গোলাম আযমের যুদ্ধাপরাধের রায় যে কোনো দিন
ওই বুঝি কালবৈশাখী
সন্ধ্যা-আকাশ দেয় ঢাকি॥
ভয় কী রে তোর ভয় কারে, দ্বার খুলে দিস চার ধারে--
শোন্ দেখি ঘোর হুঙ্কারে নাম তোরই ওই যায় ডাকি॥
তোর সুরে আর তোর গানে
দিস সাড়া তুই ওর পানে।
যা নড়ে তায় দিক নেড়ে, যা যাবে তা যাক ছেড়ে,
যা ভাঙা তাই ভাঙবে রে-- যা রবে তাই থাক বাকি॥
হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফার প্রতিবাদে ২৭ এপ্রিল ঢাকায় প্রতিবাদী নারীদের গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এই আয়োজনের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে ৮০টির বেশি বেসরকারি সংগঠন।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে আওয়ামী লীগের ধানমন্ডির কার্যালয়ে ১৪-দলীয় জোটের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় নারী সমাবেশের উদ্যোক্তারা এ কথা জানান।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, নারীদের সমাবেশে ১৪ দল এবং সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে। তিনি বলেন, যারা দেশের অগ্রগতির চাকাকে ভেঙে দিতে চায়, যারা নারীর শক্তিকে খর্ব করতে চায়, তাদের প্রতিহত করা হবে। সভায় বক্তারা বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার বানচাল, শাহবাগের আন্দোলনকে আঘাত ও দেশকে তালেবানি রাষ্ট্রে পরিণত করতে একটি অপশক্তি হেফাজতে ইসলাম সৃষ্টি করেছে। তাঁরা বলেন, আন্দোলনের মাধ্যমে উল্টো হেফাজতে ইসলামকে ঘরে ঢুকিয়ে দেওয়া হবে।
জাসদের শিরীন আখতার ও মহিলা পরিষদের রেখা চৌধুরী বলেন, হাইকোর্টের সামনের কদম ফোয়ারাকে কেন্দ্র করে ২৭ এপ্রিল বিকেল তিনটায় সমাবেশ হবে। এর চারপাশে যতদূর যায়, ততদূর পর্যন্ত নারীরা অবস্থান নেবেন।
সভার সভাপতি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু বলেন, 'শাহবাগে তরুণ প্রজন্মের যে জাগরণ ঘটেছে, তাকে নস্যাৎ করতে অপশক্তি হেফাজতে ইসলাম সৃষ্টি করেছে। তারা আমাদের অস্তিত্বকে চ্যালেঞ্জ করেছে। এদের বিরুদ্ধে সারা দেশের নারী সমাজকে জাগাতে হবে।'
আওয়ামী লীগের তোফায়েল আহমেদ বলেন, হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা গ্রহণ করতে গেলে এ দেশের তৈরি পোশাকশিল্প খাত ধ্বংস হয়ে যাবে। আর পোশাকশিল্প খাত ধ্বংস হয়ে গেলে, দেশও ধ্বংস হয়ে যাবে। ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, ইসলাম নারীকে যে মর্যদা দিয়েছে, হেফাজতে ইসলাম তা-ও দিতে রাজি নয়। এদের বিরুদ্ধে দেশের সর্বত্র আন্দোলন ছড়িয়ে দিতে হবে।
শহীদজায়া শ্যামলী নাসরীন চৌধুরী বলেন, যুদ্ধাপরাধের বিচার বানচাল করতে হেফাজতে ইসলাম ১৩ দফা ফতোয়া নিয়ে এসেছে। নারীরা তাদের প্রতিরোধ নয়, প্রতিহত করবে।
মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য দেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী সাহারা খাতুন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি, সাংসদ আমেনা আহমেদ, তারানা হালিম, নাজমা আক্তার, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক নুরুর রহমান সেলিম, লেখক পান্না কায়সার, অভিনয়শিল্পী সারা যাকের, আইনজীবী তানিয়া আমীর, ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব জোবেরা রহমান লিনু, নারী উদ্যোক্তা সেলিমা আহমেদ, ওমেন ফর ওমেনের সভাপতি জাকিয়া হাসান, নারীনেত্রী হাজেরা সুলতানা, রোকেয়া কবির, পোশাকশ্রমিক নেত্রী নাজমা আক্তার প্রমুখ।
গাজীপুর গণজাগরণ মঞ্চে ২০ এপ্রিল শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় অনুষ্ঠিত হবে 'তথ্য সন্ত্রাস প্রতিরোধ সমাবেশ'।
গণজাগরণ মঞ্চ-গাজীপুরের সমন্বয়ক জুলীয়াস চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি, জামায়াত-শিবিরসহ অন্যান্য সাম্প্রদায়িক সংগঠন এবং তাদের রাজনীতি ও কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধের প্রক্রিয়া শুরুর প্রাক্কালে এক শ্রেণির সংবাদপত্র, ইলেক্ট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়া এবং দেশব্যাপী তাদের পোষ্য সাংবাদিকরা বিকৃত তথ্য প্রকাশ ও প্রচার করে নাশকতা উস্কে দিচ্ছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যুদ্ধাপরাধী ও সাম্প্রদায়িকতা মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার আন্দোলনের খবর প্রকাশ ও প্রচার না করে যুদ্ধাপরাধী ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তির খবর বেশি করে প্রকাশ ও প্রচার করে এক শ্রেণির সাংবাদিক সন্ত্রাসে সহায়তা করছেন, সন্ত্রাসের লালন করছেন।
এ ঘটনার প্রতিবাদে গাজীপুরে 'তথ্য সন্ত্রাস প্রতিরোধ সমাবেশ' করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার হরিদাসদী-মহেন্দ্রদী ইউনিয়নের কালীবাড়ী বাজার সংলগ্ন দুইশ বছরের ঐতিহ্যবাহী কালী মন্দির বৃহস্পতিবার রাতে পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, হরিদাসদী-মহেন্দ্রদী ইউনিয়নের মহেন্দ্রদী গ্রামের কালীবাড়ী সংলগ্ন কালী মন্দিরে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে দুর্বৃত্তরা অগ্নিসংযোগ করে।
আগুনের লেলিহান শিখা দেখে এলাকাবাসী এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। এর আগেই মন্দিরটি পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
এ ব্যাপারে মন্দির কমিটির সভাপতি উত্তম ব্যানার্জী বাংলানিউজকে বলেন, "কালী মন্দিরে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে খবর পেয়ে এসে দেখি মন্দিরটি সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। এর আগে গত বছরের ডিসেম্বর মাসে মন্দিরের বিভিন্ন মূর্তি করেছিল দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনার পর এলাকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে আতংক বিরাজ করছে।"
রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোফাজ্জেল হোসেন বাংলানিউজকে জানান, কে বা কারা মন্দিরে অগ্নিসংযোগ করে পালিয়ে যায়। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তদন্ত শুরু করেছে। আগুনে মন্দিরটির চাল প্রায় পুরোটাই পুড়ে গেছে।
মাদারীপুর জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাসিরুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এসময় তিনি জানান, এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। এ ব্যাপারে পুলিশি তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে করা আপিলের ওপর আগামী ২ মে শুনানির দিন ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ। এর আগেই উভয় পক্ষকে আপিলের সারসংক্ষেপ জমা দিতে বলা হয়েছে।
প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির বেঞ্চ গতকাল বৃহস্পতিবার এ দিন ধার্য করেন। বেঞ্চের অপর পাঁচ বিচারপতি হলেন বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা, বিচারপতি আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি ছিদ্দিকুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী।
একই বেঞ্চে গতকাল আবদুল কাদের মোল্লার দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপিল শুনানিতে ট্রাইব্যুনালের দেওয়া রায় উপস্থাপন শেষ করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। কাদের মোল্লা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল।
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। ওই রায় ঘোষণার ২৯ দিনের মাথায় ২৮ মার্চ রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষ সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আপিল করে। রাষ্ট্রপক্ষ গত বুধবার শুনানির দিন নির্ধারণের জন্য চেম্বার বিচারপতির আদালতে আবেদন করে। ওই দিন আদালত বিষয়টি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠান।
গতকাল বেলা ১১টার দিকে রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এম কে রহমান শুনানির দিন ধার্যের আরজি জানান। আসামিপক্ষে আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক সারসংক্ষেপ দাখিলের জন্য চার সপ্তাহ সময় প্রার্থনা করেন। পরে আদালত ২ মে শুনানির দিন ধার্য করেন।
এম কে রহমান ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিদের প্রধান সমন্বয়কারী। পরে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, 'আদালত ২ মে আপিল শুনানির তারিখ ধার্য করেছেন। এ সময়ের মধ্যে উভয় পক্ষকে সারসংক্ষেপ জমা দিতে বলা হয়েছে।
আবদুর রাজ্জাক বলেন, চার সপ্তাহ সময় চাওয়া হয়েছিল, আদালত দুই সপ্তাহ সময় দিয়েছেন।
ট্রাইব্যুনালের রায় উপস্থাপন শেষ: বিরতির পর কাদের মোল্লার দণ্ডাদেশের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের ওপর শুনানি গ্রহণ করেন একই বেঞ্চ। দুপুর ১২টা থেকে বেলা একটা ২৫ মিনিট পর্যন্ত শুনানি চলে। রাষ্ট্রপক্ষে এম কে রহমান গতকাল চতুর্থ দিনের শুনানিতে কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ট্রাইব্যুনালের দেওয়া রায় উপস্থাপন শেষ করেন। রাষ্ট্রপক্ষে এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম উপস্থিত ছিলেন।
শেষ পর্যায়ে কাদের মোল্লার পক্ষে আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক সময় চেয়ে আবেদনের কথা জানান। আদালত বলেন, 'আবেদন আসুক, দেখা যাবে।' আগামী রোববার পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়।
আবেদন সম্পর্কে আবদুর রাজ্জাক পরে প্রথম আলোকে বলেন, আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বিদেশে থাকায় ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত সময় চাওয়া হয়।
