Welcome

Website counter
website hit counter
website hit counters

Thursday, August 18, 2011

মা, মাটি, মাফিয়া: জমি, বাজার ও রাষ্ট্র সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের গরম হাওয়ায় তৃণমূলের নেতারা মসনদ দখল করে থাকতে পারেন, কিন্তু সময় এসেছে তাঁদের জমি অধিগ্রহণ নিয়ে ঠান্ডা মাথায় একটু নতুন ভাবে চিন্তা করার। প্রণব বর্ধন

মা, মাটি, মাফিয়া: জমি, বাজার ও রাষ্ট্র
শ্চিমবঙ্গে বাম রাজত্বের পতনের নানাবিধ কারণের মধ্যে দুটিকে প্রধান বলে মনে হয়, যা বাম দলে দিল্লির শীর্ষনেতাদের নির্বোধ গোঁড়ামির চেয়েও অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এক, দলতন্ত্রের প্রতাপ আর তোলাবাজির দৌরাত্ম্যে সাধারণ মানুষ তিতিবিরক্ত হয়ে পড়েছিলেন। দুই, জমি অধিগ্রহণের ব্যাপারে বাম শাসকদের প্রতি জনরোষ। এই শেষোক্ত জনরোষ নিয়ে ভেবে দেখলে চারটি বিভিন্ন জিনিসের কথা প্রথমেই মনে আসে। 
ক) অধিগৃহীত জমির জন্য বামফ্রন্ট সরকার যে ক্ষতিপূরণ দিচ্ছিল তা অধিগ্রহণ সংক্রান্ত ঔপনিবেশিক আইনের তুলনায় কিছু বেশি হলেও আজকের দিনে অনেক চাষির পক্ষে একদমই যথেষ্ট নয়।
খ) সাধারণ মানুষের সঙ্গে ধৈর্য ধরে আলাপ-আলোচনার পরিবর্তে শাসক দলের চেলাদের ও তাদের তাঁবেদার পুলিশের অত্যধিক ও এলোমেলো বলপ্রয়োগ।
গ) যদিও বিশ্বময় রটে গেছে যে, নন্দীগ্রাম জমি অধিগ্রহণের সংগ্রামের এক রক্তাক্ত মাইলফলক, আসলে কিন্তু সরকার ওখানে অনেক আগেই ঘোষণা করে দিয়েছিল যে কোনও জমি অধিগ্রহণ করা যাবে না। গ্রাম বাংলায় দুই দলের গুন্ডাদের এলাকা দখলের যে রক্তাক্ত লড়াই চলছে কিছু দিন ধরে, নন্দীগ্রাম বরং তার ইতিহাসে একটি মাইলফলক। রাজ্যব্যাপী এই গুন্ডাবাজি বন্ধ করার ব্যাপারে বামফ্রন্ট সরকারের চূড়ান্ত অক্ষমতা জনরোষের একটি বড় কারণ।
ঘ) নন্দীগ্রামের মতো নানা অঞ্চলে, যেখানে শিক্ষার অনগ্রসরতায় সরকারের অবহেলা প্রকট, সেখানে চাষি পরিবার সঙ্গত কারণেই ভাবতে পারে যে, নতুন কারখানা হলেও তাতে কাজ পাওয়ার মতো ন্যূনতম যোগ্যতা তাদের ছেলেমেয়েদের নেই। তাই জমি হারাবার ভয় তাদের খুব বেশি।
জনরোষের এই বিশ্লেষণে যদি কিছুমাত্র যথার্থতা থাকে তবে আমি বলব যে, বাম দলের কিছু গোষ্ঠী এবং বিশেষ করে শাসক তৃণমূল জমি অধিগ্রহণের ব্যাপারে নির্বাচনের ফলাফল থেকে ভুল শিক্ষা নিচ্ছে, এবং তার ফলে এখন পশ্চিমবঙ্গের অর্থনৈতিক জগতে বড় রকমের ক্ষতির সম্ভাবনা। ঠিক ভাবে জমি অধিগ্রহণ করলে মানুষের আপত্তি অনেক কম হবে।
বড় প্রশ্ন। ১৮৯৪ সালের জমি অধিগ্রহণ নীতি রদ করার দাবিতে। দিল্লি, ২০১১
ঘটনা এই যে, জনসংখ্যার চাপে পশ্চিমবাংলার কৃষিতে মাথাপিছু আয় যে ভাবে কমছে তাতে অনেক জায়গাতেই চাষ করে ন্যূনতম জীবিকা নির্বাহ করা আর সম্ভব হচ্ছে না। তথাকথিত উর্বর জমিতেও নয়। সমীক্ষার তথ্যে দেখা যাচ্ছে যে, চাষি পরিবারের ছেলেমেয়েদের শতকরা চুরাশি জন আর চাষের কাজে থাকতে চাইছে না। মা-মাটি-মানুষের আবেগ দিয়ে কত দিন এদের আটকে রাখা যাবে? উৎপাদন শক্তি যেখানে বেশি, সে সব জায়গায় যথেষ্ট কাজের ব্যবস্থা না-করতে পারলে যুব সম্প্রদায় বিপথে চলে যেতে বাধ্য। গুন্ডাবাজি আর তোলাবাজি বাড়বেই। বাম বা তৃণমূল, যে-ই সিংহাসনে থাকুক।
আমাদের এই ঘনবসতির রাজ্যে শিল্প বা পরিষেবার ক্ষেত্রে কাজের সুযোগ বাড়াতে হলে কৃষি থেকে কিছু জমি নিতেই হবে। যে স্বল্প জমি পড়ে আছে তার অধিকাংশ হয় মামলা-মকদ্দমায় জর্জরিত অথবা সেখানে পরিকাঠামো ব্যবস্থা এত খারাপ যে ব্যবসায়ীরা সহজে যেতে চাইবে না। কৃষিজমি নেওয়ার ব্যাপারে তৃণমূল সরকার গোঁ ধরেছে যে ব্যবসায়ীকে জমি সরাসরি বাজারের মারফত কিনতে হবে, সরকার অধিগ্রহণ করবে না। জমির বাজার অন্য পাঁচটা বাজারের মতো নয়। এখানে ফাটকাবাজরা জমির দাম যখন বাড়বে তখন দাঁও মারার আশায় অনেক আগে