Welcome

Website counter
website hit counter
website hit counters

Saturday, November 22, 2014

কিছু প্রশ্ন। কিছু উত্তর। তসলিমা নাসরিন

কিছু প্রশ্ন। কিছু উত্তর।
তসলিমা নাসরিন
সৌজন্য বাংলাদেশ প্রতিদিনের,যেখানে গুজরাত ও মৌলবাদের প্রশ্নে তসলিমা নাসরিনের লড়াইয়ের চাল চিত্র চিত্রার্পিত হয়ে আছে এবং এই তসলিমাকে লুকিয়ে রেকে নকল তসলিমাকেই মীডিয়া ফলাও করে প্রকাশ করে,আসল তসলিমা সামনে এলিয়েই শাসকের মহাবিপদ..
আমি চিরকালই আমাদের প্রিয় এই তসলিমার পাশে আছি,থাকবো..
পলাশ বিশ্বাস
কিছু প্রশ্ন। কিছু উত্তর।
তসলিমা নাসরিন

কলকাতার একটা সাহিত্য পত্রিকা থেকে আজ দীর্ঘদিন যাবৎ একটা সাক্ষাৎকার চাওয়া হচ্ছে। দেব দেব করে আজও দেওয়া হয়নি। আজ দুয়ার খুলেই প্রশ্নোত্তর দিচ্ছি।

১. প্রায় দু বছর আগে একটি সাহিত্য পত্রিকার জন্য আপনার সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম। তখন আপনার কণ্ঠে অভিমান আর ক্ষোভ অতিমাত্রায় লক্ষ্য করেছিলাম। এখন কি অবস্থা কিছুটা পাল্টেছে?

উত্তর : কী নিয়ে অভিমান করেছিলাম বা ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলাম, তা তো বলবেন মশাই! আমার অভিমান, ক্ষোভ, রাগ ইত্যাদির পেছনে বড় কোনও কারণ থাকে। এমনিতে আমি খুব হাসিখুশি মানুষ, ছোটখাটো ভুলত্রুটিগুলোর জন্য মানুষকে নিরন্তর ক্ষমা করে দিই। তার মানে এই নয় যে, কারও কোনও ভয়ংকর বদমাইশি দেখবো, আর না দেখার ভান করে অন্য দিকে চলে যাবো! অন্যায় যদি দেখি, রাগ করবো না? যেদিন কিছুতেই কিছু আসবে যাবে না আমার, ক্ষোভ টোভ মরে ভূত হয়ে যাবে, রাগ করার মতো কিছু ঘটলেও রাগ করবো না, সেদিন বুঝবেন আমার মৃত্যু হয়েছে। এই যে 'অতিমাত্রা' শব্দটা ব্যবহার করলেন, সেটা আবার অদ্ভুত! ক্ষোভের মাত্রা কী করে মেপেছিলেন আপনি? ক্ষোভ ঠিক কতটা হলে মাত্রার মধ্যে থাকে, কতটা হলে থাকে না, সেটা বোঝাবে কে? এই মাত্রাটা মাপার দায়িত্বটা কার, বলুন তো! গজফিতেটা ঠিক কার কাছে থাকে? যে ক্ষোভ দেখায় নাকি যে ক্ষোভ দেখে? নাকি তৃতীয় কোনও ব্যক্তি? সমাজের সবাই আপনারা মাত্রা মাপার মাতব্বর হয়ে গেলে চলবে কী করে বলুন। মানুষকে একটু নিজের মতো নিজের মত প্রকাশ করতে দিন। আপনার মাথায় ডাণ্ডা যতক্ষণ না মারছি, অর্থাৎ ভায়োলেন্স যতক্ষণ না করছি, ততক্ষণ আমাকে সইতে শিখুন।

২. সেই সাক্ষাৎকারে আপনি একটি প্রসঙ্গ তুলেছিলেন যা তার আগে কেউ জানতো না। আরও বেশি মানুষের জানা উচিত বলেই আমি সেই প্রসঙ্গটি আর একবার এখানে উত্থাপন করতে চাই। আপনি জানিয়েছিলেন যে আপনি যে শুধু মুসলিম মৌলবাদ বিরোধী তা নয়, আপনি সমস্ত ধরনের মৌলবাদের বিরোধী। যে কারণে গুজরাত দাঙ্গার পর পশ্চিমবঙ্গে হিন্দু মৌলবাদ বিরোধী যে সংগঠন তৈরি হয় তাতে আপনি এককালীন বেশ কিছু টাকা দিয়েছিলেন। আপনি ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন এই বলে যে শঙ্খ ঘোষ সব কিছু জানা সত্ত্বেও কেন এই কথা প্রকাশ্যে জানাননি। শঙ্ঘ ঘোষ পরে একটি চিঠিতে আপনার কথা স্বীকার করে জানিয়েছিলেন যে আপনি নিজেই ওই কথা প্রকাশ্যে জানাতে নিষেধ করেছিলেন। এ ব্যাপারে আপনি কী বলবেন?

