Welcome

Website counter
website hit counter
website hit counters

Thursday, February 14, 2013

জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে ক্ষতিগ্রস্থ বাংলাদেশ

জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে ক্ষতিগ্রস্থ বাংলাদেশ
http://www.thebengalitimes.com/details.php?val=5037&pub_no=0&menu_id=8

জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে ক্ষতিগ্রস্থ বাংলাদেশ
 মাহবুবুল আলম
কাউকে যদি প্রশ্ন করা হয় যে, এখন বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু কি? এমন প্রশ্নের জবাবে নিশ্চয় সিংহভাগ জ্ঞানী-গুণীই বলবেন জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের কথা। আর এ মুহূর্তে আমাদের ভূ-প্রকৃতিতে এর কু-প্রভাব, ও এর প্রতিকার বা নিয়ন্ত্রণই এখন সবচেয়ে বড় ইস্যু। তবে পৃথিবীতে যে হারে জনসংখ্যা বাড়ছে তার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শিল্প কারখানা সুতরাং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব প্রতিকার করা একটি প্রায় অসম্ভব বিষয়। তবে অনেক বিজ্ঞানীর মতে জলবায়ূ পরিবর্তনের মূলকারণ শিল্প বিপ্লব, এর জন্য দায়ী উন্নত দেশগুলি। তাদের শিল্প কারখানা থেকে নির্গত কার্বন অধিকহারে জলবায়ুতে মিশে যাবার কারণে বাড়ছে তাপমাত্রা; ফলে অস্বাভাবিকভাবে দুই মেরুর বরফ গলে সমুদ্রপৃষ্টের উচ্চতা বাড়ছে। আর জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটছে এভাবেই। কিন্তু সারা বিশ্বের মানুষ এখনো সচেতন হলে জলবায়ু পরিবর্তনের কু-প্রভাব নিয়ন্ত্রনে রাখা সম্ভব। আমি বাংলাদেশের প্রেক্ষিতেই বিষয়টির প্রতি গুরুত্ব দিতে চাই এই কারণে যে, আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ জানেনা জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়টি কি? এই পরিবর্তনের ফলে ভবিষ্যতে আমাদের কি কি সঙ্কটের সন্মুখিন হতে হবে, সেই সব বিষয়-আসয়গুলো সন্মন্ধে তাদের তেমন জ্ঞান বা ধারণাও নেই। তাই জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়টি আসলে কি তার ওপর কিছুটা আলোকপাত করা দরকার। 
আমাদের প্রাণপ্রিয় পৃথিবীর বায়ুমন্ডল জলীয় বাষ্প, কার্বন-ডাই-অক্সাইড ও মিথেন গ্যাসের পুরু কম্বলের ন্যায় একটি স্তর দ্বারা গঠিত। এই স্তরটির গঠনপ্রণালীই এমন যে এ-স্তর ভেদ করে পৃথিবীতে সূর্যরশ্মি প্রবেশ করতে পারলেও সেই তাপ বায়ুমন্ডল ভেদ করে ওপরে ওঠতে পারে না। এ স্তরটি আমাদের পৃথিবীর তাপমাত্রার ভারসাম্য রক্ষা করে পৃথিবীকে বসবাসযোগ্য করে তুলেছে। এ স্তরটাকেই বলে গ্রীন হাউজ। এ গ্রীন হাউজ এ্যাফেক্ট-এর ফলে আমাদের বায়ুমন্ডলে যে তাপ সঞ্চিত হয় তা বিকীরণ হতে বাঁধাগ্রস্ত হওয়ার কারণে আমাদের বায়ুমন্ডল দিনে দিনে উষ্ণ হয়ে ওঠছে। আর তা হচ্ছে আমাদেরই দোষে। আমরা জেনে হোক বা না জেনেই হোক আমাদের বিভিন্ন কার্যকলাপের মাধ্যমে যেমন পৃথিবী জুড়ে জীবাশ্ম জ্বালানী পোড়ানো থেকে নির্গত কার্বন ছড়িয়ে পৃথিবীর উষ্ণতা বাড়িয়ে তুলছি। আর দিনকে দিন গ্যাসের এ স্তরটি পুরো থেকে পুরো হয়ে ভূ-পৃষ্ঠকে গরম করে তুলছে, আর এভাবেই জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন এক হাজার বছরে আগে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমান ২৮০ পিপিএম (পার্ট পার মিলিয়ন) প্রায় সমান সমান ছিল। এর পর থেকে দুইটিই সমান হারে বেড়েছে। ২০০৫ সালে বায়ুমন্ডলে কার্বন-ডাইঅক্সাইডের পরিমান বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৭৯ পিপিএম। এর মাধ্যমেই বিজ্ঞানীরা এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে, গত চার যুগ ধরে অতিমাত্রায় জলবায়ূ পরিবর্তন ঘটেছে সাথে সাথে পৃথিবীর প্রাকৃতিক পরিবেশও ঘটছে বিপুল পরিবর্তন। 
