Welcome

Website counter
website hit counter
website hit counters

Friday, February 15, 2013

একুশের চেতনায় এগিয়ে চলা..একুশ আমাদের অহংকার!

একুশের চেতনায় এগিয়ে চলা..একুশ আমাদের অহংকার!

http://www.thebengalitimes.com/details.php?val=1036&pub_no=0&menu_id=7

একুশ মানে মাথা নত না করা । একুশ মানে এগিয়ে চলা। এবার কানাডাতে বেশ কয়েকটি একুশের অনুষ্ঠান হয়েছে। কেবল টরন্টো শহরেই ছিলো তিনটি শহীদ মিনার। এমনকি সাসকাচিওয়ানের রেজিনাতে, যেখানে বাঙালির সংখ্যা হাতে গোণা সেখানেও এবার পালিত হয়েছে একুশ। নির্মাণ করা হয়েছে শহীদ মিনার। প্রতিবছর ফেব্রুয়ারি মাস এলেই আমরা ব্যস্ত হয়ে পড়ি অনুষ্ঠান আর শহীদ মিনার নিয়ে। আর বাকিটা সময়? এসব বিষয় নিয়ে ভাববার সময়ও যেনো নেই আমাদের । একুশের অনুষ্ঠানে পাজামা পাঞ্জাবী পড়ে যিনি ভাষা নিয়ে জ্ঞানগর্ভ আলোচনা করছেন তার বাড়িতেই কী বাংলা ভাষার চর্চা হচ্ছে? তার ছেলে মেয়ে কী বাংলায় কথা বলতে বা লিখতে পারে ? এই প্রশ্নের উত্তর আমাদের সকলের জানা । বাংলা ভাষাটাই যদি বেচেঁ না থাকে তাহলে একুশ পালন করে লাভটা কী? এটাতো ভাষা শহীদদের সাথে আরেকদফা প্রহসন। তাই আসুন নিজে শুদ্ধ বাংলা শিখি, সন্তানকে বাংলা পড়তে ও লিখতে শেখাই। তারপরও একটি কথা না বললেই নয়। প্রবাসে শত সীমাবদ্ধতার মাঝে যারা একুশের নানা আয়োজনে যুক্ত ছিলেন তাদের প্রতিও আমাদের কৃতজ্ঞতা। এসব উদ্যোগ এক সময় একটি বিন্দুতে মিলিত হবে সেই আশায় এখন আমরাও। 
প্রিয় পাঠক! ভালো থাকুন। বেঙ্গলি টাইমসের সাথেই থাকুন।

একুশ আমাদের অহংকার!

যে ভাষার জন্যে ভাইয়েরা রাজপথে রক্ত দিলো সেই ভাষাটাকে সন্তানদের মুখে তুলে দিতে এতো অনীহা কেনো?

একুশের চেতনায় উজ্জীবিত হোক আমাদের মনুষ্যত্বের বোধ

ফেরদৌস আরা আলীম
এই প্ল্যাকার্ডগুলো কি আমাদের ভাষা আন্দোলনকারীদের হাতে হাতে শূন্যে তুলে ধরা প্ল্যাকার্ডগুলোর কথা মনে করিয়ে দেয় না? সেদিনের প্ল্যাকার্ডগুলো বাংলা ভাষার জন্য রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দাবি করেছিল। আজকের প্ল্যকার্ডগুলো নারীর জন্য একটি নিরাপদ বিশ্বের দাবি তুলেছে। বাংলায় 'দু অক্ষরের এই একটি শব্দের মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে অর্ধেক পৃথিবী, সভ্যতার আধখানা-আকাশ।' সে পৃথিবীকে, সে আকাশকে রাহুমুক্ত করার শপথে উজ্জীবিত হোক আমাদের এবারের একুশে ভাষা- আন্দোলনের উত্তুঙ্গ একটি দিনকে কেন্দ্র করে ফেব্রুয়ারি পেয়েছে ভাষার মাসের অভিধা। চলছে আমাদের ভাষার মাস ফেব্রুয়ারি। এই একটি মাস যে-মাসে মাসজুড়ে বই মেলা হয়। বাতাসে বই এর ঘ্রাণ-ভাসা, গান-ভাসা মাস ফেব্রুয়ারি। ফেব্রুয়ারি বলতে খুব বড় করে আমরা এই কথাটাই বুঝি। এই ছবিটাই দেখি। তারপরেও যা সত্য, যা স্বপ্রকাশ তা হচ্ছে প্রতিটি একুশ পৃথক একুশ। সুতরাং প্রতিটি ভাষার মাস একই রঙ-রূপ-চেহারা নিয়ে আসে না। ভাষার দাবিতে ভেসে গিয়েছিল বায়ান্নের একুশের মাস। তারপর থেকে বছরে বছরে নতুন পরিপ্রেক্ষিতে, নতুন ভাবনা- চিন্তা, নতুন উদ্দীপনা, নতুন প্রতিশ্রুতি ও নতুন অঙ্গীকার নিয়ে এসেছে ভাষার মাস। জরুরি অবস্থা কবলিত ২০০৮ সালে যখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশ পরিচালনা করছে তখন হাসান আজিজুল হক একুশের প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, 'স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি শিক্ষা-সাহিত্য-ভাষা,দেশ-সমাজ-রাষ্ট্র এক অসম্ভব অনিশ্চয়তার আবর্তে পড়ে গেছে।... দেশের রাষ্ট্র কাঠামো সমাজ প্রশাসন অর্থনীতি রাজনীতি কিম্ভূতকিমাকার হয়ে দাঁড়িয়েছে।' তিনি বলেছিলেন,২০০৮ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারিতে দাঁড়িয়ে আর কিছু না হোক এ স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ মানুষকে অন্তত বেঁচে থাকার নিশ্চয়তাটুকু দিক।' ঠিক সেইভাবে আজ যখন স্বাধীন দেশটি ধর্ষণের নীল দংশনে হানাদার কবলিত দেশটির চেয়ে বহু বহুগুণ ভয়ঙ্করভাবে আক্রান্ত তখন একুশের পাটাতন থেকে কেউ কি পুরো জাতিকে শপথের মন্ত্রে এক করে বলতে পারেন না যে, আর নয়। আর একটিও ধর্ষণের ঘটনা নয়। এই স্বাধীন দেশ, সার্বভৌম এ বাংলাদেশ নারীকে ধর্ষণভীতিমুক্ত জীবনের নিশ্চয়তা দিক।
সেদিনের পাকিস্তান রাষ্ট্রে বাংলা ভাষা থাকবে কি থাকবে না সে-সংশয় নিয়েই পাকিস্তানের পক্ষে দাঁড়িয়েছিল বাঙালি। দাঁড়িয়েছিল এবং একই সঙ্গে বাংলা ভাষার পক্ষে সোচ্চার হয়েছিল। যে মাতৃভাষা মুসলমানের আঙ্গিনায় বহু বহুদিন ফুলের মতো হাসে নি,পাখির মতো ডাকে নি, চাঁদের মতো আলো ছড়ায় নি ভাষা নিয়ে সে স্বপ্নও দেখতে শুরু করেছিল বাঙালি প্রবল অনিশ্চয়তার মধ্যেও। অনিশ্চয়তার কারণ ছিল। নতুন রাষ্ট্রের ভিত্তি মূলে যে সাম্প্রদায়িকতা ছিল তা বুঝতে বোধশক্তিসম্পন্ন মানুষের, চিন্তাশীল মানুষের অসুবিধা হয়নি। ধর্ম প্রধান ও একমাত্র বিবেচ্য বিষয় হলে মুসলমানের জাতীয় ভাষা যে আরবী হবার কথা তাও তাঁদের অজানা ছিল না। আবার হান্টার কমিশনের সামনে নওয়াব আবদুল লতীফের সাক্ষ্যও খুব দূর অতীতের বিষয় ছিল না। ১৮৮১ সালে হান্টার কমিশনের সামনে নওয়াব আবদুল লতীফ সাক্ষ্য দিয়েছিলেন যে এ দেশের অভিজাত ও মধ্যবিত্ত মুসলমানের ভাষা উর্দু। বাংলা নিম্নবিত্তের ভাষা। চাষী-মজুরের,কামার-কুমোরের ভাষা। ৪৭ এর আগে বাঙালি মুসলমান কি এসব ভুলে গিয়েছিল?ভোলে নি। তবে যেহেতু উর্দুর পক্ষে সরবতাই মুসলিম ঐক্যপ্রমাণিত হয় তাই নীরবতা শ্রেয় মনে করেছিল। সৈয়দ সুলতান বা আবদুল হাকিমকে মনে করে যাঁরা মনে মনে কষ্ট পেতেন তাঁদেরও সান্ত্বনা ছিল এঁরা কবি বৈ তো নন! রাজনীতির তাঁরা কে বা কতখানি। কিন্তু যার যেখানে ব্যথা তার হাত সেখানে ঠিকই পড়ে। সেজন্যেই ১৯৪৭ এর ৩রা জুন মাউন্ট ব্যাটেন পরিকল্পনা ঘোষিত হবার সঙ্গে সঙ্গে একই মাসের ২২ ও ২৯ তারিখে ইত্তেহাদের সাহিত্য পাতায় বার বার দুই কিস্তিতে 'ভাষা বিষয়ক প্রস্তাব' লিখলেন আবদুল হক। তারপর দেশ ভাগ এবং পরবর্তীকালে ভাষা আন্দোলন গড়ে ওঠার সংগ্রামী ইতিহাস আজ আর কারও অজানা নয়। এখানে একটু বলে নিতে চাই যে বাংলা ভাষার পক্ষে-বিপক্ষে যখন লেখালেখি চলছে তখন বিপক্ষের একটি লেখার সূত্র ধরে যশোরে মাইকেল মধুসূদন দত্ত কলেজের ছাত্রী হামিদা রহমানের একটি দীর্ঘ চিঠি ছাপা হয় কম্যুনিস্ট পার্টির 'স্বাধীনতা' পত্রিকায়। বিচারপতি কে এম সোবহান তাঁর একটি কলামে এই লেখাটিকে ভাষা-আন্দোলনের প্রথম প্রস্তাব বলেছিলেন। না, নারীর পক্ষে ভাষা আন্দোলনের প্রথম প্রস্তাবকের কৃতিত্ব দাবি করার কোনও অভিপ্রায় আমাদের নেই। কারণ তাতে প্রাপ্তির কোনও ইতর বিশেষ ঘটে না। অনেক সময় অনেক প্রাপ্তিও কোনও ইতিবাচক অর্জন সূচিত করে না। যেমন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। শোনা মাত্রই মনে হয় বিশ্বায়ন বা সাম্রাজ্যবাদের থাবার নিচে প্রতিটি দুর্বল মাতৃভাষা বিপন্ন; এ দিবস তারই স্বীকৃতি। আবার এও তো সত্য যে অনেক সত্য সকলেরই জানা কিন্তু তার প্রকাশ্য স্বীকৃতি থাকে না। যেমন ভাষা- আন্দোলনকে তুঙ্গে পৌঁছে দেবার জন্যে সংবাদপত্রের অপরিহার্য ভূমিকার কথা অনস্বীকার্য। তবে জাতীয় বা রাজধানী কেন্দ্রিক দৈনিক বা পাক্ষিকের চেয়ে এক্ষেত্রে প্রাদেশিক বা বিভাগীয় পত্রিকার ভূমিকা অধিকতর উজ্জ্বল যেমন, চট্টগ্রামের 'সীমান্ত', সিলেটের 'নওবেলাল' ও ফেনীর 'সংগ্রাম'। আসলে যে কথাটা বলতে চাই তা হচ্ছে এই ২০১৩-র একুশের প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে দু'চোখ মেলে দেশজোড়া যা দেখছি তার নাম 'ধর্ষণ', 'ধর্ষণ' এবং 'ধর্ষণ'। এবং সেজন্যেই মনে এল যে ভাষার মর্যাদার দাবি যদি একটি নতুন দেশের, একটি স্বাধীন দেশের অভ্যুদয়কে সম্ভব করে তুলতে পারে তবে সে ভাষার শক্তি কি সেই দেশ থেকে 'ধর্ষণ' নামের এই শব্দটিকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাই করে দিতে পারে না? এখনও আমাদের অভিধানে এমন অনেক নেতিবাচক শব্দ আছে যেগুলো শুধু নারীর জন্যই প্রযোজ্য হয়, নারীর উপরে প্রযুক্ত হয়। এমন অনেক প্রবাদ-প্রবচন আছে যেগুলো থেকে নারীর প্রতি সমাজের মনোভঙ্গি পরিষ্কার বোঝা যায়। অন্তত নারী যে 'মানুষ' নয়, মেয়েমানুষ মাত্র- তা বোঝা যায়। শিকড়সুদ্ধ সেসব শব্দ, প্রবাদ-প্রবচন উৎপাটনও একুশের শপথের অন্তর্গত হতে হবে। আমরা আশাবাদী কারণ এই প্রথম ভাষার মাসের প্রাক্কালে আমরা দেখেছি নারী নির্যাতন প্রতিরোধের দৃপ্তকণ্ঠ শপথ নিয়েছেন পুরুষ। নারী-পুরুষের মিলিত সমাবেশ থেকে োগান উঠেছেঃ নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে/ রুখে দাঁড়াও একসাথে। এই প্রথম নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে জনমত গঠনের জন্য বিষয়টি নিয়ে জাতীয় সংসদ ও সংসদীয় কমিটিতে আলোচনার দাবি উঠেছে। এই ফেব্রুয়ারিতেই (গত ৪ ফেব্রুয়ারি) নারী, মানবাধিকার ও উন্নয়নের জন্য কাজ করে এমন ৬৭টি সংগঠনের মিলিত জোট, 'সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি' একটি মানববন্ধন থেকে নারী নির্যাতনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সংসদের মাধ্যমে সরকারি উদ্যোগের দাবি জানিয়েছে। এই লক্ষ্যে এঁরা জাতীয় সংসদের স্পিকারের কাছে স্মারকলিপিও দিয়েছেন।
আমরা জানি যে ১৪ ফেব্রুয়ারিতে আসন্ন তথাকথিত ভ্যালেন্টাইনস দিবসের ১৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে নারী নির্যাতন বন্ধে সারাবিশ্বের ১৮২টির মতো দেশ 'বন্ধ কর এ সহিংসতা, সময় এখনই'- এরকম একটি আন্দোলন করছে। আমাদের মহিলা ও শিশু মন্ত্রণালয় নারী নির্যাতন বিরোধী এ বৈশ্বিক ক্যাম্পেইনের প্রতি লিখিত সমর্থন জানিয়েছে। ঢাকে-ঢোলে, বাদ্য-বাজনায়, নেচে গেয়ে এমন আন্দোলন বিশ্বায়নের এ যুগে হবে মহিলা ও শিশু মন্ত্রণালয় তাতে সমর্থন দেবে- এতে আমাদের আপত্তির কিছু নেই। যে-ভাবে, যে-দিনেই ক্যাম্পেইন হবে হোক বিষয়টা তো নারী নির্যাতনেরই বিরুদ্ধে। কিন্তু আমরা চাইছি আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে একুশের মাসে একটি জোরালো অঙ্গীকার- যার ছিটেফোঁটা আভাস আমরা পাচ্ছি। পেয়েছি ইতোমধ্যেই। অতি সম্প্রতি পুলিশের প্রতি হাইকোর্ট প্রদত্ত একটি নির্দেশের খবর জারি হয়েছে। ধর্ষণের তথ্য প্রাপ্তির সঙ্গে সঙ্গে মামলা লিপিবদ্ধ করতে হবে এবং ক্ষতিগ্রস্তের ডাক্তারি পরীক্ষা ও জব্দ করা আলামত ডিএনএ পরীক্ষার জন্য পাঠাতে হবে। প্রতিটি থানাকে এ বিষয়ে অবহিতকরণেরও নির্দেশদানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দু'জন বিচারপতির একটি বেঞ্চের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র সচিব স্বাস্থ্য সচিব ও পুলিশের মহাপরিদর্শককে সেকথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
একদিন মাতৃভাষার জন্য এক অপরিমেয় আবেগ সুদীর্ঘ এক সংগ্রামে এ জনপদের মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেছে। এই সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় তিন-তিনটি ভাষার বিরুদ্ধে লড়েছে বাঙালি। অথচ এই ভাষাগুলোর সঙ্গে (ফারসি-ইংরেজি-উর্দু) শত্রুতার কোনও কারণ ছিল না আমাদের। লড়াইটা ছিল বরাবরই সেসব ভাষার ধ্বজাধারীদের আধিপত্য কামিতার বিরুদ্ধে। আজও যখন আমরা নারী নির্যাতনের বা বিশেষভাবে ধর্ষণের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে চাইছি। এ বিরুদ্ধতা ঢালাওভাবে পুরুষের বিরুদ্ধে নয় নিশ্চয়ই। একুশে ফেব্রুয়ারি যদি বাংলাভাষাকে তার স্বমর্যাদায় অধিষ্ঠিত করার মধ্য দিয়ে জাতীয় জীবনের অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের ঘাটে পৌঁছুতে পারে এবং একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটাতে পারে তবে সেই আবেগকে নারীর প্রতি সব ধরনের নির্যাতনের বিরুদ্ধে চালিত করা যাবে না কেন?
ধর্ষণের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত আন্দোলনটি কিন্তু শুরু হয়ে গেছে। গত ৩১শে জানুয়ারি খোদ জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে সকালে বিকালে দুটি মানববন্ধন কর্মসূচিতে যাঁরা যোগ দিয়েছিলেন তাঁদের হাতের প্ল্যাকার্ডগুলোর ভাষা ছিল এরকম: ধর্ষকের ক্ষমা নেই। ঘরে-বাইরে নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াও। জেগে উঠুন, নির্মমভাবে আঘাত করুন। জাস্টিস ডিলেইড, জাস্টিস ডিনাইড' ইত্যাদি। এই প্ল্যাকার্ডগুলো কি আমাদের ভাষা আন্দোলনকারীদের হাতে হাতে শূন্যে তুলে ধরা প্ল্যাকার্ডগুলোর কথা মনে করিয়ে দেয় না? সেদিনের প্ল্যাকার্ডগুলো বাংলা ভাষার জন্য রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দাবি করেছিল। আজকের প্ল্যকার্ডগুলো নারীর জন্য একটি নিরাপদ বিশ্বের দাবি তুলেছে। বাংলায় 'দু অক্ষরের এই একটি শব্দের মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে অর্ধেক পৃথিবী, সভ্যতার আধখানা-আকাশ।' সে পৃথিবীকে, সে আকাশকে রাহুমুক্ত করার শপথে উজ্জীবিত হোক আমাদের এবারের একুশে।
http://www.dainikazadi.org/details2.php?news_id=1074&table=february2013&date=2013-02-09&page_id=32&view=0&instant_status=0