উত্তর : আমি সব ধরনের ধর্মীয় মৌলবাদ বিরোধী সেটা আমার বই পড়লেই জানা যায়। এমন নয় যে আপনাকে দেওয়া গত সাক্ষাৎকারে ওই কথাটা আমি প্রথম জানিয়েছি।

এই ক্ষোভের কথাই তাহলে বলছিলেন! শুনুন, শঙ্খ ঘোষকে আমি বলেছিলাম যে, আমি যে টাকা দিলাম গুজরাতের উদ্বাস্তু মুসলমানদের জন্য, তা নিজের প্রচারের জন্য নয়, কিছু দান করে বড়াই করা আমি পছন্দ করি না। মানুষকে বরাবরই আমি নিভৃতেই সাহায্য করি, ঢোল পিটিয়ে করি না। শঙ্খ ঘোষকে বিনীতভাবে শুধু জানিয়েছিলাম, আমি ঢোলে বিশ্বাসী নই, আর ঢোলের শব্দও আমাকে একটু অপ্রতিভ করে। কিন্তু আমাকে যখন 'মুসলিম বিরোধী' অপবাদ দিয়ে হায়দারাবাদে শারীরিক আক্রমণ করা হলো, একটা বীভৎস মৃত্যু আমার প্রায় ছুঁই ছুঁই দূরত্বে ছিল, সেদিনই কলকাতায় ফিরে এলে আমাকে যখন ঘরবন্দি করলো সরকার, পার্ক সার্কাসের রাস্তায় কিছু পকেটমার নেমেছিল বলে মুসলিম বিরোধী অজুহাত তুলে যখন আমাকে রাজ্যছাড়া করলো, আর দিলি্লতেও আমাকে যখন নিরাপদ বাড়ির নাম করে একই রকম গৃহবন্দি করা হয়েছিল, প্রতিদিন চাপ দেওয়া হচ্ছিল দেশ ছাড়ার জন্য, মুসলমানরা রৈ রৈ করে ধেয়ে এসে আমাকে প্রায় ছিঁড়ে খেয়ে ফেলে এমন যখন রাজনৈতিক অবস্থা, সামনে মৃত্যু আর নির্বাসন, যে কোনওটিকে যখন আমার বেছে নিতে হবে, তখন শঙ্খ ঘোষ চুপচাপ বসে সবই দেখছিলেন, সবই জানছিলেন, শুধু একবার মুখ ফুটে কোথাও একবারের জন্য বলেননি যে, মুসলিমবিরোধী বলে যা প্রচার হচ্ছে আমার বিরুদ্ধে, তা সত্য নয়। শঙ্খ ঘোষ চুপ করে থাকাই শ্রেয় মনে করেছিলেন। দান করে নাম কেনার প্রচার, আর নির্বাসন বা মৃত্যু থেকে আমাকে বাঁচানোর প্রয়োজনে একটা সত্য প্রচার- এই দুই প্রচারের মধ্যের তফাতটা শঙ্খ ঘোষ জানেন না আমি বিশ্বাস করি না।

শঙ্খ ঘোষ সত্যকে সেদিন প্রকাশ করলে জানি না কতটা লাভ হতো। হয়তো খড়কুটোর মতোই মূল্যহীন হতো তাঁর বিবৃতি। তবে যেহেতু ওই দুঃসময়ে আমি হতাশার অতলে ডুবছিলাম, প্রাণপণে কিছু খড়কুটোই খুঁজছিলাম অাঁকড়ে বাঁচার জন্য।

যা হয়ে গেছে হয়ে গেছে। ছাড়ুন ওসব পুরোনো কথা। আমাকে পশ্চিমবঙ্গে থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। পুরো ভারতবর্ষ থেকেও বের করে দেওয়া হয়েছিলো। কয়েক বছর পর আবার অনুমতি পেয়েছি বটে দিলি্লতে থাকার, তবে পায়ের তলার মাটি এখনও বড় নড়বড়ে।

৩. আপনার বিড়াল মিনুকে নিয়ে চূর্ণী গাঙ্গুলী ছবি বানাচ্ছেন। যা আসলে আপনার জীবনের একটা অংশ। আপনার জীবন নিয়ে সরাসরি ছবি করলে অসুবিধে হতে পারে মনে করেই কি তা না করে মিনুকে নিয়ে ছবি করার কথা ভেবেছেন চূর্ণী?

উত্তর : চূর্ণী কী ভেবেছে সে তো আমি জানি না মশাই। মিনুকে নিয়ে কৌশিকের একটা স্ক্রিপ্টই তৈরি ছিল। কৌশিকেরই করার কথা ছিল ছবি। তবে এখন ওরা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কৌশিকের স্ক্রিপ্ট নিয়ে ছবি চূর্ণীই করবে। চূর্ণী এসেছিল মিনুকে দেখতে। মিনুও তো বেজায় খুশি। মিনু, আমার কেন যেন মনে হয়, বুঝতে পেরেছে যে, ওকে নিয়ে ছবি হচ্ছে। বেশ একটা নায়িকা নায়িকা ভাব করে ক'দিন হাঁটা চলা করলো। শুনুন বাপু, আমার জীবন নিয়ে ছবি করতে লোকের ভয় পাওয়ার কোনও তো কারণ দেখি না। যদি কেউ ভয় পায়, সে তার দুর্বল স্নায়ুর দোষ। ভয় পেলেই ভয় পাওয়া হয়, না পেলেই পাওয়া হয় না। যারা ভয় পায়, তারা আমার বেড়াল কেন, আমার বাড়ি থেকে তিরিশ মাইল দূরে যে ইঁদুরগুলো দৌড়াচ্ছে, সেই ইঁদুরগুলোর ছবি তুলতে গেলেও দেখবেন হাত কাঁপছে।

৪. মহেশ ভাট নাকি আপনার জীবন নিয়ে ছবি করার ইচ্ছের কথা জানিয়েছিলেন? সেটার কী হলো?