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বায়ুমন্ডলের অধিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণ ঘটাচ্ছে উন্নত দেশগুলো। এসব উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশী কার্বন নিঃস্বরণ করছে চীন ও আমেরিকা। এ দুইটি দেশের কার্বন নির্গমনের পরিমান মোট নির্গমনের প্রায় ৫০ শতাংশ। এর পরেই রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা, ভারত, ব্রাজিল, অষ্ট্রেলিয়া, কানাডা প্রভৃতি দেশ। বাংলাদেশের কার্বন নির্গমনের পরিমান সবচেয়ে কম মাত্র দশমিক শূণ্য দুই শতাংশ। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, ১৯৫০ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত শিল্পোন্নত দেশগুলোর কারণে পৃথিবীতে মোট কার্বন নিঃসরণের পরিমান বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ৭২ শতাংশ। বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা নিরীক্ষা ও গবেষণা করে দেখেছেন, বিগত সাত লাখ ৫০ হাজার বছরের মধ্যে বিশ্বে কার্বন-ডাই অক্সাইডের পরিমান বর্তমানে সবচেয়ে বেশি। 
বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে যে বিপর্যয় নেমে আসবে সে বিষয়টি অনুধাবন করতে পেরেই আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ব জলবায়ূ সম্মেলনে যোগদান করে শুধু আমাদের দেশের ক্ষতির কথাই তোলে ধরেননি। তোলে ধরেছেন তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশের ক্ষতিকর প্রভাবে কথাও। তিনি তাঁর বক্তব্যে ধেয়ে আসা জলবায়ু বিপর্যয়ের কথা তুলে ধরে উন্নত বিশ্বের দেশগুলোকেই অতিরিক্ত কার্বন নিঃস্বরণের জন্যে দায়ী করে এ ব্যাপারে ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলার জন্য ধনী দেশগুলোর সরকার ও রাষ্ট্র প্রধানদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। শুধু দৃষ্টি আকর্ষণ করে ক্ষান্ত হননি, তিনি উন্নত দেশগুলোকে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জলবায়ু পরিবর্তনের কু-প্রভাব থেকে রক্ষার জন্য ক্ষতিপূরণ প্রদানেরও দাবী জানান। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলোর সরকার ও রাষ্টপ্রধানদের দাবীর মুখে জলবায়ু বিপর্যয় মোকাবেলা একটা তহবিল গঠন করা হলেও তা কার্যকরী কোনো অবদান রাখতে ব্যর্থ হয়েছে বলেই বলতে হবে। 
শুরুতেই বলা হয়েছে জলবায়ু পরিবর্তনের বিপর্যয়ে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হবে আমাদের বাংলাদেশ। বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে আমাদের দেশের জলবায়ু পরিবেশ ও জীববৈচিত্রেও নানা ধরনের বিরূপ প্রভাব ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। এর নেতিবাচক সুস্পষ্ট প্রভাব পড়েছে আমাদের দেশের ঋতুবৈচিত্রেও। বিশেষভাবে শীত ও বর্ষা এ দুইটি ঋতু দিনে দিনে তার বৈশিষ্ট্য হারাচ্ছে। শীত যেমন এসেই যাই যাই করে তেমনি বর্ষাও। শীতে নেই যেমন হাড়কাঁপানো শীত তেমনি বর্ষায় নেই কাঙ্খিত বৃষ্টিপাত। কয়েক বছর ধরে ভরা আষাঢ়েও একরকম শুস্ক ও বৃষ্টিপাতহীন থেকে যাচ্ছে। আবহাওয়ার এ উল্টোপাল্টা আচরণ ভাবিয়ে তুলছে বিশেষজ্ঞদের। বৃষ্টির দিনে বৃষ্টি নেই, শ্রাবনের আকাশেও মেঘ নেই যা ও তা শুধু আকাশে উড়ে বেড়ায় অলসভাবে। কখনো-সখেনো একটু-আধটু বৃষ্টিনামে তাও তাঁতানো মাটি ভিজে ওঠার আগেই চরম রসিকতা করে চলে যায় সেই বৃষ্টি। তাই এখন পূর্ণবর্ষাকেও গ্রীষ্মকাল বলে ভ্রম হয়।