প্রধানমন্ত্রীকে বেনজির আক্রমণের ঘটনায় পাল্টা সংবাদমাধ্যমকেই দুষলেন মুখ্যমন্ত্রী। আজ এসএসকেএম হাসপাতালে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান দফতরের একটি অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "সংবাদ মাধ্যম মানুষকে বিভ্রান্ত করছে।" তাঁর বক্তব্যের অর্ধেক প্রচার করা হচ্ছে। সংবাদ মাধ্যমের একাংশ তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে বলেও অভিযোগ করেন মমতা। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "আমি মারার কথা বলিনি। তাঁকে অপব্যাখ্যা করা হয়েছে বলেও অভিযগ তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। বোছা গেল দিদি তেমন কিছু বলেন নি। যত দোষ নন্দ ঘোষ, ধর ব্যাটা সেই বেঁটে কে!কিন্তু রাজ্যে যে ক্লাব সংস্কৃতির রাজনীতিতে অর্থব্যবস্থায় হাঁড়র হাল, সেটাো কি মীডিয়ার রচনা?
ইতিমধ্যে কিন্তু
খুচরো ব্যবসায়ে বিদেশি বিনিয়োগের অনুমতি দেওয়ার পর ছোট ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষায় সরকার কী পদক্ষেপ করেছে? এ বিষয়ে কেন্দ্রকে তিন সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা দেওয়ার নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট।
খুচরো ব্যবসায়ে বিদেশি লগ্নির অনুমতিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা করা হয়। সেই মামলার শুনানিতে আজ এই নির্দেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। এফডিআই সংক্রান্ত সিদ্ধান্তের ফলে কি কোনও লাভ হয়েছে? নাকি এটি শুধুই রাজনৈতিক চমক? বড় সংস্থাগুলি অসাধু কাজকর্ম শুরু করলে ছোট ব্যবসায়ীদের কী হবে ? কেন্দ্রের কাছে এই সব প্রশ্নেরই উত্তর জানতে চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
শুনানির সময় অ্যাটর্নি জেনারেল জি ই বাহনবতী বলেন, খুচরো ব্যবসায়ে বিদেশি লগ্নির নানা দিক নিয়ে সংসদে আলোচনা হয়েছে। সংসদই এফডিআই বিরোধী প্রস্তাব খারিজ করেছে। এরপর, সর্বোচ্চ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, ছোট ব্যবসায়ীদের স্বার্থ উপেক্ষা করে সংস্কার চলতে পারে না। আদালত নীতি নির্ধারক নয়, তবে, সেই নীতি বাস্তবসম্মত কিনা, সংবিধান লঙ্ঘন করছে কিনা, তা দেখা দরকার।
বেআইনি ভাবে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারিতে দিল্লির একটি আদালত হরিয়াণার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমপ্রকাশ চৌতলা এবং তাঁর পুত্র অজয় চৌতলাকে আজ দশ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল।
১৯৯৯- ২০০০-এ জুনিয়র বেসিক ট্রেনিং শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি করেন হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভারতীয় চৌতালা-সহ অন্যরা। জাল নথি দিয়ে নিয়োগ করা হয় ৩ হাজার ২০৬ জন শিক্ষক। গত ১৬ জানুয়ারি জাতীয় লোকদলের সুপ্রিমো চৌতালা ও তার পুত্র ছাড়াও ৫৩ জন কে এই মামলায় দোষী ঘোষণা করে আদালত। দোষীদের মধ্যে দুজন আই এ এস অফিসারও রয়েছেন। তাঁদেরও দশ বছরে কারাদণ্ড হয়েছে। বাকিদের তিন থেকে পাঁচ বছরের জেল হয়েছে। আদালত চৌতালাদের বিরুদ্ধে ষঢ়যন্ত্র, জালিয়াতি, জালনথি ব্যবহার সহ একাধিক ধারায় চার্জ গঠন করে সিবিআই।
এদিকে এদিন রোহিনী আদালত চত্বের ব্যাপক বিক্ষোভ দেখান চৌতালার সমর্থকেরা। চৌতালার লোকজন ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল লোকর দলের হাজার আটেক সমর্থক আতালতের সামনে পথ অবরোধ করেন। পুলিসের সঙ্গে ঝামেলা জড়িয়ে পড়েন তারা।
বিগত চারটি ত্রৈমাসিকে ক্রমাগত লভ্যাংশ কমার পরে তৈল শোধন ব্যবসায় ভালো ফল করায় রিলায়েন্সের মুনাফা ২৪ শতাংশ বেড়ে ৫,৫০২ কোটি টাকা হয়েছে৷ অন্যদিকে, সিগারেট থেকে হোটেল ব্যবসা সংস্থা আইটিসির মুনাফা ২০.৬২ শতাংশ বেড়ে ২,০৫১.৮৫ কোটি টাকা হয়েছে৷ এখনও লার্সেন অ্যান্ড ট্যুবরো, মারুতি সুজুকি ইন্ডিয়া ও হিন্দুস্থান ইউনিলিভারের মতো বড় সংস্থাগুলি তাদের ত্রৈমাসিক ফলাফল প্রকাশ করবে৷ কাজেই এই সময় শেয়ার সূচক ঊর্ধ্বমুখী থাকবে বলেই আশা করা হচ্ছে৷
গৃহঋণ সংস্থা হাউজিং ফিনান্স ডেভালপমেন্ট কর্পোরেশনের (এইচডিএফসি) মুনাফা বাড়ল৷ চলতি অর্থবর্ষের তৃতীয় ত্রৈমাসিকে সংস্থাটির নিট মুনাফা ২৭.৫৫ শতাংশ বেড়ে ১,৭০৫.৮৩ কোটি টাকা হয়েছে৷ ২০১১-১২ অর্থবর্ষের তৃতীয় ত্রৈমাসিকে সংস্থাটির ১,৩৩৭.৩৮ কোটি টাকা মুনাফা হয়েছিল৷
অন্যদিকে, এই বছরের তৃতীয় ত্রৈমাসিকে এইচডিএফসি-র মোট আয় হয়েছে ১০,১২৮.৫৮ কোটি টাকা৷ গত বছরের অক্টোবর-ডিসেম্বর ত্রৈমাসিকে সংস্থাটির আয় হয়েছিল ৬,৩৭৯.৯৬ কোটি টাকা৷ প্রধানত ভালো গৃহঋণের পরিমানের উপর নির্ভর করেই আয় বেড়েছে সংস্থাটির৷ আয়ের কারণ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে সংস্থার সিইও কেকি মিস্ত্রি বলেন, 'এই বছরের এপ্রিল মাস থেকে ব্যক্তিগত গৃহঋণের চাহিদা বেড়েছে৷ গৃহঋণ বাবদ আমাদের মোট আয়ের প্রায় ৮৫ শতাংশই এই ক্ষেত্র থেকে এসেছে৷'
২০১২-১৩ অর্থবর্ষের তৃতীয় ত্রৈমাসিকে গৃহ ঋণের সুদ বাবদ সংস্থাটির আয় ১৯ শতাংশ বেড়ে ৫,৫৩৮ কোটি টাকা হয়েছে৷ অনাদায়ী ঋণের পরিমানও কমেছে এইচডিএফসির৷ ২০১১-১২ অর্থবর্ষের অক্টোবর-ডিসেম্বর ত্রৈমাসিকে সংস্থার মোট অনাদায়ী ঋণের পরিমাণ প্রদেয় ঋণের ০.৮২ শতাংশ ছিল৷ এই বছরে তা কমে ০.৭৫ শতাংশ হয়েছে৷
রাষ্ট্রায়ত্ত বিদ্যুত্ উত্পাদনকারী সংস্থা এনটিপিসির মুনাফা বাড়ল৷ চলতি অর্থবর্ষের তৃতীয় ত্রৈমাসিকে সংস্থাটির মুনাফা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২২ শতাংশ বেড়ে ২,৫৯৬.৭৬ কোটি টাকা হয়েছে৷ গত অর্থবর্ষের অক্টোবর-ডিসেম্বর ত্রৈমাসিকে সংস্থার নিট মুনাফা হয়েছিল ২,১৩০.৩৯ কোটি টাকা৷ মুম্বই শেয়ার বাজারকে সংস্থার দেওয়া তথ্য অনুসারে এই বছরের তৃতীয় ত্রৈমাসিকে সংস্থার মোট আয় হয়েছে ১৬,৫২৯.৫৫ কোটি টাকা৷ গত বছরের একই সময়ে সংস্থাটির আয় হয়েছিল ১৬,২৪৪.৪১ কোটি টাকা৷
আগামী ২৯ তারিখ রিজার্ভ ব্যাঙ্ক তাদের ঋণ নীতি প্রকাশ করার সময় সুদের হার কমাবে এই আশার পাশাপাশি আর্থিক সংহতিকরণের উদ্দেশে গত সপ্তাহে সরকার ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি ঘটানোয় তা শেয়ার বাজারের সহায়ক হয়েছে৷ ভারতের শেয়ার বাজারে বৈদেশিক বিনিয়োগও বেড়েছে৷ আগামী দু'বছরে কর ফাঁকি আইন লাগু হবে না বলে গত ১৪ জানুয়ারি জানায় কেন্দ্রীয় সরকার৷ তারপর থেকেই শেয়ার বাজার সূচক ঊর্ধ্বমুখী হয়৷
সোমবার যে ক্ষেত্রের শেয়ারগুলি ভালো ফল করে সেগুলি হল, অয়েল অ্যান্ড গ্যাস ও এফএমসিজি৷ মূলত, রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ ও আইটিসি-র ভালো ফলের কারণেই এই ক্ষেত্রের শেয়ারগুলি লাভের মুখ দেখে৷ অন্যদিকে, পিএসইউ, মেটাল, ব্যাঙ্ক, অটো, রিয়েলটি এবং তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রের ফল তুলনামূলক খারাপ হয়েছে৷
এর বছরের প্রথম আঠারো দিনে শেয়ার বাজারে বিদেশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগও ১৩ হাজার কোটি টাকা হয়েছে৷ গত ১৪ তারিখ মুদ্রাস্ফীতির হারও ঘোষনা করে কেন্দ্রীয় সরকার৷ পাইকারি বাজারে পর পর তিন মাস কম রয়েছে মুদ্রাস্ফীতির হার৷ এর ফলে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সুদের হার কমাতে পারে এই আশায় ব্যাঙ্ক, রিয়েলটি প্রভৃতি বিভিন্ন ক্ষেত্র গত কয়েকদিন ভালো ফল করেছে৷ যার সার্বিক প্রভাব পড়েছে শেয়ার বাজারের উপরে৷ জানুয়ারির ২৯ তারিখ রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সত্যিই সুদের হার কমালে শেয়ার বাজার আরও চাঙ্গা হবে বলে মনে করা হচ্ছে৷
এর আগে ২০১১ সালের ৬ জানুয়ারি মুম্বই শেয়ার বাজার সূচক সেনসেক্স ২০ হাজারের মাত্রা ছাড়িয়েছিল৷ সোমবার রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ারের দাম ২.২ শতাংশ বেড়ে ৯১৯.৯৫ টাকা হয়েছে৷ আইটিসির শেয়ারমূল্য ১.৪৩ শতাংশ বেড়েছে৷ বিগত চারটি ত্রৈমাসিকে সংস্থাটির বৃদ্ধির হার স্থিতাবস্থায় থাকার পরে এই ত্রৈমাসিকে সংস্থাটির মুনাফা হয়েছে প্রায় ২১ শতাংশ৷অন্য যে সংস্থাগুলির শেয়ার ভালো ফল করেছে সেগুলি হল, রিলায়েন্স কমিউনিকেশন (৬.৮৪ শতাংশ), স্পাইসজেট (৫ শতাংশ), জেট এয়ারওয়েজ (৫.৩৪ শতাংশ)৷আবার হিন্দুস্থান ইউনিলিভার এই ত্রৈমাসিকে ভালো ফল করতে পারে এই আশায় সংস্থাটির শেয়ারমূল্য ১.৪ শতাংশ বেড়েছে৷ মুনাফা বাড়লেও তা আশানুরূপ না হওয়ায় এইচডিএফসি-র শেয়ারের দাম কমেছে ১.২ শতাংশ৷
অর্থসঙ্কটে বেতন বন্ধ হওয়ার জোগাড়
কোষাগারে টাকা নেই৷ নানা উত্সবে খরচ দেদার৷ ধারদেনা করার রাস্তাও প্রায় বন্ধ৷ নিট ফল, সরকারি কর্মীদের বেতনের টাকার সংস্থান করতে হিমশিম রাজ্য সরকার৷
পঞ্চায়েত কর্মী এবং পুরসভার কর্মীদের এ মাসের বেতন কয়েক দিন পিছিয়ে যাওয়ার প্রবল আশঙ্কা তৈরি হয়েছে৷ তাঁরা এখন মাস পয়লা মাইনে পান৷ সরকারের দৈনিক আয়ের থেকে ব্যয় এতটাই বেশি যে, মার্চে আরও বেশি সংখ্যক কর্মীর বেতন পিছিয়ে যেতে পারে৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গত দেড় বছরের শাসনকালে এমন নিদারুণ আর্থিক পরিস্থিতি তৈরি হয়নি৷ তবে বিগত বাম সরকারের জমানায় একাধিকবার এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল৷ সোমবার ক্যানিংয়ের সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও আর্থিক সঙ্কটের প্রসঙ্গে বেতনের টাকায় টান পড়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন৷ তিনি বলেছেন, 'শিক্ষকদের মাইনে দেওয়ার মতো টাকা নেই৷ তবু আমি মাস পয়লা বেতন দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি৷' মুখ্যমন্ত্রী টাকা নেই বললেও এ দিনও তিনি সুন্দরবনের ৭১৪টি ক্লাবকে ২৫ হাজার টাকা করে অনুদান দিয়েছেন৷
