১৮ থেকে ২৪টি করতে হবে৷ এদিকে ডিজেলের দাম বিনিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্তের সমালোচনায় সরব হয়েছে বাম-বিজেপিও৷ সিপিআই সাংসদ গুরুদাস দাশগুপ্ত ডিজেলের দাম বিনিয়ন্ত্রণ করার তীব্র সমালোচনা করার পাশাপাশি একইদিনে ভর্তুকিতে রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডারের সংখ্যা ৬ থেকে ৯টি করার ঘোষণাকে কেন্দ্রের 'ললিপপ' বলে কটাক্ষ করেন৷ তিনি জানান, কেন্দ্রের এই জনবিরোধী নীতির প্রতিবাদে আগামী ২০ ও ২১ ফেব্রুয়ারি দেশজুড়ে ধর্মঘটের ডাকে অনড় এগারোটি কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন৷

http://abpananda.newsbullet.in/national/60-more/32583-2013-01-17-06-37-23


ইসলামাবাদঃ ভারতকে যুদ্ধবাজ বলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সুর নরম করে বুধবার বিদেশমন্ত্রী পর্যায়ের আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছিলেন  পাক বিদেশমন্ত্রী হিনা রব্বানি খার৷কিন্তু হিনার প্রস্তাবে তেমন উচ্ছ্বাস দেখালেন না সলমন খুরশিদ।সংযত প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে বিদেশমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, দিল্লি এ ব্যাপারে তাড়াহুড়ো করতে রাজি নয় এবং ভারত-পাক বিদেশমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহই৷ পুঞ্চ সীমান্তে পাক সেনার হাতে দুই ভারতীয় জওয়ানের মৃত্যু ও যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করাকে কেন্দ্র করে কয়েকদিন ধরেই দু'দেশের মধ্যে সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে৷ দুদেশের কূটনৈতিক চাপানউতোর তুঙ্গে পৌঁছেছে৷ পাক বিদেশমন্ত্রীও ভারতকে যুদ্ধবাজ বলে তোপ দেগে আঙুল তুললেও সেনা প্রধানদের পর পাকিস্তানের উদ্দেশে কড়া বার্তা দিয়েছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং৷  ধীরে ধীরে সুর নরম করে ইসলামাবাদ৷ এরপর বুধবার রাতেই খার সীমান্তে উদ্ভুত সমস্যা মেটাতে বিদেশমন্ত্রী পর্যায়ের আলোচনার প্রস্তাব দেন খার৷ এক বিবৃতিতে বলেন, সীমান্তের দুই পারের রাজনৈতিক নেতা ও সামরিক কর্তাদের বিবৃতি ও উত্তেজনা বাড়িয়ে তোলার পরিবর্তে দুদেশের আলোচনার টেবিলে বসা উচিত। যুদ্ধবিরতির প্রতি দায়বদ্ধতা বজায় রাখার উদ্যোগ হিসেবে নিয়ন্ত্রণ রেখা সংক্রান্ত সমস্ত সমস্যা নিয়ে দুদেশের আলোচনায় বসা দরকার। এই আলোচনা বিদেশমন্ত্রী পর্যায়েও হতে পারে। তবে
খুরশিদ বৃহস্পতিবার জানিয়ে দেন, সরাসরি বিদেশমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের সময় এখনও আসেনি৷ 
এদিনই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে ৮ জানুয়ারির পর থেকে সীমান্তে উদ্ভুত পরিস্থিতির রিপোর্ট পেশ করেন বিদেশমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ কে অ্যান্টনি৷ সূত্রের খবর, আলোচনার পথ থেকে সরে আসছে না ভারত৷ তবে সীমান্ত সমস্যা নিয়ে ভারত যে আদৌ নরম মনোভাব নেবে না, রব্বানির প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে সেটাই বোঝাতে চাইল সাউথ ব্লক, এমনটাই মনে করছে কূটনৈতিক মহল৷

http://abpananda.newsbullet.in/international/61-more/32582-2013-01-17-05-55-54


পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধানমন্ত্রী: খুরশিদ
পুরীর বালুকাবেলায় শান্তির বার্তা
নয়াদিল্লি: সীমান্তে উত্তেজনা সত্ত্বেও পাকিস্তানের সঙ্গে শান্তি প্রক্রিয়া এখনই বন্ধ করতে চাইছে না ভারত। বৃহস্পতিবার এ কথা জানালেন বিদেশমন্ত্রী সলমন খুরশিদ। তবে সীমান্তে শান্তি ফেরাতে দু দেশের মধ্যে বিদেশমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের যে প্রস্তাব পাকিস্তান দিয়েছে, তা মেনে নেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। 

গত আট জানুয়ারি আগে কাশ্মীরের পুঞ্চ সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর টহলদারি দুই ভারতীয় জওয়ানের গলা কেটে হত্যা করে পাক সেনা। ভারতের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তি উপেক্ষা করে নিয়ন্ত্রণরেখায় পাকিস্তানসীমান্তের এদিক লক্ষ্য করে ক্রমাগত গুলি চালায় বলে অভিযোগ ভারতীয় সেনাবাহিনীর। পাকিস্তান গোলাগুলি চালালে ভারতও চুপ করে বসে থাকবে না বলে জানিয়ে দেন ভারতীয় সেনার প্রধান। এর জেরেই প্রশ্নের মুখে পড়েছে দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক। 

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে এ ভাবে উত্তেজনা বজায় থাকলে তার জেরে পুরো দক্ষিণ এশিয়ার শান্তি বিঘ্নিত হতে পারে। এই আশঙ্কা প্রকাশ করে নিয়ন্ত্রণরেখা শান্তি বজায় রাখার উদ্দেশ্যে ভারত ও পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের প্রস্তাব করেন পাক বিদেশমন্ত্রী হিনা রব্বানি খার। পাকিস্তানের এই প্রস্তাবে সাড়া দেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়েছেন খুরশিদ। তবে দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের মধ্যে যে কোনও রকম সমস্যার সমাধান তাদেরই খুঁজতে হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। কোনও তৃতীয় পক্ষ এসে সমাধান বের করে যাবে না। 

দুই দেশেরই মানুষের আবেগ ও সুবিধা-অসুবিধার কথা মাথায় রেখে সমস্যার সমাধান খুঁজতে হবে বলে জানিয়েছেন খুরশিদ। প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ইতিমধ্যেই পাকিস্তানের উদ্দেশ্যে যে কঠোর বার্তা দিয়েছেন, তা ইসলামাবাদ বুঝেছে বলে আশাপ্রকাশ করেছেন বিদেশমন্ত্রী। শান্তি প্রক্রিয়া বন্ধ হয়নি বলে দাবি করলেও আলোচনার জন্য উপযুক্ত পরিবেস তৈরি করা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন সলমন খুরশিদ। 

হেমরাজের বাড়িতে গেলেন সেনাপ্রধান
নিহত ল্যান্সনায়ক হেমরাজ সিংয়ের স্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় সেনাপ্রধানের। বুধবার হেমরাজের বাড়িতে।---পিটিআই।
মথুরা: কথা দিয়েছিলেন আসবেন৷ কথা রাখলেন৷ আর সেই প্রতিশ্রীতি পালন করেই দেশের সামরিক ইতিহাসে নিঃশব্দেই এক নয়া নজির তৈরি করে ফেললেন সেনাপ্রধান বিক্রম সিং৷ 

বুধবার সকালে ভারতীয় সেনাপ্রধান বিক্রম সিং নিহত সেনা হেমরাজ সিং-এর গ্রামের বাড়িতে যান৷ সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্ত্রী ও পদস্থ সেনাকর্তারা৷ তাঁকে দেখতে ছোট্ট কুঁড়ের সামনে তখন ভিড়ে ভিড়াক্কার৷ পাশের উঁচু বাড়ির ছাদ-বারান্দা থেকেও মানুষ ঝুঁকে পড়েছেন৷ সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরা ও বুমের 'অত্যাচার' তো আছেই৷ 

হেমরাজের মা, স্ত্রী ও ভাই অবশ্য জানতেন যে 'বড়া ভাই' আসবেন, তাই তাঁদের উপস্থিতিতে তাঁরা চমকাননি, দিন কয়েক আগে যেমন চমকে গিয়েছিলেন রাজনৈতিক নেতাদের আনাগোনা দেখে৷ 

এ যেন বাড়ির ছেলেরই বাড়ি ফেরা৷ তাই তাঁর সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে হেমরাজের মা অবলীলায় বলে দিলেন, 'আমার এক ছেলে মারা গেছে৷ আমি চাই আমাদের পরিবারের দায়িত্ব নাও৷ তোমাকেই আমরা পরিবারের প্রধান বলে মানি৷' সেই কথারই প্রতিধ্বনি সেনাপ্রধানের কথাতেও৷ বললেন, 'আমি আমার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে এসেছি৷ এই পরিবার আমারও!' তিনি জানান, সেনাবাহিনীর নিয়মনীতি মেনে যা যা করা সম্ভব, তিনি এই হতভাগ্য পরিবারের জন্য সব ব্যবস্থাই করবেন৷ তারপরেই ক্ষণিক ক্ষণের নীরব৷ চোয়াল শক্ত করে বললেনস 'হেমরাজের এই আত্মত্যাগ বৃথা যাবে না৷' 

'বড়া বেটা'-র সঙ্গে কথা বলে হেমরাজের বৃদ্ধা মায়ের প্রতিজ্ঞা, 'আমার নাতিও এক দিন দেশের জন্যই লড়বে৷ ওকেও আমি জওয়ান বানাবো৷' শুনে সেনাপ্রধানও অবাক হয়ে যান৷ থমকে যান কিছু সময়ের জন্য৷ মুগ্ধ বিক্রম জানান, হেমরাজের তিনটি কচি বাচ্চার জন্য তিনি সব রকম ব্যবস্থা করবেন৷ দেখা করেন হেমরাজের স্ত্রী ধর্মবতীর সঙ্গেও৷ উল্লেখ্য, সেনাপ্রধান আসবেন, এই আশ্বাস পেয়েই হেমরাজের স্ত্রী ও মা অনশন ভেঙেছিলেন৷ 

শুধু বিক্রম সিং নন, তাঁর স্ত্রী সুরজিত্ (বাবলি) কাউরও এ দিন হেমরাজের মা ও স্ত্রীর সঙ্গে অনেকটা সময় কাটান৷ সান্ত্বনা দেন৷ এমনকি মায়ের চোখের জল মুছিয়ে দিতেও দেখা যায় তাঁকে৷ 

সেনাপ্রধান এর পরে হেমরাজের ছবিতে মালা দেন৷ শ্রদ্ধা জানান অন্য সেনা অফিসাররাও৷ বারবার আশ্বাস দেন, হেমরাজের কাটা মাথা পাকিস্তান থেকে ফেরত আনার চেষ্টা করবেন তিনি৷ উল্লেখ্য, হেমরাজের পরিবার মাথা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতেই অনশনে বসেছিলেন৷ 

বাবা-হারা বাচ্চাগুলোর সঙ্গেও দেখা করেন বিক্রম সিং৷ তারা অবশ্য কারও না কারও কোলে ছিল৷ সেনাপ্রধান কে, তা তারা জানে না বা বোঝার কথাও নয়৷ ফলে তারা বারবারই ওঁর মুখের দিকে অচেনা দৃষ্টিতে তাকিয়েছে৷ 

তবে সেনাপ্রধানের এই সৌজন্যে সকলে মুগ্ধ৷ অনেক স্মৃতি হাতড়েও কেউ মনে করতে পারলেন না যে, কখনও কোনও সেনাপ্রধান এ রকম ভাবে নিহত 'সহকর্মী'র পরিবারের পাশে ব্যক্তিগত ভাবে উপস্থিত থেকে সমবেদনা জানিয়েছেন কি না৷ 

তখনই ভিড়ের মধ্যে থেকে একটা কথা ভেসে এল৷ 'দেশের রাজনীতিকরা যদি এতটা আন্তরিক হতেন তা হলে ভারতের চেহারাই অন্যরকম হত!' এই কথায় বিতর্কের অবকাশ আছে, কিন্ত্ত বিক্রম সিং-এর দায়িত্ব ও আন্তরিকতা তার বহু উর্ধ্বে৷ 


ভর্তুকি দেওয়া সিলিন্ডারের সংখ্যা বেড়ে নয় হল
বাড়ল ভর্তুকি দেওয়া সিলিন্ডারের সংখ্যা
নয়াদিল্লি: লোকসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং-এর সংস্কারমুখী সিদ্ধান্ত বদলে গেল জনমোহিনী নীতিতে। পরিবারপিছু ভর্তুকি দেওয়া সিলিন্ডারের সংখ্যা ছয় থেকে বাড়িয়ে নয় করা হল। সস্তার সিলিন্ডারের সংখ্যা বৃদ্ধির কথা বৃহস্পতিবার জানালেন কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী বীরাপ্পা মইলি। পাশাপাশি ডিজেলের দামেও বিনিয়ন্ত্রণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। 

পয়লা এপ্রিল থেকে ভর্তুকির সিলিন্ডারের নয়া সংখ্যা কার্যকর হবে। মধ্যবিত্তের জন্য আরও খুশির খবর যে পরিবারপিছু সস্তার সিলিন্ডারের সংখ্যা বাড়লেও এলপিজি-র দাম অপরিবর্তিত থাকছে। ভর্তুকি দেওয়া সিলিন্ডারের সংখ্যা বৃদ্ধি করলে রান্নার গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিল কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক। তবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার রাজনীতি বিষয়ক প্যানেলের বৈঠকে সেই প্রস্তাব খারিজ হয়ে যায়। নয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে আগামী বছরের ৩১ মার্চের মধ্যে পাঁচটি সস্তার সিলিন্ডার নেওয়া যাবে। ১৪ সেপ্টেম্বর থেকেই ভর্তুকি দেওয়া সিলিন্ডারের সংখ্যায় কাটছাঁটের সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছিল। ভর্তুকির সিলিন্ডারের সংখ্যা বাড়ার এই সময়সীমার মধ্যে একজন গ্রাহক ৩টি সস্তার সিলিন্ডার পেতে পারতেন। 

পাশাপাশি, পেট্রোলের পর ডিজেলের দাম নির্ধারণও কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ মুক্ত করা হল। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ বিষয়েও সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয় বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় পেট্রালিয়াম মন্ত্রী বীরাপ্পা মইলি। তেল কোম্পানিগুলিই এবার থেকে বাজারদরের ভিত্তিতে ডিজেলের দাম নির্ধারণ করবে। ডিজেলের দাম কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণমুক্ত হওয়ার পর বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকেই মূল্যবৃদ্ধি হতে পারে বলে সূত্রের খবর। 


দিদির এফডিআই জেহাদ হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে ইতিমধ্যে।বেঙ্গললীডে শিল্পপতিরা গোসা হয়েছেন মা মাটি মানুষের সরকারের জমি নীতির, শিল্বনীতির হদিশ না পেয়ে।আমি কিন্তু বার বার লিখে আসছি কর্তৃত্বের এপিঠ ওপিঠের ব্যতিক্রম ছাড়া ব্রাঙ্মণ্যতন্ত্রে কোনও পরিবর্তন সম্ভব নয়। কবির সুমন বলেছেন , মাওবাদীদের কাঁধে চড়ে ক্ষমতার টং এ দিদির জযপতাকা উড্ডীয়মান। কিন্তু মাওবাদীরা জমি আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখলেও রাখতে পারে, কিন্তু ক্ষমতাদখলের লড়াইয়ে এই বিশ্বায়িত রাষ্ট্রব্যবস্থায় বাজারই শেষকথা। পুঁজিবাদী উন্নয়নকে আহ্বান করেছিল রাজ্যের বামপন্থীরা এবং  জনগণের প্রতিরোধ আন্দোলনকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। এই তথ্য এখন ইতিহাস। তবে ইতিহাসের চাকা কিন্তু ঘুরতে শুরু করেছে।


শেষপর্যন্ত জমি অধিগ্রহণে সায় দিল পরিবর্তনের সরকার। ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য। গতকাল ডিভিশন বেঞ্চে এই আবেদন জানিয়েছে রাজ্যের ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতর।

জমি আন্দোলকনে কেন্দ্র করেই এ রাজ্যে ক্ষমতায় আসা তৃণমূল কংগ্রেসের। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে বারেবারেই ফিরে এসেছে, সরকার কোনও জমি অধিগ্রহণের করবে না। সে কথা হালের বেঙ্গল লিডসেও স্পষ্ট করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। 
 
কিন্তু উন্নয়নের স্বার্থে শেষপর্যন্ত অবস্থান বদল করতে বাধ্য হল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। ২০০৯ সালে ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণের নির্দেশিকা জারি করেছিল তত্‍কালীন বাম সরকার। জমি অধিগ্রহণ নিয়ে রাজ্যজুড়ে বিরোধীদের জঙ্গি আন্দোলনে কার্যত কোনঠাসা হয়ে পড়া বাম সরকার অধিগ্রহণের কাজ শুরু করতে পারেনি। নতুন সরকার আসার পর এই জমি অধিগ্রহণ নিয়ে আর কোনও উদ্যোগই নেওয়া হয়নি। ইতিমধ্যে কলকাতা হাইকোর্টের সেন্ট্রাল ক্যালকাটা সিটিজেন ওয়েলফেয়ার কমিটি একটি মামলা দায়ের করে। সেই সময় পরিবহণ দফতরের হাতে থাকা মেট্রোপ্রকল্প নিয়ে রাজ্য সরকারের বিশেষ উদ্যোগ ছিল না। বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্যের নির্দেশে জমি অধিগ্রহণের বিজ্ঞপ্তিটি খারিজ হয়ে যায়। দু`বছরের মধ্যে ক্ষতিপূরণের ঘোষণা না হওয়ার কারণেই এই নির্দেশ দিয়েছিল বিচারপতি। সেই রায়ের বিরুদ্ধেই বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধানবিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করেছে রাজ্যের ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতর।
 
উন্নয়নের প্রশ্নে ইতিমধ্যেই বিতর্কের মুখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। রেল দফতরের হাতে থাকা এই প্রকল্প যদি জমি জটে আটকে যায়, তার জন্য রাজ্য সরকারই দায়ী থাকবে। সেই কারণেই জমি অধিগ্রনে শেষপর্যন্ত রাজ্য সরকার উদ্যোগী বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।


কৃষিজমি অধিগ্রহণ করে শিল্প করার বিরুদ্ধে তৃণমূল নেত্রীর পাশে দেখা গিয়েছে এই শিল্পীকে। মানে তিনি কৃষিজমিতে কৃষিরই পক্ষে। কিন্তু সেই শুভাপ্রসন্নই, একি কাণ্ড করলেন ভাঙড়ের হাতিশালায়। সেখানে শুভাপ্রসন্নর ছ বিঘা আঠারো কাঠা জমি আছে। জমিটা অবশ্য কেনা হয়েছে একটি ট্রাস্টের নামে। ওই জমির চরিত্র নিয়ে নাড়াচাড়া করতেই প্রকাশ্যে চলে এসেছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
 
ভাঙড় দু নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির অর্ন্তগত বেওতা দু নম্বর পঞ্চায়েতের হাতিশালা মৌজার ১, ২৪ এবং ৮৪ নম্বর দাগে ছড়িয়ে আছে শুভাপ্রসন্নবাবুর এই ছয় বিঘা ১৮ কাঠা জমি। এর মধ্যে ২৪ নম্বর দাগে রয়েছে দেড় বিঘা জমি। ৮৪ নং দাগে রয়েছে সতেরো কাঠা জমি। বাকি সাড়ে চার বিঘা জমি রয়েছে এক নং দাগে। আর এই বিশাল জমিটার পুরোটাই কৃষি জমি। কিন্তু কীভাবে কেনা হয়েছে এই জমি?
 