উত্তর : সেটার কী হলো সেটা মহেশ ভাটকেই না হয় জিজ্ঞেস করুন। আজ তেরো বছর আগে ঘোষণা করেছিলেন আমাকে নিয়ে ছবি বানাবেন। তারপর হয়তো ছবি বানানোর আইডিয়াটা মাথা থেকে একসময় ঝেড়েও ফেলেছিলেন। কী কারণ, কিছুই জানি না। আমি মনে করি, কোনও চিত্রপরিচালক কোনও একটা বিষয় নিয়ে ছবি বানানোর ইচ্ছের কথা বলতেই পারেন। পরে সেই ইচ্ছেটা তিনি পরিবর্তন করতেই পারেন। মত প্রকাশের যেমন অধিকার আছে, মত পরিবর্তনেরও মানুষের তেমন অধিকার আছে। তবে অবাক হয়েছি কিছুদিন আগে যখন তিনি পুরো অস্বীকার করে বসলেন যে আমাকে নিয়ে ছবি বানানোর কথা কস্মিনকালেও তিনি নাকি বলেননি। সবচেয়ে মজার বিষয়, ইন্টারনেটের দৌলতে পুরোনো কাসুন্দি বেশ ঘাঁটা যায়।

৫. আপনার ভূমিকায় যদি আপনাকে অভিনয় করতে বলা হয়, আপনি রাজি হবেন?

উত্তর : না। কারণ আমি অভিনয় করতে জানি না। যারা মিথ্যে কথা বলে তারা ভালো অভিনয় জানে। যেহেতু আমি মিথ্যে বলতে জানি না, আমাকে দিয়ে আর যাই হোক, ওই অভিনয়টা হবে না।

৬. মৌলবাদীদের ভয়ে শুধু রাজনৈতিক দলগুলো নয়, বিভিন্ন মিডিয়া হাউজ আপনাকে নিষিদ্ধ করেছে। তবে ইদানীং কিছু পত্রিকায় আপনার লেখা দেখতে পাচ্ছি। অবস্থাটা কি কিছুটা পাল্টেছে?

উত্তর : ব্যক্তিগত উদ্যোগে দু্'একজন ছাপোষা সাংবাদিক কোনওরকম নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করে আমার লেখা ছাপাচ্ছে মাঝে মাঝে। পাঠক এতে বিষম খুশি, গোগ্রাসে পড়ছে লেখা। কেন বঞ্চিত করা হচ্ছে এত পাঠককে! দুঃখ হয়। আসলে কী জানেন, ভয়টা একটা বিচ্ছিরি রোগ। এই রোগটা বাংলাতেই বেশি। একসময় বাংলায় সব নির্ভীক প্রতিবাদী বিপ্লবী মানুষ বাস করতেন। এই বাংলা এখন আর সেই বাংলা নেই। বাংলাটা এখন যেন কেমন ভীতুদের, আপোসকামীদের, সুবিধেবাদীদের, আদর্শহীনদের, বুদ্ধিহীনদের রাজ্য হয়ে উঠছে। এই বাংলাকে ভালোবেসে সেই সুদূর নির্বাসন থেকে একসময় সাত সমুদ্র তেরো নদী পেরিয়ে চলে এসেছিলাম, বড় ভালোবেসে বাসা বেঁধেছিলাম। সেই বাসা ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে বাংলার লোকেরা। সবচেয়ে বড় যে জিনিসটা আমার ভেঙেছে, সেটা মন। এখনও দুঃস্বপ্নের মতো সেই দিনগুলো!

৭. অনেক চিত্রপরিচালক নাকি আপনার গল্প বা উপন্যাস নিয়ে ছবি করতে গিয়ে নানাভাবে পিছিয়ে এসেছেন?

উত্তর : কোথাও নিশ্চয়ই তাঁদের সমস্যা হয়। কোথাও গিয়ে তারা হয়তো বাধা পান। কোথায় সেটা, এখনও জানি না। একটা ভুতুড়ে ব্যাপার এখানে আছে। পরিচালকরা আমার কাছে আসছেন। স্ক্রিপ্ট পড়িয়ে কনট্রাক্ট সই করে নিয়ে যাচ্ছেন। তারপর কী যে হয়, কোন খাদে যে তাদের ফেলে দেওয়া হয়, কে যে ফেলে দেয়, কে যে কী করে, তার কিছুই আমি জানি না। অনেককে শুধু অন্ধকারে হারিয়ে যেতে দেখেছি।

৮. পশ্চিমবঙ্গের অনেক কবি সাহিত্যিক চান না আপনার লেখা এখানে ছাপা হোক বা আপনি কলকাতায় স্থায়ীভাবে বাস করুন। এদের এরকম মনোভাবের কারণ কী বলে আপনি মনে করেন?

উত্তর : কেন চান না ওঁরা, সেটা ওঁদের জিজ্ঞেস করুন। আমি কী করে বলবো ওঁরা কেন চান না আমি কলকাতায় বাস করি বা কলকাতায় আমার লেখা ছাপা হোক। এক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় ছাড়া কেউ মুখ খুলে আমাকে বলেননি কলকাতা ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য। পুরো ২০০৭ সাল জুড়ে যখন পশ্চিমবঙ্গ সরকার আমাকে রাজ্য থেকে তাড়াবার জন্য প্রায় উন্মাদ হয়ে উঠেছিল, তখন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় একবার আমাকে বলেছিলেন, আমি যেন ভালোয় ভালোয় চলে যাই। আর, অন্য কার মনে কী ছিল বা আছে, সেটা তো আমি বলতে পারবো না। মনের কথা খুলে বললে তবেই না বুঝতে পারা যায় মনে কী আছে। না বললে বোঝাটা একটু কঠিন হয়ে পড়ে। কারণ, দেখা হলে সবাই তো হাসিমুখ করে সম্ভাষণই জানাতেন। মনে-এক-মুখে-আরেকদের নিয়ে চিরকালই আমার একটু সমস্যা হয়।

৯. আপনার জনপ্রিয়তাকে এঁরা ঈর্ষা করেন বলে মনে করেন?