ট্রাইব্যুনাল-২ গত ৫ ফেব্রুয়ারি মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় কাদের মোল্লাকে ছয়টি অভিযোগের মধ্যে দুটিতে যাবজ্জীবন এবং তিনটিতে ১৫ বছর করে কারাদণ্ডাদেশ দেন। অন্য অভিযোগ থেকে খালাস দেওয়া হয়। এ রায়ের বিরুদ্ধে দুই পক্ষই আপিল করে। ১ এপ্রিল শুনানি শুরু হয়।
নীলফামারী: সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরি নিয়োগ বাণিজ্যে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে নীলফামারীর সৈয়দপুর পৌর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ এজাজুল ইসলাম বাচ্চুর বাসায় হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।
বৃহস্পতিবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।
এর আগে একই অভিযোগে সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদ চত্বরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) অফিস সুপার এম আমিরুজ্জামান শামীমের মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা।
উপজেলা ছাত্রলীগের অভিযোগ, সৈয়দপুরের ২০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরি তথা নৈশপ্রহরী নিয়োগের ক্ষেত্রে ঘুষ বাণিজ্যে বাচ্চুর সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।
সৈয়দপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি দিল নেওয়াজ খান অভিযোগ করেন, ঘরে ঘরে কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে সরকার সৈয়দপুরের ২০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নৈশপ্রহরী নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করে। ওই পদে নিয়োগের নামে ২০ জন প্রার্থীর কাছ থেকে গড়ে তিন লাখ টাকা করে ঘুষ নেওয়া হয়।
স্থানীয় সংসদ সদস্য কর্নেল (অব.) এ এ মারুফ সাকলান ও সৈয়দপুর ইউএনও মো. শফিকুল ইসলামের নামে ওই ঘুষ আদায় করেন পৌর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ বাচ্চু ও ইউএনও কার্যালয়ের অফিস সুপার (ওএস) এম আমিরুজ্জামান।
ছাত্রলীগ সভাপতি আরও জানান, উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের খোর্দ সোনাখুলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ওই পদে একজন ছাত্রলীগ কর্মী নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয়েছিলো। কিন্তু ওই তদবির অগ্রাহ্য করে উৎকোচের বিনিময়ে অন্য এক ব্যক্তিকে ১৬ এপ্রিল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এর জের ধরে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা খোর্দ সোনাখুলী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরী নিয়োগ বন্ধের দাবি জানাতে সকাল থেকেই ইউএনও কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। এসময় তারা অফিস সুপারের মোটরসাইকেলও ভাঙচুর করে।
পরে উত্তেজিত শতাধিক নেতাকর্মী মিছিলসহ শহরের বাঁশবাড়ী মহল্লায় আওয়ামী লীগ নেতা বাচ্চুর বাসভবনে হামলা চালায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ইউএনও শফিকুল ইসলাম বর্তমানে দাপ্তরিক কাজে ঢাকায় অবস্থান করছেন। সেখান থেকে তিনি মোবাইল ফোনে জানান, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট পদে নিয়োগ সংক্রান্ত সুনির্দিষ্ট নীতিমালা রয়েছে। ওই পদে নিয়োগের দায়িত্বে আছেন সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালনা কমিটির সভাপতি, প্রধান শিকক্ষ ও প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার একজন প্রতিনিধি। কাজেই ওই নিয়োগ নিয়ে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগটি বিভ্রান্তিকর ও উদ্দেশ্যমূলক।
আওয়ামী লীগ নেতা বাচ্চু জানান, ২০টি স্কুলে নৈশপ্রহরী নিয়োগ করেছে সংশ্লিষ্ট কমিটি। সেখানে আমাদের সংশ্লিষ্টতা থাকবে কেন?
তিনি পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, "ছাত্রলীগের সভাপতি দিল নেওয়াজ খান এক প্রার্থীর কাছ থেকে মোটা অংকের ঘুষ নিয়ে তাকে নিয়োগ দিতে সংসদ সদস্যকে চাপ দিয়ে আসছিলেন। অথচ ওই প্রার্থী সাক্ষাৎকারে অকৃতকার্য হওয়ায় তাকে নিয়োগ দেয়নি সংশ্লিষ্টরা"।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, এজন্য ছাত্রলীগের সদস্যরা তার বাসভবনে হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনায় তিনি ছাত্রলীগের ওই নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করবেন বলে জানান।
সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান ছাত্রলীগের হামলার কথা স্বীকার করে জানান, পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেয়। তবে এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি।
রাষ্ট্রীয় কাজে দেশের বাইরে অবস্থান করায় স্থানীয় সংসদ সদস্য কর্নেল (অব.) এ এ মারুফ সাকলানের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
পটুয়াখালী: পটুয়াখালীর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি কলেজছাত্র মো. শহিদুল ইসলামকে আবারও কুপিয়েছে সন্ত্রাসীরা।ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে বরিশাল শেরে বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে পটুয়াখালী হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে।
আহত শহিদুল কলেজ রোড এলাকার মো. বাবুল মিয়ার ছেলে এবং পটুয়াখালী ইসহাক মডেল কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) প্রথম বর্ষের ছাত্র।
এদিকে, ঘটনার পর সদর থানা পুলিশ শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে চার যুবককে একটি দেশীয় ধারালো রামদাসহ আটক করেছে।
এরা হলেন-মনির হাওলাদার, জহিরুল ইসলাম বুলবুল, মেহেদি হাসান এবং জাকির হোসেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বাংলানিউজকে জানান, রাত সাড়ে ৯টার দিকে পটুয়াখালীর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে ৮/১০ জনের একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী ঢোকে।
এসময় ওই ওয়ার্ডের একটি বেডে চিকিৎসাধীন শহিদুলকে উপর্যুপুরি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে চলে যায়।
এ সময় গোটা হাসপাতাল এক ভুতুরে এলাকায় পরিণত হয়। কেউ কিছু বুঝে উঠার আগেই দ্বিগবিদিক ছোটাছোটি করতে থাকে।
পরে খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
শহিদুলের মা বাংলানিউজকে জানান, জেলা মৎস্যজীবি দলের সভাপতি আবু মোল্লার ছেলে ফরহাদ, খোকন এবং শানুসহ আরো কয়েকজন এ হামলায় অংশ নেয়।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, ঘটনার পর পর হাসপাতালে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে সন্দেহাতীতভাবে চারজনকে আটক করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বুধবার দুপুর ১২টার দিকে শহরের সবুজবাগ এলাকার প্রথম লেনে অভিযুক্ত ফরহাদের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী শহিদুলকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করলে তাকে পটুয়াখালী ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
একাত্তরের চেতনায় উজ্জীবিত চট্টগ্রামের এ তরুণ সংগ্রামীরা প্রতিটি মানুষের হূদয়ের মণিকোঠায় ঠাঁই করে নিয়েছেন। এ অর্থে পুরো চট্টগ্রামই জয়ে করে নিয়েছে তরুণ সমাজ। প্রেসক্লাব ছাড়াও নগরীর গোলপাহাড় এলাকায় যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে বিকাল থেকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলছে সেখানে। তার ফাঁকে ফাঁকে গগনবিদারী স্লোগান দিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দাবি করা হচ্ছে। এছাড়া নগরীর বিভিন্ন স্থানে স্বতস্ফূর্তভাবে খণ্ড খণ্ড মিছিল হয়েছে। এসব মিছিলকে করতালি দিয়ে স্বাগত জানাচ্ছেন এলাকাবাসী। তারুণ্যের এ জয়যাত্রায় কিছুটা পথ মিছিলের সাথে হেঁটেছেনও তারা।
চুয়েট শিক্ষকদের একাত্মতা ঘোষণা
এদিকে চুয়েট প্রতিনিধি জানান, কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় না হওয়া পর্যন্ত টানা আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) শিক্ষক সমিতি। গতকাল রবিবার সকালে চুয়েটের কেন্দ , ডিবেটিং সোসাইটি, সাংস্কৃতিক সংগঠন জয়ধ্বনি, রোবো মেকাট্রনিক্স এসোসিয়েশন, এসরো ও সাংবাদিক সমতিসহ ক্যাম্পাসের সক্রিয় ছাত্র সংগঠনগুলো।
ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব তিনদিনের সফরে এখন ঢাকায় আছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা,অর্থমন্ত্রী এএমএ মুহিত, স্থানীয় সরকার মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ও পররাষ্ট্র মন্ত্রী ডা. দীপু মনির সঙ্গে সাক্ষাত্ করেন তিনি। পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হকের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। বৈঠকে নিরাপত্তা, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ কানেক্টিভিটি, বিদ্যুত্ খাতে সহযোগিতা, পানি ইস্যুসহ সার্বিক সব বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বৈঠকে দুই দেশের পররাষ্ট্র সার্ভিসের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ, পেশাগত মনোন্নয়ন ও সফর বিনিময়ের লক্ষ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়। ভারতের পররাষ্ট্র সার্ভিস ইনস্টিটিউট ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সার্ভিস একাডেমি এই চুক্তি বাস্তবায়ন করবে। অন্যান্য সার্ভিসের কর্মকর্তাদেরও চুক্তি অনুযায়ী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা হবে।