এখানেই শেষ নয়। এক নং দাগের জমির মধ্যে দিয়ে গেছে ১৪ থেকে ১৫টি মৌজার সেচ খাল। ওই খাল দিয়ে এক শতাব্দি ধরে হাতিশালা, বেওতা, কাঁঠালবেড়িয়া, বনমালিপুর, আনন্দকেশরি, কুলবেড়িয়া, ধর্মতলা, পাঁচুরিয়ার মতো মৌজায় সেচের জল পৌঁছয়। সেচ খালের প্রস্থ ৪০ ফুট থেকে কমে মাত্র ১৫ ফুটে এসে দাড়িয়েছে। সৌজন্যে শিল্পী শুভাপ্রসন্ন। 
 
 
স্থানীয় মানুষের বক্তব্য, কৃষিজমিকে খাস জমি করে নিয়েছেন শুভাপ্রসন্ন। জলাশয়কে বুজিয়ে ফেলেছেন মর্জিমাফিক। সবটাই চলবছে, হুমকি দিয়ে। আর এই কাজে শুভাপ্রসন্নর সঙ্গে রয়েছেন স্থানীয় বিধায়ক। সেই বিধায়ক, যিনি কৃষিজমিতে বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার আন্দোলনে নেমেছেন। যিনি আবার কয়েকশো বিঘা কৃষিজমি বিক্রি করে দিয়েছেন প্রোমোটারদের কাছে। অন্তত তেমনই অভিযোগ, এলাকার মানুষের।
 
বারাসত-রায়চক প্রস্তাবিত সড়কের পাশেই এক সময় ধানের চারা পুঁতে দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুঁতেছিলেন জমি অধিগ্রহণের বিরোধিতা করে। তার কাছেই শুভাপ্রসন্নর জমি। কৃষিজমিতে শিল্প গড়ে কর্মসংস্থানের প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে সরব শুভাপ্রসন্নই, কৃষিজমি কিনেছেন, অন্য কাজে ব্যবহারের জন্য। এই দ্বিচারিতা কী শোভা পায়।


হলদিয়ায় মুখ্যমন্ত্রীর শিল্প সম্মেলনকে যাত্রাপালার সঙ্গে তুলনা করলেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্যের কথায় তামাশা। তৃণমূল কংগ্রেস তাদের ওপর অত্যাচার বন্ধ না করলে প্রত্যাঘাতের হুমকি দিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা। 

হলদিয়ায় মুখ্যমন্ত্রীর বেঙ্গল লিডসকে ঘিরে জমজমাট রাজনৈতিক মহল। তবে শুধু কটাক্ষ করাই নয়। চড়া সুরে হুমকি দিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য। 
তাদের অভিযোগ, প্রতিদিন তাদের ওপর অত্যাচার চালাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থকরা। কেন এতো আক্রমণাত্মক প্রদেশ নেতারা? পঞ্চায়েত ভোটের আগে কর্মীদের উজ্জীবিত করতেই কি এতোটা আক্রমণাত্মক পথে নেতারা? জল্পনা চলছে।

এদিকে বেঙ্গল লিডস কে কটাক্ষ করে বেঙ্গল ব্লিডস বা বাংলার রক্তক্ষরণ বললেন, সিটু নেতা শ্যামল চক্রবর্তী। একইসঙ্গে তার অভিযোগ, শিল্পপতিদের সামনে রাজ্যে নতুন দুটি বন্দর তৈরি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মঙ্গলবার যা বলেছেন, তা মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছু নয়। 


বিনিয়োগের লক্ষ্যে বেঙ্গল লিডস টু। শিল্পকে চাঙ্গা করতে যে সম্মেলন, তার প্রথম দিনে দেখা মেলেনি দেশের প্রথম সারির কোনও শিল্পপতির। আর দ্বিতীয় দিনে সেই শিল্প সম্মেলনই পরিণত হল হট্টমেলায়।

প্রথমদিন যদি দিশাহীনতা থাকে দ্বিতীয় দিনে তা হট্টমেলা। শিল্পে বিনিয়োগ টানতে জমকালো আয়োজন। সারি সারি স্টলের ভিড়।
 
শিল্পমন্ত্রী বলছেন, একশো করে লোক আসছেন। কিন্তু কারা সেই লোক? দেখা যাচ্ছে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী। শিল্প সম্মেলেন বিনিয়োগ কতটা আসবে সে জবাব তো মিলবে ভবিষ্যতে। কিন্তু বিজনেস স্টেশনগুলিতে কোট প্যান্টের ভিড়ের থেকে স্কুলের কৌতুহলি মুখই যে বেশি।
 
বিনিয়োগে দেশের শিল্পমানচিত্রের রাজ্যের জোরালো অবস্থান বোঝাতে শিল্প সম্মেলনের। কিন্তু সভার দ্বিতীয় দিনেই যেন বেলাইন বেঙ্গল লিডসের চাকা। বিনিয়োগে রাজ্য পিছিয়ে নেই বোঝাতে শিল্প সম্মেলন। কিন্তু দ্বিতীয় দিয়ে আর পাঁচটা মেলার রূপ নিল শিল্প সম্মেলন।

সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে গরহাজির প্রথম শ্রেণির শিল্পপতিরা। বেঙ্গল লিডস সম্মেলনে জাতীয়স্তরের পাঁচশোজন শিল্পপতি ও শিল্পসংস্থার কর্তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। যদিও তারমধ্যে অধিকাংশ প্রতিনিধিই হাজির হতে পারেননি বেঙ্গল লিডসে। যাঁরা হাজির হয়েছেন তাঁদের অধিকাংশই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার প্রতিনিধি। বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণের সংখ্যা খুবই কম। তবে শিল্প সম্মেলনের সামনে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন দুটি। রাজ্য সরকারের জমি নীতি এবং বেড়ে চলা রাজনৈতিক হিংসার জেরে রাজ্যের সামগ্রিক ভাবমূর্তি।

গতকাল হলদিয়ায় হেলিপ্যাড ময়দানে শুরু হল বেঙ্গল লিডস। শিল্প সম্মেলনে প্রভাব ফেলল রাজনীতিও। মুখ্যমন্ত্রী তাঁর বক্তৃতায় তোপ দাগেন বিরোধী ও কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে। সম্মেলনে শিল্পপতিদের উপস্থিতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্য শিল্পপতিদের ধন্যবাদও জানান তিনি। শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, শিল্প মহলে ভালই সাড়া জাগিয়েছে বেঙ্গল লিডস।


কপর্দকশূণ্য সরকারের মুখ্যমন্ত্রীর সভা দেদার জাঁক



কপর্দকশূণ্য  সরকারের মুখ্যমন্ত্রীর সভা দেদার জাঁক
ঢেলে খরচ সমাবেশে। ফুল থেকে অত্যাধুনিক শব্দপ্রক্ষেপণ যন্ত্র, এলইডি স্ক্রিন, অভাব নেই কিছুরই। ছবি---শুভ্রজিত্‍ চন্দ্র।
কৌশিক প্রধান 

বেলদা (পশ্চিম মেদিনীপুর ): সরকারি কোষাগার নাকি বাড়ন্ত৷ উন্নয়নমূলক কাজের জন্য অর্থ বরাদ্দ করতে পারছে না রাজ্য সরকার৷ মুখ্যমন্ত্রীর সভা দেখে কিন্ত্ত বোঝার উপায় নেই৷ ফুলের তোড়ায় সাজানো ঝাঁ চকচকে সভামঞ্চ, মাঠের প্রত্যেক কোণায় মানুষ যাতে মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণ শুনতে শুনতে পারেন, তার জন্য আধুনিক সাউন্ড সিস্টেম, মঞ্চের উপর টিভি স্ক্রিন, মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য রেকর্ডিংয়ের জন্য একাধিক ক্যামেরা, সব মিলিয়ে একেবারে কর্পোরেট ব্যবস্থাপনা৷ বেলদার মতো প্রত্যন্ত জায়গায় এমন ব্যবস্থাপনা যে সত্যিই নজিরবিহীন, মানছেন সরকারি কর্তারাও৷ 

কিন্ত্ত খরচ কত হল? পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদার মতো পিছিয়ে পড়া এলাকায় বুধবার বাহুল্যপুর্ণ ওই সভায় খরচ হয়েছে কম করে ২৫ লক্ষ টাকা৷ পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সরকারি মঞ্চকে ব্যবহার করে সরকারি অর্থে মুখ্যমন্ত্রী একেবারেই দলীয় প্রচার চালালেন৷ এতে সরকারী কোষাগারের দুরবস্থা কাটাতে তাঁর সদিচ্ছা নিয়েই প্রশ্ন উঠল৷ অথচ এ দিনের সভায় মুখ্যমন্ত্রী সরকারের আর্থিক দুরবস্থার উল্লেখ করেছেন বার বার৷ আর্থিক অক্ষমতার কারণে আরও বেশি ছেলেমেয়েকে সরকারি চাকরি দেওয়া যাচ্ছে না বলে জানান৷ 

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানালেন, 'এখনও পর্যন্ত সঠিক ভাবে আমাদের পক্ষে মোট খরচের পরিমাণ বলা সম্ভব নয়৷ বেশির ভাগ বিলই আসেনি এখনও৷ তবে সমস্ত ব্যবস্থার সঙ্গে হাজার চারেক পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবকের খাওয়ার খরচ ধরলে ন্যূনতম বিল ২৫ লক্ষ টাকা তো হবেই৷' এ তো গেল খরচের হিসাব৷ তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ছিল মানুষের ভোগান্তি৷ 

বেলদার মিলনমেলা মাঠে মুখ্যমন্ত্রীর সভায় উপস্থিত প্রায় ৬০ হাজার মানুষকে পশ্চিম এবং পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে আনার জন্য এই দুই জেলার অধিকাংশ বাসই এ দিন তৃণমূলের তরফে নিয়ে নেওয়া হয়েছিল৷ ফলে মেদিনীপুর বা খড়গপুর থেকে নয়াগ্রাম, কেশিয়ারি, দাঁতন, নারায়নগড়, গোপীবল্লভপুর, ময়না, বেলপাহাড়ি, নাড়জালের মধ্যে যাতায়াত করার জন্য প্রায় কোনও বাসই রাস্তায় ছিল না৷ শুধু বাসই নয়, সমর্থকদের আনতে শাসকদলের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছিল অধিকাংশ রুটের ট্রেকারও৷ নারায়ণগড়ের বাসিন্দা প্রদীন্ত রায় বলেন, 'এ মাসের ৫ তারিখে মেদিনীপুরে মুখ্যমন্ত্রীর সভা ছিল৷ সে দিনও রাস্তায় বাস ছিল না৷ আজও একই অবস্থা৷ এই সভা করে সাধারণ মানুষের তো কোনও সুবিধাই হয় না৷' বেলদার বাসিন্দা অনিমা বাগ বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রীর সভা মানেই রাস্তায় বেরিয়ে কিছু পাওয়া যাবে না, এটা এখন ধরেই নিয়েছি৷ লরিতে চেপে মেদিনীপুর থেকে এলাম৷' 

বেলদার বাঁশচক এলাকার তৃণমূল নেতা শ্যামাপদ দাস কোনও রাখঢাক না করে বলেই ফেললেন, 'আমাদের টার্গেট ছিল এক লক্ষ লোক জড়ো করা৷ তাই বেশিরভাগ বাস, ট্রেকার আজ আমরা নিয়েছিলাম৷ দিদির সভায় দলের সদস্য-সমর্থকদের তো নিয়ে আসতে হবে৷' তিনি সত্যি কথাই বলেছেন৷ মুখ্যমন্ত্রীর এ দিনের সরকারি অনুষ্ঠান কার্যত দলীয় সভাতেই পরিণত হয়েছিল৷ সভাস্থল থেকে ১৫ কিলোমিটার আগে মকরামপুর বাজার থেকেই চোখে পড়েছে তৃণমূলের তরফে লাগানো মুখ্যমন্ত্রীর একাধিক কাট আউট৷ প্রশাসনের কোনও ব্যানার-হোর্ডিং বা পোস্টার কোথাও চোখে পড়ল না৷ সভামঞ্চের আশপাশে মোতায়েন স্বেচ্ছাসেবকদের গলাতে ঝুলছিল দলনেত্রীর ছবিযুক্ত ব্যাজ৷ এঁরা কি সরকারি কর্মী? শ্যামাপদবাবুর জবাব, 'না না৷ ওঁরা সবাই আমাদের দলের লোক৷' 

সঙ্কট সমাধানে চিদাম্বরমকে তিন প্রস্তাব অমিতের
নয়াদিল্লি: কেন্দ্রীয় প্রকল্পে শুধু খরচ নয়, রক্ষণাবেক্ষণও নিজের ঘাড়ে রাখতে চায় না পশ্চিমবঙ্গ৷ অন্তত সর্বশিক্ষা, পানীয় জল, প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক ও জাতীয় সড়কের সমস্ত দায়িত্বই কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে রাখার পক্ষে সওয়াল করলেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র৷ কেন্দ্রের আগামী বাজেটে পশ্চিমবঙ্গের জন্য আলাদা আর্থিক প্যাকেজও চাইলেন তিনি৷ সমস্ত রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের সঙ্গে বুধবার দিল্লিতে বৈঠকে ছিল কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পালানিয়াপ্পন চিদম্বরমের৷ 

বাজেটে বিভিন্ন রাজ্যের প্রত্যাশা জানতেই এদিন ওই বৈঠক ডেকেছিলেন চিদাম্বরম৷ সেই সুযোগেই আবার রাজ্যকে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার দাবি জানালেন অমিতবাবু ৷ তিনি নির্দিষ্ট করে তিনটি প্রস্তাব পেশ করেন ওই সভায়৷ প্রথমত, ২ লক্ষ কোটি টাকা ঋণের জন্য বছরে যে ২৫ হাজার কোটি টাকার সুদ গুনতে হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গকে, তা আপাতত কয়েক বছর বন্ধ রাখা হোক৷ তা একান্ত সম্ভব না হলে, অন্য ভাবে সাহায্য করুক কেন্দ্র৷ দ্বিতীয়ত, চারটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প সর্বশিক্ষা অভিযান, পানীয় জল, প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার রক্ষণাবেক্ষণ ও জাতীয় সড়কের রক্ষণাবেক্ষণের খরচ থেকে রাজ্য সরকারকে অব্যাহতি দেওয়া হোক৷ হয় পুরো খরচ দিতে না পারলে ৮০ শতাংশ দেওয়ার দাবি তোলেন তিনি৷ 

বস্ত্তত রাজ্যের দাবি ছিল, সব কেন্দ্রীয় প্রকল্পেই রাজ্যের দেয় অংশের পরিমাণ যেন কোনও ভাবেই ২০ শতাংশের বেশি না হয়৷ তৃতীয়ত, পণ্য পরিষেবা কর চালু করতে গিয়ে বিক্রয় কর যেন এক ধাক্কায় উঠিয়ে দেওয়া না হয়৷ পণ্য পরিষেবা কর চালু করার জন্য ক্ষতিপূরণও দাবি করেছে রাজ্য সরকার৷ এই দাবি অবশ্য নতুন নয়৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পর থেকেই তিনি কেন্দ্রের কাছ থেকে বার বার আর্থিক সাহায্য চাইছেন, বিশেষ প্যাকেজ দাবি করছেন৷ এ নিয়ে গত দেড় বছরে অনেক বার বৈঠক হয়েছে, প্রতিশ্রুতিও মিলেছে কোনও কোনও সময়৷ কিন্ত্ত রাজ্যের দাবি, শেষ পর্যন্ত এক পয়সা সাহায্যও আসেনি৷ 

এই অবস্থায় আসন্ন বাজেটে কি রাজ্যের জন্য কোনও সুখবর শোনাতে পারেন চিদাম্বরম? থাকতে পারে? কেন্দ্রীয় পরিকল্পনায় রাজ্যের ভাগ ঠিক করে যোজনা কমিশন৷ সেক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর ভূমিকা বিশেষ থাকে না৷ তবে ঋণের জালে ডুবে থাকা রাজ্যগুলিকে বাড়তি সাহায্যের কথা ভাবতেই পারেন তিনি৷ সেই সম্ভাবনা মাথায় রেখেই তদ্বির করেছেন অমিতবাবু৷ কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অবশ্য সব শুনেছেন, নোট নিয়েছেন, কিন্ত্ত কিছু বলেননি৷ 

হলদিয়া: সরকার জমি অধিগ্রহণ করে দেবে না, শিল্প গড়তে আগ্রহী শিল্পপতিদেরই সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে জমি কিনতে হবে, বারবার একথাই বলছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিন্তু রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন আজ 'বেঙ্গল লিডস'-এর সমাপ্তি ভাষণে যা বললেন, তাতে এ ব্যাপারে ভিন্ন সুরই শুনেছে ওয়াকিবহাল মহল। এদিন সরকারি অনুষ্ঠান মঞ্চে সরকারের তৈরি করে দেওয়া ভাষণে সরকারের অকুণ্ঠ প্রশংসা করলেও তারই ফাঁকে বিনিয়োগ টানতে সরকারের কৃত-কর্তব্য স্থির করে দিয়ে তিনি বলেছেন, শিল্পের জন্য জমি চিহ্নিত করতে রাজ্য সরকারকে সমান ভূমিকা নিতে হবে৷ শিল্পমহলের আস্থা অর্জনেও সদর্থক ভূমিকা নিতে হবে তাদের৷