উত্তর : আমি জানি না কেউ ঈর্ষা করেন কি না। তবে, সহকর্মীদের জনপ্রিয়তাকে একটু আধটু ঈর্ষা প্রায় সবাই করে। শুধু সাহিত্যের জগতে নয়, সব জগতেই। লেখাপড়ার জগতে, খেলাধুলার জগতে, নাটকের জগতে, সঙ্গীতের জগতে, শিল্পের জগতে, বাণিজ্যের জগতে। কোথায় ঈর্ষা নেই? ঈর্ষা থাকা তো ক্ষতিকর নয়। বরং ঈর্ষা থাকলে প্রতিযোগিতাটা থাকে, আরও ভালো কিছু লেখার, আরও ভালো কিছু করার আগ্রহ জন্মায়। খুব কম মানুষই বলে যে কাঁধটা দিচ্ছি, কাঁধের ওপর দাঁড়িয়ে তুমি একটু বড় হও। কিন্তু, ওর জনপ্রিয়তাকে ঈর্ষা করি, সুতরাং ওকে এ তল্লাটে আর চাই না, ওকে যে করেই পারো খতম করে দাও, এটা কোনও ভদ্রলোকের মীমাংসা নয়। এই মীমাংসা অতি দুর্বল চিত্তের, অতি নড়বড়ে স্নায়ুর, অতি ভঙ্গুর মনের লোকেরা করে। ওদের, মানে ওই ভীতু আর কুচুটে কুচক্রীদের দিয়ে ভালো সাহিত্য হওয়াটা মুশকিল। ওরা খালি মাঠে গোল দেওয়ার জন্য মুখিয়ে থাকে। বোঝেই না যে এতে কোনও বীরত্ব নেই।

১০. সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আপনি যে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেছেন, তাতে বাঙালির আবেগ ধাক্কা খাবে জেনেও আপনি ঝুঁকি নিয়েছেন। এতদিন বাদে এই অভিযোগ করা কি খুব জরুরি ছিল?

উত্তর : বাঙালির আবেগে ধাক্কা না দেওয়ার দায়িত্বটা আমাকে কে দিয়েছে? যে-ই দিক, কারও আবেগ বাঁচিয়ে চলা আমার কাজ নয়। বিশেষ করে সেই আবেগ, যে আবেগ সত্য শুনতে রাজি নয়। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় কিছুদিন ধরেই বলছিলেন, উনি নাকি বই ব্যানের বিরুদ্ধে। এটি সত্য নয়। আমার দ্বিখণ্ডিত ব্যান করার জন্য ২০০৩ সালে উনি অনেক লেখালেখি করেছেন, সাক্ষাৎকার দিয়েছেন, আমি সবিনয়ে তার ভুল ধরিয়ে দিলাম। তখনই কথায় কথায় ওই প্রসঙ্গ উঠলো, যৌন হয়রানিতে আমাকেও যে বাদ দেননি সেটা। শহরের সাহিত্য জগতে শুনেছি অনেকেই সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের অনেক কথাই জানে, কিন্তু সবাই নাকি চেপে যায়। কারণ উনি খুব নামী দামী মানুষ। নামী দামী মানুষেরা অন্যায় করলেও সেটাকে অন্যায় হিসেবে দেখতে নেই। আর পুরুষতান্ত্রিক সমাজ তো অহরহই বলছেই, 'পুরুষমানুষ তো, ওরকম তো একটু করবেই'। কিন্তু ওরকম করাটা যদি না মানি? তবে দোষটা আমার। পুরুষমানুষের অন্যায় করাটা অন্যায় নয়, তার অন্যায় না মানাটা আমার অন্যায়। এই সমাজের নামী দামী কারও বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করা মানে নিজেকে জেনে বুঝে শূলে চড়ানো।

এতদিন বাদে অভিযোগ করেছি কেন? ঠিক কতদিন বাদে অভিযোগ করলে সেটা ঠিক, আর কতদিন বাদে করলে বেঠিক, শুনি? আমি কি বাপু কোর্টে গিয়ে পিনাইল-ভ্যাজাইনাল-ধর্ষণের অভিযোগ করেছি যে আমাকে খুব দ্রুত অভিযোগটা করতে হবে কারণ ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য তৈরি থাকতে হবে, কিছুদিন বাদে হলে যে পরীক্ষাটা সম্ভব নয়? আমার বিনা অনুমতিতে আমাকে জাপটে ধরে আমার বুক খামচে ধরলেও তো যৌন হয়রানি হয়, নাকি হয় না? বিচ্ছিরি ঘটনাটা পুষে ছিলাম অনেকগুলো বছর। কোর্টেও যাইনি, কাগজেও যাইনি। সেদিন বই ব্যান নিয়ে ওই অনর্গল মিথ্যেটা যদি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় না বলতেন, তাহলে হয়তো হয়রানির কথাটা বলাই হতো না কখনও। কিছু লেখায় দুঃখ করে যেটুকু লিখেছিলাম, সেটুকুই থাকতো। এখন মনে হয়, বলে ভালোই করেছি। কোনও অস্বস্তি মনের মধ্যে পুষে রাখা ঠিক নয়। মহামানবের সম্মান পান, আর তলে তলে যে ওই কীর্তিগুলো ঘটান, তা জানুক মানুষ। মেয়েরা এবার মুখ খুলুক, অনেক তো মুখ বুজে থাকা হলো, আর কত! বাংলাদেশের এক লম্পটের মুখোশ উন্মোচন করেছিলাম বলে সারা দেশ আমাকে অশ্লীল ভাষায় গালাগালি করেছে, পশ্চিমবঙ্গেও একই ঘটনা ঘটেছে। যেন সুনীল সম্পর্কে আমি একটি অক্ষর বানিয়ে বলেছি! যে হয়রানির শিকার হয়েছে, তাকে অসম্মান করে, অপমান করে, যে হয়রানি করেছে তাকে মাথায় তুলে সম্মান দেখিয়ে এরা আবারও প্রমাণ করেছে যে এরা কতটা নীচ, কতটা অসভ্য, কতটা নারীবিদ্বেষী!