থেকেই অল্প দামে কৃষকদের কাছ থেকে জমি কিনে রাখে। আর মাফিয়ার লোক ভয় দেখিয়ে জবরদস্তি করে জমি হস্তগত করে। কৃষককে এর থেকে রক্ষা করতে এবং জমিকে শিল্পযোগ্য করার ন্যূনতম ব্যবস্থা (যেমন বিদ্যুৎ পরিবহণে) তৈরি করতে সরকারকে মাঠে নামতেই হবে। শুধু বাজারের উপর ছেড়ে দিলেই চলবে না। কাগজে পড়লাম, মুখ্যমন্ত্রীর জমি বিষয়ক উপদেষ্টা দেবব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় নাকি বলেছেন যে, বিক্রীত জমির একটা ন্যূনতম মূল্য বেঁধে দিতে চেষ্টা করবেন। কিন্তু তা করে কি জমির বাজারের ফাটকাবাজ আর মাফিয়াদের চাষিকে ঠকানো বা জুলুমবাজি বন্ধ করতে পারবেন? ওরা তো অনেক আগে জমি কিনে রাখবে, ওঁরা কি আগে থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলের জন্য বিভিন্ন রকমের ন্যূনতম মূল্য বেঁধে রাখবেন? তার পর মাফিয়ার লোকেরা ওই দাম নিশ্চিত দিয়েছিল কি না, তার খোঁজে পুলিশ পাঠাবেন? আর সেই পুলিশ সৎ ভাবে যাচাই করে দেখবে দলিলে লিখিত দাম কৃষক সত্যিই পেয়েছিল কি না?
মাফিয়ার কথা যদি ছেড়েও দিই, যে বাজারে এক দিকে শক্তিশালী ধনপতি কর্পোরেট ক্রেতা আর অন্য দিকে, বিক্রেতা হাজার হাজার ক্ষুদ্র চাষি সেই বাজারে দর কষাকষিতে পাল্লা কোন দিকে ঝুঁকবে তা সহজেই অনুমেয়।
ধনপতি ক্রেতার দিক থেকেও এই বাজারের প্রক্রিয়ায় একটা বড় অসুবিধা আছে, হাজার হাজার বিক্রেতার সঙ্গে আলাদা করে দর কষাকষি করা আর চুক্তি-কাগজপত্রের বন্দোবস্ত করা প্রচুর ঝামেলা ও সময়সাপেক্ষ।
তাই সেই ধনপতি অন্য প্রদেশে, যেখানে কম ঘনবসতি বা অন্য কারণে ক্ষুদ্র চাষির ভিড় কম বা সেখানকার রাজ্য সরকার সাগ্রহে জমি অধিগ্রহণ করে দেবে (যেমন গুজরাতে), সেখানে চলে যাবেন। মনে রাখতে হবে যে, অন্য অনেক প্রদেশের তুলনায় নানা কারণে পশ্চিমবঙ্গে নতুন শিল্পায়নে এমনিতেই অনেক দেরি হয়ে গেছে। তার উপর আছে আমাদের দুর্বল পরিকাঠামো ও প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা এবং ঘনবসতি। এই অবস্থায় শিল্পপতিদের আকর্ষণ করার উপকরণ এখানে অপেক্ষাকৃত কম। জমির ব্যাপারে তৃণমূল সরকার বাজারের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকলে উল্লিখিত কারণে ওই আকর্ষণ আরও কমে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা।
এই প্রাদেশিক প্রতিযোগিতার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য সরকারকে আর একটা জিনিসও মাথায় রাখতে হবে। একাধিক বার এই সরকারকে বলতে শুনেছি যে, কেন্দ্রে নতুন জমি অধিগ্রহণের আইন যাই হোক না কেন, আমরা রাজ্যে আমাদের স্বায়ত্তশাসনের সঙ্গত অধিকার খাটিয়ে রাজ্যের জন্য আরও কৃষক-বান্ধব আইন করব। কিন্তু এ ব্যাপারে স্বায়ত্তশাসনের অধিকার নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে ওই প্রাদেশিক প্রতিযোগিতায় আমাদের হেরে যাওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার জমি অধিগ্রহণ ও পুনর্বাসনের একটি নতুন আইনের খসড়া তৈরি করে রাজ্য সরকারকে দেখিয়েছে। এই খসড়াটি যথেষ্ট কৃষক-বান্ধব। জমি অধিগ্রহণ করলে কৃষককে জমির বাজার দরের অন্তত ছয় গুণ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। তার উপর পুনর্বাসনের জন্য দু'হাজার টাকা করে মাসিক ভাতা দেওয়া হবে কুড়ি বছর ধরে। এই মাসিক ভাতা জমির উপর নির্ভরশীল অন্যদেরও (অর্থাৎ বর্গাদার, খেতমজুর ইত্যাদি সবাইকে) দেওয়া হবে। এই সবাইকে ধরে তার শতকরা অন্তত আশি ভাগ লোকের লিখিত সম্মতি ছাড়া জমি অধিগ্রহণ করা যাবে না, ইত্যাদি। এই কেন্দ্রীয় নিয়ম চালু হওয়ার পর যদি আবার আমাদের সরকার বায়না ধরে বসে যে, এই নিয়ম থেকে বিচ্যুতির অধিকার সরকারের থাকবে (কেননা সংবিধানে জমির ব্যাপার প্রধানত রাজ্যের হাতে দেওয়া হয়েছে), তা হলে আবার রাজ্যগুলির মধ্যে বিচ্যুতির মাত্রা নিয়ে প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যেতে পারে। তাতে অপেক্ষাকৃত সমৃদ্ধ রাজ্যগুলির সঙ্গে আমাদের পাল্লা দেওয়া কঠিন হবে। সে দিক দিয়ে ভাবলে কেন্দ্রীয় নিয়মের সমযোজ্যতাই আমাদের পক্ষে সুবিধাজনক। প্রস্তাবিত কেন্দ্রীয় আইনটি সম্পর্কে আমার কিছু সমালোচনা আছে, তা নিয়ে অন্যত্র লিখেছি।