এদিন বেঙ্গল লিডসের মঞ্চ থেকে রাজ্যপালের গলায় রাজ্য সরকারের ভূয়সী প্রশংসা শোনা গিয়েছে৷ রাজ্য সরকার শিল্পের জমির সংস্থানে যে ল্যান্ড ব্যাঙ্ক তৈরি করেছে, ইতিমধ্যেই ৬০ হাজার একর জমি চিহ্নিতও হয়েছে, ভাষণে তার উল্লেখ করেছেন তিনি৷ নারায়ণন বলেছেন, জমি যে একটা সমস্যা, রাজ্য সরকার তা বুঝতে পেরেছে৷ মুখ্যমন্ত্রীর সুরেই গুজরাতের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের তুলনা টানায়ও ঘোরতর আপত্তি জানিয়েছেন তিনি৷ কিন্তু এই গুচ্ছ প্রশংসার মধ্যেই এর পাশাপাশি রাজ্য সরকারের শিল্পায়নে কী করা উচিত, সে ব্যাপারে তিনি যা বলেছেন, তা মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষিত অবস্থানের কার্যত বিপরীত। শিল্পের জন্য জমি চিহ্নিতকরণে কার্যত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বিপরীত অবস্থান নিয়েছেন তিনি৷ বেঙ্গল লিডসের উদ্বোধনী ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী বলে গিয়েছেন, জমি খুঁজে বের করে শিল্পপতিদের সরাসরি কিনে নেওয়াটাই সঠিক রাস্তা৷ কিন্তু এদিন সমাপ্তি অনুষ্ঠানে রাজ্যপালের কথায় কার্যত স্পষ্ট হয়ে গেল জমি খোঁজার ক্ষেত্রে সরকারের ভূমিকাও থাকার পক্ষপাতী তিনি৷ শিল্প টানার প্রতিযোগিতায় অন্যান্য রাজ্যের থেকে এগোতে হলে যে রাজ্য সরকারকে বাড়তি তাগিদ দেখাতেই হবে, তাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন রাজ্যপাল৷ এবিজিকাণ্ড কিংবা জয় বালাজি গোষ্ঠীর কারখানায় গণ্ডগোল রাজ্য সরকারের শিল্প-ভাবমূর্তিতে ধাক্কা দিয়েছে বলেই মত বণিক মহলের৷ এই প্রেক্ষাপটেই রাজ্যপালের বক্তব্য, শিল্পমহলের আস্থা অর্জনের জন্য রাজ্য সরকারকে সদর্থক ভূমিকা নিতে হবে৷ রাজনৈতিক মহলের মতে, মু্খ্যমন্ত্রীর জমি নীতির জেরে এ রাজ্যে বড় শিল্প আসা প্রায় অসম্ভব বলেই এতদিন ধরে বলে আসছে শিল্প মহলের একাংশ৷ যদিও মুখ্যমন্ত্রী তাতে গুরুত্ব দেননি৷ কিন্তু জমি চিহ্নিতকরণে শিল্পপতিদের পাশাপাশি সরকারের ভূমিকার পক্ষে রাজ্যপাল এদিন যে সওয়াল করলেন, তাতে সরকারের অস্বস্তি আরও বাড়ল বলেই মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের৷

http://abpananda.newsbullet.in/state/34-more/32608-2013-01-17-13-24-21


আজ থেকে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের দফতরে শুরু হচ্ছে সিপিআইএমের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক। তিনদিনের বৈঠকে আলোচনা হবে ত্রিপুরায় বিধানসভা নির্বাচন ও এই রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে। 

এর পাশাপাশি, বেশ কয়েকটি ইস্যুতে দেশব্যাপী কর্মসূচি নিয়েছে বামেরা। যার মধ্যে অন্যতম সকলের জন্য দু`টাকা কেজি চালগমের দাবিতে সই সংগ্রহ অভিযান। সেই কাজ কেমন এগোচ্ছে, কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে তা নিয়েও কথা হবে। 

তবে আলোচনার কেন্দ্রে নিশ্চিতভাবে থাকবে ত্রিপুরায় বিধানসভা নির্বাচন। দেশের মধ্যে এই একটি রাজ্যেই ক্ষমতায় রয়েছে বামেরা। বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে এরাজ্য থেকে বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র এবং সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু ত্রিপুরায় প্রচারে যাবেন বলে জানা গিয়েছে। 

পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচনের রণনীতি নিয়েও কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে আলোচনা হবে। ভাঙড়ে রেজ্জাক মোল্লার ওপর আক্রমণের পর সিপিআইএমের মূল্যায়ন, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে রাজ্যে রাজনৈতিক হিংসার পরিমাণ আরও বাড়বে। 

বৈঠকের প্রথমার্ধের আলোচনার পর রেজ্জাক মোল্লাকে হাসপাতালে দেখতে যাবেন, প্রকাশ কারাট সহ সিপিআইএমের শীর্ষ নেতানেত্রীরা।  


পাক হকি খেলোয়াড়দের দেশে ফেরত পাঠানোর জের। পরিবর্ত পরিস্থিতিতে এবার মহিলা বিশ্বকাপ ক্রিকেটের স্থান বদলের দাবি জানাল পাক ক্রিকেট বোর্ড। আইসিসির কাছে সাউথ আফ্রিকায় ম্যাচ নিয়ে যাওয়ার আবেদন জানিয়েছে পিসিবি। সাম্প্রতিক ভারত-পাক চাপানউতোরের জেরে ভারতে খেলতে আসবে না বলে ইতিমধ্যেই জানিয়েছে পাক মহিলা ক্রিকেট দল। মহিলা বিশ্বকাপ ক্রিকেটে মুম্বই এবং আহমেদাবাদে খেলার কথা ছিল পাক ক্রিকেট দলের। 

কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে তাদের পক্ষে ম্যাচ আয়োজন করা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিয়েছে মুম্বই ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন। সমগ্র পরিস্থিতির কথা আইসিসিকে জানিয়েছে বিসিসিআই। তবে শেষপর্যন্ত মহিলা বিশ্বকাপ ক্রিকেট কোথায় হবে আইসিসি-ই তা স্থির করবে বলে বোর্ড কর্তা রাজীব শুক্লা জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রীকে গ্রেফতার করার ইস্যুতে সরাসরি দেশের সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে সংঘাতের পথে পাকিস্তান সরকার। সোমবার একটি দুর্নীতির মামলায় প্রধানমন্ত্রী রাজা পরভেজ আশরফকে গ্রেফতার করার নির্দেশ দেয় পাক সুপ্রিম কোর্ট। গতকালের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীকে কোর্টে হাজির করার নির্দেশও দিয়েছিল সর্বোচ্চ আদালত। কিন্তু রাজা পরভেজ আশরফকে গ্রেফতার করা হয়নি।

পাকিস্তানের দুর্নীতি দমন শাখা ন্যাব সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অগ্রাহ্য করে আজ পরিস্কার প্রধানমন্ত্রীকে গ্রেফতার করার ব্যাপারে তাদের আপত্তি জানিয়ে দিয়েছে। ন্যাবের প্রধান ফরিদ বুখারির দাবি, "দুর্নীতির মামলায় পাক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট প্রমাণ নেই।" সেই কারণেই তাঁকে গ্রেফতার করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে ন্যাব।


জওয়ান হত্যার অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত কোনও রকম আলোচনায় যাওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিল ভারত। পাক বিদেশমন্ত্রী হিনা রাব্বানি খারের বিদেশমন্ত্রক পর্যায়ের আলোচনার প্রস্তাবকে খারিজ করে দিয়ে তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী বৃহস্পতিবার বলেন, "পাক সেনার বর্বরোচিত আচরণের বিষয়টিই মুখ্য। যাঁরা এই নৃশংস ঘটনায় জড়িত, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেই আলোচনা সম্ভব।" ভারতের আবেগের কারণটিও পাকিস্তানের বিবেচনা করা উচিত বলে মনে করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। 

নয়াদিল্লি সূত্রে জানা গিয়েছে, আজকের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে উঠে আসতে পারে ভারত-পাক সম্পর্কের বিষয়টি। খারের প্রস্তাব নিয়ে ভারতের বিদেশমন্ত্রী সলমন খুরশিদ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলবেন বলে খবর। নিয়ন্ত্রণরেখার পরিস্থিতি নিয়ে তাঁদের দু'জনের মধ্যে কথা হবে বলে সূত্র মারফত জানা গিয়েছে।  

ভারতকে যুদ্ধবাজ বলার কয়েকঘণ্টার মধ্যেই সুর নরম করেন পাক বিদেশমন্ত্রী হিনা রব্বানি খার। গত কয়েকদিন ধরে ভারত-পাক সীমান্তে চলা উত্তেজনায় যবনিকা টানতে বুধবার ভারতের বিদেশ মন্ত্রী সলমন খুরশিদকে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দেন পাক বিদেশমন্ত্রী। পাক সেনার হাতে দুই ভারতীয় জওয়ানের মৃত্যু ও অস্ত্রবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করাকে কেন্দ্র করে দু`দেশের মধ্যে চাপ বাড়ছিল। এই উত্তেজনা বন্ধ হওয়া উচিত বলেই মনে করেন হিনা।

গতকাল এক বিবৃতিতে পাকিস্তান বিদেশমন্ত্রী জানান, "সেনাবাহিনী ও দু`তরফের রাজনৈতিক নেতাদের মন্তব্য উত্তেজনার উদ্রেগ করেছে।" সীমান্ত সংক্রান্ত সমস্ত ইস্যুতে বিদেশমন্ত্রক স্তরে আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে বলে মন্তব্য করেন খার।

নিয়ন্ত্রণরেখায় পাক বর্বরতা নিয়ে মঙ্গলবার পাকিস্তানকে কড়া বার্তা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। জবাবে, পাল্টা বার্তা দেন পাক বিদেশমন্ত্রী হিনা রব্বানি খার। গতকালই এক বিবৃতিতে তিনি অভিযোগ করেন, "ভারত যুদ্ধবাজের মতো আচরণ করছে।" যদিও তাঁর কয়েকঘণ্টার মধ্যেই সুর বদলে ফেলেন তিনি। নিয়ন্ত্রণরেখায় ফের শান্তি ফিরিয়ে আনতে বিদেশমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের প্রস্তাব রেখেছেন হিনা।

ইতিমধ্যে, নিয়ন্ত্রণরেখায় অস্থিরতা নিয়ে দু`দেশের ডিজিএমওরা নিজেদের মধ্যে হটলাইনে কথা বলেছেন বলে পাক সেনা সূত্রে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। তবে পাকিস্তানের আলোচনার আহ্বানে ভারতের ক্ষোভ প্রশমিত হয়নি বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদেও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসে মদত দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে ভারত।   


কিন্তু বাঙ্গালি ঠিক  মজে আছে রাজ্যে ক্ষমতার লড়াইয়ে!


ভাঙড়কাণ্ডে গ্রফতার আরাবুল ইসলামকে পাঁচ দিনের পুলিসি হেফাজতের নির্দেশ দিল আদালত। আজ আরাবুল ইসলামকে বারুইপুর আদালতে পেশ করা হলে বিচারপতি এই নির্দেশ দেন।

বৃহস্পতিবার চাপের মুখে গ্রেফতার হয় প্রাক্তন বিধায়ক তথা তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম। রেজ্জাক মোল্লার ওপর হামলা সহ বামনঘাটার সিপিআইএম কর্মীদের ওপর আক্রমণের ঘটনায় গ্রেফতার তাঁকে গ্রেফতার করে জেলা পুলিস।


ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক রেজ্জাক মোল্লার ওপর হামলার ঘটনায় অবশেষে চাপে পড়ে ভাঙড়ের প্রাক্তন বিধায়ক আরাবুল ইসলামকে গ্রেফতার করল পুলিস। এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তাঁর বিরুদ্ধে দুটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। ভারতীয় দন্ডবিধির একাধিক ধারা আনা হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। এরমধ্যে চারটি জামিন অযোগ্য ধারা রয়েছে। যেমন, খুনের চেষ্টা, অস্ত্র মামলা, বিস্ফোরক প্রতিরোধক আইন এবং মারধরের অভিযোগ। এছাড়াও সংঘর্ষ বাধানো এবং গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ আনা হয়েছে আরাবুল ইসলামের বিরুদ্ধে।


আদালতে পেশের পর তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় বারুইপুর হাসপাতালে। সম্প্রতি রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন। রাজ্যে 'গুন্ডারাজ' চলছে বলে মন্তব্য করে প্রশাসনকে নিরপেক্ষ হওয়ার কথা বলেছিলেন তিনি। রাজনৈতিক মহলের ধারনা, এরপরই প্রশাসনিক মহলে তত্‍‍‍‍‍‍পরতা শুরু হয়ে যায় আরাবুলকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিয়ে। তাঁর বিরুদ্ধে আরও আটটি মামলা রয়েছে। ভাঙড়ে সিপিআইএম কর্মীদের ওপরও হামলার অভিযোগ রয়েছে আরাবুলের বিরুদ্ধে।


অবশেষে গ্রেফতার হলেন ভাঙড়ের প্রক্তন বিধায়ক আরাবুল ইসলাম। গ্রেফতারের পরও রাশ কমেনি অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার। এ দিন সাংবাদিকদের আরাবুল ইসলাম জানান, "রেজ্জাক মোল্লা, সাত্তার মোল্লারা গুলি চালাল আর আরাবুল ইসলাম গ্রেফতার হল!" সেইসঙ্গে তিনি আরও বলেন,"ভাঙড় শান্ত থাকবে কিনা তা দলীয় কর্মীরা বুঝে নেবেন।" 

রেজ্জাক মোল্লার ওপর হামলার পরে বামনঘাটায় সিপিআইএম সমর্থকদের গাড়িতে আগুন, গুলি। দুটি ঘটনাতেই কাঠগড়ায় উঠেছিল আরাবুল ইসলামের নাম। তবে সে সময় আরাবুলের পাশেই দাঁড়িয়েছিল দল। দেখে নেব কী বলেছিলেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতারা।

আরাবুলের পক্ষে সওয়াল কোষে ভাঙড়ের সভায় রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র বলেছিলেন,"আরাবুলের মতো তাজা নেতা। যুব সম্প্রদায়ের সামনে মশাল ধরে এমন একজন নেতা। সে মার খাবে, আর আমাদের ভাঙড়ের লোকেরা বসে রসগোল্লা খাবে?" ভাঙড়ে প্রবীণ বিধায়ক রেজ্জাক মোল্লা আক্রান্ত হওয়ার ঘটনাকে `জনরোষ` বলেই মন্তব্য করেছিলেন মদন মিত্র। 

রাজ্যের আর এক মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় অভিযোগ তুলেছিলেন, "ভাঙড়ে আরাবুল ইসলামের ওপর অস্ত্র নিয়ে হামলা চালানো হয়।"

আজ ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক রেজ্জাক মোল্লাকে দেখতে হাসপাতালে যান সিপিআইএমের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাট। মিনিট দশেক কথাও হয় রেজ্জাক মোল্লার সঙ্গে। যতদিন প্রয়োজন রেজ্জাক মোল্লা হাসপাতালে থাকবেন বলেও জানান তিনি।    

কেন্দ্রের ডিজেলের মূল্য আংশিক বিনিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করল সিপিআইএম। সিপিআইএম সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাট জানিয়েছেন কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত সাধারণ মানুষের ওপর আক্রমণ। ডিজেলে মূল্য বিনিয়ন্ত্রণের অর্থ লাগাতার ডিজেলের দাম বাড়া। 

ভাঙড়কাণ্ডে আরাবুল ইসলামকে গ্রেফতারের ঘটনা সরকারের প্রথম পদক্ষেপ। তবে আইন যেন আইনের পথে চলে। রেজ্জাক মোল্লার ওপর হামলার ঘটনার সুবিচার হয়। বললেন সিপিআইএমের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাট। পূর্ব ক্যানিংয়ের বিধায়ক রেজ্জাক মোল্লাকে দেখতে আজ হাসপাতালে যান প্রকাশ কারাট। হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে এই মন্তব্য করেন তিনি। 


কলকাতা: তুমুল রাজনৈতিক চাপানউতোর, নাগরিক সমাজের প্রতিবাদ মিছিলের জেরে অবশেষে ভাঙড়কাণ্ডের ১১ দিনের মাথায় আরাবুল ইসলাম গ্রেফতার হওয়ায় রাজ্য সরকারের সদর্থক, ইতিবাচক ভূমিকা দেখছে তৃণমূল সহ নানা মহল দেরিতে হলেও আরাবুলের গ্রেফতারির পর প্রশাসনের ভূমিকার প্রশংসা শোনা গিয়েছে বিভিন্ন মহলে৷ রাজনৈতিক মহলের মতে, দেরিতে হলেও রাজধর্ম পালন করেছে সরকার৷ রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, প্রশাসনের এই ভূমিকাই রাজ্যবাসীর কাছে প্রত্যাশিত, যেখানে অভিযোগের প্রেক্ষিতে রাজনীতির রং না দেখেই বিচার হবে৷ 
পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্রের দাবি, ১১ দিন দেরি হলেও আরাবুলকে গ্রেফতার করে শেষ পর্যন্ত রাজধর্ম পালন করল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার৷ তিনি যে রাজনীতির রং না দেখে দলমত নির্বিশেষে ব্যবস্থা নেন, আরাবুলকে গ্রেফতার করে মুখ্যমন্ত্রী সেই বার্তাই দিলেন৷ তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদক মুকুল রায় এদিন জানিয়েছেন, আইন আইনের পথে চলবে৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসন দলীয় রং দেখে না৷ আরাবুলের গ্রেফতারির ঘটনা তার প্রমাণ৷ সিপিএম আমলে এমনটা হত না৷ 
তবে এই ঘটনাক্রমের শুরুতে  প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিভিন্ন মহল৷ ভাঙড়ে রেজ্জাক মোল্লাকে মারধর এবং বামনঘাটায় সিপিএমের মিছিলে হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত হলেও তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব বরাবর প্রকাশ্যে আরাবুলের পাশেই দাঁড়িয়েছেন৷ কখনও সভা করে, কখনও মহাকরণ থেকে আরাবুলকে দরাজ সার্টিফিকেট দিয়েছেন তাঁরা৷ অন্যদিকে, এই ঘটনা ঘিরে রাজ্য রাজনীতি যখন উত্তপ্ত, তখন কঠোর সমালোচনা শোনা গিয়েছে খোদ রাজ্যপাল এম কে নারায়ণনের মুখেও৷ তিনি স্পষ্ট বলেছেন, রাজ্যে এক ধরনের গুণ্ডামি চলছে৷ আরাবুলের গ্রেফতারির নেপথ্যে রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের সেই সমালোচনার চাপও রয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ৷ 

http://abpananda.newsbullet.in/state/34-more/32612-2013-01-17-14-36-11


কলকাতা: এবার কি সাত্তার মোল্লার পালা? তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলামের পর কি এবার গ্রেফতার করা হতে পারে রেজ্জাক মোল্লার ডান হাত বলে পরিচিত ভাঙড়ের সিপিএমের জোনাল সম্পাদককে? এই নিয়ে এখন রাজনৈতিক মহলে জল্পনা তুঙ্গে উঠেছে৷ আজ আরাবুলের গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে সাত্তারকে জেলে পোরার রাস্তাই তৈরি করা হল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ৷ 
প্রসঙ্গত, ভাঙড় এলাকায় আরাবুলকে যেমন বিরোধীরা ত্রাস বলে মনে করে, সাত্তার সম্পর্কে তেমনই দাবি তৃণমূলের৷ বামনঘাটাকাণ্ডে যেমন আরাবুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তেমনই সাত্তারের বিরুদ্ধেও পাল্টা সন্ত্রাস চালানোর মামলা দায়ের হয়েছে৷ 

তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় আজ অভিযোগ করেন, 'সাত্তার মোল্লা নিম্ন আদালতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি৷ বাম জমানায় সরকারি হস্তক্ষেপে হাইকোর্ট থেকে তাঁর জামিন করাতে সমর্থ হয় সিপিএম৷ কিন্তু কোনও এক অদৃশ্য কারণে ওই মামলার আর শুনানি হয়নি৷' ফলে সাত্তার সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গী কী, তা মুকুল রায়ের কথাতেই স্পষ্ট৷ রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ব্যাখ্যা, আরাবুলের গ্রেফতার হওয়ায় সাত্তারকে হাজতে পোরার দরজাও খুলে গেল৷ একই যাত্রায় ভিন্ন ফল হয় না, এই যুক্তিকে সামনে রেখে এবার সাত্তারকে গ্রেফতারের ক্ষেত্রে পুলিশের কোনও পিছুটান থাকল না বলেই মনে করছে তৃণমূলের একাংশ৷ তাদের বক্তব্য, সাত্তারকে গ্রেফতার না করা হলে ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মনোবল ভেঙে যাবে৷ আর এই সুযোগে পঞ্চায়েত ভোটের আগে এলাকা দখলে নামতে পারে সিপিএম৷ ফলে রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা থেকেও সাত্তারের গ্রেফতারির জোরালো সম্ভাবনা আছে বলেই মনে করা হচ্ছে৷