এঘোর বর্ষায়ও প্রচন্ড খড়া ও ভ্যাপসা গরমের জনজীবন ওষ্ঠাগত। আবহাওয়ার এ কু-প্রভাব ও উল্টোপাল্টা আচরণে নানা অসুখ-বিসুখ যেন আমাদের পিছু ছাড়তে চাইছে না। বৃষ্টির অভাবে ভূ-গর্ভস্ত পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে কৃষিকাজ ও চাষাবাদে। একই কারণে আমাদের জীববৈচিত্রও আজ হুমকীর সন্মুখিন। এক তথ্য থেকে জানা গেছে আবহাওয়া ও জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে দেশের ৬০ প্রজাতির মাছ ও পাখি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। মরে গেছে শতাধিক নদী ও খাল। বহু খরস্রোতা নদীই এখন সঙ্কীর্ণ খালে পরিনত হয়েছে। ইন্টার গবর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জের (আইপিসিসি) সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ব্যাপকভাবে আমাদের দেশের কৃষির উৎপাদনশীলতা হ্রাস পাবে বিঘিœত হবে জনস্বাস্থ্য, শিল্প উন্নয়ন, ঝড়-ঝঞ্জা, সাইক্লোন, বন্যা-জলোচ্ছ্বাসের কারণে বিপর্যস্ত হবে আমাদের জাতীয় অর্থনীতিও। তাই এ বিপর্যয়ের কঠিন বাস্তবতা মেনে নিয়ে এর মোকাবেলায় এখনই আমাদেরকে সতর্ক ও কার্যকরী যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে বলে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়েছেন। বাংলাদেশ কেন এতটা ঝুঁকিপূর্ণ এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের অভিমত হলো-বাংলাদেশ একটি ব-দ্বীপ। এর অবস্থান হিমালয়ের পাদদেশে বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেসে একটি নিন্ম পাললভূমি। এটি নবীনতম ও সবচেয়ে সক্রিয় একটি ব-দ্বীপ যার ভূমি গঠন প্রক্রিয়া এখনো চলছে। বাংলাদেশের সীমান্তে ভারতের চেরাপুঞ্জি, যা বিশ্বের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের এলাকা। এই কারণে বাংলাদেশের ওপর দিয়েই প্রবাহিত হয় সব বৃষ্টির পানি। বাংলাদেশের মোট আয়তন গঙ্গা-বক্ষ্মপুত্র-মেঘনা বেসিনের মাত্র সাত শতাংশ। কিন্তু এ অঞ্চলের ৯৩ শতাংশ পানি বাংলাদেশের ওপর দিয়ে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়। তাই জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি পেলে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পাবে তাতেই বাংলাদেশ ক্ষয়-ক্ষতির সন্মুখিন হবে। বিশ্ব ব্যাংকের এক সমীক্ষায় দেখা যায় আগামী একশ' বছরে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা এক মিটার বাড়লে বাংলাদেশের মূল ভূ-খন্ডের ১৫ থেকে ১৭ শতাংশ এলাকা পানিতে তলিয়ে যাবে। এর ফলে উদ্বাস্তু হবে প্রায় দুই কোটি মানুষ। সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা ৪৫ সেন্টিমিটার ও তাপমাত্র দুই ডিগ্রী সেলসিয়াস বাড়লে নিচু এলাকা প্রাবিত হওয়ার ঝুঁকি প্রায় ২৯ শতাংশ বাড়বে। এই কারণে ডুবে যেতে পারে উপকূলীয় এলাকার প্রায় ১৪৫ কিলোমিটার বেলাভূমি। 
১৯৯৮ সালের অপর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ইতিমধ্যেই জলবায়ু পরিবর্তনের কু-প্রভাব শুরু হয়ে গেছে। এর ফলে পৃথিবী পৃষ্ঠের তাপমাত্রা গত শতাব্দীতে পায় দশমিক ৭৮ ডিগ্রী বৃদ্ধি পেয়েছে। এই কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের গড় উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে ১০-২০ সেন্টিমিটার। উভয় মেরু অঞ্চলে বরফ গলেছে প্রায় ১০ শতাংশ। বিজ্ঞানীদের অভিমত বর্তমানে বিশ্ব সবচেয়ে উষ্ণতম সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ তাপমাত্রা আরও ১০ থেকে ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেলে মানুষের জীবন, জীববৈচিত্র, অর্থনৈতিক অবকাঠামো ও প্রাকৃতিক পরিবেশের ওপর এতটাই প্রভাব ফেলবে যে, এর ফলে প্রলয়ঙ্করী ধ্বংসযজ্ঞের যে বিপর্যয় নেমে আসবে তা মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমেও মোকাবেলা করা অনেকটা দুঃসাধ্য হয়ে যাবে। তাই এ ক্ষতির হাত থেকে বাঁচতে হলে বায়ূমন্ডলে গ্রীন হাউজ গ্যাসের পরিমান ৩৫০ পিপিএমে নামিয়ে আনতে হবে। তা করতে হলে তাপমাত্রাকে কিছুতেই দেড় ডিগ্রী সেলসিয়াসের উর্ধে বাড়তে দেয়া যাবে না বলে মতামত ব্যক্ত করেছেন জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ও আবহাওয়াবিদরা। 