জমি হস্তান্তরের ব্যাপারে আমাদের ত্রি-সঙ্কট। এক দিকে গরিব চাষিদের কথা ভেবে আমাদের কৃষক-বান্ধব হতে হবে, এ দিকে আবার শিল্পে যথেষ্ট কর্মসংস্থানের জন্য শিল্প-বান্ধব হতে হবে অন্য প্রদেশের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে। এত সব বান্ধবতার মাসুল হিসাবে প্রচুর অর্থসংস্থানের প্রয়োজন। অথচ আমাদের সরকারের অর্থ দফতরের ভাঁড়ে মা ভবানী। সরকারি চাকুরেদের মাইনে দিতেই হিমশিম অবস্থা। কেন্দ্রের কাছ থেকে ভিক্ষে করে কত দিন আর চলবে? এই অবস্থায় অর্থ সঙ্কুলানের ব্যাপারে নানা দিকের কথা চিন্তা করতে হবে। জমির প্রসঙ্গে তার একটা দিকের কথা বলি। কেন্দ্রীয় আইনে যে মাসিক ভাতার কথা বলা হচ্ছে, সেটার জন্য আমরা একটা পেনশন ফান্ডের কথা ভাবতে পারি। জমির দরের ব্যাপারেও অনুরূপ ভাবা যেতে পারে। কৃষক কৃষির কাজ থেকে অবসর নিচ্ছেন। তাঁর জন্য একটা মাসিক ভাতা আসবে ওই ফান্ড থেকে। আর যে কোম্পানি জমি কিনছে তার মূল্যের অংশ হিসাবে তার কাছ থেকে বেশ কিছু শেয়ার নিয়ে সেই ফান্ডে রাখতে হবে। অনেক শিল্পপতি নগদের তুলনায় শেয়ার দিতেই বেশি আগ্রহী। শেয়ারের দাম বাজারে ওঠানামা করবে, সেই ঝুঁকি কমাবার জন্য যেখানে যত কোম্পানি জমি কিনছে, তাদের সবার শেয়ার একত্রিত করে একটি বৃহৎ ফান্ডে জমা হবে। এই ফান্ডটি সরকারি তদারকিতে কিন্তু প্রধানত পেশাদারি অধ্যক্ষের পরিচালনায় থাকবে। তার থেকে নিয়মিত এবং সমপরিমাণ মাসিক ভাতা দেওয়া হবে কৃষককে। কৃষকের হাতে নগদ টাকা এলে তাড়াতাড়ি খরচ হয়ে যাওয়ার যে ভয় থাকে, সেটাও কমবে। বিদেশে অনেক পেনশন ফান্ডই এই ভাবে পেশাদারি পরিচালনায় চলে। আর নতুন শিল্প বা রাস্তা ইত্যাদি হলে আশেপাশের জমি যা হস্তান্তরিত হচ্ছে না, সেগুলিরও দাম অনেক বাড়বে। তাদের মালিকদের ওই মওকায় পাওয়া বাড়তি মূল্যের উপর সরকার কর বসাতে পারে। এবং সেই টাকাও ওই ফান্ডে জমা পড়বে।
তৃণমূল সরকারের আর একটা গোঁ হচ্ছে যে, যাদের জমি নেওয়া হবে সেই পরিবারের অন্তত এক জনকে নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠানে চাকরি দিতে হবে। শিল্প প্রতিষ্ঠানের চাকরি হরির লুঠ নয়। চাকরির জন্য যোগ্যতা না থাকলেও নিতে বাধ্য করাটা অন্যায় আবদার। এই ভাবে আমরা কর্মস্থলে অকর্মণ্যতা আর অযোগ্যতাকে প্রশ্রয় দিই। বরং সরকারের উচিত ওই পরিবারের ছেলেমেয়েদের বিভিন্ন বৃত্তি ও পেশায় দক্ষতা অর্জনের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।
সবশেষে বলি, পশ্চিমবঙ্গে জমি অধিগ্রহণের ব্যাপারে রাজনীতির জল এত ঘোলা হয়েছে যে সরকারের উচিত, সমস্ত বিষয়টাতে দৈনন্দিন সিদ্ধান্ত থেকে শুরু করে ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের সমস্ত পরিচালনা করার ভার একটা নিরপেক্ষ দলপ্রভাবমুক্ত কমিশনের হাতে তুলে দেওয়া। এই কমিশন বছরের শেষে একবার বিধানসভার কাছে জবাবদিহি করবে। মাঝে মাঝে বিভিন্ন অঞ্চলে গিয়ে জনশুনানির ব্যবস্থা করবে। সাধারণ মানুষের কাছে অভিযোগ-অবিচারের কথা শুনবে। কিন্তু তাদের প্রাত্যহিক কাজের উপর রাজনৈতিক খবরদারি চলবে না।
সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের গরম হাওয়ায় তৃণমূলের নেতারা রাজ্যের মসনদ দখল করে থাকতে পারেন, কিন্তু এখন সময় এসেছে তাঁদের জমি অধিগ্রহণ নিয়ে ঠান্ডা মাথায় আর একটু নতুন ভাবে চিন্তা করার। সাময়িক জনমনোরঞ্জন ছেড়ে আখেরে পশ্চিমবঙ্গের কীসে মঙ্গল হবে তাতে মনোনিবেশ করার।