সাংবাদিক সম্মেলনে রঞ্জন মাথাই আরো বলেন, যত দ্রুত তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষরে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। কোন দিনক্ষণ জানিয়ে আমরা প্রতিশ্রুতি পূরণ করব না। তবে খুব শীঘ্রই তিস্তা চুক্তি হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নয়াদিল্লী সফরসূচি নির্ধারণ নিয়ে আলোচনা চলছে। রঞ্জন মাথাই আরো বলেন, সীমান্ত হত্যা বন্ধে সর্বোচ্চ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। অস্ত্রধারীদের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় রাতের বেলায় সীমান্ত হত্যা ঘটে। গত বছর দশজন ভারতীয় নিহত হয়। যৌথ টহল ও সীমান্ত বাহিনীগুলো সর্বোচ্চ পর্যায়ে সংযম হলে সীমান্ত হত্যা কমে যাবে। সীমান্তে নিরীহ তরুণী ফেলানীকে বিএসএফ গুলি করে হত্যার ঘটনাটি তার জানা নেই বলে রঞ্জন মাথাই এক প্রশ্নের উত্তরে জানান।
বহুল আলোচিত পদ্মা সেতু প্রকল্পের অর্থায়নে ভারতের অংশগ্রহণ প্রশ্নে রঞ্জন মাথাই বলেন, পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোন আলোচনা এখনও শুরু হয়নি। এটা একটি বেশ বড় প্রকল্প। একক দেশ বা সংস্থার পক্ষে এই প্রকল্পে অর্থায়ন করা সম্ভব নয়। বাংলাদেশ সরকার অন্য দাতা ও সহযোগীদের সঙ্গে আলোচনা করছে। এক বিলিয়ন ডলারের ঋণের মধ্যে ২০০ মিলিয়ন ডলার অনুদান দিচ্ছে ভারত। বাংলাদেশ এই অনুদানের অর্থ যেকোন কাজে ব্যবহার করতে পারে।
এছাড়া পদ্মা সেতু নিয়ে কোন কনসোটিয়াম হলে ভারতীয় কোম্পানিগুলো অংশ নিতে আগ্রহী হবে।
সাংবাদিক সম্মেলন ও দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে ভারতে হাইকমিশনার তারিক এ করিম, অতিরিক্ত পররাষ্ট্র সচিব মোস্তফা কামালসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে ভারতীয় পক্ষে ছিলেন ভারতের হাইকমিশনার পঙ্কজ সরণসহ সিনিয়র কর্মকর্তারা।নিজেদের উদ্যোগে মধ্যস্থতায় নেমেছে মুসলিম দেশগুলো
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আরব দেশগুলো নিজেদের উদ্যোগে এ মধ্যস্থতার উদ্যোগ নিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় সরকারের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তার কাছে এমন মনোভাবই জানিয়েছেন মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশের শীর্ষ এক কূটনীতিক।
গতকালের ওই আলোচনায় মধ্যপ্রাচ্যের ওই কূটনীতিক এমনটাও জানিয়েছেন যে বাংলাদেশের চলমান সহিংসতা ও সংঘাতময় রাজনৈতিক সংকট উত্তরণে ওআইসি এবং মুসলিম বিশ্বের দেশ হিসেবে তাঁরা এ উদ্যোগ নিয়েছেন। বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার উদ্দেশ্যে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে তাঁরা সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে সংলাপ অনুষ্ঠানে আগ্রহী।
গত বুধবার রাতে ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত শায়ের মোহাম্মদের নেতৃত্বে ১০টি মুসলিম দেশের কূটনীতিকেরা বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দলের গুলশানের কার্যালয়ে দেখা করেন। প্রায় দুই ঘণ্টার এ বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরাক, মরক্কো, ওমান, মিসর ও লিবিয়ার কূটনীতিকেরা।
বৈঠক শেষে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, মুসলিম দেশগুলোর অনুরোধেই এ বৈঠকের আয়োজন করা হয়। বন্ধু হিসেবে তাঁরা বাংলাদেশের শান্তি ও সমৃদ্ধি চান। তাঁরা চান, বাংলাদেশের গণতন্ত্র আরও শক্তিশালী হোক। তাই সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোকে তাঁরা সংলাপে বসার তাগিদ দিয়েছেন। এ উদ্দেশ্যে তাঁরা বিরোধী দলের পাশাপাশি সরকারের সঙ্গে অব্যাহতভাবে আলোচনার প্রক্রিয়া চালিয়ে যেতে চান।
বুধবারের বৈঠকে বিএনপির চেয়ারপারসন আরব দেশের কূটনীতিকদের স্পষ্টভাবেই জানিয়েছেন, বাংলাদেশের মানুষ একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেখতে চায়। কিন্তু দলীয় সরকারের অধীনে তা সম্ভব নয়। তাই তাঁর দল আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না। গতকাল প্রথম আলোর কাছে এ তথ্যই জানিয়েছে কূটনৈতিক একটি সূত্র।
ওই সূত্রমতে, খালেদা জিয়া গত বুধবার কূটনীতিকদের জানান, বর্তমান সরকারের অধীনে ছাড়া অন্য কোনো প্রক্রিয়ায় নির্বাচন হবে, তা নিয়ে তিনি সংলাপে বসতে রাজি আছেন। তবে সরকার এখন পর্যন্ত সংলাপের ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেয়নি।
সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও দলীয় লোকদের দিয়ে কীভাবে হতাহতের ঘটনা ঘটিয়েছে, তার ভিডিওচিত্র ও পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে খালেদা জিয়া কূটনীতিকদের কাছে পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেন।
কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে এবার প্রচলিত রীতির বাইরে অবস্থান নিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যসহ আরব বিশ্বের দেশগুলো। এর আগে রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এভাবে নিজেদের জড়ায়নি এসব দেশ।বড় দলগুলোর ক্ষমতার রাজনীতিই হেফাজতকে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলছে
তবে দল দুটির নেতারা স্বীকার করেছেন, এই প্রকাশ্য অবস্থানের বাইরে আগামী নির্বাচনে ভোটের রাজনীতিও দল দুটির কাছে গুরুত্বপূর্ণ। হেফাজতের 'ভোটব্যাংক' ধরতে এইচ এম এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি তাদের কর্মসূচিতে সমর্থন দিচ্ছে এবং যোগাযোগ রাখছে বলে স্বীকারই করে নিয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ বা বিএনপি সেভাবে এখনো ভোটের রাজনীতির কথা স্বীকার করছে না।
তবে এরই মধ্যে 'আকাঙ্ক্ষা ও ছক অনুযায়ী' ৬ এপ্রিলে লংমার্চ শেষে মতিঝিলে টানা অবস্থান কর্মসূচিতে না যাওয়ায় হেফাজতের সঙ্গে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বের মন-কষাকষি ও দূরত্ব বেড়েছে। এখন এ দূরত্ব কমানোর জন্য ধর্মভিত্তিক একটি দল তৎপরতাও শুরু করেছে বলে জানা গেছে।
৬ এপ্রিলের মহাসমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হওয়ায় সরকার আপাতত স্বস্তিতে থাকলেও হেফাজতের আগামী ৫ মের 'ঢাকা অবরোধ' কর্মসূচি নিয়ে উৎকণ্ঠা রয়ে গেছে। এ কারণে হেফাজতের সঙ্গে যোগাযোগ ও সমঝোতার জন্য সরকারি সংস্থাগুলো সক্রিয় আছে বলে সরকারের উচ্চপর্যায়ের সূত্র থেকে জানা গেছে।
বিএনপির সঙ্গে মন-কষাকষি: ১৮-দলীয় জোটের একাধিক উচ্চপর্যায়ের সূত্র থেকে জানা গেছে, বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব আশা করেছিলেন, দাবি-দাওয়ার ব্যাপারে অনড় থেকে হেফাজতে ইসলাম ৬ এপ্রিল রাজধানীর রাস্তায় টানা অবস্থান নেবে। লাগাতার হরতালসহ বড় ধরনের কর্মসূচিতে যাবে। কিন্তু তা না হওয়ায় হেফাজতের ওপর বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব ক্ষুব্ধ হন। হেফাজতকে কঠোর কর্মসূচির দিকে নিয়ে যেতে ব্যর্থ হওয়ায় ৬ এপ্রিল রাতে ১৮ দলের বৈঠকে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া হেফাজতের সঙ্গে যুক্ত জোটের শরিক ইসলামী ঐক্যজোট, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও খেলাফত মজলিসের নেতাদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ সময় কোনো কোনো নেতার সঙ্গে রাগারাগিও হয় বলে বৈঠকে উপস্থিত সূত্র জানায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ১৮-দলীয় জোটের শরিক দলের এক শীর্ষনেতা জানান, হেফাজতের পরবর্তী কর্মসূচির ব্যাপারে প্রভাব খাটাতে জোটের শরিক কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক দলগুলোর প্রতি বিএনপির আগাম কোনো পরামর্শ বা নির্দেশনা ছিল না। কারণ, তারা ভেবেছিল, প্রত্যাশা অনুযায়ী হেফাজত ঢাকার রাস্তায় টানা অবস্থান নেবে। ৬ এপ্রিল দুপুর দুইটার দিকে বিএনপির একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা মুঠোফোনে ধর্মভিত্তিক একটি দলের কেন্দ্রীয় এক নেতাকে বলেন, হেফাজত যেন রাস্তায় অবস্থান নেয়। কিন্তু ওই সময় আর সে ব্যবস্থা করা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দেন জোটের ওই নেতা।
তবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, 'হেফাজতের কর্মসূচি থেকে বিএনপির চাওয়া-পাওয়ার কিছু ছিল না। দলের নীতি-আদর্শের সঙ্গে কিছু বিষয়ে মিল থাকায় আমরা তাদের কর্মসূচিতে নৈতিক সমর্থন দিয়েছিলাম। এর বাইরে তাদের সঙ্গে আমাদের আর কোনো সম্পর্ক নেই। তাই এতে হতাশ বা অসন্তুষ্টিরও কিছু নেই।'
আওয়ামী লীগ ও জাপা: আওয়ামী লীগের কৌশল হচ্ছে, দলের মধ্যম সারির নেতারা হেফাজতের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেবেন। আবার সরকার হিসেবে তারা বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে হেফাজতের সঙ্গে যোগাযোগ ও সমঝোতার চেষ্টা অব্যাহত রাখবে। কারণ, ৫ মের ঢাকা অবরোধ কর্মসূচিকে ঘিরে কোনো কোনো মহল সরকার বা দেশকে অস্থিতিশীল করার সুযোগ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করছে তারা।
তবে আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর একজন সদস্য বলেন, ধর্মের কথা বলে জমায়েত হওয়া, আর রাজনীতি ভিন্ন কথা। যখনই হেফাজতে ইসলাম রাজনৈতিক ব্যানারে আসবে, তখন তাদের প্রতি মানুষের আগ্রহ আর থাকবে না।
হেফাজতে ইসলামকে 'রাজনৈতিক শক্তি' বলে মনে করছেন কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, তাদের পরবর্তী কাজগুলো দেখতে হবে। এরপর এ বিষয়ে মূল্যায়ন করা যাবে।