রাজ্য সরকারি কর্মীদের প্রতি মাসের ১ তারিখ বেতন দেওয়ার জন্য বাজার থেকে প্রত্যেক মাসে বিপুল অর্থ ধার করা হয়৷ কিন্ত্ত, ঋণপত্র বেচে সেই ধার তোলার বাত্সরিক সীমাও প্রায় শেষ৷ আজ, মঙ্গলবারই তোলা হবে আরও ৮০০ কোটি টাকা৷ গোদের উপর বিষফোঁড়া, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের থেকে ওয়েজ অ্যান্ড মিনস অ্যাডভান্স এবং ওভারড্রাফট নেওয়ার সর্বোচ্চ সীমাও রাজ্য সরকার স্পর্শ করে ফেলেছে৷ এই পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার পেতে রাজ্য সরকার বাজার থেকে আরও আড়াই হাজার কোটি টাকা ঋণপত্র বেচে তোলার জন্য কেন্দ্রের অনুমোদন চেয়ে চিঠি লিখেছে৷
মহাকরণের এক কর্তা জানান, 'ওয়েজ অ্যান্ড মিনস অ্যাডভান্স খাতে রাজ্য সরকার সর্বোচ্চ পেতে পারে ১৪০০ কোটি টাকা৷ এর উপর ৭০০ কোটি টাকা সরকার রিজার্ভ ব্যাঙ্কের থেকে ওভারড্রাফট হিসাবে পেতে পারে৷ বর্তমানে এই দুই খাতেই সর্বোচ্চ সীমার অঙ্কের টাকা রাজ্য সরকার তুলে ফেলেছে৷ অর্থাত্ , রিজার্ভ ব্যাঙ্ক থেকে আর টাকা ধার নেওয়ার উপায় নেই৷ এই অবস্থায় অনেক সরকারি কর্মী আগামী মাসে নির্ধারিত সময়ে বেতন না-ও পেতে পারেন৷'
অগত্যা, বাজারে মেয়াদি ঋণপত্র বেচে অর্থ জোগাড়ই একমাত্র ভরসা৷ চলতি আর্থিক বছরে ঋণপত্র বিক্রি করে রাজ্য তুলতে পারবে ২০ হাজার ৭১ কোটি টাকা৷ তার মধ্যে ১৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ইতিমধ্যেই তোলা হয়ে গিয়েছে৷ মঙ্গলবার ৮০০ কোটি টাকা তোলার পর চলতি আর্থিক বছরের বাকি দু'মাস চালানোর জন্য পড়ে থাকবে মাত্র ২ হাজার ৭৭১ কোটি টাকা৷ অর্থ দপ্তর সূত্রের খবর, বেতন দেওয়ার জন্য এ মাসে আরও ১ হাজার কোটি টাকা তুলতে হতে পারে৷
দপ্তরের এক আধিকারিকের কথায়, 'তার পর ঋণ বাবদ যে অর্থ আমরা তুলতে পারব, তা দিয়ে কিছুতেই ৩১ মার্চ পর্যন্ত চালানো যাবে না৷ এ কারণেই আমরা বাজারি ঋণের আসল বাবদ যে আড়াই হাজার কোটি টাকা চলতি আর্থিক বছরে এখনও পর্যন্ত শোধ করেছি, তা ফের ঋণ হিসাবে তোলার জন্য কেন্দ্রের অনুমোদন চেয়ে আর্জি জানিয়েছি৷'
রাজ্যের নিজস্ব রাজস্ব আদায়ের চিত্র কিন্ত্ত যথেষ্ট আশাব্যঞ্জক৷ গত পাঁচ বছরে রাজ্যের নিজস্ব রাজস্ব আদায় ১০০ শতাংশের বেশি বেড়েছে৷ ২০০৬-০৭ সালে যেখানে রাজ্যের নিজস্ব রাজস্ব আদায় হয়েছিল ১১ হাজার ৬৯৪ কোটি টাকা, ২০১১-১২ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২৪ হাজার ৯৩৪ কোটি টাকা৷ চলতি আর্থিক বছরে রাজ্য সরকারের নিজস্ব রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ৩১ হাজার ২২২ কোটি টাকা৷ অর্থ দপ্তরের কর্তাদের হিসাবে, চলতি আর্থিক বছরে রাজ্যের নিজস্ব রাজস্ব আদায় অবশ্যই ৩০ হাজার কোটি টাকা ছাড়াবে৷ তা সত্ত্বেও এই আর্থিক বেহাল দশা কেন? অর্থ দপ্তরের এক আধিকারিকের কথায়, 'পরিকল্পনা বহির্ভূত খাতে বাজেটে ৭৭ হাজার কোটি টাকার মতো ধরা থাকলেও, সরকারের দেদার খরচের ঠেলায় চলতি আর্থিক বছরের শেষে তা কম করে ৮৫ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়াবে৷ এই কারণেই এত তীব্র আর্থিক অনটন৷'
দরকারে আইনি পথে বিরোধীরা | ||||||||||||
খরচের পরোয়া নেই, ১৩ বিধায়ক পরিষদীয় সচিব | ||||||||||||
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা | ||||||||||||
বিতর্ক অব্যাহত রেখেই পরিষদীয় সচিব (পার্লামেন্টারি সেক্রেটারি) নিয়োগ করার কাজ শুরু করে দিল রাজ্য সরকার। প্রথম দফায় ১৩ জন তৃণমূল বিধায়ক বৃহস্পতিবার পরিষদীয় সচিব পদে শপথ নেবেন। তাঁদের শপথবাক্য পাঠ করানোর কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। বিরোধীদের আপত্তি সত্ত্বেও রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন ইতিমধ্যেই এই সংক্রান্ত বিলে সম্মতি দিয়েছেন। কিন্তু তার পরেও রাজ্যের আর্থিক সঙ্কটের সময় এমন সচিব নিয়োগের পিছনে খরচ করার যৌক্তিকতা এবং সাংবিধানিক জটিলতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে ছাড়ছে না বিরোধী শিবির। এমনকী, প্রয়োজনে আইনি ব্যবস্থার কথাও ভাবছে প্রধান বিরোধী দল সিপিএম। পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সোমবার মহাকরণে বলেছেন, "১৩ জন বিধায়ককে পরিষদীয় সচিব পদে নিয়োগ করা হয়েছে। তাঁরা ২৪ জানুয়ারি বেলা দেড়টা নাগাদ শপথ নেবেন।" আপাতত যে ১৩ জন বিধায়ক পরিষদীয় সচিব হিসাবে নিযুক্ত হচ্ছেন, তাঁরা হলেন: ইটাহারের অমল আচার্য, হরিরামপুরের বিপ্লব মিত্র, নাটাবাড়ির রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, ওন্দার অরূপকুমার খান, বজবজের অশোক দেব, ডেবরার রাধাকান্ত মাইতি, ধনেখালির অসীমা পাত্র, কালিগঞ্জের নাসিরুদ্দিন আহমেদ, মানবাজারের সন্ধ্যারানি টুডু, রামপুরহাটের আশিস বন্দোপাধ্যায়, বসিরহাট (উত্তর)-এর এটিএম আবদুল্লা এবং কলকাতার শ্যামপুকুরের শশী পাঁজা ও বরাহনগরের তাপস রায়। এঁরা সকলেই তৃণমূল বিধায়ক। রাজ্যের ৪৪ জন মন্ত্রী পিছু এক জন করে পরিষদীয় সচিব নিয়োগ করার সংস্থান রাজ্য সরকারের হাতে রয়েছে। ফলে, ভবিষ্যতে সচিবের সংখ্যা আরও বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা খারিজ করা হচ্ছে না সরকারি সূত্রে। | ||||||||||||
| ||||||||||||
বিধানসভার গত অধিবেশনে পাশ-হওয়া 'ওয়েস্ট বেঙ্গল পার্লামেন্টারি সেক্রেটারি (অ্যাপয়েন্টমেন্ট, স্যালারি, অ্যালাওয়েন্সেস অ্যান্ড মিসলেনিয়াস প্রভিশনস) বিল' অনুযায়ী, পরিষদীয় সচিবেরা প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা ও বেতন পাবেন। পূর্ণমন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর পরিষদীয় সচিব যথাক্রমে প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীর সমকক্ষ বলে বিবেচিত হবেন। রাজ্যপালের সইয়ের পরে ওই বিলই এখন আইনে পরিণত হয়েছে। তবে তাঁদের দফতর বিধানসভা না মহাকরণ কোথায় হবে, সরকারি ভাবে এই সংক্রান্ত বিশদ তথ্য এখনও নবনিযুক্ত পরিষদীয় সচিব তথা বিধায়কদের হাতে পৌঁছয়নি। বিরোধীদের অভিযোগ, এই সিদ্ধান্তের ফলে এক দিকে যেমন অধিক সন্ন্যাসীতে গাজন নষ্ট হবে, তেমনই রাজ্যের কোষাগারে অহেতুক বোঝা বাড়বে। বিলটিকে আইনে পরিণত করার প্রক্রিয়া আটকানোর দাবি জানিয়ে রাজ্যপালের কাছে চিঠি পাঠিয়েছিল বিরোধী বামফ্রন্টের পরিষদীয় দল। তাদের অভিযোগ ছিল, ওই বিল আইন হিসাবে কার্যকর হলে সংবিধানের ১৬৪ (১এ) ধারাকে লঙ্ঘন করবে। একই যুক্তি দেখিয়ে রাজ্যপালকে চিঠি দিয়েছিল কংগ্রেসের পরিষদীয় দলও। রাজ্যপালের সম্মতি পেয়ে রাজ্য সরকার পরিষদীয় সচিব নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলায় বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র এ দিন বলেন, "আমরা মনে করি, এতে সংবিধান লঙ্ঘন হচ্ছে। সরকারি বিজ্ঞপ্তি দেখে আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করব।" তবে সিপিএম সূত্রের বক্তব্য, রাজ্যপাল বিলে সম্মতি দিয়ে দেওয়ার পরে এ বার আইনি পদক্ষেপের কথাই বিবেচনা করতে হবে। কংগ্রেস অবশ্য ফের রাজ্যপালের দ্বারস্থ হওয়ার কথা ভাবছে। জয়পুরে কংগ্রেসের চিন্তন শিবির সেরে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য আপাতত দিল্লিতে। তাঁর বক্তব্য, "আমাদের প্রতিবাদ জারি থাকবে। মুখ্যমন্ত্রী প্রতিটা সভায় কেন্দ্রীয় সরকারের মুণ্ডপাত করে বলছেন, দিল্লি টাকা দিচ্ছে না। কিন্তু এই অবস্থায় প্রথম দফায় ১৩ জন বিধায়ককে পরিষদীয় সচিব করার অর্থ, রাজ্যের হাতে যথেষ্ট টাকা আছে! তা হলে মুখ্যমন্ত্রী সর্বসমক্ষে বলুন, তিনি অর্থসঙ্কট নিয়ে মিথ্যা বলছেন! কলকাতায় ফিরে আবার রাজ্যপালের কাছে গিয়ে আবেদন জানাব, এই অবস্থা ঠেকাতে তিনি হস্তক্ষেপ করুন।" রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তে সাংবিধানিক জটিলতা হবে বলে প্রদীপবাবুরাও মনে করছেন। বিল পাশ করানোর সময়েই সরকার ব্যাখ্যা দিয়েছিল, রাজ্যে আইএএস-আইপিএস এবং আধিকারিকের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় কম। তাই উন্নয়নমূলক কাজে গতি আনতে নতুন পরিষদীয় সচিবের পদ তৈরি করা হচ্ছে। পরিষদীয় মন্ত্রী তখনই দাবি করেছিলেন, এই ব্যবস্থা নতুন কিছু নয়। তবে বিধানসভা বিশেষজ্ঞ দিলীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ব্রিটিশ আমলে যখন মুখ্যমন্ত্রী-সহ ১১ জনের মন্ত্রিসভা ছিল, তখন কয়েক জন বিধায়ককে পরিষদীয় সচিব হিসাবে বিধানসভায় দায়িত্ব পালন করতে হত। কিন্তু স্বাধীনতার পরে কোনও রাজ্য সরকারের আমলেই এই ব্যবস্থা চালু ছিল না। http://www.anandabazar.com/22raj3.html |
খবরে রাজ্যের মানুষ স্তব্ধ হযে জানতে পারল যে সারের দাম বাড়ানো নিয়ে কেন্দ্রের সমালোচনা করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে নজিরবিহীন ভাবে আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী। ক্যানিংয়ের সভায় তিনি বলেন, সারের দাম বাড়ানোর বিরোধিতা করে তিনি দশবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন। এরপরই মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, "তাহলে আর কী করব? তাহলে কি মারব?"