প্রশ্ন উঠছে, রেজ্জাকও কি গ্রেফতার হতে পারেন? আরাবুলের বিরুদ্ধে যেমন রেজ্জাকের গাড়ির চালক অভিযোগ করেছেন, তেমনই রেজ্জাকের বিরুদ্ধেও অভিযোগ দায়ের করেছে তৃণমূল৷ তৃণমূলের একাংশের প্রশ্ন, আরাবুল গ্রেফতার হলে রেজ্জাক নন কেন? তবে এ ব্যাপারে মুখ খুলতে চাননি মুকুল রায়৷ তাঁর মন্তব্য, আইন আইনের পথে চলবে৷ যদিও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, সাত্তারকে গ্রেফতার করা হলে  বৃহত্তর জনমানসে তার প্রভাব সেভাবে পড়বে না৷ কিন্তু রাজ্য রাজনীতির পরিচিত মুখ রেজ্জাকের বিরুদ্ধে এরকম কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হলে তার বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হতে পারে৷ তাই রেজ্জাকের ক্ষেত্রে সবদিক বিবেচনা করেই এগোবে প্রশাসন৷ 

http://abpananda.newsbullet.in/state/34-more/32613-2013-01-17-15-04-01


তৃণমূলের প্রথম সারির নেতা থেকে হেভিওয়েট মন্ত্রী, ভাঙড়কাণ্ডের পর প্রত্যেকে পাশে দাঁড়ালেও এতদিন পর হঠাত্‍ কেন গ্রেফতার করা হল আরাবুল ইসলামকে? এই প্রশ্নকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক জল্পনা তুঙ্গে উঠেছে৷ রেজ্জাক মোল্লার ওপর হামলা, বামনঘাটায় সিপিএম কর্মীদের গাড়িতে আগুন, গুলি চালানোর অভিযোগ-সব ব্যাপারেই কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে সেই আরাবুলকেই৷ কিন্তু তারপরও তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছে দল৷ মুকুল রায়, ববি হাকিম, পার্থ চট্ট্যোপাধ্যায়, মদন মিত্র, শুভেন্দু অধিকারী৷ কে নেই? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমস্ত সেনাপতি সদলে আরাবুলের পাশে দাঁড়িয়েছেন৷ কেউ বলেছেন, আরাবুল তাজা ছেলে, উদ্যমী৷ কারও মত, আরাবুলের ভাষাই সঠিক ভাষা৷ কিন্তু রেজ্জাকের ওপর হামলার ১১দিন পর হঠাত্‍ ছন্দপতন! গ্রেফতার হলেন আরাবুল৷ রাজ্যের প্রথম সারির মন্ত্রীরা যাঁকে মহাকরণ থেকে দাঁড়িয়ে সার্টিফিকেট দিয়েছিলেন, তিনি হঠাত্‍ কেন পুলিশের জালে? এই প্রশ্ন ঘিরে জল্পনা দানা বেঁধেছে রাজনৈতিক মহলে৷ উঠে আসছে নানা তত্ত্ব। সেগুলির একটি হল, আরাবুলের গ্রেফতারির নেপথ্যে থাকতে পারে মুসলিম ভোটব্যাঙ্কের সমীকরণ৷ তৃণমূল বুঝতে পেরেছে, সদ্য হজ সেরে হাজি হয়ে ফেরা রেজ্জাকের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা মুসলিমরা মেনে নিতে পারবেন না৷ যার জেরে হাতছাড়া হতে পারে সংখ্যালঘু ভোট৷ আর তাই মুসলিম ভাবাবেগে আঘাতের ভয়েই রেজ্জাকের ওপর হামলার দায়ে অভিযুক্ত আরাবুলকে গ্রেফতার করা হল৷ কয়েকদিন আগে এমন ইঙ্গিত দিয়েছিলেন কবীর সুমনও৷ কলকাতা থেকে সামান্য দূরে রাজ্যের প্রবীণ এক বিধায়কের ওপর হামলা, হানাহানির ঘটনায় শহুরে ভোটারদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হতে পারে, এই আশঙ্কাতেও আরাবুলকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়ে থাকতে পারে শাসক দল৷ ভাঙড়কাণ্ডের পর তৃণমূল অভিযুক্ত আরাবুলের পাশে দাঁড়ানোয় এবিপি আনন্দ সহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে সমালোচনার তুমুল ঝড় ওঠে, যার জেরে একপ্রকার বাধ্য হয়েই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসন আরাবুলকে গ্রেফতারের সিদ্ধান্ত নিল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল৷
আরাবুলের একের পর এক কাণ্ডকারখানায় তৃণমূলের একাংশের মধ্যেও ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল৷ যার জেরে দলের অভ্যন্তরেও তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার চাপ ছিল বলেও মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একটি অংশ৷ভাঙড়কাণ্ডের পর রাজ্যে এক ধরণের গুণ্ডারাজ চলছে বলে কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলেন খোদ রাজ্যপাল এম কে নারায়ণনই৷ প্রকাশ্যে রাজ্যপালের এই মন্তব্যের পর অস্বস্তি কাটাতেও শেষপর্যন্ত দলের সম্পদ আরাবুলকে জেলে পোরার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে থাকতে পারে বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের৷
তবে আরাবুলের গ্রেফতারির পিছনে নিখুঁত পরিকল্পনা রয়েছে বলে দাবি  সিপিএমের একাংশের৷ তাদের মতে, আরাবুলকে গ্রেফতারের পর এবার সিপিএমের দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সাত্তার মোল্লা, তুষার ঘোষ এবং ভাঙড়-ক্যানিং পূর্বের একাধিক সিপিএম নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হতে পারে৷ কারণ এঁদের বিরুদ্ধে প্রদীপ মণ্ডল নামে এক তৃণমূল নেতা আগেই থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন৷ যেহেতু সাত্তার মোল্লা, তুষার ঘোষরা ক্যানিং ও ভাঙড়ে সিপিএমের মূল ভিত্তি, তাই এঁদের গ্রেফতার করে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সিপিএমের কোমর ভেঙে দিতেই পরিকল্পনা করে আরাবুলকে গ্রেফতারের নাটক করা হল বলে দাবি আলিমুদ্দিনের একাংশের৷  

http://abpananda.newsbullet.in/state/34-more/32610-2013-01-17-14-02-34


জঙ্গলমহলের উন্নয়নে দেড় বছরেই ৯০ শতাংশ কাজ হয়ে গিয়েছে বলে বিভিন্ন জনসভায় দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী । অথচ তাঁর সরকারেরই মুখ্যসচিবের পর্যবেক্ষণ বলছে উল্টো কথা । জঙ্গলমহলের সমীক্ষা রিপোর্ট খতিয়ে দেখে রাজ্যের মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্র জঙ্গলমহলের উন্নয়ন নিয়ে নোটে তাঁর উদ্বেগের কথা লিখেছেন। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তিনি চিঠি লিখেছেন খাদ্যসচিব অনিল ভার্মাকে।  

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জঙ্গলমহলে উন্নয়নের দাবিকে কার্যত খারিজ করা হল তাঁরই প্রসাশনের সর্বোচ্চ আমলা, খোদ রাজ্যের মুখ্যসচিবের চিঠিতে। সম্প্রতি জঙ্গলমহলের ৩৫টি গ্রামে গণবন্টন, স্বাস্থ্য পরিষেবা এবং পরিশ্রুত পানীয় জল সরবরাহ-এই তিনটি বিষয় নিয়ে সমীক্ষা করা হয়। জঙ্গলমহলের সার্বিক উন্নয়ন নিয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্রের পর্যবেক্ষণ অস্বস্তি বাড়িয়েছে সরকারের। 

পয়লা জানুয়ারি খাদ্য ও সরবরাহ সচিব অনিল ভার্মাকে একটি চিঠি লেখেন মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্র। সঙ্গে চার পাতার নোটে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি। জঙ্গলমহলের সব এলাকায় স্বাস্থ্য ব্যবস্থা কার্যত ভেঙে পড়েছে বলে বলে উল্লেখ করা হয়েছে নোটে। একমাত্র গোয়ালতোড় এলাকা ছাড়া স্বাস্থ্য পরিষেবায় ভ্রাম্যমান  মোবাইল মেডিক্যাল ভ্যান কোথাও চোখে পড়েনা। পানীয় জলের ক্ষেত্রে গভীর নলকূপের কথা বলা হলেও, অধিকাংশ এলাকাতেই পাতকুয়োর ওপরেই এখনও নির্ভর করতে হচ্ছে জঙ্গলমহলবাসীকে। দু`টাকা কেজি দরে চালের চাহিদা থাকলেও তা সবাই পাচ্ছেন না। অথচ সেই চাল খোলা বাজারে বিক্রি হচ্ছে। এই বিষয়ে নিজের উদ্বেগের কথা খাদ্যসচিবকে জানিয়েছেন মুখ্যসচিব।


মুখ্যসচিবের রিপোর্ট সঠিক তথ্যই তুলে ধরছে। জঙ্গলমহলে পৌঁছয়নি উন্নয়নের ছোঁয়া। অভিযোগ ঝাড়খণ্ড অনুশীলন পার্টির নেতা অসিত খাটুয়ার।

একদিকে ঢালাও উন্নয়নের দাবি মুখ্যমন্ত্রীর। অন্যদিকে তাঁরই সরকারের মুখ্যসচিবের পর্যবেক্ষণে ধরা পড়েছে উল্টো ছবি। সেই চিঠি ফাঁস হওয়ায় অক্ষরিক অর্থেই অস্বস্তি বেশ কয়েকগুণ বাড়ল সরকারের। 


বৃহস্পতিবার নীরব মিছিলে সামিল হল কলকাতা। ভাঙর থেকে দিনহাটা, রাজ্যে ক্রমবর্ধমান অশান্তি ও আইনশৃঙ্খলার অবনতির বিরুদ্ধে পথে নামলেন বুদ্ধিজীবীরা। সঙ্গে পা মেলালেন সাধারণ মানুষরাও। কলেজ স্কোয়্যার থেকে রানি রাসমণি অ্যাভেনিউ পর্যন্ত এই নীরবে মিছিলে ছিল প্রতিবাদের অঙ্গীকার। মিছিলে পা মেলালেন চন্দন সেন, উষা গাঙ্গুলী, অশোক মুখোপাধ্যায়,পবিত্র সরকার , স্বপ্নময় চক্রবর্তী , সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়রা সহ বিশিষ্টরা। 

মিছিলের পর নাট্যকার চন্দন সেন জানালেন, "সরকার যেভাবে শিল্প-সংস্কৃতির প্রতিরোধ করতে চাইছে, তা সবার কাছে বিপজ্জনক৷ সঙ্গে ভাঙর থেকে দিনহাটায় যা চলছে তা গুন্ডারাজ ছাড়া আর কিছু নয়। তাই প্রতিবাদের রাস্তা বেছে নিতে বাধ্য হলাম।"

নাটকে 'মা-মাটি' শব্দ ব্যবহার হওয়ায় দিনহাটায় নাট্যকর্মীদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে৷  রীতিমতো ঘেরাও করা হয় নাট্যদলকে৷ সংস্কৃতি জগতেও শাসক দলের আক্রমণের অভিযোগে সরব হয় বিভিন্ন মহল৷ সেই নাট্যদলের পরিচালক বেণু চট্টোপাধ্যায়ও আজ হাঁটেন মিছিলে৷  এই সুশীল পর্যটনের সঙ্গে একমাত্র তুলনা মোহনবাগান প্রসঙ্গ


নির্বাসন থেকে মুক্ত হয়ে আবার মাঠে ফিরছে মোহনবাগান। অসহ্য চাপ কর্তারা কাটিয়ে উঠলেও,মোহনবাগান কোচ-ফুটবলাররা কি পেরেছেন? ঠাসা ক্রীড়াসূচির চাপ তো রয়েইছে। তার সঙ্গে নতুন চ্যালেঞ্জ,এই অবস্থা থেকে সমর্থকদের মুখে আবার হাসি ফোটানো। সেই দায়িত্বও কম চাপের নয়! গোয়ায় রওনা হওয়ার আগে ক্লাবের মাঠে শেষ অনুশীলনে নিজের দলের ফর্মেশনে মন দিলেন করিম।

আপফ্রন্ট ওডাফাহীন হওয়ায় টোলগের সঙ্গী হচ্ছেন সাবিথ। ভাবনায় রয়েছেন স্ট্যানলিও। সেন্ট্রাল ডিফেন্সে আইবর-ইচে। দুই সাইডব্যাক হিসেবে নির্মল ছেত্রীর সঙ্গে নতুন ভূমিকায় দেখা যেতে পারে স্নেহাশিস চক্রবর্তীকে। মাঝমাঠে ডিফেন্সিভ ব্লকার হিসেবে দেখা যাবে রাকেশ মাসিকে। দুই হাফ জুয়েল ও নবি। মাঝমাঠে স্ট্যানলি না ডেনসন দেবদাস-সে নিয়ে এখনও ছক ভাঙা গড়ার কাজ চলছে কোচ করিমের।

মরসুমের শুরুতে তাঁকে ঘিরে বিতর্ক হয়েছিল। আর মরসুমে ক্লাবের নির্বাসনে নিজের ফুটবল কেরিয়ারই প্রশ্নের মুখে পড়ে গিয়েছিল।অবশেষে নির্বাসন থেকে মুক্তি পেয়ে টোলগে ওজবে নিজেকে ছাপিয়ে যেতে মরিয়া। সালগাঁওকর ম্যাচ খেলতে নামার আগে টোলগের দাবি,এখন আর হার বা ড্র নয়,জয়ই এখন তাঁর স্বপ্নে।
 
 
তবে নির্বাসন থেকে মুক্তি পাওয়ার পর প্রথম ম্যাচ অ্যাওয়ে হওয়ায় একটা আফশোস আছে টোলগের। কামব্যাকের ম্যাচে তিনি মিস করবেন মাঠে সমর্থকদের চিত্কার। পুরানো বিতর্ক নিয়ে আর মাথা ঘামাতে চাননা টোলগে।আবার গোলের মধ্যে ফিরতে চান অসি গোলমেশিন।

ফতোদরা বদলে এখন গোয়ায় আইলিগের ম্যাচ হচ্ছে মাপোসার দুলের স্টেডিয়ামে।এই নতুন স্টেডিয়ামে ফিল্ডটার্ফ থাকায় মোহনবাগান কোচ করিম চেয়েছিলেন বৃহস্পতিবার যুবভারতীতে অনুশীলন করতে। কিন্তু সকালে যুবভারতী বুকিং ছিল মহমেডান স্পোর্টিংয়ের। তাঁরা ছাড়তে রাজি না হওয়ায় অগত্যা ক্লাবের মাঠে অনুশীলন করতে হয় মোহনবাগানকে। নির্বাসন থেকে মুক্তি পেয়ে প্রথম ম্যাচ। গোয়ায় মোহনবাগান কোচ করিম মুখোমুখি হচ্ছে তাঁর প্রাক্তন দল সালগাঁওকরের। নির্বাসন থেকে মুক্তি পেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে থাকা কোচ করিম একদমই পেশাদার।
  
বেশ কিছুদিন প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলেনি মোহনবাগান। তাই সেরা ফর্মে ফিরতে এক-দুটো ম্যাচ লাগবে বলে মনে করেন মোহনবাগান কোচ।


প্যারাটিচারদের প্রশিক্ষণের দায়িত্ব নিতে হবে রাজ্য সরকারকেই। রায় দিল কলকাতা হাইকোর্ট। প্যারাটিচারদের দায়ের করা এক মামলার শুনানির সময় হাইকোর্ট বলে, শিক্ষা অধিকার আইন অনুযায়ী প্যারাটিচারদেরও প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে, প্রশিক্ষণের দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে। রাজ্যে এই মুহূর্তে প্যারাটিচারের সংখ্যা প্রায় ৫৫ হাজার। 

শিক্ষার অধিকার আইন বলছে, প্রশিক্ষণ ও নির্দিষ্ট যোগ্যতা না থাকলে দু হাজার পনেরো সালের পর কেউই শিক্ষকতা করতে পারবেন না। সেই অনুযায়ী, ইতিমধ্যেই কর্মরত স্থায়ী প্রাথমিক শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছে সরকার। কিন্তু, প্যারাটিচারদের অভিযোগ, তাঁদের প্রশিক্ষণের কোনও ব্যবস্থাই হচ্ছে না। প্রশিক্ষণের আর্জি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন করেন প্যারাটিচাররা। 

বুধবার এই মামলার শুনানির সময় বিচারপতি বলেন, প্যারাটিচারদেরও প্রশিক্ষণের দরকার। সেক্ষেত্রে ইচ্ছুক প্যারাটিচারদের প্রশিক্ষণের দায়িত্ব নিতে হবে রাজ্য সরকারকে। ২০১৫ সালের মধ্যে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে সরকারকে। কারণ, কেন্দ্রীয় নিয়মে সম্প্রতি বলা হয়েছে, নির্দিষ্ট যোগ্যতা যাদের থাকবে না তারা দু হাজার পনেরো সালের মার্চ মাসের পর থেকে আর শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারবেন না। ফলে  শুধু স্থায়ী শিক্ষক নয়, প্যারাটিচার বা পার্শ্ব শিক্ষকদেরও প্রশিক্ষণের দায় এল রাজ্য সরকারের কাঁধে। 


দিঘা বোঝাল, গোয়া এখনও বহু দূর



দিঘা বোঝাল, গোয়া এখনও বহু দূর
এই সময়, দিঘা: প্রশাসনিক অব্যবস্থায় উদ্বোধনের দিনই দিঘার বালুকাবেলায় গড়াগড়ি খেল বিচ ফেস্টিভ্যাল! 

এই উত্‍সব যাঁর মানস-সন্তান, যিনি গত বছর উদ্বোধন করেছিলেন প্রথম সৈকত উত্সবের, সেই মুখ্যমন্ত্রী আসতে পারেননি৷ বেলদায় জনসভা করতে গিয়েছেন৷ যাঁদের জন্য সৈকত উত্‍সব, সেই পর্যটকরা সংখ্যায় মেরেকেটে শ' দুয়েক হবে৷ তা-ও তাঁরা সাচ্চা পর্যটক, না শাসকদলের লোক, নাকি স্থানীয় মানুষ-- দেখে বোঝার উপায় নেই৷ যাদের উদ্যোগে উত্সব, সেই পর্যটন দপ্তরের সচিব থেকে কর্তাব্যক্তিরা- কেউ কোত্থাও নেই৷ বিনিয়োগ আনতে দিল্লি গিয়েছেন৷ পর্যটনমন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী অবশ্য দিল্লি যাননি৷ কিন্ত্ত তিনি কোথায়? 'এই সময়'কে জানালেন, মালদহে প্রচারে ব্যস্ত৷ শোনা গিয়েছিল, মুখ্যমন্ত্রীর বদলে নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম উদ্বোধনে আসতে পারেন৷ কোথায় কে? খোঁজ নিয়ে জানা গেল, মন্ত্রী অসুস্থ হয়ে এসএসকেএমে ভর্তি৷ শেষে তো অবস্থা এমন দাঁড়াল যে, উত্‍সবের উদ্বোধন কে করবেন, তা-ই বোঝা দায়! 