জলবায়ু পবিবর্তনের প্রভাব বাংলাদেশে ওপর কতটা ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে সে বিষয়ে জলবায়ু গবেষক ম্যাককার্থি ও তার সহযোগীদের গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে। তাদের গবেষণায় বলা হয়েছে ২০৩০ ও ২০৫০ সাল নাগাদ বাংলাদেশের বার্ষিক গড় তাপমাত্রা বর্তমানের চেয়ে যথাক্রমে এক ডিগ্রী ও এক দশমিক চার ডিগ্রী সেলসিয়াস বৃদ্ধি পাবে। এতে বর্ষাকালে গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধির চেয়ে শীতকালে গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার বেশি হবে। এতে করে শীতের তীব্রতা অনেকটাই কমে যাবে। অন্যদিকে গ্রীষ্মকালে গরমের তীব্রতা বেড়ে যাবে। ফলে ষড়ঋতুর বাংলাদেশে ছয়টি ঋতুর বদলে চারটি ঋতুকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করা যাবে। প্রিয় পাঠক ম্যাককার্থি ও তার সহযোগীদের গবেষণায় বলেছেন, তা কিন্তু এখনই আমরা অনুভব করতে পারছি। যত কয়েক বছর ধরে শীতকালে যেমন শীতের তেমন তীব্রতা লক্ষ্য করা যায় না তেমনি, গ্রীষ্মকালে প্রচন্ড গরম অনুভূত হচ্ছে। আওহাওয়াবিদদের আশঙ্কানুযায়ী উভয় মেরুতে যে হারে বরফ গলছে তাতে যেমন সমুদ্রপৃষ্টের উচ্চতা বেড়ে যাবে পাশাপাশি বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত বৃদ্ধির কারণে এ বিষয়টি ঘটবে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে অসময়ে বৃষ্টি, অনাবৃষ্টি ও অতিবৃষ্টি সবই ঘটবে পাল্লা দিয়ে। যার ফলে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে ২০৩০ ২০৫০ সাল নাগাদ সমুদ্র পৃষ্টের উচ্চতা বাড়বে বর্তমানের চেয়ে ১৪ ও ৩২ সেন্টিমিটার। যা ২১০০ সালে আরো বেড়ে দাঁড়াবে ৮৮ সেন্টিমিটার। সুম্রদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধি পেলে স্বাভাবিকভাবেই উপকূলে নিন্মাঞ্চলগুলো সমুদ্রের লবণ পানিতে তলিয়ে যাবে। ফলে সেসব অঞ্চলে নদীগুলোতেও লবণাক্ততা অনুভূমিকভাবে উজানের দিতে বাড়তে থাকবে। ফলে ওই অঞ্চলের শুকনো মৌশুমের কৃষি মারাত্মকভাবে ক্ষীতগ্রস্ত হবে। সব মিলিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক অভিঘাতে দেশের খাদ্যনিরাপত্তাও মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হবে। 
তাহলে আমাদের উপায় কি? আর এমন প্রশ্নের উত্তর একটিই আর তা হলো বৈশ্বিক জলবায়ু পরির্তনের নেতিবাচক প্রভাবের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে গ্রহণ করতে হবে সমন্নিত জলবায়ু নীতি। এ-নীতি প্রণয়ের সাথে সাথে যেসব খাত সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সন্মুখিন হবে সেসব খাতে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে। কৃষি, শিল্প ও বহুমুখি উৎপাদনশীলতা ও অবকাঠমোর মতো খাতগুলোকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষার জন্য আগে থেকে খাপ খাইয়ে নেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। বিশ্বব্যাংকের 'পরিবর্তিতজলবায়ু পরিস্থিতিতে বৈরি আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়ার ব্যয়' শীর্ষক এক গবেষণামূলক রিপোর্টে এ ধরণের পরামর্শ দিয়ে বলা হয়েছে; বর্তমানে বাংলাদেশে প্রতি তিন বছরে একটি করে প্রাণঘাতি ঘুর্ণিঝড় আঘাত হানে। এর পাশাপাশি প্রতি চার-পাঁচ বছর পর পর একটি করে মৌশুমী বন্যার কারণে দেশের প্রায় ৬০ শতাংশ এলাকা পানিতে ডুবে যায়। তাই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এ অবস্থার সাথে খাপ খাইয়ে নিতে ২০৫০ সাল নাগাদ বাংলাদেশকে এ খাতে ৫৭০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করতে হবে। 
