Welcome

Website counter
website hit counter
website hit counters

Sunday, February 20, 2011

অরুন্ধতি রায়ের সাক্ষাৎকার লিখেছেন : ফরিদ


অরুন্ধতি রায়ের সাক্ষাৎকার

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা কয়েকজন মিলে একটা পত্রিকা বের করি। শুধুমাত্র জেন্ডার বিষয়ক লেখা নিয়ে সাজানো এই পত্রিকাটির নাম "শব্দ"। আজ শব্দের ২য় সংখ্যা প্রকাশিত হলো। এ সংখ্যায় আমার একটা লেখা ছাপা হয়েছে, মৌলিক কোনো লেখা নয়; অরুন্ধতি রায়ের একটি সাক্ষাৎকারের

অনুবাদ। অনুবাদটি হুবুহু তুলে দিলাম।

(সংগঠক ও সংগ্রামী অরুন্ধতি রায়ের আরও একটি পরিচয় হলো তিনি সাহিত্যিক। ১৯৯৭ সালে বুকার বিজয়ের মাধ্যমে নিজের এই পরিচয়টাই তিনি শুধু প্রতিষ্ঠিত করেন নি বরং 'অচ্ছুৎ' মানুষের সংগ্রামের কথাও পৌঁছে দিয়েছেন সাধারণের কাছে। মার্কিন সাংবাদিক ডেভিড বারসামিয়া অরুন্ধতি রায়ের এই সাক্ষাৎকারটি গ্রহণ করেন ২০০১ সালের এপ্রিলে। প্রায় সাত বছর আগে নেয়া এই সাক্ষাৎকারটি আজও যথেষ্ট প্রাসঙ্গিক বাংলাদেশের সমাজ বাস্তবতায়। তাদের আলাপচারিতায় উঠে এসেছে ভারতের বিশেষত কেরালার নারীদের অবস্থান, দক্ষিণ এশিয়ায় পারমানবিক শক্তির চর্চা, বহুল আলোচিত নর্মদা বাঁচাও আন্দোলনে সাধারণ ভুক্তভোগীদের সাথে তাঁর একত্রে কারাবরণের কথা, নিজের লেখালেখি, শ্রেণী বৈষম্য ও জাতিভেদ প্রথা এবং সর্বোপরি বিশ্বায়নের নামে পুঁজিবাদের সর্বগ্রাসী ছোবলে বিপর্যস্ত অর্থনীতির কথা। )

প্রশ্নঃ
আপনি কেরালাতে বড় হয়েছেন । সেখানকার নারীদের অবস্থা সম্পর্কে কিছু বলুন

অ.রা.
কেরালার নারীরা সমগ্র ভারত এবং সারা বিশ্বে কাজ করছে, বাড়িতে টাকা পাঠাচ্ছে। কিন্তু তারপরেও তাদেরকে বিয়েতে যৌতুক দিতে হয়। আর সবচাইতে অদ্ভুত ব্যাপার হলো স্বামীর সাথে তাদের সম্পর্কটি হলো আনুগত্যের। আমি কেরালার একটি ছোট্ট গ্রামে বড় হয়েছি। আমার কাছে সেটা ছিলো দুঃস্বপ্নের মতো। আমি সব সময় সেখান থেকে পালাতে চাইতাম। মুক্তি পেতে চাইতাম। যাতে আমাকে সেখানে কাউকে বিয়ে করতে না হয়। অবশ্য সেখানে আমাকে বিয়ে করার জন্য কেউ মরে যাচ্ছিল না (হাসি)। একটা মেয়ের যত নেতিবাচক বৈশিষ্ট্য থাকতে পারে তার সবই আমার ছিল। আমি ছিলাম লিকলিকে, কালো, আর ধূর্ত।

প্রশ্নঃ
আপনার মা ছিলেন একজন প্রথা বিরোধী নারী।

অ.রা.
আমার মা একজন বাঙ্গালী হিন্দুকে বিয়ে করেছিলেন। আর সবচে' ভায়াবহ ব্যাপার হলো তিনি তাকে ডিভোর্স করেছিলেন। অর্থাৎ সেখানে সবার এটাই নিশ্চিন্ত ধারণা ছিল যে ডিভোর্স দেয়া একটি ভয়াবহ ব্যাপার। কেরালায় বংশ পরিচয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। আপনার যদি বাবা না থাকে তাহলে আপনার কোনো বংশ পরিচয়ই নেই। আপনাকে নাম পরিচয়হীন মানুষ বলা হবে। আমি আয়োমেনে (একটি জায়গার নাম) বড় হয়েছি। যেটি The god of Small Things উপন্যাসটির প্রেক্ষাপট। এই পরিচয়হীনতাই আমাকে বহিমুর্খী হবার পথ করে দিয়েছে, এখন আমি স্বাচ্ছন্দ্যে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিতে পারি কেননা ভারতের আর আট দশটা মধ্যবিত্ত মেয়ের অবস্থা আমার হয়নি। আমার বাবা ছিলনা, তাই কারো ভরণপোষণের বিনিময়ে আমাকে মারও (মাঝে মাঝে) খেতে হয়নি। আমার কোন গোত্র, শ্রেণী কিংবা ধর্ম ছিলো না। আমার চোখে প্রথাসিদ্ধতার ঠুলি পরানো ছিলো না। যা আমাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিতে হতো। মাঝে মাঝে ভাবি আমি সম্ভবত সেই মেয়ে যাকে তার মা বলতেন যাই করোনা কেন, কখনো বিয়ে করোনা (হাসি)। বিয়ের কনে আমার কাছে এক ধরনের অবিমৃষ্যকারিতা। বিয়ের কনে দেখলে আমার গায়ে ফোসকা পড়ে। ব্যাপারটি আমার কাছে পুরোপুরি মেকি মনে হয়। তাদেরকে আমার মনে হয় গহনায় মুড়ে দেয়া কোনো অবলা জীব। আমি The God of Small Things – এদেরকে পালিশ করা জ্বালানী কাঠ বলে উল্লেখ করেছি।