শুনেছি বাদল বসু 'বইয়ের দেশ'-এ সুনীলকে মহামানব হিসেবে বর্ণনা করতে গিয়ে আমাকে যাচ্ছেতাই ভাষায় গালাগালি করেছেন, আমার সম্পর্কে বস্তা বস্তা মিথ্যে ঢেলেছেন। সুনীলের প্রশংসা করতে গেলে তাঁর লেখা নিয়ে কথা বলুন, তাঁর জীবনের ভালো ভালো দিক নিয়ে কথা বলুন, তাতেই তো তাঁকে বড় করা যায়। আমাকে ছোট করে তাঁকে বড় করতে হবে কেন? এত ছলচাতুরী আর মিথ্যের আশ্রয় নিতে হবে কেন? বাদল বসু সুনীলকে আমার চেয়েও বেশি চেনেন। হেনস্থা হয়রানির খবর তাঁর অজানা নয়। কিন্তু পুরুষ পুরুষেরই পক্ষ নেবে। যত বড় লেখকই হই না কেন, আমি তখন কেবলই 'মেয়েমানুষ'। 'মেয়েমানুষ' মুখ খুললে ওঁরা সকলেই খুব রাগ করেন।

১১. এতটা জনপ্রিয়তা আপনার প্রাপ্য ছিল না। মৌলবাদীরা আপনাকে জনপ্রিয় করেছে। কী বলবেন?

উত্তর : একেবারে উল্টো। আমি খুব জনপ্রিয় লেখক ছিলাম বলে মৌলবাদীরা আমার কলম কেড়ে নিতে চেয়েছে বা আমার লেখাকে বন্ধ করতে চেয়েছে বা আমাকে প্রাণে মেরে ফেলতে চেয়েছে। অজনপ্রিয় অনামী লেখককে নিয়ে ওরা মাথা ঘামায় না। ভয় জনপ্রিয় লেখককে, যদি সে লেখক মৌলবাদবিরোধী লেখা লেখে, যে দুটো পিলার মৌলবাদীরা সজোরে অাঁকড়ে ধরে রাখে, ধর্ম আর পুরুষতন্ত্র, সে দুটোতে যদি ফাটল ধরিয়ে দেওয়ার মতো আঘাত করতে থাকে লেখা দিয়ে। আমি যখন বিরানব্বই সালে প্রথম আনন্দ পুরস্কার পাই, তখনও মৌলবাদীরা আমার বিরুদ্ধে রাস্তায় নামেনি বা ফতোয়া জারি করেনি। এর দেড় দুবছর পর করেছে। দেশে বিদেশে জনপ্রিয় হয়ে উঠছি, এ তাদের আর সয়নি। মৌলবাদীদের কারণে আমার জনপ্রিয়তা শুধু নষ্টই হয়নি, বরং আকাশ থেকে পাতালে নেমেছে। ওদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার আমার বিরুদ্ধে মামলা করেছে, আমাকে দেশ থেকে তাড়িয়েছে, আর ওদিকে আমাকে তাড়িয়েও মৌলবাদীরা শান্ত হয়নি, তাদের অসংখ্য প্রচার মিডিয়া নিরন্তর ব্যস্ত থেকেছে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে কুৎসা রটাতে, আমার প্রতি মানুষের ঘৃণার উদ্রেক করতে, মানুষের মন থেকে আমাকে মুছে ফেলতে, আমার বই-পাঠ থেকে পাঠককে বিরত রাখতে। বছরের পর বছর ওরা মগজধোলাই করেছে সাধারণ মানুষের। আমি নাকি বিজেপির টাকা নিয়ে লজ্জা লিখেছি। আমার নাকি চরিত্র ভালো নয়। একটা অল্প শিক্ষিত, ধর্মভীরু, কুসংস্কারাচ্ছন্ন নারীবিরোধী সমাজে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার জাদুর মতো কাজ করেছে। এক এক করে আমার বই নিষিদ্ধ হয়েছে। প্রকাশকেরা বই প্রকাশ বন্ধ করে দিয়েছে। পত্র পত্রিকা আমার লেখা ছাপানো বন্ধ করে দিয়েছে। যে লেখক সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং নন্দিত লেখক ছিল বাংলাদেশে, কেবল মৌলবাদী, ধর্মবাদী, নারীবিরোধী পুরুষতান্ত্রিকদের অপপ্রচারে সে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই একটা নিন্দিত আর নিষিদ্ধ বস্তুতে পরিণত হলো। এত বিরোধিতা, এক বিদ্বেষ, এত আক্রমণ, এত নিন্দা, এত কুৎসা, এত অপপ্রচার, এত নিষ্ঠুরতা, এত অসভ্যতা, এত রূঢ়তা, এত অন্যায়, এত অবিচার আমার প্রাপ্য ছিল না।

১২. অন্যান্য দেশে আপনি লেখক হিসেবে কেমন সম্মান পেয়ে থাকেন?