রাজ্যের প্রাপ্র্য টাকা কেটে নিয়ে, নিজেদের প্রকল্পে ভর্তুকি দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। পরে তা নিয়েই বড়াই করে। ক্যানিংয়ের একটি জনসভায় কাল এই অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর আগে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং জয়পুরের চিন্তন বৈঠকে কেন্দ্রীয় প্রকল্প নিয়ে একটি অভিযোগ করেন। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য ছিল, প্রচারের অভাবেই কেন্দ্রীয় প্রকল্পের বাহবা নিচ্ছে কিছু অকংগ্রেসি সরকার। প্রধানমন্ত্রীর সেই বক্তব্যকে চ্যালেঞ্জ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, রাজ্যের উপার্জন করা অর্থ অন্যায় ভাবে কেটে নিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্র। তার থেকে সামান্য টাকা কেন্দ্রীয় প্রকল্পে ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে।
ক্যানিংয়ের একটি মাঠে সুন্দরবন ফুটবল কাপের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী তুললেন আগের সরকারের ব্যর্থতা, কেন্দ্রের বঞ্চনা, তাঁর সরকারের সাফল্য, মিডিয়ার অপপ্রচারের কথা, যে কথাগুলি তিনি সব সভাতেই বলেন।
এর আগেও টিভি চ্যানেলে প্রধানমন্ত্রীর কথা বলার ভঙ্গি নকল করে ব্যঙ্গ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
কী শেখালেন মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী? এটাই কি শালীনতা? এটাই কি রাজনীতির ভাষা? নতুন করে পুরনো বিতর্কটা উস্কে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য শুনতে ক্লিক করুন এখানে।
এই সময়: সংবাদমাধ্যমের দিকে তোপ দেগে প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে মন্তব্য সংক্রান্ত বিতর্কে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতাবন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার এসএসকেএম হাসপাতালে তিনি বলেছেন, 'প্রধানমন্ত্রীকে মারব, এ কথা আমি বলিনি।' তাঁর দাবি, সংবাদমাধ্যমের একাংশ তাঁর বক্তব্য বিকৃত করছে। এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, সংবাদমাধ্যমের একাংশ ক্রমাগত চক্রান্ত করছে তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে, চলছে মিথ্যা প্রচার।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, 'মিথ্যা কথা বলা হচ্ছে। চক্রান্ত করছে সংবাদমাধ্যম।' সংবাদমাধ্যমের উদ্দিষ্ট অংশের প্রতি তাঁর হুঁশিয়ারি, 'অর্ধেক ল্যাঙ্গোয়েজ দেবেন না।' মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, সরকারি হাসপাতালগুলিতেই শ্রেষ্ঠ পরিকাঠামো রয়েছে। নতুন চিকিত্সকদের প্রতি তাঁর আবেদন, 'পাশ করে অন্তত একটি বছর গ্রামে যান, প্রত্যন্ত অঞ্চলে যান। আপনারা না-গেলে ওই মানুষগুলোকে দেখবেন কে? আমরা আপনাদের ইনসেনটিভ দেব। কিন্তু একটা বছর গ্রামে কাটান।' তাঁর আবেদন, 'কেউ যেন সরকারি হাসপাতালে এসে চিকিত্সা না-পেয়ে ফিরে না যান।' সেই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, রাজ্যে আরও অনেকগুলি ফেয়ার প্রাইস শপ খোলা হবে। সেই দোকানগুলি থেকে সকলেই ওষুধ কিনতে পারবেন।
এদিন দক্ষিণ ২৪ পরগনায় বাখরাহাটে দলীয় জনসভায় স্বভাব বিরুদ্ধভাবে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিলেন সিপিএম পলিটবুরোর এই নেতা৷ সভায় ভিড় দেখে দৃশ্যত খুশি বুদ্ধদেববাবু মমতা-সরকারের বিরুদ্ধে ক্রমশ সুর চড়িয়েছেন৷ পেট্রল,ডিজেলের দাম বাড়লেই মুখ্যমন্ত্রী প্রতিবাদ করছেন৷ তা নিয়ে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য,'কেন্দ্র দাম বাড়াচ্ছে আর রাজ্য সরকার পথে নামছে৷ অথচ, তৃণমূল যখন দিল্লিতে সরকারে ছিল তখন কথা বলে নি৷' আসলে তৃণমূলের গায়ে কংগ্রেসের সব পাপ রয়েছে৷' এরপরেই মমতার নাম না করে, সিপিএম শীর্ষ নেতার প্রশ্ন,'আপনি বাস,ট্যাক্সির ভাড়া বাড়ালেন কেন?' পঞ্চায়েত ভোটের আগে এই সভামঞ্চ থেকে প্রচারের সুযোগ হাতছাড়া করতে চান না,তা বোঝাতেই এদিন রাজ্য সরকারকে বারে বারে কাঠগড়ায় তুলেছেন তিনি৷ মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে তাঁর কটাক্ষ,'পেট্রল,সারের দাম বাড়লে চোখের জল ফেলছেন৷ তাহলে বলুন, আমি রাজ্যের পাওনা কর নেব না৷ আপনি বাস ভাড়া কমিয়ে দিন৷ এখানে দুধ, বিদ্যুত্,বাস ভাড়া বাড়ছে, আর দিল্লি বাড়ালেই প্রতিবাদ,এ চলতে পারে না৷'
আইন শৃঙ্খলার প্রশ্নেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছেন তাঁর পূর্বসুরী৷ বুদ্বদেব ভট্টাচার্যের অভিযোগ,'সরকার চলছে না, রাজ্যে গুন্ডারাজ চলছে৷ বদমাশরা মাথা তুলছে৷ কলকাতাসহ সব জায়গায় মানুষ ভয়ে ঘরে ঢুকে যাচ্ছে৷' কিন্ত্ত এই অবস্থা কেন? বাম জমানাতেও অপরাধ ছিল, সে কথা কবুল করে সিপিএম পলিটব্যুরো নেতার ব্যখ্যা, তৃণমূল কংগ্রেস অপরাধীদের নিয়ে তৈরি হয়েছে বলেই এত অপরাধ বাড়ছে৷ অভিযুক্তদের ধরে একদিন পরেই পুলিশ ছেড়ে দিচ্ছে৷ এই প্রসঙ্গে নারী নির্যাতনের ইস্যু নিয়েও সরকারকে তুলোধনা করেন তিনি৷ তাঁর কড়া মন্তব্য,'আমি অনেক চিঠি, ফোন পাচ্ছি৷ কিছু করার নেই৷ মেয়েরা রাস্তায় বেরতে ভয় পাচ্ছে৷ মহিলাদের ওপর আক্রমণ হলে পুলিশ কী করবে জানে না৷ কারণ, এই ব্যাপারে কোনও বার্তা যাচ্ছে না৷ আর পুলিশের ওপর উপরমহলের চাপ থাকায় তারাও চুপ৷
এই সময়: রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আসছে কেন্দ্রীয় সমীক্ষক দল৷ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীলকুমার সিন্ধের নির্দেশেই এই দল আসছে বলে মঙ্গলবার দাবি করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য৷ তাঁর দাবি, সদ্য শেষ হওয়া কংগ্রেসের চিন্তন বৈঠকে তাঁর সঙ্গে কথা হয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর৷ সেখানে তিনি এই দল পাঠানোর বিষয়টি উত্থাপন করেন৷ প্রদীপ ভট্টাচার্যের কথায়, 'কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমাদের কথা বিবেচনা করার আশ্বাস দিয়েছেন এবং কিছুদিনের মধ্যে কেন্দ্রীয় সমীক্ষক দল আসবে৷' যদিও প্রশ্ন উঠছে আইনশৃঙ্খলা রাজ্য তালিকাভূক্ত বিষয়৷ সেই বিষয়ে কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপ কতটা কাম্য? এর উত্তরে মঙ্গলবার প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, 'আমরা প্রত্যেকে ভারতের নাগরিক৷ রাজ্য সরকার যদি আমাদের রক্ষা করতে না পারে তা হলে আমাদের ভারত সরকারের কাছেই তো যেতে হবে৷ রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি তো দিনদিন খারাপ হচ্ছে৷' এই সমস্ত বিষয় নিয়ে রাজ্যপালের কাছে তাঁরা যাবেন বলে এ দিন জানিয়েছেন প্রদীপ ভট্টাচার্য৷ এ দিকে ধনেখালিতে পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে এ দিনও সরব হয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব৷ এই ঘটনায় ফের এ দিন সিবিআই তদন্ত চেয়েছেন প্রদীপ ভট্টাচার্য৷ আগামী ২৪ জানুয়ারি প্রদীপ ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে কংগ্রেসের একটি দল ধনেখালিতে যাচ্ছে৷ একইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন যে আগামী ২৪ জানুয়ারি পরিষদীয় সচিবদের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান 'বয়কট' করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রদেশ কংগ্রেস৷ প্রদীপ ভট্টাচার্যের যুক্তি, 'রাজ্যের তো টাকার অভাব৷ তা হলে পরিষদীয় সচিবদের এই পদ কি অবৈতনিক? না বৈতনিক? যদি টাকা দেওয়া হয় তা হলে এই টাকা কোথা থেকে আসবে?' প্রদীপ ভট্টাচার্যের বক্তব্য, 'মুখ্যমন্ত্রী তাঁর দলের উপদলীয় কোন্দল সামাল দেওয়ার জন্য এটা করেছেন৷' প্রদেশ কংগ্রেস যখন এই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তখন বিরোধী বামেদের বক্তব্য এই বিষয়ে তাঁদের কিছুই জানানো হয়নি৷ এর জন্য আদৌ কোনও বিজ্ঞন্তি জারি হয়েছে কিনা তা তাঁদের জানা নেই বলে এ দিন মন্তব্য করেছেন সিপিএম বিধায়ক আনিসুর রহমান৷ এই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের জন্য তাঁদের কাছে কোনও আমন্ত্রণপত্রও আসেনি বলে জানিয়েছেন তিনি৷
মাওবাদী-তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষাকারী এক লেখক। সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম লালগড় আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন। বাম আমলে মাওবাদী অভিযোগে জেলে কাটিয়েছেন বেশ কিছুদিন। এবার ফের কলম ধরেছেন। তাঁর নতুন বই নিজের ঢাক-এ ফাঁস করেছেন এমন অনেক তথ্য যা রীতিমতো অস্বস্তিতে ফেলতে পারে রাজ্য সরকারকে।
তৃণমূল সাংসদ কবীর সুমনের পর এবার মাণিক মণ্ডল। মাওবাদী অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল লেখক মানিক মণ্ডলকে। তৃণমূলের সঙ্গে মাওবাদীদের যোগাযোগ রক্ষার অভিযোগ বারবার যাঁর বিরুদ্ধে উঠেছে সেই মানিক মণ্ডল এবার বই লিখলেন---নিজের ঢাক। কভার, হাঁটে হাড়ি ভেঙে দিয়েছি।
তৃণমূল ভবনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করা রাজা সরখেল, দেবলীনা চক্রবর্তীদের গ্রেফতার করা হয়েছে মাওবাদী অভিযোগে। এখনও জেলে রাজা।
মাওবাদীদের সঙ্গে তৃণমূলের যোগাযোগের অভিযোগ বারবারই করেছে বামেরা। তৃণমূল সাংসদ কবীর সুমনের পরে এবার তৃণমূলপন্থী লেখক মানিক মণ্ডল মেনে নিলেন সে কথাটা।
বইয়ের ব্যাক কভারে মানিক মণ্ডল লিখেছেন হাটে হাড়ি
ভেঙে দিয়েছি গো।
শিল্প, কর্মসংস্থান থেকে শুরু করে সরকারি উদ্যোগে উত্সব, বিজ্ঞাপন৷ বিভিন্ন ইস্যুতে রাজ্য সরকারের সমালোচনায় সরব বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য৷ কটাক্ষের সুরে তিনি বললেন, সরকার নয়, ক্লাব চলছে৷ ভাবনা-চিন্তা ছাড়াই নয়ছয় হচ্ছে জনগণের টাকা৷ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই রাজ্যের আর্থিক অবস্থা বেহাল বলে বারবার দাবি করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এজন্য তিনি বারংবার দায় চাপিয়েছেন বিগত বাম সরকারের ওপর৷ কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী যেখানে অর্থাভাবের কারণ দেখাচ্ছেন, সেখানে ক্লাব-অনুদান, বিজ্ঞাপনের মতো খরচের যৌক্তিকতা নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা৷ মঙ্গলবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাখরাহাটের সভা থেকে সেই ইস্যুকে হাতিয়ার করেই বর্তমান সরকারকে আক্রমণ করলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী৷ বললেন, কোনও ভাবনা চিন্তা ছাড়াই রাস্তায় হোর্ডিং টাঙিয়ে মানুষের টাকা খরচ করা হচ্ছে৷ ক্লাবকে অনুদান দেওয়া হচ্ছে৷
ত্রিফলা দুর্নীতি নিয়ে ইতিমধ্যেই যথেষ্ট অস্বস্তিতে সরকার৷ সেই প্রসঙ্গে এদিন বুদ্ধদেববাবু কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, ক্ষমতায় এলে ত্রিফলা দুর্নীতি খুঁজে বার করবই৷ পাশাপাশি শিল্প থেকে শুরু করে কর্মসংস্থান নিয়েও এদিন সরকারকে একহাত নিয়ে বুদ্ধদেববাবু বলেছেন, তৃণমূল আমলে রাজ্যে একটাও কারখানা হয়নি৷ ৫ লক্ষ কর্মসংস্থানের কথা বলা হচ্ছে৷ কিন্তু পাঁচজনেরও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়নি৷
http://abpananda.newsbullet.in/state/34-more/32790-2013-01-22-15-01-40
তৃণমূলের শহীদ দিবসের অনুষ্ঠানে গিয়ে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সম্পর্কে অশালীন মন্তব্য করলেন মন্ত্রী বেচারাম মান্না। অশালীন মন্তব্য ঝরে পড়েছে সিপিআইএমের অন্য নেতৃত্বের উদ্দেশেও। বাদ যাননি প্রয়াত নেতাও। পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোণা দাসেরবাঁধের অনুষ্ঠানে কৃষি প্রতিমন্ত্রীর মন্তব্য, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের ভাইপো নন। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে `কবির ভাইপো বলতে লজ্জা হয়` বলে মন্তব্য বেচারাম মান্নার।
মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সহ অন্য সিপিআইএম নেতাদের সম্পর্কে বেচারাম মান্নার এই মন্তব্য পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁসেরবাঁধের শহীদ সভায় দাঁড়িয়ে। প্রশ্ন উঠেছে, এ ধরনের কুরুচিকর মন্তব্য করার পর দল কী তাঁকে সতর্ক করবে? দুঃখপ্রকাশ করবেন বেচারাম মান্না? যেমনটা দেখা গিয়েছিল, সিপিআইএম নেতা আনিসুর রহমানের ক্ষেত্রে। মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে মন্তব্য করার পর দুঃখপ্রকাশ করেছিলেন তিনি। দিল্লি গণধর্ষনকাণ্ড নিয়ে মন্তব্য করার পর ক্ষমা চেয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি-পুত্র অভিজিত্ মুখার্জি। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, দুঃখপ্রকাশ করার কোনও সম্ভাবনা নেই বেচারাম মান্নার। কারণ, অতীতে তৃণমূল নেতাদের কেউই অশালীন মন্তব্য করার পর দুঃখপ্রকাশ করেননি।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে প্রকাশ্যে আক্রমণ করলেও সমীর আইচ কিন্তু সেভাবে মুখ খুললেন না। বিশিষ্ট এই চিত্রশিল্পী শুধু বললেন, "উনি যে আমাকে শিল্পীর স্বীকৃতি দিয়েছেন এতেই খুশি।"
এবার রাজ্যের পরিবর্তনপন্থী বুদ্ধিজীবীদেরই একাংশকে আক্রমণের লক্ষ্য করলেন মু্খ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরাসরি নাম করে তোপ দাগলেন শিল্পী সমীর আইচের দিকে। সাফ জানিয়েলেন, রাজ্যে পালাবদলের সময় পরিবর্তনপন্থীদের মিছিলে হাঁটলেও তৃণমূলের কেউ নন সমীর আইচ। একধাপ এগিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, সিপিআইএম শিখিয়ে দেওয়াতেই মিথ্যে বলছেন পরিবর্তনপন্থী ওই চিত্রশিল্পী।
বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের বিতর্কে তৃণমূল কংগ্রেস ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষে এত দিন জোর গলায় সওয়াল করে এসেছেন তিনি। এ বার সেই শাসক দলেরই কোপে পড়লেন চিত্রশিল্পী সমীর আইচ। কড়েয়ার প্রতিবাদী তরুণের অপমৃত্যুর পরে রাজপথে মোমবাতি মিছিলে সামিল হয়েছিলেন সমীর। রাজ্য সরকারের সমালোচনা করে জানান, এ বার তাঁকেও পথে নামতে হল। সমীর বলেন, "রাজ্যে পুলিশের কোনও পরিবর্তন হয়নি। আমিনুল এক মাস ধরে কষ্ট পেলেও মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে প্রশাসনের কেউ বিষয়টি আমল দেননি।
এ দিন প্রধানমন্ত্রীকে বেনজির আক্রমণ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখান কংগ্রেস কর্মীরা। আজ কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। প্রতিবাদে আজ মহাকরণের সামনেও বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনামূলক স্লোগান ছিল তাঁদের গলায়। তবে বিক্ষোভকারীদের দ্রুত হঠিয়ে দেয় পুলিস। কংগ্রেস কর্মীদের মতে, মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য শুধু কুরুচিকরই নয়, এতে বাংলার সম্মানহানিও ঘটেছে।
মুখ্যমন্ত্রীর গতকালের বক্তব্যে ইতিমধ্যেই শোরগোল পড়েছে সব মহলে। নিন্দায় সরব হয়েছেন অনেকেই। প্রধানমন্ত্রীকে বেনজির আক্রমণ করে গতকাল মুখ্যমন্ত্রী যে মন্তব্য করেছেন, তা `অনভিপ্রেত` এবং `দুর্ভাগ্যজনক`।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে এধরনের মন্তব্য অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। আজ দিল্লিতে এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মানস ভুঁইঞা।
কিন্তু গতকাল ঠিক কী বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী? সারের দাম বাড়ানো নিয়ে কেন্দ্রের সমালোচনা করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে নজিরবিহীন ভাবে আক্রমণ করে বসেন তিনি। ক্যানিংয়ের সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, সারের দাম বাড়ানোর বিরোধিতা করে তিনি দশবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন। এরপরই মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, "তাহলে আর কী করব? তাহলে কি মারব?"
রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের গতকালের এই মন্তব্যের সমালোচনা করেছেন সিপিআইএম নেতা মহম্মদ সেলিম। তাঁর বক্তব্য, এই পর্যায়ের কোনও নেত্রীকে আগে এ ভাবে মন্তব্য করতে শোনেননি তিনি। তাঁর মতে, "এ ধরনের মন্তব্য নজিরবিহীন ঘটনা।" ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই পূর্বের মন্তব্য অস্বীকার করে সংবাদমাধ্যমের উপর দোষারোপ করায় মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করতেও ছাড়েননি সিপিআইএম নেতা।
আজ এসএসকেএম হাসপাতালে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান দফতরের উদ্যোগে গঠিত ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ, এনআরএস, আরজিকর ও বাঙ্গুর হাসপাতালে পিপিপি মডেলে পরিচালিত এই ধরনের দোকান ইতিমধ্যেই খোলা হয়েছে। আজ শম্ভুনাথ পন্ডিত হাসপাতালের ৩০ শয্যার নেফ্রোলজি বিভাগ এবং এসএসকেএমের জরুরি বিভাগের ৪৪ শয্যার পর্যবেক্ষণ ওয়ার্ডেরও উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। এই পর্যবেক্ষণ ওয়ার্ডে রোগীকে ২৪ ঘণ্টা রেখে তবেই চিকিত্সকরা তাকে ভর্তি নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
মঙ্গলবার এসএসকেএম হাসপাতালে নানা রূপে দেখা গেল মুখ্যমন্ত্রীকে। কখনও চিকিত্সক ও নার্সদের জন্য চিকিত্সার প্রাথমিক টোটকা। কখনও আবার জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতি অনুরোধ। এসএসকেএমে ফেয়ার প্রাইস শপ, তিরিশ বেডের নেফ্রলজি বিভাগ ও চুয়াল্লিশ বেডের ইমারজেন্সি অবজারভেশন ওয়ার্ডের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী শোনালেন নতুন একাধিক প্রকল্পের কথা।
একাধিক নতুন প্রকল্পের ঘোষণা করছেন মুখ্যমন্ত্রী। আবার বলছেন, রাজ্যের আর্থিক অনটনের কথা। আজ এসএসকেএম হাসপাতালের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য ঘোষিত প্রকল্পগুলির বাস্তবায়ন নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিল।
১. রাজ্যে তেত্রিশটি নার্সিং ট্রেনিং কেন্দ্র।
২. সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালগুলো পরিস্কার রাখার জন্য উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার।
৩. বড় বড় সরকারি হাসপাতালগুলিতে গ্রিন টয়লেট।
৪. শহরের যে কোন সরকারি হাসপাতালে গরীব রোগীদের বিনামূল্যে ক্যান্সার চিকিত্সার ব্যবস্থা।
৫. দশটি বিশেষ মা ও শিশু পরিচর্যাকেন্দ্র।
প্রকল্প ঘোষণার পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী শোনালেন রাজ্যের বেহাল আর্থিক দশার কথাও। তবে আর্থিক অনটনের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষিত প্রকল্পগুলির বাস্তবায়ন কি সম্ভব? অপ্রিয় প্রশ্নটা কিন্তু তুলে দিল মুখ্যমন্ত্রীর কথাই।
সরকারি হাসপাতালে চক্রান্ত? অন্তর্ঘাত? খোদ মুখ্যমন্ত্রীই মঙ্গলবার এই জল্পনা উস্কে দিলেন৷ এ দিন এসএসকেএম হাসপাতালে ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানের উদ্বোধন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ উদ্বোধনী মঞ্চ থেকে তিনি বলেন, হাসপাতাল মানুষ মারার জায়গা নয়৷ রাজনীতি করার জায়গা নয়৷ মঞ্চ থেকেই স্বাস্থ্যসচিব সতীশ তিওয়ারিকে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, ভাল কাজ করলে প্রশংসা করুন৷ অন্তর্ঘাত করলে রেকর্ড রাখুন৷
কিন্তু, কোন চিকিত্সকদের উদ্দেশে এ ভাবে হুঁশিয়ারি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী? এ নিয়ে তৈরি হয়েছে বিভ্রান্তি৷ এদিকে, সরকারি হাসপাতালে ন্যায্য মূল্যের ওষুধ দোকান চালুর বিরোধিতায় সোমবার যাঁরা ওষুধের দোকান বন্ধ রাখেন এ দিন তাঁদেরও কার্যত হুঁশিয়ার করে দেন মুখ্যমন্ত্রী৷ বলেন, আগুন নিয়ে খেলবেন না৷
মুখ্যমন্ত্রী এ দিন জানান, সরকারি হাসপাতালে নার্সের অভাবের কথা মাথায় রেখে, এবার থেকে পুরুষ নার্স চালু করার কথা ভাবছে সরকার৷ জুনিয়র চিকিত্সকরা যাতে গ্রামে যান, তাই তাঁদের উত্সাহ দিতে, এ দিন ইনসেনটিভ দেওয়ার কথাও বলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ চিকিত্সকদেরও আবেদন জানান সপ্তাহে একদিন গ্রামে গিয়ে কাজ করতে৷
http://abpananda.newsbullet.in/state/34-more/32792-2013-01-22-15-15-01
ফের একবার অশ্লীল নাচকে কেন্দ্র করে বিতর্কে জড়াল তৃণমূল। ভাঙড়ের পর এবার স্বল্পবাস তরুণীর উদ্দাম নাচের আসর বসল মেদিনীপুরে কলেজে। গতকাল ছিল মেদিনীপুর আইটিআই-এর নবীনবরণ ও বাত্সরিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা ছিল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ পরিচালিত ছাত্র সংসদ।
কিন্তু সন্ধে গড়াতে না গড়াতেই সেই অনুষ্ঠানে শুরু হয় উদ্দাম নাচ। নাচের সঙ্গে পা মেলান ছাত্রদের একাংশ। সেই নাচের ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ্যে আসতেই শুরু হয় বিতর্ক। তৃণমূলের জেলা সভাপতি রমাপ্রসাদ গিরি অবশ্য সংবাদ মাধ্যমের ওপরই দোষ চাপান। পুরো ঘটনায় তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন কলেজের অধ্যক্ষ।
দেখুন তৃণমূলের সেই ডার্টি ডান্সিং
http://zeenews.india.com/bengali/zila/tmc-dirty-dancing-in-midnapur_10869.html
রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যদের মত্ত নাচানাচি অথবা ভাঙড়ে তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসে জলসায় নাচাগানার মধ্যে তৃণমূল নেতার মঞ্চে টাকা ওড়ানোর ছবি স্মৃতিতে এখনও টাটকা৷ এবার মেদিনীপুর আইটিআইয়ে কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে স্বল্পবাস তরুণীর উদ্দাম নৃত্য দেখা গেল! শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে এমন হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই সমালোচনার ঝড় উঠেছে৷ কাঠগড়ায় তোলা হচ্ছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদকে কেননা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় 'নবীনবরণ ও বাৎসরিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান', এই পোশাকি নামের আড়ালে হওয়া জলসার আয়োজন করেছিল তারাই৷ তাদের উদ্যোগেই চটুল গানের তালে স্বল্পবাস তরুণীর নাচানাচি দেখা গিয়েছে৷ ছাত্র সংসদে টানা দুবার ক্ষমতায় থাকা তৃণমূল ছাত্র পরিষদ বিপাকে পড়েছে৷ একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কীভাবে হল এমন অনুষ্ঠান, এই প্রশ্নের মুখে চাপে পড়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ দু'জনকে ইতিমধ্যে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করেছে।টিএমসিপির পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি রমাপ্রসাদ গিরি একথা জানিয়েছেন। তাঁদের সমালোচনায় মুখর হয়েছেন স্থানীয় এসএফআই নেতা অসিত লৌহ ও জেলার ছাত্র পরিষদ নেতা মহম্মদ সৈফুদ্দিন।
রবীন্দ্রভারতী কাণ্ডের পর ক'দিন আগেই তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে এক জলসায় এমনই উদ্দাম নাচ ঘিরে বিতর্ক বেধেছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ে৷ সেই ঘটনার জেরে জেলা পরিষদের তৃণমূল সদস্য মীর তাহের আলিকে সাসপেন্ড করে দল৷ কিন্তু দলের ছাত্র শাখায় নাচাগানার সংস্কৃতির লাগাম টানা যে সম্ভব হয়নি, মেদিনীপুরের ঘটনাই তার বড় প্রমাণ বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল৷
বিল্টু গোপ, এবিপি আনন্দ, পশ্চিম মেদিনীপুর
শিক্ষাক্ষেত্রে অশ্লীল নাচ
http://abpananda.newsbullet.in/state/34-more/32771-2013-01-22-07-53-30
জল্পনার অবসান৷ এসএসকেএম হাসপাতালে গেলেও সেখানে আইসিইউ-তে ভর্তি ভাঙড়কাণ্ডে গ্রেফতার তৃণমূল কংগ্রেস নেতা আরাবুল ইসলামের সঙ্গে দেখা করলেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷
এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি ভাঙড়কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম৷ দলীয় নেত্রী বেশকয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধন করতে মঙ্গলবার যাচ্ছেন হাসপাতালে৷ তবে কি আরাবুলের সঙ্গে দেখা করবেন তিনি? জল্পনার পারদ বাড়ছিলই৷ সিপিএম বিধায়ক রেজ্জাক মোল্লাকে মারধরের মামলায় জামিন পেলেও ৮ তারিখের বামনঘাটায় মিছিলে যোগ দিতে আসার পথে বাম কর্মীদের ওপর হামলার মামলায় জামিন পাননি আরাবুল৷ তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক ভর্তি এসএসকেএমের কার্ডিওলজি ওয়ার্ডে৷ তার ঠিক একশো মিটার দূরেই উডবার্ন ওয়ার্ড৷ তারই সামনে মুখ্যমন্ত্রীর মঞ্চ৷ এদিন মুখ্যমন্ত্রী অনুষ্ঠানমঞ্চে যেতেই বাড়ছিল জল্পনা৷ তা হলে কি আরাবুলকে দেখতে যাবেন মমতা? কিন্তু, অনুষ্ঠান শেষ হতেই হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যান মুখ্যমন্ত্রী৷
এর আগে এসএসকেএম-এ ফিরহাদ হাকিম সহ একাধিক তৃণমূল নেতা আরাবুলকে দেখতে যান৷ ভাঙড় কাণ্ডের পর প্রকাশ্যে আরাবুলের পাশে দাঁড়ান তৃণমূলের প্রথম সারির নেতারা৷ রাজ্যপালের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়েন সুব্রত মুখোপাধ্যায়৷ দলীয় নেতা-মন্ত্রীরা আরাবুলকে তাজা নেতা বললেও মুখ্যমন্ত্রী এড়িয়ে গেলেন দলের প্রাক্তন বিধায়ককে৷
রাজনৈতিক মহলের মতে, বিতর্ক এড়াতেই আরাবুলের সঙ্গে দেখা করলেন না মুখ্যমন্ত্রী৷
http://abpananda.newsbullet.in/state/34-more/32786-2013-01-22-13-59-53
কলকাতা: সারের দাম নিয়ে ক্যানিংয়ের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকে বেনজির আক্রমণ করার পরদিনই নিজের বক্তব্যের সাফাই দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।তিনি যাবতীয় শিষ্টাচারের গণ্ডী পেরিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে তোপ দেগেছেন বলে অভিযোগ তুলে তাঁর সমালোচনা্য় সরব হয়েছেন বিরোধী শিবির, বিশেষত, কংগ্রেসের নেতা-নেত্রীরা।একেই তাঁর দলের নেতা-মন্ত্রীদের কেউ কেউ বিরোধী শিবিরের নেতাদের পাশাপাশি রাজ্যপালের মতো সাংবিধানিক ব্যক্তিত্বকে কটাক্ষ করে নাগরিক সমাজের বিরাগভাজন হয়েছেন, তারপর তিনিও যদি দেশের সর্বোচ্চ প্রশাসনিক পদে থাকা ব্যক্তিটিকে ব্যক্তিগত আক্রমণের অভিযোগে দুষ্ট হন, তাহলে আমজনতার মনে তাঁর সম্পর্কেও বিরূপ ধারণা হতে বাধ্য, সম্ভবত এই উপলব্ধি থেকেই আজ মমতা দাবি করেন, তিনি প্রধানমন্ত্রীকে মারার কথা বলেননি৷ গতকাল মমতা ক্যানিংয়ের সভায় বলেছিলেন, সারের দামবৃদ্ধি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে দশবার বলেছি৷ এর থেকে বেশি তো আমি কিছু করতে পারি না৷ আমি কি মারব গিয়ে? মারলে তো আবার আপনারা বলবেন, আমি গুণ্ডা হয়ে গেছি! তাতে অবশ্য আমার কিছু আসে যায় না। সংবাদ সংস্থার খবর, আজ সাফাই দেওয়ার পাশাপাশি মিডিয়া তাঁর ওই মন্তব্য বিকৃত করেছে বলে অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, মিডিয়ার একাংশ বলে দিল, আমি নাকি প্রধানমন্ত্রীকে মারব বলেছি! এটা একেবারে মিথ্যা কথা।মিডিয়ার একাংশ নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য লাগাতার আমার মন্তব্য বিকৃত করে চলেছে।নিজের অবস্থান বোঝাতে গিয়ে তিনি আরও বলেন, ধরুন একবার বললাম আমি ভাত আর পরে বললাম আমি ভাত খাচ্ছি, দুটো কথার অর্থ কি এক! মিডিয়াকে অনুরোধ করছি, বিভ্রান্তি ছড়িয়ে মানুষকে বিপথে চালাবেন না। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, গণতন্ত্রে আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে কথা বলতে পারি, কিন্তু তাঁকে মারতে পারি না। ভুলটা কী বলেছি?