উদ্বোধন হওয়ার কথা ছিল বিকেল পাঁচটায়৷ শেষমেশ হল সন্ধ্যা সাড়ে ছ'টায়৷ উদ্বোধন করলেন দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান শিশির অধিকারী৷ কিন্ত্ত সেখানেও প্রকট হয়ে রইল তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব আর সমন্বয়ের অভাব৷ কারণ, যাঁকে আহ্বায়ক করে বিচ ফেস্টিভ্যাল কমিটি গঠন করা হয়েছিল, সেই তৃণমূল বিধায়ক অখিল গিরিকে অনুষ্ঠানের ধারেপাশে দেখাই গেল না৷ জিজ্ঞেস করা হলে অভিমানের গলায় জানালেন, 'আমাকে তো কেউ কিছু জানায়ইনি, তাই আর আসিনি৷' কী কাণ্ড! উত্‍সব কমিটির আহ্বায়কই জানেন না দিনক্ষণ! ঘটনা হল, শিশিরবাবুর আগে দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান ছিলেন অখিলবাবুই৷ 'বিশেষ কাজ' থাকায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে না এসেই ফিরে গেলেন পর্ষদের আর এক প্রাক্তন চেয়ারম্যান দেবাশিস দত্তও৷ তবে উপস্থিত ছিলেন জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র ও দক্ষিণ কাঁথির বিধায়ক দিব্যেন্দু অধিকারী৷ 

গত বছর প্রথম বিচ ফেস্টিভ্যাল উদ্বোধনের দিনে তা-ও উতরে গিয়েছিল৷ সৌজন্যে অবশ্যই উদ্বোধকের ভূমিকায় মমতার উপস্থিতি৷ এ বার তিনি না আসায় প্রথম দিনেই জৌলুস অনেকটা নিভে গেল উত্‍সবের৷ শিশির অধিকারী অবশ্য হাতেগোনা মানুষকে সাক্ষী রেখে জোর গলায় বললেন, 'মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের দিঘাকে সাজিয়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছে৷ কয়েক বছরের মধ্যেই দিঘা নতুন করে সেজে উঠবে৷ ফেব্রুয়ারিতে মুখ্যমন্ত্রী দিঘায় আসবেন৷' রাজ্যের নতুন পর্যটনমন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী জানালেন, 'আমি মালদহে প্রচারে ব্যস্ত, ফিরহাদ হাকিমের যাওয়ার কথা ছিল, উনিও অসুস্থ৷ এটা ইনসিডেন্ট৷ কিছু তো করার নেই৷' আপনার দপ্তর থেকে কেউ এলেন না কেন? 'কেন, দপ্তরের জেনারেল ম্যানেজার অনিমেষ ভট্টাচার্য তো ছিলেন৷ বাকিরা দিল্লিতে৷' 

যাঁদের জন্য উত্‍সব, সেই পর্যটকরা কী বলছেন? উত্‍সবের কথা জানতেই পারেননি অধিকাংশ পর্যটক৷ কারণ, প্রচারের অভাব৷ যাঁরা প্রতিবেদকের কাছে উত্‍সবের কথা জানতে পারলেন, তাঁদের সটান জিজ্ঞাসা, 'আমরা যখন জানি না, তা হলে এই উত্সবটা আসলে কাদের জন্য?' 

পর্যটনে বার বার বিনিয়োগ টানার কথা বলছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তাঁর ইচ্ছাতেই গত বছর থেকে গোয়ার ধাঁচে শুরু হয়েছে সৈকত উত্‍সব৷ কিন্ত্ত বুধবারের দিঘা বুঝিয়ে দিল, গোয়া এখনও বহু দূর! 

http://eisamay.indiatimes.com/articleshow/18057083.cms

বনিকসভায় পর্যটনের পক্ষে সওয়াল, মরিয়া অমিত, তবু লগ্নি প্রস্তাব এল না



বনিকসভায় পর্যটনের পক্ষে সওয়াল, মরিয়া অমিত, তবু লগ্নি প্রস্তাব এল না
গৌতম হোড়

নয়াদিল্লি: নামকরা কোনও শিল্পপতি যোগ দেননি৷ শোনা যায়নি উল্লেখযোগ্য কোনও বিনিয়োগ প্রস্তাব৷ আড়ম্বরপূর্ণ আয়োজন, মুখ্যমন্ত্রীর আহ্বানই সার-- হলদিয়ায় আয়োজিত বেঙ্গল লিডস-২ রাজ্যে শিল্পায়নের নতুন দিশা দেখাতে কার্যত ব্যর্থই৷ পর্যটনে বিনিয়োগ টানতে নয়াদিল্লিতে বণিকসভা ফিকি-র মঞ্চে রাজ্যের অর্থমন্ত্রীর সওয়ালও বস্ত্তত জলে গেল৷ মন্ত্রী বললেন, 'জমি নিয়ে কোনও সমস্যা নেই৷ দর্জিলিং থেকে সুন্দরবন পর্যন্ত আকর্ষণীয় সব জায়গা৷ অনায়াসে পর্যটকদের কাছে স্বর্গ হয়ে উঠতে পারে৷ সরকার ইনসেনটিভও দিচ্ছে৷' তার পরেও পর্যটনক্ষেত্রে রাজ্যে বিনিয়োগের ব্যাপারে তেমন উত্সাহ চোখে পড়ল না৷

পর্যটন পরিকাঠামোয় বিনিয়োগ বিষয়ক এই অনুষ্ঠানে সহযোগী রাজ্য ছিল পশ্চিমবঙ্গই৷ সেই সুযোগটা নিতেই বুধবার দিল্লির মঞ্চে হাজির হয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র, পর্যটন পরামর্শদাতা দীনেশ ত্রিবেদী থেকে শুরু করে রাজ্য পর্যটন দন্তরের সচিব ও অধিকর্তারা৷ তাঁরা চেষ্টার ত্রুটি রাখেননি৷ কিন্ত্ত পর্যটন-ক্ষেত্রে রাজ্যে বিনিয়োগের সম্ভাবনা নিয়ে দীর্ঘ প্রেজেনটেশনের মাঝপথেই সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের অনেকে উঠে চলে গেলেন৷ গুনেগুনে মোটে চারটে প্রশ্ন এল বাকিদের কাছ থেকে৷ সেই প্রশ্নের মধ্যেও সমালোচনার সুরই বেশি, বিনিয়োগের ইচ্ছে প্রকাশ পেল না৷

অথচ দেশি-বিদেশি সম্ভাব্য অনেক বিনিয়োগকারীই উপস্থিত ছিলেন৷ আমেরিকায় মোটেলের ৪০ শতাংশ যাঁদের দখলে, সেই পটেলরা ছিলেন৷ আমেরিকা থেকে পর্যটনশিল্পে যুক্ত ১৫ জন প্রতিনিধি এসেছিলেন৷ ভারতীয় বিনিয়োগকারীরাও ছিলেন৷ তাঁদের মন পেতে অমিত মিত্র বললেন, 'এ রকম রাজ্য আপনারা কোথায় পাবেন, যার ওপরে হিমালয়, নীচে সাগর৷ একটি সর্বভারতীয় পত্রিকার বিচারে গ্রীষ্মকালীন সেরা পর্যটনকেন্দ্রের স্বীকৃতি পেয়েছে দার্জিলিং৷ সুন্দরবনে ১০০ একর জমি চিহ্নিত হয়েছে৷ গাজলডোবার মতো জায়গা দেশে বেশি পাবেন না৷ পাঁচতারা, তিনতারা হোটেল, গলফ কোর্স-- অনেক কিছুই বানাতে পারেন৷ জমি আমাদের হাতে আছে৷ আপনারা আসুন৷'

মন্ত্রীর এই আমন্ত্রণের পরেই তাল কাটল হোটেল ব্যবসায়ী দেবাশিস ঘোষালের প্রশ্নে, 'রাস্তা এত খারাপ কেন? ধর্মীয় পর্যটনের অন্যতম কেন্দ্র হতে পারে তারাপীঠ৷ কিন্ত্ত সেখানে ভদ্রগোছের কোনও রাস্তাই তো নেই!' বোঝা গেল, রাস্তাঘাট নিয়ে বিনিয়োগকারীদের সংশয় তুঙ্গে৷ সিঙ্গাপুরে রিসর্ট চালান এস ডি গুন্ত৷ তাঁর প্রশ্ন, 'কতদিনে অনুমোদন পাব? অনুমোদন পেতে এত দেরি হয় যে বিনিয়োগকারীরা প্রচণ্ড ক্ষতির মুখে পড়েন৷' রাজ্যের পর্যটন সচিব বোঝাবার চেষ্টা করলেন, এক-জানালা নীতিতে অনুমতি দিতে আর দেরি হবে না৷ কিন্ত্ত নির্দিষ্ট করে সময়সীমা বলা গেল না৷ ঝাড়খণ্ডের সন্দীপ সাহুর প্রশ্ন ছিল, 'হোটেল তৈরি করতে গেলে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ, দমকল, ট্র্যাফিক পুলিশেরও অনুমতি লাগে৷ সেটা কি এক-জানলায় পাওয়া যাবে?' সচিবের জবাব, এ বার থেকে যাবে৷ অন্য এক বিনিয়োগকারী বললেন, 'প্রচারের ব্যাপারে কী করছেন?' ব্যস, বিনিয়োগকারীদের প্রশ্ন এখানেই শেষ৷ এর পরও সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে মুখোমুখি বসেছিলেন অফিসারেরা৷ তাতেও বিনিয়োগের তেমন কোনও প্রতিশ্রীতি মেলেনি৷

এই অবস্থায় রাজ্যের পর্যটন বিভাগের পরামর্শদাতা, প্রাক্তন রেলমন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদী বরং একটি বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছেন৷ তিনি বলেন, 'কথায় কিছু হয় না, দু'-একটা ছবি দেখেও হয় না৷ আপনারা আসুন৷ দার্জিলিং থেকে সুন্দরবন পর্যন্ত জায়গা দেখুন৷ আমরা নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করব৷ তার পর দেখুন, বিনিয়োগ করা যায় কি না৷' অভিজ্ঞতা থেকে দীনেশ জানেন, শুধু সরকারি অফিসারদের কথায় বিনিয়োগ আসে না৷

আজ, বৃহস্পতিবার ফের সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন অমিতবাবু৷ এ বার বণিকসভা সিআইআই-এর অনুষ্ঠানে৷ তাতেও কতটা কী হবে, সংশয় ষোলো আনাই৷ এর মধ্যেই একটা ব্যাপার সবাই স্বীকার করছেন, আগের চেয়ে ভালো প্রস্ত্ততি নিয়ে এসেছেন রাজ্যের অফিসারেরা৷ রাজ্যের তাগিদটা অন্তত টের পাওয়াতে পারছেন তাঁরা৷ তাতে যদি অদূর ভবিষ্যতে বিনিয়োগ আসে, এখন তারই অপেক্ষা৷