প্রশ্নঃ
আপনার মা সম্পর্কে আরো কিছু বলুন ।

অ.রা.
আমার মা ছিলেন Fellini Film হতে বিচ্যুত কারো মতো। তিনি এমন একজন নারী যার কখোনো কোনো পুরুষের প্রয়োজন পড়ে না। এটা খুব চমৎকার ব্যাপার। (যদিও এর জন্যে তাকে ভুগতে হয়)। আমার মা একটি স্কুল চালাতেন। আর স্কুলটি আশ্চর্য জনকভাবে সফল। বাবা মা'রা বাচ্চার জন্মের আগেই তাদের সন্তানটির জন্যে সেই স্কুলে আসন সংরক্ষণ করে রাখতো। তারা ঠিক বুঝে উঠতে পারতো না আমার সাথে বা মায়ের সাথে কেমন আচরণ করতে হবে। কারণ সমস্যাটা হলো আমরা দুজন তাদের ভাষায়, 'প্রথাবিরোধী নারী'। কথা প্রসঙ্গে একটু বলি, আমার মা কেরালা তে সুপরিচিত কারণ ১৯৮৬ সালে তিনি একটি জনস্বার্থ মামলায় জয়লাভ করেন। এই মামলায় তিনি সিরীয় খ্রিষ্ট উত্তরাধিকার আইনকে চ্যালেঞ্জ করেন। যাতে বলা হয়েছে একজন নারী তার পিতার সম্পত্তির চারের একাংশ অথবা ৫,০০০ রুপির মধ্যে যেটি কম সেটি পাবে। ১৯৫৬ সালের আইন পর্যালোচনা করে সুপ্রীম কোর্ট যে রায় দেয় তা নারীকে সমানাধিকার দিয়েছিলো। কিন্তু খুব কম মহিলাই এই অধিকারের সুবিধা ভোগ করতে পারে। এমনকি চার্চের ফাদাররা এমনভাবে উইল লেখে যাতে কন্যারা সম্পত্তির উত্তরাধিকারী না হয়। এই ধরনের অদ্ভুত নিপীড়ন ঘটে সেখানে।

প্রশ্নঃ
আপনি উপন্যাস লেখার পাশাপাশি কিছু রাজনৈতিক প্রবন্ধও লিখেছেন। এই দুটো কি ধরনের পরিবর্তন এনেছে বলে আপনি মনে করেন?

অ.রা.
পরিবর্তন শুধু এইটুকু যে The God of Small Things প্রকাশিত হওয়ার পর বহিঃর্বিশ্বের মানুষের কাছে আমি পরিচিতি লাভ করি। আসলে উপন্যাস লেখার আগে আমি রাজনৈতিক প্রবন্ধ লিখেছি। ফুলন দেবী নামক একজন নারীকে নিয়ে আমি The Great Indian Rape নামে একটি ধারাবাহিক প্রবন্ধ লিখেছি। Bandit Queen নামে একটি সিনেমা তাকে কিভাবে Exploit করেছে। একজন বেঁচে থাকা ধর্ষিতা নারীর ধর্ষণ কাহিনী তাঁর বিনানুমতিতে মঞ্চায়ন করা উচিত কিনা এই বিষয়গুলো আমি প্রবন্ধগুলোতে তুলে ধরেছি।

The good of small things এবং আমার Non Fiction কাজের মধ্যে বড় কোনো পার্থক্য দেখিনা। যেহেতু আমি বলছি ফিকশন হলো সত্যি। অন্তত আমি তাই মনে করি। সেখানে বর্তমানের ফিকশন হলো সব কিছুর চাইতে এক চরম সত্য। আমার বর্তমানের সমস্ত প্রচেষ্টা হলো এই পার্থক্যটি মুছে দেয়া। একজন লেখক হলেন বোধের ধাত্রী। রাজনীতিকে গল্পের মতো করে বলতে পারাটা আমার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমি যা করতে চাই তা হলো ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কোনো বস্তু বৃহত্তর কোনো কিছুর সাথে কিভাবে সর্ম্পকিত তা তুলে ধরতে। অর্র্থাৎ গ্রামের একজন পিতা-পুত্র কিভাবে গ্রাম থেকে বিতাড়িত হলো এবং এক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংকের Mr. Wolfensohn কিভাবে জড়িত ছিলো তা আমি তুলে ধরতে চাই। The God of Small Things বইটিতে আমি এটাই দেখাতে চেয়েছি যে কিভাবে ক্ষুদ্র বিষয়গুলো বৃহত্তর ইস্যুগুলো দ্বারা প্রভাবিত। এটা হতে কিভাবে একটি ছোট মাকড়সা পানির উপর ঢেউ তৈরী করছে বা চাঁদের আলো নদীর উপর কিভাবে প্রতিফলন ঘটাচ্ছে অথবা হতে পারে আপনার জীবন, বাড়ি এমনকি আপনার শোবার ঘর কিভাবে ইতিহাস এবং রাজনীতিকে প্রভাবিত করছে।