৫ মে হেফাজতের 'ঢাকা অবরোধ' কর্মসূচিতে সরকার কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা করছে কি না—এ প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'আমরা তো আশা করি তারা শান্তিপূর্ণভাবে করবে। কিন্তু আশা অনেক সময় আশঙ্কায় পরিণত হয়।'
মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টি হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচিকে সমর্থন দিয়েছিল। সর্বশেষ গত সোমবার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সভায় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ জানান, তাঁর সঙ্গে হেফাজতে ইসলামের যোগাযোগ আছে।
জাতীয় পার্টির ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো জানায়, কওমি মাদ্রাসাকেন্দ্রিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের সারা দেশের একটি বড় ভোটব্যাংক আছে বলে মনে করা হচ্ছে। আগামী নির্বাচনে এই ভোটে ভাগ বসানোর আশায় জাতীয় পার্টি হেফাজতের পাশে দাঁড়িয়েছে। সূত্রগুলো বলছে, ধর্মভিত্তিক কয়েকটি দলকে নিয়ে নির্বাচনের আগে একটি জোট গঠন করারও আকাঙ্ক্ষা আছে এরশাদের।
হেফাজতকে সমর্থন দেওয়ার পক্ষে যুক্তি হিসেবে জাপার মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার গত মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, 'এতে ইমানি দায়িত্বও পালন করা হলো, আবার তাদের একটা ভোটব্যাংক আছে, সে বিষয়টিও চিন্তায় রয়েছে আমাদের।'
অবশ্য, ১৪-দলীয় জোটের শরিক বাম দলগুলোসহ প্রগতিশীল ব্যক্তিরা হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফার জোর বিরোধিতা করছেন। বিশেষ করে, তাঁরা এসব দাবির কয়েকটি নারীর উন্নয়ন ও অগ্রগতি পথে বাধা হিসেবে বিবেচনা করছেন।
জোটের শরিকদের মধ্যে প্রতিক্রিয়া: সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, হেফাজতে ইসলামের বিষয়ে জোটের বৈঠকে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বের নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ায় শরিক ধর্মভিত্তিক দলগুলোর নেতারাও ক্ষুব্ধ হন। পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে ১৮-দলীয় জোটের পরবর্তী বৈঠকগুলোতে না যাওয়ার মতো অবস্থানের পক্ষেরও একটি দলের মহাসচিব বাকি শরিকদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে অবশ্য পরিস্থিতি শান্ত হয় এবং সে উদ্যোগ থেমে যায়। তবে ধর্মভিত্তিক দলগুলোর প্রতিক্রিয়া ইতিমধ্যে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে ১৮-দলীয় জোটের শরিক জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব ও হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির মুহাম্মদ ওয়াক্কাছ তাঁদের ওপর খালেদা জিয়ার ক্ষুব্ধ হওয়ার বিষয়টি এড়িয়ে যান। তবে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, 'আরও কিছু কর্মসূচি আসতে পারত বলে তিনি (খালেদা জিয়া) মত দিয়েছেন। রাগারাগি করেছেন বলে জানি না। তা ছাড়া হেফাজতে ইসলাম একটি প্ল্যাটফর্ম, এটি জোটের শরিক দল নয়। তাই ওনার রাগ করার অধিকারও নেই।'
হেফাজতে ইসলাম যা বলে: কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মুফতি মোহাম্মদ ফয়জুল্লাহ বলেন, হেফাজতে ইসলাম অরাজনৈতিক সংগঠন। তবে রাষ্ট্র পরিচালনার প্রয়োজনীয় যোগ্যতা হেফাজতের আছে। আওয়ামী লীগ আপনাদের ১৩ দফা পুরোপুরি মানবে না বলে সরাসরি বলছে। বিএনপিও এখন বলছে, সব দাবির সঙ্গে তারা একমত নয়। তাহলে নিজেরা ক্ষমতায় গিয়ে আপনারা ১৩ দফা বাস্তবায়ন করবেন—এ প্রশ্নে জবাবে ফয়জুল্লাহ বলেন, 'ক্ষমতায় যাওয়ার চিন্তা করে আমরা এ আন্দোলন করছি না। যারা ক্ষমতায় থাকবে বা যাবে, তাদের এই দাবি মেনেই থাকতে বা যেতে হবে।'
এ অনুষ্ঠানে অ্যান স্টক তরুণদের উদ্দেশে বলেন, বাংলাদেশের তরুণরা সমাজ ও মানুষের উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। পৃথিবীতে এমন কোন সমস্যা নেই যার সমাধান করা যায় না। দেশের মানুষের সঙ্গে সরকার একযোগে মিলে কাজ করলে যে কোন সমস্যাকে সমাধান করা সম্ভব। সমস্যা সম্পর্কে মানুষ জানে, এই সমস্যা সমাধানে শুধু তাদের সচেতন করে তুলতে হবে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন 'জাগো বাংলাদেশ'-এর প্রতিষ্ঠাতা করবী রাশেদ। নারী ও শিশুর যৌন নির্যাতনসহ নারীর ক্ষমতায়ন ও নারী অধিকার সম্পর্কে বাংলাদেশের অবস্থা ও তরুণদের কার্যক্রমের চিত্র তুলে ধরেন আফসান আহমেদ, খালেদ মাহমুদ, প্রিয়তা ইফতেখার, নদী রশীদ প্রমুখ।
যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে জেগে ওঠা রাজধানীর শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চে গতকাল রবিবার জমায়েত তরুণ-কিশোর-শিশুদের বাহ্যিক অবয়ব ছিল এমনটাই। টানা ষষ্ঠ দিনের আন্দোলনে এসে তারুণ্যদীপ্ত স্লোগান যেন পেয়েছে আরো জোর। সকল যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। তরুণদের আন্দোলনের সাথে সংহতি জানিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। স্পিকারের কাছে দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে স্মারকলিপিও পেশ করেছেন তারা। মশাল মিছিল, পতাকা মিছিল, স্লোগান, নাটিকা মঞ্চস্থ, ব্যঙ্গচিত্র অঙ্কন, কবিতা, স্মারকলিপি পেশ, প্রতীকী ফাঁসির মঞ্চ তৈরি, গণস্বাক্ষর, মানববন্ধন, গান, গণসঙ্গীত, বাদ্যসহ নানা আয়োজনে যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবি জানিয়ে যাচ্ছেন তরুণরা। এ আন্দোলন সারাক্ষণ উজ্জীবিত রাখছে স্লোগান। হাজারো মানুষের কণ্ঠে উচ্চারিত হচ্ছে-'ফাঁসি, ফাঁসি, ফাঁসি চাই, কাদের মোল্লার ফাঁসি চাই', 'ফাঁসি, ফাঁসি, যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি' 'জয় বাংলা', তোমার আমার ঠিকানা, পদ্মা মেঘনা যমুনা', 'আমাদের ধমনিতে শহীদের রক্ত, এই রক্ত কোনোদিন পরাভব মানে না।' একাত্তরের মন্ত্রে উজ্জীবিত তারুণ্য যেন ভুলে গেছে ক্লান্তি।
রাজধানীর শাহবাগে গত ৫ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া 'গণজাগরণে' তারুণ্যের প্রতিবাদী কণ্ঠের সাথে সুর মিলিয়েছেন দেশের সর্বস্তরের মানুষ। প্রজন্ম চত্বরে তরুণদের সাথে যোগ দিয়েছেন চার বছরের শিশু থেকে আশি বছরের বয়স্ক নাগরিক। স্কুলগামী শিক্ষার্থী, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী, রিকশা চালক, দিনমজুর, দোকানদার, হকার, সব শ্রেণীর মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে শাহবাগ। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সবাই নিজেদের উজ্জীবিত করে নিলেন আরো একবার। 'তরুণ প্রজন্মের মুক্তিযুদ্ধকে' স্যালুট জানালেন একাত্তরের রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধারা।
গত কয়েকদিনের ধারাবাহিকতায় গতকালও রোদ ছিল বেশ চড়া। দুপুরের রোদ উপেক্ষা করে গণজাগরণ মঞ্চে সমবেত হয়েছিলেন হাজার হাজার মানুষ। মূল মঞ্চের স্লোগানের সাথে তাল মিলিয়ে স্লোগান দিলেন অনেকে। আবার পৃথক গ্রুপে বিভক্ত হয়ে সারাদিনই সমবেত স্লোগান তুললেন কেউ কেউ। সড়কে প্রতিবাদী ব্যঙ্গচিত্র আঁকলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার শিক্ষার্থীরা। রাজধানীর বিভিন্ন স্কুল-কলেজ থেকে আসা শিক্ষার্থীরা বাদ্য বাজিয়ে ও স্লোগানে মুখর করলো শাহবাগ চত্বর।
স্পিকারের কাছে স্মারকলিপি
শাহবাগে চলমান আন্দোলনে তরুণরা গত ছয় দিন সম্মিলিতভাবে যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবি জানিয়ে আসছেন। গতকাল বিকালে তারা যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিসহ ছয় দফা বাস্তবায়নের দাবিতে জাতীয় সংসদের স্পিকার আবদুল হামিদকে স্মারকলিপি দিয়েছেন।
ব্লগার এন্ড অনলাইন এক্টিভিস্ট'র আহবায়ক ডা. ইমরান এইচ সরকার স্বাক্ষরিত ঐ স্মারকলিপিতে কাদের মোল্লাসহ সকল যুদ্ধাপরাধীর সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধন করা, জামায়াতের আর্থিক ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বাজেয়াপ্ত করা, জামায়াতের মালিকানাধীন গণমাধ্যম নিষিদ্ধ, ট্রাইব্যুনালে সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা করার ক্ষমতা রহিত করা, জামায়াত-শিবিরসহ ধর্মীয় রাজনীতি নিষিদ্ধ করা, যেসব রাজনৈতিক দল, ব্যক্তি, শক্তি ও প্রতিষ্ঠান যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষার চেষ্টা করছে তাদের আইনের আওতায় এনে বিচার করা, ১৯৭৫'র পর সাজাপ্রাপ্ত ও বিচারাধীন যে সমস্ত যুদ্ধাপরাধী রাজাকার আলবদরকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে তাদের পুনরায় গ্রেফতার এবং আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে বিচারের দাবি জানানো হয়।
আন্দোলনরতদের পক্ষে গতকাল বিকালে সংসদে স্পিকারের অফিসে স্মারকলিপি জমা দেন পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। ঐ দলের নেতা ডা. ইমরান এইচ সরকার বলেন, স্পিকার একজন নিরপেক্ষ ব্যক্তি। এজন্য আমরা তার কাছে স্মারকলিপি দিয়েছি। দাবি বাস্তবায়নেরও দাবি জানিয়েছি।
এ বিষয়ে স্পিকার এডভোকেট আবদুল হামিদ বলেন, স্মারকলিপিটি সংসদ নেতা, বিরোধী দলীয় নেতা এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীদের কাছে পাঠানো হবে।
রাতে স্মারকলিপির একটি অনুলিপি পাঠ করা হয় গণজাগরণ মঞ্চে।
ক্রিকেট দলের সংহতিতে উজ্জীবিত
বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল বাংলাদেশের 'তারুণ্যের আইডলে' পরিণত হয়েছে অনেক দিন আগেই। গতকাল বিসিবি'র সভাপতিসহ ক্রিকেট দলের সদস্যরা প্রজন্ম চত্বরে এসে সংহতি জানান। ক্রিকেটারদের উপস্থিতিতে আন্দোলনরত উপস্থিত জনতার মাঝে উদ্দীপনা ছড়িয়ে পড়ে।