মমতা চলে যেতেই ফাঁকা হোটেল
লগ্নি নয়, হৃদয়ের পরশেই খুশি পার্থ
স্টেপ ওয়ান— কাটিং অফ ব্যাম্বু।
স্টেপ টু— স্লাইসিং অফ ব্যাম্বু।
স্টেপ থ্রি— রোলিং অফ আগরবাতি। 
ওয়েস্টবেঙ্গল: দ্য নিউ ডেস্টিনেশন অফ আগরবাতি ইন্ডাস্ট্রি।
বেঙ্গল লিডসের হল ডি-এর প্রথম স্টল। ঢুকলেই ধূপধুনোর সুগন্ধে ম ম করছে। মঙ্গলবার ঠিক এর পাশের ঘরেই মুখ্যমন্ত্রী উদ্বোধন করে গিয়েছেন রাজ্যের বার্ষিক লগ্নি আহ্বানের মহাসভা।
আগরবাতিতে শেষ নয়। শিল্পমেলায় রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের প্রকাশন কেন্দ্র, অদ্বৈত আশ্রমেরও দুটো স্টল। অধ্যাত্ম্যবাদেও কি বিনিয়োগ চাইছে রাজ্য? স্বামী নরসিংহানন্দ বললেন, "কী করব! স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী আমাদের আহ্বান করেছেন।" এখানে আসার পর যুব দফতরের অফিসাররা ওঁদের বলেন, "আমাদের স্টলটা আপনারা নিয়ে নিন।" তার পর শিক্ষা দফতরের লোকজন এসে বলল, "আমাদের সর্বশিক্ষার স্টল করতে হবে, কিন্তু কিছুই নেই। আপনি নেবেন?" স্বামীজির কথায়, "৫০০ বগর্ফুটের ৫ লক্ষ টাকা দামের স্টল আমাদের 
দিয়ে চলে গেল। আমি স্বামী বিবেকানন্দের বেশ কিছু ছবি এনেছিলাম। লাগিয়ে দিলাম।" দু'দিনে ১০ হাজার টাকার বেশি বই বিক্রি করে ফেলেছে অদ্বৈত আশ্রম।
মাঝে মাঝেই তাই গুলিয়ে যাচ্ছে, এটা শিল্পমেলাই তো? নাগরদোলাটাই যা নেই। তা বাদে বাউল গান, ছৌ নাচ, কীর্তনের আসর, আচার-রুটি-ঘুগনি সবই হাজির। স্যুট-টাই পরা কিছু লোকজন, বণিকসভার বদান্যতায় কলকাতা থেকে আসা ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির সুবেশারা ছাড়া বাকি সব আর পাঁচটা গ্রামীণ মেলার মতোই।
উন্নয়নের ফানুস আর গানের আসর। ছবি: সুদীপ আচার্য
প্রাপ্তির ঝুলিও সে কথাই বলছে। শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় মেলার সাফল্যের ফিরিস্তি দিচ্ছেন, "প্রাণের স্পন্দন, হৃদয়ের স্পর্শ। স্কুল পড়ুয়া থেকে স্থানীয় অধিবাসীদের উৎসাহ।" শিল্পপতিরা না থাকুন, শিল্পমেলা নাচগান নিয়েই খুশি। তারই মধ্যে দফায় দফায় সেমিনার। 'এটা হলে ভাল হত', 'অমুকটা যদি করা যেত', 'তমুকটা নিয়ে কী ভাবছেন' জাতীয় কথা। শিল্পপতিদের নিজেদের মধ্যে যাকে বলে বিজনেস টু বিজনেস (বি টু বি) আলোচনা, তার কোনও ব্যবস্থা নেই।
রাশিয়ার হব (HOBHK) পিএলসি গোষ্ঠীর প্রতিনিধি অ্যালেসেই বুলিনিন দু'দিন ধরে পুরো মেলা চষে বেড়াচ্ছেন। শিল্পমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেছেন, "পুতিনের ডেপুটি। বড় লগ্নি করতে চান।" পরিকাঠামো বিষয়ক সেমিনারে বলতে আসা সরকারি কর্তা জানালেন, বুলিনিন রাজ্যে গভীর সমুদ্র বন্দর নিয়ে আগ্রহী। কিন্তু কার সঙ্গে কথা বলতে হবে, বুঝতে পারছেন না। ওই কর্তা তাঁকে পরামর্শ দিয়েছেন, "আপনি শিল্পসচিব চঞ্চলমল বাচোয়াতের সঙ্গে কথা বলুন।" বুলিনিন বলছেন, দু'দিনে এই নামটা তিনি বার কয়েক শুনেছেন। কিন্তু ওই ব্যক্তিকে ধরতে পারেননি। এ দিন বিকেলে বুলিনিনের কাছে ফের জানতে চাই, "কথা হল বাচোয়াতের সঙ্গে?" তাঁর জবাব, "না হয়নি। আশা করছি, কালকের মধ্যে হয়ে যাবে। ঠিক হয়ে যাবে।" তাঁর দোভাষী সঙ্গী তাঁকে আপ্রাণ বোঝানোর চেষ্টা করে 
যাচ্ছেন, "বাচোয়াত বড় ব্যাপার। কথা ঠিক হবে।"
দর্শকাসনে এঁরাই। শিল্প সম্মেলন চলছে। —নিজস্ব চিত্র
এ বারের আসরে বিদেশি দূতাবাসের প্রতিনিধিরা সে ভাবে অংশ নেননি। আমেরিকা, ব্রিটেন আর জাপানের দূতাবাস স্রেফ প্রতিনিধি পাঠিয়েই দায় সেরেছে। চিন আর জার্মানির কনসাল জেনারেল অবশ্য ছিলেন। চিনের কনসাল জেনারেল ঝাং লিঝং মঙ্গলবারই বলেছিলেন, "গত এক বছরে কলকাতার সৌন্দর্যায়ন ছাড়া আর নতুন কিছু চোখে পড়ছে না। চিনা বিনিয়োগকারীদের এখানে আসতে বলেছি। কিন্তু তাঁরা জানিয়ে দিয়েছেন, লগ্নি আসে নির্দিষ্ট নীতির উপর ভর করে। সেটা স্পষ্ট হতে হবে।" 
শিল্পমেলায় কী স্পষ্ট হল? বোধনেই বিসর্জনের বাজনা। শুরুর দিনে মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তাই মন্ত্রী-আমলাদের ভিড় ছিল। এ দিন সে সব নেই। রাজ্য সরকার দাবি করেছিল, বেঙ্গল লিডস উপলক্ষে হলদিয়ার সমস্ত বড় হোটেলের সব ঘর ভর্তি। মঙ্গলবার ৩৬১টি ঘর ভর্তি ছিলও বটে। বুধবার কিন্তু তার ৫০-৬০ শতাংশই খালি। যে ভিড়টা আছে, সেটা সব সময়ই থাকে। আজ বেলদার জনসভায় বেরনোর আগে পর্যন্ত মমতা অবশ্য হলদিয়া ভবনে ছিলেন।
শিল্প সম্মেলনের নতুন অতিথি। —নিজস্ব চিত্র
মেলায় একা কুম্ভ পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পার্টি-হপারদের মতো করে সেমিনার হপিং করেছেন। স্টলে স্টলেও তিনি (৭২টি স্টলের মধ্যে ৩৩টিই বিভিন্ন সরকারি দফতরের)। মেলার সহযোগী আয়োজক হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান শুভেন্দু অধিকারীর দেখা মেলেনি সারা দিনে। বেলদার সভা সেরে রাত সাড়ে আটটার পরে মেলা-মাঠে এক বার এলেন। তখন ভাঙা হাট। এ সব নিয়ে অবশ্য মন্তব্যে নারাজ শিল্পমন্ত্রী। তাঁর সংক্ষিপ্ত জবাব, "আমি আমার কাজ করে যাচ্ছি।"
আমলারাও নিয়ম মেনে নিজেদের কাজ করে যাচ্ছেন। সেমিনারে মোট ৫৬ জন বক্তার মধ্যে ২১ জনই আমলা। তাঁরা নিয়ম করে সেমিনারের ঠিক আগে এসেছেন, বক্তৃতা শেষ করেই কলকাতায় ফেরত গিয়েছেন। শিল্পমন্ত্রী পরিসংখ্যান দিয়ে দাবি করছেন, সব ক'টি সেমিনারেই উপচে পড়েছিল ভিড়। কোথাও কোথাও বাড়তি চেয়ারও আনতে হয়েছে। প্রশাসনের একাংশই বলছেন, এ বার দর্শক-শ্রোতার উপস্থিতির দিকটায় আলাদা করে জোর দেওয়া হয়েছিল। গত বার মিলনমেলায় শ্রোতার অভাবে সভা শুরু করতে না-পারায় চরম অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছিল রাজ্যকে। যেখানে মূল বক্তা ছিলেন, জেনারেল মোটরস-এর কর্তা ক্রিস্টোফার বার্ড। সেই দশা যাতে আর না হয়, তার জন্যই এ বার রয়েছে বাড়তি সতর্কতা! 
ফলাফল? আসন ভরাতে ডাকা হয়েছিল আশপাশের স্কুল-কলেজের পড়ুয়াদের। আর যে সব বণিকসভার উপর সভার দায়িত্ব বর্তেছিল, তাদের প্রতিনিধিরা ছিলেন ভিড় করে। আগরবাতি কারখানার মালিক শিবশঙ্কর পাল কিন্তু দমবার নন। পার্থবাবুকে ধরে তাঁর আর্জি, "স্যার, আগরবাতির দিকে একটু তাকান।" 
শিল্পমন্ত্রী আশ্বাস দিলেন, "আপনি কাল মুখ্যমন্ত্রীকেই তো বললেন!" 
জানতে চাই, "পালবাবু আপনার কারখানাটা কোথায়?" জবাব আসে, "সিঙ্গুরের গোবিন্দনগর চেনেন?"
সিঙ্গুরের শিল্প মানে এখন তবে আগরবাতিই। আশ্চর্য কী যে, টাটা স্টিলের স্টলে গিয়ে শিল্পমন্ত্রী লিখে এসেছেন, "স্মল ইজ বিউটিফুল!" ন্যানো-র বিজ্ঞাপনী স্লোগানও ওটাই ছিল যদিও!
আর্থিক সুবিধাও চান লগ্নিকারীরা
ছাড়পত্রের সঙ্গে লাল ফিতেরও ফাঁসমুক্তি চায় শিল্প
শিল্পের জন্য জমির ছাড়পত্র পেতে এখন আর বছর গড়ায় না, মঙ্গলবারই 'বেঙ্গল লিডস'-এর মঞ্চে দাঁড়িয়ে দাবি করে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার শিল্পমহল বলল, জমির ছাড়পত্র মিললে কী হবে, সরকারি লাল ফিতের ফাঁসে এ রাজ্যে প্রকল্প শুরু করতেই ২-৩ বছর গড়িয়ে যায়। 
তাঁর দাবি যে নিছক কথার কথা নয়, তা বোঝাতে মঙ্গলবার আইটিসি-র কুরুশ গ্রান্ট, এসপিএস-এর বিপিন ভোরাদের সাক্ষী মেনেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ঊর্ধ্বসীমা আইনের অতিরিক্ত জমি রাখার অনুমতি যে তাঁরা সহজেই পেয়ে গিয়েছেন, তা জানিয়েছিলেন শিল্পকর্তারা। যা শুনে তৃপ্ত মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, "তা হলে গুজবে বিশ্বাস করবেন না। কিছু রাজনৈতিক দল আছে যারা খুবই জেলাস। আর আপনারা জানেন, এ দেশে জেলাসির কোনও মেডিসিন নেই।" 
কিন্তু এ দিন রাজ্যে উৎপাদন শিল্পের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনাচক্রে জমির বিষয়ে প্রশাসনিক শ্লথতার প্রসঙ্গ তুললেন আলট্রাটেক সিমেন্টের এগ্জিকিউটিভ প্রেসিডেন্ট রাজীব মেটা। বললেন, এই দীর্ঘসূত্রতায় প্রকল্পের কাজ শুরু করতে প্রায় ২-৩ বছর লেগে যায়। যা ৬০ থেকে ৯০ দিনে নামিয়ে আনা আশু প্রয়োজন। রাজীবের কথায়, "প্রসেস, প্রসেস, প্রসেস...। এটা কমাতেই হবে।" 
শুধু লাল ফিতের ফাঁস থেকে মুক্তি নয়, শিল্প গড়তে সরকারের কাছ থেকে আর্থিক উৎসাহও আশা করেন লগ্নিকারীরা। অম্বুজা সিমেন্টের পূর্বাঞ্চলের অন্যতম কর্তা বিবেক অগ্নিহোত্রীর বক্তব্য, "অন্য রাজ্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নেমে লগ্নি টানতে গেলে 'ইনসেন্টিভ' জরুরি।" কিন্তু রাজ্যের বেহাল আর্থিক অবস্থার কথা তো মঙ্গলবারই শুনিয়ে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বিবেকবাবুর জবাব, আর্থিক সঙ্কট যতই থাক, কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে লগ্নি টানতে হলে এটা জরুরি। 
লগ্নিকারীদের পরামর্শ শুনে শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আশ্বাস, রাজ্যের পক্ষে যতটা করা সম্ভব তাঁরা করবেন। কারণ রাজ্য লগ্নি চায়। নিজেদের আগ্রহ বোঝাতে এ দিন দিনভর স্টল থেকে স্টলে, সেমিনার থেকে সেমিনারে চরকিপাক খেলেন পার্থবাবু। কিন্তু ঘটনা হল, দু'একটি বাদে প্রায় সব ক'টি সভাতেই আলোচনা ছিল গতানুগতিক। যেমন, দক্ষতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত আলোচনাসভায় কারিগরি শিক্ষামন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস বললেন, "বাম আমলে পাহাড়ে বা জঙ্গলমহলে শান্তির পদযাত্রা করতো শাসক দল। কিন্তু এখন আর সেই সব নেই।" ধান ভানতে শিবের গীত শুনে সভা ছেড়ে চলেই গেলেন অনেকে। 
ফলে প্রায় ২৫ কোটি টাকা খরচ করে রাজ্যের কতটুকু প্রাপ্তি হবে, সেই প্রশ্ন থাকছেই। লগ্নির অঙ্কে এই প্রশ্নের জবাব দিতে রাজি নন শিল্পমন্ত্রী। তিনি বলেন, "অঙ্কশাস্ত্রের মতো এখনই হিসেব চাইলে দিতে পারব না। এখনও অনেক আলোচনাচক্র বাকি রয়েছে। সেখানেও নতুন প্রস্তাব আসতে পারে।" বাংলার লক্ষ্মীলাভ হবেই, আশাবাদী শিল্পমন্ত্রী। কিন্তু স্রেফ 'বেঙ্গল লিড্স' সেই আশা মেটাতে পারবে কিনা, তা নিয়ে প্রথম দিনেই প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন বেঙ্গল চেম্বারের প্রাক্তন কর্তা সন্দীপন চক্রবর্তী। তাঁর কথায়, "রাজ্যে শিল্পায়নের জন্য একটা জোরদার ধাক্কা নিশ্চয়ই জরুরি ছিল। তবে সেই গতি ধরে না-রাখতে পারলে ভাল সূচনা হলেও লাভ হয় না। সে জন্যই বিনিয়োগ টানতে হলে আরও ভাল নীতি এবং লগ্নি সহায়ক পরিবেশ গড়ে তোলা জরুরি।" 
এ রাজ্যে এ দুয়েরই ঘাটতি বলেই তো আক্ষেপ শিল্পমহলের।
সুদ না-কমানোর ইঙ্গিত সুব্বারাওয়ের, হতাশায় পড়ল সূচক
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সুদ কমানো নিয়ে সৃষ্টি হল অনিশ্চয়তা। আর তার জেরেই পড়ল শেয়ার বাজার। এক ধাক্কায় সেনসেক্স কমে গেল ১৬৯.১৯ পয়েন্ট। বাজার বন্ধের সময়ে সূচক এসে দাঁড়াল ১৯,৮১৭.৬৩ অঙ্কে।
কয়েক দিন ধরে টানা ওঠার পর অনেকটা অপ্রত্যাশিত ভাবেই বুধবার পড়ল শেয়ার বাজার। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর ডি সুব্বারাওয়ের মন্তব্যের জেরেই এই পতন বলে বাজার সূত্রের খবর। সুব্বারাও সম্প্রতি লখনউয়ে আইআইএম পড়ুয়াদের সঙ্গে এক বৈঠকে মন্তব্য করেন, মূল্যবৃদ্ধির হার আগের থেকে কমলেও, এখনও তা যথেষ্ট বেশি। তাই মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য নেওয়া ব্যবস্থাগুলি এখনই শিথিল করা সম্ভব নয়। সুব্বারাওয়ের এই মন্তব্যই সুদের হার কমানোর ব্যপারে বড় মাপের প্রশ্নচিহ্ন এঁকে দিয়েছে।
যে-সব কারণে শেয়ার বাজার ক্রমশ চাঙ্গা হয়ে উঠছিল, তার অন্যতম ছিল সুদ কমার আশা। মূল্যবৃদ্ধির হার সাত শতাংশের আশেপাশে এসে যাওয়ায় বাজারে আশার সৃষ্টি হয়েছিল যে, এ বার রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সুদের হার কমানোর রাস্তায় হাঁটবে। আগামী ২৯ জানুয়ারি শীর্ষ ব্যাঙ্ক ঋণনীতির পর্যালোচনায় বসছে। লগ্নিকীদের মনে আশা ছিল, ওই দিনই তাদের পক্ষে এমন কোনও সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করা হবে, যা সুদের হার কমানোর রাস্তা খুলে দেবে। কিন্তু সুব্বারাওয়ের মন্তব্য সে আশায় জল ঢেলে দিয়েছে। এরই বিরূপ প্রভাব পড়েছে শেয়ার বাজারে।
মূল্যবৃদ্ধির হার ৭.১৮ শতাংশে নেমে এলেও রিজার্ভ ব্যাঙ্ক তাতে খুশি নয়। অবশ্য মূল্যবৃদ্ধির ওই অঙ্কে শীর্ষ ব্যাঙ্ক খুশি হবে, সে কথা অবশ্য আগেও তারা কখনও বলেনি। বরং সুব্বারাও একাধিক বার বলেছিলেন, মূল্যবৃদ্ধির হার ৪ থেকে ৫ শতাংশে নামলে তবেই নিশ্চিন্ত হওয়া যাবে। তা ছাড়া পাইকারি বাজার দরের ভিত্তিতে হিসাব করা এই মূল্যবৃদ্ধি কমে এলেও খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হার এখনও সাড়ে ১০ শতাংশের উপরে রয়েছে। এই অবস্থাকে সার্বিক ভাবে মূল্যবৃদ্ধির হার কমা বলে মানতে নারাজ সুব্বারাও। 
তবে সুব্বারওয়ের এই মন্তব্যে এই দিন লগ্নিকারীরা কিছুটা নিরুৎসাহিত হলেও বাজারে এখনও বড় মাপের পতন আসার সম্বাবনা কম বলে মনে করছেন বাজার বিশেষজ্ঞদের মধ্যে অনেকেই। তাঁদের এই ধারণার পিছনে প্রধান কারণ, ভারতের বাজারে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলির আস্থা। কেন্দ্রীয় সরকার ভোডাফোনের মতো পুরনো অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে কর ফাঁকি প্রতিরোধ বিধি বা জেনারেল অ্যান্টি অ্যাভয়েডেন্স রুল (জিএএআর) চালু করার সময়সীমা ২০১৬ পর্যন্ত পিছিয়ে দেওয়ার জন্য বিশেষ ভাবে আশান্বিত ওই সব লগ্নিকারী। সংবাদসংস্থা পিটিআইয়ের খবর, গত মঙ্গলবারই বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি ভারতের বাজারে ১০৭৭.৫৪ কোটি টাকার শেয়ার কিনেছে। ভারতের বাজারে ওই সব লগ্নিকারীর বিনিয়োগে আপাতত কোনও ভাটা পড়বে না বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
http://www.anandabazar.com/17bus5.html
অতিরিক্ত জমির খোঁজ
কোথায় হবে আইটি হাব, ধন্দ শিলান্যাসের পরেও
'বেঙ্গল লিডস'-এর মঞ্চ থেকে ঘটা করে শিলান্যাস হয়ে গিয়েছে। কিন্তু কোন জমিতে তৈরি হবে হলদিয়ার তথ্য-প্রযুক্তি হাব, তা নিয়ে ধোঁয়াশা কাটছে না। 
হলদিয়ায় তথ্য-প্রযুক্তি হাবের বিষয়টি সেই অর্থে নতুন নয়। ২০০৫ সালে এই হাব গড়ায় উদ্যোগী হয়েছিল বাম সরকার। প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠ তখন হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের (এইচডিএ) চেয়ারম্যান। মূলত তাঁর উদ্যোগেই সল্টলেক ও নিউটাউনের ধাঁচে শিল্পনগরী হলদিয়ায় তথ্য-প্রযুক্তি হাব গড়ে তোলার তোড়জোড় শুরু হয়েছিল। জমিও চিহ্নিত করা হয়। ওই বছরই কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা 'সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কস অফ ইন্ডিয়া' (এসটিপিআই)-কে সেই জমি হস্তান্তর করে এইচডিএ। হলদিয়া সিটি সেন্টারের কাছে মোট তিন একর জায়গায় কাজ শুরু হয়। ভূমিপুজোর পরে তৈরি করা হয় একটি পাকা বাড়ি। তবে ওই পর্যন্তই। আর কাজ এগোয়নি। ২০০৭-০৮ সালে হলদিয়া থেকে বালুঘাটা যাওয়ার পথে বারঘাষিপুর মৌজায় আরও ৫০ একর অধিগৃহীত জমিতে নতুন করে আইটি হাব গড়ার পরিকল্পনা নেয় এইচডিএ। এ ক্ষেত্রেও কাজ এগোয়নি আর।
আইটি হাবের নতুন শিলান্যাস। —নিজস্ব চিত্র
রাজ্যে পালা বদলের পরে শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় একাধিক বার ঘোষণা করেছেন, হলদিয়ায় আইটি পার্ক হবে। কিন্তু কোথায় হবে, তা তিনি স্পষ্ট করেননি। গত ৯ অক্টোবর পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সফরে এসে হলদিয়ায় তথ্য-প্রযুক্তি হাবের কথা ঘোষণা করেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষার্থেই মঙ্গলবার 'বেঙ্গল লিডস ২'-এর উদ্বোধনী মঞ্চ থেকে হাব-এর শিলাফলকের আবরণ উন্মোচন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তিনিও জানাননি শিল্পনগরীর কোন জায়গায় তৈরি হচ্ছে এই হাব। 
বুধবার, 'বেঙ্গল লিডস ২'-এর দ্বিতীয় দিনে শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে জানতে চাওয়া হয়, বাম আমলেই তো আইটি হাবের কাজ শুরু হয়েছিল। তা হলে নতুন করে শিলান্যাস কেন?
শিল্পমন্ত্রীর জবাব, "ওরা সফ্টওয়্যারে জোর দিয়েছিল। আমরা হার্ডওয়্যারেও গুরুত্ব দিচ্ছি।" জমি নিয়ে ধোঁয়াশা অবশ্য এ দিনও পরিষ্কার করতে পারেননি পার্থবাবু। তিনি বলেন, "আগের সফ্টওয়্যার পার্কের তিন একর জমি ছাড়াও অতিরিক্ত পাঁচ একর জায়গা নিয়ে আইটি পার্ক হবে। সেটা কোন এলাকায় হবে, তা এইচডিএ-র সিইও ভাল বলতে পারবেন।"
যদিও সেই অতিরিক্ত জমি কোথায় তা স্পষ্ট করেননি এইচডিএ-র চিফ এগজিকিউটিভ অফিসার পি উলগানথন। তিনি জানান, এসটিপিআই-এর তিন একর জমি রয়েছে। বাকি পাঁচ একর জমি হয় বাড়ঘাষিপুরে, না হলে এইচপিএল লিঙ্ক রোডের ধারে ফুড-পার্কের পিছনের জমি (বাম আমলেই অধিগৃহীত) থেকে নেওয়া হবে। উলগানাথনের কথায়, "রাজ্যের তথ্য-প্রযুক্তি দফতরের কর্তাদের আমরা দু'টি জমিই দেখিয়েছি।"
জমি চিহ্নিত না করেই তড়িঘড়ি তথ্য-প্রযুক্তি হাবের শিলান্যাস করে দেওয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করে প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠের কটাক্ষ, "বামফ্রন্টের তৈরি করে যাওয়া আইটি হাবের প্রকল্প নতুন করে শিলান্যাস করা হচ্ছে। জমি নীতি ঠিক না করে এ ভাবে এগোলে বেঙ্গল লিডস নয়, বেঙ্গল ব্লিডস হবে।"