প্রশ্নঃ
আপনার উপন্যাসের একটি চরিত্র 'ইসতা' বিশ্ব ব্যাংকের টাকায় কেনা মল এবং কীটনাশকের গন্ধে ভরা নদীর তীর ধরে হাঁটছে। নর্মদা উপত্যকায় ৩০০ বাঁধ তৈরীর যে পরিকল্পনা ছিলো বিশ্ব ব্যাংক ও ভারত সরকার তা রদ করেছে। নর্মদা বাঁচাও আন্দোলন সম্পর্কে কিছু বলুন।

অ.রা.
নর্মদা বাঁচাও আন্দোলনের কর্মীদের সাথে যখন আমার প্রথম দেখা হয়, তারা বললো আপনার The God of Small Things পড়ে জেনেছি, আপনি বিশ্ব ব্যাংক এর বাঁধ তৈরী পরিকল্পনার বিরুদ্ধে। ন. বা. আ. এর উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হলো এটি ভারতের শ্রেণী ব্যবধানকে ঘুচিয়ে দেয়। এ যেন আদিবাসীদের সাথে উচ্চ শ্রেণীর কৃষক, অস্পৃশ্য বলে বিবেচিত দলিত শ্রেণীর সাথে মধ্যবিত্তের এক মিলন মেলা। এটি গ্রাম, শহর, কৃষক, জেলে, এবং লেখক, চিত্রকরদের মধ্যে সংযোগ তৈরী করে দেয়, যা আন্দোলনকে দারুণভাবে শক্তি যোগায়। কিন্তু অনেকেই সমালোচনা করে বলেছিলো এটা ভারতীয় মধ্যবিত্তদের প্রতিবাদ। যা আমাকে ভীষণভাবে ক্রুদ্ধ করেছিলো। অথচ শহুরে মধ্যবিত্ত ইঞ্জিনিয়াররাও এর মধ্যে ছিলো। আপনি শুধু আদিবাসীদের সমালোচনাটাই দেখার প্রত্যাশা করতে পারেন না। আপনি তাদেরকে আলাদা করে দেন। কারণ তাদেরকে চাপে ফেলা সহজ। নানাভাবে লোকে মধ্যবিত্তদের অংশগ্রহণকে সীমিত করে দিতে চায়। বলে আপনি কিভাবে এসব লোকের পক্ষ হয়ে কথা বলেন ? কেউ কারো পক্ষ হয়ে কথা বলে না। আসল কথা হলো ন.বা.আ. একটি চমৎকার উদাহরণ যা শ্রেণী এবং বর্ণের মধ্যে হাত মিলিয়ে দিচ্ছে। এটি স্বাধীনতা সংগ্রামের পরে সবচেয়ে বড় সুন্দরতম এবং উল্লেখযোগ্য প্রতিরোধ আন্দোলন ।

প্রশ্নঃ
গতবছর নর্মদার তীরে একটি গ্রামে প্রস্তাবিত বাঁেধর বিরুদ্ধে আন্দোলনে আপনি জড়িত ছিলেন। গ্রেফতারকৃত অনেকের মধ্যে আপনিও ছিলেন। ঘটনাটি সম্পর্কে একটু বলুন।

অ.রা.
ফ্যান্টাস্টিক। ঘটনাটি ঘটে সালগাঁ নামক একটি গ্রামে। সারা রাত ধরে মানুষ আসছিলো; মোটরগাড়ী, ট্রাক কিংবা পাঁয়ে হেঁটে। ভোর তিনটার মধ্যে আমরা প্রায় ৫,০০০ মানুষ জমায়েত হলাম। অন্ধকারে আমরা বাঁধের জন্য নির্ধারিত স্থানের দিকে হাঁটতে শুরু করলাম। পুলিশ ইতোমধ্যে জেনে গিয়েছিলো যে বাঁধের সেই জায়গাটি দখল হয়ে যেতে পারে, কিন্তু তারা জানতো না যে কোথা হতে মানুষ আসবে। আমরা অন্ধকারেই হাঁটছিলাম। এটা ছিল প্রচন্ড রকম বিস্ময়কর একটা ব্যাপার। পাঁচ হাজার লোক, বেশিরভাগই ছিল গ্রাম্য কিন্তু শহরের আইনজীবি, স্থপতি, সাংবাদিক সহ সবাই সেই এবড়ো থেবড়ো পথ ধরে হাঁটছিলো-পার হয়ে যাচ্ছিলো নীরবে। কেউ সেখানে একটি বিড়িও ধরায়নি, কাশিও দেয়নি। এমনকি একবারও গলা-খাকড়ি দেয়নি। মাঝ পথে একদল মহিলা শুধু প্রস্রাব করার জন্য থেমেছিলো। তারপর আবার হাঁটতে শুরু করলো। অবশেষে সকাল বেলা আমরা বাঁধের জন্য নির্ধারিত স্থানে পৌঁছুলাম। ঘন্টাখানেক পুলিশ আমাদেরকে ঘিরে রেখেছিলো, তারা লাঠি চার্জ করেছিলো। আমি সহ প্রায় এক হাজার লোক সেদিন গ্রেফতার হয়েছিলো। কারাগার ভরে গিয়েছিলো বন্দী লোকে।

প্রশ্নঃ
আপনি কি মনে করেন ভারত সরকার বাঁধ প্রকল্প শেষ করার জন্য বদ্ধ পরিকর ?