লেখক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফর্নিয়া, বার্কলে'তে অর্থনীতির শিক্ষক
http://www.anandabazar.in/18edit3.html
বিশ্ব অর্থনীতির দুর্যোগ দায়ী ভুল রাজনীতি
চিন দেশের রসিকজন মিষ্টি কথায় অভিশাপ দেন: "আপনার জীবনে যেন উত্তেজনার অভাব না হয়।" চিনের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্কটা ইদানীং বড্ড গোলমেলে। সন্দেহ হয়, তাদের অভিশাপ এখন আমেরিকার কপালে জুটেছে। ২০০৮ সালে আমেরিকার শেয়ার বাজারে ভয়ংকর ধস নেমেছিল। খারাপ ঋণ আর আর্থিক অনাচারের চাপে গোটা ব্যাঙ্ক ব্যবস্থা রসাতলে যাওয়ার উপক্রম। সেই ধাক্কাটা মোটামুটি সামলে উঠলেও ডামাডোলে মার্কিন অর্থনীতিতে দেখা দিল প্রবল মন্দা। বেকারির অনুপাত দশ শতাংশ ছুঁই-ছুঁই, ঋণের দায়ে বহু লোক গৃহহীন, সাধারণ মানুষের ঘোর দুর্দশা। সেই আর্থিক মন্দা এখনও পুরোপুরি কাটেনি, ইতিমধ্যে আবার বিনা মেঘে বজ্রপাত।
রাজস্ব ঘাটতি মেটাতে মার্কিন সরকার বাজারে বন্ড ছাড়েন, অর্থাৎ টাকা ধার করেন। কত টাকা ধার করা যাবে কংগ্রেস তার একটা সীমা নির্ধারণ করে দেয়। গত পঞ্চাশ বছরে ৬৮ বার ঋণ-সীমা বাড়ানো হয়েছে। এ বার হঠাৎ রিপাবলিকান পার্টির সাংসদরা বলে দিলেন, নানা খাতে সরকারি খরচ বাঁচিয়ে রাজস্ব ঘাটতি কমানোর প্রতিশ্রুতি না দিলে ঋণ-সীমা বাড়ানোর সপক্ষে ভোট দেবেন না। অনেক বাগ্বিতণ্ডা আর দরাদরির পর একেবারে অন্তিম লগ্নে ঋণ-সীমা ৪০,০০০ কোটি ডলার বাড়ানো হয়েছে। তবে কাণ্ড দেখে স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড পুয়োরস রেটিং সংস্থা মার্কিন সরকারি বন্ডের রেটিং সর্বোচ্চ স্তর থেকে নামিয়ে দিয়েছে। অনিশ্চয়তার দৌলতে শেয়ার দর এমনিতেই নিম্নগামী ছিল। এই ঘটনার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সমেত সারা পৃথিবীর শেয়ার বাজার আবার থরহরি কম্পমান।
গত তিন বছর ধরে মার্কিন অর্থনীতিতে এই টালমাটাল কেন? উত্তরে বলতে হয়, পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় উত্থানপতন আসবেই। যে কোনও বিপর্যয়েই কাউকে একটা ফাঁসি দিতে না পারলে আমাদের গায়ের ঝাল মেটে না। আসামি খুঁজতে গিয়ে লোকে নিজের মতাদর্শের চশমাটা পরে নিতে ভোলেন না। বামপন্থীরা গর্জে ওঠেন ধনতন্ত্র আর বিশ্বায়নের বিরুদ্ধে, দক্ষিণপন্থীরা বলতে থাকেন সরকারি নিয়মকানুনের বজ্র আঁটুনিতে ফসকা গেরো হয়েছে। এ ক্ষেত্রে অবশ্য যোগ্য আসামি মেলা ভার হবে না।
দুঃসময়? ওয়াল স্ট্রিট, নিউ ইয়র্ক। অগস্ট '১১। এ এফ পি
গোলযোগের সূত্রপাত ২০০৮ সালে, যখন বোঝা গেল আমেরিকার অনেক ব্যাঙ্ক বেপরোয়া ধার দিয়েছে আর বিভিন্ন জটিল সিকিয়োরিটির মোড়কে পুরে ঋণ আদায়ের ভার পাচার করেছে অন্যান্য আর্থিক সংস্থার ঘাড়ে। ঋণের বেনোজল ঢুকে বাড়িঘরের দাম ফুলে-ফেঁপে উঠেছিল। সেই ফানুসটা যখন ফাটতে শুরু করল আর ঋণ গ্রহীতারা দেউলিয়া হতে আরম্ভ করলেন, আমেরিকার যাবতীয় ব্যাঙ্ক আর আর্থিক সংস্থার নাভিশ্বাস উঠল। ব্যবসায় টাকাপয়সার লেনদেন নিতান্তই জরুরি। ভয়ে ভাবনায় সেটাই গেল প্রায় বন্ধ হয়ে। এ থেকেই মন্দার সূত্রপাত। নব্বইয়ের দশকে বিল ক্লিন্টন এবং রিপাবলিকান কংগ্রেসের জমানায় ব্যাঙ্কিংয়ের নিয়মকানুন অনেক শিথিল করা হয়েছিল। এই বিপর্যয়ের পিছনে তার খানিক অবদান আছে, সে সন্দেহ অমূলক নয়।