দুপুর দেড়টার দিকে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানের নেতৃত্বে গণজাগরণ মঞ্চে উপস্থিত হন প্রধান নির্বাচক আকরাম খান, পরিচালক জালাল ইউনুস, সিইও নিজাম উদ্দিন চৌধুরী, পরিচালক মাহাবুবুল আনাম, ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশার, লোকমান হোসেন ভুঁইয়া, ইসমাইল হায়দার মল্লিক, আজম নাসির, আহমেদ সাজ্জাদুল আলম ববি, আফজালুর রহমান সিনহা, ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম, মাশরাফি বিন মর্তুজা, মোহাম্মদ আশরাফুল, আবদুর রাজ্জাক, নাসির হোসেন, ইলিয়াস সানি, জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার জাহাঙ্গীর শাহ বাদশা প্রমুখ।
সমাবেশে স্লোগান তোলেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান। তিনি বলেন, দেশের জন্য স্লোগান দিতে পেরে গর্বে আমার বুক ভরে গেছে। স্লোগানে এত সুখ আগে কখনো অনুভব করিনি। রাজাকারদের ফাঁসির দাবিতে যে গণআন্দোলন চলছে, তাতে সংহতি জানাতে এসেছি। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সব খেলোয়াড় এর সঙ্গে সংহতি জানিয়েছেন। তবে বিপিএল চলার কারণে সবাই আসতে পারেনি।
তিনি বলেন, রাজাকার মুক্ত উন্নত বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখি। এ তরুণদের চোখে আমি সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথ খুঁজে পেয়েছি। তাই সংহতি জানিয়েছি।
ক্রিকেটার আশরাফুল ইসলাম বলেন, খেলার কারণে আমরা আন্দোলনে অংশ নিতে পারিনি। তাদের এ আন্দোলনে আমাদের সমর্থন রয়েছে ও থাকবে। এটি অভূতপূর্ব এক আন্দোলন।
দুপুর সাড়ে ১১টার দিকে দুরন্ত রাজশাহী ক্রিকেট দলের কয়েকজন খেলোয়াড়ও আন্দোলনরতদের সাথে সংহতি জানিয়েছেন। এর আগে শনিবার রাতে ক্রিকেটার শাহরিয়ার নাফিসও আন্দোলনের সাথে সংহতি জানিয়েছিলেন।
পতাকা হাতে নতুন বাংলাদেশ
গতকাল সন্ধ্যায় পতাকা ও মশাল হাতে মিছিল করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীরা। এ মিছিলে শরিক হন আন্দোলনে আসা নানা বয়সী মানুষ। মিছিলে অংশগ্রহণকারী সকলেই যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে স্লোগান দেন। সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত নানা সংগঠন ও ব্যক্তির উদ্যোগে মোমবাতি প্রজ্বলন করেও একই দাবি জানানো হয়।
স্লোগানে ধ্বনিত মূলমন্ত্র
শাহবাগের 'গণজাগরণের' শুরু থেকেই প্রতিবাদের প্রধান ভাষায় পরিণত হয়েছে স্লোগান। মূল মঞ্চের বাইরেও এখন খণ্ডে খণ্ডে বিভক্ত হয়ে স্লোগান তুলছেন আন্দোলনরতরা। ক্লান্তিহীনভাবে তরুণরা স্লোগান দিচ্ছেন যুদ্ধাপরাধের বিচারের দাবিতে। জনপ্রিয়তা পেয়েছে 'ক-তে কাদের মোল্লা, তুই রাজাকার তুই রাজাকার'; 'ক-তে কামারুজ্জামান, তুই রাজাকার তুই রাজাকার'; 'গ-তে গোলাম আযম, তুই রাজাকার তুই রাজাকার'; 'স-তে সাকা, তুই রাজাকার তুই রাজাকার'; 'ম-তে মুজাহিদ, তুই রাজাকার তুই রাজাকার'; 'ন-তে নিজামী, তুই রাজাকার তুই রাজাকার'; 'স-তে সাঈদী, তুই রাজাকার তুই রাজাকার' স্লোগানটি।
গতকাল সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত স্লোগান ছিল- 'তোমার আমার ঠিকানা, পদ্মা মেঘনা যমুনা', ফাঁসি, ফাঁসি, ফাঁসি চাই, কাদের মোল্লার ফাঁসি চাই, 'একাত্তরের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার', 'আমাদের ধমনিতে শহীদের রক্ত, এই রক্ত কোনোদিন পরাভব মানে না।'
উচ্চারিত হয়েছে, 'সামপ্রদায়িকতার আস্তানা, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও', 'জ্বালো জ্বালো, আগুন জ্বালো', 'পাকিস্তানের প্রেতাত্মারা, পাকিস্তানেই ফিরে যা', 'বাংলাদেশের মাটিতে জামায়াত-শিবিরের ঠাঁই নাই'; 'আমাদের সংগ্রাম চলছে, চলবে', 'আর কোনো দাবি নাই, রাজাকারের ফাঁসি চাই', 'জামায়াতে ইসলাম, মেড ইন পাকিস্তান', 'এসো ভাই এসো বোন, গড়ে তুলি আন্দোলন'।
আজ টোকেন খাদ্য বিতরণ শুরু
আন্দোলনের শুরু থেকেই আন্দোলরত তরুণরা নিজেরা চাঁদা উঠিয়ে এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তি উদ্যোগে আনা খাদ্যের মাধ্যমে খাবারের সংস্থান করছেন। এতে আজ থেকে যুক্ত হচ্ছে নতুন মাত্রা। অবস্থান কর্মসূচিতে আসা আন্দোলনরত জনতার জন্য স্বল্পমূল্যে খাবারের ব্যবস্থা করেছে সাংস্কৃতিক ইউনিয়ন। আয়োজকরা জানান, আন্দোলনে আসা জনতাকে সহায়তার উদ্দেশ্যে এ টোকেন-খাদ্যের ব্যবস্থা করা হয়েছে। জাদুঘরের মূল ফটকের সামনে স্থাপিত টোকেন কাউন্টার থেকে ৫ বা ১০ টাকার বিনিময়ে টোকেন সংগ্রহ করে পার্শ্ববর্তী অন্য কাউন্টার থেকে খাদ্য সংগ্রহ করা যাবে। এ জন্য সকল আয়োজন সম্পন্ন করা হয়েছে। আর ব্যক্তিগত বা প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে আসা খাদ্য সরসরি সমাবেশেই বিতরণ করা হবে।
এছাড়া তথ্যকেন্দ্র তৈরি করেছে সাংস্কৃতিক ইউনিয়ন। চিকিত্সা কেন্দ্র তৈরি করে চিকিত্সার ব্যবস্থা করেছে ডক্টরস ফর হেলথ এন্ড এনভায়রনমেন্ট।
কিছু সময়ে জন্য অবমুক্ত হলো এক পাশের সড়ক
শাহবাগ মোড়ে চলমান আন্দোলন শুরুর দিন থেকেই ঐ সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। গতকাল সকাল থেকে দুপুর পৌনে ১২টা পর্যন্ত ঐ এলাকা দিয়ে যান চলাচল করে। তবে দুপুরে সমাগম বেড়ে যাওয়ায় পৌনে ১২টার দিকে তা আবারো বন্ধ হয়ে যায়। শাহবাগ মোড় অবরুদ্ধ থাকায় সংশ্লিষ্ট সড়কগুলেতে স্থায়ী যানজট তৈরি হয়েছে। তবে এ ভোগান্তিকে সাধারণ জনগণ 'বৃহত্তর স্বার্থে' মেনে নিয়েছেন বলেও জানা গেছে।
'আয় রাজাকার আয়'
ফাঁসির দাবিতে উত্তাল শাহবাগে তৈরি করা হয়েছে প্রতীকী ফাঁসির মঞ্চ। গতকাল রবিবার শাহবাগ মোড় থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সামনে পর্যন্ত অন্তত পাঁচটি রূপক ফাঁসির মঞ্চ তৈরি করেছেন আন্দোলনরতরা। চারুকলা অনুষদের সামনে একটি রূপক ফাঁসির মঞ্চ তৈরি করে তরুণরা স্লোগান দেন 'আয় রাজাকার আয়, ফাঁসি দেবো, আয়'। জাদুঘরের সামনে প্রতীকী ফাঁসির মঞ্চে মঞ্চস্থ হয় রাজাকারদের বিরুদ্ধে ফাঁসির রায়। শাহবাগ সড়কে অন্য একটি মঞ্চে ফাঁসে ঝুলতে থাকে একটি ডামি।
আগ্রহ বাড়ছে
গণজাগরণে তরুণদের এবং জনতার আগ্রহ বাড়ছে। গতকাল সাপ্তাহিক কর্মদিবসের শুরুর দিনেও হাজার হাজার মানুষ ভিড় করে শাহবাগে। সংহতি জানায় তরুণদের আন্দোলনের সাথে। শাহবাগে এসে আন্দোলনের সাথে সংহতি জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। দুপুরে তিনি শাহবাগে আসলে আন্দোলনরতরা তাকে হাততালি দিয়ে অভিনন্দন জানান। সংহতি জানিয়েছেন নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, লেখক আনিসুল হক, রোকেয়া প্রাচী, চলচ্চিত্র পরিচালক শহীদুল ইসলাম খোকন প্রমুখ।
সংহতি জানিয়ে আন্দোলনে শরিক হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, এআইইউবি ইউনিভার্সিটি, সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটি, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ, ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজ, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়, তিতুমীর কলেজ, কুয়েটসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। স্লোগানে, গানে, নানা আয়োজনে তারা মুখরিত রাখেন শাহবাগ চত্বর।
মুক্তিযোদ্ধাদের 'নতুন যুদ্ধ'
শাহবাগে তরুণদের আন্দোলনে যুক্ত হয়েছেন একাত্তরের রনাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধারাও। তারা আন্দোলনরতদের নানাভাবে উত্সাহ দিচ্ছেন ও সহায়তা করছেন। স্লোগান তুলছেন তরুণ কণ্ঠের সাথে। এমনই একজন সৈয়দ রফিকুল ইসলাম বীর প্রতীক। তিনি গতকাল বিকালে বললেন, এ আন্দোলন আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নতুন জন্ম। ২০১৩ সালে ১৯৭১কে দেখছি। দেশ স্বাধীন করলেও চেতনা বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছি। এরা সেই চেতনা বাস্তবায়ন করবে।
তিনি বলেন, রাজনীতিকরা আমাদের চেতনা বাস্তবায়ন করেনি। তরুণরা পারবে। তারা যেটি করছে, এটিও রাজনীতি। তবে দলীয় রাজনীতিতে তাদের জড়ানো চলবে না। দলীয় যুক্ততা যেন এ আন্দোলনে না থাকে। যতটুকু পারছি উত্সাহ ও সহায়তা জোগাচ্ছি। এটি আমাদের জন্য নতুন করে মুক্তিযুদ্ধ।
ফরিদপুর: ফরিদপুরে হেফাজতে ইসলামের মহাসমাবেশকে ঘিরে কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে পুলিশ। সমাবেশকে ঘিরে তিন স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা পুলিশ।ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় ফরিদপুরের বিভিন্ন থানা ও বরিশাল জেলা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সমাবেশস্থলে এসেছে।
ফরিদপুর পুলিশের সদর সার্কেল এএসপি কামরুজ্জামান জানিয়েছেন, ফরিদপুরের বিভিন্ন থানা ও জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ প্রায় পাঁচ শতাধিক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
এর মধ্যে তিন জন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারসহ ফরিদপুরের ৪৬৪ জন ও বরিশাল থেকে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের ৫৮ জন ফোর্স সমাবেশস্থলে নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন।
তিনি বলেন, সমাবেশস্থল ও সমাবেশের চারপাশে ছাড়াও শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট রাজবাড়ী রাস্তার মোড়, শামসুল উলুম মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন স্থানে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
কামরুজ্জামান বলেন, যে কোনো ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে ফরিদপুর জেলা পুলিশ কঠোর ও সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
সময় আর বেশী দিন নাইরে মনা.....