অ.রা.
এখানে অনেকগুলো বিষয় আছে। প্রথমে আপনাকে বুঝতে হবে, বড় বাঁধের পুরাণ কথা। পাঠ্য বইয়ের মাধ্যমে আমাদের কাছে তিন বছর বয়সেই বিক্রি করা হয়েছে। নেহেরু বলেছেন, বাঁধ হলো আধুনিক ভারতের মন্দিরের মতো। তাই বাঁধগুলো বিশালাকারের জাতীয় পতাকার মতো। ন. বা. আ. এর আগে, বাঁধগুলো ছিলো আপনার কাছে এমন যা আপনাকে সকালের নাস্তা যোগান দেবে, আপনি আপনার মেয়েকে বিয়ে দিতে পারবেন এবং আপনার জন্ডিস ভালো হয়ে যাবে। মানুষকে বুঝতে হবে যে, এগুলো রাজনৈতিক দুর্নীতির স্মারক। আর এগুলোর উৎপত্তিও হলো অগণতান্ত্রিক রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান হতে। আপনি শুধু প্রাকৃতিক সম্পদ কেন্দ্রীভূত করতে পারেন, মানুষের কাছ থেকে তা ছিনিয়ে নিতে পারেন কিন্ত মানুষের এসব বিষয়ে সিদ্বান্ত নেয়ার আপনি কে ? ১৯৯০ সালে নর্মদায় প্রথম বার্গী বাধঁটি তৈরী হয়, তারা বলেছিলো এটা ৭০,০০০ লোককে বাস্তুচ্যুত করবে এবং ১০১টি গ্রাম নিমজ্জিত করবে। একদিন কোনো আগাম ঘোষণা ছাড়াই সরকার জলাধার ভরাট করে ফেলে। ১,১৪,০০০ লোক বাস্তুহীন ও ১৬২টি গ্রাম নিমজ্জিত হয়ে যায়।

২য় সঙ্খ্যা

২য় সঙ্খ্যা

এমন পরিস্থিতিতে গৃহহীন মানুষগুলোর সামনে একমাত্র বিকল্প যা ছিলো তা হলো শিশু ও গবাদি পশুগুলো নিয়ে পাহাড়ে উঠে যাওয়া। ১০ বছর পরে সেই বাঁধ ৫ ভাগ জমি সেচন করে। যত ভাগ জমি এই বাঁধ নিমজ্জিত করেছিলো তার চেয়ে কম জমি সেচেছে। তারা কোনো খালও বানায় নি। কারণ ঠিকাদার আর রাজনীতিবিদদের কাছে বাঁধ নির্মাণ শুধু একগাদা টাকা পকেটে আনার উপায়।

প্রশ্নঃ
যারা গৃহহীন হয়েছিলো তাদের সম্পর্কে কিছু বলুন।

অ.রা.
কেউ জানে না, The Greater Common God লেখার সময় যারা আছে, তাদের চেয়ে যারা নেই তাদের জন্য আমার বেশি কষ্ট হচ্ছিলো। সেই বিশাল বাঁধ কত মানুষকে যে ঘর হারা করেছিল তার কোনো পরিসংখ্যান ভারত সরকারের কাছে নেই। আমি মনে করি এটা শুধু রাষ্ট্রের ব্যর্থতা নয়, এটা বুদ্ধিজীবিদেরও ব্যর্থতা। আর মূল বিষয়টা হলো উচ্ছেদ হওয়া। মানুষগুলো আসলে তাদের কাছে মানুষ নয়, তারা হল আদিবাসী তারা অস্পৃশ্য। সেই প্রতিবেদনের মতে Indian Institution of Public Administration কর্তৃক করা ৫৪ টি বাঁধের উপর আমি একটি Sanity Check করেছিলাম। তাদের মতে শুধু জলাধারগুলো স্থানান্তরিত করা হয়েছে, এটা একধরনের স্থানান্তরই যেখানে প্রতিটি বাঁধের কারণে গড়ে ৪৪,০০০ লোক স্থানান্তরিত হয়েছে। আমরা জানি গত ৫০ বছরে ভারতে প্রায় ৩,৬০০ বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। সুতরাং শুধু একটি Sanity Check এর রিপোর্ট বলছে যে এই বাঁধ ৩৩ মিলিয়ন মানুষকে বাস্তুুহারা করেছে। তারা শহরে অভিবাসিত হয়েছে, এবং সেখানেও তারা নাগরিক নয়, শুধুই বস্তিবাসী। তারা শুধু এমন মানুষ যাদেরকে মিনিটের মধ্যেই লাথি মেরে উচ্ছেদ করা যায়, নয়াদিল্লির অভিজাত এলাকার গিন্নিরা যেকোন সময়ে তাদেরকে, এইসব বাস্তিবাসীদেরকে বিপদজনক বলে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।