একুশের চেতনায় বাংলাদেশ
সুকান্ত পার্থিব
ভারতীয় উপমহাদেশে বিভিন্ন ভাষাভাষী ও ধর্মপ্রাণ জনসাধারণের মধ্যে রাষ্ট্রভাষা নিয়ে জোরালো বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছিল ১৯৩৭ সালে। সেই জটিলতাকে হ্রাস করে সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর উদ্দেশ্যে ঐ বছরের ২৩ এপ্রিল তৎকালীন জনপ্রিয় সংবাদপত্র "দৈনিক আজাদ" –এর ঐতিহাসিক সম্পাদকীয়তে এ বিষয়ে প্রথম যুক্তিযুক্ত ব্যাখ্যা উপস্থাপন করা হয়েছিল। ১৯৪০ সালের ২৩ মার্চ শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হক ঐতিহাসিক "লাহোর প্রস্তাব" উত্থাপন করেছিলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলা ভাষাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষার সপক্ষে প্রকৃত আলোচনা আরম্ভ হয়েছিল ১৯৪৬ –এর শেষের দিকে। সেসময়, ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগ এর প্রধান উদ্দেশ্য ছিল মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠতার উপর ভিত্তি করে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা ও উর্দূকে সে রাষ্ট্র তথা পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করা।
বৃটিশ শাসক-শোষকদের চাতুর্যতাপূর্ণ অপকৌশলে হিন্দু-মুসলমান সম্প্রদায়ের মধ্যে সাম্প্রদায়িকতার বীজ রোপনের স্বীকৃতি স্বরুপ দ্বিজাতিতত্বের আলোকে ভারত ও পাকিস্তান নামক দুটি পৃথক রাষ্ট্র জন্ম লাভ করে ১৯৪৭ সালের আগষ্টের মাঝামাঝি সময়ে।
তারপর পরই বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় ছাত্র এবং প্রগতিশীল অধ্যাপকদের উদ্দ্যোগে ১৯৪৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর "তমুদ্দুন মজলিস" নামে একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন গড়ে তোলে। ঐ সালের অক্টোবরেই উক্ত সংগঠনের স্বাধীনচেতা অসাম্প্রদায়িক চেতনাশীল ছাত্রদের প্রচেষ্টায় "রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ" গঠিত হয়।
এরপর, ১৯৪৮ সালে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতিকে শ্রদ্ধাভরে ভালোবেসে পাকিস্তানের চাপিয়ে দেয়া উর্দূকে রাষ্ট্রভাষা করার অযৌক্তিক দাবীকে নির্দ্ধিধায় প্রত্যাখান করে বাংলা ভাষার দাবীতে যুক্তিযুক্ত লেখালেখি শুরু করেছিলেন কতিপয় প্রাজ্ঞজন। এঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন অধ্যাপক ড. কাজী মোতাহার হোসেন, আবুল কালাম শামসুদ্দীন, আবুল মনসুর আহমদ, কবি ফররুখ আহমদ, আব্দুল হক, মাহবুব জামাল জায়েদী প্রমুখ ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে ১৯৪৮ –এর ২৪ মার্চের সমাবর্তন সভায় তদান্তীন পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল মুহম্মদ আলী জিন্নাহ বক্তব্যকালে তিনি উর্দূকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষনা দিলে প্রগতিশীল ছাত্রদের প্রতিবাদে বিক্ষুব্দ্ধ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল।
সমগ্র পাকিস্তানে সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালিদের (৫৬%) উপর পাকিস্তানী শাসকদের চাপিয়ে দেয়া উর্দূকে রাষ্ট্রভাষা করার ভিত্তিহীন দাবী ও সীমাহীন শোষনে অতিষ্ট হয়ে বাঙালি ছাত্র-শিক্ষক-শ্রমিক-কৃষক-বুদ্ধিজীবী এবং মধ্যবিত্তের এক ব্যাপক গণপ্রতিরোধ আন্দোলনে রূপ নিয়ে সমগ্র পূর্ব বাংলায় অদৃষ্টপূর্ব আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। পরবর্তীতে, পাকিস্তান বর্বর শাসকগোষ্ঠীর উপর প্রথম স্বাধিকার গণআন্দোলন ১৯৫২ সালে রূপায়িত হয় ভাষা আন্দোলনে যা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ভীত রচনা করেছিল। এ আন্দোলন ত্বরান্বিত করতে "সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ" –এর যে প্রগতিশীল ছাত্র সমাজ দৃঢ় ভূমিকা রেখেছিলেন; তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য- গাজীউল হক, আব্দুল মতিন, মোহাম্মদ তোহা, সামছুল হক, অলি আহাদ । ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারী রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের প্রতিবাদমুখর মিছিলে পাকিস্তানী শাসকদের বর্বরোচিত গুলিবর্ষনে প্রাণোৎসর্গ করেছিলেন সালাম, রফিক, বরকত, জব্বার, শফিউরসহ নাম না জানা আরো অনেকে। যাঁদের মহান আত্মত্যাগে অর্জিত হয়েছে প্রাণের ভাষা, মায়ের মুখের ভাষা বাংলা বলার অবাধ অধিকার।
বাঙালি জাতি; পৃথিবীর একমাত্র জাতি যারা স্বাধীনভাবে মাতৃভাষা বলার অধিকার আদায়ের জন্যে প্রাণ উৎসর্গ করতেও দ্বিধাবোধ করেনি।
ভাষা আন্দোলনের প্রায় ছয় যুগ অতিক্রমের পথে; কিন্তু, আমরা কি পেরেছি একুশের চেতনা বাস্তবায়ন করতে যা আমাদের ভাষা আন্দোলন পরবর্তী দীর্ঘ সংগ্রামের পথে অগ্রনী ভূমিকা রেখেছে স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে?
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ যেমন- জাপান, চীন, জার্মানী, সুইডেন, নরওয়ে ইত্যাদি দেশের সরকারী ও বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষার প্রধান মাধ্যম পরিচালিত হচ্ছে সেইসব দেশের মাতৃভাষা অনুযায়ী। কিন্তু, তথাকথিত বিশ্বায়নের নামে তথা সাম্রাজ্যবাদে পিষ্ট হয়ে আমাদের দেশে প্রচলিত জরাগ্রস্থ শিক্ষা ব্যবস্থা বাংলার চেয়ে ইংরেজি ভাষাকেই বরাবর প্রাধান্য দিয়ে আসছে ব্যাপকাকারে। ইংরেজিতে দখল থাকার প্রয়োজন রয়েছে; তার অর্থ এই নয় যে মাতৃভাষাকে সঠিকভাবে আয়ত্ত না করে অবজ্ঞা ও অবহেলায় ফেলে রেখে ভিনদেশী ভাষার চর্চা করতে হবে! আর তাই, এখনো আমাদের চারপাশ বাংলা ভাষার ভুল বানান-উপমা-উচ্চারণ -এ ভরপুর!
বর্তমান সময়ে শিক্ষা সচেতন বিত্তশালী পরিবারের পিতা-মাতা বিপুলভাবে আগ্রহী ও উৎসাহী তাদের সন্তানদের ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ানোর জন্যে যাতে ভবিষ্যতে তাদেরকে উচ্চশিক্ষার জন্যে বিদেশে পাঠাতে পারে। যে কারনে সেইসব কোমলমতি প্রাণে বাংলা ভাষা শেখার আগ্রহ জাগে না বললেই চলে! শৈশবকাল থেকেই তাদের ইংরেজি ভাষার প্রতি প্রীতিবোধ জাগতে থাকে। ফলে, তারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে সহজ বাংলা বলতেও বাধাপ্রাপ্ত হয়!
তৎকালীন ছাত্র রাজনীতি আবর্তিত হত গণমানুষের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে; আর এখন অধিকাংশ ছাত্ররা রাজনীতির কথা শুনলেও পিছিয়ে যায় কয়েকশ' গজ! কেননা, বর্তমান বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে রাজনীতি ও শাসন ব্যবস্থা কলুষিত হয়ে গেছে স্বার্থানেষী রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর ভিড়ে। আর ছাত্র রাজনীতি রূপ নিয়েছে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, ভর্তি বাণিজ্য, সংঘ-হল দখল ইত্যাদি বিভৎস কার্যকলাপে।
প্রচলিত প্রতিক্রিয়াশীল ব্যবস্থার শিকার বর্তমান তরুন প্রজন্মের ভেতরে গভীরভাবে প্রবেশ করেনি ভাষা-শিক্ষা-ইতিহাস-সংস্কৃতিবোধ-স্বদেশপ্রেম-বাঙালি জাতীয়তাবাদ সম্পর্কিত চিন্তা-চেতনা। তাহলে, জ্ঞান আহরনে তাদের মধ্যে কিভাবে চেতনা প্রতিফলিত করে 'প্রশ্ন জ্ঞিজ্ঞাসু' মানসিকতা তৈরি হবে? পাশ্চাত্যের সাথে তাল মিলিয়ে তাদের পোশাকের আতিশয্যে পরিবর্তন এসেছে; কিন্তু সেই তুলনায় চেতনায় এখনো প্রগতি অভিমুখি জ্ঞান-বিজ্ঞান-দর্শন -এর ঠাঁই বোধ করি ততটা হয়নি! তাহলে, কি আমরা এই ধরনের পশ্চাদগামী অবস্থার শিকার হবার জন্যে রক্তের বিনিময়ে অর্জন করেছিলাম মায়ের ভাষা বাংলা?
(পাঠক কলাম : মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়)
http://www.thebengalitimes.com/details.php?val=977&pub_no=0&menu_id=7
জনগণের ভাগ্যোন্নয়নে একুশের চেতনায় ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার শপথ নিন : দেশবাসীর প্রতি প্রধানমন্ত্রী
নিউজডেস্ক, বাংলাদেশনিউজ২৪x৭.কম
একুশে ফেব্রুয়ারি মহান 'শহীদ দিবস' ও 'আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা' দিবসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে জনগণের ভাগ্যোন্নয়নে মহান একুশের চেতনায় ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার শপথ নেয়ার জন্য সকলের প্রতি আহাবান জানিয়েছেন।
মহান শহীদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আজ এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এ আহবান জানান।
শেখ হাসিনা মহান শহীদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বাংলা ভাষাভাষীসহ বিশ্বের সকল ভাষা ও সংস্কৃতির জনগণকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান।
তিনি বলেন, মহান একুশে ফেব্রুয়ারি বাঙালির জীবনে শোক, শক্তি ও গৌরবের প্রতীক। ১৯৫২ সালের এ দিনে ভাষার মর্যাদা রক্ষা করতে রফিক, শফিক, জব্বার ,বরকত, শফিউদ্দিন, সালামসহ আরও অনেকে প্রাণ দিয়েছিলেন ।
তিনি শহীদ দিবস উপলক্ষে ভাষা শহীদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। সাথে সাথে বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে নেতৃত্বদানকারী সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং সকল ভাষা সৈনিকের প্রতিও শ্রদ্ধা জানান ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৪৮ সালে ছাত্রলীগ, তমদ্দুন মজলিশ ও অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত হয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ। ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে সংগ্রাম পরিষদ ধর্মঘট ডাকে। এদিন সচিবালয়ের সামনে থেকে বঙ্গবন্ধুসহ অনেক ছাত্রনেতা গ্রেফতার হন। ১৫ মার্চ তাঁরা মুক্তি পান। ১৬ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় অনুষ্ঠিত জনসভায় সভাপতিত্ব করেন শেখ মুজিবুর রহমান। আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে সারাদেশে।
তিনি বলেন, এই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর ফরিদপুরে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করা হয়। ১৯৪৯ সালের ২১ জানুয়ারি তিনি মুক্তি পান। ১৯ এপ্রিল আবারও তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। জুলাই মাসের শেষে মুক্তি পান। ১৪ অক্টোবর ঢাকায় বঙ্গবন্ধুকে আবার গ্রেফতার করা হয়। কারাগার থেকেই তাঁর দিকনির্দেশনায় আন্দোলন বেগবান হয়।
তিনি বলেন, সেই দুর্বার আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্র"য়ারি শাসকগোষ্ঠীর জারী করা ১৪৪ ধারা ভাঙতে গিয়ে ভাষা শহীদরা প্রাণ দিয়েছিলেন ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহান একুশে ফেব্রুয়ারি সেই রক্তস্নাত গৌরবের সুর বাংলাদেশের সীমানা ছাড়িয়ে আজ বিশ্বের ১৯৩টি দেশের মানুষের প্রাণে অনুরণিত হয়। কানাডা প্রবাসী কয়েকজন বাঙালির উদ্যোগ ও প্রস্তাবে এবং আওয়ামী লীগ সরকারের সহায়তায় ইউনেস্কো ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর এই দিনকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
তিনি বলেন, আজ সারাবিশ্বের সকল নাগরিকের সত্য ও ন্যায়ের অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রেরণার উৎস আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।
শেখ হাসিনা আরো বলেন, 'বিশ্বের ২৫ কোটি মানুষের ভাষা বাংলাকে জাতিসংঘের অন্যতম সরকারি ভাষা হিসেবে স্বীকৃতিদানের জন্য আমি ইতোমধ্যে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে দাবি উত্থাপন করেছি। এছাড়া বিশ্বের সকল ভাষা সংক্রান্ত গবেষণা এবং ভাষা সংরক্ষণের জন্য আমরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেছি। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট আইন পাশ করা হয়েছে।'
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অমর একুশে আমাদের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, বাঙালি জাতীয়তাবাদ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতীক। একুশের চেতনা ও মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধকে ধারণ করে ক্ষুধা, দারিদ্র্য, সন্ত্রাস, সাম্প্রদায়িকতা এবং নিরক্ষরতামুক্ত আধুনিক ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে বর্তমান সরকার যাত্রা শুরু করেছিলো। গত তিন বছরে সরকার প্রতিটি ক্ষেত্রেই কাক্সিক্ষত অগ্রগতি অর্জন করেছে।
www.bangladeshnews24x7.com, বাংলাদেশনিউজ২৪x৭.কম, জাআ, জের, এসএকে

চলতি খবর সমুহ
আজ শ্রী শ্রী সরস্বতী পূজা
মালদ্বীপের সাবেক প্রেসিডেন্ট নাশিদ দূতাবাস ছাড়তে পারেন : সরকারের মুখপাত্র
এটিপি'র নতুন সিদ্ধান্তে চটেছেন নাদাল
হাজারীবাগ বস্তিতে আগুন : নিহত ৩
নাটোরে শিশু ধর্ষণের বিচারের দাবীতে মানববন্ধন-বিক্ষোভ
রাজাকার স্রষ্টা খুলনার মাওলানা ইউসুফ যে কোন সময় গ্রেফতার
রাজশাহীতে শিবির-পুলিশ সংঘর্ষ ককটেল বিস্ফোরণ গুলি : পুলিশসহ আহত ৩০
যুবক খুনের জের : মাগুরায় ২৫ বাড়িতে ভাংচুর লুটপাট অগ্নিসংযোগ
রংপুর বরিশাল মাইনাস টু : প্লাস হলো রাজশাহী
টিভি পর্দায় আজকের সিনেমা
শুক্রবারের নির্বাচিত টিভি অনুষ্ঠান
দ্রোহের আলো শান্তির আলো- রাজাকার বিনাশে চেতনার আলো
কাদের মোল্লাসহ যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে ঠাকুরগাঁওয়ে ৭১'র বিধবাদের অবস্থান
বর্তমানে নতুন করে রাস্তাঘাট নির্মান করা সম্ভব নয়-যোগাযোগ মন্ত্রী
কুলাউড়া ও শ্রীমঙ্গলে দিগন্ত টিভির সম্প্রচার বন্ধ
বাগেরহাটে দিগন্ত ও ইসলামীক টিভি সম্প্রচার বন্ধ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে পরে প্রত্যাহার করলেন
জেন্ডার সংবেদনশীল গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠায় ২৫% নারী সাংবাদিক নিয়োগের আহ্বান তথ্যমন্ত্রীর
একাত্তরের সন্তান সংগঠনের উন্মুক্ত মঞ্চে অবস্থান, দাবী না মানা পর্যন্ত আন্দোলনের ডাক
নওগাঁর সীমান্তে বি.জি.বি ও বি.এস.এফ ব্যাটেলিয়ান পর্যায়ে পতাকা বৈঠক
একুশের চেতনায় বাংলা বর্ণমালা
সোনা কান্তি বড়ুয়া, টরন্টো থেকে 
শনিবার, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১০
ফাগুনের আগুন নিয়ে শহীদ দিবস