খুন-ধর্ষণের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মামলায় রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের আপিল শুনানি শুরু হবে ২ মে।
আপিল বিভাগের এই বেঞ্চই জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন সাজার রায়ের বিরুদ্ধে দুই পক্ষের আপিল শুনছে।
শুধুমাত্র ফেনী জেলা থেকেই প্রতি বছর যাকাত এর টাকা সংগ্রহ করে জামাত এর বায়তুল মাল এ প্রেরন করা হয় ৫ কোটি টাকারো বেশি। ফেনীর মত ছোট শহরের চিত্র যদি এই হয় তো ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রামে বা সারা বাংলাদেশে গরিবের হক যাকাত এর বিশাল একটি অংশ চলে যাচ্ছে জামাত এর হাতে। এই টাকা দিয়ে তারা শপিং মল, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, ব্যাংক, কোচিং সেন্টার, প্রমদতরী,শতকোটি টাকা ব্যায়ে টিভি চ্যানেল আর দৈনিক পত্রিকা, অত্যাধুনিক হাসপাতালের মত ব্যবসা প্রতিসঠিত করছে যার সেবা দরিদ্র মানুষ এর নাগালের বাইরে এবং এগুলো কম দামে সেবা দেয় শুধুমাত্র দলীয় পরিচয়ের সুত্রে।ধর্ম নিয়ে এই ব্যবসা কি ইসলাম অনুমোদন করে? না। ইসলামি রিতিমত ব্যবসা আর ইসলাম নিয়ে ব্যবসা এক নয়। যারা বলছেন, ইসলাম জীবন এর সবক্ষেত্রে ব্যবহার করতে হবে। তাদের বোঝা উচিত ইসলাম এর ব্যবহার আর ইসলামকে ব্যবহার এক নয়। আপনি কাউকে না ঠকিয়ে ব্যবসা করলেন, তো আপনি ইসলামি রিতিমত ব্যবসা করলেন। কিন্তু আপনি গরিবের হক জাকাত সংগ্রহ করে শপিং মল বানিয়ে ব্যবসা শুরু করলেন যেখানে দোকানে পুতুল( মূরতি) এর গায়ে শোভা পায় ২০, ০০০ টাকা দামের পাতলা কাপড়ের বিজাতীয় পোশাক। যেখানে প্রাইস ট্যাগ দিয়ে গরিব কে দেখিয়ে দিলেন এ যায়গা তোমার জন্য নয়। সেটাই ইসলাম নিয়ে ব্যবসা। জামাত ঠিক সেটাই করছে।
জামায়াতের সাবেক আমির ঘাতককুল শিরোমণি গোলাম আযম ও আরেক নেতা কামারুজ্জামানের বিচারের রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ হলেই নাশকতায় নামবে জামায়াত-শিবির। দুই নেতার বিচারের রায়ের প্রস্তুতির খবরে জামায়াত-শিবির আবারও সহিংসতার প্রস্তুতি নিচ্ছে। জামায়াত এবার ধরেই নিয়েছে রায় হচ্ছে মৃত্যুদ-, তাই বিকল্প কোন চিন্তায় যাচ্ছে না উগ্রবাদী এ দলটি ও তাদের সমর্থনপুষ্টরা। পরিকল্পনা গোপন হলেও ইতোমধ্যেই বেরিয়ে পড়েছে রায়কে কেন্দ্র করে তৈরি জামায়াতের নাশকতার ছক। জানা গেছে, আগে রায়ের দিন থেকে হরতালে গেলেও এবার ট্রাইব্যুনালে রায়ের তারিখ ঘোষণা হলেই হরতাল দিয়ে তা-ব শুরু করা হবে। এরপর রায়ের দিন থেকে লাগাতার হরতালের ঘোষণা দিয়ে দেশজুড়ে শুরু করা হবে তা-ব। শক্তিশালী অবস্থান থাকা জেলাগুলোকে অবরুদ্ধ করে রাখা হবে। হামলা হবে পুলিশসহ সরকারী প্রতিষ্ঠানের ওপর। এদিকে নাশকতায় এবার ঢাল হিসেবে জামায়াত ও হেফাজত নেতাদের মহিলা মাদ্রাসার নারীদের মাঠে নামানোর অপকৌশল নেয়া হয়েছে।
বিস্তারিত ১ম কমেন্টে :
Bristi nath
হরিদাসদী-মহেন্দ্রদী বাজার সংলগ্ন ওই মন্দিরে শুক্রবার ভোররাতে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয় বলে জানিয়েছেন রাজৈর থানার ওসি মোফাজ্জেল হক।
মন্তব্যঃ ধর্ম রক্ষার নামে অন্য ধর্মের উপর নির্যাতন করার কথা কোন কেতাবে লেখা আছে ছাগুর দল???
বুধবার আসামিপক্ষের যুক্তির বিপক্ষে পাল্টা ও আইনি পয়েন্টে যুক্তিতর্ক (আর্গুমেন্ট) ও সমাপনী বক্তব্য উপস্থাপন করেন রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট সৈয়দ হায়দার আলী, ড. তুরিন আফরোজ ও অ্যাডভোকেট সুলতান মাহমুদ সীমন। আদালতের অনুমোদনক্রমে সংক্ষিপ্তভাবে রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তির জবাবে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন গোলাম আযমের আইনজীবী।
এরই মধ্য দিয়ে বিচারিক প্রক্রিয়া শেষ হওয়ায় যে কোনো দিন গোলাম আযমের মামলার রায় দেওয়ার জন্য অপেক্ষমান (সিএভি) বলে রেখে দেন চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল।
এ আদেশের মাধ্যমে ট্রাইব্যুনাল এখন তার সুবিধামতো সময়ে যে কোনো দিন রায় ঘোষণা করবেন বলে সাংবাদিকদের জানান রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের লক্ষ্যে ২০১০ সালের ২৫ মার্চ গঠিত হয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। গঠনের ৩ বছর পর এসে ৫ম কোনো অভিযুক্তের ব্যাপারে বিচারিক প্রক্রিয়া শেষ হলো। এর মধ্যে অন্য ৩ জনের মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে আর ১ জনের মামলার রায় দেওয়ার জন্য অপেক্ষমান (সিএভি) রেখে দেওয়া হয়েছে।
তবে গোলাম আযমের মামলার মধ্য দিয়ে প্রথম ট্রাইব্যুনালে যুক্তিতর্কের মাধ্যমে শেষ হলো দ্বিতীয় কোনো মামলার বিচারিক প্রক্রিয়া। জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়ে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণা করেছেন ট্রাইব্যুনাল-১।
বাকি দুই মামলার রায় ঘোষণা করেছেন গত বছরের ২২ মার্চ গঠিত দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনালে। এর মধ্যে ২১ জানুয়ারি ফাঁসির আদেশ দিয়ে জামায়াতের সাবেক রোকন (সদস্য) আবুল কালাম আজাদ বাচ্চু রাজাকারের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছেন ওই ট্রাইব্যুনাল। একই ট্রাইব্যুনাল গত ৫ ফেব্রুয়ারি জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন।
আর মঙ্গলবার জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামানের মামলার রায় যে কোনো দিন ঘোষণা করা হবে বলে সিএভি হিসেবে রেখে দিয়েছেন একই ট্রাইব্যুনাল।
পুনর্বিচারে আসামিপক্ষের আবেদন খারিজ
গত ৩ জানুয়ারি শুনানি শেষে গোলাম আযমের মামলা পুনর্বিচারে আসামিপক্ষের আবেদন খারিজ করে দেন ট্রাইব্যুনাল।
গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর মামলাটির পুনর্বিচারের আবেদন জানান গোলাম আযমের প্রধান আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক। ২৪ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত ৬ কার্যদিবসে আবেদনগুলোর ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
আসামিপক্ষে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ এমপি, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, সিনিয়র আইনজীবী বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার মাহবুব হোসেন, আসামিপক্ষের প্রধান আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক ও অ্যাডভোকেট মিজানুল ইসলাম। অপরদিকে আবেদনের বিরোধিতা করে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আইন বিশেষজ্ঞ বেলজিয়ামের ব্রাসেলস প্রবাসী বাংলাদেশি আহমেদ জিয়াউদ্দিনের সঙ্গে ট্রাইব্যুনাল-১ এর পদত্যাগী চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হকের স্কাইপি কথোপকথনের সূত্র ধরে এ আবেদন করেন আসামিপক্ষ।
ওই স্কাইপি কথোপকথনের সূত্র ধরে বিচারাধীন জামায়াতের বর্তমান আমির মতিউর রহমান নিজামী ও নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী এবং ট্রাইব্যুনাল-২ এ জামায়াতের দুই সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামান ও আব্দুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে মামলা ৪টিরও পুনরায় শুরু করার আবেদন গত ৩ ও ৭ জানুয়ারি খারিজ করে দেন দু'টি ট্রাইব্যুনাল।
১০ জানুয়ারি এসব খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে আসামিপক্ষ রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) আবেদন করেন। ১৫-১৬ জানুয়ারি শুনানি শেষে ২১ জানুয়ারি সেসব আবেদনও ট্রাইব্যুনাল খারিজ করে দেওয়ায় মামলাগুলোর বিচারিক কার্যক্রমের সকল প্রতিবন্ধকতা দূর হয়েছে।
অন্যদিকে একই ঘটনার সূত্র ধরে ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক পদত্যাগ করায় ট্রাইব্যুনাল-১ এর পাশাপাশি পুনর্গঠিত হয় দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনালও। ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীর প্রথম ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন আর তার স্থলাভিষিক্ত হন এ ট্রাইব্যুনালেরই বিচারক প্যানেলের সদস্য বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।
মামলার ধারাবাহিক কার্যক্রম
২০১০ সালের ১৫ জুলাই গোলাম আযমের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্ত শুরু করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের তদন্ত সংস্থা। ২০১১ সালের ৩১ অক্টোবর তদন্ত শেষে তদন্ত প্রতিবেদন, অন্যান্য তথ্য-প্রমাণ, এবং আলামত তদন্ত সংস্থার পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনের কাছে দাখিল করা হয়।