প্রশ্নঃ
আপনি এসব উচ্ছেদকৃত মানুষগুলোকে জঞ্জাল অপসারনের সাথে তুলনা করেছেন ।

অ.রা.
এটা আসলে জঞ্জাল অপসারনই। ভারত সরকার এই ধারণাটিকে অসহিংসতা বলে চালিয়ে দিচ্ছে। চীন, তুরস্ক কিংবা ইন্দোনেশিয়ার মতো ভারত সরকার এসব মানুষকে কচুকাটা করছে না । যারা উচ্ছেদ হতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে তাদেরকে হত্যাও করছে না। ভারত শুধু উচ্ছেদ করার জন্য অপেক্ষা করে। ভারতকে যা করতে হবে তা ভারত করে যাচ্ছে এবং তা পরবর্তী ফলাফলকে উপেক্ষা করেই করছে। জাতি প্রথার কারণে এখানে সিদ্ধান্তগ্রহীতা এবং সিদ্ধান্তের ফল ভোগকারীদের মধ্যে সংযোগ নেই। সিদ্ধান্তটি নেয়া হয় এবং সেই মোতাবেক কাজও করা হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ করা হয়। এসব মানুষ মনে করে এটা তাদের ভাগ্য, তাদের কর্ম, যা তাদের কপালে লেখা ছিলো। গণতন্ত্রের জন্য ভারতের খ্যাতি আছে কিন্তু দায়িত্ববান সরকারের হাতে অপরিমেয় ক্ষমতা আছে, এটাই সমস্যা সৃষ্টি করেছে।

প্রশ্নঃ
কিন্তু আপনি আপনার রাজনীতি সম্পর্কে বলেন যে আপনি কোন উন্নয়ন বিরোধী নন, আপনি প্রথা কিংবা ঐতিহ্যকে চিরতরে তুলে দিতে চান না।

অ.রা.
আপনি আমাকে কিভাবে সেটা বলতে পারেন ? আমি ভারতের একটি গ্রামে বেড়ে উঠেছি। আমার সমস্ত জীবন কেটেছে একটি সংগ্রামী ঐতিহ্যের ভেতর দিয়ে। একজন প্রথাসিদ্ধ ভারতীয় গৃহিণী হবার কোনো উপায় আমার ছিলো না। তাই আমি উন্নয়ন বিরোধী কোনো কথা বলছি না, আমি বলছি রাজনীতির উন্নয়নের কথা, আপনি কিভাবে সিদ্ধান্ত নেবার এককেন্দ্রিক অগণতান্ত্রিক প্রথাটিকে ভাঙতে পারেন? আপনি কিভাবে বিকেন্দ্রীকরণের নিশ্চয়তা দিতে পারেন ? এসব মানুষের তো তাদের জীবন আর প্রাকৃতিক সম্পদের উপর ভারত সরকারের অধিকার আছে। আজ ভারত সরকার রাষ্ট্রীয় মালিকানা হতে ব্যক্তি মালিকানায় এটা হস্তান্তর করতে চাচ্ছে। কিন্তু ব্যক্তি মালিকানা হচ্ছে কেন্দ্রীভূতকরণের একটি প্রক্রিয়া যেখানে সরকার বলছে উৎপাদনের সর্ম্পূণ ক্ষমতা মহারাষ্ট্র হতে ইনরনকে দিয়ে দেবার ক্ষমতা তাদের রয়েছে। ৫০ বছর ধরে ভারতের জনগণের টাকায় ভারতের গণখাতের অবকাঠামো গড়ে উঠেছে। একে ইনরন এর কাছে বিক্রি করে দেবার কোনো অধিকার তাদের নেই। এটা তারা করতে পারে না।

প্রশ্নঃ
আমি মনে করি এখনো আপনার কিছু আশা আছে যাকে আপনি ভারতের সহজাত নৈরাশ্য বলেন তা বিশ্বায়নের জোয়ার ঠেকাতে পারে।

অ.রা.
বিশ্বায়নের ব্যপারে ভিন্নমত দেয়াই যায়, আমি আসলে জানি না এখানে আশাবাদী হবো কিনা। শহরের বাইরে থাকলে আশাবাদী হই। ভারতের এত বিশালতা … এত সৌন্দর্য। আমি জানি না হয়তো তারা এই সৌন্দর্য্যকে খুন করতে পারে। আমি ভাবতে চাই না তারা তা করতে পারে। আমি মনে করি না শাড়ির মতো সুন্দর কোনো কিছু হতে পারে, আপনি কি শাড়ী বাদ দিতে পারেন ? আপনি কি শাড়ীর ঐতিহ্যকে অন্য কোন কোম্পানীর সাথে ভাগাভাগি করতে পারেন ? বহুজাতিক কোম্পানীগুলোকে কেন দেশের ভেতরে আসার অনুমোদন দেয়া হচ্ছে? কেন তারা বাসমতি চাল নিয়ে ব্যবসা করারও অনুমোদন পেয়ে যাচ্ছে? মানুষ তো ম্যাকডোনাল্ড বার্গারের চেয়ে রুটি আর দোসা খেতে বেশি ভালোবাসে। আমেরিকায় আসার আগে আমি একটি বাজারে গিয়েছিলাম সেখানে সব ধরনের ডাল, এমনকি মসুর ডালও পাওয়া যাচ্ছিলো। আমার চোখে জল এসে গিয়েছিলো। আজকাল এসব আমাকে কাঁদায়, যখন দেখি যে, সব ধরনের ডাল চাল টিকে থাকুক এটা তারা চায় না।

প্রশ্নঃ
আপনার The End of Imagination বইটিতে উপমহাদেশের পরমাণবিক শক্তি পরীক্ষা নিয়ে যা লিখেছেন সে সম্পর্কে কিছু বলুন।