স্বদেশের গৌরবোজ্বল মাতৃভাষা রক্ষা করার জন্য ঢাকার রাজপথে বায়ান্নের একুশে ফেব্রুয়ারী পাকিস্তানী পুলিশের গুলিতে প্রাণ দিলেন রফিক, সালাম, বরকত, জব্বার সহ আরও অনেকে। নিজের মাতৃভাষা ও দেশকে স্বাধীন করার পর বাঙালী বিশ্বের সকল জাতীর মাতৃভাষাকে শ্রদ্ধার আসনে বসাতে চেয়েছে বলে অমর একুশে আজ জাতিসঙ্ঘ স্বীকৃত আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস। ভাষা আন্দোলনের ঐতিহাসিক শেখড়ের সন্ধানে ইহা ও এই প্রসঙ্গে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যে, আমরা 'বৌদ্ধ চর্যাপদের' সন্ধান পেলাম আজ থেকে শতবর্ষ আগে। ১৯০৭ খৃষ্টাব্দে নেপালের রাজদরবারের পুঁথিশালায় প্রাচীন পান্ডুলিপির সন্ধান (১৯০৭ - ২০০৭) করতে গিয়ে মহামহোপধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী মহোদয় উক্ত বৌদ্ধ চর্যাপদের মরমী সংগীতগুলো আবিস্কার করেন এবং ভাষা আন্দোলনের আলোকে চর্যাপদ সন্ধানের ( ১৯০৭- ২০০৭) শতবার্ষিকী । বাঙালির চর্যাপদ এবং বৈষ্ণবপদাবলীর বিশ্বমানবতার ঐতিহ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দৃঢ় পদক্ষেপে মুখরিত হয়ে বাংলা ভাষায গিরিশ চন্দ্র সেনের অনূদিত "কোরান শরীফ "এবং কৃষ্ণকুমার মিত্রের লেখা "মুহম্মদ চরিত" অসাম্প্রদায়িক গণশিক্ষার প্রভাবে রচিত হয়।

বাঙালি জাতি চর্যাপদ অনুসন্ধান ও আবিষ্কারের (১৯০৭ খেকে ২০০৭) শতবর্ষ জয়ন্তি পালন করতে চায়। পূজনীয় ব্যিিক্তর পূজা করাই উত্তম মঙ্গল। কারন অমর একুশ চর্যাপদের স্বার্থক উত্তরাধিকার। ভাষা আন্দোলনের আলোকে বাংলা বর্ণমালার বয়স কত? কারন বাংলা ক্লাশে চর্যাপদের ইতিহাস ও বাংলা ভাষা প্রসঙ্গে অধ্যাপক মহোদয় আলোচনা করতেন বাংলা বর্ণমালার বয়স কত? সিদ্ধার্থ (গৌতমবুদ্ধ ) বাল্যকালে যে বাংলা লিপি অধ্যায়ন করেছিলেন তা বাংলা বিশ্বকোষে (১৩শ ভাগ, পৃঃ ৬৫ ) সগৌরবে লিপিবদ্ধ আছে। আজ ১৪১৬ বাংলা বর্ষ লেখা আমাদের ঐতিহাসিক রাজনীতির পরাজয়। আড়াই হাজার আগের বাংলা লিপিতে লেখার বয়স আজ ১৪১৬ বঙ্গাব্দ কেন? প্রসঙ্গত: ২৫৫৩ বুদ্ধবর্ষের সাথে থাই বর্ণমালা ও ভাষায় অনেক বাংলাশব্দ এবং ব্যাকরণ সমূহের মিল আমি থাই ভাষায় খুঁজে পেয়েছি। থাইভাষায় লেখা হয়, "সঙ্গীত শালা, মানুষ, রাজা, রাজিনী, লেখাধিকার (সম্পাদক), রাষ্ঠ্রসভা (সংসদ), প্রধান (সভাপতি), মূলনিধি (ফাউন্ডেশান), শিল্প, (থাই উচ্চারণ শিলাপা), মহাবিদ্যালয়।" থাইভাষা, ধর্ম এবং সভ্যতার সাথে বাংলা ভাষা ও সভ্যতার মিল আছে। বাংলা বর্ণমালায় একুশের অগ্নিবীণা। 

থাই ভাষায় বাংলা শব্দমালা

আমি থাইল্যান্ডে দীর্ঘদিন যাবত থাইভাষা অধ্যয়ন করেছি ও বাংলাভাষার শিক্ষক ছিলাম। থাই অভিধানে অনেক বাংলা শব্দ বিরাজমান। অভিধানকে থাই ভাষায় "বচনানুক্রম" এবং মিউজিয়ামকে থাই ভাষায় "বিবিধভান্ড" বলা হয়। বাংলা ব্যাকরণের (থাই উচ্চারণ : ওয়াইকরণ) সাথে থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, বার্মা (মিয়ানমার), লাওস ও কম্বোডিয়ান ভাষা সহ পালি ব্যাকরনের মিল আছে। সম্রাট অশোক বাঙালি ছিলেন এবং তিনি পালি ভাষার মাধ্যমে পৃথিবীর অনেক দেশে বাংলা ভাষা ও ধর্ম প্রচার করেছিলেন। "দক্ষিন এশিয়া হতে বৌদ্ধধর্ম বিতাড়নে" সংস্কৃত ভাষা প্রেমী ব্রাহ্মণ পন্ডিত ও হিন্দুরাজাদের হাত ছিল এবং তাদের অত্যাচারে ভারতে জাতিভেদ প্রথা প্রতিষ্ঠিত হয়ে মানবাধিকারের সব দরজা জানালা বন্ধ হয়ে গেল। ব্রাহ্মণও হিন্দুশাসকগণ হিন্দুধর্মের অপব্যবহার করে ফতোয়া দিয়েছিলেন, "যারা ভারতের (পান্ডব বর্জিত দেশে) সীমা অতিক্রম করে অন্যদেশে যাবেন, তাদেরকে প্রায়শ্চিত্ত করার বিধান অনুসরন করতে হবে।" ভারত ফেরতগণ বিদেশে গিয়ে বৌদ্ধধর্ম দেখার পর স্বদেশে এসে ব্দ্ধৌধর্ম আলোচনার ভয়ে হিন্দুশাসকগণ ভীত ছিলেন। ১৯৪৮ সালের পর চালচলনের পালাবদলে জিন্নাহ সাহেবের "উর্দু" ভাষা বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত হলে "বৌদ্ধধর্মের" মতো বাংলাভাষা বাংলাদেশ (পূর্ব পাকিস্তান) থেকে বিতাড়িত হতো। 


আজ ও আমার মনে পড়ে থাইল্যান্ড বা শ্যামদেশে রাজধানী ব্যাঙ্কক এয়ারপোর্টের নাম "সুবর্ণভূমি আন্তর্জাতিক এয়ারপোর্ট।" সুবর্ণভূমি নাম তো বাংলা শব্দ এবং সম্রাট অশোকের রাজত্বকালে (২৩০০ বছর আগে) দক্ষিনপূর্ব এশিয়া (সুবর্ণভূমি) বিশ্বমানবতায় (গৌতমবুদ্ধের মহাকরুনা ও মৈত্রী) আলোকিত হয়ে ওঠেছিল। দ্বাদশ শতাব্দীর থাইল্যান্ডের প্রথম রাজধানীর নাম সুখোদায় (বা সুখের উদয়) এবং মহারাজার নাম রামকাম হেং। সম্রাট অশোক ব্রাহ্মণভিত্তিক বৈদিক ধর্মকে ত্যাগ করে মানবতাবাদী রাজপুত্র সিদ্ধার্থের (গৌতমবুদ্ধ) মতবাদকে গ্রহন করে তাঁর প্রণাম কে চিরকালের বিশ্বপ্রাঙ্গনে রেখে গেলেন শিলাস্তম্বে (ও অশোকচক্রে)। ব্যাংকক শহরকে বলা হয় "ক্রুংদেব মহানগর" (বা দেব মহা নগর); এই শহরে সম্রাট অশোকের নামে বৌদ্ধমন্দির (অশোকারাম) ও রাজপথের নাম সয় অশোক বিদ্যমান। থাই ছেলে মেয়েদের নাম বাংলা নামের মতো নাম আনন্দ, অভিজিৎ, করুনা, সুন্দরী ও রতœা ইত্যাদি। থাইল্যান্ডের রাজনীতি ও ধর্ম চির স্বাধীন এবং বর্তমান রাজার নাম ভূমিবল অতুল্যতেজ (নবম রাম) এবং রানীর (রাজিনী) নাম শ্রীকীর্তি (সিরিকিত)। থাইল্যাণ্ডের প্রদেশের নাম: নগর প্রথম (নাকন প্রাথম), সুপানবুরি (সুবর্ণ পুরী), জলপুরী (ছনবুরি ও ফাত্যায়া) ও নগরশ্রী ধর্মরাষ্ঠ্র (উচ্চারণ : নাকন শ্রী তাম্মারাট), অযোধ্যা (আয়োধায়া) ইত্যাদি। জাদুঘরকে থাইভাষায় 'বিবিধ ভান্ড' ও সঙ্গীত একাডেমীকে 'সঙ্গীত শালা' বলা হয়। কলেজকে থাইভাষায় বিদ্যালয় (উচ্চারন : ওইথ্যালয়) এবং বিশ্ববিদ্যালয়কে মহাবিদ্যালয় বলা হয়। থাইভাষায় স্বরবর্ণ ১৫টি ও ব্যঞ্জনবর্ণ ৪৪টা। পালি (প্রাচীন মাগধি ও বাংলা) ব্যাকরনই থাই, বার্মা (মায়ানমার), শ্রীলংকা, লাওস ও ক¤ো^ডিয়া ভাষারসমূহের ব্যাকরন। বিশ্বের ধর্ম প্রচারকদের মধ্যে একমাত্র গৌতমবুদ্ধ (রাজপুত্র সিদ্ধাথ)র্ ২৫৫২ বছর আগে বঙ্গলিপি অধ্যয়ন করার গৌরবোজ্জ্বল কাহিনীর সচিত্র খন্ডচিত্র ইতিহাস ভারতের অজন্তা গুহায় আজ ও বিরাজমান। প্রসঙ্গত:উল্লেখযোগ্য যে, (নারায়ন স্যানালের লেখা বই "অজন্তা অপরুপা") ভারতের অজন্তা গুহাচিত্রে বঙ্গবীর বিজয় সিংহের ঐতিহাসিক শ্রীলংকা জয়ের ইতিকথা বিরাজমান অথচ চর্যাপদ বা বাংলা বর্ষ গণনায় আজ ১৪১৫ বর্ষ হবার কথা নয়। আজ ২৫৫৩ বাংলা বর্ষ ( থাইল্যান্ডের পঞ্জিকায় বুদ্ধবর্ষ ২৫৫৩) হবার কথা ছিল।

বৌদ্ধ চর্যাপদ পাঠ এবং গবেষণার সময় মনে হবে বাংলা কেবল একটি দেশ নয়, সে একটি সভ্যতা, একটি সংস্কৃতি, একটি অপাপবিদ্ধ জীবনাদর্শ বা জীবন দর্শণের প্রতীক, যার মর্মবাণী হল বিশ্ব মানবতাবাদে "আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের" ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের উদ্ভাবন এবং বোধিসত্ত্ব অবলোকিতশ্বরের (হিন্দুদের শিব) মতো পরকে আপন করার সাধনায় গভীরতরো অবলোকন। এই সব কথা কি করে আমি আপনাদেরকে সবিস্তারে বর্ণনা করবো? ইতিহাসের এই অহিংসার উজ্বল আলোতে ও আমাদের ধর্মভিত্তিক রাজনীতির অঙ্গন হিংসায় উন্মত্ত হয়ে থাকার কথা নয়। বিদেশী সভ্যতার হাজার বছর আগে বাঙালির গৌরব সন্তান অতীশ দীপঙ্কর বিশ্বমানবতা, মানবাধিকার ও অহিংসার মন্ত্র দিয়ে তিব্বত চিন সহ পৃথিবী জয় করেছেন।

বৌদ্ধ কবি ও সাধকগন বিপুল প্রজ্ঞা ও ক্ষুরধার বৌদ্ধদর্শন প্রয়োগ করে মনুষ্যত্বের উন্মেষ বিকাশে চর্যাপদের (৮ম - ১২শ শতাব্দী) এক একটি কবিতা রচনা করতেন। মানুষের দেশ মানুষের মনেরই সৃষ্টি। মানবাধিকারের যুগে চর্যাপদ আবিষ্কারের (১৯০৭ থেকে ২০০৭) শতবর্ষ জয়ন্তি ছিল। জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে চর্যাপদ বাঙালি জাতির জাতীয় সম্পদ। ইহাই রাজনীতি ও ইতিহাসের ক্ষেত্রে বাঙালির অখন্ড সাধনা এবং এই অখন্ড সাধনার ফলেই গৌতমবুদ্ধের তদানিন্তন বাংলা লিপি বহু চড়াই উৎরাইয়ের মধ্য দিয়ে এবং নানা ষড়যন্ত্রের দুর্ভেদ্য প্রাচীর বিদীর্ণ করে ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্র"য়ারীতে প্রতিষ্ঠিত হলো অনাগত বংশের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা আন্দোলন প্রবর্তন সূত্রময় 'শহীদ দিবস।' একাদশ এবং দ্বাদশ শতাব্দী থেকে শুরু হলো সাধক চর্যাকারগনের নেতৃত্বে সর্বপ্রথম ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস। যার দূর্ণিবার জীবন্ত স্রোত হাজার বছরের সংকোচের জগদ্দল পাথর ভেঙ্গে এলো আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্র"য়ারীর উনিশশো বায়ান্ন সাল থেকে আজকের বাঙালী ঐতিহ্যমন্ডিত আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস। বাঙালী জাতি আবার নতুন সহস্রাব্দের আলোকে আবিস্কার করবে বাংলা ভাষার প্রাচীনতম নিদর্শন বৌদ্ধ চর্যাপদের প্রতিটি শব্দ ও তার গভীর মর্মার্থকে। কারণ দেশ ও ভাষা বাঙালীর কাছে নিরেট বাস্তব, অতিশয় অপরিহার্য। 


(২) 

অতীশ দীপঙ্করের দেশ বিক্রমপূরের বজ্রযোগিনী অন্ধকারে ডুবে গেল কেন? বাঙালীরা বীরের বংশ। বাংলার মহাসম্রাট ধর্মপালের (৭৭০-৮১০ খৃঃ) রাজত্বের সীমানা ছিল বিশাল এবং তিনিই ভারতের বিহারে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেন। তাঁর রাজত্বের মানচিত্রে পূর্বে আসাম, পশ্চিমে গান্ধার, উত্তরে জলন্ধর ও দক্ষিণে বিন্ধগিরি ( পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী এলাকা) পর্যন্ত বি¯তৃত ছিল। পাটনায় স্থাপন করা হয়েছিল বৌদ্ধ পাল সাম্রাজ্যের সামরিক রাজধানী। তখন মহাকালের প্রসারিত পথের ওপর দিয়ে চলেছে বাঙালী ইতিহাসের পাল সাম্রাজ্যের স্বর্ণময় রথ। সে রথের আরোহী মহাশক্তিমান দিগি¦জয়ী সম্রাট ধর্মপাল ছিলেন এক কালজয়ী ভারত বিজয়ী বাঙালী মহাবীর। পাল রাজাদের সাথে ইন্দোনেশীয়া ও কম্বোডিয়ার রাজাদের সাথে আন্তরিক সম্পর্ক ছিল এবং ভারতীয় ইতিহাসের মহাকাল জয়ী সম্রাট চন্দ্রগুপ্ত ও সম্রাট অশোক বাঙালি ছিলেন। তাই 'অশোক চক্র' আজ ভারতের জাতীয় পরিচয় পত্র (এ্যাম্বলেম) ও জাতীয় পতাকায় সগৌরবে বিরাজমান।

ধর্মভিত্তিক রাজনীতি বাদ দিয়ে আমাদের রাজনীতির গণতন্ত্রের কাননে কুসুম কলি সকল ফোটবে কি? রাজনীতির রাখালেরা গণতন্ত্রের পরমার্থজ্যোতিকা বাল্যশিক্ষায় 'স্বীয় জিহ্বা শাসনে রাখার দুরুহ কাজে কঠিন পরিচয়'দেবার ব্রত নিতে হবে। ঐরংঃৎড়ু ৎবঢ়বধঃং রঃংবষভ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান দন্ডিত রাজাকারদের ক্ষমা করার পরের ঘটনা সমূহ আমরা সবাই জানি। ইতিহাসের আলোকে ঠিক তেমনি বিজয় সেন সুদূর কর্ণাটক থেকে এসে বাংলা দখল করে নিল এবং বহিরাগত সেন রাজারা যে চারশ বছরের পাল সাম্রাজ্যের সমদর্শী সংস্কৃতি ও প্রচলিত বৌদ্ধধর্মের বিলোপ ঘটিয়েছে। বাঙালীর মুখ থেকে বাংলা ভাষা কেড়ে নিয়ে উত্তর ভারতীয় সংস্কৃতি তন্ত্র চাপিয়ে দিল। বলতে গেলে সমাজ জীবনের ও ব্যক্তি জীবনের সর্বত্র তখন ব্রাহ্মণ আধিপত্য। নিপীড়িত মানবাত্মার জয়গানে মুখরিত এই চর্যাগুলো ।

বাংলাদেশের সেনা নায়ক বা প্রধানমন্ত্রী সহ দেশ শাসকগণের মন ক্ষমতার রসের হাঁড়িতে ডুব দিলে দেশ ও জাতি ধ্বংস হয়ে যায়। ভোটের মাধ্যমে গণতন্ত্রের ফুল ফোটলে জনতা সমাজ থেকে সাম্প্রদায়িকতার অভিশাপ থেকে রাজনৈতিক পরিবেশের সার্থকতা খুঁজে পাবেন। আমাদের যৌবনে সবার স্বপ্ন ছিল সুন্দর বাংলা দেশ গড়ে তুলবো। আজ ও সেই স্বপ্ন বুকে নিয়ে আমি সহ দেশের জনতা বেঁচে আছে। টাকা আজ সর্বশ্রেষ্ঠ শক্তির আর এক নাম। আমাদের দেশের স্বাধীনতা সংবিধানে নেই, বিচার ব্যবস্থায় নেই, শাসন ব্যবস্থায় নেই। সর্বত্র দুর্নীতির সাতকাহন। টাকার থলি দিয়ে রাজাকার, জামাত ও যুদ্ধাপরাধী মার্কা ধর্মভিত্তিক রাজনীতি জনতার স্বাধীনতাকে বন্দী করে রেখেছে। টাকার জন্যে নদীর জলে বিষ, বাতাসের গন্ধে হলাহল। রাজনৈতিক মোহাচ্ছন্নতা বাংলাদেশের সেনানায়কদের দৃষ্ঠিকে পঙ্কিলতার আবর্তে নিক্ষেপ করে। 