১২ ডিসেম্বর প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে ট্রাইব্যুনালের কাছে গোলাম আযমের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্র (ফরমাল চার্জ) দাখিল করা হয়। ২৬ ডিসেম্বর অভিযোগপত্রে উল্লেখিত অভিযোগগুলো আমলে নেওয়ার জন্য ধার্য দিনে দাখিলকৃত অভিযোগপত্রটি সঠিক বিন্যাসে উপস্থাপিত না হওয়ায় ট্রাইব্যুনাল তা আবার প্রসিকিউশনের কাছে ফেরত পাঠান।
গত বছরের ৫ জানুয়ারি ফেরতপ্রাপ্ত অভিযোগপত্রটিকে সঠিকভাবে বিন্যস্ত করে প্রসিকিউশন টিম পুনরায় ট্রাইব্যুনালের কাছে দাখিল করেন।
ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের জমা দেওয়া ওই আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্রে গোলাম আযমের বিরুদ্ধে মোট ৬২টি অভিযোগ উপস্থাপন করা হয়। মোট ৩৬০ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদনের পাশাপাশি ১০ হাজার পৃষ্ঠার নথিপত্র সংযুক্ত করা হয়।
৯ জানুয়ারি ট্রাইব্যুনাল ১১ জানুয়ারি সশরীরে গোলাম আযমকে হাজির করতে তার আইনজীবীদের নির্দেশ দেন। ওই দিন হাজির না হলে ট্রাইব্যুনাল গোলাম আযমের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির কথা জানান ট্রাইব্যুনাল। ১০ জানুয়ারি গোলাম আযমের আইনজীবীরা তার জামিনের আবেদন করেন।
১১ জানুয়ারি ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয় গোলাম আযমকে। ট্রাইব্যুনাল তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত অভিযোগ আমলে নেন এবং জামিন নামঞ্জুর করে গোলাম আযমকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
তার স্বাস্থ্য ও বয়সের দিকটি বিবেচনা করে ট্রাইব্যুনাল তাকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের প্রিজন সেলে রাখার নির্দেশ দেন।
১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৯ মার্চ পর্যন্ত গোলাম আযমের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু ও প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম অভিযোগ গঠনের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন। অন্যদিকে গোলাম আযমকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতির আবেদন জানিয়ে যুক্তি দেন তার প্রধান আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক ও আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম।
মানবতাবিরোধী ৫ ধরনের অপরাধের ৬১টি অভিযোগে অভিযুক্ত করে গত বছরের ১৩ মে গোলাম আযমের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল।
৩০ মে গোলাম আযমের মামলাটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ থেকে ট্রাইব্যুনাল-২-এ স্থানান্তরের আবেদন করেন আসামিপক্ষ। শুনানি শেষে ১৮ জুন তা খারিজ করে দেন ট্রাইব্যুনাল।
১০ জুন গোলাম আযমের বিরুদ্ধে সূচনা বক্তব্য (ওপেনিং স্টেটমেন্ট) উপস্থাপন করেন রাষ্ট্রপক্ষ। ১৪২ পৃষ্ঠার সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেন রাষ্ট্রপক্ষের চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু, প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম, নূরজাহান বেগম মুক্তা, এ কে এম সাইফুল ইসলাম, সুলতান মাহমুদ ও মীর ইকবাল হোসেন।
১ জুলাই থেকে শুরু করে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা সম্পন্ন হয়। তদন্ত কর্মকর্তা মতিউর রহমানসহ গোলাম আযমের বিরুদ্ধে জব্দ তালিকার ৭ সাক্ষীসহ রাষ্ট্রপক্ষের মোট ১৭ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন। তাদের মধ্যে ১ জন সাক্ষীর তদন্ত কর্মকর্তার কাছে দেওয়া জবানবন্দিকেই সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করেছেন ট্রাইব্যুনাল।
গোলাম আযমের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষে সাক্ষ্য দেওয়া ঘটনার সাক্ষীরা হলেন, বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ ও গবেষক ড. মুনতাসীর মামুন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব উদ্দিন আহম্মদ বীরবিক্রম, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা, মানবাধিকারকর্মী বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, মুক্তিযোদ্ধা শফিউদ্দিন আহমেদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পৈরতলা দক্ষিণপাড়া গ্রামের সোনা মিয়া, একজন শহীদ পরিবারের নারী(ক্যামেরা ট্রায়াল), দেশবরেণ্য গীতিকার ও সুরকার মুক্তিযোদ্ধা আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল, রাজধানীর নাখালপাড়ার ফরিদ আলম এবং মহসিন আলী খান।
আর জব্দ তালিকার সাক্ষীরা হলেন- বাংলা একাডেমীর সহ গ্রন্থাগারিক মো. এজাব উদ্দিন মিয়া, পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি) রাজনৈতিক শাখার উচ্চমান সহকারী সেলিনা আফরোজ, কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের উচ্চমান সহকারী কাজী আইয়ুব হোসেন, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার কামালের বোন ডা. মুনিয়া ইসলাম চৌধুরী, জাতীয় যাদুঘরের কিপার ড. স্বপন কুমার বিশ্বাস, পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলাম এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে কর্মরত সাঁট মুদ্রাক্ষরিক জামিনুর শেখ।
অন্যদিকে গোলাম আযমের পক্ষে তার আইনজীবীরা দুই হাজার ৯৩৯ জন সাক্ষীর তালিকা জমা দিয়েছিলেন। এর মধ্যে ১২ জন সাফাই সাক্ষী সাক্ষ্য দেবেন বলে নির্ধারণ করে দেন ট্রাইব্যুনাল। নির্ধারিত ১২ জনের মধ্যে মাত্র ১ জন সাফাই সাক্ষীকে হাজির করে সাক্ষ্য দেওয়াতে পেরেছেন আসামিপক্ষ। একমাত্র সাফাই সাক্ষী গোলাম আযমের ছেলে সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্তকৃত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহিল আমান আযমী গত বছরের ১২ নভেম্বর থেকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সাফাই সাক্ষ্য দেন তার বাবার পক্ষে। রাষ্ট্রপক্ষ তার জেরা শেষ করেন ১১ ফেব্রুয়ারি।
গত ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৮ মার্চ পর্যন্ত এবং বুধবার ১২ কার্যদিবসে রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেছেন চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু, প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী, প্রসিকিউটর ড. তুরিন আফরোজ, প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট জেয়াদ আল মালুম ও প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট সুলতান মাহমুদ সীমন। অন্যদিকে ১০ মার্চ থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত এবং বুধবার ১২ কার্যদিবসে আসামিপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক, অ্যাডভোকেট মিজানুল ইসলাম ও অ্যাডভোকেট ইমরান সিদ্দিকী।
গোলাম আযমের বিরুদ্ধে যতো অভিযোগ
গোলাম আযমের বিরুদ্ধে পাঁচ ধরনের অভিযোগ হলো, মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনে পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে পরিকল্পনা ও ষড়যন্ত্র, সহযোগিতা, উস্কানি, সম্পৃক্ততা ও বাধা না দেওয়া এবং ব্যক্তিগতভাবে নির্যাতন।
অভিযোগগুলোর মধ্যে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে পরিকল্পনা ও ষড়যন্ত্র সংক্রান্ত ৬টি, তাদের সঙ্গে সহযোগিতা সংক্রান্ত ৩টি, উস্কানি দেওয়ার ২৮টি, তাদের সঙ্গে সম্পৃক্ততা ও হত্যা-নির্যাতনে বাধা না দেওয়ার ২৩টি এবং ব্যক্তিগত হত্যা ও নির্যাতন সংক্রান্ত ১টি অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগ ১: গোলাম আযমের বিরুদ্ধে গঠিত প্রথম ধরনের অভিযোগটি মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ। এ ধরনের অভিযোগে ছয়টি ঘটনার উল্লেখ করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে: একাত্তরের ৪ এপ্রিল গোলাম আযম, নুরুল আমীন, মৌলভী ফরিদ আহমেদ, খাজা খয়েরউদ্দিন, এ কে এম শফিকুল ইসলাম, মাওলান নুরুজ্জামান, হামিদুল হক চৌধুরী, মোহসিনউদ্দিন আহমেদ, এ টি সাদীসহ ১২ সদস্যের এক প্রতিনিধিদল তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের 'খ' অঞ্চলের সামরিক আইন প্রশাসক টিক্কা খানের সঙ্গে দেখা করে নাগরিক শান্তি কমিটি গঠনের ষড়যন্ত্র করেন। আগের সাক্ষাতের সূত্র ধরে ৬ এপ্রিল গোলাম আযম আবারও টিক্কা খানের সঙ্গে দেখা করেন এবং পূর্বোল্লিখিত ষড়যন্ত্রে অংশ নেন। ১৯ জুন এই ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতায় গোলাম আযম রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের একটি বৈঠক করেন। ১ ডিসেম্বর রাওয়ালপিন্ডিতে আবারও ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশের মুক্তিকামী মানুষকে মোকাবিলার জন্য রাজাকার বাহিনীর শক্তি বাড়ানোর পরামর্শ দেন।