এ ব্যাপারে বর্তমান শেখ হাসিনার সরকার জলবায়ু পরিবর্তনের বাস্তবতা মেনে নিয়েই এর বিরূপ প্রভাবের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে ইতিমধ্যেই ব্যাপক আকারে নদী ড্রেজিং, লবণ সহিষ্ণু ধান ও সবজি উৎপাদনের ব্যবস্থাগ্রহণ ও অবকাঠামো উন্নয়নসহ নানা ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এসব উদ্যোগকে ফলপ্রসূ করতে সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্ট ফান্ড থেকে বিভিন্ন প্রকল্পে অর্থ বরাদ্ধের ব্যবস্থা করেছে। সরকারের উদ্যোগের পাশাপাশি আমাদের উন্নয়ন সহযোগীরাও ক্লাইমেট চেঞ্জ রেজিলিয়েন্স ফান্ড গঠন করে ১২ কোটি ২৫ লাখ ডলার প্রদানের প্রতিশ্র"তি দিয়েছে, আর তা সম্ভব হয়েছে আন্তর্জাতিক ফোরামে শেখ হাসিনার সোচ্চার হওয়ার কারণেই। কেননা উন্নত দেশগুলোর পরিবেশ দূষণের কারণে আমরা যে ক্ষতির সন্মুখিন হচ্ছি শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক ফোরামে তা যুক্তিযুক্তভাবে তুলে ধরার কারণেই এ অর্থ প্রদানের প্রতিশ্র"তি দেয়া হয়েছে। 
৩১ মার্চ 'দৈনিক বাংলাদেশে সময়' 'দুর্যোগ প্রতিরোধে অতুলনীয় বাংলাদেশ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশে দৃষ্টান্তমূলক সাফল্য অর্জন করেছে' শিরোনামে প্রধান প্রতিবেদনে জাতিসংঘের প্রতিবেদনের অংশবিশেষ প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, '২৮ মার্চ ২০১২ প্রকাশিত জাতিসংঘ গঠিত ইন্টারগভরর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ আইপিসিসিসি'র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,'চার দশকে বাংলাদেশ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় যে উন্নতি করেছে তার তুলনা অন্য কোনো দেশের সঙ্গে হয় না।...জলোচ্ছ্বাস-বন্যা ও ঝড় প্রবণ বাংলাদেশ অবকাঠামোগতভাবে অনুন্নত রাষ্ট্র হলেও অতীতের প্রাকৃতিক দুযোগ থেকে প্রশাসন ও জনগণ অনেক শিক্ষা নিয়েছে। দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে সাধ্যমত লাগসই প্রযুক্তি নিয়েছে, যে প্রস্তুতির ফল পাওয়া যাচ্ছে এখন। প্রতিবেদনে বাংলাদেশের সাফল্যের দৃষ্টান্ত দিয়ে বলা হয় যে, ১৯৭০ সালে ক্যাটাগরি তিন শ্রেণীভূক্ত একটি জলোচ্ছ্বাসে দ্বীপ জেলা ভোলায় ৩ লাখেরও বেশী লোক মারা গিয়েছিল, কিন্তু ২০০৭ সালে এর চেয়ে প্রবল সিডর নামের ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে মারা গেছে ৪ হাজার দুইশত মানুষ। প্রাণহানি'র মতো ঝুঁকি কমানোর ক্ষেত্রে অনেক এগিয়েছে বাংলাদেশ।...প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাংলাদেশে এখনো উল্লেখযোগ্য মাত্রায় প্রাণহানি অব্যাহত থাকলেও পূর্বাভাস ও প্রতিরোধের প্রস্তুতির ক্ষেত্রে অনেক দক্ষতার সঙ্গে কাজ করছে বাংলাদেশ।...এ প্রসংগে উদাহরণ দিয়ে বলা হয়, ২০০৭ সালে বাংলাদেশের জলোচ্ছ্বাস সিডরে যেখানের ৫ হাজারের কম মানুষ প্রাণ হারিয়েছে সেখানে মিয়ানমারে ২০০৮ সালে এক জলোচ্ছ্বাসে প্রাণ হারিয়েছে প্রায় ১ লাখ ৩৮ হাজার মানুষ।' 
সবশেষে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কৃষি ও অন্যান্য খাত কতটা ঝুঁকিপূর্ণ তার ওপর দৃষ্টি আকর্ষণ করেই এই নিবন্ধের ইতি টানবো। এরই মধ্যে আমাদের কৃষিখাতের বিলুপ্ত প্রায় কয়েক'শ প্রজাতির শস্য। জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সাথে পরিবর্তন ঘটছে জীব-বৈচিত্রেও। কাজেই জলবায়ু পরিবর্তনের সর্বগ্রাসী বিরূপ পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য এখনই আমাদেরকে জনসচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে জনগণকে এর প্রতিকারে সম্পৃক্ত করতে হবে। দেশের আবহাওয়া ও জলবায়ু স্থিতিশীল রাখার জন্য প্রয়োজন আমাদের মোট ভূ-খন্ডের এক-চতুর্থাংশ বনভূমি। প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার জন্য তা খুবই জরুরী। কিন্তু আমরা যেভাবে নির্বিচারে গাছ ও পাহাড় কেটে সবুজ বনভূমি ধ্বংস করে চলেছি তা আমাদের জন্য এক অশনী সঙ্কেত। আমাদের দেশে বর্তমানে সবুজ বনভূমির পরিমান সর্বনিন্ম পরিমানেরও কম। কাজে পাহাড় কাটা বন্ধ করে বেশী বেশী গাছ লাগিয়ে বাংলাদেশকে সবুজে সবুজে ভরে তুলতে হবে তবেই যদি কিছুটা রক্ষা হয়।