ব্রাহ্মণ্যবাদের মাফিয়াচক্রে জাতিভেদ প্রথায় সনাতন ধর্মের মস্তক বিক্রয় করে গণতান্ত্রিক বৌদ্ধধর্মকে বৈদিক ব্রাহ্মনগণ ধ্বংস করে। অধ্যাপক হরলাল রায় তাঁর লেখা 'চর্যাগীতি' গ্রন্থের দশম পৃষ্ঠায় লিখেছেন, 'ধর্মকোলাহলেই বাংলা সাহিত্যের পুষ্টি ও বিকাশ। ভারতেই আমরা দেখতে পাই ব্রাহ্মণ্য ধর্মের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দিতায় পালি সাহিত্যের উৎপত্তি। হিন্দুধর্মের সঙ্গে সংঘর্ষের ফলেই বৌদ্ধ ধর্ম ভারত হতে বিতারিত হয়েছিল। । বাঙালী সমাজের এই করুণ ছবি দেখতে পাই ৩৩ নং চর্যায়। "টালত মোর ঘর নাঁহি পড়বেসী। হাড়ীতে ভাত নাঁহি নিতি আবেশী। এর মানে, নিজ টিলার উপর আমার ঘর। প্রতিবেশী নেই। হাঁড়িতে ভাত নাই, অথচ নিত্য ক্ষুধিত।" সেন রাজত্ব মানে পূর্ব পাকিস্তান কর্ণাটকের ব্রাহ্মণ্যদের অধীনে বাংলা, নিজ বাসভূমেই পরবাসী করে দিয়েছে বাঙালীকে। ইতিহাসের এই অন্ধকার যুগে তবু বাঙালী দুহাতে অনন্ত সমস্যার পাথর সরিয়ে জীবনের যাত্রা পথ ধরে হাঁটতে শুরু করেছিল অন্যতর আলোর লক্ষ্যে।

অমর একুশের আলোকে জয় বাংলাদেশ

ধর্মের নামে শিক্ষনীতিতে "জাতিভেদ প্রথা" ভবিষ্যতে পাকিস্তানের লাল মসজিদ রুপে দেখা দেবার আশংকা আছে। হিন্দুদের সম্পত্তিকে শত্র" সম্পত্তি বানিয়ে পাকিস্তানের গণতন্ত্রের কবরের উপর আলকায়দা ও তালেবানের জন্ম আজন্মের পাপ। ঘরের শত্র" বিভীষণ আলকায়দা ও তালেবান পাকিস্তানকে প্রতিদিন প্রতিমহূর্তে তিলে তিলে ধ্বংস করছে। চাকমা ও বাংলা ভাই সহ আইনের শাসনে সবাই (হিন্দু ও মুসলমান) সমান। গণ শিক্ষার নামে "টাকাওয়ালাদের" নাটক ৩৮ বছর যাবত আমরা দেখছি। বর্তমান সরকার অর্পিত (শত্র") সম্পত্তির ৩ লাখ ৫০ হাজার ৪১২ কোটি টাকা মূল্যের সমস্যা সমাধান না করে মসজিদ ভিত্তিক গণ শিক্ষার স্বীকৃতি প্রদান করা কি যুক্তি সঙ্গত? মৌলবাদকে ভয় না করে সাহসের সাথে দমন করে দেশের মাটি থেকে উক্ত সমস্যার শেকড় উপরি ফেলতে হবে। বৌদ্ধদের সাহার্য ব্যতীত মুসলমান হায়দরাবাদের নিযাম সরকারের পুরাতত্ত্ব বিভাগের প্রধান ডক্টর গোলাম ইয়াজদানির সম্পাদনায় ১৯৩১ সালে বিরাট চার খন্ডে অজন্তা গুহার বৌদ্ধধর্মের একটি মনোরম এ্যালবাম প্রকাশ করা হল। বাংলাদেশে একমাত্র ধর্ম মানুষের মানবতাকে কি তিলে তিলে ধ্বংস করবে? গণপ্রজাতান্ত্রিক বাংলাদেশে মৌলবাদের সূতিকাঘার ধর্মস্থানের মাদ্রাসা। "টাকার যুগে" টাকার নামে ধর্মের অপব্যবহারে সাতখুন মাপ হল লাল মসজিদ ও শিখদের স্বর্ণমন্দিরে রাজনীতির পাঠশালায়।

সমাজ পাঠ বিভাগে হিন্দু মুসলমান বৌদ্ধ খৃষ্ঠানদের পবিত্র গ্রন্থাবলী বাংলাদেশের মসজিদ, মন্দির, বিহার ও গীর্জার বিদ্যালয় সমূহে বসে অধ্যয়ণ করার অধিকার অর্জন পরমত সহিষ্ণুতায় সম্ভব হয়। মন্দির, বিহার ও গীর্জা ভিত্তিক গণশিক্ষার কি হবে? "শাসনে যতই ঘেরো, আছে বল দূর্বলের ও।" রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায়, "মুক্তির মন্ত্র পড়ে ধর্ম, আর দাসত্বের মন্ত্র পড়ে ধর্মতন্ত্র।" পাকিস্তানের লালমসজিদ রাজনীতি থেকে বাংলাদেশ সরকারের অনেক কিছু শেখার আছে। তবে বাংলাদেশের কাঁধের উপর আজ ও পাকিস্তানি ভূত বসে আছে। তাই ধর্ম দিয়ে দেশের নাগরিকদের বিভাজন করে দেশের ধনী ও মন্ত্রীদের সন্তানগনকে উন্নত রাষ্ঠসমূহে উচ্চ শিক্ষার জন্য পাঠাবে।

নানা যন্ত্রনায় দেশের মানুষ কি ভাবে বেঁচে থাকবেন? 'জনম বিশ্বের তরে, পরার্থে কামনা' নিয়ে রাজনীতিতে হাতে খড়ি হবে কি? বখতিয়ার খিলজির অষ্ঠাদশ অশ্বারোহী যোদ্ধার ধর্মভিত্তিক মার্কা রাজনীতির দিন আর নেই। আরবীয় তমুদ্দিন বা কালচার হাজার বছরের আমাদের বাপ দাদার মাতৃভাষা বাংলা বর্ণমালা মুছে দেবার প্রশ্নে বায়ান্নোর একুশে ফেব্র"য়ারীতে রফিক সালাম বরকত জব্বার সহ অনেকে জীবন দান করে বাংলাদেশ রচনার প্রথম ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। বাংলার আকাশে বাতাসে বিশ্বমানবতার বাণী সর্বত্র বিরাজমান। বুদ্ধপূর্ণিমার সময় রাজধানী ঢাকার বুকে ফেলে আসা যৌবনের নানা কাহিনী আজ ও মনে পড়ে, "আহা আজি এ বসন্তে কত ফুল ফোটে, / কত বাঁশি বাজে, কত পাখী গায় ।" আজ দেশে পানি পর্যন্ত নেই। পানি পান করতে না পারলে ধর্ম কি ও কেন? ধর্মের নামে অত্যাচারের জন্যই আজ ও বিচারের বানী নিরবে কাঁদছে।

ভাষা আন্দোলনের পর বাংলাদেশে ইতিহাসের অবিচ্ছন্ন ধারা প্রবহমান, তবু আজ দুর্বৃত্ত ও লম্পট যুদ্ধাপরাধীদের বিচার না হবার কারন কি? ইতিহাসের সূত্র বিশ্লেষণে দেখা যায় যে ধর্মের নামে নর নারী হত্যা, জামাতের অমানবিক অত্যাচারের বিচার বাংলাদেশ সরকারকেই করতে হবে।বৌদ্ধ পাল রাজত্বের পতনের যুগে এবং ব্রাহ্মণ্য ধর্মের পূনরুত্থান কালে অস্থির ঘটনা চাঞ্চল্যের দ্বারা চঞ্চল সেন বর্মন রাষ্ট্রের প্রবল আধিপত্যের প্রেক্ষাপটে চর্যাপদের জন্ম আধুনিক গণতান্ত্রিক অধিকারের মেনিফিষ্টো হিসেবে। এর মধ্যে নিহিত রয়েছে বাঙালীর সর্বপ্রথম গনতন্ত্রের বীজ 'বাক স্বাধীনতার অধিকার'। বাংলা ভাষার প্রথম 'বিপ্লবী মিনার'।
http://www.news-bangla.com/index.php?option=com_content&task=view&id=3944&Itemid=47

একুশের চেতনায় উজ্জীবিত হোক তারুণ্য
সুস্ময় আহমেদ 

একুশের চেতনা ধারণ করতে হবে তারুণ্যকে। মনে প্রাণে কাজে। তাদের কাজের মাধ্যমে ভাষার প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শন করতে হবে। একুশের বইমেলা এবং বিভিন্ন ক্যাম্পাস আর এলাকায় তারুণ্যের কাজের পাশাপাশি এখন গণমাধ্যমেও তরুণরা এগিয়ে আসছেন বহুমাত্রিক কাজ নিয়ে। দেশের প্রতি ভালোবাসা থেকে তারা লিখছেন, নির্মাণ করছেন একুশের চেতনাকে বুকে লালন করে। গত বছর ভাষা শহীদদের নিয়ে কাজ করেছিলেন তরুণ নির্মাতা তারেক মাহমুদ। এ বছরও তিনি সেই কাজের ধারা অব্যাহত রেখেছেন। আনন্দের বিষয় হচ্ছে সৃষ্টিশীল তারুণ্য ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ প্রভৃতি দেশের ইতিহাস ঐতিহ্যের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত বিষয় নিয়ে কাজ করতে আগ্রহ বোধ করছেন। তরুণ লেখক ও নির্মাতা নাসিম আহমেদ, নির্মাতা সোলায়মান জুয়েল, নির্মাতা আফজাল হোসেন মুন্নাসহ অনেকেই নির্মাণ করছেন ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ননফিকশন ও ফিকশন ধরনের কাজ। লেখালেখিতে কাজ করছেন রুমানা বৈশাখী, আসমার মাসুদ, প্রিন্স আশরাফ, চঞ্চল আশরাফসহ আরো বেশকিছু তরুণ। তরুণদের সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোও কাজ করছে। সবমিলিয়ে বলা যায় তরুণ প্রজন্ম এখন আর কথায় নয় কাজের মাধ্যমে একুশের চেতনাকে ধারণ করছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে সেই সংখ্যাটা কত? উত্তর হচ্ছে বেশি নয়। তবে আমরা নিশ্চয়ই আশাবাদী হতে চাই। আমরা চাই আমাদের তরুণ প্রজন্ম মদ, ভোগ, সন্ত্রাস, রাজনীতি এগুলোয় জড়িত হবে না। হাজার অভাবে পড়লেও তারা নীতিভ্রষ্ট হবে না। তারা আগুনের পরশমণি নিয়ে উপস্থিত হবে আমাদের মাঝে। তাদের দেখে বড়রা বলবে দেখ আমাদের তরুণরা কী করছে। একুশের চেতনাকে বুকে নিয়ে আমাদের তরুণ প্রজন্ম অঙ্গীকার করুক আমরা জড়িত হবো না ইভ টিজিং বা এসিড সন্ত্রাসের মতো জঘন্য অপরাধে। আমরা দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়ব। ভাষাশহীদ বা মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মদানের প্রতি প্রকৃত অর্থেই সম্মান দেখাব। আমরা পরিষ্কার করব অতীত ও বর্তমানের নানা জঞ্জাল আর অপশক্তিকে।
http://www.jjdin.com/?view=details&archiev=yes&arch_date=26-02-2012&feature=yes&type=single&pub_no=50&cat_id=3&menu_id=71&news_type_id=1&index=0

একুশের চেতনায় নতুন প্রজন্ম হোসাইন কবির
বাঙালির জাতি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন সংগ্রামের সূতিকাগার হচ্ছে বায়ান্নের ভাষা আন্দোলন। যে ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে, যে চেতনার বহ্নিশিখা হৃদয়ে ধারণ করে বাঙালি মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জন করেছে স্বাধীন ভূখ-, সার্বভৌম বাংলাদেশ। আজ সে ভাষার মাসে ভাষা আন্দোলনের ৬১ বছর পর বাঙালির তরুণ প্রজন্মের সন্তানেরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে কণ্ঠে ধারণ করে দৃঢ় প্রত্যয়ে নবজাগরণের, নব আন্দোলনের কথা শোনাচ্ছে। এর সূচনা পর্ব ছিলো ঢাকার শাহবাগের মোড়। কিন্তু আজ গোটা বাংলাদেশের ছোট বড় সব শহরে শত সহস্র শাহবাগে গগনবিদারী কণ্ঠে ধ্বনিত হচ্ছে কাদের মোল্লার ফাঁসি চাই, রাজাকারমুক্ত বাংলাদেশ চাই। 'তুমি কে? আমি কে? – বাঙালি, বাঙালি'। তাছাড়া একাত্তরের জাগরণের সেøাগান, 'জয় বাংলা' ধ্বনিতে প্রকম্পিত হচ্ছে দেশের সকল জাগরণ চত্বরের আশপাশের এলাকা। গত ৫ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধাপরাধ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল একাত্তরের কসাই খ্যাত কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদ-ে দ-িত করে। কিন্তু এ রায় দেশের আপামর গণমানুষের প্রত্যাশা পূরণ করে নি। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম এ রায় মেনে নিতে পারে নি। তাইতো তারা গত এক সপ্তাহ কাল থেকে শাহবাগসহ সারা দেশের ছোট বড় সকল শহরে গগনবিদারী কণ্ঠে যে আওয়াজ তুলছে, দাবি জানাচ্ছে তাতে সারা দেশ আজ উত্তাল।
তাঁদের দাবির ভাষা অত্যন্ত পরিষ্কার এবং সুস্পষ্ট এবং যুক্তিসঙ্গত। বায়ান্নের ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে অর্জিত বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনা, তার মূল ভিত্তি ধর্মনিরপেক্ষতা। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে রাখায় সমাজ ও রাজনীতি থেকে ধর্মীয় সহিষ্ণুতা লোপ পেয়েছিল। বর্তমান সরকার রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বহাল রেখে এদেশের উদার ও মানবতাবাদী জনগণকে হতাশ করেছে। সে সাথে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে সরকারের অবস্থানকে সন্দেহের চোখে দেখেছে অনেকে। যে কারণে কাদের মোল্লার ফাঁসির বদলে যাবজ্জীবন কারাদ-াদেশ দেখে বিচলিত হয়েছে বয়স্করা, আর প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছে তরুণপ্রজন্ম। আজ তরুণদের দাবির কাছে সরকার বাধ্য হচ্ছে ট্রাইব্যুনাল অ্যাক্ট পরিবর্তন করতে।
কোন দলের লেজুড়বৃত্তি না করে এই তরুণরা প্রমাণ করেছে আদর্শে ও চেতনায় সৎ থাকলে যে কোন আন্দোলন সংগ্রাম সফল করা সম্ভব। আর এই শিক্ষা ও সাহস বায়ান্নেরই চেতনা। এই তরুণ প্রজন্ম শুধু একাত্তরের পক্ষে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে, ত্রিশ লক্ষ শহীদের পবিত্র রক্তে রঞ্জিত বাংলাদেশের পক্ষে।
লেখক ; শিক্ষাবিদ
http://www.suprobhat.com/?p=8818