অ.রা.
এটা ভয়ানক। আমি খুব ভীত। এটা যে কোনো কিছুর জন্যই ব্যবহার করা হতে পারে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ পারমাণবিক অস্ত্র মজুদ করছে এবং ভারত, পাকিস্তান ও আমেরিকার মতোই অন্যদেশের মানুষকে অত্যাচার করার জন্য আর নিজেদের মানুষকে প্রতারণা করার জন্য তা ব্যবহার করছে। পারমাণবিক পরীক্ষা ছিলো আমাদের আত্মসম্ভ্রমের ধ্বজা ঠেকিয়ে রাখার একটি কৌশল। ভারত এখনো তার সাংস্কৃতিক অবমাননা হতে পিছিয়ে আসতে পারছে না। ভারত এখনো তার স্বকীয়তা খুঁজছে।

প্রশ্নঃ
আপনি বলেছেন বিদ্রুপমুখর তরুণ হিন্দুরা যারা পারমানবিক শক্তি পরীক্ষাকে অভিনন্দিত করছে আর যারা বাবরি মসজিদ ধবংস করে আনন্দ পেয়েছে তাদের মধ্যের কোনো পার্থক্য নেই ?

অ.রা.
ভারতীয় বুদ্ধিজীবিরা আজকাল মৌলবাদকে দুষতে পারলে নিজেদের প্রগতিবাদী মনে করে, কিন্তু খুব কম লোকই বেসরকারীকরণ, বিশ্বায়ন আর মৌলবাদের মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে কথা বলছে। বিশ্বায়ন ভারতের অভিজাত শ্রেণীকে সন্তুষ্ট করতে পারে কিন্তু মৌলবাদ তা পারেনা। এটা আসলে শ্রেণী ভেদাভেদের সমস্যা। যখন সাধারণ মানুষ কোন ছবির শুটিং করতে দেয়না কিংবা কোন বই পুড়িয়ে দেয় তখন তারা শুধু এই কথাই বলে না যে, এসব ভারতীয় সংস্কৃতির বিরোধী। বরং তাঁরা এও বলে যে পাশ্চাত্যবাদী, অভিজাত আর ইংরেজি বলিয়ে এইসব লোকেরা খুব সুখে আছে। এটি খুব বিষ্ময়কর। আমি মনে করি এই প্রতিরোধটা সম্মিলিতভাবে করা দরকার, আলাদাভাবে নয়।

ধর্মীয় ডানপন্থী মতবাদ সরাসরি বিশ্বায়ন ও বেসরকারিকরণের সাথে সম্পর্কিত। ভারত সরকার তার সমস্ত বৈদ্যুতিক খাত বিদেশি বহুজাতিক কোম্পানীর কাছে বিক্রি করার কথা বলেছেন। যখন রাজনৈতিক হাওয়া গরম ও অস্থির হয়ে উঠছে, তখনই সরকার বলতে শুরু করলো আমাদের বাবরি মসজিদের জন্য নির্ধারিত স্থানে হিন্দুদের মন্দির নির্মাণ করা উচিত। সবাই তখন সেদিকেই ঘুরে গেলো। এটাতো একটা খেলা। আমাদের সেটা বুঝতে হবে। একদিকে আপনি পশ্চিমা বহুজাতিক কোম্পনীগুলোর নিকট দেশ বিক্রি করে দেবেন, অন্যদিকে সীমান্ত রক্ষা করতে চাইবেন পারমাণবিক বোমা দিয়ে এটা কি হাস্যকর নয়? আপনি বলেছেন পৃথিবীটা আসলে বিশ্বগ্রাম কিন্তু আপনি কোটি কোটি রুপি খরচ করছেন পারমানবিক অস্ত্র তৈরী করতে !

প্রশ্নঃ
আপনি দুই ধরনের নিরাপত্তা জাহাজের উপমা ব্যবহার করেছেন। একটি বড়, অনেক যাত্রী অন্ধকারের দিকে যাত্রা করছে, আর অন্যটি খুব ছোট; আলোকিত তীরের দিকে যাচ্ছে। আপনি আসলে কি বুঝাতে চাইছেন-একটু ব্যাখ্যা করবেন ?

অ.রা.
ভারত কয়েক শতাব্দী ধরে একই জায়গায় পড়ে আছে। প্রতিদিন, আমার বাড়ির পাশের রাস্তায় একদল দুর্বল মজুর সাইবার অপ্টিকস্ কেবল স্থাপন করার জন্য গর্ত তৈরী করে যা ডিজিটাল বিপ্লবকে গতিময় করছে। তারা কয়েকটি মোমবাতির আলোতে কাজ করে। বর্তমানের ভারতে এটাই ঘটছে।যে জাহাজটি অন্ধকারে মিলিয়ে যাচ্ছে তার কোন শব্দ নেই, টেলিভিশনে তাদের কোনো উপস্থিতি নেই, জাতীয় দৈনিকে তাদের কোনো স্থান নেই, তাই তাদের অস্তিত্ব টের পাওয়া যাচ্ছেনা। আর যারা ছোট্ট জাহাজটিতে আছে, তাঁরা তাদের উজ্জ্বল গন্তব্যের দিকে পৌঁছে যাচ্ছে। তাঁরা বিশ্বচূড়ায় পৌঁছে গিয়ে অন্য জাহাজটির দিকে পিছু ফিরে দেখার দৃষ্টিও সম্পূর্ন রূপে হারিয়ে ফেলছে। তাই দিল্লীতে গাড়িগুলো বড় আর মসৃণ হচ্ছে, হোটেলগুলো আরো চকচকে হচ্ছে, পাহারাদাররাও আর পুরনো চৌকিদার নেই, তারা এখন Watchmen, অস্ত্রধারী কর্মচারী। আর গরীবরা শহরে ফাটা দেয়ালে বন্দী পোকার মতো। তারা কিছু দেখতে পাচ্ছেনা। ঠিক যেন মাঝখানে একটি উজ্জ্বল বাতি জ্বলছে আর তার চারপাশে আঁধার জমাট বাঁধছে। মানুষ জানতে চাচ্ছে আসলে কি ঘটছে । যেসব লোক দিন দিন ধনী হচ্ছে তারা জানে না যে পৃথিবী ঠিক সুবিধের জায়গা নয়।