অভিযোগ ২: এ ধাপে গোলাম আযমের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পরিকল্পনার অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগে তিনটি ঘটনা উল্লেখ করা হয়। ৪ এপ্রিল টিক্কা খানের সঙ্গে বৈঠকে সারা দেশে শান্তি কমিটি গঠনের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ৯ এপ্রিল গোলাম আযম ও অন্যরা ঢাকায় ১৪০ সদস্যের নাগরিক শান্তি কমিটি গঠন করেন। ৪ মে রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে এ কিউ এম শফিকুল ইসলামের বাসভবনে খাজা খয়েরউদ্দিনের সভাপতিত্বে শান্তি কমিটির সভা হয়, যেখানে গোলাম আযম উপস্থিত ছিলেন। সেখানে ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন ইউনিয়নে শান্তি কমিটি গঠনের বিষয়ে পরিকল্পনা করা হয়।
অভিযোগ ৩: তৃতীয় অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধে উস্কানির ২৮টি ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে। এসব ঘটনার মধ্যে রয়েছে: ৭ এপ্রিল গোলাম আযম এক যুক্ত বিবৃতিতে স্বাধীনতাকামী মানুষকে 'ভারতীয় অনুপ্রবেশকারী' হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, তাদের যেখানেই দেখা যাবে, সেখানেই ধ্বংস করা হবে। ২২ এপ্রিল শান্তি কমিটির সভা শেষে এক বিবৃতিতে গোলাম আযম অধীনস্থ সংগঠনগুলোর সদস্যদের 'দেশপ্রেমিক নাগরিক' উল্লেখ করে দেশের সাধারণ নাগরিকদের ধ্বংস করার আহ্বান জানান।
১৭ মে গোলাম আযম ঢাকায় এক সভায় স্বাধীনতা আন্দোলনকে 'রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপ' ও মুক্তিযোদ্ধাদের 'বিশ্বাসঘাতক' উল্লেখ করে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর 'অপারেশন সার্চলাইট' নমের সেনা অভিযানের প্রশংসা করেন। একাত্তরের ১৬ জুলাই রাজশাহী, ১৮ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ৪ আগস্ট খুলনা, ৭ আগস্ট কুষ্টিয়া প্রভৃতি এলাকায় আয়োজিত বিভিন্ন সভায় মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক ও উত্তেজনাকর বক্তব্য দেন। ১৪ আগস্ট পাকিস্তানের ২৫তম আজাদী দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে, ১৭ ও ২৩ আগস্ট দলীয় সভায় এবং ২৬ আগস্ট পেশোয়ারে অনুষ্ঠিত দলীয় অনুষ্ঠানে গোলাম আযম বিভিন্ন উস্কানিমূলক বক্তব্য দেন।
১৭ সেপ্টেম্বর মোহাম্মদপুরের ফিজিক্যাল এডুকেশন সেন্টারে শিক্ষা গ্রহণরত রাজাকারদের শিবির পরিদর্শন করে তাদের সশস্ত্র হওয়ার আহ্বান জানান। ৩ অক্টোবর ঢাকায় মজলিসে শুরার সভায় একই ধরনের উস্কানিমূলক বক্তব্য দেন গোলাম আযম।
অভিযোগ ৪: চতুর্থ অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধে সহযোগিতা বা সম্পৃক্ততার ২৩টি ঘটনা উল্লেখ করা হয়। ৪ ও ৬ এপ্রিল টিক্কা খানের সঙ্গে দেখা করে গোলাম আযমসহ অন্যরা সহযোগিতার আশ্বাস দেন। ৯ এপ্রিল গোলাম আযমের সহযোগিতায় নাগরিক শান্তি কমিটি গঠিত হলে ১৫ এপ্রিল এর নাম পরিবর্তন করে কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটি করা হয়। শান্তি কমিটির ২১ সদস্যের কার্যকরী কমিটির একজন সদস্য ছিলেন গোলাম আযম।
১৮ জুন লাহোর বিমানবন্দরে গোলাম আযম বলেন, জনগণ সেনাবাহিনীর সঙ্গে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করতে চায়। ১৯ জুন রাওয়ালপিন্ডিতে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে দেখা করে সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা ও মুক্তিযোদ্ধাদের মোকাবিলার জন্য রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনীকে অস্ত্র সরবরাহের আহ্বান জানান। পরদিন লাহোরে জামায়াতের পশ্চিম পাকিস্তান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, পূর্ব পাকিস্তানে দুষ্কৃতকারীরা সক্রিয় রয়েছে এবং তাদের প্রতিরোধে ও শান্তিপ্রিয় নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য অস্ত্রসজ্জিত হওয়া উচিত।
অভিযোগ-৫: পঞ্চম অভিযোগে হত্যা ও নির্যাতনের একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, কুমিল্লার হোমনা থানার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের সিরু মিয়া একাত্তরে ঢাকার মোহাম্মদপুর থানায় দারোগা (সাব-ইন্সপেক্টর) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ২৮ মার্চ তিনি স্ত্রী আনোয়ারা বেগম ও ১৪ বছরের ছেলে আনোয়ার কামালকে নিয়ে কুমিল্লার নিজ বাড়িতে যান। সেখানে সিরু মিয়া শরণার্থীদের ভারতে যাতায়াতে সাহায্য করতেন।
২৭ অক্টোবর সকাল ১০টার দিকে কসবা থানার তন্তর চেকপোস্টের কাছে সিরু মিয়া ও তার ছেলেসহ ছয়জন ভারতে যাওয়ার সময় রাজাকারদের হাতে ধরা পড়েন। তাদের রাজাকার ক্যাম্পে নিয়ে কয়েক দিন নির্যাতনের পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। স্বামী-সন্তানের ধরা পড়ার খবর পেয়ে সিরু মিয়ার স্ত্রী গোলাম আযমের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সিরু মিয়ার ভগ্নিপতি ছিলেন গোলাম আযমের দুই ছেলে আজমী ও আমীনের শিক্ষক। তিনি গোলাম আযমের কাছে সিরু মিয়া ও তার ছেলেকে মুক্তি দিতে অনুরোধ জানান।
গোলাম আযম ব্রাহ্মণবাড়িয়া শান্তি কমিটির নেতা পেয়ারা মিয়ার কাছে একটি চিঠি পাঠান, যাতে সিরু মিয়া ও তার ছেলেকে হত্যার নির্দেশ ছিল। চিঠি পাওয়ার পর ঈদের দিন রাতে সিরু মিয়াসহ ৩৯ জনকে পাকিস্তানি সেনারা রাজাকার ও আলবদরদের সহযোগিতায় কারাগার থেকে বের করে নিয়ে পৈরতলা রেলব্রিজের কাছে নিয়ে যায়। সেখানে পাকিস্তানি সেনাদের গুলিতে ৩৮ জন মারা গেলেও একজন প্রাণে বেঁচে যান।
কর্মসূচি বিষয়ে জানতে চাইলে সংগঠক, সাংবাদিক সুপ্রীতি ধর বলেন, "প্রকাশিত এ গল্পের মাধ্যমে লেখক এবং দৈনিক প্রথম আলো কেবল প্রজন্ম চত্বরের গণজাগরণ আন্দোলনকে বিকৃতভাবে উপস্থাপনই করেনি, নারীদের আত্মমর্যাদায় আঘাত করেছে। জাতীয় পতাকাকে চরম অপমান করেছে।"
আগামীকাল ১৯ এপ্রিল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধের দাবিতে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে চা শ্রমিক-জনতা সমাবেশের আয়োজন করেছে সিলেটের গণজাগরণ মঞ্চ। শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টায় খাদিম চা বাগানের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
ফাসির দাবীকে বিশ্বময় জ়ানিয়ে দিতে আসুন সমবেত হই বিকেল সাড়ে ৩ টায়।
জ়য় বাংলা।
২০০৫ এর ১৭ ই অগাস্ট সারা দেশে ৬২ জেলায় এক সাথে ৫০০ জায়গাতে বোমা হামলার প্রতিবাদে প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলনে মাহমুদুর রহমানের ঘনিষ্ট সহযোগী ফরহাদ মজাহার সেই সিরিজ বোমা হামলাকে বৈধতা দিতে গিয়ে কি বলেছিলেন আসুন একটু দেখি?
|। জয় বাঙলা ||
Nazmul Nayeem Khan
'মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাইদীর ওয়াজের আধেয় বিশ্লেষণ' শিরোনামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী তপন মাহমুদ তার পড়াশোনার স্নাতকোত্তর পর্বে রিসার্চ মনোগ্রাফ হিসেবে ২০০৮ সালে এই গবেষণাটি করেন।
গবেষণায় তিনি দেখিয়েছেন - কীভাবে একাত্তরে ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত দেলাওয়ার হোসেন সাঈদী তার বিভিন্ন 'ওয়াজ মাহফিলে' নারী বিষয়ে নানা কথা বলতেন পুরুষদের আকৃষ্ট করতে।
এতে দেখা গেছে, দুশ ৮০ মিনিটের ওয়াজে একশ ১৬ মিনিট সাঈদী কথা বলেছেন নারী প্রসঙ্গে। শতকরা হিসাবে যা ৪১ দশমিক ৭৬ ভাগ। গবেষণায় সাঈদীর ওয়াজের তিনটি অডিও ক্যাসেট ও দুইটি সিডির বিষয়বস্তু বিশ্লেষণ করেন তিনি।
বিস্তারিত লিংক কমেন্টে দেখুনঃ
ঘটনার সাতদিন পর মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার সানোয়ার হোসেন ও সহকারী কমিশনার হাসান মোস্তফা স্বপনের নেতৃত্বে একটি দল বৃহস্পতিবার ভোরে মেজবাহকে বুয়েট থেকে গ্রেফতার করে।
মেজবাহ বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ৪র্থ বর্ষের ছাত্র। সে বুয়েটের এম এ রশিদ হলের ৩০১ নং কক্ষে থাকতো।
ডিবির জিজ্ঞাসাবদে মেজবাহ জানায়, গত ৯ এপ্রিল বুয়েটের যন্ত্র কৌশল বিভাগের ছাত্র আরিফ রায়হান দ্বীপকে নজরুল ইসলাম হলের ১১২ নং কক্ষের সামনে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মভাবে আহত করে।
কৃতজ্ঞতাঃ বিডিনিউজ ২৪ডটকম
জামাত নেতা গ্রেপ্তার।ওয়াক থু জামাত শিব্বির । মেয়েটির বাড়ি পিরোজপুর বলে জানা যায়। সে ছাত্রীসংস্থার,প্রচার সম্পাদক হিসেবে কাজ করত
শেয়ার করতে বূলিয়া জাইয়েন না :)
কৃতজ্ঞতাঃ জয় বাংলা (ফেসবুক পেজ)শাহবাগে সাইবার যুদ্ধ shared Slogan71's photo.
No comments:
Post a Comment