তবে, দুর্নীতি আর লোভের ঘাড়ে সমস্ত দোষ চাপিয়ে বসে থাকলে ভুল করা হবে। পুঁজিবাদী ব্যবস্থা স্থির জলাশয়ের মতো নয়, সেখানে ঢেউয়ের ওঠাপড়া চলবেই। পুঁজির নিয়মই হল, মুনাফার লোভে নতুন বিনিয়োগ, নতুন কর্মকাণ্ডের পিছনে ধাওয়া করে বেড়ানো। কোথায় উৎপাদনশীল কাজ পুঁজির অপেক্ষায় আটকে রয়েছে, আর কোথায় মিথ্যা আশার হাতছানি দেখা যাচ্ছে, এটা অনেক সময়েই আগে থেকে স্পষ্ট বোঝা মুশকিল। যাঁরা আজ ব্যাঙ্কদের বিরুদ্ধে তোপ দাগছেন, তাঁরা কিন্তু প্রায় কেউই ঘটনার আগে টের পাননি যে ঘরবাড়ির দাম বুদ্বুদের মতো ফুলে উঠেছে ফাটকাবাজির খেলায়। চোর পালানোর পর অনেকেরই বুদ্ধি বেড়েছে। যাবতীয় আর্থিক দুরাচার যদি বন্ধ করাও যায়, তা হলেও কিন্তু কখনও সখনও পুঁজির বাজারে সংকট আর অর্থনৈতিক মন্দার আবির্ভাব ঠেকানো যাবে না। তবে কিছু কিছু ব্যবস্থা নিলে ঝাপ্টাটা কম লাগতে পারে, মন্দার খপ্পর থেকে বেরনো যায় তাড়াতাড়ি। মুশকিল হল, রোগীকে ঠিকঠাক দাওয়াইটা দেওয়া হচ্ছে না, বরং মাঝে মধ্যে ভুল ওষুধ খেয়ে হিতে বিপরীত হচ্ছে। এর পিছনে সাধারণ মানুষ আর রাজনীতিকদের অর্থনৈতিক বোধের অভাব কিছুটা কাজ করছে। বাকিটা রাজনীতির খেলা।
আর্থিক সংকট যখন মাথা চাড়া দিল, প্রথমেই দরকার ছিল বড় বড় ব্যাঙ্ক আর আর্থিক সংস্থাগুলোর যাতে ঘট না ওল্টায় তার বন্দোবস্ত করা, দরকার হলে সরকার থেকে মোটা ঋণ দিয়ে বা লগ্নি করে তাদের জিইয়ে রাখা। এ ব্যাপারটা অনেকের চোখেই অদ্ভুত ঠেকল। বিত্তের কারবারি ওয়াল স্ট্রিটের হোমরাচোমরারা টাকার নয়ছয় করেছেন, বেমক্কা ঝুঁকি নিয়ে বেসামাল হয়েছেন। এখন সাধারণ করদাতাদের টাকায় তাঁদের উদ্ধার করা কি সাজে? এই ভাবনা খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু মুশকিল হল, আধুনিক অর্থব্যবস্থায় সকলের সঙ্গেই সকলের টিকি বাঁধা রয়েছে। কয়েকটা বড় ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থাই ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়, ঋণের লেনদেন গুটিয়ে আসে, কলকারখানা বন্ধ হতে শুরু করে, সংক্রামক রোগের মতো অর্থনৈতিক ব্যাধি চারি দিকে ছড়িয়ে পড়ে।
২০০৮ সালের শেষের দিকে লেম্যান ব্রাদার্স ভেঙে পড়ল, জর্জ বুশের সরকার হাত গুটিয়ে বসে রইলেন। তার পর বিপদ দেখে বাকিদের বাঁচাতে তড়িঘড়ি ৭০,০০০ কোটি ডলারের ত্রাণ প্যাকেজ তৈরি হল বটে, তবে কংগ্রেসে সেই আইন পাশ করাতে সরকার হিমশিম খেল। বুশের নিজের দল, রিপাবলিকানরা জনরোষে গলা মিলিয়ে বিরুদ্ধে ভোট দিলেন। অধিকাংশ সময়ে রিপাবলিকানরা বড়লোকদের নানা রকম ছাড় দিতে উঠেপড়ে লাগেন, কিন্তু কাজের সময় অপ্রিয় ব্যবস্থা নিতে সমর্থন লাগল ডেমোক্র্যাটদের।
ওয়াল স্ট্রিট বাঁচলেও মন্দা মাথা চাড়া দিয়ে উঠল অনিবার্য নিয়মে। ২০০৮ সালের মাঝামাঝি বেকারি ছিল ৬ শতাংশের কম। ২০০৯-এর গোড়ায় সেটা লাফিয়ে ৯ শতাংশ ছাড়িয়ে গেল। বারাক ওবামা এবং ডেমোক্র্যাটরা তখন সদ্য ক্ষমতায় এসেছেন। তাঁরা মজা গাঙে জোয়ার আনতে প্রায় ৮০,০০০ কোটি ডলার 'স্টিমুলাস প্যাকেজ' পাশ করালেন। মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তদের ওপর আয়কর কমানো হল। শিক্ষা, চিকিৎসা, বেকার ভাতা, রাস্তাঘাট সারাই ইত্যাদি খাতে টাকা বরাদ্দ হল। রিপাবলিকানরা এক সুরে বিরোধিতা করলেন, তবে কংগ্রেসে আসনসংখ্যা কম থাকায় আটকাতে পারলেন না।