তবে মমতা যে ব্যাখ্যাই দিন না কেন, বিরোধীরা তা মানতে নারাজ৷ মঙ্গলবার দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার পর সাংবাদিক সম্মেলনে কংগ্রেস নেতা মানস ভুঁইঞা বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর এ ধরনের মন্তব্য অত্যন্ত দুঃখজনক৷ প্রধানমন্ত্রীর কাছে মুখ্যমন্ত্রীর নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়া উচিত৷দীপা দাশমুন্সিও বলেন, নিঃশর্তে ক্ষমা চাইতে হবে তাঁকে।কটাক্ষ প্রদীপ ভট্টাচার্যের কটাক্ষ, সভ্য সরকারের মুখ্যমন্ত্রী এমন বলতে পারেন না! মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের প্রতিবাদে মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ কংগ্রেসের দশ থেকে বারোজন সমর্থক মহাকরণের সেন্ট্রাল গেটের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন৷ মুখ্যমন্ত্রীকে ধিক্কার জানান তাঁরা৷ তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ গিয়ে তাঁদের সরিয়ে দেয়৷ এর আগে বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ ট্রাঙ্গুলার পার্কে মিনিট পনেরো রাস্তা অবরোধ করেন কংগ্রেস সমর্থকরা৷ বেলা এগারোটা নাগাদ দক্ষিণ কলকাতা জেলা মনিটারিং কংগ্রেসের কর্মীরা টালিগঞ্জ ফাঁড়িতে বিক্ষোভ দেখান৷ দুপুর ১২ টা থেকে প্রায় ৩৫ মিনিট উলুবেড়িয়ায় খলিসানি মালপাড়ায় ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন যুব কংগ্রেস কর্মীরা৷ দাহ করা হয় মুখ্যমন্ত্রীর কুশপুতুল৷
জোটে ইতি হয়েছে চার মাস আগে৷ সম্পর্ক ছেদের পর থেকেই প্রকাশ্যে শুরু হয়েছে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণের পালা৷ সারের দাম নিয়েও আগে একাধিকবার কেন্দ্রের ঘাড়ে দায় চাপিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ কিন্তু সেই ধারা ছাপিয়ে ক্যানিংয়ের সভায় তিনি বেনজিরভাবে প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করেন বলে অভিযোগ৷ইউপিএ-জোটে থাকাকালীনই রাষ্ট্রপতি নির্বাচন থেকে শুরু করে খুচরো ব্যবসায় এফডিআই, একাধিক ইস্যুতে কেন্দ্রের সঙ্গে সংঘাতের পথে হেঁটেছেন মমতা৷ ১৮ সেপ্টেম্বর ইউপিএ থেকে বেরিয়ে আসার পর একটি সর্বভারতীয় চ্যানেলে প্রধানমন্ত্রীকে নকল করতেও ছাড়েননি তিনি৷ আক্রমণের ধারা পুরনো হলেও ক্যানিংয়ের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি বেনজির বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল৷ আর বিভিন্ন মহলের সমালোচনার চাপের মুখেই এবার মুখ্যমন্ত্রীর আক্রমণের সাফাই দেওয়ার চেষ্টা করলেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা৷
http://abpananda.newsbullet.in/state/34-more/32773-2013-01-22-10-17-16
বিজেপি সভাপতি নির্বাচনে নাটকীয় মোড়। সূত্রের খবর, ভারতীয় জনতা পার্টির পরবর্তী সভাপতি হতে চলেছেন রাজনাথ সিং। বিজেপি শীর্ষ নেতা অরুণ জেটলি ও সুষমা স্বরাজের উপস্থিতিতে চলা ম্যারাথন বৈঠকে এমনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিজেপি বর্ষীয়ান নেতা রাজনাথের নাম উঠে আসার পরই সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দেন নিতিন গড়করি। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছি আগামিকাল মনোনয়ন জমা দেবেন রাজনাথ।
সকলা থেকে অবশ্য পরিস্থিতি একদম অন্রকম ছিল। ধরেই নেওয়া হচ্ছিল বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় ফের গড়করিই সভাপতি হতে চলেছেন। তখনই হঠাত্ করে হাজারিবাদের সাংসদ তথা বিজেপির বর্ষীয়ান নেতা যশবন্ত সিনহার নাম ওঠে। বিকালে পরেই সেই তালিকায় যোগ হয় রাজনাথ সিংয়ের নাম। শেষে গড়করির বিকল্প হিসাবে সিংহভাগ সমর্থন রাজনাথ সিংয়ের দিকে থাকায় উত্তরপ্রদেশের পদার্থবিদ্যার এই অধ্যাপক রাজনীতিবিদকে পদ্মফুলের দায়িত্বে নিয়ে আসা হয়। বিজেপির টালমাটাল অবস্থায় দল চাইছে না অরুণ জেটলি, সুষমা স্বরাজ, নরেন্দ্র মোদীদের চটাতে। সেই কারণে গড়করি আধিপত্যের অবসান ঘটিয়ে রাজনাথেই ভরসা করছে সংঘও।
নয়াদিল্লি: বিজেপির অভ্যন্তরীন সংকট আরও চরমে৷ দলের মধ্যেই বিরোধিতার মুখে সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিলেন নিতিন গডকড়ী৷ সূত্রের খবর, এই পদের দৌড়ে এগিয়ে বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি রাজনাথ সিংহ৷ কাল সকালে সংসদীয় দলের বৈঠক৷ ওই বৈঠকেই গডকড়ী তাঁর পদত্যাগপত্র পেশ করবেন বলে জানা গেছে। দুর্নীতির অভিযোগে তাঁর পদত্যাগের দাবি দলের অন্দরেই জোরাল হয়েছিল। এই অবস্থায় হতাশ গডকড়ী পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলেন বলে মনে করা হচ্ছে। পূর্তি গ্রুপের দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে গডকড়ীর নাম জড়িয়ে যায়। তাঁকে আয়কর বিভাগও হাজিরা দেওয়ার জন্য নোটিশ দিয়েছে বলে খবর।আজ পূর্তি গ্রুপের অফিসে আয়কর বিভাগ তল্লাশি চালায়। আর এই ঘটনায় নিজের পদ বাঁচানোর লড়াইতে অবশেষে ক্ষান্তি দিতে হল তাঁকে। সূত্রের খবর, নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ না করা পর্যন্ত দলের শীর্ষ পদে থাকতে অনিচ্ছুক তিনি।
গডকড়ীর ইস্তফায় বিজেপি সভাপতি হওয়ার দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে রাজনাথ। এর পাশাপাশি বেঙ্কাইয়া নাইডু, যশবন্ত সিনহার নামও উঠে এসেছে বলে সূত্রের খবর।
রাতেই গডকড়ী এক বিবৃতিতে দলের সভাপতি পদের দৌড় থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা করেন। তাঁর বক্তব্য, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ দলের ক্ষতি করুক তা তিনি কখনোই চাননা। সেজন্যই তিনি দ্বিতীয়বার দলের শীর্ষপদের লড়াই থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন।
এরআগে, মোটামুটি নিশ্চিত ছিল গডকড়ী ফের সভাপতির হাল ধরছেন। কারণ, দলে তাঁকে নিয়ে একাংশের বড় আপত্তি থাকলেও আরএসএস তাঁর পাশেই ছিল। তবে, আজ বিকেলে খানিকটা চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী যশবন্ত সিনহার এক ঘোষণায়। তিনি জানান, আগামীকালের সভাপতি পদে নির্বাচনে তিনি লড়ছেন। এরআগে, যশবন্ত গডকড়ীর ইস্তফার দাবিতে সরব হয়েছিলেন। তাঁর এই আচমকা সিদ্ধান্তে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বে নড়েচড়ে বসে। সুষমা স্বরাজ,অরুন জেটলি ও আরএসএস-এর প্রতিনিধি রামলাল জরুরি বৈঠকে বসেন। সেখানেই রাজনাথের নাম সর্বসম্মত বিকল্প হিসেবে উঠে আসে। রাজনাথও আরএসএস-এর ঘনিষ্ঠ বলে দলীয় সূত্রে খবর এবং সেটাই তাঁকে সামনে একটা বড় ফ্যাক্টর বলে মনে করা হচ্ছে। এমনকি, গডকড়ী নিজেও রাজনাথের নামই প্রস্তাব করেছেন বলে সূত্রের খবর।
http://abpananda.newsbullet.in/national/60-more/32807-2013-01-22-17-13-09
এর আগে ভারতীয় জনতা পার্টির `নম্বর ওয়ান ম্যানের` লড়াইটা হঠাত্ই জমে উঠল। বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় গড়করির জয় যখন কার্যত নিশ্চিত, তখনই ময়দানে নামলেন হাজারিবাদের সাংসদ তথা বিজেপির বর্ষিয়ান নেতা যশবন্ত সিনহা। মঙ্গলবারই যশবন্ত সিনহা প্রতিনিধি বিজেপি সদর দফতর থেকে মনোনয়ন পত্র তোলেন। বুধবার বিজেপির সভাপতি পদের নির্বাচন হওয়ার কথা।
কিন্তু এখন লাখ টাকার প্রশ্ন, যশবন্তের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজেপির রাজনৈতিক সমীকরণ কোথায় দাঁড়াবে? গড়করির শিবির ১০০ শতাংশ নিশ্চিত নিতিনই হবেন প্রধান। শুধু তাই নয়, গড়করির বিরুদ্ধে হাজারও অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও তাঁর নিরঙ্কুশ জয় কামনা করছেন নিতিনপন্থীরা। যদিও সভাপতি নির্বাচন নিয়ে এখনই কোনও মন্তব্য করতে চাননি আদবানি থেকে দলের মুখপাত্র রবি শঙ্কর প্রসাদ কেউই।
সংঘের ঘনিষ্টদের জানা, গড়করি বরাবরই রাষ্ট্রীয় সয়মসেবক সংঘের আস্থা ভাজন থেকেছেন। ভারতীয় জনতা পার্টির পরিচালনায় আরএসএসের অবদান অনেক। এমনটাও এক কথায় স্বীকার করে নেন সকলেই। সুতরাং গড়করির হারে ধাক্কা লাগবে সংঘের স্লাঘাতেও। সেইসঙ্গে বিজেপির ওপর আধিপত্যও প্রভাবিত হবে আরএসএস-এর। বিজেপি-আরএসএস-এর গাঁটছড়া আলগা হোক এমনটা চান না খোদ সংঘ প্রধান মোহন ভাগবৎও।
সুষমা স্বরাজ থেকে অরুণ জেটলি, নরেন্দ্র মোদী থেকে রাজনাথ সিং সকলেই মুখ ফিরিয়েছেন গড়করির থেকে। কিন্তু আরএসএস এখন গড়করিতে গোঁ ধরে বসে। তা সত্ত্বেও বিজেপির একাংশ মনে করছে গড়করিকে দ্বিতীয় বারের জন্য সভাপতির আসনে বসানো ঠিক হবে না। কারণ দুর্নীতির খাড়া ঝুলছে তাঁর ওপর। কেউ কেউ এ নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতেও পিছ পা হননি। এখন দেখার আখেরে গড়করির জয় নিশ্চিত করতে কারা এগিয়ে আসেন। এদিন সন্ধের গতিবিধি দেখে অনেক বিশ্লেষকদের মত, সভাপতি নির্বাচনে ঐক্যমত গঠন করতে না পারায় আগেই মুখ পুড়েছে বিজেপির। এখন দলের ভেতরের উষ্মা ঠেকাতে কোনও রকমে মান বাঁচাতে মরিয়া দল।
দলের উত্তরবঙ্গ সমাবেশে রাজ্যসভায় বিজেপি-র নেতা অরুণ জেটলি সোমবার শিলিগুড়িতে এসেছিলেন৷ স্থানীয় বাঘাযতীন পার্কে ওই জনসভায় তিনি একই সঙ্গে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের কঠোর সমালোচনা করেন৷ অতীতের জোটসঙ্গী তৃণমূলের প্রতিই তাঁর আক্রমণের ঝাঁঝ ছিল তুলনায় বেশি৷ তিনি বলেন, 'ক্ষমতায় আসার পর পাঁচ বছর মেয়াদের এক-তৃতীয়াংশ সময় পার হয়ে গেলেও রাজ্যের তৃণমূল সরকার মানুষের জন্য কোনও কাজই করেনি৷ এমন চললে মানুষই এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেবে৷'
মমতার সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, '৩৪ বছরের বাম সরকারকে সরিয়ে মানুষ অনেক আশা নিয়ে নতুন সরকারকে ক্ষমতায় এনেছিল৷ কিন্তু এই সরকার মানুষের জন্য কোনও কাজই করছে না৷' জেটলি পুর্বতন বামফ্রন্ট সরকারকে তুলোধনা করেন৷ তাঁর অভিযোগ, বাম আমলের ২৪ বছরে এ রাজ্যের কোনও উন্নয়নই হয়নি৷ বিশেষ করে শিল্পে কোনও উন্নতি হয়নি৷ এত বছর কোনও দল ক্ষমতায় থাকলে রাজ্যের চেহারা পাল্টে যাওয়ার কথা৷ কিন্ত্ত তৃণমূল সরকারও একই পথে হাঁটছে৷ এই সরকারের বেঙ্গল লিডস করে কোনও লাভ নেই৷ কেননা, সরকারের জমি কিংবা শিল্পনীতি, কোনওটাই স্বচ্ছ নয়৷ এমন জমি নীতি থাকলে রাজ্যে কোনও শিল্প আসবে না৷
বিজেপি নেতা জেটলি বলেন, 'রাজ্য চালাতে যে সভ্যতা ও সংস্কৃতি থাকা দরকার, তার কোনওটিই এই সরকারের নেই৷' এই সমাবেশে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিনহা অভিযোগ করেন, রাজ্য সরকার ধর্ষিতাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ক্ষেত্রেও রাজনীতি করছে৷ কাউকে ৩০ হাজার, কাউকে ২০ হাজার টাকা দেওয়া হচ্ছে৷ তিনি বলেন, 'খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি কে, কতটা ধর্ষিতা হয়েছেন, তা বিচার করেই নাকি ক্ষতিপূরণের অঙ্ক ঠিক করা হচ্ছে৷'