অমিত-আশ্বাসে চিঁড়ে ভিজছে না পর্যটনেও
মিতাভ বচ্চনের সঙ্গে পাল্লা দিতে এ বার নামলেন অমিত মিত্র। 
গুজরাতের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর অমিতাভ বিজ্ঞাপনে বলেন, 'কুছ দিন তো গুজারিয়ে গুজরাত মে'। অনেকটা সেই ঢঙেই অমিতবাবু আজ বললেন, "সুন্দরী পশ্চিমবঙ্গে আসুন। সেখানে বিনিয়োগ করুন এবং তাকে আরও সুন্দরী করে তুলুন আপনারা।" 
কিন্তু ফিকি আয়োজিত পর্যটন সম্মেলনে থিম রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী এ দিন যে ডাক দিলেন, তা কি আদৌ অমিতাভের সমান অভিঘাত তৈরি করতে পারবে? 
সম্মেলনে হাজির বিনিয়োগকারীদের অধিকাংশই কিন্তু নেতিবাচক উত্তর দিচ্ছেন। এবং সেটা অমিতবাবু জমি নিয়ে সংশয় কাটিয়ে দেওয়ার পরেও (বস্তুত, এই সম্মেলনে পশ্চিমবঙ্গের স্লোগানই হল: পর্যটনে লগ্নির ক্ষেত্রে সমস্যা নয় জমি)। এমনকী, যে রাজ্য খুচরো ব্যবসায় বিদেশি লগ্নির বিরোধিতা করেছিল, তারা এ দিন জানিয়ে দিল, কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত মেনে পর্যটনে ১০০ শতাংশ বিদেশি লগ্নির অনুমতি দিচ্ছে তারা। তাতেও সংশয় কাটেনি লগ্নিকারীদের।
কেন? আলোচনায় হাজির পর্যটন সংস্থার প্রতিনিধিরা জমি ছাড়াও প্রশ্ন তুলেছেন পরিকাঠামো এবং লাল ফিতের ফাঁস নিয়ে। গুজরাত তো বটেই, মধ্যপ্রদেশ বা মহারাষ্ট্রেও যা নিয়ে বিশেষ ভাবতে হয় না লগ্নিকারীকে। অথচ এই সব প্রশ্নের স্পষ্ট জবাব নেই অমিতবাবু বা পর্যটন সচিব বিক্রম সেনের কাছে। 
পর্যটন সংস্থার কর্তারা জানতে চান, পর্যটন ক্ষেত্রের আশেপাশে সড়ক, জল-বিদ্যুৎ-নিকাশির মতো নাগরিক পরিকাঠামো কে তৈরি করবে? রাজ্য সরকার পর্যটনের লগ্নির প্রস্তাবে ছাড়পত্রের জন্য এক-জানলা ব্যবস্থার কথা ঘোষণা করেছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, পুরসভা, দমকল থেকে শুরু করে পরিবেশ সংক্রান্ত হাজারো ছাড়পত্র জোগাড় করে দেওয়ার ব্যবস্থা কে করবে? সরকার জমির ব্যবস্থা করে দেবে বলছে। কিন্তু সেই লিজ নেওয়া জমির ভাড়া মেটানোর পরে ব্যবসা লাভজনক থাকবে তো? নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে ছাড়পত্র না মিললে প্রকল্পের খরচ বেড়ে যায়। তার দায়িত্ব কে নেবে? পর্যটন কেন্দ্রগুলির প্রচারের জন্য রাজ্য কী করছে? 
জবাবে আশ্বাস দিয়েছেন অমিতবাবুরা, এক-জানলা ব্যবস্থায় সব ছাড়পত্রই যাতে পাওয়া যায়, সে জন্য পর্যটন দফতর রাজ্য সরকারের অন্যান্য দফতরের সঙ্গে আলোচনা করছে। ডুয়ার্সের গজলডোবা থেকে সুন্দরবনের ঝড়খালির মতো যে সব বড় প্রকল্পে লগ্নির প্রস্তাব চাওয়া হচ্ছে, সেখানে পূর্ত দফতর ও অন্যরা পরিকাঠামো গড়ার কাজ শুরু করেছে। পর্যটন সচিবের বক্তব্য, জমি ৩০ বছরের জন্য লিজে দেওয়া হবে। কম সুদে ঋণের ব্যবস্থাও করবে রাজ্যের আর্থিক নিগম। তবে এক-জানলা ব্যবস্থায় ছাড়পত্র দেওয়ার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া সম্ভব নয় বলেই সরকারি সূত্রের বক্তব্য। কারণ, এক একটি প্রকল্পের জন্য এক এক রকম ছাড়পত্র প্রয়োজন। 
এই অস্পষ্ট আশ্বাসে যে চিঁড়ে ভিজবে না, সেটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে লগ্নিকারীদের কথাতেই। পরিকাঠামো নিয়ে তাঁদের সাফ কথা, রাজ্যের বহু জায়গার যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল নয়। গ্লোবাল ট্রাভেল সংস্থার অলিন্দ্র চট্টোপাধ্যায় যেমন বললেন, "বর্তমান পর্যটন কেন্দ্রগুলির পরিকাঠামো উন্নত করলেও অনেক লাভ। কিন্তু উত্তরবঙ্গেই তো অধিকাংশ জায়গায় রাস্তার হাল শোচনীয়।" ডাইউইক হোটেলসের কর্ণধার দেবাশিস ঘোষালের প্রশ্ন, "তারাপীঠে যাওয়ার রাস্তাটা এত খারাপ কেন?" 
উপস্থাপনা কিন্তু যথাসম্ভব ঝকঝকে করতে চেয়েছেন অমিতবাবুরা। প্রাইসওয়াটারহাউস কুপার্সকে দিয়ে 'স্লাইড-শো প্রেজেন্টেশন' তৈরি করা হয়েছিল। প্রতিটি প্রকল্প ধরে ধরে কোথায় কত জমি রয়েছে, কোথায় কত টাকার বিনিয়োগের সম্ভাবনা, কবে দরপত্র ডাকা হবে, কবে বরাত দেওয়া হবে, তা জানিয়ে দেন অমিতবাবু। মোট ৪৮০ একর জমিতে ৩ হাজার ৫৬০ কোটি টাকার বিনিয়োগের প্রস্তাব রাখা হয়েছে। অমিতবাবুর বক্তব্য, "সব জমিই সরকারের জমি। অধিগ্রহণ বা উচ্ছেদ সংক্রান্ত কোনও সমস্যাই হওয়ার কথা নয়।" লগ্নিকারীদের জন্য কী কী কর ছাড় বা অন্য সুবিধা দেওয়া হচ্ছে, তা-ও জানানো হয়েছে। 
কিন্তু বিনিয়োগকারীদের সংশয় যাচ্ছে না। ওয়ার্ল্ড হোটেলস-এর আঞ্চলিক ডিরেক্টর নরেশ চান্দনানির বক্তব্য, "রাজ্যের এ দিনের উপস্থাপনা ভাল। কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি তো আলাদা। আমি পশ্চিমবঙ্গের থেকে সিকিমে যেতে বেশি আগ্রহী হব।"
কেন এমন ভাবছেন তাঁরা? 
নরেশ চান্দনানির জবাব, "আসলে পশ্চিমবঙ্গ সম্পর্কে ব্যবসায়ীদের মনোভাব তলানিতে ঠেকেছে। তাই রাজ্য সরকার যে এক-জানলা ব্যবস্থার কথা বলছে, তা-ও কতটা কাজ করবে, তা নিয়ে সন্দেহ আছে।" 
এই অবস্থায় সেই গুজরাতেরই শরণ নিতে চেয়েছেন অমিতবাবু। ফিকি-র মহাসচিব থাকাকালীন তাঁর চেষ্টাতেই আমেরিকা থেকে গুজরাতি পটেলরা ভারতে বিনিয়োগ করতে এসেছিলেন। পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী অমিতবাবুর আহ্বান, "গুজরাতের পটেলরা এ বার পশ্চিমবঙ্গে বিনিয়োগ করুন।" পর্যটন দফতরের উপদেষ্টা দীনেশ ত্রিবেদীও 
বললেন, "খালি কনের ছবি দেখে কি বিয়ে হয়? আপনাদের যাতে কয়েক দিনের জন্য পর্যটন কেন্দ্রগুলি ঘুরিয়ে দেখানো হয়, সেই প্রস্তাব রাখছি পর্যটন সচিবের কাছে।"
এত কিছুর পরেও কি অমিত পারবেন অমিতাভের সঙ্গে পাল্লা দিতে? এ দিনের সম্মেলনে অন্তত তেমন কোনও উজ্জ্বল ইঙ্গিত নেই।

`শিল্পের ক্ষেত্রে সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি নেতিবাচক`


চব্বিশ ঘণ্টার সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে রাজ্যের প্রাক্তন শিল্পমন্ত্রী নিরুপম সেন।



অনেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জমি অধিগ্রহণের বিরোধিতা, সেজ-এর বিরোধিতার মধ্যে সাবেক বাম অভিমুখ দেখতে পান।

আমি মনে করি না এর মধ্যে কোনও বাম অভিমুখ আছে। প্রথমত, বামপন্থীরা কোনও দিনই সরকারি হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করে না। জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে সরকারি হস্তক্ষেপ জরুরি। এটা শুধুমাত্র শিল্পস্থাপনের জন্যে বা পরিকাঠামো নির্মাণের নয়। যাঁদের জমি, সেই কৃষকদের স্বার্থরক্ষার জন্যও সরকারের হস্তক্ষেপ খুবই জরুরি। কারণ জমির মালিকরা অল্প জমির মালিক হন। কিন্তু যাঁরা জমি কেনেন তাঁদের ক্ষমতা অনেক বেশি। ফলে এখানে একটা অসম প্রতিযোগিতা হয়। অন্যত্র বাজার যেখানে কাজ করে, জমির ক্ষেত্রে বাজার সেভাবে সক্রিয় নয়। অসম প্রতিযোগিতায় পড়ে জমির মালিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হন। সেই কারণেই সরকারি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। সরকার যখন হস্তক্ষেপ করে তখন জমির মালিকের একটা অধিকার থাকে সরকারের কাছে উপযুক্ত মূল্য চাওয়ার বা পুনর্বাসন দাবি করার। যে মূল্য এবং পুনর্বাসন তিনি একটা বেসরকারি মালিকের কাছে চাইতে পারেন না। স্বভাবতই আমরা মনে করি, এক্ষেত্রে সরকারি হস্তক্ষেপটা জরুরি। সুতরাং এই যে একটা ধারণা প্রচার করা হচ্ছে যে, তৃণমূল কংগ্রেসও সাবেক বাম ধারণা নিয়ে চলছে তা সম্পূর্ণ ভ্রান্ত। এবং বামেদের সম্পর্কে একটা ভ্রান্ত দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই এ রকম একটা ধারণার প্রকাশ ঘটছে। 

রাজ্যে শিল্প টানার ক্ষেত্রে গুজরাটে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে আপনাদের নীতিগত তফাত কোথায়?

দেখুন, গুজরাট এবং পশ্চিমবঙ্গ এক রকম নয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকারের যে নীতি, সেই নীতির আমরা বিরোধিতা করি। কিন্তু সরকার চালাই যখন তখন সেই নীতির পরিধির মধ্যে দাঁড়িয়েই আমাদের কাজ করতে হয়। বর্তমানে সরকারের নীতি, সরকার শিল্পে নিজে বিনিয়োগ করবে না। বেসরকারি উদ্যোগই বিনিয়োগের প্রধান অবলম্বন। তা যদি হয় তাহলে সব রাজ্যকেই বেসরকারি বিনিয়োগ টানার চেষ্টা করতে হবে। সেক্ষেত্রে গুজরাট সরকারও যা করছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারও তাই করবে। বেসরকারি বিনিয়োগ ছাড়া আমাদের পক্ষে সরকারি উদ্যোগে শিল্প করা সম্ভব নয়। 

সব রাজ্যকেই এই একই নীতি গ্রহণ করতে হবে এবং বেসরকারি বিনিয়োগ আকর্ষণ করার জন্য প্রতিযোগিতায় নামতে হবে। সেই প্রতিযোগিতায় আপনি বলতে পারেন গুজরাট শিল্প বিনিয়োগ টানার ব্যাপারে কিছুটা এগিয়ে আছে। কিন্তু আমি মনে করি, অন্য ক্ষেত্রে গুজরাটের সাফল্য উল্লেখযোগ্য নয়। বিশেষ করে আপনি যদি মানবোন্নয়ন সংক্রান্ত রিপোর্ট দেখেন তাহলে দেখবেন গুজরাট অনেকটাই পিছিয়ে আছে। শিল্প স্থাপনের ক্ষেত্রে এই রিপোর্টেরও কিন্তু গুরুত্ব আছে। দক্ষ শ্রমিকের ক্ষেত্রেও পশ্চিমবঙ্গ এগিয়ে আছে। পরিষেবা এবং ম্যানুফ্যাকচরিং শিল্পে পশ্চিমবঙ্গে দক্ষ শ্রমিক আছে। অনেক সময়েই গুজরাটে অন্য রাজ্য থেকে দক্ষ শ্রমিক যায়। দক্ষ শ্রমিক থাকায় এই রাজ্য অ্যাডভান্টেজ পায়। আমাদের রাজ্যের ছেলেমেয়েদের দক্ষতা আছে যে সব ক্ষেত্রে সেই সব ক্ষেত্রে শিল্প নিয়ে এসে আমরা আমাদের রাজ্যের ছেলেমেয়েদের যেমন কর্মসংস্থান করতে পারি তেমনই বিনিয়োগকারীদের এই বলে আকর্ষণ করতে পারি যে, তাঁরা স্থানীয় দক্ষ শ্রমিক পাবেন। সুতরাং (গুজরাটের সঙ্গে) কিছু গুরুত্বপূর্ণ তফাতও আছে। আমাদের রাজ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আছে, মানুষের মধ্যে সাধারণ ঐক্য আছে। যদি আমাদের রাজ্য সরকার সক্রিয় হয়, আন্তরিক হয় এবং তাঁদের একটা ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি থাকে, তা হলে পশ্চিমবঙ্গে শিল্প স্থাপন হতে পারে। সেই সম্ভবনা আছে পশ্চিমবঙ্গে। 

গত ২০ মাসের অভিজ্ঞতায় বর্তমান সরকারের শিল্পনীতিকে দশে আপনি কত নম্বর দেবেন?

এই সরকারকে নম্বর দেওয়া খুব কঠিন আমার পক্ষে। কারণ এই সরকার গত ২০ মাসে যত বক্তৃতা করেছে, ভাষণ দিয়েছে তার তুলনায় কাজ তো সে রকম কিছু হয়েছে বলে আমার মনে হয় না। বরং যত দিন যাচ্ছে এমন কিছু বার্তা যাচ্ছে বিনিয়োগকারীদের কাছে যা আমাদের রাজ্যের পক্ষে খুবই ক্ষতিকর। সাম্প্রতিক কালে হলদিয়ায় যে ঘটনা ঘটেছে, দুর্গাপুরে যে ঘটনা ঘটেছে, তার আগে এই সরকার যখন বিরোধী দলে ছিল তখন তারা যা কাজ করেছে, হলদিয়া পেট্রো-কেমিক্যাল তালুক গড়ার বিরোধিতা করেছিল, রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে কেন্দ্রকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে তারা এই প্রকল্প গড়তে আগ্রহী নয়, ইনফোসিস-এর বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল অনুমোদনের প্রশ্ন, উইপ্রোর অনুমোদনের প্রশ্নে যে দৃষ্টিভঙ্গি এই সরকার গ্রহণ করেছে সবটাই নেতিবাচক। সে ক্ষেত্রে দশের মধ্যে আপনি কী ভাবে একে নম্বর দেবেন তা আপনারাই বলতে পারেন। তবে উনি বারবার শিল্পপতিদের সঙ্গে মিটিং করছেন, তাঁদের আহ্বান করছেন, এটা যদি কিছু নম্বর পাওয়ার যোগ্য হয় তাহলে সেই নম্বরটুকু দেওয়া যেতে পারে। 

বামফ্রন্টের নির্বাচনী বিপর্যয়ের পিছনে অনেক সমালোচকই শিল্পনীতিকে দায়ী করেছেন। এর কোনও বাস্তব ভিত্তি আছে কি? সেই সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে পদক্ষেপগুলি নিয়েছিলেন মানুষ বেশ কিছু ক্ষেত্রেই তার পক্ষে ভোট দিয়েছেন বলেও মনে করেছে সংশ্লিষ্ট মহল। আপনার কি মনে হয় মানুষ সাধারণভাবে শিল্প স্থাপনের বিরুদ্ধেই মত দিয়েছেন?

বামফ্রন্ট সরকারের বিরুদ্ধে মানুষের যে রায় তা শুধুমাত্র শিল্প গড়ে তোলার বিরুদ্ধে রায় বলে আমি মনে করি না। এবং জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধেই মানুষ বামফ্রন্টের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন এ-ও আমি মনে করি না। সিঙ্গুর, নন্দীগ্রামের পরেও বামফ্রন্ট অনেক জমি অধিগ্রহণ করেছে রাজ্যে। এবং সিঙ্গুর, নন্দীগ্রামের আগেও অনেক জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। হলদিয়ায় শিল্প তো আগে ছিল না। মূলত হলদিয়ায় শিল্প গড়ে উঠেছে ১৯৭৭-এর পর। আর '৭৭-এর পর থেকে সিঙ্গুর, নন্দীগ্রামের আগে অবধি বিপুল পরিমাণে জমি অধিগৃহীত হয়েছে। হলদিয়ায় হয়েছে, রাজারহাটে হয়েছে, ন্যাশানাল হাইওয়ের জন্য জমি অধিগ্রহণ হয়েছে, খড়গপুর থেকে হাওড়া, বরাকর থেকে হাওড়ায় অনেক জমি নেওয়া হয়েছে। 

সুতরাং জমি অধিগ্রহণের জন্য মানুষ আমাদের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে, শিল্প গড়ে তোলার জন্য মানুষ আমাদের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে, এ আমি মনে করি না। আমরা পেট্রো-কেমিক্যালের জন্য, বক্রেশ্বরের জন্য, সল্টলেকে ইলেক্ট্রনিক্স কমপ্লেক্সের জন্য আন্দোলন করেছিলাম। সেই আন্দোলনগুলির মধ্য দিয়েই তো বারবার মানুষ আমাদের ভোট দিয়েছেন। সুতরাং এটা বলা বোধহয় ঠিক হবে না যে মানুষ শিল্পের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছেন। তবে সিঙ্গুর, নন্দীগ্রামকে ঘিরে কিছু বিভ্রান্তি তৈরি করা হয়েছিল। কিছু অপপ্রচার চলছিল। কিছু অসত্য কথা এমন ভাবে প্রচারিত হয়েছিল যার মধ্যে দিয়ে মানুষের মধ্যে একটা সাময়িক বিভ্রান্তি ঘটেছিল। যে বিভ্রান্তি থেকে মানুষের মধ্যে বামফ্রন্ট সম্পর্কে একটা নেতিবাচক মনোভাব তৈরি হয়েছিল। এবং অবশ্যই সেটা ভোটে বিরোধী দল ব্যবহার করতে পেরেছিল। এটা আমি অস্বীকার করব না। কিন্তু সরকারের প্রতি বিরূপ ধারণা তৈরি হওয়ার অনেকগুলি কারণও ছিল। প্রথমত, দীর্ঘ সময় ধরে আমরা এই সরকারে ছিলাম। মানুষের প্রত্যাশা অনেক বেড়েছে। সেই প্রত্যাশার সঙ্গে মিলিয়ে আমরা সব কাজ তাঁদের জন্য করতে পারিনি। এই বর্ধিত প্রত্যাশা, তার সঙ্গে সব কাজ করতে না পারা, তার থেকে ব্যর্থতা, তার থেকে হতাশা- সেটাও কিছুটা নেতিবাচক মনোভাব তৈরি করেছিল। সংসদীয় গণতন্ত্রে সেটাও খুব স্বাভাবিক। এই সবটা মিলিয়েই একটা বিরূপ মনোভাব তৈরি হয়েছে। তার সঙ্গে এই নির্বাচনে সমস্ত বিরোধী শক্তি- অতি-বাম থেকে শুরু করে অতি দক্ষিণপন্থী- সবাই সমবেত হয়েছিলেন বামফ্রন্টের বিরুদ্ধে। এটাও একটা বড় কারণ। তার সঙ্গে রাজ্যের গণমাধ্যমের একটা বড় অংশও এই প্রচারে যুক্ত হয়েছিলে। তার একটা নেতিবাচক প্রভাব নির্বাচনে পড়েছে। 



আর আজকে এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে পরিবর্তনের পরিবর্তন কতটা বাস্তব জমি পাচ্ছে?