মন্দার বাজারে সরকারের দু'হাতে খরচ করাটা অনেকের মনে খটকা লাগিয়েছে। গেরস্থালির হিসেব মেলাতে গিয়ে আমরা যে রীতিনীতি মেনে চলি, দেশ চালাতে হলে সরকারের সেই পথেই হাঁটা উচিত, এমনটা অনেকেই মনে করেন। এই ভাবনাটা ভুল। ব্যক্তির আর্থিক অনটন ঘটলে মেপেজুপে চলতে হয়। কিন্তু দেশে মন্দা এলে সরকার যদি খরচাপাতি কমিয়ে দেয়, তা হলে হিতে বিপরীত হয়। লোকে কেনাকাটা করছে না, বাজারে চাহিদা নেই, কলকারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, এটাই মন্দার কারণ। সরকারকে খরচ বাড়িয়ে চাহিদা সৃষ্টি করতে হবে, নইলে মন্দা আরও বাড়বে।
স্টিমুলাসের দৌলতে পতন মোটামুটি আটকানো গিয়েছে। ২০০৯-এ মাথাপিছু জাতীয় আয় ৩ শতাংশের বেশি কমে গিয়েছিল, এখন আবার বাড়তির দিকে। বেকারির হার ১০ শতাংশ ছুঁয়ে এসে ৯-এর আশেপাশে ঘোরাফেরা করছে। সরকার খরচ না বাড়ালে অবস্থার আরও অবনতি হত, তবে পুরোপুরি হাল ফেরাতে আরও স্টিমুলাসের প্রয়োজন আছে, সেটা এখন বোঝা যাচ্ছে। অবশ্য ঘোলা জলে মাছ ধরার লোকের অভাব হয় না। মন্দার বাজারে সাধারণ মানুষের মেজাজ চড়ছে, সরকারের রাজস্ব ঘাটতি বাড়ছে, আর রিপাবলিকান দল এই দুঃসময় ভাঙিয়ে রাজনৈতিক মুনাফা লোটার চমৎকার মওকা পেয়ে গেছে। 
আমেরিকার আর্থিক অবস্থা এখন যেখানে দাঁড়িয়ে, তাতে রাজস্ব ঘাটতি আর ক্রমবর্ধমান জাতীয় ঋণ নিয়ে দুশ্চিন্তা খানিকটা স্বাভাবিক। আয়কর বাড়াতে গেলেই রিপাবলিকানরা তুমুল হইচই জোড়েন, লোকেও তাঁদের সমর্থন করে। ও দিকে ব্যয়সংকোচ মানেই সুযোগসুবিধার কাটছাঁট, সরকারি পেনশন বা চিকিৎসা বিমায় হস্তক্ষেপ। ডেমোক্র্যাটরা এ-সবে চট করে রাজি হন না, জনগণও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। তার ওপরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী জনসংখ্যার হারবৃদ্ধির সময়ে যাঁদের জন্ম হয়েছিল, সেই বিরাট জনগোষ্ঠী শীঘ্রই অবসর নিতে চলেছে। এতে সরকারের রাজস্ব আরও কমবে, পেনশন আর চিকিৎসার খরচ বেড়ে যাবে। আগামী কয়েক দশকে ঘাটতি কী ভাবে সামাল দেওয়া যায়, সে বিষয়ে চিন্তাভাবনার প্রয়োজন।
তবে ভুললে চলবে না যে, এই পরিস্থিতির পিছনে জর্জ বুশের আট বছরের জমানার অবদান বড় কম নয়। বুশের যুদ্ধবিগ্রহে, বিশেষ করে ইরাকে যুদ্ধের খরচ মেটাতে গিয়ে সরকারি কোষাগারের ওপর অনেক চাপ পড়েছে। তার ওপর তিনি বড়লোকদের ওপর আয়কর কমিয়ে দিয়েছিলেন। বুশ যখন ক্ষমতায় এলেন, রাজস্ব ঘাটতির বদলে প্রাচুর্য ছিল। যখন তিনি মসনদ থেকে বিদায় নিয়ে টেক্সাসে অবসর জীবন কাটাতে রওনা দিলেন, রাজস্ব ঘাটতি জাতীয় আয়ের ৪ শতাংশ ছাড়িয়ে ঊর্ধ্বমুখী। আর সেই ঘাটতিকেই তাঁর দল এখন তুরুপের তাস করেছে।