গুজরাটের সঙ্গে এ রাজ্যের তুলনা করেন তিনি বলেন, এ রাজ্যে শিল্প আসছে না৷ কিন্তু গুজরাটে শিল্পপতিরা যাচ্ছেন৷ এতেই প্রমাণিত হয় বিজেপি-র নেতৃত্বে সুশাসন চলছে ওই রাজ্যে৷ কংগ্রেসের সমালোচনায় তাঁর দাবি, গত পাঁচ বছর দেশে 'কালা অধ্যায়' চলছে৷ ইউপিএ-২ সরকারের আমলে দেশ দুর্নীতি, পরিবারতন্ত্র, মূল্যবৃদ্ধি ছাড়া কিছুই পায়নি৷ তিনি বলেন, 'গত পাঁচ বছরে দেশে টু-জি, কয়লা-সহ একটির পর একটি দুর্নীতি হয়েছে৷ চিন্তন বৈঠক করে কংগ্রেস পরিবারতন্ত্রকেই উত্সাহ দিচ্ছে৷ কংগ্রেসের হাতে এইদেশের ভবিষ্যত্ অন্ধকার৷'
মুখ্যমন্ত্রী হয়েও ধ্বংসের রাজনীতি করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, ঠিক যেমনটা করতেন বিরোধীনেত্রী থাকাকালীন। কাকদ্বীপ সাবডিভিশনের ঢোলার মাঠে বামফ্রন্টের সমাবেশে এভাবেই মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করলেন বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলাপরিষদকে রাজ্যের সবথেকে দুর্নীতিগ্রস্ত জেলাপরিষদ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সোমবার ক্যানিংয়ে মুখ্যমন্ত্রীর জনসভার দিনেই কাকদ্বীপ সাবডিভিশনের ঢোলা থানার মাঠে পাল্টা সভা করল বামেরা। আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে বামকর্মী সমর্থকদের মনোবল বাড়াতে প্রথম থেকেই আক্রমণাত্মক ছিলেন বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। তাঁর অভিযোগ, সরকারে এসেও ধ্বংসের রাজনীতিই করছেন মুখ্যমন্ত্রী।
দুহাজার আটের পঞ্চায়েত নির্বাচনে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা পরিষদ হাতছাড়া হয় বামেদের। দক্ষিণ চব্বিশ পরগনাকে সবথেকে দুর্নীতিগ্রস্ত জেলা পরিষদ বলেও কটাক্ষ করেন বিরোধী দলনেতা।
পার্কস্ট্রিট থেকে শুরু করে কাটোয়া। মহিলাদের ওপর একের পর এক নির্যাতনের ঘটনা সামনে এলেও প্রাথমিকভাবে কিছু হয়নি বা সাজানো ঘটনা বলেই মন্তব্য করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কাকদ্বীপের জনসভা থেকে সেবিষয়েও মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা শোনা গেছে সূর্যকান্ত মিশ্রের গলায়।
ধনেখালিতে পুলিস লকআপে তৃণমূলকর্মী কাজি নাসিরুদ্দিনের মৃত্যুর ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী নীরব কেন সে প্রশ্নও তোলেন সূর্যবাবু। এদিনের সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কান্তি গাঙ্গুলি, সুজন চক্রবর্তীসহ জেলার অন্যান্য বাম নেতারাও।
পার্ক স্ট্রিট কান্ডে চার্জগঠনের প্রক্রিয়া আরও পিছিয়ে গেল। আগামী ৩১ জানুয়ারি পরবর্তী শুনানি হবে। আইনজ্ঞদের মতে, চার্জ গঠন হলে তবেই পরবর্তী পর্যায় এই মামলাটির বিচার শুরু হবে৷ ঘটনার দিনের সিসিটিভির ফুটেজ পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় সেন্ট্রাল ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে। সিএফএসএলের পক্ষে জানানো হয়েছে ফুটেজে মহিলা এবং অভিযুক্তদের শনাক্তকরণের মত কোনও ছবি নেই । হার্ড ডিস্ক থেকে কি করে সিসিটিভি-র ফুটেজ উধাও হল, তা নিয়ে বিচারবিভাগীয় তদন্তের আবেদন জানিয়েছেন নিগৃহীতার আইনজীবী।
একইসঙ্গে আজ সরকারি আইনজীবী আদালতের কাছে একটি আবেদন জানিয়েছেন। হার্ডডিস্ক গুলি ফের পরীক্ষা এবং প্রত্যায়িত নকল করার আবেদন জানিয়েছেন তিনি। যদিও অভিযুক্তদের আইনজীবীদের বক্তব্য, দ্রুত বিচারপ্রক্রিয়ার জন্য এখানেই কোনও বিশেষজ্ঞকে দিয়ে পরীক্ষা করিয়ে নকল তৈরি করা হোক। প্রায় এক বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরেও পার্ক স্টিট কান্ডে চার্জগঠনের প্রক্রিয়া পিছিয়ে যাওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন অনেকেই।
প্রসঙ্গত, গত ৫ ফেব্রুয়ারি পার্ক স্ট্রিট থেকে গাড়িতে তুলে এক মহিলাকে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। সেই মহিলা ৯ তারিখ পার্ক স্ট্রিট থানায় অভিযোগ দায়ের করে। ১৫ ফেব্রুয়ারি বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। নড়েচড়ে বসে পুলিশ-প্রশাসন। তদন্ত শুরু করে কলকাতা পুলিশ।
গোয়েন্দা প্রধান দময়ন্তী সেন দাবি করেন, অভিযোগকারিণীর বয়ানে অসঙ্গতি পাওয়া গেলেও একটা ব্যাপারে তাঁরা নিশ্চিত যে, সেদিন রাতে একটা অপরাধের ঘটনা ঘটেছিল। এবং অভিযোগকারিণী আক্রান্ত হয়েছিলেন।
লালবাজারে গোয়েন্দাপ্রধান এই দাবি করলেও, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মহাকরণে বলেন, পুরো ঘটনাটাই সাজানো৷ সরকারকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা। তদন্তে সব বেরিয়ে আসবে। পরে লালবাজারে পুলিশ কমিশনার আর কে পচনন্দাও মমতার সুর সুর মিলিয়ে বলেন, এই ঘটনা নিয়ে পুলিশ-রাজ্য সরকারকে সমালোচনা করা অনুচিত। যদিও নিজের অবস্থানে অনড় ছিলেন অভিযোগকারিণী।
| ||||
মহিলাদের উপরে ঘরে-বাইরে হিংসার নজির বাড়ছে। কিন্তু অভিযোগ, তাতেও বিশেষ ভ্রূক্ষেপ নেই এ রাজ্যের সরকারের। এ কথা মেনে নিয়েই রাজ্যের প্রধানত চারটি জেলায় মহিলা সুরক্ষার প্রশ্নে নতুন পদক্ষেপ করতে চলেছে রাজ্য মহিলা কমিশন। কমিশন সূত্রের খবর, রাজ্যের মোট পাঁচটি জেলায় নিরাপত্তা আধিকারিকের পদ ফাঁকা। তাই এই পাঁচটি জেলার চারটিতে স্বেচ্ছাসেবী কর্মীদের নিয়োগ করতে চায় তারা। মহিলাদের উপর হিংসা প্রতিরোধ করতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া বলে জানাল কমিশন। কমিশন সূত্রের খবর, এই প্রকল্পে প্রধানত চারটি জেলার (নদিয়া, কোচবিহার, দক্ষিণ দিনাজপুর ও মালদহ) প্রতিটি থানায় এক জন করে স্বেচ্ছাসেবী কর্মী নিয়োগ করবে তারা। কমিশনের এক আধিকারিক জানান, কোনও মহিলা থানায় অভিযোগ জানাতে এলে তাঁকে সাহায্য করবেন ওই কর্মী। কী ভাবে লিখিত অভিযোগ জানাতে হবে, কোন ধারায় এফআইআর করতে হবেতা জানাবেন তিনিই। অভিযোগ জটিল বা গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে মহিলা কমিশনের দফতরে পাঠিয়ে দেবেন ওই কর্মী। 'সংযোগ' নামের অপর একটি দল কাজ করবে অভিযোগগুলি নেওয়ার জন্য। কমিশন গুরুত্ব বুঝে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে। নদিয়ায় এই পরীক্ষামূলক প্রকল্পের কাজ প্রথম শুরু করা হবে বলে জানালেন মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন সুনন্দা মুখোপাধ্যায়। পারিবারিক হিংসা আইন অনুযায়ী মহিলাদের অভিযোগ নিতে সব জেলাশাসকের অধীনে এক জন করে নিরাপত্তা আধিকারিক থাকা বাধ্যতামূলক। কিন্তু নদিয়া, কোচবিহার, দক্ষিণ দিনাজপুর, মুর্শিদাবাদ ও দার্জিলিঙে নিরাপত্তা আধিকারিকের পদ ফাঁকা। মালদহে নিরাপত্তা আধিকারিক ইস্তফা দিয়েছেন। ২০০৫-এর 'প্রোটেকশন অফ ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স অ্যাক্ট' অনুযায়ী, নিরাপত্তা আধিকারিকদের কাজ ঘরোয়া হিংসার শিকার মহিলাদের আনা অভিযোগ জেলাশাসকের দফতরে জমা করা। সরকারি সূত্রের খবর, পারিবারিক জীবনে কোনও মহিলা নির্যাতিত হলে তিনি প্রথমে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে যান। থানা অভিযোগগুলি নিজেরা না দেখে অনেক ক্ষেত্রে অভিযোগকারিণীকে নিরাপত্তা আধিকারিকের কাছে পাঠায়। ওই আধিকারিকের কাজ মহিলাকে আইনি পরামর্শ-সহ নানা ভাবে সাহায্য করা। থানা যাতে অভিযোগটি নথিভুক্ত করে ব্যবস্থা নেয়, সেই ব্যাপারে ওই আধিকারিকের বিশেষ দায়িত্ব নেওয়ার কথা। নিরাপত্তা আধিকারিকরা জেলার বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য অনুষ্ঠান করেন। এই সময়ও তাঁরা ঘরোয়া হিংসার শিকার হয়েছেন এমন মহিলাদের সংস্পর্শে আসেন। তখনও অভিযোগ জমা নেন তাঁরা। কিন্তু পাঁচ জেলায় সেই দায়িত্ব পালনের লোক নেই। তিন জেলায় ওই পদ এক বছরের বেশি ধরে খালি। সরকারি সূত্রের খবর, কলকাতা, বর্ধমান, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং মুর্শিদাবাদ জেলা আয়তনে অন্যদের তুলনায় বড়। তাই এই জেলাগুলিতে থানার সংখ্যাও বেশি। কোনও জেলায় থানার সংখ্যা ২৫-এর বেশি হলে দু'জন করে নিরাপত্তা আধিকারিক থাকার কথা। সেখানে বর্ধমানে মাত্র এক জন আছেন। মুর্শিদাবাদে কেউ নেই। মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন সুনন্দা মুখোপাধ্যায়ের মন্তব্য, নিরাপত্তা আধিকারিক ও তার সহযোগী কর্মী পদে লোক না থাকায় সমস্যায় বেশি পড়ছেন গরিব ঘরের মহিলারা। অবস্থাপন্ন বাড়িতে মেয়ে শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে নির্যাতিত হলে আইনি পথে ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু গরিব বাড়ির মহিলাদের সরকারি ব্যবস্থার উপর নির্ভর করতে হয়। সে ক্ষেত্রে নিরাপত্তা পদাধিকারিক ছাড়া আদালতে সাক্ষ্য প্রমাণ দেওয়ার কেউ থাকে না। ফলে তাঁদের কোনও সুরাহা হয় না। মামলাগুলো আদালতে বছরের পর বছর ঝুলে থাকে। পাঁচটি জেলায় নিরাপত্তা আধিকারিকের পদটি খালি কেন? রাজ্যের নারী ও সমাজকল্যাণ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্রের ব্যাখ্যা, "নিরাপত্তা আধিকারিক নিয়োগ করা হয় চুক্তির ভিত্তিতে। তিনটি জেলায় চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় পদগুলি ফাঁকা পড়ে।" তাঁর সাফাই, "নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পরে অনেক জেলায় নিরাপত্তা আধিকারিক নিয়োগ করা হয়েছে। বাম আমলে তো সমাজকল্যাণ দফতরটির অস্তিত্ব ছিল বলেই মনে হয় না।" অথচ, পারিবারিক ক্ষেত্রে মহিলা-নির্যাতনের সংখ্যা অনেকটাই বেড়েছে বলে দাবি রাজ্য মহিলা কমিশনের। তাদের দাবি, ২০১১ সালে কমিশনের কাছে ১০৭টি পারিবারিক হিংসার অভিযোগ জমা পড়ে। ২০১২ সালে সংখ্যাটা তিন গুণ বেড়ে ৩৩১। এই তথ্য গোটা রাজ্যের নয়। কমিশনের বক্তব্য, কলকাতা ও আশপাশের জেলা থেকেই মূলত অভিযোগগুলি এসেছে। নিরাপত্তা আধিকারিকদের তরফেও অভিযোগ রয়েছে। তাঁদের একাংশের অভিমত, সহযোগী কর্মী না থাকায় একা পুরো কাজটা করা সম্ভব হয় না। সরকারি কাঠামোর এই সব সমস্যা এড়াতেই এই প্রকল্পের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। কমিশনের চেয়ারপার্সন বলেন, "নিরাপত্তা আধিকারিক যে জেলায় নেই সেখানে এই স্বেচ্ছাসেবীরা কাজ করবেন। এদের অনেকেই সমাজকর্মী। তাই নিয়মিত বেতন দিতে হবে না। তাছাড়াও অনেকে মহিলাই নিরাপত্তা অধিকারিকদের অফিস চেনেন না। সে জন্যই প্রতি থানায় লোক নিয়োগ করছি আমরা।" http://www.anandabazar.com/22raj5.html |