উত্তর : লেখক হিসেবে সম্মান কোথাও প্রচণ্ড পরিমাণে পাই। কোথাও কিছুটা কম। কোথাও মাঝারি ধরনের। কোথাও চলনসই। কিন্তু কোনও দেশ বাংলার মতো, বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গের মতো, এত অপমান আমাকে করে না। পৃথিবীর অন্য কোনও দেশ বা রাজ্য থেকে আমাকে তাড়িয়ে দেওয়া হয় না। কিছু উগ্রপন্থী ধর্মবাদীদের মতের সঙ্গে আমার মত মেলে না বলে আমাকে জন্মের মতো চোখের আড়াল করা হয় না, নির্বাসনদণ্ড দেওয়া হয় না। এত অবিবেচক আর এত অসহিষ্ণু হতে কোনও দেশকেই দেখিনি। এত ভয়ংকর নির্মমতা কোনও দেশ আমার সঙ্গে কখনও করেনি।

১৩. অন্য দেশ থেকে উল্লেখ করার মতো পুরস্কার।

উত্তর : আছে বেশ কিছু। আমার আত্মজীবনী পড়ে দেখুন। পাবেন। নয়তো যেসব বইয়ের জ্যাকেটে পরিচিতি আছে. পড়ে নিন, ওতে লিস্ট আছে।

১৪. মৌলবাদীদের চাপে অনেক শিল্পী সাহিত্যিক দেশছাড়া হয়েছেন। মকবুল ফিদা হোসেন, সালমান রুশদি, আয়ান হিরসি আলী প্রমুখ। আপনি নিজেকে এঁদের থেকে আলাদা মনে করেন?

উত্তর : কতগুলো নাম দেখি তোতা পাখির মতো শুধু মুখস্থই করেছেন। এঁদের ইতিহাস জানার চেষ্টা করেছেন বলে তো মনে হচ্ছে না। যাঁদের নাম উল্লেখ করেছেন, তাঁদের মধ্যে এক মকবুল ফিদা হোসেন ছাড়া মৌলবাদীদের চাপে আর কেউ দেশ ছাড়েননি। সালমান রুশদি তাঁর দশ বছর বয়স থেকে ইংল্যান্ডে থাকেন। ইংল্যান্ডই তাঁর দেশ। মৌলবাদীদের চাপে তাঁকে ইংল্যান্ড ছাড়তে হয়নি। বরং তিনি ওখানে প্রচুর নিরাপত্তা রক্ষী পেয়েছেন। আয়ান হিরসি আলী সোমালিয়া থেকে এসে নেদারল্যান্ডে থেকেছেন, ওদেশের নাগরিক হয়েছেন, মৌলবাদীরা হুমকি দেওয়ার পর নেদারল্যান্ডেই ছিলেন, ওখানেই নিরাপত্তা পেতেন। একসময় পুরোনা ফাইল পত্র ঘেঁটে একজন ডাচ সংসদ সদস্য বের করলেন যে নেদারল্যান্ডে আশ্রয় চাওয়ার সময় আয়ান নিজের সম্পর্কে মিথ্যে তথ্য দিয়েছিলেন, মিথ্যে তথ্য দেওয়ার কারণে আয়ানের পার্লামেন্টের সদস্য পদটা চলে যায়। তখন তিনি আমেরিকান এন্টারপ্রাইজ নামের এক ডানপন্থী সংগঠনের আমন্ত্রণ পেয়ে আমেরিকায় পাড়ি দেন, ওখানেই স্কলার হিসেবে আছেন। আমার নির্বাসন ওঁদের চেয়ে আলাদা। মকবুল ফিদা হোসেনকে ভারত সরকার দেশ থেকে বের করে দেয়নি। আমাকে বাংলাদেশ সরকার দেশ থেকে বের করে দিয়েছে এবং কুড়ি বছর হলো, আজো দেশে ফিরতে দিচ্ছে না। মকবুল ফিদা হোসেনকে উল্টো ভারত সরকার অনেক অনুরোধ করেছিল দেশে ফেরার জন্য। কিন্তু তিনি কাতারের নাগরিকত্ব নিয়েছিলেন, দেশে ফেরেননি।

১৫. আপনি বিয়ে বিরোধী। অথচ আপনি আগে বিয়ে করেছেন। তখন বোঝেননি বিয়ে নামক প্রতিষ্ঠানের অসারতার কথা?

উত্তর : না। তখন বুঝিনি। তখন বুঝিনি বলেই তো বিয়ে করেছিলাম। আমি কি জন্ম থেকেই একজন সর্বজ্ঞানী মানুষ? আমি তো ঠকতে ঠকতে, সইতে সইতে, ভুগতে ভুগতে যা শেখার শিখেছি। অন্যের জীবন থেকেও শেখা যায়, অন্যের অভিজ্ঞতা থেকেও আমরা অনেক শিখি। তবে নিজের জীবনের অভিজ্ঞতার সঙ্গে তার কোনও তুলনা হয় না। বিয়ে করেছিলাম বলেই তো বিয়ে নামক প্রতিষ্ঠানের অসারতা বুঝেছি। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে বিয়েটা যে ভীষণ কুৎসিত একটা প্রভু দাসীর সম্পর্ককে মুখ বুজে বয়ে বেড়ানো, তা বিয়ে না করলে অত হাড়ে হাড়ে বুঝতে পারতাম না। যে সমাজে নারীর সমানাধিকার আছে, সে সমাজে বিয়েটা কেউ করতে চাইলে করতেই পারে।

১৬. সংসার বলতে কী বোঝেন?