১৯২৯ সালে শেয়ার বাজারের ধস আর মহামন্দার পরে রাষ্ট্রপতি রুজভেল্ট আমেরিকার অর্থনৈতিক মানচিত্রে আমূল পরিবর্তন আনেন। অবসরপ্রাপ্ত মানুষের জন্য সরকারি পেনশন, ব্যাঙ্কে গচ্ছিত সঞ্চয়ের জন্য গ্যারান্টি ইত্যাদি নানা দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থার পত্তন হয়, যাকে সামগ্রিক ভাবে নিউ ডিল বলা হয়ে থাকে। ষাটের দশকে রাষ্ট্রপতি জনসন এর সম্প্রসারণ ঘটান, বিশেষ করে অবসরপ্রাপ্ত আর নিম্নবিত্তদের চিকিৎসার জন্য সরকারি সাহায্যের বন্দোবস্ত করে। বলা যেতে পারে, ত্রিশের দশকে দুঃসময়ের পরে মার্কিন ধনতান্ত্রিক ব্যবস্থায় খানিকটা সমাজতন্ত্রের লাগাম পরানো হয়, অর্থের কিছুটা সমবণ্টন যে কাম্য সে কথা স্বীকৃতি পায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী কালে সমস্ত উন্নত দেশই এ পথে হেঁটেছে, আমেরিকা বরং তুলনায় কম।
কিন্তু রিপাবলিকানরা অনেকেই একেবারে নিয়ন্ত্রণহীন বাজারি অর্থনীতির মন্ত্রে দীক্ষা নিয়েছেন। তাঁরা মনে করেন দারিদ্রের কারণ মানুষের দুর্ভাগ্য নয়, তার আলস্য আর নির্বুদ্ধিতা। আমেরিকার কর্পোরেট জগতের সঙ্গে তাঁদের দহরম-মহরম তো আছেই। ত্রিশের দশকের নিউ ডিল রিপাবলিকান মানসে ওয়াটারলুর যুদ্ধে পরাজয়ের মতো। রুজভেল্ট অর্থনৈতিক সংকটের সুযোগ নিয়ে মার্কিন সমাজব্যবস্থার ভোল বদলে দিয়েছিলেন, পুঁজিবাদের সঙ্গে মানবতাবাদকে মেলানোর চেষ্টা করেছিলেন। আর এক সংকট মুহূর্তে রিপাবলিকান পার্টি বদলা নেওয়ার সুবর্ণসুযোগ দেখতে পেয়েছে। দুশ্চিন্তাগ্রস্ত, বিক্ষুব্ধ মানুষকে যদি বোঝানো যায় যে, সব দুর্দশার মূলে সরকারের রাজস্ব ঘাটতি, তবে ব্যয়সংকোচের নাম করে নিউ ডিলের ব্যবস্থাপনা তুলে দেওয়া যাবে। এটাই তাদের কিস্তির চাল।
সারা বিশ্বের পুঁজিবাদী ব্যবস্থা এখন একটা দুর্যোগের মধ্য দিয়ে চলেছে। অনেকেই আকণ্ঠ ঋণে ডুবে আছেন, অনিশ্চয়তার ফলে ঋণদাতারা নতুন ঋণ দিতে রাজি নন। ফলে ইউরোপে ইতালি, স্পেন, আয়ার্ল্যান্ড আর গ্রিসের মতো দেশও ধার শোধ দিতে হিমশিম খাচ্ছে। এ সব দেশের সরকার দেউলিয়া হয়ে যেতে পারে, এই ভয়ে সবাই তটস্থ। এ কথা ঠিক যে, যাঁরা ঋণের পাহাড় গড়ে তুলেছেন, তাঁদের বেহিসেবি অভ্যাস ছাড়তে হবে। কিন্তু সেটা দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা হওয়া উচিত। খাতক আর সমালোচকদের ধমকধামকে তড়িঘড়ি সরকারি বাজেটে অত্যধিক কোপ বসালে অর্থনীতি অচল হয়ে পড়ে। মানুষের দুর্দশা তো হয়ই, ঘাটতিও যে খুব কমে তা নয়। এই কথাগুলো আমেরিকার ক্ষেত্রে দ্বিগুণ সত্য। আমেরিকার ঋণভার গ্রিস বা আয়ার্ল্যান্ডের চেয়ে এখনও কম, সক্ষমতা অনেক বেশি, ঋণের বড় অংশ স্বদেশেই সীমাবদ্ধ।
সবচেয়ে বড় কথা হল, মার্কিন ডলার আর সরকারি বন্ড বিশ্ব অর্থনীতির মেরুদণ্ড। যাবতীয় লেনদেন আর চুক্তিপত্র এর মাধ্যমেই হয়ে থাকে। এর ওপরে লোকের ভরসা টলে গেলে মহা সংকট দেখা দিতে পারে। অদূর ভবিষ্যতে সরকারের ঋণ মেটানোর ক্ষমতা নিয়ে সংশয় নেই। সে বিষয়ে যে সন্দেহ দানা বেঁধে উঠেছে, তার কারণটা অর্থনৈতিক নয়, রাজনৈতিক। রিপাবলিকানরা তাঁদের দেশে মুক্ত অর্থনীতি আর প্রবল অর্থনৈতিক বৈষম্য ফিরিয়ে আনতে বদ্ধপরিকর, তাই তাঁরা বিশ্বের গোটা আর্থিক পরিকাঠামোটা নিয়ে ছিনিমিনি খেলতেও রাজি। 'টি পার্টি' নামে পরিচিত তাঁদের অতি দক্ষিণপন্থী অংশ একটা চটকদার জনপ্রিয়তার খেলায় ওস্তাদ হয়ে উঠেছে। আবেগসর্বস্ব প্রতিবাদের রাজনীতিই তাদের হাতিয়ার।
আমরা যারা লাল ঝান্ডা আর মা মাটি মানুষের ছত্রচ্ছায়ায় বহু দিন কাটিয়েছি, তাদের কাছে এটা অপরিচিত ঠেকার কথা নয়।