ঋণের দায়ে কৃষকের আত্মহত্যা কিংবা বেতন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পরিবহণকর্মীর আত্মহত্যার মতো ঘটনা এরাজ্যে নতুন নয়। এবার সেই তালিকায় যোগ হল বৃত্তিমূলক শাখার এক শিক্ষকের আত্মহত্যা। মাসের পর মাস বেতন না পেয়ে বাঁকুড়ার সিমলাপালের বাসিন্দা ওই শিক্ষক চরম আর্থিক সঙ্কটে পড়েছিলেন। এর জেরে মানসিক অবসাদে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি মৃতের পরিবারের।
সিমলাপাল থানার তিলাবনি গ্রামের বাসিন্দা তপন কুমার সত্পতির শিক্ষকতা জীবন দীর্ঘ সাত বছরের। স্থানীয় গড়রাইপুর বয়েজ হাইস্কুলে বৃত্তিমূলক শাখায় কম্পিউটার শিক্ষক ছিলেন তিনি। মাসিক বেতন ছিল ৭,৮৫০ টাকা। যদিও মাসের পর মাস এই প্রাপ্য টাকার কানাকড়িও পেতেন না বলে অভিযোগ। ২০১২ জুন মাসে শেষবার তপনবাবু বেতন পেয়েছিলেন বলে জানিয়েছে তাঁর পরিবার। চরম আর্থিক সঙ্কটে ধুঁকছিল গোটা পরিবার। তাঁদের অভিযোগ, অভাবের তাড়নাই তপনবাবুকে আত্মহত্যার পথে ঠেলে দিয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কাউন্সিল বৃত্তিমুলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ- এর অধীনে বাঁকুড়া জেলায় প্রায় ২০০টি হাইস্কুলে বৃত্তিমূলক শাখায় শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে। প্রতিমাসে তাঁদের বেতন দেওয়া সরকারি এই বিভাগেরই দায়িত্ব। অথচ কখনই নির্দিষ্ট সময়ে এই শিক্ষকদের বেতন দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ। বিষয়টি বারবার প্রশাসনকে জানানো হলেও কোনও ফল হচ্ছে না বলে অভিযোগ ক্ষুব্ধ শিক্ষকদের। এনিয়ে আগামী ২৪ জানুয়ারি কলেজ স্কোয়্যারে বিক্ষোভ-সমাবেশেরও ডাক দিয়েছেন তাঁরা। শীঘ্রই এই বেতন-সমস্যার সুরাহা না হলে আরও অনেক শিক্ষককেই তপনবাবুর পথ বেছে নিতে হবে বলে তাঁদের আশঙ্কা।
কাশ্মীর ইস্যুতে ফের পাকিস্তানের উদ্যোগ ব্যর্থ করল ভারত। নিয়ন্ত্রণরেখার নজরদারির দায়িত্ব রাষ্ট্রসংঘের সামরিক পর্যবেক্ষক গোষ্ঠীর হাতে ছেড়ে দেওয়ার দাবি তোলে পাকিস্তান। রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে বিষয়টি নিয়ে তুমুল বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন ভারত ও পাকিস্তানের প্রতিনিধিরা। বিদেশমন্ত্রী সলমন খুরশিদ জানিয়ে দিলেন, এই ইস্যুতে আলোচনায় দুই দেশের মধ্যে তৃতীয়পক্ষের কোনও জায়গা নেই।
নিয়ন্ত্রণরেখায় দুই ভারতীয় জওয়ানের মৃত্যুতে এমনিতেই উত্তেজনার পরিবেশ তৈরি হয়েছে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে। এবারে সেই ইস্যুতে রাষ্ট্রসংঘের হস্তক্ষেপের মরিয়া চেষ্টা চালাল পাকিস্তান। যদিও মঙ্গলবার পাকিস্তানের এই দাবিতে ফের জল ঢেলে দিল ভারত।
বিদেশমন্ত্রীর এই মন্তব্যের আগে নিয়ন্ত্রণরেখার নজরদারির দায়িত্ব নিয়ে তুমুল বিতর্ক হয় রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে। ওই দায়িত্ব ভারত ও পাকিস্তানে থাকা রাষ্ট্রসংঘের সামরিক পর্যবেক্ষক গোষ্ঠীর হাতে দেওয়ার সওয়াল করেন পাকিস্তানের বিদেশসচিব জলিল আব্বাস জিলানি। যদিও পত্রপাঠ সেই প্রস্তাব উড়িয়ে দেন রাষ্ট্রসংঘে ভারতের প্রতিনিধি হরদীপ সিং পুরী। তিনি সাফ জানান, উনিশশো একাত্তরের সিমলা চুক্তি অনুযায়ী ভারত ও পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক সমস্যায় রাষ্ট্রসংঘের সামরিক পর্যবেক্ষক গোষ্ঠীর কোনও জায়গা নেই। একমাত্র শান্তিপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যা সমাধান সম্ভব বলে জানায় নয়াদিল্লি।
প্রাপ্তি শূন্য, গচ্চা ২০ কোটি
গত বছর কলকাতার মিলনমেলা প্রাঙ্গণে বেঙ্গল লিডস-এর প্রথম আসরে রাজ্যে চার হাজার কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগের ঘোষণা হয়েছিল৷ তার মধ্যে অবশ্য রানিগঞ্জে গ্রেট ইস্টার্ন এনার্জির আড়াই হাজার কোটি টাকার সিবিএম প্রকল্প ছাড়া, অন্য কোনওটার কাজই শুরু হয়নি৷ এ বছরের চিত্র আরও করুণ৷ রাজ্যের শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অবশ্য দাবি, 'হলদিয়ায় বেঙ্গল লিডস-এর ফাঁকে ম্যাটিক্স কর্তারা আমার সঙ্গে দেখা করে পানাগড়ে তাঁদের সার কারখানার সম্প্রসারণে পাঁচ হাজার কোটি টাকা নতুন করে বিনিয়োগের কথা জানিয়েছেন৷ আরও কয়েকটি বিনিয়োগের প্রস্তাবও আমরা পেয়েছি৷' তবে সেগুলির কথা বিশদে জানাননি পার্থবাবু৷
রাজ্য শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তর এবং পশ্চিমবঙ্গ শিল্পোন্নয়ন নিগমের কর্তারা কিন্তু বলছেন, ম্যাটিক্সের পাঁচ হাজার কোটি টাকার সম্প্রসারণের পরিকল্পনা নতুন কিছু নয়৷ এর আগেও ওই সংস্থার তরফে বেশ কয়েকবার পানাগড়ে সম্প্রসারণের কথা বলা হয়েছিল৷ নিগমের এক আধিকারিকের কথায়, 'এ বার তফাত্ একটাই, ওরা মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে এই পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে৷ অন্য কোনও বড় সংস্থার তরফে বিনিয়োগের ঘোষণা কিন্তু এ বারের বেঙ্গল লিডস-এ হয়নি৷ প্রসূন মুখোপাধ্যায় রঘুনাথপুরে আট হাজার কোটি টাকার যে বিদ্যুত্ প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছেন, তা-ও পুরনো প্রকল্প৷'
অথচ, বেঙ্গল লিডস-এর সাফল্য নিয়ে রাজ্য সরকার খুব আশাবাদী ছিল৷ তাই আয়োজনেও কোনও খামতি রাখা হয়নি৷ বাইরে থেকে কোনও বড় শিল্পকর্তা না এলেও, যাঁরা এসেছিলেন তাঁদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, সে দিকে সজাগ দৃষ্টি রাখা হয়েছিল৷ আলোচনাসভায় যোগ দিতে রাজ্যের বাইরে থেকে যাঁরা এসেছিলেন, তাঁদের বিমান ভাড়া থেকে শুরু করে, থাকা, খাওয়ার সব ব্যবস্থাই করা হয়েছিল সরকারের তরফে৷ এর পাশাপাশি হলদিয়া হেলিপ্যাড ময়দানে বেঙ্গল লিডস-এর জন্য একাধিক বাতানুকূল তাঁবু তৈরি, হাজার হাজার হোর্ডিং-ব্যানার এবং অন্যান্য খাতে খরচের পরিমাণও যথেষ্ট৷ নিগমের এক কর্তা জানান, সমস্ত বিল এখনও আসেনি৷ তবে কম করে ২০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে৷ এত খরচের পরে প্রাপ্তি অবশ্য শূন্যই৷
রাস্তাঘাট উন্নয়নের টাকায় ধান-চালের ঋণ নিচ্ছে রাজ্য
আবার ঋণজালে রাজ্য! ধান-চাল কিনতে চলতি বছরে ৮০০ কোটি টাকা ঋণ নিতে বাধ্য হচ্ছে রাজ্যের খাদ্য দপ্তর৷ পরিস্থিতি এমনই যে, যারা সড়ক-সেতু-জলের জন্য ঋণ দেয়, সেই পশ্চিমবঙ্গ পরিকাঠামো উন্নয়ন বিত্ত নিগম (ডব্লুবিআইডিএফসি)-র কাছ থেকে ৫০০ কোটি টাকা ঋণ নিতে হচ্ছে রাজ্যকে৷ বাকি ৩০০ কোটি রাজ্য ঋণ নেবে রাজ্য সমবায় ব্যাঙ্ক থেকে৷ তবে রাজ্যের সমবায় সংস্থাগুলির হাতে থাকা আরও ২০০ কোটি টাকা মিলিয়ে মোট ১ হাজার কোটি টাকা নিয়ে এ বছর ধান-চাল কিনতে নেমেছে রাজ্য৷
পশ্চিমবঙ্গ পরিকাঠামো উন্নয়ন ও বিত্ত নিগমের ঋণ সাধারণত দেওয়া হয় পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য৷ কিন্তু রাজ্যের আর্থিক অবস্থা এতটাই বেহাল যে সেই অর্থ ঋণ নিয়েই নামতে হচ্ছে ধান-চাল কিনতে৷ তা না হলে এ কাজে ইসিএসসি-র ক্রয়ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য যে অর্থের প্রয়োজন, তার সংস্থান করা যাচ্ছে না৷ সে ক্ষেত্রে গত বছরের মতো এ বারও অর্থের অভাবে ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা ছিল বলেই মনে করছে রাজ্যের খাদ্য দপ্তর৷ ইতিমধ্যেই ধান-চাল কেনার জন্য ইসিএসসি-কে দেওয়া হয়েছে ৭৫ কোটি টাকা৷ রাজ্যের খাদ্য ও সরবরাহ মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানান, রাজ্য মন্ত্রীসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত নিয়েই ওই অর্থ দেওয়া হয়েছে ইসিএসসি-কে৷
সরকারে এসে গত বছরে ধান, চাল কিনতে গিয়ে বিপাকে পড়ে রাজ্য৷ কারণ, আর্থিক সঙ্কট৷ নাফেড, এনসিসিএফ কেন্দ্রীয় সংস্থা হওয়ায় তাদের জন্য অর্থের সংস্থান করতে হয় না রাজ্যকে৷ কিন্তু কনফেড, বেনফেডের মতো রাজ্যের সমবায়গুলি এ কাজে যুক্ত থাকলেও তাদের হাতে ছিল না পর্যান্ত অর্থ৷ অতীতে বাম আমলে তাদের এ কাজের জন্য অগ্রিম দিত রাজ্য৷ ধান-চাল বিক্রির পরে তা ফেরত নেওয়া হত৷ কিন্তু গত বছরে তাদের প্রথমে এ কাজের জন্য কোনও অগ্রিম অর্থ দিতে চায়নি রাজ্য৷ রাজ্যের খাদ্য দপ্তরের হাতেও ছিল না প্রয়োজনীয় অর্থ৷ ফলে অর্থের সংস্থান না থাকায় ব্যাহত হচ্ছিল ধান-চাল কেনার কাজ৷ বাধ্য হয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে এই খাতে ১ হাজার কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার আবেদন জানিয়েছিলেন রাজ্যের খাদ্য ও সরবরাহ মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক৷ কিন্তু কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কে ভি টমাস চিঠি লিখেই রাজ্যের মন্ত্রীকে জানান, এমন কোনও খাতে অর্থ বরাদ্দের সুযোগ কেন্দ্রীয় সরকারের সামনে নেই৷
এ বছর ধান-চাল কেনার জন্য তাই ঋণের পথেই এগোচ্ছে রাজ্যের খাদ্য দপ্তর৷ এ বছর যে ২২ লক্ষ টন চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্দিষ্ট হয়েছে, তার জন্য প্রয়োজন প্রায় ৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা৷ এ কাজের জন্য ১ হাজার কোটি টাকার ব্যবস্থা করেই এ বছর এগোচ্ছে রাজ্যের খাদ্য দপ্তর৷ তার মধ্যে ৮০০ কোটি টাকা ঋণ এবং ২০০ কোটি টাকা কর্পোরেশনগুলির নিজের৷ জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানান, ডব্লুবিআইডিএফসি-র কাছ থেকে যে ৮০০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হচ্ছে তার জন্য সুদ গুনতে হবে বার্ষিক ১১ শতাংশ হারে৷ আর সমবায় ব্যঙ্কের কাছ থেকে সুদের হার তুলনামূলক কম৷ মন্ত্রীর মতে, এই ১ হাজার কোটি টাকা বার তিনেক রোল করানো গেলেই যে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা লাগবে, তার সংস্থান হয়ে যাবে৷ এ বছর তাই অন্তত ধান-চাল কেনার ক্ষেত্রে অর্থ সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে না বলেই মনে করছে দপ্তর৷
আন্তর্জাতিক ক্যালেন্ডারের নির্ধারিত সূচির চারদিন আগেই শুরু হচ্ছে কলকাতা বইমেলা৷ প্রশ্ন উঠছে, বইমেলার আন্তর্জাতিক তকমায় কোনও প্রভাব পড়বে কিনা৷ তবে মেলার আয়োজকের দাবি, কোনও প্রভাব পড়বে না বইমেলায়৷
৩০ জানুয়ারি থেকে ১০ ফেব্রুয়ারি৷ প্রতি বছর এই সময়েই হয়ে থাকে কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলা৷ কিন্তু, এবার আন্তর্জাতিক বইমেলা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ৩০ জানুয়ারি নয়, বইমেলা শুরু হচ্ছে ২৬ জানুয়ারি৷ মুখ্যমন্ত্রীই নাকি চেয়েছিলেন, মেলা এগিয়ে নিয়ে আসা হোক৷ তাঁর ইচ্ছেতেই এই সময়সূচি বদল৷ একথা স্বীকারও করে নিয়েছে কলকাতা বইমেলার আয়োজক বুক সেলার্স অ্যান্ড পাবলিশার্স গিল্ড৷