প্রশ্নঃ
আপনি কি আপনার স্বরূপ নির্ণয়ের জন্য সেই বিশাল জাহাজের অংশ হবার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, কিংবা আপনার জন্য সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে?

অ.রা.
আমি বড় জাহজের যাত্রী হতে পারি না কারণ সেটি আমার উপর নির্ভর করে না। আসল ব্যাপার হলো আমি একজন শিক্ষিত মানুষ অর্থাৎ আমি সেই জাহাজের অংশ হতে পারি না। আর আমি তা হতে চাইওনা। আমি ভুক্তভোগী হতে চাই না। আমি অন্ধকারে হারিয়ে যেতে চাই না। আমি একজন শিল্পী, একজন লেখক। আমি মনে করি কেউ তার নিজের ছবি সেখানেই সাজাতে চাইবে যেখানে তা মানানসই হবে। ১৬ বছর বয়সে আমি বাড়ি ছেড়ে ছিলাম এরপর আমি যেখানে ছিলাম সেখান থেকে অন্যদিকে যাওয়া অনেকটা সহজ ছিলো। আমি বড় জাহাজটির অংশ হতে পারতাম কারণ আমি ছিলাম একজন নারী এবং সর্বোপরি একাকী নারী। ভারতে এটা কোন রসিকতা নয়। আমার পরিণতি খুব খারাপ হতে পারতো, আমি খুব ভাগ্যবান যে তা হয়নি।

প্রশ্নঃ
আপনি কি নতুন কোনো ফিকশন লেখার চিন্তা করছেন ?

অ.রা.
আমার জন্য ফিকশন তেমনি যেমন আপনার জন্য খাওয়া কিংবা শরীরচর্চা, কিন্তু ঠিক এই মূহুর্তে ফিকশন লেখা দূরুহ। এখন আমি জানিনা কিভাবে আমার জীবন চালাবো। জানিনা কিভাবে 'আমি এখন একটি বই লিখছি'-এই কথাটি বলার মতো পরিস্থিতি আমি তৈরী করবো।

প্রশ্নঃ
আপনি কি দায়িত্ববোধ করছেন একটি নারীর কঠোর প্রতিষ্ঠা আপনাকে ডেকে যাচ্ছে…?

অ.রা.
না। আমি কোনো দায়িত্ববোধ করছি না। কারণ 'দায়িত্ব' শব্দটি খুব গতানুগতিক।

প্রশ্নঃ
আপনি খুব সুবিধাজনক অবস্থানে আছেন কারণ আপনি ভারতীয় এবং তার বাইরে একজন খ্যাতিমান ব্যক্তি।

অ.রা.
কিন্তু কখনো একজন খ্যাতিমান ব্যক্তি হিসেবে আমি কিছু করি না। আমি যা করি তা একজন নাগরিক হিসেবেই করি। আমার লেখা আমার নির্ভরতা। আমি যা লিখি তা আমি বিশ্বাস করি। আমার সম্পর্কে যে প্রকার প্রচার কিংবা বিরুদ্ধ প্রচারে বিশ্বাস করতে শুরু করা আমার জন্য সহজ। এই প্রচার আপনাকে আপনার সম্পর্কে একটি হাস্যকর ধারণা দেবে। আমি জানি যে আমার নিজস্ব শক্তিকে সাবলীলভাবে ব্যবহার এবং অপব্যবহার করার মধ্যে একটি চমৎকার সামঞ্জস্য আছে। আমি কখনোই নিজেকে বাকশক্তিহীনদের প্রতিনিধি হিসেবে দেখতে চাই না। আমি এটাকে ভয় পাই। কিন্তু কেউ কেউ আমার উপর নাখোশ, কারণ আমার যে অবস্থানটি আছে (যারা নিজেদেরকে আমার মতো মনে করে) তাদের সেটা নেই।

তথ্যসূত্র-এখানে


No comments:

मैं नास्तिक क्यों हूं# Necessity of Atheism#!Genetics Bharat Teertha

হে মোর চিত্ত, Prey for Humanity!

मनुस्मृति नस्ली राजकाज राजनीति में OBC Trump Card और जयभीम कामरेड

Gorkhaland again?আত্মঘাতী বাঙালি আবার বিভাজন বিপর্যয়ের মুখোমুখি!

हिंदुत्व की राजनीति का मुकाबला हिंदुत्व की राजनीति से नहीं किया जा सकता।

In conversation with Palash Biswas

Palash Biswas On Unique Identity No1.mpg

Save the Universities!