লেখক দিল্লি স্কুল অব ইকনমিক্স-এ অর্থনীতির শিক্ষক
http://www.anandabazar.in/18edit4.html

No comments:

मैं नास्तिक क्यों हूं# Necessity of Atheism#!Genetics Bharat Teertha

হে মোর চিত্ত, Prey for Humanity!

मनुस्मृति नस्ली राजकाज राजनीति में OBC Trump Card और जयभीम कामरेड

Gorkhaland again?আত্মঘাতী বাঙালি আবার বিভাজন বিপর্যয়ের মুখোমুখি!

हिंदुत्व की राजनीति का मुकाबला हिंदुत्व की राजनीति से नहीं किया जा सकता।

In conversation with Palash Biswas

Palash Biswas On Unique Identity No1.mpg

Save the Universities!

RSS might replace Gandhi with Ambedkar on currency notes!

जैसे जर्मनी में सिर्फ हिटलर को बोलने की आजादी थी,आज सिर्फ मंकी बातों की आजादी है।

#BEEFGATEঅন্ধকার বৃত্তান্তঃ হত্যার রাজনীতি

अलविदा पत्रकारिता,अब कोई प्रतिक्रिया नहीं! पलाश विश्वास

ভালোবাসার মুখ,প্রতিবাদের মুখ মন্দাক্রান্তার পাশে আছি,যে মেয়েটি আজও লিখতে পারছেঃ আমাক ধর্ষণ করবে?

Palash Biswas on BAMCEF UNIFICATION!

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS ON NEPALI SENTIMENT, GORKHALAND, KUMAON AND GARHWAL ETC.and BAMCEF UNIFICATION! Published on Mar 19, 2013 The Himalayan Voice Cambridge, Massachusetts United States of America

BAMCEF UNIFICATION CONFERENCE 7

Published on 10 Mar 2013 ALL INDIA BAMCEF UNIFICATION CONFERENCE HELD AT Dr.B. R. AMBEDKAR BHAVAN,DADAR,MUMBAI ON 2ND AND 3RD MARCH 2013. Mr.PALASH BISWAS (JOURNALIST -KOLKATA) DELIVERING HER SPEECH. http://www.youtube.com/watch?v=oLL-n6MrcoM http://youtu.be/oLL-n6MrcoM

Imminent Massive earthquake in the Himalayas

Palash Biswas on Citizenship Amendment Act

Mr. PALASH BISWAS DELIVERING SPEECH AT BAMCEF PROGRAM AT NAGPUR ON 17 & 18 SEPTEMBER 2003 Sub:- CITIZENSHIP AMENDMENT ACT 2003 http://youtu.be/zGDfsLzxTXo

Tweet Please

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS BLASTS INDIANS THAT CLAIM BUDDHA WAS BORN IN INDIA

THE HIMALAYAN TALK: INDIAN GOVERNMENT FOOD SECURITY PROGRAM RISKIER

http://youtu.be/NrcmNEjaN8c The government of India has announced food security program ahead of elections in 2014. We discussed the issue with Palash Biswas in Kolkata today. http://youtu.be/NrcmNEjaN8c Ahead of Elections, India's Cabinet Approves Food Security Program ______________________________________________________ By JIM YARDLEY http://india.blogs.nytimes.com/2013/07/04/indias-cabinet-passes-food-security-law/

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS TALKS AGAINST CASTEIST HEGEMONY IN SOUTH ASIA

THE HIMALAYAN VOICE: PALASH BISWAS DISCUSSES RAM MANDIR

Published on 10 Apr 2013 Palash Biswas spoke to us from Kolkota and shared his views on Visho Hindu Parashid's programme from tomorrow ( April 11, 2013) to build Ram Mandir in disputed Ayodhya. http://www.youtube.com/watch?v=77cZuBunAGk

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS LASHES OUT KATHMANDU INT'L 'MULVASI' CONFERENCE

अहिले भर्खर कोलकता भारतमा हामीले पलाश विश्वाससंग काठमाडौँमा आज भै रहेको अन्तर्राष्ट्रिय मूलवासी सम्मेलनको बारेमा कुराकानी गर्यौ । उहाले भन्नु भयो सो सम्मेलन 'नेपालको आदिवासी जनजातिहरुको आन्दोलनलाई कम्जोर बनाउने षडयन्त्र हो।' http://youtu.be/j8GXlmSBbbk

THE HIMALAYAN DISASTER: TRANSNATIONAL DISASTER MANAGEMENT MECHANISM A MUST

We talked with Palash Biswas, an editor for Indian Express in Kolkata today also. He urged that there must a transnational disaster management mechanism to avert such scale disaster in the Himalayas. http://youtu.be/7IzWUpRECJM

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS CRITICAL OF BAMCEF LEADERSHIP

[Palash Biswas, one of the BAMCEF leaders and editors for Indian Express spoke to us from Kolkata today and criticized BAMCEF leadership in New Delhi, which according to him, is messing up with Nepalese indigenous peoples also. He also flayed MP Jay Narayan Prasad Nishad, who recently offered a Puja in his New Delhi home for Narendra Modi's victory in 2014.]

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS CRITICIZES GOVT FOR WORLD`S BIGGEST BLACK OUT

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS CRITICIZES GOVT FOR WORLD`S BIGGEST BLACK OUT

THE HIMALAYAN TALK: PALSH BISWAS FLAYS SOUTH ASIAN GOVERNM

Palash Biswas, lashed out those 1% people in the government in New Delhi for failure of delivery and creating hosts of problems everywhere in South Asia. http://youtu.be/lD2_V7CB2Is

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS LASHES OUT KATHMANDU INT'L 'MULVASI' CONFERENCE

अहिले भर्खर कोलकता भारतमा हामीले पलाश विश्वाससंग काठमाडौँमा आज भै रहेको अन्तर्राष्ट्रिय मूलवासी सम्मेलनको बारेमा कुराकानी गर्यौ । उहाले भन्नु भयो सो सम्मेलन 'नेपालको आदिवासी जनजातिहरुको आन्दोलनलाई कम्जोर बनाउने षडयन्त्र हो।' http://youtu.be/j8GXlmSBbbk