কিন্তু, গিল্ডের ওয়েবসাইট বলছে অন্য কথা৷ চিরাচরিত নিয়ম মেনেই মেলা হচ্ছে ৩০ জানুয়ারি থেকে৷ বাস্তব আর ওয়েবসাইটের তথ্যের মধ্যে এই বিস্তর ফারাক কেন? প্রশ্ন উঠছেই৷
বিভিন্ন মহলের মতে, বইমেলার আন্তর্জাতিক ক্যালেন্ডার মেনে কখনও মেলার তারিখ বদল করা যায় না৷ তাতে প্রভাব পড়তে পারে মেলার আন্তর্জাতিক তকমায়৷ তাই কি দু'ধরনের তথ্য৷ প্রশ্ন এড়িয়ে গিল্ডের দাবি, বইমেলার উদ্বোধনের তারিখ এগিয়ে প্রভাব পড়বে না আন্তর্জাতিক তকমায়৷
মেলা শুরু হলেও অনেক সময়ই ছোট ও মাঝারি স্টলের কাজ শেষ হয় না৷ তাই মেলার উদ্বোধনের তারিখ এগিয়ে আসায় বেশি সময় কলকাতার মানুষ বইমেলায় ঘুরতে পারবেন- এমন যুক্তিও খাড়া করেছেন গিল্ড কর্তারা৷
তবে প্রশ্ন থাকছেই৷ শুধু দেশে নয়, বিশ্বে আন্তর্জাতিক বইমেলা হিসেবে কলকাতার নাম রয়েছে৷ সেক্ষেত্রে মেলার উদ্বোধনের তারিখ বদলে সেই খ্যাতিতে সমস্যা তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে বিভিন্ন মহল৷
http://abpananda.newsbullet.in/kolkata/59-more/32755-2013-01-21-15-53-16
মনমোহনকে মমতার আক্রমণে ক্ষিপ্ত কংগ্রেস | ||
নিজস্ব প্রতিবেদন | ||
সখ্য ঘুচেছে চার মাস আগেই। তার পরে প্রধানমন্ত্রীকে নকল করেও দেখিয়েছেন সর্বভারতীয় টিভি চ্যানেলে। যে ঘটনার পরে কংগ্রেস নেতারা ছিছিক্কার করেছেন। প্রশ্ন তুলেছেন, প্রধানমন্ত্রীকে এ ভাবে ভেঙিয়ে কি আদৌ রুচির পরিচয় দিলেন মুখ্যমন্ত্রী? এ বার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মনমোহন-বিরোধী আক্রমণ অন্য মাত্রা নিল। রাজ্যের অনটনের কথা বলতে গিয়ে, বারবার কেন্দ্রের কাছে অর্থ সাহায্য চাওয়ার কথা বলতে গিয়ে প্রকাশ্য জনসভায় মঞ্চে দাঁড়িয়ে তিনি বললেন, "আমি কি প্রধানমন্ত্রীকে মারব গিয়ে? মারলেই তো লোকে গুন্ডা বলবে। এমনিতেই ওরা (কেন্দ্র) আমাকে গুন্ডা বলে।" | ||
কাছের মানুষ। সোমবার ক্যানিংয়ের সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে শামিমা শেখ। ছবি: রাজীব বসু | ||
ঘটনাচক্রে এ মাসের ৩ তারিখই দু'জন মুখোমুখি হয়েছিলেন। বিজ্ঞান কংগ্রেসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে, এক মঞ্চে। সেখানে প্রধানমন্ত্রীকে নমস্কার জানান মমতা। কিছু কথাও হয় দু'জনের। হাসি মুখে। এবং সেখানেও বক্তৃতায় মমতা বলেছিলেন, "বাংলাকে আরও দিন।" কিন্তু মঞ্চে হাসি মুখে কথা বললেও তার আগে-পরে বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যাননি মুখ্যমন্ত্রী। না প্রধানমন্ত্রী কলকাতায় আসার সময়, না তিনি ফিরে যাওয়ার সময়। ফেরার সময় তো রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়কে বিদায় জানিয়েছেন, কিন্তু অপেক্ষা করেননি মনমোহনের জন্য। রাজ্য সরকারের তরফে অবশ্য বলা হয়েছিল, ইডেনে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে অতিথি ছিলেন মমতা। নির্দিষ্ট সময়ে তাঁর সেখানে পৌঁছে ক্রিকেটারদের সঙ্গে দেখা করার কথা ছিল। তাই প্রণববাবুকে তুলে দিয়েই বিমানবন্দর ছেড়েছিলেন। যদিও রাজ্য কংগ্রেস নেতাদের কেউ কেউ এই ঘটনাতেও প্রধানমন্ত্রীর প্রতি মমতার রাজনৈতিক বিদ্বেষই খুঁজে পেয়েছিলেন। এ দিন দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ের মমতা যা বলেছেন, তাতে অবশ্য শুধু রাজ্য কংগ্রেস নেতারাই নন, অত্যন্ত চটেছেন কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বও। দলের একাধিক নেতা বলেছেন, এ দিনের মন্তব্যে লক্ষ্মণরেখা পেরিয়ে গিয়েছেন মমতা। মনমোহন সিংহ বা প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় অবশ্য এই নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেননি। সচিবালয় সূত্রে বলা হচ্ছে, মমতার এই আক্রমণ মূলত রাজনৈতিক। সে জন্য প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে একে অবজ্ঞা করাটাই সঠিক কাজ। তবে প্রধানমন্ত্রী বা তাঁর সচিবালয় 'উত্তরে থাকো মৌন' কৌশল নিলেও কংগ্রেস দল অবশ্য প্রধানমন্ত্রীর সমর্থনে এগিয়ে এসে মমতার বক্তব্যের কড়া নিন্দা করেছে। প্রদেশ কংগ্রেসের নেতাদের পাশাপাশি জাতীয় স্তরে এআইসিসি-র মুখপাত্র রশিদ আলভি বলেছেন, "এই মন্তব্য দুর্ভাগ্যজনক।" তাঁর যুক্তি, প্রধানমন্ত্রী শুধু কংগ্রেসের প্রধানমন্ত্রী নন। তিনি গোটা দেশের প্রধানমন্ত্রী। তাঁর সম্মান গোটা দেশের সম্মান। কাজেই এই ধরনের মন্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি দেশেরও সম্মানহানি হয়েছে। আরও কড়া সুরে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী দীপা দাশমুন্সি দাবি তুলেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এখনই প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। দুঃখপ্রকাশ করতে হবে। তাঁর বক্তব্য, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর মুখে প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে এই বক্তব্য মানায় না। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী এবং তাঁর দলের নেতাদের মুখে ইদানীং যে ভাষা শোনা যাচ্ছে, তা রাজ্যের রাজনৈতিক সংস্কৃতির সঙ্গে বেমানান। | ||
তখনও বক্তৃতা দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। সোমবার, ক্যানিং স্পোর্টস কমপ্লেক্সের মাঠে।—নিজস্ব চিত্র | ||
রাজনীতির কারবারিরা বলছেন, এই আক্রমণের পিছনে রয়েছে রাজ্যের আর্থিক অনটন। ভাঁড়ে টাকা নেই, এ দিকে উৎসব-মেলায় দেদার খরচ চলছে বলে অভিযোগ কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলির। তাঁরা আরও বলছেন, রাজ্যে শিল্প বা উন্নয়নের লক্ষণ নেই। টাকা কোথা থেকে আসবে, তার ঠিক নেই। সে সব ঢাকতে এখন মুখ্যমন্ত্রী সভার পর সভায় কেন্দ্রকে দুষে চলেছেন। বস্তুত, এ দিনের অনুষ্ঠানেও রাজস্ব আদায় নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, "আমি রাজস্ব পাই ২১ হাজার কোটি টাকা। ওরা (কেন্দ্র) আমাদের থেকে ২৬ হাজার কোটি টাকা নিয়ে নিচ্ছে। আমরা কী করে চালাব? কিন্তু আমাদেরও বুদ্ধি আছে। আমরা এই আর্থিক বছরে ১০ হাজার কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় করেছি।" এ প্রসঙ্গেই তাঁর সংযোজন, "একটা নিয়ম আছে, কেন্দ্রীয় সরকার যত রাজস্ব আদায় করবে, তার ৩৫ শতাংশ সব রাজ্যের মধ্যে ভাগ করে দেবে। আমরা কত পাই জানেন? ২.৫ শতাংশ। আমি এ সব নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে কম করে দশ বার বলেছি। এর থেকে বেশি তো কিছু করতে পারি না। আমি কি মারব গিয়ে? মারলেই তো লোকে গুন্ডা বলবে। এমনিতেই তো ওরা (কেন্দ্র) আমাকে গুন্ডা বলে।" মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, "আমি বলছি, আমাদের আলাদা আর্থিক সাহায্য দিতে হবে না। সব রাজ্যকে কেন্দ্র যা দিচ্ছে, আমাদেরও তাই দেওয়া হোক। কিন্তু তা হচ্ছে না।" ইন্দিরা আবাস যোজনা, জেএনএনইউআরএম-সহ কয়েকটি প্রকল্পের কথা তুলে তিনি বলেন, "কেন্দ্র বলে ওই সব প্রকল্প ওদের টাকায় চলে। ওরা রাজ্যকে সেই টাকা দেয়। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা এসে বলেন, এত কোটি দিলাম। ওই টাকা কেন্দ্রেরও নয়, রাজ্যেরও নয়। জনগণের।" এই কথায় স্বাভাবিক ভাবেই ক্ষুব্ধ কংগ্রেসের রাজ্য নেতৃত্বও। তাঁরা প্রশ্ন তুলেছেন, এর আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে কোনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কি এই ভাষায় আক্রমণ করেছেন? | ||
| ||
দীপা বলেছেন, "যে ভাবে কথা বলছেন, তা হলে কি উনি (মমতা) সত্যিই প্রধানমন্ত্রীকে আঘাত করার পথটাই বেছে নেওয়ার চেষ্টা করবেন? মুখের কথা তো মনেরই প্রতিফলন।" রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী বলেছেন, "উনি যখন রেলমন্ত্রী ছিলেন, রাজ্যে এসে বলতেন, বাংলার জন্য ট্রেন দিচ্ছি। তখন তো রাজ্যের টাকা কেন্দ্রের টাকা ভাগ করতেন না।" একই সঙ্গে অধীরের কটাক্ষ, "যাঁর পঞ্চায়েত প্রধান হওয়ার ক্ষমতা নেই, আমাদের দুর্ভাগ্য যে, তিনিই এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।" প্রদেশ কংগ্রেস নেতা মানস ভুঁইয়ার বক্তব্য, "মুখ্যমন্ত্রী অহেতুক বিদ্বেষ ও সংঘর্ষের পরিবেশ তৈরি করেছেন।" মুখ্যমন্ত্রী যে ভাবে কেন্দ্রকে আক্রমণ করছেন এবং প্রধানমন্ত্রীকেও ব্যক্তিগত ভাবে নিশানা করছেন, তা নিয়ে আগামিকালই মনমোহন সিংহের সঙ্গে আলোচনা করবেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতা মানস ভুঁইয়া। তাঁর বক্তব্য, "কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের দাবি থাকতেই পারে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য অপসংস্কৃতির পর্যায়ে পড়ে। আশা করি তিনি ভুল বুঝবেন ও প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইবেন।" প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় অবশ্য বলছে, মমতার রাজনৈতিক আক্রমণ সত্ত্বেও কেন্দ্র পশ্চিমবঙ্গে সম্পর্কে কোনও রকম বিমাতৃসুলভ মনোভাব নেবে না বা রাজ্যের প্রতি প্রতিহিংসা পরায়ণ হবে না। কেন্দ্র ও রাজ্যের সম্পর্ক যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার অঙ্গ। উন্নয়ন খাতে অর্থ বরাদ্দের ক্ষেত্রে সঙ্কীর্ণ রাজনীতিতে আসতে দেওয়া হবে না। অর্থাৎ, ইটের বদলে পাটকেল নয়, স্বভাবসুলভ ভাবে সৌজন্যই ফিরিয়ে দিচ্ছেন মনমোহন। | ||
| ||
স্বল্প-ভাষণ বক্তৃতা শুরু করেছিলেন তিনটে নাগাদ। সন্ধে ছ'টার কিছু পরে বললেন, "আপনারা অনেক দূর থেকে এসেছেন। বাড়ি যেতে হবে। আমি বেশি কথা বলব না।" মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য শুনতে শুনতে পিছনে চেয়ারে বসে মাঝেমধ্যেই ঘুমে ঢুলে পড়ছিলেন চুনী গোস্বামী। শেষ পর্যন্ত বলা যখন থামল, সভাস্থল প্রায় ফাঁকা। মঞ্চের সামনে জেলার কিছু তৃণমূল নেতা, পুলিশ মিলিয়ে হাজারখানেক লোক। উপোসে জার্সি ফুটবলারের জার্সি পরে বসেছিলেন পশু চিকিৎসক পলাশ মুন্ডা। ধোলাহাটের বাসিন্দা। বললেন, "রবিবার রাতে পুলিশ থানায় ডেকে ডিমের ঝোল, ভাত খাওয়াল। বলল, দিদির সভায় যেতে হবে। ১০০ টাকা আর ট্র্যাকস্যুট দেওয়া হবে। তাই চলে এলাম।" ট্র্যাকস্যুট জোটেনি। পেয়েছেন জার্সি। তবে খাওয়া জোটেনি দিনভর। সমীরকে কটাক্ষ শিল্পী সমীর আইচের নাম করেই মমতা বললেন, "উনি বড় শিল্পী হতে পারেন, কিন্তু তৃণমূলের কেউ নন। মোমবাতি হাতে এক দিন মিছিলে হাঁটলেই পরিবর্তনপন্থী হওয়া যায় না।" সমীরবাবুর প্রতিক্রিয়া, "উনি যে আমাকে শিল্পীর স্বীকৃতি দিয়েছেন এতেই খুশি।" ওই তো বিদেশ তিনি খুচরো ব্যবসায় বিদেশি পুঁজির বিপক্ষে। কিন্তু, বিদেশিদের বিপক্ষে নন। কথাটা বলেই মমতা হাত বাড়িয়ে দেখিয়ে দিলেন, ওই তো বিদেশ বসু! মঞ্চে বসে চমকিত মোহনবাগানের প্রাক্তন তারকা। | ||
|
No comments:
Post a Comment