একুশের চেতনায় দেশ গড়ার ডাক
দ্বিতীয় রাজধানী ডেস্ক

একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন স্থানে নানা কর্মসূচি পালিত হয়। এ উপলক্ষে আলোচনা সভায় বক্তারা মহান একুশের চেতনায় দেশ গড়ার ডাক দিয়েছেন।
বক্তারা বলেন, একুশ বাঙালির অহংকার। এদিন মহান মুক্তিযুদ্ধের বীজ বপন হয়।
চুয়েট : চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)-এ কর্মসূচির মধ্যে ছিল ক্যাম্পাসে প্রভাতফেরি, শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ, জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ, স্মৃতিচারণ ও শিক্ষামূলক আলোচনা সভা, শিশু-কিশোরদের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, কবিতা আবৃত্তি, কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল, উপস্থিত বক্তৃতা, দেশাত্মবোধক গান প্রভৃতি।
এ উপলক্ষে চুয়েটের পশ্চিম গ্যালারিতে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন অধ্যাপক ড. শ্যামল কান্তি বিশ্বাস।
চুয়েটের যন্ত্রকৌশল অনুষদের ডিন ও ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মোঃ তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন পুরকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম, তড়িৎ ও কম্পিউটার কৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোহাম্মদ রফিকুল আলম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. মোঃ আব্দুর রশীদ, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মীর মু. সাক্বী কাওসার, কর্মচারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার বড়ুয়া, শিক্ষার্থী সুব্রত বিশ্বাস, সুলতান আরিফ প্রমুখ।
সেন্ট প্ল্যাসিড্স উচ্চবিদ্যালয় : সেন্ট প্ল্যাসিডস উচ্চ বিদ্যালয়ের একুশে ফেব্রুয়ারির কর্মসূচি জাতীয় পতাকা উত্তোলন, প্রভাতফেরি, বিদ্যালয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা, দেশের গানের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়।
শিক্ষক অ্যান্ড্রু গোমেজের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন প্রধান শিক্ষক ব্রাদার প্রদীপ প্লাসিড গমেজ সিএসসি, সহকারী প্রধান শিক্ষক ব্রাদার মন্ত্রজয় ত্রিপুরা সিএসসি, ওপিএ সভাপতি জসীম উদ্দিন, শিক্ষক পুলক বড়ুয়া ও শিক্ষিকা ফেরদৌসি আনোয়ারা। বক্তারা তাদের বক্তব্যে মহান ভাষা আন্দোলনের শহীদদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করে সর্বস্তরে বাংলা ভাষার মর্যাদাকে সমুন্নত রাখার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
সিডিসি : সেন্টার ফর ডিসঅ্যাবলস কনসার্ন (সিডিসি) এর উদ্যোগে মেহেদীবাগ কার্যালয়ে রক্তদান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। রোটারি ক্লাব অব ওশান সহায়তায় কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বাগমনিরাম ওয়ার্ডের কাউন্সিলর গিয়াস উদ্দিন। বক্তব্য রাখেন সিডিসির সভাপতি নাসিমা বানু। এতে ২৫ জন দাতা রক্তদান করেন।
রিহ্যাব : সংগঠনের চট্টগ্রাম অঞ্চলের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। ভোরে প্রভাতফেরিতে নেতৃত্ব দেন রিহ্যাব চট্টগ্রামের জোনাল স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী। উপস্থিত ছিলেন মো. ইয়াছিন চৌধুরী, দিদারুল হক চৌধুরী, রেজাউল করিম প্রমুখ।
পাথরঘাটা ছাত্রলীগ : পাথরঘাটা ছাত্রলীগ ৪নং ওয়ার্ডের উদ্যোগে ২১ ফেব্রুয়ারি বিকালে আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। আশরাফ আলী রোড মরিয়ম মার্কেটে আফতাব উদ্দিন তানুনের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্য পুলক খাস্তগীর। প্রধান বক্তা ছিলেন মহানগর যুবলীগ নেতা সৈয়দ মো. ইসমাইল আজাদ। উপস্থিত ছিলেন হাফিজ আব্দুল্লাহ, প্রবাল চৌধুরী মানু, শওকত ওসমান, আতিকুর রহমান প্রমুখ।
কর্ণফুলী থানা স্বেচ্ছাসেবক দল : কর্ণফুলী থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে একুশের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষপস্তবক অর্পণ করা হয়। শ্রদ্ধাঞ্জলি শেষে জেলা পরিষদ চত্বরে সমাবেশ এস এম ফারুকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।
বক্তব্য রাখেন দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মো. আলমগীর তালুকদার টিপু, সাধারণ সম্পাদক মহসিন চৌধুরী রানা, মোহাম্মদ ইউনুস, এম. শফিউল করিম শফি প্রমুখ।
কধুরখীল বালিকা উচ্চবিদ্যালয় : বোয়ালখালীর কধুরখীল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে 'আমাদের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি' শীর্ষক আলোচনা সভা প্রধান শিক্ষক বাবুল কান্তি দাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বক্তব্য দেন পরিচালনা কমিটির সদস্য শঙ্কর ভট্টাচার্য, লিটন ধর শিক্ষকদের মধ্যে হাসিনা মমতাজ, অসীমা দাশগুপ্তা, লিপিকা চৌৎদুরী, রত্না দাশ, দেবী দত্ত ও প্রকাশ ঘোষ বক্তব্য দেন।
বিকালে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা দেশাত্মবোধক সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে দিনব্যাপী কর্মসূচি শেষ হয়।
চট্টগ্রাম পলিটেকনিক কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ : একুশের প্রথম প্রহরে চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ছাত্রলীগ ও কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের যৌথ উদ্যোগে ক্যাম্পাস সংলগ্ন শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
এসময় ভাষা শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
উপস্থিত ছিলেন ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ ও কেন্দ্রিয় ছাত্র সংসদের সভাপতি মো. শওকত উল ইসলাম, এ এম মহিউদ্দীন, এস এম ইলিয়াছ, মিল্টন বড়ুয়া প্রমুখ।
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ : বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ বাংলাদেশ ব্যাংক প্রাতিষ্ঠানিক কমান্ড, চট্টগ্রামের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মুক্তিযোদ্ধা ফজল আহম্মদের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংক চট্টগ্রাম শাখার মহাব্যবস্থাপক কে এম মুস্তাফিজুর রহমান।
বিশেষ অতিথি ছিলেন অধ্যক্ষ এনামুর রশিদ চৌধুরী, উপ-মহাব্যবস্থাপক দীপংকর ভট্টাচার্য, অফিসার ওয়েল ফেয়ার কাউন্সিলের সভাপতি সুলতান মাহমুদ প্রমুখ।
দক্ষিণ জেলা আওয়ামী যুবলীগ : দক্ষিণ জেলা আওয়ামী যুবলীগের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের সভাপতি আমম টিপু সুলতান চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক পার্থ সারথি চৌধুরী, দিদারুল ইসলাম চৌধুরী, শহীদুল ইসলাম চৌধুরী, বোরহান উদ্দিন চৌধুরী মুরাদসহ আরো অনেকে।
বঙ্গবন্ধু গ্রাম ডাক্তার পরিষদ : বঙ্গবন্ধু গ্রাম ডাক্তার পরিষদ চান্দগাঁও থানা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ডা. আবু তাহের, ডা. রতন কুমার নাথ, ডা. অপূর্ব ধর, ডা. মাহমুদুল হাসান, ডা. রাজীব চক্রবর্তী প্রমুখ।
ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটি : ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে দিনভর নানা কর্মসূচি পালিত হয়।
কর্মসূচির মধ্যে ছিল জাতীয় পতাকা উত্তোলন, প্রভাতফেরি, শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও আলোচনা সভা।
দুপুরে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সেকান্দার খান। বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক এ. কাইয়ুম চৌধুরী, ড. নুরুল আবসার নাহিদ, তোফাতুন্নেছা চৌধুরী প্রমুখ।
অটিস্টিক চিলড্রেন ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন : অটিস্টিক চিলড্রেন ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে হালিশহর স্কুল প্রাঙ্গণে বিভিন্ন অনুষ্ঠান পালিত হয়। অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিল অটিস্টিক শিশুদের অংশগ্রহণে চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা ও আলোচনা সভা।
মান্নান চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় অংশ নেন চাঁদের হাট চট্টগ্রাম জেলা সমন্বয় পরিষদের সদস্য সচিব মো. আনোয়ারুল করিম, স্কুলের অধ্যক্ষ জেসিয়া মান্নান, মো. ইলিয়াস, ডা. মো. কামরুল ইসলাম প্রমুখ।
অঙ্ব্রিজ স্কুল : অঙ্ব্রিজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সকালে জাতীয় সঙ্গীত ও 'আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি' গানের মধ্য দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে একুশে ফেব্রুয়ারি পালন শুরু হয়।
এরপর ছিল শিক্ষার্থীদের বিতর্ক প্রতিযোগিতা, একুশে ফেব্রুয়ারির তাৎপর্য বিষয়ক সভা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সমাপনী বক্তব্য রাখেন স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা রেহানা ইকবাল। অনুষ্ঠান পরিচালনায় ছিলেন স্কুলের শিক্ষিকা আনিকা ও রুমা দাশ।
বহদ্দারপাড়া স্কুল : মাতৃভাষা দিবস পালন ও বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী সভা বোয়ালখালীর পশ্চিম গোমদণ্ডী বহদ্দারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক মো. ইলিয়াছের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও বোয়ালখালী আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক রেজাউল করিম বাবুল। এতে ম্যানেজিং কমিটির সদস্য, অভিভাবক ও শিক্ষকরা বক্তব্য দেন।
গত প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় এ বিদ্যালয় থেকে ১৬ জন জিপিএ ৫ এবং ১২ জন শিক্ষার্থী বৃত্তি পাওয়ায় বক্তারা অভিভাবকসহ শিক্ষকদের অভিনন্দন জানান।
ফটিকছড়ি সাংবাদিক সমিতি : বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি ফটিকছড়ি শাখা উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে।
এ সময় সভাপতি এস এম আক্কাছ উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক আবদুস সাত্তার, জাহাঙ্গীর উদ্দিন মাহমুদ, সৈয়দ জাহেদ কোরাইশী, মো. শহীদুল আলম, এম এস আকাশ, আবু মুছা জীবন, আবু এখলাছ ঝিনুক, এইচ এম নেজাম উদ্দিন, মো. রফিকুল ইসলাম, আবু মুনছুর, সৈয়দ মো. মাসুদ, মাহফুজ আনাম, সজল চক্রবর্তী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মিরসরাই : উপজেলায় সপ্তাহব্যাপী একুশ উদ্যাপনের শেষ দিনে মঞ্চ মাতালেন মিরসরাই কবিতা পরিষদের শিল্পীরা।
এসময় কবিতা, গান আর নৃত্যের ছন্দে মেতে ওঠে মেলা প্রাঙ্গণ। গত মঙ্গলবার রাত ৯টায় দীর্ঘ দুই ঘণ্টার মনোমুঙ্কর পরিবেশনা উপভোগ করে কয়েক হাজার দর্শক।
অনুষ্ঠানের শুরুতে সবাইকে স্বাগত জানান কবিতা পরিষদের উপদেষ্টা চেয়ারম্যান শারফুদ্দীন কাশ্মীর। এরপর সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীনের উপস্থাপনার পর শুরু হয় কবিতা, গান আর নাচ।
ওইদিন তরুণ নাট্যকার এনায়েত হোসেন মিঠুর সন্ত্রাস ও যুদ্ধাপরাধবিরোধী নাটক 'মৌলভীর মন ভাল নেই'র প্রথম মঞ্চায়ন হয়। সোমবার রাতে উপজেলা পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত সপ্তাহব্যাপী মহান একুশ উদ্যাপনের ষষ্ঠ দিনে নাটকটি মঞ্চস্থ হয়।
সমসাময়িক রাজনৈতিক ও যুদ্ধাপরাধের বিচার ইস্যু নিয়ে রচিত এটি মঞ্চস্থ হয় অরুণিমার পরিবেশনায়।
এদিকে মিরসরাই মহান একুশ উদ্যাপন উৎসব অনলাইন পত্রিকা 'বাংলানিউজ২৪.কম'কে সংর্বধনা দিয়েছে।
২০ ফেব্রুয়ারি একুশ মেলা পরিষদের পক্ষ থেকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবিএম আবুল কাশেম মাস্টার এমপি বাংলানিউজের এডিশনাল এডিটর সুকুমার সরকার, চিফ রিপোর্টার আহমেদ রাজু, মার্কেটিং হেড সিরাজুল ইসলাম সুমন ও মিরসরাই প্রতিনিধি রিগান উদ্দিনের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন।
http://www.kalerkantho.com/index.php?view=details&type=gold&data=Politics&pub_no=804&cat_id=1&menu_id=118&news_type_id=1&index=19&archiev=yes&arch_date=26-02-2012#.UR3rcR2VOBk