মানুষ যা শেখে তা নিজের অভিজ্ঞতা থেকে শেখে। খুব দ্রুত মানুষের অভিজ্ঞতা হচ্ছে। এতটা দ্রুত হবে তা আমরা নিজেরাও আশা করতে পারিনি। এই সরকারকে ধন্যবাদ। যে ভাবে এই সরকার নিজেদের পরিচালনা করছে, যে ধরনের ঘটনা এই রাজ্যে ঘটছে, যে ভাবে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারের উপরে নিরবচ্ছিন্ন আক্রমণ চলছে, যে ভাবে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা আক্রান্ত হচ্ছে, যে ভাবে সাধারণ মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে, যে ভাবে মেয়েরা নিগৃহীত হচ্ছে, সবটা মিলিয়ে সমাজে একটা চরম অস্থিরতার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ফলে দ্রুত মানুষের মোহভঙ্গ ঘটছে। বিশেষ করে তাঁদের যাঁরা এক সময় বামপন্থীদের সমর্থন করেছেন কিন্তু পরে একটা পরিবর্তন চেয়েছিলেন এবং ভেবেছিলেন ভাল হবে। এবং বামপন্থীরাও নিজেদের শুদ্ধ করতে পারবে। তাঁদের মধ্যে চিন্তা শুরু হয়েছে যে, এখন যা ঘটছে তা ঘটা উচিত ছিল না। এবং এটা তাঁরা প্রত্যাশা করেননি। স্বভাবতই, আমার মনে হয় খুব দ্রুত মানুষের চিন্তার জগতে একটা পরিবর্তন আসছে। 

আপনি বললেন যে এত দ্রুত পরিবর্তনের পরিবর্তন আসবে তা আপনারা আশা করেননি। তবে নির্বাচনী বিপর্যয়ের পর আপনার দলের ভিতর থেকেই বার বার শুদ্ধিকরণের বার্তা শোনা গিয়েছে। অবস্থার এই দ্রুত পরিবর্তনের ফলে এই শুদ্ধিকরণের পদ্ধতিতে কি কোনও পরিবর্তন আসতে পারে বা গতি শ্লথ হতে পারে?

না, আমি তা মনে করি না। এটা পার্টির এক নিরন্তর প্রক্রিয়া। আমরা যখন সরকারে ছিলাম তখনও আমরা এই প্রক্রিয়া থেকে নিজেদের বিরত রাখিনি। তখন নিজেদের মধ্যে যে ত্রুটি লক্ষ করেছি তার বিরুদ্ধে নিজেদের মধ্যেই লড়াই করেছি। এবং সেগুলিকে কাটানোর চেষ্টা করেছি। এখনও যে ভাবে আক্রমণ হচ্ছে আমাদের কর্মীদের উপর সেই আক্রমণ সত্ত্বেও তো মানুষ এগিয়ে আসছেন। হাজারে লাখে কর্মীদের জমায়েত হচ্ছে। সেই কর্মীরাই যাঁরা আগে সরকারে ছিলেন এখন বিরোধী, আক্রান্ত হচ্ছেন। মানুষ উপলব্ধি করছেন যে না এঁরা শুধুমাত্র সুবিধা গ্রহণ করতেই রাজনীতি করতেন তা না। এঁরা একটা আদর্শের জন্য রাজনীতি করেন। আমরা সরকারে থাকার সময় যাঁরা পার্টিতে এসেছেন তাঁদের সম্পর্কেও মানুষের ধারণা পাল্টাচ্ছে। মানুষ বুঝতে পারছেন তাঁরা শুধু ক্ষমতার লোভে দলে আসেননি। মতাদর্শের জন্য এসেছেন। মানুষের জন্য তাঁরা কাজ করছেন। এই উপলব্ধিটা আমাদের কর্মীদেরও উৎসাহিত করছে। নিজেদের শুদ্ধ হতে সাহায্য করছে। ঠিক তেমনই মানুষের মনোভাবেরও পরিবর্তন হচ্ছে।

'ল্যান্ড ব্যাঙ্ক' জমি-সমস্যা কতটা দূর করতে পারবে বলে আপনি মনে করেন।

আমরা যখন সরকারে ছিলাম তখনও ওরা এ কথা বলেছে। 'ল্যান্ড ব্যাঙ্ক' মানে কী? সরকারের হাতে কত জমি আছে তার খতিয়ান। সরকারের অনেকগুলি দফতর আছে। বিভিন্ন দফতরের জমি থাকে। সেচ দফতর, প্রাণিসম্পদ ইত্যাদি দফতরের হাতে নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে জমি থাকে। ওই দফতরের কাজের জন্য, সম্প্রসারণের জন্য জমি থাকে। সরকার যদি মনে করে সেই জমি শিল্পের জন্য ব্যবহার করবে তাহলে সেই জমিও শিল্পে ব্যবহৃত হতে পারে। জিন্দলকে স্টিল প্ল্যান্টের জন্য যে জমি দেওয়া হয়েছিল তা আমরা প্রাণিসম্পদ দফতরের কাছ থেকে নিয়েছিলাম। এর বাইরে কী জমি থাকতে পারে? সরকার যে জমি ভেস্ট করেছে। ভূমি সংস্কার আইন অনুযায়ী ঊর্ধ্বসীমার উপরে যে জমি সরকার অধিগ্রহণ করেছে, সেই জমি। বামফ্রন্ট সরকারের নীতি ছিল সেই জমি গরিব কৃষকদের মধ্যে বিলি করা হবে। আমরা ১০-১১ লক্ষ একর জমি বিলি করেছি। সেই জমি তো আর সরকারের হাতে নেই। এছাড়া কিছু টুকরো জমি থাকতে পারে। সেখানে তো আর কলকারখানা করা যাবে না। এছাড়া আরও কিছু জমি আছে যা বামফ্রন্ট সরকারই করে গিয়েছিল। ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক তৈরি করার জন্য কিছু জমি নেওয়া হয়েছিল। যেমন, খড়গপুরে বিদ্যাসাগর পার্ক (১১০০ একর), নৈহাটিতে ঋষি বঙ্কিমচন্দ্র পার্ক (১০০ একর), পানাগড়ে একটি জমি (১৫০০ একর) জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল। রঘুনাথপুরে প্রায় ২০০০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। ওখানে ডিভিসি-র যে বিদ্যুৎ প্রকল্প হচ্ছে আমরাই তা অধিগ্রহণ করে দিয়েছি। এই জমি তো রাজ্য সরকারের হাতে আছে। সেই জমি তো বামফ্রন্টই রাজ্য সরকারকে দিয়ে গিয়েছে। সম্প্রতি রাজ্য সরকার যাদের যাদের জমি দিয়েছে তা সবই বামফ্রন্টের আমলে অধিগৃহীত জমি। যেমন আইটিসি-কে হাওড়াতে ফুডপার্কের জন্য যে জমি দিয়েছে তা বামফ্রন্টের আমলেই নেওয়া। পানাগড়ে সার কারখানার জন্য জমি আমরাই দিয়েছি। এখন ওরা বলছে ওরা দিয়েছে। কিন্তু তা তো নয়। আমরাই দিয়েছি ওই জমি। যাই হোক এই জমিগুলো শিল্প দফতরের হাতে আছে। সেই জমিতে কারখানা হতেই পারে। একে যদি ল্যান্ড ব্যাঙ্ক বলা যায় তাহলে তাই। এ তো বামফ্রন্টের আমলেই ছিল। এটা তো নতুন কিছু না। এই সরকার এমন কিছু করেছে তার তো কোনও রিপোর্ট নেই। কারণ এই সরকার তো জমি অধিগ্রহণই করেনি। 

আপনি এর আগে বলেছিলেন নতুন সরকারের যদি কোনও রকম সাহায্য লাগে তা হলে আপনাদের দরজা সবসময়ই খোলা। পরামর্শ চেয়ে কখনও কোনও ফোন এসেছে? 

এখনও পর্যন্ত কোনও বার্তা আমি পাইনি। আমার মনে হয় না সেরকম কোনও বার্তার প্রয়োজনও আছে। বিরোধী দলের সঙ্গে কথা বলাটাইতো তাঁদের কাছে ঘোরতর নিষিদ্ধ ব্যাপার। সুতরাং তাঁরা আমাদের সঙ্গে পরামর্শ করবেন, সেটা আশা করা যায় না। আমরা বরাবরই বলেছি আমরা গঠনমূলক বিরোধীতার পক্ষে। রাজ্যের স্বার্থে যে কোনও কাজ আমরা করব। আমরা কখনওই কোনও নেতিবাচক মনোভাব নিইনি। একটা ছোট উদাহারণ দিই। রবিবার আমি হলদিয়ায় গিয়েছিলাম। যুব ফেডারেশনের পক্ষ থেকে একটা পদযাত্রার আয়োজন করা হয়েছিল। দাবি ছিল শিল্প গড়তে হবে। এরাজ্যে শিল্প চাই। দু'দিন পরেই বেঙ্গল লিডস। তারও উদ্দেশ্য শিল্প গড়তে হবে। এ রাজ্যে শিল্প চাই। দুটির যদি একই উদ্দেশ্য হয় তা হলে সেই পদযাত্রায় অশান্তি করা, জনগণকে সভায় আসতে বাধা দেওয়া অর্থহীন। একই দাবি যখন, তখন একে অপরের পরিপূরক হতে পারত। কিন্তু তা না করে যে বার্তাটা তাঁরা দিলেন তা হল, যাঁরা শিল্প করতে চাইছেন তাঁরাই আক্রান্ত হচ্ছেন। এতো খুব ভাল বার্তা নয়। এই বার্তাও দেওয়া যেতেই পারত শাসকদল-বিরোধী দল সকলে মিলেই শিল্প করতে চাইছে। যারা বিরোধী দল তারা তো শিল্পের বিরোধিতা করছে না। 

রাজ্যে বন্ধ কল কারখানা পুনরুজ্জীবিত করা কতটা বাস্তব সম্মত?

এ ক্ষেত্রেও আমি প্রথমে বলি যে, এক ভয়ঙ্কর মিথ্যাচার করা হয়েছিল। তৃণমূল কংগ্রেসের ইশতাহারে বলা হয়েছিল, আমাদের রাজ্যে ৫৬ হাজার কলকারাখানা বন্ধ। এখন আমরা জিজ্ঞাসা করতে পারি এখন ওঁরা সরকারে আছেন, ৫৬ হাজার বন্ধ কারখানার তালিকা প্রকাশ করুন। এটা সম্পূর্ণই একটা ভ্রান্ত তথ্য। কিন্তু এটা প্রচার করা হয়েছিল।

দ্বিতীয় যেটা প্রচার করা হয়েছিল তা হল বন্ধ কারখানার জমি অধিগ্রহণ করে সেখানে নতুন শিল্প হোক। এতে অনেক মানুষ বিভ্রান্ত হয়েছিলেন। গত ১৮-২০ মাসে এমন একটিও উদাহরণ আপনি দিতে পারবেন না যেখানে সরকার বন্ধ কারখানার জমি অধিগ্রহণ করতে পেরেছে এবং সেখানে শিল্প স্থাপনের উদ্যোগ নিতে পেরেছে। কারণ আমাদের দেশের যে আইন তাতে বন্ধ কারখানার জমি উদ্ধার করে শিল্প গড়া খুবই কঠিন কাজ। এবং সেই কাজটা কেউই করতে পারছে না। কেন্দ্রীয় সরকারের বন্ধ হওয়া কারখানার জমি আমরা চেয়েছিলাম। এমনকী বাজার দরে সেই কারখানা কিনতে চেয়েছিলাম। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার আইন দেখিয়ে সেই জমি আমাদের দেয়নি। কিন্তু এই সরকার যখন বিরোধী দলে ছিল তখন এটাকেই ব্যাপক ভাবে প্রচার করেছে। আজকে তারা নীরবতাকেই শ্রেয় বলে মনে করেছে।

তৃতীয়ত, সব বন্ধ কারখানা খোলা বাস্তব সম্মত নয়। কারণ অতীতে আমাদের রাজ্যে যে কলকারখানাগুলি ছিল অতীতে সেগুলি প্রযুক্তিগত ভাবে এবং উৎপন্ন সামগ্রীর দিক থেকে বর্তমান সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারে না। ফলে সেগুলিকে পুনরুজ্জীবিত করা অবান্তর এবং অবাস্তব। এছাড়াও এই সব বন্ধ হয়ে যাওয়া কলকারখানা অনেক ক্ষেত্রেই ব্যাঙ্কের ঋণে জর্জরিত। এই সব সম্পত্তি ব্যাঙ্কে বন্ধক আছে। শ্রমিক কর্মচারীদের বকেয়া পাওনা আছে। সেই সব বকেয়া না মিটিয়ে এই কারখানাগুলি চালু করা সম্ভব নয়। যাঁরা কারখানা বন্ধ করে দিয়েছেন তাঁরা বকেয়া মিটিয়ে কারখানা চালু করতে উদ্যোগী হন না। তাহলে আরেকটাই উপায় থাকে সরকারের এই সব কারখানা অধিগ্রহণ করা। সরকারের আর্থিক সামর্থ্যে তা কুলোয় না। এই রাজ্য সরকার যদি তা পারে আমরা তা সমর্থন করব। অথবা বন্ধ কারখানার মালিকদের এঁরা বাধ্য করতে পারে। যে দাবি তাঁরা আমাদের কাছে করেছিলেন তা তাঁরা নিজেরাই করতে পারেন। একটি কারখানা আমরা খুলেছিলাম। খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারখানা। সেটিও এই আমলে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সেটা ডানলপ। এই সমস্যা সারা দেশের।

আগামী দিনে রাজ্যে শিল্প সম্ভবনাকে কী ভাবে দেখছেন?

বেঙ্গল লিডস হচ্ছে ভাল। শিল্পপতিরা যদি আসেন, তাঁদের কথা বলেন এবং সে কথা শুনে রাজ্য সরকার যদি দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টায়, এই রাজ্যে যদি আইন-শৃঙ্খলা নিশ্চিত করে তাহলে এ রাজ্যে শিল্প হবে। শিল্পপতিরা আসবেন। এখনও পর্যন্ত সেই ইঙ্গিত নেই। তবে আশা করতে পারি, আগামী দিনে অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করলে রাজ্যের মঙ্গল, আগামী প্রজন্মের মঙ্গল। আশা করি, সেই কাজ সরকার করবে।

http://zeenews.india.com/bengali/kolkata/nirupam-sen-exclusive_10739.html

No comments:

मैं नास्तिक क्यों हूं# Necessity of Atheism#!Genetics Bharat Teertha

হে মোর চিত্ত, Prey for Humanity!

मनुस्मृति नस्ली राजकाज राजनीति में OBC Trump Card और जयभीम कामरेड

Gorkhaland again?আত্মঘাতী বাঙালি আবার বিভাজন বিপর্যয়ের মুখোমুখি!

हिंदुत्व की राजनीति का मुकाबला हिंदुत्व की राजनीति से नहीं किया जा सकता।

In conversation with Palash Biswas

Palash Biswas On Unique Identity No1.mpg

Save the Universities!

RSS might replace Gandhi with Ambedkar on currency notes!

जैसे जर्मनी में सिर्फ हिटलर को बोलने की आजादी थी,आज सिर्फ मंकी बातों की आजादी है।

#BEEFGATEঅন্ধকার বৃত্তান্তঃ হত্যার রাজনীতি

अलविदा पत्रकारिता,अब कोई प्रतिक्रिया नहीं! पलाश विश्वास

ভালোবাসার মুখ,প্রতিবাদের মুখ মন্দাক্রান্তার পাশে আছি,যে মেয়েটি আজও লিখতে পারছেঃ আমাক ধর্ষণ করবে?

Palash Biswas on BAMCEF UNIFICATION!

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS ON NEPALI SENTIMENT, GORKHALAND, KUMAON AND GARHWAL ETC.and BAMCEF UNIFICATION! Published on Mar 19, 2013 The Himalayan Voice Cambridge, Massachusetts United States of America

BAMCEF UNIFICATION CONFERENCE 7

Published on 10 Mar 2013 ALL INDIA BAMCEF UNIFICATION CONFERENCE HELD AT Dr.B. R. AMBEDKAR BHAVAN,DADAR,MUMBAI ON 2ND AND 3RD MARCH 2013. Mr.PALASH BISWAS (JOURNALIST -KOLKATA) DELIVERING HER SPEECH. http://www.youtube.com/watch?v=oLL-n6MrcoM http://youtu.be/oLL-n6MrcoM

Imminent Massive earthquake in the Himalayas

Palash Biswas on Citizenship Amendment Act

Mr. PALASH BISWAS DELIVERING SPEECH AT BAMCEF PROGRAM AT NAGPUR ON 17 & 18 SEPTEMBER 2003 Sub:- CITIZENSHIP AMENDMENT ACT 2003 http://youtu.be/zGDfsLzxTXo

Tweet Please

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS BLASTS INDIANS THAT CLAIM BUDDHA WAS BORN IN INDIA

THE HIMALAYAN TALK: INDIAN GOVERNMENT FOOD SECURITY PROGRAM RISKIER

http://youtu.be/NrcmNEjaN8c The government of India has announced food security program ahead of elections in 2014. We discussed the issue with Palash Biswas in Kolkata today. http://youtu.be/NrcmNEjaN8c Ahead of Elections, India's Cabinet Approves Food Security Program ______________________________________________________ By JIM YARDLEY http://india.blogs.nytimes.com/2013/07/04/indias-cabinet-passes-food-security-law/

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS TALKS AGAINST CASTEIST HEGEMONY IN SOUTH ASIA

THE HIMALAYAN VOICE: PALASH BISWAS DISCUSSES RAM MANDIR

Published on 10 Apr 2013 Palash Biswas spoke to us from Kolkota and shared his views on Visho Hindu Parashid's programme from tomorrow ( April 11, 2013) to build Ram Mandir in disputed Ayodhya. http://www.youtube.com/watch?v=77cZuBunAGk

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS LASHES OUT KATHMANDU INT'L 'MULVASI' CONFERENCE

अहिले भर्खर कोलकता भारतमा हामीले पलाश विश्वाससंग काठमाडौँमा आज भै रहेको अन्तर्राष्ट्रिय मूलवासी सम्मेलनको बारेमा कुराकानी गर्यौ । उहाले भन्नु भयो सो सम्मेलन 'नेपालको आदिवासी जनजातिहरुको आन्दोलनलाई कम्जोर बनाउने षडयन्त्र हो।' http://youtu.be/j8GXlmSBbbk

THE HIMALAYAN DISASTER: TRANSNATIONAL DISASTER MANAGEMENT MECHANISM A MUST

We talked with Palash Biswas, an editor for Indian Express in Kolkata today also. He urged that there must a transnational disaster management mechanism to avert such scale disaster in the Himalayas. http://youtu.be/7IzWUpRECJM

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS CRITICAL OF BAMCEF LEADERSHIP

[Palash Biswas, one of the BAMCEF leaders and editors for Indian Express spoke to us from Kolkata today and criticized BAMCEF leadership in New Delhi, which according to him, is messing up with Nepalese indigenous peoples also. He also flayed MP Jay Narayan Prasad Nishad, who recently offered a Puja in his New Delhi home for Narendra Modi's victory in 2014.]

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS CRITICIZES GOVT FOR WORLD`S BIGGEST BLACK OUT

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS CRITICIZES GOVT FOR WORLD`S BIGGEST BLACK OUT

THE HIMALAYAN TALK: PALSH BISWAS FLAYS SOUTH ASIAN GOVERNM

Palash Biswas, lashed out those 1% people in the government in New Delhi for failure of delivery and creating hosts of problems everywhere in South Asia. http://youtu.be/lD2_V7CB2Is

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS LASHES OUT KATHMANDU INT'L 'MULVASI' CONFERENCE

अहिले भर्खर कोलकता भारतमा हामीले पलाश विश्वाससंग काठमाडौँमा आज भै रहेको अन्तर्राष्ट्रिय मूलवासी सम्मेलनको बारेमा कुराकानी गर्यौ । उहाले भन्नु भयो सो सम्मेलन 'नेपालको आदिवासी जनजातिहरुको आन्दोलनलाई कम्जोर बनाउने षडयन्त्र हो।' http://youtu.be/j8GXlmSBbbk