উত্তর : সংসার বলতে সংসারই বুঝি। চিরকাল আমি আমার একার সংসারই করেছি। আমার এখনকার সংসারটি আমার আর আমার বেড়ালের। আমি খুব সংসারী মানুষ। বাড়িঘর গোছানো, সাজানো, নিজে বাজার করা, বাগান করা, রান্নাবান্না করা, বন্ধুদের নেমন্তন্ন করা, হৈ চৈ করে খাওয়া, আড্ডা দেওয়া, এসব তো আছেই, আর যখন একা, নীরবতা শুয়ে থাকে পাশে, তখন ভাবি, লিখি, পড়ি। এই সময়টা আমার খুব প্রিয়। প্রিয় আরও এ কারণে যে, আমার ভাবার, লেখার, পড়ার জন্য যে নৈঃশব্দ প্রয়োজন, যে নির্জনতা প্রয়োজন তা আমি চমৎকার পেয়ে যাই। কেউ চিৎকার করার নেই, কোনও কিছু দাবি করার, আদেশ করার, উপদেশ দেওয়ার, ধমক দেওয়ার কেউ নেই। দাদাগিরি বা স্বামীগিরি দেখানোর কেউ নেই এখানে। এই না থাকাটা সংসারে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।

সংসারটা হচ্ছে স্বাধীনতা আর নিরাপত্তা। এ দুটো যদি না থাকে, তবে সে সংসার সংসার নয়। শুধুই সন্ত্রাস।

১৭. শাহবাগ আন্দোলনকে কী চোখে দেখেন?

উত্তর : বিশাল এক ব্যাপার ঘটিয়েছে বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম। আমি তো রীতিমত মুগ্ধ। নো কান্ট্রি ফর উইমেন নামে যে ফ্রিথট ব্লগ লিখি আমি, ওতে অন্তত পনেরো ষোলোটা ব্লগ লিখেছি বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সেকুলার আন্দোলন নিয়ে। বেশ কিছু বক্তৃতা ছিল আমার গত দুতিন মাসে, ইওরোপিয়ান পার্লামেন্টে, বেলজিয়ান পার্লামেন্টে, কানাডায়, ফ্রান্সে, আয়ারল্যান্ডে- এই আন্দোলন নিয়ে বলেছি। দেশ নিয়ে হতাশা ছাড়া আর কিছুই তো ছিল না। শাহবাগ একটু আশা জাগিয়েছে। একটা ট্রেন্ড তৈরি তো হলো অন্তত। মানুষ দেখিয়ে দিল প্রয়োজনে লক্ষ লক্ষ লোক পথে নেমে ধর্মীয় বর্বরতার প্রতিবাদ করতে জানে। এর আগে তো মুখ বুজে থাকাটাই ছিল নিয়ম। কথা না বলাটাই ছিল রীতি। ভয় পাওয়াটাই ছিল সংস্কৃতি।

তবে শাহবাগ আন্দোলনের সবকিছুকেই যে একশয় একশ নম্বর দিয়েছি, তা নয়। আমি মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে। মৃত্যুদণ্ডের কোনও দাবি আমি মেনে নিইনি। তবে মৌলবাদবিরোধী ওদের যে আন্দোলন, তা ভীষণভাবে সমর্থন করেছি।

১৮. আগামী প্রজন্মের কাছে কী হিসেবে চিহ্নিত হতে আপনার ভালো লাগবে? একজন লেখক হিসেবে নাকি একজন অ্যাকটিভিস্ট হিসেবে?

উত্তর : আগামী প্রজন্ম তো ভেড়া নয় যে সবাই এক পথেই যাবে। কারও কবি হিসেবে, কারও লেখক হিসেবে আমাকে ভালো লাগতে পারে, কারও অ্যাকটিভিস্ট হিসেবে, কারও শুধু মানুষটাকে, তার আপোসহীন সংগ্রামটাকে হয়তো ভালো লাগবে, কারও কারও ভালো লাগবে তার সততা আর নিষ্ঠাকে। কত মানুষ কত রকমভাবে চিহ্নিত করতে পারে আমাকে। কোনও লেখকই নয়, বলবে কেউ। কেউ কেউ চিহ্নিত করবে নাস্তিক হিসেবে। অথবা, হয়তো ভুলেই যাবে আমাকে। কী হবে ভবিষ্যতে তা নিয়ে আমি চিন্তিত নই মোটেও। আমাকে মনে রাখুক বা আমাকে ভুলে যাক, একই কথা। কবে যেন একটা কবিতা লিখেছিলাম, অমরত্ব নামে। অমরত্ব নেবে? অজস্র অমরত্ব আমার পড়ার টেবিলে, বইয়ের আলমারিতে, বিছানায়, বালিশের তলায়... ঘর থেকে বেরোলে অমরত্ব আমার ব্যাগে, আমার প্যান্টের পকেটে, আমার শার্টে, চুলে... কী করে কবে যে অমরত্ব আমার খোঁজ পেয়েছিল! অমরত্ব নেবে নাও, যত খুশি। অমরত্বের কাঁটা এমন বেঁধে যে সারারাত ঘুমোতে পারি না। যতটুকু আছে সব কেউ নিয়ে নিলে কিছুটা নিস্তার পাই। অমরত্বে বিশ্বাস নেই আমার।

লেখক : নির্বাসিত লেখিকা

 http://www.bd-pratidin.com/editorial/2014/11/20/44659


No comments:

मैं नास्तिक क्यों हूं# Necessity of Atheism#!Genetics Bharat Teertha

হে মোর চিত্ত, Prey for Humanity!

मनुस्मृति नस्ली राजकाज राजनीति में OBC Trump Card और जयभीम कामरेड

Gorkhaland again?আত্মঘাতী বাঙালি আবার বিভাজন বিপর্যয়ের মুখোমুখি!