একুশের চেতনায় একুশের কবিতা এবং পরম্পরা
অনু ইসলাম
বেস্টনিউজবিডি



আমাদের জাতিসত্তার প্রথম পরিচয় ১৯৫২ সালের মহান একুশে র্ফেরুয়ারি। যদিও এই ঘটনার অনেক আগে ১২০২ সালে এই দেশ মুসলমান শাসকদের দখলেছিল। তখন যারা মুসলমান ধর্ম গ্রহণ করেছিল আমরা তাদের বংশধর। কিন্তু মুসলমান হওয়ার অনেক অনেক আগে থেকে জাতিগত ভাবে আমরা বাঙালি হয়ে আছি। সে ক্ষেত্রে আমরা পূর্ব থেকেই জাতিগত ভাবে বাঙালি এই নৃতাত্ত্বিক সত্য মানতেই হবে। একুশে র্ফেরুয়ারি,মানে একুশ। এই শব্দে অন্তর্নিহিত আছে আমাদের শিল্প,সাহিত্য ও সংস্কৃতির চেতনা। আমরা যা কিছু ঐতিহ্য নিয়ে অগ্রসর হচ্ছি একুশ তারই উন্মোচন। আমাদের জাতীয় আন্দোলনগুলোর মাঝে ভাষা আন্দোলন পৃথিবীর ইতিহাসে এক মহান ঘটনা। যাই হোক, প্রসঙ্গ একুশের চেতনায় একুশের কবিতা এবং পরম্পরা । বাংলা কবিতার সঙ্গে রাজনৈতিক চেতনার সম্পৃক্ততা দীর্ঘ ঐতিহ্যের স্মারক। ১৯৪৭ সালে ধর্মভিত্তিক ভারত বিভক্তির প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানের একটি ভূখন্ড হিসাবে পূর্ব বাংলা স্থিত হয়। তখন এই অঞ্চলের ৯০-৯২শতাংশ মানুষই বাঙালি আর সমগ্র পাকিস্তানের প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষ কথা বলতো বাংলায়। ১৯৪৮সালে ভাষার জন্য প্রথম আন্দোলন হয় কিন্তু তা পরিপূর্ণ ভাবে সফল হতে পারে নি । অর্থাৎ ব্যর্থ হয়েছে । এই ব্যর্থতা হয়তো রাজনৈতিক অনেক কারণ হিসাবে আখ্যায়িত। তারপর ১৯৫২ সালের ২৭শে জানুয়ারী পল্টন ময়দানে পাকিস্তানের প্রধান মন্ত্রী খাজা নাজিম উদ্দিন ঘোষণা করেন যে,"উর্দুই পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হতে যাচ্ছে"। তাঁর এই বক্তব্যের প্রতিবাদে ধর্মঘট ও মিছিল বের হয় বিশ্ববিদ্যালয়সহ নানা শিক্ষায়তনে এবং এক পর্যায়ে তা বিশাল আন্দোলনের রুপ পায়। এতে ছাত্র,শিক্ষক,বুদ্ধিজীবী থেকে শুরু করে অনেক শ্রেণীর মানুষ আহত ও নিহত হয়েছে ভাষার জন্য। এভাবে অনেক রক্ত আর প্রাণহানির মধ্যে দিয়ে আমরা বাঙালিরা ফিরে পাই আমাদের মুখের মধুর ভাষা বাংলা ভাষা । অর্থাৎ মহান একুশে র্ফেরুয়ারি। যদিও ১৯৪৭ সালের পর পাকিস্তানের শাসক চক্র শোষন ও নিপীড়নের জন্য ভাষাগত সাংস্কৃতিক আঘাতটিকে হাতিয়ার হিসেবে বেছে নেয় বাঙালির ঐতিহ্য ও উত্তরাধিকারকে ধ্বংস করার অভিপ্রায়ে। তখন ১৯৪৭-১৯৫১ পর্যন্ত আমাদের কবিতা ছিল ইসলামী ভাবধারায় প্রভাবিত। তখন বাংলা ভাষায় রচিত কবিতা হারাতে থাকে নিজস্বতা। কবিতা জুড়ে বসে সাম্প্রদায়িক চেতনা। অর্থাৎ সে সময়কার কবিতায় বিষয়গত স্থান দখল করেছিল ইসলাম, মানে ইসলামী বিষয়ে কবিতা লেখা। এদের মধ্যে প্রধান ছিলেন সে সময়কার কবি গোলাম মোস্তফা, ফররুখ আহমদ,ছদরুদ্দীন ,সুফী জুলফিকার হায়দার প্রমুখ। তাই সে সময় কবিতাকে বলা হতো প্রগতিবিমুখ, অনাধুনিক এবং অনুর্বর। গবেষকরা অবশ্য সে সময়টাকে বাংলা ভাষার "সাহিত্যিক-শৈল্পিক বন্ধ্যাত্ব" বলে আখ্যায়িত করেছেন। তখন এই ভাষা আন্দোলনই সাহিত্যিক বন্ধ্যাত্ব থেকে মুক্তির উজ্জ্বল সিঁড়ি ছিল। এই আন্দোলনের প্রেক্ষিতে অনেক কবিতা লেখা হয়েছে। সেই সব কবিতায় ইসলামী মূল্যবোধের চেয়ে দেখা গেছে মানবতাবোধ,দেশজ উত্তরাধিকার,মাতৃভাষার প্রতি মমত্ববোধ সর্বপোরি অসম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গি। এই ধারায় একটি উলে¬¬খযোগ্য পদক্ষেপ হচ্ছে ১৯৫৩ সালে হাসান হাফিজুর রহমান সম্পাদিত প্রথম একুশের সংকলন "একুশে র্ফেরুয়ারি" যা বাঙালির স্বাধীকার বোধের প্রথম উন্মেষ। ভবিষ্যতের উত্তরসূরিদের কাছে একুশের সংগ্রামি দিনের তাৎপর্য কতখানি গুরুত্বপূর্ণ তা সঠিক ভাবে তুলে ধরতে না পারলে,যথাযথ দলিল লিপিবদ্ধ করে যেতে না পারলে সেটা হবে আমাদের কলংঙ্ক,ব্যর্থতা আর মূঢ়তারই পরিচায়ক। এই সরল সত্যটাকে উপলব্ধি করে হাসান হাফিজুর রহমান ঝাঁপিয়ে পরেন তার এই সংকলনের আরাধ্য কাজে। কোন বাধাকে বাধা বলে মানেন নি । কেননা একুশ ছিল আমাদের স্বাধীনতার প্রথম অঙ্কুরোদগম। তাঁর এই সংকলনে অনেকেই কবিতা লিখেছেন তাঁদের কবিতার শিরোনাম ছিল "একুশের কবিতা" এই সংকলনের মূল্যায়নে আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেছেন, হাসান হাফিজুর রহমান -এই আন্দোলনের আঘাতে যেভাবে সাড়া দিলেন তার ভেতরে বাংলাদেশের তৎকালীন সমাজ মানুষের একটা চেহারা উৎকীর্ণ। তাঁর এই সংকলনটি তৎকালীন সময়ে বাজেয়াপ্ত হয়েছিল । হাসান হাফিজুর রহমানের সংকলনটি ছাড়াও বিশেষ উলে¬খ করা চলে তা হলো কবি আজিজুল হাকিম ও কবি আবদুর রশিদ ওয়াসেক পুরী সম্পাদিত "একুশের কবিতা" (প্রকাশ ১৯৫৪ একুশে র্ফেরুয়ারি )এটি ছিল ২৫ পৃষ্ঠার ছোট কবিতা সংকলন । প্রসঙ্গত উলে¬খ যোগ্য যে,এই সংকলনের অনেক কবিতা ১৯৫২সালে রচিত এবং সাপ্তাহিক "সৈনিক" পত্রিকায় তৎকালেই প্রকাশিত হয় । ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলনের ও একুশের মর্মন্তুক ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় প্রথম কবিতা রচনা করেন চট্্রগ্রামের তৎকালীন "সীমান্ত" পত্রিকার সম্পাদক কবি মাহবুব উল-আলম চৌধুরীর "কাঁদতে আসিনি ফাঁসীর দাবি নিয়ে এসেছি"কবিতাটি। এটি একুশের প্রথম কবিতা হিসেবে খুবই আলোচিত যা বাংলা সাহিত্যে এক মাইলফলক। এই কবিতাটি প্রচারিত হবার পর তৎকালীন সরকার সাথে সাথে তা বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করেন। মাহবুব উল-আলম চৌধুরীর কবিতায় উদ্ভাসিত হয়েছিল বাঙালির অর্থাৎ এদেশের মানুষ শুধু কাঁদতে জানে না, অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য মরতে জানে,জানে প্রতিবাদ করতে।
তার একটি চিত্রিত রুপ চোখে পড়ে তাঁর কবিতায়- যারা আমার অসংখ্য ভাই বোনকে হত্যা করেছে/ যারা আমার হাজার বছরের ঐতিহ্যময় ভাষা অভস্থ/মাতৃসস্বোধনকে কেড়ে নিতে গিয়ে/ আমার এই সব ভাই বোনদের হত্যা করেছে/ আমি তাদের ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি। ইতঃপূর্বে অবশ্য এই তথ্য উদ্ঘাটিত হয়েছিল যে, তৎকালীন "অগত্যার" সম্পাদক ফজলে লোহানী কর্তৃক তাৎক্ষণিক ভাবে রচিত আর একটি কবিতা (সে সময়কে কেন্দ্র করে)"অগত্যা" পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। বাংলাই হচ্ছে বাঙালির মাতৃভাষা। মাতৃভাষার মর্যাদা অক্ষুণœ রাখতে সমগ্র বাঙালি আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়ে। কেননা বাঙালির কাছে স্বদেশ তার মায়ের মতই মূর্ত হয়ে ওঠেছিল। শাসকদের চাপিয়ে দেয়া সিদ্ধান্তের বিপরীতে সেই প্রজন্মের প্রতিবাদ আর লড়াইয়ের অংশগ্রহণ আর সমর্থকে কবি আবু জাফর ওবায়দুলাহ তার "একুশের কবিতায়" বলতে থাকেন- যে ছেলে বাড়ি আসবে বলে মায়ের কাছে চিঠি লেখে এবং যারা বাংলা ভাষাকে কেড়ে নিতে চায় তাদের তাড়িয়ে তারপর বাড়ি ফিরবে সেই প্রতিশ্রুতি উদ্ভাসিত-"মাগো, ওরা বলে,/ সবার কথা কেড়ে নেবে/ তোমার কোলে শুয়ে/ গল্প শুনতে দেবে না/বলো,মা, তাই কি হয়?/ তাই তো আমার দেরী হচ্ছে/ তোমার জন্য কথার ঝুড়ি নিয়ে/ তবেই না বাড়ী ফিরবো। প্রত্যেক জাতির একটি বৃহৎ আশ্রয় হলো তার মাতৃভাষা। মাতৃভাষা বেঁচে থাকে বা বিকাশ পায় প্রত্যেক জাতির নতুন নতুন প্রজন্মের লালনের মধ্যে দিয়ে আর ঠিক এভাবেই মানুষ ও ভাষা তার অস্তিত্ব খুঁজে পায় যা অমরতা লাভ করে পরস্পরের আশ্রয় ও পরিচর্যার ওপর। কবি আহসান হাবীব প্রতিকাশ্রয়ী হয়ে কবিতায় সেই মহিমাকেই মূর্ত করেছেন- আশৈশব অস্তিত্বের প্রহরী আমার/ কথারা যখন/ জননীর কন্ঠ থেকে মালা হয়ে ঝড়ে/ আমাকে জড়ায়/ তখন কেবল/ জানি আমি কথারই জননী এবং জন্মভূমি।/আমি তার পরিচর্যার ভার/ নিয়েছি এবং তার লালনেই থাকতে চাই সমর্পিত প্রাণ। বাঙালি জাতি পূর্ব থেকেই অনুপ্রাণিত হয়েছিল মাতৃভাষার প্রতি অকুন্ঠ মমত্ববোধের উপলব্ধি নিয়ে। যার কারণে জীবন বোধের গভীরতায় মাতৃভাষা স্বতন্ত্রসত্তার অধিকারী রুপে শ্রদ্ধার সাথে উচ্চারিত হয়। কবি শহীদ কাদরীর "একুশের স্বীকারোক্তি" কবিতায় সেই শ্রদ্ধা আর মমত্ববোধেরই চিৎকার শোনা যায়-অর্থাৎ যখনই চিৎকার করি/ দেখি,আমারই কন্ঠ থেকে/ অনবরত ঝড়ে পরছে অ,আ,ক,খ। ভাষার প্রশ্নে বাঙালি জাতির অস্তিত্ব যখন বিপন্ন হওয়ার পথে তখন বাঙালির বীর সন্তানেরা মৃত্যুতে ভীত না হয়ে শোকাহত না হয়ে প্রতিবাদ করেছিল এবং প্রতিরোধ গড়েছিল অস্তিত্ব ধ্বংসকারী শাসকদের বিরুদ্ধে। কবি সুফিয়া কামালের কবিতায় সেই অভিব্যক্তি প্রকাশ পায় -আশ্চার্য এমন দিন। মৃত্যুতে করে না কেহ,শোক /মৃত্যুরে করে না ভয়,শঙ্খাহীন,কীসের আলোক /উদ্ভাসিত করে ক্লান্ত দেহ,মুখ,পদক্ষেপ/সংকল্পের দ্যুতি তরে দৃঢ়তার প্রচার প্রলেপ/করেছে ভাস্বর। একুশের শহীদদের স্মৃতিকে অ¤¬ান করার প্রত্যয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের কাছে নির্মিত হয় শহীদ মিনার। এটি ছিল ভাষা মর্যাদা লড়াইয়ের উৎসর্গিত দুর্জেয় ও নির্ভিক তরুণদের চেতনার স্তম্ভ। এই চেতনা স্তম্ভ রক্তাক্ষরে খোদিত হয়েছিল ভাইয়ের আত্মারদান,বোনের শোকাচ্ছাস। কিন্তু পাকিস্তানের নিপীরক সরকার শহীদদের স্মৃতিস্তম্ভের ওপর আঘাত আনে,স্মৃতির মিনারটি ভেঙ্গে দেয় এরই প্রতিক্রিয়ায় স্বদেশ বাসীকে অভয় বাণী শুনিয়ে কবি আলাউদ্দিন আল-আজাদ উচ্চারণ করেছিলেন-স্মৃতির মিনার ভেঙ্গেছে তোমার?/ ভয় কি বন্ধু আমরা এখনো/ চার কোটি পরিবার/খাড়া রয়েছি তো/সে ভিৎ কখনো কোন রাজন্য পারেনি ভাঙ্গতে/ ইটের মিনার ভেঙ্গেছে ভাঙুক/ একটি মিনার গড়েছি আমরা/ চার কোটি কারিগর। জীবন যখন বিকশিত হতে থাাকে সাহিত্য তখন থেমে থাকিতে পারে না। জীবনের রুপ ও অন্তরাত্মা ভেদ করে শিল্প সাহিত্য উজ্জীবিত হতে থাকে। একুশও তেমনি বাংলা সাহিত্যে নতুন মাত্রায় সঞ্চার সৃষ্টি করেছিল। ভাষা আন্দোলনের পর বাংলা কবিতায় একুশের চেতনার প্রভাব বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মাত্রা পেয়েছে। যেমন-১৯৫৮ সালে সামরিক সরকারের কালোথাবা,১৯৬৯ এর গণ অভ্যূর্থান,১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধ-এই সব জায়গায়তেই একুশের চেতনার প্রতিফলন দেখা যায়। সামরিক সরকার কৌশলে একুশের চেতনাকে বিনিষ্ট করতে উদ্যোগী হয়ে ওঠে এতে রাজনৈতিক,সামাজিক,সাংস্কৃতিক ও সাহিত্যক ক্ষেত্রে হতাশা দেখা দেয়। একুশের চেতনা জাত স্বপ্ন সংকোচের মুখোমুখি হয়। কবিতায় সেই হতাশাগ্রস্থ সময়ের প্রতিছবি ভেসে ওঠে-চেতনার পথে দ্বিধাহীন অভিযাত্রা/ তারপর সেই কালো বাদুড়ের পাখনা আড়াল/ হালকা আধারে ঢাকা/ দৈত্যের আনাগোনা/ ভেলকী হাতের অদৃশ্য কৌশলে/বছরে বছরে রুপান্তরিক মূল্য/একুশে র্ফেরুয়ারি। রক্তাক্ত একুশ আমাদের শিখিয়েছিল দেশপ্রেম কিন্তু একুশের চেতনায় যখন হতাশা গ্রস্থ তখন শহীদদের বীরত্ব গাথাকে সামনে রেখে জাতীয় ঐতিহ্য ও উত্তোরাধিকার বোধের প্রশ্নে সে হতাশা কাটিয়ে উঠার প্রবণতা মূর্ত হয়। হতাশা গ্রস্থ সময়ের কাছে সমর্পিত না হয়ে কবি আল মাহমুদ শক্তি অর্জন করেছিলেন একুশের চেতনায় যেমন-তাড়িত দু:খের মত চর্তুদিকে স্মৃতির মিছিল/ রক্তাক্ত বন্ধুদের মুখ উত্তোজিত হাতের টঙ্কারে/ তীরের ফলার মত/ নিক্ষিপ্ত ভাষায় চিৎকার/বাঙলা বাঙলা/কে নিদ্রামগ্ন আমার মায়ের নাম উচ্চারণ করো? অনেকটা সময় পর আবার ১৯৬৬ সালে ৬ দফা আন্দোলন পরে তা ক্রমান্বয়ে ১১ দফা আন্দোলনে পরিণত হয়।
এক পর্যায়ে ১৯৬৯ সালে তা গণঅভ্যুর্থানে রুপ নেয়। এখানেও একুশের চেতনা পুনরায় নতুন রূপে গতি পায়। এই অভ্যুর্থানের প্রেক্ষাপটে কবি শামসুর রাহমান একুশের চেতনায় নতুন ভাবে জেগে উঠেন "বর্ণমালা আমার দু:খিনী বর্ণমালা "কবিতায় তার সেই রপ উদ্ভাসিত-নক্ষত্র পুঞ্জের মতো জ্বলজ্বলে পতাকা উড়িয়ে আছো আমার সত্তায়/আজন্ম সাথী আমার/ উনিশ শো বাহান্নোর দারুণ রক্তিম পুষ্পাঞ্জলী/ বুকে নিয়ে আছো সগৌরবে মহীয়সী।/তোমার মুখের দিকে আজ আর যায় না তাকানো/বর্ণমালা,আমার দু:খিনী বর্ণমালা। তাছাড়া একুশ যেন আমাদের চেতনারই রঙ ধারণ করে আছে এবং একুুশের শহীদেরা যেন আবার পুনরায় রাজপথে নেমে এসেছে উণসত্তরের গণঅভ্যুর্থান কে পরিণত করার প্রত্যয়ে সেই অভিব্যক্তি ও প্রকাশ পায় শামসুর রাহমানের কবিতায়- একুশের কৃষ্ণষ্ণচূড়া আমাদের চেতনারই রঙ/বুঝি তাই উনিশ শো উণসত্তোরেও আবার সালাম নামে রাজপথে,শুন্যে তোলে ফ্ল্যাক/বরকত বুবপাতে ঘাতকের থাবার সম্মুখে/ সালামের বুক আজ তরুণ উন্মাথিত মেঘনা/ সালামের মুখ আজ তরুণ শ্যামল পূর্ব বাংলা। স্বাধিকারের চেতনা থেকেই বাঙালি তার ভাষার মর্যাদা দানে একুশে র্ফেরুয়ারিতে আত্মউৎসর্গ করেছিল তা নি:সন্দেহ। কিন্তু ১৯৬৯ এর গণঅভ্যূর্থানের পর ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে এসে সেই স্বাধিকার চেতনাই আবার জাতীয়তাবাদের সোচ্চার মন্ত্রে দীক্ষিত হয়। যার কারণে বাঙালি মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসের যুদ্ধের মধ্যদিয়ে অর্জন করেছিল একটি স্বাধীন পতাকা,সার্বভৌম বাংলদেশ। কবি কামাল চৌধুরীর কবিতায় সেই ধ্বনিই অনুরণিত হয়েছে- অন্ধকার পায়ে ছিলে/অবশেষে হামাগুড়ি দিয়ে দাঁড়িয়েছে/ ফ্লাগুনে রক্তঝাউ পরে আছে বসন্তের জামা/ আমি তার এক হাত পরে অন্য অংশ দিয়েছি ভাইকে/বোনকে দিয়েছি তার সবগুলো সবুজ বোতাম/ আর সুতো/আমরা সবাই মিলে ভাগ করে পেয়ে গেছি একটি পতাকা। মুক্তিকামী মানুষের কিসের ভয়? যেখানে মানুষ কবরের পাশে থেকে নিজে কবর হয়ে গেছে অথবা শহীদের পাশে থেকে শহীদ এবং নিজের আঙ্গুল যেন শহীদের অজস্র মিনার হয়ে জনতার হাতে হাতে ছড়িয়েছে। একুুশের এই চেতনা আর অনুভূতি মানুষ যেন এক নতুন উদ্দীপনায় মেতে ওঠেছিল জয়ের জন্য। মুক্তিযুদ্ধের সময় সেই অভিব্যক্তি প্রকাশ পায় কবি নির্মলেন্দু গুণের কবিতায়- এই দেখো অন্তরাত্ম্ ামৃত্যুর গর্ভে ভরপুর/আমারই আত্মাার প্রতিভাসে এই দেখো আগ্নেয়াস্ত্র /কোমরে কার্তুজ, অস্থি ও মজ্জার মধ্যে আমার বিদ্রোহ/ উদ্ধত কপাল জুুড়ে যুদ্ধের রক্তজয়টিকা । বাঙালির জাতীয়তাবাদ একটি ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদ। আর ভাষাই বাঙালির এই জাতীয়তাবাদের মূূল উপাদান। ৫২র ভাষা আন্দোলনের মধ্যে দিয়েই বাঙালি চিহিৃত করে নিয়েছিল তার আপন পরিচয়। আমাদের ঐতিহ্য যে ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে আছে এবং আমদের জীবন চেতনার সংস্পর্শে যার সবচেয়ে গভীর অন্তরংগ ও অবিচ্ছেদ্য একুশ তারই অবলোকন করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা পেয়েছি আমাদের নিজস্ব ভাষাসহ সবুজের মাঝে লাল সূর্যের মত একটি সুন্দর স্বাধীন স্বদেশ। আজ এই র্ফেরুয়ারি মাসে সমস্ত ভাষা শহীদের প্রতি রইল গভীর শ্রদ্ধা ও ভালবাসা । সুশ্রী হোক প্রতিটি বাংলা ভাষার মানুষ এবং বাংলা ভাষার জয়ধ্বনি হোক সব সময় প্রতিটি বাঙালির মননে।



(বেস্টনিউজবিডি/অনু ইসলাম/আইব/৬ফেব্রুয়ারি)
http://bestnewsbd.com/index.php?view=details&data=Soccer&menu_id=9&news_id=16407
'একুশের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক সমাজ গঠন করতে হবে'
প্রধানমন্ত্রী আজ একুশে পদক বিতরণ করছেন ঢাকার ওসমানী মিলনায়তনে৷ সেই অনুষ্ঠানে তিনি একুশের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক সমাজ গঠনের কথা বলেছেন৷ তিনি বলছেন, এই চেতনা সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে৷

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একুশে পদক বিতরণ অনুষ্ঠানে বলেন, একুশের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক সমাজ গঠন করতে হবে৷ আর তার সরকার সেই কাজই করে যাচ্ছে৷ তিনি বলেন, রক্ত দিয়ে যে চেতনা আমরা অর্জন করেছি তা সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে৷
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাঙালি যে সুযোগ পেলে অনেক বড় কিছু করতে পারে ক্রিকেট তার প্রমাণ৷ বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আমাদের দক্ষতা প্রমাণ করেছে৷
বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য এবার অমর একুশে পদক দেয়া হয়েছে ১৩ জনকে৷ তারা হলেন, শওকত আলী(মরণোত্তর), মোশারেফ উদ্দিন আহমেদ (মরণোত্তর),আমানুল হক, বাউল করিম শাহ, জ্যোস্না বিশ্বাস, আখতার সামদানী (মরণোত্তর), নুরজাহান বেগম, মো. আবুল হাসেম, মো. হারেস উদ্দিন সরকার, মো. দেলওয়ার হোসেন, শহীদ কাদরী, আবদুল হক (মরণোত্তর) ও আবদুল হক চৌধুরী(মরণোত্তর)৷ একুশে পদক গ্রহণের পর জ্যোস্না বিশ্বাস বলেন এটি তাঁর জীবনের বড় সম্মান৷
আর বাউল করিম শাহ বলেন শেষ জীবনে হলেও তিনি সম্মান পেলেন৷ অন্যদিকে ৬ জনকে এবারের বাংলা একাডেমী পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছে৷ তাঁরা হলেন, অধ্যাপক খান সারোয়ার মুর্শিদ, বুলবুল চৌধুরী, রুবী রহমান, নাসির আহমেদ, অজয় রায় এবং গোলাম কিবরিয়া৷
প্রতিবেদন: হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা
সম্পাদনা: জান্নাতুল ফেরদৌস
http://www.dw.de/%E0%A6%8F%E0%A6%95%E0%A7%81%E0%A6%B6%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%9A%E0%A7%87%E0%A6%A4%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A7%9F-%E0%A6%85%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A7%8D%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%A6%E0%A6%BE%E0%A7%9F%E0%A6%BF%E0%A6%95-%E0%A6%B8%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%9C-%E0%A6%97%E0%A6%A0%E0%A6%A8-%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A6%A4%E0%A7%87-%E0%A6%B9%E0%A6%AC%E0%A7%87/a-14856192-1