RSS might replace Gandhi with Ambedkar on currency notes!

जैसे जर्मनी में सिर्फ हिटलर को बोलने की आजादी थी,आज सिर्फ मंकी बातों की आजादी है।

#BEEFGATEঅন্ধকার বৃত্তান্তঃ হত্যার রাজনীতি

अलविदा पत्रकारिता,अब कोई प्रतिक्रिया नहीं! पलाश विश्वास

ভালোবাসার মুখ,প্রতিবাদের মুখ মন্দাক্রান্তার পাশে আছি,যে মেয়েটি আজও লিখতে পারছেঃ আমাক ধর্ষণ করবে?

Palash Biswas on BAMCEF UNIFICATION!

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS ON NEPALI SENTIMENT, GORKHALAND, KUMAON AND GARHWAL ETC.and BAMCEF UNIFICATION! Published on Mar 19, 2013 The Himalayan Voice Cambridge, Massachusetts United States of America

BAMCEF UNIFICATION CONFERENCE 7

Published on 10 Mar 2013 ALL INDIA BAMCEF UNIFICATION CONFERENCE HELD AT Dr.B. R. AMBEDKAR BHAVAN,DADAR,MUMBAI ON 2ND AND 3RD MARCH 2013. Mr.PALASH BISWAS (JOURNALIST -KOLKATA) DELIVERING HER SPEECH. http://www.youtube.com/watch?v=oLL-n6MrcoM http://youtu.be/oLL-n6MrcoM

Imminent Massive earthquake in the Himalayas

Palash Biswas on Citizenship Amendment Act

Mr. PALASH BISWAS DELIVERING SPEECH AT BAMCEF PROGRAM AT NAGPUR ON 17 & 18 SEPTEMBER 2003 Sub:- CITIZENSHIP AMENDMENT ACT 2003 http://youtu.be/zGDfsLzxTXo

Tweet Please

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS BLASTS INDIANS THAT CLAIM BUDDHA WAS BORN IN INDIA

THE HIMALAYAN TALK: INDIAN GOVERNMENT FOOD SECURITY PROGRAM RISKIER

http://youtu.be/NrcmNEjaN8c The government of India has announced food security program ahead of elections in 2014. We discussed the issue with Palash Biswas in Kolkata today. http://youtu.be/NrcmNEjaN8c Ahead of Elections, India's Cabinet Approves Food Security Program ______________________________________________________ By JIM YARDLEY http://india.blogs.nytimes.com/2013/07/04/indias-cabinet-passes-food-security-law/

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS TALKS AGAINST CASTEIST HEGEMONY IN SOUTH ASIA

THE HIMALAYAN VOICE: PALASH BISWAS DISCUSSES RAM MANDIR

Published on 10 Apr 2013 Palash Biswas spoke to us from Kolkota and shared his views on Visho Hindu Parashid's programme from tomorrow ( April 11, 2013) to build Ram Mandir in disputed Ayodhya. http://www.youtube.com/watch?v=77cZuBunAGk

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS LASHES OUT KATHMANDU INT'L 'MULVASI' CONFERENCE

अहिले भर्खर कोलकता भारतमा हामीले पलाश विश्वाससंग काठमाडौँमा आज भै रहेको अन्तर्राष्ट्रिय मूलवासी सम्मेलनको बारेमा कुराकानी गर्यौ । उहाले भन्नु भयो सो सम्मेलन 'नेपालको आदिवासी जनजातिहरुको आन्दोलनलाई कम्जोर बनाउने षडयन्त्र हो।' http://youtu.be/j8GXlmSBbbk

THE HIMALAYAN DISASTER: TRANSNATIONAL DISASTER MANAGEMENT MECHANISM A MUST

We talked with Palash Biswas, an editor for Indian Express in Kolkata today also. He urged that there must a transnational disaster management mechanism to avert such scale disaster in the Himalayas. http://youtu.be/7IzWUpRECJM

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS CRITICAL OF BAMCEF LEADERSHIP

[Palash Biswas, one of the BAMCEF leaders and editors for Indian Express spoke to us from Kolkata today and criticized BAMCEF leadership in New Delhi, which according to him, is messing up with Nepalese indigenous peoples also. He also flayed MP Jay Narayan Prasad Nishad, who recently offered a Puja in his New Delhi home for Narendra Modi's victory in 2014.]

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS CRITICIZES GOVT FOR WORLD`S BIGGEST BLACK OUT

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS CRITICIZES GOVT FOR WORLD`S BIGGEST BLACK OUT

THE HIMALAYAN TALK: PALSH BISWAS FLAYS SOUTH ASIAN GOVERNM

Palash Biswas, lashed out those 1% people in the government in New Delhi for failure of delivery and creating hosts of problems everywhere in South Asia. http://youtu.be/lD2_V7CB2Is

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS LASHES OUT KATHMANDU INT'L 'MULVASI' CONFERENCE

अहिले भर्खर कोलकता भारतमा हामीले पलाश विश्वाससंग काठमाडौँमा आज भै रहेको अन्तर्राष्ट्रिय मूलवासी सम्मेलनको बारेमा कुराकानी गर्यौ । उहाले भन्नु भयो सो सम्मेलन 'नेपालको आदिवासी जनजातिहरुको आन्दोलनलाई कम्जोर बनाउने षडयन्त्र हो।' http://youtu.be/j8GXlmSBbbk