हिंदुत्व की राजनीति का मुकाबला हिंदुत्व की राजनीति से नहीं किया जा सकता।

In conversation with Palash Biswas

Palash Biswas On Unique Identity No1.mpg

Save the Universities!

RSS might replace Gandhi with Ambedkar on currency notes!

जैसे जर्मनी में सिर्फ हिटलर को बोलने की आजादी थी,आज सिर्फ मंकी बातों की आजादी है।

#BEEFGATEঅন্ধকার বৃত্তান্তঃ হত্যার রাজনীতি

अलविदा पत्रकारिता,अब कोई प्रतिक्रिया नहीं! पलाश विश्वास

ভালোবাসার মুখ,প্রতিবাদের মুখ মন্দাক্রান্তার পাশে আছি,যে মেয়েটি আজও লিখতে পারছেঃ আমাক ধর্ষণ করবে?

Palash Biswas on BAMCEF UNIFICATION!

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS ON NEPALI SENTIMENT, GORKHALAND, KUMAON AND GARHWAL ETC.and BAMCEF UNIFICATION! Published on Mar 19, 2013 The Himalayan Voice Cambridge, Massachusetts United States of America

BAMCEF UNIFICATION CONFERENCE 7

Published on 10 Mar 2013 ALL INDIA BAMCEF UNIFICATION CONFERENCE HELD AT Dr.B. R. AMBEDKAR BHAVAN,DADAR,MUMBAI ON 2ND AND 3RD MARCH 2013. Mr.PALASH BISWAS (JOURNALIST -KOLKATA) DELIVERING HER SPEECH. http://www.youtube.com/watch?v=oLL-n6MrcoM http://youtu.be/oLL-n6MrcoM

Imminent Massive earthquake in the Himalayas

Palash Biswas on Citizenship Amendment Act

Mr. PALASH BISWAS DELIVERING SPEECH AT BAMCEF PROGRAM AT NAGPUR ON 17 & 18 SEPTEMBER 2003 Sub:- CITIZENSHIP AMENDMENT ACT 2003 http://youtu.be/zGDfsLzxTXo

Tweet Please

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS BLASTS INDIANS THAT CLAIM BUDDHA WAS BORN IN INDIA

THE HIMALAYAN TALK: INDIAN GOVERNMENT FOOD SECURITY PROGRAM RISKIER

http://youtu.be/NrcmNEjaN8c The government of India has announced food security program ahead of elections in 2014. We discussed the issue with Palash Biswas in Kolkata today. http://youtu.be/NrcmNEjaN8c Ahead of Elections, India's Cabinet Approves Food Security Program ______________________________________________________ By JIM YARDLEY http://india.blogs.nytimes.com/2013/07/04/indias-cabinet-passes-food-security-law/

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS TALKS AGAINST CASTEIST HEGEMONY IN SOUTH ASIA

THE HIMALAYAN VOICE: PALASH BISWAS DISCUSSES RAM MANDIR

Published on 10 Apr 2013 Palash Biswas spoke to us from Kolkota and shared his views on Visho Hindu Parashid's programme from tomorrow ( April 11, 2013) to build Ram Mandir in disputed Ayodhya. http://www.youtube.com/watch?v=77cZuBunAGk

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS LASHES OUT KATHMANDU INT'L 'MULVASI' CONFERENCE

अहिले भर्खर कोलकता भारतमा हामीले पलाश विश्वाससंग काठमाडौँमा आज भै रहेको अन्तर्राष्ट्रिय मूलवासी सम्मेलनको बारेमा कुराकानी गर्यौ । उहाले भन्नु भयो सो सम्मेलन 'नेपालको आदिवासी जनजातिहरुको आन्दोलनलाई कम्जोर बनाउने षडयन्त्र हो।' http://youtu.be/j8GXlmSBbbk

THE HIMALAYAN DISASTER: TRANSNATIONAL DISASTER MANAGEMENT MECHANISM A MUST

We talked with Palash Biswas, an editor for Indian Express in Kolkata today also. He urged that there must a transnational disaster management mechanism to avert such scale disaster in the Himalayas. http://youtu.be/7IzWUpRECJM

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS CRITICAL OF BAMCEF LEADERSHIP

[Palash Biswas, one of the BAMCEF leaders and editors for Indian Express spoke to us from Kolkata today and criticized BAMCEF leadership in New Delhi, which according to him, is messing up with Nepalese indigenous peoples also. He also flayed MP Jay Narayan Prasad Nishad, who recently offered a Puja in his New Delhi home for Narendra Modi's victory in 2014.]

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS CRITICIZES GOVT FOR WORLD`S BIGGEST BLACK OUT

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS CRITICIZES GOVT FOR WORLD`S BIGGEST BLACK OUT

THE HIMALAYAN TALK: PALSH BISWAS FLAYS SOUTH ASIAN GOVERNM

Palash Biswas, lashed out those 1% people in the government in New Delhi for failure of delivery and creating hosts of problems everywhere in South Asia. http://youtu.be/lD2_V7CB2Is

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS LASHES OUT KATHMANDU INT'L 'MULVASI' CONFERENCE

अहिले भर्खर कोलकता भारतमा हामीले पलाश विश्वाससंग काठमाडौँमा आज भै रहेको अन्तर्राष्ट्रिय मूलवासी सम्मेलनको बारेमा कुराकानी गर्यौ । उहाले भन्नु भयो सो सम्मेलन 'नेपालको आदिवासी जनजातिहरुको आन्दोलनलाई कम्जोर बनाउने षडयन्त्र हो।' http://youtu.be/j8GXlmSBbbk