একুশের চেতনায় এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখে বাংলাদেশ
জাকির হুসাইন

বায়ান্নের ফেব্রুয়ারি। বিস্ময়কর আত্মজাগরণ। ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ বাঙালি। উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার চক্রান্ত রুখে দিতে সংগঠিত হচ্ছিলেন তারা। অবশেষে অমর একুশের দিনে বিজয় ছিনিয়ে এনেছিলেন বাঙালি জনতা। এ একুশ এখন ৬০ বছরে পদার্পণ করেছে। একুশের চেতনায় এখনো এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখে বাংলাদেশ। ফেব্রুয়ারি এলে তাই নতুন করে জেগে ওঠে বাঙালি। একুশ আমাদের অহঙ্কার ও শিল্পচেতনা। বাঙালি জাতির সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার ধারাবাহিক আন্দোলনের সংগ্রামের পথ দেখিয়েছে বার বার। তাই মহান একুশ বাঙালির জাতীয় জীবনে প্রতিবাদ-প্রতিরোধের এক শাশ্বত চেতনার প্রতীক। একইভাবে একুশে আমাদের উন্নয়নেও প্রত্যক্ষ ভূমিকা পালন করেছে। সৃজনশীলতার উৎকর্ষে ভাষার মাস বহুমাত্রিক উপস্থাপনা আজো অব্যাহত। 
প্রতিটি বাংলাদেশী বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করার সৌভাগ্য ও বেড়ে ওঠার কারণে যেভাবে মাতৃভাষার গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পারে, পৃথিবীর অনেক দেশের মানুষের সে সুযোগ সীমিত। এ কারণে তার মাতৃভাষা ও সংস্কৃতিতে তার জন্য কি আলো, কি শক্তি লুকিয়ে রয়েছে তা অনুভব করতে পারছে না এবং যথাযথভাবে সেই শক্তি ব্যবহারও করতে পারছে না। ফলে আজকের পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষ নিজের আলো এবং শক্তি থেকে বঞ্চিত থেকে সঙ্কুচিত জীবন অতিবাহিত করছে।
একুশের চেতনা ও ভাষা শহীদের স্মরণে ফেব্রুয়ারি মাস এলেই দেশজুড়ে চলে নানা অনুষ্ঠান-আয়োজন। সব ধরনের সভা-সমাবেশ মঞ্চ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানানো হয় বায়ান্নর ভাষা শহীদদের। একুশের স্মৃতিবিজড়িত অমর একুশে গ্রন্থমেলার সবচেয়ে বড় উদাহরণ। ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন থেকে বাংলা একাডেমীতে শুরু হয়েছে বাঙালির এ সাংস্কৃতিক উৎসব। বই বেচাকেনা ছাড়াও মেলামঞ্চে ভাষা-সংগ্রামীদের নিয়ে বিকালে আলোচনা করা হয়। একই সঙ্গে সন্ধ্যায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। শহীদদের গান, ভাষার গান, কবিতাসহ নানা আয়োজনে এ বছর ফুটে উঠেছে অমর একুশে।

ভাষার মাস ফেব্রুয়ারি। একুশের মাস ফেব্রুয়ারি। বাঙালির চেতনা বিকাশের মাস ফেব্রুয়ারি। তাই বাংলা ভাষার বিকাশে একুশ একটি যুগান্তকারি মাইল ফলক। ভাষার জন্যে জীবন দেয়ার নজির পৃথিবীর অন্য কোনও জাতির নেই, আছে কেবল আমাদেরই। প্রবাসে এসে কত্ত চেষ্টায় ভুলে যাই কত্ত কিছু, কেবল ভুলিনা ভাষাটা।কারণ এটা আমাদের মায়ের ভাষা। কিন্তু এখনই প্রশ্ন উঠেছে, আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম বাংলা বলতে পারছে না, যারা বলছে তারা পড়তে পারছে না। তাহলে কী প্রবাসে হারিয়ে যাবে আমাদের গৌরবের বাংলা ভাষা? অন্টারিওর প্রিমিয়ার ড্যাল্টন ম্যাকুইনটির একটি সাক্ষাৎকার ছেপেছিলাম কয়েক সপ্তাহ আগে। তিনি বলেছিলেন, যে মাতৃভাষাকে ভুলে যায় সে সবকিছুই হারিয়ে ফেলে। তাহলে কী আমরা সবকিছু হারাতে বসেছি? যে ভাষার জন্যে আমাদের ভাইয়েরা রাজপথে রক্ত দিলো সেই ভাষাটাকে সন্তানদের মুখে তুলে দিতে এতো অনীহা কেনো? 
আমাদের সন্তানরা শুদ্ধ করে বাংলা বলবে এবং লিখবে, এই প্রত্যাশা এখন সবার।
রেটিং দিন :
মা ভাষা প্রজন্ম

কাজী রহমান
বিভাগ: ইতিহাস, কবিতা, বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধ


কাজী রহমান
খুব অযত্নে পড়ে থাকা কটা পাতায় কোত্থেকে যেন সুর এসে লাগলো পাতাগুলো প্রাণ পেলো, শক্তি পেলো, তারপর উড়ে উড়ে ছড়িয়ে গেলো। তখনো গ্রীষ্ম আসেনি, বসন্ত ছুঁই ছুঁই; ফাগুনের রঙ লাগা এক উজ্জল দিনে ওদের কয়েকটা ভাব করে এক হোল, কথা বলতে, নিজের মত করে এখানে। কথা বলতেই ঘিরলো; মারলো ওদের; দখলদার কিছু জলপাই খাকি দানব। [...]
বিস্তারিত...»

মন্তব্য ব্যতীত শুধুমাত্র পোস্ট
ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৩ – ১২:২১ অপরাহ্ণ
৩ ফাল্গুন ১৪১৯
মন্তব্য (০) | ৪ বার পঠিত 
পোস্টে সাম্প্রতিক মন্তব্য (rss feed)


বাস্তবতার যাদু (পর্ব-৪): প্রথম মানুষ কে ছিল ?

ইকবাল নাওয়েদ
বিভাগ: ব্লগাড্ডা


ইকবাল নাওয়েদ
বাস্তবতার যাদু (পর্ব-১): বাস্তবতা কি? যাদু কি? বাস্তবতার যাদু (পর্ব-২): বিজ্ঞান এবং অতিপ্রাকৃতঃ ব্যাখ্যা এবং এর শত্রু বাস্তবতার যাদু (পর্ব-৩): বিবর্তনের ধীর যাদু প্রথম মানুষ কে ছিল ? এই বইয়ের বেশীরভাগ অধ্যায়ের শিরোনামে একটা প্রশ্ন থাকবে। আমার উদ্দেশ্য হল সেই প্রশ্নটার উত্তর দেওয়া, অথবা অন্তত সম্ভাব্য সেরা উত্তরটা দেওয়া। একটা বৈজ্ঞানিক উত্তর। কিন্তু সাধারনত কোন [...]
বিস্তারিত...»

মন্তব্য ব্যতীত শুধুমাত্র পোস্ট
ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৩ – ১০:৫৭ পূর্বাহ্ণ
৩ ফাল্গুন ১৪১৯
মন্তব্য (২) | ২০ বার পঠিত 
পোস্টে সাম্প্রতিক মন্তব্য (rss feed)


পাঠ-প্রতিক্রিয়াঃ মানুষিকতা

রিজওয়ান
বিভাগ: দর্শন, ধর্ম, পুস্তক, বিজ্ঞান, মুক্তমনা


রিজওয়ান
রায়হান আবীরের নতুন বই 'মানুষিকতা' এই বইমেলায় আসছে এই খবর প্রথম তার দেয়া স্ট্যাটাস থেকেই জানতে পারি। তার লেখার ধরন ভালো লাগে দেখেই মনঃস্থির করি বইটি কিনে ফেলবো। সেই সাথে আরও একটি জিনিস মনঃস্থির করি যে বইটি পড়ব এবং শেষ করব। তার এবং অভিজিৎ রায়ের বই 'অবিশ্বাসের দর্শন' ৭০ ভাগের মত পড়েছিলাম, যত টুকু পড়েছি বেশ ভালোই লেগেছে, কিন্তু তারপরও কেন শেষ করিনি এই উত্তর জানতে আমাদের কোন অলৌকিক শক্তির দ্বারস্থ হতে হবে।
বুঝতেই পারছেন, এখন যেহেতু পাঠ-প্রতিক্রিয়া লিখতে বসেছি, আমি আমাকে দেয়া কথা রাখতে পেরেছি। যাই হোক, মানুষিকতা বইয়ে আছে তিনটি অধ্যায়। তিনটি অধ্যায়ের আলাদা আলাদা করে প্রতিক্রিয়া জানানোর দরকার আছে বলে মনে করি।
বিস্তারিত...»

মন্তব্য ব্যতীত শুধুমাত্র পোস্ট
ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৩ – ১১:৩৭ অপরাহ্ণ
২ ফাল্গুন ১৪১৯
মন্তব্য (৪) | ৮৪ বার পঠিত 
পোস্টে সাম্প্রতিক মন্তব্য (rss feed)


শাহবাগের আন্দোলন এবং বাঙালির চেতনার পুনর্নির্মাণ

আসিফ মহিউদ্দীন
বিভাগ: শাহবাগ আন্দোলন ২০১৩


আসিফ মহিউদ্দীন
একাত্তরের নরঘাতক ধর্ষক এবং যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবী নিয়ে যেই গণজোয়ার এবং আন্দোলন শুরু হয়েছে, সেটা এখন আর সাধারণ পল্টন ময়দান বা নয়াপল্টনের আটপৌরে আন্দোলনের পর্যায়ে নেই। এই আন্দোলন এখন যেই উচ্চতায় পৌঁছেছে, সেটাকে আমাদের সুবিধাবাদী চরিত্রহীন রাজনৈতিক দলগুলোর অন্যান্য আন্দোলনের সাথে এক করে দেখা যাবে না। আমরা কম বেশি সকলেই জানি রাজনৈতিক দলগুলো [...]
বিস্তারিত...»

মন্তব্য ব্যতীত শুধুমাত্র পোস্ট
ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৩ – ১০:৩৯ অপরাহ্ণ
২ ফাল্গুন ১৪১৯
মন্তব্য (৬) | ১০৩২ বার পঠিত 
পোস্টে সাম্প্রতিক মন্তব্য (rss feed)


ইরতিশাদ আহমদ-এর আমার চোখে একাত্তর

মুক্তমনা এডমিন
বিভাগ: আমার চোখে একাত্তর, পুস্তক, বাংলাদেশ, মুক্তমনা, মুক্তিযুদ্ধ, রাজনীতি, সংস্কৃতি, সমাজ, সাহিত্য আলোচনা


মুক্তমনা এডমিন
[মডারেটরের নোট: অধ্যাপক ইরতিশাদ আহমদ মুক্তমনার একজন নিবেদিতপ্রাণ সদস্য। তিনি বহুদিন ধরেই মুক্তমনার সাথে, মুক্তমনাদের মুক্তবুদ্ধির আন্দোলনের সাথে জড়িত আছেন। তাঁর একটি চমৎকার বই প্রকাশিত হয়েছে এবারের বই মেলায় 'আমার চোখে একাত্তর' শিরোনামে। বইটি প্রকাশ করেছে চার্বাক প্রকাশনী। বইমেলায় বইটি পাওয়া যাচ্ছে বইটি পাওয়া যাচ্ছে প্যাপিরাস, র‍্যামন এবং কাশবন প্রকাশনীর স্টলে। বইটির একটি চমৎকার ভূমিকা [...]
বিস্তারিত...»

মন্তব্য ব্যতীত শুধুমাত্র পোস্ট
ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৩ – ৭:৪৬ অপরাহ্ণ
২ ফাল্গুন ১৪১৯
মন্তব্য (৫) | ১১১ বার পঠিত 
পোস্টে সাম্প্রতিক মন্তব্য (rss feed)


তুই রাজাকার

রাজেশ তালুকদার
বিভাগ: উদযাপন, কবিতা, দৃষ্টান্ত


রাজেশ তালুকদার
দেখ, চপল বাঙালি জেগেছে আবার একবার জেগেছিল বায়ান্নতে নিরস্ত্র বেশে আবার একাত্তরে রাইফেল হাতে ঊর্মি গর্জনে সাহসিকতায়, ছিনিয়েছে অস্তমিত অধিকার সংকটে জেগেছে জাতি আবা্র, নতুন স্লোগানে তুই রাজাকার, তুই রাজাকার, তুই রাজাকার।। একটি দু'টি নয় স্বাধীনতার চল্লিশটি বছর পর গোধূলি-প্রভাতে সবুজ বাংলার পথে প্রান্তরে রচিবে কলংক ক্ষত মূলউৎপাটনের নব ইতিহাস। দেখিবে বিশ্ব অগ্নি নাচনে প্রকম্পিত [...]
বিস্তারিত...»

মন্তব্য ব্যতীত শুধুমাত্র পোস্ট
ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৩ – ৭:৩০ অপরাহ্ণ
২ ফাল্গুন ১৪১৯
মন্তব্য (২) | ৭৮ বার পঠিত 
পোস্টে সাম্প্রতিক মন্তব্য (rss feed)


[ডারউইন দিবস উপলক্ষে রচনা] বিবর্তনের সাক্ষ্যপ্রমাণ (তৃতীয় পর্ব)

ইরতিশাদ
বিভাগ: জীববিজ্ঞান, জীবাশ্মবিজ্ঞান, ডারউইন দিবস, বিজ্ঞান, বিবর্তন


ইরতিশাদ
বিবর্তনের সাক্ষ্যপ্রমাণ (তৃতীয় পর্ব) ইরতিশাদ আহমদ জেরি কোয়েন-এর 'বিবর্তন কেন বাস্তব' অবলম্বনে (প্রথম পর্ব), (দ্বিতীয় পর্ব) [লেখাটা শুরু করেছিলাম ২০১০-এর মার্চে। দুই পর্ব লিখে আর লেখা হয় নি। আমার সীমাহীন আলসেমি ঘুচিয়ে তৃতীয় পর্ব লিখতে শুরু করেছিলাম বছর খানেক আগে। পাঠকদের সাথে সাথে আমিও ভুলেই গেছিলাম যে আমার একটা লেখা মুক্তমনায় ঝুলে আছে। [...]
বিস্তারিত...»

মন্তব্য ব্যতীত শুধুমাত্র পোস্ট
ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৩ – ৪:৫১ পূর্বাহ্ণ
১ ফাল্গুন ১৪১৯
মন্তব্য (২) | ১৪৭ বার পঠিত 
পোস্টে সাম্প্রতিক মন্তব্য (rss feed)


[ডারউইন দিবস উপলক্ষে রচনা] আমার সোনার শেকল চাই

মীজান রহমান
বিভাগ: ডারউইন দিবস, দর্শন, ধর্ম


মীজান রহমান
আমার সোনার শেকল চাই মীজান রহমান অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলাম আমি পর্দার দিকে। নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। একটি আঠারো বছরের ছেলে, সুস্থসবল, সুপুরুষ চেহারার যুবক, ঘটনাক্রমে একটা স্কুলের ক্লাসরুমে কিছু সমবয়সী ছেলেমেয়ের সঙ্গে বসা। ওরা সবাই কম্পিউটার নিয়ে ব্যস্ত। কেউ টেক্সট মেসেজ পাঠাচ্ছে কাউকে, কেউ কোনও বই নিয়ে পাতা উল্টাচ্ছে, কেউবা ব্যস্ত কারুর [...]
বিস্তারিত...»

মন্তব্য ব্যতীত শুধুমাত্র পোস্ট
ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৩ – ৪:২৬ পূর্বাহ্ণ
১ ফাল্গুন ১৪১৯
মন্তব্য (২) | ১৪১ বার পঠিত 
পোস্টে সাম্প্রতিক মন্তব্য (rss feed)


প্রসঙ্গ গনজাগরণ ও কিছু উত্তর খোঁজার চেষ্টাঃ

অতিথি লেখক
বিভাগ: বাংলাদেশ, ব্লগাড্ডা, শাহবাগ আন্দোলন ২০১৩


অতিথি লেখক
প্রথমত একটি ব্যপার স্পষ্ট হওয়া উচিত বলে মনে করি যে যুদ্ধ পরবর্তী বাংলাদেশে এইসব ঘৃনিত মানবতা বিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদানের মাধ্যমে জাতির কলঙ্ক মোচনের যে দাবি বিগত চার দশক ধরে এক প্রকার অপমানিত হয়ে আসছিল তার একমাত্র কারন এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় দাবির সুপরিকল্পিত রাজনীতিকরন।যে দেশে রাজনীতিরই রাজনীতিকরনের মত পুঁজিকরণ ঘটে সেখানে এরকমটিইতো কাম্য! [...]
বিস্তারিত...»

মন্তব্য ব্যতীত শুধুমাত্র পোস্ট
ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৩ – ৩:৪০ পূর্বাহ্ণ
১ ফাল্গুন ১৪১৯
মন্তব্য (৮) | ১৫৭ বার পঠিত 
পোস্টে সাম্প্রতিক মন্তব্য (rss feed)


"জয় বাংলা" আসলে কী?