লেখক: কবি-কথাসাহিত্যিক ও কলামিস্ট
রেটিং দিন :

No comments:

मैं नास्तिक क्यों हूं# Necessity of Atheism#!Genetics Bharat Teertha

হে মোর চিত্ত, Prey for Humanity!

मनुस्मृति नस्ली राजकाज राजनीति में OBC Trump Card और जयभीम कामरेड

Gorkhaland again?আত্মঘাতী বাঙালি আবার বিভাজন বিপর্যয়ের মুখোমুখি!

हिंदुत्व की राजनीति का मुकाबला हिंदुत्व की राजनीति से नहीं किया जा सकता।

In conversation with Palash Biswas

Palash Biswas On Unique Identity No1.mpg

Save the Universities!

RSS might replace Gandhi with Ambedkar on currency notes!

जैसे जर्मनी में सिर्फ हिटलर को बोलने की आजादी थी,आज सिर्फ मंकी बातों की आजादी है।

#BEEFGATEঅন্ধকার বৃত্তান্তঃ হত্যার রাজনীতি

अलविदा पत्रकारिता,अब कोई प्रतिक्रिया नहीं! पलाश विश्वास

ভালোবাসার মুখ,প্রতিবাদের মুখ মন্দাক্রান্তার পাশে আছি,যে মেয়েটি আজও লিখতে পারছেঃ আমাক ধর্ষণ করবে?

Palash Biswas on BAMCEF UNIFICATION!