অতিথি লেখক
বিভাগ: ইতিহাস, বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধ, রাজনীতি, সংস্কৃতি


অতিথি লেখক
বাংলা একাডেমির অভিধান অনুসারে 'জয়' শব্দের অর্থ হচ্ছে- 'সাফল্য, বিজয়, যুদ্ধাদি দ্বারা অধিকার, পরাভূত করা, দমন, শত্র" দমন, (victory, win, conquer, success, defeat of an enemy, victory or triumph over the opponent…)। Joy-আনন্দ, ফুর্তি, খুশি। বিজয় অর্থ- জয়, জিত, প্রতিপক্ষকে দমিত বা পরাজিত করা, … (victory, triumph, conquest, success,…)। জয় এর বিপরীতার্থক শব্দ পরাজয়, পরাভব, [...]
বিস্তারিত...»


বইমেলা ২০১৩ এবং হাবিজাবি
লিখেছেন: শফিউল জয়
বিভাগ: একুশের চেতনা, ডায়রী/দিনপঞ্জি
তারিখ: ২৩ মাঘ ১৪১৯
বইমেলা শুরু হয়েছে বেশ কয়েকদিন হলো। আজকে চার তারিখ, অর্থাৎ চার দিন অতিক্রান্ত হয়েছে মেলা শুরু হবার পর। ফেব্রুয়ারি মানেই বইমেলা, উৎসব, বাঙালি চেতনা, প্রাণের মেলা- এসব কথা বেশ পুরনো, এবং কিছুটা সৌজন্যমূলকও মনে হয়। এই প্রাণখোলা মাসটাতে কিন্তু এই উৎসবের আমেজটাকে পাঠ্যবইসুলভ কিছু শব্দে আটকিয়ে ফেলে সেটা নিয়ে আতলামি করার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা থেকেও কিছু [...]
বিস্তারিত...»

ফেব্রুয়ারি ৫, ২০১৩ – ২:৩৩ পূর্বাহ্ণ
৯ টি মন্তব্য;
বইমেলা ২০১৩: যে বইগুলোর জন্য উন্মুখ হয়ে তাকিয়ে থাকব এবারে …
লিখেছেন: অভিজিৎ
বিভাগ: উদযাপন, একুশের চেতনা, পুস্তক, ব্লগাড্ডা, মুক্তমনা, ম্যাগাজিন, সংস্কৃতি
তারিখ: ২৩ মাঘ ১৪১৯
একুশের বইমেলা এসে পড়লেই লোকজন জিজ্ঞেস করতে শুরু করে, ফেসবুক, ম্যাসেজ কিংবা ইমেইলে-'ভাই এইবার কি বই বাইরাইতাছে আপনের?' না রে ভাই, এ বছর আমার কোন বই বেরুচ্ছে না। এর আগে প্রায় প্রতিবছরই আমার একটি বা দুটি বই বেরিয়েছিল। তাই ভাবলাম এ বছর একটু বিরতি দেয়া যাক। প্রতিবছর মেলা এলেই বই প্রসব করতেই হবে, এমন তো [...]
বিস্তারিত...»

ফেব্রুয়ারি ৫, ২০১৩ – ১২:১৯ পূর্বাহ্ণ
৪০ টি মন্তব্য;
সরকারের জনমতের রাজনীতি
লিখেছেন: রূপম (ধ্রুব)
বিভাগ: একুশের চেতনা, রাজনীতি, সমাজ
তারিখ: ৮ মাঘ ১৪১৯
নীতিমালা ও বিধি আরোপ সরকারের পছন্দের কর্মকাণ্ড। কিন্তু গণতান্ত্রিক সরকার জনমতের বিরুদ্ধে কাজ করে না। ফলে সরকার যেকোনো সামাজিক আন্দোলনের সুযোগকে লুফে নেয়। কিংবা প্রয়োজনে তার বন্ধুদের দিয়ে জনমত তৈরি করিয়ে নিয়ে তারপর এগোয়। কেউ সমস্যায় আছে মানে সরকারের সেখানে বাহাদুরির সুযোগ আছে।
বিস্তারিত...»

জানুয়ারি ২১, ২০১৩ – ৪:৪৬ পূর্বাহ্ণ
৩ টি মন্তব্য;
আমাদের সময়ের একদল নায়ক (৭-৯)
লিখেছেন: আদনান আদনান
বিভাগ: ইতিহাস, একুশের চেতনা, কবিতা, গনতন্ত্র, দর্শন, নারীবাদ, বাংলাদেশ, মানবাধিকার, মুক্তমনা,রাজনীতি, শিক্ষা, সংস্কৃতি, সমাজ, সাহিত্য আলোচনা
তারিখ: ১৭ বৈশাখ ১৪১৯
আমাদের সময়ের একদল নায়ক (৭-৯) কবিতা আদনান আদনান ৭ আমি কবিতা লিখিনা। কবিতা লেখা মেয়েলি পুরুষদের কাজ। আমি কবিতার সংজ্ঞা সৃষ্টি করি। কবির থেকেও আমার কাজ অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমিই নির্ধারণ করি কোনটি কবিতা, আর কোনটি কবিতা নয়। শ্লীল-অশ্লীল সম্পর্কেও আমার অনেক ধারণা রয়েছে। এ-সব নিয়ে তর্ক করে লাভ নেই। আমি যদি বলি অশ্লীল, তবে [...]
বিস্তারিত...»

এপ্রিল ৩০, ২০১২ – ৮:৩৪ পূর্বাহ্ণ
৭ টি মন্তব্য;
ভাষা দিবসে প্রমিত ভাষা, উপভাষা, পরিভাষা ইত্যাদি নিয়ে কিছু কথা
লিখেছেন: অপার্থিব
বিভাগ: আন্তর্জাতিক, একুশের চেতনা, বাংলাদেশ, ব্লগাড্ডা, শিক্ষা, সংস্কৃতি, সমাজ
তারিখ: ৯ ফাল্গুন ১৪১৮
এই লেখাটা আমার ব্যক্তিগত কিছু মত, পর্যবেক্ষণ আর প্রশ্নের সমাহার। আমার মতের সাথে অনেকের দ্বিমত থাকবে সন্দেহ নেই। আমার সাধারণ বোধ বা যুক্তির উপর ভিত্তি করে এই মত বা পর্যবেক্ষণে উপনীত হয়েছি । লেখাটা অসংলগ্ন, পরিপাটি, পাণ্ডিত্যপূর্ণ কোন লেখার চেষ্টা করিনি। হঠাৎ করেই প্রসঙ্গান্তরে চলে যাব। ভাষার গুরুত্ব বা উপযোগিতা কিসে? দুটো কথা মনে আসে। [...]
বিস্তারিত...»

ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১২ – ৫:৪৯ পূর্বাহ্ণ
২৮ টি মন্তব্য;
বইমেলা ২০১২ (আ)
লিখেছেন: গীতা দাস
বিভাগ: একুশের চেতনা
তারিখ: ৮ ফাল্গুন ১৪১৮
বইমেলা নিয়ে বেশ ক'টি লেখা মুক্ত-মনায় প্রকাশিত হয়েছে। অনেকেই লিখছেন। বইমেলায় না আসতে পারা বিশেষ করে প্রবাসী পাঠকরা লেখাগুলো পড়ে উচ্ছ্বসিত,উদ্বেলিত ও দুধের স্বাদ ঘুলে মিটিয়ে নিচ্ছেন। আমরা যারা মেলায় যাবার সুযোগ পাচ্ছি তারা নিত্যদিন যেতে পারছি না সংসার, শরীর, চাকরি, সামাজিক, পারিবারিক দায় এবং সর্বোপরি ঢাকার রাস্তার যানজট বিবেচনায় এনে।প্রবাসীরা আসছেন প্রতিদিন। মেলা উপলক্ষেই [...]
বিস্তারিত...»

ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১২ – ১০:৪১ অপরাহ্ণ
১৩ টি মন্তব্য;

লিখেছেন: কাজী রহমান
বিভাগ: আবৃত্তি, একুশের চেতনা, কবিতা, বাংলাদেশ, বিতর্ক, ব্লগাড্ডা, মুক্তমনা, সংস্কৃতি, সাহিত্য আলোচনা
তারিখ: ৮ ফাল্গুন ১৪১৮
এম্বে অম্বে পঁ, বাঙ্গালী য্যাম্নে কবি ক, অ আ কখগ, লইয়া ডাইনে বাঁয়ে ক, হেইল্ল্যা দুইল্ল্যা করে তরা; য্যাম্নে খুশী ক, বাঙ্গালী; এম্বে অম্বে পঁ, হাইস্যা কাইন্দ্যা ক। প্রমিত রঙ্গ কইরা তরা, কইত্থ্য ভাষায় ক, মনের সুখে বাংলা ভাষা, পরাণ ভইরা ক, চাষাভূষা কামার কুমার, ক্ষ্যাতে বইয়া ক, য্যাম্বে কবি ক বাঙ্গালী, বাংলায় কথা ক। [...]
বিস্তারিত...»

ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১২ – ১২:৩০ অপরাহ্ণ
১৪ টি মন্তব্য;
রক্তে মোড়ানো বর্ণমালা
লিখেছেন: তামান্না ঝুমু
বিভাগ: একুশের চেতনা, কবিতা
তারিখ: ৫ ফাল্গুন ১৪১৮
শকুনি আমলে সর্বক্ষেত্রেই বৈষম্য ছিল আকাশ-পাতাল। আমাদের উপরে পদে পদে চলছিল নিষ্পেষণ, নিপীড়ন। তারপর শকুনিরা দিল আমাদের হৃৎপিণ্ড ধ'রে টান। ওরা আমাদের ভাষা কেড়ে নিতে চেয়েছিল, কেড়ে নিতে চেয়েছিল আমাদের বর্ণমালা। এই ভাষা তো শুধু আমাদের মুখের বুলি নয়! এই ভাষা আমাদের হৃদয় হতে নিঃসৃত হয়। এই ভাষা কেবল মোদের ভাব প্রকাশের মাধ্যম নহে। এই [...]
বিস্তারিত...»

ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১২ – ১:৫৫ পূর্বাহ্ণ
১১ টি মন্তব্য;
বাঙলাভাষার উপর বিষাক্ত ধর্মীয়, রাজনৈতিক আগ্রাসনের বিপক্ষে দার্শনিক ভিত্তি নির্মান এবং আমাদের ভাষা আন্দোলন।
লিখেছেন: আসিফ মহিউদ্দীন
বিভাগ: একুশের চেতনা, বাংলাদেশ, রাজনীতি, সংস্কৃতি
তারিখ: ৩ ফাল্গুন ১৪১৮
পৃথিবীর প্রতিটা অঞ্চলের ভাষা, সংস্কৃতি, কৃষ্টি সেই অঞ্চলের সামগ্রিক ইতিহাস, আবহাওয়া, প্রকৃতি, মানুষের রুচিকে ধারণ করে এবং বহন করে নিয়ে যায় শতাব্দীর পর শতাব্দী। আজ থেকে বহু বছর পরে বাঙালির আত্মপরিচয় নিয়ে যখন গবেষণা হবে, তখন আমাদের ভাষা, সংস্কৃতি, কৃষ্টি থেকে বহিরাগত আগ্রাসী আধিপত্যবাদী অংশগুলোকে বাদ দিয়েই বিবেচনা করতে হবে। দুঃখজনক হলেও সত্য, বাঙালী মুসলমান [...]
বিস্তারিত...»

ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১২ – ৩:৩৬ পূর্বাহ্ণ
৯ টি মন্তব্য;
এবারের একুশে পদক পেলেন অধ্যাপক অজয় রায় ও হুমায়ুন আজাদ
লিখেছেন: মুক্তমনা এডমিন
বিভাগ: উদযাপন, একুশের চেতনা, ব্লগাড্ডা, মুক্তমনা, সংস্কৃতি, স্মৃতিচারণ
তারিখ: ২৭ মাঘ ১৪১৮
২০১২ সালের একুশে পদক ঘোষণা করা হয়েছে। নিজ নিজ ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১২ সালের একুশে পদক প্রদানের জন্য সরকার ১৫ জনকে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত করেছে। আমরা আনন্দের সাথে জানাচ্ছি যে সেই তালিকায় মুক্তমনার সম্পাদকমণ্ডলীর অন্যতম অধ্যাপক অজয় রায়ের নামও রয়েছে। তিনি পুরস্কার পেয়েছেন বাংলাদেশে শিক্ষার প্রসারে অবদান রাখার স্বীকৃতি স্বরূপ 'শিক্ষা' বিভাগে। উল্লেখ্য, গতবছর তিনি [...]http://mukto-mona.com/bangla_blog/?cat=185

No comments:

मैं नास्तिक क्यों हूं# Necessity of Atheism#!Genetics Bharat Teertha

হে মোর চিত্ত, Prey for Humanity!

मनुस्मृति नस्ली राजकाज राजनीति में OBC Trump Card और जयभीम कामरेड

Gorkhaland again?আত্মঘাতী বাঙালি আবার বিভাজন বিপর্যয়ের মুখোমুখি!

हिंदुत्व की राजनीति का मुकाबला हिंदुत्व की राजनीति से नहीं किया जा सकता।

In conversation with Palash Biswas

Palash Biswas On Unique Identity No1.mpg

Save the Universities!

RSS might replace Gandhi with Ambedkar on currency notes!

जैसे जर्मनी में सिर्फ हिटलर को बोलने की आजादी थी,आज सिर्फ मंकी बातों की आजादी है।

#BEEFGATEঅন্ধকার বৃত্তান্তঃ হত্যার রাজনীতি

अलविदा पत्रकारिता,अब कोई प्रतिक्रिया नहीं! पलाश विश्वास

ভালোবাসার মুখ,প্রতিবাদের মুখ মন্দাক্রান্তার পাশে আছি,যে মেয়েটি আজও লিখতে পারছেঃ আমাক ধর্ষণ করবে?

Palash Biswas on BAMCEF UNIFICATION!

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS ON NEPALI SENTIMENT, GORKHALAND, KUMAON AND GARHWAL ETC.and BAMCEF UNIFICATION! Published on Mar 19, 2013 The Himalayan Voice Cambridge, Massachusetts United States of America

BAMCEF UNIFICATION CONFERENCE 7

Published on 10 Mar 2013 ALL INDIA BAMCEF UNIFICATION CONFERENCE HELD AT Dr.B. R. AMBEDKAR BHAVAN,DADAR,MUMBAI ON 2ND AND 3RD MARCH 2013. Mr.PALASH BISWAS (JOURNALIST -KOLKATA) DELIVERING HER SPEECH. http://www.youtube.com/watch?v=oLL-n6MrcoM http://youtu.be/oLL-n6MrcoM

Imminent Massive earthquake in the Himalayas

Palash Biswas on Citizenship Amendment Act

Mr. PALASH BISWAS DELIVERING SPEECH AT BAMCEF PROGRAM AT NAGPUR ON 17 & 18 SEPTEMBER 2003 Sub:- CITIZENSHIP AMENDMENT ACT 2003 http://youtu.be/zGDfsLzxTXo

Tweet Please

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS BLASTS INDIANS THAT CLAIM BUDDHA WAS BORN IN INDIA

THE HIMALAYAN TALK: INDIAN GOVERNMENT FOOD SECURITY PROGRAM RISKIER

http://youtu.be/NrcmNEjaN8c The government of India has announced food security program ahead of elections in 2014. We discussed the issue with Palash Biswas in Kolkata today. http://youtu.be/NrcmNEjaN8c Ahead of Elections, India's Cabinet Approves Food Security Program ______________________________________________________ By JIM YARDLEY http://india.blogs.nytimes.com/2013/07/04/indias-cabinet-passes-food-security-law/

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS TALKS AGAINST CASTEIST HEGEMONY IN SOUTH ASIA

THE HIMALAYAN VOICE: PALASH BISWAS DISCUSSES RAM MANDIR

Published on 10 Apr 2013 Palash Biswas spoke to us from Kolkota and shared his views on Visho Hindu Parashid's programme from tomorrow ( April 11, 2013) to build Ram Mandir in disputed Ayodhya. http://www.youtube.com/watch?v=77cZuBunAGk

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS LASHES OUT KATHMANDU INT'L 'MULVASI' CONFERENCE

अहिले भर्खर कोलकता भारतमा हामीले पलाश विश्वाससंग काठमाडौँमा आज भै रहेको अन्तर्राष्ट्रिय मूलवासी सम्मेलनको बारेमा कुराकानी गर्यौ । उहाले भन्नु भयो सो सम्मेलन 'नेपालको आदिवासी जनजातिहरुको आन्दोलनलाई कम्जोर बनाउने षडयन्त्र हो।' http://youtu.be/j8GXlmSBbbk

THE HIMALAYAN DISASTER: TRANSNATIONAL DISASTER MANAGEMENT MECHANISM A MUST

We talked with Palash Biswas, an editor for Indian Express in Kolkata today also. He urged that there must a transnational disaster management mechanism to avert such scale disaster in the Himalayas. http://youtu.be/7IzWUpRECJM

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS CRITICAL OF BAMCEF LEADERSHIP

[Palash Biswas, one of the BAMCEF leaders and editors for Indian Express spoke to us from Kolkata today and criticized BAMCEF leadership in New Delhi, which according to him, is messing up with Nepalese indigenous peoples also. He also flayed MP Jay Narayan Prasad Nishad, who recently offered a Puja in his New Delhi home for Narendra Modi's victory in 2014.]

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS CRITICIZES GOVT FOR WORLD`S BIGGEST BLACK OUT

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS CRITICIZES GOVT FOR WORLD`S BIGGEST BLACK OUT

THE HIMALAYAN TALK: PALSH BISWAS FLAYS SOUTH ASIAN GOVERNM

Palash Biswas, lashed out those 1% people in the government in New Delhi for failure of delivery and creating hosts of problems everywhere in South Asia. http://youtu.be/lD2_V7CB2Is

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS LASHES OUT KATHMANDU INT'L 'MULVASI' CONFERENCE

अहिले भर्खर कोलकता भारतमा हामीले पलाश विश्वाससंग काठमाडौँमा आज भै रहेको अन्तर्राष्ट्रिय मूलवासी सम्मेलनको बारेमा कुराकानी गर्यौ । उहाले भन्नु भयो सो सम्मेलन 'नेपालको आदिवासी जनजातिहरुको आन्दोलनलाई कम्जोर बनाउने षडयन्त्र हो।' http://youtu.be/j8GXlmSBbbk