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS ON NEPALI SENTIMENT, GORKHALAND, KUMAON AND GARHWAL ETC.and BAMCEF UNIFICATION! Published on Mar 19, 2013 The Himalayan Voice Cambridge, Massachusetts United States of America

BAMCEF UNIFICATION CONFERENCE 7

Published on 10 Mar 2013 ALL INDIA BAMCEF UNIFICATION CONFERENCE HELD AT Dr.B. R. AMBEDKAR BHAVAN,DADAR,MUMBAI ON 2ND AND 3RD MARCH 2013. Mr.PALASH BISWAS (JOURNALIST -KOLKATA) DELIVERING HER SPEECH. http://www.youtube.com/watch?v=oLL-n6MrcoM http://youtu.be/oLL-n6MrcoM

Imminent Massive earthquake in the Himalayas

Palash Biswas on Citizenship Amendment Act

Mr. PALASH BISWAS DELIVERING SPEECH AT BAMCEF PROGRAM AT NAGPUR ON 17 & 18 SEPTEMBER 2003 Sub:- CITIZENSHIP AMENDMENT ACT 2003 http://youtu.be/zGDfsLzxTXo

Tweet Please

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS BLASTS INDIANS THAT CLAIM BUDDHA WAS BORN IN INDIA

THE HIMALAYAN TALK: INDIAN GOVERNMENT FOOD SECURITY PROGRAM RISKIER

http://youtu.be/NrcmNEjaN8c The government of India has announced food security program ahead of elections in 2014. We discussed the issue with Palash Biswas in Kolkata today. http://youtu.be/NrcmNEjaN8c Ahead of Elections, India's Cabinet Approves Food Security Program ______________________________________________________ By JIM YARDLEY http://india.blogs.nytimes.com/2013/07/04/indias-cabinet-passes-food-security-law/

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS TALKS AGAINST CASTEIST HEGEMONY IN SOUTH ASIA

THE HIMALAYAN VOICE: PALASH BISWAS DISCUSSES RAM MANDIR

Published on 10 Apr 2013 Palash Biswas spoke to us from Kolkota and shared his views on Visho Hindu Parashid's programme from tomorrow ( April 11, 2013) to build Ram Mandir in disputed Ayodhya. http://www.youtube.com/watch?v=77cZuBunAGk

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS LASHES OUT KATHMANDU INT'L 'MULVASI' CONFERENCE

अहिले भर्खर कोलकता भारतमा हामीले पलाश विश्वाससंग काठमाडौँमा आज भै रहेको अन्तर्राष्ट्रिय मूलवासी सम्मेलनको बारेमा कुराकानी गर्यौ । उहाले भन्नु भयो सो सम्मेलन 'नेपालको आदिवासी जनजातिहरुको आन्दोलनलाई कम्जोर बनाउने षडयन्त्र हो।' http://youtu.be/j8GXlmSBbbk

THE HIMALAYAN DISASTER: TRANSNATIONAL DISASTER MANAGEMENT MECHANISM A MUST

We talked with Palash Biswas, an editor for Indian Express in Kolkata today also. He urged that there must a transnational disaster management mechanism to avert such scale disaster in the Himalayas. http://youtu.be/7IzWUpRECJM

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS CRITICAL OF BAMCEF LEADERSHIP

[Palash Biswas, one of the BAMCEF leaders and editors for Indian Express spoke to us from Kolkata today and criticized BAMCEF leadership in New Delhi, which according to him, is messing up with Nepalese indigenous peoples also. He also flayed MP Jay Narayan Prasad Nishad, who recently offered a Puja in his New Delhi home for Narendra Modi's victory in 2014.]

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS CRITICIZES GOVT FOR WORLD`S BIGGEST BLACK OUT

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS CRITICIZES GOVT FOR WORLD`S BIGGEST BLACK OUT

THE HIMALAYAN TALK: PALSH BISWAS FLAYS SOUTH ASIAN GOVERNM

Palash Biswas, lashed out those 1% people in the government in New Delhi for failure of delivery and creating hosts of problems everywhere in South Asia. http://youtu.be/lD2_V7CB2Is

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS LASHES OUT KATHMANDU INT'L 'MULVASI' CONFERENCE

अहिले भर्खर कोलकता भारतमा हामीले पलाश विश्वाससंग काठमाडौँमा आज भै रहेको अन्तर्राष्ट्रिय मूलवासी सम्मेलनको बारेमा कुराकानी गर्यौ । उहाले भन्नु भयो सो सम्मेलन 'नेपालको आदिवासी जनजातिहरुको आन्दोलनलाई कम्जोर बनाउने षडयन्त्र हो।' http://youtu.be/j8GXlmSBbbk